… Two vast and trunkless legs of stone
Stand in the desert Near them,
on the sand,
Half sunk, a shattered visage lies.
***
Nothing beside remains Round the decay
Of that colossal wreck, boundless and
barc
The lone and level Sands Stretch far
away
কিন্তু ইতিহাসের প্যাটার্নের চওড়ার মাপ কেবল ঘটনার ও তার জ্ঞানের প্রাচুর্য কি বিরলতার উপর নির্ভর করে না; ঐতিহাসিকের প্রতিভার উপরে নির্ভর করে। ঘটনার সঙ্গে ঘটনার যোগে ইতিহাসের সৃষ্টি। যে ঐতিহাসিক তাঁর কল্পিত ইতিহাসের ধারার সঙ্গে কোনও ঘটনার যোগ দেখতে পান না তার ইতিহাসে স্বভাবতই সে ঘটনার স্থান নেই। প্রতিভাবান ঐতিহাসিক অনেক ঘটনার সঙ্গে অন্য ঘটনার ঐতিহাসিক যোগ দেখতে পান, সাধারণ ঐতিহাসিকের যা চোখ এড়িয়ে যায়। সেইজন্য যাঁরা ইতিহাসের প্রতিভাবান স্রষ্টা তাদেব ইতিহাসের প্যাটার্ন অনেক সময় বেশি চওড়া। তাদের ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনার স্থান আছে, সাধারণ ঐতিহাসিকের ইতিহাসে যাদের স্থান নেই।
৫
দেশ ও কালের অচ্ছিদ্র ঘটনার পটে কিহচু ঘটনা বেছে নিয়ে ঐতিহাসিক তাঁর ইতিহাসের ছবি আঁকেন। ইতিহাসের যাঁরা বড় পটুয়া তাদের ছবিতে ছোট পটুয়াদের ছবির তুলনায় অনেক সময় ঘটনার রেখা অনেক বেশি। কিন্তু কোন ইতিহাসে কত ঘটনা বেছে নিয়ে স্থান দেওয়া যায়। তার একটা স্বাভাবিক সীমা আছে। ঐতিহাসিক বহুরকম ঘটনার নানা রঙের সুতোয় তার ইতিহাসের প্যাটার্ন তোলেন। কিন্তু এমন রঙের সুতো আছে যা সে প্যাটার্নের সঙ্গে ‘ম্যাচ’ করে না। সে সুতেকে প্যাটার্নের পাশে পাশে চালিয়ে নেওয়া চলে, কিন্তু তা দিয়ে প্যাটার্নের অঙ্গ বৃদ্ধি করা চলে না।
আধুনিক কালে রাষ্ট্রীয় ইতিহাস, ইতিহাস বলতে লোকে সাধারণত যা বোঝে তা, যে দেশ ও কালের পূর্ণ পরিচয় দেয় না, তা স্মরণ করে অনেকে এই অঙ্গহীন ইতিহাসের উপর কিছু বীতশ্রদ্ধ হয়েছেন। তাঁরা বলেন, পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস হবে এমন ইতিহাস যা উদ্দিষ্ট দেশ ও কালের মানুষের জীবনের সমস্ত দিকের পরিচয় দেবে। কেবল রাষ্ট্র গড়া-ভাঙার পরিচয় নয়; সামাজিক পরিবর্তন, ধনতান্ত্রিক বিবর্তন, জীবনযাত্রার প্রণালী ও তার ক্রমপরিবর্তন, ধর্ম শিল্প সাহিত্য, জ্ঞান-বিজ্ঞান— সবকিছুর উত্থান-পতন পরিবর্তনের পরিচয় দেবে। কোনও দেশ ও কালের মানুষের জীবনের সমস্ত দিক না জানলে যে সে মানুষকে সম্পূর্ণ জানা হয় না। এ তো স্বতঃসিদ্ধ, প্রকৃতপক্ষে tautology। কিন্তু এক ইতিহাসে, অর্থাৎ এক রকমের ইতিহাসে, এ সমস্ত কথা বলা সম্ভব নয়, তাও স্বতঃসিদ্ধ। তা জানাতে ও জানতে একই দেশ ও কালের বিভিন্ন রকমের ইতিহাস লিখতে ও পড়তে হয়। কোনও শট কাট নেই। এক জায়গায় সব কিছু পেয়ে যাব এটা অলস মনের কল্পনা। তাঁরা মানুষের ইতিহাস নিবিড় করে জানতে চায় না। এক এনসাইক্লোপিডিয়া পড়ে অনেকে যেমন সকল জ্ঞানের জ্ঞানী হতে চায়।
এলিজাবেথের যুগের ইংল্যান্ডের রাষ্ট্ৰীয় ইতিহাসে সে যুগের ইংরেজি সাহিত্যের উল্লেখ অবশ্য থাকবে। তার উদ্দেশ্য, রাষ্ট্ৰীয় ইতিহাসের পাঠককে স্মরণ করিয়ে দেওয়া যে, সে যুগে রাষ্ট্ৰীয় ইতিহাসের সীমার বাইরে এমন-সব ঘটনা ঘটেছিল যার মূল্য রাষ্ট্ৰীয় ঘটনার চেয়ে কম নয়, বরং বেশি। তেমনি এলিজাবেথের যুগের ইংরেজি সাহিত্যের ইতিহাসে সমকালীন রাষ্ট্রীয় ঘটনার উল্লেখ থাকবে। কতক সাহিত্যের ইতিহাসকে কালক্ৰমিক কাঠামো দেবার জন্য; কতক সাহিত্যের ও সাহিত্যিকের উপর রাষ্ট্রীয় ঘটনার প্রভাব পড়েছিল, সেইজন্য। কিন্তু এলিজাবেথের যুগের রাষ্ট্ৰীয় ইতিহাসে সে যুগের সাহিত্যের ইতিহাস জানা যাবে এ আশা তেমনি দুরাশা, যেমন দুরাশা সে যুগের সাহিত্যের ইতিহাস পড়ে রাষ্ট্রীয় ইতিহাস জানা যাবে।
পরিচয় দিতে গেলে তা কী করে সম্ভব করা যায় তার নমুনা মমসেনের রোমের ইতিহাসে আছে। রোমান রিপাবলিকের উত্থান ও ধবংসের ইতিহাসকে তার উপযোগী নানা পর্বে মমসেন ভাগ করেছেন। প্রতি পর্বের রাষ্ট্ৰীয় ইতিহাসের বিবরণ সমাপ্ত করে তার শেষে সে পর্বকালের ধর্ম ও শিক্ষা, সাহিত্য ও শিল্প সম্বন্ধে দু-একটি অধ্যায় জুড়ে দিয়েছেন। গ্রেকাই-ভ্ৰাতাদের রোমান রাষ্ট্রব্যবস্থায় সংস্কার ও বিপ্লবের চেষ্টা ও তার ব্যর্থতা, মেরিয়াসের বিপ্লব ও ডুসাসের সংস্কারের প্রয়াস, প্রাচ্যে মিথ্রডেটিসের সঙ্গে সংঘর্ষ (মমসেনের মতে ম্যারাথনে পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের যে প্ৰকাণ্ড সংঘর্ষ আরম্ভ হয়েছিল, বহুদিন স্তিমিত থাকার পর তারই একটা ছোট অধ্যায়; এবং মমসেনের কল্পনায় তার কাল পর্যন্ত এ সংঘর্ষ যেমন হাজার হাজার বছর চলেছে, তেমনি পরবর্তীকালেও হাজার হাজার বছর চলবে), সিনা ও সালার কার্য ও অকার্য–এই নব্বই বছরের রাষ্ট্ৰীয় ইতিহাস, মমসেন যাকে বলেছেন রোমান ইতিহাসে সবচেয়ে আগৌরবের যুগ, এগারো অধ্যায়ে তার বর্ণনা দিয়ে, মমসেন একটি অধ্যায়ে সে যুগের রোমান রিপাবলিকে নানা জাতি, তাদের অবস্থা ধর্ম ও শিক্ষার বিবরণ দিয়েছেন, এবং আর-একটি অধ্যায়ে সাহিত্য ও শিল্পের অবস্থা বর্ণনা করেছেন; সালার মৃত্যু থেকে রোমান রিপাবলিকের ধ্বংসের উপর জুলিয়াস সিজারের সাম্রাজ্য স্থাপন পর্যন্ত চৌত্ৰিশ বছরের চিত্তাকষী ও নিশ্বাসরোধী অতিদ্রুত রাষ্ট্ৰীয় ঘটনা-প্রবাহের ইতিহাস আবার এগারো অধ্যায়ে বর্ণনা করে, তার শেষে সে যুগের ধর্ম সংস্কৃতি সাহিত্য ও শিল্পের বিবরণ দিয়ে একটি অধ্যায় জুড়ে দিয়েছেন।