ভদ্রমহিলা বললেন, জামাল, তুমি ওর হাত ধরে ওকে একট সমদ্রে নিয়ে যাও।
জামাল সাহেব বিস্মিত চোখে স্ত্রীর দিকে তাকালেন। ভদ্রমহিলা কিছু বলার আগেই রিমি তার হাত বাড়িয়ে দিল। সেই হাত বাড়ানোর মধ্যে কোনো দ্বিধা নেই, কোনো সংকোচ নেই।
জামাল সাহেব রিমির হাত ধরে এগিয়ে গেলেন। রিমি এগুচ্ছে নিঃসংকোচে। তার দৃষ্টি সমুদ্রের দিকে। সমুদ্রের জল তাদের দুজনের হাঁটু পর্যন্ত আসামাত্র রিমি বলল, আপনি কি আমার একটা অনুরোধ রাখবেন?
বিস্মিত জামাল সাহেব বললেন, নিশ্চয়ই রাখব।
আপনি কি কথা দিচ্ছেন?
জামাল সাহেব হাসিমুখে বললেন, পৃথিবীর তিনভাগ যে সমুদ্র ঢেকে রেখেছে তার মধ্যে দাঁড়িয়ে মানুষ যা বলে তাকে তা করতে হয়।
রিমি শান্ত স্বরে বলল, তাহলে আপনি আপনার স্ত্রীকে ডেকে আনুন। উনার খুব শখ আপনার হাত ধরে সমুদ্ৰে স্নান করবেন।
আমাকে তো ও কখনো বলে নি।
আমি দাঁড়াচ্ছি, আপনি উনাকে নিয়ে আসুন।
জামাল এগিয়ে যাচ্ছে। রিমি একা দাড়িয়ে আছে।
হঠাৎ তার কী যে হল—সে এগিয়ে যেতে থাকল সমুদ্রের দিকে। বড়-বড় ঢেউ আসছে। সে গ্রাহ্যই করল না।
জামাল সাহেব এবং তার স্ত্রী দুজনই ছুটে তার কাছে আসতে চেষ্টা করছে। বড়বড় ঢেউ ভেঙে পড়ছে। তারা কেউ এগুতে পারছে না। জামাল সাহেব প্ৰচণ্ড ধমক দিলেন, এইসব কী পাগলামি হচ্ছে? এই মেয়ে, তুমি কি আমাদের দুজনকে মারতে চাও?
প্রচণ্ড একটা ঢেউ এসে প্রবল বেগে রিমির গায়ে আছড়ে পড়ল। এই ঢেউ রিমিকে তীরে ছুঁড়ে ফেলতে পারে। আবার কোন এক অদ্ভুত কৌশলে নিজের কাছে টেনেও নিতে পারে। সে কী করবে, কে জানে।