Site icon BnBoi.Com

সূরা কালাম বাংলা

সূরা কালাম

সূরা কালাম

 

আয়াতঃ 068.001

নূন। শপথ কলমের এবং সেই বিষয়ের যা তারা লিপিবদ্ধ করে,
Nûn. [These letters (Nûn, etc.) are one of the miracles of the Qur’ân, and none but Allâh (Alone) knows their meanings]. By the pen and what the (angels) write (in the Records of men).

ن وَالْقَلَمِ وَمَا يَسْطُرُونَ
Noon waalqalami wama yasturoona

YUSUFALI: Nun. By the Pen and the (Record) which (men) write,-
PICKTHAL: Nun. By the pen and that which they write (therewith),
SHAKIR: Noon. I swear by the pen and what the angels write,
KHALIFA: NuN, the pen, and what they (the people) write.

=============
সূরা কালাম বা কলম – ৬৮
৫২ আয়াত, ২ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

ভূমিকা : এই সূরাটি মক্কাতে অবতীর্ণ সূরাগুলির মধ্যে প্রথমার্ধে অবতীর্ণ হয়। সাধারণ মুসলমানদের ধারণা যে, অবতীর্ণের ধারাবাহিকতায় এই সূরার অধিকাংশ দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে। প্রথম সূরা যেটি অবতীর্ণ হয় সেটি হচ্ছে সূরা নং ৪৬ [ ইক্‌রা ] আয়াত হচ্ছে [ ৪৬ : ১ – ৫ ]।

পূর্ববর্তী সূরাতে মানুষের মিথ্যা দম্ভকে তুলনা করা হয়েছে প্রকৃত সত্যের বিপরীতে। এই সূরাতে ঐতিহাসিক উদাহরণের মাধ্যমে এই তুলনাকে তুলে ধরা হয়েছে। মহানবী ছিলেন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বিবেকবান ও জ্ঞানী। যারা তাদের সীমিত জ্ঞানে তা বুঝতে অক্ষম ছিলো, তারাই তাকে পাগল ও বিকৃত মস্তিষ্করূপে আখ্যায়িত করতো। ঠিক সেরূপ পৃথিবীতে যুগে যুগে প্রকৃত সত্যকে মিথ্যা আখ্যা দেয়া হয়েছে, প্রজ্ঞাকে পাগলামী বলা হয়েছে। অপরপক্ষে স্বার্থপরতাকে বিচক্ষণ পরিকল্পনারূপে আখ্যায়িত করা হয়েছে এবং উদ্ধত একগুয়েমীকে ক্ষমতাবানরূপে অভিহিত করা হয়েছে। এই সূরাতে দুধরণের মানব গোষ্ঠির মাঝে তুলনা করা হয়েছে এবং তাদের অর্ন্তনিহিত মুল্যমানকে তুলে ধরা হয়েছে এরই প্রেক্ষিতে।

সার সংক্ষেপ : মন্দের অত্যাচার সত্বেও ভালোরা তাদের কর্তব্যে অটল থাকবে। আল্লাহ্‌কে সর্বদা স্মরণে রাখবে। তাঁর কাছেই সকলে প্রত্যাবর্তন করবে শেষ বিচারের জন্য [ ৬৮: ১ – ৩৩ ]

প্রকৃত ন্যায় ও সত্য আল্লাহ্‌র নিকট থেকে আগত হয়। মানুষের মিথ্যা মানদন্ডে তা প্রতিফলিত হয় না। [ ৬৮: ৩৪- ৫২ ]

সূরা কালাম বা কলম – ৬৮
৫২ আয়াত, ২ রুকু, মক্কী
[ দয়াময়, পরম করুণাময় আল্লাহ্‌র নামে ]

১। নুন্‌ ৫৫৯২। শপথ কলমের এবং [ মানুষেরা ] যা লিপিবদ্ধ করে, ৫৫৯৩

৫৫৯২। ‘নূন্‌ ‘ একটি সংক্ষিপ্ত অক্ষর। এর অর্থ হতে পারে মাছ, বা কালির দোয়াত, অথবা শুধুমাত্র একটি আরবী অক্ষর ণ [ নুন ] যার সাহায্যে দোয়াত এবং মাছ উভয় অর্থকে বোঝানো হয়েছে। লক্ষ্য করুন এই সূরার গীতি কবিতাটির ছন্দে লাইন শেষ হয়েছে [ “নুন” ] অক্ষরটির দ্বারা। সূরাটিতে কলমের উল্লেখ আছে আয়াত নং [ ৬৮ : ১ ]। এবং মাছের উল্লেখ করা হয়েছে ইউনুস নবীর কাহিনীর মধ্যে আয়াত নং [ ৬৮ : ৪৮ – ৫০ ]। ইউনুস নবীর উপাধি হচ্ছে ” মাছেদের সঙ্গী “। সূরা [ ২১ : ৮৭ ] আয়াতে ইউনুস নবীকে ‘যুননুন্‌ ‘ বলে সম্বোধন করা হয়েছে যেহেতু কাহিনীতে রয়েছে যে তাঁকে একটি বৃহৎ মাছ গিলে ফেলে। নুন্‌ অক্ষরটি ইউনুস নবীর নামের প্রতীক অর্থেও ব্যবহার হতে পারে।

৫৫৯৩। অলৌকিক কলমের ও লিখিত বিবরণীর শপথ হচ্ছে প্রতীক ধর্মী বিবরণ যার সাহায্যে মানুষের প্রতি আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশের ধর্মকে বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ্‌র নবী কোন উম্মাদ বা বিকারগ্রস্থ নয়। তাঁর মুখ নিঃসৃত বাণী কোন অসংলগ্ন কথা নয় বরং তা আল্লাহ্‌র ক্ষমতার প্রতীক যা কলমের মাধ্যমে ধারণ করা হয়েছে। জীবনের অসংখ্য বহুবিধ অর্থকে প্রকাশ করা হয়েছে কলমের মাধ্যমে, যা পৃথিবীর বিভিন্ন যুগের মানুষের জন্য রক্ষা করেছে কলম। মুহম্মদ (সা) ছিলেন আল্লাহ্‌র জীবন্ত করুণা ও দয়া। তাঁর চারিত্রিক গুণাবলী তাঁকে সকল অপবাদ ও নির্যাতনের উর্দ্ধে তুলে ধরেছে।

 

আয়াতঃ 068.002

আপনার পালনকর্তার অনুগ্রহে আপনি উম্মাদ নন।
You (O Muhammad SAW) are not, by the Grace of your Lord, a madman.

مَا أَنتَ بِنِعْمَةِ رَبِّكَ بِمَجْنُونٍ
Ma anta biniAAmati rabbika bimajnoonin

YUSUFALI: Thou art not, by the Grace of thy Lord, mad or possessed.
PICKTHAL: Thou art not, for thy Lord’s favour unto thee, a madman.
SHAKIR: By the grace of your Lord you are not mad.
KHALIFA: You have attained a great blessing from your Lord; you are not crazy.

২। তোমার প্রভুর অনুগ্রহে তুমি উন্মাদ অথবা যাদুগ্রস্থ নও ৫৫৯৪।

৫৫৯৪। সাধারণ মানুষ তাকেই উম্মাদ বলে, যে আর দশ জনের মত আচার আচরণ করে না। সাধারণ লোকেরা মনে করে পাগল বা বিকারগ্রস্থ লোকেরা অশুভ শক্তি দ্বারা বা ভূত দ্বারা আক্রান্ত। সুতারাং মহানবীর নিকট প্রেরিত আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ বুঝতে অক্ষম ব্যক্তিরা তাঁকে বিকারগ্রস্থ মনে করেছিলো যা আল্লাহ্‌ এই আয়াতের মাধ্যমে মিথ্যা ঘোষণা করেছেন।

 

আয়াতঃ 068.003

আপনার জন্যে অবশ্যই রয়েছে অশেষ পুরস্কার।
And verily, for you (O Muhammad SAW) will be an endless reward.

وَإِنَّ لَكَ لَأَجْرًا غَيْرَ مَمْنُونٍ
Wa-inna laka laajran ghayra mamnoonin

YUSUFALI: Nay, verily for thee is a Reward unfailing:
PICKTHAL: And lo! thine verily will be a reward unfailing.
SHAKIR: And most surely you shall have a reward never to be cut off.
KHALIFA: You have attained a recompense that is well deserved.

৩। তোমার জন্য অবশ্যই রয়েছে পুরষ্কার, যা শেষ হওয়ার নয় ৫৫৯৫;

৫৫৯৫। রাসুল (সা) সম্বন্ধে আল্লাহ্‌ বলেছেন যে, অবশ্যই তিনি বিকারগ্রস্থ নন, এবং তিনি আল্লাহ্‌র বিশেষ পুরষ্কারে ভূষিত। যে পুরষ্কার পার্থিব পুরষ্কারের ন্যায় ক্ষণস্থায়ী বা ভঙ্গুর নয়, বরং তা চিরস্থায়ী, অমূল্য ও যা অন্তরকে আলোকিত করে। প্রকৃতপক্ষেই আল্লাহ্‌ তাঁকে চারিত্রিক গুণাবলীতে এতই মর্যদাবান করেছিলেন যে, দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রনা, অপবাদ বা নির্যাতনে যার এতটুকু ক্ষতি করতে পারে নাই।

 

আয়াতঃ 068.004

আপনি অবশ্যই মহান চরিত্রের অধিকারী।
And verily, you (O Muhammad SAW) are on an exalted standard of character.

وَإِنَّكَ لَعَلى خُلُقٍ عَظِيمٍ
Wa-innaka laAAala khuluqin AAatheemin

YUSUFALI: And thou (standest) on an exalted standard of character.
PICKTHAL: And lo! thou art of a tremendous nature.
SHAKIR: And most surely you conform (yourself) to sublime morality.
KHALIFA: You are blessed with a great moral character.

৪। এবং তুমি অবশ্যই মহান চরিত্রে অধিষ্ঠিত

৫। শীঘ্রই তুমি দেখবে এবং উহারাও দেখবে, ৫৫৯৬

৬। তোমাদের মধ্যে কে বিকার গ্রস্থ ;

৫৫৯৬। আল মুস্তফার (সা) চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তাকে তাঁর সমসাময়িক সঙ্গীদের উর্দ্ধে স্থাপন করেছিলো। শুধু সমসাময়িক নয় সর্বযুগের বিশ্ব মানবের জন্য তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অনুকরণীয় বরণীয়। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ মানুষের যুক্তিবাদী চিন্তা ও মনের কাছে আবেদন রেখেছেন। সময়েই প্রমাণ করেছে কারা ছিলো মানসিক বিকারগ্রস্থ ? কি ঘটেছিলো ওয়ালিদ ইবনে মুগাইরার, অথবা আবু জহলের অথবা আবু লাহাবের ? অপরপক্ষে আল্লাহ্‌র রাসুল (সা) ও তাঁর সাহাবীদের ও তাঁর অনুসারীদের ? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে পৃথিবীর ইতিহাসে। এই আয়াতের আবেদন শুধুমাত্র সমসাময়িক সম্প্রদায়ের জন্য ছিলো না, এর আবেদন হচ্ছে বিশ্বজনীন।

 

আয়াতঃ 068.005

সত্ত্বরই আপনি দেখে নিবেন এবং তারাও দেখে নিবে।
You will see, and they will see,

فَسَتُبْصِرُ وَيُبْصِرُونَ
Fasatubsiru wayubsiroona

YUSUFALI: Soon wilt thou see, and they will see,
PICKTHAL: And thou wilt see and they will see
SHAKIR: So you shall see, and they (too) shall see,
KHALIFA: You will see, and they will see.

৪। এবং তুমি অবশ্যই মহান চরিত্রে অধিষ্ঠিত

৫। শীঘ্রই তুমি দেখবে এবং উহারাও দেখবে, ৫৫৯৬

৬। তোমাদের মধ্যে কে বিকার গ্রস্থ ;

৫৫৯৬। আল মুস্তফার (সা) চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তাকে তাঁর সমসাময়িক সঙ্গীদের উর্দ্ধে স্থাপন করেছিলো। শুধু সমসাময়িক নয় সর্বযুগের বিশ্ব মানবের জন্য তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অনুকরণীয় বরণীয়। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ মানুষের যুক্তিবাদী চিন্তা ও মনের কাছে আবেদন রেখেছেন। সময়েই প্রমাণ করেছে কারা ছিলো মানসিক বিকারগ্রস্থ ? কি ঘটেছিলো ওয়ালিদ ইবনে মুগাইরার, অথবা আবু জহলের অথবা আবু লাহাবের ? অপরপক্ষে আল্লাহ্‌র রাসুল (সা) ও তাঁর সাহাবীদের ও তাঁর অনুসারীদের ? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে পৃথিবীর ইতিহাসে। এই আয়াতের আবেদন শুধুমাত্র সমসাময়িক সম্প্রদায়ের জন্য ছিলো না, এর আবেদন হচ্ছে বিশ্বজনীন।

 

আয়াতঃ 068.006

কে তোমাদের মধ্যে বিকারগ্রস্ত।
Which of you is afflicted with madness.

بِأَييِّكُمُ الْمَفْتُونُ
Bi-ayyikumu almaftoonu

YUSUFALI: Which of you is afflicted with madness.
PICKTHAL: Which of you is the demented.
SHAKIR: Which of you is afflicted with madness.
KHALIFA: Which of you are condemned

৪। এবং তুমি অবশ্যই মহান চরিত্রে অধিষ্ঠিত

৫। শীঘ্রই তুমি দেখবে এবং উহারাও দেখবে, ৫৫৯৬

৬। তোমাদের মধ্যে কে বিকার গ্রস্থ ;

৫৫৯৬। আল মুস্তফার (সা) চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তাকে তাঁর সমসাময়িক সঙ্গীদের উর্দ্ধে স্থাপন করেছিলো। শুধু সমসাময়িক নয় সর্বযুগের বিশ্ব মানবের জন্য তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে অনুকরণীয় বরণীয়। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ্‌ মানুষের যুক্তিবাদী চিন্তা ও মনের কাছে আবেদন রেখেছেন। সময়েই প্রমাণ করেছে কারা ছিলো মানসিক বিকারগ্রস্থ ? কি ঘটেছিলো ওয়ালিদ ইবনে মুগাইরার, অথবা আবু জহলের অথবা আবু লাহাবের ? অপরপক্ষে আল্লাহ্‌র রাসুল (সা) ও তাঁর সাহাবীদের ও তাঁর অনুসারীদের ? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে পৃথিবীর ইতিহাসে। এই আয়াতের আবেদন শুধুমাত্র সমসাময়িক সম্প্রদায়ের জন্য ছিলো না, এর আবেদন হচ্ছে বিশ্বজনীন।

 

আয়াতঃ 068.007

আপনার পালনকর্তা সম্যক জানেন কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে এবং তিনি জানেন যারা সৎপথ প্রাপ্ত।
Verily, your Lord knows better, who (among men) has gone astray from His Path, and He knows better those who are guided.

إِنَّ رَبَّكَ هُوَ أَعْلَمُ بِمَن ضَلَّ عَن سَبِيلِهِ وَهُوَ أَعْلَمُ بِالْمُهْتَدِينَ
Inna rabbaka huwa aAAlamu biman dalla AAan sabeelihi wahuwa aAAlamu bialmuhtadeena

YUSUFALI: Verily it is thy Lord that knoweth best, which (among men) hath strayed from His Path: and He knoweth best those who receive (true) Guidance.
PICKTHAL: Lo! thy Lord is Best Aware of him who strayeth from His way, and He is Best Aware of those who walk aright.
SHAKIR: Surely your Lord best knows him who errs from His way, and He best knows the followers of the right course.
KHALIFA: Your Lord is fully aware of those who strayed off His path, and He is fully aware of those who are guided.

৭। অবশ্যই তোমার প্রভু সর্বাপেক্ষা ভালো জানেন, [ তোমাদের মধ্যে ] কে তাঁর পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে; এবং তিনি সর্বাপেক্ষা ভালো জানেন কে [ সত্য ] পথ নির্দেশ গ্রহণ করেছে ৫৫৯৭।

৫৫৯৭। মানুষ অনেক সময়েই আত্মগর্বে অন্ধ হয়ে নিজের বিচার বুদ্ধিকে শ্রেষ্ঠ মনে করে। সে সর্বাপেক্ষা ন্যায়বান, এই মিথ্যা অহমিকা তার অন্তরে জন্ম নেয় তার আত্মগরিমা থেকে। প্রকৃত সত্য হচ্ছে পৃথিবীর মানুষ আজ যাকে ন্যায় বলে অভিহিত করে আগামীতে তাকেই অন্যায় বলে অভিহিত করতে দ্বিধা বোধ করে না। তাদের মনগড়া ন্যায় ও অন্যায় বোধ সীমিত জ্ঞানেরই প্রতিফলন মাত্র। ন্যায় ও অন্যায়ের মানদন্ড হচ্ছে আল্লাহ্‌র হুকুম সমূহ। আল্লাহ্‌র জ্ঞান অসীম ও সম্পূর্ণ এবং পৃথিবীর সব কিছুকে তা আচ্ছন্ন করে রেখেছে। আল্লাহ্‌ গুপ্ত, ব্যক্ত, অব্যক্ত, দৃশ্যমান, অদৃশ্য সকল কিছুরই খবর রাখেন। তিনি অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত সব কিছু সম্বন্ধেই অবহিত। অতীতের যে কাজের পরিণতিতে বর্তমান দাঁড়িয়ে আছে এবং বর্তমান কাজের যে পরিণতি ভবিষ্যতে ঘটবে সে সম্বন্ধে আল্লাহ্‌ সম্যক অবহিত।

 

আয়াতঃ 068.008

অতএব, আপনি মিথ্যারোপকারীদের আনুগত্য করবেন না।
So (O Muhammad SAW) obey not the deniers [(of Islâmic Monotheism those who belie the Verses of Allâh), the Oneness of Allâh, and the Messenger of Allâh (Muhammad SAW), etc.]

فَلَا تُطِعِ الْمُكَذِّبِينَ
Fala tutiAAi almukaththibeena

YUSUFALI: So hearken not to those who deny (the Truth).
PICKTHAL: Therefor obey not thou the rejecters
SHAKIR: So do not yield to the rejecters.
KHALIFA: Do not obey the rejectors.

৮। সুতারাং যারা [ সত্যকে] প্রত্যাখান করে তাদের কথায় মনোযোগ দিও না ৫৫৯৮।

৯। তারা চায় যে, তুমি নমনীয় হও, তা হলে তারাও নমনীয় হবে।

৫৫৯৮। আল্লাহ্‌র সত্যের বিরুদ্ধাচারীরা কখনও কখনও হয় আত্মপ্রবঞ্চনাকারী; তাদের সত্যের প্রতি অনীহা এবং চক্ষু বন্ধ করে থাকার প্রবণতা সত্বেও মাঝে মাঝে সত্যের অত্যুজ্জ্বল দীপ্তি তাদের চোখে ভাস্বর হয়। তখনই তারা প্রস্তাব রাখে রাসুলের (সা) নমনীয় হতে হবে, নমনীয় হতে হবে দেবদেবীর ব্যাপারে। খুব সহজে কার্য উদ্ধারের এ এক অতি সহজ পদ্ধতি, যা মানুষকে খুব সহজেই প্রলোভিত করে থাকে। সাধারণ মানুষ খুব সহজেই এরূপ প্রলোভনের ফাঁদে ধরা দেয়। রাসুল (সা) কে দেয়া উপদেশের মাধ্যমে এই আয়াতে আল্লাহ্‌ বলেছেন যে, যদি আমরা প্রকৃত পক্ষেই পূণ্যাত্মাদের অর্ন্তভূক্ত হতে চাই, তবে আমরা এরূপ অন্যায় সমঝোতা বা মীমাংসা যা আল্লাহ্‌র চোখে অত্যন্ত গর্হিত তা থেকে বিরত থাকবো, নিজেদের রক্ষা করবো। ঘটনাটি এরূপ ছিলো যে আব জহল রাসূলকে (সা) এরূপ অসম্ভব একটি সমঝোতার পথে আহ্বান করেছিলো।

 

আয়াতঃ 068.009

তারা চায় যদি আপনি নমনীয় হন, তবে তারাও নমনীয় হবে।
They wish that you should compromise (in religion out of courtesy) with them, so they (too) would compromise with you.

وَدُّوا لَوْ تُدْهِنُ فَيُدْهِنُونَ
Waddoo law tudhinu fayudhinoona

YUSUFALI: Their desire is that thou shouldst be pliant: so would they be pliant.
PICKTHAL: Who would have had thee compromise, that they may compromise.
SHAKIR: They wish that you should be pliant so they (too) would be pliant.
KHALIFA: They wish that you compromise, so they too can compromise.

৮। সুতারাং যারা [ সত্যকে] প্রত্যাখান করে তাদের কথায় মনোযোগ দিও না ৫৫৯৮।

৯। তারা চায় যে, তুমি নমনীয় হও, তা হলে তারাও নমনীয় হবে।

৫৫৯৮। আল্লাহ্‌র সত্যের বিরুদ্ধাচারীরা কখনও কখনও হয় আত্মপ্রবঞ্চনাকারী; তাদের সত্যের প্রতি অনীহা এবং চক্ষু বন্ধ করে থাকার প্রবণতা সত্বেও মাঝে মাঝে সত্যের অত্যুজ্জ্বল দীপ্তি তাদের চোখে ভাস্বর হয়। তখনই তারা প্রস্তাব রাখে রাসুলের (সা) নমনীয় হতে হবে, নমনীয় হতে হবে দেবদেবীর ব্যাপারে। খুব সহজে কার্য উদ্ধারের এ এক অতি সহজ পদ্ধতি, যা মানুষকে খুব সহজেই প্রলোভিত করে থাকে। সাধারণ মানুষ খুব সহজেই এরূপ প্রলোভনের ফাঁদে ধরা দেয়। রাসুল (সা) কে দেয়া উপদেশের মাধ্যমে এই আয়াতে আল্লাহ্‌ বলেছেন যে, যদি আমরা প্রকৃত পক্ষেই পূণ্যাত্মাদের অর্ন্তভূক্ত হতে চাই, তবে আমরা এরূপ অন্যায় সমঝোতা বা মীমাংসা যা আল্লাহ্‌র চোখে অত্যন্ত গর্হিত তা থেকে বিরত থাকবো, নিজেদের রক্ষা করবো। ঘটনাটি এরূপ ছিলো যে আব জহল রাসূলকে (সা) এরূপ অসম্ভব একটি সমঝোতার পথে আহ্বান করেছিলো।

 

আয়াতঃ 068.010

যে অধিক শপথ করে, যে লাঞ্ছিত, আপনি তার আনুগত্য করবেন না।
And obey not everyone who swears much, and is considered worthless,

وَلَا تُطِعْ كُلَّ حَلَّافٍ مَّهِينٍ
Wala tutiAA kulla hallafin maheenin

YUSUFALI: Heed not the type of despicable men,- ready with oaths,
PICKTHAL: Neither obey thou each feeble oath-monger,
SHAKIR: And yield not to any mean swearer
KHALIFA: Do not obey every lowly swearer.

১০। এসব ঘৃণ্য [ চরিত্রের ] লোকের কথা শুনো না ৫৫৯৯, যারা [ সর্বদা মিথ্যা ] শপথ করতে প্রস্তুত থাকে, ৫৬০০,

৫৫৯৯। এই আয়াতে ও পরবর্তী আয়াতে মানুষের যে সব ঘৃণ্য দোষের বিবরণ দেয়া হয়েছে তা আজকে বাংলাদেশের সমাজে খুব একটা অসাধারণ কিছু নয়। এ সব ঘৃণ্য দোষ সমূহ যখন কোনও ব্যক্তির চরিত্রে প্রকাশ পায়, তখন তাঁকে করে তোলে জঘন্য চরিত্রের ব্যক্তিরূপে। ওয়ালিদ ইবনে মুগাইর ছিলেন এরূপ একজন ব্যক্তি, যে রাসুলের (সা ) চরিত্র সম্বন্ধে মিথ্যা কলঙ্ক রটনা করার প্রয়াস পেতো। এই কলঙ্ক রটনায় তার ভূমিকা ছিলো প্রধান। তার কথাই এই আয়াতে বলা হয়েছে, ” যে ঘৃণ্য চরিত্রের।” বদরের যুদ্ধের সময়ে মুগাইর আঘাতপ্রাপ্ত হয় এবং তার শেষ পরিণতি হয় অত্যন্ত লাঞ্ছনাদায়ক।

৫৬০০। যারা মিথ্যাবাদী, সত্যের প্রতি যাদের সামান্যতম শ্রদ্ধাও নাই, শুধু তারাই পারে কথায় কথায় শপথ করতে। কারণ সাধারণ লোক তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অনুধাবন করার ফলে তাকে বিশ্বাস করে না। লোকের বিশ্বাস হারানোর ফলে তারা বিশ্বাস অর্জনের জন্য প্রতি কথায় শপথ বাণী উচ্চারণ করে। প্রবাদ আছে প্রকৃত সত্যাশ্রয়ী ব্যক্তির মৌখিক কথা লিখিত দলিলের থেকেও উত্তম।

 

আয়াতঃ 068.011

যে পশ্চাতে নিন্দা করে একের কথা অপরের নিকট লাগিয়ে ফিরে।
A slanderer, going about with calumnies,

هَمَّازٍ مَّشَّاء بِنَمِيمٍ
Hammazin mashsha-in binameemin

YUSUFALI: A slanderer, going about with calumnies,
PICKTHAL: Detracter, spreader abroad of slanders,
SHAKIR: Defamer, going about with slander
KHALIFA: A slanderer, a backbiter.

১১। কুৎসা রটনা করে, যে অপবাদ প্রচার করে,

১২। যে কল্যাণ কাজে বাঁধা দান করে, যে সীমালংঘন করে ; পাপে নিমগ্ন থাকে,

১৩। রূঢ় [ এবং নিষ্ঠুর ] স্বভাব ৫৬০১; তদুপরি কুখ্যাত ;

৫৬০১। আত্ম-প্রবঞ্চনাকারী ও যারা সহজেই কার্য উদ্ধার করতে চায়, তারা ব্যতীত অন্য আর এক দল লোকের বর্ণনা এই আয়াতগুলির মাধ্যমে করা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণীর এই লোকেরা হয় অত্যন্ত হীন ও নীচ চরিত্রের। তাদের সত্য সম্বন্ধে কোন ধারণাই নাই। ফলে বিশ্বস্ততার অর্থ হৃদয়ঙ্গম করতেও তারা অপারগ। এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এরা মিথ্যাবাদী, কথায় কথায় সকলের সাথে বন্ধুত্বের শপথ করে এবং সুবিধাজনক যে কোন কার্যের প্রতি বিশ্বস্ততা ঘোষণা করে। একই সাথে তারা বন্ধু ও বিশ্বস্তদের পশ্চাতে কুৎসা রটনা করে এবং পরনিন্দা করে। যার ফলে সহজ সরল মানুষের মাঝে, সহজেই অশান্তির সৃষ্টি করে থাকে। এরা কল্যাণে বাঁধা দান করে, পাপ কার্যকে এদের চক্ষে মনোহর বলে দৃশ্যমান হয়। সে শুধুমাত্র যে কল্যাণে বাঁধাই দান করবে তাই-ই নয়, সে অকল্যাণের পথে দৃঢ়ভাবে অগ্রসর হবে এবং অপর লোককেও কল্যাণের পথে অগ্রসর হতে বাধা দান করবে। যদি কেউ তাকে এই কাজে বাধা দান করে তবে সে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে, তার রূঢ় স্বভাব মানুষকে আহত করে। তার স্বভাবের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হবে সে অপরের ব্যাপারে নাক গলানোতে কুখ্যাতি অর্জন করবে। যেখানে তার কোনও অধিকার নাই, সেখানেও সে সম্পর্ক, অধিকার, ক্ষমতা দাবী করে। এদের প্রচুর অর্থ সম্পদ থাকতে পারে, কিন্তু এদের ধারণায় ধর্ম হচ্ছে হাসি, খেলার বস্তু, বৃদ্ধদের এবং কুসংস্কারচ্ছন্ন ব্যক্তিরাই ধর্মকে আকঁড়ে ধরে এই বিকৃত ধারণাতে তারা পার্থিব জীবনকে অতিবাহিত করবে।

 

আয়াতঃ 068.012

যে ভাল কাজে বাধা দেয়, সে সীমালংঘন করে, সে পাপিষ্ঠ,
Hinderer of the good, transgressor, sinful,

مَنَّاعٍ لِّلْخَيْرِ مُعْتَدٍ أَثِيمٍ
MannaAAin lilkhayri muAAtadin atheemin

YUSUFALI: (Habitually) hindering (all) good, transgressing beyond bounds, deep in sin,
PICKTHAL: Hinderer of the good, transgressor, malefactor
SHAKIR: Forbidder of good, outstepping the limits, sinful,
KHALIFA: Forbidder of charity, a transgressor, a sinner.

১১। কুৎসা রটনা করে, যে অপবাদ প্রচার করে,

১২। যে কল্যাণ কাজে বাঁধা দান করে, যে সীমালংঘন করে ; পাপে নিমগ্ন থাকে,

১৩। রূঢ় [ এবং নিষ্ঠুর ] স্বভাব ৫৬০১; তদুপরি কুখ্যাত ;

৫৬০১। আত্ম-প্রবঞ্চনাকারী ও যারা সহজেই কার্য উদ্ধার করতে চায়, তারা ব্যতীত অন্য আর এক দল লোকের বর্ণনা এই আয়াতগুলির মাধ্যমে করা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণীর এই লোকেরা হয় অত্যন্ত হীন ও নীচ চরিত্রের। তাদের সত্য সম্বন্ধে কোন ধারণাই নাই। ফলে বিশ্বস্ততার অর্থ হৃদয়ঙ্গম করতেও তারা অপারগ। এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এরা মিথ্যাবাদী, কথায় কথায় সকলের সাথে বন্ধুত্বের শপথ করে এবং সুবিধাজনক যে কোন কার্যের প্রতি বিশ্বস্ততা ঘোষণা করে। একই সাথে তারা বন্ধু ও বিশ্বস্তদের পশ্চাতে কুৎসা রটনা করে এবং পরনিন্দা করে। যার ফলে সহজ সরল মানুষের মাঝে, সহজেই অশান্তির সৃষ্টি করে থাকে। এরা কল্যাণে বাঁধা দান করে, পাপ কার্যকে এদের চক্ষে মনোহর বলে দৃশ্যমান হয়। সে শুধুমাত্র যে কল্যাণে বাঁধাই দান করবে তাই-ই নয়, সে অকল্যাণের পথে দৃঢ়ভাবে অগ্রসর হবে এবং অপর লোককেও কল্যাণের পথে অগ্রসর হতে বাধা দান করবে। যদি কেউ তাকে এই কাজে বাধা দান করে তবে সে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে, তার রূঢ় স্বভাব মানুষকে আহত করে। তার স্বভাবের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হবে সে অপরের ব্যাপারে নাক গলানোতে কুখ্যাতি অর্জন করবে। যেখানে তার কোনও অধিকার নাই, সেখানেও সে সম্পর্ক, অধিকার, ক্ষমতা দাবী করে। এদের প্রচুর অর্থ সম্পদ থাকতে পারে, কিন্তু এদের ধারণায় ধর্ম হচ্ছে হাসি, খেলার বস্তু, বৃদ্ধদের এবং কুসংস্কারচ্ছন্ন ব্যক্তিরাই ধর্মকে আকঁড়ে ধরে এই বিকৃত ধারণাতে তারা পার্থিব জীবনকে অতিবাহিত করবে।

 

আয়াতঃ 068.013

কঠোর স্বভাব, তদুপরি কুখ্যাত;
Cruel, after all that base-born (of illegitimate birth),

عُتُلٍّ بَعْدَ ذَلِكَ زَنِيمٍ
AAutullin baAAda thalika zaneemin

YUSUFALI: Violent (and cruel),- with all that, base-born,-
PICKTHAL: Greedy therewithal, intrusive.
SHAKIR: Ignoble, besides all that, base-born;
KHALIFA: Unappreciative, and greedy.

১১। কুৎসা রটনা করে, যে অপবাদ প্রচার করে,

১২। যে কল্যাণ কাজে বাঁধা দান করে, যে সীমালংঘন করে ; পাপে নিমগ্ন থাকে,

১৩। রূঢ় [ এবং নিষ্ঠুর ] স্বভাব ৫৬০১; তদুপরি কুখ্যাত ;

৫৬০১। আত্ম-প্রবঞ্চনাকারী ও যারা সহজেই কার্য উদ্ধার করতে চায়, তারা ব্যতীত অন্য আর এক দল লোকের বর্ণনা এই আয়াতগুলির মাধ্যমে করা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণীর এই লোকেরা হয় অত্যন্ত হীন ও নীচ চরিত্রের। তাদের সত্য সম্বন্ধে কোন ধারণাই নাই। ফলে বিশ্বস্ততার অর্থ হৃদয়ঙ্গম করতেও তারা অপারগ। এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এরা মিথ্যাবাদী, কথায় কথায় সকলের সাথে বন্ধুত্বের শপথ করে এবং সুবিধাজনক যে কোন কার্যের প্রতি বিশ্বস্ততা ঘোষণা করে। একই সাথে তারা বন্ধু ও বিশ্বস্তদের পশ্চাতে কুৎসা রটনা করে এবং পরনিন্দা করে। যার ফলে সহজ সরল মানুষের মাঝে, সহজেই অশান্তির সৃষ্টি করে থাকে। এরা কল্যাণে বাঁধা দান করে, পাপ কার্যকে এদের চক্ষে মনোহর বলে দৃশ্যমান হয়। সে শুধুমাত্র যে কল্যাণে বাঁধাই দান করবে তাই-ই নয়, সে অকল্যাণের পথে দৃঢ়ভাবে অগ্রসর হবে এবং অপর লোককেও কল্যাণের পথে অগ্রসর হতে বাধা দান করবে। যদি কেউ তাকে এই কাজে বাধা দান করে তবে সে অগ্নিমূর্তি ধারণ করে, তার রূঢ় স্বভাব মানুষকে আহত করে। তার স্বভাবের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হবে সে অপরের ব্যাপারে নাক গলানোতে কুখ্যাতি অর্জন করবে। যেখানে তার কোনও অধিকার নাই, সেখানেও সে সম্পর্ক, অধিকার, ক্ষমতা দাবী করে। এদের প্রচুর অর্থ সম্পদ থাকতে পারে, কিন্তু এদের ধারণায় ধর্ম হচ্ছে হাসি, খেলার বস্তু, বৃদ্ধদের এবং কুসংস্কারচ্ছন্ন ব্যক্তিরাই ধর্মকে আকঁড়ে ধরে এই বিকৃত ধারণাতে তারা পার্থিব জীবনকে অতিবাহিত করবে।

 

আয়াতঃ 068.014

এ কারণে যে, সে ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততির অধিকারী।
(He was so) because he had wealth and children.

أَن كَانَ ذَا مَالٍ وَبَنِينَ
An kana tha malin wabaneena

YUSUFALI: Because he possesses wealth and (numerous) sons.
PICKTHAL: It is because he is possessed of wealth and children
SHAKIR: Because he possesses wealth and sons.
KHALIFA: Even though he possessed enough money and children.

১৪। কারণ ৫৬০২, সে ধন -সম্পদ ও সন্তান -সন্ততিতে সমৃদ্ধশালী।

৫৬০২। “কারণ” এই বাক্যটি ” লোকের কথা শুনো না ” [ ৬৮: ১০ ] এই বাক্যটির সাথে সংযুক্ত অথবা “রূঢ় স্বভাব এবং তদুপরি কুখ্যাত” [ ৬৮ : ১৩ ] আয়াতের সাথে সংযুক্ত হতে পারে। প্রথম ক্ষেত্রে অর্থ দাঁড়ায় ” অনুসরণ করোনা তার যে কথায় কথায় শপথ করে, এই জন্য যে সে ধন-সম্পদ ও সন্তান সন্ততিতে সমৃদ্ধশালী।” শেষোক্ত ক্ষেত্রে অর্থ দাঁড়াবে তার “রূঢ় স্বভাব এবং তদুপরি কুখ্যাত; এই জন্য যে সে ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততিতে সমৃদ্ধিশালী।” এই উভয় ক্ষেত্রে এসব লোক আল্লাহ্‌র চক্ষে পাপীরূপে চিহ্নিত।

 

আয়াতঃ 068.015

তার কাছে আমার আয়াত পাঠ করা হলে সে বলে; সেকালের উপকথা।
When Our Verses (of the Qur’ân) are recited to him, he says: ”Tales of the men of old!”

إِذَا تُتْلَى عَلَيْهِ آيَاتُنَا قَالَ أَسَاطِيرُ الْأَوَّلِينَ
Itha tutla AAalayhi ayatuna qala asateeru al-awwaleena

YUSUFALI: When to him are rehearsed Our Signs, “Tales of the ancients”, he cries!
PICKTHAL: That, when Our revelations are recited unto him, he saith: Mere fables of the men of old.
SHAKIR: When Our communications are recited to him, he says: Stories of those of yore.
KHALIFA: When our revelations are recited to him, he says, “Tales from the past!”

১৫। যখন তার নিকট আমার আয়াতসমূহ আবৃত্তি করা হয়, ৫৬০৩ সে চীৎকার করে বলে, ” ইহা তো প্রাচীন কালের উপকথা মাত্র।” ৫৬০৪

৫৬০৩। আল্লাহ্‌র নিদর্শন পৃথিবীর সর্বত্র প্রকৃতির মাঝে ছড়ানো আছে। আল্লাহ্‌ মানুষের হৃদয় ও আত্মার মাঝে অবস্থান করেন এবং তাঁর প্রতি আহ্বান করেন। আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ সমূহ -ই হচ্ছে কোরাণের আয়াতসমূহ যা আল্লাহ্‌র নিদর্শনের প্রতীক।

৫৬০৪। দেখুন [ ৬ : ২৫ ] আয়াত।

 

আয়াতঃ 068.016

আমি তার নাসিকা দাগিয়ে দিব।
We shall brand him over the nose!

سَنَسِمُهُ عَلَى الْخُرْطُومِ
Sanasimuhu AAala alkhurtoomi

YUSUFALI: Soon shall We brand (the beast) on the snout!
PICKTHAL: We shall brand him on the nose.
SHAKIR: We will brand him on the nose.
KHALIFA: We will mark his face.

১৬। শীঘ্রই আমি উহার শুঁড় দাগিয়ে দেবো ৫৬০৫

৫৬০৫। হাতীর শুঁড় হচ্ছে সর্বাপেক্ষা অনুভূতিশীল অংগ। এখানে পাপীদের জন্তু জানোয়ারের সাথে তুলনা করা হয়েছে, এবং সর্বাপেক্ষা অনুভূতিশীল অংগ দ্বারা তাকে শাস্তি বিধান করা হবে।

 

আয়াতঃ 068.017

আমি তাদেরকে পরীক্ষা করেছি, যেমন পরীক্ষা করেছি উদ্যানওয়ালাদের, যখন তারা শপথ করেছিল যে, সকালে বাগানের ফল আহরণ করবে,
Verily, We have tried them as We tried the people of the garden, when they swore to pluck the fruits of the (garden) in the morning,

إِنَّا بَلَوْنَاهُمْ كَمَا بَلَوْنَا أَصْحَابَ الْجَنَّةِ إِذْ أَقْسَمُوا لَيَصْرِمُنَّهَا مُصْبِحِينَ
Inna balawnahum kama balawna as-haba aljannati ith aqsamoo layasrimunnaha musbiheena

YUSUFALI: Verily We have tried them as We tried the People of the Garden, when they resolved to gather the fruits of the (garden) in the morning.
PICKTHAL: Lo! We have tried them as We tried the owners of the garden when they vowed that they would pluck its fruit next morning,
SHAKIR: Surely We will try them as We tried the owners of the garden, when they swore that they would certainly cut off the produce in the morning,
KHALIFA: We have tested them like we tested the owners of the garden who swore that they will harvest it in the morning.

১৭। নিশ্চয়ই আমি তাদের পরীক্ষা করেছি, যেভাবে পরীক্ষা করেছিলাম উদ্যান অধিপতিদের,যখন তারা শপথ করেছিলো যে, তারা প্রত্যুষে তাদের বাগানের ফল আহরণ করবে। ৫৬০৬

৫৬০৬। এই আয়াত ও পরবর্তী আয়াতগুলি দ্বারা একটি অসাধারণ বৈশিষ্ট্য মন্ডিত নীতিগর্ভমূলক রূপক কাহিনীর মাধ্যমে উপদেশ প্রদান করা হয়েছে। ফল বাগানের মালিকদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এর মাধ্যমে মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়েছে,

১) মানুষের “সীমিত স্বাধীন ইচ্ছার ” প্রতি ; যে ইচ্ছাকে প্রয়োগ করে সে ইচ্ছা করলে ভালোকে গ্রহণ ও মন্দকে বর্জন করতে পারে।

২) মানুষের ব্যক্তিগত দায় দায়িত্ব,

৩) আল্লাহ্‌র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পন করা,

৪) দুঃখ কষ্ট ভোগের মধ্যে দিয়ে আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ লাভ,

৪) সর্বশেষে আধ্যাত্মিক শাস্তি যা একদিনে নিপতিত হয় না, যা দীর্ঘদিন ধীরে ধীরে আসে, তবে প্রতি পদক্ষেপেই আল্লাহ্‌ অনুতাপের দরজা উম্মুক্ত রেখেছেন।

এই রূপক কাহিনীতে আরও বলা হয়েছে মানুষের লোভ, স্বার্থপরতা, অমনোযোগীতা এবং অপরের উপরে দোষারোপ করার প্রবণতা। মানুষের এ সব দুর্বলতাকে তুলে ধরার পরে বলা হয়েছে আল্লাহ্‌র করুণা সীমাহীন। ভবিষ্যতে ধ্বংসপ্রাপ্ত হারানো বাগানের থেকে আরও উন্নত বাগান আল্লাহ্‌ দান করবেন। তবে শর্ত হবে যদি সে অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধন করে এবং আল্লাহ্‌র ইচ্ছার কাছে পরিপূর্ণ আত্মসমর্পন করে। কিন্তু যদি সে আল্লাহ্‌র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পন না করে, তবে ইহকালের বিপদ বিপর্যয় অপেক্ষা পরলোকে ভয়াবহ শাস্তি তার জন্য অপেক্ষা করছে।

 

আয়াতঃ 068.018

ইনশাআল্লাহ না বলে।
Without saying: Inshâ’ Allâh (If Allâh will).

وَلَا يَسْتَثْنُونَ
Wala yastathnoona

YUSUFALI: But made no reservation, (“If it be Allah’s Will”).
PICKTHAL: And made no exception (for the Will of Allah);
SHAKIR: And were not willing to set aside a portion (for the poor).
KHALIFA: They were so absolutely sure.

১৮। কিন্তু তারা ‘ইন্‌শাআল্লাহ্‌ ‘ বলে নাই ৫৬০৭।

৫৬০৭। এ কথা সকলের স্মরণ রাখা কর্তব্য যে, আমাদের সকল পরিকল্পনা এবং কার্যকরী পদক্ষেপ এবং সাফল্য সম্পূর্ণ আল্লাহ্‌র ইচ্ছার ও পরিকল্পনার উপরে নির্ভরশীল। আল্লাহ্‌র বিশ্বজনীন পরিকল্পনা কার্যকর হবেই। যারা বোকা শুধু তারাই ভাবতে পারে এবং গোপনে ষড়যন্ত্র করতে পারে যে, তারা প্রতারণার মাধ্যমে গরীবকে তার অধিকারচ্যুত করবে। কারণ গরীবের এই অধিকার আল্লাহ্‌ প্রদত্ত অধিকার। তারা ভুলে যায় যে, আল্লাহ্‌ প্রদত্ত অধিকারকে কেউ কেড়ে নিতে পারে না। কেউ তা করতে গেলে সে নিজেই হয় ক্ষতিগ্রস্থ। সুতারাং আল্লাহ্‌র ইচ্ছার কাছে আত্মসমর্পন -ই হচ্ছে জীবনের প্রকৃত শিক্ষা।

 

আয়াতঃ 068.019

অতঃপর আপনার পালনকর্তার পক্ষ থেকে বাগানে এক বিপদ এসে পতিত হলো। যখন তারা নিদ্রিত ছিল।
Then there passed by on the (garden) something (fire) from your Lord at night and burnt it while they were asleep.

فَطَافَ عَلَيْهَا طَائِفٌ مِّن رَّبِّكَ وَهُمْ نَائِمُونَ
Fatafa AAalayha ta-ifun min rabbika wahum na-imoona

YUSUFALI: Then there came on the (garden) a visitation from thy Lord, (which swept away) all around, while they were asleep.
PICKTHAL: Then a visitation from thy Lord came upon it while they slept
SHAKIR: Then there encompassed it a visitation from your Lord while they were sleeping.
KHALIFA: A passing (storm) from your Lord passed by it while they were asleep.

১৯। অতঃপর তোমার প্রভুর নিকট থেকে [ বাগানে ] এক বিপর্যয় হানা দিল ৫৬০৮, [ যা সব কিছুকে ধ্বংস করলো ], যখন তারা নিদ্রিত ছিলো।

৫৬০৮। প্রচন্ড প্রাকৃতিক বিপর্যয় ফল বাগানে হানা দিয়ে সমস্ত ফল ও ফলগাছ এক কথায় সম্পূর্ণ বাগানকে তছনছ করে দিয়েছিলো। এই ধ্বংসজ্ঞ এতটাই প্রবল ছিলো যে বাগানের মালিকরাও তাদের বাগানকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলো না।

 

আয়াতঃ 068.020

ফলে সকাল পর্যন্ত হয়ে গেল ছিন্নবিচ্ছিন্ন তৃণসম।
So the (garden) became black by the morning, like a pitch dark night (in complete ruins).

فَأَصْبَحَتْ كَالصَّرِيمِ
Faasbahat kaalssareemi

YUSUFALI: So the (garden) became, by the morning, like a dark and desolate spot, (whose fruit had been gathered).
PICKTHAL: And in the morning it was as if plucked.
SHAKIR: So it became as black, barren land.
KHALIFA: By morning, it was barren.

২০। সুতারাং [ বাগানটি ] সকালে [ দগ্ধ হয়ে ] কৃষ্ণবর্ণ, জনশূন্য স্থানে পরিণত হলো।

২১। প্রত্যুষে উহারা একে অপরকে ডেকে বললো, –

২২। ” তোমরা যদি ফল আহরণ করতে চাও, তবে সকাল সকাল বাগানে চল।” ৫৬০৯

৫৬০৯। প্রত্যুষে ঘুম থেকে জেগে বাগানের মালিকরা তাদের বাগানের পরিণতি সম্পর্কে অবহিত ছিলো না। সুতারাং তারা তাদের স্বার্থপর স্বপ্নে বিভোর ছিলো। তারা প্রতুষে ফল আহরণ করার পরিকল্পনা করে কারণ তাদের ধারণা ছিলো তাহলে তারা গরীব ও অভাবগ্রস্থদের তাদের অধিকার থেকে বিচ্যুত করতে পারবে।

 

আয়াতঃ 068.021

সকালে তারা একে অপরকে ডেকে বলল,
Then they called out one to another as soon as the morning broke,

فَتَنَادَوا مُصْبِحِينَ
Fatanadaw musbiheena

YUSUFALI: As the morning broke, they called out, one to another,-
PICKTHAL: And they cried out one unto another in the morning,
SHAKIR: And they called out to each other in the morning,
KHALIFA: They called on each other in the morning.

২০। সুতারাং [ বাগানটি ] সকালে [ দগ্ধ হয়ে ] কৃষ্ণবর্ণ, জনশূন্য স্থানে পরিণত হলো।

২১। প্রত্যুষে উহারা একে অপরকে ডেকে বললো, –

২২। ” তোমরা যদি ফল আহরণ করতে চাও, তবে সকাল সকাল বাগানে চল।” ৫৬০৯

৫৬০৯। প্রত্যুষে ঘুম থেকে জেগে বাগানের মালিকরা তাদের বাগানের পরিণতি সম্পর্কে অবহিত ছিলো না। সুতারাং তারা তাদের স্বার্থপর স্বপ্নে বিভোর ছিলো। তারা প্রতুষে ফল আহরণ করার পরিকল্পনা করে কারণ তাদের ধারণা ছিলো তাহলে তারা গরীব ও অভাবগ্রস্থদের তাদের অধিকার থেকে বিচ্যুত করতে পারবে।

 

আয়াতঃ 068.022

তোমরা যদি ফল আহরণ করতে চাও, তবে সকাল সকাল ক্ষেতে চল।
Saying: ”Go to your tilth in the morning, if you would pluck the fruits.”

أَنِ اغْدُوا عَلَى حَرْثِكُمْ إِن كُنتُمْ صَارِمِينَ
Ani ighdoo AAala harthikum in kuntum sarimeena

YUSUFALI: “Go ye to your tilth (betimes) in the morning, if ye would gather the fruits.”
PICKTHAL: Saying: Run unto your field if ye would pluck (the fruit).
SHAKIR: Saying: Go early to your tilth if you would cut (the produce).
KHALIFA: “Let us harvest the crop.”

২০। সুতারাং [ বাগানটি ] সকালে [ দগ্ধ হয়ে ] কৃষ্ণবর্ণ, জনশূন্য স্থানে পরিণত হলো।

২১। প্রত্যুষে উহারা একে অপরকে ডেকে বললো, –

২২। ” তোমরা যদি ফল আহরণ করতে চাও, তবে সকাল সকাল বাগানে চল।” ৫৬০৯

৫৬০৯। প্রত্যুষে ঘুম থেকে জেগে বাগানের মালিকরা তাদের বাগানের পরিণতি সম্পর্কে অবহিত ছিলো না। সুতারাং তারা তাদের স্বার্থপর স্বপ্নে বিভোর ছিলো। তারা প্রতুষে ফল আহরণ করার পরিকল্পনা করে কারণ তাদের ধারণা ছিলো তাহলে তারা গরীব ও অভাবগ্রস্থদের তাদের অধিকার থেকে বিচ্যুত করতে পারবে।

 

আয়াতঃ 068.023

অতঃপর তারা চলল ফিসফিস করে কথা বলতে বলতে,
So they departed, conversing in secret low tones (saying),

فَانطَلَقُوا وَهُمْ يَتَخَافَتُونَ
Faintalaqoo wahum yatakhafatoona

YUSUFALI: So they departed, conversing in secret low tones, (saying)-
PICKTHAL: So they went off, saying one unto another in low tones:
SHAKIR: So they went, while they consulted together secretly,
KHALIFA: On their way, they confided to each other.

২৩। সুতারাং তারা চুপি চুপি এই কথা বলতে বলতে চললো,

২৪। “আজকে যেনো কোন অভাবগ্রস্থ ব্যক্তি তোমাদের [উদ্যানে ] প্রবেশ করতে না পারে।” ৫৬১০

৫৬১০। সম্পদশালীর সম্পদে গরীবের অধিকার আছে। ফল বাগানের কাহিনীর মাধ্যমে এই সত্যকে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রাচ্য দেশে জমির মালিক ফসল তোলার পরে জমিতে যে ফসল ঝরে পড়ে থাকে তা কুড়িয়ে নেয় না। তা গরীবদের জন্য রেখে দেয়। এই রূপক কাহিনীতে দেখানো হয়েছে যে ফল বাগানের সম্পদশালী মালিকরা গরীবের সামান্য অধিকারকে বিচ্যুত করার মানসে প্রত্যুষে কেউ জাগার পূর্বেই ফল সংগ্রহ করতে মনস্ত করে। তাদের এই অতি লোভকেই আল্লাহ্‌ শাস্তি দান করেন। তারা গরীবকে প্রতারিত করতে চেয়েছিলো, কিন্তু তা করতে চেয়েছিলো গোপনে। সুতারাং কেউ জেগে ওঠার পূর্বেই তারা তাদের ফসল ঘরে তোলার প্রয়াসী ছিলো, যেনো বাইরের লোকে তাদের এই প্রতারণা ধরতে না পারে।

উপদেশ : মানুষ ভুলে যায় যে অর্থ, সম্পদ, মান, মর্যাদা সবই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌র দান। তবে সে দান অর্জন করতে হয় নিজস্ব পরিশ্রম ও শক্তির মাধ্যমে। আল্লাহ্‌র দান বা নেয়ামত যে লাভ করে সে তার দায়িত্ব লাভ করে। গরীবের অধিকার রক্ষার মাধ্যমে সে তার সেই দায়িত্ব থেকে মুক্তি লাভ করে।

 

আয়াতঃ 068.024

অদ্য যেন কোন মিসকীন ব্যক্তি তোমাদের কাছে বাগানে প্রবেশ করতে না পারে।
No Miskîn (poor man) shall enter upon you into it today.

أَن لَّا يَدْخُلَنَّهَا الْيَوْمَ عَلَيْكُم مِّسْكِينٌ
An la yadkhulannaha alyawma AAalaykum miskeenun

YUSUFALI: “Let not a single indigent person break in upon you into the (garden) this day.”
PICKTHAL: No needy man shall enter it to-day against you.
SHAKIR: Saying: No poor man shall enter it today upon you.
KHALIFA: That from then on, none of them would be poor.

২৩। সুতারাং তারা চুপি চুপি এই কথা বলতে বলতে চললো,

২৪। “আজকে যেনো কোন অভাবগ্রস্থ ব্যক্তি তোমাদের [উদ্যানে ] প্রবেশ করতে না পারে।” ৫৬১০

৫৬১০। সম্পদশালীর সম্পদে গরীবের অধিকার আছে। ফল বাগানের কাহিনীর মাধ্যমে এই সত্যকে প্রকাশ করা হয়েছে। প্রাচ্য দেশে জমির মালিক ফসল তোলার পরে জমিতে যে ফসল ঝরে পড়ে থাকে তা কুড়িয়ে নেয় না। তা গরীবদের জন্য রেখে দেয়। এই রূপক কাহিনীতে দেখানো হয়েছে যে ফল বাগানের সম্পদশালী মালিকরা গরীবের সামান্য অধিকারকে বিচ্যুত করার মানসে প্রত্যুষে কেউ জাগার পূর্বেই ফল সংগ্রহ করতে মনস্ত করে। তাদের এই অতি লোভকেই আল্লাহ্‌ শাস্তি দান করেন। তারা গরীবকে প্রতারিত করতে চেয়েছিলো, কিন্তু তা করতে চেয়েছিলো গোপনে। সুতারাং কেউ জেগে ওঠার পূর্বেই তারা তাদের ফসল ঘরে তোলার প্রয়াসী ছিলো, যেনো বাইরের লোকে তাদের এই প্রতারণা ধরতে না পারে।

উপদেশ : মানুষ ভুলে যায় যে অর্থ, সম্পদ, মান, মর্যাদা সবই সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌র দান। তবে সে দান অর্জন করতে হয় নিজস্ব পরিশ্রম ও শক্তির মাধ্যমে। আল্লাহ্‌র দান বা নেয়ামত যে লাভ করে সে তার দায়িত্ব লাভ করে। গরীবের অধিকার রক্ষার মাধ্যমে সে তার সেই দায়িত্ব থেকে মুক্তি লাভ করে।

 

আয়াতঃ 068.025

তারা সকালে লাফিয়ে লাফিয়ে সজোরে রওয়ানা হল।
And they went in the morning with strong intention, thinking that they have power (to prevent the poor taking anything of the fruits therefrom).

وَغَدَوْا عَلَى حَرْدٍ قَادِرِينَ
Waghadaw AAala hardin qadireena

YUSUFALI: And they opened the morning, strong in an (unjust) resolve.
PICKTHAL: They went betimes, strong in (this) purpose.
SHAKIR: And in the morning they went, having the power to prevent.
KHALIFA: They were so absolutely sure of their harvest.

২৫। তারা তাদের সকাল শুরু করলো [ অন্যায় ] প্রতিজ্ঞা দ্বারা;

২৬। কিন্তু যখন তারা [ উদ্যানটি ] দেখতে পেলো, তারা বলেছিলো, ” আমরা নিশ্চয়ই আমাদের পথ হারিয়েছি। ৫৬১১

৫৬১১। বাগানের মালিকরা যখন বাগানের অবস্থা দর্শন করলো তখন তারা তাদের বাগানকে সনাক্ত করতে সক্ষম হলো না কারণ তা ছিলো অত্যন্ত বিপর্যস্ত অবস্থায়। তাদের মনে হলো তারা অন্য কোনও স্থানে আগমন করেছে, তাদের সেই ফলে ভরা উদ্যান সেটা নয়। কোথায় তারা সোনার ফসল ঘরে তুলবে আর কোথায় তাদের এই বিধ্বস্ত, বিপর্যস্ত, ধ্বংসপ্রাপ্ত বাগান। বাগানের অবস্থা দর্শনে প্রথমে তাদের ব্যক্তিগত ক্ষতির পরিমাণ সম্বন্ধে আতঙ্ক উপস্থিত হলো; তাদের পরিশ্রম, তাদের মূলধন সব বৃথা।

উপদেশ : তারা অন্যকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চেয়েছিলো ফলে আল্লাহ্‌র ক্রোধে তারা নিজেরাও ক্ষতিগ্রস্থ হলো। আল্লাহ্‌র এই নীতি সর্বকালের সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য। সুশীল ও উন্নত সেই সমাজ যে সমাজে সকলের অধিকারকে সমুন্নত রাখা হয়। আল্লাহ্‌র আশীর্বাদে সেই সমাজ হয় ধন্য। সে কারণেই পাশ্চাত্য সমাজ আজ এতটা উন্নত।

 

আয়াতঃ 068.026

অতঃপর যখন তারা বাগান দেখল, তখন বললঃ আমরা তো পথ ভূলে গেছি।
But when they saw the (garden), they said: ”Verily, we have gone astray,”

فَلَمَّا رَأَوْهَا قَالُوا إِنَّا لَضَالُّونَ
Falamma raawha qaloo inna ladalloona

YUSUFALI: But when they saw the (garden), they said: “We have surely lost our way:
PICKTHAL: But when they saw it, they said: Lo! we are in error!
SHAKIR: But when they saw it, they said: Most surely we have gone astray
KHALIFA: But when they saw it, they said, “We were so wrong!

২৫। তারা তাদের সকাল শুরু করলো [ অন্যায় ] প্রতিজ্ঞা দ্বারা;

২৬। কিন্তু যখন তারা [ উদ্যানটি ] দেখতে পেলো, তারা বলেছিলো, ” আমরা নিশ্চয়ই আমাদের পথ হারিয়েছি। ৫৬১১

৫৬১১। বাগানের মালিকরা যখন বাগানের অবস্থা দর্শন করলো তখন তারা তাদের বাগানকে সনাক্ত করতে সক্ষম হলো না কারণ তা ছিলো অত্যন্ত বিপর্যস্ত অবস্থায়। তাদের মনে হলো তারা অন্য কোনও স্থানে আগমন করেছে, তাদের সেই ফলে ভরা উদ্যান সেটা নয়। কোথায় তারা সোনার ফসল ঘরে তুলবে আর কোথায় তাদের এই বিধ্বস্ত, বিপর্যস্ত, ধ্বংসপ্রাপ্ত বাগান। বাগানের অবস্থা দর্শনে প্রথমে তাদের ব্যক্তিগত ক্ষতির পরিমাণ সম্বন্ধে আতঙ্ক উপস্থিত হলো; তাদের পরিশ্রম, তাদের মূলধন সব বৃথা।

উপদেশ : তারা অন্যকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চেয়েছিলো ফলে আল্লাহ্‌র ক্রোধে তারা নিজেরাও ক্ষতিগ্রস্থ হলো। আল্লাহ্‌র এই নীতি সর্বকালের সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য। সুশীল ও উন্নত সেই সমাজ যে সমাজে সকলের অধিকারকে সমুন্নত রাখা হয়। আল্লাহ্‌র আশীর্বাদে সেই সমাজ হয় ধন্য। সে কারণেই পাশ্চাত্য সমাজ আজ এতটা উন্নত।

 

আয়াতঃ 068.027

বরং আমরা তো কপালপোড়া,
(Then they said): ”Nay! Indeed we are deprived of (the fruits)!”

بَلْ نَحْنُ مَحْرُومُونَ
Bal nahnu mahroomoona

YUSUFALI: “Indeed we are shut out (of the fruits of our labour)!”
PICKTHAL: Nay, but we are desolate!
SHAKIR: Nay! we are made to suffer privation.
KHALIFA: “Now, we have nothing!”

২৭। “আমরা বঞ্চিত হয়েছি [ আমাদের ফসল ও শ্রমফল থেকে]।” ৫৬১২

৫৬১২। দেখুন অনুরূপ আয়াত সূরা [ ৫৬ : ৬৭ ] এবং উপরের টিকা।

 

আয়াতঃ 068.028

তাদের উত্তম ব্যক্তি বললঃ আমি কি তোমাদেরকে বলিনি? এখনও তোমরা আল্লাহ তা’আলার পবিত্রতা বর্ণনা করছো না কেন?
The best among them said: ”Did I not tell you: why do you not say: Inshâ’ Allâh (If Allâh will).”

قَالَ أَوْسَطُهُمْ أَلَمْ أَقُل لَّكُمْ لَوْلَا تُسَبِّحُونَ
Qala awsatuhum alam aqul lakum lawla tusabbihoona

YUSUFALI: Said one of them, more just (than the rest): “Did I not say to you, ‘Why not glorify (Allah)?’”
PICKTHAL: The best among them said: Said I not unto you: Why glorify ye not (Allah)?
SHAKIR: The best of them said: Did I not say to you, Why do you not glorify (Allah)?
KHALIFA: The righteous among them said, “If only you had glorified (God)!”

২৮। উহাদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিটি বলেছিলো, ৫৬১৩ “আমি কি তোমাদের বলি নাই, কেন তোমরা [আল্লাহ্‌র ] প্রশংসা বর্ণনা করছ না ? ”

৫৬১৩। এ সব অন্যায়কারী ফল বাগানের মালিকদের মধ্যে একজন ছিলো কম অন্যায়কারী। তাকে আমরা সৎকর্মপরায়ণ রূপে অভিহিত করবো না, কারণ সেও ঐ সব ষড়যন্ত্রকারীদের সাথে যুক্ত ছিলো। তবে তার মাঝে বিবেক জাগ্রত ছিলো। সে কারণেই সে তার নিজের ভ্রান্তিকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলো। সে পূর্বেই অন্যান্যদের গরীবদের বঞ্চিত করার এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সাবধান করেছিলো সত্য। কিন্তু সে অন্যান্যদের বিরুদ্ধাচারণ না করে তাদের সাথে তাদের চক্রান্তে যোগদান করে। সুতারাং সেও ঐ একই পরিণাম ভোগ করে। একেই বলে, ” সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।”

 

আয়াতঃ 068.029

তারা বললঃ আমরা আমাদের পালনকর্তার পবিত্রতা ঘোষণা করছি, নিশ্চিতই আমরা সীমালংঘনকারী ছিলাম।
They said: ”Glory to Our Lord! Verily, we have been Zâlimûn (wrong-doers, etc.).”

قَالُوا سُبْحَانَ رَبِّنَا إِنَّا كُنَّا ظَالِمِينَ
Qaloo subhana rabbina inna kunna thalimeena

YUSUFALI: They said: “Glory to our Lord! Verily we have been doing wrong!”
PICKTHAL: They said: Glorified be our Lord! Lo! we have been wrong-doers.
SHAKIR: They said: Glory be to our Lord, surely we were unjust.
KHALIFA: They said, “Glory be to our Lord. We have transgressed.”

২৯। তারা বলেছিলো, ” আমরা আমাদের প্রভুর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি। অবশ্যই আমরা পাপ করেছি।”

৩০। অতঃপর তারা একে অপরকে দোষারোপ করতে লাগলো। ৫৬১৪

৫৬১৪। মানুষের সাধারণ ধর্ম হচ্ছে যখন তাদেরকে লোভ, স্বার্থপরতা ও যে কোন অন্যায়ের জন্য শাস্তি দান করা হয়, তখন তারা নিজেদের দোষকে অপরের প্রতি আরোপ করতে সচেষ্ট হয়। এ ক্ষেত্রে ফল বাগানের মালিকদের মধ্যে একজন ছিলো অপেক্ষাকৃত ভালো। সে সম্পূর্ণ পরিকল্পনাটির অন্যায়কে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলো এবং অনুধাবন করেছিলো যে তা হচ্ছে আল্লাহ্‌র হুকুমকে প্রত্যাখান করার মত নৈতিক অপরাধ। কিন্তু যেহেতু সে বাড়তি লাভের লোভকে সংবরণ করতে পারে নাই, সুতারাং সে এই কাজের দায় দায়িত্ব এড়াতে পারে না, সেও শাস্তির যোগ্য।

উপদেশ : অন্যায়কারীরা সর্বদা ভালো কাজের সুফল ভোগে আগ্রহী থাকবে, কিন্তু বিপদে একে অপরের প্রতি দোষারোপ করবে।

 

আয়াতঃ 068.030

অতঃপর তারা একে অপরকে ভৎর্সনা করতে লাগল।
Then they turned, one against another, in blaming.

فَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ يَتَلَاوَمُونَ
Faaqbala baAAduhum AAala baAAdin yatalawamoona

YUSUFALI: Then they turned, one against another, in reproach.
PICKTHAL: Then some of them drew near unto others, self-reproaching.
SHAKIR: Then some of them advanced against others, blaming each other.
KHALIFA: They started to blame each other.

২৯। তারা বলেছিলো, ” আমরা আমাদের প্রভুর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি। অবশ্যই আমরা পাপ করেছি।”

৩০। অতঃপর তারা একে অপরকে দোষারোপ করতে লাগলো। ৫৬১৪

৫৬১৪। মানুষের সাধারণ ধর্ম হচ্ছে যখন তাদেরকে লোভ, স্বার্থপরতা ও যে কোন অন্যায়ের জন্য শাস্তি দান করা হয়, তখন তারা নিজেদের দোষকে অপরের প্রতি আরোপ করতে সচেষ্ট হয়। এ ক্ষেত্রে ফল বাগানের মালিকদের মধ্যে একজন ছিলো অপেক্ষাকৃত ভালো। সে সম্পূর্ণ পরিকল্পনাটির অন্যায়কে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিলো এবং অনুধাবন করেছিলো যে তা হচ্ছে আল্লাহ্‌র হুকুমকে প্রত্যাখান করার মত নৈতিক অপরাধ। কিন্তু যেহেতু সে বাড়তি লাভের লোভকে সংবরণ করতে পারে নাই, সুতারাং সে এই কাজের দায় দায়িত্ব এড়াতে পারে না, সেও শাস্তির যোগ্য।

উপদেশ : অন্যায়কারীরা সর্বদা ভালো কাজের সুফল ভোগে আগ্রহী থাকবে, কিন্তু বিপদে একে অপরের প্রতি দোষারোপ করবে।

 

আয়াতঃ 068.031

তারা বললঃ হায়! দুর্ভোগ আমাদের আমরা ছিলাম সীমাতিক্রমকারী।
They said: ”Woe to us! Verily, we were Tâghûn (transgressors and disobedient, etc.)

قَالُوا يَا وَيْلَنَا إِنَّا كُنَّا طَاغِينَ
Qaloo ya waylana inna kunna tagheena

YUSUFALI: They said: “Alas for us! We have indeed transgressed!
PICKTHAL: They said: Alas for us! In truth we were outrageous.
SHAKIR: Said they: O woe to us! surely we were inordinate:
KHALIFA: They said, “Woe to us. We sinned.

৩১। তারা বলেছিলো,” হায় ! দুর্ভাগ্য আমাদের। আমরা তো ছিলাম সীমালংঘনকারী। ”

৩২। “সম্ভবতঃ আমাদের প্রভু এর পরিবর্তে আমাদের এর থেকেও উৎকৃষ্ট [ উদ্যান ] দেবেন। আমরা [ অনুতাপের মাধ্যমে ] তাঁর অভিমুখী হলাম।” ৫৬১৫

৫৬১৫। আল্লাহ্‌ অসীম করুণার আঁধার। যদি পাপীরা প্রকৃত পক্ষেই অনুতপ্ত হয়, তবে আল্লাহ্‌ সর্বোচ্চ পাপকেও ক্ষমা করে দেন। যদি তা প্রকৃত অনুতাপ না হয়ে মোনাফেকী হয়, তবে তাদের কৃত পাপের উপরে মোনাফেকীর পাপও বর্তাবে।

এই রূপক কাহিনীর মাধ্যমে যে চিরসত্যকে আমাদের সম্মুখে তুলে ধরা হয়েছে তা হচ্ছে : বাগানের মালিকরা ছিলো অত্যন্ত স্বার্থপর ব্যক্তি। আর স্বার্থপর ব্যক্তিদের অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের ন্যায় তারাও ছিলো অহংকার ও আত্মগর্বে গর্বস্ফীত ; এবং তারা আল্লাহ্‌কে ভুলে গিয়েছিলো। তারা ভুলে গিয়েছিলো যে, তাদের এই সম্পদ প্রাচুর্য আল্লাহ্‌র দান। আর অহংকারী লোকের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এই হয় যে সে সর্বদা অন্যকে হেয় করে দেখতে ভালোবাসে এবং তার থেকে বিত্ত ও সম্মানে যারা কম তাদের প্রতি সে রূঢ় ব্যবহার করে। আল্লাহ্‌র আইনের প্রতি শ্রদ্ধা না থাকার দরুণ তারা গরীবকে অধিকার বঞ্চিত করার জন্য প্রত্যুষে বাগানের ফসল ঘরে তুলতে মনস্থ করে। প্রত্যুষে তারা যখন বাগানের বিপর্যস্ত অবস্থা প্রত্যক্ষ করলো তখন তারা কেউই নিজেদের দোষকে স্বীকার করলো না। বরং একে অপরের ঘারে দোষারোপে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। এদের মধ্যে যারা নিজেদের ত্রুটিকে সনাক্ত করে অনুতপ্ত হয়ে আত্মসংশোধন করেছিলো, তারা আল্লাহ্‌র ক্ষমা ও অনুগ্রহ লাভে সক্ষম হয়েছিলো। “উৎকৃষ্ট বিনিময় ” অর্থাৎ সেই একই বাগান তবে নূতন ভাবে বাগানের পরিকল্পনা ও পরিচর্যার মাধ্যমে বাগানটি পূর্বাপেক্ষা আরও সমৃদ্ধ বাগানে রূপান্তরিত হবে ভবিষ্যতে। কারণ দানে আল্লাহ্‌ অকৃপণ।

 

আয়াতঃ 068.032

সম্ভবতঃ আমাদের পালনকর্তা পরিবর্তে এর চাইতে উত্তম বাগান আমাদেরকে দিবেন। আমরা আমাদের পালনকর্তার কাছে আশাবাদী।
We hope that our Lord will give us in exchange a better (garden) than this. Truly, we turn to our Lord (wishing for good that He may forgive our sins, and reward us in the Hereafter).”

عَسَى رَبُّنَا أَن يُبْدِلَنَا خَيْرًا مِّنْهَا إِنَّا إِلَى رَبِّنَا رَاغِبُونَ
AAasa rabbuna an yubdilana khayran minha inna ila rabbina raghiboona

YUSUFALI: “It may be that our Lord will give us in exchange a better (garden) than this: for we do turn to Him (in repentance)!”
PICKTHAL: It may be that our Lord will give us better than this in place thereof. Lo! we beseech our Lord.
SHAKIR: Maybe, our Lord will give us instead one better than it; surely to our Lord do we make our humble petition.
KHALIFA: “May our Lord grant us a better one. We repent to our Lord.”

৩১। তারা বলেছিলো,” হায় ! দুর্ভাগ্য আমাদের। আমরা তো ছিলাম সীমালংঘনকারী। ”

৩২। “সম্ভবতঃ আমাদের প্রভু এর পরিবর্তে আমাদের এর থেকেও উৎকৃষ্ট [ উদ্যান ] দেবেন। আমরা [ অনুতাপের মাধ্যমে ] তাঁর অভিমুখী হলাম।” ৫৬১৫

৫৬১৫। আল্লাহ্‌ অসীম করুণার আঁধার। যদি পাপীরা প্রকৃত পক্ষেই অনুতপ্ত হয়, তবে আল্লাহ্‌ সর্বোচ্চ পাপকেও ক্ষমা করে দেন। যদি তা প্রকৃত অনুতাপ না হয়ে মোনাফেকী হয়, তবে তাদের কৃত পাপের উপরে মোনাফেকীর পাপও বর্তাবে।

এই রূপক কাহিনীর মাধ্যমে যে চিরসত্যকে আমাদের সম্মুখে তুলে ধরা হয়েছে তা হচ্ছে : বাগানের মালিকরা ছিলো অত্যন্ত স্বার্থপর ব্যক্তি। আর স্বার্থপর ব্যক্তিদের অন্যান্য বৈশিষ্ট্যের ন্যায় তারাও ছিলো অহংকার ও আত্মগর্বে গর্বস্ফীত ; এবং তারা আল্লাহ্‌কে ভুলে গিয়েছিলো। তারা ভুলে গিয়েছিলো যে, তাদের এই সম্পদ প্রাচুর্য আল্লাহ্‌র দান। আর অহংকারী লোকের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য এই হয় যে সে সর্বদা অন্যকে হেয় করে দেখতে ভালোবাসে এবং তার থেকে বিত্ত ও সম্মানে যারা কম তাদের প্রতি সে রূঢ় ব্যবহার করে। আল্লাহ্‌র আইনের প্রতি শ্রদ্ধা না থাকার দরুণ তারা গরীবকে অধিকার বঞ্চিত করার জন্য প্রত্যুষে বাগানের ফসল ঘরে তুলতে মনস্থ করে। প্রত্যুষে তারা যখন বাগানের বিপর্যস্ত অবস্থা প্রত্যক্ষ করলো তখন তারা কেউই নিজেদের দোষকে স্বীকার করলো না। বরং একে অপরের ঘারে দোষারোপে ব্যস্ত হয়ে পড়লো। এদের মধ্যে যারা নিজেদের ত্রুটিকে সনাক্ত করে অনুতপ্ত হয়ে আত্মসংশোধন করেছিলো, তারা আল্লাহ্‌র ক্ষমা ও অনুগ্রহ লাভে সক্ষম হয়েছিলো। “উৎকৃষ্ট বিনিময় ” অর্থাৎ সেই একই বাগান তবে নূতন ভাবে বাগানের পরিকল্পনা ও পরিচর্যার মাধ্যমে বাগানটি পূর্বাপেক্ষা আরও সমৃদ্ধ বাগানে রূপান্তরিত হবে ভবিষ্যতে। কারণ দানে আল্লাহ্‌ অকৃপণ।

 

আয়াতঃ 068.033

শাস্তি এভাবেই আসে এবং পরকালের শাস্তি আরও গুরুতর; যদি তারা জানত!
Such is the punishment (in this life), but truly, the punishment of the Hereafter is greater, if they but knew.

كَذَلِكَ الْعَذَابُ وَلَعَذَابُ الْآخِرَةِ أَكْبَرُ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ
Kathalika alAAathabu walaAAathabu al-akhirati akbaru law kanoo yaAAlamoona

YUSUFALI: Such is the Punishment (in this life); but greater is the Punishment in the Hereafter,- if only they knew!
PICKTHAL: Such was the punishment. And verily the punishment of the Hereafter is greater if they did but know.
SHAKIR: Such is the chastisement, and certainly the chastisement of the hereafter is greater, did they but know!
KHALIFA: Such was the requital. But the retribution of the Hereafter is far worse, if they only knew.

৩৩। [ এই পৃথিবীর জীবনে ] এই হলো শাস্তি। কিন্তু পরকালে রয়েছে আরও কঠিনতর শাস্তি ; যদি তারা জানতো ৫৬১৬।

৫৬১৬। যদিও আল্লাহ্‌র আইন প্রত্যাখানকারী, স্বার্থপর, উদ্ধত, অহংকারী এবং পাপীদের শাস্তি হঠাৎ করেই নিপতিত হয়; কিন্তু তার পরেও কেউ যদি আন্তরিকভাবে অনুতপ্ত হয়, তবে আল্লাহ্‌র ক্ষমার হাত তার জন্য সর্বদা প্রসারিত।

পাপীদের প্রতি প্রদত্ত ইহকালের শাস্তি তাদের হতবুদ্ধি করে থাকে। তবে পরলোকের শাস্তি যে কতটা ভয়াবহ হবে তা আমাদের কল্পনারও বাইরে। কারণ সে শাস্তি হবে অনন্ত কাল ব্যপী এবং তখন আর অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধনের সুযোগ পাওয়া যাবে না।

 

আয়াতঃ 068.034

মোত্তাকীদের জন্যে তাদের পালনকর্তার কাছে রয়েছে নেয়ামতের জান্নাত।
Verily, for the Muttaqûn (pious and righteous persons – see V.2:2) are Gardens of delight (Paradise) with their Lord.

إِنَّ لِلْمُتَّقِينَ عِندَ رَبِّهِمْ جَنَّاتِ النَّعِيمِ
Inna lilmuttaqeena AAinda rabbihim jannati alnnaAAeemi

YUSUFALI: Verily, for the Righteous, are Gardens of Delight, in the Presence of their Lord.
PICKTHAL: Lo! for those who keep from evil are gardens of bliss with their Lord.
SHAKIR: Surely those who guard (against evil) shall have with their Lord gardens of bliss.
KHALIFA: The righteous have deserved, at their Lord, gardens of bliss.

রুকু – ২

৩৪। পূণ্যাত্মাদের জন্য তাদের প্রভুর নিকটে অবশ্যই রয়েছে ভোগ-বিলাসপূর্ণ জান্নাত। ৫৬১৭

৫৬১৭। বেহেশতের সুখ ও শান্তির বর্ণনা দেয়া কোনও মানব ভাষাতে সম্ভব নয় সুতারাং সেই বর্ণনাকে উপলব্ধিযোগ্য করার জন্য ইন্দ্রিয় অনুভূত ভাষার ব্যবহার করা হয়েছে এবং আধ্যাত্মিক জগতের সর্বোচ্চ প্রাপ্তি আল্লাহ্‌র নৈকট্য লাভের যে শান্তি সেই শান্তির সাথে সমন্বিত করা হয়েছে। মনোরম সুশোভিত উদ্যান আমাদের আনন্দ দেয় সত্য; তবে আধ্যাত্মিক জগতে পরলোকের যে বেহেশতি বাগান তার আনন্দ বর্ণনাতীত, কারণ তা আল্লাহ্‌ নৈকট্য লাভের আনন্দ দেয়।

 

আয়াতঃ 068.035

আমি কি আজ্ঞাবহদেরকে অপরাধীদের ন্যায় গণ্য করব?
Shall We then treat the (submitting) Muslims like the Mujrimûn (criminals, polytheists and disbelievers, etc.)?

أَفَنَجْعَلُ الْمُسْلِمِينَ كَالْمُجْرِمِينَ
AfanajAAalu almuslimeena kaalmujrimeena

YUSUFALI: Shall We then treat the People of Faith like the People of Sin?
PICKTHAL: Shall We then treat those who have surrendered as We treat the guilty?
SHAKIR: What! shall We then make (that is, treat) those who submit as the guilty?
KHALIFA: Shall we treat the Submitters like the criminals?

৩৫। তারপরেও আমি কি বিশ্বাসীদের পাপীদের ন্যায় গণ্য করবো ? ৫৬১৮

৫৬১৮। আধ্যাত্মিক জগতের সর্বাপেক্ষা জঘন্য পাপ হচ্ছে আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বাস স্থাপন না করা। কারণ এই পাপে আত্মার উপরে আবরণ সৃষ্টি হয় যা ভেদ করে আল্লাহ্‌র হেদায়েতের আলো বা আল্লাহ্‌র নূর প্রবেশ করে না। ফলে আল্লাহ্‌র অনুগ্রহের উপলব্ধি বা আল্লাহ্‌কে অন্তরের মাঝে উপলব্ধির ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। পরিণতিতে সত্য ও ন্যায়ের জ্যোতি তাদের অন্তরে প্রবেশ লাভে বাধা প্রাপ্ত হয়। এর উপমা হচ্ছে জলাশয়ের চর্তুপাশ্বের কাদার আস্তরণ যা শুষ্ক মাটিকে পানি শুষে নিতে বাঁধার সৃষ্টি করে। এরা আল্লাহ্‌র চোখে অপরাধী। এ সব আত্মা নিজেদের পাপের বন্দীশালাতে নিজেদের উপাস্য স্থির করে নেয়। হয়তো বা তা পাষাণ মূর্তি, ধর্মযাজক বা এমনও হতে পারে যে মানুষকে দেয়া আল্লাহ্‌র নেয়ামতসমূহকেও তারা উপাস্যের বিষয়রূপে পরিগণিত করে যেমনঃ আল্লাহ্‌র দেয়া মেধা, মননশক্তি, প্রতিভা, খ্যাতি, বিজ্ঞান, জাতীয় নেতা ইত্যাদি। তারা উপলব্ধিতে অক্ষম এগুলির স্রষ্টা সেই বিশ্বস্রষ্টা আল্লাহ্‌।

 

আয়াতঃ 068.036

তোমাদের কি হল ? তোমরা কেমন সিদ্ধান্ত দিচ্ছ?
What is the matter with you? How judge you?

مَا لَكُمْ كَيْفَ تَحْكُمُونَ
Ma lakum kayfa tahkumoona

YUSUFALI: What is the matter with you? How judge ye?
PICKTHAL: What aileth you? How foolishly ye judge!
SHAKIR: What has happened to you? How do you judge?
KHALIFA: What is wrong with your logic?

৩৬ তোমাদের কি হয়েছে ? তোমরা কি ভাবে বিচার কর ?

৩৭। অথবা তোমাদের কি কোন কিতাব আছে, যার সাহায্যে তোমরা শিক্ষা লাভ কর –

৩৮। যা তোমরা পছন্দ কর এর সাহায্যে তা পেতে পার ? ৫৬১৯

৫৬১৯। ন্যায়বান মোমেন ব্যক্তি ও পাপী ব্যক্তি এক হতে পারে না। অবশ্যই তাদের পরিণতিও এক হবে না। যদিও আল্লাহ্‌ মানুষকে সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন তবুও মানুষ যা খুশী তাই করতে পারে না। সুতারাং মানুষ কিভাবে আশা করে যে, আল্লাহ্‌র রাজত্বে যা ন্যায় ও সত্যের উপরে প্রতিষ্ঠিত সেখানে পূণ্যাত্মা ও পাপী একই ভাবে পরিগণিত হবে ?

 

আয়াতঃ 068.037

তোমাদের কি কোন কিতাব আছে, যা তোমরা পাঠ কর।
Or have you a Book through which you learn.

أَمْ لَكُمْ كِتَابٌ فِيهِ تَدْرُسُونَ
Am lakum kitabun feehi tadrusoona

YUSUFALI: Or have ye a book through which ye learn-
PICKTHAL: Or have ye a scripture wherein ye learn
SHAKIR: Or have you a book wherein you read,
KHALIFA: Do you have another book to uphold?

৩৬ তোমাদের কি হয়েছে ? তোমরা কি ভাবে বিচার কর ?

৩৭। অথবা তোমাদের কি কোন কিতাব আছে, যার সাহায্যে তোমরা শিক্ষা লাভ কর –

৩৮। যা তোমরা পছন্দ কর এর সাহায্যে তা পেতে পার ? ৫৬১৯

৫৬১৯। ন্যায়বান মোমেন ব্যক্তি ও পাপী ব্যক্তি এক হতে পারে না। অবশ্যই তাদের পরিণতিও এক হবে না। যদিও আল্লাহ্‌ মানুষকে সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন তবুও মানুষ যা খুশী তাই করতে পারে না। সুতারাং মানুষ কিভাবে আশা করে যে, আল্লাহ্‌র রাজত্বে যা ন্যায় ও সত্যের উপরে প্রতিষ্ঠিত সেখানে পূণ্যাত্মা ও পাপী একই ভাবে পরিগণিত হবে ?

আয়াতঃ 068.038

তাতে তোমরা যা পছন্দ কর, তাই পাও?
That you shall have all that you choose?

إِنَّ لَكُمْ فِيهِ لَمَا يَتَخَيَّرُونَ
Inna lakum feehi lama takhayyaroona

YUSUFALI: That ye shall have, through it whatever ye choose?
PICKTHAL: That ye shall indeed have all that ye choose?
SHAKIR: That you have surely therein what you choose?
KHALIFA: In it, do you find anything you want?

৩৬ তোমাদের কি হয়েছে ? তোমরা কি ভাবে বিচার কর ?

৩৭। অথবা তোমাদের কি কোন কিতাব আছে, যার সাহায্যে তোমরা শিক্ষা লাভ কর –

৩৮। যা তোমরা পছন্দ কর এর সাহায্যে তা পেতে পার ? ৫৬১৯

৫৬১৯। ন্যায়বান মোমেন ব্যক্তি ও পাপী ব্যক্তি এক হতে পারে না। অবশ্যই তাদের পরিণতিও এক হবে না। যদিও আল্লাহ্‌ মানুষকে সীমিত স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়েছেন তবুও মানুষ যা খুশী তাই করতে পারে না। সুতারাং মানুষ কিভাবে আশা করে যে, আল্লাহ্‌র রাজত্বে যা ন্যায় ও সত্যের উপরে প্রতিষ্ঠিত সেখানে পূণ্যাত্মা ও পাপী একই ভাবে পরিগণিত হবে ?

 

আয়াতঃ 068.039

না তোমরা আমার কাছ থেকেকেয়ামত পর্যন্ত বলবৎ কোন শপথ নিয়েছ যে, তোমরা তাই পাবে যা তোমরা সিদ্ধান্ত করবে?
Or you have oaths from Us, reaching to the Day of Resurrection that yours will be what you judge.

أَمْ لَكُمْ أَيْمَانٌ عَلَيْنَا بَالِغَةٌ إِلَى يَوْمِ الْقِيَامَةِ إِنَّ لَكُمْ لَمَا تَحْكُمُونَ
Am lakum aymanun AAalayna balighatun ila yawmi alqiyamati inna lakum lama tahkumoona

YUSUFALI: Or have ye Covenants with Us to oath, reaching to the Day of Judgment, (providing) that ye shall have whatever ye shall demand?
PICKTHAL: Or have ye a covenant on oath from Us that reacheth to the Day of Judgment, that yours shall be all that ye ordain?
SHAKIR: Or have you received from Us an agreement confirmed by an oath extending to the day of resurrection that you shall surely have what you demand?
KHALIFA: Or, have you received solemn assurances from us that grant you whatever you wish on the Day of Resurrection?

৩৯। অথবা আমি কি তোমাদের সাথে শেষ বিচারের দিন পর্যন্ত শপথের অঙ্গীকারে আবদ্ধ যে, তোমরা যা কিছু দাবী করবে তাই -ই পাবে ? ৫৬২০

৫৬২০। শুধু মোশরেক আরবরাই নয়, পৃথিবীর কোনও জাতিই আল্লাহ্‌র বিশেষ অনুগ্রহশীল জাতিরূপে নিজেকে দাবী করতে পারে না। ইহুদীরা যে নিজেকে আল্লাহ্‌র মনোনীত জাতি বলে দাবী করে এই আয়াতের মাধ্যমে সে দাবীকেও অসাড় প্রতিপন্ন করা হয়েছে। এ কথা সত্য যে, যখন কোনও জাতি নিজেদের বিশেষ গুণে গুণান্বিত করে থাকে, ন্যায় ও সত্য যখন তাদের জীবনের সাথে ওতপ্রেতভাবে জড়িত হয়, তখন সে সব জাতিকে আল্লাহ্‌ পৃথিবীতে তাঁর পতাকা বাহী রূপে মনোনীত করেন। তারা জগতের সম্মুখে ন্যায় ও সত্যকে তুলে ধরতে সক্ষম হয়। এ ভাবেই আল্লাহ্‌র সত্য যুগে যুগে পৃথিবীতে বিস্তার লাভ ঘটেছে। কিন্তু আল্লাহ্‌র পতাকা চিরদিন নির্দ্দিষ্ট এক জাতির নিকট স্থায়ী থাকে না। তারাই ততদিন তা ধরে রাখার যোগ্যতা অর্জন করে যতদিন তারা ন্যায় ও সত্য পথে থাকে বা আল্লাহ্‌র আইন মেনে চলে। কারণ আল্লাহ্‌র আইনই হচ্ছে ন্যায় ও সত্য। যখনই তারা ন্যায় ও সত্যের পথ বিচ্যুত হয়ে গর্বিত ও অহংকারী হয় স্বার্থপরতা ও অন্যকে ঠকানোর প্রবণতা বেড়ে যায়; তখনই তাদের পতন ঘটে। আল্লাহ্‌ তাদের এই সম্মানজনক অধিষ্ঠানটি কেড়ে নেন। এ কথা কেউ যেনো মনে না করেন যে আল্লাহ্‌ তাদের সঙ্গে কেয়ামত পর্যন্ত অনন্তকাল স্থায়ী অঙ্গীকারে আবদ্ধ।

 

আয়াতঃ 068.040

আপনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করুন তাদের কে এ বিষয়ে দায়িত্বশীল?
Ask them, which of them will stand surety for that!

سَلْهُم أَيُّهُم بِذَلِكَ زَعِيمٌ
Salhum ayyuhum bithalika zaAAeemun

YUSUFALI: Ask thou of them, which of them will stand surety for that!
PICKTHAL: Ask them (O Muhammad) which of them will vouch for that!
SHAKIR: Ask them which of them will vouch for that,
KHALIFA: Ask them, “Who guarantees this for you?”

৪০। তুমি তাদের জিজ্ঞাসা কর, তাদের মধ্যে এই দাবীর জিম্মাদার কে ?

৪১। অথবা তাদের কি [আল্লাহ্‌র সাথে ] শরীক আছে ৫৬২১ ? যদি তারা সত্যবাদী হয়, তবে তাদের শরীকদের উপস্থিত করুক।

৫৬২১। ‘দেবদেবী ‘ অর্থাৎ আল্লাহ্‌র সাথে অংশীদার। যেমন : খৃস্টানদের ত্রিতত্ববাদ। অর্থাৎ যে কোনও রকম আল্লাহ্‌র সাথে অংশীদারিত্বের কথা এখানে বলা হয়েছে। আল্লাহ্‌র ক্ষমতার সাথে যে কোনও শক্তিকে অংশীদার করার প্রবণতা আত্মার মাঝে আল্লাহ্‌র একত্বের ধারণাকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেয়। একত্বের ধারণা হচ্ছে আত্মার মূল সঞ্জীবনী শক্তি। সুতারাং এর থেকে বিচ্যুতির ফলে আত্মা তার মূল বৈশিষ্ট্য হারায়।

 

আয়াতঃ 068.041

না তাদের কোন শরীক উপাস্য আছে? থাকলে তাদের শরীক উপাস্যদেরকে উপস্থিত করুক যদি তারা সত্যবাদী হয়।
Or have they ”partners”? Then let them bring their ”partners” if they are truthful!

أَمْ لَهُمْ شُرَكَاء فَلْيَأْتُوا بِشُرَكَائِهِمْ إِن كَانُوا صَادِقِينَ
Am lahum shurakao falya/too bishuraka-ihim in kanoo sadiqeena
YUSUFALI: Or have they some “Partners” (in Allahhead)? Then let them produce their “partners”, if they are truthful!
PICKTHAL: Or have they other gods? Then let them bring their other gods if they are truthful
SHAKIR: Or have they associates if they are truthful.
KHALIFA: Do they have idols? Let their idols help them, if they are truthful.

৪০। তুমি তাদের জিজ্ঞাসা কর, তাদের মধ্যে এই দাবীর জিম্মাদার কে ?

৪১। অথবা তাদের কি [আল্লাহ্‌র সাথে ] শরীক আছে ৫৬২১ ? যদি তারা সত্যবাদী হয়, তবে তাদের শরীকদের উপস্থিত করুক।

৫৬২১। ‘দেবদেবী ‘ অর্থাৎ আল্লাহ্‌র সাথে অংশীদার। যেমন : খৃস্টানদের ত্রিতত্ববাদ। অর্থাৎ যে কোনও রকম আল্লাহ্‌র সাথে অংশীদারিত্বের কথা এখানে বলা হয়েছে। আল্লাহ্‌র ক্ষমতার সাথে যে কোনও শক্তিকে অংশীদার করার প্রবণতা আত্মার মাঝে আল্লাহ্‌র একত্বের ধারণাকে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেয়। একত্বের ধারণা হচ্ছে আত্মার মূল সঞ্জীবনী শক্তি। সুতারাং এর থেকে বিচ্যুতির ফলে আত্মা তার মূল বৈশিষ্ট্য হারায়।

 

আয়াতঃ 068.042

গোছা পর্যন্ত পা খোলার দিনের কথা স্মরণ কর, সেদিন তাদেরকে সেজদা করতে আহবান জানানো হবে, অতঃপর তারা সক্ষম হবে না।
(Remember) the Day when the Shin shall be laid bare (i.e. the Day of Resurrection) and they shall be called to prostrate (to Allâh), but they (hypocrites) shall not be able to do so,

يَوْمَ يُكْشَفُ عَن سَاقٍ وَيُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ فَلَا يَسْتَطِيعُونَ
Yawma yukshafu AAan saqin wayudAAawna ila alssujoodi fala yastateeAAoona

YUSUFALI: The Day that the shin shall be laid bare, and they shall be summoned to bow in adoration, but they shall not be able,-
PICKTHAL: On the day when it befalleth in earnest, and they are ordered to prostrate themselves but are not able,
SHAKIR: On the day when there shall be a severe affliction, and they shall be called upon to make obeisance, but they shall not be able,
KHALIFA: The day will come when they will be exposed, and they will be required to fall prostrate, but they will be unable to.

৪২। সেদিন পায়ের গোছা উন্মোচন করা হবে ৫৬২২। এবং তাদের আদেশ করা হবে সেজ্‌দা করার জন্য, কিন্তু তারা সক্ষম হবে না, –

৫৬২২। ” পায়ের গোছা উম্মোচিত করা।” এটি একটি আরবী বাগ্‌ধারা যার অর্থ চরম সংকট। কেয়ামত দিবসে যখন সকল রহস্যের অবসান ঘটবে তখনকার বর্ণনা এখানে করা হয়েছে। পায়ের গোছা যেরূপ চামড়া ও কাপড় দ্বারা ঢাকা থাকে; ঠিক সেরূপ হচ্ছে মানুষের পৃথিবীর জীবন। পৃথিবীর জীবনে মানুষ পার্থিব উন্নতির চিন্তায় বিভোর থাকে। পাপ পূণ্য,ন্যায় অন্যায়, ভালো -মন্দ তাদের চিন্তায় স্থান পায় না। তারা সুকৌশলে মনের বিকৃত বা পাপ চিন্তাধারাকে সযতনে গোপন রাখতে সক্ষম হয়। কিন্তু কেয়ামত দিবসে তাদের এই কার্যকলাপ ও চিন্তাধারা সর্ব সমক্ষে উলঙ্গভাবে প্রকাশ পেয়ে যাবে। জীবনের সকল রহস্য, সকল গোপনীয়তা উম্মুক্ত হয়ে যাবে। সেদিন প্রতিটি মানুষকে আল্লাহ্‌র প্রতি আনুগত্য বা সেজ্‌দার জন্য আহ্বান করা হবে। কিন্তু পার্থিব জীবনে আল্লাহ্‌র প্রতি অবাধ্যতা ও বিদ্রোহের যে মানসিকতা, তার থেকে তাদের মুক্তি ঘটবে না। পৃথিবীতে আল্লাহ্‌র প্রতি আনুগত্য যাদের নিকট হাসিঠাট্টার বিষয়রূপে পরিগণিত হতো, কেয়ামত দিবসে তাদের সেই মন মানসিকতা তাদের সর্বসত্তাকে গ্রাস করে থাকবে। ফলে তারা ইচ্ছা থাকলেও আল্লাহ্‌র প্রতি আনুগত্য প্রকাশে হবে অপারগ।

 

আয়াতঃ 068.043

তাদের দৃষ্টি অবনত থাকবে; তারা লাঞ্ছনাগ্রস্ত হবে, অথচ যখন তারা সুস্থ ও স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল, তখন তাদেরকে সেজদা করতে আহবান জানানো হত।
Their eyes will be cast down, ignominy will cover them; they used to be called to prostrate (offer prayers), while they were healthy and good (in the life of the world, but they did not).

خَاشِعَةً أَبْصَارُهُمْ تَرْهَقُهُمْ ذِلَّةٌ وَقَدْ كَانُوا يُدْعَوْنَ إِلَى السُّجُودِ وَهُمْ سَالِمُونَ
KhashiAAatan absaruhum tarhaquhum thillatun waqad kanoo yudAAawna ila alssujoodi wahum salimoona

YUSUFALI: Their eyes will be cast down,- ignominy will cover them; seeing that they had been summoned aforetime to bow in adoration, while they were whole, (and had refused).
PICKTHAL: With eyes downcast, abasement stupefying them. And they had been summoned to prostrate themselves while they were yet unhurt.
SHAKIR: Their looks cast down, abasement shall overtake them; and they were called upon to make obeisance indeed while yet they were safe.
KHALIFA: With their eyes subdued, humiliation will cover them. They were invited to fall prostrate when they were whole and able.

৪৩। তাদের দৃষ্টি হবে অবনত ৫৬২৩, অসম্মান তাদের আচ্ছন্ন করবে ; বস্তুতঃ পূর্বে [ দুনিয়াতে ] তারা যখন সুস্থ ছিলো, তাদের সেজ্‌দা করতে আদেশ করা হয়েছিলো [ এবং তারা তা করে নাই ] ৫৬২৪।

৫৬২৩। অতীতের পাপ কাজ ও পাপকাজের স্মৃতি পাপীরা কেয়ামত দিবসেও অতিক্রম করতে সক্ষম হবে না। তাদের অতীতের সকল কর্ম ও কর্মের স্মৃতি সর্বসমক্ষে হবে প্রকাশ্য। ফলে অতীতের কাজ ও বর্তমানের পরিণাম তাদের জন্য হবে লজ্জ্বাজনক ও অপমানকর পরিণতি।

৫৬২৪। ‘Salimun’ অর্থ সম্পূর্ণ ; বিচারের সম্পূর্ণ ক্ষমতা যার অধিকারে।

 

আয়াতঃ 068.044

অতএব, যারা এই কালামকে মিথ্যা বলে, তাদেরকে আমার হাতে ছেড়ে দিন, আমি এমন ধীরে ধীরে তাদেরকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাব যে, তারা জানতে পারবে না।
Then leave Me Alone with such as belie this Qur’ân. We shall punish them gradually from directions they perceive not.

فَذَرْنِي وَمَن يُكَذِّبُ بِهَذَا الْحَدِيثِ سَنَسْتَدْرِجُهُم مِّنْ حَيْثُ لَا يَعْلَمُونَ
Fatharnee waman yukaththibu bihatha alhadeethi sanastadrijuhum min haythu la yaAAlamoona

YUSUFALI: Then leave Me alone with such as reject this Message: by degrees shall We punish them from directions they perceive not.
PICKTHAL: Leave Me (to deal) with those who give the lie to this pronouncement. We shall lead them on by steps from whence they know not.
SHAKIR: So leave Me and him who rejects this announcement; We will overtake them by degrees, from whence they perceive not:
KHALIFA: Therefore, let Me deal with those who reject this Hadith; we will lead them on whence they never perceive.

৪৪। অতঃপর আমাকে ছেড়ে দাও, তাদের সাথে যারা এই বাণীকে প্রত্যাখান করেছিলো তাদের আমি ধীরে ধীরে শাস্তি দান করবো এমনভাবে যে, তারা তা বুঝতেও পারবে না ৫৬২৬।

৫৬২৬। দেখুন সূরা [ ৭ : ১৮২ ] আয়াত। সংসারে প্রায়ই দেখা যায় যে যারা পাপী ও কৌশলী তারা পার্থিব জীবনে অর্থ-সম্পদ, ক্ষমতা-প্রতিপত্তিতে উত্তোরতর উন্নতি লাভ করে থাকে। এ দেখে মোমেন বান্দাদের অধৈর্য্য হওয়ার কারণ নাই। কারণ পার্থিব এই সমৃদ্ধি হয়তো বা তাদের শাস্তিরই একটি সোপান মাত্র। দুর্যোগ ও বিপর্যয়ও হতে পারে তাৎক্ষণিক শাস্তির পরিণামে। তবে আল্লাহ্‌র প্রকৃত শাস্তি নিপতিত হয় ধীরে ধীরে কারণ আল্লাহ্‌ তাঁর বান্দাকে অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধনের প্রচুর অবসর দান করেন। আল্লাহ্‌র শাস্তি ধীরে ধীরে ক্রমবিকাশের ধারাতে প্রকাশ পায়। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, আমরা আল্লাহ্‌র সামগ্রিক পরিকল্পনা দেখতে ও বুঝতে অক্ষম। কারণ আমাদের জ্ঞান ও দেখার ক্ষমতা অত্যন্ত সীমাবদ্ধ। সুতারাং এ সম্বন্ধে আমাদের মনে কোনও রূপ প্রশ্ন জাগা উচিত নয়।

 

আয়াতঃ 068.045

আমি তাদেরকে সময় দেই। নিশ্চয় আমার কৌশল মজবুত।
And I will grant them a respite. Verily, My Plan is strong.

وَأُمْلِي لَهُمْ إِنَّ كَيْدِي مَتِينٌ
Waomlee lahum inna kaydee mateenun

YUSUFALI: A (long) respite will I grant them: truly powerful is My Plan.
PICKTHAL: Yet I bear with them, for lo! My scheme is firm.
SHAKIR: And I do bear with them, surely My plan is firm.
KHALIFA: I will give them enough rope; My scheming is formidable.

৪৫। আমি তাদের [ দীর্ঘ ] অবকাশ অনুমোদন করবো। সত্যই আমার পরিকল্পনা অত্যন্ত শক্তিশালী।

৪৬। অথবা তুমি কি তাদের নিকট পারিশ্রমিক দাবী করছো ৫৬২৭ ? ফলে তারা ঋণের ভারে আক্রান্ত হয়েছে ?

৫৬২৭। দেখুন সূরা [ ৫২ : ৪০] আয়াত ও টিকা ৫০৭৪। এই আয়াতে রাসুলকে (সা) সম্বোধন করে বলা হয়েছে যে, রাসুলের (সা) মুখে আল্লাহ্‌র বাণী শোনাতে অবিশ্বাসীদের কোনও অর্থ সম্পদ ব্যয় করতে হয় না। রাসুলও তাঁর প্রচারে বিনিময়ে কোনও অর্থ ও সম্পদ দাবী করেন না বা কোনও পুরষ্কারের প্রত্যাশী নন। এমনকি এর জন্য তিনি কোনও স্বীকৃতি বা প্রশংসা দাবী করেন না। যদিও এই আয়াতটিতে আল-মুস্তফাকে (সা) সম্বোধন করা হয়েছে, তবে এর আবেদন সার্বজনীন, পূণ্যাত্মা ব্যক্তিগণ তাদের পূণ্য কাজের কোনও মূল্য দাবী করেন না, তাদের কাজের পুরষ্কার তারা দাবী করেন একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌র নিকট। অবিশ্বাসীরা এমন আচরণ করে যেনো তারা অদৃশ্যের সকল সংবাদ অবগত আছে। আধ্যাত্মিক জগতের সকল সংবাদ তাদের নখর্দপনে। কিন্তু এ সবই তাদের শূণ্যগর্ভ আস্ফালন।

 

আয়াতঃ 068.046

আপনি কি তাদের কাছে পারিশ্রমিক চান? ফলে তাদের উপর জরিমানার বোঝা পড়ছে?
Or is it that you (O Muhammad SAW) ask them a wage, so that they are heavily burdened with debt?

أَمْ تَسْأَلُهُمْ أَجْرًا فَهُم مِّن مَّغْرَمٍ مُّثْقَلُونَ
Am tas-aluhum ajran fahum min maghramin muthqaloona

YUSUFALI: Or is it that thou dost ask them for a reward, so that they are burdened with a load of debt?-
PICKTHAL: Or dost thou (Muhammad) ask a fee from them so that they are heavily taxed?
SHAKIR: Or do you ask from them a reward, so that they are burdened with debt?
KHALIFA: Are you asking them for money, so they are burdened by the fine?

৪৫। আমি তাদের [ দীর্ঘ ] অবকাশ অনুমোদন করবো। সত্যই আমার পরিকল্পনা অত্যন্ত শক্তিশালী।

৪৬। অথবা তুমি কি তাদের নিকট পারিশ্রমিক দাবী করছো ৫৬২৭ ? ফলে তারা ঋণের ভারে আক্রান্ত হয়েছে ?

৫৬২৭। দেখুন সূরা [ ৫২ : ৪০] আয়াত ও টিকা ৫০৭৪। এই আয়াতে রাসুলকে (সা) সম্বোধন করে বলা হয়েছে যে, রাসুলের (সা) মুখে আল্লাহ্‌র বাণী শোনাতে অবিশ্বাসীদের কোনও অর্থ সম্পদ ব্যয় করতে হয় না। রাসুলও তাঁর প্রচারে বিনিময়ে কোনও অর্থ ও সম্পদ দাবী করেন না বা কোনও পুরষ্কারের প্রত্যাশী নন। এমনকি এর জন্য তিনি কোনও স্বীকৃতি বা প্রশংসা দাবী করেন না। যদিও এই আয়াতটিতে আল-মুস্তফাকে (সা) সম্বোধন করা হয়েছে, তবে এর আবেদন সার্বজনীন, পূণ্যাত্মা ব্যক্তিগণ তাদের পূণ্য কাজের কোনও মূল্য দাবী করেন না, তাদের কাজের পুরষ্কার তারা দাবী করেন একমাত্র সর্বশক্তিমান আল্লাহ্‌র নিকট। অবিশ্বাসীরা এমন আচরণ করে যেনো তারা অদৃশ্যের সকল সংবাদ অবগত আছে। আধ্যাত্মিক জগতের সকল সংবাদ তাদের নখর্দপনে। কিন্তু এ সবই তাদের শূণ্যগর্ভ আস্ফালন।

 

আয়াতঃ 068.047

না তাদের কাছে গায়বের খবর আছে? অতঃপর তারা তা লিপিবদ্ধ করে।
Or that the Ghaib (unseen here in this Verse it means Al-Lauh Al-Mahfûz) is in their hands, so that they can write it down?

أَمْ عِندَهُمُ الْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ
Am AAindahumu alghaybu fahum yaktuboona

YUSUFALI: Or that the Unseen is in their hands, so that they can write it down?
PICKTHAL: Or is the Unseen theirs that they can write (thereof)?
SHAKIR: Or have they (the knowledge of) the unseen, so that they write (it) down?
KHALIFA: Do they know the future? Do they have it recorded?

৪৭। অথবা তাদের নিকট কি অদৃশ্যের জ্ঞান আছে ৫৬২৮, যে তারা তা লিখে রাখে ?

৫৬২৮। দেখুন [ ৫২ : ৪১ ] আয়াত ও টিকা ৫০৭৫। অবশ্যই অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান অবিশ্বাসীদের করতলগত নয়। যদি তা থাকতো তবে তারা তা নিজেদের এবং অপরের পথনির্দ্দেশ রূপে লিখিত করে রাখতো। তা যখন তারা পারে নাই, সুতারাং তাদের উচিত আল্লাহ্‌র প্রেরিত প্রত্যাদেশকে গ্রহণ করা।

 

আয়াতঃ 068.048

আপনি আপনার পালনকর্তার আদেশের অপেক্ষায় সবর করুন এবং মাছওয়ালা ইউনুসের মত হবেন না, যখন সে দুঃখাকুল মনে প্রার্থনা করেছিল।
So wait with patience for the Decision of your Lord, and be not like the Companion of the Fish, when he cried out (to Us) while he was in deep sorrow. (See the Qur’ân, Verse 21:87).

فَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ وَلَا تَكُن كَصَاحِبِ الْحُوتِ إِذْ نَادَى وَهُوَ مَكْظُومٌ
Faisbir lihukmi rabbika wala takun kasahibi alhooti ith nada wahuwa makthoomun

YUSUFALI: So wait with patience for the Command of thy Lord, and be not like the Companion of the Fish,- when he cried out in agony.
PICKTHAL: But wait thou for thy Lord’s decree, and be not like him of the fish, who cried out in despair.
SHAKIR: So wait patiently for the judgment of your Lord, and be not like the companion of the fish, when he cried while he was in distress.
KHALIFA: You shall steadfastly persevere in carrying out the commands of your Lord. Do not be like (Jonah) who called from inside the fish.

৪৮। অতএব, তুমি ধৈর্য ধারণ কর তোমার প্রভুর আদেশের অপেক্ষায়, এবং মৎস্য সহচরের ন্যায় ৫৬২৯, [ অধৈর্য্য ] হয়ো না, – যখন সে দুঃসহ যন্ত্রণায় চীৎকার করেছিলো।

৫৬২৯। মৎসের সহচর বা মৎসগ্রাসে পতিত। হযরত ইউনুসকে মাছ ভক্ষণ করেছিলো বলে তাঁকে এরূপ বলা হতো। ‘Zun-nun’ – বা ইউনুস নবীর জন্য দেখুন সূরা [ ২১ : ৮৭ – ৮৮ ] আয়াতের টিকা ২৭৪৪। আরও দেখুন সূরা [ ৩৭ : ১৩৯ -১৪৮ ] আয়াত ও আয়াতগুলির টিকাসমূহ। হযরত ইউনুসকে নীণেভা নামক নগরীতে আল্লাহ্‌র বাণী প্রচারের জন্য আদেশ দান করা হয়। ঐ নগরীর অধিবাসীরা ছিলো দুষ্ট প্রকৃতির। তিনি তাঁর প্রচারকালে নগরীর অধিবাসীদের দ্বারা অত্যাচার ও নির্যাতনের শীকার হন এবং নগরী থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য জাহাজে আরোহণ করেন। রাস্তায় জাহাজ ঝড়ে পতিত হয় এবং নাবিকেরা তাঁকে সমুদ্র বক্ষে নিক্ষেপ করে। সমুদ্র বক্ষে তাকে এক বিরাট মাছ ভক্ষণ করে – সম্ভবতঃ তা হয়তো বা হবে বিশাল আকৃতির তিমি মাছ। সেখানে তিনি জীবিত থাকেন ও অনুতাপে দগ্ধ হতে থাকেন। ফলে আল্লাহ্‌ তাঁকে ক্ষমা করেন। অপরপক্ষে নিণেভা নগরীর বাসিন্দারা অনুতাপের মাধ্যমে আত্মসংশোধন করে আল্লাহ্‌র ক্ষমা লাভ করে। এখানে আল্লাহ্‌র দুইটি গুণবাচক উপাধি দয়াময় ও ক্ষমাশীল এই দুটিকে রূপক নীতিগত মূলক কাহিনীর মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে। আদেশ করা হয়েছে বাঁধা ও বিপর্যয়ের মুখে আল্লাহ্‌র উপরে নির্ভর করে ধৈর্য ধারণের জন্য। ধৈর্য, দৃঢ়তা ও আল্লাহ্‌র উপরে নির্ভরশীলতা এই গুণগুলি মোমেন বান্দাদের বৈশিষ্ট্য। তাহলেই আল্লাহ্‌র রহমত ও করুণা লাভ করা যায়।

 

আয়াতঃ 068.049

যদি তার পালনকর্তার অনুগ্রহ তাকে সামাল না দিত, তবে সে নিন্দিত অবস্থায় জনশুন্য প্রান্তরে নিক্ষিপ্ত হত।
Had not a Grace from his Lord reached him, he would indeed have been (left in the stomach of the fish, but We forgave him), so he was cast off on the naked shore, while he was to be blamed.

لَوْلَا أَن تَدَارَكَهُ نِعْمَةٌ مِّن رَّبِّهِ لَنُبِذَ بِالْعَرَاء وَهُوَ مَذْمُومٌ
Lawla an tadarakahu niAAmatun min rabbihi lanubitha bialAAara-i wahuwa mathmoomun

YUSUFALI: Had not Grace from his Lord reached him, he would indeed have been cast off on the naked shore, in disgrace.
PICKTHAL: Had it not been that favour from his Lord had reached him he surely had been cast into the wilderness while he was reprobate.
SHAKIR: Were it not that favor from his Lord had overtaken him, he would certainly have been cast down upon the naked Found while he was blamed.
KHALIFA: If it were not for his Lord’s grace, he would have been ejected into the desert as a sinner.

৪৯। তার প্রভুর অনুগ্রহ তার নিকট না পৌঁছুলে সে লাঞ্ছিত হয়ে নিক্ষিপ্ত হতো উন্মুক্ত প্রান্তরে। ৫৬৩০

৫৬৩০। দেখুন আয়াত [ ৩৭: ১৪৫ – ১৪৬ ] ও টিকা ৪১২৬।

 

আয়াতঃ 068.050

অতঃপর তার পালনকর্তা তাকে মনোনীত করলেন এবং তাকে সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করে নিলেন।
But his Lord chose him and made him of the righteous.

فَاجْتَبَاهُ رَبُّهُ فَجَعَلَهُ مِنَ الصَّالِحِينَ
Faijtabahu rabbuhu fajaAAalahu mina alssaliheena

YUSUFALI: Thus did his Lord choose him and make him of the Company of the Righteous.
PICKTHAL: But his Lord chose him and placed him among the righteous.
SHAKIR: Then his Lord chose him, and He made him of the good.
KHALIFA: But his Lord blessed him, and made him righteous.

৫০। এভাবেই তার প্রভু তাঁকে মনোনীত করলেন ৫৬৩১, এবং তাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভূক্ত করলেন। ৫৬৩২

৫৬৩১। হযরত ইউনুসকে আল্লাহ্‌ নিণেভা নগরীতে নবী হিসেবে প্রেরণ করেন যেনো তিনি সেখানে আল্লাহ্‌র করুণা ও মহিমার বাণী প্রচার করতে পারেন। যদিও তিনি নবী হিসেবে মনোনীত হয়েছিলেন, কিন্তু তিনি সাধারণ মানুষের ভুলভ্রান্তির উর্দ্ধে ছিলেন না। যার ফলে নিণেভাবাসীদের প্রত্যাখান ও অত্যাচারে তাঁর ধৈর্য্যচ্যুতি ঘটে। যেহেতু তিনি আল্লাহ্‌ কর্তৃক মনোনীত, সুতারাং তার দায়িত্বও সাধারণ মানুষ থেকে অনেক বেশী। তাঁর এই ধৈর্যচ্যুতিতে আল্লাহ্‌ তাঁকে কঠিন শাস্তি দান করেন। মাছের পেটে থাকা অবস্থায় তিনি তাঁর ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হন এবং আল্লাহ্‌র করুণা ও ক্ষমা ভিক্ষা করেন। প্রকৃত অনুতাপ সর্বদাই আল্লাহ্‌ গ্রহণ করেন এবং পাপীর পাপকে ক্ষমা করে থাকেন। ইউনুস নবীও আল্লাহ্‌র ক্ষমা লাভ করেন এবং তিনি মাছের পেট থেকে উদ্ধার লাভ করে, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পুণরুদ্ধার করেন। আল্লাহ্‌র নূর আবার তাঁর আধ্যাত্মিক জগতকে সমুজ্জ্বল করে তোলে।

৫৬৩২। দেখুন সূরা [ ৪ : ৬৯ ] আয়াত ও টিকা ৫৮৬। “সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভূক্ত করিলেন।” এই আয়াত থেকে এ কথাই প্রতীয়মান হয় যে, সৎকর্মপরায়ণদের বিশাল গোষ্ঠির সদস্যপদ লাভ করা। এই গোষ্ঠিতে অন্তর্ভূক্ত হতে পারে বিভিন্ন শ্রেণীর মানব সন্তান। কেউ সৎকর্মপরায়ণে হন অতি উচ্চে অধিষ্ঠিত আবার কারও অধিষ্ঠান সুউচ্চ নাও হতে পারে। প্রত্যেকে প্রত্যেকের কাজের পরিমাণ অনুযায়ী সৎকর্মপরায়ণদের শ্রেণীতে অর্ন্তভূক্ত হবেন। গণতন্ত্রে যেরূপ প্রত্যেক নাগরিকের জন্য তাঁর অধিকারকে সংরক্ষিত করা হয়; আধ্যাত্মিক জগতেও সেরূপ সৎকর্মপরায়ণের জন্য আছে নাগরিক অধিকার। যারা এই অভিজ্ঞানে সমৃদ্ধ তাদের মাঝে বিরাজ করে এক অদৃশ্য ভাতৃত্ববোধের বন্ধন। যে বন্ধনের সুত্রে কেউ থাকেন উচ্চমার্গে কেউ থাকেন নিম্নে। কিন্তু এর ফলে তাদের সৌহার্দ নষ্ট হয় না বরং আদান প্রদানের মাধ্যমে আরও দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হয়।

 

আয়াতঃ 068.051

কাফেররা যখন কোরআন শুনে, তখন তারা তাদের দৃষ্টি দ্বারা যেন আপনাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দিবে এবং তারা বলেঃ সে তো একজন পাগল।
And verily, those who disbelieve would almost make you slip with their eyes through hatredness when they hear the Reminder (the Qur’ân), and they say: ”Verily, he (Muhammad SAW) is a madman!”

وَإِن يَكَادُ الَّذِينَ كَفَرُوا لَيُزْلِقُونَكَ بِأَبْصَارِهِمْ لَمَّا سَمِعُوا الذِّكْرَ وَيَقُولُونَ إِنَّهُ لَمَجْنُونٌ
Wa-in yakadu allatheena kafaroo layuzliqoonaka bi-absarihim lamma samiAAoo alththikra wayaqooloona innahu lamajnoonun

YUSUFALI: And the Unbelievers would almost trip thee up with their eyes when they hear the Message; and they say: “Surely he is possessed!”
PICKTHAL: And lo! those who disbelieve would fain disconcert thee with their eyes when they hear the Reminder, and they say: Lo! he is indeed mad;
SHAKIR: And those who disbelieve would almost smite you with their eyes when they hear the reminder, and they say: Most surely he is mad. Those who disbelieved show their ridicule in their eyes when they hear the message and say, “He is crazy!”
KHALIFA: Those who disbelieved show their ridicule in their eyes when they hear the message and say, “He is crazy!”

৫১।অবিশ্বাসীরা যখন কুর-আন শ্রবণ করে, তখন তারা তাদের চোখের চাহনি দ্বারা তোমাকে আছড়াইয়া ফেলতে চায় এবং বলে, ” সে তো নিশ্চয়ই পাগল।” ৫৬৩৩

৫৬৩৩। এই আয়াতটিতে রাসুলের (সা) প্রতি কাফের ও দুষ্টলোকদের আচরণকে তুলে ধরা হয়েছে। কোরাণের বাণী তাদের নিকট এতটাই অসহ্য মনে হয় যে তাদের ক্ষমতা থাকলে তারা দৃষ্টি দ্বারা রাসুলকে (সা) ভস্ম করে দিত। এই আয়াতের আবেদন সর্বকাল ও সর্বযুগের জন্য প্রযোজ্য। পৃথিবীতে সর্বদা ভালো মন্দ পাশাপাশি বিরাজমান। মন্দ সকল সময়েই ভালোকে ধ্বংস করতে উদ্যত। পূণ্যাত্মাদের আত্মিক শান্তি, দৃঢ়তা ও নিশ্চিত নিরাপত্তা ধ্বংস করাই তাদের একমাত্র কাম্য। তারা তাদের কাজের মাধ্যমে তা করতে না পারলেও কুৎসিত বাক্যদ্বারা তাদের মনের আক্রোশ মিটাতে চেষ্টা করবে, যেরূপ তারা আল্লাহ্‌র রাসুলকে (সা) ‘পাগল’ বা ‘ভুতগ্রস্থ’ রূপে আখ্যা দিত। দেখুন [ ৬৮ : ২ ] আয়াত ও টিকা ৫৫৯৪। কিন্তু পূণ্যাত্মারা তাদের এই আচরণে বিচলিত হবে না। কারণ তারা জানে আল্লাহ্‌র বাণী চিরসত্য, এবং চিরস্থায়ী এবং বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ।

 

আয়াতঃ 068.052

অথচ এই কোরআন তো বিশ্বজগতের জন্যে উপদেশ বৈ নয়।
But it is nothing else than a Reminder to all the ’Alamîn (mankind, jinns and all that exists).

وَمَا هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَالَمِينَ
Wama huwa illa thikrun lilAAalameena

YUSUFALI: But it is nothing less than a Message to all the worlds.
PICKTHAL: When it is naught else than a Reminder to creation.
SHAKIR: And it is naught but a reminder to the nations. It is in fact a message to the world.
KHALIFA: It is in fact a message to the world.

৫২। কুর-আন তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশ ব্যতীত অন্য কিছু নয়। ৫৬৩৪

৫৬৩৪। যারা আল্লাহ্‌র রাসুলকে (সা) পাগল ও ভূতগ্রস্থ আখ্যা দান করে তাদের কথার প্রবল প্রতিবাদ করা হয়েছে এই আয়াতের মাধ্যমে। রাসুল (সা) হচেছন বিশ্ব জগতের রহমত স্বরূপ। আল্লাহ্‌র বাণী ‘কুরআন’ তার মাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে। কোরাণের উপদেশ সকল পাপ ও মন্দের প্রতিশোধক স্বরূপ।

Exit mobile version