India thus forms a great Museum of races, in which we can study man from his lowest to his highest stages of culture. The Specimens are not fossils or dry bones, but living communities. :
এখানে সত্যই Fragments of a Pre-historic world কিংবা remnants to our own day of the stone age calcule
হিন্দুর উপমতগুলোর বাহ্যত এক-একজন প্রবর্তক থাকলেও আসলে বিভিন্ন মতের মিশ্রণে গড়ে-উঠা প্রবল আঞ্চলিক মতবাদের তারা প্রচারক মাত্র। কেননা, এগুলো মূলত ইষ্টদেবতার প্রাধান্য এবং লক্ষ্যের বৈশিষ্ট্যজাত উপমতই। এগুলাকে বলা যায়–বৈদিক মতের প্রশাখা। এখানে উল্লেখ যে ঋগ্বেদেও কোনো একক মত প্রতিষ্ঠার প্রয়াস নেই। বিস্তৃত কালিক পরিসরে বিভিন্ন কবি রচিত সূক্তসমষ্টিই ঋগ্বেদ বা ঋক্-সংহিতা। এ জন্যে কোনো কোনো মতাদর্শের প্রাধান্য থাকলেও ঋগ্বেদে পরবর্তী প্রায় সব মতেরই কিছু কিছু সমর্থন পাওয়া যায়। যেমন তারাপদ চৌধুরী বলেন :
যে সকল ভক্তিমার্গে পরব্রহ্মেরই প্রকাশরূপে কোনো ইষ্ট দেবতার কল্পনা করা হইয়াছে। এবং ভক্তির কোমলতা এবং ভক্তের কঠোর নৈতিক আচরণের উপর গুরুত্ব আরোপ করা হইয়াছে, তাহাদের সূচনা বেদে দেখিতে পাওয়া যায়। বিভিন্ন রীতির তপশ্চর্যা, এমনকি তান্ত্রিক আচারগুলির পূর্বাভাস বেদে বর্তমান। বেদান্তের অদ্বৈতবাদ এবং মায়া সম্বন্ধে ও জ্ঞানের মাধ্যমে মোক্ষ লাভ সম্বন্ধে ইঙ্গিত, মীমাংসা মতানুযায়ী যজ্ঞের সর্বশক্তিমত্তা, সাংখ্য দর্শন সম্মত ত্রিগুণ এবং প্রকৃতির অন্ধ প্রবণতা, যোগদর্শন সম্মত ইন্দ্রিয় সংযম এবং চিত্তের অভিনিবেশ এবং ন্যায়-বৈশেষিক মতানুসারে ব্রহ্মপ্রাপ্তির জন্য যথার্থ বৌদ্ধিক দৃষ্টি ও যথার্থ বাক্যের প্রয়োজনীয়তা–এই সকলেরই পূর্বাভাস বেদে দেখিতে পাওয়া যায়। এতদ্ব্যতীত আত্মা, মন, পরব্রহ্ম, বিশ্বের অভিব্যক্তি, কর্ম, পুনর্জন্ম এবং মোক্ষ প্রভৃতি সম্বন্ধে সাধারণ সমস্যাগুলির আলোচনাও আছে। পরবর্তীকালে বেদগুলিকে যে যাবতীয় ধর্ম ও দর্শনের প্রধান উৎস বলিয়া স্বীকার করা হইয়াছিল, তাহাতে আশ্চর্যের বিষয় কিছু নাই।
তেমনি পরবর্তীকালের মহাভারতে তথা গীতায়ও নানা মতের অসমন্বিত মিশ্রণ ঘটেছে। অতএব সব কয়টি মত ও উপমতের উদ্ভবের ইতিহাস অত্যন্ত জটিল এবং দুর্নিরীক্ষ্য ও দুর্নির্ণেয়। দেশী-বিদেশীর, শাসক-শাসিতের এবং আর্য-অনার্যের নানা ধারণা, সংস্কার, আচার, আদর্শ ও লক্ষ্যের বিচিত্র মিশ্রণে ও সমাবেশে–কখনো সমন্বয়ে, কখনো বা অজ্ঞতাপ্রসূত বিকৃত-প্রভাবে সব শাখা ও উপশাখাগুলো গড়ে উঠেছে। তাই নিশ্চিত বিশ্বাসে কিংবা যুক্তি ও তথ্য প্রয়োগে কোনো নিঃসংশয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা সম্ভব হয় না। শেষ অবধি বিদ্বানে বিদ্বানে মতানৈক্য থেকেই যায়। অবশ্য যতই আলোচনা হচ্ছে, জটিলতাও ততই হ্রাস পেয়ে গবেষণার পথ খুলে দিচ্ছে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় বোঝা যাচ্ছে বৈদিক বিধি-বিধান এবং ভাবকল্প একান্তভাবে আর্য নয়। পশুজীবী আর্যেরা মূলত প্রাকৃত শক্তির পূজারী এবং কর্ম ও কর্মফলে আস্থাবান। কিন্তু কৃষিজীবী অনার্য গোষ্ঠীরা তাদের জীবিকার গরজেই ভাববাদী ও প্রতীকপ্রিয় না হয়ে পারেনি।
অনুমান করি, উর্বরা ভারতভূমির অনিঃশেষ চারণক্ষেত্র আর্যদের স্থায়ী বসবাসে প্রলুব্ধ করে, আর অনায়াসলভ্য ফলমূল তাদেরকে জীবিকার ভাবনা-মুক্তির আশ্বাস দিয়ে কৃষিকার্যে প্রবর্তনা দেয়। এভাবে এ নতুন দেশে নতুন জীবিকার মাধ্যমে আর্যরা কৃষি সম্পর্কিত আচার-সংস্কারেও গোড়া থেকেই প্রভাবিত হতে থাকে। এই প্রভাবেরই স্বাক্ষর রয়েছে হয়তো বেদের বিভিন্ন মণ্ডলের নারী, অদ্বৈততত্ত্ব, ভক্তিতত্ত্ব ও ভাব প্রতীকী কল্পনার মধ্যে–যা সাধারণভাবে আর্য মননের লক্ষণ বলে ব্যাখ্যা করা চলে না। বেদে-ব্রাহ্মণে-উপনিষদে যা আছে সবই আর্যমানসজাত, এ ধারণা তাই যৌক্তিক আলোচনা ও সিদ্ধান্তের পরিপন্থী। সি. কুহ্বান রাজা বলেছেন–সিন্ধু উপত্যকার সভ্যতা এবং দ্রাবিড়ভ্যতার প্রভাবেই–১. সর্বসাধারণের জীবনে অরণ্যের প্রভাব, ২. মন্দিরে উপাসনা ও তার সঙ্গে অধিকতর মূর্ত আকারে দেবতার অনুধ্যান, ৩. বিশ্বজগতের পরিকল্পনা ধারার মধ্যে পশু, পক্ষী, বৃক্ষ প্রভৃতির উচ্চস্থান লাভ, ৪. ঐশী-শক্তির স্ত্রীরূপকে উচ্চতর মর্যাদা দান, ৫. ঈশ্বরের স্রষ্টত্ব এবং ৬. জাতীয় মহাপুরুষ হিসাবে দেবতাদের আবির্ভাব এবং মানুষের দেবত্বে উন্নয়ন। তার মতে সাংখ্য মত অবৈদিক। ভক্তির বিকাশও অবৈদিক প্রভাবজ। বেদান্ত ও ভক্তিবাদের মাধ্যমে ব্রাহ্মণ্য ধর্মের পুনজ্জীবনও ঘটে প্রধানত দাক্ষিণাত্যের দ্রাবিড় দিয়ে। কুমারিল ভট্ট অন্ধদেশের লোক, শঙ্করাচার্যের জন্মস্থান কেরলা, রামানুজ তামিল দেশে আর মাধবাচার্য কর্ণাট দেশে আবির্ভূত হয়েছিলেন। এবং বিষ্ণু আর শিবের শক্তিমহিমা ও ক্রিয়ার ধারণাও অবৈদিক। তাই আগম। শাস্ত্রও অবৈদিক।–
তারাপদ চৌধুরীও বলেন, বৈদিক ধর্মবিশ্বাসের পাশাপাশি মন্ত্রতন্ত্র, বশীকরণ এবং ইন্দ্রজালের ক্ষমতা সম্বন্ধে সাধারণের যে ব্যাপক বিশ্বাস ছিল, তাহাও এই প্রসঙ্গে মনে রাখা প্রয়োজন। বৈদিক সাহিত্যে সর্বত্রই এ বিষয়গুলির ইতস্তত উল্লেখ আছে বটে, তথাপি বিশেষভাবে এইগুলি অথর্ববেদ এবং তাহার অনুষ্ঠানাঙ্গ কৌশিক-সূত্র উহাদের বিষয়। সেইজন্যই এই গ্রন্থ দুইটিতে পরবর্তী তন্ত্রশাস্ত্রের সূচনা রহিয়াছে। সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন :