আমি জানি, ভালো ক’রেই জানি, কিছু অপেক্ষা ক’রে নেই আমার জন্যে; কোনো বিস্মৃতির বিষণ্ণ জলধারা, কোনো প্রেতলোক, কোনো পুনরুত্থান, কোনো বিচারক, কোনো স্বৰ্গ, কোনো নরক; আমি আছি, একদিন থাকবো না, মিশে যাবো, অপরিচিত হয়ে যাবো, জানবো না। আমি ছিলাম। নিরর্থক সব পুণ্যশ্লোক, তাৎপর্যহীন সমস্ত প্রার্থনা, হাস্যকর উদ্ধত সমাধি; মৃত্যুর পর যে-কোনো জায়গায়ই আমি পড়ে থাকতে পারি,-জঙ্গলে, জলাভূমিতে, পথের পাশে, পাহাড়ের চূড়োয়, নদীতে, মরুভূমিতে, তুষারাস্তুপে। কিছুই অপবিত্র নয়, যেমন কিছুই পবিত্র নয়; কিন্তু সব কিছুই সুন্দর, সবচেয়ে সুন্দর এই তাৎপর্যহীন জীবন। আমরতা চাই না আমি, বেঁচে থাকতে চাই না একশো বছর; আমি প্রস্তুত, তবে আজ নয়। চ’লে যাওয়ার পর কিছু চাই না। আমি; দেহ বা দ্রাক্ষা, ওষ্ঠ বা অমৃত, বা অমরতা; তবে এখনি যেতে চাই না; তাৎপর্যহীন জীবনকে আমার ইন্দ্ৰিয়গুলো দিয়ে আমি আরো কিছুকাল তাৎপর্যপূর্ণ ক’রে যেতে চাই। আরো কিছুকাল আমি নক্ষত্র দেখতে চাই, নারী দেখতে চাই, শিশির ছুতে চাই, ঘাসের গন্ধ পেতে চাই, পানীয়র স্বাদ পেতে চাই, বর্ণমালা আর ধ্বনিপুঞ্জের সাথে জড়িয়ে থাকতে চাই, মগজে আলোড়ন বোধ করতে চাই। আরো কিছু দিন আমি হেসে যেতে চাই। একদিন নামবে অন্ধকারমহাজগতের থেকে বিপুল, মহাকালের থেকে অনন্ত; কিন্তু ঘুমিয়ে পড়ার আগে আমি আরো কিছু দূর যেতে চাই।