আমি যদি আরব হতাম মদিনারই পথ
ইসলামি গান
আমি যদি আরব হতাম, মদিনারই পথ।
এই পথে মোর চলে যেতেন নূর-নবী হজরত।।
পয়জা তাঁর লাগত এসে আমার কঠিন বুকে,
আমি ঝর্ণা হয়ে গলে যেতাম অমনি পরম সুখে।
সেই চিহ্ন বুকে পুরে
পালিয়ে যেতাম কোহ-ই-তুরে,
(সেথা) দিবানিশি করতাম তার কদম জিয়ারত।।
মা ফাতেমা খেলত এসে আমার ধূলি লয়ে,
আমি পড়তাম তার পায়ে লুটিয়ে ফুলের রেণু হয়ে।
হাসান হোসেন হেসে হেসে
নাচত আমার বক্ষে এসে,
চক্ষে আমার বইত নদী পেয়ে সে ন্যামত।।
আমার বুকে পা ফেলে রে বীর আসহাব যত
রণে যেতেন দেহে আমার আঁকি মধুর ক্ষত।
কুল মুসলিম আসত কাবায়,
চলতে পায়ে দলত আমায়
আমি চাইতাম খোদার দীদার শাফায়ত জিন্নত।।
আমি যার নূপুরের ছন্দ বেণুকার সুর
আমি যার নূপুরের ছন্দ,
বেণুকার সুর–
কে সেই সুন্দর, কে।।
আমি যার বিলাস যমুনা,
বিরহ বিধুর–
কে সেই সুন্দর, কে।।
যাহার গানের আমি বনমালা
আমি যার কথার কুসুম–ডালা
না -দেখা -সুদূর–
কে সেই সুন্দর, কে?।।
যার শিখী-পাখা লেখনী হয়ে
গোপনে মোরে কবিতা লেখায়–
সে রহে কোথায় হায়!
আমি যার বরষার আনন্দ- কেকা
নৃত্যের সঙ্গিনী দামিনী-রেখা
যে মম অঙ্গের কাঁকন-কেয়ূর–
কে সেই সুন্দর, কে।।
আমিনার-দুলাল এস মদিনায় ফিরিয়া আবার
আমিনার-দুলাল এস মদিনায় ফিরিয়া আবার।
ডাকে ভুবন-বাসী।
হে মদিনার চাঁদ, জ্যেতিতে তোমার, আধাঁর ধরার
মুখে ফোটও হাসি।।
নয়নের পিয়ালায় আনো হযরত
তরাইতে পাপীরে খোদার রহমত;
আবার কাবার পানে ডাকো সকলে
বাজায়ে মধুর কোরানের বাঁশি।।
শোকে বেদনার পাপের জ্বালায় হের প্রায় আজি বিশ্ব-নিখিল
খোদার হাবিব এসে বাঁচাও বাঁচাও বসাও খুশীর হাট
তাজা কর দীল
প্রেম-কওসর দিয়ে বেহেশত হতে
মেহবুব পাঠাও দুঃখের জগতে,
দুনিয়া ভাসুক পুন পুণ্য-স্রোতে
শোনাও আজান পাপ-তাপ-বিনাশী।।
আল্লাজী গো আমি বুঝি না রে তোমার খেলা
আল্লাজী গো আমি বুঝি না রে তোমার খেলা।
তাই দুঃখ পেলে ভাবি বুঝি হানিলে হেলা।।
কুমোর যখন হাঁড়ি গড়ে, কাঁদে মাটি –
ভাবে, কেন পোড়ায় আমায় চড়িয়ে ভাটি;
ফুলদানি হয় পোড় খেয়ে সেই মাটির ঢেলা।।
মা শিশুরে ধোয়ায় মোছায়, শিশু ভাবে–
ছাড়া পেলে, মা ফেলে সে পালিয়ে যাবে
মোর দোষ করে তাই দুষি তোমায় সারা বেলা।।
আমরা তোমার বান্দা খোদা তুমি জানো,
কেন হাসাও কেন কাঁদাও, আঘাত হানো।
যে গড়তে জানে, তারি সাজে ভেঙে ফেলা।।
আল্লাহ কে যে পাইতে চায় হযরত কে ভালবেসে
আল্লাহ কে যে পাইতে চায় হযরত কে ভালবেসে–
আরশ কুর্সী লওহ কালাম না চাইতেই পেয়েছে সে।।
রসুল নামের রশি ধ’রে
যেতে হবে খোদার ঘরে,
নদী-তরঙ্গে যে পড়েছে, ভাই
দরিয়াতে সে আপনি মেশে।।
তর্ক করে দুঃখ ছাড়া কী পেয়েছিস অবিশ্বাসী,
কী পাওয়া যায় দেখনা বারেক হযরতে মোর ভালবাসি?
এই দুনিয়ায় দিবা- রাতি
ঈদ হবে তোর নিত্য সাথী;
তুই যা চাস তাই পাবি হেথায়,
আহমদ চান যদি হেসে।।
আল্লাহ থাকেন দূর আরশে
আল্লাহ থাকেন দূর আরশে–
নবীজী রয় প্রানের কাছে।
প্রাণের কাছে রয় যে প্রিয়,
সেই নবীরে পরান যাচে।।
পয়গম্বরও পায় না খোদায়,
মোর নবীরে সকলে পায়,
নবিজি মোর তাবিজ হ’য়ে
আমার বুকে জড়িয়ে আছে।।
খোদার নামে সেজদা করি,
নবীরে মোর ভালোবাসি,
খোদা যেন নূরের সুরয,
নবী যেন চাঁদের হাসি।।
নবীরে মোর কাছে পেতে
হয় না পাহাড়- বনে যেতে,
বৃথা ফকির – দরবেশ মরে
পুড়ে খোদার আগুন – আঁচে।।
আল্লাহ নামের নায়ে চড়ে যাব মদিনায়
আল্লাহ নামের নায়ে চড়ে যাব মদিনায়।
মোহাম্মদের নাম হবে মোর
(ও ভাই) নদী-পথে পুবান বায়।।
চার ইয়ারের নাম হবে মোর সেই তরণীর দাঁড়;
কলমা শাহাদতের বানী হাল ধরিবে তার।
খোদার শত নামের গুন টানিবি
(ও ভাই) নাও যদি না যেতে চায়।।
মোর নাও যদি না চলিতে দেয় সাহারার বালি,
মরুভুমে বান ডাকাব, পানি দিব ঢালি’
চোখের পানি দিব ঢালি’
তাবিজ হয়ে দুলবে বুকে কোরান, খোদার বানী;
অাধার রাতে ঝড়-তুফানে আমি কি ভয় মানি!
আমি তরে যাব রে
তরী যদি ডুবে তারে না পায়।।
আল্লাহতে যার পূর্ণ ঈমান, কোথা সে মুসলমান
আল্লাহতে যার পূর্ণ ঈমান, কোথা সে মুসলমান।
কোথা সে আরিফ, অভেদ যাহার জীবন-মৃত্যু-জ্ঞান।।
যাঁর মুখে শুনি তওহিদের কালাম
ভয়ে মৃত্যুও করিত সালাম।
যাঁর দ্বীন দ্বীন রবে কাঁপিত দুনিয়া জ্বীন-পরী ইনসান।।
স্ত্রী-পুত্ররে আল্লারে সপি জেহাদে যে নির্ভীক
হেসে কোরবানী দিত প্রাণ হায়! আজ তারা মাগে ভিখ।
কোথা সে শিক্ষা–আল্লাহ ছাড়া
ত্রিভুবনে ভয় করিত না যারা।
আজাদ করিতে এসেছিল যারা সাথে ল’য়ে কোরআন।।
আসিছেন হাবীবে-খোদা, আরশ পাকে তাই উঠেছে শোর
আসিছেন হাবীবে-খোদা, আরশ পাকে তাই উঠেছে শোর,
চাঁদ পিয়াসে ছুটে আসে আকাশ- পানে যেমন চকোর,
কোকিল যেমন গেয়ে উঠে ফাগুম আসার আভাস পেয়ে,
তেমনি করে হরষিত ফেরেশতা সব উঠলো গেয়ে,–
হের আজ আরশে আসেন মোদের নবী কামলীওয়ালা
দেখ সেই খুশীতে চাঁদ- সুরুয আজ হল দ্বিগুন আলা।।
ফকির দরবেশ আউলিয়া যাঁরে
ধ্যানে জ্ঞানে ধরতে নারে,
যাঁর মহিমা বুঝতে পারে
এক সে আল্লাহতালা।।
বারেক মুখে নিলে যাঁর নাম
চিরতরে হয় দোযখ হারাম,
পাপীর তরে দস্তে যাঁহার
কাওসারের পেয়ালা।।
মিম হরফ না থাকলে যে আহাদ
নামে মাখা যার শিরীন শহদ,
নিখিল প্রেমাস্পদ আমার মোহাম্মদ
ত্রিভুবন-উজালা।।