The new atheists firmly assert that the personal, abrahamic God is a scientific hypothesis that can be tested by the standard method of science. And we have seen that it has failed the test.
এবারে নব্য নাস্তিকতা-বিরোধী কিছু উদাহরণের সাথে পাঠকদের পরিচিত করিয়ে দেওয়া যাক। নব্য নাস্তিকদের বিজ্ঞানের তথ্য-উপাত্ত, জ্ঞান দিয়ে ঈশ্বর আলোচনার একজন কড়া সমালোচক খ্রিস্টান ধর্মবেত্তা ডেভিড মার্শাল। ‘The Truth behind the New Atheism’ বলেন[২৯],
এই নব্য নাস্তিকরা বাস্তবতার বিভিন্ন দিক একেবারেই বুঝতে পারে না। প্রথমত, বোকা নাস্তিকদের বিজ্ঞানের সীমারেখা সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই। দ্বিতীয়ত, তাদের তত্বগুলো অসংখ্য বাস্তবতাকে সরাসরি উপেক্ষা করে। তৃতীয়ত, গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা থেকে তারা সবসময় নিজেদের বিরত রাখে। চতুর্থত, তাদের তত্ত্বকে ভরাডুবির হাত থেকে বাঁচাতে তারা চমৎকার এক ছলনার আশ্রয় নেয়, সেই ছলনা হলো–’মনে করি’।
বিজ্ঞানের সীমারেখা বুঝতে অপারগ একজন বোকা কিংবা চালাক নাস্তিকের নাম উল্লেখ করেন নি, মার্শাল। নব্য নাস্তিকদের বই, তাদের বিভিন্ন প্রবন্ধ, ইউটিউবে থাকা শতশত ভিডিও লেকচারে আমরা কখনোই তাদের বলতে শুনি নি, যে বিজ্ঞানের সীমারেখা অসীম। অদ্ভুত ব্যাপার হলো, এদের লেখা বইগুলোতেই বরঞ্চ সংগীত, ছবি, কবিতা, নারী-পুরুষের ভালোবাসার সম্পর্কসহ আরও অসংখ্য প্রকৃতি প্রদত্ত অবৈজ্ঞানিক বিষয় নিয়ে চমৎকার মনোমুগ্ধকর আলোচনা পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে আমাদের[৩০]। আমরাও গান ভালোবাসি, ভালোবাসি ব্লগালোচনা, কবিতা, ফুল, ভালোবাসি ভালোবাসতে, কিংবা ভালোবাসা পেতে। কিন্তু একই সাথে অন্যান্য অনেকের মতো মনে করি না যে, এই অবৈজ্ঞানিক বিষয়গুলো বিজ্ঞানের সাহায্য ছাড়া চমৎকারভাবে উপভোগ করা সম্ভব। এ প্রসঙ্গে মনে পড়ছে, মহাকবি কিটস একবার নিউটনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছিলেন যে আলোকের সূত্রের মাধ্যমে রঙধনুর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি রঙধনুর সৌন্দর্যকেই ক্ষুণ্ণ করে দিয়েছেন। অথচ কিটসই আবার অন্য এক প্রসঙ্গে বলেছিলেন যে, ‘সত্যই সুন্দর!’ আরেকবার, পদার্থবিদ ফাইনম্যানকে তার এক শিল্পী বন্ধু একটা ফুল হাতে নিয়ে বলেছিলেন, ‘একজন শিল্পী হিসেবে আমি এই ফুলের সৌন্দর্য হৃদয়ঙ্গম করতে সক্ষম, আর তোমরা বিজ্ঞানীরা এটাকে ভেঙেচুরে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এর সৌন্দর্যকেই নষ্ট করে দাও। এর উত্তরে ফাইনম্যান বলেছিলেন যে, একজন শিল্পী ফুলে যে সৌন্দর্য দেখতে পান, তিনিও সেই একই সৌন্দর্য দেখতে পান, কিন্তু উপরন্তু তিনি ফুলের ভেতরকার সৌন্দর্যকেও দেখতে পান, যেমন কীভাবে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কোষ দ্বারা ফুলের পাপডি গঠিত হয়, কীভাবে বিবর্তনিক উপযোজনের কারণে কীটপতঙ্গকে আকর্ষণ করার জন্য ফুলের সুন্দর রঙের সৃষ্টি হয়েছে, এইসব, যা থেকে তার শিল্পী বন্ধু বঞ্চিত’[৩১]।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কথাই ধরি। গানের ফিজিক্স বোঝার মাধ্যমে একে আরও ভালোভাবে উপভোগ, উপস্থাপন করার সূক্ষতা উদ্ভাবনের পাশাপাশি, আবিষ্কৃত হয়েছে নানা যন্ত্রপাতি। রেকর্ডিং করার উপায় আবিষ্কারের মাধ্যমে যেকোনো পরিস্থিতিতে গান যে কাউকে সঙ্গ দিতে পারে। বিজ্ঞানের কারণে আমরা নিজেরাও এখন ছবি তুলে/ এঁকে সেগুলো ফ্লিকারে আপলোড করার মাধ্যমে সবার সাথে শেয়ার করতে পারি। দুনিয়ার প্রায় সকল কবিতা, গল্প খুব কিছু দিনের মধ্যেই চলে আসবে ইন্টারনেটে। স্টিফেন হকিংযের নতুন বই পড়ার জন্য মানুষের এখন আর বছর খানেক অপেক্ষা করতে হয় না, তারা আমাজনে চট করে অর্ডার দিয়ে পরের দিন হাতের কাছে পেয়ে যায়।
কোনো ধরনের উদাহরণ না দিয়ে মার্শাল তার তৃতীয় ও চতুর্থ দাবি, বাস্তবতাকে পাশ কাটানো, এবং ‘মনে করি’ ব্যাপারটাকে কটাক্ষ করে কী বোঝাতে চেযেছেন সেটা বোধগম্য হলো না কোনোভাবেই।
বুদ্ধিদীপ্ত নকশা (Intelligent Design) নামক ছদ্মবিজ্ঞানের এক মুখপাত্র ডেভিড বারলিনস্কি (David Berlinski) বিজ্ঞানীদের চরিত্র নিয়ে গবেষণার পর প্রবন্ধে লেখেন, অধিকাংশ বিজ্ঞানীরা গোঁয়ার, অন্তঃসারশূন্য, রাজনীতিতে অপরিপক্ক, অলস এবং অহংকারী[৩২]। তথ্যসূত্র ছাড়াই বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধের লাইন তুলে ধরে তিনি বলেন, বিজ্ঞানীরা সবকিছু বিশ্বাস করতে প্রস্তুত[৩৩]। অবশ্যই বিজ্ঞানীরা যেকোনো কিছু বিশ্বাস করতে প্রস্তুত যদি সেটা বিশ্বাস করার মতো পর্যাপ্ত প্রমাণ থাকে। হ্যাঁ! মাঝে মাঝেই বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক ধারণা পড়ে আমাদের সেটা অর্থহীন, অসম্ভব বলে মনে হয়, কিন্তু সেটার দোষ তো বিজ্ঞানীদের না। ব্যাপারগুলো আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে অর্থহীন বলে মনে হলেও বাস্তবে তা নয়। কারণ প্রতিটি বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার সম্পন্ন হয় বস্তুনিষ্ঠ নৈর্ব্যক্তিক পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রতিটি আবিষ্কার বা বৈজ্ঞানিক তত্ব আরও অসংখ্য তত্বের সমন্বয়ে গঠিত হয়। প্রতিটি বৈজ্ঞানিক ধারণা যিনি আবিষ্কার করেছেন শুধু তার জন্য সত্য না, বরঞ্চ সেটা পৃথিবীর যেকোনো ল্যাবরেটরিতে, যেকোনো মানুষ দ্বারা স্বাধীনভাবে পরীক্ষণযোগ্য।