Site icon BnBoi.Com

সূরা মাউন বাংলা

সূরা মাউন

সূরা মাউন

 

আয়াতঃ 107.001

আপনি কি দেখেছেন তাকে, যে বিচারদিবসকে মিথ্যা বলে?
Have you seen him who denies the Recompense?

أَرَأَيْتَ الَّذِي يُكَذِّبُ بِالدِّينِ
Araayta allathee yukaththibu bialddeeni

YUSUFALI: Seest thou one who denies the Judgment (to come)?
PICKTHAL: Hast thou observed him who belieth religion?
SHAKIR: Have you considered him who calls the judgment a lie?
KHALIFA: Do you know who really rejects the faith?

=============
সূরা মাউন – ১০৭
৭ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

ভূমিকা ও সার সংক্ষেপ : এই সূরার কমপক্ষে প্রথম অর্দ্ধাংশ প্রাথমিক ভাবে মক্কাতে অবতীর্ণ হয়। সূরার বিষয় বস্তু হচ্ছে এবাদতের প্রকৃত স্বরূপ ব্যাখ্যা করা। প্রকৃত এবাদত হচ্ছে বিশ্বাসের বাস্তব বা ব্যবহারিক প্রয়োগ যেমন : অভাবগ্রস্থকে ভালোবাসার মাধ্যমে সাহায্য করা এবং দানের ব্যাপারে অন্যকে প্রদর্শন অপেক্ষা আন্তরিকতার অধিক প্রয়োজন।

সূরা মাউন – ১০৭
৭ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

১। তুমি কি তাকে দেখেছ যে শেষ বিচার দিবসের [ আগমনকে ] অস্বীকার করে ? ৬২৮১

৬২৮১। ‘Din’ শব্দটি দুভাবে ব্যাখ্যা করা যায়ঃ ১) বিশ্বাস বা ঈমান যা হচ্ছে ধর্মের মূল ভিত্তি। এই ঈমান বা বিশ্বাসের মূল নীতি হচ্ছে বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ্‌ আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং আমাদের প্রতিপালক, আমরা তাঁর দাস। তিনি যা হুকুম করেছেন তা পালন করতে হবে কারণ তাই-ই হচ্ছে সত্য ও ন্যায় আর তিনি যা নিষেধ করেছেন তা থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ তা হচ্ছে পাপ ও অন্যায়। সে ভাবে দ্বীন অর্থ ধর্ম বা ন্যায় ও অন্যায়ের সীমারেখা, যে সীমারেখা মানুষের স্বার্থপরতা ও পক্ষপাতমূলক ব্যবহারে বার বার লংঘিত হয়। ২) শেষ বিচারের দিনকে বিশ্বাস করা। বিশ্বাস করা যে, মৃত্যুর পরে আধ্যাত্মিক জগতে প্রবেশ লাভ ঘটবে যেখানে পৃথিবীর সকল কাজের দায়িত্ব সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হবে। মানুষ মুখে যাই-ই বলুক বা নিজেকে যত বড় ধার্মিক বলে প্রচার করুক না কেন তার আচরণ ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যাবলী বলে দেবে সে ‘দ্বীনের’ উপরে প্রতিষ্ঠিত কি না। যে অসহায় ও অভাবগ্রস্থকে ঘৃণা করে এবং তাদের দয়া ও সহানুভূতির সাথে ব্যবহার করে না সেই ব্যক্তি প্রকৃতপক্ষে ‘দ্বীন ‘ বা ধর্মকে অস্বীকার করে।

 

আয়াতঃ 107.002

সে সেই ব্যক্তি, যে এতীমকে গলা ধাক্কা দেয়
That is he who repulses the orphan (harshly),

فَذَلِكَ الَّذِي يَدُعُّ الْيَتِيمَ
Fathalika allathee yaduAAAAu alyateema

YUSUFALI: Then such is the (man) who repulses the orphan (with harshness),
PICKTHAL: That is he who repelleth the orphan,
SHAKIR: That is the one who treats the orphan with harshness,
KHALIFA: That is the one who mistreats the orphans.

২। এরা সেই লোক যে, [ রূঢ় ভাবে ] এতিমদের তাড়িয়ে দেয়,

৩। অভাবগ্রস্থকে খাদ্য দানে [লোকজনকে ] উৎসাহ দেয় না। ৬২৮২

৬২৮২। গরীব, দুঃখী, অভাবগ্রস্থ, এতিম বা সহায় সম্বলহীনদের জন্য আত্মোৎসর্গ করা স্বর্গীয় গুণাবলীর অর্ন্তগত। এই স্বর্গীয় অনুভূতির প্রকৃত স্বরূপ তারা কখনও অনুভব করতে সমর্থ হবে না যারা নিজেরা অন্যকে সাহায্য করে না,শুধু তাই-ই নয়, অন্যের মাঝে দয়া, মায়া, গুণাবলী প্রত্যক্ষ করলে তাদের নিরুৎসাহিত করে বা তাদের ঘৃণা করে। তাদের ধারণায় এসব গুণাবলী নয়, এসব হচ্ছে পৌরুষের অপমান। দুর্বলের ধর্ম।

 

আয়াতঃ 107.003

বং মিসকীনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না।
And urges not the feeding of AlMiskîn (the poor),

وَلَا يَحُضُّ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ
Wala yahuddu AAala taAAami almiskeeni

YUSUFALI: And encourages not the feeding of the indigent.
PICKTHAL: And urgeth not the feeding of the needy.
SHAKIR: And does not urge (others) to feed the poor.
KHALIFA: And does not advocate the feeding of the poor.

২। এরা সেই লোক যে, [ রূঢ় ভাবে ] এতিমদের তাড়িয়ে দেয়,

৩। অভাবগ্রস্থকে খাদ্য দানে [লোকজনকে ] উৎসাহ দেয় না। ৬২৮২

৬২৮২। গরীব, দুঃখী, অভাবগ্রস্থ, এতিম বা সহায় সম্বলহীনদের জন্য আত্মোৎসর্গ করা স্বর্গীয় গুণাবলীর অর্ন্তগত। এই স্বর্গীয় অনুভূতির প্রকৃত স্বরূপ তারা কখনও অনুভব করতে সমর্থ হবে না যারা নিজেরা অন্যকে সাহায্য করে না,শুধু তাই-ই নয়, অন্যের মাঝে দয়া, মায়া, গুণাবলী প্রত্যক্ষ করলে তাদের নিরুৎসাহিত করে বা তাদের ঘৃণা করে। তাদের ধারণায় এসব গুণাবলী নয়, এসব হচ্ছে পৌরুষের অপমান। দুর্বলের ধর্ম।

 

আয়াতঃ 107.004

অতএব দুর্ভোগ সেসব নামাযীর,
So woe unto those performers of Salât (prayers) (hypocrites),

فَوَيْلٌ لِّلْمُصَلِّينَ
Fawaylun lilmusalleena

YUSUFALI: So woe to the worshippers
PICKTHAL: Ah, woe unto worshippers
SHAKIR: So woe to the praying ones,
KHALIFA: And woe to those who observe the contact prayers (Salat) –

৪। সুতারাং সেই সব এবাদতকারীদের [ মুসুল্লী ] জন্য দুর্ভাগ্য,

৫। যারা তাদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীন, ৬২৮৩,

৬২৮৩। এবাদত ও সালাত বা নামাজ এক কথা নয়। সালাত বা নামাজ হচ্ছে এবাদতের অংশ। এবাদতের পরিধি বহু বিস্তৃত ও ব্যপক। যা ব্যক্তির সমগ্র জীবন ব্যপী বিরাজ করে। এবাদত শুধু মাত্র নামাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এবাদত হচ্ছে আল্লাহ্‌র ইচ্ছার পূর্ণ প্রতিফলন ব্যক্তির চরিত্রে। আল্লাহ্‌ যা হুকুম করেছেন তা উপলব্ধি করতে হবে এবং তা চিন্তায়, কথায় ও কাজে প্রতিফলিত করতে হবে। সেই সাথে একান্ত আন্তরিকতার সাথে আল্লাহ্‌র সান্নিধ্য আত্মার মাঝে উপলব্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে সালাত। সালাত হচ্ছে ব্যক্তির সমগ্র জীবনের এবাদতের প্রতিফলন। সুতারাং যারা মনে করেন পাঁচ ওয়াক্ত যান্ত্রিক ভাবে নামাজ আদায়ের মাধ্যমেই তারা দ্বীনের হুকুম পালন করেছেন তাদের জন্য আল্লাহ্‌ বলেছেন, “দুর্ভোগ”। আর যারা সালাত সম্বন্ধে সম্পূর্ণ উদাসীন তারা ঐ একই দুর্ভাগাদের কাতারে সারিবদ্ধ। সুতারাং সমাজের প্রতি, পরিবারের প্রতি, জাতির প্রতি, প্রতিবেশীর প্রতি কোনও কর্তব্য কর্ম না করে শুধু মৌখিক সালাতের মাধ্যমে কেউ আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবে না।

 

আয়াতঃ 107.005

যারা তাদের নামায সম্বন্ধে বে-খবর;
Who delay their Salât (prayer) from their stated fixed times,

الَّذِينَ هُمْ عَن صَلَاتِهِمْ سَاهُونَ
Allatheena hum AAan salatihim sahoona

YUSUFALI: Who are neglectful of their prayers,
PICKTHAL: Who are heedless of their prayer;
SHAKIR: Who are unmindful of their prayers,
KHALIFA: who are totally heedless of their prayers.

৪। সুতারাং সেই সব এবাদতকারীদের [ মুসুল্লী ] জন্য দুর্ভাগ্য,

৫। যারা তাদের সালাত সম্বন্ধে উদাসীন, ৬২৮৩,

৬২৮৩। এবাদত ও সালাত বা নামাজ এক কথা নয়। সালাত বা নামাজ হচ্ছে এবাদতের অংশ। এবাদতের পরিধি বহু বিস্তৃত ও ব্যপক। যা ব্যক্তির সমগ্র জীবন ব্যপী বিরাজ করে। এবাদত শুধু মাত্র নামাজের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এবাদত হচ্ছে আল্লাহ্‌র ইচ্ছার পূর্ণ প্রতিফলন ব্যক্তির চরিত্রে। আল্লাহ্‌ যা হুকুম করেছেন তা উপলব্ধি করতে হবে এবং তা চিন্তায়, কথায় ও কাজে প্রতিফলিত করতে হবে। সেই সাথে একান্ত আন্তরিকতার সাথে আল্লাহ্‌র সান্নিধ্য আত্মার মাঝে উপলব্ধির চেষ্টা করা হচ্ছে সালাত। সালাত হচ্ছে ব্যক্তির সমগ্র জীবনের এবাদতের প্রতিফলন। সুতারাং যারা মনে করেন পাঁচ ওয়াক্ত যান্ত্রিক ভাবে নামাজ আদায়ের মাধ্যমেই তারা দ্বীনের হুকুম পালন করেছেন তাদের জন্য আল্লাহ্‌ বলেছেন, “দুর্ভোগ”। আর যারা সালাত সম্বন্ধে সম্পূর্ণ উদাসীন তারা ঐ একই দুর্ভাগাদের কাতারে সারিবদ্ধ। সুতারাং সমাজের প্রতি, পরিবারের প্রতি, জাতির প্রতি, প্রতিবেশীর প্রতি কোনও কর্তব্য কর্ম না করে শুধু মৌখিক সালাতের মাধ্যমে কেউ আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবে না।

 

আয়াতঃ 107.006

যারা তা লোক-দেখানোর জন্য করে
Those who do good deeds only to be seen (of men),

الَّذِينَ هُمْ يُرَاؤُونَ
Allatheena hum yuraoona

YUSUFALI: Those who (want but) to be seen (of men),
PICKTHAL: Who would be seen (at worship)
SHAKIR: Who do (good) to be seen,
KHALIFA: They only show off.

৬। যারা [ উহা মানুষ ] দেখুক তাই [ শুধু ] চায়, ৬২৮৪

৬২৮৪। ‘উহা ‘ অর্থ এ স্থলে ‘সালাত’। দেখুন সূরা [ ৪ : ১৪২ ] আয়াত যেখানে বলা হয়েছে : “বস্তুতঃ তারা যখন নামাজে দাঁড়ায়, তখন দাঁড়ায়, একান্ত শিথিলভাবে লোক দেখানোর জন্য।” আয়াত সমূহ থেকে এই সত্য স্পষ্ট যে তিন ধরণের লোকের নামাজ বা সালাত আল্লাহ্‌র নিকট গ্রহণযোগ্য নয়। ১) যারা সমাজের জন্য কোন সৎ কাজ করে না [ ১০৭ : ২-৩ ] ; ২) যারা সালাত সম্বন্ধে উদাসীন ; [ [ ১০৭ : ৫] ৩) যারা মোনাফেক অর্থাৎ লোক দেখানোর জন্য নামাজ পড়ে [ ১০৭ : ৬-৭]।

 

আয়াতঃ 107.007

এবং নিত্য ব্যবহার্য্য বস্তু অন্যকে দেয় না।
And refuse Al-Mâ’ûn (small kindnesses e.g. salt, sugar, water, etc.).

وَيَمْنَعُونَ الْمَاعُونَ
WayamnaAAoona almaAAoona

YUSUFALI: But refuse (to supply) (even) neighbourly needs.
PICKTHAL: Yet refuse small kindnesses!
SHAKIR: And withhold the necessaries of life.
KHALIFA: And they forbid charity.

৭। যারা [ এমনকি ] প্রতিবেশীর প্রয়োজনীয় [ সাহায্য ] দিতেও অস্বীকার করে ৬২৮৫

৬২৮৫। যারা মোনাফেক তাদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এই আয়াতে তুলে ধরা হয়েছে। মোনাফেকরা লোক দেখানো কাজ করতে ভালোবাসে। তারা আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কোন কাজ করে না। তাদের চিন্তা ভাবনাতে একটাই উদ্দেশ্য থাকে আর তা হচ্ছে পরিচিত জনের নিকট সম্মানীয় হয়ে নাম যশঃ কুড়ানো। এদের পরীক্ষার একটি উপায় এই আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। প্রতিদিনের জীবনে আমাদের চারিপার্শ্বে বহু ঘটনা ঘটে যেখানে দেখা যায় প্রতিবেশী সামান্য সাহায্য প্রার্থী হলে বিমুখ করা হয়। চারিপার্শ্বে যারা থাকেন তাদের প্রতি সামান্য দয়া ও সহানুভূতি প্রদর্শনে তারা অপারগ হয়। এই সামান্য দয়া, সহানুভূতি ও সাহায্যের হাত প্রসারে সামান্যই ব্যয় করতে হয়। কিন্তু গ্রহীতার জন্য তা অনেক। এদের প্রতি আল্লাহ্‌ বলেছেন, ” যারা প্রতিবেশীর প্রয়োজনীয় ছোট খাট সাহায্য দানে বিরত থাকে।” কিন্তু এরা নিজেকে দাতা বলে প্রচার করতে ভালোবাসে এদের সকলের জন্য আছে দুভোর্গ।

Exit mobile version