১২. কুঞ্জভঙ্গ
কুঞ্জভঙ্গ ।। সুহই ।।
পদউধ কাক, কোকিলের ডাক,
জানাইল রজনী শেষ।
তুরিতে নাগরী, গেলা নিজ ঘরে,
বাঁধিতে বাঁধিতে কেশ।।
অবশ আলিসে, ঠেসনা বালিসে,
ঘুমে ঢুলু ঢুলু আঁখি।
বসন ভূষণ, হৈয়াছে বদল,
তখন উঠিয়া দেখি।।
ঘরে মোর বাদী, শাশুড়ী ননদী
মিছা তোলে পরিবাদ।
জানিলে এখন, হইবে কেমন,
বড় দেখি পরমাদ।।
চণ্ডীদাস কহে, শুনলো সুন্দরি,
তুমি সে বড়ুয়ার বহু।
শ্যামের মোহন, গুণের কারণ,
লখিতে নারিবে কেহু।।
————–
পদউধ – দৈয়াল।
জানাইল রজনী শেষ – পাঠান্তর–“জাগিয়া যামিনী শেষ।”–প, ক, ত।
জানিলে এখন, হইবে কেমন, বড় দেখি পরমাদ – পাঠান্তর–“কানুর পিরীতি, কি জানি হইল, বড় দেখি পরমাদ।।”-প্রা, কা, সং।
বহু – বধু।
গুণের – পাঠান্তর-“মায়ার।” প্রা, কা, সং।
লখিতে নারিবে কেহু – বিভিন্নপাঠ–“রাখিতে না পারে কেহ।।”–প, ক, ত।
কুঞ্জভঙ্গ ।। ধানশী ।।
প্রভাতকালের কাক, কোকিল ডাকিল
দেখিয়া রজনী শেষ।
উঠিয়া নাগর, তুরিত গেল যে,
বাঁধিতে বাঁধিতে কেশ।।
সই তোরে সে বলিয়া কথা।
সে বঁধু কালিয়া, না গেল বলিয়া,
মরমে রহল ব্যথা।।
রহিয়া আলিসে, ঠেসনা বালিসে,
ঢুলু ঢুলু দুটি আঁখি।
বসনে বসনে বদল হৈয়াছে,
এখন উঠিয়া দেখি।।
ঘরে মোর বাদী, শ্বাশুড়ী ননদী,
মিছা করে পরিবাদ।
ইহাতে এমন, করিব কেমন,
কি হইল পরমাদ।।
চণ্ডীদাস কহে, মনের আহ্লাদে,
শুনহে রসিক জন।
সদা জ্বালা যার, তবে সে তাহার,
মিলয়ে পিরীতি ধন।।
————–
কুঞ্জভঙ্গ ।। সিন্ধুড়া ।।
আজুকার নিশি, নিকুঞ্জে আসি,
করিল বিবিধ রাস।
রসের সাগরে, ডুবাইল মোরে,
বিহানে চলিল বাস।।
শুনহে সুবল সখা।
সে হেন সুন্দরী, গুণের আগরি,
পুন কি পাইব দেখা?
মদনে আগুলি, গলে গলে মিলি,
চুম্বন করিল যত।
কেশ বেশ যদি, বিথার হইল,
তাহা বা কহিব কত?
অশেষ বিশেষ, বচন কহিয়া,
আবেশে কইয়া কোরে।
অঙ্গের পরশে, হিয়া ডুবাইল,
কেমনে পাসরি তারে?
চণ্ডীদাস কহে, শুনহে নাগর!
এ বড় লাগল ধন্ধ।
সে রাধা রমণী, রস শিরোমণি,
তোমারে করল বন্ধ।
————–
আগরি – আগার–ডালি। বিথার – বিস্তার–বিস্তৃত।
১৩. রসোদ্গার
রজনী বিলাস কহয়ে রাই।
সব সখীগণ বদন চাই।।
আঁখি ঢুলু ঢুলু অলস ভরে।
ঢুলিয়ে পড়িল সখীরে কোরে।।
নয়নের জলে ভাসয়ে মুখ।
দেখি সখী কহে, কহনা দুঃখ।।
ফুঁপায়ে ফুঁপায়ে কাঁদয়ে রাধা।
কহে চণ্ডীদাস নাগর ধান্দা।।
————–
রসোদ্গার ।। ধানশী ।।
রসোদ্গার ।। সিন্ধুড়া ।।
রাই, আজু কেন হেন দেখি।
আঁখু ঢুলু ঢুলু, ঘুমেতে আকুল,
জাগিয়াছ বুঝি নিশি।।
রসের ভরেতে, অঙ্গ নাহি ধরে,
বসন পড়িছে খসি।
স্বরূপ করিয়া, কহনা আমারে,
মনের মরম সখি।।
এক কহিতে, আন কহিতেছে,
বচন হইয়া হারা।
রসিয়ার সনে, কিবা রস রঙ্গে,
সঙ্গ হয়েছে পারা।।
ঘন ঘন তুমি, মুড়িতেছ অঙ্গ,
সঘনে নিশ্বাস ছাড়।
স্বরূপ করিয়া, কহনা কহসি,
কপট কেন বা কর।।
ভালের সিন্দূর, আধেক আছয়ে,
নয়নে আধ কাজল।
চাঁদ নিঙ্গাড়িয়া, এমন করিয়া,
কেবা নিল এ সকল।।
চণ্ডীদাসে কয়, যেবা সেই হয়,
ভালে ভুলাইলে কাজ।
সঙ্গের সঙ্গিনী, বঞ্চিতে নারিবে,
কিবা কর আর লাজ।।*
————–
রসিয়ার – রসিকের।
* পদকল্পতরুতে কৃষ্ণপ্রসাদের ভণিতাযুক্ত দৃষ্ট হয় বস্তুতঃ তাহা নহে। পদসমুদ্রগ্রন্থে চণ্ডীদাসের ভণিতা আছে। পদসমুদ্র ১৬০৫।
রসোদ্গার ।। ধানশী ।।
ঐছন শুনইতে, মুগধ রমণী।
সখীগণ ইঙ্গিতে, অবনত বয়নী।।
লাগে বচন নাহি করে পরকাশ।
সখীগণে কহইতে, প্রিয়তম ভাষ।।
কহইতে না কহসি, রজনীকো কাজ।
আমার শপথি তোয়ে যদি কর লাজ।।
পহিল সমাগমে, হইল যত সুখ।
পুনহি মিলনে পাওব কত সুখ।।
ঐছন বচন শুনি, কহে মৃদু ভাষি।
চণ্ডীদাস ইহ রস পরকাশী।।*
————–
পহিল – প্রথম।
* পদসমুদ্র ১৬০৬।
রসোদ্গার ।। সুহই ।।
কহে সুবদনী, শুন গো সজনি,
দুঃখ কি বলিব আর।
কি করি এখন, জুড়াই জীবন,
বদন দেখিব তার।।
তাহার আরতি কিবা দিবা রাতি,
ভুলিতে নাহিক পারি।
মনে হলে মুখ, ফাটে মোর বুক,
গুমরে গুমরে মরি।।
সহেনাক আর, করি অভিসার
আজি হই বলরাম।
যশোদা মন্দিরে, যাইব সত্ত্বরে,
ভেটিব নাগর কান।।
শুনিয়া ললিতা, হাসি কহে কথা,
বলাই সাজিলে পরে।
চণ্ডীদাস ভণে, যশোদা যতনে
সঁপিবে তোমার করে।।
————–
আরতি – আশক্তি; আদর। অভিসার – নায়ক সহবাসার্থ সঙ্কেত স্থানে গমন। ভেটিব – সাক্ষাৎ করিব।
প্রথম পহর নিশি, সুস্বপন রাশি। ধ্রু।
সব কথা কহিয়ে তোমারে।
বসিয়া কদম্ব তলে, সে কানু করিছে কোলে,
চুম্ব দিছে বদন কমলে।।
অঙ্গে দেই চন্দন, বলে মধুর বচন,
আরে বাঁশী বায় সুমধুরে।
চাহিলেন সুরতি, না দিনু যে পাপমতি,
দেখিনু কানু দোয়জ পহরে।।
তৃতীয় পহর নিশে, শ্যামের কোলেতে বসি,
নেহারনু সে চাঁদ বদনে।
ঈষৎ হাসন করি, প্রাণ মোর নিল হরি,
বেয়াকুলি হইনু মদনে।।
চতুর্থ পহরে কান, করিল অধর পান,
মোরে ভেল রতি অশোয়াসে।
দারুণ কোকিল নাদে, ভাঙ্গিল মোহর নিদে,
রহ গাইল বড়ু চণ্ডীদাসে।।
————–
রসোদ্গার ।। বিভাস ।।
বায় – বাজে। সুরতি – রতিক্রীড়া। দোয়জ – দ্বিতীয়।
১৪. অনুরাগ–নায়ক সম্বোধনে
অনুরাগ।–নায়ক সম্বোধনে ।। ধানশী ।।
ভাদরে দেখিনু নটচাঁদে।
সেই হৈতে উঠে মোর কানু পরিবাদে।।
এতেক যুবতীগণ আছয়ে গোকূলে।
কলঙ্ক কেবল লেখা মোর সে কপালে।
স্বামী ছায়াতে মারে বাড়ী।
তার আগে কুকথা কয় দারুন শ্বাশুডী।।
ননদিনী দেখয়ে চোকের বালী।
শ্যাম নাগর! তোমায় পাড়ে গালি।।
এ দুঃখে পাঁজর হৈল কাল।
ভাবিয়া দেখিনু এবে মরণ সে ভাল।।
দ্বিজ চণ্ডীদাসে পুনঃ কয়।
পরের বচনে কি আপন পর হয়?
————–
ভাদরে – ভাদ্রে। নটচাঁদে – নষ্টচন্দ্রে।
অনুরাগ।–নায়ক সম্বোধনে ।। সিন্ধুড়া ।।
যখন পিরীতি কৈলা, আনি চাঁদ হাতে দিলা,
আপনি করিতা মোর বেশ।
আঁখির আড় নাহি কর, হিয়ার উপরে ধর,
এবে তোমা দেখিতে সন্দেশ।।
একে হাম পরাধিনী, তাহে কুল কামিনী,
ঘর হৈতে আঙ্গিনা বিদেশ।
এত পরমানে প্রাণ, না যায় তবুত আন,
আর কত কহিব বিশেষ।।
ননদী বিষের কাঁটা, বিষ মাখা দেয় খোঁটা,
তাহে তুমি এত নিদারুণ।
কবি চণ্ডীদাস কয়, কিবা তুমি কর ভয়,
বন্ধু তোর নহে অকরুন।।
————–
এবে তোমা দেখিতে সন্দেশ – এখন তোমার সস্বাদ পাওয়া যায় না।
অনুরাগ।–নায়ক সম্বোধনে ।। ধানশী ।।
যখন নাগর, পিরীতি করিলা,
সুখের না ছিল ওর।
সোতের সেঁওলা, ভাসাইয়া কালা,
কাটিলা প্রেমের ডোর।।
মুঞিত অবলা, অখলা হৃদয়,
ভাল মন্দ নাহি জানি।
বিরলে বসিয়া, চিত্রেতে লিখিয়া,
বিশাখা দেখালে আনি।।
পিরীতি মূরতি, কোথা তার স্থিতি,
বিবরণ কহ মোরে।
পিরীতি বলিয়া, এ তিন আখর,
এত পরমাদ করে।।
পিরীতি বলিয়া, এ তিন আখর,
ভুবনে আনিল কে?
অমৃত বলিয়া, গরল ভক্ষিণু,
বিষেতে জ্বারিল দে।।
নদীর উপরে, জলের বসতি,
তাহার উপরে ঢেউ।
তাহার উপর, রসিকের বসতি,
পিরীতি না জানে কেউ।।
চণ্ডীদাস কয়, দুই এক হয়,
ভাবে সে পিরীতি রয়।
(নতু) খলের পিরীতি, তুষের আনল,
ধিকি ধিকি যেন বয়।।
————–
অনুরাগ।–নায়ক সম্বোধনে ।। পঠমঞ্জরী ।।
তোমার প্রেমে বন্দী হৈলাম শুন বিনোদ রায়!
তোমা বিনে মোর চিতে কিছুই না ভায়।।
শয়নে স্বপনে আমি তোমার রূপ দেখি।
ভরমে তোমার রূপ ধরণীতে লেখি।।
গুরু জন মাঝে যদি থাকিয়ে বসিয়া।
পরসঙ্গে নাম শুনি দরবয়ে হিয়া।।
পুলকে পূরয়ে অঙ্গ, আঁখে ঝরে জল।
তাহা নেহারিয়ে আমি হইয়ে বিকল।।
নিশি দিশি বন্ধু তোমায় পাসরিতে নারি।
চণ্ডীদাস কহে হিয়ায় রাখ স্থির করি।।
————–
ভায় – দীপ্তি পায়।
দরবয়ে – দ্রব হয়। “দড়বড়ে” পাঠও আছে।
পূরয়ে – পূরণ করে।
নেহারিয়ে – দেখিয়া।
বিকল – বিহ্বল, কাতর।
অনুরাগ।–নায়ক সম্বোধনে ।। সুহই ।।
কি মোহিনী জান বঁধু কি মোহিনী জান।
অবলার প্রাণ নিতে নাহি তোমা হেন।।
রাতি কৈনু দিবস, দিবস কৈনু রাতি।
বুঝিতে নারিনু বঁধু তোমার পিরীতি।।
ঘর কৈনু বাহির, বাহির কৈনু ঘর।
পর কৈনু আপন, আপন কৈনু পর।।
কোন বিধি সিরজিল সোতের সেঁওলি।
এমন ব্যথিত নাই ডাকি বন্ধু বলি।।
বঁধু যদি তুমি মোরে নিদারুণ হও।
মরিব তোমার আগে দাঁড়াইয়া রও।।
বাশুলী আদেশে দ্বিজ দণ্ডীদাস কয়।
পরের লাগিয়ে কি আপন পর হয়।।
————-
অনুরাগ।–নায়ক সম্বোধনে ।। তুড়ি ।।
তোমারে বুঝাই বঁধু তোমারে বুঝাই।
ডাকিয়া সুধায় মোরে হেন জন নাই।।
অণুক্ষণ গৃহে মোর গঞ্জয়ে সকলে।
নিচয় জানিও মুঞি ভখিমু গরলে।।
এ ছার পরাণে আর কিবা আছে সুখ?
মোর আগে দাঁড়াও তোমার দেখিব চাঁদ মুখ?
খাইতে সোয়াস্তি নাই নাহি টুটে ভুক।
কে মোর ব্যথিত আছে কারে কব দুখ।।
পরের বোলে কেবা প্রাণ ছাড়িবার চায়?
চণ্ডীদাস কহে রাই ইহা না যুয়ায়।।
————–
গঞ্জয়ে – গঞ্জনা দেয়। নিচয় জানিও মুঞি ভখিমু গরলে – নিশ্চয় জানিও আমি বিষ খাইব।
অনুরাগ।–নায়ক সম্বোধনে ।। সুহই ।।
হেদে হে বিনোদ রায়।
ভাল হৈল ঘুচাইল পিরীতের দায়।।
ভাবিতে গণিতে তনু হৈল অতি ক্ষীণ।
জগ ভরি কলঙ্ক রহিল চির দিন।।
তোমার সনে প্রেম করি কি কাজ করিনু।
মৈলাম লাগে মিছা কাজে দগদগি হৈনু।।
না জানি অন্তরে মোর হৈল কিবা ব্যথা।
একে মরি নানা দুঃখে আর নানা কথা।।
শয়নে স্বপনে বন্ধু সদা করি ভয়।
কাহার অধীন যেন তোমার প্রেম নয়।।
ঘায়ে না মরিয়ে বন্ধু মরি মিছা দায়।
চণ্ডীদাস কহে কার কথায় কিবা যায়।।
————–
জগ ভরি কলঙ্ক রহিল চির দিন – বিভিন্নপাঠ–“জগভরি কলঙ্ক রহিল এই চিন।” প, ক, ত। জগ – জগৎ।
একে মরি নানা দুঃখে আর নানা কথা – বিভিন্নপাঠ–“একে মরি মনোদুখে আর নানা কথা।” প, ক, ত।
অনুরাগ।–নায়ক সম্বোধনে ।। শ্রীরাগ ।।
সকলি আমার দোষ, হে বন্ধু,
সকলি আমার দোষ।
না জানিয়া যদি, কৈরাছি পিরীতি,
কাহারে করিব রোষ।।
সুধার সমুদ্র, সমুখে দেখিয়া
আইনু আপন সুখে।
কে জানে খাইলে, গরল হইবে,
পাইব এতেক দুখে।।
সো যদি জানিতাম, অলপ ইঙ্গিতে,
তবে কি এমন করি।
জাতি কুল শীল, মজিল সকল,
ঝুরিয়া ঝুরিয়া মরি।।
অনেক আশার, ভরসা মরুক,
দেখিতে করয়ে সাধ।
প্রথম পিরীতে, তাহার নাহিক
বিভাগের আধের আধ।।
যাহার লাগিয়া, যে জন মরয়ে,
সেই যদি করে আনে।
চণ্ডীদাস কহে, এমনি পিরীতি,
করয়ে সুজন সনে।।
————–
সো যদি জানিতাম – পাঠান্তর–“মো যদি জানিতাম।” প, ক, ত।
অনুরাগ।–নায়ক সম্বোধনে ।। কামোদ ।।
বন্ধু কহিলে বাসিবে মনে দুখ।
যতেক রমণী ধনী, বৈঠয়ে জগত মাঝে,
না জানি দেখয়ে তুয়া মুখ।।
লোক মুখে জানিনু, লখি আগে না দেখিনু,
আমারে কুমতি দিল বিধি।
না বুঝিয়া করে কাজ, তার মুণ্ডে পড়ে বাজ,
দুঃখ রহে জনম অবধি।।
কেন হেন বেশ ধর, পরের পরাণ হর,
স্ত্রী বধিতে ভয় নাহি কর?
গগন ইন্দু আনিয়া, করে করে দর্শাইয়া,
এবে কেন এমনি আচর?
পিরীতি পরশে যার, হিয়া নাহি দরবয়ে,
সে কেনে পিরীতি করে সাধ?
দ্বিজ চণ্ডীদাসে কয়, মোর মনে হেন লয়,
ভাঙ্গিলে গড়িতে পরমান।।
————–
লখি- লক্ষ করিয়া।
অনুরাগ।–নায়ক সম্বোধনে ।। ভাটিয়ারি ।।
তুমি ত নাগর, রসের সাগর,
যেমত ভ্রমর রীত।
আমি ত দুঃখিনী, কুল কলঙ্কিনী,
হইনু করিয়া প্রীত।।
গুরু জন ঘরে, গঞ্জয়ে আমারে,
তোমারে কহিব কত।
বিষম বেদন, কহিলে কি যায়,
পরাণ সহিছে যত।।
অনেক সাধের, পিরীতি বন্ধু হে,
কি জানি বিচ্ছেদ হয়।
বিচ্ছেদ হইলে, পরাণে মরিব,
এমনি সে মনে লয়।।
চণ্ডীদাস কহে, পিরীতি বিষম,
শুনহ বড়ুয়ার বহু।
পিরীতি বিষদ হইলে বিপদ,
এমন না হউ কেহু।
————–
বিষদ – বিষদাতা।