জড়ো হওয়া মানুষজন হরষে-বিষাদে যে যার বাড়ি ফিরে গেল।
ফেরার পথে কবরেজমশাই জিজ্ঞেস করলেন, “শশীখুড়ো, আপনার অসুস্থতাটা না হয় সাজানো হতেই পারে, কিন্তু আমি নাড়ি ধরে বুঝতে পারলাম না কেন?”
“বলেছি তো, নাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া আছে। অভ্যাস করলেই হয়।”
“আর আপনার গলায় আঙুলের ছাপটা? সেটাও কি নকল?”
“বটেই তো! হাতটাকে বলেছিলুম, গলায় ছাপ ফেলতে। সে আলতোভাবে এমন সুন্দর ছাপ ফেলল যে, তুমি অবধি ধরতে পারোনি।”
“ক্ষান্তমণি কি সবই জানত?”
“জানবে না? খুব জানত।”
.
কুঞ্জপুকুরে আজ ভারি আনন্দের দিন। হাতটা নেই বটে, কিন্তু শশী গাঙ্গুলির এই বেঁচে-ওঠায় গাঁয়ের লোক খুব খুশি। খুশির আরও কারণ আছে। সদাশিব দারোগা এখন খুব তৎপরতার সঙ্গে গাঁয়ের শান্তিরক্ষা করছেন। চোর-গুণ্ডা বদমাশরা আর ত্রিসীমানায় নেই। গাঁয়ের লোকেরা এখন সদা সতর্ক। চণ্ডীমণ্ডপে বিকেলবেলায় শশীবাবুকে একটা সংবর্ধনা দেওয়া হল। শশীবাবু অনেক স্মৃতিচারণ করে বললেন, “আমার আজ এই ভেবে খুব আনন্দ হচ্ছে যে, নন্দ কবিরাজের তেতো পাঁচনগুলো এখন আর খেতে হবে না।”
সবাই খুব হাততালি দিল।
সদাশিব বললেন, “দেশে চোর-ডাকাতের প্রয়োজন আছে। তাতে লোক তৎপর আর সতর্ক হতে শেখে।”
।সবাই হাততালি দিল।
কবরেজমশাই বললেন, “পাঁচন অতি ভাল জিনিস। আমি শশীখুড়োর জন্য চমৎকার একটা পাঁচন তৈরি করেছি। কাল থেকেই খাওয়াব। কারণ, তাঁকে বাঁচিয়ে রাখা আমাদের নিজেদের স্বার্থেই দরকার।”
ফের তুমুল হাততালি পড়ল।