Site icon BnBoi.Com

সূরা হাক্কাহ বাংলা

সূরা হাক্কাহ

সূরা হাক্কাহ

 

আয়াতঃ 069.001

সুনিশ্চিত বিষয়।
The Reality (i.e. the Day of Resurrection)!

الْحَاقَّةُ
Alhaqqatu

YUSUFALI: The Sure Reality!
PICKTHAL: The Reality!
SHAKIR: The sure calamity!
KHALIFA: The incontestable (event).

=============
সূরা হাক্‌কা বা নিশ্চিত সত্য – ৬৯
৫২ আয়াত, ২ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

ভূমিকা : এই সূরাটি মধ্য মক্কান সূরা। “নিশ্চিত সত্য কখনও হারিয়ে যাবে না। তা অবশ্যই অসত্যের উপরে বিজয় লাভ করবে। সুতারাং জীবনে মিথ্যা প্রলোভন দ্বারা বিভ্রান্ত হবে না। আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ প্রকৃত বাস্তবতার দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

সূরা হাক্‌কা বা নিশ্চিত সত্য – ৬৯
৫২ আয়াত, ২ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

১। নিশ্চিত সত্য ৫৬৩৫।

৫৬৩৫। “Al- Haqqa” – নিশ্চিত সত্য। এই সেই অবশ্যাম্ভবী ঘটনা যা অবশ্যই ঘটবেই। সেদিন সকল ভান ও মিথ্যার আবরণ অপসারিত হয়ে প্রকৃত সত্য সর্বসমক্ষে উদ্ঘাটিত হবে। ধারাবাহিক তিনটি প্রশ্নের মাধ্যমে সেই অবশ্যাম্ভবী ঘটনার রহস্যকে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই রহস্যের সমাধান হিসেবে আ’দ, সামুদ ও পৃথিবীর অন্যান্য প্রাচীন জাতিদের উল্লেখ করা হয়েছে। এ সব জাতি আল্লাহ্‌র সত্যকে প্রত্যাখান করেছিলো, ফলে তারা তাদের নিজেদের ধ্বংস ডেকে এনেছিলো এই পৃথিবীতেই যা তাদের পরলোকের মহাপ্রলয়ের প্রতীক স্বরূপ।

 

আয়াতঃ 069.002

সুনিশ্চিত বিষয় কি?
What is the Reality?

مَا الْحَاقَّةُ
Ma alhaqqatu

YUSUFALI: What is the Sure Reality?
PICKTHAL: What is the Reality?
SHAKIR: What is the sure calamity!
KHALIFA: What an incontestable (event)!

২। কি সেই নিশ্চিত সত্য ?

৩। ঐ নিশ্চিত সত্য তুমি কি ভাবে অনুধাবন করবে ?

৪। আ’দ ও সামুদ ৫৬৩৬ সম্প্রদায় অস্বীকার করেছিলো মহাপ্রলয় ৫৬৩৭

৫৬৩৬। প্রাচীন যুগের এই দুই প্রাচীন জাতির জন্য দেখুন সূরা [ ৭ : ৭৩ ] আয়াতের টিকা ১০৪৩ এবং [ ৭ : ৬৫ ] আয়াতের টিকা ১০৪০।

৫৬৩৭। শেষ বিচারের দিনের ভয়াবহতার এক বিশেষ বর্ণনা ‘Qaria’ শব্দটি সূরা নং ১০১ এর শিরোনাম।

 

আয়াতঃ 069.003

আপনি কি কিছু জানেন, সেই সুনিশ্চিত বিষয় কি?
And what will make you know what the Reality is?

وَمَا أَدْرَاكَ مَا الْحَاقَّةُ
Wama adraka ma alhaqqatu

YUSUFALI: And what will make thee realise what the Sure Reality is?
PICKTHAL: Ah, what will convey unto thee what the reality is!
SHAKIR: And what would make you realize what the sure calamity is!
KHALIFA: It is truly incontestable.

২। কি সেই নিশ্চিত সত্য ?

৩। ঐ নিশ্চিত সত্য তুমি কি ভাবে অনুধাবন করবে ?

৪। আ’দ ও সামুদ ৫৬৩৬ সম্প্রদায় অস্বীকার করেছিলো মহাপ্রলয় ৫৬৩৭

৫৬৩৬। প্রাচীন যুগের এই দুই প্রাচীন জাতির জন্য দেখুন সূরা [ ৭ : ৭৩ ] আয়াতের টিকা ১০৪৩ এবং [ ৭ : ৬৫ ] আয়াতের টিকা ১০৪০।

৫৬৩৭। শেষ বিচারের দিনের ভয়াবহতার এক বিশেষ বর্ণনা ‘Qaria’ শব্দটি সূরা নং ১০১ এর শিরোনাম।

 

আয়াতঃ 069.004

আদ ও সামুদ গোত্র মহাপ্রলয়কে মিথ্যা বলেছিল।
Thamûd and ’Ad people denied the Qâri’ah [the striking Hour (of Judgement)]!

كَذَّبَتْ ثَمُودُ وَعَادٌ بِالْقَارِعَةِ
Kaththabat thamoodu waAAadun bialqariAAati

YUSUFALI: The Thamud and the ‘Ad People (branded) as false the Stunning Calamity!
PICKTHAL: (The tribes of) Thamud and A’ad disbelieved in the judgment to come.
SHAKIR: Samood and Ad called the striking calamity a lie.
KHALIFA: Thamoud and `Aad disbelieved in the Shocker.

২। কি সেই নিশ্চিত সত্য ?

৩। ঐ নিশ্চিত সত্য তুমি কি ভাবে অনুধাবন করবে ?

৪। আ’দ ও সামুদ ৫৬৩৬ সম্প্রদায় অস্বীকার করেছিলো মহাপ্রলয় ৫৬৩৭

৫৬৩৬। প্রাচীন যুগের এই দুই প্রাচীন জাতির জন্য দেখুন সূরা [ ৭ : ৭৩ ] আয়াতের টিকা ১০৪৩ এবং [ ৭ : ৬৫ ] আয়াতের টিকা ১০৪০।

৫৬৩৭। শেষ বিচারের দিনের ভয়াবহতার এক বিশেষ বর্ণনা ‘Qaria’ শব্দটি সূরা নং ১০১ এর শিরোনাম।

 

আয়াতঃ 069.005

অতঃপর সমুদ গোত্রকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রলয়ংকর বিপর্যয় দ্বারা।
As for Thamûd, they were destroyed by the awful cry!

فَأَمَّا ثَمُودُ فَأُهْلِكُوا بِالطَّاغِيَةِ
Faamma thamoodu faohlikoo bialttaghiyati

YUSUFALI: But the Thamud,- they were destroyed by a terrible Storm of thunder and lightning!
PICKTHAL: As for Thamud, they were destroyed by the lightning.
SHAKIR: Then as to Samood, they were destroyed by an excessively severe punishment.
KHALIFA: As for Thamoud, they were annihilated by the devastating (quake).

৫। সামুদ জাতি ধ্বংস হয়েছিলো বজ্র ও বিদ্যুতের প্রলয়ংকরী ঝড় দ্বারা ৫৬৩৮।

৫৬৩৮। পৃথিবীতে বিভিন্ন জাতিকে ধ্বংস করা হয়েছে তাদের বিভিন্ন ধরণের পাপের কারণে। সামুদ জাতি ধনী ও গরীবের শ্রেণীবিন্যাস এতটাই আসক্ত ছিলো যে তারা গরীবকে মানুষের পর্যায়ে স্বীকৃতি দিত না। তারা গরীবকে শোষণ ও নির্যাতিত করতো। সালেহ্‌ নবী তাদের মাঝে আল্লাহ্‌র বাণী প্রচার করেন। এবং গরীবের অধিকারের প্রতীক স্বরূপ আল্লাহ্‌র তরফ থেকে একটি উষ্ট্রী আনায়ন করেন যার ধনীদের চারণ ভূমিতে এবং জলাশয়ে অধিকার থাকবে। দেখুন [ ৭ : ৭৩ ] আয়াতের টিকা ১০৪৪। কিন্তু সামুদ জাতির লোকেরা উষ্ট্রীটিকে বধ করে। ফলে এক প্রলয়ংকর বিপর্যয়ে তারা সকলে ধ্বংস হয়ে যায়।

 

আয়াতঃ 069.006

এবং আদ গোত্রকে ধ্বংস করা হয়েছিল এক প্রচন্ড ঝঞ্জাবায়ূ,
And as for ’Ad, they were destroyed by a furious violent wind;

وَأَمَّا عَادٌ فَأُهْلِكُوا بِرِيحٍ صَرْصَرٍ عَاتِيَةٍ
Waamma AAadun faohlikoo bireehin sarsarin AAatiyatin

YUSUFALI: And the ‘Ad, they were destroyed by a furious Wind, exceedingly violent;
PICKTHAL: And as for A’ad, they were destroyed by a fierce roaring wind,
SHAKIR: And as to Ad, they were destroyed by a roaring, violent blast.
KHALIFA: As for `Aad, they were annihilated by a persistent, violent storm

৬। এবং আ’দ সম্প্রদায় ধ্বংস হয়েছিলো প্রচন্ড ঝঞ্ঝা বায়ু দ্বারা ৫৬৩৯ ;

৫৬৩৯। সম্পদের প্রাচুর্যে আ’দ সম্প্রদায় অন্যায়কারীরূপে পরিণত হয়েছিলো। হুদ নবী বৃথাই তাদের মাঝে সত্য ও ন্যায়ের বাণী প্রচার করেছিলেন। তারা হুদ নবীকে প্রত্যাখান করে ফলে এক প্রচন্ড ঝঞাবায়ু দ্বারা তাদের ধ্বংস করা হয়। দেখুন [ ৭ : ৬৫ ] আয়াতের টিকা ১০৪০ এবং আয়াত [ ৪১ : ১৫ – ১৬ ] ও টিকা ৪৪৮৩ এবং ৫৪:

 

আয়াতঃ 069.007

যা তিনি প্রবাহিত করেছিলেন তাদের উপর সাত রাত্রি ও আট দিবস পর্যন্ত অবিরাম। আপনি তাদেরকে দেখতেন যে, তারা অসার খর্জুর কান্ডের ন্যায় ভূপাতিত হয়ে রয়েছে।
Which Allâh imposed on them for seven nights and eight days in succession, so that you could see men lying overthrown (destroyed), as if they were hollow trunks of date-palms!

سَخَّرَهَا عَلَيْهِمْ سَبْعَ لَيَالٍ وَثَمَانِيَةَ أَيَّامٍ حُسُومًا فَتَرَى الْقَوْمَ فِيهَا صَرْعَى كَأَنَّهُمْ أَعْجَازُ نَخْلٍ خَاوِيَةٍ
Sakhkharaha AAalayhim sabAAa layalin wathamaniyata ayyamin husooman fatara alqawma feeha sarAAa kaannahum aAAjazu nakhlin khawiyatun

YUSUFALI: He made it rage against them seven nights and eight days in succession: so that thou couldst see the (whole) people lying prostrate in its (path), as they had been roots of hollow palm-trees tumbled down!
PICKTHAL: Which He imposed on them for seven long nights and eight long days so that thou mightest have seen men lying overthrown, as they were hollow trunks of palm-trees.
SHAKIR: Which He made to prevail against them for seven nights and eight days unremittingly, so that you might have seen the people therein prostrate as if they were the trunks of hollow palms.
KHALIFA: He unleashed it upon them for seven nights and eight days, violently. You could see the people tossed around like decayed palm trunks.

৭। তিনি বায়ুকে তাদের উপরে প্রচন্ডরূপে প্রবাহিত করেছিলেন সাত রাত্রি ও আট দিন। ফলে তুমি তাদের [ সমস্ত ] সম্প্রদায়কে মাটিতে লুটিয়ে পড়া অবস্থায় দেখতে পেতে, যেনো তারা হচ্ছে উল্টে পড়া খেজুর গাছের ফাঁপা গুড়ি। ৫৬৪০

৫৬৪০। আ’দ জাতির লোকেরা যখন ঝঞ্ঝা বায়ু দ্বারা মৃত্যু মুখে পতিত হয়, তাদের সেই অবস্থার চিত্র অঙ্কন করা হয়েছে এক অপূর্ব উপমার সাহায্যে। অন্তঃসারশূন্য, কান্ডের অভ্যন্তর ভাগ শূন্য খেজুর, বা পাম গাছ যেরূপে ঝড়ের বেগ সহ্য করতে না পেরে শেকড়সহ উল্টিয়ে পড়ে যায়, তখনকার খেজুর বা পাম গাছের যে দৃশ্য হয় ঠিক সেরূপ দৃশ্যেরই অবতারণা তারা করে। সাধারণ ভাবে বলা হয়ে থাকে যে আ’দ জাতির লোকেরা ছিলো অত্যন্ত লম্বা। সুতারাং তাদের উপমা খেজুর বা পাম গাছের সাথে উপযুক্ত হয়েছে।

 

আয়াতঃ 069.008

আপনি তাদের কোন অস্তিত্ব দেখতে পান কি?
Do you see any remnants of them?

فَهَلْ تَرَى لَهُم مِّن بَاقِيَةٍ
Fahal tara lahum min baqiyatin

YUSUFALI: Then seest thou any of them left surviving?
PICKTHAL: Canst thou (O Muhammad) see any remnant of them?
SHAKIR: Do you then see of them one remaining?
KHALIFA: Can you find any trace of them?

৮। এরপরে তাদের কাউকে কি তুমি বেঁচে থাকতে দেখতে পাও ৫৬৪১ ?

৫৬৪১। আ’দ জাতির উপরে যে প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে এসেছিলো তা ছিলো সর্বগ্রাসী, ভয়ংকর। আ’দ জাতি সম্পূর্ণ ধবংস প্রাপ্ত হয়েছিলো শুধু তাদের শাখা যাদের সামুদ জাতিরূপে অভিহিত করা হতো তারা সেই প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা লাভ করে। দেখুন টিকা ৫৬৩৬।

 

আয়াতঃ 069.009

ফেরাউন, তাঁর পূর্ববর্তীরা এবং উল্টে যাওয়া বস্তিবাসীরা গুরুতর পাপ করেছিল।
And Fir’aun (Pharaoh), and those before him, and the cities overthrown [the towns of the people of [Lout (Lot)] committed sin,

وَجَاء فِرْعَوْنُ وَمَن قَبْلَهُ وَالْمُؤْتَفِكَاتُ بِالْخَاطِئَةِ
Wajaa firAAawnu waman qablahu waalmu/tafikatu bialkhati-ati

YUSUFALI: And Pharaoh, and those before him, and the Cities Overthrown, committed habitual Sin.
PICKTHAL: And Pharaoh and those before him, and the communities that were destroyed, brought error,
SHAKIR: And Firon and those before him and the overthrown cities continuously committed sins.
KHALIFA: Pharaoh, others before him, and the sinners (of Sodom) were wicked.

৯। ফেরাউন ৫৬৪২, ও তার পূর্ববর্তীরা ৫৬৪৩ এবং উল্টে পড়া নগরীর [ অধিবাসীরা ] ৫৬৪৪ পাপাচারে লিপ্ত ছিলো।

৫৬৪২। ফেরাউনের কাহিনীর জন্য দেখুন সূরা [ ৭ : ১০৩ – ১৩৭ ] আয়াত ও আয়াত সমূহের টিকাসমূহ। ফেরাউনের সময়ে হযরত মুসাকে আল্লাহ্‌র রাসুল রূপে প্রেরণ করা হয়। ফেরাউন ছিলো এক দুবির্নীত অহংকারী উদ্ধত প্রকৃতির ব্যক্তি যার ফলে তার পতনও ঘটে অনুরূপ প্রচন্ডভাবে।

৫৬৪৩। সূরা [ ৭ : ৫৯ – ১৫৮ ] আয়াত সমূহে ধারাবাহিক ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যুগে যুগে পাপকার্যের দরুণ ধ্বংস প্রাপ্ত জাতি সমূহের অবস্থান। সেখানে আরম্ভ করা হয়েছে নূহ্‌ নবী থেকে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে বর্ণনা করা হয়েছে আ’দ, সামুদ, জনপদবাসী, মিদিয়ানবাসী এবং হযরত মুসার সমসাময়িক সম্প্রদায় বৃন্দের কাহিনী। এই আয়াতগুলির মাধ্যমে ঘটনার যে চিত্র পঞ্জি আঁকা হয়েছে তা সময়ের বিশাল ক্যানভাসের পটভূমিতে বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। আর এই অংকিত ক্যানভাসের কেন্দ্র বিন্দুতে অবস্থান করছে হযরত মুসার কাহিনী। এর পরে উল্লেখ করা হয়েছে মোশরেক আরবদের কাহিনী যাদের মাঝে শেষ নবীর আগমন ঘটে। এই ছিলো ঘটনার ধারাবাহিকতা। এই সূরাতে বিশদভাবে কিছু বর্ণনা করা হয় নাই। ঘটনার ধারাবাহিকতাকে পরিপূর্ণতা লক্ষ্য করা যায়। আ’দ, সামুদ জাতির উল্লেখ করা হয়েছে প্রথমে, তার পরে ফেরাউন ও সর্বশেষে নূহ্‌ নবীর উল্লেখ করা হয়েছে। কারণ হিসেবে বলা যায় আ’দ ও সামুদ জাতিরা ছিলো আবরদের সংস্কৃতিভূক্ত। আর এই সূরাতে বিশেষ ভাবে মক্কার মোশরেক আরবদের উল্লেখ না করে ফেরাউনের উল্লেখ করা হয়েছে এবং অন্য সকল হচ্ছে, ” তার পূর্ববর্তীরা। ”

৫৬৪৪। ‘নগরীর অধিবাসী ‘ দ্বারা সদম ও গোমরাহ্‌ নগরকে বুঝানো হয়েছে এবং এর অধিবাসীদের। এই জনপদবাসীদের মাঝে লূত নবী প্রেরণ করা হয়। দেখুন সূরা [ ৯: ৭০] আয়াত ও টিকা ১৩৩০ এবং [ ৭ : ৮০ – ৮৪ ] আয়াত ও টিকা ১০৪৯।

 

আয়াতঃ 069.010

তারা তাদের পালনকর্তার রসূলকে অমান্য করেছিল। ফলে তিনি তাদেরকে কঠোরহস্তে পাকড়াও করলেন।
And they disobeyed their Lord’s Messenger, so He punished them with a strong punishment.

فَعَصَوْا رَسُولَ رَبِّهِمْ فَأَخَذَهُمْ أَخْذَةً رَّابِيَةً
FaAAasaw rasoola rabbihim faakhathahum akhthatan rabiyatan

YUSUFALI: And disobeyed (each) the messenger of their Lord; so He punished them with an abundant Penalty.
PICKTHAL: And they disobeyed the messenger of their Lord, therefor did He grip them with a tightening grip.
SHAKIR: And they disobeyed the Messenger of their Lord, so He punished them with a vehement punishment.
KHALIFA: They disobeyed the messenger of their Lord. Consequently, He requited them a devastating requital.

১০। এবং [ প্রত্যেকে ] তাদের প্রভুর রসুলকে অমান্য করেছিলো। সুতারাং তিনি তাদের অপরিসীম শাস্তি দিলেন।

১১। যখন, [ নূহ্‌ এর বন্যার ] পানি সীমা অতিক্রম করেছিলো ৫৬৪৫, তখন আমি [ হে মানুষ ] তোমাদের বহন করেছিলাম ভাসমান [ নৌকায় ],

৫৬৪৫। নূহ্‌ নবীর মহাপ্লাবনের জন্য দেখুন সূরা [ ৭ : ৫৯- ৬৪ ] আয়াত ; এবং সূরা [ ১১ : ২৫ – ৪৯ ] আয়াত। আল্লাহ্‌র হুকুমে নূহ্‌ নবী বিশাল নৌকা প্রস্তুত করতে থাকেন যা তাঁর সম্প্রদায়ের জন্য হাসি ও ঠাট্টার বস্তুতে পরিণত হয়। দেখুন [ ১১ : ৩৮] আয়াত ও টিকা ১৫৩১। আল্লাহ্‌ মহাপ্লাবন থেকে তার সৃষ্টিকে রক্ষার জন্য নৌকা তৈরী করতে হুকুম দেন। সেই মহাপ্লাবন থেকে শুধু তারাই রক্ষা পেয়েছিলো যারা ছিলেন বিশ্বাসী বা মোমেন। যেহেতু নৌযানটি আল্লাহ্‌র হুকুমে ও সদয় তত্বাবধানে নির্মিত হয়েছিলো, সুতারাং আল্লাহ্‌ তাদের সেই নৌযানে আরোহণ করিয়েছিলেন।

 

আয়াতঃ 069.011

যখন জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল, তখন আমি তোমাদেরকে চলন্ত নৌযানে আরোহণ করিয়েছিলাম।
Verily! When the water rose beyond its limits [Nûh’s (Noah) Flood], We carried you (mankind) in the floating [ship that was constructed by Nûh (Noah)].

إِنَّا لَمَّا طَغَى الْمَاء حَمَلْنَاكُمْ فِي الْجَارِيَةِ
Inna lamma tagha almao hamalnakum fee aljariyati

YUSUFALI: We, when the water (of Noah’s Flood) overflowed beyond its limits, carried you (mankind), in the floating (Ark),
PICKTHAL: Lo! when the waters rose, We carried you upon the ship
SHAKIR: Surely We bore you up in the ship when the water rose high,
KHALIFA: The flood was devastating, so we carried you on the floating (ark).

১০। এবং [ প্রত্যেকে ] তাদের প্রভুর রসুলকে অমান্য করেছিলো। সুতারাং তিনি তাদের অপরিসীম শাস্তি দিলেন।

১১। যখন, [ নূহ্‌ এর বন্যার ] পানি সীমা অতিক্রম করেছিলো ৫৬৪৫, তখন আমি [ হে মানুষ ] তোমাদের বহন করেছিলাম ভাসমান [ নৌকায় ],

৫৬৪৫। নূহ্‌ নবীর মহাপ্লাবনের জন্য দেখুন সূরা [ ৭ : ৫৯- ৬৪ ] আয়াত ; এবং সূরা [ ১১ : ২৫ – ৪৯ ] আয়াত। আল্লাহ্‌র হুকুমে নূহ্‌ নবী বিশাল নৌকা প্রস্তুত করতে থাকেন যা তাঁর সম্প্রদায়ের জন্য হাসি ও ঠাট্টার বস্তুতে পরিণত হয়। দেখুন [ ১১ : ৩৮] আয়াত ও টিকা ১৫৩১। আল্লাহ্‌ মহাপ্লাবন থেকে তার সৃষ্টিকে রক্ষার জন্য নৌকা তৈরী করতে হুকুম দেন। সেই মহাপ্লাবন থেকে শুধু তারাই রক্ষা পেয়েছিলো যারা ছিলেন বিশ্বাসী বা মোমেন। যেহেতু নৌযানটি আল্লাহ্‌র হুকুমে ও সদয় তত্বাবধানে নির্মিত হয়েছিলো, সুতারাং আল্লাহ্‌ তাদের সেই নৌযানে আরোহণ করিয়েছিলেন।

 

আয়াতঃ 069.012

যাতে এ ঘটনা তোমাদের জন্যে স্মৃতির বিষয় এবং কান এটাকে উপদেশ গ্রহণের উপযোগী রূপে গ্রহণ করে।
That We might make it a remembrance for you, and the keen ear (person) may (hear and) understand it.

لِنَجْعَلَهَا لَكُمْ تَذْكِرَةً وَتَعِيَهَا أُذُنٌ وَاعِيَةٌ
LinajAAalaha lakum tathkiratan wataAAiyaha othunun waAAiyatun

YUSUFALI: That We might make it a Message unto you, and that ears (that should hear the tale and) retain its memory should bear its (lessons) in remembrance.
PICKTHAL: That We might make it a memorial for you, and that remembering ears (that heard the story) might remember.
SHAKIR: So that We may make it a reminder to you, and that the retaining ear might retain it.
KHALIFA: We rendered it a lesson for you, that any listening ear may understand.

১২। এই উদ্দেশ্যে যে, উহাকে আমি তোমাদের জন্য উপদেশ স্বরূপ করবো, ৫৬৪৬। [ এই কাহিনী শুনে ] কর্ণ তা স্মৃতিতে ধরে রাখবে, এবং [ উপদেশ হিসেবে ] স্মরণ রাখবে। ৫৬৪৭।

৫৬৪৬। হযরত নূহ্‌ এর কাহিনীর মাধ্যমে পৃথিবীর সর্বযুগের মানব সন্তানকে এই উপদেশ দান করা হয়েছে যে মন্দ কাজের শেষ পরিণতি সর্বদা ভয়াবহ। ভালোকে সব সময়ে আল্লাহ্‌ স্বয়ং উদ্ধার করেন।

৫৬৪৭। বাইবেলে একটি প্রবাদ বাক্য আছে যে, “He that hath ears to hear , let him hear.” [ Matt xi 15 ] । বাইবেলে ও কোরাণে যে ‘শ্রুতির ‘ উল্লেখ করা হয়েছে তা সাধারণ শোনা বা শ্রুতির সমপর্যায় নয়। এই শোনার ক্ষমতা হচ্ছে : আধ্যাত্মিক জগতের জ্ঞানের বার্তা হৃদয়ে বুঝতে বা অনুভব করার ক্ষমতা। যা চিরন্তন সত্য ও ন্যায়, সেই বাণীকে হৃদয়ের কন্দরে অনুভব করার ক্ষমতা, শারীরিক ভাবে শোনার ক্ষমতার বহু উর্দ্ধেলোকে যার অবস্থান। বাইবেলে যেখানে বলে ; ”সেই সত্য শোনার ক্ষমতা যার আছে তাকে সেই সত্য শুনতে দাও। সেখানে কোরাণ বলে, অনেকে জ্ঞান, প্রজ্ঞার কথা শুনতে চায় এবং শোনার সময়ে তারা ভাবে আপ্লুত হয়ে পড়ে, এ কথা সত্য। কিন্তু যদি তারা সেই সত্যকে এবং সত্যের বাণীর শিক্ষাকে তাদের অন্তরে ও জীবনে স্থায়ী ভাবে ধারণ করে রাখতে আগ্রহী না হয় তবে তারা তা ভুলে যাবে। ” কর্ণ তা স্মৃতিতে ধরে রাখবে ” – অর্থাৎ কর্ণ শুধু শোনেই না, আল্লাহ্‌র বাণীর মাহত্ম্য ও সত্যকে জীবনে সংরক্ষণ করে থাকে। সত্যের প্রবেশ হতে হবে অন্তরের গভীরে হৃদয়ের কন্দরে, ইন্দ্রিয়ের অগোচরে যা হৃদয়কে ভরিয়ে দেবে সত্যের আলোকে আর তাই-ই হচ্ছে আল্লাহ্‌র কাম্য।

 

আয়াতঃ 069.013

যখন শিংগায় ফুৎকার দেয়া হবে-একটি মাত্র ফুৎকার
Then when the Trumpet will be blown with one blowing (the first one),

فَإِذَا نُفِخَ فِي الصُّورِ نَفْخَةٌ وَاحِدَةٌ
Fa-itha nufikha fee alssoori nafkhatun wahidatun

YUSUFALI: Then, when one blast is sounded on the Trumpet,
PICKTHAL: And when the trumpet shall sound one blast
SHAKIR: And when the trumpet is blown with a single blast,
KHALIFA: When the horn is blown once

১৩। যখন শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে – একটি মাত্র ফুৎকার ৫৬৪৮, –

৫৬৪৮। এই আয়াতে অবতীর্ণ করা হয়েছে সেই অবশ্যাম্ভবী ঘটনার। সে ঘটনা হচ্ছে শেষ বিচারের দিন -যা এই সূরার বিষয়বস্তু। এই ফুৎকার হচ্ছে প্রথম ফুৎকার যার উল্লেখ করা হয়েছে সূরা [ ৩৯: ৬৮ ] আয়াতে ও টিকা নং ৪৩৪৩।

 

আয়াতঃ 069.014

এবং পৃথিবী ও পর্বতমালা উত্তোলিত হবে ও চুর্ণ-বিচুর্ণ করে দেয়া হবে,
And the earth and the mountains shall be removed from their places, and crushed with a single crushing,

وَحُمِلَتِ الْأَرْضُ وَالْجِبَالُ فَدُكَّتَا دَكَّةً وَاحِدَةً
Wahumilati al-ardu waaljibalu fadukkata dakkatan wahidatan

YUSUFALI: And the earth is moved, and its mountains, and they are crushed to powder at one stroke,-
PICKTHAL: And the earth with the mountains shall be lifted up and crushed with one crash,
SHAKIR: And the earth and the mountains are borne away and crushed with a single crushing.
KHALIFA: The earth and the mountains will be carried off and crushed; utterly crushed.

১৪। এবং পৃথিবী আন্দোলিত হবে, এবং এর উপরের পর্বতসমূহ ৫৬৪৯ এক ধাক্কাতে চূর্ণবিচূর্ণ হবে,

৫৬৪৯। এই আয়াত ও পরবর্তী আয়াত সমূহে সেই অবশ্যাম্ভবী ঘটনা বা কেয়ামতের উল্লেখ করা হয়েছে, যেদিন এই চেনা পৃথিবী আমাদের সম্মুখ থেকে অদৃশ্য হয়ে যাবে এবং নূতন পৃথিবীর সৃষ্টি হবে। পর্বতের উল্লেখ বিশেষ ভাবে এই আয়াতে করা হয়েছে, কারণ পর্বত হচ্ছে কাঠিন্যের, বিশালত্বের ও স্থায়ীত্বের প্রতীক স্বরূপ। সেই পবর্তও সেদিন ধূলার ন্যায় হয়ে যাবে চূর্ণবিচূর্ণ” অর্থাৎ পর্বত তার আকৃতি বা গঠন হারাবে সেই ভয়াবহ ধাক্কায়।

 

আয়াতঃ 069.015

সেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে।
Then on that Day shall the (Great) Event befall,

فَيَوْمَئِذٍ وَقَعَتِ الْوَاقِعَةُ
Fayawma-ithin waqaAAati alwaqiAAatu

YUSUFALI: On that Day shall the (Great) Event come to pass.
PICKTHAL: Then, on that day will the Event befall.
SHAKIR: On that day shall the great event come to pass,
KHALIFA: That is the day when the inevitable event will come to pass.

১৫। সেদিন সংঘটিত হবে মহাপ্রলয়,

১৬। আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে, সেদিন উহা শিথিল হয়ে পড়বে,

১৭। আর ফেরেশতারা আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে ৫৫৫০, এবং সেদিন আটজন ফেরেশতা তোমার প্রভুর আরশকে ধারণ করবে তাদের উর্দ্ধে। ৫৬৫১

৫৬৫০। কেয়ামত দিবসের ছবি আঁকা হয়েছে কবিতার ভাষায় ও ছন্দে। কারণ সেদিনের বর্ণনা কোনও মানুষের ভাষায় করা সম্ভব নয়। মানুষের ভাব,ভাষা, কল্পনা সবই সীমাবদ্ধ। সেই সীমাবদ্ধ প্রকাশ ক্ষমতা দ্বারা সে কিভাবে সেই দিনের ছবি মনের মাঝে ধারণ করতে পারে ? সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে। ফেরেশতারা আকাশে বাস করে। তাদের অবস্থান কি হবে ? তাদের ছবি আমরা কি ভাবে অঙ্কন করবো ? বলা হয়েছে তারা ” আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে।” আল্লাহ্‌র জ্যোতি যা এতদিন মানুষের দৃষ্টি থেকে আড়াল করে রাখা হয়েছিলো, সে আড়াল বিদূরিত হয়ে যাবে। আল্লাহ্‌র সিংহাসন দৃষ্টিতে ভাস্বর হবে। এখানে সিংহাসন হচ্ছে আল্লাহ্‌র ক্ষমতা, শক্তি, ন্যায় ও সত্যের প্রতীক স্বরূপ।

৫৬৫১। দেখুন পূর্বের টিকা। ফেরেশতাদের উল্লেখ দ্বারা আল্লাহ্‌র মহিমার বিভিন্ন প্রকাশকে বোঝানো হয়েছে। তাদের সংখ্যার উল্লেখ করা হয়েছে আট, যদি না সিংহাসনের উল্লেখ করা হতো, তবে এই আট সংখ্যাকে ব্যাখ্যা করা দূরূহ হয়ে যেতো, যদিও কোরাণের বাণীর সঠিক অর্থ একমাত্র আল্লাহ্‌-ই জানেন, তবুও মনে হয় সিংহাসন দ্বারা প্রাচ্য দেশীয় সিংহাসনের ধারাকে বোঝানো হয়েছে যা ‘অষ্টভূজ’ এবং এই সিংহাসনের প্রতিটি কোনা একজন করে ফেরেশতা ধারণ করে আছেন। অথবা সিংহাসন যদি চতুষ্কোণ হবে তবে চারজন করে এক এক বারে দুবারে আটজন ফেরেশতা আছেন তা ধারণ করার জন্য। প্রকৃত পক্ষে সম্পূর্ণ ছবিটি হচ্ছে প্রতীক ধর্মী – যে প্রতীকের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র মাহাত্ম্য ক্ষমতাকে প্রকাশ করা হয়েছে।

 

আয়াতঃ 069.016

সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হবে ও বিক্ষিপ্ত হবে।
And the heaven will split asunder, for that Day it (the heaven will be frail (weak), and torn up,

وَانشَقَّتِ السَّمَاء فَهِيَ يَوْمَئِذٍ وَاهِيَةٌ
Wainshaqqati alssamao fahiya yawma-ithin wahiyatun

YUSUFALI: And the sky will be rent asunder, for it will that Day be flimsy,
PICKTHAL: And the heaven will split asunder, for that day it will be frail.
SHAKIR: And the heaven shall cleave asunder, so that on that day it shall be frail,
KHALIFA: The heaven will crack, and fall apart.

১৫। সেদিন সংঘটিত হবে মহাপ্রলয়,

১৬। আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে, সেদিন উহা শিথিল হয়ে পড়বে,

১৭। আর ফেরেশতারা আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে ৫৫৫০, এবং সেদিন আটজন ফেরেশতা তোমার প্রভুর আরশকে ধারণ করবে তাদের উর্দ্ধে। ৫৬৫১

৫৬৫০। কেয়ামত দিবসের ছবি আঁকা হয়েছে কবিতার ভাষায় ও ছন্দে। কারণ সেদিনের বর্ণনা কোনও মানুষের ভাষায় করা সম্ভব নয়। মানুষের ভাব,ভাষা, কল্পনা সবই সীমাবদ্ধ। সেই সীমাবদ্ধ প্রকাশ ক্ষমতা দ্বারা সে কিভাবে সেই দিনের ছবি মনের মাঝে ধারণ করতে পারে ? সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে। ফেরেশতারা আকাশে বাস করে। তাদের অবস্থান কি হবে ? তাদের ছবি আমরা কি ভাবে অঙ্কন করবো ? বলা হয়েছে তারা ” আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে।” আল্লাহ্‌র জ্যোতি যা এতদিন মানুষের দৃষ্টি থেকে আড়াল করে রাখা হয়েছিলো, সে আড়াল বিদূরিত হয়ে যাবে। আল্লাহ্‌র সিংহাসন দৃষ্টিতে ভাস্বর হবে। এখানে সিংহাসন হচ্ছে আল্লাহ্‌র ক্ষমতা, শক্তি, ন্যায় ও সত্যের প্রতীক স্বরূপ।

৫৬৫১। দেখুন পূর্বের টিকা। ফেরেশতাদের উল্লেখ দ্বারা আল্লাহ্‌র মহিমার বিভিন্ন প্রকাশকে বোঝানো হয়েছে। তাদের সংখ্যার উল্লেখ করা হয়েছে আট, যদি না সিংহাসনের উল্লেখ করা হতো, তবে এই আট সংখ্যাকে ব্যাখ্যা করা দূরূহ হয়ে যেতো, যদিও কোরাণের বাণীর সঠিক অর্থ একমাত্র আল্লাহ্‌-ই জানেন, তবুও মনে হয় সিংহাসন দ্বারা প্রাচ্য দেশীয় সিংহাসনের ধারাকে বোঝানো হয়েছে যা ‘অষ্টভূজ’ এবং এই সিংহাসনের প্রতিটি কোনা একজন করে ফেরেশতা ধারণ করে আছেন। অথবা সিংহাসন যদি চতুষ্কোণ হবে তবে চারজন করে এক এক বারে দুবারে আটজন ফেরেশতা আছেন তা ধারণ করার জন্য। প্রকৃত পক্ষে সম্পূর্ণ ছবিটি হচ্ছে প্রতীক ধর্মী – যে প্রতীকের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র মাহাত্ম্য ক্ষমতাকে প্রকাশ করা হয়েছে।

 

আয়াতঃ 069.017

এবং ফেরেশতাগণ আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে ও আট জন ফেরেশতা আপনার পালনকর্তার আরশকে তাদের উর্ধ্বে বহন করবে।
And the angels will be on its sides, and eight angels will, that Day, bear the Throne of your Lord above them.

وَالْمَلَكُ عَلَى أَرْجَائِهَا وَيَحْمِلُ عَرْشَ رَبِّكَ فَوْقَهُمْ يَوْمَئِذٍ ثَمَانِيَةٌ
Waalmalaku AAala arja-iha wayahmilu AAarsha rabbika fawqahum yawma-ithin thamaniyatun

YUSUFALI: And the angels will be on its sides, and eight will, that Day, bear the Throne of thy Lord above them.
PICKTHAL: And the angels will be on the sides thereof, and eight will uphold the Throne of thy Lord that day, above them.
SHAKIR: And the angels shall be on the sides thereof; and above ) I them eight shall bear on that day your Lord’s power.
KHALIFA: The angels will be all around, and Your Lord’s dominion will then encompass eight (universes).

১৫। সেদিন সংঘটিত হবে মহাপ্রলয়,

১৬। আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে, সেদিন উহা শিথিল হয়ে পড়বে,

১৭। আর ফেরেশতারা আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে ৫৫৫০, এবং সেদিন আটজন ফেরেশতা তোমার প্রভুর আরশকে ধারণ করবে তাদের উর্দ্ধে। ৫৬৫১

৫৬৫০। কেয়ামত দিবসের ছবি আঁকা হয়েছে কবিতার ভাষায় ও ছন্দে। কারণ সেদিনের বর্ণনা কোনও মানুষের ভাষায় করা সম্ভব নয়। মানুষের ভাব,ভাষা, কল্পনা সবই সীমাবদ্ধ। সেই সীমাবদ্ধ প্রকাশ ক্ষমতা দ্বারা সে কিভাবে সেই দিনের ছবি মনের মাঝে ধারণ করতে পারে ? সেদিন আকাশ বিদীর্ণ হয়ে যাবে। ফেরেশতারা আকাশে বাস করে। তাদের অবস্থান কি হবে ? তাদের ছবি আমরা কি ভাবে অঙ্কন করবো ? বলা হয়েছে তারা ” আকাশের প্রান্তদেশে থাকবে।” আল্লাহ্‌র জ্যোতি যা এতদিন মানুষের দৃষ্টি থেকে আড়াল করে রাখা হয়েছিলো, সে আড়াল বিদূরিত হয়ে যাবে। আল্লাহ্‌র সিংহাসন দৃষ্টিতে ভাস্বর হবে। এখানে সিংহাসন হচ্ছে আল্লাহ্‌র ক্ষমতা, শক্তি, ন্যায় ও সত্যের প্রতীক স্বরূপ।

৫৬৫১। দেখুন পূর্বের টিকা। ফেরেশতাদের উল্লেখ দ্বারা আল্লাহ্‌র মহিমার বিভিন্ন প্রকাশকে বোঝানো হয়েছে। তাদের সংখ্যার উল্লেখ করা হয়েছে আট, যদি না সিংহাসনের উল্লেখ করা হতো, তবে এই আট সংখ্যাকে ব্যাখ্যা করা দূরূহ হয়ে যেতো, যদিও কোরাণের বাণীর সঠিক অর্থ একমাত্র আল্লাহ্‌-ই জানেন, তবুও মনে হয় সিংহাসন দ্বারা প্রাচ্য দেশীয় সিংহাসনের ধারাকে বোঝানো হয়েছে যা ‘অষ্টভূজ’ এবং এই সিংহাসনের প্রতিটি কোনা একজন করে ফেরেশতা ধারণ করে আছেন। অথবা সিংহাসন যদি চতুষ্কোণ হবে তবে চারজন করে এক এক বারে দুবারে আটজন ফেরেশতা আছেন তা ধারণ করার জন্য। প্রকৃত পক্ষে সম্পূর্ণ ছবিটি হচ্ছে প্রতীক ধর্মী – যে প্রতীকের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র মাহাত্ম্য ক্ষমতাকে প্রকাশ করা হয়েছে।

 

আয়াতঃ 069.018

সেদিন তোমাদেরকে উপস্থিত করা হবে। তোমাদের কোন কিছু গোপন থাকবে না।
That Day shall you be brought to Judgement, not a secret of you will be hidden.

يَوْمَئِذٍ تُعْرَضُونَ لَا تَخْفَى مِنكُمْ خَافِيَةٌ
Yawma-ithin tuAAradoona la takhfa minkum khafiyatun

YUSUFALI: That Day shall ye be brought to Judgment: not an act of yours that ye hide will be hidden.
PICKTHAL: On that day ye will be exposed; not a secret of you will be hidden.
SHAKIR: On that day you shall be exposed to view– no secret of yours shall remain hidden.
KHALIFA: On that day, you will be exposed, nothing of you can be hidden

১৮। সেদিন তোমাদের বিচারের জন্য উপস্থিত করা হবে, তোমাদের কোন কাজ যা তোমরা গোপন করেছ, তা গোপন থাকবে না।

১৯। সেদিন যার ডান হাতে আমলনামা দেয়া হবে ৫৬৫২, সে বলবে, “আঃ ! তোমরা আমার আমলনামা পড়ে দেখো।”

৫৬৫২। দেখুন [ ১৭ : ৭১ ] আয়াত। যেখানে বলা হয়েছে, যারা পূণ্যাত্মা পৃথিবীতে যারা সৎকর্মশীল ছিলেন, তাদের আমলনামা তাদের ডান হাতে দেয়া হবে, শেষ বিচারের দিনে। সূরা [ ৫৬ : ২৭, ৩৮] আয়াতে এবং অন্যান্য আরও আয়াতে পূণ্যাত্মাদের সম্বোধন করা হয়েছে “ডান দিকের দল” হিসেবে।

 

আয়াতঃ 069.019

অতঃপর যার আমলনামা ডান হাতে দেয়া হবে, সে বলবেঃ নাও, তোমরাও আমলনামা পড়ে দেখ।
Then as for him who will be given his Record in his right hand will say: ”Take, read my Record!

فَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِيَمِينِهِ فَيَقُولُ هَاؤُمُ اقْرَؤُوا كِتَابِيهْ
Faamma man ootiya kitabahu biyameenihi fayaqoolu haomu iqraoo kitabiyah

YUSUFALI: Then he that will be given his Record in his right hand will say: “Ah here! Read ye my Record!
PICKTHAL: Then, as for him who is given his record in his right hand, he will say: Take, read my book!
SHAKIR: Then as for him who is given his book in his right hand, he will say: Lo! read my book:
KHALIFA: As for the one who receives his record with his right hand, he will say, “Come read my record.

১৮। সেদিন তোমাদের বিচারের জন্য উপস্থিত করা হবে, তোমাদের কোন কাজ যা তোমরা গোপন করেছ, তা গোপন থাকবে না।

১৯। সেদিন যার ডান হাতে আমলনামা দেয়া হবে ৫৬৫২, সে বলবে, “আঃ ! তোমরা আমার আমলনামা পড়ে দেখো।”

৫৬৫২। দেখুন [ ১৭ : ৭১ ] আয়াত। যেখানে বলা হয়েছে, যারা পূণ্যাত্মা পৃথিবীতে যারা সৎকর্মশীল ছিলেন, তাদের আমলনামা তাদের ডান হাতে দেয়া হবে, শেষ বিচারের দিনে। সূরা [ ৫৬ : ২৭, ৩৮] আয়াতে এবং অন্যান্য আরও আয়াতে পূণ্যাত্মাদের সম্বোধন করা হয়েছে “ডান দিকের দল” হিসেবে।

 

আয়াতঃ 069.020

আমি জানতাম যে, আমাকে হিসাবের সম্মুখীন হতে হবে।
”Surely, I did believe that I shall meet my Account!”

إِنِّي ظَنَنتُ أَنِّي مُلَاقٍ حِسَابِيهْ
Innee thanantu annee mulaqin hisabiyah

YUSUFALI: “I did really understand that my Account would (One Day) reach me!”
PICKTHAL: Surely I knew that I should have to meet my reckoning.
SHAKIR: Surely I knew that I shall meet my account.
KHALIFA: “I did believe that I was going to be held accountable.”

২০।” আমি সত্যিই জানতাম যে, [ একদিন ] আমার হিসাব আমাকে দেয়া হবে।” ৫৬৫৩

৫৬৫৩। পূণ্যাত্মারা সেদিন আনন্দে বিহ্বল হয়ে পড়বে। তাঁরা তাঁদের আজীবন লালিত বিশ্বাসের মর্যদা পূর্ণ সততার সাথে প্রতিপালিত হতে দেখবে। পৃথিবীর জীবনে তাঁর পরিপূর্ণ বিশ্বাস ছিলো যে, ভালো ও মন্দ উভয় কাজের জন্য মানুষকে শেষ বিচারের দিনে আল্লাহ্‌র নিকট জবাবদিহি করতে হবে। যদিও পৃথিবীর জীবনে তাঁর এই বিশ্বাস সুবিশাল বাঁধার সম্মুখীন হয়েছে, কিন্তু পরলোকের এই জীবনে সে তাঁর বিশ্বাসের পরিপূর্ণ প্রতিফলন দেখতে পাবে ও মর্যদা লাভ করবে।

 

আয়াতঃ 069.021

অতঃপর সে সুখী জীবন-যাপন করবে,
So he shall be in a life, well-pleasing.

فَهُوَ فِي عِيشَةٍ رَّاضِيَةٍ
Fahuwa fee AAeeshatin radiyatin

YUSUFALI: And he will be in a life of Bliss,
PICKTHAL: Then he will be in blissful state
SHAKIR: So he shall be in a life of pleasure,
KHALIFA: He has deserved a happy life.

২১। সে থাকবে প্রশান্তময় জীবনে,

২২। সুউচ্চ জান্নাতে,

২৩। যেখানে ফলরাশি [ ডাল থেকে ঝুলে থাকবে ] নীচুতে এবং নিকটে। ৫৬৫৪

৫৬৫৪। পৃথিবীর জীবনের সৎকর্মের প্রতিদান পরলোকের জীবনে সে লাভ করবে, যা এই আয়াতগুলিতে প্রতীকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এই আয়াতের প্রতীকটি হচ্ছে এরূপ : যেনো দ্রাক্ষাবন। দ্রাক্ষালতা সমূহ সতেজ, রসালো, সুস্বাদু ফল ভারে নত। সেগুলি এতটাই নাগালের মাঝে যে অনায়াসে তা সংগ্রহ করা যায় এবং প্রাণভরে তা উপভোগ করা যায়।

 

আয়াতঃ 069.022

সুউচ্চ জান্নাতে।
In a lofty Paradise,

فِي جَنَّةٍ عَالِيَةٍ
Fee jannatin AAaliyatin

YUSUFALI: In a Garden on high,
PICKTHAL: In a high garden
SHAKIR: In a lofty garden,
KHALIFA: In an exalted Paradise

২১। সে থাকবে প্রশান্তময় জীবনে,

২২। সুউচ্চ জান্নাতে,

২৩। যেখানে ফলরাশি [ ডাল থেকে ঝুলে থাকবে ] নীচুতে এবং নিকটে। ৫৬৫৪

৫৬৫৪। পৃথিবীর জীবনের সৎকর্মের প্রতিদান পরলোকের জীবনে সে লাভ করবে, যা এই আয়াতগুলিতে প্রতীকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এই আয়াতের প্রতীকটি হচ্ছে এরূপ : যেনো দ্রাক্ষাবন। দ্রাক্ষালতা সমূহ সতেজ, রসালো, সুস্বাদু ফল ভারে নত। সেগুলি এতটাই নাগালের মাঝে যে অনায়াসে তা সংগ্রহ করা যায় এবং প্রাণভরে তা উপভোগ করা যায়।

 

আয়াতঃ 069.023

তার ফলসমূহ অবনমিত থাকবে।
The fruits in bunches whereof will be low and near at hand.

قُطُوفُهَا دَانِيَةٌ
Qutoofuha daniyatun

YUSUFALI: The Fruits whereof (will hang in bunches) low and near.
PICKTHAL: Whereof the clusters are in easy reach.
SHAKIR: The fruits of which are near at hand:
KHALIFA: Its fruits are within reach.

২১। সে থাকবে প্রশান্তময় জীবনে,

২২। সুউচ্চ জান্নাতে,

২৩। যেখানে ফলরাশি [ ডাল থেকে ঝুলে থাকবে ] নীচুতে এবং নিকটে। ৫৬৫৪

৫৬৫৪। পৃথিবীর জীবনের সৎকর্মের প্রতিদান পরলোকের জীবনে সে লাভ করবে, যা এই আয়াতগুলিতে প্রতীকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। এই আয়াতের প্রতীকটি হচ্ছে এরূপ : যেনো দ্রাক্ষাবন। দ্রাক্ষালতা সমূহ সতেজ, রসালো, সুস্বাদু ফল ভারে নত। সেগুলি এতটাই নাগালের মাঝে যে অনায়াসে তা সংগ্রহ করা যায় এবং প্রাণভরে তা উপভোগ করা যায়।

 

আয়াতঃ 069.024

বিগত দিনে তোমরা যা প্রেরণ করেছিলে, তার প্রতিদানে তোমরা খাও এবং পান কর তৃপ্তি সহকারে।
Eat and drink at ease for that which you have sent on before you in days past!

كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيئًا بِمَا أَسْلَفْتُمْ فِي الْأَيَّامِ الْخَالِيَةِ
Kuloo waishraboo hanee-an bima aslaftum fee al-ayyami alkhaliyati

YUSUFALI: “Eat ye and drink ye, with full satisfaction; because of the (good) that ye sent before you, in the days that are gone!”
PICKTHAL: (And it will be said unto those therein): Eat and drink at ease for that which ye sent on before you in past days.
SHAKIR: Eat and drink pleasantly for what you did beforehand in the days gone by.
KHALIFA: Eat and drink happily in return for your works in days past.

২৪। পরিপূর্ণ তৃপ্তির সাথে তোমরা আহার কর এবং পান কর। কারণ হচ্ছে তোমাদের [সৎকাজ ], যা তোমরা পূর্বে প্রেরণ করেছ ৫৬৫৫, অতীত দিনে ৫৬৫৬

৫৬৫৫। দেখুন সূরা [ ২ : ১১০ ] আয়াত যেখানে বলা হয়েছে, ” তোমরা উত্তম কাজের যাহা কিছু নিজেদের জন্য পূর্বে প্রেরণ করবে আল্লাহ্‌র নিকট তা পাবে।” সেই সৎ কাজের বিনিময়ে আল্লাহ্‌ পরলোকে সুখ ও শান্তির সন্ধান দিবেন।

৫৬৫৬। রোজ কেয়ামতের মাধ্যমে পরলোকের যে জীবনের সূচনা ঘটবে তার উন্মেষ হবে এক সম্পূর্ণ নূতন পৃথিবীতে। সে পৃথিবী হবে আমাদের এই চেনা জানা পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ও নূতন। সেদিন যারা পূণ্যাত্মা তারা পৃথিবীর গ্লানিময় জীবন শেষে শান্তি ও তৃপ্তি খুঁজে পাবেন। দেখুন সূরা [ ১৪ : ৪৮ ] আয়াত ও টিকা ১৯২৫। সেদিনের ধারণা বা বর্ণনা বা অনুধাবন করা মানুষের সীমিত জ্ঞানের পক্ষে অসম্ভব। এই পৃথিবীর ধ্যান, ধারণা থেকে সেদিনের ধ্যান ধারণা হবে সম্পূর্ণ নূতন। যেখানে সময় ও কালের ধারণাও হবে বিলুপ্ত।

 

আয়াতঃ 069.025

যার আমলনামা তার বাম হাতে দেয়া হবে, সে বলবেঃ হায় আমায় যদি আমার আমল নামা না দেয়া হতো।
But as for him who will be given his Record in his left hand, will say: ”I wish that I had not been given my Record!

وَأَمَّا مَنْ أُوتِيَ كِتَابَهُ بِشِمَالِهِ فَيَقُولُ يَا لَيْتَنِي لَمْ أُوتَ كِتَابِيهْ
Waamma man ootiya kitabahu bishimalihi fayaqoolu ya laytanee lam oota kitabiyah

YUSUFALI: And he that will be given his Record in his left hand, will say: “Ah! Would that my Record had not been given to me!
PICKTHAL: But as for him who is given his record in his left hand, he will say: Oh, would that I had not been given my book
SHAKIR: And as for him who is given his book in his left hand he shall say: O would that my book had never been given me:
KHALIFA: As for him who is given his record in his left hand, he will say, “Oh, I wish I never received my record

২৫। এবং যার বাম হস্তে আমলনামা দেয়া হবে, ৫৬৫৭, সে বলবে, “হায় ! আমাকে যদি দেয়া না হতো আমার আমলনামা ! ”

৫৬৫৭। ডান হাতে যাদের আমলনামা দেয়া হবে, তাদের বিপরীত মেরুতে যাদের অবস্থান তাদের বাম হাতে আমলনামা দেয়া হবে। দেখুন সূরা [ ৬৯ : ১৯ ] আয়াত ও টিকা ৫৬৫২। মানুষের সুখ ও শান্তির উৎস হচ্ছে তাঁর আত্মা। সুখের স্মৃতি আত্মাকে করে বিমোহিত, দুঃখের স্মৃতি করে অশ্রুভারাক্রান্ত ও দুঃসহ। আত্মার এই ক্ষমতাকেই এই আয়াতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে। পূণ্যাত্মারা তাদের পার্থিব জীবনে কৃত সৎকর্মসমূহের স্মৃতি মন্থনে পরিপূর্ণ ভাবে হবে তৃপ্ত, তাদের হৃদয় সুখ স্মৃতিতে উদ্বেলিত হবে। তাদের জন্য তাদের স্মৃতি হবে এক অমূল্য অক্ষয় সম্পদ। অপর পক্ষে, পৃথিবীতে যারা অন্যায়কারী হাশরের ময়দানে, নূতন পৃথিবীতে তাদের নিকট পূর্বস্মৃতি হবে দুঃস্বপ্নের ন্যায়। তাদের স্মৃতি হবে তাদের জন্য শাস্তি স্বরূপ।

 

আয়াতঃ 069.026

আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব!
”And that I had never known, how my Account is?

وَلَمْ أَدْرِ مَا حِسَابِيهْ
Walam adri ma hisabiyah

YUSUFALI: “And that I had never realised how my account (stood)!
PICKTHAL: And knew not what my reckoning!
SHAKIR: And I had not known what my account was:
KHALIFA: “I wish I never knew my account.

২৬। ” এবং আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব !

২৭। ” হায় ! মৃত্যুই যদি আমার শেষ পরিণতি হতো ! ৫৬৫৮

৫৬৫৮। সেদিন পাপীরা অনুভবে সক্ষম হবে যে মৃত্যুই জীবনের শেষ নয়। মৃত্যুর মাধ্যমে মানুষ নশ্বর দেহ ত্যাগ করে মৃত্যুহীন অনন্ত পৃথিবীতে প্রবেশ অধিকার লাভ করে। যে নূতন পৃথিবীর অস্তিত্ব এই পৃথিবীতে কল্পনা করাও দুঃসাধ্য। পাপীদের ঐকান্তিক কামনা হবে, অনন্ত পরলোকের জীবন যেনো তাদের যাপন করতে না হয়। পার্থিব জীবনের মৃত্যুই যেনো তাদের সব কিছুকে শেষ করে দেয়।

 

আয়াতঃ 069.027

হায়, আমার মৃত্যুই যদি শেষ হত।
”I wish, would that it had been my end (death)!

يَا لَيْتَهَا كَانَتِ الْقَاضِيَةَ
Ya laytaha kanati alqadiyatu

YUSUFALI: “Ah! Would that (Death) had made an end of me!
PICKTHAL: Oh, would that it had been death!
SHAKIR: O would that it had made an end (of me):
KHALIFA: “I wish my death was eternal

২৬। ” এবং আমি যদি না জানতাম আমার হিসাব !

২৭। ” হায় ! মৃত্যুই যদি আমার শেষ পরিণতি হতো ! ৫৬৫৮

৫৬৫৮। সেদিন পাপীরা অনুভবে সক্ষম হবে যে মৃত্যুই জীবনের শেষ নয়। মৃত্যুর মাধ্যমে মানুষ নশ্বর দেহ ত্যাগ করে মৃত্যুহীন অনন্ত পৃথিবীতে প্রবেশ অধিকার লাভ করে। যে নূতন পৃথিবীর অস্তিত্ব এই পৃথিবীতে কল্পনা করাও দুঃসাধ্য। পাপীদের ঐকান্তিক কামনা হবে, অনন্ত পরলোকের জীবন যেনো তাদের যাপন করতে না হয়। পার্থিব জীবনের মৃত্যুই যেনো তাদের সব কিছুকে শেষ করে দেয়।

 

আয়াতঃ 069.028

আমার ধন-সম্পদ আমার কোন উপকারে আসল না।
”My wealth has not availed me,

مَا أَغْنَى عَنِّي مَالِيهْ
Ma aghna AAannee maliyah

YUSUFALI: “Of no profit to me has been my wealth!
PICKTHAL: My wealth hath not availed me,
SHAKIR: My wealth has availed me nothing:
KHALIFA: “My money cannot help me.

২৮। ” আমার ধন-সম্পদ আমার কোন কাজেই এলো না !

২৯। ” আমার ক্ষমতা আমাকে ধ্বংস করেছে ! ” ৫৬৫৯

৫৬৫৯। এই আয়াতগুলির মাধ্যমে মৃত্যু পরবর্তী আত্মার অবস্থানকে তুলে ধরা হয়েছে। সেদিন নিজের ভাবনা চিন্তা বা ব্যক্তিত্বের উপরে নিজের কোনও অধিকার বা নিয়ন্ত্রণ থাকবে না, যে অবস্থা কল্পনা করাও এ পৃথিবীতে সম্ভব নয়। পৃথিবীর জীবনের পাপ ও অন্যায় তাদের মাঝে যে প্রচন্ড দুঃশ্চিন্তা এবং যন্ত্রণার জন্ম দেবে তার উপরে তাঁর কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। ব্যক্তিসত্ত্বা প্রাণপণে চেষ্টা করবে নূতন পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণে আনতে, কিন্তু তাদের সে চেষ্টা সফল হবে না। প্রচন্ড অনুশোচনা, গ্লানি, পাপবোধ, সমস্ত অন্তরাত্মাকে শঙ্কা, ভয় ও দুঃশ্চিন্তাতে পরিপূর্ণ করে তুলবে। এই বোধের তীব্রতা পৃথিবীতে কল্পনা করাও অসম্ভব।

 

আয়াতঃ 069.029

আমার ক্ষমতাও বরবাদ হয়ে গেল।
”My power and arguments (to defend myself) have gone from me!”

هَلَكَ عَنِّي سُلْطَانِيهْ
Halaka AAannee sultaniyah

YUSUFALI: “My power has perished from me!”…
PICKTHAL: My power hath gone from me.
SHAKIR: My authority is gone away from me.
KHALIFA: “All my power is gone.”

২৮। ” আমার ধন-সম্পদ আমার কোন কাজেই এলো না !

২৯। ” আমার ক্ষমতা আমাকে ধ্বংস করেছে ! ” ৫৬৫৯

৫৬৫৯। এই আয়াতগুলির মাধ্যমে মৃত্যু পরবর্তী আত্মার অবস্থানকে তুলে ধরা হয়েছে। সেদিন নিজের ভাবনা চিন্তা বা ব্যক্তিত্বের উপরে নিজের কোনও অধিকার বা নিয়ন্ত্রণ থাকবে না, যে অবস্থা কল্পনা করাও এ পৃথিবীতে সম্ভব নয়। পৃথিবীর জীবনের পাপ ও অন্যায় তাদের মাঝে যে প্রচন্ড দুঃশ্চিন্তা এবং যন্ত্রণার জন্ম দেবে তার উপরে তাঁর কোনও নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। ব্যক্তিসত্ত্বা প্রাণপণে চেষ্টা করবে নূতন পরিবেশকে নিয়ন্ত্রণে আনতে, কিন্তু তাদের সে চেষ্টা সফল হবে না। প্রচন্ড অনুশোচনা, গ্লানি, পাপবোধ, সমস্ত অন্তরাত্মাকে শঙ্কা, ভয় ও দুঃশ্চিন্তাতে পরিপূর্ণ করে তুলবে। এই বোধের তীব্রতা পৃথিবীতে কল্পনা করাও অসম্ভব।

 

আয়াতঃ 069.030

ফেরেশতাদেরকে বলা হবেঃ ধর একে গলায় বেড়ি পড়িয়ে দাও,
(It will be said): ”Seize him and fetter him,

خُذُوهُ فَغُلُّوهُ
Khuthoohu faghulloohu

YUSUFALI: (The stern command will say): “Seize ye him, and bind ye him,
PICKTHAL: (It will be said): Take him and fetter him
SHAKIR: Lay hold on him, then put a chain on him,
KHALIFA: Take him and shackle him.

৩০। [ কঠোর আদেশ দেয়া হবে ] :, ” তোমরা তাকে ধর, উহার গলদেশে বেরী পরাও ৫৬৬০;

৫৬৬০। আক্ষরিক ভাবে ‘বেড়ী ‘ শব্দটি হচ্ছে শাস্তি প্রাপ্ত কয়েদীদের গলায় যে লোহার বেড়ী বেষ্টন করে শাস্তি দানকরা হয় তা বুঝানো হয়। ‘বেড়ী’ শব্দটির রূপক অর্থে এর ব্যাখ্যা হতে পারে : ” তাঁর হাতকে তার গলদেশে বেড়ীর ন্যায় বেষ্টন করে দাও, যেনো সে স্মরণ করতে সক্ষম হয় যে, এই হাত যখন পৃথিবীর জীবনে মুক্ত ছিলো ‘দান’ করার জন্য, তখন সে দান না করে হাতকে মুষ্ঠিবদ্ধ করে রাখতো।” দেখুন অনুরূপ বর্ণনা আছে সূরা [ ১৭: ২৯ ] আয়াতে। সে অর্থে কার্পণ্যকেই বেড়ী শব্দটির ব্যাখ্যা হিসেবে ধরা যায়। এর অন্য অর্থ ক্ষমতা বা শক্তি হরণ করা।

 

আয়াতঃ 069.031

অতঃপর নিক্ষেপ কর জাহান্নামে।
Then throw him in the blazing Fire.

ثُمَّ الْجَحِيمَ صَلُّوهُ
Thumma aljaheema salloohu

YUSUFALI: “And burn ye him in the Blazing Fire.
PICKTHAL: And then expose him to hell-fire
SHAKIR: Then cast him into the burning fire,
KHALIFA: Burn him in Hell.

৩১। ” এবং তাকে জ্বলন্ত আগুনে পোড়াও।

৩২। ” উপরন্তু তাকে শৃঙ্খলিত কর সত্তর কিউবিট দীর্ঘ শৃঙ্খলে। ৫৬৬১

৫৬৬১। পাপের পরিণতি সমূহ রূপক বর্ণনার মাধ্যমে জ্বলন্ত ভাবে তুলে ধরা হয়েছে, ধাপে ধাপে।

১) “ধর” – পাপীদের শাস্তির এটা হবে প্রথম ধাপ। “ধর” শব্দটি দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, পাপীদের আধ্যাত্মিক স্বাধীনতাকে হরণ করা হবে, ফলে তারা প্রচন্ড আবেগ, কুসংস্কার, ঘৃণা, বিদ্বেষ, হিংসা অর্থাৎ সকল রীপুর দাসে পরিণত হবে। যারা রীপুর দাসে পরিণত হয় তারা আত্মার স্বাধীনতাকে হারায়।

২) “বেড়ী পরাও ” – অর্থাৎ পাপীদের হাতকে গলদেশে বেড়ির ন্যায় আবদ্ধ করা হবে যেনো সে তার সকল ক্ষমতা ও ভালো কাজ করার শক্তি হারায়। হাত এখানে সকল ক্ষমতার প্রতীক।

৩) “নিক্ষেপ কর জাহান্নামে ” – আত্মবিধ্বংসী আগুনে তার সর্বসত্ত্বা জ্বলতে থাকবে। যে আগুনের লেলিহান শিখার সে উপযুক্ত।

৪) ” পুণরায় তাকে শৃঙ্খলিত কর ” – অর্থাৎ পাপের পরিণতি হবে বহুবিধ। তা শাখা প্রশাখা বিস্তার করবে। যার রূপক বর্ণনা হচ্ছে ” সত্তর হস্ত এক দীর্ঘ শৃঙ্খল”, যে শৃঙ্খল তাকে আষ্টে-পৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে, তাকে ক্রীতদাসে পরিণত করে। এর উপমা হচ্ছে মাকড়সার জালে ধৃত পতঙ্গের ন্যায় – যার মৃত্যু অবধারিত। যে পাপের জাল সে বুনেছে সে জালে সে নিজেই ধরা পড়ে। ” সত্তর হাত” শব্দটি দ্বারা সুদীর্ঘ বা বহুসংখ্যক বুঝানো হয়েছে, যেরূপ ব্যবহার করা হয়েছে সূরা [৯ : ৮০ ] আয়াতে।

 

আয়াতঃ 069.032

অতঃপর তাকে শৃঙ্খলিত কর সত্তর গজ দীর্ঘ এক শিকলে।
”Then fasten him with a chain whereof the length is seventy cubits!”

ثُمَّ فِي سِلْسِلَةٍ ذَرْعُهَا سَبْعُونَ ذِرَاعًا فَاسْلُكُوهُ
Thumma fee silsilatin tharAAuha sabAAoona thiraAAan faoslukoohu

YUSUFALI: “Further, make him march in a chain, whereof the length is seventy cubits!
PICKTHAL: And then insert him in a chain whereof the length is seventy cubits.
SHAKIR: Then thrust him into a chain the length of which is seventy cubits.
KHALIFA: In a chain that is seventy arms long, tie him up.

৩১। ” এবং তাকে জ্বলন্ত আগুনে পোড়াও।

৩২। ” উপরন্তু তাকে শৃঙ্খলিত কর সত্তর কিউবিট দীর্ঘ শৃঙ্খলে। ৫৬৬১

৫৬৬১। পাপের পরিণতি সমূহ রূপক বর্ণনার মাধ্যমে জ্বলন্ত ভাবে তুলে ধরা হয়েছে, ধাপে ধাপে।

১) “ধর” – পাপীদের শাস্তির এটা হবে প্রথম ধাপ। “ধর” শব্দটি দ্বারা বুঝানো হয়েছে যে, পাপীদের আধ্যাত্মিক স্বাধীনতাকে হরণ করা হবে, ফলে তারা প্রচন্ড আবেগ, কুসংস্কার, ঘৃণা, বিদ্বেষ, হিংসা অর্থাৎ সকল রীপুর দাসে পরিণত হবে। যারা রীপুর দাসে পরিণত হয় তারা আত্মার স্বাধীনতাকে হারায়।

২) “বেড়ী পরাও ” – অর্থাৎ পাপীদের হাতকে গলদেশে বেড়ির ন্যায় আবদ্ধ করা হবে যেনো সে তার সকল ক্ষমতা ও ভালো কাজ করার শক্তি হারায়। হাত এখানে সকল ক্ষমতার প্রতীক।

৩) “নিক্ষেপ কর জাহান্নামে ” – আত্মবিধ্বংসী আগুনে তার সর্বসত্ত্বা জ্বলতে থাকবে। যে আগুনের লেলিহান শিখার সে উপযুক্ত।

৪) ” পুণরায় তাকে শৃঙ্খলিত কর ” – অর্থাৎ পাপের পরিণতি হবে বহুবিধ। তা শাখা প্রশাখা বিস্তার করবে। যার রূপক বর্ণনা হচ্ছে ” সত্তর হস্ত এক দীর্ঘ শৃঙ্খল”, যে শৃঙ্খল তাকে আষ্টে-পৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে, তাকে ক্রীতদাসে পরিণত করে। এর উপমা হচ্ছে মাকড়সার জালে ধৃত পতঙ্গের ন্যায় – যার মৃত্যু অবধারিত। যে পাপের জাল সে বুনেছে সে জালে সে নিজেই ধরা পড়ে। ” সত্তর হাত” শব্দটি দ্বারা সুদীর্ঘ বা বহুসংখ্যক বুঝানো হয়েছে, যেরূপ ব্যবহার করা হয়েছে সূরা [৯ : ৮০ ] আয়াতে।

 

আয়াতঃ 069.033

নিশ্চয় সে মহান আল্লাহতে বিশ্বাসী ছিল না।
Verily, He used not to believe in Allâh, the Most Great,

إِنَّهُ كَانَ لَا يُؤْمِنُ بِاللَّهِ الْعَظِيمِ
Innahu kana la yu/minu biAllahi alAAatheemi

YUSUFALI: “This was he that would not believe in Allah Most High.
PICKTHAL: Lo! He used not to believe in Allah the Tremendous,
SHAKIR: Surely he did not believe in Allah, the Great,
KHALIFA: For he did not believe in GOD, Most Great.

৩৩। এই-ই সে, যে মহান আল্লাহ্‌র উপরে বিশ্বাস রাখতো না ৫৬৬২,

৫৬৬২। পাপের লৌহ বেষ্টনী পাপীকে অষ্টে পৃষ্ঠে বেঁধে ফেলবে, কারণ সে আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বাসী ছিলো না। পাপীরা রীপুর দাসে পরিণত হয়ে শুধু পশু প্রবৃত্তি চরিতার্থে নিজেকে নিয়োজিত রাখে। যার ফলে তারা হয়ে ওঠে অত্যাচারী জালিম মানুষের প্রতি সহানুভূতিহীন। এরা ভুলে যায় আল্লাহকে, যিনি সকল কল্যাণের উৎস।

 

আয়াতঃ 069.034

এবং মিসকীনকে আহার্য দিতে উৎসাহিত করত না।
And urged not on the feeding of Al­Miskîn (the poor),

وَلَا يَحُضُّ عَلَى طَعَامِ الْمِسْكِينِ
Wala yahuddu AAala taAAami almiskeeni

YUSUFALI: “And would not encourage the feeding of the indigent!
PICKTHAL: And urged not on the feeding of the wretched.
SHAKIR: Nor did he urge the feeding of the poor.
KHALIFA: Nor did he advocate the feeding of the poor.

৩৪। ” এবং অভাবগ্রস্থকে অন্নদানে উৎসাহিত করতো না ৫৬৬৩।

৫৬৬৩। দেখুন [ ১০৭ : ৩ ] আয়াত ও [ ৮৯ : ১৮ ] আয়াত। আল্লাহ্‌র প্রতি বিদ্রোহ তাদের আধ্যাত্মিক জগতে বিপর্যয় আনায়ন করে। ফলে ধীরে ধীরে বিদ্রোহীদের চরিত্রের গুণাবলী ধ্বংস হয়ে যায়। এর মধ্যে অন্যতম হবে যে, সে ধীরে ধীরে মানুষের প্রতি সহানুভূতিহীন হয়ে পড়বে এবং হৃদয়ের কোমলতা হ্রাস পেয়ে কঠোর প্রকৃতির মানুষে পরিবর্তিত হবে। ‘অন্নদান’ শব্দটি অভাবগ্রস্থকে সাহায্যের প্রতীক। শিক্ষার অভাব, সম্পদের অভাব, সাহায্যকারীর অভাব, সহানুভূতির অভাব, চিকিৎসার অভাব ইত্যাদি বিভিন্ন অভাববোধ আমাদের সামাজিক জীবনকে ঘিরে থাকে। এদের সাহায্য করার মাধ্যমেই স্রষ্টার সেবা করা হয়। খোদাদ্রোহীরা শুধু নিজেরাই অভাবগ্রস্থদের সাহায্য করা থেকে বিরত থাকে তাই -ই নয়, তারা অন্যকেও সাহায্য করতে বাঁধা দান করে থাকে। এ ভাবেই তারা ” অভাবগ্রস্থকে অন্নদানে উৎসাহিত করতো না। ” সুতারাং পরলোকের জীবনে তাদের জন্যও কোন সুসংবাদ থাকবে না।

 

আয়াতঃ  069.035

অতএব, আজকের দিন এখানে তার কোন সুহূদ নাই।
So no friend has he here this Day,

فَلَيْسَ لَهُ الْيَوْمَ هَاهُنَا حَمِيمٌ
Falaysa lahu alyawma hahuna hameemun

YUSUFALI: “So no friend hath he here this Day.
PICKTHAL: Therefor hath he no lover here this day,
SHAKIR: Therefore he has not here today a true friend,
KHALIFA: Consequently, he has no friend here.

৩৫। ” সুতারাং আজকের দিনে তার কোন বন্ধু নাই।

৩৬। ” ক্ষত নিঃসৃত পূঁজ ব্যতীত অন্য কোন খাদ্য থাকবে না ৫৬৬৪

৩৭। ” পাপীরা ব্যতীত তা কেউ আহার করবে না।”

৫৬৬৪। যারা খোদাদ্রোহীতার পাপে আক্রান্ত তাদের নিকট পৃথিবীর জীবনই একমাত্র জীবন। ফলে এই জীবনকে ভোগের আশায় তারা অন্যের অধিকারকে ছিনিয়ে নিতে দ্বিধা বোধ করে না। পৃথিবীতে অন্যায়, অবিচার ও নিষ্ঠুরতা তাদের জীবন সঙ্গী ছিলো। সমাজ জীবনে তারা তাদের কর্ম দ্বারা শুধু ক্ষতই সৃষ্টি করে থাকে। জীবনকে করে তোলে কলুষিত। সুতারাং পরলোকের জীবনে তাদের জন্য সেই ক্ষতের দূষিত স্রাব অর্থাৎ কর্মফল ব্যতীত অন্য কিছু প্রাপ্য হবে না।

 

আয়াতঃ 069.036

এবং কোন খাদ্য নাই, ক্ষত-নিঃসৃত পুঁজ ব্যতীত।
Nor any food except filth from the washing of wounds,

وَلَا طَعَامٌ إِلَّا مِنْ غِسْلِينٍ
Wala taAAamun illa min ghisleenin

YUSUFALI: “Nor hath he any food except the corruption from the washing of wounds,
PICKTHAL: Nor any food save filth
SHAKIR: Nor any food except refuse,
KHALIFA: Nor any food, except the bitter variety.

৩৫। ” সুতারাং আজকের দিনে তার কোন বন্ধু নাই।

৩৬। ” ক্ষত নিঃসৃত পূঁজ ব্যতীত অন্য কোন খাদ্য থাকবে না ৫৬৬৪

৩৭। ” পাপীরা ব্যতীত তা কেউ আহার করবে না।”

৫৬৬৪। যারা খোদাদ্রোহীতার পাপে আক্রান্ত তাদের নিকট পৃথিবীর জীবনই একমাত্র জীবন। ফলে এই জীবনকে ভোগের আশায় তারা অন্যের অধিকারকে ছিনিয়ে নিতে দ্বিধা বোধ করে না। পৃথিবীতে অন্যায়, অবিচার ও নিষ্ঠুরতা তাদের জীবন সঙ্গী ছিলো। সমাজ জীবনে তারা তাদের কর্ম দ্বারা শুধু ক্ষতই সৃষ্টি করে থাকে। জীবনকে করে তোলে কলুষিত। সুতারাং পরলোকের জীবনে তাদের জন্য সেই ক্ষতের দূষিত স্রাব অর্থাৎ কর্মফল ব্যতীত অন্য কিছু প্রাপ্য হবে না।

 

আয়াতঃ 069.037

গোনাহগার ব্যতীত কেউ এটা খাবে না।
None will eat except the Khâti’ûn (sinners, disbelievers, polytheists, etc.).

لَا يَأْكُلُهُ إِلَّا الْخَاطِؤُونَ
La ya/kuluhu illa alkhati-oona

YUSUFALI: “Which none do eat but those in sin.”
PICKTHAL: Which none but sinners eat.
SHAKIR: Which none but the wrongdoers eat.
KHALIFA: Food for the sinners.

৩৫। ” সুতারাং আজকের দিনে তার কোন বন্ধু নাই।

৩৬। ” ক্ষত নিঃসৃত পূঁজ ব্যতীত অন্য কোন খাদ্য থাকবে না ৫৬৬৪

৩৭। ” পাপীরা ব্যতীত তা কেউ আহার করবে না।”

৫৬৬৪। যারা খোদাদ্রোহীতার পাপে আক্রান্ত তাদের নিকট পৃথিবীর জীবনই একমাত্র জীবন। ফলে এই জীবনকে ভোগের আশায় তারা অন্যের অধিকারকে ছিনিয়ে নিতে দ্বিধা বোধ করে না। পৃথিবীতে অন্যায়, অবিচার ও নিষ্ঠুরতা তাদের জীবন সঙ্গী ছিলো। সমাজ জীবনে তারা তাদের কর্ম দ্বারা শুধু ক্ষতই সৃষ্টি করে থাকে। জীবনকে করে তোলে কলুষিত। সুতারাং পরলোকের জীবনে তাদের জন্য সেই ক্ষতের দূষিত স্রাব অর্থাৎ কর্মফল ব্যতীত অন্য কিছু প্রাপ্য হবে না।

 

আয়াতঃ 069.038

তোমরা যা দেখ, আমি তার শপথ করছি।
So I swear by whatsoever you see,

فَلَا أُقْسِمُ بِمَا تُبْصِرُونَ
Fala oqsimu bima tubsiroona

YUSUFALI: So I do call to witness what ye see,
PICKTHAL: But nay! I swear by all that ye see
SHAKIR: But nay! I swear by that which you see,
KHALIFA: I swear by what you see

রুকু – ২

৩৮। অতএব, আমি সেই বস্তুর শপথ করছি যা তোমরা দেখতে পাও ৫৬৬৫,

৩৯। এবং যা তোমরা দেখতে পাও না,

৫৬৬৫। অনুরূপ শপথ আছে [ ৫৬ : ৭৫ ] ; [ ৭০ : ৪০ ] ; [ ৯০ : ১ ] এবং আরও অন্যান্য আয়াতে। আল্লাহ্‌র বাণী অপরিবর্তনীয় এবং শ্বাসত সত্য। রাসুলের (সা) মাধ্যমে যে সত্যকে আল্লাহ্‌ পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন সে সম্বন্ধে কেউ যদি সন্দেহ প্রকাশ করে এবং বলে যে তা কাল্পনিক কাহিনী ; অথবা কবির কল্পনা বা গণকের মিথ্যা ভবিষ্যতবাণী তা হলে কি হবে ? আমাদের আহ্বান করা হয়েছে সেক্ষেত্রে আল্লাহ্‌র বাণীকে পরীক্ষা করে নিতে। পরীক্ষা করতে হবে সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে। আল্লাহ্‌র বাণী চিরন্তন সত্য। মিথ্যা তাকে সাময়িক ভাবে আচ্ছাদিত করতে পারে, কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সত্য একদিন ভাস্বর হবেই,এবং মিথ্যা ধ্বংস প্রাপ্ত হবে। এই সত্য দৃশ্যমান পৃথিবীর জন্য যেমন সত্য অদৃশ্য পৃথিবীর জন্য, বা আধ্যাত্মিক জগতের জন্য সমভাবে সত্য। পার্থিব জীবন ও আধ্যাত্মিক জীবন এই দুই জীবনের প্রেক্ষাপটে আল্লাহ্‌র বাণী বা শ্বাসত সত্য পরীক্ষা করে নিতে বলা হয়েছে।

 

আয়াতঃ 069.039

এবং যা তোমরা দেখ না, তার-
And by whatsoever you see not,

وَمَا لَا تُبْصِرُونَ
Wama la tubsiroona

YUSUFALI: And what ye see not,
PICKTHAL: And all that ye see not
SHAKIR: And that which you do not see.
KHALIFA: And what you do not see.

রুকু – ২

৩৮। অতএব, আমি সেই বস্তুর শপথ করছি যা তোমরা দেখতে পাও ৫৬৬৫,

৩৯। এবং যা তোমরা দেখতে পাও না,

৫৬৬৫। অনুরূপ শপথ আছে [ ৫৬ : ৭৫ ] ; [ ৭০ : ৪০ ] ; [ ৯০ : ১ ] এবং আরও অন্যান্য আয়াতে। আল্লাহ্‌র বাণী অপরিবর্তনীয় এবং শ্বাসত সত্য। রাসুলের (সা) মাধ্যমে যে সত্যকে আল্লাহ্‌ পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন সে সম্বন্ধে কেউ যদি সন্দেহ প্রকাশ করে এবং বলে যে তা কাল্পনিক কাহিনী ; অথবা কবির কল্পনা বা গণকের মিথ্যা ভবিষ্যতবাণী তা হলে কি হবে ? আমাদের আহ্বান করা হয়েছে সেক্ষেত্রে আল্লাহ্‌র বাণীকে পরীক্ষা করে নিতে। পরীক্ষা করতে হবে সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে। আল্লাহ্‌র বাণী চিরন্তন সত্য। মিথ্যা তাকে সাময়িক ভাবে আচ্ছাদিত করতে পারে, কিন্তু সময়ের পরিক্রমায় সত্য একদিন ভাস্বর হবেই,এবং মিথ্যা ধ্বংস প্রাপ্ত হবে। এই সত্য দৃশ্যমান পৃথিবীর জন্য যেমন সত্য অদৃশ্য পৃথিবীর জন্য, বা আধ্যাত্মিক জগতের জন্য সমভাবে সত্য। পার্থিব জীবন ও আধ্যাত্মিক জীবন এই দুই জীবনের প্রেক্ষাপটে আল্লাহ্‌র বাণী বা শ্বাসত সত্য পরীক্ষা করে নিতে বলা হয়েছে।

 

আয়াতঃ 069.040

নিশ্চয়ই এই কোরআন একজন সম্মানিত রসূলের আনীত।
That this is verily the word of an honoured Messenger [i.e. Jibrael (Gabriel) or Muhammad SAW which he has brought from Allâh].

إِنَّهُ لَقَوْلُ رَسُولٍ كَرِيمٍ
Innahu laqawlu rasoolin kareemin

YUSUFALI: That this is verily the word of an honoured messenger;
PICKTHAL: That it is indeed the speech of an illustrious messenger.
SHAKIR: Most surely, it is the Word brought by an honored Messenger,
KHALIFA: This is the utterance of an honorable messenger.

৪০। নিশ্চয়ই,এই [ কুর-আন ] একজন সম্মানীয় রসুলের [ বাহিত ] বার্তা ৫৬৬৬

৫৬৬৬। “সম্মানীত রাসুল ” – অর্থাৎ আল্লাহ্‌র প্রেরিত রাসুল (সা), যার পূত, পবিত্র জীবন মানুষের শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, আকর্ষণ করে। যিনি প্রত্যাদেশের সত্যের মাধ্যমে পৃথিবীর সম্মুখে প্রকৃত সত্যের রূপরেখা উদ্ঘাটন করে সম্মানীত হয়েছেন।

 

আয়াতঃ 069.041

এবং এটা কোন কবির কালাম নয়; তোমরা কমই বিশ্বাস কর।
It is not the word of a poet, little is that you believe!

وَمَا هُوَ بِقَوْلِ شَاعِرٍ قَلِيلًا مَا تُؤْمِنُونَ
Wama huwa biqawli shaAAirin qaleelan ma tu/minoona

YUSUFALI: It is not the word of a poet: little it is ye believe!
PICKTHAL: It is not poet’s speech – little is it that ye believe!
SHAKIR: And it is not the word of a poet; little is it that you believe;
KHALIFA: Not the utterance of a poet; rarely do you believe.

৪১। এটা কোন কবির রচনা নয়; তোমরা অল্পই বিশ্বাস কর। ৫৬৬৭

৫৬৬৭। কবি তাঁর কাব্য রচনা করে থাকে কল্পনার সাহায্যে। তাঁর ভাষার সৌন্দর্য আমাদের যতই মুগ্ধ করুক না কেন, কবির সৃষ্টি কর্ম অলীক কল্প কাহিনীর উপরে প্রতিষ্ঠিত। কবি কখনও সত্যদ্রষ্টা হতে পারে না, কবিতা সব সময়ে মিথ্যা ও কল্পনার উপরে প্রতিষ্ঠিত। এখানেই কবিতা ও কোরাণের আয়াতের মধ্যে পার্থক্য। যদিও কোরাণের আয়াতগুলি কবিতার ছন্দে সুললিত ভাষায় প্রকাশিত। কিন্তু কোরাণের বর্ণনাতে প্রতিটি পংক্তিতে শ্বাসত সত্যকে প্রকাশিত করা হয়েছে যে সত্য অপরিবর্তনীয় ও যুগ কাল অতিক্রান্ত।

 

আয়াতঃ 069.042

এবং এটা কোন অতীন্দ্রিয়বাদীর কথা নয়; তোমরা কমই অনুধাবন কর।
Nor is it the word of a soothsayer (or a foreteller), little is that you remember!

وَلَا بِقَوْلِ كَاهِنٍ قَلِيلًا مَا تَذَكَّرُونَ
Wala biqawli kahinin qaleelan ma tathakkaroona

YUSUFALI: Nor is it the word of a soothsayer: little admonition it is ye receive.
PICKTHAL: Nor diviner’s speech – little is it that ye remember!
SHAKIR: Nor the word of a soothsayer; little is it that you mind.
KHALIFA: Nor the utterance of a soothsayer; rarely do you take heed.

৪২। এটা কোন গণকের কথা নয় ; তোমরা খুব কমই সাবধান বাণী গ্রহণ কর। ৫৬৬৮

৫৬৬৮। গণকেরা ভবিষ্যত বাণী করে থাকে। কোরাণের বাণীও আমাদের ভবিষ্যত জীবনের সন্ধান দান করে। তবে দুয়ের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে গণকের ভবিষ্যত বাণী আধ্যাত্মিক জগতের অন্ধকারকে দূর করতে অক্ষম। অধিকাংশ ক্ষেত্রে গণকের ভবিষ্যত বাণী হচ্ছে প্রতারণা। অপর পক্ষে কোরাণের বাণীর উপদেশ হচ্ছে চিরন্তন সত্য যা মানুষকে ভবিষ্যত জীবন বা পরলোকের জীবন সম্বন্ধে সাবধান করে, ইহলোকে শান্তিময় জীবনের সন্ধান দান করে এবং আধ্যাত্মিক জীবনকে সমৃদ্ধ করে।

 

আয়াতঃ 069.043

এটা বিশ্বপালনকর্তার কাছ থেকে অবতীর্ণ।
This is the Revelation sent down from the Lord of the ’Alamin (mankind, jinns and all that exists).

تَنزِيلٌ مِّن رَّبِّ الْعَالَمِينَ
Tanzeelun min rabbi alAAalameena

YUSUFALI: (This is) a Message sent down from the Lord of the Worlds.
PICKTHAL: It is a revelation from the Lord of the Worlds.
SHAKIR: It is a revelation from the Lord of the worlds.
KHALIFA: A revelation from the Lord of the universe.

৪৩। [ এটা এক ] উপদেশ, যা প্রেরিত হয়েছে জগতসমূহের প্রভুর নিকট থেকে।

৪৪। এবং রসুল যদি আমার নামে কোন কথার উদ্ভাবন করে বলতো,

৪৫। আমি অবশ্যই তার দক্ষিণ হাত ধরে ফেলতাম, ৫৬৬৯

৫৬৬৯। ‘ দক্ষিণ হস্ত ‘ বাক্যটি এখানে ব্যবহৃত হয়েছে প্রতীক অর্থে। দক্ষিণ হস্ত হচ্ছে ক্ষমতা, প্রতিপত্তি ও কর্মক্ষমতার প্রতীক। যদি কারও ডান হাত বেঁধে রাখা যায় বা অকর্মণ্য করে দেয়া হয়, তবে তার কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। সে তখন তার স্বাধীন ইচ্ছানুযায়ী কাজ করতে অক্ষম হয়। ঠিক সেরূপে যদি কোন প্রতারক নিজেকে রাসুল রূপে প্রচার করে এবং দাবী করে যে, সে আল্লাহ্‌র বাণীর ধারক বাহক ও রক্ষক, তবে সে বেশীদূর অগ্রসর হতে পারবে না। অপর পক্ষে, পৃথিবীতে আল্লাহ্‌ যত নবী রাসুল প্রেরণ করেছেন, তাঁদের জীবনী পর্যালোচনা করলে দেখতে পাই, তাঁরা যত নির্যাতিত ও অত্যাচারিত হয়েছেন, তত তাদের ক্ষমতা ও শক্তি খর্ব হওয়ার পরিবর্তে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের নবী হযরত মুহম্মদ (সা) এর জীবনী এর প্রকৃষ্ঠ উদাহরণ। তাঁর সত্যের প্রতি আন্তরিকতা, বিশ্বস্ততা, এবং মানুষের জন্য ভালোবাসা, ধীরে ধীরে তাঁকে সত্য প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করে। রাসুলের (সা ) সমগ্র জীবনই হচ্ছে সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের ইতিহাস।

 

আয়াতঃ 069.044

সে যদি আমার নামে কোন কথা রচনা করত,
And if he (Muhammad SAW) had forged a false saying concerning Us (Allâh Ìá ÌáÇáå),

وَلَوْ تَقَوَّلَ عَلَيْنَا بَعْضَ الْأَقَاوِيلِ
Walaw taqawwala AAalayna baAAda al-aqaweeli

YUSUFALI: And if the messenger were to invent any sayings in Our name,
PICKTHAL: And if he had invented false sayings concerning Us,
SHAKIR: And if he had fabricated against Us some of the sayings,
KHALIFA: Had he uttered any other teachings.

৪৩। [ এটা এক ] উপদেশ, যা প্রেরিত হয়েছে জগতসমূহের প্রভুর নিকট থেকে।

৪৪। এবং রসুল যদি আমার নামে কোন কথার উদ্ভাবন করে বলতো,

৪৫। আমি অবশ্যই তার দক্ষিণ হাত ধরে ফেলতাম, ৫৬৬৯

৫৬৬৯। ‘ দক্ষিণ হস্ত ‘ বাক্যটি এখানে ব্যবহৃত হয়েছে প্রতীক অর্থে। দক্ষিণ হস্ত হচ্ছে ক্ষমতা, প্রতিপত্তি ও কর্মক্ষমতার প্রতীক। যদি কারও ডান হাত বেঁধে রাখা যায় বা অকর্মণ্য করে দেয়া হয়, তবে তার কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। সে তখন তার স্বাধীন ইচ্ছানুযায়ী কাজ করতে অক্ষম হয়। ঠিক সেরূপে যদি কোন প্রতারক নিজেকে রাসুল রূপে প্রচার করে এবং দাবী করে যে, সে আল্লাহ্‌র বাণীর ধারক বাহক ও রক্ষক, তবে সে বেশীদূর অগ্রসর হতে পারবে না। অপর পক্ষে, পৃথিবীতে আল্লাহ্‌ যত নবী রাসুল প্রেরণ করেছেন, তাঁদের জীবনী পর্যালোচনা করলে দেখতে পাই, তাঁরা যত নির্যাতিত ও অত্যাচারিত হয়েছেন, তত তাদের ক্ষমতা ও শক্তি খর্ব হওয়ার পরিবর্তে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের নবী হযরত মুহম্মদ (সা) এর জীবনী এর প্রকৃষ্ঠ উদাহরণ। তাঁর সত্যের প্রতি আন্তরিকতা, বিশ্বস্ততা, এবং মানুষের জন্য ভালোবাসা, ধীরে ধীরে তাঁকে সত্য প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করে। রাসুলের (সা ) সমগ্র জীবনই হচ্ছে সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের ইতিহাস।

 

আয়াতঃ 069.045

তবে আমি তার দক্ষিণ হস্ত ধরে ফেলতাম,
We surely should have seized him by his right hand (or with power and might),

لَأَخَذْنَا مِنْهُ بِالْيَمِينِ
Laakhathna minhu bialyameeni

YUSUFALI: We should certainly seize him by his right hand,
PICKTHAL: We assuredly had taken him by the right hand
SHAKIR: We would certainly have seized him by the right hand,
KHALIFA: We would have punished him.

৪৩। [ এটা এক ] উপদেশ, যা প্রেরিত হয়েছে জগতসমূহের প্রভুর নিকট থেকে।

৪৪। এবং রসুল যদি আমার নামে কোন কথার উদ্ভাবন করে বলতো,

৪৫। আমি অবশ্যই তার দক্ষিণ হাত ধরে ফেলতাম, ৫৬৬৯

৫৬৬৯। ‘ দক্ষিণ হস্ত ‘ বাক্যটি এখানে ব্যবহৃত হয়েছে প্রতীক অর্থে। দক্ষিণ হস্ত হচ্ছে ক্ষমতা, প্রতিপত্তি ও কর্মক্ষমতার প্রতীক। যদি কারও ডান হাত বেঁধে রাখা যায় বা অকর্মণ্য করে দেয়া হয়, তবে তার কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। সে তখন তার স্বাধীন ইচ্ছানুযায়ী কাজ করতে অক্ষম হয়। ঠিক সেরূপে যদি কোন প্রতারক নিজেকে রাসুল রূপে প্রচার করে এবং দাবী করে যে, সে আল্লাহ্‌র বাণীর ধারক বাহক ও রক্ষক, তবে সে বেশীদূর অগ্রসর হতে পারবে না। অপর পক্ষে, পৃথিবীতে আল্লাহ্‌ যত নবী রাসুল প্রেরণ করেছেন, তাঁদের জীবনী পর্যালোচনা করলে দেখতে পাই, তাঁরা যত নির্যাতিত ও অত্যাচারিত হয়েছেন, তত তাদের ক্ষমতা ও শক্তি খর্ব হওয়ার পরিবর্তে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের নবী হযরত মুহম্মদ (সা) এর জীবনী এর প্রকৃষ্ঠ উদাহরণ। তাঁর সত্যের প্রতি আন্তরিকতা, বিশ্বস্ততা, এবং মানুষের জন্য ভালোবাসা, ধীরে ধীরে তাঁকে সত্য প্রতিষ্ঠিত করতে সাহায্য করে। রাসুলের (সা ) সমগ্র জীবনই হচ্ছে সত্য প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের ইতিহাস।

 

আয়াতঃ 069.046

অতঃপর কেটে দিতাম তার গ্রীবা।
And then certainly should have cut off his life artery (Aorta),

ثُمَّ لَقَطَعْنَا مِنْهُ الْوَتِينَ
Thumma laqataAAna minhu alwateena

YUSUFALI: And We should certainly then cut off the artery of his heart:
PICKTHAL: And then severed his life-artery,
SHAKIR: Then We would certainly have cut off his aorta.
KHALIFA: We would have stopped the revelations to him.

৪৬। এবং অবশ্যই তার হৃৎপিন্ডের ধমনী কেটে দিতাম ৫৬৭০;

৫৬৭০। এই আয়াতে আল্লাহ্‌ বলেছেন যে, হযরত মুহম্মদ (সা) যদি প্রকৃত রাসুল না হতেন, তবে আল্লাহ্‌র ক্রোধ তাঁকে ধ্বংস করে দিত।

 

আয়াতঃ 069.047

তোমাদের কেউ তাকে রক্ষা করতে পারতে না।
And none of you could withhold Us from (punishing) him.

فَمَا مِنكُم مِّنْ أَحَدٍ عَنْهُ حَاجِزِينَ
Fama minkum min ahadin AAanhu hajizeena

YUSUFALI: Nor could any of you withhold him (from Our wrath).
PICKTHAL: And not one of you could have held Us off from him.
SHAKIR: And not one of you could have withheld Us from him.
KHALIFA: None of you could have helped him.

৪৭। অতঃপর তোমাদের মধ্যে এমন কেহ নাই যে তাকে [ আমার ক্রোধ থেকে ] রক্ষা করতে পারে ৫৬৭১

৫৬৭১। রাসুলের (সা) জীবন ইতিহাস প্রমাণ করে যে, বিপদ বিপর্যয়ের মাঝে; প্রচন্ড দুর্যোগের মাঝেও আল্লাহ্‌র কল্যাণ হস্ত তাঁকে সর্বদা রক্ষা করে এসেছে। যদি তিনি প্রতারক হতেন তবে আল্লাহ্‌ তাঁকে রক্ষা করতেন না।

 

আয়াতঃ 069.048

এটা খোদাভীরুদের জন্যে অবশ্যই একটি উপদেশ।
And verily, this Qur’ân is a Reminder for the Muttaqûn (pious – see V.2:2).

وَإِنَّهُ لَتَذْكِرَةٌ لِّلْمُتَّقِينَ
Wa-innahu latathkiratun lilmuttaqeena

YUSUFALI: But verily this is a Message for the Allah-fearing.
PICKTHAL: And lo! it is a warrant unto those who ward off (evil).
SHAKIR: And most surely it is a reminder for those who guard (against evil).
KHALIFA: This is a reminder for the righteous.

৪৮। কিন্তু এটা [ কুর-আন ] আল্লাহ্‌ -ভীরুদের জন্য উপদেশ

৪৯। এবং তোমাদের মধ্যে যারা ইহা [ কুর-আন ] প্রত্যাখান করে, আমি অবশ্যই তাদের জানি।

৫০। সত্যই অবিশ্বাসীদের জন্য প্রত্যাদেশ হচ্ছে দুঃখের কারণ। ৫৬৭২

৬৫৭২। যারা আল্লাহ্‌র বিধান মেনে চলে, তাদের জন্য আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ হচ্ছে আনন্দের বার্তা। কারণ প্রত্যাদেশের মাধ্যমেই মানুষকে শুভ সংবাদ দান করা হয়েছে যে অনুতাপকারীর জন্য আছে ক্ষমা ও আল্লাহ্‌র করুণা। অপর পক্ষে, পাপীদের জন্য প্রত্যাদেশ দুঃখের সংবাদ বহন করে আনে। কারণ আল্লাহ্‌ প্রত্যাদেশের মাধ্যমে, পাপী অর্থাৎ যারা পাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে অপারগ, তাদের জন্য ভয়াবহ শাস্তি ঘোষণা দান করেছেন।

 

আয়াতঃ 069.049

আমি জানি যে, তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ মিথ্যারোপ করবে।
And verily, We know that there are some among you that belie (this Qur’ân). [Tafsir At-Tabarî, Vol. 29, Page 68]

وَإِنَّا لَنَعْلَمُ أَنَّ مِنكُم مُّكَذِّبِينَ
Wa-inna lanaAAlamu anna minkum mukaththibeena

YUSUFALI: And We certainly know that there are amongst you those that reject (it).
PICKTHAL: And lo! We know that some among you will deny (it).
SHAKIR: And most surely We know that some of you are rejecters.
KHALIFA: We know; some of you are rejectors.

৪৮। কিন্তু এটা [ কুর-আন ] আল্লাহ্‌ -ভীরুদের জন্য উপদেশ

৪৯। এবং তোমাদের মধ্যে যারা ইহা [ কুর-আন ] প্রত্যাখান করে, আমি অবশ্যই তাদের জানি।

৫০। সত্যই অবিশ্বাসীদের জন্য প্রত্যাদেশ হচ্ছে দুঃখের কারণ। ৫৬৭২

৬৫৭২। যারা আল্লাহ্‌র বিধান মেনে চলে, তাদের জন্য আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ হচ্ছে আনন্দের বার্তা। কারণ প্রত্যাদেশের মাধ্যমেই মানুষকে শুভ সংবাদ দান করা হয়েছে যে অনুতাপকারীর জন্য আছে ক্ষমা ও আল্লাহ্‌র করুণা। অপর পক্ষে, পাপীদের জন্য প্রত্যাদেশ দুঃখের সংবাদ বহন করে আনে। কারণ আল্লাহ্‌ প্রত্যাদেশের মাধ্যমে, পাপী অর্থাৎ যারা পাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে অপারগ, তাদের জন্য ভয়াবহ শাস্তি ঘোষণা দান করেছেন।

 

আয়াতঃ 069.050

নিশ্চয় এটা কাফেরদের জন্যে অনুতাপের কারণ।
And indeed it (this Qur’ân) will be an anguish for the disbelievers (on the Day of Resurrection).

وَإِنَّهُ لَحَسْرَةٌ عَلَى الْكَافِرِينَ
Wa-innahu lahasratun AAala alkafireena

YUSUFALI: But truly (Revelation) is a cause of sorrow for the Unbelievers.
PICKTHAL: And lo! it is indeed an anguish for the disbelievers.
SHAKIR: And most surely it is a great grief to the unbelievers.
KHALIFA: It is but sorrow for the disbelievers.

৪৮। কিন্তু এটা [ কুর-আন ] আল্লাহ্‌ -ভীরুদের জন্য উপদেশ

৪৯। এবং তোমাদের মধ্যে যারা ইহা [ কুর-আন ] প্রত্যাখান করে, আমি অবশ্যই তাদের জানি।

৫০। সত্যই অবিশ্বাসীদের জন্য প্রত্যাদেশ হচ্ছে দুঃখের কারণ। ৫৬৭২

৬৫৭২। যারা আল্লাহ্‌র বিধান মেনে চলে, তাদের জন্য আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ হচ্ছে আনন্দের বার্তা। কারণ প্রত্যাদেশের মাধ্যমেই মানুষকে শুভ সংবাদ দান করা হয়েছে যে অনুতাপকারীর জন্য আছে ক্ষমা ও আল্লাহ্‌র করুণা। অপর পক্ষে, পাপীদের জন্য প্রত্যাদেশ দুঃখের সংবাদ বহন করে আনে। কারণ আল্লাহ্‌ প্রত্যাদেশের মাধ্যমে, পাপী অর্থাৎ যারা পাপ থেকে নিজেকে রক্ষা করতে অপারগ, তাদের জন্য ভয়াবহ শাস্তি ঘোষণা দান করেছেন।

 

আয়াতঃ 069.051

নিশ্চয় এটা নিশ্চিত সত্য।
And Verily, it (this Qur’ân) is an absolute truth with certainty.

وَإِنَّهُ لَحَقُّ الْيَقِينِ
Wa-innahu lahaqqu alyaqeeni

YUSUFALI: But verily it is Truth of assured certainty.
PICKTHAL: And lo! it is absolute truth.
SHAKIR: And most surely it is the true certainty
KHALIFA: It is the absolute truth.

৫১। অবশ্যই ইহা সুনিশ্চিত সত্য। ৫৬৭৩

৫২। সুতারাং মহান আল্লাহ্‌র নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। ৫৬৭৪

৫৬৭৩। কুর-আন হচ্ছে নিশ্চিত সত্য। যদিও কুর-আন হচ্ছে সর্বোচ্চ সত্য, তবুও সকল মানুষ এই সত্যকে সমভাবে ধারণ করতে পারে না। মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নতির তারতম্য অনুযায়ী মানসিক ধারণ ক্ষমতার তারতম্য ঘটে ব্যক্তির জ্ঞান, প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা এবং মুল্যবোধ ধারণ ক্ষমতার উপরে।

সাধারণ ভাবে সত্য উপলব্ধির ক্ষমতাকে তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়। যুক্তি -তর্ক ও পরীক্ষণ -নিরীক্ষণের মাধ্যমে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বা সত্যকে হৃদয়ঙ্গম করা হয়, যেমন বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত সমূহ এরূপ সত্য। এই সিদ্ধান্তে অনেক সময়েই ভুল হতে পারে কারণ মানুষের তৈরী পরীক্ষণ যন্ত্রপাতি অনেক সময়েই ভুল উপাত্ত সরবরাহ করে থাকে, বা ব্যক্তি যুক্তি সঙ্গত চিন্তার ক্ষেত্রে ভুল পথে পরিচালিত হতে পারে – যার ফলে আজ যা অকাট্য বৈজ্ঞানিক সত্য আগামীতে তা ভুল প্রমাণিত হতে পারে। এরূপ সত্যকে বলে ‘Ilm-ul-yaqin’। দ্বিতীয়তঃ চক্ষু ও অন্যান্য ইন্দ্রিয় দ্বারা সত্য ঘটনাকে প্রত্যক্ষ করে বিশ্বাস করা। তবে এ দেখা কখনও অকাট্য সত্য হতে পারে না। একই ঘটনা দেখে বিভিন্ন মানুষ তাদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার তারতম্য অনুযায়ী বিভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা দান করে থাকে। এরূপ সত্যকে বলে, ” “Ain-ul-yaqin” যা ব্যক্তিগত পরিদর্শনের ফল। দেখুন [ ১০২ : ৫, ৭ ]। আর এক ধরণের সত্য আছে যা অকাট্য সত্য, বা নিশ্চিত সত্য, বা সর্বোচ্চ সত্য। এই সত্য হয় নির্ভুল। কোন মানবিক ভুল -ভ্রান্তি যেমন চক্ষু, কর্ণ, বা যন্ত্রপাতি বা যুক্তির অবতারণা কিছুই তাকে কলুষিত করতে সক্ষম নয়। এ সত্য হচ্ছে আধ্যাত্মিক জগতের সত্য বা কোরাণের প্রত্যাদেশের সত্য। এই সত্যকে, বলে “Haqq-ul-yaqin”। এই আয়াতে এই সত্যের কথাই বলা হয়েছে। যে সত্য ধারণের ফলে মানুষের মাঝে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার জন্ম নেয়।

৫৬৭৪। যেহেতু আল্লাহ্‌ তাঁর প্রত্যাদেশের মাধ্যমে এই সর্বোচ্চ সত্য বা নিশ্চিত সত্যের সন্ধান দান করেছেন ; যার ফলে মানুষ জ্ঞানী ও প্রজ্ঞা সম্পন্ন মানুষে রূপান্তরিত হতে সক্ষম হয়। সেহেতু মানুষ স্রষ্টার নিকট কৃতজ্ঞ থাকবে ও স্রষ্টার মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করবে। আর এই ঘোষণা হবে চিন্তাধারা, কথা ও কাজের মাধ্যমে।

 

আয়াতঃ 069.052

অতএব, আপনি আপনার মহান পালনকর্তার নামের পবিত্রতা বর্ননা করুন।
So glorify the Name of your Lord, the Most Great.

فَسَبِّحْ بِاسْمِ رَبِّكَ الْعَظِيمِ
Fasabbih biismi rabbika alAAatheemi

YUSUFALI: So glorify the name of thy Lord Most High.
PICKTHAL: So glorify the name of thy Tremendous Lord.
SHAKIR: Therefore-glorify the name of your Lord, the Great.
KHALIFA: Therefore, you shall glorify the name of your Lord, Most Great.

৫১। অবশ্যই ইহা সুনিশ্চিত সত্য। ৫৬৭৩

৫২। সুতারাং মহান আল্লাহ্‌র নামের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। ৫৬৭৪

৫৬৭৩। কুর-আন হচ্ছে নিশ্চিত সত্য। যদিও কুর-আন হচ্ছে সর্বোচ্চ সত্য, তবুও সকল মানুষ এই সত্যকে সমভাবে ধারণ করতে পারে না। মানুষের আধ্যাত্মিক উন্নতির তারতম্য অনুযায়ী মানসিক ধারণ ক্ষমতার তারতম্য ঘটে ব্যক্তির জ্ঞান, প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা এবং মুল্যবোধ ধারণ ক্ষমতার উপরে।

সাধারণ ভাবে সত্য উপলব্ধির ক্ষমতাকে তিন শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়। যুক্তি -তর্ক ও পরীক্ষণ -নিরীক্ষণের মাধ্যমে যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় বা সত্যকে হৃদয়ঙ্গম করা হয়, যেমন বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্ত সমূহ এরূপ সত্য। এই সিদ্ধান্তে অনেক সময়েই ভুল হতে পারে কারণ মানুষের তৈরী পরীক্ষণ যন্ত্রপাতি অনেক সময়েই ভুল উপাত্ত সরবরাহ করে থাকে, বা ব্যক্তি যুক্তি সঙ্গত চিন্তার ক্ষেত্রে ভুল পথে পরিচালিত হতে পারে – যার ফলে আজ যা অকাট্য বৈজ্ঞানিক সত্য আগামীতে তা ভুল প্রমাণিত হতে পারে। এরূপ সত্যকে বলে ‘Ilm-ul-yaqin’। দ্বিতীয়তঃ চক্ষু ও অন্যান্য ইন্দ্রিয় দ্বারা সত্য ঘটনাকে প্রত্যক্ষ করে বিশ্বাস করা। তবে এ দেখা কখনও অকাট্য সত্য হতে পারে না। একই ঘটনা দেখে বিভিন্ন মানুষ তাদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার তারতম্য অনুযায়ী বিভিন্ন ভাবে ব্যাখ্যা দান করে থাকে। এরূপ সত্যকে বলে, ” “Ain-ul-yaqin” যা ব্যক্তিগত পরিদর্শনের ফল। দেখুন [ ১০২ : ৫, ৭ ]। আর এক ধরণের সত্য আছে যা অকাট্য সত্য, বা নিশ্চিত সত্য, বা সর্বোচ্চ সত্য। এই সত্য হয় নির্ভুল। কোন মানবিক ভুল -ভ্রান্তি যেমন চক্ষু, কর্ণ, বা যন্ত্রপাতি বা যুক্তির অবতারণা কিছুই তাকে কলুষিত করতে সক্ষম নয়। এ সত্য হচ্ছে আধ্যাত্মিক জগতের সত্য বা কোরাণের প্রত্যাদেশের সত্য। এই সত্যকে, বলে “Haqq-ul-yaqin”। এই আয়াতে এই সত্যের কথাই বলা হয়েছে। যে সত্য ধারণের ফলে মানুষের মাঝে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার জন্ম নেয়।

৫৬৭৪। যেহেতু আল্লাহ্‌ তাঁর প্রত্যাদেশের মাধ্যমে এই সর্বোচ্চ সত্য বা নিশ্চিত সত্যের সন্ধান দান করেছেন ; যার ফলে মানুষ জ্ঞানী ও প্রজ্ঞা সম্পন্ন মানুষে রূপান্তরিত হতে সক্ষম হয়। সেহেতু মানুষ স্রষ্টার নিকট কৃতজ্ঞ থাকবে ও স্রষ্টার মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করবে। আর এই ঘোষণা হবে চিন্তাধারা, কথা ও কাজের মাধ্যমে।

Exit mobile version