- বইয়ের নামঃ সাত সাগরের মাঝি
- লেখকের নামঃ ফররুখ আহমদ
- প্রকাশনাঃ স্টুডেন্ট ওয়েজ
- বিভাগসমূহঃ কবিতা
আউলাদ
অনেক ঝড়ের দোলা পার হ’য়ে এল সে নাবিক।
অনেক ক্ষুধিত রাত্রি, আর বহু সামুদ্রিক
চঞ্চল করেছে তারে, অন্ধকারে হারায়েছে দিক,
কালা-পানি ঘিরে ঘিরে ডাকিয়াছে মৃত্যুর দূতীরা,
ভেঙে-পড়া জাহাজের বেকে যাওয়া খোল ভ’রে তার
উঠিয়াছে ব্যর্থতার দেসিক্ত চরম নিরাশা,
সম্মুখে ডেকেহে তারে হিংস্র-নীল তিমির পাথার;
অচেনা জগতে তবু সে নাবিক খুজে পেল বাসা।
যদিও দু’চোখ তার দুঃস্বপ্নের কালো ভয়ে ভরা
যদিও বিবর্ণ ওঠে লেগে আছে মৃত্যুর আস্বাদ,
তবু জীর্ণ জাহাজের ভাঙা খোল আজ জয়ে ভরা
পশ্চাতে জাগিয়েছে শুধু সে দুঃসহ স্মৃতির নিষাদ,
বহু ঝড় পার হয়ে এনেছে সে সম্পূর্ণ পশরা,
মানুষের আউলাদ ফিরেছে বিজয়ী সিন্দবাদ।
দুর্গম সমুদ্র পারে আরেক অচেনা লোকে
দেখিয়ে সে মানুষের ঘর
জীবন্ত কবর,
যেথা বাসা বেঁধে আছে দাম্ভিকের মৃত মরু মন
পাথর জমানো প্রহসন।
সারে সারে
কাতারে কাতারে
চলে ভারবাহী দল,
গাঁইতি, শাবল নিয়ে
কলম, লাঙল নিয়ে,
শ্রান্ত পদতল
চলে যাত্রীদল,
চলে ক্ষুধাতুর শিশু শীর্ণদাঁড়া, আর
চলিতেছে অসংখ্য কাতার
পার হ’য়ে মরু, মাঠ, বন।
মানুষের আদালত ঘরে
পাথর-জমানো প্রহসন।
চলে দল বেঁধে শিশু ওষ্ঠে তুলি জীবনের
পানপাত্র সুতীব্র বিস্বাদ
মানুষের বুভুক্ষু মুমূর্ষ আউলাদ!
জড়তার–
পাথর জমানো পথ,
এ বীভৎস সভ্যতার
গড়খাই কাটা পথ
আঁধারে ঢাকিয়া আকাশের
ডাকে তাহাদেরে।।
এ কোন পরিখা?
এখানে জ্বলিছে শুধু ক্ষুধাতু দিবসের শিখা
বিষাক্ত ধোঁয়ার কুজঝটিকা
মৃত্যুর বিকট বিভীষিকা।
মজলুম মনের বোঝা, ভারাক্রান্ত বেদনা অগাধ,
আমি মাকে লাথি খেয়ে চলে আজ আদমের মৃত আউলাদ,
শয়তানের ডরে;
বীভৎস করে;
জটিল গহ্বরে।
দল বেঁধে চলিছে শিশুরা মড়কের পথে,
কুৎসিত কুটিল প্রান্তে অন্ধকার শড়কে বিপথে
যেখানে প্রত্যেক প্রান্তে আজাজিল পাতিয়াছে ফাঁদ
তারি পানে, দুর্নিবার টানে চলে আজ মানুষের
দুর্বল, বিশীর্ণ আউলাদ।
আমি দেখি পথের দু’ধারে ক্ষুধিত শিশুর শব,
আমি দেখি পাশে পাশে উপচিয়া পড়ে যায়
ধনিকের গর্বিত আসব,
আমি দেখি কৃষাণের দুয়ারে দুর্ভিক্ষ বিভীষিকা,
আমি দেখি লাঞ্জিতের ললাটে জ্বলিছে শুধু অপমান টিকা,
গর্বিতের পরিহাসে মানুষ হয়েছে দাস,
নারী হ’ল লুণ্ঠিতা গণিকা।
অনেক মঞ্জিল দূরে পড়ে আছে মানুষের ঘাঁটি,
এখানে প্রেতের বহির্বাটি
এখানে আবর্তে পথহারা
চলিতেছে যারা
তাদেরে দিয়েছে ডাক জড়তার কুর আজদাহা,
শতকের সভ্যতার এরা আজ হ’ল তাই অন্ধ, গুমরাহা।
বাড়ায়ে এন্তের দল, বাড়বে ভ্রষ্টের দল,
নর-ঘাতকের সাথে, নারী-ঘাতকের হাতে
হ’ল এরা শোণিত-চঞ্চল
হ’ল এরা জালিম, নিষাদ,
মানুষের অমানুষ মৃত আউলাদ।
পায় পায় বাধা শৃঙ্খল-বন্ধন,
থেমে যায় জীবন-স্পন্দন,
মানুষের আদালতে
পাথর-জমানো প্রহসন।
এবার
জীবের প্রতীক এই মানুষের আদালতে নয়,
শয়তানের কাদা মাখা কালো পথে নয়–
এবার আব্বার আদালতে
আমাদের ফরিয়াদ,
ক্ষুধিত লুষ্ঠিত এই মানুষের রিক্ত ফরিয়াদ।
অনেক সভ্যতা জানি মিশেছে ধূলির নীচে, অনেক সামুদ
কত ফেরাউন, কত জালিম পিশাচ নমরুদ
মিশে গেল ধূলিতলে
নতুন যাত্রীর দল দেখা দিল দুর্গম উপলে
উড়ায়ে নিশান
সাথে করে নিয়ে এল জীবনের অ-শ্রান্ত তুফান।
শুনি আজ তাদেরি দামামা।
বাতাসে ওড়ে তাহাদের বিজয়ী আমামা
শুনি শুধু তাহাদেরি স্বর
বলিষ্ঠ বক্ষের তলে সুকোমল অন্তরের স্বর…
আর যেন ক্লিষ্ট নাহি হয়
আর যেন এস্ত নাহি হয়,
পথে দেখি-পীড়নের ফাঁদ,
আর যেন এই নাহি হয়
মানুষের ভবিষ্য দিনের আউলাদ।।
আকাশ-নাবিক
আখরোট বনে,
বাদাম খুবানি বনে
কেটেছে তোমার দিন।
হে পাখী শুভ্রতনু,
সফেদ পলকে চমকে বিজুরী, চমকে বর্ণধনু,
সোনালি, রুপালি রক্তিম রংগিন।
হালকা রেখায় আকাশ ফেলেছো চিরে,
পার হয়ে গেছ কত আলোকের স্তরে,
রৌদ্রে, শিশিরে, নোনা দরিয়ার নীরে,
ফিরেছো কখনো আকাশের তীরে তীরে,
হে বিহঙ্গ! জানতে না ভয়, কখনো পাওনি ডর।
ইরান বাগের বেদানা ওড়ায়ে এনেছো পক্ষপুটে,
স্বপ্ন দেখেছে দূর আকাশের সেতারা তোমার সুরে,
সহসা প্রকাশ আনারকলির পাপড়ি উঠেছে ফুটে,
লাজ-রক্তিম আনন্দ তার সকল বন্ধ টুটে,
দূর দিগন্ত পাড়ি দিয়ে তারে জাগাও তোমার সুরে;
আখরোট বনে
বাদাম খুবানি বনে।
পাকা খরমুজা ফেটে পড়ে কত
মিঠে শরবত বুকে,
তার চেয়ে মিঠে মিছরিও মানে হার,
তোমার তুতীর কণ্ঠ শিরীণঃ নার্গিস আঁখি তার
আনারকলির পাপড়ি নিয়ে সে খুঁজে ফেরে বন্ধুকে।
দিন রাত্রির মৌসুমে তার ফুলের জোয়ারে ভরা
তোমার পাখায় শিরীণ তোমার হয়েছে স্বয়ম্বরা।
স্বপ্ন-মেধুর কেটেছে অহর্নিশ।
আকুল আবেগে আঁখি মেলে নার্গিস;
আখরোট বনে
বাদাম খুবানি বনে।
মেহেদির শাখে থোকা থোকা ফোটে ফুল,
পাতার আড়ালে জাগে দ্বাদশীর চাঁদ,
কোন্ নির্জন গোলাব শাখায় অশান্ত বুলবুল,
সুরের বন্যা, জোছনা ভাসায় জোয়ারে রাতের বাঁধ;
মধুধন রাত, স্বপ্ন চোয়ানে শান্ত মুগ্ধ রাত,
গভীর আবেগে তোমার দুচোখে শিশির-অশ্রুপাত,
ঘুমায় শ্রান্ত তৃতী
ঘুমায় শ্রান্ত নার্গিস আঁখি জাগছে কেবল যূথী;
আখরোট বনে
বাদাম খুবানি বনে।
তোমার সকাল ররেছে পূবালি আকাশে রক্ত থালি
মেহেদীর রঙে, জাফরান রঙে অপূর্ব শুভ্রতা,
ঘুম-ভাঙা চোখে কলকণ্ঠির কত কথা ব্যাকুলতা,
রসে ফেটে পড়ে আনারকলির সুসম্পূর্ণ ডালি!
শুরু হয় ফের দিগন্ত অভিযান
শুরু হয় ফের নতুন প্রভাতী গান,
নিথর বিমানে, দূর সমুদ্র পানে
আকাশ-নাবিক জাগাও জোয়ার টান।
কবে তুমি হায় পড়েছ ধূলির পরে
জানি নাই, আজ দেখছি বাতাস বয়ে যায় হাহা-স্বরে।
বৃথা খোসা-ভাঙা বাদাম পাথরে পড়ে,
রসাল খুবানি মাটিতে পড়েছে ঝরে
তুমি শুধু নাই পাখী,
পড়ে আছো কোন নোনা ঘেরা অশ্রুর বন্দরে,
বাদামের খোসা ছড়ায় ধুলির পরে
তুমি শুধু নাই পাখী।
অকালমৃত্যু ঝরোকার কাছে এসে
হে পাখী! তোমার উঠছে আর্তস্বর,
তুমি দেখ কোন ক্ষুধিত ভয়ঙ্কর
হিংস্র চোখের দৃষ্টি-তীক্ষ্ণ শর
নিরাশা ধূসর কালো পটে ভাসে মৃত্যুর বন্দর।
কোথায় একলা ফিরছে তোমার তূতী,
সাপের ফণার কাছে এসে তার নিভে যায় অনুভূতি।
পারো না উড়তে! সেতারা কি ক্ষীয়মাণ?
চাঁদের ভাটার ঝড়-তরঙ্গে যুঝে সে হয়েছে ম্লান?
আজ কি তোমার পথে ও পাথারে আজদাহা মাথা নাড়ে?
আজ কি তোমার বুকের পাঁজরে দারুণ যক্ষ্মা বাড়ে
অনেক আগেই থেমেছে তোমার পথ চলবার গান,
সূর্য হয়েছে ম্লান,
শিরীণ কণ্ঠ ভুলেছে তোমার জোছনা রাতের দূতী।
এখানে শোনো না গোধূলি শান্ত শীষ
পেয়েছো শ্রান্ত দিনশেষে শুধু কালো রাত্রির বিষ,
হালকা পালক ওড়ে না তুফানে ঝড়ে,
ক্রমাগত শুধু নুয়ে পড়ে ভেঙে পড়ে,
হায় নীড়হারা ক্ষুধা মন্বন্তরে
সকল দুয়ার রুদ্ধ কোথায় ঠাঁই তার, ঠাঁই তার
এ অচেনা বন্দরে
ফেরে না তো পাখী তার পরিচিত ঘরে
আখরোট বনে।
বাদাম, খুবানি বনে।
সে কি ভুলে গেছে ঝড়ের আঘাতে তার পরিচিত ঘর!
তুফানে সে পাখী মেনেছে কি পরাজয়?
বুক চেরা স্বর ভাসছে বাতাসে তূতীর আর্তস্বর,
আজ কী জীবনে ঘনায়েছে পরাজয়
হে বিহঙ্গ! তুমি তো জীবনে কখনো পাওনি ডর,
কখনো তো তুমি মানো নাই পরাজয়!
সাত আকাশের সফেদ মুক্তি! কালো রাত্রির ফণা
গ্রাস করল কি তুমি ছিলে যবে সুপ্ত অন্যমনা?
তবু জানি তুমি এ অপমৃত্যু ছাড়ায়ে উঠতে পারো!
তবে কেন আছো পড়ে?
হে বিহঙ্গ এই জিঞ্জিরে প্রবল আঘাত হানো,
সাত আকাশের বিয়াবানে ফের উদার মুক্তি আনো;
এখানে থেক না পড়ে।
কথা ছিল তুমি, হে পাখী। কখনো মানবে না পরাজয়,
তোমার গানের মুক্ত নিশান উড়েছে আকাশময়,
দূর আকাশের তারা দেখছে তোমার এ পরাজয়;
তোমা পতন দেখে আজ পাখী সবে মানে বিস্ময়!
হে বিহঙ্গ। এ শুধু শ্রান্তি বুঝতে পারো না তুমি,
ক্ষণ-বিস্মৃতি জাগায় সামনে বালিয়াড়ি মরুভূমি
দেখছো কেবল তৃষ্ণায় ভরা কালো রাত্রির বিষ–
সূর্যোদয়ের পথে দেখ নাই মিঠে পানি; ওয়েসিস।
ডুবে গেছে চাঁদা আঁধারে যায় না দেখা?
হে পাখী! এখনো নেভেনি তোমার তারার শুভ্র রেখা,
তোমার জোছনা হয়নি আজো ম্লান
আখরোট বনে
বাদাম,,খুবানি বনে।
আজকে আবার সেখানে ফিরতে হবে।
পার হয়ে এই যক্ষ্মাবসাদ শ্রান্ত ব্যাধিতে ঘেরা,
পার হয়ে এই বজ্র নিপাত আকাশের বুক-চেরা
দিতে হবে ফের আঁধারের বুকে চাষ,
রাতে আনারকলিতে বন্ধ্যা মভূর অবকাশ,
আনতে নতুন বীজ যেতে হবে ফারাণের অভিযানে,
ভরাতে মাটির রুক্ষতা সেই প্রবল জোয়ার টানে।
তখন তোমার
ও-মুরভি তার
স্পর্শ করি গেছে বারে বারে;
প্রখর আতশী স্রোতে ভেসে আমি চাইনি তোমারে।
আজ আমি খুঁজে মরি
পাতায় পাতায়, ঘাসে ঘাসে,
পাই না তোমাকে। শুধু বহু দূর হতে গন্ধ আসে
ভেসে যায় মাঠ, মন মুহূর্তের রক্তিম প্রশ্বাসে।
তরপর ক্ষণদীপ্ত সে প্রান্তরপারে
পাই না তোমারে।
আজ তার গন্ধ আসে, মাত্রির নিশ্বাসে তৃষাতুর হৃদয় আমার
জানি যে তোমারো, তাই আগে বহু আগে বারবার
লায়লির ইশারায় বুকে পুরে তারুণ্যের লেলিহ আগুন
সবুজ দিগন্তু তার পাড়ী দিয়ে চলে গেছে কবে মজনুন
ধূসর জগতে।
পরতে পরতে
এঁকে গেছে, রেখে গেছে তারা
ওয়েসিস বুকে নিয়ে হেসেছে সাহারা;
স্বপ্ন মরুভূর
হয়তো জ্বলন্তু তার ক্ষুব্ধ বুকে দীউয়ানা সে সুর
চলিষ্ণু জীবন-স্রোতে ভাসমান গতির প্রবাহ
মুছে নিয়ে গেছে তার আকাশের দাহ
দিয়ে গেছে প্রশান্তি নিঝুম
মরুভূর ঘুম….
তোমাকে সুন্দর করে সে আমার প্রেম
অন্তরের ঘ্রাণ,
দিন রাত্রি ঝ’রে ঝরে পড়ে
দীর্ঘ পদ্মনাল বেয়ে পাপড়ির পরে….
ভরে ওঠে মনের আকাশ দীর্ঘশ্বাস অপরাহ্ন বেলা
পাপড়ির দ্বার রুধি পদ্মের সুরভি কোথায় চলেছে একেলা,
পিছে ফেলে পরিত্যক্ত পাপড়ির বাস,
ভেসে চলে মন, দূরে ভেসে চলে সুরভি প্রশ্বাস,
জানি না কোথায়–
বসে আছি অন্ধকারে নিশীথ-প্রচ্ছায়,
পাপড়ি যায় না দেখা, আজ শ্রান্ত ধমনীর আগ্নেয় উৎসব
শুধু একা করি অনুভব
তোমায় হারানো গন্ধ সুরভি-প্রশ্বাস,
মনে অলিন্দে শুধু দেখা দেয় তন্দ্রাতুর তোমার আকাশ।
মুগ্ধ মন আকুল সৌরভে
নাহি জানি ভুলেছে সে কবে
রজনীগন্ধার স্নিগ্ধ ভীরু বাতায়ন,
রুদ্ধ ফারা ঘর ভাঙি’ আজ সে করিছে দূরে কার অন্বেষণ!
নৈশ বাতাসের তীরে
আঁধারের বুক চিরে
নেমে আসে ঘুম।
মনে হয় আকাশ কুসুম
তোমার সন্ধান।
তবু লাগে জোয়ারের টান,
সুপ্তির অতলে যেয়ে হানা দেয় জাগ্রত চেতনা,
কী সহ বেদনায় লাগে বুকে সৌরভ-মূৰ্ছনা!
বন-চামেলির স্রোতে ভেসে যাই কোথায় সুদূরে
ভারাক্রান্ত তনু ছেড়ে মন আজ ফেরে ঘুরে ঘুরে–
দক্ষিণ বাতাসে
নিজেকে হারায়ে ফেলে ছুটে চলে ব্যাকুল আশ্বাসে।
পড়ে থাকে ধূলিমুঠি, পড়ে থাকে ভ্রান্ত অহংকার–
ব্যথাতুর হয়ে ওঠে সমগ্র চেতনা, সত্তা, মনের কিনার।
ধূলিতলে মিশে যায় রজনীগন্ধার-সুঠাম, সুগোল তনুতল,
ফোটায় বিত্ৰ দল, ঝরায়ে সুরভি অনর্গল
আরণ্য হেনার ঝড়ে সৌরভ মর্মরে–
ভুলে যেয়ে আবর্তের টান,
অন্তরের ঘ্রাণ,
পাপড়ির রূপ ছিঁড়ে বেজে সে গভীর মূলে সুরভি বিতান… এখন
প্রশান্ত বাতাসে শুধু জাগিতেছে শুলেনার বন,
থেমে গেছে যত কথা, গান,
তোমার হারানো স্মৃতি নিয়ে এল এ আকাশ-ভরানো তুফান।
তোমাকে সুন্দর করে সে আমার প্রেম–
অন্তরের ঘ্রাণ–
দিন রাত্রি ঝরে ঝরে পড়ে
পাপড়ির ‘পরে,
মনের আকাশে
এশান্ত সুপ্তির মত ব্যথা ভারাক্রান্ত তার গন্ধ ভেসে আসে।।