মুহিব তার বাবার ঘরটা আগের মতো করে সাজিয়েছে। পুরনো চটি জুতা। পুরনো কাপড়। দেয়ালে ফ্রেমে বাঁধানো মুহিবের ছেঁড়া BA-র সার্টিফিকেট। টিভি নষ্ট হয়ে গেছে বনে টিভি কেনা হয়েছে। একটা বেতের ইজিচেয়ার কেনা হয়েছে। ঘরে এসি লাগানো হয়েছে। মানুষটা যেন এসির বাতাসে আরাম করে ঘুমাতে পারে।
রাজিয়া বেগম দুপুরের খাবার আয়োজন করছেন। কাজের ছেলেটি বাজার নিয়ে এসেছে। ঘরে রান্নার মেয়ে আছে। রাজিয়া ঠিক করেছে আজ নিজেই রাঁধরেন। সবই মুহিবের বাবার পছন্দের খাবার।
করল ভাজি (সঙ্গে কুচি কুচি আলু দিতে হবে। অল্প ভাজা হবে, যেন করলা সবুজ থাকে।)
সাজন (সর্ষে বাটা দিয়ে, সঙ্গে কাঁচামরিচ।)
কৈ মাছের ঝোল (টমেটো দিয়ে। কাঁচা টমেটো পেলে ভালো হয়।)
মাষকালাইয়ের ডাল (সঙ্গে টাকি মাছ দিতে হবে।)
রাতে করবেন হাঁসের মাংস। চালের আটার রুটি।
মুহিবকে ঘিরে ভিড় প্রচও বেড়েছে। ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়েছে। লীলা ডানে সরতে সরতে ঝুপ করে নোংরা নর্দমায় পড়ে গেল। পুরনো দিনের কথা মনে করে খিলখিল করে হেসে ফেলল। প্রকৃতি বড়ই অদ্ভুত। প্রকৃতি পুনরাবৃত্তি পছন্দ করে।
আলাউদ্দিন জেলগেট থেকে বের হয়েছেন। মুহিব ছুটে গিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরেছে।
আলাউদ্দিন বলেন, নর্দমায় পড়ে আছে মেয়েটা কে?
মুহিব বলল, বাবা, ও তোমার বৌমা। ওর নাম লীলা।
আলাউদ্দিন ছেলেকে কঠিন ধমক দিলেন, বৌমা নর্দমায় পড়ে আছে, তুই তাকে তুলবি না? গাধা। অর্ধমানব।
লীলার হাতে ফুলের মালা। সে চেষ্টা করছে মালায় যেন নোংরা না লাগে।