চার্লস পোয়ারোর বাড়ি আসে। কেস কতদূর এগোল তা পোয়ারো চার্লসকে জানায় না। চার্লস জিজ্ঞাসা করে না কারণ সে জানে তাকে পোয়ারো সময় হলেই জানাবে। পোয়ারো ডিনসমেডের বাড়ি যেতে চায় এমনই একদিন যেদিন সকলে বাড়ি থাকবে। তাই ফোন করতে বলল চার্লসকে, যুক্তি হল চার্লস ফোনে বলবে তার বন্ধু ওখানকার সুন্দর জায়গা আর বিশেষতঃ তাদের আতিথ্যের কথা শুনে ওখানে যেতে খুবই ইচ্ছুক, তাই ফোন করেছে।
পোয়ারো বলেসেদিন যার সঙ্গে কথা বলব তুমি তখন অন্যদের ব্যস্ত রাখবে।
সব কথা ঠিকঠাক। এতক্ষণে ডিনসমেড বাড়ি ফিরেছে তাই এইবার ফোন করা ঠিক ভেবে ফোন করল।
.
১৫.
ডিনসমেড পোয়ারো ও চার্লসকে আমন্ত্রণ জানায়।
ব্রেকফাস্টের পর মামুলি আলোচনা হয়, আর জর্জকে নিয়ে পোয়ারো যায় বাগানে। চার্লস ডিনসমেডের সঙ্গে কথা বলে।
বাগানের প্রশংসার পর পোয়ারো জানতে চায় জর্জের প্রিয় বিষয় সম্বন্ধে। জানে বিজ্ঞান আরো জানে বাড়িতে জর্জ একটা ল্যাবরেটরি খুলেছে আর বর্তমানে আর্সেনিক পাওয়ার চেষ্টায় আছে, কলেজের বেয়ারা ম্যানেজ করে দেবে বলেছে। পোয়ারো জর্জকে বাড়িতে আর্সেনিক আনতে বারণ করে। জানায় বাড়িতে বিপদের সম্ভাবনা। টেস্টের অসুবিধা হলেও কিছুদিন ওই জিনিস বাড়িতে আনতে মানা করে পোয়ারো আর গোপন রাখতে বলে তাদের কথোপকথন।
বাগানে যখন পোয়ারো একা ঘুরছে সেখানে আসে মেরী। চার্লস চালাকি করে মেরীকে পাঠিয়েছে পোয়ারোর কাছে, বলেছে, পোয়ারো গাছ সম্বন্ধে কিছু জানে। অনেক কথার শেষে পোয়ারো আসে একই কথায় এস.ও.এস.।
মেরী জানালো এখনও তার মনে পড়েনি কেন সে ওরকম লিখেছিল তবে তার বছরখানেক ধরে এমনি মনে হচ্ছে কোনো বিপদ ঘটবে। কিন্তু সঠিক কারণ জানে না।
মেরী অবশেষে জানালো একটা অচেনা রাস্তার উপর তার বাবা তাকে একদিন এক ভদ্রলোকের বাড়ি নিয়ে যায়, মনে হয় সেই ভদ্রলোক উকিল। তবে তার বাবা তাকে একই রাস্তা অনেকবার ঘুরিয়ে ঐ বাড়িতে নিয়ে যায় বলে ব্যাপারটা তার কাছে আশ্চর্যজনক ঠেকে। যে লোকটির কাছে নিয়ে গিয়েছিল তার বয়স ষাট, মাথায় টাক, রোগা লম্বা।
পোয়ারো কথাটা গোপন রাখতে বলে এবং মেরী চলে যায়।
এরপর চার্লস শার্লটকে পাঠায় ধূমায়িত কফির ট্রে হাতে। বারবার কফি খাওয়ার জন্য মাফ চেয়ে নেয় পোয়ারো। তারপর শুরু হয় শার্লটের চুলের বর্ণনা। চুলে হাত দিতে চায় পোয়ারো। আর টানও লাগে চুলে। ক্লিপ খুলে যায়। পোয়ারো এতক্ষণ শার্লটকে লম্বা চুল কাটতে বারণ করেছিল এবং বলে উঠল–এ কী মিস শার্লট আপনি ফলস হেয়ার পরেন?
শার্লট চমকে যায়-কই না তো।
.
শার্লট ভেতরে যেতে চাইলে পোয়ারো তাকে বাহুডোরে বন্দী করে জানায় সে শার্লটকে ভালোবাসে। তারপর জানতে চায় পরচুলা পরার কারণ।
শার্লট বলে তাদের বাড়ির সকলের ধূসর চুল তারই শুধু সোনালি চুল। তাই মার কথামতো এই চুল পরে। আরও জানায়, তার দুটো পরচুল পনেরো দিন অন্তর দোকানে পাঠায় ধোয়ার জন্য। আর ছোটোবেলার কথা জানতে চাইলে সে জানায় রজারের ভাড়া অ্যাপার্টমেন্টে ওরা থাকত। আবার এস.ও.এস.-এর কথা। এবং একই উত্তর এমনই। শার্লটের কাছ থেকে পোয়ারো জানতে পারে বাবা-মা এখনও তাকে দেখলে আলোচনা বন্ধ করে দেয়। সাবধানে থাকতে বলে বাবা তাকে কোথাও নিয়ে গেলে জানাতে বলল শার্লটকে এবং বিদায় নেয়।
এরপর পোয়ারো আসে মিসেস ডিনসমেডের কাছে।
-আপনার ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বেশ মিল। কেবল জর্জ বাদে।
–হ্যাঁ। ও বাবার মতো দেখতে হয়েছে।
–তবে মিস শার্লট আপনার চুল পেলেও রং পায়নি।
একথায় সুসান স্বাভাবিক দেখে পোয়ারো ভাবে ইঙ্গিতটা সরাসরি ধরতে পেরেছে। এতে শার্লটের ওপর নির্যাতন হবে না তো? সোনালি চুল তো অনেকের থাকে এতে লুকোবার কী আছে? পেছনে কোনো রহস্য আছে। তবে কী শার্লট ডিনসমেডের দ্বিতীয় পক্ষের মেয়ে?
হঠাৎ পোয়ারো বলে–শার্লটের বয়স কত?
–মেরী আঠারো আর শার্লট সতেরো।
–দেখলে শার্লটকে বড় মনে হয়।
–হ্যাঁ, অনেকেই বলে।
এরপর পোয়ারো যে কলেজের প্রফেসার বলে নিজেকে জাহির করেছে সেই কলেজের একটা ছেলের কথা জানালে তার বয়স ছিল কুড়ি। ছেলেটি টেম্পোরারি চাকরি করত কলেজে কিন্তু তার চাকরি চলে গেছে। চার্লস আর পোয়ারের বাড়িতে কাজের লোক আছে তাই মিসেস ডিনসমেডের বাড়িতে তাকে রাখতে বলে। সে রাজী হয়।
খাবার আগে মিঃ ডিনসমেডকে সপরিবারে পোয়ারোর বাড়িতে যেতে বলে। গত দুবছর ব্যাবসার চাপে সে বেরোতে পারেনি শুনেও পোয়ারো তাকে যেতে অনুরোধ করে। ওরা চলে যায়।
.
১৬.
সকাল সাড়ে দশটায় রজারের বৈঠকখানায় পোয়ারো আর রজার কথা বলছে, হঠাৎ রজার তার পরিচয় চাইলে পোয়ারো বলে তার নাম বিলি জোন্স আর সে আসছে ইনকাম ট্যাক্স থেকে।
পোয়ারো জানতে পারে বাড়িটা ষাট-সত্তর বছরের এবং ভাড়াটেতে ভর্তি। দোকান থেকে কম টাকা পেলেও অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বেশ ভালোই টাকা পায়। রজার রিটার্ন সাবমিট করেনি জেনে পোয়ারো তাকে একটু ভয় দেখায়। রজার তাকে কিছু টাকা খরচ করে একটা উপায় বের করতে বলে। এই সুযোগ গ্রহণ করে পোয়ারো। সে টাকা চায় না, জানতে চায় মিঃ ডিনসমেডের কথা।
জানতে পারে আর্থিক অসঙ্গতির মধ্যেই তাদের জীবন কাটত। তাকে যখন এখান থেকে চলে যেতে বলা হয় তখন সে রজার-এর কথা শুনে চলে যায় বাড়ি কিনে। তবে গ্রীন উডের সেই বাড়িতে রজার যায়নি।