ভেতরে কেউ আছে! হিসিয়ে উঠল মুসা।
ছেলেরা পা টিপে টিপে এগিয়ে গেল। বারল্যাপ ব্যাগগুলোর সামনে হাঁটু গেড়ে বসা এক ছায়ামূর্তি। লোকটা উঠে দাঁড়াতে বোঝা গেল ওটা রয়।
কী করা যায়? ফিসফিস করে বলল রবিন।
স্ক্রুড্রাইভারটা আছে, বলল মুসা। ওটা দিয়ে ওকে আটকে দেব!
না, চলো অফিসার ফলেটের কাছে যাই, বাধা দিয়ে বলল কিশোর।
মাথা নাড়ল মুসা।
অত সময় নেই! টাকাটা না পেলে রয় পগার পার হয়ে যাবে! গুঁড়ি মেরে শেডের দিকে এগোতে লাগল ও। আউচ! চেঁচিয়ে উঠল।
কী হলো? ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করল রবিন।
কাঁটা!
আচমকা রয় ঝড়ের বেগে বেরিয়ে এল শেড থেকে। ফ্ল্যাশলাইটের আলো ফেলল মুসার উপরে। কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুসার বাহু চেপে ধরল ও।
টাকাটা কী করেছ? কর্কশ কণ্ঠে জানতে চাইল।
ওকে ছেড়ে দিন! গর্জে উঠল রবিন। ও আর কিশোর দৌড়ে গেল মুসার পাশে।
হ্যাঁ, ওকে ছেড়ে দিন! ভরাট এক কণ্ঠস্বর গমগম করে উঠল। শেডের আড়াল থেকে উদয় হয়েছেন অফিসার ফলেট। সঙ্গে জন।
দশ
এক ঘণ্টা পর। কিশোরদের ব্যাকইয়ার্ডে স্লীপিংব্যাগে শুয়ে তিন গোয়েন্দা।
আমি এখনও বুঝতে পারছি না রয় টনির চাবি হাতাল কীভাবে, বলল রবিন।
খুব সোজা, বলল মুসা। আমি অনেক আগেই বুঝে গেছি।
কিশোর মাথা তুলে ওর দিকে চাইল।
দয়া করে বলবেন কি?
নাটুকে দীর্ঘশ্বাস ফেলল মুসা।
রয় শুনেছিল জন কাল রাতে বৃষ্টি হতে পারে বলেছে। ও জানত জন গা বাঁচানোর জন্য অন্য কোথাও আশ্রয় নেবে। তখনই টাকা চুরির বুদ্ধিটা মাথায় আসে ওর। টনি ঘুমিয়ে পড়লে চাবিটা নেয় সে।
কিন্তু রয় টনির রুমে ঢুকল কীভাবে? প্রশ্ন করল কিশোর।
ঢুকতে হয়নি, ওরা একই রুমে ঘুমিয়েছে, জানাল মুসা।
তুমি জানলে কীভাবে? রবিনের জিজ্ঞাসা।
হাসল মুসা।
মিস্টার লিস্টারের সাথে ফায়ারওয়র্কের ওখানে দেখা হয়েছিল, মনে আছে? উনি টনি আর রয়কে জিজ্ঞেস করেছিলেন রুমটা কেমন। রুমগুলো কেমন জানতে চাননি।
ভাগ্যিস অফিসার ফলেট সময় মত শেডে হাজির হয়েছিলেন, বলল কিশোর। উনি জানলেন কীভাবে যে রয়, ওখানে গেছে?
জন মনে হয় তাকে বোঝাতে পেরেছিল, বলল মুসা। জন হয়তো বুঝতে পেরেছিল চাবিটা হাতানোর একমাত্র সুযোগ রাতের বেলা, টনি যখন ঘুমিয়ে। আর জনের তো জানাই ছিল, টনি আর রয় একই রুমে থাকছে।
তোমার মাথায় বুদ্ধি ঠাসা, বলল কিশোর।
ধন্যবাদ, জানাল মুসা।
ইউ আর ওয়েলকাম, বলল কিশোর।
আমি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হলে তোমাকে এফ.বি.আই. চীফ করব, বলল রবিন।
হাই তুলল মুসা।
না, আমাকে বরং খাদ্যমন্ত্রী কোরো।
আঁধারে ফিক করে হেসে ফেলল তিন বন্ধ। মাথার উপরে তারা। মিটমিট করছে, ধীরে ধীরে ঘুমে তলিয়ে গেল ওরা।