যে আল্লাহ কথা শোনে তারি কথা শোনে লোকে
যে আল্লাহ কথা শোনে
তারি কথা শোনে লোকে।
আল্লাহ নূর যে দেখেছে
পথ পায় লোক তার আলোকে।।
যে আপনার হাত দেয় আল্লায়,
জুলফিকারের তেজ সেই পায়;
যার চোখ আছে খোদার জ্যোতি
রাত্রি পোহায় তারি চোখে।
ভোগের তৃষ্ণা মিটেছে যার
খোদার প্রেমের শিরনি পেয়ে,
যায় বাদশা-নবাব গোলাম হয়ে
সেই ফকিরের কাছে যেয়ে।
আসে সেই কওমের ইমাম সেজে
কওমকে পেয়েছে যে,
তারি কাছে খোদার দেওয়া
শান্তি আছে দুখে-সুখে।।
যে পেয়েছে আল্লার নাম সোনার কাঠি
যে পেয়েছে আল্লার নাম সোনার কাঠি
তার কাছে ভাই এই দুনিয়া দুধের বাটি।।
দ্বীন দুনিয়া দুই-ই পায় সে মজা লোটে।
সে সদাই বিভোর পিয়ে খোদার এশক খাঁটি।।
সে গৃহী, তবু ঘরে তাহার মন থাকে না;
হাঁসের মতো জলে থেকেও জল মাখে না।
তার সবই সমান খাঁটি সোনা এঁটেল মাটি।।
সবই খোদার দান ভেবে সে গ্রহন করে,
দুঃখ-অভাব সুখের মতোই জড়িয়ে ধরে
ভোগ করে সে নিত্য বেহেশত পরিপাটী।।
যে রসুল বলতে নয়ন ঝরে
যে রসুল বলতে নয়ন ঝরে
সেই রসুলের প্রেমিক আমি।
চাহে আমার হৃদয়-লায়লী
সে মজনুরে দিবস-যামী।।
ফরহাদ সে, আমি শিরী
ওই নামের প্রেমে পথে ফিরি;
ঈমান আমার রইল কি না
জানেন তিনি অন্তর্যামী।।
প্রেমে তাঁহার দীওয়ানা হয়ে
গেল দুনিয়া আখের সবই;
কোথায় রোজা,কোথায় নামাজ,
কেবল কাঁদি :`নবী নবী।’
রোজ-কেয়ামত আসবে কবে ;
কখন তাঁহার দীদার হবে;
নিত্য আমার রোজ-কেয়ামত
বিনে আমার জীবন-স্বামী।।
যেতে নারি মদিনায়, আমি নারী হে প্রিয় নবী
যেতে নারি মদিনায়, আমি নারী হে প্রিয় নবী!
আমারই ধ্যানে এসো প্রাণে এসো আল-আরবী।।
তপ্ত যে নিদারুণ আরবের সাহারা গো
শীতল হৃদে মম রাখিব তোমারই ছবি।।
ভালোবাস যদি সে মরুভূ ধূসর গো
জ্বালায়ে, হৃদি মম করিব সাহারা গোবি।।
হে প্রিয়তম, গোপনে তব তরে আমি কাঁদি
তোমারে দিয়াছি মোর, দুনিয়া আখের সবই।।
যেদিন রোজ হাশরে করতে বিচার
যেদিন রোজ হাশরে করতে বিচার
তুমি হবে কাজী,
সেদিন তোমার দিদার আমি
পাব কি আল্লাজী।।
সেদিন নাকি তোমার ভীষন কাহহার-রূপ দেখে
পীর পয়গাম্বর কাঁদবে ভয়ে ‘ইয়া নফসি’ ডেকে।
সেই সুদিনের আশায় আমি নাচি এখন থেকে।
আমি তোমায় দেখে হাজার বার দোজখ যেতে রাজী (আল্লা)।।
যে রূপে হোক বারেক যদি দেখে তোমায় কেহ,
দোজখ কি আর ছুঁতে পারে পবিত্র তার দেহ।
সে হোক না কেন হাজার পাপী, হোক না বে-নামাজী।।
ইয়া আল্লাহ, তোমার দয়া কত, তাই দেখাবে ব’লে
রোজ হাশরে দেখা দেবে বিচার করার ছলে।
প্রেমিক বিনে কে বুঝিবে তোমার এ কারসাজি।।
রসুল নামের ফুল এনেছি রে
রসুল নামের ফুল এনেছি রে
(আয়) গাঁথবি মালা কে?
এই মালা নিয়ে রাখবি বেঁধে
আল্লা তালাকে॥
অতি অল্প ইহার দাম
শুধু আল্লা রসুল নাম,
এই মালা প’রে দুঃখ-শোকের
ভুলবি জ্বালাকে॥
এই ফুল ফোটে ভাই দিনে রাতে
(ভাই,রে ভাই!) হাতের কাছে তোর
ও তুই কাঁটা নিয়ে দিন কাটালি রে
তাই রাত হ’ল না ভোর।
এর সুগন্ধ আর রূপ র’য়ে যায়
নিত্য এসে তোর দরজায় রে
পেয়ে ভাতের থালা ভুললি রে তুই
চাঁদের থালাকে॥
রুম ঝুম ঝুম বাদল নুপুর বোলে
রুম ঝুম ঝুম বাদল নুপুর বোলে।
তমাল-বরনী কে নাচে গগন কোলে
তার অঙ্গের লাবনী যেন ঝরে অবিরল
হয়ে শীতল মেঘলামতির ধারাজল;
কদম ফুলের পীত উত্তরী তার
পুব হাওয়াতে দোলে।
বিজলি ঝিলিকে তারবন মালার
আভাস জাগে,
বন-কুন্তলা ধরা হল শ্যাম মনহরা
তাহারই অনুরাগে।
তারে হেরি পাপিয়া পিয়া পিয়া কহে,
সাগর কাঁদে, নদীজল বহে;
ময়ূর-ময়ূরী বন-শর্বরী
নাচে টলে টলে।।
লহ সালাম লহ, দ্বীনের বাদশাহ
লহ সালাম লহ, দ্বীনের বাদশাহ
জয় আখেরি নবী।
পীড়িত জনগণে মুক্তি দিতে এলে
হে নবীকুলের রবি।।
তুমি আসার আগে ধরার মজলুম
তরিত ফরিয়াদ, চোখে ছিল না ঘুম;
ধরার জিন্দানে বন্দী ইনসানে
আজাদী দিতে এলে, হে প্রিয় আল-আরবি।।
তব দামন ধরি’ যত গুনাহগার
মাগিল আশ্রয়,
তুমিই করিবে পার।
মানুষ ছিল আগে বন্য পশু প্রায়
কাঁদিত পাপে-তাপে অভাবে-বেদনায়,
শান্তিদাতা-রূপে সহসা এলে তুমি
ফুটিল দুনিয়ায় নব বেহেশতের ছবি।।
লাল নটের ক্ষেতে, লাল টুকটুকে বৌ যায় গো
লাল নটের ক্ষেতে, লাল টুকটুকে বৌ যায় গো
(তার) আলতা পায়ের চিহ্ন এঁকে নালতা শাকের হায় গো।।
লাল নটের খেতে মৌমাছি ওঠে মেতে
তার রূপের আঁচে পায়ের তলায় মাটি ওঠে তেতে।
লাল পুঁইয়ের লতা নুয়ে পড়ে জড়িয়ে ধরে পায় গো।।
কাঁকল বাকা রাখাল ছোঁড়া আগল দাঁড়ায় আল–
রাঙা বৌয়ের চোখে লাগে লাল লঙ্কার ঝাল।
বৌয়ের ঘেমে ওঠে গা
লাজে সরে না পা
সে মুখ ফিরিয়ে শাড়ির আঁচর আঙুলে জড়ায় গো।
শোনো শোন য়্যা ইলাহি আমার মুনাজাত
মোনাজাত
শোনো শোন য়্যা ইলাহি
আমার মুনাজাত।
তোমারি নাম জপে যেন
আমার হৃদয় দিবস-রাত।।
যেন কানে শুনি সদা
তোমারি কালাম, হে খোদা,
চোখে যেন দেখি শুধু
কোরআনের আয়াত।।
মুখে যেন জপি আমি
কলমা তোমার দিবস-যামী,
(তোমার) মসজিদেরই ঝাড়ু-বর্দার
হোক আমার এ হাত।।
সুখে তুমি, দুখে তুমি,
চোখে তুমি, বুকে তুমি,
এই পিয়াসী প্রানের খোদা
তুমিই আব-হায়াত।।