দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ হচ্ছে, লায়লা শান্ত মুখে দরজা খুললেন। আঙুল কাটা লোকমান বা তার কোনো লোকজন না। শফিক দাঁড়িয়ে আছে।
লায়লা বললেন, কেমন আছি শফিক। শফিককে লায়লা সব সময় আপনি করে বলেন। আজ এই সময়ে তাকে দেখে এতই ভাল লাগছে যে তুমি করে বললেন।
শফিক বলল, ম্যাডাম ভালো আছি। আপনাকে একটা খবর দিতে এসেছি। লায়লা বললেন, খবরটা কি দরজা থেকে দেবে না ভেতরে ঢুকবে?
খবরটা দিয়ে চলে যাব ম্যাডাম। আমার জরুরি কাজ আছে। তবে আপনি বললে ঘরে ঢুকব। যতক্ষণ থাকতে বলবেন, থাকব।
খবরটা কী?
স্যার আপনাকে বলতে বলেছেন যেন আঙুল কাটা লোকমান বিষয়ে আপনি যেন কোনো চিন্তা না করেন। তার ব্যবস্থা হয়েছে।
কী ব্যবস্থা হয়েছে?
সেটা তো ম্যাডাম আমি এখনো জানি না। তবে আমি দেখে এসেছি সে স্যারের বাড়ির বারান্দায় বসে আছে। ভয়ে তার কলিজা উড়ে গেছে।
ও আচ্ছা।
ম্যাডাম আমি কি কিছুক্ষণ থাকব না চলে যাব?
এসেই যাই যাই করছ কেন? তোমার এমন কী জরুরি কাজ?
শফিক হাসিমুখে বলল, ম্যাডাম আমার কানে ধরে উঠবোস করার কাজ আছে। ঠিক করেছি একজনের শাস্তি ভাগাভাগি করব।
তোমার কথা কিছু তো বুঝতে পারছি না।
ম্যাডাম আরেক দিন এসে বুঝিয়ে দেব।
লায়লা মেয়ের খোঁজে ছাদে গেলেন।
নীতু ছাদে ফুলের টবে ফুল চাষ করে। সে গাছে পানি দিচ্ছিল। মাকে দেখে চোখ তুলে তাকালে লায়লা বললেন, আতর ঘটনা কি হয়েছে শোন।
নীতু বিরক্ত গলায় বলল, মা তোমাকে অসংখ্যবার বলেছি এই কুৎসিত নামে আমাকে ডাকবে না। আর কারো নাম হয়?
লায়লা বললেন, আচ্ছা যা আর ডাকব না।
নীতু বলল, সরি বলো মা।
লায়লা বললেন, সরি।
লায়লা বললেন, সমস্যার সমাধান হয়েছে।
নীলু বলল, কে করল সমস্যার সমাধান। ডিকশনারি চাচা?
লায়লা জবাব দিলেন না। তিনি মুগ্ধ চোখে মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছেন। চৈত্র মাসের মেঘশূন্য আকাশের রোদ খুব কড়া হয়। সেই ঝাঝালো বোদ পড়েছে নীতুর গালে। গাল রোদে পুড়ে যাচ্ছে। কি সুন্দরই না দেখাচ্ছে রৌদ্রময়ীকে।