• আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি
রবিবার, জুন 8, 2025
  • Login
BnBoi.Com
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
BnBoi.Com
No Result
View All Result

দরজার ওপাশে – হুমায়ূন আহমেদ

Dorjar Opashe By Humayun Ahmed

‘ভাল লাগার তো কথা না।’
‘আচ্ছা আপনি কি ওর চাকরির কোন ব্যবস্থা করতে পারবেন?’
‘পারব।’
‘সত্যি পারবেন?’
‘হ্যাঁ।;’
‘তাহলে একটু তাড়াতাড়ি করবেন। ও চাকরি পেলেই আমি ওর কাছে চলে যাব। তখন আর ভাইয়া বলতে পারবে না—চাকরি-বাকরি নেই। ও তোকে খাওয়াবে কি? আজ তাহলে উঠি।’
যূথী ঝট করে উঠে দাঁড়াল। আর তখনি আমার মনে হল ঐ মেয়েটা রূপার মত। যদিও এরকম মনে হবার কোন কারণ নেই। আমরা পছন্দের মানুষের মধ্যে অতি প্রিয়জনদের ছায়া দেখি। এটাই মূল ব্যাপার।
‘হিমু ভাই, আমাকে বড় রাস্তা পর্যন্ত এগিয়ে দিন। আসার সময় দেখেছি কতগুলো বখা ছেলে দাঁড়িয়ে সিগারেট টানছে। আমায় দেখে একজন বলল, শুঁটকি রাণী, শুঁটকি রাণী।’
আমি যূথীকে রিকশায় উঠিয়ে দিয়ে আবার ঘরে এসে শুয়ে পড়লাম। আজ আমার পরিকল্পনা সারাদিন ঘুমানো। সাইকেলটা বদলে দেয়া। সারাদিন ঘুমুব, রাতে জেগে থাকব। আমার বাবার অনেক উপদেশের একটি হচ্ছে—

‘ঘুমাইয়া রাত নষ্ট করিও না। দিনে নিদ্রা যাইবে। রাত কাটাইবে অনিদ্রায়। কারণ রাত্রি আত্ম-অনুসন্ধানের জন্য উত্তম। জগতের সকল নিশিষাপন করে। পশু মাত্রই নিশাচর। মানুষ এক অর্থে পশু। নিশিযাপন তার অবশ্যকর্তব্যের একটি।”
বিছানায় অনেকক্ষণ গড়াগড়ি করার পরও ঘুম আনা গেল না। ঘরে খবরের কাগজ নেই, পুরানো ম্যাগাজিন নেই যে চোখ বুলাব। মামার বাড়ি থেকে আসা চিঠিটা অবশ্যি পড়া যায়, পড়তে ইচ্ছে করছে না। চিঠিতে কি লেখা না পড়েই বলে দিতে পারি। একই ভাষায়, একই ভঙ্গিতে একটি শব্দ এদিক-ওদিক না করে ছোট মামা দীর্ঘ দিন ধরে চিঠি লিখছেন। চিঠির মাথায় আরবীতে লেখা থাকে ইয়া রব। তারপর গুটি গুটি হরফে লেখেন—
দোয়া গো,
পর সমাচর এই যে, দীর্ঘদিন তোমার কোন পত্রাদি না পাইয়া বিশেষ চিন্তাযুক্ত আছি। আশা করি আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন তোমাকে সুস্থ দেহে রাখিয়াছেন। আমাদের এদিকের সংবাদাদি মঙ্গল। তুমি কোন চিন্তা করিবে না। আল্লাহপাকের ইচ্ছার এইবার ফসল ভাল হইয়াছে। ব্যবসাপাতিও ভাল। তোমাকে মাসিক যে টাকা পাঠানো হয় তাহাতে তোমার চলে কিনা। জানি না। প্রয়োজন হইলেই জানাইবা। এই বিষয়ে কোন রকম লজ্জা বা সংকোচ করিবে না। তোমাকে যে কি পরিমাণ স্নেহ করি একমাত্র আল্লাহপাক রাব্বুল আলামীন জ্ঞাত আছেন।
শরীরের যত্ন নিবা পথে পথে ঘোরার অভ্যাস ত্যাগ করিবা। মনে রাখিও, ভিক্ষুকরাই পথে পথে ঘুরে। তুমি ভিক্ষুক নও। কারণ আমরা এখনও জীবিত আছি। আল্লাপাকের ইচ্ছায় তোমার অন্নের অভাব কখনো হইবে না। কোন কারণে আমার মৃত্যু ঘটিলেও চিন্তাযুক্ত হইও না। কারণ আমি তোমার নামে আলাদা সম্পত্তি লেখাপড়া করিয়া দিয়া রাখিয়াছি। তাহাতে কেহ হাত দিবে না। দোয়া নিও। ইতি তোমার ছোট মামা।

বিছানায় গড়াগড়ি করতে করতে মনে হল—অনেকদিন মামার বাড়ি যাওয়া হয় না। কোন এক গভীর রাতে হঠাৎ উপস্থিত হলে কেমন হয়?
চার বছর আগে মামার বাড়ি গিয়েছিলাম। ঠাকরোকোণা স্টেশনে নেমে সাত মাইল হেঁটে রাত একটার সময় উপস্থিত হলাম। ছোট মামা ঘুম ভেঙে উঠে এলেন। প্রথমে খানিকক্ষণ হতভম্ভ চোখে তাকিয়ে রইলেন। তারপর আনন্দে কেঁদে ফেললেন। গোসলের জন্যে গরম পানি করা হল। মামা গম্ভীর গলায় হুকুম দিলেন। মুরগী জবেহ করে যেন পোলাও কোরমা করা হয়। রান্না হতে হতে রাত তিনটা বেজে গেল। মামা বললেন, ছেলেটা একা একটা খাবে না-কি—দেখি ওর সাথে আমাকেও দাও।
মাঝের ঘরে আমার শোবার ব্যবস্থা। সেই ঘরের খাট মামার পছন্দ না। খাট খুলে নতুন খাট পাতা হল। বিশাল খাট। জানা গেল, এই নতুন খাট আমার জন্যেই মামা বানিয়ে রেখেছেন। একজন মানুষের প্রতি অন্য একজনের ভালবাসা যে কোন পর্যায়ে যেতে পারে আমার মামাদের না দেখলে তা জানতে পারতাম না। অথচ আশ্চার্যের ব্যাপার, মানুষ হিসেবে মামার পিশাচ শ্রেণীর! তাঁদের সমস্ত ভালবাসা নিজের মানুষদের জন্যে, বাইরের কারোর জন্যে নয়।
মামার বাড়িতে সেবার দু’মাস কাটিয়ে দিলাম। তারপরেও যখন চলে আসার জন্যে ব্যাগ গুটাচ্ছি, ছোট মামা দুঃখিত গলায় বললেন, এত তাড়াতাড়ি চলে যাবি? আর দু’টা দিন থেকে যা, সিঁদুর গাছের আমগুলি পাকুক। তোকে যেতে দিতে ইচ্ছা করে না রে হিমু। ইচ্ছে করে মোটা একটা শিকল দিয়ে তোকে বেঁধে রাখি।

দরজার ওপাশে – ০৫

“শিকল দিয়ে কাউকেই বেঁধে রাখা হয় না। তারপরেও সব মানুষই কোন না কোন সময় অনুভব করে তার হাতে-পায়ে কঠিন শিকল। শিকল ভাঙতে গিয়ে সংসার-বিরাগী গভীর রাতে গৃহত্যাগ করে। ভাবে, মুক্তি পাওয়া গেল। দশতলা বাড়ির ছাদ থেকে গৃহী মানুষ লাফিয়ে পড়ে ফুটপাতে। এরা ক্ষণিকের জন্য শিকল ভাঙার তৃপ্তি পায়।”
এই জাতীয় উচ্চশ্রেণীর চিন্তা করতে করতে নিজ আস্তানার দিকে ফিরছি।
উচ্চশ্রেণীর চিন্তা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। আমার বাবার কঠিন উপদেশের ফল ফলতে শুরু করেছে। এখন আর সহজ স্বাভাবিক ভঙ্গিতে হাঁটতে পারি না।কিছু একটা ভেবে ভেবে হাঁটি।
রাস্তাঘাঠ আগের মত নিরাপদ না।গভীর রাতে বাড়ি ফিরছি। চোখ-কান খোলা রেখে হাঁঠা দরকার। যে কোন মুহূর্তে উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম যে কোন দিকে বেড়ে দৌড় দেয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে। সাধারণ মানুষদের মত মহাপুরুষদের জীবন সংশয় হয়। তাছাড়া সঙ্গে টাকা-পয়সা আছে। বড় ফুপার দেয়া টাকাটা খরচ হয় নি। টাকাটা সাবধানে রাখতে হবে। একটা সময় ছিল যখন মহাপুরুষদের অর্থের প্রয়োজন হত না। এখন হয়। এই যুগের মহাপুরুষদের সেভিংস এবং কারেণ্ট দু’টা একাউন্টই থাকা দরকার।
আমার পেছনে ধীর গতিতে একটা রিকশা আসছে। একজন রিকশাওয়ালার কাছে শুনেছি, আস্তে রিকশা চালানো ভয়ংকর পরিশ্রমের ব্যাপার। রিকশা যত দ্রুত চলবে তত পরিশ্রম তত কম। এই রিকশাওয়ালার পরিশ্রম খুব বেশি হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর পর সে টুন টুন করে ঘণ্টা বাজাচ্ছে। যদিও ঘণ্টা বাজানোর কোন প্রয়োজন নেই। রাস্তাঘাট ফাঁকা। আমি কৌতূহলী হয়ে পেছনে তাকাতেই রিকশা আমার ধার ঘেঁসে থেমে গেল। যা ভেবেছি তাই। রিকশায় ভদ্র চেহারার একটা মেয়ে বসে আছে। বয়স অল্প, লম্বাটে করুণ মুখ, মাথার চুল বেণী করা। চোখে সম্ভমত কাজল দেয়া, টানা টানা চোখ। মানুষের চোখ এতটা টানা টানা হয় না, গরু-হরিণ এদের চোখ হয়। মেয়েটির পায়ের কাছে বাচ্চাদের স্কুলব্যাংগর সাইজের একটা চামড়ার স্যুটকেস। মেয়েটি মুখ বের করে শান্ত গলায় বলল, আপনি কি আমায় একটা উপকার করতে পারবেন? তার গলায় স্বর যেমন পরিষ্কার, উচ্চারণও পরিষ্কার। আমি কাছে এগিয়ে গেলাম। রিকশাওয়ালা রিকশা রেখে খানিকক্ষণ দুরে সরে গিয়ে সিগারেট ধরাল। তার ভাবভঙ্গিতে কোন রকম কৌতুহল বা আগ্রহ নেই।
‘আমি ভীষণ বিপদে পড়েছি। জামালপুর থেকে রাতের ট্রেনে এসেছি।যাব খালার বাসায় মুগদাপাড়া। মুগদাপাড়া চিনেন?’
‘চিনি।’
‘অনেক দুর, তাই না?’
‘হ্যাঁ। অনেক দূর।’
‘আগে বুঝতে পারিনি। আগে বুঝতে পারলে স্টেশনে থেমে যেতাম। অবশ্যি স্টেশনে থাকতে ভয় ভয় লাগছিল। গুণ্ডাধরনের কয়েকটা লোক ঘোরাফেরা করছিল। বিশ্রী করে তাকাচ্ছিল।’
মেয়েটা কথা বলছে হাত নেড়ে নেড়ে। কথা বলার মধ্যে কোন সংকোচ বা দ্বিধা নেই।বরং তাকে দেখে মনে হচ্ছে কথা বলে সে আরাম পাচ্ছে।
‘এখন আমার একা যেতেও সাহসে কুলাচ্ছে না।,
‘আপনি কি চাচ্ছেন আমি আপনার সঙ্গে যাই?’
‘তাহলে তো খুবই ভাল হয়। কিন্তু আমি আবার খালার বাসায় ঠিকানাটা হারিয়ে ফেলেছি। একটা কাগজ এনেছিলাম, কাগজটা খুঁজে পাচ্ছি না। তবে জায়গাটা কিছু কিছু মনে আছে। দু’বছর আগে একবার এসেছিলাম।দিনের বেলা গিয়ে খুঁজে খুঁজে বের করতে হবে।’
‘আমি এখন কি করতে পারি?’
‘রাতটা থাকার জন্য আপনি আমাকে একটা জায়গা দিতে পারেন? শুধু রাতটা থাকব। ভোরবেলা চলে যাব। আমার খুব উপকার হয়।’
রিকশাওয়ালার সিগারেট শেষ হয়েছে। তারপরেও সে উঠে আসছে না। রাস্তার ধারে বসে আছে নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে। পিচ করে একবার থুথুও ফেলল। আমি মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললাম, তোমার নাম কি?
সে হকচকিয়ে গেল। আচমকা নাম জিজ্ঞেস করলে এই জাতীয় মেয়েরা হকচকিয়ে যায়। এদের বেশ কয়েকটা নাম থাকে। কোনটা বলবে বুঝতে পারে না। কারণ বলতে ইচ্ছে করে আসল নামটি, যে নাম কখনো বলা যাবে না।
আমি বললাম, নাম মনে পড়ছে না?
মেয়েটা ছোট্ট নিঃশ্বাস ফেলল। সে যে কি পরিমাণ ক্লান্ত তা তার নিঃশ্বাস থেকে বোঝা যাচ্ছে। আগে বোঝা যায় নি।
‘আমার নাম সেতু্।’
‘আসল নাম?’
‘হ্যাঁ আসল নাম। কেউ নাম জিজ্ঞেস করলে আমি আসল নামটা বলি। নকলটা বলি না।’
‘শোন সেতু, তোমাকে আমি ধার হিসেবে কিছু টাকা দিয়ে দি। পরে আমাকে শোধ করে দেবে। রাজি আছ?’
‘আপনাকে কোথায় পাব?’
‘আমাকে পেতে হবে না। আমি তোমাকে খুঁজে বের করব।’
‘কোথায় খুঁজবেন?’
‘পথেই খুঁজব।’
‘আপনি আমাকে যা ভাবছেন আমি তা না।’
‘অবশ্যই তুমি তা না।’
আমি মানিব্যাগ বের করলাম। বড় ফুপার টাকা ছাড়াও সেখানে একটা চকচকে পাঁ’শ টাকার নোট আছে। সব দিয়ে দেয়া যাক। সেতু হাত বাড়িয়ে টাকা নিল। সে টাকাগুলি গোনার চেষ্টা করছে।সে আগের মতই শান্ত স্বরে বলল, আপনাকে আমি চিনি। অনেকদিন আগে আপনার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল, বগুড়ায়। আমরা থাকতাম সূত্রাপুরে। আপনার কি বিশ্বাস হচ্ছে?
‘না। বগুড়ায় আমি কোনদিন যাইনি।’
‘ভুল বলেছি বগুড়ায় না, ঢাকাতেই দেখা হয়েছে। পুরনো ঢাকায়, আগামসি লেনে। আপনি আপনার এক বন্ধুকে নিয়ে আমাদের বাসায় এসেছিলেন। আপনার পরণে একটা ঘিয়া রঙের পাঞ্জাবি ছিল। আপনি আমার কথা বিশ্বাস করছেন না। তাই না?’
‘এক বর্ণও বিশ্বাস করছি না। তুমি কথা বলতে পছন্দ কর। এবং গুছিয়ে কথা বলতে পার। এই স্বভাবের মেয়েরা বানিয়ে অনেক কথা বলে। তুমিও তাই করছ। বাসায় চলে যাও। টাকাটা নিয়ে যেতে অসুবিধা হবে না তো? এ রাস্তায় হাইজ্যাকারের হাতে পড়তে পার।’
সেতু ছিল বলল না। টাকাগুলি সে আবার গুনতে চেষ্টা করছে। সুন্দর একটি মেয়ে। গভীর রাতে রাস্তায় দাঁড়িয়ে টাকা গুনছে এই দৃশ্য ভাল লাগে না। মেয়েটির এই মুহূর্তেই থাকা উচিত ছিল উঁচু দেয়াল-ঘেরা প্রাচীন ধরনের একটা দোতলা বাড়ির শোবার ঘরে। শোবার ঘরের খাটটা থাকবে অনেক বড়। সেশুয়ে থাকবে তার স্বামীর পাশে। না না, পাশে না। দু’জন থাকবে দু’দিকে। মাঝখানে একটি শিশু। ঘুমের মধ্যে দুঃস্বপ্ন দেখে শিশুটি কেঁদে উঠবে। সেতু জেগে উঠে তাকে শান্ত করার চেষ্টা করবে। আদুরে গলায় বলবে—কে মেরেছে আমার বাবুকে? কে মেরেছে? কার এত সাহস? কে আমার বাবুকে মারল?
বাবু শান্ত হচ্ছে না। তার কান্না বেড়েই যাচ্ছে। সেতু তার স্বামীকে ডেকে তুলে ভর্য়াত গলায় বলবে, একটু দেখ না ও এত কাঁদছে কেন? বোধহয় পেট ব্যথা করছে। বাতিটা জ্বালাও তো। সেতুর স্বামী বাতি জ্বালাবেন। আলো দেখে শিশু কান্না থামিয়ে হাসতে শুরু করবে। সেতু মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে বলবে—ওমা, আমার বাবু এত’ হাসটু’ করছে কেন? কেন আমার বাবা এত ‘হাসটু’ করছে? কে আমার বাবাকে কাতুকুতু দিয়ে গেল? কে সেই দুষ্ট লোক?

Page 10 of 16
Prev1...91011...16Next
Previous Post

চলে যায় বসন্তের দিন – হুমায়ূন আহমেদ

Next Post

আকাশপ্রদীপ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

Next Post

আকাশপ্রদীপ - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি ২ - মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সাম্প্রতিক প্রকাশনাসমূহ

  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৫: ভূমিকম্প – শামসুদ্দীন নওয়াব
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৮: বিভীষিকার প্রহর – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: বড়দিনের ছুটি – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আলাস্কা অভিযান – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আমিই কিশোর – রকিব হাসান

বিভাগসমূহ

  • আত্মজীবনী
  • ইতিহাস
  • উপন্যাস
  • কবিতা
  • কাব্যগ্রন্থ
  • গল্পের বই
  • গোয়েন্দা কাহিনী
  • ছোট গল্প
  • জীবনী
  • দর্শন
  • ধর্মীয় বই
  • নাটকের বই
  • প্রবন্ধ
  • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
  • বৈজ্ঞানিক বই
  • ভূতের গল্প
  • রহস্যময় গল্পের বই
  • রোমাঞ্চকর গল্প
  • রোম্যান্টিক গল্পের বই
  • শিক্ষামূলক বই
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In