অনেক ব্যথা লেগেছিল, অনেক?
রাশেদ আবার মাথা নাড়ে। তারপর আস্তে আস্তে বলে, ব্যথা থেকে বড় কি জিনিস জানিস?
কি?
ঠিক যখন বুঝতে পারলাম মরে যাব সে সময়টা। আমার সামনে রাজাকারগুলি দাঁড়িয়ে আছে রাইফেল তুলে, পিছনে আজরফ আলী, একজন আজরফ আলীকে বলল, হুজুরা ছেড়ে দেন, এইটুকু বাচ্চা। অজরাফ আলী চিৎকার করে বলল, সাপের বাচ্চা বড় হয়ে সাপই হয়। তারপর আমার দিকে তাকিয়ে বলল, কলমা পড় – তখন হঠাৎ আমার বুকের ভিতরে যে ফাঁকা-ফাঁকা লাগতে থাকে সেই অনুভূতিটা। মনে হয়, আহা! এই যে পৃথিবী, আকাশ-বাতাস, নদী, গাছ-পালা আর আমি দেখব না। কোনদিন দেখব না। কোনোদিন–
রাশেদ, আমি ধরা গলায় বললাম, আর বলিস না রে। বড় কষ্ট লাগছে।
ঠিক আছে বলব না। রাশেদ খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, কিন্তু আর যেন কখনো এরকম না হয়, কখনো যেন না হয়।
পূর্ব আমি আস্তে আস্তে বলি, না, হবে না।
রাশেদ তখন আস্তে আস্তে হেঁটে চলে যেতে থাকে। আমার থেকে মুখ আড়াল করে রেখেছে। কিন্তু আমি জানি তার চোখে পানি। অভিমানের পানি। এই পৃথিবীর উপর অভিমান। পৃথিবীর মানুষের উপর অভিমান।
রাশেদ, তুই কাঁদিস না প্লীজ।