Site icon BnBoi.Com

সূরা শামস বাংলা

সূরা শামস

সূরা শামস

 

আয়াতঃ 091.001

শপথ সূর্যের ও তার কিরণের,
And by the sun and its brightness;

وَالشَّمْسِ وَضُحَاهَا
Waalshshamsi waduhaha

YUSUFALI: By the Sun and his (glorious) splendour;
PICKTHAL: By the sun and his brightness,
SHAKIR: I swear by the sun and its brilliance,
KHALIFA: By the sun and its brightness.

================
সূরা শাম্‌স বা সূর্য – ৯১
১৫ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়,পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

ভূমিকা ও সার সংক্ষেপঃ এটি একটি প্রাথমিক মক্কী সূরা। সূরাটি শুরু করা হয়েছে অপূর্ব সুন্দর কিছু শপথের মাধ্যমে,যে শপথের সাহায্যে মানুষের আধ্যাত্মিক দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়েছে। সূরাটি শেষ করা হয়েছে যারা পরলোকে বিশ্বাস করে না তাদের শেষ পরিণতি সম্বন্ধে সাবধান বাণী উচ্চারণ করে।

সূরা শাম্‌স বা সূর্য – ৯১
১৫ আয়াত, ১ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়,পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

১। শপথ, সূর্যের ও তার [ গৌরবময় ] দীপ্তির ৬১৪৭ ;

৬১৪৭। ছয়টি বস্তুর শপথ করা হয়েছে তিন জোড়াতে যথা : সূর্য-চন্দ্র, দিন-রাত্রি ও আকাশ-পৃথিবী। এই শপথ গুলির মাধ্যমে বিশ্বস্রষ্টার সৃষ্টির মহিমান্বিত রূপকে তুলে ধরা হয়েছে [১ – ৬ ] আয়াতে। আয়াত [ ৭ – ৮ ] তুলে ধরা হয়েছে মানুষের আত্মার অন্তর্নিহিত অবস্থাকে। মানুষকে আল্লাহ্‌ বিশেষ মানসিক দক্ষতা, বিবেক ও বুদ্ধি দান করেছেন। ন্যায় -অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য করার ক্ষমতা দান করেছেন আয়াত [ ৯ – ১০]; সিদ্ধান্ত শপথের বিষয়বস্তু দান করা হয়েছে, বলা হয়েছে যে, মা

 

আয়াতঃ 091.002

শপথ চন্দ্রের যখন তা সূর্যের পশ্চাতে আসে,
And by the moon as it follows it (the sun);

وَالْقَمَرِ إِذَا تَلَاهَا
Waalqamari itha talaha

YUSUFALI: By the Moon as she follows him;
PICKTHAL: And the moon when she followeth him,
SHAKIR: And the moon when it follows the sun,
KHALIFA: The moon that follows it.

২। শপথ, চন্দ্রের যখন তা সূর্যকে অনুসরণ করে ৬১৪৮;

৬১৪৮। প্রথম জোড় শপথটি হচ্ছে সূর্য ও সূর্যের উজ্জ্বল কিরণের এবং চন্দ্রের। সূর্য হচ্ছে পৃথিবীর আলোর উৎস এবং চন্দ্র পৃথিবীকে ম্লান স্বপ্নীল আলো দান করে। যা হচ্ছে পৃথিবীর দ্বিতীয় আলোর উৎস। সূর্যের আগমন আকাশ ও পৃথিবীকে আলোর বন্যায় ভাসিয়ে দেয়। সেই আলোর বন্যাতে চাঁদ হয়ে পড়ে ম্লান, বির্বণ, যা সহজে দৃষ্টিগোচর হয় না। সূর্যের অবর্তমানে চাঁদ সূর্যের আলোকে পৃথিবীতে প্রতিফলিত করে পৃথিবীকে আলোকিত করে। এ ক্ষেত্রে চাঁদের ভূমিকা হচ্ছে সূর্যের প্রতিনিধি স্বরূপ। ঠিক সেরূপ হচ্ছে রসুলদের ভূমিকা ও আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশের ক্ষমতা।

 

আয়াতঃ 091.003

শপথ দিবসের যখন সে সূর্যকে প্রখরভাবে প্রকাশ করে,
And by the day as it shows up (the sun’s) brightness;

وَالنَّهَارِ إِذَا جَلَّاهَا
Waalnnahari itha jallaha

YUSUFALI: By the Day as it shows up (the Sun’s) glory;
PICKTHAL: And the day when it revealeth him,
SHAKIR: And the day when it shows it,
KHALIFA: The day that reveals.

৩। শপথ, দিবসের, যখন তা [ সূর্যের ] মহিমা প্রকাশ করে ; ৬১৪৯

৪। শপথ, রজনীর যখন তা উহাকে [ সূর্যকে ] ঢেকে দেয় ;

৬১৪৯। এই শপথ পরস্পর বিপরীত ধর্মী। একটি শপথ দিনের আলোর, অন্যটি রাতের অন্ধকারের। সূর্যের অনুপস্থিতিতে রাতের আঁধার পৃথিবীকে আচ্ছাদিত করে, কিন্তু তাই বলে সূর্যের অস্তিত্ব হারিয়ে যায় না। ঠিক সেরূপ হচ্ছে আল্লাহ্‌র সত্যের আলো। যখন পৃথিবী সত্যকে ভুলে অজ্ঞতার অন্ধকারে ডুবে যায়, তাই বলে, ঐশ্বরিক সত্য সম্পূর্ণ হারিয়ে যায় না। সত্যের উপস্থিতি সর্বদাই বিদ্যমান থাকে। শুধু মানুষের মনের অনুভূতিতে তা ধরা পড়ে না। সময়ে আবার তা প্রকাশ হবেই।

 

আয়াতঃ 091.004

শপথ রাত্রির যখন সে সূর্যকে আচ্ছাদিত করে,
And by the night as it conceals it (the sun);

وَاللَّيْلِ إِذَا يَغْشَاهَا
Waallayli itha yaghshaha

YUSUFALI: By the Night as it conceals it;
PICKTHAL: And the night when it enshroudeth him,
SHAKIR: And the night when it draws a veil over it,
KHALIFA: The night that covers.

৩। শপথ, দিবসের, যখন তা [ সূর্যের ] মহিমা প্রকাশ করে ; ৬১৪৯

৪। শপথ, রজনীর যখন তা উহাকে [ সূর্যকে ] ঢেকে দেয় ;

৬১৪৯। এই শপথ পরস্পর বিপরীত ধর্মী। একটি শপথ দিনের আলোর, অন্যটি রাতের অন্ধকারের। সূর্যের অনুপস্থিতিতে রাতের আঁধার পৃথিবীকে আচ্ছাদিত করে, কিন্তু তাই বলে সূর্যের অস্তিত্ব হারিয়ে যায় না। ঠিক সেরূপ হচ্ছে আল্লাহ্‌র সত্যের আলো। যখন পৃথিবী সত্যকে ভুলে অজ্ঞতার অন্ধকারে ডুবে যায়, তাই বলে, ঐশ্বরিক সত্য সম্পূর্ণ হারিয়ে যায় না। সত্যের উপস্থিতি সর্বদাই বিদ্যমান থাকে। শুধু মানুষের মনের অনুভূতিতে তা ধরা পড়ে না। সময়ে আবার তা প্রকাশ হবেই।

 

আয়াতঃ 091.005

শপথ আকাশের এবং যিনি তা নির্মাণ করেছেন, তাঁর।
And by the heaven and Him Who built it;

وَالسَّمَاء وَمَا بَنَاهَا
Waalssama-i wama banaha

YUSUFALI: By the Firmament and its (wonderful) structure;
PICKTHAL: And the heaven and Him Who built it,
SHAKIR: And the heaven and Him Who made it,
KHALIFA: The sky and Him who built it.

৫। শপথ, আকাশের এবং উহার [ অপূর্ব ] গঠনের ; ৬১৫০

৬। শপথ, পৃথিবীর এবং উহার [প্রশস্ত ] বিস্তৃতির ;

৬১৫০। পরবর্তী জোড় শব্দ হচ্ছে মাথার উপরের মুক্ত নীল আকাশ ও পদতলের দিগন্ত বিস্তৃত পৃথিবীর রূপ। আকাশ আমাদের বৃষ্টি দেয় আলো দেয়, তাপ দেয়। পৃথিবী সেই বৃষ্টিকে ধারণ করে এবং সূর্যের আলোর সাহায্যে আমাদের জন্য খাদ্য উৎপন্ন করে। উভয়ের সমন্বয়ে পৃথিবী শষ্য শ্যামল রূপ ধারণ করে। বৃষ্টির পানি, সূর্যের আলো ও তাপ ব্যতীত পৃথিবীর মাটি উদ্ভিদের জন্ম দিতে সক্ষম হতো না। এরূপ অনেক বিপরীত ধর্মী উদাহরণ বিশ্বভূবনের চারিদিকে পর্যবেক্ষণ করলে, অন্তরের মাঝে অনুভব করলে যে সত্য প্রতিভাত হবে তা হচ্ছে এসব বিপরীত ধর্মী বিষয় এক সূত্রে গ্রথিত। তারা সকলেই সমন্বিত শৃঙ্খলার সাথে পরস্পর জড়িত, যা এক স্রষ্টার একত্বের অস্তিত্ব ঘোষণা করে থাকে।

 

আয়াতঃ 091.006

শপথ পৃথিবীর এবং যিনি তা বিস্তৃত করেছেন, তাঁর,
And by the earth and Him Who spread it,

وَالْأَرْضِ وَمَا طَحَاهَا
Waal-ardi wama tahaha

YUSUFALI: By the Earth and its (wide) expanse:
PICKTHAL: And the earth and Him Who spread it,
SHAKIR: And the earth and Him Who extended it,
KHALIFA: The earth and Him who sustains it.

৫। শপথ, আকাশের এবং উহার [ অপূর্ব ] গঠনের ; ৬১৫০

৬। শপথ, পৃথিবীর এবং উহার [প্রশস্ত ] বিস্তৃতির ;

৬১৫০। পরবর্তী জোড় শব্দ হচ্ছে মাথার উপরের মুক্ত নীল আকাশ ও পদতলের দিগন্ত বিস্তৃত পৃথিবীর রূপ। আকাশ আমাদের বৃষ্টি দেয় আলো দেয়, তাপ দেয়। পৃথিবী সেই বৃষ্টিকে ধারণ করে এবং সূর্যের আলোর সাহায্যে আমাদের জন্য খাদ্য উৎপন্ন করে। উভয়ের সমন্বয়ে পৃথিবী শষ্য শ্যামল রূপ ধারণ করে। বৃষ্টির পানি, সূর্যের আলো ও তাপ ব্যতীত পৃথিবীর মাটি উদ্ভিদের জন্ম দিতে সক্ষম হতো না। এরূপ অনেক বিপরীত ধর্মী উদাহরণ বিশ্বভূবনের চারিদিকে পর্যবেক্ষণ করলে, অন্তরের মাঝে অনুভব করলে যে সত্য প্রতিভাত হবে তা হচ্ছে এসব বিপরীত ধর্মী বিষয় এক সূত্রে গ্রথিত। তারা সকলেই সমন্বিত শৃঙ্খলার সাথে পরস্পর জড়িত, যা এক স্রষ্টার একত্বের অস্তিত্ব ঘোষণা করে থাকে।

 

আয়াতঃ 091.007

শপথ প্রাণের এবং যিনি তা সুবিন্যস্ত করেছেন, তাঁর,
And by Nafs (Adam or a person or a soul, etc.), and Him Who perfected him in proportion;

وَنَفْسٍ وَمَا سَوَّاهَا
Wanafsin wama sawwaha

YUSUFALI: By the Soul, and the proportion and order given to it;
PICKTHAL: And a soul and Him Who perfected it
SHAKIR: And the soul and Him Who made it perfect,
KHALIFA: The soul and Him who created it.

৭। শপথ, [ মানুষের ] আত্মার এবং উহার যে সৌষ্ঠব ও বিন্যাস দান করা হয়েছে তার, ৬১৫২

৮। এবং [শপথ ] উহার পাপ পূণ্যের জ্ঞানের ;

৬১৫২। মানুষ অন্য প্রাণী থেকে শ্রেষ্ঠ কারণ আল্লাহ্‌ তার মাঝে রূহু বা আত্মার অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছেন। ঐশ্বরিক এই অবদানের জন্যই মানুষ শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ্‌ তাঁকে শারীরিক ও মানসিক উভয় ভাবেই সৌন্দর্যমন্ডিত করেছেন, পুর্ণাঙ্গ করেছেন। সে জীবনের যে কোন পরিস্থিতিকে মানিয়ে নিতে সক্ষম। প্রকৃতিকে জয় করে নিজের আয়ত্বে আনতে সক্ষম। দেখুন [৩২ : ৯] আয়াত। আল্লাহ্‌ মানুষকে বিবেক ও বুদ্ধি দান করেছেন। আরও দান করেছেন অনুভূতি ও উপলব্ধি ক্ষমতা। একমাত্র মানুষই পারে পাপ ও পূণ্যের মাঝে, ধর্ম ও অর্ধমের মাঝে, ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে, সত্য ও মিথ্যার মাঝে পার্থক্য করতে। এই বিশেষ ক্ষমতাই হচ্ছে স্রষ্টার সর্বশ্রেষ্ঠ দান মানুষের জন্য। [ ১ – ৬ ] আয়াতে শপথের মাধ্যমে আমাদের বিশ্বভূবনের সাধারণ কিন্তু অত্যাচার্য বিষয়গুলির প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে প্রথমে, তারপরে ৭ নং আয়াতে মানুষের জন্য আল্লাহ্‌র যে অসাধারণ নেয়ামত তারই শপথ করা হয়েছে। এই শপথ গুলির মাধ্যমে বলা হয়েছে যে, মানুষ অবশ্যই উপলব্ধি করবে যে, তাঁর সাফল্য, সমৃদ্ধি, আত্মিক মুক্তি সব কিছুই নির্ভর করবে তাঁর নিজস্ব কর্ম প্রচেষ্টার উপরে। যে আত্মাকে পাপ ও অন্যায় থেকে পবিত্র রাখতে পারে সেই সফলকাম। এ কথা মনে রাখতে হবে যে, মানুষ জন্মগ্রহণ করে পূত পবিত্র আত্মা নিয়ে আর তা রীপুর দহন মুক্ত হয়ে পূত পবিত্র রাখা মানুষের কর্তব্য। যদি সে তা না পারে, যদি সে পাপ ও অন্যায় দ্বারা আত্মাকে কলুষিত করে, তবে তার পতন অবশ্যাম্ভবী। পরলোকে তার জন্য শাস্তি অবধারিত যার পরিমাণ হবে আত্মার কলুষতার পরিমাণ অনুযায়ী।

 

আয়াতঃ 091.008

অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন,
Then He showed him what is wrong for him and what is right for him;

فَأَلْهَمَهَا فُجُورَهَا وَتَقْوَاهَا
Faalhamaha fujooraha wataqwaha

YUSUFALI: And its enlightenment as to its wrong and its right;-
PICKTHAL: And inspired it (with conscience of) what is wrong for it and (what is) right for it.
SHAKIR: Then He inspired it to understand what is right and wrong for it;
KHALIFA: Then showed it what is evil and what is good.

৭। শপথ, [ মানুষের ] আত্মার এবং উহার যে সৌষ্ঠব ও বিন্যাস দান করা হয়েছে তার, ৬১৫২

৮। এবং [শপথ ] উহার পাপ পূণ্যের জ্ঞানের ;

৬১৫২। মানুষ অন্য প্রাণী থেকে শ্রেষ্ঠ কারণ আল্লাহ্‌ তার মাঝে রূহু বা আত্মার অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছেন। ঐশ্বরিক এই অবদানের জন্যই মানুষ শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ্‌ তাঁকে শারীরিক ও মানসিক উভয় ভাবেই সৌন্দর্যমন্ডিত করেছেন, পুর্ণাঙ্গ করেছেন। সে জীবনের যে কোন পরিস্থিতিকে মানিয়ে নিতে সক্ষম। প্রকৃতিকে জয় করে নিজের আয়ত্বে আনতে সক্ষম। দেখুন [৩২ : ৯] আয়াত। আল্লাহ্‌ মানুষকে বিবেক ও বুদ্ধি দান করেছেন। আরও দান করেছেন অনুভূতি ও উপলব্ধি ক্ষমতা। একমাত্র মানুষই পারে পাপ ও পূণ্যের মাঝে, ধর্ম ও অর্ধমের মাঝে, ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে, সত্য ও মিথ্যার মাঝে পার্থক্য করতে। এই বিশেষ ক্ষমতাই হচ্ছে স্রষ্টার সর্বশ্রেষ্ঠ দান মানুষের জন্য। [ ১ – ৬ ] আয়াতে শপথের মাধ্যমে আমাদের বিশ্বভূবনের সাধারণ কিন্তু অত্যাচার্য বিষয়গুলির প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে প্রথমে, তারপরে ৭ নং আয়াতে মানুষের জন্য আল্লাহ্‌র যে অসাধারণ নেয়ামত তারই শপথ করা হয়েছে। এই শপথ গুলির মাধ্যমে বলা হয়েছে যে, মানুষ অবশ্যই উপলব্ধি করবে যে, তাঁর সাফল্য, সমৃদ্ধি, আত্মিক মুক্তি সব কিছুই নির্ভর করবে তাঁর নিজস্ব কর্ম প্রচেষ্টার উপরে। যে আত্মাকে পাপ ও অন্যায় থেকে পবিত্র রাখতে পারে সেই সফলকাম। এ কথা মনে রাখতে হবে যে, মানুষ জন্মগ্রহণ করে পূত পবিত্র আত্মা নিয়ে আর তা রীপুর দহন মুক্ত হয়ে পূত পবিত্র রাখা মানুষের কর্তব্য। যদি সে তা না পারে, যদি সে পাপ ও অন্যায় দ্বারা আত্মাকে কলুষিত করে, তবে তার পতন অবশ্যাম্ভবী। পরলোকে তার জন্য শাস্তি অবধারিত যার পরিমাণ হবে আত্মার কলুষতার পরিমাণ অনুযায়ী।

 

আয়াতঃ 091.009

যে নিজেকে শুদ্ধ করে, সেই সফলকাম হয়।
Indeed he succeeds who purifies his ownself (i.e. obeys and performs all that Allâh ordered, by following the true Faith of Islâmic Monotheism and by doing righteous good deeds).

قَدْ أَفْلَحَ مَن زَكَّاهَا
Qad aflaha man zakkaha

YUSUFALI: Truly he succeeds that purifies it,
PICKTHAL: He is indeed successful who causeth it to grow,
SHAKIR: He will indeed be successful who purifies it,
KHALIFA: Successful is one who redeems it.

৯। সেই-ই সফলকাম যে তার [ আত্মাকে ] পরিশুদ্ধ করে,

১০। এবং সেই-ই ব্যর্থ হয়েছে যে তা দুর্নীতিগ্রস্থ করেছে ৬১৫৩ ;

৬১৫৩। [ ৯ – ১০ ] নং আয়াতটি হচ্ছে এই সূরার সারাংশ বা শপথের মূল বা মূল বক্তব্য। এই বক্তব্যকে সামুদ জাতির উদাহরণের সাহায্যে শক্তিশালী করা হয়েছে। নীচের আয়াত দেখুন।

 

আয়াতঃ 091.010

এবং যে নিজেকে কলুষিত করে, সে ব্যর্থ মনোরথ হয়।
And indeed he fails who corrupts his ownself (i.e. disobeys what Allâh has ordered by rejecting the true Faith of Islâmic Monotheism or by following polytheism, etc. or by doing every kind of evil wicked deeds).

وَقَدْ خَابَ مَن دَسَّاهَا
Waqad khaba man dassaha

YUSUFALI: And he fails that corrupts it!
PICKTHAL: And he is indeed a failure who stunteth it.
SHAKIR: And he will indeed fail who corrupts it.
KHALIFA: Failing is one who neglects it.

৯। সেই-ই সফলকাম যে তার [ আত্মাকে ] পরিশুদ্ধ করে,

১০। এবং সেই-ই ব্যর্থ হয়েছে যে তা দুর্নীতিগ্রস্থ করেছে ৬১৫৩ ;

৬১৫৩। [ ৯ – ১০ ] নং আয়াতটি হচ্ছে এই সূরার সারাংশ বা শপথের মূল বা মূল বক্তব্য। এই বক্তব্যকে সামুদ জাতির উদাহরণের সাহায্যে শক্তিশালী করা হয়েছে। নীচের আয়াত দেখুন।

 

আয়াতঃ 091.011

সামুদ সম্প্রদায় অবাধ্যতা বশতঃ মিথ্যারোপ করেছিল।
Thamûd (people) denied (their Prophet) through their transgression (by rejecting the true Faith of Islâmic Monotheism, and by following polytheism, and by committing every kind of sin).

كَذَّبَتْ ثَمُودُ بِطَغْوَاهَا
Kaththabat thamoodu bitaghwaha

YUSUFALI: The Thamud (people) rejected (their prophet) through their inordinate wrong-doing,
PICKTHAL: (The tribe of) Thamud denied (the truth) in their rebellious pride,
SHAKIR: Samood gave the lie (to the truth) in their inordinacy,
KHALIFA: Thamoud’s disbelief caused them to transgress.

১১। সামুদ জাতি [ তাদের নবীকে ] প্রত্যাখান করেছিলো, তাদের অপরিমিত পাপ কাজের দ্বারা ৬১৫৪।

৬১৫৪। এই সূরাতে সামুদ জাতির কাহিনী পরোক্ষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। মূল কাহিনী আছে সূরা [ ৭: ৭৩ – ৭৯ ] আয়াতে। দেখুন টিকা ১০৪৪। সামুদ জাতির নিকট সালেহ্‌ নবীকে প্রেরণ করা হয়। নবী সালেহ্‌কে এমন এক জাতির সাথে মোকাবিলা করতে হয়েছিলো, যারা উদ্ধত, একগুঁয়ে ভাবে গরীবের অধিকার হরণ করতো। অনাবৃষ্টি বা খরার সময়ে তারা গরীবদের তৃণভূমি ও পানির অধিকার থেকে বঞ্চিত করতো যেনো তাদের পশুরা তা ব্যবহার করতে না পারে। আল্লাহ্‌র এই অকৃপণ দানকে তারা শুধু তাদের নিজস্ব ভোগের জন্যই ব্যবহার করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছিলো, তারা গরীবের অধিকারকে অস্বীকার করতো।

 

আয়াতঃ 091.012

যখন তাদের সর্বাধিক হতভাগ্য ব্যক্তি তৎপর হয়ে উঠেছিল।
When the most wicked man among them went forth (to kill the she-camel).

إِذِ انبَعَثَ أَشْقَاهَا
Ithi inbaAAatha ashqaha

YUSUFALI: Behold, the most wicked man among them was deputed (for impiety).
PICKTHAL: When the basest of them broke forth
SHAKIR: When the most unfortunate of them broke forth with
KHALIFA: They followed the worst among them.

১২। দেখো ! তাদের মধ্যে যে সর্বাপেক্ষা পাপিষ্ঠ, তাকে [ জঘন্য কাজের জন্য ] প্রতিনিধি করা হয়েছিলো ৬১৫৫।

৬১৫৫। গরীবের প্রতিনিধি স্বরূপ আল্লাহ্‌ সালেহ্‌ নবীকে একটি উষ্ট্রী দান করেন এবং আল্লাহ্‌র নিদর্শন স্বরূপ উষ্ট্রীটিকে তৃণভূমি ও পানির অধিকার দেয়ার হুকুম দান করেন। বলে দেয়া হয় যে যদি সামুদ জাতি আল্লাহ্‌র এই হুকুমের অবাধ্য হয়, তবে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে ভয়াবহ শাস্তি [ ৭ : ৭৩ ]। কিন্তু সামুদ জাতির লোকেরা সালেহ নবীর কথা বিশ্বাস করে না এবং উষ্ট্রীটিকে বধ করার পরিকল্পনা করে। সম্ভবতঃ উষ্ট্রীটি যখন জলপ্রবাহের নিকট পানি পান করার জন্য গমন করে তখন তা বধ করা হয়। দেখুন [ ২৬ : ১৫৫] আয়াত এবং [ ৫৪ : ২৭ ] আয়াত।

 

আয়াতঃ 091.013

অতঃপর আল্লাহর রসূল তাদেরকে বলেছিলেনঃ আল্লাহর উষ্ট্রী ও তাকে পানি পান করানোর ব্যাপারে সতর্ক থাক।
But the Messenger of Allâh [Sâlih (Saleh) ] said to them: ”Be cautious! Fear the evil end. That is the she-camel of Allâh! (Do not harm it) and bar it not from having its drink!”

فَقَالَ لَهُمْ رَسُولُ اللَّهِ نَاقَةَ اللَّهِ وَسُقْيَاهَا
Faqala lahum rasoolu Allahi naqata Allahi wasuqyaha

YUSUFALI: But the Messenger of Allah said to them: “It is a She-camel of Allah! And (bar her not from) having her drink!”
PICKTHAL: And the messenger of Allah said: It is the she-camel of Allah, so let her drink!
SHAKIR: So Allah’s messenger said to them (Leave alone) Allah’s she-camel, and (give) her (to) drink.
KHALIFA: GOD’s messenger said to them, “This is GOD’s camel; let her drink.”

১৩। তখন আল্লাহ্‌র রসুল ৬১৫৬ তাদের বলেছিলো, ” ইহা আল্লাহ্‌র উষ্ট্রী। উহাকে পানি পান করা থেকে [ বিরত করো না ]।”

৬১৫৬। এখানে আল্লাহ্‌র রাসুল দ্বারা সালেহ্‌ নবীকে বুঝানো হয়েছে। দেখুন উপরের টিকা।

 

আয়াতঃ 091.014

অতঃপর ওরা তার প্রতি মিথ্যারোপ করেছিল এবং উষ্ট্রীর পা কর্তন করেছিল। তাদের পাপের কারণে তাদের পালনকর্তা তাদের উপর ধ্বংস নাযিল করে একাকার করে দিলেন।
Then they denied him and they killed it. So their Lord destroyed them because of their sin, and made them equal in destruction (i.e. all grades of people, rich and poor, strong and weak, etc.)!

فَكَذَّبُوهُ فَعَقَرُوهَا فَدَمْدَمَ عَلَيْهِمْ رَبُّهُم بِذَنبِهِمْ فَسَوَّاهَا
Fakaththaboohu faAAaqarooha fadamdama AAalayhim rabbuhum bithanbihim fasawwaha

YUSUFALI: Then they rejected him (as a false prophet), and they hamstrung her. So their Lord, on account of their crime, obliterated their traces and made them equal (in destruction, high and low)!
PICKTHAL: But they denied him, and they hamstrung her, so Allah doomed them for their sin and rased (their dwellings).
SHAKIR: But they called him a liar and slaughtered her, therefore their Lord crushed them for their sin and levelled them (with the ground).
KHALIFA: They disbelieved him and slaughtered her. Their Lord then requited them for their sin and annihilated them.

১৪। কিন্তু তারা তাকে [ সালেহ্‌ নবীকে] প্রত্যাখান করলো; এবং তারা উটনীর পা কেটে ফেললো ৬১৫৭। সুতারাং তাদের পাপের দরুণ,তাদের প্রভু তাদের শেষ চিহ্নও ধ্বংস করলেন এবং [ এভাবে ধনী ও গরীব সকলকে ] এক করে দিলেন [ ধ্বংসের মাধ্যমে ]।

৬১৫৭। এই প্রচন্ড অন্যায় ও পাপ কাজ সমাধা করার জন্য যে লোক নিযুক্ত হয়েছিলো, অবশ্যই তাঁর প্রতি সমগ্র সামুদ সম্প্রদায়ের সমর্থন ছিলো। সুতারাং পার্থক্য হচ্চে সে সম্প্রদায়ের অন্যান্য লোক অপেক্ষা অধিক সাহসী ও একগুঁয়ে ছিলো। সে কারণেই আল্লাহ্‌ তাঁকে “সর্বাধিক পাপিষ্ঠ ” বলেছেন। তবে যেহেতু পাপটি ছিলো সমগ্র সম্প্রদায়ের, সেজন্য আল্লাহ্‌ সমগ্র সামুদ জাতিকেই ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।

 

আয়াতঃ 091.015

আল্লাহ তা’আলা এই ধ্বংসের কোন বিরূপ পরিণতির আশংকা করেন না।
And He (Allâh) feared not the consequences thereof.

وَلَا يَخَافُ عُقْبَاهَا
Wala yakhafu AAuqbaha

YUSUFALI: And for Him is no fear of its consequences.
PICKTHAL: He dreadeth not the sequel (of events).
SHAKIR: And He fears not its consequence.
KHALIFA: Yet, those who came after them remain heedless.

১৫। তিনি ৬১৫৮ ইহার পরিণাম সম্বন্ধে ভয় করেন না।

৬১৫৮। ১৫ নং আয়াতটির অনুবাদে বিভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। ইংরেজী অনুবাদ এরূপ, “And for Him , is no fear of its conseqence.” অধিকাংশ বাংলা অনুবাদকের মতে বাক্যটি আল্লাহ্‌র পরির্বতে ব্যবহৃত হয়েছে এবং “ইহা ” শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে পাপ কাজের শাস্তির পরিবর্তে, যে শাস্তি সামুদ জাতির প্রত্যেকের উপরে নিপতিত হয়েছিলো। সেক্ষেত্রে আয়াতটির ব্যাখ্যা হবে নিম্নরূপঃ সামুদ জাতির শাস্তি স্বরূপ পূর্ণ ধ্বংস ধার্য করেছিলেন আল্লাহ্‌। মানুষের জন্য যে কোন ধ্বংস ক্ষতির সম্ভাবনা কিন্তু আল্লাহ্‌ হচ্ছেন বিশ্বব্রহ্মান্ডের স্রষ্টা। নূতন সৃষ্টি করতে তিনি সক্ষম। সুতারাং ধ্বংসের ক্ষতির চিন্তা হচ্ছে মানুষের জন্য আল্লাহ্‌র এতে আশংকা করার কিছু নাই।

যদি আয়াতটির “Him” শব্দটি দ্বারা নবী সালেহ কে বুঝানো হয়, তবে তার ব্যাখ্যা হবে নিম্নরূপঃ সালেহ্‌ নবীকে শাস্তির পরিণাম সম্বন্ধে আশংকা করার কিছু নাই কারণ তিনি তার প্রতি অর্পিত দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করেছেন। দুষ্ট ও অন্যায়কারীদের সাবধান করেছেন। সুতারাং এই ভয়ানক ধ্বংসযজ্ঞ থেকে আল্লাহ্‌ তাঁকে রক্ষা করেন মোমেন বান্দারূপে এবং তিনি দুঃখের সাথে তাদের ত্যাগ করেন। [ ৭ : ৭৯ ]।

তৃতীয় ব্যাখ্যা অনুযায়ী “Him” শব্দটি পাপী ব্যক্তির জন্য প্রযোজ্য হয়েছে ; যে ব্যক্তি উষ্ট্রীটিকে বধ করেছিলো। এর ব্যাখ্যা হচ্ছে পাপী ও মিথ্যাবাদীরা কখনও তাদের পাপ কাজের পরিণতির জন্য ভয় করে না বা আশংকা প্রকাশ করে না।

Exit mobile version