I say them that seldom have I ever received a letter which has afforded me more real joy. I could almost weep for joy. you are now at least in your right place-your proper sphere-a sphere in which, if spared. You have before you a long, honorable and distinguished career, alike of usefulness to your self and benefit poor bleeding country.
এই চিঠিতে ডফ সাহেব দক্ষিণারঞ্জন সম্পর্কে তাঁর ধারণা প্রকাশ করেছেন, যা দক্ষিণারঞ্জনের চরিত্রের প্রকৃত গ্রহণযোগ্য আলেখ্য। দেশের মানুষ, কিংবা বিদেশিরা তাঁকে চিনেছিল কি? এতটা সাফল্য ঈর্ষার কারণ তো হবেই। সেই এডওয়ার্ড সাহেব দক্ষিণারঞ্জনকে তখনও অব্যাহত দেননি। কুৎসার পর কুৎসা রটনা করেই চলেছেন। ডফ সাহেব লিখছেন, ৩০ বছর আগে প্রথম দেখাতেই আমি তোমার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলুম you are so frank, so open, so manly, so straight forward, so energetic, so overflowing also with generous and benevolent impulses. That I felt irresistibly drawn to you. And never never for a moment was my own confience in you shaken.
কেন রাজবধূ বসন্তকুমারী রাজগৃহ পরিত্যাগ করে তাঁর সঙ্গে বর্ধমানের পথে নেমেছিলেন? ডফ সাহেবের এই উক্তি থেকেই বোঝা যায়! প্রকৃত একজন পুরুষ। অপ্রতিরোধ্য তাঁর আকর্ষণ। সহজ, সরল, উদার, উপকারী, দয়ালু। তিরিশ বছরেও আলেকজান্ডার ডফের তাঁর প্রতি আকর্ষণ এতটুকু কমেনি। দুর্জয় সাহসী এই মানুষটি যখন অযোধ্যায় এলেন, তখন বিদ্রোহের আগুন নিবে গেলেও ধোঁয়া উঠছে। ইংরেজদের শাসনের মুঠো দৃঢ় হচ্ছে। ভারতবর্ষকে বিদেশিরা এইবার বজ্রমুষ্টিতে ধরবেন। এই সব সায়েবদের সঙ্গে সমানে টক্কর দিয়ে চলবেন। প্রয়োজনে সমালোচনা করবেন, প্রতিবাদ করবেন। তাঁর চাপে উচ্চ পদস্থ ইংরেজ অফিসার বদলি হবেন। তৎকালের অযোধ্যাবাসী তাঁদের এমন একজন সুহৃদকে পেলেন, যিনি ইংরেজ শাসনের চড়া আলোয় ভালোবাসার ছত্রচ্ছায়া। দীর্ঘকাল ধরে এই অঞ্চলের তালুকদাররা নিজেদের ভোগ-সুখের কথাই ভেবেছেন। এতদিনে এমন একজন এলেন যিনি জনহিতের কথা ভাবেন। যাঁর লক্ষ্য সমাজের সর্বস্তরের সর্ব বিষয়ে উন্নতি। বিদ্রোহদীর্ণ একটি প্রদেশকে গড়ে তোলা। প্রকারান্তরে বিদেশি শাসকদের জনমুখী করে তোলা।
সংস্কারমূলক প্রথম কাজটি হল–শিশুহত্যা নিবারণ। অযোধ্যা প্রদেশে বসবাসকারী রাজপুতরা শিশুকন্যাদের বধ করতেন। দক্ষিণারঞ্জনের চেষ্টায় এই নৃশংস প্রথা বন্ধ হল। এরপর ভূমি সংক্রান্ত প্রচলিত আইনের সংস্কার। দুটি পত্রিকা প্রকাশ করলেন, সমাচার হিন্দুস্থানি ও ভারত পত্রিকা। তাঁরই প্রচেষ্টায় আমিনাবাদ প্রাসাদে স্থাপিত হল ক্যানিং স্কুল। পরে এটি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে উন্নীত হল কলেজে। কয়েক বছর পরে আইন বিভাগও চালু হল। স্থাপিত হল অভিজাত ওয়ার্ড ইনস্টিটিউশন ও নৈশ বিদ্যালয়। নিজের তালুকে চালু করলেন একটি দাঁতব্য চিকিৎসালয়। খরচ চালাবার জন্যে ৪৮০ একর জমি দান করলেন।
শুধু অযোধ্যা প্রদেশে নয় সারা ভারতে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ল। অতঃপর এল সেই দিন– ১৮৭১ সালের ৫ মে, তিনি রাজ উপাধিতে ভূষিত হলেন। সনদ–ভারত সরকারের মোহর, ফরেন ডিপার্টমেন্ট–
To
Rajhah Dakshina Ranjan Mookherjee, Talooqdar of Oudh in consideration of your meritorius endeavours to promote the good of the province of Oudh, I hereby confer upon you the title of Raja as a personal distinction. (Sd) Mayo.
Dated, Simla, the 5th May, 1871
ডাক্তার ডফ এডিনবরা থেকে লিখলেন। তিনি অসুস্থ। পূর্বের কর্মশক্তি নেই, কিন্তু ভারত সম্পর্কে তাঁর আগ্রহ এতটুকু কমেনি। তিনি খুশি, ভীষণ খুশি। তিনি জানতেন স্বীকৃতি আসবেই; একটু দেরিতে এল–Better late then never.
আর মাত্র তিন বছর। বেশ যখন জমে উঠছে যশ, খ্যাতি, প্রতিপত্তি, বাদ-বিবাদ-বিসম্বাদ। বড় গাছে বাতাস বেশি ধরে। সে বাতাস প্রতিহত করার ক্ষমতা রাজার ছিল। ভেবেছিলেন, সাগর পারে, ইংল্যান্ডে যাবেন। শেষ পর্যন্ত যাওয়া হল না অজ্ঞাত কারণে। ইন্দোরের রাজা হোলকার তাঁকে প্রধানমন্ত্রী করতে চাইলেন, দক্ষিণারঞ্জন প্রত্যাখ্যান করলেন বিনীতভাবে, অজ্ঞাতকারণে। ইংরেজ সরকার এবং অযযাধ্যাবাসী দেশীয়রা–উভয়েই দক্ষিণারঞ্জনের প্রতি কৃতজ্ঞ। তিনি বিদ্রোহের পর যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছিল তা দূর করে মৈত্রীর বাতাবরণ সৃষ্টি করেছিলেন, যা একা ইংরেজদের পক্ষে করা কখনওই সম্ভব হত না। স্যার রোপার লেথব্রিজ লিখলেন :
He did much to remove the racial antipathies between the English and the Indians.
কৃতজ্ঞ অযোধ্যাবাসীরা মহারাজ দিগ্বিজয় সিং-এর প্রতিনিধিত্বে একটি সভা আহ্বান করে দক্ষিণারঞ্জনকে স্বর্ণপদক প্রদান করলেন। একদিকে ইংরেজি অন্য দিকে পারস্য ভাষায় Grah 007: Oudhs love and gratitude through its British Indian Association to Baboo Dakshina Ranjan Mukherjee Bahadur.
দিনের আলো কি কমছে? আসল মানুষটি কোথায়। রাজনারায়ণ বুঝতে পারছেন না, তিনি। ব্রাহ্ম, না টিকিধারী ব্রাহ্মণ। মহর্ষির বেদ, না, রামমোহনের উপনিষদ! ব্রিটিশ বন্ধু, না ভারত বন্ধু। নিঃসন্দেহে এক কৃতী স্টেটসম্যান। তাঁর পারিবারিক জীবন? প্রথম স্ত্রী জ্ঞানদাসুন্দরী তাঁকে একটি গুণী, অসীম পিতৃভক্ত কন্যা দিয়েছে মুক্তকেশী। মুক্তকেশী প্রতিটি দিন শুরু করেন পিতাকে একটি চিঠি লিখে। মুক্তকেশী শিল্পী! দক্ষিণারঞ্জন খুব ভালোবাসেন। বিবাহ। দিয়েছেন, স্বনামধন্য মহাত্মা হরিমোহন ঠাকুরের প্রপৌত্র ললিতমোহন ঠাকুরে পুত্র। রঘুনন্দনের সঙ্গে। মুক্তকেশীর তিন কন্যা, এক পুত্র রণেন্দ্রমোহন। দক্ষিণারঞ্জনের প্রাণপ্রতিম রণজিৎ। বহু গুণের অধিকারী-সুপুরুষ।