• আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি
শুক্রবার, জুন 6, 2025
  • Login
BnBoi.Com
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ
No Result
View All Result
BnBoi.Com
No Result
View All Result

ভিখারীর আত্মকাহিনী – আরজ আলী মাতুব্বর

Vikharir Attokahini By Aroj Ali Matubbar

আমার কর্ম-জীবনের চরম দুর্দিন হ’ল ১৩৩৪ ও ১৩৩৫ সাল। ১৩৩৪ সালের ২০শে অগ্রহায়ণ আমি জ্বর ও মেহ রোগে আক্রান্ত হই এবং আমার একমাত্র ভগ্নি কুলসুম বিবি (জং আঃ হামিদ মোল্লা) সূতীকা জুরে আক্রান্ত হয়ে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। আমি আমার রুগ্ন শরীর নিয়ে সপ্তাহখানেক আহার নিদ্ৰা ছেড়ে ভগ্নির শীয়রে বসে থেকে ৫ই পৌষ দেখলাম তার শেষ নিশ্বাস ত্যাগ। আমি শোক সংবরণে অক্ষম হলাম, শুরু হল আমার হৎকম্প (প্যালুপিটেশন)। যদিও আমার হৎকম্প দুদিন পর কমে গেল, কিন্তু ২৭শে পৌষ ভগ্নির শ্রাদ্ধের দিন ভোজের সময় আবার হৎকম্প শুরু হল, আর কমল না। আমার চিকিৎসা চলুতে লাগল।
ফাগুন মাসে- মোল্লা সাবের হাতের সামান্য আঘাতে আমার হালের বড় গরুটা মারা গেল এবং চৈত্র মাসে গাছের সঙ্গে রশি জড়িয়ে পা ভেঙ্গে মারা গেল আমার একমাত্র গাভীটি। তহবিলে টাকা-পয়সা যা ছিল, তা এর আগেই নিঃশেষ হয়েছিল, হালের অপর গরুটি বিক্রি দিয়ে চালাতে লাগলাম আমার চিকিৎসা। কিছুদিন চিকিৎসা চল্লো গ্রামে, পরে জমি বন্ধক দিয়ে শহরে। চিকিৎসা চল্লো প্রায় ছয় মাস। আমার অবস্থা তখন এতই মারাত্মক আকার ধারণ করেছে যে, আমি যে কোন মুহুর্তে মারা যেতে পারি।
চিকিৎসা শাস্ত্রের বিধান মতে- একজন মানুষের দেহের স্বাভাবিক তাপ থাকে ৯৮ ৩/৫ ডিগ্ৰী এবং নাড়ীর স্পন্ন থাকে প্রতি মিনিটে ৭৫ বার। এক ডিগ্রী তাপ বৃদ্ধিতে নাড়ীর স্পন্দন দশবার বাড়ে। এ হিসাবে কোন রোগীর নাড়ীর স্পন্দন এক মিনিটে ১৪৫ বার হলে, তার দেহের তাপ হওয়া উচিত ১০৬ ডিগ্রী। কিন্তু আমার দেহের তাপ ছিল ৯৮ ৩/৫ ডিগ্রী বা তার চেয়েও কম। অথচ নাড়ী স্পন্দন অর্থাৎ হৃৎস্পন্দন ছিল মিনিটে ১৪৫ বার। আহার ছিল প্রায় বন্ধ, বাহ্য হত মাত্র সপ্তাহে একবার। মারাত্মক উপসর্গ ছিল “অনিদ্ৰা”। ডাঃ আনন্দ মোহন রায় ৩০ গ্রেন মাত্রায় ব্রোমাইড দিয়েও আমার নিদ্ৰা জনাতে পারেন নাই। তবে ডাঃ ক্যাপ্টেন হরবিলাস চ্যাটাজী “প্যারাল ডিহাইড” দিয়ে কয়েক দিন ঘুম পাড়াচ্ছিলেন। কিন্তু তাতে উপকারের চেয়ে অপকার হয়েছে বেশী।
ডাঃ আনন্দ মোহন রায় ও ডাঃ হরবিলাস চ্যাটাজী তিন মাস চিকিৎসা করেও কোন সুফল না পেয়ে একদা আমাকে বল্লেন যে, এ্যালোপ্যার্থী শাস্ত্রে এ রোগের আর ওষুধ নেই। অর্থাৎ এ রোগ সারবার নয়। কবিরাজী খেতে শুরু করলাম। বরিশালের তৎকালীন প্রখ্যাত কবিরাজ – প্রসন্ন কুমার সেন গুপ্ত, গোপাল চন্দ্র সেন গুপ্ত ও মতিলাল সেন গুপ্ত আরো তিন মাস কাল চিকিৎসা করেও নিস্ফল হয়ে একদা আমাকে বল্লেন- “এখন বাড়ীতে গিয়ে ভগবানকে ডাকতে থাকুন, আয়ুর্বেদে এ রোগের আর ঔষধ নেই”।
মোল্লা সাব আমার ভগ্নির মৃত্যু দেখতে পান নাই। তখন তিনি ছিলেন বেতাগী থানায়। তবে তার শ্রাদ্ধের সময় ছুটি নিয়ে বাড়ীতে এসে আমাকে মরণাপন্ন ফেলে আর চাকুরীতে যাননি। তিনি আমার আরো এক কেৰ্ত্তী জমি বন্ধক রেখে ১৫০.০০ টাকা সংগ্রহ করে আমাকে নিয়ে ঢাকা যাত্রা করলেন (২৭শে আষাঢ় ১৩৩৫ সাল)। ঢাকা গিয়ে মিডফোর্ড হাসপাতালে আমাকে ভর্তি করলেন। ওখানে ডাঃ চারু বাবু ও ডাঃ সাহাবুদিন সাব আমাকে দেখলেন, এক্সরে করলেন; ব্যবস্থা করলেন- কম্ফোলেছিথন, এ্যাফ্রোটোন ও এক দফে মিকচার।
২রা শ্রাবণ আমরা বাড়ীতে আসবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু দেখা গেল যে, দুজনের ষ্টিমার ভাড়া তহবিলে নেই। তখন ঢাকায় আমাদের পরিচিত এমন কোন লোক ছিল না, যার কাছে দুটাকা হাওলাত পাওয়া যেতে পারে। দায় পড়ে বাড়ীতে আসতে হচ্ছে মাত্র একজন। এখন সমস্যা হল – কে আগে আসবে। মোল্লা সাব আমাকে বল্লেন- “তুমি মুমুর্ষ রুগী, তুমি যদি ঢাকায় থাক আর মারা যাও; তবে সে সংবাদ পেয়ে বা না পেয়ে পুনঃ আমি ঢাকায় এসে হয়ত তোমার লাশও পাব না। আর তুমি আগে গিয়ে জাহাজে মার#2494; গেলেও অন্ততঃ তোমার লাশটা বরিশাল পর্যন্ত পুছবে। কাজেই তুমিই আগে যাও।” আমি একাই বাড়ীতে এলাম এবং পরের দিন টেলিগ্রাফ মনিঅৰ্ডার করে টাকা পাঠালাম। তিনি টাকা পেয়ে পরে বাড়ী আসলেন।
ঢাকার ব্যবস্থা মোতাবেক ওষুধ কিনে ১০ই শ্রাবণ হতে উহা সেবন শুরু করলাম এবং এক মাস ঔষুধ ব্যবহারে আরোগ্য লাভ করলাম (রোগারোগ্যের পরেও দুমাস ওষুধ সেবন করেছি।) কিন্তু দুর্বলতায় হলাম চল-শক্তি রহিত।

১.১১ বস্ত্র বয়ন শিক্ষা (১৩৩৫)

রোগারোগ্যের পর – শুয়ে-বসে প্রায় দমাস কেটে গেলে কোন রকম চলা-ফেরার শক্তি হ’ল কিন্তু কৰ্মশক্তি হ’ল না। তখন ভাবতে ছিলাম – কি করব। সে সময় এদেশে স্বদেশী ও অসহযোগ আন্দোলন এবং টাকু-মাকু পুরাদমে চলছে। অর্থাৎ তাত ও চরকা ঘরে ঘরে। স্থির করলাম যে, বসে বসে (অল্প শ্রমের কাজ) কাপড় বোনা শিক্ষা করব।
মোঙ্গল হাটা নিবাসী ওসমান খা নামক জনৈক তাতীর সহিত আমার পরিচয় ছিল। আশ্বিন মাসের শেষ ভাগে আমি তার বাড়ীতে গেলাম তাত ও কাপড় বোনা দেখবার জন্য। সেখানে বহু তাঁতীর বাস। আমি কয়েক বাড়ী ঘুরে ঘুরে খুব লক্ষ্য করে দেখলাম তাদের সূতা ভাতানো (মাড়দেওয়া), উঠানো, সুখানো, নাটাই ভরা, ননীভরা, তানানো, গোছানো, রাজভরা এবং ব-সুতা বাধা, মাকুচালানো (বোনা) ইত্যাদি সবই। অতঃপর কাগজে নক্সা আঁকলাম- তাত, চরকা, নাটাই, বাতাই, জাকী, নলী, রাজ, ব, মুঠা, পহ্নি ইত্যাদি যাবতীয় যন্ত্রপাতির এবং সঙ্গে সঙ্গে ওসবের প্#2509;রত্যেকটি অংশের মাপঝোক লিখে নিলাম। তবে কোন তাতে নিজ হাতে কাপড় বুনে দেখলাম না। কেননা ওঁদের বোনা দেখে মনে সাহস হল যে, উহা পারব। সব ঠিক মত বুঝে নিয়ে বাড়ীতে এলাম।
১৩৩৫ সালের ৭ই কার্তিক আমি নিজ হাতে তাত নির্মাণের কাজে লেগে গেলাম। সম্পূর্ণ তাত যন্ত্রটি ও তার আনুষঙ্গিক চরকা ইত্যাদি বাজে সরঞ্জাম (রাজ-মাকু বাদে) নির্মাণ করতে প্রায় তিন মাস কেটে গেল। ১৫ই মাঘ আমি কাপড় বোনা আরম্ভ করলাম।
জীবনে মাত্র একদিন কয়েক ঘন্টা কাপড় বোন দেখে তার স্মৃতির উপর নির্ভর করে বড় সাইজের কাপড়ের “টানা” নিতে সাহস পেলাম না, প্রথম “টানা” টি নিলাম- ৪ X ১ হাত সাইজের গামছা কাপড় ২৫ খানা (১০০হাত)। প্রথম খুব আস্তে আস্তে মাকু চালাতে শুরু করলাম। “টান”টি বুনে নামালাম বারো দিনে (দৈনিক ৮ ১/৩, হাত)।
দ্বিতীয় “টান”টি নিলাম ৬ X ২ হাত সাইজের পরনের গামছা কাপড় ২৫ খানা (১৫০ হাত)। এ “টান”টি বুনে নামালাম পনর দিনে (দৈনিক ১০ হাত)। এর পর লুঙ্গী ও তৎপর শাড়ী কাপড় বোনতে থাকি। বছর খানেকর মধ্যে আমার কাপড় বোনার ক্ষমতা হল দৈনিক ২৫ হাত (প্রায় দু বছর পর দুটি কারণে আমাকে কাপড় বোনা ত্যাগ করতে হয়। প্রথম কারণ হ’ল -স্বাস্থের উন্নতির সাথে সাথে আমি পল্লী উন্নয়ন ও স্কুলের শিক্ষকতা কাজে জড়িত হয়ে পড়ি এবং দ্বিতীয় কারণ হল-সূতার মূল্যবৃদ্ধি ও মিলের কাপড়ের তুলনায় তাঁতের কাপড়ের মূল্য হ্রাস।)

 ১.১২ উচ্চ শিক্ষার প্রচেষ্টা (১৩৩৫)

আগে বলেছি যে, আমাদেরগ্রামে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল না। বৃটিশ সরকারের বদৌলতে প্রতি ইউনিয়নে প্রাইমারী স্কুল ছিল একটি করিয়া (ডিঃ বোর্ড কর্তৃক পরিচালিত হত বলে ওর নাম ছিল-“বোর্ড স্কুল”)। আমাদের ইউনিয়নের “বোর্ড স্কুল”ট চর বাড়ীয়া মৌজায় অবস্থিত, দূরত্ব আমাদের গ্রাম হতে প্রায় ৫ মাইল। আর বরিশাল শহর ছাড়া হাইস্কুল ছিল না এ অঞ্চলে একটিও। কাজেই ১৩৩৪ সালের পূর্বে আমাদের গ্রামের কোন ছেলে-হাই স্কুল তো দূরের কথা, প্রাইমারী স্কুল ও চিনতো না।
১৩৩৪ সালে বরিশালের টাউন (হাই) স্কুলে ভর্তি হ’ল স্থানীয় ছাত্ৰ-আঃ আজিজ মাতুব্বর ও ফজলুর রহমান মৃধা যথাক্রমে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীতে এবং এ শ্রেণী অতিক্রম করল ১৩৩৫ সালের অগ্রহায়ণ মাসে। এ সময় আমার স্বাস্থ্যের অনেকটা উন্নতি হয়েছে। পরীক্ষার পর ওদের চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর যাবতীয় পাঠ্য পুস্তক এনে আমি পড়তে শুরু করলাম। দিনের বেলা পড়বার সময় অল্পই পেতাম, বিশেষ ভাবে পড়তে হত রাত্রে। কেননা তাত তৈরীর কাজে ব্যস্ত ছিলাম। বিশেষত- জীবনে যতটুকু পড়াশুনা করেছি, তা অধিকাংশই রাত্রে ।
চতুর্থ শ্রেণীর পাঠ্য বই গুলো একবার পড়ে দেখে রেখে দিলাম এবং পঞ্চম শ্রেণীর -সাহিত্য, পড়বার জন্য একটা “রুটিন” করে নিলাম। কিন্তু ইংরেজী নিলাম না। তার কারণ ইংরাজী পড়ায় আমার একটা অসুবিধে হচ্ছিল এই যে, কতিপয় ইংরেজী শব্দের “উচ্চারণ” সাধারণ নিয়ম মত হয় না, হয় এক অভিনব রূপে। আবার কতগুলো শব্দের কোন কোন “বর্ণ” লুপ্ত রেখে উচ্চারণ করতে হয়। যদিও এ অনিয়মটাও একটা “নিয়ম”, তথাপি প্রাথমিক শিক্ষার্থীর পক্ষে কোন শিক্ষকের সাহায্য ছাড়া এ অসুবিধে কাটিয়ে ওঠা মুশকিল। বাংলা ভাষায় ওরূপ উচ্চারণ বিভ্রাট নেই, তা নয়। তবে মাতৃভাষা বলে তা কাটিয়ে ওঠা আমার পক্ষে ততটা কঠিন বোধ হয়নি, যতটা হচ্ছে ইংরেজীতে। একজন ইংরেজী বিশেষজ্ঞের পরামর্শ মতে “রাজভাষা” নামক একখানা বই কিনলাম। বই খানায়ে-নিত্যাবশ্যকীয় যাবতীয় ইংরাজী শব্দের বঙ্গানুবাদ এবং উহার “উচ্চারণ” ভঙ্গি বাংলায় লিখিত ছিল। ওখানা পড়তে থাকলাম, রুটিন করে নয়; ইচ্ছাধীন রূপে।
নিয়মিত ভাবে পড়তে লাগলাম এবং ত্রৈমাসিক, ষান্মাসিক ও (১৩৩৬ সালের অগ্রহায়ণ মাসে) বার্ষিক পরীক্ষা দিয়ে (৫ম শ্রেণীর) পাঠ্য বইগুলো পড়া সমাপ্ত করলাম। কিন্তু পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছি কি-না তা জানিনে। কারণ আমার পরীক্ষক-আমিই, অন্য কেউ নয়। আমার পরীক্ষার স্বরূপটি এই-বই গুলো ভাল ভাবে পড়ে পরীক্ষার জন্য তারিখ ধার্য করেছি এবং প্রত্যেক বিষয়ের পরীক্ষার নির্ধারিত তারিখের এক মাস (ত্রৈমাসিক ও ষান্মাসিক পরীক্ষার ১৫ দিন) পূর্বে বিশেষ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর দশটি করে প্রশ্ন লিপিবদ্ধ করে বইয়ের পড়া বন্ধ করেছি, এমন কি হাতে লওয়াও। অতঃপর-নির্ধারিত তারিখে শুধু স্মৃতির সাহায্যে প্রশ্নের উত্তর লিখেছি। পরীক্ষার পরে প্রশ্নোত্তরের সহিত বই মিলিয়ে দেখেছি যে, আমার উত্তর সমূহ কতটুকু ভুল বা নির্ভুল হয়েছে এবং তদনুপাতে নম্বর দিয়েছি। এতে কোন কোন বিষয় উত্তীর্ণ হতে পেরেছি, সব বিষয়ে পারিনি। তবে ওর জন্য আর স্বতন্ত্র পরীক্ষার ব্যবস্থা করিনি, স্থির করেছি ও সব বিষয় পরে শোধরে নেব। যা হোক এভাবে আমার পড়া চালাতে লাগলাম।
(আঃ আজিজ ও ফজলুর রহমানের পুরোনো পাঠ্য বই গুলো যত্ন সহকারে এনে আমি A নিয়মিত ভাবে পাঠ করেছি-১৩৩৫-১৩৪১ সাল পর্যন্ত (১০ম শ্রেণী)। ১৩৪০ সালে – ? আঃ আজিজ তার পিতৃ বিয়োগ হেতু পরীক্ষা না দিয়ে পড়া বন্ধ করে এবং ফজলুর রহমান মেট্রিক পাশ করে বরিশাল বি, এম কলেজে ভর্তি হয়। অতঃপর আমি ১৩৪২ ও ১৩৪৩ সাল পর্যন্ত ফজলুর রহমানের “আই, এ” শ্রেণীর ১ম ও ২য় বছরের পুরোনো পাঠ্য বই গুলো অধ্যয়ন করি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ তার “বি, এ” শ্রেণীর পাঠ্য গুলো কোন কারণে আমার হস্তগত না হওয়ায়, তখন উহা পাঠ করিতে পারিনি। তবে উহা পাঠ করবার সুযোগ পেয়েছিআমার সেজ ছেলে আঃ খালেক (মানিক) এর- ঢাকা টিএনটি কলেজে “বি,এ” পড়বার প্রাক্কালে-১৩৮০-১৩৮১ সালে। ১৩৪৩ সালের পর হতে পাঠ্য পুস্তক পড়বার সুযোগ হারিয়ে ১৩৪৪ সালে হতে শুরু করি বরিশাল পাবলিক লাইব্রেরীর সদস্য হয়ে ওখানে পুস্তকাদি অধ্যয়ন করা)।

১.১৩ জাল বুনা শিক্ষা (১৩৩৬)

ভৌগোলিক অবস্থান ভেদে বিভিন্ন দেশের প্রকৃতি বিভিন্ন এবং প্রকৃতি ভেদে বিভিন্ন দেশের উৎপন্ন বা পণ্য দ্রব্য বিভিন্ন। আবার যে দেশে যে দ্রব্য উৎপন্ন হয় বেশী, সে দেশবাসীর পক্ষে সেই দ্রব্যই হয় প্রধান আহার্য ও ব্যবহার্য। নিম্ন সমতল ও নদীবহুল এই বাংলাদেশ। তাই এদেশে ধান ও মৎস্য সম্পদের প্রাচুর্য্য। কাজেই এ দেশবাসীর সর্ব প্রধান খাদ্যই হ’ল-মাছ ও ভাত। আর এ জন্যই বলা হয়-“মাছে ভাতে বঙ্গালী তুষ্ট”। এ কথাটা আমাদের গ্রামের পক্ষে বেশী সত্য। কেননা এ গ্রামটির প্রায় সব দিকেই নদী এবং ভিতরে ছোট-বড় খালও আছে পাঁচ-ছয়টি। নদী ও খাল গুলোতে প্রচুর মাছ পাওয়া যায় বারো মাসই, যদি কেউ ধরতে জানে ও পারে।

Page 6 of 7
Prev1...567Next
Previous Post

অনুমান – আরজ আলী মাতুব্বর

Next Post

সত্যের সন্ধান – আরজ আলী মাতুব্বর

Next Post

সত্যের সন্ধান - আরজ আলী মাতুব্বর

সৃষ্টি রহস্য - আরজ আলী মাতুব্বর

মন্তব্য করুন জবাব বাতিল

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

সাম্প্রতিক প্রকাশনাসমূহ

  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৫: ভূমিকম্প – শামসুদ্দীন নওয়াব
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৮: বিভীষিকার প্রহর – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: বড়দিনের ছুটি – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আলাস্কা অভিযান – রকিব হাসান
  • তিন গোয়েন্দা ভলিউম ১১৭: আমিই কিশোর – রকিব হাসান

বিভাগসমূহ

  • আত্মজীবনী
  • ইতিহাস
  • উপন্যাস
  • কবিতা
  • কাব্যগ্রন্থ
  • গল্পের বই
  • গোয়েন্দা কাহিনী
  • ছোট গল্প
  • জীবনী
  • দর্শন
  • ধর্মীয় বই
  • নাটকের বই
  • প্রবন্ধ
  • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
  • বৈজ্ঞানিক বই
  • ভূতের গল্প
  • রহস্যময় গল্পের বই
  • রোমাঞ্চকর গল্প
  • রোম্যান্টিক গল্পের বই
  • শিক্ষামূলক বই
  • আমাদের সম্পর্কে
  • যোগাযোগ
  • গোপনীয়তা নীতি

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

No Result
View All Result
  • বাংলাদেশী লেখক
    • অতুলচন্দ্র গুপ্ত
    • অভিজিৎ রায়
    • আখতারুজ্জামান ইলিয়াস
    • আনিসুল হক
    • আবু ইসহাক
    • আবু রুশদ
    • আবুল আসাদ
    • আবুল খায়ের মুসলেহউদ্দিন
    • আবুল বাশার
    • আরজ আলী মাতুব্বর
    • আল মাহমুদ
    • আসাদ চৌধুরী
    • আহমদ ছফা
    • আহমদ শরীফ
    • ইমদাদুল হক মিলন
    • উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
    • কাসেম বিন আবুবাকার
    • জসীম উদ্দীন
    • তসলিমা নাসরিন
    • দাউদ হায়দার
    • দীনেশচন্দ্র সেন
    • নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়
    • নিমাই ভট্টাচার্য
    • প্রফুল্ল রায়
    • প্রমথ চৌধুরী
    • ময়ূখ চৌধুরী
    • মহাদেব সাহা
    • মাহমুদুল হক
    • মুহম্মদ জাফর ইকবাল
    • হুমায়ূন আহমেদ
  • ইন্ডিয়ান লেখক
    • অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
    • অতুল সুর
    • অদ্রীশ বর্ধন
    • অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • অনীশ দেব
    • অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • অমিয়ভূষণ মজুমদার
    • আশাপূর্ণা দেবী
    • আশুতোষ মুখোপাধ্যায়
    • ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
    • কাজী নজরুল ইসলাম
    • ক্ষিতিমোহন সেন
    • তারাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়
    • তারাশংকর বন্দ্যোপাধ্যায়
    • দেবীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়
    • নারায়ণ সান্যাল
    • নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী
    • নীহাররঞ্জন গুপ্ত
    • পাঁচকড়ি দে
    • পূর্ণেন্দু পত্রী
    • বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
    • বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
    • বিমল মিত্র
    • মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়
    • রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
    • সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়
    • হেমেন্দ্রকুমার রায়
  • বিভাগসমূহ
    • আত্মজীবনী
    • ইতিহাস
    • উপন্যাস
    • কবিতা
    • কল্পকাহিনী
    • কাব্যগ্রন্থ
    • খেলাধুলার বই
    • গল্পের বই
    • গোয়েন্দা কাহিনী
    • ছোট গল্প
    • জীবনী
    • দর্শন
    • ধর্মীয় বই
    • নাটকের বই
    • প্রবন্ধ
    • বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী
    • বৈজ্ঞানিক বই
    • ভূতের গল্প
    • মুক্তিযুদ্ধের-বই
    • রহস্যময় গল্পের বই
    • রোমাঞ্চকর গল্প
    • রোম্যান্টিক গল্পের বই
    • শিক্ষামূলক বই
    • সমগ্র
  • সিরিজ বই
    • মিসির আলী সমগ্র
    • হিমু সিরিজ

© 2023 BnBoi - All Right Reserved

Welcome Back!

Login to your account below

Forgotten Password?

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In