সব কথা মোর শুনে সে কেবল কহিল একটু হাসি-
“মোর যত কথা কব একদিন, আজকের মত আসি?”
পায়ে পায়ে পায়ে যতদুর গেল, নিমেষ রহিনু চেয়ে ;
সন্ধ্যা-তিমিরে কলস ডুবাল সাঁঝের রঙিন মেয়ে।
শূন্য চরের মাতাল বাতাস রাতের কুহেলি-কেশ
নাড়িয়া নাড়িয়া হয়রাণ হয়ে ফিরিল ঊষার দেশ।
কত দিন গেল, কত রাত এলো ঋতুর বসন পরি,
চলে কাল-নটী বরণে বরণে বরষের পথ ধরি।
আজো বসে আছি এই বালুচরে, দুহাত বাড়ায়ে ডাকি
কাল যে আসিল এই বালুচরে, আর সে আসিবে নাকি?
প্রতিদান
আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা, আমি বাঁধি তার ঘর,
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।
যে মোরে করিল পথের বিবাগী, –
পথে পথে আমি ফিরি তার লাগি।
দীঘল রজনী তার তরে জাগি ঘুম যে হরেছে মোর ;
আমার এ ঘর ভাঙিয়াছে যেবা আমি বাঁধি তার ঘর।
আমার এ কুল ভাঙিয়াছে যেবা আমি তার কুল বাঁধি,
যে গেছে বুকেতে আঘাত হানিয়া তার লাগি আমি কাঁদি;
সে মোরে দিয়েছে বিষে ভরা বাণ,
আমি দেই তারে বুকভরা গান;
কাঁটা পেয়ে তারে ফুল করি দান সারাটি জনম ভর,
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।
মোর বুকে যেবা কবর বেঁধেছে আমি তার বুক ভরি,
রঙিন ফুলের সোহাগ-জড়ান ফুল-মালঞ্চ ধরি ।
যে মুখে সে কহে নিঠুরিয়া বার্ণী,
আমি লয়ে সখি, তারি মুখখানি,
কত ঠাঁই হতে কত কি যে আনি, সাজাই নিরন্তর,
আপন করিতে কাঁদিয়া বেড়াই যে মোরে করেছে পর।
মুসাফির