আমি রাত এগারোটা পর্যন্ত বসে রইলাম। রাত এগারটায় এক জন ডাক্তার এসে। বললেন, আপনি এখন চলে যেতে পারেন। রুগী ভালো আছে, ঘুমুচ্ছে। আজ রাতটা এখানে থাকতে হবে।
আমি বললাম, রুগীকে কি একটু দেখতে পারি?
হ্যাঁ, পারেন। আসুন আমার সঙ্গে।
এশা চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। কম পাওয়ারের একটা টেবিল ল্যাম্প তার মাথার কাছে। সেই আশোয় কী সুন্দরই না তাকে দেখাচ্ছে। মাথার পাশের জানালাটা খোলা। সাদা পর্দা থরথর করে কাঁপছে। জানালার ওপাশে বিপুল অন্ধকার।
আমি নিচু হয়ে এশার হাত স্পর্শ করলাম। আমি কোনো দিন এশার হাতে হাত রাখব না, এশা এই কথাটি ঠিক বলে নি। আমি আবার তাকে ছুঁয়েছি।
নার্স অদ্ভুত চোখে আমাকে দেখছে। আমি বললাম, সিস্টার, আমি কি এখানে কিছুক্ষণ বসতে পারি?
চুপচাপ বসে আছি
আমি চুপচাপ বসে আছি। আকাশে মেঘ ডাকছে। জানালার পর্দা কাঁপিয়ে ঠাণ্ডা বাতাস আসছে। ঝুমঝুম শব্দ হচ্ছে। বৃষ্টির ফোটা পড়তে শুরু করেছে। নিশ্চয়ই আজ সারা রাত প্রবল বর্ষণ হবে। আমি বসেই আছি। রাত বাড়ছে। আমি অপেক্ষা করছি। কিসের অপেক্ষা? আমি জানি না।
মানুষ হয়ে জন্মানোর সবচে বড় কষ্ট হচ্ছে মাঝে-মাঝে তার সবকিছু পেছনে ফেলে চলে যেতে ইচ্ছা করে কিন্তু সে যেতে পারে না। তাকে অপেক্ষা করতে হয়। কিসের অপেক্ষা তাও সে ভালোমতো জানে না।