- সূরার নাম: সূরা ইনফিতর
- বিভাগসমূহ: ইসলামিক বই, কোরআন শরীফ
সূরা ইনফিতর
আয়াতঃ 082.001
যখন আকাশ বিদীর্ণ হবে,
When the heaven is cleft asunder.
إِذَا السَّمَاء انفَطَرَتْ
Itha alssamao infatarat
YUSUFALI: When the Sky is cleft asunder;
PICKTHAL: When the heaven is cleft asunder,
SHAKIR: When the heaven becomes cleft asunder,
KHALIFA: When the heaven is shattered.
===============
সূরা ইন্ফিতর বা বিদীর্ণ হওয়া – ৮২
১৯ আয়াত,১ রুকু, মক্কী
[দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : এই সূরার বিষয়বস্তু পূর্বের সূরার সমগোত্রীয়।
সূরা [ ৮১ : ১৩ ] আয়াতের টিকা ৫৯৮২ তে যে তিনটি যুক্তির উত্থাপন করা হয়েছে এই সূরাতেও তদ্রূপ করা হয়েছে। এগুলি হচ্ছে : ১) শেষ বিচারের দিন, ২) মৃত্যুর পরে শেষ বিচারের পূর্বে ছোট বিচার বা কবর আযাব, ৩) সাধারণভাবে আমাদের আধ্যাত্মিক জগত থাকে ঘুমন্ত আর ঘুম হচ্ছে মৃত্যুরই যমজভাই। এই ঘুমন্ত আধ্যাত্মিক জগত আল্লাহ্র হেদায়েতের নূরে যে কোন মূহুর্তে জাগরিত হতে পারে। অসার পার্থিব জীবনের নিমগ্ন অবস্থা থেকে আধ্যাত্মিক জগতের অন্তর্দৃষ্টি লাভকেই জাগরণ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে,যে জগত হচ্ছে আত্মার প্রকৃত জগত যা অনন্ত কাল ব্যপী স্থায়ী হবে।
সূরা ইন্ফিতর বা বিদীর্ণ হওয়া – ৮২
১৯ আয়াত,১ রুকু, মক্কী
[দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্র নামে ]
১। যখন ৫৯৯৭ আকাশ বিদীর্ণ হবে ; ৫৯৯৮
৫৯৯৭। দেখুন সূরা [ ৮১ : ১ – ১৪ ] আয়াত ও আনুসঙ্গিত টিকা সমূহ। যে তিনটি ব্যাখ্যাকে সমান্তরালভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে সে জন্য দেখুন এই সূরার ভূমিকা। এখানে ৫নং আয়াতকে উপস্থাপন করার পূর্বশর্তের বর্ণনা করা হয়েছে পূর্ববর্তী আয়াত সমূহে। ৮১ নং সূরাতে ১২ টি শর্তের আরোপ করা হয়েছে এবং এসব শর্তের শেষ পরিণতি বর্ণনা করা হয়েছে। যদিও শেষ পরিণতি উভয় সূরাতে একই, তবে তার বর্ণনার ভাষাতে পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। দেখুন নীচের [ ৮২ : ৫] আয়াতের টিকা নং ৬০০২। শেষ বিচার দিনের পূর্বে আমাদের এই চেনা জানা পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে, এবং প্রকৃত সত্যের রূপ উদ্ঘাটিত হবে।
৫৯৯৮। দেখুন সূরা [ ৭৩ : ১৮ ] ও টিকা ৫৭৬৯। উম্মুক্ত অসীম নীলাকাশ আমরা জন্মাবধি পর্যবেক্ষণ করে থাকি। রৌদ্রকরোজ্জ্ল আকাশের নীলিমা, ঋতু ভেদে আকাশের বিভিন্নরূপ আমাদের মুগ্ধ করে আবার ভীতও করে। তবে এ সবই অস্থায়ী একদিন এই আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে এবং এর চিরাচরিত রূপ যাবে বদলে। সেদিন নূতন পৃথিবীর সৃষ্টি হবে। সেই নূতন পৃথিবীতে মানুষের নিকট অদৃশ্যের সকল রহস্যকে উম্মুক্ত করে দেয়া হবে। পৃথিবীর জীবনে দেহের বন্ধন আত্মাকে অদৃশ্য জগত বা আধ্যাত্মিক জগতের রূপ উপলব্ধিতে বাঁধার সৃষ্টি করে। নূতন পৃথিবীতে দেহের এই বন্ধন মুক্ত হয়ে, প্রতিটি আত্মা বুঝতে সক্ষম হবে প্রকৃত সত্যকে।
আয়াতঃ 082.002
যখন নক্ষত্রসমূহ ঝরে পড়বে,
And when the stars have fallen and scattered;
وَإِذَا الْكَوَاكِبُ انتَثَرَتْ
Wa-itha alkawakibu intatharat
YUSUFALI: When the Stars are scattered;
PICKTHAL: When the planets are dispersed,
SHAKIR: And when the stars become dispersed,
KHALIFA: The planets are scattered.
২। যখন তারকারাজি বিক্ষিপ্ত ভাবে ছড়িয়ে পড়েব ; ৫৯৯৯
৫৯৯৯। দেখুন [ ৮১ : ২ ] আয়াত। [ ৮২ : ২ ] আয়াতের বর্ণনা অনুযায়ী সেই দিন মহাবিশ্বের সাম্যবস্থা বিধ্বস্ত হয়ে পড়বে। “তারকারাজি বিক্ষিপ্ত ভাবে ছড়িয়ে পড়বে” এটি একটি রূপক বর্ণনা যার মাধ্যমে বর্ণনা করা হয়েছে যে বর্তমানের যে শৃঙ্খলা আমরা নভোমন্ডল ও সৌরমন্ডলে পর্যবেক্ষণ করে থাকি,তার চিহ্ন মাত্র থাকবে না। ঠিক সেরূপ ঘটনাই ঘটবে নূতন পৃথিবী সৃষ্টির প্রাক্কালে। বর্তমান পৃথিবীর কোন নিয়মই সেখানে প্রযোজ্য হবে না।
আয়াতঃ 082.003
যখন সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে,
And when the seas are burst forth (got dried up);
وَإِذَا الْبِحَارُ فُجِّرَتْ
Wa-itha albiharu fujjirat
YUSUFALI: When the Oceans are suffered to burst forth;
PICKTHAL: When the seas are poured forth,
SHAKIR: And when the seas are made to flow forth,
KHALIFA: The oceans are exploded.
৩। যখন সমুদ্রকে বিষ্ফোরিত করা হবে ; ৬০০০
৬০০০। দেখুন [ ৮১ : ৬ ] আয়াত যেখানে বর্ণনা করা হয়েছে, ” সমুদ্র সকল ফুটতে থাকবে ও উথলিয়ে উঠবে।” এই আয়াতে বলা হয়েছে, ” সমুদ্র যখন বিষ্ফোরিত হবে।” ভাষার পার্থক্য সত্বেও দুটি আয়াতেই যে ভাবের প্রকাশ করা হয়েছে তা হচ্চে বর্তমান পৃথিবীর সকল নিয়মের যে ধারা সেদিন তা লন্ডভন্ড হয়ে পড়বে। এই ধারা দুভাবে হতে পারে : ১) পৃথিবীতে মিষ্টি পানি ও লবণাক্ত পানির আঁধারকে সর্বদা আলাদা রাখা হয় স্রষ্টার অপূর্ব কৌশলের মাধ্যমে। অন্যথায় পৃথিবীর সৃষ্টি প্রক্রিয়ায় বাঁধার সৃষ্টি হতো। দেখুন সূরা [ ৫৫ : ২০ ] আয়াত ও টিকা ৫১৮৫ যেখানে পানির দুটি ধারার উল্লেখ আছে। ২) সমুদ্র উদ্বেলিত হয়ে সকল পৃথিবীকে গ্রাস করবে। রূপক অর্থে পার্থিব জ্ঞানের সকল ধারা – ক্ষুদ্র বা বৃহৎ সকলই সেদিন মিলে মিশে একাকার হয়ে যাবে। তারা হয়ে পড়বে অস্তিত্ববিহীন। একমাত্র ঐশ্বরিক জ্ঞানই সেদিন শুধুমাত্র ভাস্বর হয়ে রবে।