প
পচা পটানো পড়া পঢ়া (পাঠ-কৃ) পরা পলানো পশা পাকা পাকানো পাওয়া পাঠানো পাড়া পানানো (গোরু পানিয়ে যাওয়া) পেঁচানো পোঁচানো পোঁছা পোড়া পোঁতা পোওয়ানো পোরা পোষা পেশা (পুজিয়ে বা পূরণ করিয়া পূজান দেওয়া) পেটানো পিছনো পিটোনো পিল্কানো পাক্ড়ানো পট্কানো পারা পাশানো (পাশ দেওয়া তাস-খেলায়) পেঁজা বা পিঁজা (তুলা প্রভৃতির আঁশ পৃথক করা) পিচ্লানো পিট্পিটোনো (চক্ষু পিটপিট করা)।
ফ
ফলা ফস্কানো ফাটা ফাড়া ফাঁদা ফাঁসা ফিরোনো ফুক্রোনো ফুলোনো ফুরোনো ফুটোনো ফুঁপোনো ফেলা ফেটানো ফেরা ফোঁকা ফোলা ফোটা ফোঁসানো ফোক্রানো ফাঁপা ফের্কানো (হঠাৎ রাগাদি-প্রযুক্ত চলিয়া যাওয়া) ফেনানো (ফেনাযুক্ত করা) ফোঁড়া (বিদীর্ণ করা) ফুসানো: ফুস্লানো (কুপরামর্শ গোপনে দেওয়া)।
ব
বহা বকা বখানো (বখিয়ে দেওয়া) বধা বনা বওয়া বদ্লানো বলা বসা বাঁকানো বাগানো বাঁচা বাচানো (বাচিয়ে দেওয়া) বাছা বাজা বাঁধা বানানো (তৈয়ার করা) বাড়া বাওয়া বেছানো বেড়ানো বিওনো বিকোনো বিগ্ড়ানো বিননো বিলানো বিষানো (বিষাক্ত হওয়া) বেচা বেলা (রুটি বেলা) বুঁচোনো বুজোনো বুঝোনো বুড়োনো বুনোনো বুলোনো বোঁচানো বোজা বোঝা বোড়ানো বোনা বোলানো বেড়ানো বেতোনো (বেতদ্বারা মারা) বাত্লানো বিঁধোনো।
ভ
ভজা ভরা ভড়্কানো ভাগা ভাঙা ভাজা ভাঁড়ানো ভাঁটানো (ভাঁটিয়ে দেওয়া) ভানা ভাপানো ভাবা ভাসা ভিজোনো ভিড়োনো ভুগোনো ভুলোনো ভেঙানো বা ভেঙচানো ভেজানো (বন্ধ করা) ভেপ্সানো ভেজানো (আর্দ্র করা) ভোগানো ভোলানো ভিয়ানো (মিষ্টান্ন প্রস্তুত করা) ভাঁড়ানো (ভাঁড়ামি করা; প্রতারণা করা) ভাব্ড়ানো (অকৃতকার্যতা-নিবন্ধন চিন্তা করা) ভ্যাকানো।
ম
মচ্কানো মজানো মওয়া (মন্থন করা) মরা মলা (মর্দন করা) মাখা মাঙা মাজা মাড়া মাতা মানা (মান্য করা) মাপা মারা মিটোনো মিওনো মিলোনো মিশোনো মুখোনো (মুখিয়ে থাকা) মুড়োনো মুতোনো মেটানো মেলানো মেশানো মোটানো মোড়ানো মোতা মোদা মোছা মোস্ড়ানো (হতাশ্বাস হওয়া) মস্টানো (ময়দা মস্টানো)।
য
যাচা যাওয়া যাঁতানো।
র
রগ্ড়ানো রঙানো রচা রটা রওনা রসা রাখা রাগা রাঙানো রুচোনো রোখা রোচা রোপা রোওয়া।
ল
লড়া লতানো লওয়া লাফানো লুকোনো লুটোনো লেখা লেপা লোটা লোঠা লাঠানো (লাঠিদ্বারা প্রহার করা) লুফা বা লোফা (শূন্য হইতে পথে কোনো পদার্থকে ধরা)।
শ
শাসানো শিসনো শোষা শেখা শিখোনো শিউরোনো শোওয়া শুকোনো শোধ্রানো শোনা শাপানো (অভিসম্পাত করা) শিঙোনো (প্রথম শৃঙ্গোদ্গম হওয়া)।
স
সট্কানো সঁপা সওয়া সরা সাজা সাধা সাম্লানো সাঁৎরানো সাঁৎলানো সানানো সারানো সিট্কোনো সুধানো সেঁকা সেঁচা সেঁধানো (প্রবেশ করা) সোঁকা সোল্কানো সাঁটানো সাপানো (সর্পকর্তৃক দংশিত হওয়া) সারানো।
হ
হটা হওয়া হাঁকা হাগা হাঁচা হাজা হাঁটা হাঁট্কানো হাতানো হাৎড়ানো হাঁপানো হারা হাসা হেদোনো হেলা হেরা হ্যাঁচ্কানো (হঠাৎ জোরে টানা)।
ক্ষ
ক্ষওয়া ক্ষরা ক্ষেপানো (ক্ষিপ্ত করা) ক্ষুরোনো (প্রসবকালীন গোবৎসর প্রথম ক্ষুর নির্গমন)।
১৩০৮
বাংলা বহুবচন
সংস্কৃত ভাষায় সাত বিভক্তি প্রাকৃতে অনেকটা সংক্ষিপ্ত হইয়া আসিয়াছে। প্রাকৃতে চতুর্থী বিভক্তি নাই বলিলেই হয় এবং ষষ্ঠীর দ্বারাই প্রথমা ব্যতীত অন্য সকল বিভক্তির কার্য সারিয়া লওয়া যাইতে পারে।
আধুনিক ভারতবর্ষীয় আর্যভাষাগুলিতে প্রাকৃতের এই নিয়মের প্রভাব দেখা যায়।
সংস্কৃত ষষ্ঠীর স্য বিভক্তির স্থানে প্রাকৃতে শ্ শ হ হো হে হি বিভক্তি পাওয়া যায়। আধুনিক ভাষাগুলিতে এই বিভক্তির অনুসরণ করা যাক।
চহুবানহ পাস –চাঁদ : চহুবানের নিকট।
সংসারহি পারা –কবীর : সংসারের পার।
মুনিহিঁ দিখাঈ –তুলসীদাস : মুনিকে দেখাইলেন।
যুবরাজ পদ রামহি দেহ –তুলসীদাস : যুবরাজপদ রামকে দেও।
কহ্যৌ সম খান্ততারহ –চাঁদ : তিনি খান্তাতারকে কহিলেন।
তত্তারহ উপরহ –চাঁদ : তাতারের উপরে।
আদিহিতে সব কথা সুনাঈ –তুলসীদাস : আদি হইতে তিনি সকল কথা শুনাইলেন।
উক্ত উদাহরণ হইতে দেখা যাইতেছে ষষ্ঠী বিভক্তির চিহ্ন প্রায় সকল বিভক্তির কাজ সারিতেছে।
বাংলায় কী হয় দেখা যাক। বাংলায় যে-সকল বিভক্তিতে “এ’ যোগ হয় তাহার ইতিহাস প্রাকৃত হি-র মধ্যে পাওয়া যায়। সংস্কৃত–গৃহস্য, অপভ্রংশ প্রাকৃত–ঘরহে, বাংলা–ঘরে। সংস্কৃত–তাম্রকস্য, অপভ্রংশ প্রাকৃত–তম্বঅহে, বাংলায়–তাঁবার (তাঁবাএ)।
পরবর্তী হি যে অপভ্রংশে একার হইয়া যায় বাংলায় তাহার অন্য প্রমাণ আছে।
বারবার শব্দটিকে জোর দিবার সময় আমরা “বারে বারে’ বলি; সংস্কৃত নিশ্চয়ার্থসূচক হি-যোগে ইহা নিষ্পন্ন; বারহি বারহি–বারই বারই–বারে বারে। একেবারে শব্দটিরও ঐরূপ ব্যুৎপত্তি। প্রাচীন বাংলায় কর্মকারকে “এ’ বিভক্তি যোগ ছিল, তাহা বাংলা কাব্যপ্রয়োগ দেখিলেই বুঝা যায়:
লাজ কেন কর বধূজনে : কবিকঙ্কন।
করণ কারকেও “এ’ বিভক্তি চলে। যথা,
পূজিলেন ভূষণে চন্দনে।
ধনে ধান্যে পরিপূর্ণ।
তিলকে ললাট শোভিত।
বাংলায় সম্প্রদান কর্মের অনুরূপ। যথা,
দীনে কর দান।
গুরুজনে করো নতি।
অধিকরণের তো কথাই নাই।
যাহা হউক, সম্বন্ধের চিহ্ন লইয়া প্রায় সকল কারকের কাজ চলিয়া গেল কিন্তু স্বয়ং সম্বন্ধের বেলা কিছু গোল দেখা যায়।
বাংলায় সম্বন্ধে “র’ আসিল কোথা হইতে। পাঠকগণ বাংলা প্রাচীনকাব্যে দেখিয়া থাকিবেন, তাহার যাহার প্রভৃতি শব্দের স্থলে তাকর যাকর প্রভৃতি প্রয়োগ কোথাও দেখা যায়। এই কর শব্দের ক লোপ পাইয়া র অবশিষ্ট রহিয়াছে, এমন অনুমান সহজেই মনে উদয় হয়।