সমর্পণ
প্রিয়!
এবার আমায় সঁপে দিলাম তোমার চরণ-তলে।
তুমি শুধু মুখ তুলে চাও, বলুক যে যা বলে॥
তোমার আঁখি কাজল-কালো
অকারণে লাগল ভালো
লাগল ভালো,
পথিক আমার পথ ভুলাল
সেই নয়নের জলে।
আজকে বনের পথ হারালেম ঘরের পথের ছলে।
তুমি শুধু মুখ তুলে চাও, বলুক যে যা বলে॥
আজ দিগ্বালিকার আঁখি-পাতা অনেক দূরের কানন-ছায়ে
কাঁপচে অভিমানে,
একলা-আমার পথ দেখাত ঐ বালিকাই চপল পায়ে
দিক হতে দিক-পানে!
মুঠার মানিক ঠেলে পায়ে
এলেম তোমার কুটির ছায়ে
চরণ-ছায়ে,
ক্লান্তি আমার দাও মুছায়ে
দীপ-ঢাকা অঞ্চলে।
আপন মালা পরাও বালা পরাও আমার গলে!
এবার আমায় সঁপে দিলাম তোমার চরণ-তলে॥
সাধের ভিখারিনী
তুমি মলিন বাসে থাকো যখন, সবার চেয়ে মানায়!
তুমি আমার তরে ভিখারিনী, সেই কথা সে জানায়!
জানি, প্রিয়ে, জানি জানি,
তুমি হতে রাজার রানি,
খাটত দাসী, বাজত বাঁশি
তোমার বালাখানায়।
তুমি সাধ করে আজ ভিখারিনী, সেই কথা সে জানায়ি॥
দেবি! তুমি সতী অন্নপূর্ণা, নিখিল তোমার ঋণী,
শুধু ভিখারিকে ভালোবেসে সাজলে ভিখারিনী।
সব ত্যাজি মোর হলে সাথী,
আমার আশায় জাগচ রাতি,
তোমার পূজা বাজে আমার
হিয়ার কানায় কানায়!
তুমি সাধ করে মোর ভিখারিনী, সেই কথা সে জানায়॥
সে যে চাতকই জানে
সে যে চাতকই জানে তার মেঘ এত কি,
যাচে ঘন ঘন বরিষণ কেন কেতকী!
চাঁদে চকোরই চেনে আর চেনে কুমুদী,
জানে প্রাণ কেন প্রিয়ে প্রিয়-তম চুমু দি!