” Nature naver made
A heart all marble, but all in its fissures sows
The wild flower Love; from whose rich seeds spring forth
A word of mercies and sweet charities,”
Barry Cornwall.
প্রথম পরিচ্ছেদ
স্বপক্ষে না বিপক্ষে?
মজিদ খাঁ এইরূপ বিপদ্গ্রস্ত হওয়ায় তাঁহার বন্ধুবর্গের মধ্যে মোবারক উদ্দীনকেই সর্ব্বপেক্ষা অধিক দুঃখিত বোধ হয়। কেবল দুঃখিত কেন, তিনি যে মজিদ খাঁর বন্দিত্বে যথেষ্ট অনুতপ্ত, তাহা তাঁহার ভাবগতিকে এখন অনেকেই অনুমান করিতেছেন। তাঁহার একটিমাত্র কথার জন্য আজ মজিদ খাঁ কারারুদ্ধ। যেখানে কত অসংখ্য দস্যু, নরহন্তা, তস্কর তাহাদের পদচিহ্ণ রাখিয়া গিয়াছে, সেইখানে আজ তাঁহারই দোষে নিরপরাধ মজিদ খাঁ লুণ্ঠিত হইতেছেন; ইহাতে কাহার না হৃদয় ব্যথিত হয়? সেদিন খুনের রাত্রে মজিদ খাঁর সহিত যে, তেমন সময়ে মেহেদী-বাগানে তাঁহার সাক্ষাৎ হইয়াছিল, এ কথা যদি তিনি নিজের এজাহারে পূর্ব্বে প্রকাশ না করিতেন, তাহা হইলে ত মজিদ খাঁকে আজ হত্যাপরাধে অভিযুক্ত হইয়া অকারণ কারাকূপে নিক্ষিপ্ত হইতে হইত না।
অদ্য অপরাহ্ণে কলিঙ্গা-বাজারে রাজাব-আলির বহির্ব্বাটীর নিম্নতলস্থ প্রশস্ত বৈঠকখানায় বসিয়া তাঁহার পুত্র সুজাত-আলির সহিত মোবারক-উদ্দীনের নিভৃতে এইরূপ কথোপকথন হইতেছিল। সঙ্গে সঙ্গে মদ্যপানও চলিতেছিল। বাল্যে উভয়ে এক ক্লাসের ফ্রেণ্ড ছিল, যৌবনে এখন এক গ্লাসের ফ্রেণ্ডে পরিণত হইয়াছে-এইটুকু পরিবর্ত্তন।
মোবারক বলিল, “আমার দোষেই বৈ কি; কে জানে যে এমন হইবে? তাহা হইলে কি আমার মুখ দিয়া একটা কথাও প্রকাশ পায়! প্রকাশ করিবার ইচ্ছাটাও আমার ছিল না; কথায় কথায়- ডিটেক্টিভ দেবেন্দ্রবিজয় লোকটা বড় ধড়ীবাজ-আমার কাছ থেকে এমনভাবে কথাটা বাহির করিয়া লইল যে, কাজটা ভাল করিতেছি, কি মন্দ করিতেছি-আমি তখন তাহা বিবেচনা করিয়া দেখিবারও অবসর পাইলাম না। লোকটা ভয়ানক বদলোক-আমার সেই কুকুরটাকেও নিকেশ করিয়াছে।”
সুজাত বলিল, “এখন শুনিতে পাই, সে ছুরিতে যে দিলজান খুন হইয়াছে, দেবেন্দ্রবিজয় তাহা এখন ঠিক প্রমাণ করিতে পারিতেছে না। মজিদকে দোষী বলিয়া আমার একবারও মনে হয় না।”
মুখের কথা লুফিয়া লইয়া মোবারক বলিল, “কেনই বা হইবে? মজিদ খাঁকে যে জানে, সে কখনই ইহা বিশ্বাস করিবে না। আরও ভাবিয়া দেখা উচিত, কেনই বা সে দিলজানকে খুন করিতে যাইবে? কারণ কি? এমন একটা ভয়ানক খুন-অবশ্যই ইহার একটা কারণ থাকা চাই। মজিদের সঙ্গে দিলজানের কোন সম্বন্ধই নাই। দেবেন্দ্রবিজয় লোকটা পাকা ডিটেক্টিভ হইলেও কাজটা বড়ই অন্যায় করিয়াছে। কেবলমাত্র সেই ছুরির উপর নির্ভর করিয়া, একজন নির্ব্বিরোধ ভদ্রলোককে অকারণ টানাটানি করা কাজটা তাহার নিতান্ত গর্হিত হইয়াছে। মজিদ কোন্ উদ্দেশ্যে দিলজানকে খুন করিবে? তাহাকে ধরিয়া পুলিস অনর্থক পীড়াপীড়ি করিতেছে; বরং মনিরুদ্দীনকে-“বলিতে বলিতে মোবারক মধ্যপথে সহসা চুপ করিয়া গেল।
সুজাত বলিল, “মনিরুদ্দীনও বড় বাদ যাইবে না। আমার বোধ হয়, তাহাকেই শেষে বেশি জড়াইয়া পড়িতে হইবে। দেবেন্দ্রবিজয় যখন ইহাতে হাত দিয়াছে, তখন একটা-না-একটা কিছু না করিয়া ছাড়িতেছে না। এদিকে মনিরুদ্দীনেরও সন্ধান পাওয়া গিয়াছে। তাহার সঙ্গে দেখা করিতে আজ মুন্সী সাহেব, দেবেন্দ্রবিজয় ও উকীল হরিপ্রসন্ন বাবু সকলে একসঙ্গে রওনা হয়েছেন।”
সুজাত বলিল, “হাঁ, সৃজান বিবিও সেখানে আছে।”
মোবারক জিজ্ঞাসা করিল, “কোথায়-এই শহরে না কি?”
সুজাত বলিল, “সহরে না-ফরিদপুরে মনিরুদ্দীনের নিজের যে একটা বাগান-বাড়ী আছে, দুজনে মিলিয়া সেখানে সুখে-স্বচ্ছন্দে নিরিবিলি বাস করিতেছে। এইবার যত গোলযোগ আরম্ভ হইল, আর কি।”
মোবারক বলিল, “খুব গোলযোগ-মনিরুদ্দীনের একটা খুবই দুর্নাম রটিয়া গেল। এদিকে জোহেরার সঙ্গে তাহার বিবাহের কথা হইতেছিল, তা’ আর ঘটিতেছে না, দেখিতেছি। জোহেরা যদিও সম্মত হইত, এখন সে কিছুতেই মনিরুদ্দীনকে বিবাহ করিবে না। মনিরুদ্দীন নিতান্ত নির্ব্বোধ-সৃজানের লোভে এমন একটা স্বর্ণসুযোগ ছাড়িয়া দিল।”
সুজাত বলিল, “মনিরুদ্দীনের আর স্বর্ণসুযোগ কি? স্বর্ণসুযোগ মজিদ খাঁর। মনিরুদ্দীনের এ দুর্নামটা না রটিলেও জোহেরা তাহাকে বিবাহ করিত না। তাহা হইলে কি বিবাহ এতদিন বাকী থাকে! মুন্সী সাহেব অনেক চেষ্টা করিয়াছিলেন; জোহেরা কিছুতেই স্বীকার করে নাই। কেনই বা করিবে, অগাধ ঐশ্বর্য্য-নিজেই সর্ব্বেসর্ব্বা-তার উপরে আবার সে লেখাপড়া-জানা মেয়েমানুষ-পরের মতে মত দিবার মেয়েই নয়! এ রত্ন মজিদ খাঁর ভাগ্যেই আছে!”
মোবারক বলিল, “আমার ত আর তাহা মনে হয় না। যদিও মজিদ মুক্তি পায়-এ দুর্নাম কি তাহার সহজে যাইবে, মনে করিয়াছ? আমার বিশ্বাস, জোহেরা এখন আর মজিদকেও বিবাহ করিতে রাজী হইবে না। আমার কথাটা ঠিক কি না, পরে দেখিতে পাইবে।”
সুজাত জিজ্ঞাসা করিল, “কেন, কিসে তুমি জানিলে?”
মোবারক বলিল, “আমি এখন নিজেই মজিদ খাঁর পদপ্রার্থী।”
সুজাত চমকিত হইয়া বলিল, “দূর-মিথ্যাকথা!”
মোবারক বলিল, “মিথ্যা নয়; অতি সত্যকথা। আমি এতদিন জোহেরাকে দেখি নাই-সেদিন তাহাকে দেখিয়া একেবারে মুগ্ধ হইয়াছি। আমি কিছুতেই আর তাহার আশা ত্যাগ করিতে পারিব না।”
সুজাত হাসিয়া বলিল, “তুমি না আশা ত্যাগ করিলেই যে , তোমার আশা নিশ্চয় পূর্ণ হইতেই হইবে, এমন কি কথা? মজিদ মধ্যে থাকিতে তুমি কিছুতেই জোহেরাকে লাভ করিতে পারিবে না।”
মোবারক বলিল, “একবার চেষ্টা করিয়া দেখিতে ক্ষতি কি আছে?”
সুজাত বলিল, “সহস্র চেষ্টাতেও তুমি কিছুতেই কৃতকার্য হইতে পারিবে না। জোহেরা কখনই তোমার প্রস্তাবে সম্মত হইবে না। সে যদি তোমাকে বিবাহ করে, আমার নাম সুজাত-আলি নয়।”
মোবারক দৃঢ়স্বরে বলিল, “যদি আমি জোহেরাকে বিবাহ করিতে না পারি-আমার নামও মোবারক-উদ্দীন নয়।”
৪.০২ দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ – পট-পরিবর্ত্তন
যখন মোবারক ও সুজাত-আলির মধ্যে এইরূপ তর্কবিতর্ক চলিতেছে, তখন এদিকে পাংসা স্টেশনে একখানি ট্রেন আসিয়া লাগিল। তাহার একটি কাম্রা হইতে তিন ব্যক্তি ব্যস্তভাবে নামিয়া পড়িল-মুন্সী জোহিরুদ্দীন, ডিটেক্টিভ দেবেন্দ্রবিজয় এবং উকীল হরিপ্রসন্ন।
ফরিদপুর জেলার উত্তর-পূর্ব্বভাগে পাংসা অবস্থিত। সেখান হইতে একমাইল দূরে মনিরুদ্দীনের বাগান-বাটী। স্টেশন ত্যাগ করিয়া তখনই তিনজনে সেই বাগানের দিকে চলিলেন।
পথিমধ্যে দেবেন্দ্রবিজয় উকীল হরিপ্রসন্ন বাবুকে বলিলেন, “সেই ভাঙ্গা ছুরিখানি খুনের রাতে মজিদ খাঁর বাসাতেই ছিল-মজিদ খাঁ তাহা সঙ্গে করিয়া বাহির হ’ন্ নাই, এরূপ স্থলে এই ছুরিদ্বারা দিলজান যে খুন হয় নাই, আপনি এখন হামিদা দ্বারা প্রমাণ দিতে চেষ্টা করিবেন; কিন্তু তাহাতে আপনি কতদূর কৃতকার্য্য হইবেন, বলিতে পারি না। ঐ ছুরি দিলজান সঙ্গে লইয়া বাহির হইয়াছিল; আর মজিদ খাঁই মনিরুদ্দীনের বাড়ীতে দিলজানের নিকট হইতে ঐ ছুরি কাড়িয়া লইয়াছেন, ইহা যখন স্পষ্ট জানা যাইতেছে-পরে স্পষ্টরূপে প্রমাণীকৃতও হইবে, তখন হামিদার কথা কতদূর টিকিবে তাহা আপনি সহজেই বুঝিতে পারিতেছেন। মজিদ খাঁর নিকটে যখন ছুরিখানি পাওয়া যাইতেছে, তখন ঐ ছুরিতেই দিলজান খুন হইয়াছে, ইহা খুবই সম্ভব; ইহাতে সন্দেহের কিছুই নাই।”
হরিপ্রসন্ন ববু বলিলেন, “এ সংসারে লোকও আনেক আছে-ছুরিও অনেক আছে।”
দেবেন্দ্রবিজয় বলিলেন, “তাহা সত্য; কিন্তু ঐ ছুরিখানিই যখন দিলজানের সেই বিষাক্ত ছুরি বলিয়া জানা যাইতেছে-এবং যখন বিষাক্ত ছুরিই দিলজানের মৃত্যুর কারণ, তখন কে বিশ্বাস করিবে, দিলজান অন্য একখানা ছুরিতে খুন হইয়াছে?”
হরিপ্রসন্ন বাবু বলিলেন, “সকলই প্রমাণের উপরে নির্ভর করিতেছে। বেশই বুঝা যাইতেছে, একটা দুর্গম রহস্যের ভিতরে সকলই প্রছন্ন রহিয়াছে।”
দেবেন্দ্রবিজয় বলিলেন, “আমারও তাহাই অনুমান-আমরা একটা দুর্লঙ্ঘ্য রহস্য-ব্যুহের চারিদিক্ বেড়িয়া, অন্ধের ন্যায় ঘুরিয়া বেড়াইতেছি; ভেদ করিয়া যাইবার পথ এখনও খুঁজিয়া পাই নাই। আমার বোধ হয়, সেদিন রাত্রিতে মজিদ খাঁর সহিত সৃজান বিবির যে সকল কথোপকথন হইয়াছিল, তাহা যদি এখন কোন রকমে জানিতে পারা যায়, তাহা হইলে সহজে আপনা হইতে সত্যাবিষ্কার হইয়া পড়ে, আর কোন গোল থাকে না।”
মুন্সী সাহেব বলিলেন, “বুঝিয়াছি, আপনাদের মনে ধারণা, আমার স্ত্রীর দ্বারাই দিলজান খুন হইয়াছে।”
দেবেন্দ্রবিজয় বলিলেন, “যতক্ষণ সৃজান বিবির সহিত দেখা না হইতেছে, ততক্ষণ আমাদিগের ধারণা কতদূর সত্য, বুঝা যাইতেছে না।”
যথাসময়ে তাঁহারা সেই বাগানে আসিয়া উপস্থিত হইলেন। সুন্দর সাজান বাগান। তখন সন্ধ্যার তরল অন্ধকারে চারিদিক্ আছন্ন হইতে আরম্ভ হইয়াছে। সম্মুখে স্বচ্ছ জলপূর্ণ নীল দীর্ঘিকা সেই তরল অন্ধকরে গভীর নীলবর্ণ দেখাইতেছে। তাহার বক্ষে পার্শ্বস্থিত প্রেতবৎ বড় বড় গাছগুলার দীর্ঘতর প্রতিবিম্ব আসিয়া পড়িয়াছে-এবং ঝিল্লিমন্দ্রে চারিদিক্ মুখরিত। দীর্ঘিকার অপর পারে একখানি সুন্দর ছোট দ্বিতল বাটী। সেই বাটীর উপরিতলস্থ দুই-একটি কক্ষে দীপ জ্বলিতেছে। এবং উন্মুক্ত গবাক্ষ-পথ দিয়া সেই দীপলোক নিকটবর্ত্তী দেবদারুশ্রেণীর উপরে আসিয়া পড়িয়াছে। সকলে সেই বাটী-অভিমুখে চলিলেন। দ্বার-সম্মুখে আসিয়া একজন ভৃত্যকে দেখিতে পাইলেন।
দেবেন্দ্রবিজয় সেই ভৃত্যকে বলিলেন, “মনিরুদ্দীন সাহেবকে সাথ, একদফে মোলাকাৎ কর্না চাহিয়ে; তুম জলদী খবর দেও।”
ভৃত্য বলিল, “সাহাব খানা-পিনা কর্কে বারা বাজাকে ট্যরেণ্মে সহর্মে চলা গ্যয়া।”
হরিপ্রসন্ন বাবু জিজ্ঞাসা করিলেন, “মল্লিক সাহাব কো সাথ্ যো বিবি সাহাব অ-রহা, উন্নে অযবি কাঁহা হৈ? সাহাবকে সাথ্ তো গ্যয়া নেহি?”
দেবেন্দ্রবিজয় বলিলেন, “বিবি সাহেব আর কোথায় যাইবেন, এইখানেই আছেন। (ভৃত্যের প্রতি) আব্বি তুম্ বিবি সাহাব্কী খবর দেও।”
ভৃত্য সঙ্কুচিতভাবে কহিল, “হুজুর, আব্বি সাহাব্কী সাথ্ কেঁও কর-”
দেবেন্দ্রবিজয় বাধা দিয়া বলিলেন, “জল্দি খবর দেও, ন্যহিতো তুম্হারা বিবি সাহাব্কী বহুৎ মুস্কিল হোগা!”
অনন্যোপায় ভৃত্য তাঁহাদিজকে নিম্নতলস্থ একটি কক্ষে লইয়া গিয়া বসাইল। এবং ‘বিবি সাহেবের’ নিকটে সংবাদ লইয়া উপরিতলে উঠিয়া গেল।
ঘরটি ছোট-টেবিল, কৌচ, আল্মারী, চেয়ার ও ছবিতে সুন্দররূপে সাজান। এক কোণে একটা বড় টেবিল-হার্মোনিয়ম রহিয়াছে, তাহার পার্শ্বে বাঁয়া তবলা, মৃদঙ্গ, সারঙ্গ, সেতার, এস্রাজ-কয়েকটা বাদ্যযন্ত্র পড়িয়া রহিয়াছে।
সকলে নীরবে সেই ছোট ঘরটিতে অপেক্ষা করিতে লাগিলেন। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করিতে হইল না। কক্ষের বাহিরে কাহার মৃদু পদধ্বনি শুনা গেল। তখনই পার্শ্ববর্ত্তী একটি কক্ষের দ্বারসম্মুখস্থ পর্দ্দা উঠিয়া দীর্ঘাবয়বসম্পন্না, চারুচন্দ্রবদনা একটি সুন্দরী দ্বারপথে বিস্ময়োদ্বিগ্নমুখে দাঁড়াইল।
দেবেন্দ্রবিজয় ও হরিপ্রসন্ন বাবু বিস্মিতভাবে মুন্সী সাহেবের মুখের দিকে চাহিলেন। ইচ্ছা – পলাতক পত্নীর পুনাবির্ভাবে মুন্সী সাহেব কি ম্করেন, দেখিবেন।
মুন্সী সাহেব রুষ্ট সিংহের ন্যায় গর্জ্জিয়া উঠিলেন, “পিশাচী-সয়তানী” বলিতে বলিতে লাফাইয়া সেই রমণীর সম্মুখীন হইলেন। সহসা যেন একটা কি বাধাপ্রাপ্ত হইয়া, চকিত দুই পদ পশ্চাতে হটিয়া জড়িতকণ্ঠে বলিলেন, “তুমি-তুমি-তুমি-ত সেই সৃজান নও।”
রমণীও বিস্মিতভাবে স্মিতমুখে কহিল, “আমি! আমি কেন সৃজান হইতে যাইব? আমি নই-আপনাদের ভুল হইয়াছে।”
দেবেন্দ্রবিজয় ও হরিপ্রসন্ন বাবু উভয়ে বিদ্যুৎপৃষ্টের ন্যায় দাঁড়াইয়া উঠিলেন। সমস্বরে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কে তবে তুমি?”
রমণী কহিল, “দিলজান।”
৪.০৩ তৃতীয় পরিচ্ছেদ – ভ্রম-নিরাস