হে রাজেন্দ্র তোমা-কাছে নত হতে গেলে
হে রাজেন্দ্র তোমা-কাছে নত হতে গেলে
যে ঊর্ধ্বে উঠিতে হয়,সেথা বাহু মেলে
লহো ডাকি সুদুর্গম বন্ধুর কঠিন
শৈলপথে; অগ্রসর করো প্রতিদিন
যে মহান পথে তব বরপুত্রগণ
গিয়াছেন পদে পদে করিয়া অর্জন
মরণ-অধিক দুঃখ।
ওগো অন্তরযামী,
অন্তরে যে রহিয়াছে অনির্বাণ আমি
দুঃখে তার লব আর দিব পরিচয়।
তারে যেন ম্লান নাহি করে কোনো ভয়,
তারে যেন কোনো লোভ না করে চঞ্চল।
সে যেন জ্ঞানের পথে রহে সমুজ্জ্বল,
জীবনের কর্মে যেন করে জ্যোতি দান,
মৃত্যুর বিশ্রাম যেন করে মহীয়ান।
হে রাজেন্দ্র,তব হাতে কাল অন্তহীন
হে রাজেন্দ্র,তব হাতে কাল অন্তহীন।
গণনা কেহ না করে, রাত্রি আর দিন
আসে যায়, ফুটে ঝরে যুগযুগন্তরা।
বিলম্ব নাহিক তব, নাহি তব ত্বরা–
প্রতীক্ষা করিতে জান। শতবর্ষ ধ’রে
একটি পুষ্পের কলি ফুটাবার তরে
চলে তব ধীর আয়োজন। কাল নাই
আমাদের হাতে; কাড়াকাড়ি করে তাই
সবে মিলে; দেরি কারো নাহি সহে কভু।
আগে তাই সকলের সব সেবা, প্রভু,
শেষ করে দিতে দিতে কেটে যায় কাল–
শূন্য পড়ে থাকে হায় তব পূজা-থাল।
অসময়ে ছুটে আসি, মনে বাসি ভয়–
এসে দেখি, যায় নাই তোমার সময়।
হে সকল ঈশ্বরের পরম ঈশ্বর
হে সকল ঈশ্বরের পরম ঈশ্বর,
তপোবনতরুচ্ছায়ে মেঘমন্দ্রস্বর
ঘোষণা করিয়াছিল সবার উপরে
অগ্নিতে, জলেতে, এই বিশ্বচরাচরে,
বনস্পতি ওষধিতে এক দেবতার
অখন্ড অক্ষয় ঐক্য। সে বাক্য উদার
এই ভারতেরি।
যাঁরা সবল স্বাধীন
নির্ভয় সরলপ্রাণ, বন্ধনবিহীন
সদর্পে ফিরিয়াছেন বীর্যজ্যোতিষ্মান
লঙ্ঘিয়া অরণ্য নদী পর্বত পাষাণ
তাঁরা এক মহান বিপুল সত্য-পথে
তোমারে লভিয়াছেন নিখিল জগতে।
কোনোখানে না মানিয়া আত্মার নিষেধ
সবলে সমস্ত বিশ্ব করেছেন ভেদ।