Site icon BnBoi.Com

সূরা তূর বাংলা

সূরা তূর

সূরা তূর

 

আয়াতঃ 052.001

কসম তূরপর্বতের,
By the Mount;

وَالطُّورِ
Waalttoori

YUSUFALI: By the Mount (of Revelation);
PICKTHAL: By the Mount,
SHAKIR: I swear by the Mountain,
KHALIFA: Mt. Sinai.

০১। শপথ তূর পর্বতের ৫০৩৭।

৫০৩৭। এখানে পাঁচটি জিনিষের শপথ করা হয়েছে। আয়াত ১ – ৬ পর্যন্ত পাঁচটি নিদর্শনের প্রতি আবেদন করা হয়েছে। আয়াত নং ৭ – ২৮ পর্যন্ত মৃত্যু পরবর্তী পারলৌকিক জীবনের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে যা তিন ভাগে উপস্থাপন করা হয়েছে। শেষ বিচারের দিনে এই চেনা জানা পৃথিবী অদৃশ্য হয়ে যাবে [ ৭-১০ আয়াত ] ; পাপীরা পাপের শাস্তি ভোগ করবে [ ১১ – ১৬ আয়াত ] ; পূণ্যাত্মারা ভবিষ্যতে আল্লাহ্‌র ক্ষমা ও ভালোবাসার স্বাদ গ্রহণ করবে অপার শান্তির মাধ্যমে। [ ১৭- ২৮ ] আয়াত ]

 

আয়াতঃ 052.002

এবং লিখিত কিতাবের,
And by the Book Inscribed.

وَكِتَابٍ مَّسْطُورٍ
Wakitabin mastoorin

YUSUFALI: By a Decree inscribed
PICKTHAL: And a Scripture inscribed
SHAKIR: And the Book written
KHALIFA: The recorded scripture.

০২। শপথ লিখিত বিধানের ৫০৩৮

০৩। যা আছে উম্মুক্ত পত্রে ;

৫০৩৮। দেখুন উপরেরর টিকা, যে পাঁচটি নিদর্শনের শপথ করা হয়েছে সেগুলি হচ্ছে : ১) তূর পর্বতের [ আয়াত ১ ] ; ২) উম্মুক্ত পত্রে লিখিত কিতাবের [ আয়াত ২ – ৩ ] ; ৩) বায়তুল মামূরের [ আয়াত ৪ ] ; ৪) সমুন্নত আকাশের [ আয়াত ৫ ] ; এবং ৫) উদ্বেলিত সমুদ্রের [ আয়াত ৬ ]।

১) এগুলির ব্যাখ্যা নিম্নরূপ : প্রতিটি নিদর্শন আক্ষরিক অর্থের সাথে সংযুক্ত। তূর পর্বতে বা সিনাই পর্বতে হযরত মুসা তাঁর প্রতি আল্লাহ্‌র প্রেরিত প্রত্যাদেশ প্রাপ্ত হন ; দেখুন [৯৫ : ২ ] আয়াত, যেখানে পবিত্র মক্কা নগরীর পাশাপাশি এর উল্লেখ আছে [ ৯৫ : ৩ ]। হযরত ঈসার ক্ষেত্রে যায়তুন বা জলপাই পাহাড়ের কথা বলা হয়েছে ; দেখুন [ ৯৫ :১ ] আয়াত। বাইবেলে বলা হয়েছে [ Mar xxiv . 3 – 51 ] যে এখান থেকেই হযরত ঈসা মৃত্যু পরবর্তী জীবনের শেষ বিচারের ঘোষণা দান করেন। হযরত মুহম্মদের (সা ) বেলাতে তিনি প্রথম আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ লাভ করেন হেরা বা আলোর পাহাড়ে। সুতারাং কিতাবধারী জাতিদের জন্য পর্বতের শপথ এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

২) “উম্মুক্ত পত্রে লিখিত কিতাব ” অর্থাৎ যাতে আল্লাহ্‌র চিরন্তন বাণীসমূহ লিখিত থাকে। যখন প্রত্যাদেশসমূহ মানুষের জন্য পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়, তখন তাকে বলা হয়েছে লিখিত কিতাব, যেনো তা সাধারণ মানুষের বোধগম্য রূপে ধরা পড়ে। এই কিতাবের বর্ণনাতে বলা হয়েছে যে তা লিখিত আছে উম্মুক্ত পত্রে। এর আসল অর্থ প্রাচীন কালে লেখার জন্য কাগজের স্থলে ব্যবহৃত হতো, পাতলা চামড়া বা পার্চমেন্ট যা বেলনাকারে পাকিয়ে রাখা হতো। তাই এর অনুবাদ করা হয়েছে পত্র। এই পত্রকে যখন উম্মুক্ত করা হতো বা পাকানো অবস্থা মুক্ত করা হতো তখন যে কেউ তা দেখতে পেতো এবং তা থেকে হেদায়েত গ্রহণ করতে পারতো।

 

আয়াতঃ 052.003

প্রশস্ত পত্রে,
In parchment unrolled.

فِي رَقٍّ مَّنشُورٍ
Fee raqqin manshoorin

YUSUFALI: In a Scroll unfolded;
PICKTHAL: On fine parchment unrolled,
SHAKIR: In an outstretched fine parchment,
KHALIFA: Published in books.

০২। শপথ লিখিত বিধানের ৫০৩৮

০৩। যা আছে উম্মুক্ত পত্রে ;

৫০৩৮। দেখুন উপরেরর টিকা, যে পাঁচটি নিদর্শনের শপথ করা হয়েছে সেগুলি হচ্ছে : ১) তূর পর্বতের [ আয়াত ১ ] ; ২) উম্মুক্ত পত্রে লিখিত কিতাবের [ আয়াত ২ – ৩ ] ; ৩) বায়তুল মামূরের [ আয়াত ৪ ] ; ৪) সমুন্নত আকাশের [ আয়াত ৫ ] ; এবং ৫) উদ্বেলিত সমুদ্রের [ আয়াত ৬ ]।

১) এগুলির ব্যাখ্যা নিম্নরূপ : প্রতিটি নিদর্শন আক্ষরিক অর্থের সাথে সংযুক্ত। তূর পর্বতে বা সিনাই পর্বতে হযরত মুসা তাঁর প্রতি আল্লাহ্‌র প্রেরিত প্রত্যাদেশ প্রাপ্ত হন ; দেখুন [৯৫ : ২ ] আয়াত, যেখানে পবিত্র মক্কা নগরীর পাশাপাশি এর উল্লেখ আছে [ ৯৫ : ৩ ]। হযরত ঈসার ক্ষেত্রে যায়তুন বা জলপাই পাহাড়ের কথা বলা হয়েছে ; দেখুন [ ৯৫ :১ ] আয়াত। বাইবেলে বলা হয়েছে [ Mar xxiv . 3 – 51 ] যে এখান থেকেই হযরত ঈসা মৃত্যু পরবর্তী জীবনের শেষ বিচারের ঘোষণা দান করেন। হযরত মুহম্মদের (সা ) বেলাতে তিনি প্রথম আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ লাভ করেন হেরা বা আলোর পাহাড়ে। সুতারাং কিতাবধারী জাতিদের জন্য পর্বতের শপথ এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

২) “উম্মুক্ত পত্রে লিখিত কিতাব ” অর্থাৎ যাতে আল্লাহ্‌র চিরন্তন বাণীসমূহ লিখিত থাকে। যখন প্রত্যাদেশসমূহ মানুষের জন্য পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়, তখন তাকে বলা হয়েছে লিখিত কিতাব, যেনো তা সাধারণ মানুষের বোধগম্য রূপে ধরা পড়ে। এই কিতাবের বর্ণনাতে বলা হয়েছে যে তা লিখিত আছে উম্মুক্ত পত্রে। এর আসল অর্থ প্রাচীন কালে লেখার জন্য কাগজের স্থলে ব্যবহৃত হতো, পাতলা চামড়া বা পার্চমেন্ট যা বেলনাকারে পাকিয়ে রাখা হতো। তাই এর অনুবাদ করা হয়েছে পত্র। এই পত্রকে যখন উম্মুক্ত করা হতো বা পাকানো অবস্থা মুক্ত করা হতো তখন যে কেউ তা দেখতে পেতো এবং তা থেকে হেদায়েত গ্রহণ করতে পারতো।

 

আয়াতঃ 052.004

কসম বায়তুল-মামুর তথা আবাদ গৃহের,
And by the Bait-ul-Ma’mûr (the house over the heavens parable to the Ka’bah at Makkah, continuously visited by the angels);

وَالْبَيْتِ الْمَعْمُورِ
Waalbayti almaAAmoori

YUSUFALI: By the much-frequented Fane;
PICKTHAL: And the House frequented,
SHAKIR: And the House (Kaaba) that is visited,
KHALIFA: The frequented Shrine.

০৪। শপথ বায়তুল মামুরের,৫০৩৯

৫০৩৯। ৩) উপরের দুটি টিকা দেখুন। বায়তুন মামুরের শাব্দিক অর্থ এমন গৃহ যেখানে সর্বদা জনসমাগম হয়। কেউ কেউ মনে করেন এর দ্বারা ফেরেশতাদের এবাদত করবার স্থানকে বোঝায়। মওলানা ইউসুফ আলীর মতে বায়তুল মামুর দ্বারা কাবা ঘরকে বোঝানো হয়েছে যাকে আমাদের রাসুল (সা) পবিত্র করেন এবং আল্লাহ্‌র এবাদতের জন্য নিবেদন করেন।

 

আয়াতঃ 052.005

এবং সমুন্নত ছাদের,
And by the roof raised high (i.e. the heaven).

وَالسَّقْفِ الْمَرْفُوعِ
Waalssaqfi almarfooAAi

YUSUFALI: By the Canopy Raised High;
PICKTHAL: And the roof exalted,
SHAKIR: And the elevated canopy
KHALIFA: The exalted ceiling.

০৫। শপথ সমুন্নত আকাশের ; ৫০৪০

৫০৪০। “সমুন্নত আকাশ ” – আকাশকে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে, এর ব্যপ্তি, সীমা মানুষের বর্ণনার বাইরে।

 

আয়াতঃ 052.006

এবং উত্তাল সমুদ্রের,
And by the sea kept filled (or it will be fire kindled on the Day of Resurrection).

وَالْبَحْرِ الْمَسْجُورِ
Waalbahri almasjoori

YUSUFALI: And by the Ocean filled with Swell;-
PICKTHAL: And the sea kept filled,
SHAKIR: And the swollen sea
KHALIFA: The sea that is set aflame.

০৬। [ আরো ] শপথ উদ্বেলিত সমুদ্রের ; ৫০৪১, ৫০৪২

৫০৪১। “উদ্বেলিত সমুদ্রের ” – অর্থাৎ আদিগন্ত বিস্তৃত, বিশাল, সীমাহীন জলরাশি হচ্ছে সমুদ্র। ‘Masjur’ শব্দটি দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে ফুলে ফেঁপে ওঠা শক্তিশালী সমুদ্রের বিশাল ঢেউ যা প্রচন্ড বেগে পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ছে। দেখুন [ ৮১ : ৬ ] আয়াত যা এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীর নিশ্চিহ্ন হওয়া এবং শেষ বিচারের দিনের প্রকৃত চিত্রকে তুলে ধরে।

৫০৪২। উপরের বর্ণিত পাঁচটি নিদর্শনের শপথের মাধ্যমে মানুষের জন্য মৃত্যু পরবর্তী শেষ বিচারের দিনের প্রতি ইঙ্গিত দান করা হয়েছে। শেষ বিচারের দিন অবশ্যম্ভাবী সত্য। এখানে লক্ষ্যণীয় বিষয় হচ্ছে এই নিদর্শনগুলিকে ক্রম অনুযায়ী ধারাবাহিক ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সর্বোচ্চ নিদর্শন যা মানুষের অনুভূতির সূদূর প্রান্তে থাকে তার উপস্থাপন করা হয়েছে সর্বাগ্রে এবং মানুষের অনুভূতির খুব কাছের জিনিষকে উপস্থাপন করা হয়েছে সর্বশেষে। উপস্থাপনের ধারাটি এরূপ : আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ যা সর্বোচ্চ নিদর্শন মানুষের ভাষাতে প্রকাশ লাভ করে রাসুলদের মাধ্যমে ; ঐশ্বরিক এবাদতের বিশ্বজনীন আবেদন ; উপরে নক্ষত্রশোভিত সমুন্নত আকাশ; নীচে পৃথিবী বেষ্টনকারী সমুদ্র যা জীবন ও গতিতে সমৃদ্ধ। এ সমস্তই নির্দ্দেশ করে আল্লাহ্‌র অস্তিত্ব সম্বন্ধে এবং আল্লাহ্‌র নিকট হিসাব – নিকাশের দিনকে। শেষ বিচারের দিনকে কেউই প্রতিহত করতে পারবে না।

 

আয়াতঃ 052.007

আপনার পালনকর্তার শাস্তি অবশ্যম্ভাবী,
Verily, the Torment of your Lord will surely come to pass,

إِنَّ عَذَابَ رَبِّكَ لَوَاقِعٌ
Inna AAathaba rabbika lawaqiAAun

YUSUFALI: Verily, the Doom of thy Lord will indeed come to pass;-
PICKTHAL: Lo! the doom of thy Lord will surely come to pass;
SHAKIR: Most surely the punishment of your Lord will come to pass;
KHALIFA: Your Lord’s requital is unavoidable.

০৭। নিশ্চয়ই তোমার প্রভুর শাস্তি অবশ্যই আসবে ; –

০৮। কেহই তা রোধ করতে পারবে না ; –

০৯। যেদিন নভোমন্ডল মহাকম্পনে কাঁপতে থাকবে ৫০৪৩

৫০৪৩। শেষ বিচারের দিনকে দুভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ১) ” নভোমন্ডল মহাকম্পনে কাঁপতে থাকবে।” পার্থিব জীবনে আকাশের এইরূপ কল্পনা করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব। কারণ পৃথিবীর জীবনে আমরা আকাশকে দেখি মুক্ত প্রশান্ত, উদার স্থির নীলাকাশ যা মানুষের মনকে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দেয়। রাতের নক্ষত্র খচিত আকাশ মানুষের চেতনাকে সূদূরে মহাবিশ্বে বিলিন করে। প্রতিটি গ্রহ, নক্ষত্র, তারকারাজি সকলেই আল্লাহ্‌ প্রদত্ত আইন নিভুর্লভাবে মেনে চলেছে বিরামহীন ভাবে। আকাশ মন্ডলীর কোথাও কোনও বিশৃঙ্খলা দৃষ্টিগোচর হয় না – সর্বত্র বিরাজ করে অপার শান্তি। শেষ বিচারের দিনে নভোমন্ডলের এই শান্তির রূপ পরিবর্তিত হয়ে যাবে ; নূতন পৃথিবীর সৃষ্টি হবে। দ্বিতীয় বর্ণনার জন্য দেখুন পরবর্তী টিকা।

 

আয়াতঃ 052.008

তা কেউ প্রতিরোধ করতে পারবে না।
There is none that can avert it;

مَا لَهُ مِن دَافِعٍ
Ma lahu min dafiAAin

YUSUFALI: There is none can avert it;-
PICKTHAL: There is none that can ward it off.
SHAKIR: There shall be none to avert it;
KHALIFA: No force in the universe can stop it.

০৭। নিশ্চয়ই তোমার প্রভুর শাস্তি অবশ্যই আসবে ; –

০৮। কেহই তা রোধ করতে পারবে না ; –

০৯। যেদিন নভোমন্ডল মহাকম্পনে কাঁপতে থাকবে ৫০৪৩

৫০৪৩। শেষ বিচারের দিনকে দুভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ১) ” নভোমন্ডল মহাকম্পনে কাঁপতে থাকবে।” পার্থিব জীবনে আকাশের এইরূপ কল্পনা করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব। কারণ পৃথিবীর জীবনে আমরা আকাশকে দেখি মুক্ত প্রশান্ত, উদার স্থির নীলাকাশ যা মানুষের মনকে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দেয়। রাতের নক্ষত্র খচিত আকাশ মানুষের চেতনাকে সূদূরে মহাবিশ্বে বিলিন করে। প্রতিটি গ্রহ, নক্ষত্র, তারকারাজি সকলেই আল্লাহ্‌ প্রদত্ত আইন নিভুর্লভাবে মেনে চলেছে বিরামহীন ভাবে। আকাশ মন্ডলীর কোথাও কোনও বিশৃঙ্খলা দৃষ্টিগোচর হয় না – সর্বত্র বিরাজ করে অপার শান্তি। শেষ বিচারের দিনে নভোমন্ডলের এই শান্তির রূপ পরিবর্তিত হয়ে যাবে ; নূতন পৃথিবীর সৃষ্টি হবে। দ্বিতীয় বর্ণনার জন্য দেখুন পরবর্তী টিকা।

 

আয়াতঃ 052.009

সেদিন আকাশ প্রকম্পিত হবে প্রবলভাবে।
On the Day when the heaven will shake with a dreadful shaking,

يَوْمَ تَمُورُ السَّمَاء مَوْرًا
Yawma tamooru alssamao mawran

YUSUFALI: On the Day when the firmament will be in dreadful commotion.
PICKTHAL: On the day when the heaven will heave with (awful) heaving,
SHAKIR: On the day when the heaven shall move from side to side
KHALIFA: The day will come when the sky will violently thunder.

০৭। নিশ্চয়ই তোমার প্রভুর শাস্তি অবশ্যই আসবে ; –

০৮। কেহই তা রোধ করতে পারবে না ; –

০৯। যেদিন নভোমন্ডল মহাকম্পনে কাঁপতে থাকবে ৫০৪৩

৫০৪৩। শেষ বিচারের দিনকে দুভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ১) ” নভোমন্ডল মহাকম্পনে কাঁপতে থাকবে।” পার্থিব জীবনে আকাশের এইরূপ কল্পনা করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব। কারণ পৃথিবীর জীবনে আমরা আকাশকে দেখি মুক্ত প্রশান্ত, উদার স্থির নীলাকাশ যা মানুষের মনকে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দেয়। রাতের নক্ষত্র খচিত আকাশ মানুষের চেতনাকে সূদূরে মহাবিশ্বে বিলিন করে। প্রতিটি গ্রহ, নক্ষত্র, তারকারাজি সকলেই আল্লাহ্‌ প্রদত্ত আইন নিভুর্লভাবে মেনে চলেছে বিরামহীন ভাবে। আকাশ মন্ডলীর কোথাও কোনও বিশৃঙ্খলা দৃষ্টিগোচর হয় না – সর্বত্র বিরাজ করে অপার শান্তি। শেষ বিচারের দিনে নভোমন্ডলের এই শান্তির রূপ পরিবর্তিত হয়ে যাবে ; নূতন পৃথিবীর সৃষ্টি হবে। দ্বিতীয় বর্ণনার জন্য দেখুন পরবর্তী টিকা।

 

আয়াতঃ 052.010

এবং পর্বতমালা হবে চলমান,
And the mountains will move away with a (horrible) movement.

وَتَسِيرُ الْجِبَالُ سَيْرًا
Wataseeru aljibalu sayran

YUSUFALI: And the mountains will fly hither and thither.
PICKTHAL: And the mountains move away with (awful) movement,
SHAKIR: And the mountains shall pass away passing away (altogether).
KHALIFA: The mountains will be wiped out.

১০। এবং পাহাড়-পর্বত দিগ-দিগন্তে [ ঝড়া পাতার ন্যায় ] উড়ে যাবে ৫০৪৪

৫০৪৪। সুউচ্চ পর্বতমালাকে দৃঢ়তার প্রতীক হিসেবে কল্পনা করা যায়। এ কথা বলা হয়েছে যে, পর্বত পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠকে চলমান শিলার কম্পন থেকে রোধ করে [ ১৩ : ৩ ] [ ১৫ : ১৯ ] [ ২১ : ৩১ ] [ ৩১ : ১০ ] [ ১৬ : ১৫ ] যার সত্যতা মেলে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায়। পার্থিব জীবনে আমরা যাকে মনে করি দৃঢ়, অচঞ্চল, কাঠিন্যের প্রতিমূর্তি হাশরের দিনে তা ভেঙ্গে চৌচির হয়ে যাবে। দৃঢ়তার প্রতীক যে পর্বত সকলই পরলোকে মরীচিকার ন্যায় মিথ্যা বলে প্রতিভাত হবে এবং অদৃশ্য হয়ে যাবে। [ ৭৮ : ২০ ]।

 

আয়াতঃ 052.011

সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে,
Then woe that Day to the beliers;

فَوَيْلٌ يَوْمَئِذٍ لِلْمُكَذِّبِينَ
Fawaylun yawma-ithin lilmukaththibeena

YUSUFALI: Then woe that Day to those that treat (Truth) as Falsehood;-
PICKTHAL: Then woe that day unto the deniers
SHAKIR: So woe on that day to those who reject (the truth),
KHALIFA: Woe on that day to the disbelievers –

১১। সেদিন তাদের জন্য দুর্ভোগ যারা [ সত্যকে ] মিথ্যা বলে জেনেছে ; – ৫০৪৫

১২। যারা ক্রীড়াচ্ছলে অসার কার্যকলাপে লিপ্ত থাকে।

৫০৪৫। ” মিথ্যাশ্রয়ী ” বলতে তাদেরই বোঝানো হয়েছে যারা আল্লাহ্‌র সত্যকে অস্বীকার করে; ফলে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে ক্রীড়াচ্ছলে,সত্য ভাষণ, সত্যের প্রকাশকে তারা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ; জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিককে তারা ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে। এরা হচ্ছে মোনাফেক। অনেক সময়েই এরা প্রকাশ্যে সত্যকে অস্বীকার করার সাহস প্রদর্শন করে না ; কিন্তু গোপনে সত্যের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচারণ করে তা থেকে লাভবান হয়। এ সব লোকই জীবন ভরে সন্দেহের মাঝে দোদুল্যমান হয়ে জীবন কাটায়। প্রকাশ্যে বা গোপনে যে কোনও ভাবে সত্যকে অস্বীকার করা বা তার ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করা হচেছ সত্যের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচারণ করা। এর পরেও যদি কেউ অনুতপ্ত হয়ে আত্মসংশোধনের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র করুণা ভিক্ষা করে তবে আল্লাহ্‌র ক্ষমার দ্বার সকলের জন্য উন্মুক্ত।

 

আয়াতঃ 052.012

যারা ক্রীড়াচ্ছলে মিছেমিছি কথা বানায়।
Who are playing in falsehood .

الَّذِينَ هُمْ فِي خَوْضٍ يَلْعَبُونَ
Allatheena hum fee khawdin yalAAaboona

YUSUFALI: That play (and paddle) in shallow trifles.
PICKTHAL: Who play in talk of grave matters;
SHAKIR: Those who sport entering into vain discourses.
KHALIFA: who are in their blundering, heedless.

১১। সেদিন তাদের জন্য দুর্ভোগ যারা [ সত্যকে ] মিথ্যা বলে জেনেছে ; – ৫০৪৫

১২। যারা ক্রীড়াচ্ছলে অসার কার্যকলাপে লিপ্ত থাকে।

৫০৪৫। ” মিথ্যাশ্রয়ী ” বলতে তাদেরই বোঝানো হয়েছে যারা আল্লাহ্‌র সত্যকে অস্বীকার করে; ফলে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তারা মিথ্যার আশ্রয় গ্রহণ করে ক্রীড়াচ্ছলে,সত্য ভাষণ, সত্যের প্রকাশকে তারা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে ; জীবনের গুরুত্বপূর্ণ দিককে তারা ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে। এরা হচ্ছে মোনাফেক। অনেক সময়েই এরা প্রকাশ্যে সত্যকে অস্বীকার করার সাহস প্রদর্শন করে না ; কিন্তু গোপনে সত্যের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচারণ করে তা থেকে লাভবান হয়। এ সব লোকই জীবন ভরে সন্দেহের মাঝে দোদুল্যমান হয়ে জীবন কাটায়। প্রকাশ্যে বা গোপনে যে কোনও ভাবে সত্যকে অস্বীকার করা বা তার ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করা হচেছ সত্যের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধাচারণ করা। এর পরেও যদি কেউ অনুতপ্ত হয়ে আত্মসংশোধনের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র করুণা ভিক্ষা করে তবে আল্লাহ্‌র ক্ষমার দ্বার সকলের জন্য উন্মুক্ত।

 

আয়াতঃ 052.013

সেদিন তোমাদেরকে জাহান্নামের অগ্নির দিকে ধাক্কা মেরে মেরে নিয়ে যাওয়া হবে।
The Day when they will be pushed down by force to the Fire of Hell, with a horrible, forceful pushing.

يَوْمَ يُدَعُّونَ إِلَى نَارِ جَهَنَّمَ دَعًّا
Yawma yudaAAAAoona ila nari jahannama daAAAAan

YUSUFALI: That Day shall they be thrust down to the Fire of Hell, irresistibly.
PICKTHAL: The day when they are thrust with a (disdainful) thrust, into the fire of hell
SHAKIR: The day on which they shall be driven away to the fire of hell with violence.
KHALIFA: They will be herded into Gehenna, forcibly.

১৩। সেদিন তাদের বাঁধাহীন ভাবে জাহান্নামের আগুনে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হবে।

১৪। বলা হবে ৫০৪৬, ” এই সেই আগুন যাকে তোমরা মিথ্যা মনে করতে,

৫০৪৬। সেদিন প্রত্যেকে কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হবে। পাপীরা সেদিন বুঝতে পারবে তাদের মন্দ কাজের প্রতিফল। তাদের প্রতিটি মন্দ কাজ, মন্দ চিন্তা যা তাদের মনের গহনে ছিলো, যাকে তারা পৃথিবীর জীবনে সযত্নে লালিত করেছে এবং কখনও স্মরণে আনে নাই যে, প্রতিটি মন্দ চিন্তা, মন্দ কাজ বা উদ্দেশ্য জীবনের কোনও জিনিষই হারিয়ে যাবে না, মহাকালের খাতায় তা লেখা থাকে। সবকিছুরই প্রতিদান থাকে যার পরিণাম অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। এই পরিণামই হচ্ছে ” সেই অগ্নি যাকে তোমরা মিথ্যা মনে করতে।”

 

আয়াতঃ 052.014

এবং বলা হবেঃ এই সেই অগ্নি, যাকে তোমরা মিথ্যা বলতে,
This is the Fire which you used to belie.

هَذِهِ النَّارُ الَّتِي كُنتُم بِهَا تُكَذِّبُونَ
Hathihi alnnaru allatee kuntum biha tukaththiboona

YUSUFALI: “This:, it will be said, “Is the Fire,- which ye were wont to deny!
PICKTHAL: (And it is said unto them): This is the Fire which ye were wont to deny.
SHAKIR: This is the fire which you used to give the lie to.
KHALIFA: This is the Fire in which you used to disbelieve.

১৩। সেদিন তাদের বাঁধাহীন ভাবে জাহান্নামের আগুনে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হবে।

১৪। বলা হবে ৫০৪৬, ” এই সেই আগুন যাকে তোমরা মিথ্যা মনে করতে,

৫০৪৬। সেদিন প্রত্যেকে কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হবে। পাপীরা সেদিন বুঝতে পারবে তাদের মন্দ কাজের প্রতিফল। তাদের প্রতিটি মন্দ কাজ, মন্দ চিন্তা যা তাদের মনের গহনে ছিলো, যাকে তারা পৃথিবীর জীবনে সযত্নে লালিত করেছে এবং কখনও স্মরণে আনে নাই যে, প্রতিটি মন্দ চিন্তা, মন্দ কাজ বা উদ্দেশ্য জীবনের কোনও জিনিষই হারিয়ে যাবে না, মহাকালের খাতায় তা লেখা থাকে। সবকিছুরই প্রতিদান থাকে যার পরিণাম অত্যন্ত ভয়ঙ্কর। এই পরিণামই হচ্ছে ” সেই অগ্নি যাকে তোমরা মিথ্যা মনে করতে।”

 

আয়াতঃ 052.015

এটা কি জাদু, না তোমরা চোখে দেখছ না?
Is this magic, or do you not see?

أَفَسِحْرٌ هَذَا أَمْ أَنتُمْ لَا تُبْصِرُونَ
Afasihrun hatha am antum la tubsiroona

YUSUFALI: “Is this then a fake, or is it ye that do not see?
PICKTHAL: Is this magic, or do ye not see?
SHAKIR: Is it magic then or do you not see?
KHALIFA: Is this magic, or do you not see?

১৫। ” তবে কি এটা নকল, ৫০৪৭, কিংবা তোমরাই তা দেখতে পাচ্ছ না ?

৫০৪৭। যারা আল্লাহ্‌র সত্যকে স্বীকার করে না তাদের আত্মায় আল্লাহ্‌র হেদায়েতের আলো প্রবেশ লাভ করে না। ফলে তাদের নিকট পরলোকের জীবনটাকে কখনও বাস্তব সত্য বলে প্রতিভাত হয় না। তারা পরকালকে প্রাচীন যুগের গল্প কাহিনী বা কুসংস্কারচ্ছন্নদের অন্ধ বিশ্বাস এবং নিজেদের প্রগতিশীলরূপে কল্পনা করে থাকে। কিন্তু যদি তারা আল্লাহ্‌র নিদর্শন বা সত্য সম্বন্ধে গভীরভাবে চিন্তা করতো, তবে তারা খুব সহজেই প্রকৃত সত্যকে অনুধাবন করতে পারতো এবং আধ্যাত্মিক অন্ধত্ব থেকে মুক্তি লাভ করতো। আধ্যাত্মিক অন্ধত্ব মানুষকে প্রকৃত সত্যকে উপলব্ধিতে বাঁধা দান করে। এরা নিজেদের দোষত্রুটি অনুধাবনে অক্ষম। ফলে তারা আল্লাহ্‌র নবীর প্রেরিত সত্যকে গ্রহণে অপারগ হয় এবং সত্য বিমুখ হয়।

উপদেশ : কোরাণ হচ্ছে আল্লাহ্‌র প্রেরিত ‘সত্য’ যা জীবনের সফলতার চাবিকাঠি। কিন্তু যারা তা গ্রহণ করতে না চায় তাদের আধ্যাত্মিক উপলব্ধিকে আল্লাহ্‌ অবগুণ্ঠন দ্বারা আবৃত করে দেন। ফলে তারা কোরাণ পড়েও তা বুঝতে বা উপলব্ধি করতে সক্ষম হবে না। দেখুন [ ১৭ : ৪৬ ] আয়াত।

 

আয়াতঃ 052.016

এতে প্রবেশ কর অতঃপর তোমরা সবর কর অথবা না কর, উভয়ই তোমাদের জন্য সমান। তোমরা যা করতে তোমাদেরকে কেবল তারই প্রতিফল দেয়া হবে।
Taste you therein its heat, and whether you are patient of it or impatient of it, it is all the same. You are only being requited for what you used to do.

اصْلَوْهَا فَاصْبِرُوا أَوْ لَا تَصْبِرُوا سَوَاء عَلَيْكُمْ إِنَّمَا تُجْزَوْنَ مَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
Islawha faisbiroo aw la tasbiroo sawaon AAalaykum innama tujzawna ma kuntum taAAmaloona

YUSUFALI: “Burn ye therein: the same is it to you whether ye bear it with patience, or not: Ye but receive the recompense of your (own) deeds.”
PICKTHAL: Endure the heat thereof, and whether ye are patient of it or impatient of it is all one for you. Ye are only being paid for what ye used to do.
SHAKIR: Enter into it, then bear (it) patiently, or do not bear (it) patiently, it is the same to you; you shall be requited only (for) what you did.
KHALIFA: Suffer the burning. Whether you are patient or impatient, it will be the same for you. This is the just requital for what you did.

১৬। ” তোমরা সেখানে পুড়তে থাক : তোমরা তা ধৈর্যের সাথে সহ্য করবে বা করবে না, তোমাদের জন্য উভয়ই সমান ৫০৪৮। তোমরা যা করতে তারই প্রতিফল তোমাদের দেয়া হচ্ছে।”

৫০৪৮। মৃত্যু পরবর্তী জীবনে নূতনভাবে আর কোনও কিছু করার ক্ষমতা আমাদের থাকবে না। পৃথিবীর জীবন ছিলো মৃত্যুপরবর্তী জীবনের শিক্ষানবীশ কাল। এ জীবনের হিসাব নিকাশ দাখিল করতে হবে শেষ বিচারের দিনে এবং আমাদের পার্থিব জীবনের কৃতকর্ম অনুযায়ী আমাদের ভাগ্য নির্ধারিত হবে সেদিন। সেদিন অধৈর্য বা রাগের প্রকাশ কিছুই তাদের উপকারে আসবে না, অথবা অনুতাপ বা ধৈর্য্য ধারণ কিছুই তাদের শাস্তি থেকে অব্যহতি দান করবে না। কারণ পার্থিব জীবনে তারা ইচ্ছাকৃতভাবে আল্লাহ্‌র ক্ষমা ও করুণা এবং অনুগ্রহকে প্রত্যাখান করেছে। সুতারাং অনুতাপের মাধ্যমে আল্লাহ্‌র ক্ষমালাভের যে সুযোগ ও সময় তাদের দেয়া হয়েছিলো তারা তা অবহেলায় নষ্ট করেছে। এখন তা আর ফিরে পাওয়া সম্ভব নয়।

 

আয়াতঃ 052.017

নিশ্চয় খোদাভীরুরা থাকবে জান্নাতে ও নেয়ামতে।
Verily, the Muttaqûn (pious – see V.2:2) will be in Gardens (Paradise), and Delight.

إِنَّ الْمُتَّقِينَ فِي جَنَّاتٍ وَنَعِيمٍ
Inna almuttaqeena fee jannatin wanaAAeemin

YUSUFALI: As to the Righteous, they will be in Gardens, and in Happiness,-
PICKTHAL: Lo! those who kept their duty dwell in gardens and delight,
SHAKIR: Surely those who guard (against evil) shall be in gardens and bliss
KHALIFA: The righteous have deserved gardens and bliss.

১৭। পূণ্যাত্মারা ৫০৪৯ থাকবে [ বেহেশতের ] বাগানে এবং সুখে সন্তুষ্টিতে;

১৮। তাদের প্রভু তাদের যে [ প্রশান্তি ] দান করেছেন তারা তা উপভোগ করতে থাকবে, এবং তাদের প্রভু তাদের আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করবেন।

৫০৪৯। পূণ্যাত্মারা বেহেশতে যে সুখ ও শান্তি লাভ করবেন তা তুলনাহীন, তা তাদের ধারণারও বাইরে। পৃথিবীর জীবনে কেউই সর্ব পাপের উর্দ্ধে নয়। কিন্তু পরম করুণাময় তাঁদের এই ছোটখাট পাপ ও দোষত্রুটি মাপ করে দিয়ে তাদের আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ লাভে ধন্য করবেন। পার্থিব জীবনে তারা পাপমুক্ত জীবন ধারনের যে চেষ্টা করেছেন তারই পুরষ্কার তাঁরা লাভ করবেন পারলৌকিক জীবনে ; দেখুন আয়াত নং ১৯। তবে তাদের পুরষ্কার তাদের যা প্রাপ্য তার থেকে বহু গুণ দেয়া হবে।

 

আয়াতঃ 052.018

তারা উপভোগ করবে যা তাদের পালনকর্তা তাদের দেবেন এবং তিনি জাহান্নামের আযাব থেকে তাদেরকে রক্ষা করবেন।
Enjoying in that which their Lord has bestowed on them, and (the fact that) their Lord saved them from the torment of the blazing Fire.

فَاكِهِينَ بِمَا آتَاهُمْ رَبُّهُمْ وَوَقَاهُمْ رَبُّهُمْ عَذَابَ الْجَحِيمِ
Fakiheena bima atahum rabbuhum wawaqahum rabbuhum AAathaba aljaheemi

YUSUFALI: Enjoying the (Bliss) which their Lord hath bestowed on them, and their Lord shall deliver them from the Penalty of the Fire.
PICKTHAL: Happy because of what their Lord hath given them, and (because) their Lord hath warded off from them the torment of hell-fire.
SHAKIR: Rejoicing because of what their Lord gave them, and their Lord saved them from the punishment of the burning fire.
KHALIFA: They enjoy what their Lord has reserved for them; their Lord has spared them the retribution of Hell.

১৭। পূণ্যাত্মারা ৫০৪৯ থাকবে [ বেহেশতের ] বাগানে এবং সুখে সন্তুষ্টিতে;

১৮। তাদের প্রভু তাদের যে [ প্রশান্তি ] দান করেছেন তারা তা উপভোগ করতে থাকবে, এবং তাদের প্রভু তাদের আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করবেন।

৫০৪৯। পূণ্যাত্মারা বেহেশতে যে সুখ ও শান্তি লাভ করবেন তা তুলনাহীন, তা তাদের ধারণারও বাইরে। পৃথিবীর জীবনে কেউই সর্ব পাপের উর্দ্ধে নয়। কিন্তু পরম করুণাময় তাঁদের এই ছোটখাট পাপ ও দোষত্রুটি মাপ করে দিয়ে তাদের আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ লাভে ধন্য করবেন। পার্থিব জীবনে তারা পাপমুক্ত জীবন ধারনের যে চেষ্টা করেছেন তারই পুরষ্কার তাঁরা লাভ করবেন পারলৌকিক জীবনে ; দেখুন আয়াত নং ১৯। তবে তাদের পুরষ্কার তাদের যা প্রাপ্য তার থেকে বহু গুণ দেয়া হবে।

 

আয়াতঃ 052.019

তাদেরকে বলা হবেঃ তোমরা যা করতে তার প্রতিফলস্বরূপ তোমরা তৃপ্ত হয়ে পানাহার কর।
”Eat and drink with happiness because of what you used to do.”

كُلُوا وَاشْرَبُوا هَنِيئًا بِمَا كُنتُمْ تَعْمَلُونَ
Kuloo waishraboo hanee-an bima kuntum taAAmaloona

YUSUFALI: (To them will be said:) “Eat and drink ye, with profit and health, because of your (good) deeds.”
PICKTHAL: (And it is said unto them): Eat and drink in health (as a reward) for what ye used to do,
SHAKIR: Eat and drink pleasantly for what you did,
KHALIFA: Eat and drink happily, in return for your works.

১৯। [ তাদের বলা হবে ] ৫০৫০, ” তোমাদের [ ভালো ] কাজের বিনিময়ে তোমরা তৃপ্তির সাথে আহার কর, এবং পান কর। ” ৫০৫১

৫০৫০। উপরের আয়াতসমূহের বিপরীতে পূণ্যাত্মাদের সুখ শান্তির বিবরণ তিনটি ধাপে তুলে ধরা হয়েছেঃ
১) তাঁদের ব্যক্তিগত সুখ-শান্তি ও আর্থিক প্রশান্তি ; দেখুন আয়াত নং [ ১৭- ২০ ] ; ২) তাঁদের সামাজিক সুখ শান্তির প্রকাশ, দেখুন আয়াত নং [ ২১ – ২৪ ] ; এবং ৩) তাঁরা পৃথিবীর জীবনের তুচ্ছ আমোদ প্রমোদ ও সন্তুষ্টির কথা চিন্তা করে পরকালে আল্লাহ্‌র অনুগ্রহের পরিপূর্ণ রূপকে অনুধাবনে সক্ষম হবে। দেখুন আয়াত নং [ ২৫ – ২৮ ]।

৫০৫১। মোমেন বান্দাদের ব্যক্তিগত পরিতৃপ্তিকে তিনটি বক্তব্যের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। ১) পান ও আহার করা ২) সজ্জিত আসন, ৩) সাহচর্যের বিমল অনন্দ। পানাহারকে বলা হয়েছে তৃপ্তির সাথে আহার কর অর্থাৎ অতিভোজন বা পানীয়ের কোনও পরবর্তীতে কুফল থাকবে না। সেখানে রোগ ব্যাধি মুক্ত, দুঃশ্চিন্তাহীন জীবনের নিশ্চয়তা থাকবে। অন্য দুটির জন্য দেখুন পরবর্তী টিকা।

আরও দেখুন বেহেশতের বর্ণনা [ ৩৭ : ৪০- ৪৯ ] আয়াতে।

 

আয়াতঃ 052.020

তারা শ্রেণীবদ্ধ সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। আমি তাদেরকে আয়তলোচনা হুরদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করে দেব।
They will recline (with ease) on thrones arranged in ranks. And We shall marry them to Houris (female, fair ones) with wide lovely eyes.

مُتَّكِئِينَ عَلَى سُرُرٍ مَّصْفُوفَةٍ وَزَوَّجْنَاهُم بِحُورٍ عِينٍ
Muttaki-eena AAala sururin masfoofatin wazawwajnahum bihoorin AAeenin

YUSUFALI: They will recline (with ease) on Thrones (of dignity) arranged in ranks; and We shall join them to Companions, with beautiful big and lustrous eyes.
PICKTHAL: Reclining on ranged couches. And we wed them unto fair ones with wide, lovely eyes.
SHAKIR: Reclining on thrones set in lines, and We will unite them to large-eyed beautiful ones.
KHALIFA: They relax on luxurious furnishings, and we match them with beautiful spouses.

২০। তারা সারি সারি [মর্যাদাপূর্ণ ] সিংহাসনে [ আরামের সাথে ] হেলান দিয়ে বসবে ৫০৫২। সুনয়না পরমা সুন্দরী হুরদের সাথে আমি তাদের মিলন ঘটাবো ৫০৫৩।

৫০৫২। বেহেশতবাসীদের প্রত্যেকের জন্য থাকবে সম্মানীয় আসন। প্রতিটি আসনই থাকবে স্ব-স্ব বৈশিষ্ট্য মন্ডিত যদিও তারা থাকবে “শ্রেণীবদ্ধ”। অর্থাৎ প্রত্যেককে আল্লাহ্‌ পূত পবিত্র করে নেবেন কিন্তু সকলকে মিশ্রিত না করে প্রত্যেকেই স্ব-স্ব বৈশিষ্ট্যে ভাস্বর থাকবেন।

৫০৫৩। দেখুন [ ৪৪ : ৫৪ ] আয়াত এবং টিকা নং ৪৭২৮ ও ৪৭২৯ যেখানে হুর শব্দটি বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। মানুষ সুখ -আনন্দ কখনও একা ভোগ করে আনন্দ পায় না। সম অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে আনন্দের শিখা আরও উজ্জ্বল ভাবে প্রজ্জ্বলিত হয়। এই সাহচর্যের সঙ্গীকে ‘হুর’ শব্দটির দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে।

 

আয়াতঃ 052.021

যারা ঈমানদার এবং যাদের সন্তানরা ঈমানে তাদের অনুগামী, আমি তাদেরকে তাদের পিতৃপুরুষদের সাথে মিলিত করে দেব এবং তাদের আমল বিন্দুমাত্রও হ্রাস করব না। প্রত্যেক ব্যক্তি নিজ কৃত কর্মের জন্য দায়ী।
And those who believe and whose offspring follow them in Faith, to them shall We join their offspring, and We shall not decrease the reward of their deeds in anything. Every person is a pledge for that which he has earned.

وَالَّذِينَ آمَنُوا وَاتَّبَعَتْهُمْ ذُرِّيَّتُهُم بِإِيمَانٍ أَلْحَقْنَا بِهِمْ ذُرِّيَّتَهُمْ وَمَا أَلَتْنَاهُم مِّنْ عَمَلِهِم مِّن شَيْءٍ كُلُّ امْرِئٍ بِمَا كَسَبَ رَهِينٌ
Waallatheena amanoo waittabaAAat-hum thurriyyatuhum bi-eemanin alhaqna bihim thurriyyatahum wama alatnahum min AAamalihim min shay-in kullu imri-in bima kasaba raheenun

YUSUFALI: And those who believe and whose families follow them in Faith,- to them shall We join their families: Nor shall We deprive them (of the fruit) of aught of their works: (Yet) is each individual in pledge for his deeds.
PICKTHAL: And they who believe and whose seed follow them in faith, We cause their seed to join them (there), and We deprive them of nought of their (life’s) work. Every man is a pledge for that which he hath earned.
SHAKIR: And (as for) those who believe and their offspring follow them in faith, We will unite with them their offspring and We will not diminish to them aught of their work; every man is responsible for what he shall have wrought.
KHALIFA: For those who believed, and their children also followed them in belief, we will have their children join them. We never fail to reward them for any work. Every person is paid for what he did.

২১। এবং যারা বিশ্বাসী এবং যাদের পরিবারবর্গ তাদের বিশ্বাসের অনুগামী হয় ৫০৫৪,- তাদের সাথে তাদের পরিবারবর্গকে একত্রে মিলিত করাবো। তাদের কাজের জন্য [ পুরষ্কার থেকে ] কিছুই কমাবো না। প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজ নিজ কর্মফলের সাথে আবদ্ধ রয়েছে ৫০৫৫।

৫০৫৪। ‘Zurriyat’ অর্থাৎ পরবর্তী প্রজন্ম, সন্তান-সন্ততি, পরিবার ইত্যাদি যারা আপনজন তাদের সকলের জন্য শব্দটি প্রযোজ্য। ভালোবাসা সর্বদাই নিঃস্বার্থ হয়; ভালোবাসার জনের জন্য লোকে আত্মত্যাগ করে। এখানে বলা হয়েছে সৎকর্মপরায়ন পিতৃপুরুষ দ্বারা তাদের সন্তানেরা উপকৃত হবে, শর্ত হচ্ছে তারাও তাদের ক্ষমতা অনুযায়ী ঈমানে বিশ্বস্ত থাকবে। তাদের আমল কিছু কম হওয়া সত্ত্বেও তাদের পিতৃপুরুষদের পূণ্যের দরুণ তাদের সাথে মিলিত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করবে। আবার এর জন্য পূর্বপুরুষদের আমল কিছুমাত্র হ্রাস করা হবে না।

৫০৫৫। যারা নবীর উম্মত তাদের উপরে নবীর ভালোবাসা বা নেকবান পূর্বপুরূষদের দোয়া বা পরবর্তী বংশধরদের দোয়া বা নেক বান্দাদের দোয়া আল্লাহ্‌ কুবল করেন সত্য, তবে একের গোনাহ্‌র প্রতিক্রিয়া অন্যের উপরে প্রতিফলিত হবে না। প্রত্যেক ব্যক্তি তাঁর আমলের জন্য দায়ী হবে। পরবর্তী বা পূর্ববর্তী প্রজন্মের উপরে দোয়া কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে ঈমান ও সৎ কাজ। প্রত্যেক ব্যক্তিই তার স্ব-স্ব কৃতকর্মের জন্য দায়ী থাকবে। আল্লাহ্‌র রাজত্বে কোনও বংশ গৌরবের স্থান নাই বা পূর্বপুরুষের নেকীর বদৌলতে নিজ কৃতকর্মের জবাবদিহিতা থেকে নিষ্কৃতি পেতে পারে এমন বিধান নাই। তবে পূণ্যাত্মাদের জন্য এই সুসংবাদ দান করা হয়েছে যে, যদি তাদের পরবর্তী প্রজন্মে কোনও যোগ্য উত্তরসূরী জন্মলাভ করে, তবে সে তাদের সাথে মিলিত হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করবে।

 

আয়াতঃ 052.022

আমি তাদেরকে দেব ফল-মূল এবং মাংস যা তারা চাইবে।
And We shall provide them with fruit and meat, such as they desire.

وَأَمْدَدْنَاهُم بِفَاكِهَةٍ وَلَحْمٍ مِّمَّا يَشْتَهُونَ
Waamdadnahum bifakihatin walahmin mimma yashtahoona

YUSUFALI: And We shall bestow on them, of fruit and meat, anything they shall desire.
PICKTHAL: And We provide them with fruit and meat such as they desire.
SHAKIR: And We will aid them with fruit and flesh such as they desire.
KHALIFA: We will supply them with fruits and meats that they love.

২২। [ সেখানে ] তারা তাদের ইচ্ছানুযায়ী যেরূপ ফল ও গোশ্‌ত চাইবে আমি তাদের তাই-ই দেবো ৫০৫৬।

৫০৫৬। লক্ষ্য করুন এই আয়াতটি বেহেশতে সামাজিক শান্তির বর্ণনার মধ্যে স্থাপিত করা হয়েছে। বেহেশতের ব্যক্তিগত আরাম-আয়েশ ও শান্তির বর্ণনা আছে ১৯ নং আয়াতে। সামাজিক সুখ -শান্তির আরাম -আয়েশ বহু ধরণের হতে পারে তার মাঝে খাদ্য দ্রব্য অন্যতম। বেহেশতে প্রত্যেকের চাওয়া ও পাওয়া হবে পূত ও পবিত্র এবং তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী। এখানের বর্ণনাতে আঁকা হয়েছে সমষ্টিগত আরাম আয়েশের বর্ণনা।

 

আয়াতঃ 052.023

সেখানে তারা একে অপরকে পানপাত্র দেবে; যাতে অসার বকাবকি নেই এবং পাপকর্মও নেই।
There they shall pass from hand to hand a (wine) cup, free from any Laghw (dirty, false, evil vague talk between them), and free from sin (because it will be legal for them to drink).

يَتَنَازَعُونَ فِيهَا كَأْسًا لَّا لَغْوٌ فِيهَا وَلَا تَأْثِيمٌ
YatanazaAAoona feeha ka/san la laghwun feeha wala ta/theemun

YUSUFALI: They shall there exchange, one with another, a (loving) cup free of frivolity, free of all taint of ill.
PICKTHAL: There they pass from hand to hand a cup wherein is neither vanity nor cause of sin.
SHAKIR: They shall pass therein from one to another a cup wherein there shall be nothing vain nor any sin.
KHALIFA: They will enjoy drinks that are never polluted, and never sinful to drink.

২৩। সেখানে তারা পরস্পরের মধ্যে আদান প্রদান করবে [ ভালোবাসার ] পেয়ালা যা হবে চাপল্যমুক্ত ও সকল পাপ থেকে মুক্ত ৫০৫৭।

৫০৫৭। পৃথিবীর জীবনে পান করার অর্থ হচ্ছে ‘মদ’ বা এই জাতীয় মাদক দ্রব্য পান করা বা পানপাত্র বন্ধু বান্ধবের নিকট থেকে গ্রহণ করা যা পানে দ্বিবিধ ক্রিয়া হয় : ১) অবসর সময়কে বাজে ও বৃথা ব্যয় করার জন্য ব্যবহার করা হয়; অথবা ২) পানীয়টাকে উত্তেজক হিসেবে ব্যবহার করা হয় যেনো খারাপ চিন্তা, খারাপ ধারণা, খারাপ ইঙ্গিত, খারাপ কথাবার্তা বা পাপ কাজে নিজেকে নিয়োজিত করতে পারে। বেহেশতের ‘পানীয় ‘ হবে ঠিক এর বিপরীত।

 

আয়াতঃ 052.024

সুরক্ষিত মোতিসদৃশ কিশোররা তাদের সেবায় ঘুরাফেরা করবে।
And there will go round boy-servants of theirs, to serve them as if they were preserved pearls.

وَيَطُوفُ عَلَيْهِمْ غِلْمَانٌ لَّهُمْ كَأَنَّهُمْ لُؤْلُؤٌ مَّكْنُونٌ
Wayatoofu AAalayhim ghilmanun lahum kaannahum lu/luon maknoonun

YUSUFALI: Round about them will serve, (devoted) to them, young male servants (handsome) as Pearls well-guarded.
PICKTHAL: And there go round, waiting on them menservants of their own, as they were hidden pearls.
SHAKIR: And round them shall go boys of theirs as if they were hidden pearls.
KHALIFA: Serving them will be servants like protected pearls.

২৪। তাদের সেবায় নিয়োজিত থাকবে সুরক্ষিত, মুক্তাসদৃশ কিশোরেরা ৫০৫৮।

৫০৫৮। ‘Maknun’ অর্থ সুরক্ষিত রাখা,বন্ধ রাখা, গুপ্ত রাখা, লুকিয়ে রাখা ইত্যাদি। কিশোরদের এক কথায় বর্ণনা করা হয়েছে সুরক্ষিত মুক্তা সদৃশ্য। শুক্তির মাঝে যে মুক্তা থাকে তার ঔজ্জ্বল্য ও সৌন্দর্য বর্ণনাতীত। কিন্তু দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে বা বাইরে আলো হাওয়াতে ফেলে রাখলে মুক্তার ঔজ্জ্বল্য কিছুটা নষ্ট হয়ে যায়। সুতারাং যখন ব্যবহার হয় না তখন মুক্তাকে সুরক্ষিত গহনার বাক্সে বন্দ করে রাখে যেনো তার ঔজ্জ্বল্য ও সৌন্দর্য না হারায়।

 

আয়াতঃ 052.025

তারা একে অপরের দিকে মুখ করে জিজ্ঞাসাবাদ করবে।
And some of them draw near to others, questioning.

وَأَقْبَلَ بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ يَتَسَاءلُونَ
Waaqbala baAAduhum AAala baAAdin yatasaaloona

YUSUFALI: They will advance to each other, engaging in mutual enquiry.
PICKTHAL: And some of them draw near unto others, questioning,
SHAKIR: And some of them shall advance towards others questioning each other.
KHALIFA: They will meet each other and reminisce among themselves.

২৫। এবং তারা একে অন্যের সম্মুখীন হয়ে পরস্পর জিজ্ঞাসা বাদ করবে ৫০৫৯।

৫০৫৯। বেহেশতের বর্ণনার তৃতীয় ধাপ এই আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে। বেহেশতের সুখ শান্তির প্রথম ধাপ হচ্ছে ব্যক্তিগত সুখ ও শান্তি। দ্বিতীয় ধাপে আছে সমষ্টিগত বা সামাজিক সুখ ও শান্তি। তৃতীয় ধাপে বর্ণনা করা হয়েছে অতীতের স্মৃতি চারণের মাধ্যমে বর্তমানের সুখ, শান্তি ও আরাম, আয়েশকে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করা এবং আল্লাহ্‌র অনুগ্রহকে অনুভব করা। দেখুন টিকা ৫০৫০। এই অনুভবও হবে পরস্পর অন্তরঙ্গ কথোপকথনের মাধ্যমে ও একই বিশ্বাসের মূলসূত্র থেকে।

 

আয়াতঃ 052.026

তারা বলবেঃ আমরা ইতিপূর্বে নিজেদের বাসগৃহে ভীত-কম্পিত ছিলাম।
Saying: ”Aforetime, we were afraid with our families (from the punishment of Allâh).

قَالُوا إِنَّا كُنَّا قَبْلُ فِي أَهْلِنَا مُشْفِقِينَ
Qaloo inna kunna qablu fee ahlina mushfiqeena

YUSUFALI: They will say: “Aforetime, we were not without fear for the sake of our people.
PICKTHAL: Saying: Lo! of old, when we were with our families, we were ever anxious;
SHAKIR: Saying: Surely we feared before on account of our families:
KHALIFA: They will say, “We used to be kind and humble among our people.

২৬। তারা বলবে, ” আমরা পূর্বে পরিবার পরিজনের সম্বন্ধে ভীত ছিলাম ৫০৬০।

৫০৬০। পার্থিব জীবনের কেউই সম্পূর্ণ শঙ্কামুক্ত জীবন যাপন করতে পারে না। পবিত্র জীবন যাপনের মাধ্যমে সীমিত ধারণায় হলেও আধ্যাত্মিক দিক থেকে সে সফলতা লাভ করতে পারে সত্য। কিন্তু পৃথিবীর জীবন, কর্মক্ষেত্র, সন্তান-সন্ততি, স্ত্রী, পুত্র, পরিজন ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় তাদের চিন্তা ধারা ও মনকে সর্বদা ব্যপৃত রাখতো এবং শঙ্কায় পরিপূর্ণ করে ফেলতো। বেহেশতি শান্তির বর্ণনায় বলা হয়েছে যে, তাদের মন থেকে সকল ভয়, দুঃশ্চিন্তা, শঙ্কা, মুক্ত করে দেয়া হবে এবং এই ব্যাপারে তারা সমমনাদের সাথে আলোচনা করবে। কি অপূর্ব বর্ণনার মাধ্যমে মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রের সুখ, শান্তি, আনন্দ পরিতৃপ্তির বর্ণনা করা হয়েছে।

 

আয়াতঃ 052.027

অতঃপর আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং আমাদেরকে আগুনের শাস্তি থেকে রক্ষা করেছেন।
”But Allâh has been gracious to us, and has saved us from the torment of the Fire.

فَمَنَّ اللَّهُ عَلَيْنَا وَوَقَانَا عَذَابَ السَّمُومِ
Famanna Allahu AAalayna wawaqana AAathaba alssamoomi

YUSUFALI: “But Allah has been good to us, and has delivered us from the Penalty of the Scorching Wind.
PICKTHAL: But Allah hath been gracious unto us and hath preserved us from the torment of the breath of Fire.
SHAKIR: But Allah has been gracious to us and He has saved us from the punishment of the hot wind:
KHALIFA: “GOD has blessed us, and has spared us the agony of ill winds.

২৭। ” কিন্তু আল্লাহ্‌ আমাদের অনুগ্রহ করেছেন এবং দগ্ধকারী বাতাসের শাস্তি থেকে রক্ষা করেছেন ৫০৬১।

৫০৬১। এই আয়াতে “আমাদিগকে ” শব্দটি দ্বারা বহুবচন বুঝানো হয়েছে যার দ্বারা পুরুষ ও নারী উভয়েই অন্তর্ভূক্ত, যাদের আল্লাহ্‌ অনুগ্রহ করেছেন।

 

আয়াতঃ 052.028

আমরা পূর্বেও আল্লাহকে ডাকতাম। তিনি সৌজন্যশীল, পরম দয়ালু।
”Verily, We used to invoke Him (Alone and none else) before. Verily, He is Al­Barr (the Most Subtle, Kind, Courteous, and Generous), the Most Merciful.”

إِنَّا كُنَّا مِن قَبْلُ نَدْعُوهُ إِنَّهُ هُوَ الْبَرُّ الرَّحِيمُ
Inna kunna min qablu nadAAoohu innahu huwa albarru alrraheemu

YUSUFALI: “Truly, we did call unto Him from of old: truly it is He, the Beneficent, the Merciful!”
PICKTHAL: Lo! we used to pray unto Him of old. Lo! He is the Benign, the Merciful.
SHAKIR: Surely we called upon Him before: Surely He is the Benign, the Merciful.
KHALIFA: “We used to implore Him; He is the Most Kind, Most Merciful.”

২৮। “নিশ্চয়ই আমরা পূর্ব থেকেই আল্লাহকে ডাকতাম : তিনি তো উপকারী,পরম দয়ালু ৫০৬২।”

৫০৬২। “আমরা পূর্ব থেকেই আল্লাহকে ডাকতাম ” – অর্থাৎ পার্থিব জীবনেও মোমেন বান্দারা আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতো এবং বিশ্বাস করতো যে সকল ভালো ও কল্যাণের তিনিই একমাত্র প্রভু। এখন এই পরলোকের জীবনে তারা অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে উপলব্ধি করতে পারেন যে, আল্লাহ্‌ প্রকৃতই কল্যাণের মালিক ও অপার করুণার আধার। তাদের উপলব্ধির তীব্রতা বৃদ্ধি পায় কৃতজ্ঞতায় তাঁদের অন্তর আপ্লুত হয়ে পড়ে। এই আয়াতটি বেহেশতের বর্ণনার সর্বোচ্চ প্রকাশ।

 

আয়াতঃ 052.029

অতএব, আপনি উপদেশ দান করুন। আপনার পালনকর্তার কৃপায় আপনি অতীন্দ্রিয়বাদী নন এবং উম্মাদও নন।
Therefore, remind and preach (mankind, O Muhammad SAW of Islâmic Monotheism). By the Grace of Allâh, you are neither a soothsayer, nor a madman.

فَذَكِّرْ فَمَا أَنتَ بِنِعْمَتِ رَبِّكَ بِكَاهِنٍ وَلَا مَجْنُونٍ
Fathakkir fama anta biniAAmati rabbika bikahin wala majnoonin

YUSUFALI: Therefore proclaim thou the praises (of thy Lord): for by the Grace of thy Lord, thou art no (vulgar) soothsayer, nor art thou one possessed.
PICKTHAL: Therefor warn (men, O Muhammad). By the grace of Allah thou art neither soothsayer nor madman.
SHAKIR: Therefore continue to remind, for by the grace of your Lord, you are not a soothsayer, or a madman.
KHALIFA: You shall remind the people. With your Lord’s blessing’s upon you, you are neither a soothsayer, nor crazy.

রুকু – ২

২৯। সুতারাং [ তোমার প্রভুর ] প্রশংসা ঘোষণা কর ৫০৬৩। তোমার প্রভুর অনুগ্রহে তুমি গণক নও, উম্মাদও নও।

৫০৬৩। কাফেররা মহানবীকে গণক বা উম্মাদ বলে বিদ্রূপ করতো। যুগে যুগে এ ভাবেই সত্যকে ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করে বাঁধা দান করা হয়ে থাকে। আল্লাহ্‌র হুকুম মহানবীর উদাহরণের মাধ্যমে বলা হয়েছে যে, সত্য প্রচার ও প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে কেউ যেনো পিছিয়ে না যায়।

 

আয়াতঃ 052.030 

তারা কি বলতে চায়ঃ সে একজন কবি আমরা তার মৃত্যু-দুর্ঘটনার প্রতীক্ষা করছি।
Or do they say: ”(Muhammad SAW is) a poet! We await for him some calamity by time.!”

أَمْ يَقُولُونَ شَاعِرٌ نَّتَرَبَّصُ بِهِ رَيْبَ الْمَنُونِ
Am yaqooloona shaAAirun natarabbasu bihi rayba almanooni

YUSUFALI: Or do they say:- “A Poet! we await for him some calamity (hatched) by Time!”
PICKTHAL: Or say they: (he is) a poet, (one) for whom we may expect the accident of time?
SHAKIR: Or do they say: A poet, we wait for him the evil accidents of time.
KHALIFA: They may say, “He is a poet; let us just wait until he is dead.”

৩০। অথবা তারা কি [ একথাও ] বলে : – ” এ তো একজন কবি মাত্র। আমরা তার মারাত্মক বিপদের [মৃত্যুর ] অপেক্ষা করছি।” ৫০৬৪।

৫০৬৪। কাফেররা মহানবীকে কবি বলে বিদ্রূপ করতো কারণ কোরাণের আয়াতকে তারা মহানবীর রচিত কবিতা বলে অভিহিত করতো এবং বলতো যে তা মানুষের অকল্যাণের সংবাদ দেয়। কাফেররা মহানবীকে ব্যঙ্গ বিদ্রূপ করতে পারে এবং তাঁর জন্য বিপর্যয় কামনা করতে পারে; কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম হচ্ছে ঘৃণা ও বিদ্বেষ কখনও কল্যাণ বয়ে না এনে তার পরিণতি হবে বিপর্যয়। ‘Raib’ শব্দটি বহুবিধ অর্থ বিদ্যমান দেখুন [ ১৪ : ৯ ] আয়াতের টিকা ১৮৮৪ ] কোন কোন তফসীরকারের মতে, “মারাত্বক বিপদ” শব্দটি দ্বারা মৃত্যুকে বোঝানো হয়েছে।

 

আয়াতঃ 052.031

বলুনঃ তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষারত আছি।
Say (O Muhammad SAW to them): ”Wait! I am with you, among the waiters!”

قُلْ تَرَبَّصُوا فَإِنِّي مَعَكُم مِّنَ الْمُتَرَبِّصِينَ
Qul tarabbasoo fa-innee maAAakum mina almutarabbiseena

YUSUFALI: Say thou: “Await ye!- I too will wait along with you!”
PICKTHAL: Say (unto them): Except (your fill)! Lo! I am with you among the expectant.
SHAKIR: Say: Wait, for surely I too with you am of those who wait.
KHALIFA: Say, “Go on waiting; I will wait along with you.”

৩১। তুমি বল :, ” তোমরা প্রতীক্ষা কর ! আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষা করছি।” ৫০৬৫।

৫০৬৫। দেখুন আয়াত [ ৯: ৫২ ] যদি দুষ্ট ও মন্দ লোকেরা মহানবীর বিপর্যয়ের প্রতীক্ষা করে থাকে, তবে মহানবীও আল্লাহ্‌র ন্যায় বিচারের প্রতীক্ষা করবেন। তাঁর এবং তাঁর অত্যাচারীদের মধ্যে ন্যায় বিচারের মালিক একমাত্র আল্লাহ্‌। রাসুলের (সা ) সংগ্রাম ছিলো ন্যায় ও সত্যের জন্য। আল্লাহ্‌র সাহায্য সর্বদা ন্যায়ের পক্ষে বিদ্যমান।

 

আয়াতঃ 052.032

তাদের বুদ্ধি কি এ বিষয়ে তাদেরকে আদেশ করে, না তারা সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়?
Do their minds command them this [i.e. to tell a lie against you (Muhammad SAW)] or are they people exceeding the bounds (i.e. from Belief in Allâh to disbelief).

أَمْ تَأْمُرُهُمْ أَحْلَامُهُم بِهَذَا أَمْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُونَ
Am ta/muruhum ahlamuhum bihatha am hum qawmun taghoona

YUSUFALI: Is it that their faculties of understanding urge them to this, or are they but a people transgressing beyond bounds?
PICKTHAL: Do their minds command them to do this, or are they an outrageous folk?
SHAKIR: Nay! do their understandings bid them this? Or are they an inordinate people?
KHALIFA: Is it their dreams that dictate their behavior, or are they naturally wicked?

৩২। তবে কি ওদের বুঝার ক্ষমতা ওদেরকে এই বিষয়ে প্ররোচিত করে ৫০৬৬, না কি তারা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায় ৫০৬৭?

৫০৬৬। সত্যের নির্যাতনকারীরা সীমালঙ্ঘন করতে পারে কারণ সত্যকে অবদমিত করার ফলে তাদের সত্যকে অনুভব করা ও উপলব্ধির মাধ্যমে অন্তরে গ্রহণ করার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। এ কথা সার্বজনীন সত্য ছিলো, অদ্যাবধিও তা আছে, এবং ভবিষ্যতেও ঠিক তেমনি থাকবে। এ সব সত্যত্যাগী লোকেরা হয় সীমালঙ্ঘনকারী, বিকৃত মনা ও আল্লাহ্‌র আইনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী। এদের একমাত্র চেষ্টা থাকে নিজস্ব স্বার্থ উদ্ধার। নিজ স্বার্থ উদ্ধারের জন্য দুর্বলকে নির্যাতন করা এবং মানুষের প্রতি ন্যায় বিচারে বাধার সৃষ্টি করা। এদের বিচার বুদ্ধি এদের ন্যায় ও সত্যের প্রতি প্ররোচিত করে না।

 

আয়াতঃ 052.033

না তারা বলেঃ এই কোরআন সে নিজে রচনা করেছে? বরং তারা অবিশ্বাসী।
Or do they say: ”He (Muhammad SAW) has forged it (this Qur’ân)?” Nay! They believe not!

أَمْ يَقُولُونَ تَقَوَّلَهُ بَل لَّا يُؤْمِنُونَ
Am yaqooloona taqawwalahu bal la yu/minoona

YUSUFALI: Or do they say, “He fabricated the (Message)”? Nay, they have no faith!
PICKTHAL: Or say they: He hath invented it? Nay, but they will not believe!
SHAKIR: Or do they say: He has forged it. Nay! they do not believe.
KHALIFA: Do they say, “He made it all up?” Instead, they are simply disbelievers.

৩৩। অথবা তারা কি বলে, ” এই [ কুর-আনের ] বাণী তাঁর নিজ রচনা ৫০৬৮ ? ” বরং তাদের কোন ঈমান নাই।

৩৪। ওরা যদি সত্যবাদী হয় তবে ইহার অনুরূপ কোন রচনা উপস্থিত করুক না !

৫০৬৮। রাসুলের (সা) প্রতি বহুবিধ অভিযোগ যেমন গণক, উম্মাদ, বিদ্বেষপূর্ণ কবিতার রচয়িতা ইত্যাদি, অভিযোগের সাথে তারা আর একটি অভিযোগ যুক্ত করেছিলো তা হচেছ প্রতারণার অভিযোগ। তারা বলতো যে, কোরাণের আয়াত সমূহ আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ নয়, তা রাসুলের (সা ) স্বরচিত। তারা বলতে চেয়েছিলো যে, কোরাণ আসলে আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ নয়। এই মানসিকতা রসুলের (সা) যুগেও যেমন অবিশ্বাসীদের মধ্যে বিদ্যমান ছিলো, বর্তমানেও আছে। এই মানসিকতা ঘোর নাস্তিক ও অবিশ্বাসীদের বৈশিষ্ট্য। এদের এ অবিশ্বাসের উত্তরেই আয়াত [ ১৭ : ৮৮] তে অবিশ্বাসীদের আল্লাহ্‌ আহ্বান করেছেন এরূপ একটি আয়াত রচনার জন্য। তারা অবশ্যই তা পারবে না। দেখুন টিকা নং ৩৭ – ৩৯।

 

আয়াতঃ 052.034

যদি তারা সত্যবাদী হয়ে থাকে, তবেএর অনুরূপ কোন রচনা উপস্থিত করুক।
Let them then produce a recital like unto it (the Qur’ân) if they are truthful.

فَلْيَأْتُوا بِحَدِيثٍ مِّثْلِهِ إِن كَانُوا صَادِقِينَ
Falya/too bihadeethin mithlihi in kanoo sadiqeena

YUSUFALI: Let them then produce a recital like unto it,- If (it be) they speak the truth!
PICKTHAL: Then let them produce speech the like thereof, if they are truthful.
SHAKIR: Then let them bring an announcement like it if they are truthful.
KHALIFA: Let them produce a Hadith like this, if they are truthful.

৩৩। অথবা তারা কি বলে, ” এই [ কুর-আনের ] বাণী তাঁর নিজ রচনা ৫০৬৮ ? ” বরং তাদের কোন ঈমান নাই।

৩৪। ওরা যদি সত্যবাদী হয় তবে ইহার অনুরূপ কোন রচনা উপস্থিত করুক না !

৫০৬৮। রাসুলের (সা) প্রতি বহুবিধ অভিযোগ যেমন গণক, উম্মাদ, বিদ্বেষপূর্ণ কবিতার রচয়িতা ইত্যাদি, অভিযোগের সাথে তারা আর একটি অভিযোগ যুক্ত করেছিলো তা হচেছ প্রতারণার অভিযোগ। তারা বলতো যে, কোরাণের আয়াত সমূহ আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ নয়, তা রাসুলের (সা ) স্বরচিত। তারা বলতে চেয়েছিলো যে, কোরাণ আসলে আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ নয়। এই মানসিকতা রসুলের (সা) যুগেও যেমন অবিশ্বাসীদের মধ্যে বিদ্যমান ছিলো, বর্তমানেও আছে। এই মানসিকতা ঘোর নাস্তিক ও অবিশ্বাসীদের বৈশিষ্ট্য। এদের এ অবিশ্বাসের উত্তরেই আয়াত [ ১৭ : ৮৮] তে অবিশ্বাসীদের আল্লাহ্‌ আহ্বান করেছেন এরূপ একটি আয়াত রচনার জন্য। তারা অবশ্যই তা পারবে না। দেখুন টিকা নং ৩৭ – ৩৯।

 

আয়াতঃ 052.035

তারা কি আপনা-আপনিই সৃজিত হয়ে গেছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা?
Were they created by nothing, or were they themselves the creators?

أَمْ خُلِقُوا مِنْ غَيْرِ شَيْءٍ أَمْ هُمُ الْخَالِقُونَ
Am khuliqoo min ghayri shay-in am humu alkhaliqoona

YUSUFALI: Were they created of nothing, or were they themselves the creators?
PICKTHAL: Or were they created out of naught? Or are they the creators?
SHAKIR: Or were they created without there being anything, or are they the creators?
KHALIFA: Were they created from nothing? Are they the creators?

৩৫। ওরা কি [ স্রষ্টা ব্যতীত ] শূন্য থেকে সৃষ্টি হয়েছে না কি তারা নিজেরাই স্রষ্টা ?

৩৬। অথবা তারা কি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছে ? বরং তাদের কোন দৃঢ় বিশ্বাস নাই ৫০৭০।

৫০৭০। নিরাকার আল্লাহ্‌র বিশালত্ব, জ্ঞান, ক্ষমতা, ও প্রজ্ঞা তখনই অনুভব করা সম্ভব যখন সে সম্বন্ধে চিন্তা করা যায়। উর্দ্ধে সুর্যালোকিত সুনীল গগন, নক্ষত্রখচিত রাত্রির আকাশ, চন্দ্রালোকিত দূর নীলিমার স্নিগ্ধরূপ, নীচে নীল সমুদ্র বেষ্টিত ফল, ফুলে সুশোভিত সবুজ ধরাতল এ সবেরই সৃষ্টিকর্তা এক আল্লাহ্‌। এ সবের সৃষ্টি কর্তা যদি আল্লাহ্‌ না হন তবে কে ? এ প্রশ্নের কোনও সদুত্তর তাদের নিকট নাই। কারণ বিশ্বাসহীনতা তাদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞাকে বিলুপ্ত করে দেয়।

 

আয়াতঃ 052.036

না তারা নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছে? বরং তারা বিশ্বাস করে না।
Or did they create the heavens and the earth? Nay, but they have no firm Belief.

أَمْ خَلَقُوا السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ بَل لَّا يُوقِنُونَ
Am khalaqoo alssamawati waal-arda bal la yooqinoona

YUSUFALI: Or did they create the heavens and the earth? Nay, they have no firm belief.
PICKTHAL: Or did they create the heavens and the earth? Nay, but they are sure of nothing!
SHAKIR: Or did they create the heavens and the earth? Nay! they have no certainty.
KHALIFA: Did they create the heavens and the earth? Indeed, they have no certainty.

৩৫। ওরা কি [ স্রষ্টা ব্যতীত ] শূন্য থেকে সৃষ্টি হয়েছে না কি তারা নিজেরাই স্রষ্টা ?

৩৬। অথবা তারা কি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীকে সৃষ্টি করেছে ? বরং তাদের কোন দৃঢ় বিশ্বাস নাই ৫০৭০।

৫০৭০। নিরাকার আল্লাহ্‌র বিশালত্ব, জ্ঞান, ক্ষমতা, ও প্রজ্ঞা তখনই অনুভব করা সম্ভব যখন সে সম্বন্ধে চিন্তা করা যায়। উর্দ্ধে সুর্যালোকিত সুনীল গগন, নক্ষত্রখচিত রাত্রির আকাশ, চন্দ্রালোকিত দূর নীলিমার স্নিগ্ধরূপ, নীচে নীল সমুদ্র বেষ্টিত ফল, ফুলে সুশোভিত সবুজ ধরাতল এ সবেরই সৃষ্টিকর্তা এক আল্লাহ্‌। এ সবের সৃষ্টি কর্তা যদি আল্লাহ্‌ না হন তবে কে ? এ প্রশ্নের কোনও সদুত্তর তাদের নিকট নাই। কারণ বিশ্বাসহীনতা তাদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞাকে বিলুপ্ত করে দেয়।

 

আয়াতঃ 052.037

তাদের কাছে কি আপনার পালনকর্তার ভান্ডার রয়েছে, না তারাই সবকিছুর তত্ত্বাবধায়ক?
Or are with them the treasures of your Lord? Or are they the tyrants with the authority to do as they like?

أَمْ عِندَهُمْ خَزَائِنُ رَبِّكَ أَمْ هُمُ الْمُصَيْطِرُونَ
Am AAindahum khaza-inu rabbika am humu almusaytiroona

YUSUFALI: Or are the Treasures of thy Lord with them, or are they the managers (of affairs)?
PICKTHAL: Or do they own the treasures of thy Lord? Or have they been given charge (thereof)?
SHAKIR: Or have they the treasures of your Lord with them? Or have they been set in absolute authority?
KHALIFA: Do they possess the treasures of your Lord? Are they in control?

৩৭। অথবা তোমার প্রভুর ধনভান্ডার কি তাদের নিকট রয়েছে ৫০৭১, নাকি ওরা এই সমুদয়ের নিয়ন্তা ?

৫০৭১। দেখুন [ ৬ : ৫০ ] আয়াত ও টিকা ৮৬৭। আল্লাহ্‌র জ্ঞানের ভান্ডার অসীম। বিশ্ব প্রকৃতির সর্বত্র আল্লাহ্‌র জ্ঞানের নিদর্শন ছড়ানো আছে। মানুষ বিজ্ঞান চর্চ্চার মাধ্যমে আল্লাহ্‌র জ্ঞানের অপার রহস্যকে উন্মোচন করতে চেষ্টা করে মাত্র। কিন্তু যারা অবিশ্বাসী ও সন্দেহ বাতিক তারা এই জ্ঞানকে আল্লাহ্‌র জ্ঞান ও প্রজ্ঞার স্বাক্ষর রূপে স্বীকার করে না। কারণ তাদের আত্মা অন্ধকারে আচ্ছাদিত। সেখানে আল্লাহ্‌র হেদায়েতের আলোর প্রবেশ রুদ্ধ। সুতারাং পার্থিব জ্ঞানের সিঁড়ি বেয়ে অপার্থিব জগতে উত্তোরণের উপায় তাদের নিকট অনুপস্থিত। আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ যে বিশ্বাসের আলোয় সিক্ত হয়ে অন্তরকে আলোকিত করে এ অনুভূতি লাভে তারা অক্ষম।

 

আয়াতঃ 052.038

না তাদের কোন সিঁড়ি আছে, যাতে আরোহণ করে তারা শ্রবণ করে? থাকলে তাদের শ্রোতা সুস্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করুক।
Or have they a stairway (to heaven), by means of which they listen (to the talks of the angels)? Then let their listener produce some manifest proof.

أَمْ لَهُمْ سُلَّمٌ يَسْتَمِعُونَ فِيهِ فَلْيَأْتِ مُسْتَمِعُهُم بِسُلْطَانٍ مُّبِينٍ
Am lahum sullamun yastamiAAoona feehi falya/ti mustamiAAuhum bisultanin mubeenin

YUSUFALI: Or have they a ladder, by which they can (climb up to heaven and) listen (to its secrets)? Then let (such a) listener of theirs produce a manifest proof.
PICKTHAL: Or have they any stairway (unto heaven) by means of which they overhear (decrees). Then let their listener produce some warrant manifest!
SHAKIR: Or have they the means by which they listen? Then let their listener bring a clear authority.
KHALIFA: Do they climb a ladder that enables them to listen? Let their listeners show their proof.

৩৮। অথবা ওদের কি কোন সিড়ি রয়েছে ৫০৭২, যার সাহায্যে তারা আসমানে আরোহণ করে [ গোপন কথা ] শ্রবণ করতে পারে ? তাহলে তাদের [ এরূপ ] কোন শ্রবণকারীর সুস্পষ্ট প্রমাণ উপস্থিত করুক।

৫০৭২। দেখুন অনুরূপ আয়াত [ ৬ : ৬৫ ]। মোশরেক আরবদের যে অন্ধ বিশ্বাস ছিলো যে, বস্তুগত সিঁড়ির মাধ্যমে আকাশে আরোহণ করে আল্লাহ্‌র রহস্য উদ্ঘাটিত করা সম্ভব ; তারই প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে।

 

আয়াতঃ 052.039

না তার কন্যা-সন্তান আছে আর তোমাদের আছে পুত্রসন্তান?
Or has He (Allâh) only daughters and you have sons?

أَمْ لَهُ الْبَنَاتُ وَلَكُمُ الْبَنُونَ
Am lahu albanatu walakumu albanoona

YUSUFALI: Or has He only daughters and ye have sons?
PICKTHAL: Or hath He daughters whereas ye have sons?
SHAKIR: Or has He daughters while you have sons?
KHALIFA: Does He have daughters, while you have sons?

৩৯। তবে কি কন্যা সন্তান তাঁর জন্য এবং পুত্র সন্তান তোমাদের জন্য ৫০৭৩?

৫০৭৩। দেখুন আয়াত [ ১৬ : ৫৭ – ৫৯ ] ও টিকা ২০৮২। আল্লাহ্‌র একত্বের ধারণায় আল্লাহ্‌র ছেলে বা মেয়ে সন্তান অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু পৌত্তলিক আরবেরা বিশ্বাস করতো যে ফেরেশতারা আল্লাহ্‌র কন্যা সন্তান। কি অদ্ভুদ ব্যাপার, যে কন্যা সন্তানকে তারা ঘৃণা করতো এবং জীবন্ত কবর দিত তাকেই তারা আল্লাহ্‌র অংশরূপে কল্পনা করতো এবং নিজেদের জন্য পুত্র সন্তান ধারণা করতো।

 

আয়াতঃ 052.040

না আপনি তাদের কাছে পারিশ্রমিক চান যে, তাদের উপর জরিমানার বোঝা চেপে বসে?
Or is it that you (O Muhammad SAW) ask a wage from them (for your preaching of Islâmic Monotheism) so that they are burdened with a load of debt?

أَمْ تَسْأَلُهُمْ أَجْرًا فَهُم مِّن مَّغْرَمٍ مُّثْقَلُونَ
Am tas-aluhum ajran fahum min maghramin muthqaloona

YUSUFALI: Or is it that thou dost ask for a reward, so that they are burdened with a load of debt?-
PICKTHAL: Or askest thou (Muhammad) a fee from them so that they are plunged in debt?
SHAKIR: Or do you ask them for a reward, so that they are overburdened by a debt?
KHALIFA: Are you asking them for any wage, and they are burdened thereby?

৪০। অথবা তুমি কি তাদের নিকট পারিশ্রমিক চাইছ, যার ফলে, তারা ঋণের ভারে ভারাক্রান্ত ৫০৭৪ ?-

৫০৭৪। মানুষকে সঠিক পথে চালিত করার জন্য আল্লাহ্‌র রাসুল (সা ) আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশ সমূহ প্রচার করতেন। মানুষের মঙ্গল কামনাই ছিলো তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য। তবে কেন মানুষ তাঁকে অত্যাচার ও নির্যাতন করে ?

 

আয়াতঃ 052.041

না তাদের কাছে অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান আছে যে, তারাই তা লিপিবদ্ধ করে?
Or that the Ghaib (unseen) is with them, and they write it down?

أَمْ عِندَهُمُ الْغَيْبُ فَهُمْ يَكْتُبُونَ
Am AAindahumu alghaybu fahum yaktuboona

YUSUFALI: Or that the Unseen in it their hands, and they write it down?
PICKTHAL: Or possess they the Unseen so that they can write (it) down?
SHAKIR: Or have they the unseen so that they write (it) down?
KHALIFA: Do they know the future, and have it recorded?

৪১। অথবা তাদের নিকট কি অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান আছে এবং তারা তা লিখে নেয় ৫০৭৫ ?

৫০৭৫। আল্লাহ্‌র প্রত্যাদেশের মাধ্যমে অদৃশ্য বিষয়ের জ্ঞান মানুষকে দান করা হয়েছে। দৃষ্টি সীমার বাইরে যে আধ্যাত্মিক জগত, সে জগতের জ্ঞান চেষ্টার মাধ্যমে, অনুভবের মাধ্যমে আত্মার মাঝে উপলব্ধি করতে হয়। অন্যথায় তা চিরদিন মানুষের আওতার বাইরে থেকে যায়।

 

আয়াতঃ 052.042

না তারা চক্রান্ত করতে চায়? অতএব যারা কাফের, তারই চক্রান্তের শিকার হবে।
Or do they intend a plot (against you O Muhammad SAW)? But those who disbelieve (in the Oneness of Allâh Islâmic Monotheism) are themselves in a plot!

أَمْ يُرِيدُونَ كَيْدًا فَالَّذِينَ كَفَرُوا هُمُ الْمَكِيدُونَ
Am yureedoona kaydan faallatheena kafaroo humu almakeedoona

YUSUFALI: Or do they intend a plot (against thee)? But those who defy Allah are themselves involved in a Plot!
PICKTHAL: Or seek they to ensnare (the messenger)? But those who disbelieve, they are the ensnared!
SHAKIR: Or do they desire a war? But those who disbelieve shall be the vanquished ones in war.
KHALIFA: Are they plotting and scheming? The disbelievers’ schemes backfire against them.

৪২। অথবা তারা কি [ তোমার বিরুদ্ধে ] ষড়যন্ত্র করে ৫০৭৬ ? কিন্তু যারা আল্লাহকে অস্বীকার করে, তারা নিজেরাই ষড়যন্ত্রের শিকার।

৫০৭৬। যাদের মাঝে প্রকৃত জ্ঞান ও প্রজ্ঞা অনুপস্থিত শুধু তারাই পারে প্রকৃত কল্যাণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে। এরা হচ্ছে শয়তানের শিকার।

 

আয়াতঃ 052.043

না তাদের আল্লাহ তা’আলা ব্যতীত কোন উপাস্য আছে? তারা যাকে শরীক করে, আল্লাহ তা’আলা তা থেকে পবিত্র।
Or have they an ilâh (a god) other than Allâh? Glorified be Allâh from all that they ascribe as partners (to Him)

أَمْ لَهُمْ إِلَهٌ غَيْرُ اللَّهِ سُبْحَانَ اللَّهِ عَمَّا يُشْرِكُونَ
Am lahum ilahun ghayru Allahi subhana Allahi AAamma yushrikoona

YUSUFALI: Or have they a god other than Allah? Exalted is Allah far above the things they associate with Him!
PICKTHAL: Or have they any god beside Allah? Glorified be Allah from all that they ascribe as partner (unto Him)!
SHAKIR: Or have they a god other than Allah? Glory be to Allah from what they set up (with Him).
KHALIFA: Do they have another god beside GOD? GOD be glorified, far above having partners.

৪৩। আল্লাহ্‌ ব্যতীত তাদের কি অন্য কোন উপাস্য আছে ৫০৭৭ ? তারা যাকে শরীক স্থির করে আল্লাহ্‌ তা থেকে পবিত্র।

৫০৭৭। ” আল্লাহ্‌ ব্যতীত তাদের অন্য কোন ইলাহ্‌ আছে কি ? ” উপরের বিভিন্ন আয়াতের মাধ্যমে যে প্রশ্নরাজিকে উপস্থাপন করা হয়েছে, এই প্রশ্নের মাধ্যমে সে সব প্রশ্নের সার সংক্ষেপ বা সিদ্ধান্ত করা হয়েছে। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর হয়েছে না সূচক। আল্লাহ্‌র একত্বের উপদেশ, প্রত্যাদেশ এবং পরলোক সম্পর্কে জ্ঞান এভাবেই বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপন করে প্রচার করা হয়েছে। এভাবেই অবিশ্বাসীদের অবস্থানকে অনুসন্ধান ও মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই সূরাটি শেষ করা হয়েছে এই পরামর্শ দিয়ে যে যারা আল্লাহ্‌র অস্তিত্বে ও একত্বে বিশ্বাসী নয়, তাদের ভাগ্য তাদের উপরে ছেড়ে দেয়ার জন্য। তারা কখনও ঈমান বা বিশ্বাস আনবে না। সময় তার জাল বুনে যাবে ও আল্লাহ্‌র পরিকল্পনা নির্দ্দিষ্ট গতিতে পরিপূর্ণতা লাভ করবে। অবিশ্বাসীদের অবিশ্বাসে কিছু ক্ষতি বা বৃদ্ধি হবে না।

 

আয়াতঃ 052.044

তারা যদি আকাশের কোন খন্ডকে পতিত হতে দেখে, তবে বলে এটা তো পুঞ্জীভুত মেঘ।
And if they were to see a piece of the heaven falling down, they would say: ”Clouds gathered in heaps!”

وَإِن يَرَوْا كِسْفًا مِّنَ السَّمَاء سَاقِطًا يَقُولُوا سَحَابٌ مَّرْكُومٌ
Wa-in yaraw kisfan mina alssama-i saqitan yaqooloo sahabun markoomun

YUSUFALI: Were they to see a piece of the sky falling (on them), they would (only) say: “Clouds gathered in heaps!”
PICKTHAL: And if they were to see a fragment of the heaven falling, they would say: A heap of clouds.
SHAKIR: And if they should see a portion of the heaven coming down, they would say: Piled up clouds.
KHALIFA: When they see masses falling from the sky, they will say, “Piled clouds!”

৪৪। ওরা আকাশের কোন খন্ড [ তাদের উপরে ] ভেঙ্গে পড়তে দেখলে তারা শুধুমাত্র বলবে ৫০৭৮ ; “ইহা তো এক পুঞ্জীভূত মেঘ।”

৫০৭৮। দেখুন [ ২৬: ১৮৭ ] আয়াত। অবিশ্বাসী আইকাবাসীরা আল্লাহ্‌র নবী সুয়েবকে তার নবুয়তের প্রমাণ দাখিলের জন্য এরূপ প্রতিদ্বন্দিতায় আহ্বান করেছিলো। তারা বলেছিলো যে, ” তুমি যদি সত্যিই আল্লাহ্‌র নবী হও, তবে একখন্ড আকাশকে মাটিতে আমাদের উপরে ফেলে দাও।” ঠিক এই বাক্য না হলেও এরূপ হঠকারী আহ্বান আল্লাহ্‌র সকল রসুলদেরই করা হয়েছিলো। এরূপ হঠকারীতা দ্বারা তারা আল্লাহ্‌ ও তাঁর প্রেরিত রসুলদের প্রতি অবিশ্বাসকেই প্রমাণ করতে চেয়েছে। এরূপ হঠকারীতা অর্থহীন। কারণ আল্লাহ্‌ যদি তাদের উপরে একখন্ড আকাশকে ফেলেও দিতেন, তবুও তাদের আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বাস জন্মাতো না। প্রকৃত পক্ষে তখন তারা অন্য যুক্তির অবতারণা করতো যেমন : বলতো, ” ইহা তো এক পুঞ্জীভূত মেঘ।” কারও যদি ঈমান বা আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বাস আনার কোন ইচ্ছাই না থাকে তবে তাকে বিশ্বাস করানো কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। আকাশ মাটিতে পতনের মত অসম্ভব ঘটনাও তার জ্ঞান চক্ষুকে উম্মীলিত করতে সাহায্য করতো না। আল্লাহ্‌র প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের জন্য অত্যাচার্য অসম্ভব কোনও ঘটনা ঘটানোর প্রয়োজন নাই। কারণ আল্লাহ্‌র সৃষ্টির এত অপূর্ব সব নিদর্শন আমাদের চারিপার্শ্বে বিদ্যমান যে, যে দেখতে চায় সে দেখতে পায়।

 

আয়াতঃ 052.045

তাদেরকে ছেড়ে দিন সেদিন পর্যন্ত, যেদিন তাদের উপর বজ্রাঘাত পতিত হবে।
So leave them alone till they meet their Day, in which they will sink into a fainting (with horror).

فَذَرْهُمْ حَتَّى يُلَاقُوا يَوْمَهُمُ الَّذِي فِيهِ يُصْعَقُونَ
Fatharhum hatta yulaqoo yawmahumu allathee feehi yusAAaqoona

YUSUFALI: So leave them alone until they encounter that Day of theirs, wherein they shall (perforce) swoon (with terror),-
PICKTHAL: Then let them be (O Muhammad), till they meet their day, in which they will be thunder-stricken,
SHAKIR: Leave them then till they meet that day of theirs wherein they shall be made to swoon (with terror):
KHALIFA: Disregard them until they meet the day in which they are struck.

৪৫। সুতারাং তাদের সেদিন পর্যন্ত একা থাকতে দাও যেদিন তারা [ ভয়ে ] হতচেতন হতে [বাধ্য হবে ] ৫০৭৯,

৪৬। যেদিন তাদের শঠতা তাদের কোন কাজে আসবে না, এবং তাদের কোন সাহায্যও করা হবে না।

 

আয়াতঃ 052.046

সেদিন তাদের চক্রান্ত তাদের কোন উপকারে আসবে না এবং তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।
The Day when their plotting shall not avail them at all nor will they be helped (i.e. they will receive their torment in Hell).

يَوْمَ لَا يُغْنِي عَنْهُمْ كَيْدُهُمْ شَيْئًا وَلَا هُمْ يُنصَرُونَ
Yawma la yughnee AAanhum kayduhum shay-an wala hum yunsaroona

YUSUFALI: The Day when their plotting will avail them nothing and no help shall be given them.
PICKTHAL: A day in which their guile will naught avail them, nor will they be helped.
SHAKIR: The day on which their struggle shall not avail them aught, nor shall they be helped.
KHALIFA: On that day, their schemes will not protect them, nor will they be helped.

৪৫। সুতারাং তাদের সেদিন পর্যন্ত একা থাকতে দাও যেদিন তারা [ ভয়ে ] হতচেতন হতে [বাধ্য হবে ] ৫০৭৯,

৪৬। যেদিন তাদের শঠতা তাদের কোন কাজে আসবে না, এবং তাদের কোন সাহায্যও করা হবে না।

৫০৭৯। “সেইদিন ” অর্থাৎ শেষ বিচারের দিন। দেখুন [ ৩৯ : ৬৮] আয়াত ও টিকা ৪৩৪৩।

 

আয়াতঃ 052.047

গোনাহগারদের জন্যে এছাড়া আরও শাস্তি রয়েছে, কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা জানে না।
And verily, for those who do wrong, there is another punishment (i.e. the torment in this world and in their graves) before this, but most of them know not. [Tafsir At-Tabarî, Vol. 27, Page 36].

وَإِنَّ لِلَّذِينَ ظَلَمُوا عَذَابًا دُونَ ذَلِكَ وَلَكِنَّ أَكْثَرَهُمْ لَا يَعْلَمُونَ
Wa-inna lillatheena thalamoo AAathaban doona thalika walakinna aktharahum la yaAAlamoona

YUSUFALI: And verily, for those who do wrong, there is another punishment besides this: But most of them understand not.
PICKTHAL: And verily, for those who do wrong, there is a punishment beyond that. But most of them know not.
SHAKIR: And surely those who are unjust shall have a punishment besides that (in the world), but most of them do not know.
KHALIFA: Those who transgress suffer retribution here, but most of them do not know.

৪৭। যারা পাপ করে, অবশ্যই তাদের জন্য এ ছাড়া [ দুনিয়াতে ] আরও শাস্তি রয়েছে ৫০৮০। কিন্তু তাদের অধিকাংশই তা বুঝতে পারে না।

৫০৮০। শেষ বিচারের দিন প্রত্যেকের জন্য এক অবশ্যাম্ভবী সত্য। জালিমদের কোনও ষড়যন্ত্র সেদিন কোন কাজে আসবে না। এই শাস্তি ব্যতীতও জালিমদের জন্য আরও শাস্তি রয়েছে – সে শাস্তি হবে ইহকালেই – পার্থিব বিভিন্ন ঘাত-প্রতিঘাতে।

 

আয়াতঃ 052.048

আপনি আপনার পালনকর্তার নির্দেশের অপেক্ষায় সবর করুন। আপনি আমার দৃষ্টির সামনে আছেন এবং আপনি আপনার পালনকর্তêার সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করুন যখন আপনি গাত্রোত্থান করেন।
So wait patiently (O Muhammad SAW) for the Decision of your Lord, for verily, you are under Our Eyes , and glorify the Praises of your Lord when you get up from sleep.

وَاصْبِرْ لِحُكْمِ رَبِّكَ فَإِنَّكَ بِأَعْيُنِنَا وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ حِينَ تَقُومُ
Waisbir lihukmi rabbika fa-innaka bi-aAAyunina wasabbih bihamdi rabbika heena taqoomu

YUSUFALI: Now await in patience the command of thy Lord: for verily thou art in Our eyes: and celebrate the praises of thy Lord the while thou standest forth,
PICKTHAL: So wait patiently (O Muhammad) for thy Lord’s decree, for surely thou art in Our sight; and hymn the praise of thy Lord when thou uprisest,
SHAKIR: And wait patiently for the judgment of your Lord, for surely you are before Our eyes, and sing the praise of your Lord when you rise;
KHALIFA: You shall steadfastly persevere in carrying out your Lord’s command – you are in our eyes – and glorify and praise your Lord when you get up.

৪৮। ধৈর্য ধারণ কর তোমার প্রভুর নির্দ্দেশের অপেক্ষায় ; নিশ্চয়ই তুমি আমার চোখের সামনেই রয়েছ ৫০৮১। এবং যখন তুমি শয্যা ত্যাগ কর, তুমি তোমার প্রভুর সপ্রশংস পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা কর। ৫০৮২

৫০৮১। আল্লাহ্‌র রাসুল তাঁর প্রতি অর্পিত দায়িত্ব সম্পাদনের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবেন; এই আল্লাহ্‌র হুকুম। ফলাফল আল্লাহ্‌র হাতে। তিনি শুধু ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করবেন। এ কথা স্মরণ রাখবেন যে, আল্লাহ্‌ ভুলে যান নাই। রাসুল (সা) সর্বদা আল্লাহ্‌র দৃষ্টির সম্মুখে, তাঁর সদয় তত্ত্বাবধানে এবং নিরাপত্তায় আছেন। এবং তিনি সর্বদা আল্লাহ্‌র পবিত্রতা ঘোঘণা করবেন।

উপদেশ : রাসুলের মাধ্যমে বিশ্বজনীন উপদেশ দান করা হয়েছে যে, আল্লাহ্‌ তাঁর সৃষ্ট বস্তু প্রতিটিরই হিসাব ও খবর রাখেন। প্রত্যেকেই স্ব স্ব কর্তব্য কর্ম নিষ্ঠার সাথে করে যাবে। ফলাফলের জন্য ধৈর্য্য ধারণ করবে। মানব জীবনে ধৈর্য্য হচ্ছে এক অমূল্য গুণাবলী।

৫০৮২। “যখন তুমি শয্যা ত্যাগ কর ” এই লাইনটি ইংরেজীতে অনুবাদ করা হয়েছে, “While thou standest forth” কারণ Taqumu শব্দটি অনেক অনুবাদকারক মনে করেন অর্থ হওয়া উচিত ঘুম থেকে ওঠা। বিভিন্ন সূরাতে কোরাণের ভাষার প্রয়োগের ধারা থেকে এর অনুবাদ করা হয়েছে “ÒWhile you standest forth” যেমন সূরা [ ২৬ : ২১৮ ] আয়াতে “La yaqum an-nasubil-qisit” দুটি শব্দ আছে “Hina Taquma” অর্থাৎ [ প্রার্থনায় ] দাড়ানো। সূরা [ ৫৭ : ২৫ ] আয়াতে শব্দটির অর্থ ” মানুষ ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়াবে” অর্থাৎ মানুষ তাঁর দৈনন্দিক জীবনের সকল কাজ ন্যায়ের সাথে সম্পাদন করবে। আবার সূরা [ ৭৮: ৩৮] আয়াতের শব্দ “yaqumu” অর্থ ফেরেশতারা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ায়।

উপরের প্রয়োগের ধারা থেকে এই আয়াতের ইংরেজী অনুবাদে “দাঁড়ানো ” শব্দটিকে ব্যবহার করা হয়েছে। এর সার্বিক অর্থ হচ্ছে আল্লাহ্‌ রাসুলের মাধ্যমে বিশ্বজনীন উপদেশ দিয়েছেন যে, দাঁড়িয়ে আল্লাহ্‌র প্রশংসা করা অথবা রাত্রির কিছু অংশ ও ঊষালগ্নে যখন জীবনের কোলাহল ক্ষণকালের জন্য হলেও স্তব্ধ হয়ে যায়, তখন আল্লাহ্‌র প্রশংসা করা।

 

আয়াতঃ 052.049

এবং রাত্রির কিছু অংশে এবং তারকা অস্তমিত হওয়ার সময় তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করুন।
49. And in the night-time, also glorify His Praises, and at the setting of the stars.

وَمِنَ اللَّيْلِ فَسَبِّحْهُ وَإِدْبَارَ النُّجُومِ
Wamina allayli fasabbihhu wa-idbara alnnujoomi

YUSUFALI: And for part of the night also praise thou Him,- and at the retreat of the stars!
PICKTHAL: And in the night-time also hymn His praise, and at the setting of the stars.
SHAKIR: And in the night, give Him glory too, and at the setting of the stars.
KHALIFA: Also during the night glorify Him, and at dawn as the stars fade away.

৪৯। এবং আল্লাহ্‌র প্রশংসা ঘোষণা কর রাত্রির কিয়দংশ এবং তারকাদের অস্তগমনের পর ৫০৮৩, ৫০৮৪।

৫০৮৩। এই আয়াতের অর্থ সার্বজনীন। কোন নির্দ্দিষ্ট ওয়াক্তের নামাজের কথা এখানে বলা হয় নাই। রাত্রির কিছু অংশ প্রার্থনায় ব্যয় করা কল্যাণকর ; দেখুন সূরা [ ৭৩ : ৬ ] আয়াত। প্রত্যুষ হচ্ছে দিনের পুণরাবৃত্তির সূচনা তবুও তা প্রতিদিনই নূতন, সতেজ এবং অত্যাচর্য ঘটনা, আধ্যাত্মিক উদ্দীপনাতে ভরপুর ; দেখুন সূরা [ ১৭ : ৭৮-৭৯ ] আয়াত।

৫০৮৪। “Idbar un-nujum” – অস্তগামী তারা। অর্থাৎ সুবে সাদেকের সময়, যখন তারকারাজি অস্ত যায় ; রাতের আঁধার ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে আসে দিনের সূচনা শুরু হয়, এ সময়েই প্রভাতের প্রভুর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে বলা হয়েছে। সূরা [ ১১ : ৩১ ] আয়াতে ও [১১৩:১] আয়াতে।

Exit mobile version