পরের দিন সুলতান খাঁন দুপুরের খাওয়া দাওয়ার পর সুগন্ধিযুক্ত মাছের আদার (টোপ) ও হুইল ছিপ নিয়ে পুকুর ঘাটে এলেন।
ছিপে মাছ ধরা দেখার জন্য জমিরনের সঙ্গে মাহবুবাও এসেছে। জমিরন দুটো জলচৌকি ও দুটো ছাতা এনেছে।
মাহবুবাকে ঘাটের উপর ছাতা খাটিয়ে একটা জলকৌচিতে বসতে দিল। তারপর সুলতান খাঁনের কাছে গেল।
সুলতান খাঁন ততক্ষণে বঁড়শীতে টোপ গেঁথে পানিতে ফেলেছেন। জমিরনের কাছ থেকে জলচৌকি নিয়ে ছাতা খাটিয়ে বসলেন।
ঘন্টা খানেকের মধ্যে প্রায় দেড় কেজী ওজনের দুটো মিরগেল মাছ ধরে ছেড়ে দিলেন। তারপর একটা বড় মাছ বঁড়শীর টোপ গিলল। অনেকক্ষণ মাছটা খেলিয়ে সুলতান খাঁন ঘাটের কিনারে নিয়ে এলেন। মাছটাকে যখন খেলাচ্ছিলেন তখন জমিরনকে ছাকনিজাল নিয়ে আসতে বলেছিলেন। মাছ কিনারে আনার পর তাকে বললেন, এবার ছাঁকনিজালে করে তুলে নে।
জমিরন মাছটা ছাঁকনি জালে তুলে ঘাটের উপরে নিয়ে এল। প্রায় ছয় সাত কেজি ওজনের রুইমাছ।
মাছটা যখন খেলছিল তখন কয়েকবার লাফ দিয়েছে। মাহবুবা দেখে যেমন আনন্দ পেয়েছে তেমনি ভয়ও পেয়েছে। জমিরন উপরে নিয়ে এসে পাকার উপর রাখতে মাছটা চটাং চটাং শব্দ করে লাফাতে লাগল। মাহবুবা জীবন্ত মাছ কখনো দেখেণি। এখন দেখে খুব আনন্দ পেল।
ঘরে এসে সুলতান খাঁন স্ত্রীকে বললেন, মাছটা ভালো করে জ্বাল দিয়ে রাখ। কাল মাহবুবার সঙ্গে তার মা-বাবার জন্য পাঠাব।
পরের দিন রওয়ানা হওয়ার সময় মাহবুবা জিজ্ঞেস করল, দুচার দিনের মধ্যে কি মাহবুবের চিঠি পেয়েছেন?
সুলতান খাঁন বললেন, তোমরা যেদিন এসেছ, সেদিনই পেয়েছি।
তার ঠিকানা দিন তো।
ঠিকানা দেয়নি তো মা।
মাহবুবা একটা কাগজে নিজের ঠিকানা লিখে তার হাতে দিয়ে বলল পরের চিঠিতে যদি ঠিকানা দেয়, আমাকে জানাবেন। চার পাঁচ দিন আগে আমাকে না জানিয়ে বাসা পাল্টেছে।
তাই নাকি? ঠিক আছে মা জানাব। তুমি মাহবুবের সঙ্গে আবার এস।
জ্বি আসব বলে মাহবুবা-মরিয়ম খাতুন ও সুলতান খাঁনকে কদমবুসি করে গাড়িতে উঠল।
———–
প্রেম ও স্বপ্নের সমাপ্তি অংশ
“তোমার প্রত্যাশায়”