হোয়াট ডু ইউ মিন?
আর হোয়াট ডু ইউ মিন-এর টাইম নেই। গেট রেডি ফর এ গ্রেট সেলিব্রেশন।
তরুণ অত আশাবাদী হতে পারে না, ডোন্ট বি ওভার-অপটিমিসটিক।
ডান পা-টা আস্তে আস্তে একটা ছোট্ট মোড়ার উপর তুলে বড়ুয়া বলল, তরুণ, আই নো পাকিস্তান বেটার দ্যান ইউ।
তা তো বটেই।
ইন্দ্রাণীর খবর যদি খারাপ হতো, তাহলে পাকিস্তান এত ঝামেলার মধ্যে যেত না…
উদগ্রীব হয়ে বড়ুয়ার কথা শোনে তরুণ। তার মানে?
ইফ ইট ওয়াজ এ হোপলেস কেস, তাহলে ওরা সোজা বলে দিত ইন্ডিয়াতে চলে গেছে। দেন দি বল উড হ্যাভ বিন ইন আওয়ার কোর্ট।
নানা কারণে ইন্দ্রাণীর কেসটায় ওরা ইন্টারেস্ট নিচ্ছে কিন্তু…
ইউ হ্যাভ নো আইডিয়া হাউ সুইটলি দে ক্যান অ্যাক্ট ইন সাম কেসেস।
তাতে কি হলো?
আমার মনে হয় ওরা ইন্দ্রাণীর সব খবর পেয়ে গেছে এবং এখন আস্তে আস্তে আমাদের সব খবর জানবে।
তাতে কি লাভ?
ওরা বোঝাবে যে আমাদের একজন ডিপ্লোম্যাটের জন্য কত কি করল।
ডু ইউ থিংক সো?
একশোবার।
পরের দিন সকালে সাউথ ব্লকে মিনিস্ট্রিতে গেলে পাকিস্তান ডেস্কের অনেকেই একথা বললেন।
ওয়েস্টার্ন ইউরোপিয়ান ডেস্কে তরুণ নিজের কাজকর্ম নিয়ে বেশ একটু ব্যস্ত হলেও পাকিস্তান ডেস্কে যাতায়াত করতে হতো নানা কারণে। অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে জয়েন্ট ডিকাসনও হতো।
একদিন এমনি ডিকাসনের সময় জয়েন্ট সেক্রেটারি বললেন, ইন্দ্রাণীকে পাবার পরই নিজেদের বোনাফাইডি প্রমাণ করার জন্য পাকিস্তান নিশ্চয়ই একটা দারুণ প্রোপাগাণ্ডা শুরু করবে।
উপস্থিত অফিসাররা অস্বীকার করতে পারলেন না এমন সম্ভাবনা।
তরুণ ওদের আলাপ-আলোচনায় বেশ একটু অবাক হয়। সারা মিনিস্ট্রির প্রায় সবাই ধরে নিয়েছে, ইন্দ্রাণীকে পাওয়া যাবেই।
কিন্তু?
তরুণের অনেক প্রশ্ন, অনেক সংশয়। ইন্দ্রাণীকে পাওয়া গেলেও কি তাতে গ্রহণ করা সম্ভব হবে? তরুণ গ্রহণ করতে চাইলেও তার পক্ষে অসম্ভব হবে না তো?
জয়েন্ট সেক্রেটারি তো দূরের কথা, অন্যান্য কাউকেই এসব কথা বলতে পারে না, জানাতে পারে না, বোঝাতে পারে না। চুপ করে ওদের কথা শোনে, মুখে কিছু বলে না।
মনের মধ্যে অনেক সংশয়, অনেক দ্বিধা সত্ত্বেও দিল্লিতে আসার পর তরুণের মনটা একটু যেন জড়তামুক্ত হলো। একটু যেন আশাবাদী হলো।
হবে না? হাজার হোক এতগুলো মানুষ যে ইন্দ্রাণীকে খুঁজে বার করার কাজে মেতে উঠেছে তা দেখে তরুণ একটু স্বস্তি পায়। বহুদিন বহুজনের সেবাযত্ন পাবার পরও যদি কোনো রোগী রোগমুক্ত না হয়, যদি সে এই পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে বিদায় নেয়, তবুও একটা সান্ত্বনা থাকে। তেমনি এতগুলো মানুষের এত দিনের প্রচেষ্টার পরও যদি ইন্দ্রাণীকে…
না না, তা হয় না। যুক্তি-তর্ক করে অন্যকে বোঝান যায়, সান্ত্বনা জানান যায়। নিজের বেলায়? নৈব নৈব চ।
ইতিমধ্যে করাচি থেকে আর একটা মেসেজ এলো দিল্লিতে।…উই হ্যাভ চেক আপ আওয়ার রেকর্ডস…। পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টে তদন্ত করে জানা গেল আজ পর্যন্ত সাতজন মৈনুল ইসলামকে পাশপোর্ট ইস্যু করা হয়েছে ও তাদের মধ্যে পাঁচজন বিদেশ গিয়েছেন। দু জন মৈনুল ইসলাম পাকিস্তান ফরেন সার্ভিসে আছেন এবং এদের একজন অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের, বাট কারেন্টলি ওয়ার্কিং ইন ফরেন সার্ভিস। উই আর কনটাকটিং অল অফ দেম।…
ওই মেসেজেই আর একটা খবর ছিল।…মিস গুহের পাশপোর্টের রেকর্ড থেকে জানা গেছে ওঁর পায়ের পাতায় নাকি স্টি করার চিহ্ন আছে। কাইন্ডলি চেক আপ উইথ মিঃ সেনগুপ্ত এবং একটু তাড়াতাড়ি খবরটার সত্যতা আমাদের জানালে ভালো হয়।
মেসেজটা ডি-সাইফার হয়ে পাকিস্তান ডেস্কে এসেছিল সন্ধ্যার দিকে। ডেপুটি সেক্রেটারি সঙ্গে সঙ্গে মিনিস্ট্রিতে তরুণের খোঁজ করেছিলেন কিন্তু পাননি। একটু পরেই বড়ুয়া ওখানে ফোন করলেন।
তরুণ, হিয়ার ইজ অ্যান আর্জেন্ট মেসেজ ফ্রম করাচি এবং আজ রাত্রেই উত্তর দিতে হবে।
করাচি থেকে আর্জেন্টে মেসেজের কথা শুনতেই তরুণ যেন একটু অস্থির হয়ে উঠল। সারা শরীরের রক্ত যেন হুড়মুড় করে দৌড়াদৌড়ি শুরু করে দিল! কিছু বুঝতে দিল না। ডেপুটি সেক্রেটারিকে বলল, হ্যাঁ, ওর ডান পায়ে স্টি করার চিহ্ন ছিল।
থ্যাংক ইউ ভেরি মাচ।
নট অ্যাট অল। বরং কষ্ট করে আমাকে ফোন করার জন্য আমিই আপনাকে ধন্যবাদ জানাব।
মেসেজটা শোনার পর আবার পুরনো দিনের কথা মনে পড়ল।
তখন ও ক্লাস টেন-এ পড়ে। নতুন শাড়ি পরা শুরু করেছে। ব্লেড দিয়ে পায়ের নখ কাটতে কাটতে হঠাৎ হাওয়ায় শাড়ির আঁচলটা বুঝি উড়ে পড়ে সামনের দিকে। এক ঝাঁকুনি দিয়ে শাড়িটা সরাতে গিয়ে ব্রেডটা বসে যায় পায়ের পাতায়। উঃ! কি রক্ত পড়েছিল। পাঁচটা কি ছটা স্টি করতে হয়েছিল।
ইন্দ্রাণী তখনও বিছানায় শুয়ে। ওঠা-নামা একেবারেই বন্ধ। একদিন তরুণ বলেছিল, তোমার শাড়ি পরার কি দরকার?
সে কথা তোমাকে বোঝাতে হবে? পাল্টা প্রশ্ন করেছিল ইন্দ্রাণী।
আমাকে ছাড়া আর কাকে বোঝাবে?
তোমাকে কোনোদিনই বুঝতে হবে না।
অনেক দিন পর আজ আবার সেসব কথা মনে পড়ল। একটু বিবর্ণ হয়ে গেল তরুণের মন।
রানি একটু ইসারা করল বড়ুয়াকে।
কে ফোন করল? জানতে চাইল বড়ুয়া।
ডি-এস (পাকিস্তান)।
আইডেনটিফিকেশন মার্ক ভেরিফাই করল বুঝি?