তরুণ-তরুণী অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
বিমল একবার চারিদিকে চেয়ে দেখল–সন্ধ্যা নেমেছে। কোথাও আর রোদ নেই–এই পবিত্র, প্রাচীন ফা-চীন মন্দির, পাইন বন, লাল মাছের চৌবাচ্চা, শান্ত গভীর সন্ধ্যা–এই কলহাস্যমুখরা বিদেশিনি মেয়ে দু-টি,–নবদম্পতি। দেখে মনেও হয় না এই পবিত্র স্থানের তিন মাইলের মধ্যে মানুষ মানুষকে অকারণে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে বিষবাষ্প দিয়ে, বোমা দিয়ে, কলের কামান দিয়ে। যুদ্ধ বর্বরের ব্যবসায়। অথচ এই হাসি, এই আনন্দ, তরুণ দম্পতির কত আশা, উৎসাহ।
এ্যালিস ঠিকই বলেছে। সব যাবে–কাল সকালেই হয়তো যাবে, জাপানি বোমায়। পবিত্র ফা-চীন মন্দির যাবে, পাইন গাছের সারি যাবে, লাল মাছ যাবে, এই তরুণ দম্পতি যাবে, সে যাবে, মিনি, এ্যালিস, সুরেশ্বর, বৃদ্ধ লি–সব যাবে। যুদ্ধ বর্বরের ব্যাবসায়।
ফুল ছড়ানো শেষ হয়েছে। মন্দিরের বাঁকানো ঢালু ছাদে পোষা পায়রার দল উড়ে এসে বসেছে। পাথরের সিঁড়ির ওপরের ধাপটা ফুলে ভরতি। নবদম্পতি তখন হাসছে–এ একটি ভারি অপ্রত্যাশিত আমোদের ব্যাপার হয়েছে তাদের কাছে। ওদের হাসি ও আনন্দ যেন দানবীয় শক্তির ওপর,–মৃত্যুর ওপর,–মানুষের জয়লাভ। মহাচীনের নবজন্ম হয়েছে এই তরুণ-তরুণীতে। স্বর্গ থেকে ফা-চীন-এর পবিত্র অমর আত্মা ওদের আশীর্বাদ করুন।
এ্যালিস এসে বিমলের হাত ধরল।
চলো যাই বিমল। হাসপাতালে ডিউটি রয়েছে–তোমার আমার এক্ষুনি–