বিকেলে মা আমার ঘরে উঁকি দিয়ে ঠোঁট উল্টো বললেন, ‘এইবারের পয়লা বৈশাখের মেলা নাকি জমে নাই।’
‘কে কইল তোমারে?’
‘পাশের বাসার চুমকির মা কইল। গেছিল মেলায়। লোকই নাকি নাই।’
খানিক বাদেই মা প্রসন্ন মুখে আমার জন্য ভাজা-মুড়ি আর আদা-চা নিয়ে ঘরে ঢোকেন।
‘ছায়ানটের গান ত হইতাছে, কিছু কইছে?’ আমি মার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি, উৎসুক জানার জন্য।
মা আমার চোখের দিকে না তাকিয়ে ‘এই বিশ্রী গরমের মধ্যে গান শুনতে বাইরে কে যায়? ঘরে বইসা গান শুনাই ভাল’ বলে দ্রুত বেরিয়ে যান। মাকে কেমন অস্থির দেখায়। মনে হয় লুকোচ্ছেন কিছু। মা কি আমার মেলায় যেতে না পারার কষ্ট কমাতে মিথ্যে বলছেন! পাশের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে চুমকির মাকে ডেকে একবার আমার জানতে ইচ্ছে হয় মেলা সত্যিই জমেনি কি না। মার রেখে যাওয়া ভাজা মুড়ি চিবোতে চিবোতে চায়ে চুমুক দিয়ে মার চালিয়ে দেওয়া গান জ্ঞচারিদিকে দেখ চাহি হৃদয় প্রসারি, ক্ষুদ্র দুঃখ সব তুচ্ছ মানি….’ শুনতে শুনতে মনে মনে বলি, না থাক, মেলা হয়ত সত্যিই জমেনি।