সীতেশ বল্লেন, “তোমাদের কথা আলাদা। তোমাদের একজন কবি, একজন ফিলজফার, আর একজন সাহিত্যিক,সুতরাং তোমাদের কোন্ কথা সত্য আর কোন্ কথা মিথ্যে, তা কেউ ধরতে পারবে না। কিন্তু আমি হচ্ছি সহজ মানুষ, হাজারে ন’শ নিরনব্বই জন যেমন হয়ে থাকে, তেমনি। আমার কথা যে খাঁটি সত্য, পাঠকমাত্রেই তা নিজের মন দিয়েই যাচাই করে নিতে পারবে।”
আমি বল্লুম—”যদি সকলের মনের সঙ্গে তোমার মনের মিল থাকে, তাহলে তোমার মনের কথা প্রকাশ করায় ত তোমার লজ্জা পাবার কোনও কারণ নেই।” সীতেশ বল্লেন, “বাঃ, তুমিত বেশ বল্লে! আর পাঁচজন যে আমার মত, এ কথা সকলে মনে মনে জানলেও, কেউ মুখে তা স্বীকার করবে না, মাঝ থেকে আমি শুধু বিজপের ভাগী হব।” এ কথা শুনে সোমনাথ বল্লেন, “দেখ রায়, তাহলে এক কাজ কর,– সীতেশের গল্পটা আমার নামে চালিয়ে দেও, আর আমার গল্পটা সীতেশের নামে!” এ প্রস্তাবে সীতেশ অতিশয় ভীত হয়ে বল্লেন, “না না, আমার গল্প আমারই থাক। এতে নয় লোকে দুটো ঠাট্টা করবে, কিন্তু সোমনাথের পাপ আমার ঘাড়ে চাপলে আমাকে ঘর ছাড়তে হবে!”–
এর পরে আমরা সকলে স্বস্থানে প্রস্থান করলুম।
জানুয়ারি, ১৯১৬।