Site icon BnBoi.Com

সহিহ বুখারী  ১০ম খণ্ড (৫৯৭০-৭০৫৩)

Sahi Bukhari 10th Part by Imam Bukhari

 

  সহিহ বুখারী  ১০ম খণ্ড (৫৯৭০-৭০৫৩)

আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ, আল্লাহ তা’আলা যাকে দীর্ঘায়ু করেছেন, এমনকি যাকে ষাট বছরে পৌছিয়েছেন তার ওযর পেশ করার সুযোগ রাখেননি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৭৮ | 5978 | ۵۹۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৭. যে ব্যক্তি ষাট বছর বয়সে পৌঁছে গেল, আল্লাহ তা’আলা তার বয়সের ওযর পেশ করার সুযোগ রাখেননি। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ আমি কি তোমাদের এত দীর্ঘ জীবন দান করিনি যে, তখন কেউ সতর্ক হতে চাইলে সতর্ক হতে পারত, অথচ তোমাদের কাছে সতর্ককারীরাও এসেছিল … (৩৫ঃ ৩৭)
৫৯৭৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, বৃদ্ধ লোকের অন্তর দুটি ব্যাপারে সর্বদা যুবক থাকে। এর একটি হল দুনিয়ার মহব্বত, আরেকটি হল উচ্চাকাঙ্ক্ষা।

লায়ছ (রহঃ) … সাঈদ ও আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৭৯ | 5979 | ۵۹۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৭. যে ব্যক্তি ষাট বছর বয়সে পৌঁছে গেল, আল্লাহ তা’আলা তার বয়সের ওযর পেশ করার সুযোগ রাখেননি। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ আমি কি তোমাদের এত দীর্ঘ জীবন দান করিনি যে, তখন কেউ সতর্ক হতে চাইলে সতর্ক হতে পারত, অথচ তোমাদের কাছে সতর্ককারীরাও এসেছিল … (৩৫ঃ ৩৭)
৫৯৭৯। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আদম সন্তানের বয়স বাড়ে আর তার সাথে দুটি জিনিসও বৃদ্ধি পায়; ধন-সম্পদের মহব্বত ও দীর্ঘায়ুর আকাঙ্ক্ষা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮০ | 5980 | ۵۹۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৮. যে ‘আমালের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চাওয়া হয়। এ বিষয়ে সা’দ (রাঃ) বর্ণিত একটি হাদিস আছে
৫৯৮০। মুয়ায ইবনু আসাদ (রহঃ) … মাহমুদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা তাঁর স্মরণ আছে। আর তিনি বলেনঃ তাদের ঘরের পানির ডোল থেকে পানি মুখে নিয়ে তিনি তার মুখে ছিটিয়ে দিয়েছিলেন সে কথাও তার স্মরণ আছে। তিনি বলেনঃ ইতবান ইবনু মালিক আনসারীকে, এরপর বনী সালিমের এক ব্যাক্তিকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সকালে আমার এখানে এলেন এবং বললেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে ব্যাক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলবে এবং এ বিশ্বাস নিয়ে কিয়ামতের দিন হাযির হবে, আল্লাহ তার উপর জাহান্নাম হারাম করে দিবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮১ | 5981 | ۵۹۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৮. যে ‘আমালের দ্বারা আল্লাহর সন্তুষ্টি চাওয়া হয়। এ বিষয়ে সা’দ (রাঃ) বর্ণিত একটি হাদিস আছে
৫৯৮১। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন, আমি যখন আমার মুমিন বান্দার কোন প্রিয়তম কিছু দুনিয়া থেকে তুলে নেই আর সে ধৈর্য ধারণ করে, আমার কাছে তার জন্য জান্নাত ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদান নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮২ | 5982 | ۵۹۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮২। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আমর ইবনু আওফ (রাঃ), তিনি বনী আমর ইবনু লুওযাই এর সাথে চুক্তিবদ্ধ ছিলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে বদরের যুদ্ধেও শরীক ছিলেন। তিনি বর্ননা করেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ উবায়দা ইবনু জাররাহকে জিযিয়া আদায় করার জন্য বাহরাইন পাঠালেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সন্ধি করেছিলেন এবং তাদের উপর আলা ইবনু হাসরামী (রাঃ) কে আমীর নিযুক্ত করেছিলেন। আবূ উবায়দা (রাঃ) বাহরাইন থেকে মালামাল নিয়ে আসেন, আনসারগণ তার আগমনের সংবাদ শুনে ফজরের সালাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঈে শরীক হন।

সালাত (নামায/নামাজ) শেষে তাঁরা তার সামনে এলেন। তিনি তাদের দেখে হেসে বললেনঃ আমি মনে করি তোমরা আবূ উবায়দা (রাঃ) এর আগমনের এবং তিনি যে মাল নিয়ে এসেছেন সে সংবাদ শুনেছ। তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তোমরা এ সুসংবাদ গ্রহণ করো এবং তোমরা আশা রেখো যা তোমাদের খুশী করবে। তবে, আল্লাহর কসম। আমি তোমাদের উপর দরিদ্রতার আশংকা করছি না বরং আশংকা করছি যে, তোমাদের পূর্ববতী উম্মাতের উপর যেমন দুনিয়া প্রশস্ত করে দেওয়া হইয়েছিল, তেমনি তোমাদের উপরও দুনিয়া প্রশস্ত করে দেওয়া হবে। আর তোমরা যা নয় তা তোমাদের আখিরাত বিমুখ করে ফেলবে, যেমন তাদের জন্য বিমুখ করেছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৩ | 5983 | ۵۹۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৩। কুতায়বা (রহঃ) … উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হলেন এবং উহুদের শহীদানের উপর সালাত আদায় করলেন, যেমন তিনি মুর্দার উপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে থাকেন। তারপর মিম্বরে আরোহণ করে বললেনঃ আমি তোমাদের অগ্রনী। আমি তোমাদের সাক্ষী হব। আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই আমি আমার ‘হাওয’ কে এখন দেখছি। আমাকে তো যমীনের ধনগারের চাবিসমূহ অথবা যমীনের চাবিসমূহ দেয়া হয়েছে। আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের উপর এ আশংকা করছি না যে, তোমরা আমার পরে মুশরিক হয়ে যাবে, তবে আমি আশংকা করছি যে, তোমরা দুনিরার ধন-সম্পদে আসক্ত হয়ে যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৪ | 5984 | ۵۹۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৪। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জন্য যমীনের বরকত সমুহ প্রকাশিত করে দিবেন, আমি তোমাদের জন্য এ ব্যাপারেই সর্বাধিক আশংকা করছি। জিজ্ঞাসা করা হলো, যমীনের বরকত সমূহ কি? তিনি বললেনঃ দুনিয়ার জাঁকজমক। তখন এক ব্যাক্তি তাঁর কাছে বললেনঃ ভাল কি মন্দ নিয়ে আসবে? তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছুক্ষণ নীরব থাকলেন, যদ্দরুন আমরা ধারণা করলাম যে, এখন তার উপর ওহী নাযিল হচ্ছে। এরপর তিনি তাঁর কপাল থেকে ঘাম মুছে জিজ্ঞাসা করলেন, প্রশ্নকারী কোথায়? সে বলল, আমি। আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেনঃ যখন এটি প্রকাশ পেল, তখন আমরা প্রশ্নকারীর প্রশংসা করলাম।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ভাল শুধুমাত্র ভালকেই বয়ে আনে। নিশ্চয়ই এ ধনদৌলত সবুজ শ্যামল সুমিষ্ট। অবশ্য বসন্ত যে সবজি উৎপাদন করে, তা ভক্ষণকারী পশুকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় অথবা নিকটে করে দেয়, তবে প্রানী পেট ভরে খেয়ে সূর্যমুখী হয়ে জাবর কাটে, মল-মূত্র ত্যাগ করে এবং পুনঃ খায় (এর অবস্হা ভিন্ন)। এ পৃথিবীর ধনদৌলত তদ্রূপ সুমিষ্ট। যে ব্যাক্তি তা সৎভাবে গ্রহণ করবে এবং সৎকাজে ব্যয় করবে, তা তার খুবই সাহায্যকারী হবে। আর যে তা অন্যায়ভাবে গ্রহণ করবে, তার অবস্থা হবে ঐ ব্যাক্তির মত যে খেতে থাকে আর পরিতৃপ্ত হয় না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৫ | 5985 | ۵۹۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৫। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে আমার যমানার লোকেরাই সর্বোত্তম। তারপর এর পরবর্তী যমানার লোকেরা। তারপর এদের পরবর্তী যমানার লোকেরা। ইমরান (রাঃ) বর্ণনা করেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথাটি দু’বার কি তিনবার বললেন, তা আমার স্মরণ নেই- তারপর এমন লোকদের আবির্ভাব হবে যে, তারা সাক্ষ্য দিবে, অথচ তাদের সাক্ষ্য চাওয়া হবে না। তারা খিয়ানতকারী হবে। তাদের আমানতদার মনে করা হবে না। তারা মানত মানবে তা পূরণ করবে না। তাদের দৈহিক হৃষ্টপুষ্টতা প্রকাশিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৬ | 5986 | ۵۹۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৬। আবদান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শ্রেষ্ঠ হল আমার যমানার লোক। তারপর উত্তম হল এদের পরবর্তী যমানার লোক তারপর উত্তম হল এদের পরবর্তী যমানার লোক, তারপর এমন সব লোকের আবির্ভাব হবে, যাদের সাক্ষ্য তাদের কসমের পূর্বেই হবে, আর তাদের কসম তাদের সাক্ষ্যের পূর্বেই হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৭ | 5987 | ۵۹۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৭। ইয়াহইয়া ইবনু মূসা (রহঃ) … কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খাব্বাব (রাঃ) সাতবার তার পেটে উত্তপ্ত লোহার দাগ নেওয়ার পর আমি তাঁকে বলতে শুনেছি যে, যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যু কামনা করা নিষিদ্ধ না করতেন, তাহলে আমি মৃত্যু কামনা করতাম। নিশ্চয়ই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবার অনেকেই (দুনিয়ার মোহে পতিত না হয়েই) চলে গিয়েছেন। অথচ দুনিয়া তাঁদের আখিরাতের কোনই ক্ষতিসাধন করতে পারেনি। আর আমরা দুনিয়ার ধনসম্পদ সংগ্রহ করেছি, যার জন্য মাটি ছাড়া আর কোন স্থান পাচ্ছি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৮ | 5988 | ۵۹۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৮। মুহাম্মদ ইবনু মুছান্না (রহঃ) … কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি একবার খাব্বাব (রাঃ) এর কাছে এলাম। তখন তিনি একটা দেয়াল তৈরি করছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ আমাদের যে সাথীরা দুনিয়া থেকে চলে গেছে, দুনিয়া তাদের কোন ক্ষতি করতে পারেনি। আর আমরা তাদের পর দুনিয়ার ধনসম্পদ সংগ্রহ করেছি, যেগুলোর জন্য আমরা মাটি ছাড়া আর কোন স্থান পাচ্ছি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৮৯ | 5989 | ۵۹۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৮৯. দুনিয়ার জাঁকজমক ও দুনিয়ার প্রতি আসক্তি থেকে সতর্কতা
৫৯৮৯। মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … খাব্বাব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে হিজরত করেছিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯০ | 5990 | ۵۹۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৯০. মহান আল্লাহর বাণীঃ হে মানুষ! আল্লাহর প্রতিশ্রুতি সত্য, কাজেই পার্থিব জীবন যেন তোমাদের কিছুতেই যেন প্রতারিত না করে … যেন জাহান্নামী হয় পর্যন্ত (৩৫ঃ ৫-৬) ইমাম বুখারী বলেন, السَّعِيرِ এর বহুবচন سُعُرٌ আর মুজাহিদ বলেন, الْغَرُورُ এর মানে শয়তান।
৫৯৯০। সা’দ ইবনু হাফস (রহঃ) … ইবনু আবান থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) এর কাছে উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি নিয়ে এলাম। তখন তিনি মাকায়িদ-এ বসা ছিলেন। তিনি উত্তমরুপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর তিনি বললেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ স্থানেই দেখেছি, তিনি উত্তমরুপে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন, এরপর তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি এ উযূ (ওজু/অজু/অযু)র মতো উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে, তারপর মসজিদে এসে দু’রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে সেখানে বসবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেন যে, তোমরা ধোকায় পড়ো না। ইমাম বুখারী বলেনঃ তিনি হুমরান ইবনু আবান।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯১ | 5991 | ۵۹۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৯১. নেককার লোকদের বিদায় গ্রহন
৫৯৯১। ইয়াহইয়া ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) … মিরদাস আসলামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকেরা ক্রমান্বয়ে চলে যাবেন। আর থেকে যাবে নিকৃষ্টরা-যব অথবা খেজুরের মত লোকজন। আল্লাহ তা’আলা এদের প্রতি ভ্রক্ষেপও করবেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯২ | 5992 | ۵۹۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৯২. ধন-সম্পদের পরীক্ষা থেকে বেঁচে থাকা সম্পর্কে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ‌ তা’আলার বাণীঃ “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পরীক্ষা (৮ঃ ২৮)
৫৯৯২। ইয়াহইয়া ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দ্বীনার, দিরহাম, রেশমী চাঁদর (শাল), পশমী কাপড়ের (চাদর) গোলামরা ধ্বংস হোক। যাদের এসব দেয়া হলে সন্তুষ্ট থাকে আর দেয়া না হলে অন্তুষ্ট হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৩ | 5993 | ۵۹۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৯২. ধন-সম্পদের পরীক্ষা থেকে বেঁচে থাকা সম্পর্কে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ‌ তা’আলার বাণীঃ “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পরীক্ষা (৮ঃ ২৮)
৫৯৯৩। আবূ আসিম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যদি আদম সন্তানের দুটি উপত্যকাপূর্ণ ধনসম্পদ থাকে তবুও সে তৃতীয়টার আকাঙ্ক্ষা করবে। আর মাটি ছাড়া লোভী আদম সন্তানের পেট ভরবে না। অবশ্য যে ব্যাক্তি তওবা করবে, আল্লাহ তা আলা তার তওবা কবুল করবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৪ | 5994 | ۵۹۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৯২. ধন-সম্পদের পরীক্ষা থেকে বেঁচে থাকা সম্পর্কে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ‌ তা’আলার বাণীঃ “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পরীক্ষা (৮ঃ ২৮)
৫৯৯৪। মুহাম্মাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, তিনি বলেনঃ বনী আদমের জন্য যদি এক উপত্যকা পরিমাণ ধনসম্পদ থাকে তাহলে সে আরও ধন অর্জনের জন্য লালায়িত থাকবে। বনী আদমের লোভী চোখ মাটি ছাড়া আর কিছুই তৃপ্ত করতে পারবে না। তবে যে তওবা করবে আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ সুতরাং আমি জানিনা-এটি কুরআনের অন্তর্ভুক্ত কিনা। তিনি বলেনঃ আমি ইবনুল যুবায়রকে বলতে শুনেছি-এটি মিম্বরের উপরের (বর্ণনা)।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৫ | 5995 | ۵۹۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৯২. ধন-সম্পদের পরীক্ষা থেকে বেঁচে থাকা সম্পর্কে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ‌ তা’আলার বাণীঃ “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পরীক্ষা (৮ঃ ২৮)
৫৯৯৫। আবূ নুয়াইম (রহঃ) … আব্বাস ইবনু সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। আমি ইবনুল যুবায়র (রাঃ) কে মক্কায় মিম্বরের উপর তার খুতবার মধ্যে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ হে লোকেরা! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায়ই বলতেন যে, যদি আদম সন্তানকে স্বর্ণে পরিপূর্ণ একটা উপত্যকা মাল দেয়া হয়, তথাপিও সে এ রকম দ্বিতীয়টার জন্য আকাঙ্ক্ষিত হয়ে থাকবে। আর তাকে এরকম দ্বিতীয়টা যদি দেয়া হয়, তাহলে সে তৃতীয় আরও একটার জন্য আকাঙ্ক্ষা করতে থাকবে। মানুষের পেট মাটি ছাড়া কিছুই ভরভে পারে না। তবে যে ব্যাক্তি তওবা করে, আল্লাহ তা’আলা তার তওবা কবুল করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৬ | 5996 | ۵۹۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৯২. ধন-সম্পদের পরীক্ষা থেকে বেঁচে থাকা সম্পর্কে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ‌ তা’আলার বাণীঃ “তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পরীক্ষা (৮ঃ ২৮)
৫৯৯৬। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যদি আদম সন্তানের স্বর্ণে পরিপূর্ন একটা উপত্যকা থাকে, তথাপি সে তার জন্য দুটি উপত্যকার কামনা করবে। তার মুখ একমাত্র মাটি ছাড়া অন্য কিছুই ভরতে পারবে না। অবশ্য যে ব্যাক্তি তওবা করে, আল্লাহ তাআলা তার তাওবা কবুল করেন। অন্য এক সুত্রে আনাস (রাঃ) উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ আমাদের ধারণা ছিল যে, সম্ভবত এ কুরআনেরই আয়াত। অবশেষে (সূরায়ে তাকাসুর) নাযিল হল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৭ | 5997 | ۵۹۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ এ সম্পদ শ্যামল ও মনোমুগ্ধকর। মহান আল্লাহর বাণীঃ মানুষের জন্য (দুনিয়াতে) মনোহর করে দেওয়া হয়েছে কাঙ্ক্ষিত জিনিসগুলোর মায়া মহব্বতকে অর্থাৎ নারীকুল ও সন্তান-সন্ততি … এসব ইহজীবনের ভোগ্য বস্তু (৩ঃ ১৪) উমার (র) বলেন, হে আল্লাহ! আপনি আমাদের জন্য যেসব জিনিস মনোহর করে দিয়েছেন, তজ্জন্য খুশি না হয়ে পারি না। হে আল্লাহ! অবশ্যই আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করছি, যেন আমি এগুলোকে যথাযথ খরচ করতে পারি।
৫৯৯৭। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মাল চাইলাম। তিনি আমাকে দিলেন। এরপর আমি আবার চাইলাম। তিনি আমাকে দিলেন। এরপর আমি আবারও চাইলাম। তিনি দিলেন। এরপর বললেনঃ এই ধন-সম্পদ সুফয়ানের বর্ণনামতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে হাকীম! অবশ্যই এই মাল শ্যামল-সবুজ ও সুমিষ্ট। যে ব্যাক্তি তা সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করবে, তার জন্য এটাকে বরকতময় করে দেওয়া হবে। আর যে ব্যাক্তি তা লোভ সহকারে নেবে, তার জন্য তাতে বরকত দেওয়া হবে না। বরং সে ঐ ব্যাক্তির ন্যায় যে খায়, কিন্তু পেট ভরে না। আর (জেনে রেখো) উপরের (দাতার) হাত নিচের (গ্রহীতার) হাত থেকে শ্রেষ্ঠ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৮ | 5998 | ۵۹۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৪. মালের যা অগ্রিম পাঠাবে তা-ই তার হবে
৫৯৯৮। আমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের প্রশ্ন করলেন, তোমাদের মধ্যে এমন ব্যাক্তি কে যে নিজের সম্পদের চেয়ে তার উত্তরাধিকারীর সম্পদকে বেশি প্রিয় মনে করে? তারা সবাই জবাব দিলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের মধ্যে সবাই তার নিজের সম্পদকে সবচাইতে বেশি প্রিয় মনে করি। তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই মানুষের নিজের সম্পদ তা-ই, যা সে আগে পাঠিয়েছো আর পিছনে যা ছেড়ে যাবে তা ওয়ারিছের মাল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৯৯ | 5999 | ۵۹۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৫. প্রাচুর্যের অধিকারীরাই সল্পাধিকারী। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর বাণীঃ যদি কেউ পার্থিব জীবন ও তার চাকচিক্য কামনা করে … এবং তারা যা করে থাকে (১১ঃ ১৫-১৬)
৫৯৯৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাতে আমি একবার বের হলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একাকী চলতে দেখলাম, তার সঙ্গে কোন লোক ছিল না। আমি মনে করলাম, তার সঙ্গে কেউ চলুক হয়ত তিনি তা অপছন্দ করবেন। তাই আমি চাঁদের ছায়াতে তার পেছনে পেছনে চলতে লাগলাম। তিনি পেছনের দিকে তাকিয়ে আমাকে দেখে ফেললেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন এ কে? আমি বললাম, আমি আবূ যার। আল্লাহ তা’আলা আমাকে আপনার জন্য উৎসর্গিত করুন। তিনি বললেনঃ ওহে আবূ যার, এসো। আমি তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ চললাম। তারপর তিনি বললেনঃ প্রাচুর্যের অধিকারীরাই কিয়ামতের দিন স্বল্পাধিকারী হবে। অবশ্য যাদের আল্লাহ সম্পদ দান করেন এবং তারা সম্পদকে তা ডানে বামে, আগে ও পেছনে ব্যয় করে। আর মঙ্গলজনক কাজে তা লাগায়, (তারা ব্যতীত)।

তারপর আমি আরও কিছুক্ষণ তাঁর সঙ্গে চলার পর তিনি আমাকে বললেনঃ। তুমি এখানে বসে থাক। (এ কথা বলে) তিনি আমাকে চতুর্দিকে প্রস্তরঘেরা একটি খোলা জায়গায় বসিয়ে দিয়ে বললেনঃ আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত তুমি এখানেই বসে থেকেো। তিনি বলেনঃ এরপর তিনি প্রস্তরময় প্রান্তরের দিকে চলে গেলেন। এমন কি তিনি আমার দৃষ্টির অগোচরে চলে গেলেন এবং বেশ কিছুক্ষণ অতিবাহিত হয়ে গেল।

অতঃপর তিনি ফিরে আসার সময় আমি তাকে বলতে শুনলাম, যদিও সে চুরি করে, যদিও সে যিনা করে। তারপর তিনি যখন ফিরে এলেন তখন আমি আর ধৈর্য ধারণ করতে না পেরে তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে বাধ্য হলাম যে, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ আমাকে আপনার প্রতি কুরবান করুন। আপনি এই প্রস্তর প্রান্তরে কার সাথে কথা বললেন? কাউকে তো আপনার কথার উত্তর দিতে শুনলাম না। তখন তিনি বললেনঃ তিনি ছিলেন জিবরীল (আলাইহিস সালাম)। তিনি এই কংকরময় প্রান্তরে আমার কাছে এসেছিলেন।

তিনি বললেনঃ আপনি আপনার উম্মাতদের সুসংবাদ দিবেন যে, সে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক না করে মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ওহে জিবরীল! যদিও সে চুরি করে, আর যদিও সে যিনা করে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি বললামঃ যদিও সে চুরি করে আর যিনা করে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আবার আমি বললামঃ যদিও সে চুরি করে আর যিনা করে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। যদি সে শরাবও পান করে।

নযর (রহঃ) … আবূদ্দারদা (রাঃ) থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। আবূদ্দারদা থেকে আবূ সালিহের বর্ণনা মুরসাল, যা সহীহ নয়। আমরা পরিচয়ের জন্য এনেছি। ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ তবে এ সুসংবাদ এ অবস্থায় দেওয়া হয়েছে, যদি সে তওবা করে আর মৃত্যৃকালে ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০০ | 6000 | ٦۰۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৬. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার জন্য উহুদ সোনা হোক; আমি তা কামনা করি না
৬০০০। আল হাসন ইবনুুূর রাবী (রহঃ) … যায়দ ইবনু ওহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ যার (রাঃ) বলেন, একবার আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মদিনার কংকরময় প্রান্তরে হেঁটে চলছিলাম। ইতোমধ্যে উহুদ আমাদের সামনে এল। তখন তিনি বললেনঃ হে আবূ যার! আমি বললাম, লাব্বাইকা, ইয়া রাসূসাল্লাহ! তিনি বললেনঃ আমার নিকট এ উহুদ পরিমাণ সোনা হোক, আর তা ঝণ পরিশোধ করার উদ্দেশ্যে রেখে দেওয়া ব্যতীত একটি দ্বীনারও তা থেকে আমার কাছে জমা থাকুক আর এ অবস্থায় তিন দিন অতিবাহত হোক তা আমাকে আনন্দিত করবে না। তবে যদি আমি তা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এভাবে তাকে ডান দিকে, বাম দিকে ও পেছনের দিকে বিতরণ করে দেই তা স্বতস্ত্র।

এরপর তিনি চললেন। কিছুক্ষণ পর আবার বললেনঃ জেনে রেখো, প্রাচুর্যের অধিকারীরাই কিয়ামতের দিন স্বল্পাধিকরী হবে। অবশ্য যারা এভাবে, এভাবে, এভাবে ডানে, বামে ও পেছনে ব্যায় করবে, তারা এর ব্যাক্তিক্রম। কিন্তু এরকম লোক অতি অল্পই। তারপর আমাকে বললেনঃ তুমি এখানে থাক। আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত এখানেই অবস্থান করো। অতঃপর তিনি রাতের অন্ধকারে ঢলে গেলেন। এমনকি অদৃশ্য হয়ে গেলেন। এরপর আমি একটা উচ্চ শব্দ শুনলাম। এতে আমি শংকিত হয়ে পড়লাম যে, সম্ভবত তিনি কোন শক্রর সাম্মুখীন হয়েছেন। এজন্য আমি তার কাছেই যেতে চাইলাম। কিন্তু তখনই আমার স্মরণ হলো যে, তিনি আমাকে বলে গিয়েছেন যে, আমি না আসা পর্যন্ত তুমি আর কোথাও যেয়ো না। তাই আমি সেদিকে আর গেলাম না।

ইতোমধ্যে তিনি ফিরে এলেন। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি একটা শব্দ শুনে তো শংকিত হয়ে পড়েছিলাম। বাকী ঘটনা বর্ণনা করলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি শব্দ শুনেছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ ইনি জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তিনি আমার কাছে এসে বললেনঃ আপনার উম্মাতের কেউ যদি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক না করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে, তবে সে জান্নাতে দাখিল হবে। আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, যদি সে যিনা করে এবং যদি সে চুরি করে। তিনি বললেনঃ যদিও সে যিনা করে এবং যদিও চুরি করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০১ | 6001 | ٦۰۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৬. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার জন্য উহুদ সোনা হোক; আমি তা কামনা করি না
৬০০১। আহমাদ ইবনু শাবীব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমার জন্য উহুদের সমতূল্য স্বর্ণ যদি হয় আর এর কিয়দংশও তিনদিন অতীত হওয়ার পর আমার কাছে থাকবে না- তাতেই আমি সুখী হবো। তবে যদি ঋন পরিশোধের জন্য হয় (তা ব্যতিক্রম)।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০২ | 6002 | ٦۰۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৭. প্রকৃত ঐশ্বর্য হলো অন্তরের ঐশ্বর্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তারা কি ধারনা করছে যে, আমি তাদেরকে যেসব ধন-সম্পদ ও সন্তানাদি দান করেছি … করে যাচ্ছে, পর্যন্ত
৬০০২। আহমাদ ইবনু ইউনূস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বৈষয়িক প্রাচুর্য ঐশ্বর্য নয় বরং প্রকৃত ঐশ্বর্য হল অন্তরের ঐশ্বর্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৩ | 6003 | ٦۰۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৮. দরিদ্রতার ফযীলত
৬০০৩। ইসমাঈল (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশ দিয়ে গেলেন তখন তিনি তার কাছে বসা একজনকে জিজ্ঞেস করলেন, এ ব্যাক্তি সম্পর্কে তোমার মন্তব্য কি? তিনি বললেনঃ এ ব্যাক্তি তো একজন সভ্রান্ত পরিবারের লোক। আল্লাহর কসম! তিনি এমন মর্যাদাবান যে কোথাও বিয়ের প্রস্তাব দিলে তা গ্রহনযোগ্য। আর কারো জন্য সুপারিশ করলে তা গ্রহণযোগ্য। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব থাকলেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই আরেক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশ দিয়ে গেলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসা লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলেন, এ ব্যাক্তি সম্বন্ধে তোমার অভিমত কি? তিনি বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ ব্যাক্তি তো এক গরীব মুসলমান। এ এমন ব্যাক্তি যে, যদি সে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, তা গ্রহণযোগ্য হবে না। আর সে যদি কারো সুপারিশ করে, তবে তা কবুলও হবে না এবং যদি সে কোন কথা বলে, তবে তা শোনার যোগ্য হয় না। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ দুনিয়া ভরা আগের ব্যাক্তি থেকে এ ব্যাক্তি উত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৪ | 6004 | ٦۰۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৮. দরিদ্রতার ফযীলত
৬০০৪। আল হুমায়দী (রহঃ) … আবূ ওয়াহিল (রহঃ) বর্ণনা করেন। একবার আমরা খাব্বাব (রাঃ) এর শুশ্রুষায় গেলাম। তখন তিনি বললেনঃ আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে (মদিনায়) হিজরত করেছি; যার সাওয়াব আল্লাহর কাছেই আমাদের প্রাপ্য। এরপর আমাদের মধ্যে কেউ কেউ এ সাওয়াব দুনিয়াতে লাভ করার আগেই বিদায় নিয়েছেন। তন্মধ্যে মুসআব ইবনু উমায়র (রাঃ), তিনি তো উহুদের যুদ্ধে শহীদ হল। তিনি শুধু একখানা চাঁদর রেখে যান। আমরা কাফনের জন্য এটা দিয়ে তাঁর মাথা ঢাকলে পা বেরিয়ে যেত এবং পা ঢাকলে মাথা বেরিয়ে পড়তো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নির্দেশ দিলেন যে, তা দিয়ে মাথাটা ঢেকে দাও এবং পায়ের উপর কিছু ‘ইযখির’ ঘাস বিছিয়ে দাও। আর আমাদের মধ্যে এমনও অনেক রয়েছেন, যাদের ফল পাকছে এবং তারা তা সরবরাহ করছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৫ | 6005 | ٦۰۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৮. দরিদ্রতার ফযীলত
৬০০৫। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি জান্নাতের মধ্যে তাকিয়ে দেখলাম যে, অধিকাংশ জান্নাতবাসী গরীব এবং আমি জাহান্নামের দিকে তাকিয়ে দেখলাম যে, অধিকাংশ জাহান্নামী স্ত্রীলোক।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৬ | 6006 | ٦۰۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৮. দরিদ্রতার ফযীলত
৬০০৬। আবূ মা’মার (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমৃত্যু টেবিলের উপর খাবার খাননি আর ওফাতের পূর্ব পর্যন্ত মসৃণ রুটি খেতে পাননি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৭ | 6007 | ٦۰۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৮. দরিদ্রতার ফযীলত
৬০০৭। আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন অবস্থায় ইন্তেকাল করলেন যে, তখন কোন প্রানী খেতে পারে আমার তাকের উপর এমন কিছু ছিল না। তবে আমার তাকে যৎসামান্য যব ছিল। এ থেকে (পরিমাপ না করে) বেশ কিছুদিন আমি খেলাম। একদা মেপে দেখলাম- যদ্দরুন তা শেয হয়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৮ | 6008 | ٦۰۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০০৮। আবূ নুয়াইম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলতেনঃ আল্লাহর কসম! যিনি ছাড়া অরে কোন মাবুদ নেই, আমি ক্ষুধার জ্বালায় আমার পেটকে মাটিতে রেখে উপুড় হয়ে পড়ে থাকতাম। আর কোন সময় ক্ষুধার জালায় আমার পেটে পাথর বেঁধে রাখতাম। একদিন আমি ক্ষুধার যন্ত্রণায় বাধ্য হয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও সাহাবীগণের বের হওয়ার পথে বসে থাকলাম। আবূ বকর (রাঃ) যেতে লাগলে আমি কুরআনের একটা আয়াত সম্পর্কে প্রশ্ন করলাম। আমি তাকে প্রশ্ন করলাম এই উদ্দেশ্যে যে, তিনি তাহলে আমাকে পরিতৃপ্ত করে কিছু খাওয়াবেন। কিন্তু তিনি চলে গেলেন, কিছু করলেন না। কিছুক্ষণ পর উমর (রাঃ) যাচ্ছিলেন। আমি তাকে কুরআনের একটি আয়াত সমন্ধে প্রশ্ন করলাম। এ সময়ও আমি প্রশ্ন করলাম এ উদ্দেশ্যে যে, তিনি আমাকে পরিতৃপ্ত করে খাওয়াবেন। কিন্তু তিনি চলে গেলেন। আমার কোন ব্যবস্থা করলেন না।

তার পরক্ষনে আবূল কাসিম যাচ্ছিলেন। তিনি আমাকে দেখেই মুচকি হাসলেন এখং আমার প্রাণে কি অস্থিরতা বিরাজমান এবং আমার চেহারার অবস্থা থেকে তিনি তা আচ করতে পারলেন। তারপর বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি হাযির আছি। তিনি বললেনঃ তুমি আমার সঙ্গে চল। এ বলে তিনি চললেন, আমিও তার অনুসরণ করলাম। তিনি ঘরে ঢূকবার অনুমতি চাইলেন এবং আমার্যে ঢুকবার অনুমতি দিলেন। তারপর তিনি ঘরে প্রবেশ করে একটি পেয়ালার মধ্যে কিছু পরিমান দুধ পেলেন। তিনি বললেনঃ এ দুধ কোথা থেকে এসেছে? তাঁরা বললেনঃ এটা আপনাকে অমুক পুরুষ অথবা অমুক মহিলা হাদিয়া দিয়েছে। তখন তিনি বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, লাব্বাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ! তুমি সুফফাবাসীদের কাছে গিয়ে তাদেরকে আমার কাছে ডেকে নিয়ে এসো।

রাবী বলেনঃ সুফফাবাসীরা ইসলামের মেহমান ছিলেন। তাদের কোন পরিবার ছিল না এবং তাদের কোন সম্পদ ছিল না এবং তাদের কারো উপর নির্ভরশীল হওয়ারও সুযোগ ছিল না। যখন কোন সাদাকা আসত তখন তিনি তা তাদের কাছে পাঠিয়ে দিতেন। তিনি এর থেকে কিছুই গ্রহন করতেন না। আর যখন কোন হাদিয়া আসত, তখন তার কিছু অংশ তাদেরকে দিয়ে দিতেন এবং এর থেকে নিজেও কিছু রাখতেন। এর মধ্যে তাদেরকে শরীক করতেন। এ আদেশ শুনে আমার মনে কিছুটা হতাশা এলো। মনে মনে ভাবলাম যে, এ সামান্য দুধ দ্বারা সুফফাবাসীদের কি হবে? এ সামান্য দুধ আমার জন্যই যথেষ্ট হতো। এটা পান করে আমি শরীরে কিছুটা শক্তি পেতাম।

এরপর যখন তাঁরা এসে গেলেন, তখন তিনি আমাকে নির্দেশ দিলেন যে, আমিই যেন তা তাঁদেরকে দেই, আর আমার আশা রইল না যে, এ দুধ থেকে আমি কিছু পাব। কিন্তু আল্লাহ ও তার রাসুলের নির্দেশ না মেনে কোন উপায় নেই। তাই তাঁদের কাছে গিয়ে তাদেরকে ডেকে আনলাম। তারা এসে ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি চাইলে তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন। তাঁরা এসে ঘরে আসন গ্রহন করলেন। তিনি বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, আমি হাযির ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ তুমি পেয়ালাটি নাও আর তাদেরকে দাও। আমি পেয়ালা নিয়ে একজনকে দিলাম। তিনি তা পরিতৃপ্ত হয়ে পান করে পেয়ালাটি আমাকে ফিরিয়ে দিলেন। আমি আরেকজনকে পেয়ালাটি দিলাম। তিনিও পরিতৃপ্ত হয়ে পান করে পেয়ালাটি আমাকে ফিরিয়ে দিলেন। এমন কি আমি এরুপে দিতে দিতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত পৌছলাম। তাঁরা সবাই তৃপ্ত হয়েছিলেন।

তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেয়ালাটি নিজ হাতে নিয়ে রেখে আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন। আর বললেনঃ হে আবূ হির! আমি বললাম, আমি হাযির, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ এখন তো আমি আর তুমি আছি। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি ঠিক বলছেন। তিনি বললেনঃ এখন তুমি বসে পান কর। তখন আমি বসে কিছু পান করলাম। তিনি বললেনঃ তুমি আরও পান কর। আমি আরও পান করলাম। তিনি বারবার আমাকে পান করার নির্দেশ দিতে লাগলেন। এমন কি আমি বলতে বাধ্য হলাম যে, আর না। যে সত্তা আপনাকে সত্য ধর্মসহ পাঠিয়েছেন, তার কসম। (আমার পেটে) আর পান করার মত জায়গা আমি পাচ্ছি না। তিনি বললেনঃ তাহলে আমাকে দাও। আমি পেয়ালাটি তাঁকে দিয়ে দিলাম। তিনি আলহামদুলিল্লাহ ও বিসমিল্লাহ বলে বাকীটা পান করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০০৯ | 6009 | ٦۰۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০০৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … কায়স (রহঃ) বর্ণনা করেন, আমি সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, আমিই আরবের সর্বপ্রথম ব্যাক্তি, আল্লাহর পথে যে তীর নিক্ষেপ করেছে। আমরা যুদ্ধকালীন নিজেদেরকে যে দুবলাহ গাছের পাতা ও বাবলা ছাড়া খাবারের কিছুই ছিল না, অবস্থায় দেখেছি। কেউ কেউ বকরীর পায়খানার ন্যায় পায়খানা করতেন। যা ছিল সম্পূর্ন শুকনো। অথচ এখন আবার বনূ আসাদ (গোত্র) এসে ইসলামের উপর চলার জন্য আমাকে তিরস্কার করছে। এখন আমি যেন শংকিত আমার সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১০ | 6010 | ٦۰۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১০। উসমান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিজন মদিনায় আগমনের পর থেকে লাগাতার তাঁর ওফাত পর্যন্ত তিন দিন গমের রুটি পরিতৃপ্ত হয়ে খাননি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১১ | 6011 | ٦۰۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১১। ইবনু ইবরাহীম ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মুহাম্মাদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার একদিনে যখনই দুবেলা খানা খেয়েছেন একবেলা শুধু খুরমা খেয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১২ | 6012 | ٦۰۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১২। আহমাদ ইবনু আবূ রাজা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিছানা চামড়ার তৈরি ছিল এবং তার ভেতরে ছিল খেজুরের আঁশ।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৩ | 6013 | ٦۰۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১৩। হুদবা ইবনু খালিদ (রহঃ) … কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমরা আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর কাছে এমন অবস্থায় যেতাম যে, তাঁর বাবুর্চি (মেহমান আপ্যায়নের জন্য) দণ্ডায়মান। আনাস (রাঃ) বলতেন, আপনারা খান। আমি জানিনা যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকালের সময় পর্যন্ত একটা চাপাতি রুটিও চোখে দেখেছেন কিনা। আর তিনি কখনও একটি ভুনা ছাগল নিজ চোখে দেখেননি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৪ | 6014 | ٦۰۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১৪। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মাস অতিবাহিত হয়ে যেত আমরা এর মধ্যে ঘরে (রান্নার জন্য) আগুন প্রজ্বলিত করতাম না। তখন এক-মাত্র খুরমা আর পানি চলত। অবশ্য তবে যদি যৎসামান্য গোশত আমাদের নিকট এসে যেত।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৫ | 6015 | ٦۰۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১৫। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ আল ওয়াইসী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একবার উরওয়া (রাঃ) কে বললেনঃ বোন পুত্র! আমরা দু’মাসের মধ্যে তিনবার নয়া চাঁদ দেখতাম। কিন্তু এর মধ্যে আল্লাহর রাসুলের গৃহগুলোতে (রান্নার জন্য) আগুন জালানো হতো না। আমি বললাম, আপনাদের জীবন ধারণের কি ছিল? তিনি বললেনঃ কালো দুটি জিনিস। খেজুর আর পানি। অবশ্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতিবেশী কয়েকজন আনসার সাহাবীর অনেকগুলো দুগ্নবতী প্রাণী ছিল। তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তা দিত। তখন আমরা তা পান করে নিতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৬ | 6016 | ٦۰۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৯৯. নাবী (সাঃ) ও তাঁর সহাবীগণের জীবন যাপন কিরূপ ছিল এবং তাঁরা দুনিয়া থেকে কী অবস্থায় বিদায় নিলেন
৬০১৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করতেনঃ ইয়া আল্লাহ! মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবারকে প্রয়োজনীয় জীবিকা দান করুন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৭ | 6017 | ٦۰۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০১৭। আবদান (রহঃ) … মাসরুক (রহঃ) বর্ননা করেন। আমি আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কি রকম আমল সবচাইতে প্রিয় ছিল? তিনি বললেনঃ নিয়মিত আমল। আমি বললাম, তিনি রাতে কোন সময় উঠতেন? তিনি বললেনঃ যখন তিনি মোরগের ডাক শুনতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৮ | 6018 | ٦۰۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০১৮। কুতায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে আমল আমলকারী নিয়মিত করে, সে আমল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সবচাইতে প্রিয় ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০১৯ | 6019 | ٦۰۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০১৯। আদম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কস্মিনকালেও তোমাদের কাউকে নিজের আমল নাজাত দেবে না। তাঁরা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনাকেও না? তিনি বললেনঃ আমাকেও না। তবে আল্লাহ তা’আলা আমাকে রহমাত দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। তোমরা যথারীতি আমল কর, ঘনিষ্ঠ হও। তোমরা সকালে, বিকালে এবং রাতের শেষাংশে আল্লাহর কাজ কর। মধ্যমপন্থা অবলম্বন কর। আকড়ে ধর মধ্যমপন্থাকে, অবশ্যই সফলকাম হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২০ | 6020 | ٦۰۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০২০। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ঠিকভাবে ও মধ্যমপন্থায় নেক আমল করতে থাক। আর জেনে রাখ যে, তোমাদের কাউকে তার আমল বেহেশতে নেবে না এবং আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় আমল হলো, যা নিয়মিত করা হয়। তা অল্পই হোক না কেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২১ | 6021 | ٦۰۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০২১। মুহাম্মাদ ইবনু আর’আরা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, আল্লাহ তাআলার কাছে সবচাইতে প্রিয় আমল কি? তিনি বললেনঃ যে আমল নিয়মিত করা হয়। যদিও তা অল্প হোক। তিনি আরও বললেনঃ তোমরা সাধ্যমত আমল করে যাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২২ | 6022 | ٦۰۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০২২। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আলকামা (রহঃ) বর্ণনা করেন। আমি মুসলিম-জননী আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, হে উম্মুল মু’মিনীন! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমল কি রকম ছিল? তিনি কি কোন আমলের জন্য কোন দিন নির্দিষ্ট করতেন? তিনি বললেনঃ না। তার আমল ছিল নিয়মিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন সক্ষমতার অধিকারী ছিলেন তোমাদের কেউ কি সে সক্ষমতার অধিকারী?

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৩ | 6023 | ٦۰۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০২৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ননা করেন। তিনি বলেছেনঃ তোমরা ঠিক ঠিকভাবে মধ্যম পন্থায় আমল করতে থাক। আর সুসংবাদ নাও। কিন্তু (জেনে রেখো) কারো আমল তাকে জান্নাতে নেবে না। তারা বললেনঃ তবে কি আপনাকেও না? তিনি বললেনঃ আমাকেও না। তবে আল্লাহ তায়াআলা আমাকে মাগফিরাত ও রহমতে ঢেকে রেখেছেন। তিনি বলেছেনঃ এটিকে আমি ধারণা করছি আবূ নাযর … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আফফান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তোমরা সঠিকভাবে আমল কর আর সুসংবাদ নাও। মুহাজিদ বলেছেন, سَدِيدًا‏‏ وَسَدَادًا অর্থ সত্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৪ | 6024 | ٦۰۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৭০০. আমলে মধ্যমপন্থা এবং নিয়মিত করা
৬০২৪। ইবরাহীম ইবনুল মুনযির (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আমাদেরকে নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরপর মিম্বরে উঠে মসজিদের কিবলার দিকে হাত দিয়ে ইশারা করে বললেনঃ যখন আমি তোমাদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলাম, তখন এ প্রাচীরের সান্মুখে আমাকে জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য দেখানো হল। আমি আজকের মত ভাল ও মন্দ আর কোন দিন দেখিনি। এ শেষ কথাটি তিনি দু’বার বললেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৫ | 6025 | ٦۰۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৭০১. ভয়ের সাথে সাথে আশা রাখা। সুফ্ইয়ান (রহ) বলেন, কুরআনের মধ্যে আমার কাছে এই আয়াত থেকে কঠিন আয়াত দ্বিতীয়টি নাই। তাওরাত, ইঞ্জিল ও যা তোমাদের প্রতিপালকের কাছ হতে তোমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে (কুরআন) তোমরা তা বাস্তবায়িত না করা পর্যন্ত তোমরা কোন ভিতের উপর নেই।
৬০২৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি। আল্লাহ তাআলা রহমত সৃষ্টির দিন একশটি রহমত সৃষ্টি করেছেন। নিরানব্বইটি তাঁর কাছে রেখে দিয়েছেন এবং একটি রহমত সমন্ত সৃষ্টির মধ্যে ছেড়ে দিয়েছেন। যদি কাফির আল্লাহর কাছে সুরক্ষিত রহমত সম্পর্কে জানে তাহলে সে জান্নাত লাভ থেকে নিরাশ হবে না। আর মুমিন যদি আল্লাহর কাছে শাস্তি সম্পর্কে জানে তা হলে সে জাহান্নাম থেকে বে-পরওয়া হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৬ | 6026 | ٦۰۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৭০২. আল্লাহ তা’আলার নিষেধাজ্ঞাসমূহ থেকে সবর করা। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) ধৈর্যশীলদের তো অপরিমিত প্রতিদান দেওয়া হবে। উমর (রাঃ) বলেন, আমরা শ্রেষ্ঠ জীবন লাভ করেছিলাম একমাত্র ধৈর্য ধারণ করার মাধ্যমেই।
৬০২৬। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ননা করেন। একবার আনসারদের কিছু সংখ্যক লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সাহায্য চাইলেন। তাদের যে যা চাইলেন, তিনি তা-ই দিলেন, এমন কি তাঁর কাছে যা কিছু ছিল তা শেষ হয়ে গেল। যখন তাঁর দু’হাত দিয়ে দান করার পর সবকিছু শেষ হয়ে গেল, তখন তিনি বললেনঃ আমার কাছে যা কিছু মালামাল থাকে, তা থেকে আমি কিছুই সঞ্চয় করি না। অবশ্য যে নিজেকে মুখাপেক্ষিমুক্ত রাখতে চায়, আল্লাহ তাকে তাই রাখেন; আর যে ব্যাক্তি ধৈর্য ধারণ করে তিনি তাকে ধৈর্যশীলই রাখেন। আর যে ব্যাক্তি পরনির্ভর হতে চায় না, আল্লাহ তাকে অভাবমুক্ত রাখেন। সবর অপেক্ষা বেশি প্রশস্ত ও কল্যাণকর কিছু কস্মিনকালেও তোমাদেরকে দান করা হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৭ | 6027 | ٦۰۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৭০২. আল্লাহ তা’আলার নিষেধাজ্ঞাসমূহ থেকে সবর করা। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) ধৈর্যশীলদের তো অপরিমিত প্রতিদান দেওয়া হবে। উমর (রাঃ) বলেন, আমরা শ্রেষ্ঠ জীবন লাভ করেছিলাম একমাত্র ধৈর্য ধারণ করার মাধ্যমেই।
৬০২৭। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … যিয়াদ ইবনু ইলাকাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) কে বর্ণনা করতে শুনেছি। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন, তাঁর পদযুগল ফূলে যেত। তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলতেন:আমি কি অত্যধিক কৃতজ্ঞ বান্দা হবো না?

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৮ | 6028 | ٦۰۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৭০৩. (আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ) আর যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা রাখবে, তার জন্য তিনিই যথেষ্ট।
৬০২৮। ইসহাক (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মাতের মধ্য থেকে সত্তর হাজার লোক বিনা হিসেবেই জান্নাতে প্রবেশ করবে। তারা হবে এমন লোক- যারা ঝাড়ফুঁকের শরণাপন্ন হয় না, কুযাত্রা মানে না এবং নিজেদের প্রতিপালকের উপরই ভরসা রাখে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০২৯ | 6029 | ٦۰۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৭০৪. অনর্থক কথাবার্তা অপছন্দনীয়
৬০২৯। আলী ইবনু মুসলিম (রহঃ) … মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) এর কাতিব ওয়াররাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মুয়াবিযা (রাঃ) মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) কে লিখলেন যে, আপনি আমার কাছে একটা হাদীস লিখে পাঠান, যা আপনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন। বর্ণনাকারী বলেনঃ তখন মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) তাঁর কাছে লিখে পাঠালেন, আমি নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাত (নামায/নামাজ) থেকে ফিরার সময় বলতে শুনেছিঃ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ، وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তিনি একক ও অদ্বিতীয়, তার কোন শরীক নেই। রাজত্ব তাঁরই এবং হামদ তাঁরই। তিনি সবার উপর শক্তিমান।

আর তিনি নিষেধ করতেন অনর্থক কথাবার্তা, অধিক সাওয়াল, মালের অপচয়, উচিত বস্তুকে দেওয়া। অনুচিতকে চাওয়া, মাতাপিতার অবাধ্যতা এবং কন্যাদেরকে জীবিত কবর করা থেকে। হুশায়ম (রহঃ) … আবদুল মালিক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ওয়াররাদ কে আল মুগীরা … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এই হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩০ | 6030 | ٦۰۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৭০৫. যবান সাবধান রাখা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে। আল্লাহর বাণীঃ যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তার নিকটে একজন সদা তৎপর প্রহরী রয়েছে।
৬০৩০। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বাকর আল মুকাদ্দামী (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আমার (সন্তুষ্টির) জন্য তার দু’চোয়ালের মধ্যবর্তী বস্তু (জিহবা) এবং দু’রানের মাঝখানের বস্তু (লজ্জাস্থান) এর হিফাযত করবে আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব গ্রহণ করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩১ | 6031 | ٦۰۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৭০৫. যবান সাবধান রাখা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে। আল্লাহর বাণীঃ যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তার নিকটে একজন সদা তৎপর প্রহরী রয়েছে।
৬০৩১। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ এবং শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে নয়তো নীরব থাকে। এবং যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩২ | 6032 | ٦۰۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৭০৫. যবান সাবধান রাখা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে। আল্লাহর বাণীঃ যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তার নিকটে একজন সদা তৎপর প্রহরী রয়েছে।
৬০৩২। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবূ শুরাইয়া আল খুযায়ী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার কান নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছে এবং আমার অন্তর তা সংরক্ষন করেছে, মেহমানদারী তিন দিন, সৌজন্যসহ। জিজ্ঞাসা করা হলো, সৌজন্য কি? তিনি বললেনঃ এক দিন ও এক রাত (বিশেষ আতিথেয়তা)। যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর ও আখেরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৩ | 6033 | ٦۰۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৭০৫. যবান সাবধান রাখা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে। আল্লাহর বাণীঃ যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তার নিকটে একজন সদা তৎপর প্রহরী রয়েছে।
৬০৩৩। ইবরাহীম ইবনু হামযা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, নিশ্চয় বান্দা এমন কথা বলে যার পরিনাম সে চিন্তা করে না অথচ এ কথার কারণে সে নিক্ষিপ্ত হবে জাহান্নামের এমন গভীরে যার দূরত্ব মাশরিক-এর দূরত্বের চাইতে অধিক।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৪ | 6034 | ٦۰۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৭০৫. যবান সাবধান রাখা। আর যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি ঈমান রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা চুপ থাকে। আল্লাহর বাণীঃ যে কথাই মানুষ উচ্চারণ করে তা লিপিবদ্ধ করার জন্য তার নিকটে একজন সদা তৎপর প্রহরী রয়েছে।
৬০৩৪। আবদুল্লাহ ইবনু মুনীর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টির কোন কথা উচ্চারন করে অথচ সে কথার গুরুত্ব সম্পর্কে চেতনা নেই। কিন্তু এ কথার দ্বারা আল্লাহ তার মর্যাদা অনেক গুন বাড়িয়ে দেন। আবার বান্দা আল্লাহর অসন্তুষ্টির কোন কথা বলে ফেলে যার পরিনতি সম্পর্কে সে সচেতন নয়, অথচ সে কথার কারণে সে জাহান্নামে পতিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৫ | 6035 | ٦۰۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৭০৬. আল্লাহ তা’আলার ভয়ে কাঁদা
৬০৩৫। মুহাম্মাদ ইরন বাশশার (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাত প্রকার লোককে আল্লাহ তা’আলা ছায়া দেবেন। এক জাতীয় ব্যাক্তি হবে আল্লাহর যিকর করে চক্ষুদ্বয় অশ্রুসিক্ত করল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৬ | 6036 | ٦۰۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৭০৭. আল্লাহর ভয়
৬০৩৬। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী উম্মাতের এক ব্যাক্তি ছিল, যে তার আমল সম্পর্কে তুচ্ছ ধারনা পোষণ করত। সে তার পরিবারের লোকদেরকে বলল, যখন আমি মারা যাবো, তখন তোমরা আমাকে নিয়ে (জ্বালিয়ে দিবে) অতঃপর প্রচণ্ড গরমের দিনে আমার ভস্মগুলো সমুদ্রে ছিটিয়ে দেবে। তার পরিবারের লোকেরা সে অনুযায়ী কাজ করলো। অতঃপর আল্লাহ তায়াআলা সেই ভস্ম একত্রিত করে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি যা করলে, তা কেন করলে, সে বললো, একমাত্র আপনার ভীতিই আমাকে এটিতে বাধ্য করেছে। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করে করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৭ | 6037 | ٦۰۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৭০৭. আল্লাহর ভয়
৬০৩৭। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পূর্ব অথবা তোমাদের পূর্ব যুগের এক ব্যাক্তির কথা উল্লেখ করলেন। আল্লাহ তা’আলা তাকে ধন-সস্পদ ও সন্তানাদি দান করেছিলেন। যখন সে মৃত্যুর সম্মুখীন হল তখন সে তার সন্তানদেরকে জিজ্ঞাসা করলো, আমি তোমাদের কেমন পিতা ছিলাম? তারা বলল, উত্তম। সে বললো, যে আল্লাহর কাছে কোন সম্পদ সঞ্চয় রাখেনি, সে আল্লাহর কাছে হাযির হলে তিনি তাকে শাস্তি দেবেন। তোমরা লক্ষ্য রাখবে, আমি মারা গেলে আমাকে জ্বালিয়ে দেবে। আমি যখন কয়লা হয়ে যাব তাকে ছাই ভস্ম করে ফেলবে। অতঃপর যখন প্রবল বাতাস বইবে, তখন তোমরা তা তাতে উড়িয়ে দেবে। এভাবে সে তাদের নিকট থেকে অঙ্গীকার নিল।

রাবী বলেনঃ আমার প্রতিপালকের কসম! তারা যথাযথ তাই করল। অতঃপর আল্লাহ তাআলা বললেন, অস্তিত্বে এসে যাও। হঠাৎ এক ব্যাক্তিরুপে দণ্ডায়মান হল। তখন তিনি বললেনঃ হে আমার বান্দা! তুমি এমনটি কেন করলে? সে বললো তা একমাত্র আপনার ভয়ে। তখন তিনি এর প্রতিদানে তাকে ক্ষমা করে দিলেন আপনার ভীতি অথবা আপনার থেকে সরে থাকার কারণে।

আমি আবূ উসমানকে বর্ণনা করেছি, তিনি বলেছেনঃ আমি সালমানকে শুনেছি, তিনি এতদ্ব্যতীত অতিরিক্ত করেছেন … আমার ভম্মগুলো সমুদ্রে ছিটিয়ে দেবে। অথবা তিনি যেমনটি বর্ণনা করেছেন। মু’আয (রহঃ) … উকবা (রহঃ) বলেনঃ আমি আবূ সাঈদ (রাঃ) কে শুনেছি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৮ | 6038 | ٦۰۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৭০৮. সব গুনাহ থেকে বিরত থাকা
৬০৩৮। মুহাম্মাদ ইবনুল আলা (রহঃ) … আবূ মূসা আশয়ারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ও আমাকে যা দিয়ে আল্লাহ পাঠিয়েছেন তার দৃষ্টান্ত হলো এমন ব্যাক্তির মত, যে তার কওমের কাছে এসে বললো, আমি স্ব-চক্ষে শত্রু সেনাদলকে দেখেছি আর আমি স্পষ্ট সতর্ককারী। সুতরাং তোমরা সত্বর আত্মরক্ষার ব্যবস্থা কর। অতঃপর একদল তার কথায় সাড়া দিয়ে শেষ রজনীতে নিরাপদ গন্তব্যে পৌছে বেঁচে গেল। এদিকে আরেক দল তাকে মিথ্যারোপ করে, যদ্দরুন তাদেরকে ভোর বেলায় শত্রুসেনা এসে সমূলে নিপাত করে দিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৩৯ | 6039 | ٦۰۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৭০৮. সব গুনাহ থেকে বিরত থাকা
৬০৩৯। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, আমার ও লোকদের দৃষ্টান্ত এমন ব্যাক্তির ন্যায়, যে আগুন জ্বালালো আর যখন তার চতূর্দিক আলোকিত হয়ে গেল, তখন পতঙ্গ ও ঐ সমস্ত প্রাণী যেগুলো আগুনে পুড়ে, তারা তাতে পড়তে লাগলো। তখন সে সেগুলোকে আগুন থেকে বাঁচাবার জন্য টানতে লাগলো। কিন্তু তারা আগুনে পুড়ে মরলো। তদ্রুপ আমি তোমাদের কোমরে ধরে দোযখের আগুন থেকে বাঁচাতে চেষ্টা করি অথচ তারা তাতেই প্রবেশ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪০ | 6040 | ٦۰٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৭০৮. সব গুনাহ থেকে বিরত থাকা
৬০৪০। আবূ নুয়াঈম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বর্ণনা করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমান (প্রকৃত) সেই ব্যাক্তি, যার যবান ও হাত থেকে মুসলিমগণ নিরাপদ থাকে। আর মুহাজির (প্রকৃত) সে, আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা পরিত্যাগ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪১ | 6041 | ٦۰٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৭০৯. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তাহলে তোমরা অবশ্যই কম হাসতে
৬০৪১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি যা জানি যদি তোমরা তা জানতে তবে তোমরা অবশ্যই হাসতে কম আর কাঁদতে বেশি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪২ | 6042 | ٦۰٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৭০৯. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তাহলে তোমরা অবশ্যই কম হাসতে
৬০৪২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি যা জানি যদি তোমরা তা জানতে তবে তোমরা অবশ্যই হাসতে কম আর কাঁদতে বেশি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৩ | 6043 | ٦۰٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৭১০. প্রবৃত্তি দ্বারা জাহান্নামকে বেষ্টন করা হয়েছে
৬০৪৩। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাহান্নাম প্রবৃত্তি দিয়ে বেষ্টিত। আর জান্নাত বেষ্টিত দুঃখ-ক্লেশ দিয়ে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৪ | 6044 | ٦۰٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৭১১. জান্নাত তোমাদের কারো জুতার ফিতার চেয়েও বেশী নিকটবর্তী আর জাহান্নামও তদ্রূপ
৬০৪৪। মূসা ইবনু মাসউদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাত তোমাদের কারো জুতার ফিতার চাইতেও বেশি কাছাকাছি আর জাহান্নামও তদ্রুপ।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৫ | 6045 | ٦۰٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৭১১. জান্নাত তোমাদের কারো জুতার ফিতার চেয়েও বেশী নিকটবর্তী আর জাহান্নামও তদ্রূপ
৬০৪৫। মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সর্বাধিক সত্য কবিতা যা জনৈক কবি বলেছেনঃ তোমরা জেনে রেখো আল্লাহ ছাড়া সব কিছুই অনর্থক।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৬ | 6046 | ٦۰٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৭১২. মানুষ যেন নিজের চেয়ে নিন্মস্তর ব্যক্তির দিকে তাকায় আর নিজের চেয়ে উচ্চস্তর ব্যক্তির দিকে যেন না তাকায়
৬০৪৬। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কারো দৃষ্টি যদি এমন ব্যাক্তির উপর নিপতিত হয়, যাকে সম্পদে ও দৈহিক গঠনে বেশি মর্যাদা দেয়া হয়েছে তবে সে যেন এমন ব্যাক্তির দিকে তাকায়, যে তার চেয়ে হীন অবস্থায় রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৭ | 6047 | ٦۰٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৭১৩. যে ব্যক্তি ইচ্ছা করল ভাল কাজের কিংবা মন্দ কাজের
৬০৪৭। আবূ মা’মার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (হাদীসে কুদসী স্বরূপ) তার রব থেকে বর্ণনা করে বলেন যে, আল্লাহ তা’আলা নেকী ও বদীসমূহ চিহ্নিত করেছেন। এরপর সেগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন সুতরাং যে ব্যাক্তি কোন সং কাজের ইচ্ছা করল, কিন্তু তা বাস্তবে পরিণত করল না, আল্লাহ তা’আলা তাঁর কাছে এর জন্য পূর্ণ নেকী লিপিবদ্ধ করবেন। আর সে ইচ্ছা করল ভাল কাজের এবং তা বাস্তবেও পরিণত করল তবে আল্লাহ তা’আলা তার কাছে তার জন্য দশ গুন থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত এমন কি এর চেয়েও অনেক গুণ বেশি সাওয়াব লিখে দেন। আর যে ব্যাক্তি কোন অসৎ কাজের ইচ্ছা করল, কিন্তু তা বাস্তবে পরিণত করল না, আল্লাহ তাআলা তার কাছে তার জন্য পূর্ন নেকী লিপিবদ্ধ করবেন। আর যদি সে ওই অসৎ কাজের ইচ্ছা করার পর বাস্তবেও তা করে ফেলে, তবে তার জন্য আল্লাহ তাঁআলা মাত্র একটা পাপ লিখে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৮ | 6048 | ٦۰٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৭১৪. সগীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা
৬০৪৮। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) বলেনঃ তোমরা এমন সব কাজ করে থাক, যা তোমাদের চোখে চুল থেকেও সূক্ষ্ম দেখায়। কিন্তু নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যমানায় আমরা এগুলোকে ধবংসাত্মক মনে করতাম। আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন অর্থাৎ الْمُهْلِكَاتِ “ধ্বংসাত্মক”।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৪৯ | 6049 | ٦۰٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৭১৫. আমল পরিনামের উপর নির্ভরশীল, আর পরিণামের ব্যাপারে ভীত থাকা
৬০৪৯। আলী ইবনু আইয়্যাস (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুশরিকদের সাথে যুদ্ধরত এক ব্যাক্তির দিকে তাকালেন। সে ব্যাক্তি অন্যান্য লোকের চাইতে ধনী ছিল। তিনি বললেনঃ কেউ যদি জাহান্নামী লোক দেখতে চায়, সে যেন এই লোকটিকে দেখে। (এ কথা শুনে) এক ব্যাক্তি তার পেছনে পেছনে যেতে লাগল। সে যুদ্ধ করতে করতে অবশেষে আহত হয়ে গেল। সে দ্রুত মৃত্যু কামনা করল, সে তারই তরবারীর অগ্রভাগ বুকে লাগিয়ে উপুড় হয়ে সজোরে এমনভাবে চাপ দিল যে, তলোয়ারটি তার বক্ষস্থল ভেদ করে পার্শ্বদেশ অতিক্রম করে গেল। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কোন বান্দা এমন কাজ করে যায়, যা দেখে লোকেরা একে জান্নাতী লোকের কাজ মনে করে। কিন্তু বাস্তবে সে জাহান্নামিদের অন্তর্ভুক্ত। আর কোন বান্দা এমন কাজ করে যায়, যা মানুষের চোখে জাহান্নামীদের কাজ বলে মনে হয় অথচ সে জান্নাতী লোকদের অন্তর্ভূক্ত। নিশ্চয়ই মানুষের যাবতীয় আমল পরিণামের সাথে নির্ভরশীল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫০ | 6050 | ٦۰۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৭১৬. অসৎ লোকের সাথে মেলামেশা থেকে নির্জনে থাকা শান্তিদায়ক
৬০৫০। আবূল ইয়ামান ও মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একজন বেদুঈন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে আরয করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কোন ব্যাক্তি সবচাইতে উত্তম? তিনি বললেনঃ সে ব্যাক্তি যে নিজের জান ও মাল দিয়ে জিহাদ করে, আর সে ব্যাক্তি যে পর্বতের কোন গুহায় তার রবের ইবাদত করতে থাকে এবং মানুষকে তার অনিষ্ট থেকে রেহাই দেয়। যুবায়দী সুলায়মান (রহঃ) ও নোমান (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে শুআইব (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন। মামার (রহঃ) … আবূ সায়ীদ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। ইউনুস (রহঃ), ইবনু মুসাফির (রহঃ) ও ইয়াহইয়া ইবনু সায়ীদ (রহঃ) জনৈক সাহাবী কতৃক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অর্থাৎ আবূল ইয়ামানের হাদীসের ন্যায় “কোন ব্যাক্তি সবচাইতে উত্তম বর্ণনা করেছেন।”

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫১ | 6051 | ٦۰۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৭১৬. অসৎ লোকের সাথে মেলামেশা থেকে নির্জনে থাকা শান্তিদায়ক
৬০৫১। আবূ নুয়াঈম (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, মানুষের উপর এমন এক সময় আসবে যখন মুসলমানের উত্তম সম্পদ হবে বকরির পাল। সে তা নিয়ে পাহাড়ী উপত্যকা ও বারি ভূমির অনুসরণ করবে, তার দ্বীনকে নিয়ে ফিতনা থেকে দুরে থাকার উদ্দেশ্যে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫২ | 6052 | ٦۰۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৭১৬. অসৎ লোকের সাথে মেলামেশা থেকে নির্জনে থাকা শান্তিদায়ক
৬০৫২। মুহাম্মদ ইবনু সিনান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন আমানত বিনষ্ট হয়ে যাবে তখন কিয়ামতের অপেক্ষা করবে। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আমানত কেমন করে নষ্ট হযে যাবে, তিনি বললেনঃ যখন অযোগ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে, তখনই তুমি কিয়ামতের অপেক্ষা করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৩ | 6053 | ٦۰۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৭১৭. আমানতদারী উঠে যাওয়া
৬০৫৩। মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) বর্ননা করেন। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে দু’টি হাদীস বর্ণনা করেছেন। একটি তো আমি প্রত্যক্ষ করেছি এবং দ্বিতীয়টির জন্য অপেক্ষা করছি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে, আমানত মানুষের অন্তর্মুলে অধোগামী হয়। তারপর তারা কুরআন থেকে জ্ঞান অর্জন করে। এরপর তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে জ্ঞান অর্জন করে। আবার বর্ণনা করেছেন আমানত তুলে নেয়া সম্পর্কে, যে ব্যাক্তিটি (ঈমানদার) এক পর্যায়ে ঘূমালে পর, তার অন্তর থেকে আমানত তুলে নেয়া হবে, তখন একটি বিন্দুর মত চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে। পুনরায় ঘূমাবে। তখন আবার উঠিয়ে নেয়া হবে। অতঃপর তার চিহ্ন ফোস্কার মত অবশিষ্ট থাকবে। তোমার পায়ের উপর গড়িয়ে পড়া অঙ্গার সৃষ্ট চিহ্ন, যেটিকে তুমি ফোলা মনে করবে, অথচ তার মধ্যে আদো কিছু নেই। মানুষ কারবার করবে বটে, কেউ আমানত আদায় করবে না। তারপর লোকেরা বলাবলি করবে যে, অমূক বংশে একজন আমানতদার লোক রয়েছে। সে ব্যাক্তি সম্পর্কে মন্তব্য করা হবে যে, সে কতই না বুদ্ধিমান, কতই না বিচক্ষণ, কতই না বাহাদুর? অথচ তার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমানও থাকবে না। (বর্ণনাকারী বলেন) আমার উপর এমন এক যামানা অতিবাহিত হয়েছে যে, আমি তোমাদের কারো সাথে বেচাকেনা করলাম, সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করতাম না। কারণ সে মুসলমান হলে ইসলামই আমার হক ফিরিয়ে দেবে। আর সে নাসরানী হলে তার শাসকই আমার হক ফিরিয়ে দেবে। অথচ বর্তমানে আমি অমুক অমুককে ছাড়া বেচাকেনা করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৪ | 6054 | ٦۰۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৭১৭. আমানতদারী উঠে যাওয়া
৬০৫৪। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি তিনি বলতেনঃ নিশ্চয়ই মানুষ তো উটের ন্যায়, যাদের মধ্য থেকে সাওয়ারীর উপযোগী একটি পাওয়া তোমার পক্ষে দুষ্কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৫ | 6055 | ٦۰۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৭১৮. লোকদেখানো ও শোনানো ইবাদত
৬০৫৫। মুসাদ্দাদ ও আবূ নুআয়ম (রহঃ) … সালামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি জুনদুবকে বলতে শুনেছি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন। তিনি ব্যতীত আমি অন্য কাউকে “নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন এরুপ বলতে শুনিনি। আমি তার কাছে গেলাম এবং তাকে বলতে শুনলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি লোক শোনানো ইবাদত করে আল্লাহ তা’আলা এর বিনিময়ে লোক শোনানো দিবেন। আর যে ব্যাক্তি লোক-দেখানো ইবাদত করবে আল্লাহ এর বিনিময়ে “লোক দেখানো দিবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৬ | 6056 | ٦۰۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৭১৯. যে ব্যক্তি সাধনা করবে প্রবৃত্তির সাথে আল্লাহর ইবাদতের ব্যাপারে আল্লাহর আনুগত্যের জন্য নিজের নফসের সাথে
৬০৫৬। হুদবাহ ইবনু খালিদ (রহঃ) … মুয়ায ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহযাত্রী ছিলাম। অথচ আমার ও তার মাঝখানে ব্যবধান ছিল শুধু সাওয়ারীর গদির কাষ্ঠ-খণ্ড। তিনি বললেনঃ হে মুয়ায! আমি বললাম, লাব্বাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ ওয়া সাদাইকা! তারপর আরও কিছুক্ষণ চলার পরে আবার বললেনঃ হে মুয়ায! আমি বললাম, লাব্বাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ ওয়া সাদাইকা! তারপর আরও কিছুক্ষন চলার পর আবার বললেনঃ হে মুয়ায ইবনু জাবাল! আমিও আবার বললাম, লাব্বাইকা ইযা রাসূলাল্লাহ ওয়া সাদাইকা। তখন তিনি বললেনঃ তুমি কি জানো যে, বান্দার উপর আল্লাহর হক কি? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসুল অধিক জানেন। তিনি বললেনঃ বান্দার উপর আল্লাহর হক হচ্ছে এই যে, সে তারই ইবাদত করবে, এতে তার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না। এরপর আরও কিছুক্ষন পথ চলার পর আবার ডাকলেন, হে মুয়ায ইবনু জাবাল! আমি বললাম, লাব্বাইকা ওয়া সাদাইকা ইয়া রাসুলুল্লাহ! তিনি বললেনঃ যদি বান্দা তা করে তখন আল্লাহর কাছে বান্দার প্রাপ্য কি হবে, তা কি তুমি জানো? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসুলই অধিক জ্ঞাত। তিনি বললেনঃ তখন বান্দার হক আল্লাহর কাছে হল তাদেরকে আযাব না দেওয়া।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৭ | 6057 | ٦۰۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৭২০. তাওয়াজু (বিনয়)
৬০৫৭। মালিক ইবনু ইসমাঈল ও মুহাম্মদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ‘আযবা’ নাম্নী একটি উটনী ছিল। তাকে অতিক্রম করে যাওয়া যেত না। একবার একজন বেদুঈন তার একটি উটে সাওয়ার হয়ে আসলে সেটি তার আগে চলে গেল। মুসলিমদের কাছে তা কঠোর মনে হল। তারা বলল যে, আযবা কে তো অতিক্রম করে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তা’আলার বিধান হলো, দুনিয়ার কোন জিনিসকে উত্থিত করা হলে তাকে পতিতও করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৮ | 6058 | ٦۰۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৭২০. তাওয়াজু (বিনয়)
৬০৫৮। মুহাম্মাদ ইবনু উসমান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ যে ব্যাক্তি আমার কোন ওলীর সঙ্গে শক্রতা রাখবে, আমি তার সাথে যুদ্ধ ঘোষনা করি। আমার বান্দা আমি যা তার উপর ফরয ইবাদতের চাইতে আমার কাছে অধিক প্রিয় কোন ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করবে না। আমার বান্দা সর্বদা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য অর্জন– করতে থাকবে। এমন কি অবশেষে আমি তাকে আমার এমন প্রিয় পাত্র বানিয়ে নেই যে আমিই তার কান হয়ে যাই, যা দিয়ে সে শুনে। আমিই তার চোখ হয়ে যাই, যা দিয়ে সে সবকিছু দেখে। আর আমিই তার হাত হয়ে যাই, যা দিয়ে সে ধরে। আমিই তার পা হয়ে যাই, যার দ্বারা সে চলে। সে যদি আমার কাছে কোন কিছু সাওয়াল করে, তবে আমি নিশ্চয়ই তাকে তা দান করি। আর যদি সে আমার কাছে আশ্রয় চায়, তবে অবশ্যই আমি তাকে আশ্রয় দেই। আমি যে কোন কাজ করতে চাইলে এটাতে কোন রকম দ্বিধা সংকোচ করি-না যতটা দ্বিধা সংকোচ মুমিন বান্দার প্রাণ হরণে করি। সে মৃত্যুকে অপছন্দ করে আর আমি তার কষ্ট অপছন্দ করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৫৯ | 6059 | ٦۰۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৭২১. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ “আমাকে পাঠানো হয়েছে কিয়ামতের সাথে এ দুটি আঙ্গুলের ন্যায়।” (আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ) আর কিয়ামতের ব্যাপার তো চোখের পলকের ন্যায় বরং তা অপেক্ষাও সত্ত্বর। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান (১৬ঃ ৭৭)
৬০৫৯। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে কিয়ামতের সাথে এ রকম। এ বলে তিনি আঙ্গুল দু’টিকে প্রসারিত করে ইশারা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬০ | 6060 | ٦۰٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৭২১. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ “আমাকে পাঠানো হয়েছে কিয়ামতের সাথে এ দুটি আঙ্গুলের ন্যায়।” (আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ) আর কিয়ামতের ব্যাপার তো চোখের পলকের ন্যায় বরং তা অপেক্ষাও সত্ত্বর। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান (১৬ঃ ৭৭)
৬০৬০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে প্রেরণ করা হয়েছে কিয়ামতের সাথে এ রকম।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬১ | 6061 | ٦۰٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৭২১. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ “আমাকে পাঠানো হয়েছে কিয়ামতের সাথে এ দুটি আঙ্গুলের ন্যায়।” (আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ) আর কিয়ামতের ব্যাপার তো চোখের পলকের ন্যায় বরং তা অপেক্ষাও সত্ত্বর। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান (১৬ঃ ৭৭)
৬০৬১। ইয়াহইয়া ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার ও কিয়ামতের আবির্ভাব এ রকম। অর্থাৎ এ দুটি আঙ্গুলের ন্যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬২ | 6062 | ٦۰٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৭২১. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ “আমাকে পাঠানো হয়েছে কিয়ামতের সাথে এ দুটি আঙ্গুলের ন্যায়।” (আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ) আর কিয়ামতের ব্যাপার তো চোখের পলকের ন্যায় বরং তা অপেক্ষাও সত্ত্বর। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান (১৬ঃ ৭৭)
৬০৬২। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামত কায়েম হবে না, যতক্ষন না সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হবে। যখন সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হবে, আর লোকজন তা প্রত্যক্ষ করবে, তখন সকলেই ঈমান নিয়ে আসবে। তখনকার সম্পর্কেই (আল্লাহ তালার বানী) “সেদিন তার ঈমান কাজে আসবে না, ইতিপূর্বে যে ব্যাক্তি ঈমান আনেনি, কিংবা যে ব্যাক্তি-ঈমানের মাধ্যমে কল্যান অর্জন করেনি। কিয়ামত সংঘটিত হবে এ অবস্থায় যে, দু’ব্যাক্তি (বেচা কেনার) জন্য পরস্পরের সামনে কাপড় ছড়িয়ে রাখবে। কিন্তু তারা বেচাকেনার সময় পাবে না। এমন কি তা ভাজ করারও অবকাশ পাবে না। আর কিয়ামত এমন অবস্থায় অবশ্যই কায়েম হবে যে, কোন ব্যাক্তি তার উটনীর দুধ দোহন করে ফিরে আসার পর সে তা পান করার অবকাশ পাবে না। আর কিয়ামত এমন অবস্থায় সংঘটিত হবে যে, কোন ব্যাক্তি (তার উটকে পানি পান করানোর উদ্দেশ্যে) চৌবাচ্চা তৈরি করবে। কিন্তু সে এ থেকে পানি পান করানোর সুযোগ পাবে না। আর কিযামত এমন অবস্থায় কায়েম হবে যে, কোন ব্যাক্তি তার মুখ পর্যন্ত লোকমা উঠাবে, কিন্তু সে তা খেতে পারবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৩ | 6063 | ٦۰٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৭২২. যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন
৬০৬৩। হাজ্জাজ (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহব সাক্ষাত লাভ করা ভালবাসে, আল্লাহ তা’আালাও তার সাক্ষাৎ লাভ করা ভালবাসেন। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করে না, আল্লাহ তা’আলাও তার সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করেন না। তখন আয়িশা (রাঃ) অথবা তাঁর অন্য কোন সহধর্মিণী বললেনঃ আমরাও তো মৃত্যুকে পছন্দ করি না। তিনি বললেনঃ বিষয়টা এরূপ নয়। আসলে ব্যাপারটা হল এই যে, যখন মুমিন বান্দার মৃত্যু উপস্থিত হয়, তখন তাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও তার সম্মানিত হওয়ার সুসংবাদ শোনানো হয়। তখন তার সামনের সুসংবাদের চাইতে তার নিকট বেশি পছন্দনীয় কিছু থাকে না। সুতরাং সে তখন আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করাকেই পছন্দ করে, আর আল্লাহ তা’আলাও তার সাক্ষাৎ লাভ করা ভালবাসেন। আর কাফিরের যখন অন্তিমকাল উপস্থিত হয়, তখন তাকে আল্লাহর আযাব ও শাস্তির সংবাদ দেওয়া হয়। তখন তার সামনের আযাবের সংবাদের চাইতে তার কাছে অধিক অপছন্দনীয় কিছুই থাকে না। সুতরাং সে (এ সময়) আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা অপছন্দ করে, আর আল্লাহ তার সাক্ষাতকে অপছন্দ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৪ | 6064 | ٦۰٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৭২২. যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন
৬০৬৪। মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা আশয়ারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর মূলাকাতকে ভালবাসে, আল্লাহ তা’আলাও তার মুলাকাতকে ভালবাসেন। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর মুলাকাতকে ভালবাসে না, আল্লাহ তা’আলাও তার মুলাকাত ভালবাসেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৫ | 6065 | ٦۰٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৭২২. যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করা পছন্দ করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ পছন্দ করেন
৬০৬৫। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থাবস্থায় প্রায়ই এ কথা বলতেন যে, কোন নাবীরই (জান) কবয করা হয় না, যতক্ষন পর্যন্ত তাকে তাঁর জান্নাতের ঠিকানা না দেখানো হয়, আর তাকে (জীবন অথবা মৃত্যুর) অধিকার না দেওয়া হয়। সুতরাং যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃত্যু কাল ঘনিয়ে এলো, এ সময় তার মাথা আমার রানের উপর ছিল, তখন কিছুক্ষণের জন্য তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়লেন। বেহুশ থেকে সুস্থ হওয়ার পর তিনি তাঁর চোখ উপরের দিকে তুলে ছাদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ “আল্লাহুম্মার রাফীকালআলা” (অর্থাৎ ইয়া আল্লাহ! আমি আমার পরম বন্ধুর সান্নিধ্যই পছন্দ করলাম)। আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেন, তখনই আমি (মনে মনে) বললাম যে, তিনি এখন আর আমাদেরকে পছন্দ করবেন না। আর আমি বুঝতে পারলাম যে, এটাই হচ্ছে সেই হাদীসের মর্ম, যা তিনি ইতিপূর্বে প্রায়ই বর্ণনা করতেন এবং এটাই ছিল তার শেষ কথা, যা তিনি বলেছেনঃ اللَّهُمَّ الرَّفِيقَ الأَعْلَى আমি আমার পরম বন্ধুর সান্নিধ্যই পছন্দ করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৬ | 6066 | ٦۰٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৬৬। মুহাম্মাদ ইবনু উবায়দ ইবনু মায়মুন (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলতেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে চামড়ার অথবা কাঠের একপাত্রে কিছু পানি রাখা ছিল (উমর সন্দেহ করতেন) তিনি তাঁর উভয় হাত ঐ পানির মধ্যে দাখিল করতেন। এরপর নিজ মুখমণ্ডলে উভয় হাত দ্বারা মাসেহ করতেন এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলতেন। আরও বলতেনঃ নিশ্চয়ই মৃত্যুর অনেক যন্ত্রণা রয়েছে। এরপর দু’হাত তুলে দোয়া করতে লাগলেন। ইয়া আল্লাহ! আমাকে সর্বোচ্চ বন্ধুর নিকটে পৌছিয়ে দিন। এ সময়ই তার (রূহ) কবয করা হল। আর হাত দু’টি ঢলে পড়ল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৭ | 6067 | ٦۰٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৬৭। সাদাকা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কিছু সংখ্যক কঠিন মেজাজের গ্রাম্য লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করতো কিয়ামত কবে হবে? তখন তিনি তাদের সর্ব-কনিষ্ঠ ব্যাক্তির দিকে তাকিয়ে বলতেনঃ যদি এ ব্যাক্তি কিছু দিন বেঁচে থাকে তবে তার বুড়ো হওয়ার আগেই তোমাদের কিয়ামত এসে যাবে। হিশাম বলেন যে, এ কিয়ামতের অর্থ হলো, তাদের মৃত্যু।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৮ | 6068 | ٦۰٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৬৮। ইসমাঈল (রহঃ) … কাতাদা ইবনু রিবঈ আনসারী (রাঃ) বর্ণনা করেন। একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশ দিয়ে একটি জানাযা নিয়ে যাওয়া হল। তিনি তা দেখে বললেনঃ সে শান্তি প্রাপ্ত অথবা তার থেকে শাস্তিপ্রাপ্ত। লোকেরা জিজ্ঞাসা করলো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ‘মুস্তারিহ’ ও ‘মুস্তারাহ মিনহু’ এর অর্থ কি? তিনি বললেনঃ মুমিন বান্দা মরে যাওয়ার পর দুনিয়ার কষ্ট ও যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেয়ে আল্লাহর রহমতের দিকে পৌছে শান্তি প্রাপ্ত হয়। আর গুনাহগার বান্দা মরে যাওয়ার পর তার আচার-আচরণ থেকে সকল মানুষ, শহর-বন্দর, গাছ-পেলা ও প্রানীকূল শান্তিপ্রাপ্ত হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৬৯ | 6069 | ٦۰٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৬৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মৃত ব্যাক্তি হয়ত মুস্তারীহ (নিজে শান্তিপ্রাপ্ত) হবে অথবা মুস্তারাহ মিনহু (লোকজন) তার থেকে শান্তি লাভ করবে। মুমিন (দুনিয়ার ফিতনা যাতনা থেকে) শান্তি লাভ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭০ | 6070 | ٦۰۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৭০। হুমায়দী (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি জিনিস মৃত ব্যাক্তির অনুসরণ করে থাকে। দুটি ফিরে আসে, আর একটি তার সাথে থেকে যায়। তার পরিবারবর্গ, তার মাল ও তার আমল তার অনুসরণ করে খাকে। তার পরিবারবর্গ ও তার মাল ফিরে আসে, পক্ষান্তরে তার আমল তার সাথে থেকে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭১ | 6071 | ٦۰۷۱

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৭১। আবূ নূমান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কোন ব্যাক্তির মৃত্যু হয়, তখন কবরেই প্রত্যহ সকাল ও সন্ধ্যায় তার জান্নাত অথবা জাহান্নামের ঠিকানা তার সামনে পেশ করা হয়। এবং বলা হয় যে, এই হল তোমার ঠিকানা। তোমার পুনরুত্থান পর্যন্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭২ | 6072 | ٦۰۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৭২৩. মৃত্যুযন্ত্রনা
৬০৭২। আলী ইবনু জা’দ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা মৃত ব্যাক্তিদেরকে গালি দিও না। কারণ তারা তাদের কৃতকর্মের পরিণাম ফল পর্যন্ত পৌছে গিয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৩ | 6073 | ٦۰۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৭২৪. শিঙ্গায় ফুৎকার। মুজাহিদ বলেছেন, শিঙ্গা হচ্ছে ডংকা আকৃতির, ‘যাযরাহ’ মানে চিৎকার, এবং ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, নাকুর মানে শিঙ্গা, ‘রাযিফা’ প্রথম ফুঁৎকার, ‘রাদিফা’ দ্বিতীয় ফুঁৎকার।
৬০৭৩। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, দু’ব্যাক্তি পরস্পরে গালাগালি করল। একজন মুসলমান, অপরজন ইহুদী। মুসলমান বলল, শপথ ঐ মহান সত্তার, যিনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লা কে জগতবাসীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। ইহুদী বলল, শপথ ঐ মহান সত্তার, যিনি মূসা (আলাইহিস সালাম) কে জগতবাসীর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। রাবী বলেনঃ এতে মুসলমান রাগাম্বিত হয়ে গেল এবং ইহুদীর মুখমণ্ডলে একটি চপেটাঘাত করে বসল। এরপর ইহুদী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গিয়ে তার মাঝে এবং মুসলমানের মাঝে যা ঘটেছিল এ সম্পর্কে তাকে অবহিত করল।

তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা আমাকে মূসা (আলাইহিস সালাম) এর ওপর প্রাধান্য দিও না। কেননা কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ বেহুশ হয়ে যাবে, আর আমিই হব সেই ব্যাক্তি যে সর্বপ্রথম হুশে আসব। হুশ হয়েই আমি দেখতে পাব যে মূসা (আলাইহিস সালাম) আরশে আযীমের কিনারা ধরে আছেন। আমি জানিনা মূসা (আলাইহিস সালাম) কি সেই লোক যিনি বেহুশ হবেন আর আমার পূর্বেই প্রকৃতিস্থ হয়ে যাবেন। নাকি তিনি সেই লোকদের অন্তর্ভুক্ত হবেন যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা বেহুশ হয়ে যাওয়া থেকে সতন্ত্র রেখেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৪ | 6074 | ٦۰۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৭২৪. শিঙ্গায় ফুৎকার। মুজাহিদ বলেছেন, শিঙ্গা হচ্ছে ডংকা আকৃতির, ‘যাযরাহ’ মানে চিৎকার, এবং ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, নাকুর মানে শিঙ্গা, ‘রাযিফা’ প্রথম ফুঁৎকার, ‘রাদিফা’ দ্বিতীয় ফুঁৎকার।
৬০৭৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কিয়ামত হবে তখন সমস্ত মানুষ বেহুশ হয়ে যাবে। আর আমিই হব সর্বপ্রথম ব্যাক্তি, যে হুশ হয়ে দাঁড়াবো। আর আমি দেখতে পাব যে, মূসা (আলাইহিস সালাম) আরশে আযীমকে ধরে আছেন। মূলত আমি জানিনা যে, তিনি বেহুশীদের অন্তর্ভুক্ত কি না? এ হাদীস আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৫ | 6075 | ٦۰۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৭২৫. আল্লাহ তা’আলা যমিনকে মুষ্টিতে ধারণ করবেন। এ কথা নাফী (রহঃ) ইবন উমর (রাঃ) সুত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন
৬০৭৫। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ তা’আলা যমীনকে আপন মুঠোয় আবদ্ধ করবেন আর আকাশকে ডান হাত দিয়ে লেপটে দিবেন। এরপর তিনি বলবেনঃ আমিই বাদশাহ, দুনিয়ার বাদশাহরা কোথায়?

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৬ | 6076 | ٦۰۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৭২৫. আল্লাহ তা’আলা যমিনকে মুষ্টিতে ধারণ করবেন। এ কথা নাফী (রহঃ) ইবন উমর (রাঃ) সুত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন
৬০৭৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সমস্ত যমীন একটি রুটি হয়ে যাবে। আর আল্লাহ তা’আলা বেহেশতীদের মেহমানদারীর জন্য তাকে বেহেশতে তুলে নেবেন। যেমন তোমাদের মাঝে কেউ সফরের সময় তার রুটি হাতে তুলে নেয়। এমন সময় একজন ইহুদী এলো এবং বলল, হে আবূল কাসিম! দয়াময় আপনাকে বরকত প্রদান করুন। কিয়ামতের দিন বেহেশতিদের আতিথেয়তা সম্পর্কে আপনাকে কি জানাব না? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। লোকটি বলল, (সেই দিন) সমস্ত ভূ-মণ্ডল একটি রুটি হয়ে যাবে। যেমন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন (লোকটিও সেইরূপই বলল)। এবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে তাকালেন এবং হাসলেন। এমনকি তার চোয়ালের দাঁতসমূহ প্রকাশ পেল। এরপর তিনি বললেনঃ তবে কি আমি তোমাদেরকে (সেই রুটির) তরকারী সম্পর্কে বলব না? তিনি বললেনঃ তাদের তরকারী হবে বালাম এবং নূন। সাহাবাগগ বললেনঃ সে আবার কি? তিনি বললেনঃ ষাড় এবং মাছ। এদের কলিজার গুরদা থেকে সত্তর হাজার লোক খেতে পারবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৭ | 6077 | ٦۰۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৭২৫. আল্লাহ তা’আলা যমিনকে মুষ্টিতে ধারণ করবেন। এ কথা নাফী (রহঃ) ইবন উমর (রাঃ) সুত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন
৬০৭৭। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন মানুষকে এমন স্বচ্ছ শুভ্র সমতল যমীনের ওপর একত্রিত করা হবে সাদা গমের রুটি যেমন স্বচ্ছ-শুভ্র হয়ে থাকে। সাহল বা অন্য কেউ বলেছেনঃ তার মাঝে কারও কোন কিছুর চিহ্ন বিদ্যমান থাকবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৮ | 6078 | ٦۰۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৭৮। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের হাশর হবে তিন প্রকারে। একদল তো হবে আল্লাহ তা’আলার প্রতি আশিক ও দুনিয়ার প্রতি অনাসক্ত বান্দাদের। দ্বিতীয় দল হবে দু’জন, তিনজন, চারজন বা দশজন এক উটের ওপর আরোহণকারী। আর অবশিষ্ট যারা থাকবে অগ্নি তাদেরকে একত্রিত করে নেবে। যেখানে তারা থামবে আগুনও তাদের সাথে সেখানে থামবে। তারা যেখানে রাত্রি যাপন করবে আগুনও সেখানে তাদের সাথে রাত্রি যাপন করবে। তারা যেখানে সকাল করবে আগুনও সেখানে তাদের সাথে সকাল করবে। যেখানে তাদের সন্ধ্যা হবে আগুনেরও সেখানে সন্ধ্যা হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৭৯ | 6079 | ٦۰۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৭৯। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহর নাবী! অধোবদন অবস্হায় কাফেরদেরকে কিভাবে হাশরের ময়দানে উঠানো হবে? তিনি বললেনঃ দুনিয়াতে যে মহান সত্তা (মানুষকে) দু’পায়ের উপর হাটাতে পারেন, তিনি কি কিয়ামতের দিন অধোবদন করে হাটাতে সক্ষম নন? তখন কাতাদা (রাঃ) বললেনঃ আমাদের রবের ইজ্জতের কসম! হ্যাঁ, অবশ্যই পারেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮০ | 6080 | ٦۰۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮০। আলী (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, নিশ্চয়ই তোমরা খালি পা, উলঙ্গ ও খাতনা বিহীন অবস্থায় আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে মিলিত হবে। সুফিয়ান বলেনঃ এ হাদীসকে ঐ সমস্ত হাদীসের অন্তর্ভুক্ত মনে করা হয়, যা ইবনু আব্বাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে স্বয়ং শুনেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮১ | 6081 | ٦۰۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মিম্বরের ওপর দাঁড়িয়ে খুতবা দিতে শুনেছি তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয়ই তোমরা আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে মুলাকাত করবে খালি গা, উলঙ্গ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮২ | 6082 | ٦۰۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮২। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে খুৎবা দিতে দাঁড়ালেন। এরপর বললেনঃ নিশ্চয়ই তোমাদের হাশর করা হবে খালি পা, উলঙ্গ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়। আয়াতঃ ‏كَمَا بَدَأْنَا أَوَّلَ خَلْقٍ نُعِيدُهُ‏ অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলা বলেন যেভাবে আমি প্রথমবার সৃষ্টি করেছি তেমনিভাবে দ্বিতীয়বার সৃষ্টি করব। আর কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) কে পোশাক পরিধান করানো হবে। আমার উম্মাত থেকে কিছু লোককে আনা হবে আর তাদেরকে আনা হবে বামওয়ালাদের (বাম হাতে আমলনামা প্রাপ্ত) ভিতর থেকে। তখন আমি বলব, হে প্রভু। এরা তো আমার উম্মাত। এরপর আল্লাহ বলবেনঃ নিশ্চয়ই তুমি জানো না তোমার পরে এরা কি করেছে। তখন আমি আরয করব, যেমন আরয করেছে নেককার বান্দা অর্থাৎ ঈসা (আলাইহিস সালাম) আয়াতঃ ‏وَكُنْتُ عَلَيْهِمْ شَهِيدًا مَا دُمْتُ فِيهِمْ‏}‏ … ‏الْحَكِيمُ অর্থাৎ যতদিন আমি ছিলাম আমি তাদের ওপর সাক্ষী ছিলাম … الْحَكِيمُ পর্যন্ত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এরপর জবাব দেওয়া হবে। এরা সর্বদাই দ্বীন থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শনের ওপর বিদ্যমান ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৩ | 6083 | ٦۰۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮৩। কায়স ইবনু হাফস (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষকে হাশরের ময়দানে উঠানো হবে খালি পা, উলঙ্গ ও খাতনাবিহীন অবস্থায়। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! তখন তো পুরুষ ও নারীগণ একে অপরের প্রতি দৃষ্টিপাত করবে। তিনি বললেনঃ এইরূপ ইচ্ছা করার চাইতেও কঠিন হবে তখনকার অবস্থা।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৪ | 6084 | ٦۰۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮৪। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমরা কোন এক তাবুতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা বেহেশতীদের এক-চতুর্থাংশ হবে, এটা কি তোমরা পছন্দ কর? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তিনি আবার বললেনঃ তোমরা বেহেশতীদের এক-তৃতীয়াংশ হবে, এটা কি তোমরা পছন্দ কর? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ শপথ ঐ মহান সত্তার, যার হাতে মুহাম্মদের প্রান। আমি দৃঢ়ভাবে প্রত্যাশী যে, তোমরা বেহেশতীদের অর্ধেক হবে। আর এটা চিরন্তন সত্য যে বেহেশতে কেবলমাত্র মুসলমানগণই প্রবেশ করতে পারবে। আর মুশরিকদের মুকাবিলায় তোমরা হচ্ছ এমন, যেমন কাল ষাড়ের চামড়ার উপর শুভ্র (সাদা) পশম। অথবা লাল ষাড়ের চামড়ার ওপর কাল পশম।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৫ | 6085 | ٦۰۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৭২৬. হাশরের অবস্থা
৬০৮৫। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম আদম (আলাইহিস সালাম) কে ডাকা হবে। তিনি তার বংশধরকে দেখতে পাবেন। তখন তাদেরকে বলা হবে, ইনি হচ্ছে তোমাদের পিতা আদম (আলাইহিস সালাম)। জবাবে তারা বলবে হাযির! হাযির! আমরা আপনার খিদমতে হাযির! এরপর তাকে আল্লাহ বলবেন, তোমার জাহান্নামী বংশধরকে বের কর। তখন আদম (আলাইহিস সালাম)বলবেন, প্রভূ হে! কি পরিমাণ বের করব? আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ প্রতি একশ থেকে নিরানব্বই জনকে বের কর। তখন সাহাবাগণ বলে উঠলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! প্রতি একশ থেকে যখন নিরানব্বই জনকে বের করা হবে তখন আর আমাদের মাঝে বাকী থাকবে কি? তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই অন্যান্য সকল উম্মাতের তূলনায় আমার উম্মাত হল কাল ষাড়ের গায়ের শুভ্র পশমের ন্যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৬ | 6086 | ٦۰۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৭২৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ কিয়ামতের প্রকম্পন এক ভয়ংকর ব্যাপার (২২ঃ ১)। কিয়ামত আসন্ন (৫৩ঃ ৫৭)। কিয়ামত আসন্ন (৫৪ঃ ১)
৬০৮৬। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ডেকে বলবেন, হে আদম! তিনি বলবেন, আমি তোমার খিদমতে হাযির। সমগ্র কল্যাণ তোমারই হাতে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা বলবেন, জাহান্নামীদের (দেওয়ার জন্য) বের কর। আদম (আলাইহিস সালাম) আরয করবেন, কি পরিমাণ জাহান্নামী বের করব? আল্লাহ বলবেন, প্রতি এক হাজারে নয়শ, নিরানব্বই জন। বস্তুত এটা হবে ঐ সময়, যখন (কিয়ামতের ভয়াবহ অবস্থা দর্শনে) বাচ্চা বৃদ্ধ হয়ে যাবে। (আয়াতঃ) আর গর্ভবতীরা গর্ভপাত করে ফেলবে; মানুষকে দেখবে মাতাল সদৃশ যদিও তারা নেশাগ্রস্ত নয়। বস্তুত আল্লাহর শাস্তি কঠিন। (সূরা হাজ্জঃ ২)

এটা সাহাবাগণের কাছে বড় কঠিন মনে হল। তখন তাঁরা বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের মধ্য থেকে সেই লোকটি কে হবেন? তিনি বললেনঃ তোমরা এই মর্মে সুসংবাদ গ্রহণ কর যে ইয়াযুয ও মাযুয থেকে এক হাজার আর তোমাদের মাঝ থেকে হবে একজন। এরপর তিনি বললেনঃ শপথ ঐ মহান সত্তার, যার হাতের মুঠোয় আমার জান। আমি আকাঙ্ক্ষা রাখি যে তোমরা বেহেশতীদের এক-তৃতীয়াংশ হয়ে যাও। বর্ননাকারী বলেনঃ এরপর আমরা আলহামদুলিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার, বললাম। তিনি আবার বললেনঃ শপথ ঐ মহান সত্তার যার হাতে আমার জান। আমি অবশ্যই আশা করি যে তোমরা বেহেশতীদের অর্ধেক হয়ে যাও। অন্য সব উম্মাতের মাঝে তোমাদের তুলনা হচ্ছে কাল ষাড়ের চামড়ার মাঝে সাদা চুল বিশেষ। অথবা সাদা চিহ্ন, যা গাধার সামনের পায়ে হয়ে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৭ | 6087 | ٦۰۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৭২৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে মহাদিবসে, যেদিন দাঁড়াবে সমস্ত মানুষ জগতসমুহের প্রতিপালকের সম্মুখে। (৮৩ঃ ৪, ৫, ৬) وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ সম্পর্কে ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, সেদিন দুনিয়ার সমস্ত যোগসূত্র ছিন্ন হয়ে যাবে।
৬০৮৭। ইসমাঈল ইবনু আবান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। মহান আল্লাহর বানীঃ সেই দিন মানূষ তাদের প্রভূর সামনে দণ্ডায়মান হবে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সবাই দণ্ডায়মান হবে ঘামের মাঝে কান পর্যন্ত ডুবে থাকা অবস্থায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৮ | 6088 | ٦۰۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৭২৮. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা কি চিন্তা করে না যে, তারা পুনরুত্থিত হবে মহাদিবসে, যেদিন দাঁড়াবে সমস্ত মানুষ জগতসমুহের প্রতিপালকের সম্মুখে। (৮৩ঃ ৪, ৫, ৬) وَتَقَطَّعَتْ بِهِمُ সম্পর্কে ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, সেদিন দুনিয়ার সমস্ত যোগসূত্র ছিন্ন হয়ে যাবে।
৬০৮৮। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের ঘাম হবে। এমনকি তাদের ঘাম যমীনে সত্তর হাত ছাড়িয়ে যাবে এবং তাদের মুখ পর্যন্ত ঘামে নিমজ্জিত হবে; এমনকি কান পর্যন্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৮৯ | 6089 | ٦۰۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৭২৯. কিয়ামতের দিন কিসাস গ্রহণ। কিয়ামতের আরেক নাম الحَاقَّةُ যেহেতু সেই দিন বিনিময় পাওয়া যাবে এবং সমস্ত কাজের বদলা পাওয়া যাবে الحَقَّةُ এবং الحَاقَّةُ এর একই অর্থ। অনুরূপভাবে الْقَارِعَةُ، وَالْغَاشِيَةُ، وَالصَّاخَّةُ কিয়ামতের নাম। التَّغَابُنُ এর অর্থ জান্নাতবাসীরা জাহান্নামবাসীদের বিস্মিত করে দেবে।
৬০৮৯। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন মানুষের মাঝে সর্বপ্রথম হত্যার বিচার করা হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯০ | 6090 | ٦۰۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৭২৯. কিয়ামতের দিন কিসাস গ্রহণ। কিয়ামতের আরেক নাম الحَاقَّةُ যেহেতু সেই দিন বিনিময় পাওয়া যাবে এবং সমস্ত কাজের বদলা পাওয়া যাবে الحَقَّةُ এবং الحَاقَّةُ এর একই অর্থ। অনুরূপভাবে الْقَارِعَةُ، وَالْغَاشِيَةُ، وَالصَّاخَّةُ কিয়ামতের নাম। التَّغَابُنُ এর অর্থ জান্নাতবাসীরা জাহান্নামবাসীদের বিস্মিত করে দেবে।
৬০৯০। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি তার ভাই এর ওপর যুলুম করেছে সে যেন তা থেকে মাফ নিয়ে নেয়, তার ভাই এর জন্য তার কাছ থেকে নেকী কেটে নেওয়ার পূর্বে। কেননা সেখানে (হাশরের ময়দানে) কোন দীনার বা দিরহাম পাওয়া যাবে না। তার কাছে যদি নেকী না থাকে তবে তার (মাজলুম) ভাই এর গোনাহ এনে তার উপর ছুঁড়ে মারা হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯১ | 6091 | ٦۰۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৭২৯. কিয়ামতের দিন কিসাস গ্রহণ। কিয়ামতের আরেক নাম الحَاقَّةُ যেহেতু সেই দিন বিনিময় পাওয়া যাবে এবং সমস্ত কাজের বদলা পাওয়া যাবে الحَقَّةُ এবং الحَاقَّةُ এর একই অর্থ। অনুরূপভাবে الْقَارِعَةُ، وَالْغَاشِيَةُ، وَالصَّاخَّةُ কিয়ামতের নাম। التَّغَابُنُ এর অর্থ জান্নাতবাসীরা জাহান্নামবাসীদের বিস্মিত করে দেবে।
৬০৯১। আয়াতে কারীমা ‏وَنَزَعْنَا مَا فِي صُدُورِهِمْ مِنْ غِلٍّ এর তাৎপর্যে সালত ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) আবূ সাঈদ খুদুরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিনগণ জাহান্নাম থেকে খালাস পাওয়ার পর একটি পুলের ওপর তাদের আটকানো হবে, যা জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তীস্থানে থাকবে। দুনিয়ায় থাকতে তারা একে অপরের উপর যে যুলুম করেছিল তার প্রতিশোধ নেওয়া হবে। তারা যখন পাক-সাফ হয়ে যাবে, তখন তাদের জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে। শপথ ঐ মহান সত্তার, যার হাতে মুহাম্মদের জান, প্রত্যেক ব্যাক্তি তার দুনিয়ার বাসস্থানকে চেনার তুলনায় জান্নাতের বাসস্থানকে অধিক চিনবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯২ | 6092 | ٦۰۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯২। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যার চুলচেরা হিসাব নেওয়া হবে তাকে আযাব দেওয়া হবে। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি তখন বললাম, আল্লাহ তা’আলা কি এরুপ বলেন নি “অচিরেই সহজ হিসাব গ্রহণ করা হবে”। তিনি বলেনঃ তা তো হবে শুধু পেশ করা মাত্র।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৩ | 6093 | ٦۰۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৩। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অনুরূপ বলতে শুনেছি। ইবনু জুরাইজ, মুহাম্মদ ইবনু সুলাইম, আইউব ও সালিহ ইবনু রুস্তম, ইবনু আবূ মুলাইকা আয়িশা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উক্ত রূপে বর্ননার অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৪ | 6094 | ٦۰۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৪। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন যারই হিসাব গ্রহণ করা হবে সে ধবংস হয়ে যাবে। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ তা’আলা কি বলেননি, যার ডান হাতে আমলনামা দেওয়া হবে তার হিসাব সহজ হবে। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তা পেশ করা বৈ কিছুই নয়। আর কিয়ামতের দিন আমাদের মাঝে যার চুলছেড়া হিসাব নেওয়া হবে তাকে নিঃসন্দেহে আযাব দেওয়া হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৫ | 6095 | ٦۰۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) ও মুহাম্মাদ ইবনু মামার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ কিয়ামতের দিন কাফেরকে হাযির করা হবে আর তখন তাকে বলা হবে, তোমার যদি পৃথিবী ভরা স্বর্ণ থাকত তাহলে কি তার বিনিময়ে তুমি আযাব থেকে বাঁচতে চাইতে না? সে বলবে, হ্যাঁ চাইতাম। এরপর তাকে বলা হবে তোমার কাছে তো এর চেয়ে সহজতর বস্তুটি (তৌহীদ) চাওয়া হয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৬ | 6096 | ٦۰۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৬। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন তোমাদের প্রত্যেক ব্যাক্তির সঙ্গেই আল্লাহ তা’আলা কথা বলবেন। আর সেদিন বান্দা ও আল্লাহর মাঝে কোন দোভাষী থাকবে না। এরপর সামনের দিকে নযর করে তার সামনে জান্নাত দেখতে পাবে না। সে পুনরায় তার সামনের দিকে নযর ফেরাবে তখন তার সামনে পড়বে জাহান্নাম। তোমাদের মাঝে যে জাহান্নাম থেকে রক্ষা পেতে চায়, সে যেন এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও নিজকে রক্ষা করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৭ | 6097 | ٦۰۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৩০. যার চুলচেরা হিসাব হবে তাকে আযাব দেয়া হবে
৬০৯৭। আ’মাশ (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচ। এরপর ভয় প্রদর্শন করলেন এবং সেদিক থেকে মুখ ঘূরিয়ে নিলেন। আবার বললেনঃ তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচ। এরপর ভয় প্রদর্শন করলেন এবং সেদিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। তিনি তিনবার এইরূপ করলেন। এমন কি আমরা মনে করতে লাগলাম যে তিনি বুঝি জাহান্নাম প্রত্যক্ষ করেছেন। এরপর আবার বললেনঃ তোমরা এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও জাহান্নাম থেকে বাঁচ। আর যদি তাও সম্ভব না হয় তবে উত্তম কথার দ্বারা হলেও (জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ গ্রহণ কর)।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৮ | 6098 | ٦۰۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬০৯৮। ইমরান ইবনু মায়সারাহ ও উসায়দ ইবনু যায়িদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পূর্ববতী উম্মাতদের আমার সমীপে পেশ করা হয়। কোন নাবী তাঁর অনেক উম্মাতকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন। কোন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকজন উম্মাতকে সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছেন। কোন নাবীর সঙ্গে রয়েছে দশজন উম্মাত। কোন নাবীর সঙ্গে পাঁচজন আবার কোন নাবী একা একা যাচ্ছেন। নজর করলাম হঠাৎ দেখি অনেক বড় একটি দল। আমি বললামঃ হে জিবরীল! ওরা কি আমার উম্মাত? তিনি বললেনঃ না। তবে আপনি ঊধর্বলোকে নজর করুন! আমি নজর করলাম, হঠাৎ দেখি অনেক বড় একটি দল। ওরা আপনার উম্মাত। আর তাদের সামনে রয়েছে সত্তর হাজার লোক তাদের কোন হিসাব হবে না হবে না তাদের কোন আযাব।

আমি বললাম, তা কেন? তিনি বললেনঃ তারা কোন দাগ লাগাত না, ঝাড়ফুঁকের শরণাপন্ন হত না এবং কুযাত্রা মানত না। আর তারা কেবল তাদের প্রভূর ওপরই ভরসা করত। তখন উক্কাশা ইবনু মিহসান নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিকে উঠে দাঁড়িয়ে বললেনঃ আপনি আমার জন্য দোয়া করুন আল্লাহ তা’আলা যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আল্লাহ! তুমি একে তাদের অন্তর্ভুক্ত কর। এরপর আরেক ব্যাক্তি উঠে দাঁড়িয়ে বলল, আমার জন্য দোয়া করুন আল্লাহ যেন আমাকে তাঁদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উক্কাশাতো দোয়ার ব্যাপারে তোমার চেয়ে অগ্রগামী হয়ে গিয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬০৯৯ | 6099 | ٦۰۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬০৯৯। মু’আয ইবনু আসা’দ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আমার উম্মাত থেকে কিছু লোক দল বেঁধে বেহেশতে প্রবেশ করবে। আর তারা হবে সত্তর হাজার। তাদের চেহারাগুলো পূর্ণিমার চাঁদের আলোর ন্যায় উজ্জল থাকবে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ এতদ শ্রবণে উক্কাশা ইবনু মিহসান আসাদী তাঁর গায়ে চাদর উঠাতে উঠাতে দাঁড়ালেন, এবং বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার জন্য দোয়া করুন, আল্লাহ তা’আলা যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করলেনঃ হে আল্লাহ! আপনি একে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। এরপর আনসার সম্প্রদায়ের এক লোক দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর নিকট দোয়া করুন, তিনি যেন আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উক্কাশা তো উক্ত দোয়ার ব্যাপারে তোমার চেয়ে অগ্রগামী হয়ে গিয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০০ | 6100 | ٦۱۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬১০০। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মত থেকে সত্তর হাজার লোক অথবা সাত লক্ষ লোক একে অপরের হাত ধরে জান্নাতে প্রবেশ করবে। বর্ননাকারী (আবূ হাযিম) এর এ দু’সংখ্যার মাঝে সন্দেহ রয়েছে। তাদের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সকলেই জান্নাতে প্রবেশ করবে আর তাদের চেহারাগুলো পূর্নিমার চাঁদের আলোর ন্যায় উজ্জ্বল থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০১ | 6101 | ٦۱۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬১০১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জান্নাতীগণ জান্নাতে প্রবেশ করবে আর জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশ করবে। অতঃপর তাদের মাঝে একজন ঘোষণাকারী এই মর্মে ঘোষণা দেবে যে, হে জাহান্নামের অধিবাসীরা! (এখানে) কোন মৃত্যু নেই। হে জান্নাতের অধিবাসীরা! (এখানে) কোন মৃত্যু নেই। এ হচ্ছে চিরন্তন জীবন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০২ | 6102 | ٦۱۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৩১. সত্তর হাজার লোকের বিনা হিসাবে জান্নাত প্রবেশ করবে
৬১০২। আবূল ইয়ামন (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন জান্নাতবাসীগণকে বলা হবে, এ হচ্ছে চিরন্তন জীবন (এখানে) কোন মৃত্যু নেই। জাহান্নামের অধিবাসীদেরকে বলা হবে, হে জাহান্নামীরা! এ হচ্ছে চিরন্তন জীবন (এখানে) কোন মৃত্যু নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৩ | 6103 | ٦۱۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৩। উসমান ইবনু হায়সাম (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি জান্নাতে উঁকি দিয়ে দেখলাম যে, তার অধিকাংশ অধিবাসীই দরিদ্র আবার জাহান্নামে উঁকি দিতে দেখতে পেলাম এর অধিকাংশ অধিবাসীই নারী।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৪ | 6104 | ٦۱۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আনি জান্নাতের দরজায় দাঁড়ালাম, (এরপর দেখতে পেলাম যে) তথায় যারা প্রবেশ করেছে তারা অধিকাংশই নিঃস্ব। আর ধনাট্য ব্যাক্তিরা আবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। আর জাহান্নামে নিয়ে যাওয়ার হুকুম দেওয়া হয়েছে। এরপর আমি জাহান্নামের দরজায় গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন (দেখতে পেলাম যে) এখানে প্রবেশ কারীদের অধিকাংশই হচ্ছে নারী।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৫ | 6105 | ٦۱۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৫। মু’আয ইবনু আসাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন জান্নাতীগণ জান্নাতে আর জাহান্নামীগণ জাহান্নামে চলে যাবে, তখন মূত্যৃকে উপস্থিত করা হবে, এমন কি জান্নাত ও জাহান্নামের মধ্যবর্তী স্থানে রাখা হবে। এরপর তাকে যবেহ করে দেয়া হবে এবং একজন ঘোষণাকারী এই মর্মে ঘোযণা দিবে যে, হে জান্নাতীগণ! (এখন আর) কোন মৃত্যু নেই। হে জাহান্নামীগণ! (এখন আর কোন) মৃত্যু নেই। তখন জান্নাতীগণের আনন্দ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। আর জাহান্নামীদের বিষণ্ণতাও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৬ | 6106 | ٦۱۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৬। মুআয ইবনু আসাদ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা জান্নাতীগণকে সম্বোধন করে বলবেন, হে জান্নাতীগণ! তারা জবাবে বলবে, হে আমাদের প্রভূ! হাযির, আমরা আপনার সমীপে হাযির। এরপর আল্লাহ তাআলা বলবেন, তোমরা কি সন্তুষ্ট হয়েছ? তারা বলবে, আপনি আমাদেরকে এমন বস্তু দান করেছেন যা আপনার মাখলুকাতের ভিতর থেকে কাউকেই দান করেন নি। অতএব আমরা কেন সন্তুষ্ট হব না! তখন তিনি বলবেন, আমি এর চাইতেও উত্তম কিছু তোমাদেরকে দান করব। তারা বলবে, প্রভু হে! এর চাইতেও উত্তম সে কোন বস্তু? আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ তোমাদের ওপর আমি আমার সন্তুষ্টি অবধারিত করব। এরপর আমি আর কখনও তোমাদের ওপর অসন্তুষ্ট হব না।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৭ | 6107 | ٦۱۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৭। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বদরের যুদ্ধের দিন হারিসা (রাঃ) শহীদ হলেন। আর তখন তিনি অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছিলেন। তাঁর মা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার সাথে হারিসার স্থান সম্পর্কে আপনি তো অবশ্যই জানেন। সে যদি জান্নাতী হয়; আমি ধৈর্য ধারণ করব এবং সাওয়াব মনে করব। আর যদি অন্য কিছু হয় তাহলে আপনি দেখতে পাবেন আমি কি করি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার জন্য আফসোস! অথবা তুমি কি বেওকুফ হয়ে গেলে! জান্নাত কি একটা না কি? জান্নাত তো অনেক। আর সে হারিসা তো রয়েছে জান্নাতূল ফিরদাউসের মাঝে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৮ | 6108 | ٦۱۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৮। মু’আয ইবনু আসা’দ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কাফিরের দু’কাঁধের মধ্যবর্তী স্থানের দূরত্ব একজন দ্রুতগামী অশ্বারোহীর তিন দিনের ভ্রমণের সমান হবে।

ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) সুত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ জান্নাতের মাঝে এমন একটি বৃক্ষ হবে যার ছায়ার মাঝে একজন আরোহী একশ-বছর পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবে, তবুও বৃক্ষের ছায়াকে অতিক্রম করতে পারবে না।

রাবী আবূ হাযিম বলেনঃ আমি এই হাদীসটি নু’মান ইবনু আবূ আইয়্যাশ (রহঃ) এর সমীপে পেশ করলাম। তখন তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) আমার কাছে এই মর্মে হাদীস বর্ননা করেন যে তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয়ই জান্নাতের মাঝে এমন একটি বৃক্ষ হবে যার ছায়ায় উৎকৃষ্ট, উৎফূল্ল ও দ্রুতগামী অশ্বের একজন আরোহী একশ’ বছর পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবে। তবুও তার ছায়া অতিক্রম করতে পারবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬১০৯ | 6109 | ٦۱۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১০৯। কুতায়বা (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আমার উম্মাত থেকে সত্তর হাজার অথবা সাত লক্ষ লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে। রাবী আবূ হাযিম জানেন না যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত দু’টি সংখ্যার মাঝে কোনটি বলেছেনঃ (তিনি এই মর্মে আরও বলেন যে) তারা একে অপরের হাত দৃঢ়ভাবে ধারন করে জান্নাতে প্রবেশ করবে। প্রথম ব্যাক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যতক্ষন না সর্বশেষ ব্যাক্তি প্রবেশ করবে। তাদের চেহারাগুলো হবে পূর্নিমার রাতের চাঁদের মতো উজ্জ্বল।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১০ | 6110 | ٦۱۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১০। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … সাহল (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জান্নাতীরা জান্নাতের মাঝে তাদের কামরাসমূহ দেখতে পাবে, যেমন আকাশের মাঝে তোমরা তারকাসমূহ দেখতে পাও। (সনদান্তর্ভুক্ত) রাবী আবদুল আযীয বলেনঃ আমার পিতা বলেছেন যে, আমি এই হাদীসটি নুমান ইবনু আবূ আইয়্যাশকে বলেছি। অতঃপর তিনি বলেছেন, আমি এই মর্মে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, অবশ্যই আবূ সাঈদকে এ হাদীস বর্ণনা করতে আমি শুনেছি। এবং এতে তিনি এটুকু অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন। যেরূপ অস্তমান তারকাকে আকাশের পুর্ব ও পশ্চিম প্রান্তে তোমরা দেখে থাক।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১১ | 6111 | ٦۱۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কিয়ামতের দিন সবচেয়ে কম আযাব প্রাপ্ত লোককে আল্লাহ তা’আলা বলবেন, দূনিয়ার মাঝে যত কিছু আছে তার তূল্য কোন সম্পদ যদি (আজ) তোমার কাছে থাকত, তাহলে কি তুমি তার বিনিময়ে নিজকে (আযাব থেকে) মুক্ত করতে? সে বলবে, হ্যাঁ। এরপর আল্লাহ তা’আলা বলবেন, আমি তোমার থেকে এর চেয়েও সহজতর বস্তুর প্রত্যাশা করেছিলাম, যখন তুমি আদমের পৃষ্টদেশে বর্তমান ছিলে। আর তা হচ্ছে এই যে, তুমি আমার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না। এরপর তুমি তা অস্বীকার করলে আর আমার সাথে অংশী স্থাপন করলে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১২ | 6112 | ٦۱۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১২। আবূ নুমান (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ শাফাআতের মাধ্যমে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। যেমন তারা সা’আরীর। (রাবী জাবির বলেন) আমি বললাম সা’আরীর কি? তিনি বললেনঃ সা’আরীর মানে যাগাবীস (শৃগালের বাচ্চাসমুহ) বের হওয়ার সময় তাদের মুখ থাকবে ভাঙ্গা (দাঁত পড়া)। (সনদান্তর্ভুক্ত রাবী হাম্মাদ বলেন) আমি আবূ মুহাম্মাদ আমর ইবনু দীনারকে জিজ্ঞাসা করি যে, আপনি কি জাবির ইবনু আবদুল্লাহকে বর্ণনা করতে শুনেছেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ শাফাআতের দ্বারা জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৩ | 6113 | ٦۱۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৩। হুদবা ইবনু খালিদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আযাবে চর্ম বিবর্ণ হয়ে যাওয়ার পর একদল লোককে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে এবং তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে। তখন জান্নাতীগণ তাদেরকে জাহান্নামী বলে আখ্যায়িত করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৪ | 6114 | ٦۱۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ খূদরী (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাতীগণ যখন জান্নাতে আর জাহান্নামীরা জাহান্নামে প্রবেশ করবে তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, যার অন্তকরণে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান রয়েছে তাকে বের কর কয়লার মত হয়ে তারা জাহান্নাম থেকে ফিরে আসবে। এরপর নহরে হায়াত (সজীবনী প্রস্রবণ) এর মাঝে তাদেরকে অবগাহিত করা হবে এতে তারা এমন সজীব হয়ে উঠবে যেমন নদী তীরে জমাট আবর্জনায় সজীব উদ্ভিদ গজিয়ে উঠে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বললেনঃ তোমরা কি দেখ নাই বীজকাটা উদ্ভিদ কি সুন্দর হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে?

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৫ | 6115 | ٦۱۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৫। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … নুমান ইবনু বাশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন ঐ ব্যাক্তির সবচে হালকা আযাব হবে, যার দু’পায়ের তালুতে রাখা হবে প্রজ্জলিত অঙ্গার, তাতে তার মগয উৎলাতে থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৬ | 6116 | ٦۱۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৬। আবদুল্লাহ ইবনু রাজা (রহঃ) … নুমান ইবনু বাশার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন ঐ ব্যাক্তির সবচেয়ে হালকা আযাব হবে, যার দু’পায়ের তলায় রাখা হবে দু’টি প্রজ্বলিত অঙ্গার। এতে তার মগয টগবগ করতে থাকবে। যেমন ডেক বা কলসী উথলায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৭ | 6117 | ٦۱۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৭। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদা) জাহান্নামের আলোচনা করলেন। এরপর তিনি তার মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং এর থেকে পানাহ চাইলেন। পুনঃ তিনি জাহান্নামের আলোচনা করে মুখ ফিরিয়ে নিলেন ও এর থেকে পানাহ চাইলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ তোমরা জাহান্নামের অগ্নি থেকে নিজকে রক্ষা কর এক টুকরা খেজুরের বিনিময়ে হলেও। আর যে তাও পারবে না সে যেন ভাল কথার বিনিময়ে হলেও আত্নরক্ষা করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৮ | 6118 | ٦۱۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৮। ইবরাহীম ইবনু হামযা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন; যখন তাঁর কাছে তার চাচা আবূ তালিব সমন্ধে আলোচলা হচ্ছিল। তখন তিনি বললেনঃ সম্ভবত কিয়ামতের দিন আমার শাফাআত তাকে উপকার প্রদান করবে। আর তখন তাকে জাহান্নামের অগ্নিতে যা টাখনু পর্যন্ত পৌছে রাখা হবে যাতে তার মগজ মূল।

হাদিস নম্বরঃ ৬১১৯ | 6119 | ٦۱۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১১৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা সমস্ত মানুষকে একত্রিত করবেন। তখন তারা বলবে, আমাদের জন্য আমাদের রবের কাছে যদি কেউ শাফাআত করত, যা এ স্থান থেকে আমাদের উদ্ধার করত। তখন তারা সকলেই আদম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে এসে বলবে, আপনি ঐ ব্যাক্তি যাকে আল্লাহ তাআলা স্বহস্তে সৃষ্টি করেছেন। আপনার মাঝে নিজে থেকে রুহ ফুকে দিয়েছেন এবং ফেরেশতাদের হুকুম করেছেন; তারা আপনাকে সিজদা করেছে। অতঃপর আপনি আমাদের জন্য আমাদের প্রভুর কাছে শাফাআত করুন। তখন তিনি বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই এবং স্বীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করবেন। এরপর বলবেন, তোমরা নূহ (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও যাকে আল্লাহ প্রথম রাসুল হিসাবে প্রেরণ করেছেন।

তখন তারা তাঁর কাছে আসবে। তিনিও স্বীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করে বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই। তোমরা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও, যাকে আল্লাহ তা’আলা খলীলরূপে গ্রহগ করেছেন। অতঃপর তারা তার কাছে আসবে। তিনিও স্বীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করে বলবেনঃ আমি তোমাদের এ কাজের উপযোগী নই। তোমরা মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও, যার সঙ্গে আল্লাহ তা’আলা কথা বলেছেন। তখন তারা তার কাছে আসবে। তিনিও বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই। এবং স্বীয় অপরাধের কথা উল্লেখ করবেন। তিনি বলবেনঃ তোমরা ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে যাও।

তারা তার কাছে আসবে। তখন তিনিও বলবেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ কাজের উপযোগী নই। তোমরা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে চলে যাও। তার পূর্বাপর সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। তখন তারা সকলেই আমার কাছে আসবে। তখন আমি আমার রবের কাছে অনুমতি চাইব। যখনই আমি আল্লাহ তা’আলাকে দেখতে পাব তখন সিজদায় পড়ে যাব। আল্লাহ ত’আলার যতক্ষন ইচ্ছা আমাকে এ অবস্থায় রাখবেন। এরপর আমাকে বলা হবে, তোমার মাথা উঠাও। সাওয়াল কর, তোমাকে দেওয়া হবে। বল; তোমার কথা শ্রবণ করা হচ্ছে। শাফাআত কর; তোমার শাফাআত কবুল করা হবে।

তখন আমি মাথা উত্তোলন করব এবং আল্লাহ তা’আলা আমাকে যে প্রশংসার বাণী শিক্ষা দিয়েছেন তার মাধ্যমে তাঁর প্রশংসা করব। এরপর আমি সুপারিশ করব, তখন আমার জন্য সীমা নির্ধারন করে দেয়া হবে। অতঃপর আমি তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে বেহেশতে প্রবেশ করিয়ে দেব। এরপর আমি পুর্বের ন্যায় পুনঃ তৃতীয়বার অথবা চতুর্থবার সিজদায় পড়ে যাব। অবশেষে কুরআনের বাণী মুতাবিক যারা অবধারিত জাহান্নামী তাদের ব্যতীত আর কেউই জাহান্নামে অবশ্যই থাকবে না। কাতাদা উক্ত আঘাতের ব্যাখ্যায় তখন বলেছিলেন, চিরস্থায়ী জাহান্নাম যাদের জন্য অবধারিত হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২০ | 6120 | ٦۱۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদল লোককে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর শাফাআতে জাহান্নাম থেকে বের করা হবে এবং জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদেরকে জাহান্নামী বলে আখ্যায়িত করা হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২১ | 6121 | ٦۱۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২১। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, বদরের যূদ্ধে হারিসা (রাঃ) আদৃশ্য তীরের আঘাতে শাহাদাতবরণ করলে তার মাতা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আগমন করে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার অন্তরে হারিসার স্নেহ-মমতা যে কত গভীর তা তো আপনি জানেন। অতএব সে যদি জান্নাত লাভ করে তরে আমি তার জন্য কান্নাকাটি করব না। আর যদি ব্যতিক্রম হয় তবে আপনি অচিরেই দেখতে পাবেন আমি কি করি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি তো নির্বোধ। জান্নাত কি একটি, না কি অনেক? আর সে তো সবচেয়ে উন্নতমানের জান্নাত ফিরদাউসে রয়েছে। তিনি আরও বললেনঃ এক সকাল বা এক বিকাল আল্লাহর রাস্তায় চলা দুনিয়া ও তার মধ্যবর্তী সবকিছুর চাইতে উত্তম। তীরের দু’প্রান্তের দূরত্বের সমান বা কদম পরিমাণ জান্নাতের জায়গা দুনিয়া ও তৎ মধ্যবর্তী সবকিছুর চাইতে উত্তম। জান্নাতের কোন নারী যদি দুনিয়ার প্রতি দৃষ্টিপাত করে তবে সমস্ত দুনিয়া আলোকিত ও খুশবুতে মোহিত হয়ে যাবে। জান্নাতি নারীর নাসীফ (ওড়না) দুনিয়ার সব কিছুর চেয়ে উত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২২ | 6122 | ٦۱۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২২। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন লোকই জান্নাতে প্রবেশ করবে, স্বীয় জাহান্নামের ঠিকানাটা তাকে দেখানো হবে। যদি সে নেক কাজ করত (তবে তাকে ঐ ঠিকানা দেওয়া হত তা দেখানো হবে এ জন্য) যেন সে বেশি বেশি শোকর আদায় করে। আর যে কোন লোকই জাহান্নামে প্রবেশ করবে তাকে তার জান্নাতের ঠিকানাটা দেখানো হবে। যদি সে নেক কাজ করত। (তবে তাকে ঐ ঠিকানা দেওয়া হত তা দেখানো হবে এজন্য) যেন এতে তার আফসোস হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৩ | 6123 | ٦۱۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২৩। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আরয করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামতের দিন সমস্ত মানুষ থেকে বেশি সৌভাগ্যশালী হবে আপনার শাফাআত দ্বারা কোন লোকটি? তখন তিনি বললেনঃ হে আবূ হুরায়রা! আমি ধারণা করেছিলাম যে তোমার আগে কেউ এ সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞাসা করবে না। কারণ হাদীসের ব্যাপারে তোমার চেয়ে অধিক আগ্রহী আর কাউকে আমি দেখিনি। কিয়ামতের দিন আমার শাফাআত দ্বারা সর্বাধিক সৌভাগ্যশালী ঐ ব্যাক্তি হবে যে খালেস অন্তর থেকে বলে لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৪ | 6124 | ٦۱۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২৪। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সর্বশেষ যে ব্যাক্তি জাহান্নাম থেকে বের হবে এবং সর্বশেষ যে ব্যাক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে তার সম্পর্কে আমি জানি। এক ব্যাক্তি অধোবদন অবস্থায় জাহান্নাম থেকে বের হবে। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। তখন সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছে এবং সে ফিরে আসবে ও বলবে, হে প্রভূ! জান্নাত তো পরিপূর্ন দেখতে পেলাম। পুনরায় আল্লাহ তাআলা বলবেন, যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। তখন সে জান্নাতের কাছে এলে তার ধারণা হবে যে, জান্নাত পরিপূর্ন হয়ে গিয়েছে। তাই সে ফিরে এসে বলবে, হে প্রভু! জান্নাত তো ভরপুর দেখতে পেলাম। তখন আল্লাহ তা’আলা বলবেন, যাও জান্নাতে প্রবেশ কর। কেননা জান্নাত তোমার জন্য সমতুল্য এবং তার দশ গুন। অথবা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দশ গুন। তখন লোকটি বলবে, প্রভু! তুমি কি আমার সাথে বিদ্রূপ বা হাসি-ঠাট্টা করছ? (রাবী বলেন) আমি তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এভাবে হাসতে দেখলাম যে তার দন্তরাজি প্রকাশিত হয়ে গিয়েছিল এবং বলা হচ্ছিল এটা জান্নাতীদের নিম্নতম মর্যাদা।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৫ | 6125 | ٦۱۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩২. জান্নাত ও জাহান্নাম এর বর্ণনা। আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ জান্নাতবাসীরা সর্বপ্রথম যে খাবার খাবে তা হল মাছের কলিজা সংলগ্ন অতিরিক্ত অংশ গুর্দা। عَدْنٌ অর্থ সর্বদা থাকা, عَدَنْتُ بِأَرْضٍ অর্থ আমি অবস্থান করছি। এরই থেকে مَعْدِن এসেছে। فِي مَعْدِنِ صِدْقٍ যেখান থেকে সততা বের হয়।
৬১২৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি আবূ তালিবকে কিছু উপকার করতে পেরেছেন?

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৬ | 6126 | ٦۱۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৩. সিরাত হল জাহান্নামের পুল
৬১২৬। আবূল ইয়ামান ও মাহমূদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা কতিপয় লোক বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামতের দিন আমরা কি আমাদের প্রভুকে দেখতে পাব? উত্তরে তিনি বললেনঃ সূর্যের নিচে যখন কোন মেঘ না থাকে তখন তা দেখতে কি তোমাদের কোন অসুবিধা হয়? তারা বলল, না, ইয়া রাসুলাল্লাহ। তিনি বললেনঃ পূর্নিমার চাঁদ যদি মেঘের অন্তরালে না থাকে তবে তা দেখতে কি তোমাদের কোন অসুবিধা হয়? তারা বলল, না ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ তোমরা নিশ্চয়ই কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলাকে ঐরুপ দেখতে পাবে।

আল্লাহ তাআলা সকল মানুষকে একত্রিত করে বলবেন, (দুনিয়াতে) তোমরা যে যে জিনিসের ইবাদত করেছিলে সে তার সাথে চলে যাও। অতএব সূর্যের ইবাদতকারী সুর্যের সাথে, চন্দ্রের ইবাদতকারী চন্দ্রের সাথে এবং মূর্তিপূজারী মূর্তির সাথে চলে যাবে। অবশিষ্ট থাকবে এ উম্মাতের লোকেরা, যাদের মাঝে মুনাফিক সম্প্রদাযের লোকও থাকবে। তারা আল্লাহ তাআলাকে যে আকৃতিতে জানত, তার ব্যতিক্রম আকৃতিতে আল্লাহ তা’আলা তাদের কাছে হাযির হবেন এবং বলবেন, আমি তোমাদের প্রভু। তখন তারা বলবে, আমরা তোমার থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাই। আমাদের প্রভু না আসা পর্যন্ত আমরা এ স্থানেই থেকে যাব। আমাদের প্রভু যখন আমাদের কাছে আসবেন, আমরা তাকে চিনে নেব। এরপর যে আকৃতিতে তারা আল্লাহ তা’আলাকে জানত সে আকৃতিতে তিনি তাদের কাছে হাযির হবেন এবং বলবেন, আমি তোমাদের প্রভু।

তখন তারা বলবে হ্যাঁ, আপনি আমাদের প্রভু। তখন তারা আল্লাহ তা’আলার অনুসরণ করবে। এরপর জাহান্নামের পুল স্থাপন করা হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যে, সর্ব প্রথম আমি সেই পুল অতিক্রম করব। আর সেই দিন সমস্ত রাসুলের দু’আ হবে اللَّهُمَّ سَلِّمْ سَلِّمْ অর্থাৎ হে আল্লাহ! রক্ষা কর, রক্ষা কর। সেই পুলের মাঝে সাদান নামক (এক প্রকার তিক্ত কাটাদার গাছ) গাছের কাটার ন্যায় কাটা থাকবে। তোমরা কি সাদানের কাঁটা দেখেছ। তারা বলল, হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ।

তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ কাঁটাগুলি সা’দানে কাঁটার মতই হবে, তবে তা যে কত বড় হবে সে সম্পর্কে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। সে কাটাগুলি মানুষকে তাদের আমল অনুসারে ছিনিয়ে নেবে। তাদের মাঝে কতিপয় লোক এমন হবে যে তারা তাদের আমলের কারণে ধ্বংস হয়ে যাবে। আর কতিপয় লোক এমন হবে যে তাদের আমল হবে সরিষা তুল্য নগণ্য। তবুও তারা নাজাত পাবে। এমন কি আল্লাহ তা’আলা বান্দাদের বিচার কার্য সম্পাদন করবেন এবং ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর সাক্ষ্যদাতাদের থেকে যাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করার ইচ্ছা করবেন আল্লাহ তাদেরকে বের করার জন্য ফেরেশতাদেরকে আদেশ করবেন। সিজদার চিহ্ন থেকে ফেরেশতারা তাদেরকে চিনতে পারবে।

আর আল্লাহ তায়ালা বনী আদমের ঐ সিজদার স্থানগুলিকে জাহান্নামের জন্য হারাম কলে দিয়েছেন। সুতরাং ফেরেশতারা তাদেরকে এমতাবস্হায় বের করবে যে, তখন তাদের দেহ থাকবে কয়লার মত। তারপর তাদের দেহে পানি ঢেলে দেয়া হবে। যাকে বলা হয় -মাউল হায়াত- সঞ্জীবনী পানি। সাগরের ঢেউয়ে ভেসে আসা আবর্জনায় যেরুপ উদ্ভিদ জন্মায়- পরে এগুলো যেরুপ সজীব হয় তারাও সেরুপ সজীব হয়ে যাবে। এ সময় জাহান্নামের দিকে মুখ করে এক ব্যাক্তি দাড়িয়ে থাকবে আর বলবে, হে প্রভু! জাহান্নামের হাওয়া আমাকে ঝলসে দিয়েছে, এর জ্বলন্ত অঙ্গার আমাকে জ্বালিয়ে দিয়েছে সূতরাং তুমি আমার চেহারাটা জাহান্নামের দিক থেকে ঘুরিয়ে দাও। এভাবে সে আল্লাহকে ডাকতে থাকবে।

তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ আমি যদি তোমাকে এটা দিয়ে দেই তবে আর তুমি অন্যটির প্রার্থনা করবে? লোকটি বলবে, না। আল্লাহ, তোমার ইজ্জতের কসম! আর অন্যটি চাইব না। সুতরাং তার চেহারাটা জাহান্নামের দিক থেকে ফিরিয়ে দেয়া হবে। এরপর সে বলবে, হে প্রভূ! তুমি আমাকে জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করে দাও। আল্লাহ তা’আলা বলবেন, তুমি কি বলনি যে, তুমি আমার কাছে আর অন্য কিছু চাইবে না? আফসোস তোমার জন্য আদম সন্তান! তুমি কতই না গাদ্দার? সে এরূপই প্রার্থনা করতে থাকবে। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ সম্ভবত আমি যদি তোমাকে এটা দিয়ে দেই তবে তুমি অন্য আরেকটি আমার কাছে প্রার্থনা করবে।

লোকটি বলবে, না, তোমার ইজ্জতের কসম! অন্যটি আর চাইব না। তখন সে আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে এই মর্মে ওয়াদা করবে যে, সে আর কিছুই চাইবে না। তখন আল্লাহ তাআলা তাকে জান্নাতের দরজার নিকটবর্তী করবেন। সে যখন জান্নাতের মধ্যস্থিত নিয়ামতগুলি দেখতে পাবে, তখন আল্লাহ যতক্ষন চাইবেন ততক্ষন সে চুপ থাকবে। এরূপই সে বলতে থাকবে, হে প্রভু! তুমি আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, তুমি কি বল নাই যে তুমি আর কিছু চাইবে না? আফসোস তোমার জন্য হে আদম সন্তান! তুমি কতইনা গাদ্দার।

লোকটি বলবে, হে প্রভু! তুমি আমাকে তোমার সৃষ্ট জীবের মাঝে সবচে হতভাগ্য কর না। এভাবে সে প্রার্থনা করতে থাকবে। পরিশেষে আল্লাহ তাআলা হেসে ফেলবেন। আর আল্লাহ তাআলা যখন হেসে ফেলবেন, তখন তাকে জান্নাতে প্রবেশের অনুমতি দিয়ে দিবেন। এরপর সে যখন জান্নাতে প্রবেশ করবে, তখন তাকে বলা হবে, তোমার যা ইচ্ছে হয় আমার কাছে চাও। সে (বিভিন্ন) আরয করবে, এমনকি তার আকাঙ্ক্ষা নিঃশেষ হয়ে যাবে। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেনঃ এগুলি তোমার এবং এর সমপরিমানও তোমার।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ ঐ লোকটি হচ্ছে সর্বশেষে জান্নাতে প্রবেশকারী। রাবী বলেন যে, এ সময় আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সঙ্গে বসা ছিলেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর বর্ণনার মাঝে আবূ সাঈদ খুদরীর নিকট কোনরূপ পরিবর্তন ধরা পড়েনি। এমন কি তিনি যখন هَذَا لَكَ وَمِثْلُهُ مَعَهُ পর্যন্ত বর্ণনা করলেন, তখন আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, তিনি هَذَا لَكَ وَعَشَرَةُ أَمْثَالِهِ এটি তোমার এবং দশ গুন বলেছেন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ আমি مِثْلُهُ مَعَهُ স্মরণ রেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৭ | 6127 | ٦۱۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১২৭। ইয়াহইয়া ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি তোমাদের আগে হাউয এর কাছে পৌছব।

অন্য সনদে আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি তোমাদের আগে হাউয এর কাছে গিয়ে পৌছব। আর (ঐ সময়) তোমাদের কতিপয় লোককে নিঃসন্দেহে আমার সামনে উঠানো হবে। আবার আমার সামনে থেকে তাদেরকে পৃথক করে নেয়া হবে। তখন আমি আরয করব, প্রভু হে! এরা তো আমার উম্মাত। তখন বলা হবে, তোমার পরে এরা কি কীর্তি করেছে তাতো তুমি জানো না। আসিম আবূ ওয়াঈল থেকে তার অনুসরণ করেছে। এবং হুসায়ন হুযায়ফা সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৮ | 6128 | ٦۱۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১২৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তোমাদের সামনে আমার হাউয এর দূরত্ব হবে এতটুকু যতটুকু দূরত্ব জারবা ও আযরুহ নামক স্থানদ্বয়ের মাঝে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১২৯ | 6129 | ٦۱۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১২৯। আমর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল কাওসার হচ্ছে- আল খায়রুল কাসীর বা অধিক কল্যাণ, যা আল্লাহ তা’আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দান করেছেন। রাবী আবূ বিশর বলেনঃ আমি সাঈদকে বললাম যে, লোকেরা তো মনে করে সেটি জান্নাতের একটা ঝর্না। তখন সাঈদ বললেনঃ এটা ঐ ঝর্ণা যা জান্নাতের মাঝে রয়েছে। তাতে আছে এমন কল্যাণ যা আল্লাহ তা’আলা তাঁকে প্রদান করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩০ | 6130 | ٦۱۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩০। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার হাউয (হাউযে কাওসার) এক মাসের দূরত্বের সমান (বড়) হবে। তার পানি দুধের চেয়ে শুভ্র, তার ঘ্রাণ মিশক এর চেয়ে সুগন্ধযুক্ত এবং তার পানপাত্রগুলি হবে আকাশের তারকার মত অধিক। যে ব্যাক্তি তা থেকে পান করবে সে আর কখনও পিপাসার্ত হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩১ | 6131 | ٦۱۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩১। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার হাউযের পরিমাণ হল ইয়ামানের আয়লা ও সান’আ নামক স্থানদ্বয়ের দূরত্বের সমান আর তার পানপাত্র সমূহ আকাশের তারকারাজির সংখ্যাতুল্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩২ | 6132 | ٦۱۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩২। আবূল ওয়ালীদ ও হুদবা ইবনু খালিদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আমি জান্নাতে ভ্রমণ করছিলাম, এমন সময় এক ঝর্নার কাছে এলে দেখি যে তার দুটি ধারে ফাপা মুক্তার গম্বুজ রয়েছে। আমি বললাম, হে জিবরীল! এটা কি? তিনি বললেনঃ এটা ঐ কাওসার যা আপনার প্রভূ আপনাকে প্রদান করেছেন। তার মাটিতে অথবা ঘ্রাণে ছিল উৎকৃষ্ট মানের মিশক এর সুগন্ধি। হুদবা (রহঃ) সন্দেহ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৩ | 6133 | ٦۱۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৩। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আমার সামনে আমার উম্মতের কতিপয় লোক হাউযের কাছে আসবে। তাদেরকে আমি চিনে নিব। আমার সামনে থেকে তাদেরকে টেনে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন আমি বলব, এরা আমার উম্মত। তখন আল্লাহ বলবেন, তুমি জানো না তোমার পরে এরা কি সব নতুন নতুন কীর্তি করেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৪ | 6134 | ٦۱۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৪। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তোমাদের আগে হাউযের ধারে পৌছব। যে আমার নিকট দিয়ে অতিক্রম করবে সে হাউযের পানি পান করবো। আর যে পান করবে সে আর কখনও পিপাসার্ত হবে না। নিঃসন্দেহে কিছু সম্প্রদায় আমার সামনে (হাউযে) উপস্থিত হবে। আমি তাদেরকে চিনতে পারব আর তারাও আমাকে চিনতে পারবে। এরপর আমার এবং তাদের মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে দেওয়া হবে।

বারী আবূ হাযিম বলেনঃ নুমান ইবনু আবূ আইয়্যাশ আমার কাছ থেকে হাদীস শ্রবণ করার পর বললেনঃ তুমিও কি সাহল থেকে এরূপ শুনেছ? তখন আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ আমি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি তার কাছ থেকে এতটুকু অধিক শুনেছি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তখন বলব যে এরা তো আমারই উম্মত। তখন বলা হবে, তুমি তো জানো না তোমার পরে এরা কি সব নতুন নতুন কীর্তি করেছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন তখন আমি বলব, আমার পরে যারা দ্বীনের মাঝে পরিবর্তন এনেছে তারা আল্লাহর রহমত থেকে দুরে থাকুক। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, سُحْقًا অর্থ দুরুত্ব, سَحِيقٌ অর্থ দূর, سحقة واسحقة তাকে বের করে দিয়েছে।

আহমাদ ইবনু শাবীব ইবনু সাঈদ হাবাতী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মাত থেকে একদল লোক কিয়ামতের দিন আমার সামনে (হাউযে কাওসারে) উপস্থিত হবে। এরপর তাদেরকে হাউয থেকে পৃথক করে দেওয়া হবে। তখন আমি বলব, হে প্রভু! এরা আমার উম্মাত। তখন আল্লাহ তাআলা বলবেন, তোমার পরে এরা ধর্মে নতুন সংযোজনের মাধ্যমে কি সব কীর্তি করেছে এ ব্যাপারে নিশ্চয়ই তোমার জানা নেই। নিশ্চয়ই এরা দ্বীন থেকে পিছনের দিকে ফিরে গিয়েছিল। শুআইব (রহঃ) যুহরী সুত্রে বর্ণনা করেছেন যে আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে فيحلون বর্ণিত। উকায়ল (রহঃ) فيحاون বলেছেনঃ যুবায়দী আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৫ | 6135 | ٦۱۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৫। আহমদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … সাঈদ ইবনুল মূসাইয়্যাব (রহঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের থেকে বর্ননা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার উম্মাতের থেকে কতিপয় লোক আমার সামনে হাউযে কাওসারে উপস্থিত হবে। তারপর তাদেরকে সেখান থেকে পৃথক করে নেয়া হবে। তখন আমি বলব, হে রব! এরা আমার উম্মাত। তিনি বলবেন, তোমার পরে এরা (ধর্মে নতুন সংযোজনের মাধ্যমে) কি কীর্তিকলাপ করেছে সে সম্পর্কে নিশ্চয়ই তোমার জানা নেই। নিঃসন্দেহে এরা দ্বীন থেকে পিছনের দিকে ফিরে গিয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৬ | 6136 | ٦۱۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৬। ইবরাহীম ইবনুল মুনযির (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক সময় আমি (হাশরের ময়দানে) দাঁড়িয়ে থাকব। হঠাৎ দেখতে পাব একটি দল এবং আমি যখন তাদেরকে চিনে ফেলব, একটি লোক বেরিয়ে আসবে। তখন আমার ও তাদের মাঝ থেকে এবং সে বলবে, আপনি আসুন। আমি বলব, কোথায়? সে বলবে, আল্লাহর কসম জাহান্নামের দিকে। আমি বলব, তাদের অবস্থা কি? সে বলবে নিশ্চয় এরা আপনার ইন্তেকালের পর দ্বীন থেকে পশ্চাদ দিকে সরে গিয়েছিল। এরপর হঠাৎ আরেকটি দল দেখতে পাব। আমি তাদেরকে চিনে ফেলব। তখন আমার ও তাদের মাঝ থেকে একটি লোক বেরিয়ে আসবে। সে বলবে, আসুন! আমি বলবঃ কোথায়? সে বলবে আল্লাহর কসম, জাহান্নামের দিকে। আমি বলব, তাদের অবস্থা কি? সে বলবে, নিশ্চয়ই এরা আপনার ইন্তেকালের পর দ্বীন থেকে পশ্চাদপানে ফিরে গিয়েছিল। আমি মনে করি এরা রাখাল ছাড়া উটের মতো কম পরিমাণে নাজাত পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৭ | 6137 | ٦۱۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৭। ইবরাহীম ইবনুল মুনযির (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার ঘর ও আমার মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থান জান্নাতের বাগান সমূহ হতে একটি বাগান। আর আমার মিম্বর আমার হাউজের ওপরে অবস্থিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৮ | 6138 | ٦۱۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৮। আবদান (রহঃ) … জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ আমি তোমাদের আগে হাউযের ধারে পৌছব।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৩৯ | 6139 | ٦۱۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৩৯। আমর ইবনু খালিদ (রহঃ) … উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন বের হলেন এবং ওহুদ যুদ্ধে শহীদদের প্রতি সালাত (নামায/নামাজ) জানাযার অনুরূপ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরপর তিনি মিম্বরে ফিরে এসে বললেনঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাদের জন্য হাউযের ধারে আগে পৌছব। নিশ্চয়ই আমি তোমাদের (কার্যাবলীর) সাক্ষী হব। আল্লাহর কসম! আমি এ মুহূর্তে আমার হাউয দেখতে পাচ্ছি। নিশ্চয়ই আমাকে বিশ্ব ভাণ্ডারের কুঞ্জি প্রদান করা হয়েছে। অথবা (বলেছেনঃ) বিশ্বের কুঞ্জি। আল্লাহর কসম! আমার ইন্তেকালের পর তোমরা শিরক করবে এ ভয় আমি করি না। তবে তোমাদের সম্পর্কে আমার ভয় হয় যে, দুনিয়া অর্জনে তোমরা পরস্পরে প্রতিযোগিতা করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪০ | 6140 | ٦۱٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৪০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … হারিসা ইবনু ওহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হাউযে কাওসারের আলোচলা করতে শুনেছি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেছেনঃ হাউযে কাওসার মদিনা এবং সানআ নামক স্থানের মধ্যকার দুরত্বের মতো। ইবনু আবূ আদী (রহঃ) … হারিসা (রাঃ) (কিঞ্চিত) অধিক বর্ণনা করেন যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ‘হাউযে কাওসারের দূরত্ব মদিনা ও সানআর দূরত্ব তূল্য’ কথাটুকু শুনেছেন। তখন মুসতাওরিদ তাকে বললেন যে, আল আওয়ানী (রহঃ) বলেছেনঃ তা কি তুমি শুননি? তিনি বললেন, না। মুসতাওরিদ বললেনঃ এর পাত্রগুলো তারকারাজির ন্যায় পরিলক্ষিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪১ | 6141 | ٦۱٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৪. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আমি তোমাকে কাউসার দান করেছি। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা হাউযের কাছে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়া পর্যন্ত সবর করতে থাকবে।
৬১৪১। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … আসমা বিনত আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আমি হাউযের ধারে থাকব। তোমাদের মাঝ থেকে যারা আমার কাছে আসবে আমি তাদেরকে দেখতে পাব। কিছু লোককে আমার সামনে থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন আমি বলব, হে প্রভু! এরা আমার লোক, এরা আমার উম্মত। তখন বলা হবে, তুমি কি জানো তোমার পরে এরা কি সব করেছে? আল্লাহর কসম! এরা দ্বীন থেকে সর্বদাই পশ্চাদমুখী হয়েছিল। তখন ইবনু আবূ মুলায়কা বললেনঃ হে আল্লাহ, দ্বীন থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করা থেকে অথরা দ্বীনের ব্যাপারে ফিতনায় পতিত হওয়া থেকে আমরা তোমার কাছে আশ্রয় চাই। আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন, ‏أَعْقَابِكُمْ تَنْكِصُونَ অর্থ হল تَرْجِعُونَ عَلَى الْعَقِبِ‏ তোমরা পিছনের দিকে ফিরে যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪২ | 6142 | ٦۱٤۲

পরিচ্ছদঃ পরিচ্ছেদ নাই
৬১৪২। আবূল ওয়ালীদ হিশাম ইবনু আবদউল মালিক (রহঃ) … আবদূলাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বিশ্বাসী ও বিশ্বস্ত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকেই আপন আপন মাতৃগর্ভে চল্লিশ দিন পর্যন্ত শুক্র বিন্দুরূপে জমা থাক। তারপর ঐরুপ চল্লিশ দিন রক্তপিণ্ড এবং এরপর ঐরুপ চল্লিশ দিন গোশত পিন্ডাকারে থাকে। তারপর আল্লাহ একজন ফেরেশতা প্রেরন করেন এবং তাকে বিযিক, মউত, দূর্ভাগ্য ও সৌভাগ্য-এ চারটি ব্যাপার লিপিবদ্ধ করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হয়। তিনি আরও বলেন, আল্লাহর কসম! তোমাদের মাঝে যে কেউ অথবা বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি জাহান্নামীদের আমল করতে থাকে। এমন কি তার মাঝে এবং জাহান্নামের মাঝে তখন কেবলমাত্র একহাত বা এক গজের ব্যবধান থাকে। এমন সময় তাকদীর তার ওপর প্রাধান্য বিস্তার করে আর তখন সে জান্নাতীদের আমল করা শুরু করে দেয়। ফলে সে জান্নাতে প্রবেশ করে। আর এক ব্যাক্তি বেহেশতীদের আমল করতে থাকে। এমন কি তার মাঝে ও জান্নাতের মাঝে কেবলমাত্র এক গজ বা দু-গজের ব্যবধান থাকে। এমন সময় তাকদীর তার উপর প্রাধান্য বিস্তার করে আর অমনি সে জাহান্নামীদের আমল শুরু করে দেয়। ফলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করে। আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেন যে, আদম তার বর্ননায় শুধুমাত্র ذِرَاعٌ‏ (এক গজ) বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৩ | 6143 | ٦۱٤۳

পরিচ্ছদঃ পরিচ্ছেদ নাই
৬১৪৩। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা’আলা রেহেমে (মাতৃগর্ভে) একজন ফেরেশতা নিয়োজিত করেছেন। তিনি বলেনঃ হে প্রভু! এটি বীর্য। হে প্রভু! এটি রক্তপিণ্ড। হে প্রভু! এটি গোশতপিণ্ড। আল্লাহ তা’আলা যখন তার সৃষ্টি পরিপূর্ণ করতে চান, তখন ফেরেশতা বলে, হে প্রভু। এটি নর হবে, না নারী? এটি হতভাগ্য হবে, না ভাগ্যবান? তার জীবিকা কি পরিমাণ হবে? তার আয়ুষ্কাল কি হবে? তখন (আল্লাহ তা’আলা যা নির্দেশ দেন) তার মাতৃগর্তে থাকা অবস্হায় ঐরূপই লিপিবদ্ধ করা হয।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৪ | 6144 | ٦۱٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৫. আল্লাহ তা’আলার ইলম এর উপর (মুতাবিক) কলম শুকিয়ে গিয়েছে। আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ জানেন বিধায় তাকে ভ্রষ্ট করে দিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) আমাকে বলেছেনঃ যার সম্মুখীন তুমি হবে (তোমার যা ঘটবে) তা লিপিবদ্ধ করার পর কলম শুকিয়ে গেছে। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, لَهَا سَابِقُونَ – তাদের উপর নেকবখ্‌তি প্রবল হয়ে গেছে।
৬১৪৪। আদম (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! জাহান্নামীদের থেকে জান্নাতীদেরকে চেনা যাবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। সে বলল, তাহলে আমলকারীরা আমল করবে কেন? তিনি বললেনঃ প্রত্যেক ব্যাক্তি ঐ আমলই করে যার জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে। অথবা যা তার জন্য সহজ করা হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৫ | 6145 | ٦۱٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৬. মানুষ যা করবে এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সর্বাধিক অবহিত
৬১৪৫। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ (একদা) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুশরিকদের (মৃত নাবালিগ) সন্তানদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে উত্তরে তিনি বললেনঃ তারা (জীবিত থাকলে) কি আমল করত এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সর্বাধিক অবহিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৬ | 6146 | ٦۱٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৬. মানুষ যা করবে এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সর্বাধিক অবহিত
৬১৪৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুশরিকদের (মৃত নাবালিগ) সন্তান-সন্ততি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ তারা যা করত এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সর্বাধিক অবহিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৭ | 6147 | ٦۱٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৬. মানুষ যা করবে এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সর্বাধিক অবহিত
৬১৪৭। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন সন্তান যখন জন্মগ্রহণ করে, তবে স্বভাবধর্মের (ইসলাম) ওপরই জন্মগ্রহন করে। কিন্তু তার পিতামাতা (পরবর্তীতে) তাকে ইয়াহুদি বা নাসারা বানিয়ে দেয়। যেমন কোন চতুস্পদ প্রাণী যখন বাচ্চা প্রদান করে তখন কি কানকাটা (ত্রুটিযুক্ত) দেখতে পাও? যতক্ষন তোমরা তার কানকেটে ক্রটিযুক্ত করে দাও। তখন সাহাবাগণ আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! নাবালিগ অবস্থায় যে মৃত্যুবরণ করে তার সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? তিনি বললেনঃ তারা যা করত এ সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা সর্বাধিক অবহিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৮ | 6148 | ٦۱٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৭. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আল্লাহ তা’আলার বিধান নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত
৬১৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন নারী নিজে বিয়ে করার জন্য যেন তার বোনের (অপর নারীর) তালাক না চায়। কেননা, তার জন্য (তাকদীরে) যা নির্ধারিত আছে তাই সে পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৪৯ | 6149 | ٦۱٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৭. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আল্লাহ তা’আলার বিধান নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত
৬১৪৯। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে ছিলাম। তার সঙ্গে সা’দ ইবনু উবাদা উবাই ইবনু কাব ও মু’আয ইবনু জাবালও ছিলেন। এমন সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন এক কন্যা কর্তৃক প্রেরিত একজন লোক এই খবর নিয়ে এলো যে, তার পুত্র সন্তান মরণাপন্ন। তখন তিনি এই বলে লোকটিকে পাঠিয়ে দিলেন যে, আল্লাহর জন্যই- যা তিনি গ্রহণ করেন, আল্লাহর জন্যই- যা তিনি দান করেন। প্রত্যেকের জন্য নির্ধারিত একটি সময় রয়েছে। সুতরাং সে যেন ধৈর্য ধারণ করে এবং এটাকে যেন সে (সন্তান হারানকে) পূণ্য মনে করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫০ | 6150 | ٦۱۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৭. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আল্লাহ তা’আলার বিধান নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত
৬১৫০। হিব্বান ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি (একদা) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় আনসার গোত্রের একটি লোক এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা তো বাঁদীদের সাথে মিলিত হই অথচ মালকে মুহাব্বাত করি। সুতরাং ’আযল’ করা সম্পর্কে আপনার অভিমত কি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি এ কাজ কর? তোমাদের জন্য এটা করা আর না করা উভয়ই সমান। কেননা, যে কোন জীবন যা পয়দা হওয়াকে আল্লাহ তাআলা লিখে দিয়েছেন তা পয়দা হবেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫১ | 6151 | ٦۱۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৭. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আল্লাহ তা’আলার বিধান নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত
৬১৫১। মূসা ইবনু মাসউদ (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একদা) আমাদের মাঝে এমন একটি ভাষণ প্রদান করলেন যাতে কিয়ামত পর্যন্ত যা সংঘটিত হবে এমন কোন কথাই বাদ দেননি। এগুলি স্মরণ রাখা যার সৌভাগ্য হয়েছে সে স্মরণ রেখেছে আর যে ভুলে যাবার সে ভুলে গিয়েছে। আমি ভুলে যাওয়া কোন কিছু যখন দেখতে পাই তখন তা চিনে নিতে পারি এভাবে যেমন, কোন ব্যাক্তি কাউকে হারিয়ে ফেললে আবার যখন তাকে দেখতে পায় তখন চিনতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫২ | 6152 | ٦۱۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৭. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আল্লাহ তা’আলার বিধান নির্দিষ্ট ও নির্ধারিত
৬১৫২। আবদান (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ একদা আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন তার সঙ্গে ছিল একটি লাঠি। যা দিয়ে তিনি মাটি খুঁড়ছিলেন। তিনি তখন বললেনঃ তোমাদের মাঝে এমন কোন ব্যাক্তি নেই যার ঠিকানা জাহান্নামে বা জান্নাতে লিপিবদ্ধ করা হয়নি। লোকদের ভিতর থেকে এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি তা হলে (এর উপর) নির্ভর করব না? তিনি বললেনঃ না, বরং আমল কর। কেননা, প্রত্যেকের জন্য আমল সহজ (যার জন্য তাকে সৃষ্টি) করা হয়েছে। এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৩ | 6153 | ٦۱۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৮. আ‘মালের ভাল-মন্দ শেষ অবস্থার ওপর নির্ভর করে
৬১৫৩। হিব্বান ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা খায়বারের যুদ্ধে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গীগণের মাঝ থেকে ইসলামের দাবি করছিল এমন এক ব্যাক্তি সম্পর্কে বললেন যে, এই লোকটি জাহান্নামী। যখন যুদ্ধ শুরু হল লোকটি প্রবল বেগে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ল। এতে সে প্রচুর ক্ষতবিক্ষত হল। তবু সে অটল রইল। সাহাবীগণের মাঝ থেকে একজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললো, হে আল্লাহর রাসুল! জাহান্নামী হবে বলে আপনি যে ব্যাক্তি সম্পর্কে বলেছিলেন সে তো প্রবল বেগে আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধ করেছে এবং তাতে সে প্রচুর ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। তিনি বললেনঃ সাবধান, সে জাহান্নামী! এতে কতিপয় মুসলমানের মনে সন্দেহের ভাব হল। আর লোকটি ঐ অবস্থায়ই ছিল। হঠাৎ করে সে যখমের যন্ত্রণা অনুভব করতে লাগল-আর অমনই সে স্বীয় হাতটি তীরের থলের দিকে বাড়িয়ে দিল এবং একটি তীর বের করে আপন বক্ষে বিধিয়ে দিল। এতদৃষ্টে কয়েকজন মুসলমান রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে দৌড়িয়ে যেয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহ তাআলা আপনার কথাকে সত্যে পরিনত করে দেখালেন। অমুক ব্যাক্তি তো আত্নহত্যা করেছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে বিলাল! উঠে দাঁড়াও এবং এই মর্মে ঘোষণা করে দাও যে, জান্নাতে কেবলমাত্র মুমিনগণই প্রবেশ করবে। আর আল্লাহ তা’আলা গুনাহগার বান্দাকে দিয়েও এই দ্বীনের সাহায্য করে থাকেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৪ | 6154 | ٦۱۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৮. আ‘মালের ভাল-মন্দ শেষ অবস্থার ওপর নির্ভর করে
৬১৫৪। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে থেকে যে সমস্ত মুসলমান যুদ্ধ করেছেন তাদের মাঝে একজন ছিল তীব্র আক্রমণকারী। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে নযর করে বললেনঃ যে ব্যাক্তি কোন জাহান্নামীকে দেখতে ইচ্ছা করে সে যেন এই লোকটির দিকে নযর করে। উপস্থিত লোকদের ভিতর থেকে এক ব্যাক্তি সেই লোকটির অনুসরণ করল। আর সে তখন প্রচণ্ডভাবে মুশরিকদের সঙ্গে মুকাবিলা করছিল। এমন কি সে (এক পর্যায়ে) যখম হয়ে তাড়াতাড়ি মৃত্যুবরণ করতে চাইল। সে তার তরবারীর তীক্ষ্ণ দিকটি তার বুকের উপর দাবিয়ে দিল। এমন কি দু’কাঁধের মাঝ দিয়ে তরবারী বক্ষ ভেদ করল। (এতদৃষ্টে) লোকটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে দৌড়ে এসে বলল, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি সত্যই আপনি আল্লাহর রাসূল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কি হল? লোকটি বলল, আপনি অমুক ব্যাক্তি সম্পর্কে বলেছিলেনঃ “যে ব্যাক্তি কোন জাহান্নামী লোক দেখতে চায় সে যেন এ লোকটিকে দেখে নেয়।” অথচ লোকটি অন্যান্য মুসলমানের তুলনায় অধিক রূপে আক্রমনকারী ছিল। সুতরাং আমার ধারণা ছিল এ লোকটির মৃত্যু এহেন অবস্থায় হবে না। যখন সে আঘাত প্রাপ্ত হল, তাড়াতাড়ি মৃত্যু কামনা করল এবং আত্নহত্যা করে বসল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একথা শুনে বললেনঃ নিশ্চয়ই কোন বান্দা জাহান্নামীদের আমল করেন মূলত সে জান্নাতী। আর কোন বান্দা জান্নাতী লোকের আমল করেন মুলত সে জাহান্নামী। নিশ্চয়ই আমলের ভাল-মন্দ নির্ভর করে তার পারিণামের উপর।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৫ | 6155 | ٦۱۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৯. বান্দার মানতকে তাকদীরে হাওালা করে দেওয়া
৬১৫৫। আবূ নুআঈম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানত করতে নিষেধ করেছেন। এই মর্মে তিনি বলেন, মানত কোন জিনিসকে দূর করতে পারে না। এ দ্বারা শুধুমাত্র কৃপণের মাল খরচ হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৬ | 6156 | ٦۱۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৩৯. বান্দার মানতকে তাকদীরে হাওালা করে দেওয়া
৬১৫৬। বিশর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ মানত মানব সন্তানকে এমন কিছু এনে দিতে পারে না যা তাকদীরে নির্ধারণ নেই অথচ সে যে মানতটি করে তাও আমি তাকদীরে লিপিবদ্ধ করে দিয়েছি যেন এর দ্বারা কৃপণের কাছ থেকে (মাল) বের করে নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৭ | 6157 | ٦۱۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৪০. ‘লা হাওলা ওয়ালা-কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ’ প্রসঙ্গে
৬১৫৭। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমরা যুদ্ধে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। আমরা যখনই কোন উচ্চস্থানে আরোহণ করতাম, কোন উঁচুতে থাকতাম এবং কোন উপত্যকা অতিক্রম করতাম তখনই উচ্চঃস্বরে তাকবীর (আল্লাহু আকবার) বলতাম। রাবী বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকটবর্তী হলেন এবং বললেনঃ হে লোক সকল! তোমরা নিজেদের উপর রহম কর। তোমরা কোন বধির বা কোন অনুপস্হিত সত্তাকে ডাকছ না- তোমরা তো ডাকছ শ্রবণকারী ও দর্শনকারী এক সত্তাকে। এরপর তিনি বললেনঃ হে আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! আমি কি তোমাকে এমন একটি কালিমা শিক্ষা দিব না, যা কিনা জান্নাতের ভাণ্ডার সমূহের অন্যতম? তা হচ্ছেঃ لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ (লা-হাওলা ওয়ালা-কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ)

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৮ | 6158 | ٦۱۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৪১. নিষ্পাপ সে-ই আল্লাহ যাকে রক্ষা করেন। عَاصِمٌ অর্থ প্রতিরোধকারী। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, سُدًا عَنِ الْحَقِّ গোমরাহীতে বিমত্ত হওয়া, دَسَّاهَا তাকে গোমরাহ করেছে।
৬১৫৮। আবদান (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে কোন লোককেই খলীফা বানানো হয় তার জন্য দুটি গুপ্তচর থাকে। একটা তো তাকে সৎকর্মের আদেশ করে এবং এর প্রতি তাকে উৎসাহিত করে। আরেকটা তাকে মন্দ কর্মের আদেশ করে এবং এর প্রতি তাকে প্ররোচিত করে। আর নিস্পাপ সেই ব্যাক্তি যাকে আল্লাহ তা’আলা রক্ষা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৫৯ | 6159 | ٦۱۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৪২. আল্লাহর বাণীঃ যে জনপদকে আমি ধ্বংস করেছি তার সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যে, তার অধিবাসীবৃন্দ ফিরে আসবে না (২১ঃ ৯৫)। আল্লাহর বাণীঃ যারা ঈমান এনেছে তারা ছাড়া তোমার সম্প্রদায়ের অন্য কেউ কখনও ঈমান আনবে না (১১ঃ ৩৬)। আল্লাহর বাণীঃ তারা জন্ম দিতে থাকবে কেবল দুষ্কৃতিকারী ও কাফের (৭১ঃ ২৭)। মানসুর ইবন নো’মান … ইবন আব্বাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাবশী ভাষায় حرم অর্থ জরুরী হওয়া
৬১৫৯। মাহমুদ ইবনু গায়লান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ছোট গুনাহ সম্পর্কে যা বলেছেন তার চেয়ে যথাযথ উপমা আমি দেখি না। (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ) আল্লাহ আদম সন্তানের উপর যিনার কোন না কোন হিসসা লিখে দিয়েছেন; তা সে অবশ্যই পাবে। সুতরাং চোখের যিনা হল (নিষিদ্ধদের প্রতি) নযর করা এবং জিহ্বার যিনা হল (যিনা সম্পর্কে) বলা। মন তার আকাঙ্ক্ষা ও কামনা করে, লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবায়িত করে অথবা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। শাবাবা (রহঃ)ও … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬০ | 6160 | ٦۱٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৩. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আমি যে দৃশ্য তোমাকে দেখাচ্ছি তা কেবল মানুষের পরিক্ষার জন্য (১৭ঃ ৬০)
৬১৬০। হুমাইদী (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। وَمَا جَعَلْنَا الرُّؤْيَا الَّتِي أَرَيْنَاكَ إِلاَّ فِتْنَةً لِلنَّاسِ (আয়াতের ব্যাখ্যায়) তিনি বলেনঃ তা হচ্ছে চোখের দেখা। যে রজনীতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত ভ্রমণ করানো হয়েছিল, সে রজনীতে তাকে যা দেখানো হয়েছিল। তিনি বলেন, কুরআন মজীদে উল্লিখিত وَالشَّجَرَةَ الْمَلْعُونَةَ দ্বারা যাককুম (যাক্কুম) বৃক্ষকে বোঝানো হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬১ | 6161 | ٦۱٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৪. আদাম (রাঃ) ও মূসা (রাঃ) আল্লাহ তা’আলার সামনে কথা কাটাকাটি করেন
৬১৬১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আদম ও মূসা (আলাইহিমা সালাম) (পরস্পরে) কথা কাটাকাটি করেন। মূসা (আলাইহিস সালাম) বলেনঃ হে আদম, আপনি তো আমাদের পিতা। আপনি আমাদেরকে বঞ্চিত করেছেন এবং আমাদেরকে জান্নাত থেকে বের করেছেন। আদম (আলাইহিস সালাম) মূসা (আলাইহিস সালাম) কে বললেনঃ হে মূসা! আপনাকে তো আল্লাহ তা’আলা স্বীয় কালামের মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন এবং আপনার জন্য স্বীয় হাত দ্বারা লিখেছেন। অতএব আপনি কি আমাকে এমন একটি ব্যাপার নিয়ে তিরস্কার করছেন? যা আমার সৃষ্টির চল্লিশ বছর পূর্বেই আল্লাহ নির্ধারণ করে রেখেছিলেন। তখন আদম (আলাইহিস সালাম) মূসা (আলাইহিস সালাম) এর উপর এই বিতর্কে জয়ী হলেন। উক্ত কথাটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিনবার বলেছেন। সুফিয়ানও … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬২ | 6162 | ٦۱٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৫. আল্লাহ তা’আলা যা দান করেন তা রোধ করার কেউ নেই
৬১৬২। মুহাম্মাদ ইবনু সিনান (রহঃ) … মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) এর আযাদকৃত গোলাম ওয়াররাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা মুআবিয়া (রাঃ) মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) এর নিকট এই মর্মে চিঠি লিখলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ)-এর পর যা পাঠ করতেন এ সম্পর্কে তুমি যা শুনেছ আমার কাছে লিখে পাঠাও। তখন মুগীরা (রাঃ) আমাকে তা লিখে দেওয়ার দায়িত্ব দিলেন। তিনি বললেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাত (নামায/নামাজ)-এর পরে বলতে শুনেছি اَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ، وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ، وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি অদ্বিতীয়, অংশীদারবিহীন। হে আল্লাহ! তুমি যা দান কর তা রদকারী কেউ নেই। আর তুমি যা রদ কর তার কোন দানকারীও নেই। তুমি ব্যতীত প্রচেষ্টাকারীর প্রচেষ্টাও কোন ফল বয়ে আনবে না।

ইবনু জুরায়জ আবদা থেকে বর্ণনা করেন যে, ওয়াররাদ তাকে এ বিষয়ে জানিয়েছেন। এরপর আমি মুআবিয়া (রাঃ) এর নিকট গিয়েছি। তখন আমি তাঁকে শুনেছি তিনি মানুষকে এ দোয়া পড়তে হুকুম দিতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৩ | 6163 | ٦۱٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৬. যে ব্যক্তি হতভাগ্যের গহীন গর্ত ও মন্দ তাকদীর থেকে আল্লাহ তা’আলার কাছে আশ্রয় চায়। এবং (মহান আল্লাহর) বাণীঃ বল, আমি শরণ লইতেছি উষার স্রষ্টার, তিনি যা সৃষ্টি করেছেন তার অনিষ্ট থেকে।
৬১৬৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমরা ভয়াবহ বিপদ, হতভাগ্যের অতল গহবর, মন্দ তাকদীর এবং শত্রুর আনন্দ প্রকাশ থেকে আল্লাহ তা’আলার কাছে আশ্রয় প্রর্থনা কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৪ | 6164 | ٦۱٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৭. (আল্লাহ তা’আলা) মানুষ ও তার অন্তরের মাঝে প্রতিবন্ধক হয়ে যান
৬১৬৪। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল আবুল হাসান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় এইরূপ শপথ করতেনঃ শপথ অন্তর সমূহের পরিবর্তনকারী (আল্লাহর)।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৫ | 6165 | ٦۱٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৭. (আল্লাহ তা’আলা) মানুষ ও তার অন্তরের মাঝে প্রতিবন্ধক হয়ে যান
৬১৬৫। আলী ইবনু হাফস ও বিশর ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সইয়্যাদকে একদা বললেনঃ আমি (একটি কথা আমার অন্তকরণে) তোমার জন্য গোপন রেখেছি। সে বললো, তা হচ্ছে (কল্পনার) ধুম্রজাল মাত্র। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ চুপ কর, তুমি তো তোমার তাকদীরকে কখনও অতিক্রম করতে পারবে না। এতদশ্রবণে উমর (রাঃ) বললেন, আমাকে অনুমতি দিন আমি তার মুণ্ডপাত করে দেই। তিনি বললেনঃ রাখ একে, এ যদি তাই হয় তবে তুমি তার ওপর (এ কাজে) সক্ষম হবে না। আর যদি তা না হয় তাহলে তাকে হত্যা করার মাঝে তোমার জন্য কোন কল্যাণ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৬ | 6166 | ٦۱٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৮. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) বল, আমাদের জন্য আল্লাহ যা নির্দিষ্ট করেছেন তা ছাড়া আমাদের কিছুই হবে না। كَتَبَ নির্দিষ্ট করেছেন। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, بِفَاتِنِينَ যারা পথভ্রষ্ট হয়, হ্যাঁ যার সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা লিখে দিয়েছেন যে, সে জাহান্নামে যাবে। قَدَّرَ فَهَدَى বদবখ্‌তি এবং নেকবখ্‌তি নির্দিষ্ট করেছেন। জন্তুকে চারণভূমি পর্যন্ত পৌঁছানো।
৬১৬৬। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম আল হানযালী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে প্লেগ রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেনঃ এটা হচ্ছে আল্লাহর এক আযাব। আল্লাহ তা’আলা যাকে ইচ্ছা তার ওপরই প্রেরণ করেন। আল্লাহ তাআলা এটা মুসলমানের জন্য রহমাতে পরিণত করেছেন। প্লেগাক্রান্ত শহরে কোন বান্দা যদি ধৈর্যধারণ করে এ বিশ্বাস নিয়ে সেখানেই অবস্থান করে, তা থেকে বের না হয়। আল্লাহ তাআলা তার জন্য যা ভাগ্যে লিখেছেন তা ব্যতীত কিছুই তাকে স্পর্শ করবে না, তাহলে সে শহীদের সাওয়াব লাভ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৭ | 6167 | ٦۱٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৪৯. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আল্লাহ আমাদের পথ না দেখালে আমরা কখনও পথ পেতাম না (৭ঃ ৪৩) (আরও ইরশাদ হল) আল্লাহ আমাকে পথ প্রদর্শন করলে আমি তো অবশ্যই মুত্তাকীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম (৪৯ঃ ৫৭)
৬১৬৭। আবূ নু’মান (রহঃ) … বারআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি খন্দকের যুদ্ধের দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখেছি, তিনি আমাদের সঙ্গে মাটি বহন করেছেন এবং বলছেনঃ আল্লাহর কসম! তিনি যদি আমাদেরকে হেদায়েত না করতেন তবে আমরা হেদায়েত পেতাম না। সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতাম না আর সালাত (নামায/নামাজ)ও আদায় করতাম না। সুতরাং (প্রভু হে) আমাদের উপর প্রশান্তি নাযিল করুন আর শত্রুর মুকাবিলায় আমাদেরকে সুদৃঢ় রাখুন। মুশরিকরা আমাদের উপর অত্যাচার করেছে। তারাই আমাদের উপর ফিতনা (যুদ্ধ) চাপিয়ে দিতে চেয়েছে কিন্তু আমরা তা চাইনি।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৮ | 6168 | ٦۱٦۸

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৬৮। মুহাম্মাদ ইবনু মূকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবূ বকর (রাঃ) কখনও কসম ভঙ্গ করেননি, যতক্ষন না আল্লাহ তা’আলা কসমের কাফফারা সংক্রান্ত আয়াত নাযিল করেন। তিনি বলতেন আমি যেকোন ব্যাপারে কসম করি। এরপর যদি এর চেয়ে উত্তমটি দেখতে পাই তবে উত্তমটিই করি এবং আমার কসম ভজের জন্য কাফফারা আদায় করে দেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৬৯ | 6169 | ٦۱٦۹

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৬৯। আবূ নুমান মুহাম্মাদ ইবনু ফাযল (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আবদুর রহমান ইবনু সামুরা! তুমি নেতৃত্ব চেয়ো না। কেননা, চাওয়ার পর যদি নেতৃত্ব পাও তবে এর দিকে তোমাকে সোপর্দ করে দেয়া হবে। আর যদি না চেয়ে তা পাও তবে তোমাকে এর জন্য সাহায্য করা হবে। কোন কিছুর ব্যাপারে যদি কসম কর আর তা ব্যতীত অন্য কিছুর মাঝে কল্যাণ দেখতে পাও তবে স্বীয় কসমের কাফফারা আদায় করে তার চেযে উত্তমটি অবলম্বন কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭০ | 6170 | ٦۱۷۰

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৭০। আবূ নুমান (রহঃ) … আবূ বুরদা (রাঃ) এর পিতা আবূ মূসা আশআরী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি একদা আশআরী সম্প্রদায়ের একদল লোকের সঙ্গে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলাম একটি বাহন সংগ্রহ করার জন্য। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে বাহন দিতে পারব না। আর আমার কাছে এমন কোন জন্তু নেই যার উপর আরোহণ করা যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ এরপর আল্লাহ যতক্ষন চাইলেন, ততক্ষন আমরা সেখানে অবস্থান করলাম। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে অতীব সুন্দর তিনটি উষ্ট্রী আনা হল। তিনি সেগুলোর উপর আমাদেরকে আরোহন করালেন। এরপর আমরা যখন চলতে লাগলাম তখন বললাম অথবা আমাদের মাঝে কেউ বলল, আল্লাহর কসম! আল্লাহ আমাদেরকে বরকত প্রদান করবেন না। কেননা, আমরা যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বাহন চাইতে এলাম তিনি আমাদেরকে বাহন দিবেন না বলে কসম করলেন। এরপর আমাদেরকে আরোহণ করালেন। চল আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে যাই এবং তাঁকে সে কথা স্মরণ করিয়ে দেই। এরপর আমরা তার কাছে এলাম। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে আরোহণ করাইনি বরং আল্লাহ তা’আলা আরোহণ করিয়েছেন। আল্লাহর কসম! আমি যখন আল্লাহর ইচ্ছা মূতাবিক কোন কসম করি আর তা ব্যতীত অন্যটির মাঝে যদি মঙ্গল দেখি তখন কসমের জন্য কাফফারা আদায় করে দেই। আর যেটা মঙ্গলকর সেটাই করে নেই এবং স্বীয় কসমের কাফফারা আদায় করে দেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭১ | 6171 | ٦۱۷۱

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৭১। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা (দুনিয়ায়) সর্বশেষ আগমনকারী আর কিয়ামতের দিন হব অগ্রগামী। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহর কসম! তোমাদের মাঝে কেউ আপন পরিজনের ব্যাপারে শপথকারী হলে আল্লাহর নিকট সে গুনাহগার হবে ঐ ব্যাক্তির তুলনায়, যে কাফফারা আদায় করে দেয় যা আল্লাহ তায়ালা অপরিহার্য করে দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭২ | 6172 | ٦۱۷۲

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যে সব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে দৃঢ় কর … তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা পর্যন্ত
৬১৭২। ইসহাক ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আপন পরিবারের ব্যাপারে কসম করে এর উপর অটল থাকে সে সবচেয়ে বড় গোনাহগার, যা কাফফারা দূর করে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৩ | 6173 | ٦۱۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৫০. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আল্লাহর কসম
৬১৭৩। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা একটি বাহিনী প্রেরণ করলেন আর তাদের আমীর নিযুক্ত করলেন উসামা ইবনু যায়িদকে। কতিপয় লোক তাঁর নেতৃত্বের ব্যাপারে সমালোচলা করল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে বললেনঃ তোমরা তাঁর নেতৃত্বের ব্যাপারে সমালোচনামুখর হচ্ছ। ইতিপূর্বে তার পিতার নেতৃত্বের ব্যাপারেও তোমরা সমালোচলা করেছিলে। আল্লাহর কসম! সে অবশ্যই নেতৃত্বের যোগ্য ছিল। আর মানুষের মাঝে সে আমার নিকট প্রিয়তম ব্যাক্তি ছিল। তারপরে নিশ্চয়ই এ উসামা অন্য সকল মামুষের চেয়ে আমার নিকট অধিক প্রিয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৪ | 6174 | ٦۱۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৪। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কসম ছিল مُقَلِّبِ الْقُلُوبِ বলা। অর্থাৎ অন্তরের পরিবর্তনকারীর (আল্লাহর) কসম।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৫ | 6175 | ٦۱۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৫। মূসা (রহঃ) … জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কায়সারের (রোম সম্রাট) পতনের পরে আর কোন কায়সার হবে না। কিসরা (পারস্যের বাদশাহ) এর যখন পতন হল তখনও তিনি বললেনঃ এরপর আর কোন কিসরা হবে না। কসম ঐ মহান সত্তার যার হাতে আমার প্রান! অবশ্যই এদের দু’জনের অগাধ সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় তোমরা খরচ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৬ | 6176 | ٦۱۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৬। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিসরা যখন ধংস হবে তারপরে আর কোন কিসরা হবে না। আর কায়সার যখন ধ্বংস হবে তখন আর কোন কায়সার হবে না। কসম ঐ সত্তার। যার হাতে মুহাম্মাদ এর প্রাণ! এদের ধন-সম্পদ অবশ্যই তোমরা আল্লাহর রাস্তায় ব্যায় করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৭ | 6177 | ٦۱۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৭। মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ হে উম্মাতে মুহাম্মাদী আল্লাহর কসম! আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে তবে অবশ্যই তোমরা কম হাসতে-এবং অধিক ক্রন্দন করতে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৮ | 6178 | ٦۱۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৮। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি তখন উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর হাত ধরেছিলেন। উমর (রাঃ) তাঁকে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার প্রাণ ব্যতীত আপনি আমার নিকট সর্বাধিক প্রিয়। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ না, ঐ মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! এমন কি তোমার কাছে তোমার প্রাণের চেয়েও আমাকে অধিক প্রিয় হতে হবে। তখন উমর (রাঃ) তাকে বললেনঃ এখন আল্লাহর কসম! আপনি আমার কাছে আমার প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উমর! এখন (তোমার ঈমান ণূর্ণ হয়েছে)।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৭৯ | 6179 | ٦۱۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৭৯। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা ও যায়িদ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেছেন, একদা দু’ব্যাক্তি ঝগড়া করতে করতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলো। তন্মধ্যে একজন বলল, আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে আমাদের মাঝে মীমাংসা করে দিন। দু’জনের মাঝে (অপেক্ষাকৃত) বুদ্ধিমান দ্বিতীয় লোকটি বলল, হ্যাঁ। ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে মীমাংসা করে দিন। আর আমাকে কিছু বলার অনুমতি দিন। তিনি বললেনঃ বল। লোকটি বললঃ আমার পুত্র এ লোকটির নিকট চাকর হিসাবে ছিল। (মালিক বলেন, عَسِيف শব্দের অর্থ চাকর) আমার পূত্র এর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যাভিচার করেছে। লোকেরা বলেছে যে, আমার পুত্রের (শাস্তি) রজম হবে। সুতরাং আমি একশ’ বকরী ও একটি বাঁদী নিয়ে তার ফিদইয়া প্রাদান করেছি।

এরপর আমি আলিমদের নিকট এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছি। তারা আমাকে জানালেন যে, আমার পুত্রের একাশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের দেশান্তর হবে। আর রজম হবে এর স্ত্রীর। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে আমার প্রান! আমি তোমাদের উভয়ের মাঝে অবশ্যই আল্লাহর কিতাব ভিত্তিক মীমাংসা করে দেব। তোমার বকরী ও বাদী তোমাকেই ফিরিয়ে দেয়া হবে। তিনি তাঁর পুত্রকে একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তর করলেন। আর উনায়স আসলামীকে হুকুম করা হল অপর লোকটির স্ত্রীর কাছে যাওয়ার জন্য। সে যদি (ব্যাভিচার) স্বীকার করে তরে তাকে রজম করতে। সে তা স্বীকার করল, সুতরাং তাকে রজম (পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা) করল।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮০ | 6180 | ٦۱۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আসলাম, গিফার, মুযায়না এবং জুহায়না বংশ যদি তামীম, আমির ইবনু সাসা’আ, গাতফান ও আসা’দ বংশ থেকে উত্তম হয় তা হলে তোমাদের কেমন মনে হয়? তারা তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাহাবাগন বললেনঃ হ্যাঁ, তখন তিনি বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার যার হাতে আমার প্রান। নিশ্চয়ই তারা এদের চেয়ে উত্তম!

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮১ | 6181 | ٦۱۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮১। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুমায়দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে রাজস্ব আদায়কারী নিযুক্ত করে পাঠালেন। সে কাজ শেষ করে তাঁর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটা আপনার জন্য আর এ জিনিসটি আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি তোমার মা-বাবার ঘরে বসে রইলে না কেন? তা হলে তোমার জন্য হাদিয়া পাঠাত কি না তা দেখতে পেতে? এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশার ওয়াক্তের সালাতে দাঁড়িয়ে গেলেন এবং তাশাহুদ পাঠ করলেন ও আল্লাহ তা’আলার যথোপযুক্ত প্রসংসা করলেন। এরপর বললেনঃ রাজস্ব আদায়কারীর অবস্থা কি হল? আমি তাকে নিযুক্ত করে পাঠালাম আর সে আমাদের কাছে এসে বলছে, এটা সরকারী রাজস্ব আর এ জিনিস আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে। সে তার বাবা-মার ঘরে বসে রইল না কেন? তা হলে দেখত তার জন্য হাদিয়া দেওয়া হয় কি না?

ঐ মহান সত্তার কসম! যার হাতে মুহাম্মাদ এর প্রাণ, তোমাদের মাঝে কেউ যদি কোন বস্তুতে সামান্যতম খিয়ানত করে, তা হলে কিয়ামতের দিন সে ঐ বস্তুটিকে তার কাঁধে বহন করা অবস্থায় আসবে। সে। বস্তুটি যদি উট হয় তা হলে উট আওয়াজ করতে থাকবে। যদি গরু হয় তবে হাম্বা হাম্বা করতে থাকবে। আর যদি বকরী হয় তরে বকরী আওয়াজ করতে থাকবে। আমি পৌছিয়ে দিলাম। রাবী আবু হুমায়দ বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হস্ত মুবারক এতটুকু উত্তোলন করলেন যে, আমরা তার দু’কানের শুভ্রতা দেখতে পেলাম। আবু হুমায়দ বলেনঃ এ কথাগুলো যায়িদ ইবনু সাবিতও আমার সঙ্গে শুনেছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে। সুতরাং তোমরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮২ | 6182 | ٦۱۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮২। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ হুরায়ারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূল কাসিম বলেছেনঃ ঐ মহান সত্তার কসম, যার হাতে মুহাম্মদ এর প্রাণ! আমি যা জানি তোমরা যদি তা জানতে, তা হলে তোমরা অবশ্যই অধিক ক্রন্দন করতে আর অল্প হাসতে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৩ | 6183 | ٦۱۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৩। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ যর গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলাম। তখন তিনি কা’বা গৃহের ছায়ায় বসে বলছিলেনঃ কা’বা গৃহের রবের কসম! তারা ক্ষতিগ্রস্ত। কাবা গৃহের রবের কসম! তারা ক্ষতিগ্রস্ত। আমি বললাম, আমার অবস্থা কি? আমার মাঝে কি কিছু (ক্রটি) পরিলক্ষিত হয়েছে? তিনি বলছিলেন, এমন অবস্থায় আমি তার কাছে বসে পড়লাম। আমি তাকে থামাতে পারলাম না। যতক্ষনের জন্য আল্লাহ চাইলেন আমি চিন্তায় আচ্ছন্ন রইলাম। এরপর আমি আরয করলাম, আমার পিতামাতা আপনার জন্য কুরবান। ঐ সমস্ত লোক কারা ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ এরা হল ঐ সকল লোক যারা অধিক সম্পদের অধিকারী। তবে হ্যাঁ, ঐ সমস্ত লোক স্বতন্ত্র যারা এরূপ, এরূপ ও এরূপ (ক্ষেত্রে খরচ করে)।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৪ | 6184 | ٦۱۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদা সুলায়মান (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ আমি আজ রাতে নব্বইজন স্ত্রীর সাথে মিলিত হব, যারা প্রত্যেকেই একটি করে সন্তান জন্ম দেবে, যারা হবে অশ্বারোহী; জিহাদ করবে আল্লাহর রাস্তায়। তাঁর সঙ্গী বলল, ইনশাআল্লাহ (বলুন)। তিনি ইনশাআল্লাহ বললেন না। অতঃপর তিনি সকল স্ত্রীর সলেই মিলিত হলেন। কিন্তু কেবলমাত্র একজন স্ত্রীই গর্ভবতী হলেন, তাও এক অপূর্ণাঙ্গ সন্তান প্রসব করল। ঐ মহান সত্তার কসম! যার হাতে মুহাম্মাদ প্রাণ। তিনি যদি ইনশাআল্লাহ বলতেন, তাহলে সকলেই আরোহী হয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৫ | 6185 | ٦۱۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৫। মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ) … বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য একদা রেশমের এক টুকরা বস্ত্র হাদিয়া পাঠানো হল। লোকেরা তার সৌন্দর্য ও মসৃনতা দেখে অবাক হয়ে পর্যায়ক্রমে হাতে নিয়ে দেখছিল। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি এটি দেখে অবাক হচ্ছ? তাঁরা উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ ঐ মহান সত্তার কসম। যার হাতের মুঠোয় আমার প্রান। নিশ্চয়ই জান্নাতে সা’দের রুমাল এর চেয়েও উত্তম হবে। আবূ আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহঃ) বলেনঃ তবে শুবা এবং ইসরাঈল আবূ ইসহাক থেকে যে বর্ণনা করেছেন তাতে وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ কথাটি বলেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৬ | 6186 | ٦۱۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আয়িশা সিদ্দীকা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ হিন্দা বিনত উতবা ইবনু রাবীআ (একদা) বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ এমন এক সময় ছিল যখন ভূ-পৃষ্টে যারা বাস করছে তাদের মাঝে আপনার অনুসারী যারা তারা লাঞ্ছিত হোক এটা আমি খুবই পছন্দ করতাম। (এখানে বর্ণনার মাঝে তিনি أَخْبَاءٍ বলেছেনঃ, না خِبَاءٍ বলেছেনঃ এ সম্পর্কে রাবী ইয়াহইয়ার সন্দেহ রয়েছে।) কিন্তু আজ আমার কাছে এর চেয়ে অধিক প্রিয় কিছুই নেই যে, তাবুতে বসবাসকারীদের মাঝে আপনার অনুসারীরা সম্মানিত হোক। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে মুহাম্মাদ এর প্রাণ। এ মর্যাদা আরও বর্ধিত হোক। হিন্দা বললোঃ আবূ সুফিয়ান নিশ্চয়ই একজন কৃপন লোক। তার মাল থেকে (তার পরিজনকে) কিছু খাওয়ালে এতে কি আমার কোন অন্যায় হবে? তিনি বললেনঃ না। তবে তা (শরীয়তসম্মত) পন্থায় হতে হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৭ | 6187 | ٦۱۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৭। আহমাদ ইবনু উসমান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সময় ইয়ামানী চামড়ার কোন এক তাবুতে তার পৃষ্ট মুবারক হেলান দিয়েছিলেন। তখন তিনি তাঁর সাহাবীদের প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমরা বেহেশতীদের এক-চতুর্থাংশ হবে, এতে কি তোমরা খুশি আছ? তারা বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তোমরা বেহেশতীদের এক-তৃতীয়াংশ হবে, এতে কি তোমরা খুশি নও! তারা বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে মুহাম্মাদ এর প্রাণ! নিশ্চয়ই আমি কামনা করি তোমরা বেহেশতীদের অর্ধেক হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৮ | 6188 | ٦۱۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৮। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, কোন এক ব্যাক্তি অপর এক ব্যাক্তিকে قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ‏ পাঠ করতে শুনলেন। তিনি তা বারংবার পাঠ করছিলেন। প্রভাত হলে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে হাযির হলেন এবং এ সম্পর্কে তার কাছে উল্লেখ করলেন। আর উক্ত ব্যাক্তি যেন উক্ত সুরা তিলাওয়াতকে কম গুরত্ব দিচ্ছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ! নিশ্চয়ই এ সূরা কুরআনের এক-তৃতীয়াংশের সমান।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৮৯ | 6189 | ٦۱۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৮৯। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছেন যে, তোমরা রুকু ও সিজদা পূর্নভাবে আদায় কর। ঐ মহান সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ। তোমরা যখন রুকু এবং সিজদা কর তখন আমি তোমাদেরকে আমার পিছন থেকে দেখতে পাই।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯০ | 6190 | ٦۱۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৫১. নাবী (সাঃ) এর শপথ কিরূপ ছিল? সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ ‘কসম ঐ সত্ত্বার, যাঁর হাতে আমার প্রাণ’! আবূ ক্বাতাদাহ বলেন, আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী (সাঃ) এর নিকট لاَهَا اللَّهِ বলেছেন; যেখানে وَاللَّهِ وَبِاللَّهِ বা تَاللَّهِ বলা যায়।
৬১৯০। ইসহাক (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আনসার সম্প্রদায়ের জনৈক নারী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে হাযির হল; সঙ্গে ছিল তার সন্তান-সন্ততি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঐ মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ! মানুষের মাঝে তোমরা আমার নিকট সর্বধিক প্রিয়। তিনি এ কথাটি তিনবার বললেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯১ | 6191 | ٦۱۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৫২. তোমরা পিতা-পিতামহের কসম করবে না
৬১৯১। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর ইবনু খাত্তার (রাঃ) কে কোন বাহনের উপর আরোহণ অবস্হায় পেলেন। তিনি তখন তাঁর পিতার নামে কসম করছিলেন। তিনি বললেনঃ সাবধান। আল্লাহ তা’আলা তোমাদেরকে তোমাদের পিতৃপূরুষদের নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। কেউ যদি কসম করতে চায় সে যেন আল্লাহর নামে কসম করে নতুবা চুপ থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯২ | 6192 | ٦۱۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৫২. তোমরা পিতা-পিতামহের কসম করবে না
৬১৯২। সাঈদ ইবনু ওফায়র (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উমর (রাঃ) কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তোমাদের পিতা-পিতামহের নামে কসম করতে নিষেধ করেছেন। উমর (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহর কসম! যখন থেকে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছি, তখন থেকে আমি সেচ্ছায় বা ভুলক্রমে তাদের নামে কসম করিনি। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেনঃ ‏أَوْ أَثَرَةٍ مِنْ عِلْمٍ দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে জ্ঞানগত বিষয় নকল করা। অনুরূপ উকায়ল, যুবায়দী ও ইসহাক কালবী (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। ইবনু উয়ায়নাহ … ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর (রাঃ) কে বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৩ | 6193 | ٦۱۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৫২. তোমরা পিতা-পিতামহের কসম করবে না
৬১৯৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের পিতা-পিতামহগণের নামে কসম করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৪ | 6194 | ٦۱۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৫২. তোমরা পিতা-পিতামহের কসম করবে না
৬১৯৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … যাহদাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের গোত্র জারাম এবং আশআরী গোত্রের মাঝে বন্ধুত্ব ও ভ্রাতৃত্ব ছিল। আমরা (একদা) আবূ মূসা আশ আরীর সঙ্গে ছিলাম। তার কাছে খাবার পেশ করা হল, যার মাঝে ছিল মুরগীর গোশত। তাইমিলাহ গোত্রের এক লাল রঙের ব্যাক্তি তাঁর কাছে ছিল। সে দেখতে গোলামদের মত। তিনি তাকে খাবারে অংশগ্রহণ করার জন্য আহবান করলেন। তখন সে লোকটি বলল, আমি এ মুরগীকে এমন কিছু খেতে দেখেছি যার কারণে আমি একে ঘৃণা করছি। তাই আমি কসম করেছি যে, মুরগী আর খাব না। তিনি বললেনঃ ওঠ, আমি এ সম্পর্কে অবশ্যই তোমাকে একখানা হাদীস বলব। একদা আমি কতিপয় আশআরীর সঙ্গে বাহন সংগ্রহের জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে বাহন দিতে পারব না। আর বাহন যোগ্য এমন কিছুই আমার কাছে নেই। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গনীমতের কিছু জন্তু এল। তিনি আমাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন এবং বললেনঃ আশআরী লোক গুলো কোথায়? এরপর আমাদের জন্য পাচটি উৎকৃষ্ট মানের সুদানি উট দেওয়ার জন্য নির্দেশ প্রদান করলেন।

আমরা যখন চলে গেলাম তখন চিন্তা করলাম আমরা এ কি করলাম? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো কসম করেছিলেন আমাদেরকে বাহন দেবেন না বলে। আর তার কাছে কোন বাহন তো ছিলও না। কিন্তু এরপর তিনি তো আমাদেরকে আরোহণের জন্য বাহন দিলেন। আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কসমের কথা ভুলে গিয়েছি। আল্লাহর কসম! এ বাহন আমাদের কোন কল্যাণে আসবে না। সুতরাং আমরা তার কাছে ফিরে গেলাম এবং তাকে বললাম যে আমাদেরকে আপনি আরোহন করাবেন এ উদ্দেশ্যে আমরা তো আপনার কাছে এসেই ছিলাম। আপনি কসম করেছিলেন যে আপনি আমাদেরকে কোন বাহন দিবেন না। আর আপনার কাছে এমন কোন কিছু ছিলও না, যাতে আমাদেরকে আরোহন করাতে পারেন। তখন তিনি বলেছিলেনঃ আমি তোমাদেরকে আরোহণ করাইনি বরং আল্লাহ তা’আলা করিয়েছেন। আল্লাহর কসম! আমি যখন কোন কসম করি আর তার অন্যটির মাঝে যদি অধিক মঙ্গল দেখতে পাই তা হলে যা মঙ্গল তাই বাস্তবায়িত করি এবং আমি কসম ভঙ্গ করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৫ | 6195 | ٦۱۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৩. লাত, উযযা ও প্রতিমাসমূহের নামে কসম করা যায় না
৬১৯৫। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যাক্তি কসম করে এবং বলে, লাত ও উযযার কসম, তখন সে যেন বলে لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ আর যে ব্যাক্তি তার সঙ্গীকে বলে “এস জুয়া খেলি”, তখন এর জন্য তার সাদাকা করা উচিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৬ | 6196 | ٦۱۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৪. কেউ যদি কোন বস্তুর কসম করে অথচ তাকে কসম দেয়া হয়নি
৬১৯৬। কুতায়বা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি স্বর্নের আংটি তৈয়ার করালেন এবং তিনি তা পরিধান করতেন। পরিধানকালে তার পাখরটি হাতের ভিতরের দিকে রাখলেন। তখন লোকেরাও (এরূপ) করল। এরপর তিনি মিস্বরের উপর বসে তা খুলে ফেললেন এবং বললেনঃ আমি এ আংটি পরিধান করেছিলাম। এবং তার পাথর হাতের ভিতরের দিকে রেখেছিলাম। অতঃপর তিনি তা ছুড়ে ফেলে দিলেন। আর বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি এ আংটি আর কোনদিন পরিধান করব না! তখন লোকেরাও আপন আপন আংটিগুলো খুলে ফেলল।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৭ | 6197 | ٦۱۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৫. কেউ যদি ইসলাম ধর্ম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের কসম করে। নাবী (সাঃ) বলেছেন ”কেউ যদি লাত ও উযযার কসম করে তবে সে যেন বলে لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ এতে কুফরীর দিকে তার সম্পর্ক বোঝায় না
৬১৯৭। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … সাবিত ইবনু যিহাক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি ইসলাম ধর্ম ব্যতীত অন্য কোন ধর্মের কসম করলে সেটা ঐ রকমই হবে যে রকম সে বলল। তিনি (আরও বলেন) কোন ব্যাক্তি যে কোন জিনিসের মাধ্যমে আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামের আগুনে তাকে ঐ জিনিস শাস্তি দেয়া হবে। কোন মুমিনকে লানত করা তার হত্যা তুল্য। আবার কোন মুমিনকে কুফরীর অপবাদ দেওয়াও তার হত্যা তুল্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৮ | 6198 | ٦۱۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৬. “যা আল্লাহ চান ও তুমি চাও” বলবে না। “আমি আল্লাহর সাথে এরপর তোমার সাথে” এরূপ বলা যাবে কি?
৬১৯৮। আমর ইবনু আসিম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, বনী ইসরাঈল সম্প্রদায়ের তিন ব্যাক্তিকে আল্লাহ তা’আলা পরীক্ষা করতে চাইলেন এবং একজন ফেরেশতা পাঠালেন। ফেরেশতা কুষ্ঠরোগীর কাছে এল। সে বলল, আমার যাবতীয় উপায়-উপকরণ ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন আমার জন্য আল্লাহ ছাড়া, অতঃপর তুমি ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই। এরপর পুরো হাদীস বর্ণনা করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬১৯৯ | 6199 | ٦۱۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬১৯৯। কাবীসা ও মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে কসম পূর্ণ করতে হুকুম করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০০ | 6200 | ٦۲۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬২০০। হাফস ইরন উমর (রহঃ) … উসামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা উসামা ইবনু যায়িদ, সা’দ ও উবাই (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জনৈক কন্যা তাঁর কাছে এ মর্মে খবর পাঠালেন যে, আমার পুত্র মরনাপন্ন অবস্থায় আছে। সুতরাং তিনি যেন আমাদের কাছে তশরীফ আনেন। তিনি উত্তরে সালামের সাথে এ কথা বলে পাঠালেন যে, আল্লাহ তা’আলা যা দান করেন আর যা নিয়ে নেন সব কিছুই তো আল্লাহর জন্য। আর সব কিছুই আল্লাহর নিকট নির্ধারিত আছে। অতঃপব তোমার জন্য ধৈর্য ধারণ করা এবং পুণ্য মনে করা উচিত।

এরপর তার কন্যা কসম দিয়ে আবার খবর পাঠালেন। এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাওয়ার জন্য দাঁড়ালেন। আমরাও তার সঙ্গে দাঁড়ালাম। (সেখানে পৌছে) তিনি যখন বসলেন, সন্তানটি তাঁর সামনে আনা হল। তিনি তাকে নিজের কোলে নিয়ে বসালেন আর শিশুটির শ্বাস নিঃশেষ হয়ে আসছিল। এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু’চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে এলো। তখন সা’দ বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ কি ব্যাপার? তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে রহমত, যা আল্লাহ তা’আলা তার বান্দাদের মাঝে যাকে ইচ্ছা তার মনের ভিতরে দিয়ে থাকেন। আর আল্লাহ তা’আলা তো কেবলমাত্র তাঁর দয়াদ্র বান্দাদের ওপরই দয়া করে থাকেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০১ | 6201 | ٦۲۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬২০১। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে মুসলমানের তিনটি সন্তান মৃত্যুবরণ করেছে (সে যদি ধৈর্য ধারণ করে) তাকে জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে না, হ্যাঁ, কসম পূর্ণ করার জন্য (জাহান্নামের উপর দিয়ে পুলসিরাত) অতিক্রম করতে যতটুকু সময় লাগে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০২ | 6202 | ٦۲۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬২০২। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … হারিসা ইবনু ওয়াহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি। আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতী লোকদের সম্পর্কে অবহিত করব না? তারা হবে দুনিয়াতে দুর্বল, মাজলুম। তারা যদি কোন কথায় আল্লাহর ওপর কসম করে ফেলে তবে আল্লাহ তা’আলা তা পূর্ণ করে দেন। আর যারা জাহান্নামে যাবে তারা হবে অবাধ্য, ঝগড়াটে ও অহংকারী।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৩ | 6203 | ٦۲۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা আল্লাহ তা’আলার নামে সুদৃঢ় কসম করছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, আবু বাকর (রাঃ) বলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ ! আমি সপ্নের তাবীর করতে যে ভুল করেছি তা আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিন। তিনি বললেন তুমি কসম করো না।
৬২০৩। সা’দ ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একদা প্রশ্ন করা হল যে, সর্বোত্তম মানুষ কে? তিনি বললেনঃ আমার সময়ের মানুষ। এরপর তাদের পরবর্তী লোকেরা, এরপর তাদের পরবর্তী লোকেরা। এরপরে এমন লোক (পৃথিবীতে) আসবে যে তাদের সাক্ষী কসমের উপর অগ্রগামী হবে, আর কসম সাক্ষীর উপর অগ্রগামী হবে। রাবী ইবরাহীম বলেন যে, আমরা যখন ছোট ছিলাম তখন আমাদের সাথীরা সাক্ষী এবং অঙ্গীকারের সাথে কসম করতে নিষেধ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৪ | 6204 | ٦۲۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৫৯. আল্লাহ তা’আলার নামে অঙ্গীকার করা
৬২০৪। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ কোন মুসলমান ব্যাক্তির মাল আত্মসাৎ করার জন্য অথবা বলেছেনঃ তার ভাইয়ের মাল আত্নসাৎ করার জন্য যে ব্যাক্তি মিথ্যা কসম করবে, আল্লাহ তা’আলার সাথে তার মুলাকাত হবে এমতাবস্থায় যে আল্লাহ তার উপর ক্রোধান্বিত থাকবেন। এ কথারই সত্যয়নে আল্লাহ তা’আলা নাযিল করেনঃ যারা আল্লাহর সাথে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রি করে (পরকালে তাদের কোন অংশ নেই)।

বারী সুলায়মান তাঁর বর্ণিত হাদীসে বলেনঃ আশআছ ইবনু কায়স (রাঃ) যখন পার্শ্ব দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন জিজ্ঞাসা করেন, আবদুল্লাহ তোমাদের কাছে কি বর্ণনা করেছেন? উত্তরে লোকেরা তাকে কিছু বলল। তখন আশআছ (রাঃ) বললেনঃ এ আয়াত তো আমার আর আমার এক সঙ্গীর ব্যাপারে নাযিল হয়েছে। আমাদের দু’জনের মাঝে একটি কুপের ব্যাপারে ঝগড়া ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৫ | 6205 | ٦۲۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৬০. আল্লাহর ইযযত, গুনাবলী ও কালেমা সমুহের কসম করা
৬২০৫। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ (আল্লাহ) আমি তোনার ইজ্জতের আশ্রয় চাই।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, এক ব্যাক্তি কিয়ামতের দিন) জান্নাত ও জাহান্নামের মাঝামাঝি যানে থাকবে। সে তখন আরয করবে, হে প্রভু! আমার চেহারাটি জাহান্নামের দিক থেকে ফিরিয়ে দাও। তোমার ইজ্জতের কসম। এ ছাড়া আর কিছুই আমি তোমার কাছে চাইব না। আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা বলবেনঃ এ পুরস্কার তোমার আর এরূপ দশ গুণ। আবূ আইউব (রাঃ) বলেন, তোমার ইজ্জতের কসম! তোমার বরকত থেকে আমি অমুখাপেক্ষী নই।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৬ | 6206 | ٦۲۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৬০. আল্লাহর ইযযত, গুনাবলী ও কালেমা সমুহের কসম করা
৬২০৬। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জাহান্নাম সর্বদাই বলতে থাকবে- আরও কি আছে? এমন কি রাবুল ইজ্জত তাতে তাঁর পা রাখবেন। ‘বাস, বাস’ জাহান্নাম বলবে, তোমার ইজ্জতের কসম! সেদিন তার একাংশ অপরাংশের সাথে মিলিত হয়ে যাবে। শুবা, কাতাদা (রহঃ) থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৭ | 6207 | ٦۲۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৬১. কোন ব্যক্তির لَعَمْرُ اللَّهِ বলা। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, لَعَمْرُكَ মানে لَعَيْشُكَ অর্থাৎ তোমার জীবনের কসম
৬২০৭। ওয়াইসী ও হাজ্জাজ (রহঃ) … ইবনু শিহাব যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উরওয়া ইবনু যুবায়র, সাঈদ ইবনু মূসায়্যাব, আলকামা ইবনু ওয়াক্কাস ও উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) এর অপবাদ সংক্রান্ত হাদীস বর্ণনা করেন। অপবাদ রটনাকারীরা যখন তাঁর সম্পর্কে যা ইচ্ছে তাই অপবাদ করল, তখন আল্লাহ তা’আলা তাঁকে পুত-পবিত্র বলে প্রকাশ করে দিলেন। রাবী বলেনঃ উপরোক্ত বর্ণনাকারীগণ প্রত্যেকেই হাদীসের এক একটি অংশ আমার কাছে বর্ণনা করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দণ্ডায়মান হলেন এবং আবদুল্লাহ ইবনু উবাই এর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য জিজ্ঞাসা করলেন। এরপর উসায়দ ইবনু হুযায়র (রাঃ) দাঁড়ালেন এবং সা’দ ইবনু উবাদা সম্পর্কে বললেনঃ আল্লাহর কসম, অবশ্যই আমরা তাকে হত্যা করব।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৮ | 6208 | ٦۲۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৬২. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) তোমাদের অর্থহীন শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু তিনি তোমাদের অন্তরের সংকল্পের জন্য দায়ী করবেন। আল্লাহ ক্ষমাপরায়ণ, ধৈর্যশীল (২ঃ ২২৫)
৬২০৮। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ لاَ يُؤَاخِذُكُمُ اللَّهُ আয়াত- খানা لاَ وَاللَّهِ (না, আল্লাহর কসম) এবং بَلَى وَاللَّهِ‏ (হ্যাঁ, আল্লাহর কসম) এ জাতীয় কথা বলা সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২০৯ | 6209 | ٦۲۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২০৯। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আর আবূ হুরায়রা (রাঃ) অত্র হাদীস মারফূ’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেনঃ (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ) নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা আমার উম্মাতের সে সমস্ত ওয়াসওয়াসা মাফ করে দিয়েছেন যা তাদের মনে উদয় হয় বা যে সব কথা মনে মনে বলে থাকে; যতক্ষন না তা কাজে পরিণত করে বা সে সম্পর্কে কারও কাছে কিছু বলে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১০ | 6210 | ٦۲۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১০। উসমান ইবনু হায়সাম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর দিন খুতবা দিতেছিলেন। তখন এক ব্যাক্তি উঠে দাঁড়াল এবং আরয করল, ইয়া রাসুলালাহ! আমি ধারণা করলাম যে, অমুক অমুক রুকনের পূর্বে অমুক অমুক রুকন হবে। এরপর অপর এক ব্যাক্তি উঠে দাঁড়াল এবং আরয করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! অমুক অমুক আমলের পূর্ব অমুক আমল হবে, (অর্থাৎ তারা যবেহ, হলক ও তাওয়াফ) এই তিনটি কাজ সম্পর্কে জানতে চাইল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ করতে পার, কোন দোষ নেই। ঐ দিন যে সম্পর্কেই জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ করতে পার কোন দোষ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১১ | 6211 | ٦۲۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১১। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আরয করল যে, আমি তো প্রস্তর নিক্ষেপের পূর্বে যিয়ারত করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই। আরেক ব্যাক্তি বলল, আমি তো যবেহ করার পূর্বে মাথা মুণ্ডন করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই। অপর ব্যাক্তি বলল, আমি তো প্রস্তর নিক্ষেপের পূর্বে যবেহ করে ফেলেছি! তিনি বললেনঃ কোন দোষ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১২ | 6212 | ٦۲۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১২। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগল। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন মসজিদের এক কোণে অবস্হান করছিলেন। লোকটি তাঁর কাছে এসে তাকে সালাম করল। তিনি বললেনঃ ফিরে যাও এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নাও। কেননা, তুমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করনি। তখন সে ফিরে গেল এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করল। পুনরায় এসে তাঁকে সালাম করল। তিনি উত্তরে বললেনঃ তোমার উপরও সালাম। তুমি ফিরে যাও এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নাও। কেননা, তুমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করনি। তৃতীয়বার লোকটি বলল, দয়া করে আমাকে অবহিত করে দিন। তিনি ইরশাদ করলেনঃ যখন তুমি সালাতে দণ্ডায়মান হবে তখন খুব ভালভাবে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে নেবে। এরপর কিবলামুখী হবে। তারপর তাকবীরে তাহরীমা বলবে। এরপর কুরআন মজীদ থেকে যা তোমার জন্য সহজ তিলাওয়াত করবে। এরপর ধীরস্থিরভাবে রুকু করবে। এরপর মাথা উত্তোলন করবে। এমনকি সঠিকভাবে দাঁড়িয়ে যাবে। এরপর সিজদা করবে ধীরস্হিরভাবে। এরপর (সিজদা থেকে) মাথা উত্তোলন করবেঃ এমন কি সোজা হয়ে এবং ধীরস্থিরভাবে বসে যাবে। এরপর পূনরায় সিজদা করবে ধীরস্থিরভাবে। তারপর সিজদা থেকে মাথা উত্তোলন করবে। এমন কি সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। এরপর তোমার সমস্ত সালাত (নামায/নামাজ)ই এরূপ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৩ | 6213 | ٦۲۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৩। ফারওয়া ইবনু আবূল মাগরা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উহুদের যুদ্ধে মুশরিকরা প্রকাণ্ডভাবে পরাজয় বরণ করে। ইবলিস চিৎকার করে বলল, হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা পিছনের দিকে ফির। এতে সামনের লোকগুলো পিছনের দিকে ফিরল। তারপর পিছনের লোকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। হুযায়ফা ইবনু ইয়ামন (রাঃ) আকস্মিক তার পিতাকে দেখে মুসলমানদের প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ এ তো আমার পিতা, আমার পিতা। আল্লাহর কসম! তারা ফিরল না। পরিশেষে তারা তাকে হত্যা করল। হুযায়ফা (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহ তোমাদের ক্ষমা করুন। উরওয়া (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর কসম! মৃত্যু পর্যন্ত হুযায়ফা (রাঃ) এর নিকট তার পিতার মৃত্যুটি মানসপটে বিদ্যমান ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৪ | 6214 | ٦۲۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৪। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে সায়িম ভুলক্রমে কিছু আহার করে সে যেন তার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পূর্ন করে। কেননা, আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৫ | 6215 | ٦۲۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৫। আদম ইবনু আবু ইয়াস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু বুহায়না (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। প্রথম দু’রাকাআতের পর না বসে তিনি দাঁড়িয়ে গেলেন। এভাবেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে থাকলেন। সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করলে লোকেরা তার সালামের অপেক্ষা করছিল। তিনি আল্লাহু আকবার বলে সালামের পূর্বে সিজদা করলেন। এরপর মাথা উত্তলোন করলেন। আবার আল্লাহু আকবার বলে সিজদা করলেন। এরপর আবার মাথা উত্তোলন করলেন এবং সালাম ফিরালেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৬ | 6216 | ٦۲۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৬। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা তাদের নিয়ে যোহরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তিনি সালাতে কিছু অধিক করলেন অথবা কিছু কম করলেন। মানসুর বলেন, এই কম-বেশির ব্যাপারে সন্দেহ ইবরাহীমের না আলকামার তা আমার জানা নেই। রাবী বলেন আরয করা হল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাত (নামায/নামাজ) এর মাঝে কি কিছু কমিয়ে দেয়া হয়েছে না আপনি ভুলে গিয়েছেন? তিনি বললেনঃ কি হয়েছে? সাহাবাগণ বললেনঃ আপনি এভাবে এভাবে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছেন। রাবী বলেন, তখন তিনি তাদেরকে নিয়ে দুটি সিজদা করেন। এরপর বললেন, এ দুটি সিজদা ঐ ব্যাক্তির জন্য যার স্মরণ নেই যে, সালাতে সে কি বেশি কিছু করেছে, না কম করেছে। এমন অবস্থায় সে চিন্তা করবে (প্রবল ধারণার ভিত্তিতে আমল করবে)। আর যা বাকি থাকবে তা পুরা করে নেবে! এরপর দু টি সিজদা আদায় করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৭ | 6217 | ٦۲۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৭। আল হুমায়দী (রহঃ) … উবাই ইবনু কাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আল্লাহর বাণীঃ لاَ تُؤَاخِذْنِي بِمَا نَسِيتُ وَلاَ تُرْهِقْنِي مِنْ أَمْرِي عُسْرًا‏ (মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না ও আমার ব্যাপারে অত্যাধিক কঠোরতা অবলম্বন করবেন না।) সম্পর্কে শুনেছেন। তিনি বলেছেনঃ মূসা (আলাইহিস সালাম) এর প্রথমবারের (প্রশ্ন উত্থাপনটা) ভুলবশত হয়েছিল।

আবূ আবদুল্লাহ ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ আমাদের কাছে মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার … শাবী থেকে বর্ণনা করেছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেছেন যে, বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) এর নিকট কয়েকজন অতিথি ছিল। তিনি তাঁর পরিবার-পরিজনকে তাদের জন্য সালাত (নামায/নামাজ) থেকে প্রত্যাবর্তন করার পুর্বে কিছু যবেহ করতে হুকুম করলেন, যেন ফিরে এসেই তাঁরা আহার করতে পারেন। তখন পরিবারের লোকেরা সালাত (নামায/নামাজ) থেকে প্রত্যাবর্তনের পুর্বেই (কুরবানীর পশু) যবেহ করলেন।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে লোকেরা এ সম্পর্কে বর্ণনা করল। তিনি পুনরায় যবেহ করার জন্য হুকুম করলেন। বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) আরয করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার কাছে এমন একটি বকরীর বাচ্চা আছে যা দুটি বড় বকরীর গোশতের চেয়েও উত্তম।

ইবনু আউন শাবীর মাধ্যমে বর্ণনা করতে গিয়ে এ স্থানটিতে থেমে যেতেন। তিনি মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে এর অনুরূপ বর্ণনা করতেন এবং এ স্থানে থেমে যেতেন। আর বলতেন, আমার জানা নেই তিনি ছাড়া অন্য কারও জন্য তদ্রূপ অনুমতি আছে কিনা? আইউব (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৮ | 6218 | ٦۲۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৩. কসম করে ভুলবশত যখন কসম ভঙ্গ করে। এবং আল্লাহর বাণীঃ এ ব্যাপারে তোমরা কোন ভুল করলে তোমাদের কোন অপরাধ নেই (৩৩ঃ ৫) এবং আল্লাহর বাণীঃ আমার ভুলের জন্য আমাকে অপরাধী করবেন না (১৮ঃ ৭৩)
৬২১৮। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি (এক ঈদের দিন) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি (সালাত (নামায/নামাজ) শেষে) খুতবা প্রদান করলেন। এরপর বললেনঃ যে ব্যাক্তি (সালাত (নামায/নামাজ) এর পূর্বেই) যবেহ করে ফেলেছে তার উচিত যেন তার পরিবর্তে আরেকটি যবেহ করে নেয়। আর যে এখনও যবেহ করেনি সে যেন আল্লাহর নাম নিয়ে যবেহ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২১৯ | 6219 | ٦۲۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৪. মিথ্যা কসম। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) পরস্পর প্রবঞ্চনা করার জন্য তোমরা তোমাদের শপথকে ব্যবহার করো না। করলে পা স্থির হওয়ার পর পিছলিয়ে যাবে। আর তোমাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি (১৬ঃ ৯৪) পর্যন্ত। دخلا দ্বারা প্রবঞ্চনা ও খিয়ানত উদ্দেশ্য।
৬২১৯। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ কবীরা গুনাহসমুহের (অন্যতম) হচ্ছে আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে শরীক করা, পিতামাতার নাফরমানী করা, কাউকে হত্যা করা এবং মিথ্যা কসম করা।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২০ | 6220 | ٦۲۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৫. আল্লাহর বাণীঃ যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মুল্যে বিক্রি করে আর তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি … পর্যন্ত (৩ঃ ৭৭)। এবং আল্লাহর বাণীঃ তোমরা তোমাদের শপথের জন্য আল্লাহর নামকে অযুহাত করো না … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২ঃ ২২৪) এবং আল্লাহর বাণীঃ তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কৃত অঙ্গীকার তুচ্ছ মুল্যে বিক্রি করো না … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (১৬ঃ ৯৫)। এবং আল্লাহর বাণীঃ তোমরা আল্লাহর অঙ্গীকার পূর্ণ কর, যখন পরস্পর অঙ্গীকার কর এবং তোমরা শপথ দৃঢ় করার পর তা ভঙ্গ করো না (১৬ঃ ৯১) আয়াতের শেষ পর্যন্ত
৬২২০। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি যদি কোন মুসলমানের সস্পদ ছিনিয়ে নেয়ার মানসে মিথ্যা কসম করে তবে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে তার মুলাকাত হবে এমতাবস্থায় যে, আল্লাহ তার ওপর রাগান্বিত থাকবেন। আল্লাহ তা’আলা এ কথার সমর্থনে আয়াত ‏إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللَّهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيلاً‏ নাযিল করেন। এরপর আশআছ ইবনু কায়স (রাঃ) প্রবেশ করে জিজ্ঞাসা করলেন যে, আবু আবদুর রহমান তোমাদের কাছে কি বর্ণনা করেছেন? লোকেরা বলল, এরূপ এরূপ। তখন তিনি বললেনঃ এ আয়াত আমার সম্পর্কে নাযিল করা হয়েছে। আমার চাচাতো ভাই এর জমিতে আমার একটি কূপ ছিল। আমি এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট হাযির হলাম। তিনি বললেনঃ তুমি প্রমাণ উপস্থাপন কর অথবা সে কসম করুক! আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ কথার উপরে সে তো কসম খেয়েই ফেলবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে ব্যাক্তি কোন মুসলমানের সস্পদ ছিনিয়ে নেয়ার মানসে কসম করে, অথচ সে তাতে মিথ্যাবাদী তবে কিয়ামতের দিন সে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে এমতাবস্থায় যে আল্লাহ তার উপর রাগান্বিত থাকবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২১ | 6221 | ٦۲۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৬. এমন কিছুতে কসম করা যার উপর কসমকারীর মালিকানা নেই এবং গুনাহের কাজের জন্য কসম ও রাগের বশর্বতী হয়ে কসম করা
৬২২১। মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাকে আমার সাথীগণ (একদা) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে প্রেরণ করল তাঁর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে কোন কিছুই আরোহণের জন্য দিতে পারব না। তখন আমি তাকে রাগান্বিত অবস্হায় পেলাম। এরপর যখন আমি তার কাছে এলাম, তিনি বললেনঃ তুমি তোমার সঙ্গীদের কাছে চলে যাও এবং বল যে, নিশ্চই আল্লাহ অথবা আল্লাহর রাসুল তোমাদের আরোহণের জন্য বাহনের ব্যবস্হা করবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২২ | 6222 | ٦۲۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৬. এমন কিছুতে কসম করা যার উপর কসমকারীর মালিকানা নেই এবং গুনাহের কাজের জন্য কসম ও রাগের বশর্বতী হয়ে কসম করা
৬২২২। আবদুল আযীয ও হাজ্জাজ (রহঃ) … যুহরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উরওয়া ইবনু যুবায়র, সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব, আলকামা ইবনু ওয়াক্কাস ও উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) সম্পর্কে অপবাদ বর্ণনাকারীরা যা বলেছিল তা শুনতে পেলাম। আল্লাহ তা’আলা এ মর্মে তাঁর নিস্কুলষতা প্রকাশ করে দিয়েছেন। উপরোক্ত বর্ণনাকারীগণ প্রত্যেকেই আমার নিকট উল্লিখিত ঘটনার অংশ বিশেষ বর্ণনা করেছেন। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ যখন আল্লাহ ‏إِنَّ الَّذِينَ جَاءُوا بِالإِفْكِ থেকে দশখানা আয়াত আমার নিস্কুলষতা প্রকাশ করণার্থে নাযিল করেছেন। আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) আত্নীয়তার সম্পর্কের কারণে মিসতাহ ইবনু সালামার ভরণ-পোষণ করতেন। অপবাদ প্রদানের কারণে আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! মিসতাহ যখন আয়িশার ব্যাপারে অপবাদ রটিয়েছে; এরপর আমি আর তার জন্য কখনও কিছু খরচ করব না। তখন আল্লাহ তা’আলা وَلاَ يَأْتَلِ أُولُو الْفَضْلِ مِنْكُمْ وَالسَّعَةِ أَنْ يُؤْتُوا أُولِي الْقُرْبَى‏ এ আয়াত নাযিল করেন। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহর কসম! আল্লাহ তাআলা আমাকে ক্ষমা করে দিন এটা আমি নিশ্চয়ই পছন্দ করি। তিনি পুনরায় মিসতাহের ভরণ-পোষণের জন্য ঐ খরচ দেওয়া শুরু করলেন, যা তিনি পূর্বে তাকে দিতেন এবং তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তার খরচ দেওয়া আর কখনও বন্ধ করব না।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৩ | 6223 | ٦۲۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৬. এমন কিছুতে কসম করা যার উপর কসমকারীর মালিকানা নেই এবং গুনাহের কাজের জন্য কসম ও রাগের বশর্বতী হয়ে কসম করা
৬২২৩। আবু মামার (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কতিপয় আশআরী লোকের সঙ্গে (বাহন চাওয়ার জন্য) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে হাযির হলাম। যখন উপস্থিত হলাম, তখন তাকে রাগান্বিত অবস্হায় পেলাম। আমরা তাঁর কাছে বাহন চাইলাম। তিনি কসম করে বললেন যে, আমাদেরকে বাহন দিবেন না। এরপর বললেনঃ আল্লাহর কসম আমি কোন কিছুর ওপর আল্লাহর ইচ্ছা মুতাবিক যখন কসম করি আর তার অন্যটির মাঝে মঙ্গল দেখতে পাই; তাহলে যেটা মঙ্গলকর সেটাই করি আর কসমকে ভঙ্গ করে ফেলি।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৪ | 6224 | ٦۲۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৭. কোন ব্যক্তি যখন বলে, আল্লাহর কসম! আজ আমি কথা বলব না। এরপর সে নামায আদায় করল অথবা কুরআন পাঠ করল অথবা সুবহানাল্লাহ বা আল্লাহু আকবার বা আলহামদুলিল্লাহ অথবা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলল। তবে তার কসম তার নিয়ত হিসেবেই আরোপিত হবে। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ সর্বোত্তম কথা চারতিঃ সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এবং ওয়াল্লাহু আকবার। আবু সুফইয়ান (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাঃ) বাদশাহ হিরাক্লিয়াসের কাছে এ মর্মে লিখেছিলেনঃ হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, كَلِمَةُ التَّقْوَى ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
৬২২৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব (রহঃ) এর পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ তালিবের যখন মৃত্যু উপস্থিত হল, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে তশরীফ আনলেন এবং বললেনঃ আপনি لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ কলেমাটি বলুন। আমি আল্লাহ তা’আলার নিকট আপনার ব্যাপারে এর মাধ্যমে সুপারিশ করব।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৫ | 6225 | ٦۲۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৭. কোন ব্যক্তি যখন বলে, আল্লাহর কসম! আজ আমি কথা বলব না। এরপর সে নামায আদায় করল অথবা কুরআন পাঠ করল অথবা সুবহানাল্লাহ বা আল্লাহু আকবার বা আলহামদুলিল্লাহ অথবা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলল। তবে তার কসম তার নিয়ত হিসেবেই আরোপিত হবে। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ সর্বোত্তম কথা চারতিঃ সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এবং ওয়াল্লাহু আকবার। আবু সুফইয়ান (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাঃ) বাদশাহ হিরাক্লিয়াসের কাছে এ মর্মে লিখেছিলেনঃ হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, كَلِمَةُ التَّقْوَى ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
৬২২৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুটি কলেমা এমন যা জিহবাতে অতি হালকা অথচ মীযানে ভারী আর রাহমানের নিকট খুব পছন্দনীয়; তা হলঃ সুবহানাল্লাহ ওয়া বিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আযীম।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৬ | 6226 | ٦۲۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৭. কোন ব্যক্তি যখন বলে, আল্লাহর কসম! আজ আমি কথা বলব না। এরপর সে নামায আদায় করল অথবা কুরআন পাঠ করল অথবা সুবহানাল্লাহ বা আল্লাহু আকবার বা আলহামদুলিল্লাহ অথবা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলল। তবে তার কসম তার নিয়ত হিসেবেই আরোপিত হবে। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ সর্বোত্তম কথা চারতিঃ সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু এবং ওয়াল্লাহু আকবার। আবু সুফইয়ান (রাঃ) বলেছেন, নবী (সাঃ) বাদশাহ হিরাক্লিয়াসের কাছে এ মর্মে লিখেছিলেনঃ হে কিতাবীগণ! এসো সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, كَلِمَةُ التَّقْوَى ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
৬২২৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি কলেমা বললেন। আর আমি বললাম, অন্যটি। তখন তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে শরীক করে মৃত্যু বরন করবে তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করানো হবে। আমি অপরটি বললাম, যে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে শরীক না করে মৃত্যৃবরণ করবে তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৭ | 6227 | ٦۲۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৮. যে ব্যাক্তি এ মর্মে কসম করে যে, স্বীয় স্ত্রীর কাছে একমাস গমন করবে না আর মাস যদি হয় উনত্রিশ দিনে
৬২২৭। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীগণের ব্যাপারে ঈলা (কসম) করলেন। আর তখন তাঁর কদম মুবারক মচকে গিয়েছিল। তিনি তখন উনত্রিশ দিন কুঠরীতে অবস্থান করেছিলেন। এরপর তিনি নেমে এলেন (স্ত্রীগণের কাছে ফিরে এলেন) লোকেরা তখন জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি তো এক মাসের ঈলা করেছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ মাস তো কখনও ঊনত্রিশ দিনেও হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৮ | 6228 | ٦۲۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৯. যদি কোন ব্যক্তি নাবীয পান করবে না বলে কসম করে। অতঃপর তেল, চিনি বা আসীর পান করে ফেলে তবে কারো কারো মতে কসম ভঙ্গ হবে না, যেহেতু তাদের নিকট এগুলো নাবীযের অন্তর্ভুক্ত নয়
৬২২৮। আলী (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী আবূ উসায়দ (রাঃ) বিবাহ করলেন। তার (ওলীমায়) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত করলেন। আর তখন তার নব বিবাহিতা স্ত্রী তাঁদের খেদমত করছিলেন। সাহল (রাঃ) তার কাওমের লোকদেরকে বললেনঃ তোমরা কি জানো সে মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি পান করিয়েছিল? সে রাত্রি বেলা একটি পাত্রে তার জন্য খেজুর ভিজিয়ে রেখেছিল। এমনিভাবে সকাল হয়। আর সেগুলই সে তাঁকে পান করাল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২২৯ | 6229 | ٦۲۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৬৯. যদি কোন ব্যক্তি নাবীয পান করবে না বলে কসম করে। অতঃপর তেল, চিনি বা আসীর পান করে ফেলে তবে কারো কারো মতে কসম ভঙ্গ হবে না, যেহেতু তাদের নিকট এগুলো নাবীযের অন্তর্ভুক্ত নয়
৬২২৯। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী সাওদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমাদের একটি বকরী মরে গেল। আমরা এর চামড়া দাবাগাত করে নিলাম। এরপর থেকে তাতে সর্বদাই আমরা নাবীয প্রস্তুত করতাম। এমন কি তা পুরাতন হয়ে গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩০ | 6230 | ٦۲۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৭০. যখন কোন ব্যক্তি তরকারী খাবে না বলে কসম করে, এরপর রুটির সাথে খেজুর মিশ্রিত করে খায়। আর কোন জিনিস তরকারীর অর্ন্তভুক্ত
৬২৩০। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুহাম্মাদ পরিবার তরকারী মিশ্রিত গমের রুটি একাধারে তিনদিন পর্যন্ত খেয়ে পরিতৃপ্ত হননি। এভাবে তিনি আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে মিলিত হয়েছে। ইবনু কাসীর (রহঃ) … আবীস (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এই হাদীসটি আয়িশা (রাঃ) কে বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩১ | 6231 | ٦۲۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৭০. যখন কোন ব্যক্তি তরকারী খাবে না বলে কসম করে, এরপর রুটির সাথে খেজুর মিশ্রিত করে খায়। আর কোন জিনিস তরকারীর অর্ন্তভুক্ত
৬২৩১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আবূ তালহা (রাঃ) উম্মে সুলায়ম (রাঃ) কে বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দূর্বল আওয়াজ শুনতে পেলাম, যার মাঝে আমি ক্ষুধার আভাষ পেলাম। তোমার কাছে কি কিছু আছে? উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি কয়েকটি যবের রুটি বের করলেন। এরপর তার ওড়নাটি নিলেন এবং এর কিছু অংশে রুটিগুলি পেঁচিয়ে নিলেন। আনাস (রাঃ) বলেনঃ এরপর তিনি আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পাঠিয়ে দিলেন। আমি গিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মসজিদে পেলাম। এবং কতিপয় লোক তাঁর সঙ্গে রয়েছে। আমি তাদের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাকে কি আবূ তালহা গাঠিয়েছে? আমি বললাম, জি হ্যাঁ।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গীদেরকে বললেনঃ উঠ (আবূ তালহার কাছে যাও)। তখন তাঁরা আবূ তালহার নিকট চললেন। আমি তাদের আগে আগে যেতে লাগলাম। অবশেষে আবূ তালহার কাছে এসে উপস্থিত হলাম এবং তাকে এ সম্পর্কে খবর দিলাম। তখন আবূ তালহা (রাঃ) বলল, হে উম্মে সুলায়ম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই তো আমাদের কাছে তশরীফ এনেছেন অথচ আমাদের নিকট তো এমন কোন খাদ্যই নেই যা তাদের খেতে দিতে পারি। উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বলল, আল্লাহ ও তার রাসুলই এ ব্যাপারে সবচেয়ে ভাল জানেন।

আবূ তালহা (রাঃ) রেরিয়ে এলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ তালহা (রাঃ) উভয়ই সামনাসামনি হলেন এবং উভয়ই একত্রে ঘরে প্রবেশ করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উম্মে সুলায়ম! তোমার কাছে যা আছে তাই নিয়ে এসো। তখন উম্মে সুলায়ম (রাঃ) ঐ রুটিগুলি তার সামনে পেশ করলেন। রাবী বলেনঃ এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ রুটিগুলি ছিড়ার জন্য হুকুম করলেন। তখন রুটিগুলি টুকরা টুকরা করা হল।

উম্মে সুলায়ম (রাঃ) তার ঘি এর পাত্র থেকে ঘি নিংড়ে বের করলেন এবং তাতে মিশ্রিত করে দিলেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উপর আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী কিছু পাঠ করলেন এবং বললেনঃ দশজন লোককে অনুমতি দাও। তিনি তাদেরকে অনুমতি দিলেন। তখন তারা সকলেই আহার করলেন, এমন কি সবাই পরিতৃপ্ত হয়ে সেখান থকে বের হলেন। এরপর তিনি আবার বললেনঃ (আরও) দশজনকে অনুমতি দাও। তখন তাদরেকে অনূমতি দেয়া হল। এভাবে তারা সকলেই আহার করলেন, এমনকি সবহি পরিতৃপ্ত হয়ে সেখান থেকে বের হলেন। এরপর আবারো তিনি বললেনঃ আরো দশজনকে আসতে দাও। দলের লোক সংখ্যা ছিল সত্তর বা আশি জন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩২ | 6232 | ٦۲۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৭১. কসমের মধ্যে নিয়ত করা
৬২৩২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে নিশ্চয়ই প্রতিটি আমলের গ্রহণযোগ্যতা ভার নিয়্যাতের উপয় নির্ভরশীল। কোন ব্যাক্তি তাই লাভ করবে যা সে নিয়্যাত করে থাকে। যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও তার রাসুলের সন্তুষ্টির জন্য হিজরত করবে তার হিজরত আল্লাহ ও তার রাসূলের সন্তুটির জন্যই হবে। আর যার হিজরত দুনিয়াকে হাসিলের জন্য হবে অথবা কোন রমনীকে বিয়ে করার জন্য হবে তার হিজরত সে উদ্দেশ্যই হবে যে জন্য সে হিজরত করেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৩ | 6233 | ٦۲۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৭২. যখন কোন ব্যাক্তি তার মাল মানত ও তওবার লক্ষ্যে দান করে
৬২৩৩। আহামাদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। কাব (রাঃ) যখন অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন, তখন তার জনৈক পুত্র তাঁকে ধরে নিয়ে চলতেন। আবদুর রাহমান বলেনঃ আমি আল্লাহর বানীঃ যে তিনজন তাবুকের যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করা থেকে বিরত হয়েছে। সংক্রান্ত ঘটনা বর্ণনা করতে কা’ব ইবনু মালিককে শুনেছি। তিনি তার বর্ণনার শেষাংশে বলেনঃ আমার তওবা এটাই যে আমার সমস্ত মাল আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এর কাছে দান করে দিয়ে আমি মুক্ত হব। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কিছু মাল তোমার নিজের জন্য রাখ এটি তোমার জন্য কল্যানকর হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৪ | 6234 | ٦۲۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৩. যখন কোন ব্যক্তি কোন খাদ্যকে হারাম করে নেয় এবং আল্লাহর বাণীঃ হে নবী! আল্লাহ আপনার জন্য যা হালাল করেছেন আপনি আপনার স্ত্রীদের সন্তুষ্টির জন্য কেন তা হারাম করেছেন ? (৬৬ঃ ১) এবং আল্লাহর বাণীঃ ঐ সমস্ত পবিত্র বস্তুকে হারাম করো না, যা আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন।
৬২৩৪। হাসান ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা সিদ্দীকা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সময় যায়নাব বিনত জাহাশ (রাঃ) এর কাছে অবস্হান করছিলেন এবং তার কাছে মধু পান করেছিলেন। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি এবং হাফসা (রাঃ) পরস্পরে পরামর্শ করলাম যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দু’জনের মধ্যে যার কাছে আগে আসবেন তখন আমরা তাঁকে এ কথাটি বলব যে, আপনার মুখ থেকে তো মাগাফীরের গন্ধ পাচ্ছি। আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? এরপর তিনি কোন একজনের ঘরে প্রবেশ করলেন। তখন তিনি তাঁকে ঐ কথাটি বললেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জবাব দিলেন, না বরং আমি যায়নাব বিনত জাহাশের কাছে মধু পান করেছি। এরপরে আর কখনও এ কাজটি করব না।

তখনই এ আয়াত নাযিল হলঃ ‏يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ لِمَ تُحَرِّمُ مَا أَحَلَّ اللَّهُ لَكَ‏}‏، ‏{‏إِنْ تَتُوبَا إِلَى اللَّهِ‏ “তোমরা উভয়ে যদি আল্লাহর কাছে তওবা কর” এখানে সন্মোধন আয়শা ও হাফসা (রাঃ) এর প্রতি। আর إِذْ أَسَرَّ النَّبِيُّ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁর কোন স্ত্রীর কাছে কথাকে গোপন করেন। এ আয়াত খানা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা بَلْ شَرِبْتُ عَسَلاً “বরং আমি মধু পান করেছি” এর প্রতি ইঙ্গিত করণার্থে নাযিল হয়েছে।

ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) হিশাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি কসম করে ফেলেছি এ কাজটি আমি আর কখনও করব না। তুমি এ ব্যাপারটি কারও কাছে প্রকাশ করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৫ | 6235 | ٦۲۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৪. মানত পুরা করা এবং আল্লাহর বাণীঃ তাদের দ্বারা মানত পুরা করা হয়ে থাকে
৬২৩৫। ইয়াহইয়া ইবনু সালিহ (রহঃ) … সাঈদ ইবনু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ইবনু উমর (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন, তোমাদেরকে কি মানত করতে নিষেধ করা হয়নি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো বলেছেনঃ মানত কোন কিছুকে বিন্দুমাত্র এগিয়ে আনতে পারে না এবং পিছিয়েও দিতে পারে না। তরে হ্যাঁ, মানতের দ্বারা কৃপণের কাছ থেকে (কিছু মাল) বের করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৬ | 6236 | ٦۲۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৪. মানত পুরা করা এবং আল্লাহর বাণীঃ তাদের দ্বারা মানত পুরা করা হয়ে থাকে
৬২৩৬। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানত করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেনঃ এতে কিছুই রদ হয় না, কিন্তু কৃপণ থেকে মাল বের করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৭ | 6237 | ٦۲۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৪. মানত পুরা করা এবং আল্লাহর বাণীঃ তাদের দ্বারা মানত পুরা করা হয়ে থাকে
৬২৩৭। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানত মানুষকে এমন বস্তু এনে দিতে পারে না, যা আমি তাকদীরে নির্ধারিত করিনি। বরং মানতটি তাকদীরের মাঝেই ঢেলে দেয়া হয় যা তার জন্য নির্ধারন করা হয়েছে। সুতরাং এর মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলা কৃপনের কাছ থেকে মাল বের করে নিয়ে আসেন। আর তাকে এমন কিছু দিয়ে থাকেন যা পূর্বে তাকে দেওয়া হয়নি।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৮ | 6238 | ٦۲۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৫. মানত করে তা পূর্ণ না করা গুনাহর কাজ
৬২৩৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের-মধ্যে আমার যমানার লোকেরাই সর্বোত্তম, এরপর তাদের পরবর্তী যমানার লোকেরা, এরপর তাদের পরবর্তী লোকেরা। ইমরান (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার যমানা বলার পর দু’বার বলেছেন না কি তিনবার তা আমার স্মরণ নেই। এরপর এমন সব লোকের আবির্ভাব হবে যারা মানত করবে অথচ তা পূর্ন করবে না। তারা খেয়ানত করবে তাদের আমানতদার মনে করা হবে না। তাবা সাক্ষ্য প্রদান করবে অথচ তাদেরকে সাক্ষী দেওয়ার জন্য বলা হবে না। আর তাদের মাঝে হৃষ্টপুষ্টতা প্রকাশিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৩৯ | 6239 | ٦۲۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৬. ইবাদতের ক্ষেত্রে মানত করা। (এবং মহান আল্লাহর বাণীঃ) যা কিছু তোমরা ব্যয় কর অথবা যা কিছু তোমরা মানত কর আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২ঃ ২৭০)
৬২৩৯। আবূ নুয়াঈম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি এরূপ মানত করে যে, সে আল্লাহর আনুগত্য করবে তাহলে সে যেন তাঁর আনুগত্য করে। আর যে এরূপ মানত করে, সে আল্লাহর নাফরমানী করবে তাহলে সে যেন তার নাফরমানী না করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪০ | 6240 | ٦۲٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৭. কোন ব্যাক্তি জাহিলী যুগে মানত করল বা কসম করল যে, সে মানুষের সঙ্গে কথা বলবে না, অতঃপর সে ইসলাম গ্রহন করেছে
৬২৪০। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, উমর (রাঃ) একদা বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি জাহিলী যুগে মানত করেছিলাম যে, মসজিদে হারামে এক রাত ইতিকাফ করব। তিনি বললেনঃ তুমি তোমার মানত পুরা করে নাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪১ | 6241 | ٦۲٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৮. মানত আদায় না করে কোন ব্যক্তি যদি মারা যায়। ইবনু উমর (রাঃ) এক মহিলাকে নির্দেশ দিয়েছেন যার মাতা কুবার মাসজিদে নামায আদায় করবে বলে মানত করেছিল। তখন তিনি তাকে বলেছিলেন, তার পক্ষ থেকে নামায আদায় করে নিতে। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-ও এরূপ বর্ণনা করেছেন।
৬২৪১। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে ইবনু আব্বাস (রাঃ) এ মর্মে জানিয়েছেন যে, সা’দ ইবনু উবাদা আনসারী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জানতে চেয়েছিলেন তার মাতার কোন এক মানত সম্পর্কে, যা আদায় করার পূর্বেই তিনি ইন্তেকাল করেছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার মায়ের পক্ষ থেকে মানত আদায় করে দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করলেন। আর পরবর্তীতে এটাই সুন্নাত হিসাবে পরিগণিত হল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪২ | 6242 | ٦۲٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৮. মানত আদায় না করে কোন ব্যক্তি যদি মারা যায়। ইবনু উমর (রাঃ) এক মহিলাকে নির্দেশ দিয়েছেন যার মাতা কুবার মাসজিদে নামায আদায় করবে বলে মানত করেছিল। তখন তিনি তাকে বলেছিলেন, তার পক্ষ থেকে নামায আদায় করে নিতে। ইবনু আব্বাস (রাঃ)-ও এরূপ বর্ণনা করেছেন।
৬২৪২। আদম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জনৈক ব্যাক্তি এসে বলল যে, আমার বোন হাজ্জ (হজ্জ) করবে বলে মানত করেছিল। আর সে মারা গিয়েছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তার ওপর যদি কোন ঋণ থাকত তরে কি তুমি তা পূরণ করতে না? লোকটি বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ সুতরাং আল্লাহ তা’আলার হককে আদায় করে দাও। কেননা, আল্লাহর হক আদায় করাটা তো অধিক কর্তব্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৩ | 6243 | ٦۲٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৩। আবূ আসিম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ তা’আলার আনুগত্য করার মানত করে সে যেন তার আনুগত্য করে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহর নাফরমানী করার মানত করে সে যেন তার নাফরমানী না করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৪ | 6244 | ٦۲٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ এ ব্যাক্তিটি যে নিজের জানকে আযাবের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে নিশ্চয় এতে আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই। আর তিনি লোকটিকে দেখলেন যে, সে তার দু’টি পুত্রের মাঝে ভর করে হাঁটছে। ফাযারীও অত্র হাদীসটি … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৫ | 6245 | ٦۲٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৫। আবূ আসিম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে দেখতে পেলেন। লোকটি একটি রশির অথবা অন্য কিছুর সাহায্যে কাবা শরীফ তাওয়াফ করছে। তিনি সে রশিটি কেটে ফেললেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৬ | 6246 | ٦۲٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৬। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কা’বার তাওয়াফ করার সময় এক ব্যাক্তির কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকটি অন্য আরেকজনকে নাকে রশি লাগিয়ে টানছিল (আর সে তাওয়াফ করছিল) এতদৃষ্টে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বহস্তে তার রশিটি কেটে ফেললেন এবং হুকুম করলেন, যেন তাকে হাতে টেনে নিয়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৭ | 6247 | ٦۲٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৭৯. গুনাহর কাজের এবং ঐ বস্তুর মানত করা যার উপর অধিকার নেই
৬২৪৭। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা প্রদান করছিলেন। এক ব্যাক্তিকে দাঁড়ানো দেখে তার সম্পর্কে লোকদের কাছে জিজ্ঞাসা করলেন। লোকেরা বলল যে, এ লোকটির নাম আবূ ইসরাঈল। সে মানত করেছে ষে, দাঁড়িয়ে থাকবে, বসবে না, ছায়াতে যাবে না, কারও সঙ্গে কথা বলবে না এবং সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করবে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ লোকটিকে বলে দাও সে যেন কথা বলে, ছায়াতে যায়, বসে এবং তার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) সমাপ্ত করে।

আবদুল ওয়াহহাব, আইউব ও ইকরামার সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অত্র হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৮ | 6248 | ٦۲٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৮০. কোন ব্যক্তি যদি নির্দিষ্ট কয়েক দিন রোযা পালনের মানত করে আর তার মাঝে কুরবানীর দিনসমূহ বা ঈদুল ফিতরের দিন পড়ে যায়
৬২৪৮। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বাকর মুকাদ্দমী (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবদুল্লাহ ইবনু উমরকে এমন এক ব্যাক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল, যে ব্যাক্তি মানত করেছিল যে সে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন থেকে কোন দিনই বিরত থাকবে না। আর তার মাঝে কুরবানী বা ঈদুল ফিতরের দিন এসে পড়ল। তিনি বললেন, নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাঝে তোমাদের জন্য সুন্দরতম আদর্শ রয়েছে। তিনি ঈদুল ফিতরের এবং কুরবানীর দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন না। আর তিনি ঐ দিনগুলোর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করা জায়েযও মনে করতেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৪৯ | 6249 | ٦۲٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৮০. কোন ব্যক্তি যদি নির্দিষ্ট কয়েক দিন রোযা পালনের মানত করে আর তার মাঝে কুরবানীর দিনসমূহ বা ঈদুল ফিতরের দিন পড়ে যায়
৬২৪৯। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … যিয়াদ ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একবার ইবনু উমর (রাঃ) এর সঙ্গে ছিলাম। এক ব্যাক্তি তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, আমি মানত করেছিলাম যে, যতদিন আমি বেঁচে থাকব ততদিন প্রতি মঙ্গলবার এবং বুধবার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করব। কিন্তু এর মাঝে কুরবানীর দিন পড়ে গেল। (তখন এর কি হুকুম হবে?) তিনি বললেন, আল্লাহ তাআলা মানত পুরা করার হুকুম করেছেন; এদিকে কুরবানীর দিনে সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে। লোকটি প্রশ্নের পুনরাবৃত্তি করল। তিনি এরুপই উত্তর দিলেন, এর চেয়ে বেশি কিছু বললেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫০ | 6250 | ٦۲۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৮১. কসম ও মানতের মধ্যে ভূমি, বকরী, কৃষি ও আসবাবপত্র শামিল হয় কি ? এবং ইবনু উমর (রাঃ) এর হাদীস। তিনি বলেন নবী (সাঃ) এর কাছে একদা উমর (রাঃ) আরয করলেন যে, আমি এরূপ একখন্ড ভূমি লাভ করেছি যার চেয়ে উৎকৃষ্ট কোন মাল কখনও আমি পাইনি। তিনি বললেনঃ তুমি যদি চাও তবে মূল মালটিকে রেখে দিয়ে (তার তার থেকে অর্জিত লাভটুকু) দান করে দিতে পার। আবূ ত্বলহা (রাঃ) নবী (সাঃ) এর কাছে আরয করলেন যে, আমার নিকট বায়রুহা নামক আমার বাগানটি সবচেয়ে প্রিয় তার দেয়ালটি হচ্ছে মাসজিদে নববীর সম্মুখে।
৬২৫০। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে খায়বারের যুদ্ধের দিন বের হলাম। আমরা মাল, আসবাবপত্র ও কাপড়-চোপড় ব্যতীত স্বর্ণ বা রৌপ্য গনীমত হিসাবে পাইনি। বনী যুবায়র গোত্রের রিফাআ ইবনু যায়িদ নামক এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একটি গোলাম হাদিয়া দিলেন, যার নাম ছিল মিদআম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াদি উল কুরার দিকে রওয়ানা হলেন। তিনি যখন ওয়াদিউল কুরায় পৌছলেন, তখন মিদআম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সওয়ারীর হাওদা থেকে মালপত্রগুলি নামাচ্ছিলেন। তখন আকস্মিক একটি তীর এসে তার গায়ে বিদ্ধ হল এবং তাতে সে মারা গেল। লোকেরা বলল, এ লোকটির জন্য জান্নাতের সুসংবাদ। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কখনও না, কসম ঐ মহান সত্তার, যার হাতে আমার প্রাণ! খায়বারের যুদ্ধের দিন গনীমতের মাল থেকে বণ্টনের পুর্বে যে চাঁদরটি সে নিয়ে গিয়েছিল তার গায়ে তা লেলিহান শিখা হয়ে জ্বলবে। এ কথাটি যখন লোকেরা শুনতে পেল, তখন এক ব্যাক্তি একটি বা দু’টি ফিতা নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে হাযির হল। তখন তিনি বললেনঃ এ হচ্ছে জাহান্নামের একটি ফিতা বা জাহান্নামের দু’টি ফিতা।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫১ | 6251 | ٦۲۵۱

পরিচ্ছদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ এরপর এর কাফফারা দশজন দরিদ্রকে (মধ্যম ধরনের) আহার্য দান (৫ঃ ৮৯) যখন এ আয়াত নাযিল হল, তখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যে হুকুম দিয়েছিলেন তা হচ্ছেঃ ফিদইয়া এর মধ্যে সাওম, সাদকা অথবা কুরবানী করা। ইবন আব্বাস, আতা ও ইকরামা থেকে বর্ণিত আছে যে, কুরআন মাজীদ যেখানে أَوْ أَوْ (অথবা অথবা) শব্দ আছে কুরআনের অনুসারীদের জন্য সেখানে ইখতিয়ার রয়েছে। নবী (সাঃ) কা’ব (রাঃ) কে ফিদইয়া আদায়ের ব্যাপারে ইখতিয়ার দিয়েছিলেন।
৬২৫১। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … কাব ইবনু উজরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন তিনি বললেনঃ কাছে এসো। আমি তার নিকটে গেলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমাকে কি তোমার উকুন যন্ত্রণা দিচ্ছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) অথবা সাদাকা অথবা কুরবানী করে ফিদইয়া আদায় কর। ইবনু আউন আইউব থেকে আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) হচ্ছে তিন দিন, কুরবানী হল একটি বকরী আর মিসকীনের সংখ্যা হল ছয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫২ | 6252 | ٦۲۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৮২. মহান আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ তোমাদের শপথ হতে মুক্তি লাভের ব্যবস্থা করেছেন। আল্লাহ তোমাদের সহায় আর তিনি সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময় (৬৬ঃ ২) আর ধনী ও দরিদ্র কখন কার উপর কাফফারা ওয়াজিব হয়
৬২৫২। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ব্যাক্তি এসে বলল, আমি ধবংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ তোমার কি অবস্থা? লোকটি বলল, রমযানে আমি আমার স্ত্রীর সাথে (দিনের বেলা) সহবাস করেছি। তিনি বললেনঃ তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে সক্ষম? লোকটি বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি তুমি দু’মাস লাগাতার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে পারবে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তা হলে কি তুমি ষাটজন মিসকীনকে খানা খাওয়াতে সক্ষম হবে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ বস। লোকটি বসল। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ‘আরক’ আনা হলো যাতে ছিল খেজুর। আর ‘আরক’ হচ্ছে বড় ধরনের পরিমাপ পাত্র। তিনি বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং তা সাদাকা করে দাও। লোকটি বলল, এটা কি আমার চাইতে অধিকতর অভাবীকে প্রদান করব? তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে ফেললেনঃ এমন কি তার মাড়ির দন্ত মুবারক পর্যন্ত দেখা গেল। তিনি বললেনঃ এটা তোমার পরিবারকে খাওয়াও।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৩ | 6253 | ٦۲۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৩. যে ব্যক্তি কাফফারা আদায়ে দরিদ্রকে সাহায্য করে
৬২৫৩। মুহাম্মাদ ইবনু মাহবুব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ কি ব্যাপার? লোকটি বলল, রমযানে (দিনের বেলা) আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করে ফেলেছি? তিনি বললেনঃ তুমি কি একটি গোলাম আযাদ করতে সক্ষম? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি তুমি দু’মাস লাগাতার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে সক্ষম? সে বলল, না। তবে কি তুমি ষাটজন মিসকীনকে খানা খাওয়াতে পারবে? লোকটি বলল, না। রাবী বলেনঃ এমন সময় এক আনসার ব্যাক্তি একটি ‘আরক’ নিয়ে উপস্থিত হল। আর আরক হচ্ছে পরিমাপ পাত্র; তার মাঝে খেজুর ছিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং তা সাদাকা করে দাও। সে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার চেয়ে যে অভাবী তাকে কি দান করব? সে আরও বললঃ কসম ঐ মহান সত্তার, যিনি আপনাকে হকের (দ্বীনের) সাথে প্রেরণ-করেছেন; মদিনার দু’উপত্যকার মধ্যবর্তী স্থানে আমার চেয়ে অধিক অভাবগ্রস্ত আর কেউ নেই। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যাও এগুলি তোমার পরিজনকে নিয়ে আহার করাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৪ | 6254 | ٦۲۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৪. দশজন মিসকিন কে কাফফারা প্রদান করা; চাই তারা নিকটাত্মীয় হোক বা দূরের হোক
৬২৫৪। আবদুল্লাহ ইরন মাসলামা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, আমি তো ধংস হয়ে গিয়েছি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার কি অবস্থা? লোকটি বলল, রমযানে (দিনের বেলায়) আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস করেছি। তিনি বললেনঃ একটি গোলাম আযাদ করার মত কি তোমার কাছে কিছু আছে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তবে কি তুমি দু’মাস লাগাতার সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতে পারবে? সে বলল, না। বললেনঃ তাহলে কি তুমি ষাটজন মিসকীনকে আহার করাতে পারবে? সে বলল, আমার কাছে এখন কিছু নেই। এমন সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একটি আরক আনা হল যাতে খেজুর ছিল। তখন তিনি বললেনঃ এটা নিয়ে নাও এবং তা সাদাকা করে দাও। সে বলল, আমার চেয়ে যে অধিকতর অভাবী তাকে কি দেব? সে আরও বললঃ এখানকার দু’টি উপত্যকার মাঝে আমাদের চেয়ে অভাবী তো আর কেউ নেই। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং তোমার পরিবারকে আহার করাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৫ | 6255 | ٦۲۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৫. মাদীনার সা’ ও নাবী (সাঃ) এর মুদ্দ এবং এর বরকত। আর মাদীনাহবাসীগণ এর থেকে যুগযুগান্তর ধরে উত্তরাধিকারসুত্রে যা পেয়েছেন
৬২৫৫। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় সা’ ছিল তোমাদের এখনকার মুদ্দের হিসাবে এক মুদ্দ ও এক মুদ্দের এক-তৃতীয়াংশ পরিমাণ। এরপর উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) এর যামানায় তার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৬ | 6256 | ٦۲۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৫. মাদীনার সা’ ও নাবী (সাঃ) এর মুদ্দ এবং এর বরকত। আর মাদীনাহবাসীগণ এর থেকে যুগযুগান্তর ধরে উত্তরাধিকারসুত্রে যা পেয়েছেন
৬২৫৬। মুনয়ির ইবুনুল ওয়ালীদ জারুদী (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ইবনু উমর (রাঃ) রমযানের ফিতরা আদায় করতেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুদ্দ অর্থাৎ প্রথম মুদ্দ এর মাধ্যমে। আর কসমের কাফফারাতেও তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুদ্দ ব্যাবহার করতেন। আবূ কুতায়বা বলেনঃ মালিক (রহঃ) আমাদেরকে বলেছেন যে, আমাদের মুদ্দ তোমাদের মুদ্দ অপেক্ষা বড়। আর আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুদ্দের মাঝেই আধিক্য দেখি। রাবী বলেন, আমাকে মালিক (রহঃ) বলেছেনঃ তোমাদের কাছে কোন বাদশাহ এসে যদি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুদ্দ থেকে তোমাদের মুদ্দকে ছোট করে দিয়ে থাকেন, তাহলে তোমরা কিসের মাধ্যমে (ওযন করে) মানুষদেরকে দিতে? আমি বললাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুদ্দ দিয়েই প্রদান করতাম। তিনি বললেনঃ তোমরা কি দেখছ না যে, পরিমাপের ব্যাপারটা এভাবেই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুদ্দের দিকে প্রত্যাবর্তন করছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৭ | 6257 | ٦۲۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৫. মাদীনার সা’ ও নাবী (সাঃ) এর মুদ্দ এবং এর বরকত। আর মাদীনাহবাসীগণ এর থেকে যুগযুগান্তর ধরে উত্তরাধিকারসুত্রে যা পেয়েছেন
৬২৫৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করেছেনঃ হে আল্লাহ! তুমি তাদের (উম্মাতের) কায়ল (মাপে), সা ও মুদ্দের মাঝে বরকত প্রদান কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৮ | 6258 | ٦۲۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৬. মহান আল্লাহর বাণীঃ অথবা গোলাম আযাদ করা। এবং কোন প্রকারের গোলাম আযাদ করা উত্তম
৬২৫৮। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুর রহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি একটি মুসলমান গোলাম আযাদ করবে আল্লাহ তা’আলা সে গোলামের প্রতিটি অঙ্গের বিনিময়ে জাহান্নামের আগুন থেকে তার প্রতিটি অংকে মুক্ত করবেন। এমন কি তার গুপ্তাঙ্গকেও গোলামের গুপ্তাঙ্গের বিনিময়ে মুক্ত করবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৫৯ | 6259 | ٦۲۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৭. কাফফারা আদায়ের ক্ষেত্রে মুদাব্বার, উম্মু ওয়ালাদ, মুতাকাব এবং যিনার সন্তান আযাদ করা। এবং তাউস বলেছেন, উম্মে ওয়ালাদ এবং মুদাব্বার আদায় করা চলবে।
৬২৫৯। আবূ নুমান (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, আনসার সম্প্রদায়ের এক ব্যাক্তি তার গোলামকে মুদাব্বীর বানালো। ঐ গোলাম ব্যতীত তার আর কোন মাল ছিল না। খবরটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছল। তিনি বললেনঃ গোলামটিকে আমার কাছ থেকে কে ক্রয় করবে? নুআয়ম ইবনু সাহহাম (রাঃ) তাকে আটশ দিরহামের বিনিময়ে ক্রয় করে নিল। সনদস্হিত রাবী আমর (রাঃ) বলেনঃ আমি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, সে গোলামটি ছিল কিবতী আর (আযাদ করার) প্রথম বছরেই সে মারা গিয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬০ | 6260 | ٦۲٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৮. যখন কেউ দুজনের মধ্যে শরীকানা কোন গোলাম আযাদ করে অথবা কাফফারার ক্ষেত্রে গোলাম আযাদ করে তখন তার ওয়ালাতে (স্বত্বাধিকারী) কে পাবে?
৬২৬০। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বাবীরা নাম্নী বাদীকে ক্রয় করতে চাইলে তার মালিকগণ তার উপর ওয়ালা এর শর্তারোপ করল। আয়িশা (রাঃ) ব্যাপারটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ তাকে তুমি ক্রয় করে নাও কেননা ওয়ালা (স্বত্বাধিকার) হল ঐ ব্যাক্তির জন্য যে আযাদ করে দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬১ | 6261 | ٦۲٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৯. কসমের ক্ষেত্রে ইনশাআল্লাহ বলা
৬২৬১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ মূসা আল-আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা কতিপয় আশাআরী লোকের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একটি বাহন চাইবার জন্য এলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে বাহন দিতে পারব না। কারণ, এমন কিছু আমার নিকট নেই যা বাহন হিসাবে তোমাদেরকে দিতে পারি। এরপর আল্লাহ তা’আলা যতক্ষন চাইলেন আমরা অবস্থান করলাম। এমন সময় তাঁর নিকট কিছু উট আনা হল। তখন তিনি আমাদেরকে তিনটি উট দেওয়ার জন্য হুকুম করলেন। আমরা যখন রওনা করলাম, তখন পরস্পরে বলতে লাগলাম যে, আল্লাহ তো আমাদের বরকত দিবেন না।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য যখন এলাম তখন তিনি আমাদেরকে বাহন দিবেন না বলে কসম করলেন। এরপরও আমাদেরকে বাহন দিয়ে দিলেন। আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফিরে এসে ব্যাপারটি তাঁর কাছে উল্লেখ করলাম। তখন তিনি বললেনঃ আমি তো তোমাদেরকে বাহন দেইনি; বরং আল্লাহ তা’আলা দিয়েছেন। আল্লাহর কসম! ইনশাআল্লাহ আমি যখন কোন বিষয়ে কসম কবি আর তার বিপরীতটির মাঝে মঙ্গল দেখতে পাই তখন কসমের কাফফারা আদায় করে দেই। আর যেটি কল্যাণকর সেটিই বাস্তবায়িত করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬২ | 6262 | ٦۲٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৯. কসমের ক্ষেত্রে ইনশাআল্লাহ বলা
৬২৬২। আবু নুমান (রহঃ) … হাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিন্তু আমি আমার কৃত কসমের কাফফারা আদায় করি এবং যেটি কল্যাণকর সেটি বাস্তবায়িত করি। অথবা বলেছেনঃ যেটি কল্যাণকর সেটি বাস্তবায়িত করি এবং এর কাফফারা আদায় করে দেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৩ | 6263 | ٦۲٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৮৯. কসমের ক্ষেত্রে ইনশাআল্লাহ বলা
৬২৬৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সুলায়মান (আলাইহিস সালাম) একদা বলেছিলেন যে, অবশ্যই আজ রাতে আমি নব্বইজন স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হব। তারা প্রত্যেকেই পুত্র সন্তান প্রসব করবে যারা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করবে। তখন তার সাথী (রাবী সুফিয়ান সাথী দ্বারা ফেরেশতা বুঝিয়েছেন) বলল, আপনি ইনশাআল্লাহ বলুন। কিন্তু তিনি তা ভুলে গেলেন এবং সকল স্ত্রীর সাথে মিলিত হলেন। তবে একজন ব্যতীত অন্য কোন স্ত্রীর গর্ভ থেকেই কোন সন্তান পয়দা হল না; তাও ছিল অপূর্ণাঙ্গ।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) এ ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনি কসমের মাঝে যদি ইনশাআল্লাহ বলতেন তাহলে তার কসময় ভঙ্গ হত না আবার উদ্দেশ্যও সাধিত হত। একবার আবূ হুরায়রা (রাঃ) এরূপ বর্ণনা করলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনি যদি “ইস্তিসনা” করতেন (অর্থাৎ ইনশাআল্লাহ বলতেন)। আবূ যিনাদ আরাজের মাধ্যমে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের অনুরূপ বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৪ | 6264 | ٦۲٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৭৯০. কসম ভঙ্গ করার পূর্বে এবং পরে কাফফারা আদায় করা
৬২৬৪। আলী ইবনু হুজর (রহঃ) … যাহদাম জারমী (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমরা একদা আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) এর নিকট ছিলাম। আমাদের এবং জারম গোত্রের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও সুসম্পর্ক বিদ্যমান ছিল। রাবী বলেনঃ তার জন্য খানা পেশ করা হল, তাতে ছিল মুরগীর গোশত। তাদের দলের মাঝে বনী তাইমিল্লাহ গোত্রের এক ব্যাক্তি ছিল যার গায়ের রং ছিল লাল যেন দেখতে গোলাম। রাবী বলেনঃ লোকটি খানার কাছেও গেল না। আবূ মূসা আশআরী তাকে বললেনঃ কাছে এসো (খানাতে শরীক হও)। কেননা, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গোশত খেতে দেখেছি। লোকটি বলল, আমি একে (মুরগী) কিছু খেতে দেখেছি; ফলে আমি এটিকে ঘৃণা করছি। এবং সে থেকে কসম করেছি যে, কখনও আর এটি খাব না।

আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, কাছে এসো; আমি তোমাকে এ সম্পর্কে অবহিত করব। একদা আমরা আশআরী সম্প্রদায়ের একটি দলের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একটি বাহন চাইবার জন্য আসলাম। তখন তিনি যাকাতের উট বণ্টন করছিলেন। আইয়্যুব বলেন, আমার মনে হয় তিনি তখন রাগান্বিত হয়ে বলেছিলেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদেরকে বাহন দিব না। আর আমার কাছে বাহনযোগ্য কোন কিছুই নেই। বাবী বলেনঃ আমরা তখন প্রস্হান করলাম। এমন সময় তাঁর নিকট গনীমতের কয়েকটি উট আনা হল। তিনি বললেনঃ ঐ আশআরী লোকগুলো কোথায়? ঐ আশ আরী লোকগুলো কোথায়? তখন আমরা ফিরে এলাম এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঁচটি আকর্ষনীয় উট আমাদেরকে দেওয়ার জন্য হুকুম করলেন। আমরা উটগুলো নিয়ে রওনা হলাম।

এমন সময় আমি আমার সঙ্গীদেরকে বললাম, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য এসেছিলাম। আর তিনি আমাদেরকে বাহন দিবেন না বলে কসম করেছিলেন। কিন্তু এরপরে আমাদের কাছে লোক পাঠালেন এবং আমাদেরকে বাহন দিয়ে দিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কসম ভুলে গিয়েছেন। আল্লাহর কসম! আমরা যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার কসমকে ভুলিয়ে দিয়ে থাকি তাহলে তো আমরা কখনও কৃতকার্য হতে পারব না। চল, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফিরে যাই এবং তার কসম সম্পর্কে স্মরণ করিয়ে দেই।

এরপর আমরা ফিরে গিয়ে বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আপনার কাছে বাহন চাওয়ার জন্য এসেছিলাম, আপনি আমাদেরকে বাহন দিবেন না বলে কসম করেছিলেন। কিন্তু পরে আবার বাহন দিয়েছিলেন। এতে আমরা ধারণা করলাম বা বুঝতে পারলাম, আপনি হয়ত কসম ভুলে গিয়েছেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা চলে যাও। নিশ্চয়ই আল্লাহই তো তোমাদেরকে বাহন দিয়েছেন। আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই আমি যখন আল্লাহর ইচ্ছায় কোন বিষয়ে কসম করি আর তার অন্যটির মাঝে মঙ্গল দেখতে পাই তখন যেটার মধ্যে কল্যান আছে সেটি বাস্তবায়িত করি এবং কসমের কাফফারা আদায় করে দেই।

হাম্মাদ ইবনু যায়িদ, আইউব, আবূ কিলাবা এবং কাসিম ইবনু আসিম কুলায়বী (রহঃ) থেকে উপরোক্ত হাদীসে ইসমাঈল ইবনু ইব্রাহিমের অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৫ | 6265 | ٦۲٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৯০. কসম ভঙ্গ করার পূর্বে এবং পরে কাফফারা আদায় করা
৬২৬৫। কুতায়রা (রহঃ) … যাহদাম (রাঃ) থেকে উক্তরূপ বর্ণিত আছে। (দেখুন হাদিস নম্বর ৬২৬৪)

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৬ | 6266 | ٦۲٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৯০. কসম ভঙ্গ করার পূর্বে এবং পরে কাফফারা আদায় করা
৬২৬৬। আবূ মামার (রহঃ) … যাহদাম (রাঃ) থেকেও উক্তরূপ বর্ণিত আছে। (দেখুন হাদিস নম্বর ৬২৬৪)

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৭ | 6267 | ٦۲٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৯০. কসম ভঙ্গ করার পূর্বে এবং পরে কাফফারা আদায় করা
৬২৬৭। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুর রাহমান ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তুমি নেতৃত্ব চাইও না। কেননা, চাওয়া ব্যতীত যদি তোমাকে তা দেওয়া হয় তবে তোমাকে তাতে সাহায্য করা হবে। আর যদি চাওয়ার পর তা তোমাকে দেওয়া হয় তবে তা তোমার দায়িত্বেই ছেড়ে দেওয়া হবে (অর্থাৎ ভাল মন্দের দায়িত্ব তোমারই থাকবে)। তুমি যখন কোন কিছুতে কসম কর আর কল্যাণ তার অন্যটির মাঝে দেখতে পাও। তখন যেটির মাঝে কল্যান সেটাই বাস্তবায়িত কর। আর তোমার কৃত কসমের কাফফারা আদায় করে দাও। আশহাল ইবনু হাতিম, ইবনু আউন থেকে এবং উসমান ইবনু আমর এর অনূসরণ করেছেন এবং ইউনুস, সিমাক ইবনু আতিয়্যা, সিমাক ইবনু হারব, হুমায়দ, কাতাদা, মানসুর, হিশাম ও রাবী উক্ত বর্ননায় আবদুল্লাহ ইবনু আউন এর অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৮ | 6268 | ٦۲٦۸

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ আল্লাহ তোমাদের সন্তান সম্বন্ধে নির্দেশ দিচ্ছেন … দুই আয়াত পর্যন্ত
৬২৬৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি অসুস্থ হয়ে পড়লাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) আমার শুশ্রুষা করলেন। তাঁরা উভয়েই পদব্রজে আসলেন এবং আমার কাছে উপস্থিত হলেন। আমি তখন বেহুশ অবস্হায় ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন এবং আমার উপর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি ঢেলে দিলেন। আমি হুশে এসে বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার সম্পদের ব্যাপারে কি করব। আমার সস্পদের ব্যাপারে কি ব্যবস্হা গ্রহণ করব? তখন তিনি আমাকে কোন উত্তর দিলেন না। অবশেষে উত্তরাধিকার সংক্রান্ত আয়াত নাযিল হল।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৬৯ | 6269 | ٦۲٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৯১. উত্তরাধিকার সংক্রান্ত বিদ্যা শিক্ষা দেওয়া। উকবা ইবন আমির (রাঃ) বলেন, যারা ধারনাপ্রসূত কথা বলে তাদের এ ধরনের কথা বলার পূর্বেই তোমরা (উত্তরাধিকার বিদ্যা) শিখে নাও
৬২৬৯। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ধারণা করা পরিহার কর, কেননা, ধারণা করা হচ্ছে সর্বাধিক মিথ্যা। কারও দোষ তালাশ করো না, দোষ-বের করার জন্য গুপ্তচরবৃত্তি করো না, একে অপরের প্রতি হিংসা পোষণ করো না, পরিবারে সম্পর্কচ্ছেদ করো না। আল্লাহর বান্দা পরস্পরে ভাই ভাই হয়ে যাও।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭০ | 6270 | ٦۲۷۰

পরিচ্ছদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রেখে যাওয়া সস্পত্তির) উত্তরাধিকারিত্ব চাওয়ার জন্য একদা ফাতিমা ও আব্বাস (রাঃ) আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর কাছে আসলেন। তাঁরা ঐ সময় ফাদাক ভূখণ্ডের এবং খায়বারের অংশ দাবি করছিলেন। তখন আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) তাদের উভয়ের প্রতি লক্ষ্য করে বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকারী হবে না, আমরা যা রেখে যাব তা সবই হবে সাদাকা। এ মাল থেকে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার ভোগ করবেন। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ, আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি এতে যেভাবে করতে দেখেছি, তা সেভাবেই বাস্তবায়িত করব। রাবী বলেন, এরপর থেকে ফাতিমা (রাঃ) তাঁকে পরিহার করেছিলেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত তার সাথে কথা বলেন নাই।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭১ | 6271 | ٦۲۷۱

পরিচ্ছদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭১। ইসমাঈল ইবনু আবান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকারী হবে না। আমরা যা কিছু রেখে যাব সবই হবে সাদাকাস্বরূপ।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭২ | 6272 | ٦۲۷۲

পরিচ্ছদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭২। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … মালিক ইবনু আউস ইবনু হাদাছান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। মুহাম্মদ ইবনু জুবায়র ইবনু মুতঈম আমাকে (মালিক ইবনু আউস ইবনু হাদাছান) এর পক্ষ থেকে একটি ঘটনা বর্ণনা করলেন। তিনি বলেনঃ আমি মালিক ইবনু আউস (রাঃ) এর কাছে চলে গেলাম এবং ঘটনাটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন তিনি বললেন যে, আমি উমর (রাঃ) এর নিকট গিয়েছিলাম। এমন সময় তাঁর দারোয়ান ইয়ারফা সেখানে উপাস্থিত হয়ে বলল, আপনি উসমান, আবদুর রাহমান, যুবায়র ও সা’দ (রাঃ) কে ভিতরে আসার অনুমতি দিবেন কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি তাঁদেরকে ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি দিলেন। এরপর সে উমর (রাঃ) এর নিকট এসে বলল, আপনি আলী ও আব্বাস (রাঃ) কে ভিতরে আসার অনুমতি দিবেন কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ হে আমীরুল মুমিনীন! আমার এবং এর মাঝে মীমাংসা করে দিন।

উমর (রাঃ) বললেনঃ আপনাদেরকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলি যার হুকুমে আকাশ ও যমীন প্রতিষ্ঠিত আছে; আপনারা কি জানেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, আমাদের কোন উত্তরাধিকারী থাকবে না, আমরা যা কিছু রেখে যাব সবই হবে সাদাকা স্বরূপ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দ্বারা নিজেকেই উদ্দেশ্য করেছিলেন। দলের লোকেরা বলল, অবশ্যই তিনি তা বলেছেন। এরপর তিনি আলী ও আব্বাস (রাঃ)-এর দিকে মুখ করে বললেনঃ আপনারা কি জানেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছিলেন? তারা উভয়ে জবাব দিলেন, অবশ্যই তিনি তা বলেছেন।

উমর (রাঃ) বললেনঃ এখন আমি এ ব্যাপারে আপনাদের কাছে বর্ণনা রাখছি যে, আল্লাহ তায়ালা এ ফায় (বিনা যুদ্ধেপ্রাপ্ত ধন সম্পদ) এর ব্যাপারে তার রাসুলকে বিশেষত্ব প্রদান করেছেন, যা আর অন্য কাউকে করেননি। তিনি (আল্লাহ তা’আলা) বলেনঃ ‏مَا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَى رَسُولِهِ‏ থেকে ‏قَدِيرٌ পর্যন্ত তিলাওয়াত করে শোনালেন। এবং বললেনঃ এটা তো ছিল বিশেষ করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য। আল্লাহ তা’আলার কসম! তিনি আপনাদের ব্যতীত অন্য কারও জন্য এ মাল সংরক্ষণ করেননি। আর আপনাদের ব্যতীত অন্য কাউকে এতে প্রাধান্য দেননি। এ মাল তো আপনাদেরই তিনি দিয়ে গিয়েছেন এবং আপনাদের মাঝেই বণ্টন করেছেন। পরিশেষে এ মালটুকু অবশিষ্ট ছিল। তখন তিনি তার পরিবার-পরিজনের বছরের ভরণ-পোষনের জন্য এ থেকে খরচ করতেন। এরপর যা অবশিষ্ট থাকত তা আল্লাহর মাল হিসেবে (তার রাস্তায়) খরচ করতেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার গোটা জীবদ্দশায়ই এরূপ করে গিয়েছেন। আমি আপনাদের আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, এ কথাগুলো কি আপনারা জানেন? তারা বললেনঃ হ্যাঁ। এরপর তিনি আলী (রাঃ) ও আব্বাস (রাঃ) এর দিকে লক্ষ্য করে বললেনঃ আমি আপনাদের দু’জনকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আপনারা কি এ কথাগুলো জানেন? তাঁরা উভয়ে বললেনঃ হ্যাঁ। এরপর আল্লাহ তার নাবীকে ওফাত দান করলেন তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আমি আল্লাহর রাসুলের ওলী। এরপর উক্ত মাল হস্তগত করলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেভাবে তা ব্যবহার করেছিলেন তিনিও তা সেভাবে ব্যবহার করেছেন। এরপর আল্লাহ তাআলা আবূ বকর (রাঃ)-এর ওফাত দান করলেন। তখন আমি বললাম, আমি আল্লাহর রাসুলের ওলীর ওলী। আমি এ মাল হস্তগত করলাম এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) এ মালের ব্যাপারে যে নীতি অবলম্বন করেছিলেন দু’বছর যাবত আমি এ মালের ব্যাপারে সেই নীতি অবলম্বন করে আসছি।

এরপর আপনারা আমার কাছে আসলেন আর আপনাদের উভয়ের বক্তব্যও এক এবং ব্যাপারটিও অনুরূপ। [হে আব্বাস (রাঃ)] আপনি তো আপনার ভাতিজার থেকে প্রাপ্য অংশ আমার কাছ চাইছেন। আর আলী (রাঃ) আমার কাছে তার স্ত্রীর অংশ যা তার পিতা থেকে প্রাপ্য আমার কাছে তলব করছেন। সুতরাং আমি বলছি, আপনারা যদি এটা চান তাহলে আমি আপনাদেরকে তা দিয়ে দিতে পারি। এরপর কি আপনারা অন্য কোন ফায়সালা আমার কাছে চাইবেন? ঐ আল্লাহর কসম! যার হুকুমে আকাশ ও যমীন প্রতিষ্ঠিত আছে। আমি যে ফায়সালা প্রদান করলাম কিয়ামত পর্যন্ত এ ছাড়া আর অন্য কোন ফায়সালা দিতে পারব না। আপনারা যদি এ ধনসম্পদের শৃংখলা বিধানে অক্ষম হন তবে তা আমার কাছে ফিরিয়ে দিবেন, আমি তার শৃংখলা বিধান করব।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৩ | 6273 | ٦۲۷۳

পরিচ্ছদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭৩। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার রেখে যাওয়া সম্পত্তির দ্বীনার বন্টনযোগ্য নয়। আমার সহধর্মিণীগণের এবং আমার কর্মচারীবৃন্দের খরচ ব্যতীত যতটুকু থাকবে তা হবে সাদাকাতুল্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৪ | 6274 | ٦۲۷٤

পরিচ্ছদঃ ১৭৯২. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমাদের কোন উত্তরাধিকার হবে না, আর যা কিছু আমরা রেখে যাই সবই হবে সদাকাসরূপ
৬২৭৪। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের পর তার সহধর্মিণীগণ আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) এর কাছে আপন আপন উত্তরাধিকার চাওয়ার জন্য উসমান (রাঃ) কে পাঠানোর ইচ্ছা করলেন। তখন আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি এরূপ বলেননি, আমাদের কোন উত্তরাধিকারী নেই? আমরা যা রেখে যাব সবই হবে সাদাকাতুল্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৫ | 6275 | ٦۲۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ যে ব্যক্তি মাল রেখে যায় তা তার পরিবার-পরিজনের হবে
৬২৭৫। আবদান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মু’মিনদের নিকট তাদের প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয়। যে ব্যাক্তি ঋনগ্রস্ত অবস্থায় মারা যায় আর সে যদি ঋণ পুরা করার মত কোন সম্পদ রেখে না যায় তাহলে তা আদায় করার দায়িত্ব আমার। আর যে ব্যাক্তি কোন মাল রেখে মারা যায় তা হবে তার উত্তরাধিকারীদের জন্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৬ | 6276 | ٦۲۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৪. পিতা-মাতার পক্ষ থেকে সন্তানের উত্তরাধিকার। যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) বলেন, কোন পুরুষ বা নারী যদি কন্যা সন্তান রেখে যায় তাহলে সে অর্ধাংশ পাবে। আর যদি তাদের সংখ্যা দুই বা ততোধিক হয় তারা পাবে দুই-তৃতীযাংশ। আর যদি উক্ত কন্যা বা কন্যা সমূহের সঙ্গে পুরুষ থাকে তাহলে প্রথমে অংশীদারদেরকে তাদের প্রাপ্ত দেয়ার পর বাকি অংশ দুই নারী সমান এক পুরুষ ভিত্তিতে বণ্টন করা হবে।
৬২৭৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মীরাস তার হকদারদেরকে পৌছিয়ে দাও। এরপর যা অবশিষ্ট থাকে, তা নিকটতম পুরুষের জন্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৭ | 6277 | ٦۲۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৫. কন্যা সন্তানের উত্তরাধিকার
৬২৭৭। হুমায়দী (রহঃ) … সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মক্কাতে একদা খুব অসুস্থ হয়ে পড়লাম এবং এতে আমি মৃতপ্রায় হয়ে গিয়েছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেবা শুশ্রুষা করার জন্য আমার কাছে তশরীফ আনলেন। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার তো অনেক ধন-সম্পদ রয়েছে। আর আমার একমাত্র কন্যা ব্যতীত আর কোন উত্তরাধিকারী নেই। আমি কি দু’তৃতীয়াংশ মাল দান করে দেব? তিনি বললেনঃ না। (রাবী বলেন) আমি বললাম, তবে কি অর্ধেক দান করে দেব? তিনি বললেনঃ না। আমি বললাম, এক-তৃতীয়াংশ কি দান করে দেব? তিনি বললেন, এক-তৃতীয়াংশতো অনেক। তুমি তোমার সন্তানকে অভাবগ্রস্ত অবস্হায় রেখে যাবে আর সে মানুষের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা করবে, এর চেয়ে তাকে সবল অবস্হায় রেখে যাওয়াটাই তো উত্তম।

তুমি (পবিবার-পরিজনের জন্য) যা খরচ করবে তার প্রতিদান তোমাকে দেওয়া হবে। এমন কি ঐ লোকমাটিরও প্রতিদান তোমাকে দেওয়া হবে যা তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দাও। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি কি আমার হিজরতকৃত স্থান থেকে পশ্চাতে থেকে যাব? তিনি বললেন, আমার পশ্চাতে থেকে গিয়ে তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য যে আমলই করবে তাতে তোমার মর্যাদা ও সম্মান বৃদ্ধি পাবে। সম্ভবত তুমি আমার পরেও জীবিত থাকবে। এমন কি তোমার দ্বারা বহু সম্প্রদায় উপকৃত হবে এবং অন্যেবা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু বেচারা সা’দ ইবনু খাওলী (রাঃ) এর জন্য আফসোস। মক্কাতেই হয়েছিল তার মৃত্যু। সে জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। “সুফিয়ান (রাঃ) বলেনঃ সা’দ ইবনু খাওলা (রাঃ) বনূ আমির ইবনু লুআই গোত্রের লোক ছিলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৮ | 6278 | ٦۲۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৫. কন্যা সন্তানের উত্তরাধিকার
৬২৭৮। মাহমূদ ইবনু গায়লান (রহঃ) … আলওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) আমাদের নিকট মুআজিম অথবা আমীর হিসাবে ইয়ামানে এলে আমরা তাঁর কাছে এমন এক ব্যাক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, যে লোকটি এক কন্যা ও একটি ভগ্নি রেখে মারা গিয়েছে। তখন তিনি কন্যাটিকে সম্পত্তির অর্ধেক ও বোনকে অর্ধেক প্রদান করলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৭৯ | 6279 | ٦۲۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৬. পুত্রের অবর্তমানে নাতির উত্তরাধিকার। যায়িদ (রাঃ) বলেন, পুত্রের সন্তানাদি পুত্রের মতই, যখন তাকে ছাড়া আর কোন সন্তান না থাকে। নাতিগণ পুত্রদের মত আর নাতনীগণ কন্যাদের মত। পুত্রদের মত নাতনীগণও উত্তরাধিকার হয়, আবার পুত্রগণ যেরূপ অন্যদেরকে মাহরুম করে নাতিগণও সেরূপ অন্যদেরকে মাহরুম করে। আর নাতিগণ পুত্রদের বর্তমানে উত্তরাধিকারী হয় না।
৬২৭৯। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রাপ্যাংশ (মিরাস) তাদের হকদারদের কাছে পৌছিয়ে দাও। এরপর যা অবশ্যই থাকবে তা নিকটতম-পুরুষের জন্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮০ | 6280 | ٦۲۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৭. কন্যার বর্তমানে পুত্র তরফের নাতনীর উত্তরাধিকার
৬২৮০। আদম (রহঃ) … হুযায়ল ইবনু শুরাহবীল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আবূ মূসা (রাঃ) কে কন্যা, পুত্র পক্ষের নাতনী এবং ভগ্নির উত্তরাধিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তখন তিনি বললেনঃ কন্যার জন্য অর্ধেক আর ভগ্নির জন্য অর্ধেক। (তিনি বললেন) তোমরা ইবনু মাসউদ (রাঃ) এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে দেখ, তিনিও হয়ত আমার মত উত্তর দিবেন। সুতরাং ইবনু মাসউদ (রাঃ) কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল এবং আবূ মূসা (রাঃ) যা বলেছেন সে সম্পর্কেও তাকে অবহিত করা হল। তিনি বললেনঃ আমি তো গোমরা হয়ে যাব, হেদায়েত প্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারব না। আমি এ ব্যাপারে তোমাদের মাঝে ঐ ফায়সালাই করব, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে ফায়সালা প্রদান করেছিলেন। কন্যা পাবে অর্ধাংশ আর নাতনী পাবে ষষ্ঠাশ। এভাবে দুতৃতীয়াংশ পুরু হবে। অবশিষ্ট এক-তৃতীয়াংশ থাকবে ভন্নির জন্য। এরপর আমরা আবূ মূসা (রাঃ)-এর কাছে আসলাম এবং ইবনু মাসউদ (রাঃ) যা বললেন, সে সম্পর্কে তাঁকে অবহিত করলাম। তখন তিনি বললেনঃ যতদিন এ অভিজ্ঞ আলিম (জ্ঞানতাপস) তোমাদের মাঝে বিদ্যমান থাকবে ততদিন আমার কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করো না।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮১ | 6281 | ٦۲۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৮. পিতা ও ভ্রাতৃবৃন্দের বর্তমানে দাদার উত্তরাধিকার। আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ), ইবনু আব্বাস (রাঃ) এবং ইবনু যুবায়র (রাঃ) বলেন যে, দাদা পিতার মতই। ইবনু আব্বাস (রাঃ) এরূপ পড়েছেন يَا بَنِي آدَمَ، وَاتَّبَعْتُ مِلَّةَ آبَائِي إِبْرَاهِيمَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ বস্তুত এরকম কেউ ই বলেননি যে, আবূ বকর (রাঃ)এর যামানায় কেউ তার বিরুদ্ধাচরণ করেছেন। অথচ সে সময়ে নবী করীম (সাঃ) এর অনেক সাহাবী বিদ্যমান ছিল। আর ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমার নাতি আমার উত্তরাধিকারী হবে, আমার ভাই নয়। তবে আমি আমার নাতির উত্তরাধিকারী হব না। তবে উমর আলী ইবনু্ মাসঊদ এবং যায়িদ (রাঃ) থেকে এ সম্পর্কে বিভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যায়।
৬২৮১। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ প্রাপ্যাংশ তার হকদারকে পৌছিয়ে দাও। এরপর যা অর্বশিষ্ট থাকবে তা নিকটতম পুরুষের জন্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮২ | 6282 | ٦۲۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৮. পিতা ও ভ্রাতৃবৃন্দের বর্তমানে দাদার উত্তরাধিকার। আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ), ইবনু আব্বাস (রাঃ) এবং ইবনু যুবায়র (রাঃ) বলেন যে, দাদা পিতার মতই। ইবনু আব্বাস (রাঃ) এরূপ পড়েছেন يَا بَنِي آدَمَ، وَاتَّبَعْتُ مِلَّةَ آبَائِي إِبْرَاهِيمَ وَإِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ বস্তুত এরকম কেউ ই বলেননি যে, আবূ বকর (রাঃ)এর যামানায় কেউ তার বিরুদ্ধাচরণ করেছেন। অথচ সে সময়ে নবী করীম (সাঃ) এর অনেক সাহাবী বিদ্যমান ছিল। আর ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমার নাতি আমার উত্তরাধিকারী হবে, আমার ভাই নয়। তবে আমি আমার নাতির উত্তরাধিকারী হব না। তবে উমর আলী ইবনু্ মাসঊদ এবং যায়িদ (রাঃ) থেকে এ সম্পর্কে বিভিন্ন বক্তব্য পাওয়া যায়।
৬২৮২। আবূ মা’মার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি যদি এ উম্মাত থেকে কাউকে খলীল (অন্তরঙ্গ বন্ধু) বানাতাম তবে তাকে [আবূ বকর (রাঃ)] কে বানাতাম। কিন্তু ইসলামী বন্ধুত্বই হচ্ছে সর্বোত্তম। أَفْضَلُ শব্দ বলেছেনঃ না কি خَيْرٌ এতে রাবীর সন্দেহ আছে। তিনি দাদাকে পিতার মর্যাদা দিয়েছেন أَنْزَلَهُ أَبًا‏ অথবা قَضَاهُ أَبًا বলেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৩ | 6283 | ٦۲۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৭৯৯. সন্তানাদির বর্তমানে স্বামীর উত্তরাধিকার
৬২৮৩। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (প্রথমে) মাল ছিল সন্তানাদির আর ওসিয়াত ছিল পিতামাতার জন্য। কিন্তু পরে আল্লাহ তা রহিত করে দিয়ে এর চেয়ে উত্তমটি প্রবর্তন করেছেন। পূরুষের জন্য নারীদের দু’জনের সমতূল্য অংশ নির্ধারণ করেছেন। আর পিতা-মাতার প্রত্যেকের জন্য এক-যষ্ঠাংশ নির্ধারণ করেছেন। স্ত্রীর জন্য নির্ধারণ করেছেন (সন্তান থাকা অবস্থায়) এক-অষ্টমাংশ এবং (সন্তান না থাকলে) এক-চতূর্থাংশ। আর স্বামীর জন্য (সন্তান না থাকলে) অর্ধেক আর (সন্তান থাকলে) এক-চতুর্থাংশ।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৪ | 6284 | ٦۲۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৮০০. সন্তানাদির বর্তমানে স্বামী ও স্ত্রীর উত্তরাধিকার
৬২৮৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বনী লিহয়ান গোত্রের জনৈক মহিলার একটি ভ্রুণপাত সংক্রান্ত ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি গোলাম বা দাসী প্রদানের নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি যে মহিলাটিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন সে মারা গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফায়সালা দিলেন, তার উত্তরাধিকার সুত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি তার পুত্রগণ ও স্বামীর জন্য। আর দিয়াত (গোলাম বা বাদী) তার আসাবার জন্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৫ | 6285 | ٦۲۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৮০১. কন্যাদের বর্তমানে ভগ্নি আসাবা হিসাবে উত্তরাধিকারিণী হয়
৬২৮৫। বিশর ইবনু খালিদ (রহঃ) … আল আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় আমাদের মাঝে এ ফায়সালা দিয়েছিলেন যে, কন্যা পাবে সম্পত্তির অর্ধেক আর ভগ্নির জন্যও অর্ধেক। এরপর সনদস্থিত রাবী সুলায়মান বলেন, তিনি (আল আসওয়াদ) আমাদের এ ব্যাপারে মীমাংসা করেছিলেন। তবে عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায়) কথাটি উল্লেখ করেনি।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৬ | 6286 | ٦۲۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৮০১. কন্যাদের বর্তমানে ভগ্নি আসাবা হিসাবে উত্তরাধিকারিণী হয়
৬২৮৬। আমর ইবনু আব্বাস (রহঃ) … হুযায়ল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেছেন, আমি এতে ঐ ফয়সালাই করব যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেছিলেন। অথবা তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (তা হচ্ছে) কন্যার জন্য সম্পত্তির অর্ধেক আর পুত্র পক্ষের নাতনীদের জন্য ষষ্ঠাংশ। এরপর যা অবশিষ্ট থাকবে তা ভগ্নির জন্য।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৭ | 6287 | ٦۲۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৮০২. ভগ্নিগণ ও ভ্রাতৃগণের উত্তরাধিকার
৬২৮৭। আবদুল্লাহ ইবনু উসমান (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট তশরীফ আনলেন। এসে উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি চাইলেন এবং উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র বেঁচে যাওয়া পানি থেকে আমার উপর ঢেলে দিলেন। তখন আমি প্রকৃতিস্থ হলাম এবং আরয করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার ভগ্নিগণ আছে ঐ সময় উত্তরাধিকার বিষয়ক আয়াত নাযিল হয়।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৮ | 6288 | ٦۲۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৮০৩. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) লোকেরা আপনার নিকট ব্যবস্থা জানতে চায়। বলুন, পিতা মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি সম্বন্ধে তোমাদেরকে আল্লাহ ব্যবস্থা জানাচ্ছেন … আয়াতের শেষ পর্যন্ত
৬২৮৮। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … বারআ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সর্বশেষ নাযিলকৃত আয়াত হচ্ছে সূরা নিসার আখেরী আয়াতঃ ‏يَسْتَفْتُونَكَ قُلِ اللَّهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلاَلَةِ‏

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৮৯ | 6289 | ٦۲۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৮০৪. (কোন মেয়েলোকের) দু’জন চাচাতো ভাই, তন্মধ্যে একজন যদি মা শরীক ভাই আর অপরজন যদি স্বামী হয়। আলী (রাঃ) বলেন, স্বামীর জন্য অংশ হচ্ছে অর্ধেক আর মা শরীক ভাই-এর অংশ এক ষষ্ঠাংশ। এরপর অবশিষ্টাংশ দু’ এর মাঝে আধাআধি হারে দিতে হবে।
৬২৮৯। মাহমুদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি মুমিনদের নিকট তাদের প্রাণের চেয়েও অধিক প্রিয়। যে ব্যাক্তি ধন-সম্পদ রেখে মারা যায় তার ধন-সম্পদ তার আসাবাগণ লাভ করবে। আর যে ব্যাক্তি বোঝা অথবা সন্তানাদি (ঋণ) রেখে মারা যায় আমিই হব তার অভিভাবক। সুতরাং আমার কাছেই যেন তা চাওয়া হয়।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯০ | 6290 | ٦۲۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৮০৪. (কোন মেয়েলোকের) দু’জন চাচাতো ভাই, তন্মধ্যে একজন যদি মা শরীক ভাই আর অপরজন যদি স্বামী হয়। আলী (রাঃ) বলেন, স্বামীর জন্য অংশ হচ্ছে অর্ধেক আর মা শরীক ভাই-এর অংশ এক ষষ্ঠাংশ। এরপর অবশিষ্টাংশ দু’ এর মাঝে আধাআধি হারে দিতে হবে।
৬২৯০। উমাইয়্যা ইবনু বিসতাম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ প্রাপ্যাংশ তার হকদারের কাছে পৌছিয়ে দাও। এরপর যা অবশিষ্ট থাকবে তার মালিক হবে তার নিকটতম পুরুষ ব্যাক্তি।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯১ | 6291 | ٦۲۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৮০৫. যাবিল আরহাম
৬২৯১। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ‏}‏ ‏{‏وَالَّذِينَ عَقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ‏ এ আয়াত সম্পর্কে বলেন যে, মুহাজিরগণ যখন মদিনায় আগমন করলেন, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুহাজির ও আনসারগগের মাঝে যে ভ্রাতৃত্ব বন্ধন স্থাপন করে দিয়েছিলেন, সে প্রেক্ষিতে আনসারগণের সাথে যাদের যাবিল আরহাম এর সম্পর্ক ছিল তা বাদ দিয়ে মুহাজিরগগ আনসারগণের সম্পতির উত্তরাধিকার হতেন। এরপর যখন وَلِكُلٍّ جَعَلْنَا مَوَالِيَ এর আয়াত নাযিল হয়, তখন وَالَّذِينَ عَقَدَتْ أَيْمَانُكُمْ আয়াতের বিধানটি রহিত হয়ে যায়।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯২ | 6292 | ٦۲۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৮০৬. লি’আনকারীদের উত্তরাধিকার
৬২৯২। ইয়াহইয়া ইবনু কাযাআ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় তার স্ত্রীর সঙ্গে লি-আন করেছিল। এবং তার সন্তানটিকেও অস্বীকার করল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের দু’জনের মাঝে (বিবাহ) বিচ্ছেদ করে দিলেন এবং সন্তানটি মহিলাকে দিয়ে দিলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৩ | 6293 | ٦۲۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৮০৭. শয্যাসঙ্গিনী আযাদ হোক বা বাঁদী, সন্তান শয্যাধিপতির
৬২৯৩। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, উতবা তার ভাই সা’দকে ওসীয়াত করল যে, যামাআ নামক বাদীর সন্তানটি আমার। তাই তুমি তাকে তোমার হস্তগত করে নাও। মক্কা বিজয়ের বছর সা’দ তাকে হস্তগত করলেন এবং বললেন যে, এ আমার ভ্রাতুষ্পুত্র। আমার ভাই এর সম্পর্কে ওসীয়্যত করে গিয়েছিলেন। তখন আবদ ইবনু যামআ দাঁড়িয়ে বললেন, এ তো আমার ভাই। কেননা, এ হচ্ছে আমার পিতার বাঁদীর পুত্র। এবং সে আমার পিতার শয্যাসঙ্গিনীর গর্ভে জন্ম নিয়েছে। উভয়েই তাঁদের মুকদ্দমা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পেশ করলেন।

তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আবদ ইবনু যামআ, এ ছেলে তুমিই পাবে। কেননা, সন্তান সে-ই পেয়ে থাকে যার শয্যাসঙ্গিনীর গর্ভে জন্ম নেয়। আর ব্যভিচারকারীর জন্য হল পাথর। এরপর তিনি সাওদা বিনত যামআকে বললেনঃ তুমি এ ছেলে থেকে পর্দা পালন করবে। কেননা, তিনি তার মাঝে উতবার সাদৃশ্য দেখতে পেয়েছিলেন। সুতরাং সাওদা (রাঃ) সে ছেলেটিকে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ (মৃত্যু) পর্যন্ত আর দেখেননি।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৪ | 6294 | ٦۲۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৮০৭. শয্যাসঙ্গিনী আযাদ হোক বা বাঁদী, সন্তান শয্যাধিপতির
৬২৯৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, সন্তান হল শয্যাধিপতির।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৫ | 6295 | ٦۲۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৮০৮. অভিভাকত্ব ঐ ব্যক্তির জন্য যে আযাদ করবে। আর লাকিত এর উত্তরাধিকার। ‘উমার (রাঃ) বলেন, লাকীত (কুড়িয়ে পাওয়া) ব্যক্তি আযাদ
৬২৯৫। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বারীরা (নামী বাঁদী) কে ক্রয় করতে চাইলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তাকে ক্রয় করতে পার। কেননা, অভিভাবকত্ব তো ঐ ব্যাক্তির জন্য, যে আযাদ করে। বারীরাকে একদা একটি বকরী সাদাকা দেওয়া হল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটি তার জন্য সাদাকা আর আমাদের জন্য হাদিয়া। হাকাম বলেন, বারীরার স্বামী একজন আযাদ ব্যাক্তি ছিল। আবূ আবদুল্লাহ [বুখারী (রহঃ)] বলেনঃ হাকামের বর্ণনা সনদ হিসাবে মুরসাল। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ আমি তাকে (বারীরার স্বামীকে) গোলামরূপে দেখেছি।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৬ | 6296 | ٦۲۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৮০৮. অভিভাকত্ব ঐ ব্যক্তির জন্য যে আযাদ করবে। আর লাকিত এর উত্তরাধিকার। ‘উমার (রাঃ) বলেন, লাকীত (কুড়িয়ে পাওয়া) ব্যক্তি আযাদ
৬২৯৬। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ নিশ্চয়ই অভিভাবকত্ব ঐ ব্যাক্তির জন্য যে আযাদ করবে।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৭ | 6297 | ٦۲۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৮০৯. সায়বার উত্তরাধিকার
৬২৯৭। কাবীসা ইবনু উকবা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আহলে ইসলাম (মুসলমানগণ) সায়বা বানায় না। তবে জাহেলী যামানার লোকেরা সায়বা বানাত।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৮ | 6298 | ٦۲۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৮০৯. সায়বার উত্তরাধিকার
৬২৯৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আসওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা সিদ্দিকা (রাঃ) বারীরা বাদীকে আযাদ করার উদ্দেশ্যে ক্রয় করতে চাইলেন। আর তার মনিব তার ওয়ালার (অভিভাবকত্বের) শর্ত করল (নিজেদের জন্য)। তখন আয়িশা (রাঃ) আরয করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি বারীরাকে আযাদ করার উদ্দেশ্যে ক্রয় করতে চাই। অথচ তার মনিবরা তার ওয়ালার শর্ত করছে। তিনি বললেনঃ তাকে (ক্রয় করে) আযাদ কর। কেননা, অভিভাবকত্ব ঐ ব্যাক্তির জন্যই হয়ে থাকে, যে ব্যাক্তি আযাদ করে। অথবা তিনি বললেনঃ তার মূল্য দিয়ে দাও। তিনি বলেনঃ তখন তিনি তাকে ক্রয় করলেন এবং আযাদ করে দিলেন। তিনি আরও বললেন, তাকে তার (স্বামীর সাথে) যাওয়া না যাওয়ার ব্যাপারে ইখতিয়ার দেওয়া হল। সে নিজেকে ইখতিয়ার করল এবং বলল, আমাকে যদি এরূপ এরূপ কিছু দেওয়াও হয় তবুও আমি তার সাথী হব না। আসওয়াদ (রহঃ) বলেনঃ তার স্বামী আযাদ ছিল। আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) বলেনঃ আসওয়াদ এর বক্তব্য বিচ্ছিন্ন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর বক্তব্য ‘আমি (বারীরার স্বামীকে) তাকে গোলামরূপে দেখেছি’ বিশুদ্ধতর।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬২৯৯ | 6299 | ٦۲۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৮১০. যে গোলাম তার মনিবদের ইচ্ছার খেলাফ কাজ করে তার গুনাহ
৬২৯৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবরাহীম তামীমীর পিতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আলী (রাঃ) বলেছেন, কিতাবুল্লাহ ব্যতীত আমাদের আর কোন কিতাব তো নেই যা আমরা পাঠ করতে পারি। তবে এ লিপিখানা আছে। রাবী বলেন, এরপর তিনি তা বের করলেন। দেখা গেল যে, তাতে যখম ও উটের বয়স সংক্রান্ত কথা লিপিবদ্ধ আছে। বারী বলেন, তাতে আরও লিপিবদ্ধ ছিল যে, আইর থেকে নিয়ে অমুক স্থানের মধ্যবর্তী মদিনার হারাম। এখানে যে (ধর্মীয় ব্যাপারে) বিদআত করবে বা বিদআতকারীকে আশ্রয় দিবে তার উপর আল্লাহর ফেরেশতা এবং সকল মানুষের লানত। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা তার কোন ফরয আমল এবং কোন নফল কবুল করবেন না। যে ব্যাক্তি মনিবের অনুমতি ছাড়া কোন গোলামকে আশ্রয় প্রদান করে তার উপর আল্লাহ, ফেরেশতা এবং সমস্ত মামুষের লা’নত। তার কোন ফরয বা নফল কিয়ামতের দিন কবুল করা হরে না। সমস্ত মুসলমানের জিম্মাই এক, একজন সাধারণ মুসলমান এর চেষ্টা করবে। যে ব্যাক্তি কোন মুসলমানের আশ্রয় প্রদানকে বাচনাল করে তার উপর আল্লাহর, ফেরেশতার এবং সকল মানুষের লা’নত। কিয়ামতের দিন তার কোন ফরয ও নফল কবুল করা হবে না।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০০ | 6300 | ٦۳۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৮১০. যে গোলাম তার মনিবদের ইচ্ছার খেলাফ কাজ করে তার গুনাহ
৬৩০০। আবূ নুয়াঈম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অক্তিভাবকত্ব বিক্রয় এবং হেবা করতে নিষেধ করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০১ | 6301 | ٦۳۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৮১১. কাফির কারো হাতে ইসলাম গ্রহণ করে, তবে হাসান (রাঃ) তার জন্য এতে ওয়ালার স্বীকৃতি দিতেন না। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ ওয়ালা ঐ ব্যক্তির জন্য যে আযাদ করে। তামীম দারী (রাঃ) থেকে মারফু’ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী (সাঃ) বলেছেন, ওয়ালা তার আযাদকারীর কাছে অন্যান্য মানুষের তুলনায় তার মৃত্যু ও জীবন যাপনের দিক দিয়ে অধিকতর নিকটে। তবে এ খবরের সত্যতার ব্যাপারে অন্যেরা মতানৈক্য করেছেন।
৬৩০১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা (রাঃ) আযাদ করার জন্য একটি বাদী ক্রয় করতে চাইলেন। তখন তার মনিবরা তাকে বলল যে, আমরা এ বাদী আপনার কাছে এ শর্তে বিক্রি করতে পারি যে, ওয়ালা হবে আমাদের জন্য। তিনি এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আলোচনা করলেন। তখন তিনি বললেনঃ এটা তোমার জন্য কোন বাধা নয়। কারন ওয়ালা হচ্ছে ঐ ব্যাক্তির জন্য যে আযাদ করে।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০২ | 6302 | ٦۳۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৮১১. কাফির কারো হাতে ইসলাম গ্রহণ করে, তবে হাসান (রাঃ) তার জন্য এতে ওয়ালার স্বীকৃতি দিতেন না। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ ওয়ালা ঐ ব্যক্তির জন্য যে আযাদ করে। তামীম দারী (রাঃ) থেকে মারফু’ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে যে, নবী (সাঃ) বলেছেন, ওয়ালা তার আযাদকারীর কাছে অন্যান্য মানুষের তুলনায় তার মৃত্যু ও জীবন যাপনের দিক দিয়ে অধিকতর নিকটে। তবে এ খবরের সত্যতার ব্যাপারে অন্যেরা মতানৈক্য করেছেন।
৬৩০২। মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বারীরা বাদীকে আমি ক্রয় করলাম। তখন তার মালিকেরা তার ওয়ালার শর্ত করল। এ ব্যাপারে আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আলোচলা করলাম। তখন তিনি বললেনঃ তুমি তাকে আযাদ করে দাও। কেননা, ওয়ালা ঐ ব্যাক্তির জন্য যে রৌপ্য প্রদান করে। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি তাকে আযাদ করে দিলাম। তিনি বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারীরাকে ডাকলেন এবং তার স্বামীর ব্যাপারে তাকে স্বাধীনতা দিলেন। তখন সে বলল সে যদি আমাকে এরূপ এরূপ মালও দেয় তবুও আমি তার সাথে রাত যাপন করব না। এবং সে নিজেকেই ইখতিয়ার করল।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৩ | 6303 | ٦۳۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৮১২. নারীগণ ওয়ালার উত্তরাধিকারী হতে পারে
৬৩০৩। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) বারীরা বাদীকে ক্রয় করার ইচ্ছা করলেন। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বললেন যে, তারা (মালিকেরা) ওয়ালার শর্ত করছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তাকে ক্রয় করে নাও। কেননা, ওয়ালা তো হচ্ছে ঐ ব্যাক্তির, যে আযাদ করে।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৪ | 6304 | ٦۳۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৮১২. নারীগণ ওয়ালার উত্তরাধিকারী হতে পারে
৬৩০৪। ইবনু সালাম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ওয়ালা হল ঐ ব্যাক্তির জন্য যে রৌপ্য (মূল্য) প্রদান করে। আর সে নিয়ামতের অধিকারী হয়।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৫ | 6305 | ٦۳۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৮১৩. কোন কওমের আযাদকৃত গোলাম তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। আর বোনের ছেলেও ঐ কাওমের অন্তর্ভূক্ত
৬৩০৫। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনুু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন কাওমের (আযাদকৃত) গোলাম তাদেরই অন্তর্ভুক্ত অথবা এ জাতীয় কোন কথা বলেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৬ | 6306 | ٦۳۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৮১৩. কোন কওমের আযাদকৃত গোলাম তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। আর বোনের ছেলেও ঐ কাওমের অন্তর্ভূক্ত
৬৩০৬। আবূল ওযালীদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন কাওমের বোনের পুত্র সে কাওমেরই অন্তর্ভুক্ত। এখানে তিনি مِنْهُمْ বলেছেন অথবা مِنْ أَنْفُسِهِمْ বলেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৭ | 6307 | ٦۳۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৮১৪. বন্দীর উত্তরাধিকার। শুরায়হ শত্রুদের হাতে বন্দী মুসলমানদের উত্তরাধিকার প্রদান করতেন এবং বলতেন এ বন্দী লোক উত্তরাধিকারের প্রতি বেশী মুখাপেক্ষী। উমর ইবন আবদুল আযীয (রহঃ) বলেন, বন্দী ব্যক্তির ওসিয়ত, তাকে আযাদ কর এবং তার মালের ব্যবহারকে জায়েয মনে কর, যতক্ষন না সে আপন ধর্ম থেকে ফিরে যায়। কেননা, এ হচ্ছে তারই মাল। সে এতে যা ইচ্ছা তাই করতে পারে
৬৩০৭। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ধন-সস্পদ রেখে মারা যায় সে ধন-সম্পদ তার উত্তরাধিকারীদের জন্য। আর যে ঋণ রেখে (মারা) যায় তা (আদায় করা) আমার যিম্মায়।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৮ | 6308 | ٦۳۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৮১৫. মুসলমান কাফেরের এবং কাফির মুমুসলমানের উত্তরাধিকারী হয় না। কোন ব্যক্তি সম্পত্তি বন্টনের পূর্বে মুসলিম হয়ে গেলে সে মিরাস পাবে না
৬৩০৮। আবূ আসিম (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমান কাফেরের উত্তরাধিকারী হয় না আর কাফেরও মুসলমানের উত্তরাধিকারী হয় না।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩০৯ | 6309 | ٦۳۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৮১৭. যে ব্যক্তি কাউকে ভাই বা ভ্রাতুষ্পুত্র হওয়ার দাবি করে
بَابُ مِيرَاثِ الْعَبْدِ النَّصْرَانِيِّ وَمُكَاتَبِ النَّصْرَانِيِّ، وَإِثْمِ مَنِ انْتَفَى مِنْ وَلَدِهِ

২৮১৬. নাসারা গোলাম ও নাসারা মাকতিবের মিরাস এবং যে ব্যাক্তি আপন সন্তানকে অস্বীকার করে তার গুনাহ

৬৩০৯ কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) ও আবদু ইবনু যামআ একটি ছেলের ব্যাপারে পরস্পরে কথা কাটাকাটি করেন। সা’দ (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! এ ছেলেটি আমার ভাই উতবা ইবনু আবূ ওয়াককাস-এর পূত্র। তিনি আমাকে ওসিয়ত করে গিয়েছিলেন যে! এ ছেলেটি তার পূত্র। আপনি তার আকৃতির দিকে লক্ষ্য করে দেখুন। আবদ ইবনু যামআ বললো! এ আমার ভাই, ইয়া রাসুলুল্লাহ! এ আমার পিতার ঔরসে তার কোন বাদীর গর্ভে জন্মগ্রহন করেছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার আকৃতির দিকে নযর করলেন এবং উতবার আকৃতির সাথে তার আকৃতির প্রকাশ্য মিল দেখতে পেলেন। তখন তিনি বললেনঃ হে আবদ। এ ছেলে তুমিই পাবে। কেননা সন্তান যথাযথ শয্যাপতির আর ব্যাভিচারীর জন্য হল পাথর। আর হে সাওদা বিনত যামআ! তুমি তার থেকে পর্দা কর। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ এরপরে সে কখনও সাওদার সাথে দেখা দেয়নি।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১০ | 6310 | ٦۳۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৮১৮. প্রকৃত পিতা ব্যতীত অন্যকে পিতা বলে দাবি করা
৬৩১০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে ব্যাক্তি অন্য লোককে পিতা বলে দাবি করে অথচ সে জানে যে সে তার পিতা নয়, জান্নাত তার জন্য হারাম। রাবী বলেন, আমি এ কথাটি আবূ বকর (রাঃ) এর কাছে আলোচলা করলাম। তখন তিনি বললেন, আমার কান দু’টি তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ কথা শুনেছে এবং আমার অন্তর তা সংরক্ষণ করেছে।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১১ | 6311 | ٦۳۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৮১৮. প্রকৃত পিতা ব্যতীত অন্যকে পিতা বলে দাবি করা
৬৩১১। আসবাগ ইবনু ফারাজ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের পিতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না (অস্বীকার করো না)। কেননা, যে ব্যাক্তি আপন পিতা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় (পিতাকে অস্বীকার করে) এটি কুফরী।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১২ | 6312 | ٦۳۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৮১৯. কোন মহিলা কাউকে পুত্র হিসাবে দাবি করলে তার বিধান
৬৩১২। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, দু’জন মহিলার সঙ্গে তাদের দু’টি ছেলে ছিল। বাঘ এসে (একদিন) তাদের একজনের ছেলেকে নিয়ে গেল। একজন মহিলা তার অপর সঙ্গিনীকে বলল যে বাঘে তোমার ছেলেকে নিয়ে গেছে। অপরজন বলল যে বাঘে তোমার ছেলেকে নিয়ে গেছে। তারা উভয়ে দাউদ (আঃ) এর কাছে তাদের মুকাদ্দমা দায়ের করল। তিনি বড় মহিলাটির সম্পর্কে ফায়সালা প্রদান করলেন। এরপর তারা বের হয়ে দাউদ (আঃ) এর পুত্র সুলায়মান (আঃ) এর কাছে গেল এবং উভয়েই তাকে তাদের ঘটনা অবহিত করল। তখন তিনি বললেন, আমাকে একটি ছুরি দাও, আমি একে দু’টুকরা করে দু’জনের মধ্যে ভাগ করে দেব। তখন ছোট মহিলাটি বলল, আপনি এরূপ করবেন না, আল্লাহ আপনার উপর দয়া করুন। এ ছেলেটি তারই। তিনি ছেলেটি ছোট মহিলার পক্ষে রায় দিলেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আমি ছুরি অর্থে سكين শদটি সে দিনই শুনেছি পূর্বে তো আমরা একে مدية বলতাম।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৩ | 6313 | ٦۳۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৮২০. চিহ্ন ধরে অনুসরণ
৬৩১৩। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন এত প্রফুল্ল অবস্থায় যে, তার চেহারার চিহ্নগুলি চমকাচ্ছিল। তিনি বললেনঃ তুমি কি দেখনি যে, মুজাযযিয (চিহ্ন ধরে বংশ উদঘাটনকারী) যায়িদ ইবনু হারিসা এবং উসামা ইবনু যায়িদ এর দিকে সন্ধানী দৃষ্টিতে তাকিয়েছে। এরপর সে বলেছে, এদের দু’জনের কদম একে অপর থেকে।

অধ্যায়ঃ ৭৩/ উত্তরাধিকার (كتاب الفرائض)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৪ | 6314 | ٦۳۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৮২০. চিহ্ন ধরে অনুসরণ
৬৩১৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে প্রফুল্ল অবস্হায় এলেন এবং বললেনঃ হে আয়িশা! (চিহ্ন ধরে বংশ উদঘাটনকারী) এসেছে তা কি তুমি দেখনি? এসেই সে উসামা এবং যায়িদ এর দিকে নযর করেছে। তারা উভয়ে চাদর পরিহিত অবস্থায় ছিল। তাদের মাথা ঢেকে রাখা ছিল। তবে তাদের পাগুলো দেখা যাচ্ছিল। তখন সে বলল এদের পাগুলো একে অপর থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৫ | 6315 | ٦۳۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৮২১. যিনা ও মদ্য পান। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, ব্যভিচারের কারণে ঈমানের নূর দূর হয়ে যায়
بَابُ مَا يُحْذَرُ مِنَ الْحُدُودِ
অনুচ্ছেদঃ হুদুদ (শরীয়তের শাস্তি) থেকে ভীতি প্রদর্শন

৬৩১৫। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যভিচারী ব্যাভিচার করার সময় মু’মিন থাকে না। কোন শরাব পানকারী শরাব পান করার সময় মুমিন থাকে না। কোন চোর চুরি করার সময় মুমিন থাকে না এবং কোন ছিনতাইকারী এমনভাবে ছিনতাই করে যে, মানুষ তা দেখার জন্য তাদের চোখ সেদিকে উত্তোলিত করে; তখন সে মুমিন থাকে না।

ইবনু শিহাব (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে তাতে النُّهْبَةَ শব্দটি নেই।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৬ | 6316 | ٦۳۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৮২২. শারাবপায়ীকে প্রহার করা
৬৩১৬। ইবনু আবূ ইয়াস ও হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরাব পান করার ক্ষেত্রে বেত্রাঘাত এবং জুতা মেরেছেন। আর আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) চল্লিশটি করে বেত্রাঘাত করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৭ | 6317 | ٦۳۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৮২৩. যে ব্যক্তি ঘরের ভিতর শরীয়াতের শাস্তি দেয়ার হুকুম দেয়
৬৩১৭। কুতায়বা (রহঃ) … উকবা ইবনু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নু’আয়মান অথবা (রাবীর সন্দেহ) নু’আয়মানের পুত্রকে শরাবপায়ী হিসাবে আনা হল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে যারা ছিল তাদেরকে হুকুম করলেন একে প্রহার করার জন্য। রাবী বলেন, তারা তাকে প্রহার করল, যারা তাকে জুতা মেরেছিল তাদের মাঝে আমিও একজন ছিলাম।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৮ | 6318 | ٦۳۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৮২৪. বেত্রাঘাত এবং জুতা মারার বর্ণনা
৬৩১৮। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … উকবা ইবনু হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা নু’আয়মান অথবা (রাবীর সন্দেহ) নূআয়মানের পুত্রকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আনা হল নেশাগ্রস্ত অবস্থায়। এটা তার কাছে অস্বস্তিকর মনে হল। তখন ঘরের ভিতরে যারা ছিল তিনি তাদেরকে হুকুম করলেন একে প্রহার করার জন্য। সুতরাং তারা একে বেত্রাঘাত করল এবং জুতা মারল। রাবী বলেন, যারা তাকে প্রহার করেছিল, আমিও তাদের অন্তর্ভুক্ত ছিলাম।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩১৯ | 6319 | ٦۳۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৮২৪. বেত্রাঘাত এবং জুতা মারার বর্ণনা
৬৩১৯। মুসসিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরাব পান করার ক্ষেত্রে বেত্রাঘাত করেছেন এবং জুতা মেরেছেন। আর আবূ বকর (রাঃ) চল্লিশটি করে বেত্রাঘাত করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২০ | 6320 | ٦۳۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৮২৪. বেত্রাঘাত এবং জুতা মারার বর্ণনা
৬৩২০। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ব্যাক্তিকে আনা হল, সে শরাব পান করেছিল। তিনি বললেন, একে তোমরা প্রহার কর। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, তখন আমাদের মধ্যে কেউ হল তাকে হাত দিয়ে প্রহারকারী, কেউ হয় জুতা দিয়ে প্রহারকারী, আর কেউ হল কাপড় দিয়ে প্রহারকারী। যখন সে প্রত্যাবর্তন করল। কেউ তার সমন্ধে মন্তব্য করল যে, আল্লাহ তা’আলা তোমাকে লাঞ্চিত করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এরুপ বলো না, শয়তানকে এর বিরুদ্ধে সাহায্য করো না।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২১ | 6321 | ٦۳۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৮২৪. বেত্রাঘাত এবং জুতা মারার বর্ণনা
৬৩২১। আবদুল্লাহ ইবনু আবদূল ওয়াহহাব (রহঃ) … আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যদি কোন অপরাধীকে শাস্তি প্রদান করি আর সে তাতে মরে যায় তবে মনে কোন দুঃধ আসে না কিন্তু শরাব পানকারী ব্যতীত। সে যদি মারা যায় তবে তার জন্য আমি দিয়াত দিয়ে থাকি। কেননা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শাস্তির ব্যাপারে কোন সীমা নির্ধারণ করেন নি।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২২ | 6322 | ٦۳۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৮২৪. বেত্রাঘাত এবং জুতা মারার বর্ণনা
৬৩২২। মাক্কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … সাইব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যমানায় ও আবূ বকর (রাঃ) এর খিলাফত কালে এবং উমর (রাঃ) এর খিলাফতের প্রথম দিকে আমাদের কাছে যখন কোন মদ্যপায়ীকে আনা হল। তখন আমরা তাকে হাত দিয়ে জুতা দিয়ে এবং আমাদের চাদর দিয়ে তাদের প্রহার করতাম। এমনিভাবে যখন উমর (রাঃ) এর খিলাফতের শেষ সময় হল তখন তিনি চল্লিশটি করে বেত্রাঘাত করেছেন। আর এ সব মদ্যপ যখন সীমালংঘন করেছে এবং অনাচার করা শুরু করে দিয়েছে তখন আশিটি করে বেত্রাঘাত করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৩ | 6323 | ٦۳۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৮২৫. শারাব পানকারীকে লা’নত করা মাকরূহ এবং সে মুসলিম থেকে খারিজ নয়
৬৩২৩। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যমানায় এক ব্যাক্তি যার নাম ছিল আবদুল্লাহ আর লকব ছিল হিমার। এ লোকটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হাসাত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শরাব পান করার অপরাধে তাকে বেত্রাঘাত করেছিলেন। একদিন তাকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় আনা হল। তিনি তাকে বেত্রাঘাতের আদেশ দিলেন। তাকে বেত্রাঘাত করা হল। তখন দলের মাঝ থেকে এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহ! তার উপর লানত বর্ষণ করুন। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তাকে কতবার আনা হল! তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তাকে লানত করো না। আল্লাহর কসম। আমি তাকে জানি যে, সে অবশ্যই আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলকে ভালবাসে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৪ | 6324 | ٦۳۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৮২৫. শারাব পানকারীকে লা’নত করা মাকরূহ এবং সে মুসলিম থেকে খারিজ নয়
৬৩২৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু জাফর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একটি মাতাল লোককে আনা হল। তিনি তাকে প্রহার করার জন্য দাঁড়ালেন। আমাদের মধ্যে কেউ তাকে হাত দিয়ে, কেউ জুতা দিয়ে এবং কেউবা কাপড় দিয়ে প্রহার করেছিল। লোকটি যখন চলে গেল, তখন এক ব্যাক্তি বলল, এর কি হল, আল্লাহ তাকে লাঞ্ছিত করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আপন ভাইয়ের বিরুদ্ধে শয়তানের সাহায্যকারী হয়ো না।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৫ | 6325 | ٦۳۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৮২৬. চোর যখন চুরি করে
৬৩২৫। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ব্যভিচারী ব্যভিচার করে না, যখন কিনা সে মুমিন। এবং চোর চুরি করে না যখন কিনা সে মুমিন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৬ | 6326 | ٦۳۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৮২৭. চোরের নাম না নিয়ে তার উপর লা’নত করা
৬৩২৬। আমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াছ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, চোরের উপর আল্লাহর লা’নত নিপতিত হয়, যখন সে একটি ডিম চুরি করে এবং এর জন্য তার হাত কাটা যায় এবং সে একটি রশি চুরি করে। এর জন্য তার হাত কাটা যায়। আমাশ (রহঃ) বলেনঃ ডিম দ্বারা লোহার টুকরা এবং রশি দ্বারা কয়েক দিরহাম মুল্যমানের রশিকে বোঝানো হয়েছে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৭ | 6327 | ٦۳۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৮২৮. হুদুদ (শরীয়াতের শাস্তি) (গুনাহর) কাফফারা হয়ে যায়
৬৩২৭। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কোন এক মজলিসে ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা আমার কাছে এ মর্মে বায়আত গ্রহন কর যে, আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে কোন কিছু শরীক করবে না, চুরি করবে না এবং ব্যাভিচার করবে না। এরপর তিনি এ আয়াত পুরা তিলাওয়াত করেনঃ “তোমাদের মাঝে যে ব্যাক্তি (বায়আতের শর্তসমূহ) পুরা করে তার বিনিময় আল্লাহ তা’আলার কাছে। আর যে ব্যাক্তি এর ভেতর থেকে কিছু করে বসে আর তার জন্য শাস্তি দেওয়া হয় তবে এটা তার জন্য কাফফারা হয়ে যায়। আর যদি এর ভেতর থেকে কিছু করে বসে আর আল্লাহ তা গোপন রাখেন তবে এটা তার ইখতিয়ার। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে মাপ করতে পারেন, ইচ্ছা করলে শাস্তি দিতে পারেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৮ | 6328 | ٦۳۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৮২৯. শরীয়তের কোন হদ্দ (শাস্তি) বা হক ব্যতীত মু’মিনের পিঠ সংরক্ষিত
৬৩২৮। মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হাজ্জে (হজ্জ) বললেনঃ (হে লোক সকল) কোন মাসকে তোমরা সর্বাধিক সম্মানিত বলে জানো? তারা বললেনঃ আমাদের এ-মাস নয় কি? তিনি আবার বললেনঃ তোমরা কোন শহরকে সর্বাধিক সম্মানিত বলে জানো? সকলেই বললেনঃ আমাদের এ শহর নয় কি? তিনি বললেনঃ ওহে! কোন দিনকে তোমরা সর্বাধিক সম্মানিত বলে জানো? তাঁরা বললেনঃ আমাদের এ দিন নয় কি? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের রক্ত, ধন-সম্পদ ও সম্মানকে শবীয়তের হক ব্যতীত এমন পবিত্র করে দিয়েছেন, যেমন পবিত্র তোমাদের এ মাসে এ শহরের মাঝে আজকের এ দিনটিকে। ওহে! আমি কি পৌছিয়েছি? এ কথাটি তিনি তিনবার উল্লেখ করলেন। আর প্রত্যেক বারেই লোকেরা উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তোমাদের জন্য আফসোস অথবা ধবংস! তোমরা আমার পরে একে অপরের গর্দানে আঘাত করে কুফূরীর দিকে ফিরে যেয়ো না।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩২৯ | 6329 | ٦۳۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৩০. শরীয়াতের হদসমূহ (শাস্তি) কায়িম করা এবং আল্লাহ তা’আলার নিষিদ্ধ কাজে প্রতিশোধ নেয়া
৬৩২৯। ইয়াহইয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যখনই (আল্লাহ তা আলার পক্ষ হতে) দুটি কাজের মধ্যে ইখতিয়ার প্রদান করা হত, তখন তিনি তন্মধ্যে সহজতরটিকে বেছে নিতেন, যতাক্ষণ না সেটা গুনাহর কাজ হত। যদি তা গুনাহর কাজ হত তবে তিনি তা থেকে অনেক দূরে থাকতেন। আল্লাহর কসম তিনি কখনও তার নিজের কোন কিছুর গ্রতিশোধ গ্রহণ করেননি, যতক্ষন না আল্লাহর হারাম সমূহকে ছিন্ন করা হত। তা হয়ে থাকলে প্রতিশোধ নিতেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩০ | 6330 | ٦۳۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৩১. আশরাফ-আতরাফ (উঁচু-নীচ) সকলের ক্ষেত্রে শরীয়াতের শাস্তি কায়িম করা
৬৩৩০. আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উসামা (রাঃ) জনৈক মহিলার ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সুপারিশ করলেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের পূর্ববর্তী সম্প্রদায়সমূহ ধরুংস হয়ে গিয়েছে। কারন তারা আতরাফ (নিম্নশ্রেনীর) লোকদের উপর শরীয়তের শাস্তি কায়েম করত। আর শরীফ লোকদেরকে রেহাই দিত। ঐ মহান সত্তার কসম, যার হাতে আমার জান, ফাতিমাও যদি এ কাজ করত, তাহলে অবশ্যই আমি তার হাত কেটে দিতাম।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩১ | 6331 | ٦۳۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৩২. বাদশাহর নিকট যখন মুকাদ্দামা পেশ করা হয় তখন শারী’আতের শাস্তির বেলায় সুপারিশ করা অসমীচীন
৬৩৩১। সাঈদ ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। মাখযুমী সম্প্রদায়ের জনৈকা মহিলার ব্যাপারে কুরাইশ বংশের লোকদের খুব দুশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছিল যে কিনা চুরি করেছিল। সাহাবাগণ বললেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কে কথা বলতে পারবে? আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রিয় পাত্র উসামা (রাঃ) ছাড়া কেউ এ সাহস পাবে না। তখন উসামা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কথা বললেন। এতে তিনি বললেনঃ তুমি আল্লাহ তা’আলার দেওয়া শাস্তির বিধানের ক্ষেত্রে সুপারিশ করছ? এরপর তিনি দাঁড়িয়ে খুতবা প্রদান করলেন এবং বললেনঃ হে মানব মণ্ডলী! নিশ্চয়ই তোমাদের পূর্ববর্তী সম্প্রদায়ের লোকেরা পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে। কেননা কোন সম্মানিত লোক যখন চুরি করত তখন তারা তাকে রেহাই দিয়ে দিত। আর যখন কোন দুর্বল লোক চুরি করত তখন তার উপর শরীয়তের শাস্তি প্রয়োগ করত। আল্লাহর কসম! মুহাম্মাদ এর কন্যা ফাতিমাও যদি চুরি করে তবে অবশ্যই মুহাম্মাদ তাঁর হাত কেটে দেবে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩২ | 6332 | ٦۳۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩২। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দ্বীনারের এক-চতূর্থাংশ বা ততোধিক চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আবদুর রহমান ইবনু খালিদ (রহঃ) ইবনু খালিদ যুহরী (রহঃ) ও মা’মার (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে ইবরাহীম ইবনু সা’দ (রহঃ) এর অনুসরণে বর্ণনা করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৩ | 6333 | ٦۳۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৩। ইসমাঈল ইবনু আবূ উওয়ায়স (রহঃ) … আয়িশা (রহঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একটি দ্বীনারের এক-চতুর্থাংশ চুরি করায় হাত কাটা হবে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৪ | 6334 | ٦۳۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৪। ইমরান ইবনু মায়সারা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ এক দ্বীনারের চতুর্থাংশ চুরি করলে হাত কাটা যাবে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৫ | 6335 | ٦۳۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৫। ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় কোন চামড়া নির্মিত ঢাল বা সাধারণ ঢালের সমমূল্যের জিনিস চুরি করা ছাড়া হাত কাটা হত না।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৬ | 6336 | ٦۳۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৬। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে উক্তরূপ বর্ণনা করেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৭ | 6337 | ٦۳۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৭। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, চামড়া নির্মিত ঢাল বা সাধারণ ঢাল যার প্রত্যেকটির মূল্য আছে, এর চেয়ে কমে চুরি করলে (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায়) হাত কাটা হত না।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৮ | 6338 | ٦۳۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৮। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় কোন চোরের হাত কাটা হত না। যদি সে একটি চামড়ার ঢাল বা সাধারণ ঢাল যার প্রতিটির মূল্যমান এর চেয়ে কমে কিছু চুরি করত। ওয়াকি (রহঃ) ও ইবনু ইদ্রিস (রহঃ) উরওয়া (রহঃ) থেকে মুরসাল সুত্রে বর্ণনা করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৩৯ | 6339 | ٦۳۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৩৯। ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঢাল চুরির ক্ষেত্রে হাত কর্তন করেছেন, যার মূল্য ছিল তিন দিরহাম।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪০ | 6340 | ٦۳٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৪০। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঢাল চুরির ক্ষেত্রে হাত-কর্তন করেছেন, যার মূল্য ছিল তিন দিরহাম।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪১ | 6341 | ٦۳٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৪১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঢাল চুরির ক্ষেত্রে হাত কর্তন করেছেন, যার মুল্য ছিল তিন দিরহাম।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪২ | 6342 | ٦۳٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৪২। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন দিরহাম সমমানের ঢাল চুরি করার অপরাধে চোরের হাত কর্তন করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৩ | 6343 | ٦۳٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৩. আল্লাহর বাণীঃ পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হস্তচ্ছেদন কর (৫ঃ ৩৮)। কি পরিমান মাল চুরি করলে হাত কাটা যাবে। আলী (রাঃ) কজি পর্যন্ত কর্তন করেছিলেন। আর কাতাদা (রাঃ) এক নারী সম্পর্কে বলেছেন যে চুরি করেছিল, এতে তার বাম হাত কর্তন করা হয়েছিল। (কাতাদা বলেন) এ ছাড়া আর অন্য কোন শাস্তি দেওয়া হয় নি
৬৩৪৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে, আল্লাহ তা’আলার লানত বর্ষিত হয় চোরের উপর যে একটি ডিম চুরি করেছে তাতে তার হাত কাটা গিয়েছে বা একটি রশি ছুরি করেছে আর তাতে তার হাত কাটা গিয়েছে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৪ | 6344 | ٦۳٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৪. চোরের তাওবা
৬৩৪৪। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক মহিলার হাত কর্তন করেছেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন যে, সে মহিলাটি এর পরও আসত। আর আমি তার প্রয়োজনকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থাপন করতাম। মহিলাটি তওবা করেছিল এবং তার তওবা সুন্দর হয়েছে।

অধ্যায়ঃ ৭৪/ শরীয়তের শাস্তি (كتاب الحدود)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৫ | 6345 | ٦۳٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৪. চোরের তাওবা
৬৩৪৫। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ জুফী (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আমি একটি দলের সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বায়আত করেছি। তিনি বলেন, আমি তোমাদের এ মর্মে বায়আত করছি যে, তোমরা আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না, চুরি করবে না, তোমাদের সন্তান হত্যা করবে না, সামনে বা পিছনে কোন অপবাদ করবে না, বিধিসম্ম কাজে আমার অবাধ্যতা করবে না, তোমাদের মধ্যে যে আপন অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়িত করবে তার বিনিময় আল্লাহ তা’আলার নিকট। আর যে এগুলো থেকে কিছু করে ফেলবে আর সে জন্য দুনিয়াতে যদি তার শাস্তি হয়ে যায়, তাহলে এটি হবে তার জন্য গুনাহর কাফফারা এবং গুনাহর পবিত্রতা। আর যার (দোষ) আল্লাহ তা’আলা গোপন রেখেছেন তার মুকাবিলা আল্লাহ তাআলার সাথে। (আল্লাহ) ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দিতে পারেন। আবার ইচ্ছা করলে তাকে ক্ষমাও করে দিতে পারেন।

আবূ আবদুল্লাহ [ইমাম বুখারী (রহঃ)] বলেনঃ চোর যদি হাত কেটে দেয়ার পর তাওবা করে তবে তার সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য হবে। অনুরূপভাবে শরীয়তের শাস্তিপ্রাপ্ত প্রত্যেকটি লোকের ক্ষেত্রেই এ বিধান-প্রযোজ্য যখন সে তওবা করবে, তখন তার সাক্ষী গ্রহণযোগ্য হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৬ | 6346 | ٦۳٤٦

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের শাস্তি- আয়াতের শেষ পর্যন্ত
৬৩৪৬। আলী ইবনু আবদূল্লাহ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উকল গোত্রের একদল লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হয়ে ইসলাম গ্রহন করল। কিন্তু মদিনার আবহাওয়া তাদের অনুকুল হল না। তাই তিনি তাদেরকে সাদাকার উট পালের কাছে গিয়ে সেগুলোর পেশাব ও দুগ্ন পান করার আদেশ করেন। তারা তাই করল ফলে সুস্থ হয়ে গেল। অবশেষে তারা দ্বীন ত্যাগ করে উটপালের রাখালদেরকে হত্যা করে সেগুলো নিয়ে চলল। এদিকে তিনি (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তাদের পিছনে লোক পাঠালেন। তাদেরকে (ধরে) আনা হল। আর তাদের হাত-পা কাটলেন ও লৌহাশলাকা দ্বারা তাদের চক্ষুগুলো ফুঁড়ে দিলেন। কিন্তু তাদের ক্ষতস্থানে লৌহ পুড়ে দাগ দিলেন না। অবশেষে তারা মারা গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৭ | 6347 | ٦۳٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৫. নবী (সাঃ) ধর্মত্যাগী বিদ্রোহীদের ক্ষতস্থানে লোহা পুড়ে দাগ দেননি। অবশেষে তারা মারা গেল।
৬৩৪৭। মুহাম্মাদ ইবনু সালত (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উরাইনা গোত্রীয় লোকদের (হাত, পা) কাটলেন, অথচ তাদের ক্ষতস্থানে লোহার দাগ দেননি। অবশেষে তারা মারা গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৮ | 6348 | ٦۳٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৬. ধর্মত্যাগী বিদ্রোহীদের পানি পান করানো হয়নি; অবশেষে তারা মারা গেল
৬৩৪৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উকল গোত্রের একদল লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসল। তারা সুফফায় অবস্থান করত। মদিনার আবহাওয়া তাদের অনুকুলে না হওয়ায় তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের জন্য দুধ তালাশ করুন। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের জন্য এ ছাড়া কিছু পাচ্ছি না যে, তোমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উট পালের কাছে যাবে। তারা সেগুলোর কাছে আসল। আর সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করল। ফলে তারা মোটা তাজা হয়ে উঠল ও রাখালকে হত্যা করে উটগুলো হাকিয়ে নিয়ে চলল।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সংবাদ পৌছলে তাদের খোঁজে লোক পাঠালেন। রৌদ্র প্রখর হবার পূর্বেই তাদেরকে নিয়ে আসা হল। তখন লৌহ শলাকা আনার নির্দেশ দিলেন। তা গরম করে তদ্দ্বারা তাদের চক্ষু ফুড়ে দিলেন এবং তাদের হাত-পা কেটে দেয়া হল। অথচ লৌহ গরম করে দাগ লাগান নি। এরপর তাদেরকে উত্তপ্ত মরুভূমিতে ফেলে দেওয়া হল। তারা পানি পান করতে চাইল কিন্তু পান করানো হল না। অবশেষে তারা মারা গেল।

আবূ কিলাবা (রহঃ) বলেনঃ তারা চুরি করেছিল, হত্যাও করেছিল, আর আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৪৯ | 6349 | ٦۳٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৭. নবী (সাঃ) বিদ্রোহীদের চক্ষুগুলো লৌহশলাকা দ্বারা ফুঁড়ে দিলেন
৬৩৪৯। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, যে উকল গোত্রের একদল (অথবা তিনি বলেন উরাইনা গোত্রের-আমার জানা মতে তিনি উকল গোত্রেরই-বলেছেন) মদিনায় এলো, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে দুগ্নবতী উটের কাছে যাওয়ার নির্দেশ করলেন। তাদেরকে আরো নির্দেশ করলেন যেন তারা সে সব উটের কাছে গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করে। তারা তা পান করল। অবশেষে যখন তারা সুস্থ হয়ে গেল, তখন রাখালকে হত্যা করে উটগুলো হাকিয়ে নিয়ে চলল। ভোরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সংবাদ পৌছল। তিনি তাদের খোঁজে লোক পাঠালেন। রৌদ্র চড়ার আগেই তাদেরকে নিয়ে আসা হল। তাদের সম্পর্কে তিনি নির্দেশ করলেন, তাদের হাত-পা কাটা হল। লৌহশলাকা দিয়ে তাদের চোখগুলো ফুড়ে দেয়া হল। এরপর প্রখর রৌদ্র তাপে ফেলে রাখা হল। তারা পানি পান করতে চাইল। কিন্তু পান করানো হলনা।

আবূ কিলাবা (রহঃ) বলেনঃ ঐ লোকগুলো এমন একটি দল যারা চুরি করেছিল, হত্যাও করেছিল, ঈমান আনার পর কুফরী করেছিল আর আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫০ | 6350 | ٦۳۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৮. অশ্লীলতা বর্জনকারীর ফযীলত
৬৩৫০। মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাত প্রকারের লোক, যাদেরকে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার ছায়াতলে আশ্রয় দিবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ভিন্ন অন্য কোন ছায়া হবে না। ১. ন্যায়পরায়ণ বাদশাহ ২. আল্লাহর ইবাদতে নিয়োজিত যুবক। ৩. এমন যে ব্যাক্তি আল্লাহকে নির্জনে স্মরণ করে আর তার চক্ষুযুগল অশ্রুসিক্ত হয়। ৪. এমন ব্যাক্তি যার অন্তর মসজিদে আটকে থাকে। ৫. এমন দু’ব্যাক্তি যারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে পরস্পর ভালোবাসা স্থাপন করে। ৬. এমন ব্যাক্তি যাকে কোন সুন্দরী রুপসী রমনী নিজের দিকে আহব্বান করল; আর সে বলল, আমি আল্লাহকে ভয় করি। ৭. এমন ব্যাক্তি যে সাদকা করল আর এমন গোপনে করল যে, তার বাম হাত জানে না যে তার ডান হাত কি করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫১ | 6351 | ٦۳۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৮. অশ্লীলতা বর্জনকারীর ফযীলত
৬৩৫১। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বকর (রহঃ) ও খলীফা … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কেউ আমার জন্য তার দু’পা ও দু’চোয়ালের মধ্যবর্তী স্থানের দায়িত্ব নেবে আমি তার জন্য বেহেশতের দায়িত্ব নেব।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫২ | 6352 | ٦۳۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৯. ব্যভিচারীদের পাপ। আল্লাহর বাণীঃ আর তারা ব্যাভিচার করে না (২৫ঃ ৬৮) এবং তোমরা যিনার নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ (১৭ঃ ৩২)
৬৩৫২। দাউদ ইবনু শাবীব (রহঃ) … কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদেরকে আনাস (রাঃ) বলেছেন যে, আমি তোমাদেরকে এমন এক হাদীস বর্ণনা করব যা আমার পরে তোমাদেরকে কেউ বর্ণনা করবে না। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামত সংঘটিত হবে না অথবা তিনি বলেছেনঃ কিয়ামতের পূর্ব নিদর্শনসমুহের মধ্যে হল এই যে, ইল্‌ম উঠিয়ে নেয়া হবে, মূর্খতার প্রসার ঘটবে, মদ পান করা হবে, ব্যাপকভাবে ব্যাভিচার-হবে, পুরুষের সংখ্যা কমবে, নারীর সংখ্যা এমনভাবে বৃদ্ধি পাবে যে, পঞ্চাশ জন নারীর তত্ত্বাবধায়ক হবে একজন পুরুষ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৩ | 6353 | ٦۳۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৯. ব্যভিচারীদের পাপ। আল্লাহর বাণীঃ আর তারা ব্যাভিচার করে না (২৫ঃ ৬৮) এবং তোমরা যিনার নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ (১৭ঃ ৩২)
৬৩৫৩। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মু’মিন হিসেবে বহাল থাকা অবস্হায় কোন ব্যাক্তি ব্যভিচারে লিপ্ত হয় না। মুমিন থাকা অবস্থায় কোন চোর চুরি করে না। মুমিন থাকা অবস্থায় কেউ মদ পান করে না। মুমিন থাকা অবস্থায় কেউ হত্যা করে না।

ইকরামা (রহঃ) বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, তার থেকে ঈমান কিভাবে ছিনিয়ে নেয়া হয়? তিনি বললেনঃ এভাবে। আর অঙ্গুলীগুলি পরস্পর জড়ালেন, এরপর অঙ্গুলীগুলি বের করলেন। যদি সে তাওবা করে তবে পূর্ববৎ এভাবে ফিরে আসে। এ বলে অঙ্গুলীগুলি পুনরায় পরস্পর জড়ালেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৪ | 6354 | ٦۳۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৯. ব্যভিচারীদের পাপ। আল্লাহর বাণীঃ আর তারা ব্যাভিচার করে না (২৫ঃ ৬৮) এবং তোমরা যিনার নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ (১৭ঃ ৩২)
৬৩৫৪। আদম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ব্যভিচারী ব্যাভিচার করা অবস্থায় মু’মিন থাকে না। চোর চুরি করা অবস্থায় মু’মিন থাকে না। মদ্যপায়ী মদ্যপানকালে মু’মিন থাকে না। তবে তারপরও তওবা অবারিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৫ | 6355 | ٦۳۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৩৯. ব্যভিচারীদের পাপ। আল্লাহর বাণীঃ আর তারা ব্যাভিচার করে না (২৫ঃ ৬৮) এবং তোমরা যিনার নিকটবর্তী হয়ো না। এটা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ (১৭ঃ ৩২)
৬৩৫৫। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! কোন পাপটি সবচেযে বড়? তিনি বললেন, তুমি আল্লাহর কোন সমকক্ষ সাব্যস্ত করবে। অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তোমার সাথে আহার করবে এ ভয়ে তোমার সন্তানকে হত্যা করা। আমি বললাম তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে যিনা করা।

ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) আমি বললাম হে আল্লাহর রাসুল, অনুরুপ বর্ননা করেছেন। আমর (রহঃ) … আবূ মায়সারা (রহঃ) বলেন- এটিকে ছেড়ে দাও, এটিকে ছেড়ে দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৬ | 6356 | ٦۳۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৪০. বিবাহিতকে রজম করা। হাসান (রহঃ) বলেন, যে স্বীয় বোনের সহিত যিনা করে তার উপর যিনার হদ প্রয়োগ হবে
৬৩৫৬। আদম (রহঃ) … শাবী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আলী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আলী (রাঃ) জুম’আর দিন জনৈকা মহিলাকে যখন রজম করেন তখন বলেন, আমি তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাত অনুযায়ী রজম করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৭ | 6357 | ٦۳۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৪০. বিবাহিতকে রজম করা। হাসান (রহঃ) বলেন, যে স্বীয় বোনের সহিত যিনা করে তার উপর যিনার হদ প্রয়োগ হবে
৬৩৫৭। ইসহাক (রহঃ) … শায়বানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজম করেছেন কি? তিনি উত্তর দিলেনঃ হ্যাঁ। আমি বললাম, সূরায়ে নূর এর আগে না পরে? তিনি বললেনঃ আমি অবগত নই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৮ | 6358 | ٦۳۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৪০. বিবাহিতকে রজম করা। হাসান (রহঃ) বলেন, যে স্বীয় বোনের সহিত যিনা করে তার উপর যিনার হদ প্রয়োগ হবে
৬৩৫৮। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আসলাম গোত্রের এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। এসে বলল, সে যিনা করেছে এবং নিজের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য প্রদান করল। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ব্যাপারে নির্দেশ দিলেন, তাকে রজম করা হল। আর সে বিবাহিত ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৫৯ | 6359 | ٦۳۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৪১. পাগল ও পাগলিনীকে রজম করা যাবে না। আলী (রাঃ) উমর (রাঃ) কে বললেন, আপনি কি জানেন না যে, পাগল থেকে জ্ঞান ফিরে না আসা পর্যন্ত, বালক থেকে সাবালেগ না হওয়া পর্যন্ত, ঘুমন্ত ব্যক্তি জাগ্রত না হওয়া পর্যন্ত কলম উঠিয়ে নেয়া হয়েছে?
৬৩৫৯। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। তিনি তখন মসজিদে ছিলেন। সে তাকে ডেকে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি যিনা করেছি। তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এভাবে কথাটি সে চারবার পুনরাবৃতি করল। যখন সে নিজের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য প্রদান করল তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার মধ্যে কি পাগলামীর দোষ আছে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি তুমি বিবাহিত? সে বলল, হ্যাঁ। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তাকে নিয়ে যাও আর রজম করো।

ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, আমাকে এমন এক ব্যাক্তি বর্ণনা করেছেন, যিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন যে, আমি তার রজমকারীদের মধ্যে একজন ছিলাম। আমরা তাকে জানাযা আদায়ের স্থানে রজম করি। পাথরের আঘাত যখন তার অসহ্য হচ্ছিল তখন সে পালাতে লাগল। আমরা হাররা নামক স্থানে তার নাগাল পেলাম। আর সেখানে তাকে রজম করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬০ | 6360 | ٦۳٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৪২. ব্যভিচারীর জন্য পাথর
৬৩৬০। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সা’দ ও ইবনু যামআ (রাঃ) ঝগড়া করলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আবদ ইবনু যামআ! এ সন্তান তোমারই। সন্তান শয্যাধিপতির। আর হে সাওদা! তুমি তার থেকে পর্দা কর। কুতায়বা (রহঃ) লায়স (রহঃ) থেকে আমাদেরকে এ বাক্যটি বেশি বলেছেন যে, ব্যভিচারীর জন্য পাথর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬১ | 6361 | ٦۳٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৪২. ব্যভিচারীর জন্য পাথর
৬৩৬১। আদম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বিছানা যার সন্তান তার। আর ব্যভিচারীর জন্য পাথর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬২ | 6362 | ٦۳٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৩. সমতল স্থানে রজম করা
৬৩৬২। মুহাম্মদ ইবনু উসমান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক ইহুদী পুরুষ ও এক ইহুদী নারীকে হাযির করা হল। তারা উভয়েই যিনা করেছে। তিনি তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন, এ ব্যাপারে তোমরা তোমাদের কিতাবে কি পাচ্ছ? তারা বলল, আমাদের পদ্রীরা চেহারা কালো করার ও উভয়কে গাধার পিঠে বিপরীতমুখী বসিয়ে প্রদক্ষিণ করানোর প্রথা চালু করেছেন। আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! তাদেরকে তাওরাত নিয়ে আসতে বলুন। এরপর তা নিয়ে আসা হল।

তাদের একজন রজমের আয়াতের উপর নিজের হাত রেখে দিল এবং এর অগ্র-পাশ্চাৎ পড়তে লাগল। তখন ইবনু সালাম (রাঃ) তাকে বললেন, তোমার হাত উঠও। (হাত উঠাতে দেখা গেল) তার হাতের নিচে রয়েছে রজমের আয়াত। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উভয়ের সম্বন্ধে নির্দেশ দিলেন, উভয়কে রজম করা হল। ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, তাদের উভয়কে সমতল স্থানে রজম করা হয়েছে। তখন ইহুদী পুরুষটাকে দেখেছি ইহুদী নারীটির উপর উপুড় হয়ে পড়ে আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৩ | 6363 | ٦۳٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৪. ঈদগাহ্‌ ও জানাযা আদায়ের স্থানে রজম করা
৬৩৬৩। মাহমুদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আসলাম গোত্রের জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে হাযির হয়ে যিনার স্বীকারোক্তি করল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এভাবে সে নিজের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য প্রদান করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি কি পাগল? সে বলল, না। তিনি তার ব্যাপারে নির্দেশ দিলেন। তখন তাকে ঈদগাহে রজম করা হল। পাথর যখন তাকে অসহনীয় যন্ত্রণা দিচ্ছিল তখন সে পালাতে লাগল। তারপর তাকে ধরা হল ও রজম করা হল। অবশেষে সে মারা গেল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সমন্ধে ভালো মন্তব্য করলেন ও তার সালাতে জানাযা আদায় করলেন।

ইউনুস ও ইবনু জুরাইজ (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে فَصَلَّى عَلَيْهِ বাক্যটি বলেননি। আবূ আবদুল্লাহ বুখারী (রহঃ) কে প্রশ্ন করা হয়েছে صَلَّى عَلَيْهِ বর্ণনাটি কি বিশুদ্ধ? তিনি বললেনঃ এটিকে মা’মার বর্ননা করেছেন। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো এটিকে মা’মার ব্যতীত অন্যরা বর্ণনা করেছে কি? তিনি বললেনঃ না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৪ | 6364 | ٦۳٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৫. যে ব্যক্তি এমন অপরাধ করল যা হদ এর আওতাভুক্ত নয় এবং সে ইমামকে অবগত করল। তবে তওবার পর তার উপর কোন শাস্তি প্রয়োগ হবে না, যখন সে ফতোয়া জানার জন্য আসে। আতা (রহঃ) বলেন, নবী (সাঃ) এমন ব্যক্তিকে শাস্তি দেননি। ইবন জুরায়জ (রহঃ) বলেন, শাস্তি দেননি ঐ ব্যক্তিকে, যে রমযানে স্ত্রী সঙ্গম করেছে এবং উমর (রাঃ) শাস্তি দেননি হরিণ শিকারীকে। এ ব্যাপারে আবু উসমান (রহঃ) ইবন মাসউদ (রাঃ) সুত্রে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা রয়েছে।
৬৩৬৪। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক ব্যাক্তি রমযানে আপন স্ত্রীর সঙ্গে যৌন সংযোগ করে ফেললো। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফতোয়া জানতে চাইল। তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেন, একটি গোলাম আযাদ করার সামর্থ্য তোমার আছে কি? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে কি দু’মাস সিয়াম পালন করতে পারবে? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে ষাটজন মিসকীনকে আহার করাও।

লায়স (রহঃ) এর সুত্রে আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে যে, জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মসজিদে আসল। তখন সে বলল, আমি ধংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ তা কার সাথে? সে বলল, আমি রমযানের মধ্যে আমার স্ত্রীর সাথে সংগম করে ফেলেছি। তখন তিনি তাকে বললেনঃ তুমি সাদকা কর। সে বলল, আমার কাছে কিছুই নেই। সে বসে রইল। এমতাবস্থায় এক ব্যাক্তি একটি গাধা হাকিয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। আর তার সাথে ছিল খাদ্যদ্রব্য।

আবদুর রহমান (রহঃ) বলেনঃ আমি অবগত নই যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কি আসল? অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ ধ্বংসপ্রাপ্ত ব্যাক্তিটি কোথায়? সে বলল, এই তো আমি। তিনি বললেনঃ এগুলো নিয়ে সাদকা করে দাও। সে বলল আমার চেয়ে অধিক অভাবী লোকদের? আমার পরিবারের কাছে সামান্য আহার্যও নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে তা তোমরাই খেয়ে নাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৫ | 6365 | ٦۳٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৬. কেউ শাস্তির স্বীকারোক্তি করল অথচ বিস্তারিত বলেনি, তখন ইমামের জন্য তা গোপন রাখা বৈধ কি?
৬৩৬৫। আবদুল কুদ্দুস ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম। তখন এক ব্যাক্তি তার কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! ঘটনা আমি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে ফেলেছি। তাই আমার উপর শাস্তি প্রয়োগ করুন। কিন্তু তিনি তাকে অপরাধ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলেন না। আনাস (রাঃ) বলেন। তখন সালাত (নামায/নামাজ) এর সময় এসে গেল। সে ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করল। যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন, তখন সে ব্যাক্তি তার কাছে গিয়ে দাঁড়াল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি শাস্তিযোগ্য অপরাধ করে ফেলেছি। তাই আমার উপর আল্লাহর বিধান প্রয়োগ করান। তিনি বললেনঃ তুমি কি আমার সঙ্গে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করনি? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ তোমার গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন। অথবা বললেনঃ তোমার শাস্তি (মাফ করে দিয়েছেন)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৬ | 6366 | ٦۳٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৭. স্বীকারোক্তিকারীকে ইমাম কি এ কথা বলতে পারে যে, সম্ভবত তুমি স্পর্শ করেছ অথবা ইশারা করেছ?
৬৩৬৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ জু’ফী (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, যখন মায়িয ইবনু মালিক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এল তখন তাকে বললেন সম্ভবত তুমি চুম্বন খেয়েছ অথবা ইশারা করেছ অথবা (কু দৃষ্টিতে) তাকিয়েছ? সে বলল, না, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেনঃ তাহলে কি তার সাথে তুমি সঙ্গম করেছ? কথাটি অস্পষ্ট করে বলেন নি। সে বলল হ্যাঁ। তখন তাকে রজম করার নির্দেশ দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৭ | 6367 | ٦۳٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৮. স্বীকারোক্তিকারীকে ইমামের প্রশ্ন ‘তুমি কি বিবাহিত’?
৬৩৬৭। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। তখন তিনি মসজিদে ছিলেন। এসে তাকে ডাক দিল হে আল্লাহর রাসুল! আমি যিনা করেছি, সে নিজেকেই উদ্দেশ্য করেছে। তখন তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। কিন্তু সে ঐদিকেই সরে দাঁড়াল, যে দিকটি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে সন্মুখে করলেন, এবং বলল, হে আল্লাহর রাসুল আমি যিনা করেছি। তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন, আর সে এদিকেই এল যে দিকে তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। লোকটি যখন স্বীয় নফসের বিরুদ্ধে চারবার সাক্ষ্য প্রদান করল তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডাকলেন। এরপর জিজ্ঞেস করলেনঃ তোমার মধ্যে পাগলামী আছে কি? সে বলল, না, হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেন, তা হলে তুমি কি বিবাহিত? সে বলল, হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল। তিনি বললেনঃ তোমরা তাকে নিয়ে যাও এবং রজম করো।

ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, আমাকে এ হাদীস এমন ব্যাক্তি বর্ণনা করেছেন যিনি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন যে, তার রজমকারীদের মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। আমরা তাকে ঈদগাহে বা জানাযা আদায়ের স্থানে রজম করেছি। পাথরের আঘাত যখন তাকে ব্যাকুল করে তুলল, তখন সে দ্রুত দৌড়াতে লাগল। অবশেষে আমরা হাররা নামক স্থানে তার নাগাল পাই এবং তাকে রজম করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৮ | 6368 | ٦۳٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৯. যিনার স্বীকারোক্তি
৬৩৬৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা ও যায়িদ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তারা বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম। জনৈক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বলল, আমি আপনাকে (আল্লাহর) কসম দিয়ে বলছি আপনি আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব মত ফায়সালা করুন। তখন তার প্রতিপক্ষ লোকটি দাঁড়াল। আর সে তার চেয়ে বুদ্ধিমান ছিল। তাই সে বলল, আপনি আমাদের ফায়সালা আল্লাহর কিতাব অনুযাযী-ই করে দিন। আর আমাকে অনুমতি দিন। তিনি বললেনঃ বল।

সে বলল, আমার ছেলে ঐ ব্যাক্তির অধীনে চাকর ছিল। সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে ফেলে। আমি একাশ ছাগল ও একজন গোলামের বিনিময়ে তার সাথে আপোস করে নেই। তারপর আমি আলিমদের অনেককে জিজ্ঞেস করলে তাঁরা আমাকে বললেন, আমার ছেলের শাস্তি একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর রজম হল তার স্ত্রীর শাস্তি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম ঐ সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ! অবশ্যই আমি কিতাবুল্লাহ অনুযায়ী তোমাদের উভয়ের ফায়সালা করব। একশ- ছাগল ও গোলাম তোমার কাছে ফেরত যাবে। আর তোমার ছেলের উপর একশত কষাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস! তুমি প্রত্যূষে ঐ ব্যাক্তির স্ত্রীর কাছে যাবে। যদি সে স্বীকার করে তরে তাকে রজম করবে।

পরদিন প্রত্যূষে তিনি তার কাছে গেলেন। অরে সে স্বীকার করল। ফলে তাকে রজম করলেন। আমি সুফিয়ান (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, ঐ ব্যাক্তি কি এ কথা বলেনি যে, লোকেরা আমাকে বলেছে যে, আমার ছেলের ওপর রজম হবে। তখন তিনি বললেন, যুহরী (রহঃ) থেকে এ কথা জেনেছি কিনা, এ ব্যাপারে আমার সন্দেহ ররেছে। তাই কখনো এ কথা বর্ণনা করি। আর কখনো চুপ থাকি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৬৯ | 6369 | ٦۳٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৪৯. যিনার স্বীকারোক্তি
৬৩৬৯। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর (রাঃ) বলেছেনঃ, আমার আশঙ্কা হচ্ছে যে, দীর্ঘ যুগ অতিক্রান্ত হবার পর কোন ব্যাক্তি এ কথা বলে ফেলতে পারে যে, আমরা আল্লাহর কিতাবে রজমের বিধান পাচ্ছি না। ফলে এমন একটি ফরয পরিত্যাগ করার দরুন তারা পথভ্রষ্ট হবে যা আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন। সাবধান! যখন প্রমাণ পাওয়া যাবে অথবা গর্ভ বা স্বীকারোক্তি বিদ্যমান থাকবে তখন ব্যভিচারীর জন্য রজমের বিধান নিঃসন্দেহ অবধারিত। সুফিয়ান (রহঃ) বলেন, অনুরূপই আমি স্মরণ রেখেছি। সাবধান! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজম করেছেন, আর আমরাও তারপরে রজম করেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭০ | 6370 | ٦۳۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৫০. যিনার কারণে বিবাহিতা গর্ভবতী মহিলাকে রজম করা
৬৩৭০। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মুহাজিরদের কতক লোককে পড়াতাম। তাঁদের মধ্যে আবদুর রহমান ইবনু আউফ (রাঃ) অন্যতম ছিলেন। একদা আমি তার মিনাস্থ বাড়িতে ছিলাম। তখন তিনি উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর সাথে তার সর্বশেষ হাজ্জে রয়েছেন। ইত্যবসরে আবদুর রহমান (রাঃ) আমার কাছে ফিরে এসে বললেন, যদি আপনি ঐ লোকটিকে দেখতেন, যে লোকটি আজ আমীরুল মু’মিনীন এর কাছে এসেছিল এবং বলেছিল, হে আমীরুল মু’মিনীন! অমুক ব্যাক্তির ব্যাপারে আপনার কিছু করার আছে কি? যে লোকটি বলে থাকে যে, যদি উমর মারা যান তাহলে অবশ্যই অমুকের হাতে বায়আত করব। আল্লাহর কসম! আবূ বকরের বায়আত আকম্মিক ব্যাপার ছিল। ফলে তা সংঘটিত হয়ে যায়। এ কথা শুনে তিনি ভীষণভাবে রাগাম্বিত হলেন। তারপর বললেনঃ ইনশাআল্লাহ সন্ধায় আমি অবশ্যই লোকদের মধ্যে দাঁড়াব আর তাদেরকে ঐসব লোকের থেকে সতর্ক করে দিব, যারা তাদের বিষয়াদি আত্মসাৎ করতে চায়।

আবদুর রহমান (রাঃ) বলেন, তখন আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনি এমনটা যেন না করেন। কেননা, হাজ্জের (হজ্জের) মওসুম নিম্নস্তরের ও নির্বোধ লোকদেরকে একত্রিত করে। আর এরাই আপনার নৈকট্যের সুযোগে প্রাধান্য বিস্তার করে ফেলবে, যখন আপনি লোকদের মধ্যে দাঁড়াবেন। আমার ভয় হচ্ছে, আপনি যখন কোন কথা বলবেন তখন তা সর্বত্র দ্রুত ছড়িয়ে পড়বে। আর তারা তা যথাযথভাবে আয়ত্ত করতে পারবে না। আর যথাযথ স্থানে রাখতেও পারবে না। সুতরাং মদিনা পৌছা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আর তা হল হিজরত ও সুন্নাতের কেন্দ্রস্থল। ফলে তথায় জ্ঞানী ও সুধীবর্গের সঙ্গে মিলিত হবেন। আর যা বলার তা দৃঢ়তার সাথে বলতে পারবেন। জ্ঞানী ব্যাক্তিরা আপনার কথাকে যথাযথভাবে আয়ত্ত করে নেবে ও যথাস্থানে ব্যবহার করবে।

তখন উমর (রাঃ) বললেন, জেনে রেখো আল্লাহর কসম! ইনশাআল্লাহ আমি মদিনা পৌছার পর সর্ব প্রথম এ কাজটি নিয়ে ভাষনের জন্য দাঁড়াব। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমরা যিলহাজ্জ মাসের শেষ দিকে মদিনায় প্রত্যাবর্তন করলাম। যখন জুমআর দিন এল সূর্য অস্তগমনের সাথে সাথে আমি মসজিদে গমন করলাম। পৌছে দেখলাম, সাঈদ ইবনু যায়িদ ইবনু আমর ইবনু নুফাইল (রাঃ) মিম্বরের গোড়ায় বসে আছেন, আমিও তার পার্শ্বে এমনভাবে বসলাম যেন আমার হাটু তার হাঁটুকে স্পর্শ করছে। অল্পক্ষণের মধ্যে উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বেরিয়ে আসলেন। আমি যখন তাকে সামনের দিকে আসতে দেখলাম তখন সাঈদ ইবনু যায়িদ ইবনু আমর ইবনু নুফাইলকে বললাম, আজ সন্ধায় অবশ্যই তিনি এমন কিছু কথা বলবেন যা তিনি খলীফা হওয়া থেকে আজ-পর্যন্ত বলেননি। কিন্তু তিনি আমার কথাটি উড়িয়ে দিলেন এবং বললেন, আমার মনে হয় না যে, তিনি এমন কোন কথা বলবেন, যা এর পুর্বে বলেন নি।

এরপর উমর (রাঃ) মিম্বরের উপরে বসলেন। যখন মুয়াযযিনগণ আযান থেকে ফারিগ হয়ে গেলেন তখন তিনি দাঁড়ালেন। আর আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করলেন। তারপর বললেন, আম্মা বাদ! আজ আমি তোমাদেরকে এমন কথা বলতে চাই, যা আমারই বলা কর্তব্য। হয়তবা কথাটি আমার মৃত্যুর নিকটবর্তী হচ্ছে তাই যে ব্যাক্তি কথাগুলো যথাযথভাবে অনুধাবন করে সংরক্ষন করবে সে যেন কথাগুলো ঐসব স্থানে পৌছিয়ে দেয় যেথায় তার সওয়ারী পৌছবে। আর যে ব্যাক্তি কথা শুনেছেন যথাযথভাবে অনুধাবন করতে আশংকাবোধ করছে আমি তার জন্য আমার ওপর মিথ্যা আরোপ করা ঠিক মনে করছি না। নিশ্চয়ই আল্লাহ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সত্য সহকারে পাঠিয়েছেন। আর তার উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। এবং আল্লাহর অবতীর্ণ বিযয়াদির একটি হচ্ছে রজমের আয়াত। আমরা সে আয়াত পড়েছি, অনুধাবন করেছি, আয়োত্ত করেছি। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজম করেছেন। আমরাও তার পরে রজম করেছি।

আমি আশংকা করছি যে, দীর্ঘকাল অতিবাহিত হওয়ার পর কোন ব্যাক্তি এ কথা বলে ফেলতে পারে যে, আল্লাহর কসম! আমরা আল্লাহর কিতাবে রজমের আয়াত পাচ্ছি না। ফলে তারা এমন একটি ফরয বর্জনের দরুন পথভ্রষ্ট হবে, যা আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ঐ ব্যাক্তির উপর রজম অবধারিত, যে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হবার পর যিনা করবে, চাই সে পুরুষ হোক বা নারী। যখন সুষ্পষ্ট প্রমান পাওয়া যাবে অথবা গর্ভ বা স্বীকারোক্তি বিদ্যমান থাকবে। অনুরূপভাবে আমরা আল্লাহর কিতাবে এও পড়তাম যে, তোমরা তোমাদের বাপ-দাদা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিও না। এটি তোমাদের জন্য কুফরী যে, তোমরা স্বীয় বাপ-দাদা থেকে বিমুখ হবে। অথবা বলেছেন, এটি তোমাদের জন্য কুফরী, যে স্বীয় বাবা-দাদা থেকে বিমুখ হবে জেনে রেখো! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আমার সীমাতিরিক্ত প্রশংসা করো না, যেভাবে ঈসা ইবনু মরিয়ামের সীমাতিরিক্ত প্রশংসা করা হয়েছে। তোমরা বল, আল্লাহব বান্দা ও তাঁর রাসুল।

এরপর আমার কাছে এ কথা পৌছেছে যে, তোমাদের কেউ এ কথা বলছে যে, আল্লাহর কসম, যদি উমর মৃত্যুবরণ করেন তাহলে আমি অমুকের হাতে বায়আত করব। কেউ যেন এ কথা বলে ধোকায় পতিত না হয় যে আবূ বকর এর বায়আত আকম্মিক ঘটনা ছিল। ফলে তা সংঘটিত হয়ে যায়। জেনে রেখো তা অবশ্যই এরূপ ছিল। তবে আল্লাহ আকম্মিক বায়আতের ক্ষতি প্রতিহত করেছেন। সফর করে সওয়ারীসমূহের ঘাড় ভেঙ্গে পড়ে– এমন স্হান পর্যন্তদের মধ্যে আবূ বকরের ন্যায় কে আছে? যে কেউ মুসলমানদের পরামর্শ ব্যতিরেকে কোন ব্যাক্তির হাতে বায়আত করবে, তার অনুসরণ করা যাবে না এবং ঐ ব্যাক্তিরও না, যে তার অনুসরন করবে। কেননা উভয়েরই হত্যার শিকার হওয়ার আশংকা রয়েছে। যখন আল্লাহ তাঁর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ওফাত দান করেন, তখন আবূ বকর (রাঃ) ছিলেন আমাদের মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তি। অবশ্য আনসারগণ আমাদের বিরোধিতা করেছেন।

তারা সবাই বনী সাঈদার চত্বরে সমবেত হয়েছেন। আমাদের থেকে বিমুখ হয়ে আলী, যুবাইর ও তাদের সাথীরাও বিরোধিতা করেছেন। অপরদিকে মুহাজিরগণ আবূ বকরের কাছে সমবেত হলেন। তখন আমি আবূ বকরকে বললাম, হে আবূ বকর! আমাদেরকে নিয়ে আমাদের ঐ আনসার ভাইদের কাছে চলুন। আমরা তাদের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। যখন আমরা তাদের নিকটবর্তী হলাম তখন আমাদের সাথে তাদের দু’জন পূণ্যবান ব্যাক্তির সাক্ষাৎ হল। তারা উভয়েই ঐ বিষয়ের আলোচনা করলেন যে বিষয়ে লোকেরা ঐকমত্য করছিল। এরপর তারা বললেন, হে মুহাজির দল! আপনারা কোথায় যাচ্ছেন? তখন আমরা বললাম, আমরা আমাদের ঐ আনসার ভাইদের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। তারা বললেন, না আপনাদের তাদের নিকট না যাওয়াই উচিত। আপনারা আপনাদের বিষয় সমাপ্ত করে নিন।

তখন আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমরা অবশ্যই তাদের কাছে যাব। আমরা চললাম। অবশেষে বনী সাঈদার চত্তরে তাদের কাছে এলাম। আমরা দেখতে পেলাম তাদের মাঝখানে এক ব্যাক্তি বস্ত্রাবৃত অবস্হায় রয়েছেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ঐ ব্যাক্তি কে? তারা জবাব দিল ইনি সা’দ ইবনু উবাদা। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ওনার কি হয়েছে? তারা বলল, তিনি জ্বরাক্রান্ত। আমরা কিছুক্ষণ বসার পরই তাদের খতীব উঠে দাঁড়িয়ে কালিমায়ে শাহাদাত পড়লেন এবং আল্লাহর যথোপযুক্ত প্রশংসা করলেন। তারপর বললেন, আম্মা বাদ। আমরা আল্লাহর (দ্বীনের) সাহায্যকারী ও ইসলামের সেনাদল এবং তোমরা হে মুহাজির দল! একটি নগণ্য দল মাত্র; যে দলটি তোমাদের গোত্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আমাদের কাছে পৌছেছে অথচ এরা এখন আমাদেরকে মূল থেকে সরিয়ে দিতে এবং খিলাফত থেকে বঞ্চিত করে দিতে চাচ্ছে। যখন তিনি নীরব হয়ে গেলেন তখন আমি কিছু বলার মনস্থ করলাম।

আর আমি পূর্ব থেকেই কিছু কথা সাজিয়ে রেখেছিলাম, যা আমার কাছে ভাল লাগছিল। আমি ইচ্ছে করলাম যে, আবূ বকর (রাঃ)-এর সামনে কথাটি পেশ করব। আমি তার ভাষণ থেকে সৃষ্ট রাগকে কিছুটা প্রশমিত করতে মনস্থ করলাম। আমি যখন কথা বলতে চাইলাম তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেন, তুমি থাম। আমি তাকে রাগাম্বিত করাটা পছন্দ করলাম না। তাই আবূ বকর (রাঃ) কথা বললেন, আর তিনি ছিলেন আমার চেয়ে সহনশীল ও গম্ভীর। আল্লার কসম! তিনি এমন কোন কথা বাদ দেননি যা আমি সাজিয়ে রেখেছিলাম। অথচ তিনি তাৎক্ষণিকভাবে অনুরূপ বরং তার চেয়েও উত্তম কথা বললেন। অবশেষে তিনি কথা বন্ধ করে দিলেন এরপর আবার বললেন, তোমরা তোমাদের ব্যাপারে যেসব উত্তম কাজের কথা উল্লেখ করেছ বস্তুত তোমরা এর উপযুক্ত।

তবে খিলাফতের ব্যাপারটি কেবল এই কুরাইশ বংশের জন্য নির্ধারিত। তারা হচ্ছে বংশ ও আবাসভূমির দিক দিয়ে সর্বোত্তম আরব। আর আমি এ দু’জনের থেকে যে-কোন একজনকে তোমাদের জন্য মনোনয়ন করলাম। তাই তোমাদের ইচ্ছা যে-কোন একজনের হাতে বায়আত করে নাও। এরপর আমার ও আবূ উবাইদা ইবনু জাররাহ (রাঃ) এর হাত ধরলেন। তিনি আমাদের মাঝখানেই বসা ছিলেন। আমি তার এ কথা ছাড়া যত কথা বলেছেন কোনটাকে অপছন্দ করিনি। আল্লাহর কসম! আবূ বকর যে জাতির মধ্যে বর্তমান রয়েছেন সে জাতির উপর আমি শাসক নিযুক্ত হওয়ার চেয়ে এটাই শ্রেয় যে, আমাকে পেশ করে আমার ঘাড় ভেঙ্গে দেয়া হবে, ফলে তা আমাকে কোন গুনাহের কাছে আর নিয়ে যেতে পারবে না। হে আল্লাহ! হয়ত আমার সাথী আমার মৃত্যুর সময় এমন কিছু আকাঙ্ক্ষা করতে পারে, যা এখন আমি পাচ্ছি না।

তখন আননারদের এক ব্যাক্তি বলে উঠল, আমি এ জাতির অভিজ্ঞ ও ক্ষেত্রজ্ঞ এবং শাখা-প্রশাখা বিশিষ্ট খেজুর বৃক্ষের ন্যায় সম্ভ্রান্ত। হে কুরাইশগণ! আমাদের থেকে হবে এক আমীর আর তোমাদের থেকে হবে এক আমীর। এ পর্যায়ে অনেক কথা শুনে হৈ চৈ শুরু হয়ে গেল। আমি এ মতবিরোধের দরুন শংকিত হয়ে পড়লাম। তাই আমি বললাম, হে আবূ বকর! আপনি হাত বাড়ান। তিনি হাত বাড়ালেন। আমি তাঁর হাতে বায়আত করলাম। মুহাজিরগণও তাঁর হাতে বায়আত করলেন। তারপর আনসারগণও তার হাতে বায়আত করলেন। আর আমরা সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) এর দিকে অগ্রসর হলাম। তখন তাদের এক ব্যাক্তি বলে উঠল, তোমরা সা’দ ইবনু উবাদাকে জানে মেরে ফেলেছ।

তখন আমি বললাম, আল্লাহ সা’দ ইবনু উবাদাকে হত্যা করেছেন। উমর (রাঃ) বলেন, আল্লাহর কসম! আমরা সে সময়কার জরুরী বিষয়াদির মধ্যে আবূ বকরের বায়আতের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোন কিছুকে মনে করি নি। আমাদের ভয় ছিল যে, যদি বায়আতের কাজ অসম্পূর্ণ থাকে, আর এ জাতি থেকে পৃথক হয়ে যাই তাহলে তারা আমাদের পরে তাদের কারো হাতে বায়আত করে নিতে পারে। তারপর হয়ত আমাদেরকে নিজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের অনুসরণ করতে হত, না হয় তাদের বিরোধিতা করতে হত, ফলে তা মারাত্বক ফ্যাসাদের কারণ হয়ে দাঁড়াত। অতএব যে ব্যাক্তি মুসলমানদের পরামর্শ ব্যাক্তিরেকে কোন ব্যাক্তির হাতে বায়আত করবে তার অনুসরণ করা যাবে না। আর ঐ ব্যাক্তিরও না, যে তার অনুসরণ করবে। কেননা, উভয়েরই হত্যার শিকার হওয়ার আশংকা বিদ্যমান।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭১ | 6371 | ٦۳۷۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৫১. অবিবাহিত যুবক, যুবতী উভয়কে কশাঘাত করা হবে এবং নির্বাসিত করা হবে। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী ওদের প্রত্যেককে একশ’ কশাঘাত করবে … বিশ্বাসীদের জন্য এদেরকে বিবাহ করা অবৈধ পর্যন্ত (২৪ঃ ২-৩) ইবন উয়াইনাহ (রহঃ) বলেন, رافة হদ প্রয়োগ (সহানুভূতি প্রদর্শন) করা
৬৩৭১। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নির্দেশ দিতে শুনেছি ঐ ব্যাক্তি সম্বন্ধে একশ কশাঘাত করার ও এক বছরের জন্য নির্বাসনের, যে অবিবাহিত অবস্থায় যিনা করেছে। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, আমাকে উরওয়া ইবনু যুরায়র (রাঃ) বলেছেন যে, উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) নির্বাসিত করতেন। তারপর সর্বদাই এ সুন্নাত চালু রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭২ | 6372 | ٦۳۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৫১. অবিবাহিত যুবক, যুবতী উভয়কে কশাঘাত করা হবে এবং নির্বাসিত করা হবে। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) ব্যভিচারিণী ও ব্যভিচারী ওদের প্রত্যেককে একশ’ কশাঘাত করবে … বিশ্বাসীদের জন্য এদেরকে বিবাহ করা অবৈধ পর্যন্ত (২৪ঃ ২-৩) ইবন উয়াইনাহ (রহঃ) বলেন, رافة হদ প্রয়োগ (সহানুভূতি প্রদর্শন) করা
৬৩৭২। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ ব্যাক্তি সম্বন্ধে যে যিনা করেছে অথচ সে অবিবাহিত ‘হদ’ প্রয়োগসহ এক বছরের জন্য নির্বাসনের ফায়সালা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৩ | 6373 | ٦۳۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৫২. গুনাহগার ও হিজড়াদের নির্বাসিত করা
৬৩৭৩। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লা’নত করেছেন নারীরূপী পুরুষ ও পুরুষরূপী নারীদের উপর এবং বলেছেনঃ তাদেরকে বের করে দাও তোমাদের ঘর হতে এবং তিনি অমুক অমুককে বের করে দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৪ | 6374 | ٦۳۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৩. ইমাম অনুপস্থিত থাকা অবস্থায় অন্য কাউকে হদ প্রয়োগের নির্দেশ প্রদান করা
৬৩৭৪। আসিম ইবনু আলী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা ও যায়িদ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক বেদুঈন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এল। এ সময় তিনি ছিলেন উপবিষ্ট। সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব মুতাবিক ফয়সালা করে দিন। এরপর তার প্রতিপক্ষ দাঁড়াল এবং বলল, এ সত্যই বলেছে হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর কিতাব মুতাবিক আমাদের ফায়সালা করে দিন। আমার ছেলে তার অধীনে চাকর ছিল, সে তার স্ত্রীর সহিত যিনা করে ফেলে। তখন লোকেরা আমাকে জানাল যে, আমার ছেলের উপর রজমের হুকুম হবে। ফলে আমি একশ ছাগল ও একজন দাসীর বিনিময়ে আপোস করে নেই। এরপর আমি আলিমদেরকে জিজ্ঞাসা করি, তখন তারা বললেন যে আমার ছেলের হদ হল একশ- কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। তা শুনে তিনি বললেনঃ কসম ঐ সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ! আমি অবশ্যই তোমাদের উভয়ের মধ্যে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করে দেব। ঐ ছাগল ও দাসীটি তোমার কাছে ফেরত যাবে এবং তোমার ছেলের ওপর অর্পিত হবে একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস! তুমি প্রত্যূষে ঐ মহিলার কাছে যাও এবং তাকে রজম কর। উনাইস সকালে গেলেন ও তাকে রজম করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৫ | 6375 | ٦۳۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৫. দাসী যখন যিনা করে
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: {وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ مِنْكُمْ طَوْلاً أَنْ يَنْكِحَ الْمُحْصَنَاتِ الْمُؤْمِنَاتِ فَمِمَّا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ مِنْ فَتَيَاتِكُمُ الْمُؤْمِنَاتِ وَاللَّهُ أَعْلَمُ بِإِيمَانِكُمْ بَعْضُكُمْ مِنْ بَعْضٍ فَانْكِحُوهُنَّ بِإِذْنِ أَهْلِهِنَّ وَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ مُحْصَنَاتٍ غَيْرَ مُسَافِحَاتٍ وَلاَ مُتَّخِذَاتِ أَخْدَانٍ فَإِذَا أُحْصِنَّ فَإِنْ أَتَيْنَ بِفَاحِشَةٍ فَعَلَيْهِنَّ نِصْفُ مَا عَلَى الْمُحْصَنَاتِ مِنَ الْعَذَابِ ذَلِكَ لِمَنْ خَشِيَ الْعَنَتَ مِنْكُمْ وَأَنْ تَصْبِرُوا خَيْرٌ لَكُمْ وَاللَّهُ غَفُورٌ رَحِيمٌ}
২৮৫৪. আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের মধ্যে কারো সাধ্বী, বিশ্বাসী নারী বিবাহের সামর্থ্য না থাকলে … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (৪ঃ ২৫) غَيْرَ مُسَافِحَاتٍ অর্থ زواني (ব্যাভিচারিণী) وَلاَ مُتَّخِذَاتِ أَخْدَانٍ অর্থ اخلاء (বন্ধু)

৬৩৭৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা ও ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অবিবাহিতা দাসী যিনা-করলে তার হুকুম সষ্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তিনি বললেন, সে যদি যিনা করে তাকে তোমরা কশাঘাত করবে। পুনঃ যদি যিনা করে তাহলেও কশাঘাত করবে। তারপরও যদি যিনা করে তাহলেও কশাঘাত করবে। এরপর তাকে একগুচ্ছ চুলের বিনিময়ে হলেও বিক্রি করে ফেলবে। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, আমি অবগত নই যে, (বিক্রির কথা) তৃতীয়বারের পর না চতুর্থবারের পর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৬ | 6376 | ٦۳۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৬. দাসী যিনা করে বসলে তাকে তিরস্কার ও নির্বাসন দেওয়া যাবে না
৬৩৭৬। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দাসী যখন যিনা করে আর প্রমাণিত হয়ে যায়, তখন যেন তাকে কশাঘাত করে এবং তিরষ্কার না করে। পুনরায় যদি যিনা করে তাহলেও যেন কশাঘাত করে, তিরষ্কার না করে। যদি তৃতীয়বারও যিনা করে তাহলে যেন চুলের একটি রশির বিনিময়ে হলেও তাকে বিক্রি করে দেয়। ইসমাঈল ইবনু উমাইয়া (রহঃ) সাঈদ আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে লায়স (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৭ | 6377 | ٦۳۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৭. যিম্মিরা যিনা করলে এবং ইমামের নিকট তাদের মোকাদ্দামা পেশ করা হলে এবং তাদের ইহসান (বিবাহিত হওয়া) সম্পর্কিত বিধান
৬৩৭৭। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … শায়বানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আউফা (রাঃ) কে রজম সন্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রজম করেছেন। আমি বললাম, সুরায়ে নূরের (এ সম্পকীয় আয়াত নাযিলের) আগে না পরে? তিনি বললেন, তা আমি অবগত নই। আলী ইবনু মুসহির, খালিদ ইবনু আবদুল্লাহ মুহারিবী ও আবিদা ইবনু হুমায়দ (রহঃ) আশ-শায়বানী (রহঃ) থেকে আবদুল ওয়াহিদ এর অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৮ | 6378 | ٦۳۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৭. যিম্মিরা যিনা করলে এবং ইমামের নিকট তাদের মোকাদ্দামা পেশ করা হলে এবং তাদের ইহসান (বিবাহিত হওয়া) সম্পর্কিত বিধান
৬৩৭৮। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীগণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে জানাল তাদের একজন পুরুষ ও একজন নারী যিনা করেছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন যে, তোমরা তাওরাতে রজম সম্পর্কে কি পাচ্ছ? তারা বলল, তাদেরকে অপমান ও কশাঘাত করা হয়। আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, তোমরা মিথ্যে বলেছ। তাওরাতে অবশ্যই রজমের উল্লেখ রয়েছে। তারা তাওরাত নিয়ে এল এবং তা খুলল। আর তাদের একজন রজমের আয়াতের ওপর হাত রেখে দিয়ে তার আংশিক পাঠ করল। তখন আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) বললেন, তোমার হাত উঠাও। সে তার হাত উঠালে দেখা গেল যে, তাতে রজমের আয়াত বিদ্যমান রয়েছে। তারা বলল, আবদুল্লাহ ইবনু সালাম সত্যই বলেছেন। হে মুহাম্মাদ! তাতে রজমের আয়াত সত্যই বিদ্যমান রয়েছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উভয় সম্বন্ধে নির্দেশ করলেন এবং তাদের উভয়কে রজম করা হল। আমি দেখলাম, পুরুষটি নারীটির ওপর উপুড় হয়ে আছে। সে তাকে পাথরের আঘাত থেকে রক্ষা করছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৭৯ | 6379 | ٦۳۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৮. বিচারক ও লোকদের কাছে আপন স্ত্রী বা অন্যের স্ত্রীর উপর যখন যিনার অভিযোগ করা হয় তখন বিচারকের জন্য কি জরুরী নয় যে, তার কাছে পাঠিয়ে তাকে ঐ বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করবে, যে বিষয়ে তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
৬৩৭৯। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) ও যায়িদ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। দু’জন লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাদের বিবাদ নিয়ে এল। তাদের একজন বলল, আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করে দিন। অপরজন বলল, আর সে ছিল উভয়ের মধ্যে অধিক বিজ্ঞ। হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী আমাদের বিচার করে দিন। আর আমাকে কথা বলার অনুমতি দিন। তিনি বললেনঃ বল। সে বলল, আমার ছেলে তার মজুর ছিল। মালিক (রাবী) (রহঃ) বলেন, আসীফ অর্থ মজুর। সে তার স্ত্রীর সহিত যিনা করে ফেলে। লোকেরা আমাকে বলল যে, আমার ছেলের উপর শাস্তি হবে রজম। আমি এর বিনিময়ে তাকে একশ- ছাগল ও আমার একজন দাসী দিয়ে দেই। তারপর আলিমদেরকে জিজ্ঞেস করি। তারা আমাকে বললেন যে, আমার ছেলের শাস্তি একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্ধাসন। আর রজম তার স্ত্রীর ওপরই প্রযোজ্য হবে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ জেনে রেখ, কসম ঐ সত্তার যার হাতে আমার প্রাণ! অবশ্যই আমি আল্লাহর কিতাব অনূযায়ী তোমাদের উভয়ের ফয়সালা করব। তোমার ছাগল ও দাসী তোমার কাছে ফেরত আসবে এবং তার ছেলেকে একশ’ কশাঘাত করলেন ও এক বছরের জন্য নির্বাসিত করলেন। আর উনাইস আসলামী (রাঃ) কে নির্দেশ দিলেন যেন সে অপর ব্যাক্তির স্ত্রীর কাছে যায় এবং যদি সে স্বীকার করে তাহলে যেন তাকে রজম করে। সে স্বীকার করল। ফলে তাকে সে রজম করল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮০ | 6380 | ٦۳۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৯. প্রশাসক ছাড়া অন্য কেউ যদি নিজ পরিবার কিংবা অন্য কাউকে শাসন করে। আবু সাঈদ (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, কেউ নামায আদায় করে, আর কোন ব্যক্তি তার সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করার ইচ্ছা করে, তাহলে সে যেন তাকে বাধা দেয়। যদি সে বাধা না মানে তাহলে যেন তার সাথে লড়াই করে। আবু সাঈদ (রাঃ) এরূপ করেছেন
৬৩৮০। ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আবূ বকর (রাঃ) এলেন। এ সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় মাথা মুবারক আমার উরূর ওপর রেখে আছেন। তখন তিনি বললেন, তুমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও লোকদেরকে আটকে রেখেছ, এদিকে তাদের পানির কোন ব্যবস্থা নেই। তিনি আমাকে তিরষ্কার করলেন ও স্বীয় হাত দিয়ে আমার কোমরে আঘাত করতে লাগলেন। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবস্থানই আমাকে নড়াচড়া থেকে বিরত রাখছিল। তখন আল্লাহ তাআলা তায়াম্মুমের আয়াত নাযিল করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮১ | 6381 | ٦۳۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৫৯. প্রশাসক ছাড়া অন্য কেউ যদি নিজ পরিবার কিংবা অন্য কাউকে শাসন করে। আবু সাঈদ (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, কেউ নামায আদায় করে, আর কোন ব্যক্তি তার সম্মুখ দিয়ে অতিক্রম করার ইচ্ছা করে, তাহলে সে যেন তাকে বাধা দেয়। যদি সে বাধা না মানে তাহলে যেন তার সাথে লড়াই করে। আবু সাঈদ (রাঃ) এরূপ করেছেন
৬৩৮১। ইয়াহইয়া ইবনু সূলায়মান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, একদা আবূ বকর (রাঃ) এলেন ও আমাকে খুব জোরে ঘুষি মারলেন এবং বললেন, তুমি লোকদেরকে একটি হারের জন্য আটকে রেখেছ। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবসানের দরুন মৃত সদৃশ ছিলাম। অথচ তা আমাকে ভীযণ যন্ত্রণা দিয়েছে। সামনে অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। لَكَزَ – وَكَزَ সমার্থ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮২ | 6382 | ٦۳۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৬০. যদি কেউ তার স্ত্রীর সহিত পরপুরুষকে দেখে এবং তাকে হত্যা করে ফেলে
৬৩৮২। মূসা (রহঃ) … মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) বলেছেন, যদি আমি আমার স্ত্রীর সাথে কোন পরপুরুষকে দেখি তাহলে অজি তাকে তরবারীর ধারালো দিক দিয়ে আঘাত করব। তার এ উক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছল। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা কি সা’দ এর আত্নমর্যাদাবোধে বিস্মিত হচ্ছ? আমি ওর চেয়েও বেশি আত্মসম্মানী। আর আল্লাহ আমার চেয়েও বেশি আত্নসম্মানের অধিকারী।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৩ | 6383 | ٦۳۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৬১. কোন বিষয়ে অস্পষ্টভাবে ইঙ্গিত করা
৬৩৮৩। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক বেদুঈন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমার স্ত্রী একটি কালো ছেলে জন্য দিয়েছে। তখন তিনি বললেনঃ তোমার কোন উট আছে কি? সে বলল, হ্যাঁ আছে। তিনি বললেনঃ সেগুলোর রং কি? সে বলল, লাল। তিনি বললেনঃ সেগুলোর মধ্যে কি ছাই বর্ণের কোন উট আছে? সে বলল, হ্যাঁ আছে। তিনি বললেন, এটা কোথা থেকে হল? সে বলল, আমার ধারণা যে, কোন শিরা (বংশমূল) একে টেনে এনেছে। তিনি বললেনঃ তাহলে তো তোমার এ পুত্র একে কোন শিরা (বংশমূল) টেনে এনেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৪ | 6384 | ٦۳۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৬২. শাস্তি ও শাসনের পরিমান কতটুকু
৬৩৮৪। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ আল্লাহর নির্ধারিত হদ সমুহের কোন হদ ব্যতীত অন্য ক্ষেত্রে দশ কশাঘাতের ঊর্ধ্বে দন্ড প্রয়োগ করা যাবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৫ | 6385 | ٦۳۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৬২. শাস্তি ও শাসনের পরিমান কতটুকু
৬৩৮৫। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু জাবির (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি এমন একজন থেকে বর্ণনা করেন যিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, আল্লাহর নির্ধারিত হদসমূহের কোন হদ ব্যতীত অন্য ক্ষেত্রে দশ প্রহারের বেশি কোন শাস্তি নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৬ | 6386 | ٦۳۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৬২. শাস্তি ও শাসনের পরিমান কতটুকু
৬৩৮৬। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আবূ বুরদা আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহর হদসমূহের কোন হদ ব্যতীত অন্যত্র দশ কশাঘাতের বেশি প্রয়োগ করা যাবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৭ | 6387 | ٦۳۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৬২. শাস্তি ও শাসনের পরিমান কতটুকু
৬৩৮৭। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লাগাতার সিয়াম পালন থেকে নিষেধ করেছেন। তখন মুসলমানদের থেকে এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি তো লাগাতার সিয়াম পালন করেন। এ সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমার মত তোমাদের মধ্যে কে আছে? আমি তো রাত্রি যাপন করি এমন অবস্থায় যে, আমার রব আমাকে পানাহার করান। যখন তারা লাগাতার সিয়াম পালন থেকে বিরত থাকল না তখন তিনি একদিন তাদের সাথে লাগাতার (দিনের পর দিন) সিয়াম পালন করতে থাকলেন। এরপর যখন তারা নতুন চাঁদ দেখল তখন তিনি বললেনঃ যদি তা আরো দেরি হতো তাহলে আমি তোমাদের আরো বাড়িয়ে দিতাম। কথাটি যেন শাসন স্বরুপ বললেন। যখন তারা বিরত রইল না।

শুআয়ব, ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ ও ইউনুস (রহঃ) যুহরী (রহঃ) থেকে উকায়ল (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন। আবদুর রহমান ইবনু খালিদ (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৮ | 6388 | ٦۳۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৬২. শাস্তি ও শাসনের পরিমান কতটুকু
৬৩৮৮। আইয়াশ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাদেরকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে প্রহার করা হত যখন তারা অনুমানের ভিত্তিতে খাদ্যদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় করত। তারা তা যেন তাদের স্থানে বিক্রি না করে যে পর্যন্ত না তারা তা আপন বিক্রয়স্থলে ওঠায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৮৯ | 6389 | ٦۳۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৬২. শাস্তি ও শাসনের পরিমান কতটুকু
৬৩৮৯। আবদান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের জন্য তার উপর অতিরিক্ত বিষয়ের কোন প্রতিশোধ গ্রহণ করেননি, যে পর্যন্ত না আল্লাহর অলংঘনীয় সীমালঙ্ঘন করা হয়। এমন হলে তিনি আল্লাহর উদ্দেশ্যে প্রতিশোধ গ্রহণ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯০ | 6390 | ٦۳۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৩. যে ব্যক্তি প্রমান ব্যতীত অশ্লীলতা ও অন্যের কলংকিত হওয়াকে প্রকাশ করে এবং অপবাদ রটায়
৬৩৯০। আলী (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি দু’জন লি-আনকারীর ব্যাপারে দেখেছি যে, তাদের উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটানো হয়েছে। আমি তখন পনের বছরের যুবক ছিলাম। এরপর তার স্বামী বলল আমি যদি তাকে রেখে দেই তাহলে তার উপর আমি মিথ্যা আরোপ করেছি। বর্ননাকারী বলেন, আমি যুহরী (রহঃ) থেকে তা স্মরণ রেখেছি যে, যদি সে এই এই আকৃতির সন্তান জন্ম দেয় তাহলে সে সত্যবাদী। আর যদি এই এই আকৃতির সন্তান জন্ম দেয় যেন টিকটিকির ন্যায় লাল, তাহলে সে মিথ্যাবাদী। আমি যুহরী (রহঃ) কে বলতে শুনেছি যে, সে সন্তানটি ঘৃণ্য আকৃতির জন্ম নেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯১ | 6391 | ٦۳۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৩. যে ব্যক্তি প্রমান ব্যতীত অশ্লীলতা ও অন্যের কলংকিত হওয়াকে প্রকাশ করে এবং অপবাদ রটায়
৬৩৯১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, ইবনু আববাস (রাঃ) দু’জন লিআনকারী সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনু সা’দ্দাদ (রহঃ) বললেন, এ কি সে মহিলা যার সম্বন্ধে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি যদি কোন মহিলাকে বিনা প্রমাণে রজম করতাম …? তিনি বললেন, না। ওটা ঐ মহিলা যে প্রকাশ্যে অপকর্ম করত।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯২ | 6392 | ٦۳۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৩. যে ব্যক্তি প্রমান ব্যতীত অশ্লীলতা ও অন্যের কলংকিত হওয়াকে প্রকাশ করে এবং অপবাদ রটায়
৬৩৯২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট লিআনকারীদের সষ্পর্কে আলোচনা করা হল। তখন আসিম ইবনু আদী (রাঃ) তার সম্বন্ধে কিছু কটুক্তি করলেন। তারপর তিনি ফিরে গেলেন। তখন তার স্বগোত্রের এক ব্যাক্তি তার কাছে এসে অভিযোগ করল যে সে তার স্ত্রীর কাছে অন্য এক ব্যাক্তিকে পেয়েছে। আসিম (রাঃ) বলেন, আমি আমার এ উক্তির দরুনই এ পরীক্ষায় পড়েছি। এরপর তিনি তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে গেলেন। আর সে তাঁকে ঐ ব্যাক্তি সম্পর্কে জানার যার সাথে তার স্ত্রীকে পেয়েছে। এ ব্যাক্তিটি গৌর বর্ণ। হালকা-পাতলা, সোজা চুল বিশিষ্ট ছিল। আর যে ব্যাক্তি সমন্ধে দাবি করেছে যে, সে তাকে তার স্ত্রীর কাছে পেয়েছে সে ছিল মেটে বর্ণের, মোটা গোড়ালী, স্থুল গোশত বিশিষ্ট। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আল্লাহ! স্পষ্ট করে দিন। ফলে সে মহিলাটি ঐ ব্যাক্তি সদৃশ সন্তান জন্ম দিল যরে কথা তার স্বামী উল্লেখ করেছিল যে, তাকে তার স্ত্রীর সাথে পেয়েছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়ের মধ্যে লিআন কার্যকর করলেন। তখন এক ব্যাক্তি এ মজলিসেই ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে বলল, এটা কি সে মহিলা যার সষ্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি আমি কাউকে বিনা প্রমাণে রজম করতাম তাহলে একে রজম করতাম? তিনি বলেনঃ না। ওটা ঐ মহিলা যে ইসলামে থাকা অবস্হায় প্রকাশ্যে অপকর্ম করত।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৩ | 6393 | ٦۳۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৪. সাধ্বী রমণীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা। আর যারা সাধ্বী রমণীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে এবং স্বপক্ষে চারজন সাক্ষী উপস্থিত করে না, তাদেরকে কশাঘাত কর … ক্ষমাশীল দয়ালু পর্যন্ত (২৪ঃ ৪-৫) যারা সাধ্বী, সরলমনা ও বিশ্বাসী নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২৪ঃ ২৩)
৬৩৯৩। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, তোমরা সাতটি ধ্বংসকারী বস্তু থেকে বেঁচে থাক। তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! সেগুলো কি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর সাথে শরীক করা, জাদু, যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে কাউকে হত্যা করা, যা আল্লাহ হারাম করেছেন, সুদ খাওয়া, ইয়াতীমের মাল ভক্ষণ করা, জিহাদের ময়দান থেকে পৃষ্ঠ প্রদর্শন করা সাধ্বী বিশ্বাসী সরলমনা রমনাদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৪ | 6394 | ٦۳۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৫. ক্রীতদাসদের প্রতি অপবাদ আরোপ করা
৬৩৯৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে কেউ আপন ক্রীতদাসের প্রতি অপবাদ আরোপ করল। অথচ সে তা থেকে পবিত্র যা সে বলেছে। কিয়ামত দিবসে তাকে কশাঘাত করা হবে। তবে যদি এমনই হয় যেমন সে বলেছে (সে ক্ষেত্রে কশাঘাত করা হবে না )।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৫ | 6395 | ٦۳۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৬. ইমাম থেকে অনুপস্থিত ব্যক্তির ওপর হদ প্রয়োগ করার জন্য তিনি কোন ব্যক্তিকে নির্দেশ করতে পারেন নি? উমর (রাঃ) এমনটা করেছেন
৬৩৯৫। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসূফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা ও যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি আপনি আমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করবেন। তখন তার প্রতিপক্ষ দাঁড়াল, আর সে ছিল তার চেয়ে অধিক বিজ্ঞ এবং বলল, সে ঠিকই বলেছে। আপনি আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী আমাদের মাঝে ফায়সালা করে দিন এবং আমাকে অনুমতি দিন, হে আল্লাহর রাসুল! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ বল। তখন সে বলল, আমার ছেলে এই ব্যাক্তির পরিবারে মজুর ছিল, সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে বসে। ফলে আমি একশ’ ছাগল ও একটি গোলামের বিনিময়ে তার থেকে আপোস করে নেই। তারপর ক’জন আলিমকে জিজ্ঞাসা করি। তাঁরা আমাকে জানালেন যে আমার ছেলের ওপর একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। আর এ ব্যাক্তির স্ত্রীর উপর রজম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ঐ সত্তার কসম যার হাতে আমার প্রাণ! আমি অবশ্যই আল্লাহর কিতাব অমুযায়ী তোমাদের মাঝে ফায়সালা করব। একশ (ছাগল) আর গোলাম তোমার কাছে ফেরত হবে। আর তোমার ছেলের উপর আসবে একশ কশাঘাত ও এক বছরের নির্বাসন। হে উনাইস! তুমি প্রত্যূষে মহিলার কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করবে। যদি সে স্বীকার করে তাহলে তাকে রজম করবে। সে স্বীকার করল। ফলে তাকে সে রজম করল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৬ | 6396 | ٦۳۹٦

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করলে তার শাস্তি হল জাহান্নাম (৪ঃ ৯৩)
৬৩৯৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর নিকট সবচেয়ে বড় গুনাহ কোনটি? তিনি বললেনঃ তুমি আল্লাহ সাথে কাউকে সমকক্ষ সাব্যস্ত কর অথচ তিনই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। লোকটি বলল, এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তারপর হল, তুমি তোমার সন্তানকে এ ভয়ে হত্যা কর যে, সে তোমার সাথে আহার করবে। লোকটি বলল, এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তারপর হল, তুমি তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে যিনা কর। অতঃপর আল্লাহ এ কথার সত্যায়নে অবতীর্ণ করলেনঃ এবং তারা আল্লাহর সঙ্গে কোন ইলাহকে ডাকে না, আল্লাহ যার হত্যা নিষেধ করেছেন। যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে তাকে হত্যা করে না এবং ব্যাভিচার করে না। যে এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করবে (২৫ঃ ৬৮)।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৭ | 6397 | ٦۳۹۷

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করলে তার শাস্তি হল জাহান্নাম (৪ঃ ৯৩)
৬৩৯৭। আলী (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিন ব্যাক্তি তার দ্বীনের ব্যাপারে পূর্ন প্রশান্তমনা থাকে, যে পর্যন্ত না সে কোন হারাম (অবৈধ) রক্তপাতে লিপ্ত হয়।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৮ | 6398 | ٦۳۹۸

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করলে তার শাস্তি হল জাহান্নাম (৪ঃ ৯৩)
৬৩৯৮। আহমাদ ইবনু ইয়াকুব (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যেসব বিষয়ে কেউ নিজেকে লিপ্ত করার পরে তার ধবংস থেকে লিপ্ত ব্যাক্তির বাঁচার কোন উপায় থাকে না সেগুলোর একটি হচ্ছে হালাল ব্যতীত (বৈধতা বিহীন) হারাম রক্ত প্রবাহিত (অবৈধ ভাবে হত্যা) করা।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৩৯৯ | 6399 | ٦۳۹۹

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করলে তার শাস্তি হল জাহান্নাম (৪ঃ ৯৩)
৬৩৯৯। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সর্বপ্রথম লোকদের মধ্যে যে বিষয়ের ফায়সালা করা হবে তা হলো হত্যা।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০০ | 6400 | ٦٤۰۰

পরিচ্ছদঃ আল্লাহর বাণীঃ কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কোন মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করলে তার শাস্তি হল জাহান্নাম (৪ঃ ৯৩)
৬৪০০। আবদান (রহঃ) … বনী যুহরা গোত্রের মিত্র মিকদাদ ইবনু আমর কিনদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। যিনি বদরের যুদ্ধ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে হাযির ছিলেন। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! জনৈক কাফেরের সাথে আমার মুকাবিলা হল এবং আমাদের পরস্পরের মধ্যে লড়াই বাঁধল। সে তরবারী দ্বারা আমার হাতে আঘাত করল এবং তা কেটে ফেলল। এরপর সে কোন বৃক্ষের আড়ালে আশ্রয় নিল। আর বলল আমি আল্লাহর জন্য মুসলমান হয়ে গেলাম। এ কথা বলার পর কি আমি তাকে হত্যা করতে পারব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তাকে হত্যা করবে না। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! সে তো আমার এক হাত কেটে দিয়েছো আর কেটে ফেলার পরই এ কথা বলেছে এতে কি আমি তাকে হত্যা করতে পারব?তিনি বললেনঃ তুমি তাকে হত্যা করবে না।

(এ অবস্থায়) তুমি যদি তাকে হত্যা কর তাহলে তাকে হত্যা করার পূর্বে তুমি যে স্থলে ছিলে সে সে স্থলে এসে যাবে। আর সে উক্ত কালিমা উচ্চারণ করার পূর্ব যে স্থলে ছিল তুমি সে স্থলে চলে যাবে। হাবীব ইবনু আবূ আমরা (রহঃ) সাঈদ (রহঃ) এর সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিকদাদ (রাঃ) কে বলেছেনঃ উক্ত মুমিন ব্যাক্তি যখন কাফের সম্প্রদায়ের সাথে অবস্থান করছিল তখন সে আপন ঈমান গোপন রেখেছিল। এরপর সে তার ঈমান প্রকাশ করল আর তুমি তাকে হত্যা করে ফেললে। তুমিও তো এর পূর্বে মক্কায় অবস্থানকালে আপন ঈমান গোপন রেখেছিলে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০১ | 6401 | ٦٤۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০১। কাবীসা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ কোন মানব সন্তানকে হত্যা করা হলে আদম (আলাইহিস সালাম) এর প্রথম সন্তানের (কাবীল) উপর অপরাধের কিছু অংশ অবশ্যই বর্তায়।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০২ | 6402 | ٦٤۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০২। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমরা আমার পরে কুফুরমুখী হয়ে যেয়ো না যে তোমরা একে অপরের গর্দান উড়াবে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৩ | 6403 | ٦٤۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৩। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বিদায় হাজ্জের (হজ্জ) প্রাক্কালে বলেছেনঃ লোকদেরকে নীরব কর, তোমরা আমার পরে ফূকুরমুখী হয়ে যেয়ো না যে, তোমরা একে অপরের গর্দান উড়াবে। আবূ বকর ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে (অনুরূপ) বর্ণনা করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৪ | 6404 | ٦٤۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৪। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কবীরা গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সাথে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া অথবা বলেছেন, মিথ্যা কসম করা। শুবা (রহঃ) তাতে সন্দেহ পোষণ করেন এবং মুয়ায (রহঃ) বলেন, শুবা আমাদেরকে বর্ণনা করেছেন, কবীরা গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সাথে শরীক করা, মিথ্যা কসম করা আর মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া অথবা বলেছেন প্রাণ সংহার করা।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৫ | 6405 | ٦٤۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৫। ইসহাক ইবনু মনসুর (রহঃ) ও আমর (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কবীরা গুনাহ সমুহের মধ্যে সবচাইতে বড় গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সাথে শরীক করা, প্রান সংহার করা, পিতা-মাতার অবাধ্য- হওয়া আর মিথ্যা বলা, অথবা বলেছেন, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৬ | 6406 | ٦٤۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৬। আমর ইবনু যুরারা (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ ইবনু হারিসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে জুহাইনা গোত্রের হারাক শাখার বিরুদ্ধে পাঠালেন। আমরা ভোরে এ গোত্রের কাছে এলাম এবং তাদেরকে পরাস্ত করে ফেললাম। তিনি বলেন আমি ও আনসারদের এক ব্যাক্তি তাদের একজনকে ধাওয়া করে তার কাছে পৌছে গেলাম। তিনি বলেন আমরা যখন আক্রমণ করতে উদ্যত হলাম তখন সে বলে উঠল, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ। তিনি বলেন, আনসারী ব্যাক্তি তার থেকে বিরত হয়ে গেল। কিন্তু আমি তাকে আমার বর্শা দ্বারা আঘাত করে হত্যা করে ফেললাম। তিনি বলেন, আমরা যখন মদিনায় পৌছলাম তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সংবাদ পৌছাল। তিনি বলেন আমাকে তিনি বললেন, হে উসামা! তুমি কি তাকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরও হত্যা করলে? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! সে আসলে হত্যা থেকে বাঁচতে চেয়েছিল। তিনি বললেনঃ আহা তুমি কি তাকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলার পরও হত্যা করলে? তিনি বলেন, তিনি বারবার কথাটি আমাকে বলতে থাকলেন। এমন কি আমি আকাঙ্ক্ষা করতে লাগলাম, যদি আমি ঐ দিনের পূর্বে মুসলমান না হতাম।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৭ | 6407 | ٦٤۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি ঐ নির্বাচিত নেতাদের একজন ছিলাম যারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে বায়আত করেছিলেন। আমরা তার হাতে এ শর্তে বায়আত করেছি যে, আমরা আল্লাহর সাথে কিছুকে শরীক করব না, যিনা করব না, চুরি করব না, এমন প্রাণ সংহার করব না যা আল্লাহ হারাম করেছেন, আমরা লুন্ঠন করব না নাফরমানী করব না। যদি আমরা ওগুলো যথাযথ পালন করি তবে জান্নাত লাভ হবে। আর যদি এর মধ্য থেকে কোন একটা করে ফেলি তাহলে তার ফায়সালা আল্লাহর কাছে সমর্পিত।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৮ | 6408 | ٦٤۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আমাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধারণ করবে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়। আবূ মূসা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে (অনুরূপ) বর্ণনা করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪০৯ | 6409 | ٦٤۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৭. আর কেউ কারো প্রাণ রক্ষা করলে (৫ঃ ৩২)। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি যথার্থ কারণ ব্যতিরেকে প্রাণ সংহার নিষিদ্ধ মনে করে তার থেকে গোটা মানব জাতির প্রাণ রক্ষা পেল।
৬৪০৯। আবদুর রহমান ইবনু মূবারক (রহঃ) … আহনাফ ইবনু কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তাকে (আলী (রাঃ) কে সাহায্য) করার জন্য যাচ্ছিলাম। ইত্যবসরে আমার সাথে আবূ বাকরা (রাঃ) এর সাক্ষাৎ ঘটল। তিনি বললেন, কোথায় যাচ্ছি? আমি বললাম, ঐ ব্যাক্তিকে সাহায্য করতে। তিনি বললেন, ফিরে যাও। কেননা, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে বলতে শুনেছি যে, যখন দুজন মুসলমান তরবারী নিয়ে পরস্পর সংঘর্ষে লিপ্ত হয় তখন হত্যাকারী ও নিহত ব্যাক্তির অবস্থান হবে জাহান্নাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! হত্যাকারীর ব্যাপারটা তো বোধগম্য। কিন্তু নিহত ব্যাক্তির ব্যাপার সে কেমন? তিনি বললেনঃ সেও তো প্রতিপক্ষকে হত্যা করতে আগ্রহী ছিল।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১০ | 6410 | ٦٤۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৬৯. (ইমাম কর্তৃক) হত্যাকারীকে স্বীকারোক্তি পর্যন্ত প্রশ্ন করা। আর শরীয়াতের শাস্তির ব্যাপারে স্বীকারোক্তি
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا كُتِبَ عَلَيْكُمُ الْقِصَاصُ فِي الْقَتْلَى الاية

২৮৬৮. আল্লাহর বাণীঃ হে মু’মিনগন! নিহতদের ব্যাপারে তোমাদের জন্য কিসাসের বিধান দেওয়া হয়েছে … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২ঃ ১৭৮)

৬৪১০। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক থেকে বর্ণিত। জনৈক ইহুদী একটি বালিকার মাথা দুটি পাথরের মাঝখানে রেখে চুর্ণ করে দিল। এরপর তাকে জিজ্ঞাসা করা হল কে তোমার সাথে এ আচরণ করেছে? অমুক অথবা অমুক? শেষ পর্যন্ত ইহুদীটির নাম বলা হল। তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আনা হল এবং তিনি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকলেন। শেষ পর্যন্ত সে তা স্বীকার করল। সুতরাং প্রস্তরাঘাতের মাধ্যমে তার মাথা চুর্ন করে দেওয়া হল।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১১ | 6411 | ٦٤۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৭০. পাথর বা লাঠি দ্বারা হত্যা করা
৬৪১১। মুহাম্মাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রৌপ্যালংকার পরিহিতা জনৈকা বালিকা মদিনায় বের হল। রাবী বলেন, তখন জনৈক ইহুদী তার প্রতি পাথর নিক্ষেপ করল। রাবী বলেন, তাকে মুমূর্ষাবস্থায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আনা হল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, অমুক কি তোমাকে হত্যা করেছে? সে তার মাথা উঠাল। তিনি তাকে আবার বললেন, অমুক কি তোমাকে হত্যা করেছে? সে তার মাথা উঠাল। তিনি তাকে তৃতীয়বার বললেন, অমুক কি তোমাকে হত্যা করেছে? সে তার মাখা নিচু করল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রস্তর নিক্ষেপকারীকে ডেকে আনলেন এবং তাকে দুটি পাথরের মাঝখানে রেখে হত্যা করালেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১২ | 6412 | ٦٤۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৭১. আল্লাহর বাণীঃ প্রাণের বদলে প্রাণ … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (৫ঃ ৪৫)
৬৪১২। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলিম ব্যাক্তি যিনি সাক্ষ্য দেন যে আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই এবং আমি আল্লাহর রাসুল। তিন-তিনটি কারণ ব্যতীত তাকে হত্যা করা বৈধ নয়। (যথা) প্রাণের বদলে প্রাণ। বিবাহিত ব্যাভিচারী। আর আপন দ্বীন পরিত্যাগকারী মুসলিম জামাআত থেকে বিচ্ছিন্ন ব্যাক্তি।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৩ | 6413 | ٦٤۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৭২. যে ব্যক্তি পাথর দ্বারা কিসাস নিল
৬৪১৩। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক ইহুদী একটি বালিকাকে তার রৌপ্যালংকারের লোভে হত্যা করল। সে তাকে পাথর দ্বারা হত্যা করল। মুমূর্ষ অবস্থায় তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আনা হল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, অমুক কি তোমাকে হত্যা করেছে? সে তার মাথা দিয়ে ইঙ্গিত করল যে, না। এরপর দ্বিতীয়বার তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, সে তার মাথা দিয়ে ইশারা করল যে, না। তারপর তৃতীয়বার তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন। সে তার মাথা দিয়ে ইশারা করল যে, হ্যাঁ। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (হত্যাকারীকে) দুটি পাথর দ্বারা হত্যা করলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৪ | 6414 | ٦٤۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৩. কাউকে হত্যা করা হলে তার উত্তরাধিকারীগণ দু’রকমের শাস্তির যে কোন একটি প্রয়োগের ইখতিয়ার লাভ করে
৬৪১৪। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। খুযা’আ গোত্রের লোকেরা এক ব্যাক্তিকে হত্যা করল। আবদুল্লাহ ইবনু রাজা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মক্কা বিজয়ের বছর খুযা’আ গোত্রের লোকেরা জাহেলী যুগের স্বগোত্রীয় নিহত ব্যাক্তির প্রতিশোধ হিসেবে বনী লায়স গোত্রের এক ব্যাক্তিকে হত্যা করল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়ালেন এবং বললেনঃ আল্লাহ মক্কা থেকে হস্তীদলকে রুখেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আপন রাসুল ও মুমিনদেরকে কতৃত্ব দান করেছেন। জেনে রেখো! মক্কা আমার পূর্বে কারো জন্য হালাল হয়নি, আর আমার পরও কারো জন্য হালাল হবে না। জেনে রেখো! আমার ক্ষেত্রে তা দিনের কিছু সময়ের জন্য হালাল করা হয়েছে। সাবধান! তা আমার এ সময়ে এমন সম্মানিত, তার কাটা উপড়ানো যাবে না, তার বৃক্ষ কাটা যাবে না, তাতে পড়ে থাকা বস্তু মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্য ব্যতীত ভুলে নেওয়া যাবে না।

আর যার কাউকে হত্যা করা হয় সে দু’প্রকার দণ্ডের যে কোন একটি প্রয়োগের ইখতিয়ার লাভ করবে। হয়ত রক্তপণ গ্রহণ করা হবে, নতুবা কিসাস নেওয়া হবে। এ সময় ইয়ামনবাসী এক ব্যাক্তি দাঁড়াল, যাকে আবূ শাহ বলা হয়। সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে লিখে দিন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা আবূ শাহকে লিখে দাও। তারপর কুরাইশ গোত্রের এক ব্যাক্তি দাঁড়াল। আর বলল, হে আল্লাহর রাসূল! ইযখির ব্যতীত। কেননা, আমরা তা আমাদের ঘরে, আমাদের কবরে ব্যবহার করি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইযখির ব্যতীত।

উবায়দুল্লাহ (রহঃ) শায়বান (রহঃ) থেকে الْفِيلِ (হস্তী) এর ব্যাপারে হারব ইবনু শাদ্দাদ (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন। কেউ কেউ আবূ নুআয়ম (রহঃ) থেকে المقتل শব্দ নকল করেছেন। উবায়দুল্লাহ (রহঃ) إِمَّا أَنْ يُقَادَ এর পরে أَهْلُ الْقَتِيلِ‏ শব্দও বর্ণনা করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৫ | 6415 | ٦٤۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৩. কাউকে হত্যা করা হলে তার উত্তরাধিকারীগণ দু’রকমের শাস্তির যে কোন একটি প্রয়োগের ইখতিয়ার লাভ করে
৬৪১৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বনী ইসরাঈলদের মধ্যে কিসাসের বিধান বলবত ছিল। তাদের মধ্যে রক্তপনের বিধান ছিল না। তবে আল্লাহ এ উম্মাতকে বললেনঃ নর হত্যার ব্যাপারে তোমাদের জন্য কিসাসের বিধান দেয়া হয়েছে …… কিন্তু তার ভাইয়ের পক্ষ হতে কিছুটা ক্ষমা প্রদর্শন করা হলে পর্যন্ত (২ঃ ১৭৮)। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, ক্ষমা প্রদর্শনের অর্থ হল ইচ্ছাকৃতভাবে হত্যার ক্ষেত্রে রক্তপণ গ্রহণ করা। তিনি বলেন, আর প্রচলিত প্রথার অনুসরণ করার অর্থ হচ্ছে, যুক্তি সঙ্গত দাবি ও সদয়ভাবে দীয়ত আদায় করা।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৬ | 6416 | ٦٤۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৪. যথার্থ কারণ ছাড়া রক্তপাত দাবি করা
৬৪১৬। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেনঃ আল্লাহর কাছে সবচাইতে ঘৃণিত ব্যাক্তি হচ্ছে তিন জন। যে ব্যাক্তি হারাম শরীফে অন্যায় ও অপকর্মে লিপ্ত হয়। যে ব্যাক্তি ইসলামী যুগে জাহিলী যুগের প্রথা তালাশ করে। যে ব্যাক্তি যথার্থ কারণ ব্যতীত কারো রক্তপাত দাবি করে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৭ | 6417 | ٦٤۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৫. ভুলক্রমে হত্যার ক্ষেত্রে মৃত্যুর পর ক্ষমা প্রদর্শন করা
৬৪১৭। ফারওয়া ও মুহাম্মাদ ইবনু হারব (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, উহুদের দিন ইবলীস লোকদের মাঝে চিৎকার করে বলল, হে আল্লাহর বান্দারা! পিছনের দলের ওপর আক্রমণ কর। ফলে তাদের সম্মুখভাগ পশ্চাত ভাগের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল। এমন কি তারা ইয়ামানকে হত্যা করে ফেলল। তখন হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, আমার পিতা! আমার পিতা! কিন্তু তারা তাকে হত্যা করে ফেলল। তখন হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন। রাবী বলেন, মুশরিকদের একটি দল পরাজিত হয়ে তায়েফ চলে গিয়েছিল।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৮ | 6418 | ٦٤۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৭. একবার হত্যার স্বীকারোক্তি করলে তাকে হত্যা করা হবে
بَابُ قَوْلِ اللَّهِ تَعَالَى: وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ أَنْ يَقْتُلَ مُؤْمِنًا إِلاَّ خَطَأً الاية

২৮৭৬. অনুচ্ছেদঃ আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ কোন মু’মিন ব্যক্তির অন্য মু’মিন ব্যক্তিকে হত্যা করা বৈধ নয়। তবে ভুলবশত করলে তা স্বতন্ত্র … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (৪ঃ ৯২)

৬৪১৮। ইসহাক (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক ইহুদী একটি বালিকার মাথা দুটি পাথরের মাঝখানে রেখে চূর্ণ করে দিল। তখন তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, কে তোমার সাথে এমন আচরণ করেছে? অমুক? না অমুক? অবশেষে ইহুদী লোকটির নাম উল্লেখ করা হল। তখন সে তার মাথা দিয়ে (হ্যাঁ-সূচক) ইশারা করল। তখন ইহুদী লোকটিকে আনা হল এবং সে স্বীকার করল। ফলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ব্যাপারে নির্দেশ করলেন, তাই তার মাথা একটি পাথর দিয়ে চূর্ণ করা হল এবং হাম্মাম (রহঃ) বলেন, দুটি পাথর দিয়ে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪১৯ | 6419 | ٦٤۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৮. মহিলার বদলে পুরুষকে হত্যা করা
৬৪১৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন ইহুদীকে একজন বালিকার বদলে হত্যা করেছেন। সে রৌপ্যালংকারের লোভে ওকে হত্যা করেছিল।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২০ | 6420 | ٦٤۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৭৯. আহত হওয়ার ক্ষেত্রে নারী-পুরুষদের মধ্যে কিসাস। আলিমগণ বলেন, নারীর বদলে পুরুষকে হত্যা করা হবে। আর উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করা হয় যে, ইচ্ছাকৃতভাবে প্রত্যেক হত্যা বা আহত কারার ক্ষেত্রে নারীর বদলে পুরুষকে কিসাসের বিধানানুসারে শাস্তি দেওয়া হবে। ইহাই উমর ইবনু আবদুল আযীয (র), ইবরাহীম (র) এবং আবূয যিনাদ (র)-এর অভিমত তাদের আসহাব থেকে। রুবায়-এর বোন কোন এক ব্যক্তিকে আহত করলে নবী (সাঃ) বলেন, এ ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান হল ‘কিসাস’
৬৪২০। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুখের সময় তার মুখের এক কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিলাম। তিনি বলেন, তোমরা আমার মুখের কিনারায় ঔষধ দিও না। আমরা মনে করলাম, রোগী ঔষধ সেবন অপছন্দ করেই থাকে। যখন তাঁর হুশ ফিরে এলো, তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের মধ্যে যেন এমন কেউ থাকে না, যার মুখের কিনারায় জোর পুর্বক ঔষধ ঢেলে দেয়া না হয় শুধুমাত্র আব্বাস ব্যতীত। কেননা, সে তোমাদের কাছে হাযির ছিল না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২১ | 6421 | ٦٤۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৮০. হাকিমের কাছে মোকাদ্দামা দায়ের করা ব্যতীত আপন অধিকার আদায় করে নেয়া বা কিসাস গ্রহণ করা
৬৪২১। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, আমরা হচ্ছি (পৃথিবীতে) সর্বশেষ ও (আখিরাতে) সর্বপ্রথম। উক্ত হাদীসের সুত্রে এও বর্ণিত, তিনি বলেছেন, যদি কেউ তোমার ঘরে তোমার অনুমতি ব্যাতিরেকে উঁকি মারে আর তুমি পাথর নিক্ষেপ করে তার চক্ষু ফুটা করে দাও, তাতে তোমার কোন গুনাহ হবে না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২২ | 6422 | ٦٤۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৮০. হাকিমের কাছে মোকাদ্দামা দায়ের করা ব্যতীত আপন অধিকার আদায় করে নেয়া বা কিসাস গ্রহণ করা
৬৪২২। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … হুমায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘরে উঁকি মারল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার প্রতি চাকু নিক্ষেপের প্রস্তুতি নিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, আপনাকে (এ হাদীস) কে বর্ণনা করেছেন? তিনি বললেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ)।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৩ | 6423 | ٦٤۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৮১. (জনতার) ভিড়ে মারা গেলে বা হত্যা করা হলে
৬৪২৩। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উহুদের দিন যখন মুশরিকরা পরাজিত হয়ে গেল তখন ইবলীস চিৎকার করে বলল, হে আল্লাহর বান্দাগণ! পিছনের দলের উপর আক্রমন কর। তখন সম্মুখবর্তীরা পশ্চাতবর্তীদের উপর আক্রমণ করল ও পরস্পরে লড়ায়ে লিপ্ত হল। তখন হুযায়ফা (রাঃ) তাকিয়ে দেখতে পেলেন যে তার বাবা ইয়ামান আক্রান্ত হয়েছেন। তখন তিনি বললেন, হে আল্লাহর বান্দাগণ! (এ তো) আমার পিতা! আমার পিতা! তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! তারা তাকে হত্যা না করে ক্ষান্ত হল না। হুযায়ফা (রাঃ) বলেন, আল্লাহ তোমাদেরকে ক্ষমা করুন। উরওয়া (রহঃ) বলেন, এ কারণে হুযায়ফা (রাঃ) এর অন্তরে আল্লাহর সাথে মিলন না হওয়া পর্যন্ত এই স্মৃতি জাগরুক ছিল।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৪ | 6424 | ٦٤۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৮২. যখন কেউ ভুলবশত নিজেকে হত্যা করে ফেলে তখন তার কোন রক্তপণ নেই
৬৪২৪। মাক্কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে খায়বার অভিমুখে রওয়ানা হলাম। তখন তাদের এক ব্যাক্তি বলল, হে আমির! তোমরা আমাদেরকে উট চালনার কিছু সঙ্গীত শোনাও। সে তাদেরকে তা গেয়ে শোনাল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ চালকটি কে? তারা বলল, আমির। তিনি বললেন, আল্লাহ তাকে রহম করুন। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদেরকে তার থেকে দীর্ঘকাল উপকৃত হবার সুযোগ করে দিন। পরদিন সকালে আমির নিহত হল। তখন লোকেরা বলতে লাগল তার আমল বরবাদ হয়ে গেছে, সে নিজেকে হত্যা করেছে। যখন আমি ফিরলাম, আর লোকেরা বলাবলি করছিল যে, আমিরের আমল বরবাদ হয়ে গেছে, তখন আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম এবং বললাম, হে আল্লাহর নাবী! আমার পিতা-মাতা আপনার প্রতি কুরবান। তাদের ধারনা, আমিরের আমল বরবাদ হয়ে গেছে। তিনি বললেন, যে এমনটা বলেছে মিথ্যা বলেছেন কেননা আমিরের জন্য দ্বিগুন পুরস্কার। কারণ সে (সৎ কাজে) অতিশয় যত্নবান, (আল্লাহর রাস্তায়) মুজাহিদ। অন্য কোন প্রকার হত্যা এর চেয়ে অধিক পুরস্কারের অধিকারী করতে পারে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৫ | 6425 | ٦٤۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৩. কাউকে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়ার ফলে তার দাঁত উপড়ে গেলে
৬৪২৫। আদম (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি অপর এক ব্যাক্তির হাত দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরল। সে তার হাত ঐ ব্যাক্তির মুখ থেকে টেনে বের করল। ফলে তার দু’টি দাঁত উপড়ে গেল। তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তাদের মুকাদ্দমা পেশ করল। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের কেউ তার ভাইকে কি কামড়াবে? যেমন উট কামড়ে থাকে? তোমার জন্য কোন রক্তপন নেই।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৬ | 6426 | ٦٤۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৩. কাউকে দাঁত দিয়ে কামড় দেওয়ার ফলে তার দাঁত উপড়ে গেলে
৬৪২৬। আবূ আসিম (রহঃ) … ইয়ালা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি কোন একটি যুদ্ধে বেরিয়ে ছিলাম। তখন এক ব্যাক্তি দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে; ফলে তার দাঁত উপড়ে যায়। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (দাঁতের) দীয়তকে বাতিল করে দিলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৭ | 6427 | ٦٤۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৪. দাঁতের বদলে দাঁত
৬৪২৭। আনসারী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাযারের কন্যা একটি বালিকাকে থাপ্পড় মেরে তার দাঁত ভেঙ্গে ফেলল। তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এল তখন তিনি কিসাসের নির্দেশ দিলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৮ | 6428 | ٦٤۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৫. আঙ্গুলের রক্তপণ
৬৪২৮। আদম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, (দীয়তের ব্যাপারে) এটি এবং ওটি সমান। অর্থাৎ কনি ও বৃদ্ধাঙ্গূলি।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪২৯ | 6429 | ٦٤۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৫. আঙ্গুলের রক্তপণ
৬৪২৯। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অনুরূপ বলতে শুনেছি।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩০ | 6430 | ٦٤۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৬. যখন একটি দল কোন এক ব্যক্তিকে বিপন্ন করে তোলে, তখন তাদের সকলকে শাস্তি প্রদান করা হবে কি? অথবা সকলের নিকট থেকে কিসাস গ্রহন করা হবে কি? মুতাররিফ (রহঃ) শাবী (রহঃ) থেকে এমন দু জন ব্যক্তির ব্যাপারে বর্ণনা করেন যারা এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করেছিল যে, সে চুরি করেছে। তখন আলী (রাঃ) তার হাত কেটে ফেললেন। তারপর তারা অপর একজনকে নিয়ে এসে বলল, আমরা ভুল করে বসেছি। তখন তিনি তাদের সাক্ষ্য বাতিল করে দিলেন এবং প্রথম ব্যক্তির দীয়ত (রক্তপণ) গ্রহণ করলেন। আর বললেন, যদি আমি জানতাম যে তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে কাজটি করেছে, তাহলে তোমাদের উভয়ের হাত কেটে ফেলতাম। আবূ আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেন, আমাকে ইবনু বাশশার (রহঃ) ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, একটি বালককে গোপনে হত্যা করা হয়। তখন উমর (রাঃ) বললেন, যদি গোটা সান’আবাসী এতে অংশ নিত তাহলে আমি তাদেরকে হত্যা করতাম। মুগীরা ইবনু হাকীম (রহঃ) আপন পিতা হাকীম থেকে বর্ণনা করেছেন যে, চারজন লোক একটি বালককে হত্যা করেছিল। তখন উমর (রাঃ) অনুরূপ কথা বলেছিলেন। আবূ বকর ও ইবনু যুবায়র, আলী ও সুওয়ায়দ ইবনু মুকাররিন (রাঃ) থাপ্পড়ের ক্ষেত্রে কিসাসের নির্দেশ দেন। উমর (রাঃ) ছড়ি দিয়ে প্রহারের ব্যাপারে কিসাসের নির্দেশ দেন। আর আলী (রাঃ) তিনটি বেত্রাঘাতের জন্য কিসাসের নির্দেশ দেন এবং শুরায়হ (রহঃ) একটি বেত্রাঘাত ও নখের আঁচড়ের জন্য কিসাস কার্যকর করেন।
৬৪৩০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুখের সময় তার মুখের কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিলাম। আর তিনি আমাদের দিকে ইশারা করতে থাকলেন যে, তোমরা আমার মূখের কিনারায় ঔষধ ঢেলে দিও না। আমরা মনে করলাম যে, রোগীর ঔষধের প্রতি অনীহা-ই এর কারণ। যখন তিনি হুশ ফিরে পেলেন, তখন বললেনঃ আমাকে (জোর পূর্বক) ঔষধ সেবন করাতে কি তোমাদেরকে নিষেধ করিনি? আমরা বললাম, রোগীর ঔষধের প্রতি অনীহা তাই এর কারণ বলে আমরা মনে করেছি। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের মাঝে যেন এমন কেউ না থাকে যার মুখে জোরপূর্বক ঔষধ ঢালা হয় আর আমি দেখতে থাকব শুধু আব্বাস ব্যতীত। কেননা, সে তোমাদের সাথে ছিল না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩১ | 6431 | ٦٤۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৭. ‘কাসামাহ’ (শপথ)। আশআছ ইবনু কায়স (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) আমাকে বলেছেন, তুমি দু’জন সাক্ষী পেশ করবে, নতুবা তার কসম! ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ) বলেন, মু’আবিয়া (রাঃ) কাসামা অনুযায়ী কিসাস গ্রহণ করতেন না। উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) তাঁর তরফ থেকে নিযুক্ত বসরার গভর্নর আদী ইবনু আরতাত (রহঃ) এর কাছে একজন নিহত ব্যক্তির ব্যাপারে পত্র লিখেন, যাকে তেল ব্যবসায়ীদের বাড়ীর কাছে পাওয়া গিয়েছিল। তিনি লিখেছিলেন, যদি তার আত্মীয়-স্বজনরা প্রমান পেশ করতে পারে তবে দন্ড প্রদান করবে নতুবা লোকদের ওপর জুলম করবে না। কেননা, তা এমন ব্যাপার, যার কিয়ামত পর্যন্ত ফায়সালা করা যায় না।
৬৪৩১। আবু নূআয়ম (রহঃ) … সাহল ইবনু আবূ হাসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার গোত্রের একদল লোক খায়বার গমন করল ও তথায় তারা বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে পড়ল। তারা তাদের একজনকে নিহত অবস্থায় পেল। এবং যাদের কাছে তাকে নিহত অবস্থায় পাওয়া গেল তাদেরকে তারা বলল, তোমরা আমাদের সাথীকে হত্যা করেছ। তারা বলল, আমরা তাকে না হত্যা করেছি, না হত্যাকারীকে জানি। এরপর তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা খায়বার গিয়েছিলাম। আর আমাদের একজনকে তথায় নিহত অবস্থায় পেলাম। তখন তিনি বললেন, বায়োবৃদ্ধকে বলতে দাও। বায়োবৃদ্ধকে বলতে দাও। তারপর তিনি তাদেরকে বললেনঃ তোমাদেরকে তার হত্যাকারীর বিরুদ্ধে প্রমাণ পেশ করতে হবে। তারা বলল আমাদের কাছে কোন প্রমাণ নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে ওরা কসম করে নেবে। তারা বলল, ইহুদীদের কসমে আমাদের আস্থা নেই। এ নিহতের রক্ত মূল্যহীন হযে যাক তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পছন্দ করলেন না। তাই সাদাকার একশ উট প্রদান করে তার রক্তপণ আদায় করলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩২ | 6432 | ٦٤۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৭. ‘কাসামাহ’ (শপথ)। আশআছ ইবনু কায়স (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) আমাকে বলেছেন, তুমি দু’জন সাক্ষী পেশ করবে, নতুবা তার কসম! ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ) বলেন, মু’আবিয়া (রাঃ) কাসামা অনুযায়ী কিসাস গ্রহণ করতেন না। উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) তাঁর তরফ থেকে নিযুক্ত বসরার গভর্নর আদী ইবনু আরতাত (রহঃ) এর কাছে একজন নিহত ব্যক্তির ব্যাপারে পত্র লিখেন, যাকে তেল ব্যবসায়ীদের বাড়ীর কাছে পাওয়া গিয়েছিল। তিনি লিখেছিলেন, যদি তার আত্মীয়-স্বজনরা প্রমান পেশ করতে পারে তবে দন্ড প্রদান করবে নতুবা লোকদের ওপর জুলম করবে না। কেননা, তা এমন ব্যাপার, যার কিয়ামত পর্যন্ত ফায়সালা করা যায় না।
৬৪৩২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ কিলাবা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদা উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) তার সিংহাসন জনসাধারণকে প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে বের করলেন। এরপর লোকদেরকে তার নিকট আসার অনুমতি প্রদান করলেন। তারা প্রবেশ করল। তারপর বললেন, তোমরা কাসামা (কসম) সম্বন্ধে কি মত পোষণ কর? তারা বলল আমাদের মতে কাসামার ভিত্তিতে কিসাস গ্রহণ করা বিধেয়। খলীফাগণ এর ভিত্তিতে কিসাস কার্যকর করেছেন। তিনি আমাকে বললেন, হে আবূ কিলাবা। তুমি কি বল? তিনি আমাকে লোকদের সামনে দাঁড় করালেন। আমি বললাম, হে আমীরুল মু’মিনীন! আপনার কাছে সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ ব্যাক্তিবর্গ ও আরব নেতৃবৃন্দ রয়েছেন, বলুন তো, যদি তাদের থেকে পঞ্চাশ ব্যাক্তি দামেশকের একজন বিবাহিত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করে যে সে যিনা করেছে, অথচ তারা তাকে দেখেনি, তাহলে আপনি তাকে রজম করবেন কি? তিনি বললেনঃ না। আমি বললাম, বলুন তো, যদি তাদের মধ্য থেকে পঞ্চাশ জন হিমস নিবাসী এক ব্যাক্তির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রদান করে যে, সে যিনা করেছে। অথচ তারা তাকে দেখেনি, তাহলে কি আপনি তার হাত কাটবেন? তিনি বললেনঃ না।

আমি বললাম, আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন কারনের কোন একটি ব্যতীত কাউকে হত্যা করেননি। (যথা) (অন্যায়ভাবে) কাউকে হত্যা করলে তাকে হত্যা করা হবে। অথবা যে ব্যাক্তি বিয়ের পর যিনা করে, অথবা যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ও ইসলাম থেকে ফিরে মুরতাদ হয়ে যায়।

তখন লোকেরা বলল, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) কি বর্ণনা করেননি যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুরির ব্যাপারে হাত কেটেছেন, লৌহশলাকা দ্বারা চক্ষু ফুড়ে দিয়েছেন, তারপর তাদেরকে উত্তপ্ত রৌদ্রে ফেলে রেখেছেন। তখন আমি বললাম, আমি তোমাদেরকে আনাস (রাঃ) এর হাদীস বর্ণনা করছি।

আমাকে আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, উকাইল গোত্রের আটজন লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এল। তারা তার হাতে ইসলামের বায়আত গ্রহন করল। কিন্তু সে এলাকার আবহাওয়া তাদের অনুকূলে হল না এবং তাদের শরীর অসুস্থ হয়ে পড়ল। তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এর অভিযোগ করল। তিনি তাদেরকে বললেন তোমরা কি আমার রাখালের সাথে তার উটপালের কাছে গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করবে না? তারা বলল, হ্যাঁ। তারপর তারা তথায় গিয়ে সেগুলোর দুধ ও পেশাব পান করল। ফলে তারা সুস্থ হয়ে গেল। এরপর তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রাখালকে হত্যা করে উটওলো হাঁকিয়ে নিয়ে চলল।

এ সংবাদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছলে তিনি তাদের পশ্চাদ্ধাবনের লক্ষ্যে লোক পাঠালেন। তারা ধরা পড়ল এবং তাদেরকে নিয়ে আসা হল। তাদের সম্বন্ধে নির্দেশ প্রদান করা হল। তাদের হাত-পা কাটা হল, লৌহশলাকা দ্বারা তাদের চক্ষু ফুড়ে দেওয়া হল। এরপর উত্তপ্ত রৌদ্রে তাদেরকে ফেলে রাখা হল, অবশেষে তারা মারা গেল। আমি বললাম তারা যা করেছে এর চেয়ে জঘন্য আর কি হতে পারে? তারা ইসলাম থেকে মুরতাদ হল, হত্যা করল, চুরি করল। তখন আমবাসা ইবনু সাঈদ বললেনঃ আল্লাহর কসম! আজকের ন্যয় আমি আর কখনো শুনিনি। আমি বললাম, হে আমবাসা! তাহলে তুমি আমার বর্ণিত হাদীসটি প্রত্যাখ্যান করছ কি? তিনি বললেনঃ না। তুমি হাদীসটি যথাযথ বর্ণনা করেছ। আল্লাহর কসম! এ লোকগুলো কল্যাণের উপর থাকবে যতদিন এ শায়খ (বুযর্গ) তাদের মধ্যে বর্তমান থাকবেন।

আমি বললাম, এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একটা নিয়ম রয়েছে। আনসারদের একটি দল তাঁর কাছে প্রবেশ করল। তারা তার কাছে আলোচনা করছিল। ইতিমধ্যে তাদের সামনে তাদের এক লোক বেরিয়ে গেল এবং নিহত হল। অতঃপর তারা বের হল। তখন তারা তাদের সঙ্গীকে দেখতে পেল যে, রক্তের মধ্যে নড়াচড়া করছে। তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফিরে এল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমাদের সঙ্গী যে আমাদের সাথে আলোচনা করছিল এবং সে আমাদের সামনেই বের হয়ে গিয়েছিল। আমরা এখন তাকে রক্তের মাঝে নড়াচড়া করতে দেখতে পাচ্ছি। এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে গেলেন এবং বললেনঃ তাকে হত্যা করার ব্যাপারে কাদের সমন্ধে তোমাদের ধারণা? তারা বললা আমরা মনে করি! ইহুদীরা তাকে হত্যা করেছে।

তিনি ইহুদীদেরকে ডেকে পাঠালেন। এরপর তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা ওকে হত্যা করেছ? তারা বলল, না। তিনি আনসারদের বললেনঃ তোমরা কি এতে সম্মত আছ যে, ইহুদীদের আরো পঞ্চাশজন লোক কসম করে বলবে যে, তারা তাকে হত্যা করেনি। আনসাররা বলল, তারা এতে কোন পরওয়া করবে না, তারা আমাদের সকলকে হত্যা করে ফেলার পরও কসম করে নিতে পারবে। তিনি বললেনঃ তাহলে তোমরা কি এজন্য প্রস্তুত আছ যে, তোমাদের থেকে পঞ্চাশজনের কসমের মাধ্যমে তোমরা দীয়াতের অধিকারী হবে? তারা বলল, আমরা কসম করব না। তখন তিনি নিজের পক্ষ থেকে দীয়াত প্রদান করে দেন।

(রাবী আবূ কালাবা বলেন) আমি বললাম, হুযায়ল গোত্র জাহিলী যুগে তাদের গোত্রের লোকেরা এক ব্যাক্তিকে সকল প্রকার দায়-দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিল। এক রাতে সে ব্যাক্তি বাহহা নামক স্থানে ইয়ামনের এক পরিবারের উপর আকম্মিক হামলা চালায়। কিন্তু সে পরিবারের এক ব্যাক্তি তা টের পেয়ে যায়। এবং তার প্রতি তরবারী নিক্ষেপ করে তাকে হত্যা করে ফেলে। অতঃপর হুযায়ল গোত্রের লোকেরা এসে ইয়ামনী ব্যাক্তিটিকে ধরে ফেলে এবং (হাজ্জের (হজ্জ) মৌসুমে উমর (রাঃ) এর কাছে তাকে নিয়ে পেশ করে। আর বলে সে আমাদের এক সাথীকে হত্যা করেছে। ইয়ামনী লোকটি বলল, তারা কিন্তু ওকে সকল প্রকার দায়-দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। তখন তিনি বললেন, হুযায়ল গোত্রের পঞ্চাশ ব্যাক্তি এ মর্মে কসম করবে যে তারা ওকে সকল দায়-দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিচ্ছিন্ন করেনি।

বর্ণনাকারী বলেনঃ তাদের মধ্য থেকে উনপঞ্চাশ ব্যাক্তি কসম করে নিল, অতঃপর তাদের একজন সিরিয়া থেকে এলো, তারা তাকে কসম করতে বলল। কিন্তু সে এক হাজার দিরহামের বিনিময়ে কসম থেকে তাদের সাথে আপোস করে নিল। তখন তারা তার স্থলে অপর একজনকে যোগ করে নিল। তারা তাকে নিহত ব্যাক্তির ভাইয়ের কাছে পেশ করল। তারা উভয়ই করমর্দন করল। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা এবং ঐ পঞ্চাশ ব্যাক্তি, যারা কসম করেছে, চললাম। যখন তারা নাখলা নামক স্থানে পৌছলাম, তাদের উপর বৃষ্টি নেমে এল। তখন তারা পাহাড়ের এক গুহায় প্রবেশ করল। কিন্তু গুহা ঐ পঞ্চাশজন কসমকারীর উপর ভেঙ্গে পড়ল। এতে তারা সকলেই মারা গেল।

তবে করমর্দনকারী দু’জন শুধু বেঁচে গেল। কিন্তু একটি পাথর তাদের উভয়ের প্রতি নিক্ষিপ্ত হল এবং নিহত ব্যাক্তির ভাইয়ের পা ভেঙ্গে ফেলল। আর সে এক বছর জীবিত থাকার পর মারা গেল। (রাবী বলেন) আমি বললাম, আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ান (এক সময়) কাসামার ভিত্তিতে এক ব্যাক্তির কিসাস গ্রহণ করেন। এরপর আপন কৃতকর্মের উপর তিনি লজ্জিত হন এবং ঐ পঞ্চাশ ব্যাক্তি সম্বন্ধে নির্দেশ দিলেন যারা কসম করেছিল, তাদেরকে রেজিষ্ট্রার থেকে খারিজ করে দিয়ে সিরিয়ায় নির্বাসন দিলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৩ | 6433 | ٦٤۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৮. যে ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিদের ঘরে উঁকি মারল। আর তারা তার চক্ষু ফুঁড়ে দিল, এতে ঐ ব্যক্তির জন্য দিয়াত নেই
৬৪৩৩। আবূ নুমান (রহঃ) … আনাস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন একটি হুজরার ছিদ্র দিয়ে উঁকি মারল। তখন তিনি তার প্রতি লক্ষ্য করে একটি তীক্ষ্ণ প্রশস্ত ছুরি নিয়ে দাঁড়ালেন এবং তার অগোচরে তাকে খোঁচা দেয়ার সুযোগ তালাশ করতে লাগলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৪ | 6434 | ٦٤۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৮. যে ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিদের ঘরে উঁকি মারল। আর তারা তার চক্ষু ফুঁড়ে দিল, এতে ঐ ব্যক্তির জন্য দিয়াত নেই
৬৪৩৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন গৃহের দরজার এক ছিদ্র দিয়ে উঁকি মারল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট চিরুনি সদৃশ একখন্ড লোহা ছিল। এ দ্বারা তিনি স্বীয় মাথা চুলকাচ্ছিলেন। যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখলেন তখন বললেনঃ যদি আমি নিশ্চিত হতাম যে, তুমি আমার দিকে তাকাচ্ছ তাহলে এ দ্বারা আমি তোমার চোখে আঘাত করতাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ চোখের দরুন-ই অনুমতির বিধান রাখা হয়েছে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৫ | 6435 | ٦٤۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৮. যে ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিদের ঘরে উঁকি মারল। আর তারা তার চক্ষু ফুঁড়ে দিল, এতে ঐ ব্যক্তির জন্য দিয়াত নেই
৬৪৩৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোন ব্যাক্তি অনুমতি ব্যতিরেকে তোমার দিকে উঁকি মারে আর তখন তুমি তার প্রতি কংকর নিক্ষেপ করে তার চক্ষু উপড়ে ফেল, এতে তোমার কোন অপরাধ হবে না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৬ | 6436 | ٦٤۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৮৯. আকিলা (রক্তপণ) প্রসঙ্গে
৬৪৩৬। সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আলী (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, যা কুরআনে নেই এমন কিছু আপনাদের নিকট আছে কি? একবার তিনি বলেছেন, যা মানুষের নিকট নেই … তখন তিনি বললেন, ঐ সত্তার কসম! যিনি খাদ্যশস্য অংকুরিত করেন এবং প্রাণ সৃষ্টি করেন। কুরআনে যা কিছু রয়েছে তা ব্যতীত আমাদের নিকট অন্য কিছু নেই। তবে এমন জ্ঞান যা আল্লাহর কিতাব বুঝবার জন্য কোন ব্যাক্তিকে দেয়া হয় এবং এ কাগজের টুকরায় যা রয়েছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কাগজের টুকরায় কি রয়েছে? তিনি বললেনঃ রক্তপণ ও মুক্তিপণের বিধান। আর (এ নীতি) কোন কাফেরের বদলে কোন মুসলমানকে হত্যা করা হবে না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৭ | 6437 | ٦٤۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৯০. মহিলার ভ্রুন
৬৪৩৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, হুযায়ল গোত্রের দু’জন মহিলার একজন অপরজনকে পাথর নিক্ষেপ করে গর্ভপাত ঘটিয়ে দিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মহিলার ব্যাপারে একটি গোলাম অথবা বাঁদী প্রদানের ফায়সালা দিলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৮ | 6438 | ٦٤۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৯০. মহিলার ভ্রুন
৬৪৩৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … উযার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি মহিলাদের গর্ভপাত সম্পর্কে সাহাবাদের সাথে পরামর্শ করেন। তখন মুগীরা (রাঃ) বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যাক্তির প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাক্তিকে একটি গোলাম অথবা বাঁদী প্রদানের ফায়সালা করেছেন। এ সময় মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা (রাঃ) সাক্ষ্য দিলেন যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ ফায়সালা করতে দেখেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৩৯ | 6439 | ٦٤۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৯০. মহিলার ভ্রুন
৬৪৩৯। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … হিশামের পিতা উরওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমর (রাঃ) লোকদেরকে কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভ্রুণ হত্যার ব্যাপারে ফায়সালা দিতে কে শুনেছে? তখন মুগীরা (রাঃ) বললেনঃ আমি তাকে অনুরূপ ব্যাপারে একটি গোলাম অথবা বাঁদী প্রদানের ফায়সালা প্রদান করতে শুনেছি। তিনি বললেন, এ বিষয়ে তোমার সাক্ষী নিয়ে এসো। এ সময় মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা (রাঃ) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুরূপ ফায়সালা প্রদান করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪০ | 6440 | ٦٤٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৯০. মহিলার ভ্রুন
৬৪৪০। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি সাহাবীগণের সাথে গর্ভপাত ঘটানোর ব্যাপারে অনুরূপ পরামর্শ করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪১ | 6441 | ٦٤٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৯১. মহিলার ভ্রুন এবং দিয়াত পিতা ও পিতার নিকটাত্নীয়ের উপর বর্তায় সন্তানের উপর নয়
৬৪৪১। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনি লিহয়ানের জনৈকা মহিলার ভ্রণ হত্যার ব্যাপারে একটি গোলাম অথবা বাদী প্রদানের ফায়সালা করেন। তারপর দন্ডপ্রাপ্ত মহিলার মৃত্যু হল, যার সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ ফায়সালা করেছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনঃ ফায়সালা প্রদান করলেন যে, তার ত্যাজ্য সম্পত্তি তার ছেলে সন্তান ও স্বামী পাবে। আর দিয়াত আদায় করবে তার আসাবা।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪২ | 6442 | ٦٤٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৯১. মহিলার ভ্রুন এবং দিয়াত পিতা ও পিতার নিকটাত্নীয়ের উপর বর্তায় সন্তানের উপর নয়
৬৪৪২। আহমাদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুযায়ল গোত্রের দু’জন মহিলা ঝগড়াকালে একে অপরের প্রতি পাথর নিক্ষেপ করে এবং একজন অপর জনের গর্ভস্থিত সন্তানকে হত্যা করে ফেলল। এরপর তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বিচার নিয়ে এল। তিনি ফায়সালা দিলেন যে, ভ্রুণের দিয়াত হলো একটি গোলাম অথবা বাদী আর এ ফায়সালাও দিলেন যে, নিহত মহিলার দিয়াত হত্যাকারিণীর আসাবার উপর আসবে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৩ | 6443 | ٦٤٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৯২. যে কেউ গোলাম অথবা বালক থেকে সাহায্য চায়। বর্ণিত আছে যে, উম্মু সালামাহ (রাঃ) একটি পাঠশালার শিক্ষকেকর কাছে বার্তা পাঠালেন যে, আমার কাছে কতিপয় বালক পাঠিয়ে দিন, যারা পশমের জট ছাড়াবে। তবে কোন আযাদ (বালক) পাঠাবেন না।
৬৪৪৩। আমর ইবনু যুরারা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করলেন, তখন আবূ তালহা (রাঃ) আমার হাতে ধরে আমাকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলেন এবং বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আনাস একজন হুশিয়ার ছেলে। সে যেন আপনার খেদমত করে। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি মুকীম এবং সফরকালে তার খেদমত করেছি। আল্লাহর কসম! যে কাজ আমি করে নিয়েছি এর জন্য তিনি আমাকে কোন দিন এ কথা বলেননি, এটা এরুপ কেন করেছ? আর যে কাজ আমি করিনি এর জন্যও এ কথা বলেননি এটা এরূপ কেন করনি?

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৪ | 6444 | ٦٤٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৩. খনি দন্ডমুক্ত এবং কূপ দন্ডমুক্ত
৬৪৪৪। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন পশু কাউকে আহত করলে, কূপে বা খনিতে পতিত হয়ে কেউ নিহত বা আহত হলে তাতে কোন দণ্ড বা রক্তপণ নেই। আর কেউ গুপ্তধন প্রাপ্ত হলে তার প্রতি এক-পঞ্চমাংশ দেয়া ওয়াজিব।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৫ | 6445 | ٦٤٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৪. পশু আহত করলে তাতে কোন ক্ষতিপূরন নেই। ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেন, তাদের সময়ে পশুর লাথির আঘাতের ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরন প্রদানের ফায়সালা দিতেন না এবং লাগাম টানার দরুন কোন ক্ষতি সাধিত হলে ক্ষতিপূরনের ফায়সালা দিতেন। হাম্মাদ (র) বলেন, লাথির আঘাতের দরুন দায়ী করা যাবে না। তবে যদি কোন ব্যক্তি পশুটিকে খোঁচা মারে। শুরায়হ (রহঃ) বলেন, প্রতিশোধমূলক আঘাতের দরুন পশুকে দায়ী করা যাবে না। যেমন কেউ কোন পশুকে আঘাত করল, তখন পশুটিও তাকে পা দিয়ে আঘাত করল। হাকাম (র) ও হাম্মাদ (র) বলেন যদি ভাড়াটিয়া ব্যক্তি গাধাকে হাঁকিয়ে নেয়, যে গাধার উপর কোন মহিলা বসা থাকে আর মহিলাটি গাধা থেকে পড়ে যায়, তাহলে তার উপর কিছু বর্তিবে না। শা’বী (র) বলেন, যদি কেউ কোন পশু চালায় এবং তাকে ক্লান্ত করে ফেলে, তাহলে তার উপর ক্ষতিপূরণ বর্তিবে। আর যদি ধীরে ধীরে চালায় তাহলে বর্তিবে না।
৬৪৪৫। মুসলিম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ পশু আহত করলে, খনি বা কূপে পতিত হয়ে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তাতে কোন ক্ষতিপূরন নেই। গুপ্তধনের এক-পঞ্চমাংশ দেওয়া ওয়াজিব।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৬ | 6446 | ٦٤٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৫. যে ব্যক্তি যিম্মিকে বিনা দোষে হত্যা করে তার পাপ
৬৪৪৬। কায়স ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যাক্তি নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি প্রদত্ত কাউকে হত্যা করে, সে ব্যাক্তি জান্নাতের সূুগন্ধ পর্যন্ত শুকতে পারবে না। অথচ তার সুগন্ধী চল্লিশ বছর দূরত্ব থেকে অনুভূত হবে।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৭ | 6447 | ٦٤٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৬. কাফেরের বদলে মুসলমানকে হত্যা করা হবে না
৬৪৪৭। সাদাকা ইবনুল ফযল (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আলী (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনাদের কাছে এমন কিছু আছে কি যা কুরআনে নেই? তিনি বললেন, দিয়াতের বিধান, বন্দী-মুক্তির বিধান এবং (এ বিধান যে) কাফেরের বদলে কোন মুসলমানকে হত্যা করা যাবে না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৮ | 6448 | ٦٤٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৭. যখন কোন মুসলমান কোন ইয়াহুদীকে ক্রোধের সময় থাপ্পড় লাগাল। এ প্রসঙ্গে আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
৬৪৪৮। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমরা নাবীদের একজনকে অপর জনের উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করো না।

অধ্যায়ঃ ৭৬/ রক্তপন (كتاب الديات)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৪৯ | 6449 | ٦٤٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৭. যখন কোন মুসলমান কোন ইয়াহুদীকে ক্রোধের সময় থাপ্পড় লাগাল। এ প্রসঙ্গে আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
৬৪৪৯। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ইহুদী, যার মুখমণ্ডলে চপোটাঘাত করা করেছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল হে মুহাম্মাদ! আপনার জনৈক আনসারী সাহাবী আমার মুখমণ্ডলে চপেটাঘাত করেছে। তিনি বললেন, তোমরা তাকে ডেকে আন। তারা তাকে ডেকে আনল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি তাকে কেন চড় মারলে? সে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এক ইহুদীর কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম, তখন আমি তাকে বলতে শুনলাম যে, ঐ সত্তার কসম! যিনি মূসা কে মানবমণ্ডলীর উপরে শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন। তখন আমি বললাম, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপরেও কি? অতঃপর আমার ভীষণ রাগ এসে গেল। ফলে আমি তাকে চড় মেরে ফেলি। তিনি বললেনঃ তোমরা আমাকে নাবীদের মাঝে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিও না। কেননা সকল মানুষই কিয়ামতের দিন বেহুশ হয়ে পড়বে। তখন আমিই হব প্রথম ব্যাক্তি যে হুশ ফিরে পাব। কিন্তু আমি তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) কে এমন অবস্থায় পাব যে, তিনি আরশের খুটিসমূহ থেকে একটি খুটি ধরে আছেন। আমি বুঝতে পারব না যে তিনি আমার আগে হুশ ফিরে পেলেন, না তুর পর্বতে বেহুশ হওয়ার বিনিময় দেয়া হয়েছে যে (এখন বেহুশই হননি)?

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৫০ | 6450 | ٦٤۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৮. যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সাথে শিরক করে তার গুনাহ এবং দুনিয়া ও আখিরাতে তার শাস্তি। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলম। (৩১ঃ ১৩) তুমি আল্লাহ্‌র শরীক স্থির করলে তোমার কর্ম তো নিষ্ফল হবে এবং তুমি হবে ক্ষতিগ্রস্ত (৩৯ঃ ৬৫)
৬৪৫০। আবদুল্লাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন এ আয়াত নাযিল হলঃ যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুলুম দ্বারা কুলুষিত করেনি …… (৬ঃ ৮২)। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাদের কাছে গুরুতর মনে হলো। তারা বললেন, আমাদের মাঝে এমন কে আছে যে তার ঈমানকে জুলুম দ্বারা কলুষিত করে না। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা অবশ্যই এমনটা নয়, তোমরা কি লুকমানের কথার প্রতি লক্ষ্য করনি? শিরকই চরম জুল্‌ম (সীমালংঘন)। (৩১ঃ ১৩)।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৫১ | 6451 | ٦٤۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৮. যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সাথে শিরক করে তার গুনাহ এবং দুনিয়া ও আখিরাতে তার শাস্তি। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলম। (৩১ঃ ১৩) তুমি আল্লাহ্‌র শরীক স্থির করলে তোমার কর্ম তো নিষ্ফল হবে এবং তুমি হবে ক্ষতিগ্রস্ত (৩৯ঃ ৬৫)
৬৪৫১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সবচেয়ে কঠিন কবীরা গুনাহ হচ্ছে আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। মিথ্যা সাক্ষ্য কথাটি তিনবার বললেন। অথবা বলেছেন, মিথ্যা বক্তব্য। কথাটি বারবার বলতে থাকলেন এমন কি আমরা আকাঙ্ক্ষা করতে লাগলাম, হায় যদি তিনি নিরব হয়ে যেতেন।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৫২ | 6452 | ٦٤۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৮. যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সাথে শিরক করে তার গুনাহ এবং দুনিয়া ও আখিরাতে তার শাস্তি। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলম। (৩১ঃ ১৩) তুমি আল্লাহ্‌র শরীক স্থির করলে তোমার কর্ম তো নিষ্ফল হবে এবং তুমি হবে ক্ষতিগ্রস্ত (৩৯ঃ ৬৫)
৬৪৫২। মুহাম্মদ ইবনু হুসায়ন ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক বেদুঈন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসুল! কবীরা গুনাহ সমূহ কি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর সাথে শরীক করা। সে বলল, তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তারপর পিতা-মাতার অবাধ্যতা। সে বলল, তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তারপর মিথ্যা কসম করা। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, মিথ্যা কসম কি? তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি (কসম দ্বারা) মুসলমানের ধন সম্পদ হরণ করে নেয়। অথচ সে এ কসমের ব্যাপারে মিথ্যাবাদী।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৫৩ | 6453 | ٦٤۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৮. যে ব্যক্তি আল্লাহ্‌র সাথে শিরক করে তার গুনাহ এবং দুনিয়া ও আখিরাতে তার শাস্তি। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, নিশ্চয়ই শিরক চরম জুলম। (৩১ঃ ১৩) তুমি আল্লাহ্‌র শরীক স্থির করলে তোমার কর্ম তো নিষ্ফল হবে এবং তুমি হবে ক্ষতিগ্রস্ত (৩৯ঃ ৬৫)
৬৪৫৩। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি জাহিলী যুগের কৃতকর্মের জন্য পাকড়াও হবো? তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি ইসলামী যুগে সৎ কাজ করবে সে জাহিলী যুগের কৃতকর্মের জন্য পাকড়াও হবে না। আর যে ব্যাক্তি ইসলাম গ্রহনের পর অসৎ কাজ করবে, সে প্রথম ও পরবর্তী (ইসলাম গ্রহণের আগের ও পরের উভয় সময়ের কৃতকর্যের জন্য) পাকড়াও হবে।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৫৪ | 6454 | ٦٤۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৯. ধর্মত্যাগী পুরুষ ও নারীর হুকুম। ইবন উমর (রাঃ) যুহরী ও ইবরাহীম (রহঃ) বলেন, ধর্মত্যাগী নারীকে হত্যা করা হবে এবং তার থেকে তওবা আহ্বান করা হবে। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, ঈমান আনার পর যে সম্প্রদায় সত্য প্রত্যাখ্যান করে তাদেরকে আল্লাহ্‌ তা’আলা কিরূপে সৎ পথের নির্দেশ দেবেন… এরাই তারা যারা পথভ্রষ্ট পর্যন্ত। (৩ঃ ৮৬-৯০) আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা যদি তাদের দল বিশেষের আনুগত্য কর যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তবে তারা তোমাদেরকে ঈমানের পর আবার সত্য প্রত্যাখ্যানকারীতে পরিণত করবে (৩ঃ ১০০) আল্লাহ্‌ বলেন, যারা ঈমান আনে, পরে কুফরি করে এবং আবার ঈমান আনে আবার কুফরি করে, এরপর তাদের কুফরি প্রবৃত্তি বৃদ্ধি পায় আল্লাহ্‌ তাদেরকে কিছুতেই ক্ষমা করবেন না এবং তাদেরকে কোন পথও দেখাবেন না (৪ঃ ১৩৭)। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, তোমাদের মধ্যে কেউ দীন হতে ফিরে গেলে আল্লাহ্‌ এমন এক সম্প্রদায় আনবেন যাদেরকে তিনি ভালোবাসবেন ও যারা তাঁকে ভালবাসবে (৫ঃ ৫৪)। আল্লাহ্‌ বলেন, যারা সত্য প্রত্যাখ্যানের জন্য হৃদয় উম্মুক্ত রাখে তাদের উপর আপতিত হয় আল্লাহ্‌র গযব এবং তাদের জন্য আছে মহাশাস্তি। তা এজন্য যে, তারা ইহজীবনকে পরজীবনের উপর প্রাধান্য দেয়। (১৬ঃ ১০৬, ১০৭)। অবশ্যই তারা আখিরাতে لا جرم অর্থ حقا নিশ্চয়ই যারা নির্যাতিত হবার পর দেশ ত্যাগ করে পরে জিহাদ করে এবং ধৈর্য ধারণ করে। তোমার প্রতিপালক এসবের পর তাদের প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (১৬ঃ ১১০)। আল্লাহ্‌ বলেন, তারা সর্বদা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে, যে পর্যন্ত তোমাদেরকে তোমাদের দীন হতে ফিরিয়ে না দেয়, যদি তারা সক্ষম হয়। তোমাদের মধ্যে যে পর্যন্ত তোমাদেরকে তোমাদের দীন হতে ফিরিয়ে না দেয়, যদি তারা সক্ষম হয়। তোমাদের মধ্যে যে কেউ স্বীয় দ্বীন হতে ফিরে যায় ও কাফেররূপে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, ইহকাল ও পরকালে তাদের কর্ম নিষ্ফল হয়ে যায়। এরাই অগ্নিবাসী, সেখায় তারা স্থায়ী হবে (২ঃ ২১৭)
৬৪৫৪। আবূ নু’মান মুহাম্মদ ইবনু ফাযল (রহঃ) … ইকরামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আলী (রাঃ) এর নিকট একদল যিন্দীককে (নাস্তিক ও ধর্মদ্রোহী) আনা হল। তিনি তাদেরকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিলেন। এ ঘটনা ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর কাছে পৌঁছলে তিনি বললেন, আমি হলে কিন্তু তাদেরকে পুড়িয়ে ফেলতাম না। কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে যে, তোমরা আল্লাহর শাস্তি দ্বারা শাস্তি দিও না। বরং আমি তাদেরকে হত্যা করতাম। কেননা, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশ রয়েছে, যে কেউ তার দ্বীন বদলে ফেলে তাকে তোমরা হত্যা কর।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৫৫ | 6455 | ٦٤۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৮৯৯. ধর্মত্যাগী পুরুষ ও নারীর হুকুম। ইবন উমর (রাঃ) যুহরী ও ইবরাহীম (রহঃ) বলেন, ধর্মত্যাগী নারীকে হত্যা করা হবে এবং তার থেকে তওবা আহ্বান করা হবে। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, ঈমান আনার পর যে সম্প্রদায় সত্য প্রত্যাখ্যান করে তাদেরকে আল্লাহ্‌ তা’আলা কিরূপে সৎ পথের নির্দেশ দেবেন… এরাই তারা যারা পথভ্রষ্ট পর্যন্ত। (৩ঃ ৮৬-৯০) আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা যদি তাদের দল বিশেষের আনুগত্য কর যাদেরকে কিতাব দেয়া হয়েছে তবে তারা তোমাদেরকে ঈমানের পর আবার সত্য প্রত্যাখ্যানকারীতে পরিণত করবে (৩ঃ ১০০) আল্লাহ্‌ বলেন, যারা ঈমান আনে, পরে কুফরি করে এবং আবার ঈমান আনে আবার কুফরি করে, এরপর তাদের কুফরি প্রবৃত্তি বৃদ্ধি পায় আল্লাহ্‌ তাদেরকে কিছুতেই ক্ষমা করবেন না এবং তাদেরকে কোন পথও দেখাবেন না (৪ঃ ১৩৭)। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন, তোমাদের মধ্যে কেউ দীন হতে ফিরে গেলে আল্লাহ্‌ এমন এক সম্প্রদায় আনবেন যাদেরকে তিনি ভালোবাসবেন ও যারা তাঁকে ভালবাসবে (৫ঃ ৫৪)। আল্লাহ্‌ বলেন, যারা সত্য প্রত্যাখ্যানের জন্য হৃদয় উম্মুক্ত রাখে তাদের উপর আপতিত হয় আল্লাহ্‌র গযব এবং তাদের জন্য আছে মহাশাস্তি। তা এজন্য যে, তারা ইহজীবনকে পরজীবনের উপর প্রাধান্য দেয়। (১৬ঃ ১০৬, ১০৭)। অবশ্যই তারা আখিরাতে لا جرم অর্থ حقا নিশ্চয়ই যারা নির্যাতিত হবার পর দেশ ত্যাগ করে পরে জিহাদ করে এবং ধৈর্য ধারণ করে। তোমার প্রতিপালক এসবের পর তাদের প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (১৬ঃ ১১০)। আল্লাহ্‌ বলেন, তারা সর্বদা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে, যে পর্যন্ত তোমাদেরকে তোমাদের দীন হতে ফিরিয়ে না দেয়, যদি তারা সক্ষম হয়। তোমাদের মধ্যে যে পর্যন্ত তোমাদেরকে তোমাদের দীন হতে ফিরিয়ে না দেয়, যদি তারা সক্ষম হয়। তোমাদের মধ্যে যে কেউ স্বীয় দ্বীন হতে ফিরে যায় ও কাফেররূপে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, ইহকাল ও পরকালে তাদের কর্ম নিষ্ফল হয়ে যায়। এরাই অগ্নিবাসী, সেখায় তারা স্থায়ী হবে (২ঃ ২১৭)
৬৪৫৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলাম। আমার সাথে আশআরী গোত্রের দু’ব্যাক্তি ছিল। একজন আমার ডানদিকে, অপরজন আমার বামদিকে। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন মিসওয়াক করছিলেন। উভয়েই তাঁর কাছে আবদার জানাল। তখন তিনি বললেনঃ হে আবূ মূসা! অথবা বললেন, হে আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! রাবী বলেন, আমি বললাম, ঐ সত্তার কসম! যিনি আপনাকে সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন তারা তাদের অন্তরে কি আছে তা আমাকে জানায়নি এবং তারা যে চাকরি প্রার্থনা করবে তা আমি বুঝতে পারিনি। আমি যেন তখন তাঁর ঠোটের নিচে মিসওয়াকের প্রতি লক্ষ্য করছিলাম যে তা এক কোণে সরে গেছে। তখন তিনি বললেন, আমরা আমাদের কাজে এমন কাউকে নিয়োগ দিব না বা দেই না যে নিজেই তা চায়। বরং হে আবূ মূসা! অথবা বললেন, হে আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! তুমি ইয়ামনে যাও।

এরপর তিনি তার পেছনে মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) কে পাঠালেন। যখন তিনি তথায় পৌছলেন, তখন আবূ মূসা (রাঃ) তার জন্য একটি গদি বিছালেন। আর বললেন, নেমে আসুন। ঘটনাক্রমে তার কাছে একজন লোক শৃঙ্খলাবদ্ধ ছিল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ঐ লোকটি কে? আবূ মূসা (রাঃ) বললেন, সে প্রথমে ইহুদী ছিল এবং মুসলমান হয়েছিল। কিন্তু পুনরায় সে ইহুদী হয়ে গিয়েছে। আবূ মূসা (রাঃ) বললেন, বসুন। মু’আয (রাঃ) বললেন, না, বসব না, যতক্ষণ না তাকে হত্যা করা হবে। এটাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের ফায়সালা। কথাটি তিনি তিনবার বললেন। এরপর তার সম্পর্কে নির্দেশ দেয়া হল এবং তাকে হত্যা করা হল। তারপর তাঁরা উভয়ই কিয়ামুল লায়ল (রাত জাগরণ) সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তখন একজন বললেন, আমি কিন্তু ইবাদতও করি, নিদ্রাও যাই। আর নিদ্রাবস্থায় ঐ আশা রাখি যা ইবাদত অবস্থায় রাখি।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৫৬ | 6456 | ٦٤۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৯০০. যারা ফরযসমূহ গ্রহণ করতে অস্বীকার করে এবং যাদেরকে ধর্মত্যাগের অপরাধে অপরাধী করা হয়েছে তাদেরকে হত্যা করা
৬৪৫৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাত হল এবং আবূ বকর (রাঃ) খলীফা নিযুক্ত হলেন আর আরবের যারা কাফির হল, তখন উমর (রাঃ) বললেন, হে আবূ বকর! আপনি কিভাবে লোকদের সাথে যুদ্ধ করবেন? অথচ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে ততক্ষন পর্যন্ত লোকদের সাথে যুদ্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে যতক্ষন না তারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই) বলবে। আর যে কেউ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে যথার্থ কারণ না থাকলে সে তার জান ও মাল আমার হাত থেকে রক্ষা করে নেয়। আর তার হিসাব আল্লাহর দায়িত্বে।

আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! যারা সালাত (নামায/নামাজ) ও যাকাতের মধ্যে প্রভেদ করবে তাদের সাথে অবশ্যই আমি যুদ্ধ করব। কেননা যাকাত হল মালের হক। আল্লাহর কসম! যদি তারা একটি বকরির বাচ্চাও না দেয় তা তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে দিত। তাহলে তা না দেওয়ার কারণে তাদের সাথে যুদ্ধ করব। উমর (রাঃ) বলেনঃ আল্লাহর কসম! আমি বুঝতে পারলাম যে, এটা আর কিছু নয় এবং আল্লাহ আবূ বকর (রাঃ) এর বক্ষ যুদ্ধের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। পরে আমি বুঝতে পারলাম যে, এটই হক। আবূ বকর (রাঃ) এর সিদ্ধান্ত।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৫৭ | 6457 | ٦٤۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৯০১. যখন কোন যিম্মী বা অন্য কেউ নবী (সাঃ) কে বাকচাতুরীর মাধ্যমে গালি দেয় এবং স্পষ্ট করে না, যেমন তার কথা ‘আসসামু আলাইকা’ (তোমার মৃত্যু হোক)
৬৪৫৭। মুহাম্মাদ ইবন মুকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ইহুদী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট দিয়ে অতিক্রম করল। আর বলল, আসসামু আলাইকা। তদুত্তরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ওয়া আলাইকা। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের বললেনঃ তোমরা কি বুঝতে পেরেছ সে কি বলেছে? সে বলেছে, ‘আসসামু আলাইকা’ (তোমার মৃত্যু হোক)। তারা বলল, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কি তাকে হত্যা করব না? তিনি বললেনঃ না। বরং যখন কোন আহলে কিতাব তোমাদেরকে সালাম দিবে তখন তোমরা বলবে, ওয়া আলাইকুম (তোমাদের উপরও)।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৫৮ | 6458 | ٦٤۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৯০১. যখন কোন যিম্মী বা অন্য কেউ নবী (সাঃ) কে বাকচাতুরীর মাধ্যমে গালি দেয় এবং স্পষ্ট করে না, যেমন তার কথা ‘আসসামু আলাইকা’ (তোমার মৃত্যু হোক)
৬৪৫৮। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদল ইহুদী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে প্রবেশের অনুমতি চাইল (প্রবেশ করতে গিয়ে) তারা বলল “আসসামু আলাইকা” (তোমার মৃত্যু হোক)। তখন আমি বললাম, বরং তোদের উপর মৃত্যু ও লা’নত পতিত হোক। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আয়িশা! আল্লাহ কোমল। তিনি সকল কাজে কোমলতা পছন্দ করেন। আমি বললাম আপনি কি শুনেননি তারা কি বলেছে? তিনি বললেনঃ আমিও তো বলেছি ওয়া-আলাইকুম (এবং তোমাদের উপরও)।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৫৯ | 6459 | ٦٤۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৯০১. যখন কোন যিম্মী বা অন্য কেউ নবী (সাঃ) কে বাকচাতুরীর মাধ্যমে গালি দেয় এবং স্পষ্ট করে না, যেমন তার কথা ‘আসসামু আলাইকা’ (তোমার মৃত্যু হোক)
৬৪৫৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইহুদীরা যখন তোমাদের কাউকে সালাম করে তারা কিন্তু “সামু আলাইকুম” বলে। তাই তোমরা বলবে, “আলাইকা” তোমার উপর।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৬০ | 6460 | ٦٤٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৯০২. পরিচ্ছেদ নাই
৬৪৬০। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যেন লক্ষ্য করছিলাম যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন এক নাবীর কথা বর্ণনা করছেন। যাকে তাঁর সম্প্রদায় প্রহার করে রক্তাক্ত করে ফেলে, আর তিনি আপন চেহারা থেকে রক্ত মুছেন ও বলছেনঃ হে রব! তুমি আমার কাওমকে মাফ করে দাও। কেননা, তারা বুঝতে পারছে না।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৬১ | 6461 | ٦٤٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৯০৩. খারিজী সম্প্রদায় ও মুলহিদদের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পর তাদেরকে হত্যা করা এবং আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ এমন নন যে, তিনি কোন সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করার পর তাদেরকে বিভ্রান্ত করবেন- তাদেরকে কী বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে তা সুস্পষ্টরূপে ব্যক্ত না করা পর্যন্ত। (৯ঃ ১১৫) ইবন উমর (রা) তাদেরকে আল্লাহ্‌র সৃষ্টির নিকৃষ্টতম সৃষ্টি হিসেবে বিবেচনা করতেন এবং তিনি বলেছেন, তারা এমন কিছু আয়াতকে মুমিনদের ওপর প্রয়োগ করেছে যা কাফেরদের সম্পর্কে অবতীর্ণ
৬৪৬১। উমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াস (রহঃ) … সুয়ায়দ ইবনু গাফালা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আলী (রাঃ) বলেছেন, আমি যখন তোমাদেরকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন হাদীস বর্ণনা করি আল্লাহর কসম! তখন তার উপর মিথ্যা কথা আরোপ করার চেয়ে আকাশ থেকে নিচে পড়ে যাওয়াটা আমার কাছে শ্রেয়। কিন্তু আমি যদি আমার ও তোমাদের মধ্যকার বিষয় সম্পর্কে কিছু বলি, তাহলে মনে রাখতে হবে যে, যুদ্ধ একটি কৌশল। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, শেষ যুগে এমন এক সম্প্রদায়ের আবির্ভাব হবে যারা হবে অল্পবয়ষ্ক যুবক, নির্বোধ। তারা সৃষ্টির সবচাইতে শ্রেষ্টতম কথা থেকে আবৃতি করবে। অথচ ঈমান তাদের গলদেশ অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায়। তাদেরকে যেখানেই তোমরা পাবে হত্যা করবে। কেননা তাদেরকে হত্যা করলে হত্যাকারীর জন্য কিয়ামত দিবসে প্রতিদান রয়েছে।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৬২ | 6462 | ٦٤٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৯০৩. খারিজী সম্প্রদায় ও মুলহিদদের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পর তাদেরকে হত্যা করা এবং আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ এমন নন যে, তিনি কোন সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করার পর তাদেরকে বিভ্রান্ত করবেন- তাদেরকে কী বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে তা সুস্পষ্টরূপে ব্যক্ত না করা পর্যন্ত। (৯ঃ ১১৫) ইবন উমর (রা) তাদেরকে আল্লাহ্‌র সৃষ্টির নিকৃষ্টতম সৃষ্টি হিসেবে বিবেচনা করতেন এবং তিনি বলেছেন, তারা এমন কিছু আয়াতকে মুমিনদের ওপর প্রয়োগ করেছে যা কাফেরদের সম্পর্কে অবতীর্ণ
৬৪৬২। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আবূ সালামা ও আতা ইবনু ইয়াসার (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তারা আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) এর কাছে এলেন। তারা তাঁকে হারুরিয়্যা সম্প্রদায় সম্পর্কে প্রশ্ন করলেন যে, আপনি কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এদের সম্পর্কে কিছু শুনেছেন? তিনি বললেনঃ হারুবিয়্যা কি তা আমি জানি না। তবে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি। উম্মাতের মধ্যে বের হবে। তার থেকে সম্প্রদায়ের আবির্ভাব ঘটবে কথাটি বলেননি। যাদের সালাত (নামায/নামাজ)-এর তুলনায় তোমরা তোমাদের সালাত (নামায/নামাজ) কে তুচ্ছ মনে করবে। তারা কুরআন পড়বে বটে কিন্তু তা তাদের গলদেশ অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে বের হয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায়। তীর নিক্ষেপকারী তীরের প্রতি, তার অগ্রভাগের প্রতি, তীরের মুখে বেষ্টনীর প্রতি লক্ষ্য করে, তীরের ছিলার বেলায়ও সন্দেহ হয় যে তাতে কিছু রক্ত লেগে রইল কি না।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৬৩ | 6463 | ٦٤٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৯০৩. খারিজী সম্প্রদায় ও মুলহিদদের অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পর তাদেরকে হত্যা করা এবং আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ এমন নন যে, তিনি কোন সম্প্রদায়কে পথ প্রদর্শন করার পর তাদেরকে বিভ্রান্ত করবেন- তাদেরকে কী বিষয়ে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে তা সুস্পষ্টরূপে ব্যক্ত না করা পর্যন্ত। (৯ঃ ১১৫) ইবন উমর (রা) তাদেরকে আল্লাহ্‌র সৃষ্টির নিকৃষ্টতম সৃষ্টি হিসেবে বিবেচনা করতেন এবং তিনি বলেছেন, তারা এমন কিছু আয়াতকে মুমিনদের ওপর প্রয়োগ করেছে যা কাফেরদের সম্পর্কে অবতীর্ণ
৬৪৬৩। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি হারুবিয়্যা সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তারা ইসলাম থেকে এরূপ বের হয়ে যাবে যেমন তীর শিকার থেকে বের হয়ে যায়।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৬৪ | 6464 | ٦٤٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৯০৪. যারা মনোরঞ্জনের নিমিত্ত খারিজীদের সাথে যুদ্ধ ত্যাগ করে এবং এজন্য যে যাতে করে লোকেরা তাদের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ না করে
৬৪৬৪। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন কিছু বন্টন করছিলেন। ঘটনাক্রমে আবদুল্লাহ ইবনু যুল খুওয়ায়সিরা তামীমী এল এবং বলল, হে আল্লাহর রাসুল! ইনসাফ করুন। তিনি বললেনঃ আফসোস তোমার জন্য। আমি যদি ইনসাফ না করি তা হলে আর কে ইনসাফ করবে? উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বললেন, আমাকে অনুমতি দিন তার গর্দান উড়িয়ে দেই। তিনি বললেনঃ তাকে ছেড়ে দাও। তার জন্য সাথীবৃন্দ রয়েছে। যাদের সালাত (নামায/নামাজ) এর তুলনায় তোমরা তোমাদের সালাত (নামায/নামাজ) কে তুচ্ছ মনে করবে। যাদের সিয়ামের তুলনায় তোমরা তোমাদের সিয়ামকে তুচ্ছ মনে করবে। তারা দ্বীন থেকে এরূপ বেরিয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়। তীরের পরে লক্ষ্য করলে তাতে কিছু পাওয়া যায় না। তীরের মুখের বেষ্টনীর প্রতি লক্ষ্য করলেও কিছু পাওয়া যায় না তীরের কাঠের অংশের দিকে তাকালেও তাতে কিছু পাওয়া যায় না। বরং তীর তীব্র গতিতে বেরিয়ে যাওয়ার কালে তাতে মল ও রক্তের দাগ পর্যন্ত লাগে না।

তাদের পরিচয় এই যে তাদের একটি লোকের একটি হাত অথবা বলেছেন, একটি স্তন্য হবে মহিলাদের স্তনের ন্যায়। অথবা বলেছেন, বাড়তি গোশতের টুকরার ন্যয়। লোকদের মধ্যে বিরোধের সময় তাদের আবির্ভাব হবে। আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি তা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। এও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আলী (রাঃ) তাদেরকে হত্যা করেছিলেন। আমি তখন তাঁর সাথে ছিলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রদত্ত বর্ণনার অনুরূপ ব্যাক্তিকে আনা হয়েছিল। তিনি বলেনঃ ওর সম্পর্কেই নাযিল হয়েছেঃ ওদের মধ্যে এমন লোক আছে যে সাদকা সম্পর্কে তোমাকে দোষারোপ করে (৯ঃ ৫৮)।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৬৫ | 6465 | ٦٤٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৯০৪. যারা মনোরঞ্জনের নিমিত্ত খারিজীদের সাথে যুদ্ধ ত্যাগ করে এবং এজন্য যে যাতে করে লোকেরা তাদের প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ না করে
৬৪৬৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইউসায়ের ইবনু আমর (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাহল ইবনু হুনায়েফ (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে খারিজীদের সম্পর্কে কিছু বলতে শুনেছেন কি? তিনি বললেন, আমি তাকে বলতে শুনেছি, আর তখন তিনি তাঁর হাত ইরাকের দিকে বাড়িয়ে ছিলেন যে, সেখান থেকে এমন একটি কাওম বের হবে যারা কুরআন পড়বে সত্য, কিন্তু তা তাদের গলদেশ অতিক্রম করবে না তারা ইসলাম থেকে বেরিয়ে যাবে যেমন তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায়।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৬৬ | 6466 | ٦٤٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৯০৫. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ কস্মিনকালেও কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষণ না দু’টি দল পরস্পর লড়াই করবে, অথচ তাদের দাবি হবে অভিন্ন
৬৪৬৬। আলী (রাঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামত সংঘটিত হবে না, যতক্ষন না এমন দুটি দল পরস্পর লড়াই করবে, যাদের দাবি হবে অভিন্ন।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৬৭ | 6467 | ٦٤٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৯০৬. ব্যাখ্যা প্রদানকারীদের সম্পর্কে যা বর্ণনা করা হয়েছে
৬৪৬৭। আবু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হিশাম ইবনু হাকীম (রাঃ) কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশায় সূরা ফুরকান পড়তে শুনেছি। আমি তার পড়ার প্রতি কর্ণপাত করলাম, (আমি লক্ষ্য করলাম) যে, তিনি এর অনেক গুলো অক্ষর এমন পদ্ধতিতে পড়ছেন, যে পদ্ধতিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে পড়ান নি। ফলে আমি তাকে সালাত (নামায/নামাজ) এর মাঝেই আক্রমন করতে উদ্যত হলাম। কিন্তু সালাম ফিরানো পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। সালাম ফিরানোর পর আমি তাকে তার চাঁদর দিয়ে অথবা বললেন, আমার চাঁদর দিয়ে জড়িয়ে নিলাম। আর বললাম, তোমাকে এ সুরা কে পড়িয়েছে? তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে পড়িয়েছেন। আমি তাকে বললাম, তুমি মিথ্যা বলছ। আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এ সূরা পড়িয়েছেন যা তোমাকে পড়তে শুনেছি।

তারপর আমি তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট টেনে নিয়ে গেলাম। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আমি এ ব্যাক্তিকে সূরা ফুরকান এরূপ অক্ষর দিয়ে পড়তে শুনেছি যা আপনি আমাকে পড়াননি। আর আপনি তো আমাকে সূরা ফুরকান পড়িয়েছেন। তিনি বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উমর! তাকে ছেড়ে দাও। (আর বললেন) হে হিশাম! তুমি পড় তো। হিশাম তার কাছে এভাবেই পড়লেন, যেভাবে তাকে তা পড়তে আমি শুনেছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এভাবেই নাযিল করা হয়েছে এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উমর! তুমিও পড়। আমি পড়লাম। তখন তিনি বললেনঃ এভাবেও নাযিল করা হয়েছে। অতঃপর তিনি বললেনঃ এ কুরআন সাত (রকমে কিরাআতের দিক দিয়ে) ভাষায় নাযিল করা হয়েছে। তাই যে পদ্ধতিতেই সহজ হবে সে পদ্ধড়িতেই তোমরা তা পড়বে।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৬৮ | 6468 | ٦٤٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৯০৬. ব্যাখ্যা প্রদানকারীদের সম্পর্কে যা বর্ণনা করা হয়েছে
৬৪৬৮। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ও ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবদল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, য়খন এ আয়াত নাযিল হলঃ যারা ঈমান এনেছে এবং তাদের ঈমানকে জুলুম দ্বারা কলুষিত করেনি (৬ঃ ৮২), তখন তা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবাদের জন্য গুরুতর মনে হল। তারা বলল, আমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে তার ঈমানকে জুলুম দ্বারা কলুষিত করে না? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা যেভাবে ধারণা করছ তা তেমন নয়। বরং এটা হচ্ছে তুদ্রূপ যেমন লুকমান (আলাইহিস সালাম) তার পুত্রকে বলেছিলেনঃ হে বৎস! আল্লাহর সাথে কোন শরীক করো না। শিরক তো চরম জুলম (সীমালংঘন) (৩১ঃ ১৩)।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৬৯ | 6469 | ٦٤٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৯০৬. ব্যাখ্যা প্রদানকারীদের সম্পর্কে যা বর্ণনা করা হয়েছে
৬৪৬৯। আবদান (রহঃ) … ইতবান ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যূষে আমার কাছে আগমন করলেন। তখন এক ব্যাক্তি বলল, মালিক ইবনু দুখশুন কোথায়? আমাদের এক ব্যাক্তি বলল, সে তো মুনাফিক; সে আল্লাহ ও তার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভালোবাসে না। তা শুনে রাসুলাল্লাহ বললেনঃ তোমরা কি এ কথা বলনি যে, সে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে। তারা বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ যে কোন বান্দা কিয়ামতের দিন ঐ কথা নিয়ে উপস্থিত হবে, আল্লাহ তার উপর জাহান্নাম হারাম করে দিবেন।

অধ্যায়ঃ ৭৭/ আল্লাহদ্রোহী ও ধর্মত্যাগীদেরকে তওবার প্রতি আহবান ও তাদের সাথে যুদ্ধ (كتاب استتابة المرتدين والمعاندين وقتالهم)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৭০ | 6470 | ٦٤۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৯০৬. ব্যাখ্যা প্রদানকারীদের সম্পর্কে যা বর্ণনা করা হয়েছে
৬৪৭০। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … জনৈক রাবী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন এক কারণে আবূ আবদুর রহমান ও হিব্বান ইবনু আতিয়্যার মাঝে ঝগড়া বাঁধে। আবু আবদুর রহমান হিব্বান কে বললেন, আমি অবশ্যই জানি যে, কোন বিষয়টি আপনার সাথীকে রক্তপাতে দুঃসাহসী করে তুলেছে। সাথী, অর্থাৎ আলী (রাঃ) সে বলল, সে কি! তোমার পিতা জীবিত না থাকুক। আবু আবদুর রহমান বলল, তা আলী (রাঃ) কে বলতে শুনেছি। হিববান বলল, সে কি? আবু আবদুর রহমান বলল, যুবায়র, আবূ মারছাদ এবং আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাঠালেন। আমরা সকলেই অশ্বারোহী ছিলাম। তিনি বললেনঃ তোমরা রওয়ায়ে হাজ পর্যন্ত যাবে। আবূ সালামা (রহঃ) বলেন, আবূ আওয়ানা (রহঃ) অনুরূপই বলেছেন। তথায় একজন মহিলা রয়েছে, যার কাছে হাতিব ইবনু আবূ বালতাআ (রাঃ) এর তরফ থেকে (মক্কার) মুশরিকদের কাছে প্রেরিত একখানা চিঠি আছে। তোমরা তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে।

আমরা আমাদের ঘোড়ায় চড়ে রওনা দিলাম। অবশেষে আমরা তাকে ঐ স্থানেই পেলাম, যে স্থানের কথা আমাদেরকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন। সে তার উটে চলছে। আবূ বালতাআ (রাঃ) মক্কাবাসীদের কাছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের দিকে রওনা হওয়া সম্পর্কিত সংবাদ জানিয়ে পত্র লিখেছেন। আমরা বললাম, তোমার সাথে যে পত্র রয়েছে তা কোথায়? সে বলল, আমার সাথে কোন পত্র নেই। আমরা তার উটকে বসালাম এবং তার হাওদায় খোঁজাখুজি করলাম। কিন্তু কিছুই পেলাম না। তখন আমার সঙ্গী দু’জন বলল, তার সাথে তো আমরা কোন পত্র দেখছি না। আমি বললাম, আমরা অবশ্যই জানি যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিথ্যা বলেননি।

তারপর আলী (রাঃ) এই বলে কসম করে বললেনঃ ঐ সত্তার কসম! যার নামে কসম করা হয়! অবশ্যই তোমাকে চিঠি বের করে দিতে হবে। নতুবা তোমাকে উলঙ্গ করে ছাড়ব। তখন সে তার চাদর বাঁধা কোমরের প্রতি নিবিষ্ট হল এবং (সেখান থেকে) পত্রটি বের করে দিল। তারা পত্রটি নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত হলেন। তখন উমর (রাঃ) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! সে আল্লাহ, তাঁর রাসুল ও মুমিনদের সাথে খিয়ানত করেছে। আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই।

তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেনঃ হে হাতিব! এ কাজে তোমাকে কিসে প্রবৃত্ত করেছে? তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমি কেন আল্লাহ ও তার রাসূলের প্রতি ঈমান রাখব না। আসল কথা হচ্ছে, আমি চাচ্ছিলাম যে, কাওমের (মক্কাবাসী) প্রতি আমার কিছুটা অনুগ্রহ সূচক কাজ হোক যার বদৌলতে আমার পরিবারবর্গ ও মাল সম্পদ রক্ষা পায়। আপনার সাথীদের প্রত্যেকেরই সেখানে স্বগোত্রীয় এমন লোক রয়েছে, যাদের মাধ্যমে আল্লাহ তার পরিবারবর্গ ও মাল সম্পদ রক্ষার ব্যবস্থা করবেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সে ঠিকই বলেছে। সুতরাং তোমরা তার সম্পর্কে ভালো ছাড়া মন্দ কোন মন্তব্য করো না।

বর্ণনাকারী বলেন, উমর (রাঃ) পূনরায় বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! সে আল্লাহ, তার রাসুল ও মুমিনদের সাথে খিয়ানত করেছে। আমাকে অনুমতি দিন, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। তিনি বললেনঃ সে কি বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী নয়? তুমি কি করে জানোবে? আল্লাহ তাদের প্রতি লক্ষ্য করে বলেছেনঃ তোমরা যা ইচ্ছা তা কর। তোমাদের জন্য জান্নাত নির্ধারিত করে ফেলেছি। এ কথা শুনে উমর (রাঃ)-এর চক্ষুযুগল অশ্রুসিক্ত হয়ে গেল এবং তিনি বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই সর্বাধিক জ্ঞাত।

আবু আবদুল্লাহ [বুখারী (রহঃ)] বলেন, خاخ বিশুদ্ধতম। তবে আবু আওয়ানা (রহঃ) অনুরূপ حاج বলেছেন। আবু আবদুল্লাহ [বুখারী (রহঃ)] বলেছেন خاج বিকৃতি। আর এটি একটি স্থানের নাম। হুশায়ম (রহঃ) خاخ বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৭১ | 6471 | ٦٤۷۱

পরিচ্ছদঃ আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তবে তার জন্য নয় (যাকে সত্য প্রত্যাখ্যানে) বাধ্য করা হয়। কিন্তু তার চিত্ত বিশ্বাসে অবিচলিত। আর যে সত্য প্রত্যাখ্যানে হৃদয় উন্মুক্ত রাখল তার উপর আপতিত হবে আল্লাহ্‌র গযব… আয়াতের শেষ পর্যন্ত (১৬ঃ ১০৬)। আল্লাহ্‌ বলেনঃ তবে যদি তোমরা তাদের নিকট হতে কোন ভয়ের আশংকা কর আর تقية … একই অর্থ (৩ঃ ২৮)। আল্লাহ্‌ তা’আলা আরো বলেন, যারা নিজেদের উপর জুলম করে, তাদের প্রাণ হরণের সময় ফেরেশ্তাগণ বলে, তোমরা কি অবস্থায় ছিলে। তারা বলে, দুনিয়ায় আমরা অসহায় ছিলাম। তারা বলে, তোমরা নিজ দেশ ত্যাগ করে অন্য দেশে বসবাস করতে পারতে আল্লাহ্‌র দুনিয়া কি এমন প্রশস্ত ছিল না? … আল্লাহ্‌ পাপ মোচনকারী ও ক্ষমাশীল পর্যন্ত (৪ঃ ৯৭-৯৯)। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেন এবং অসহায় নরনারী ও শিশুদের জন্য? যারা বলে … সহায় পর্যন্ত। (৪ঃ ৭৫) আবূ আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্‌ অসহায়দেরকে ক্ষমার্হ বলে চিহ্নিত করেছেন। যারা আল্লাহ্‌র নির্দেশসমূহ পরিত্যাগ করা থেকে বিরত থাকতে পারে না। আর বল প্রয়োগকৃত ব্যক্তি এমনই অসহায় হয় যে, সে ঐ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে না, যার নির্দেশ তাকে দেওয়া হয়েছে। হাসান (রহঃ) বলেন, তকিয়া কিয়ামত পর্যন্ত অবধারিত। ইবন আব্বাস (রাঃ) ঐ ব্যক্তি সম্পর্কে বলেন, যাকে জালিমরা বাধ্য করার দরুন সে তালাক প্রদান করে ফেলে তা কিছুই নয়। ইবন উমর (রাঃ), ইবন যুবায়র (রাঃ) শা’বী (রহঃ) এবং হাসান (রহঃ) ও এ মত পোষণ করেন। আর নবী (সাঃ) বলেছেন, সকল কাজই নিয়তের সাথে সম্পৃক্ত
৬৪৭১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে দোয়া করতেনঃ হে আল্লাহ! আইয়াশ ইবনু আবু বারীআ, সালামা ইবনু হিশাম, ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদকে নাজাত দাও। হে আল্লাহ! অসহায় মুমিনদেরকে নাজাত দাও। হে আল্লাহ! মুযার গোত্রের উপর তোমার পাঞ্জা কঠোর করে নাও এবং তাদের ওপর ইউসুফের দুর্ভিক্ষের বছর সমুহের ন্যায় বছর চাপিয়ে দাও।

অধ্যায়ঃ ৭৮/ বল-প্রয়োগে বাধ্য করা (كتاب الإكراه)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৭২ | 6472 | ٦٤۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৯০৭. যে ব্যক্তি কুফরি কবূল করার পরিবর্তে দৈহিক নির্যাতন, নিহত ও লাঞ্ছিত হওয়াকে অগ্রাধিকার দেয়
৬৪৭২। মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু হাওশাব তায়েফী (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনটি জিনিস এমন যার মধ্যে সেগুলো পাওয়া যাবে, সে ঈমানের স্বাদ পাবে। ১. আল্লাহ ও তার রাসুল তার কাছে অন্য সবকিছু থেকে প্রিয় হওয়া। ২. কাউকে শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য ভালবাসা। ৩. জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে যেভাবে অপছন্দ করে, তেমনি পুনরায় কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করাকে অপছন্দ করে।

অধ্যায়ঃ ৭৮/ বল-প্রয়োগে বাধ্য করা (كتاب الإكراه)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৭৩ | 6473 | ٦٤۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৯০৭. যে ব্যক্তি কুফরি কবূল করার পরিবর্তে দৈহিক নির্যাতন, নিহত ও লাঞ্ছিত হওয়াকে অগ্রাধিকার দেয়
৬৪৭৩। সাঈদ ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাঈদ ইবনু যায়িদ (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, আমি মনে করি উমর (রাঃ) এর কঠোরতা আমাকে ইসলামের উপর অনড় করে দিয়েছে। তোমরা উসমান (রাঃ) এর সাথে যা করেছ তাতে যদি উহুদ পাহাড় ফেটে যেত তা হলে তা সঙ্গতই হত।

অধ্যায়ঃ ৭৮/ বল-প্রয়োগে বাধ্য করা (كتاب الإكراه)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৭৪ | 6474 | ٦٤۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৯০৭. যে ব্যক্তি কুফরি কবূল করার পরিবর্তে দৈহিক নির্যাতন, নিহত ও লাঞ্ছিত হওয়াকে অগ্রাধিকার দেয়
৬৪৭৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … খাব্বাব ইবনু আরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কোন বিষয়ে অভিযোগ করলাম। তখন তিনি কা’বা ঘরের ছায়ায় তাঁর চাদরকে বালিশ বানিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। আমরা বললাম, (আমাদের জন্য কি) সাহায্য কামনা করবেন না? আমাদের জন্য কি দোয়া করবেন না? তিনি বললেনঃ তোমাদের পূর্বেকার লোকদের মধ্যে এমন ব্যাক্তিও ছিল যাকে ধরে নিয়ে তার জন্য যমীনে গর্ত করাতে। তারপর করাত এনে মাথায় আঘাত হেনে দুই টুকরা করে ফেলা হত। লোহার শলাকা দিয়ে তার গোশত ও হাড্ডি খসানো হত। এতদসত্ত্বেও তাকে তার দ্বীন থেকে ফিরিয়ে রাখতে পারত না। আল্লাহর কসম! এ দ্বীন অবশ্যই পূর্নতা লাভ করবে। এমন হবে যে সানআ থেকে হাযরামাওত পর্যন্ত ভ্রমণকারী ভ্রমণ করবে। অথচ সে আল্লাহ ব্যতীত কাউকে ভয় করবে না এবং নিজের মেষপালের জন্য বাঘের ভয় থাকবে কিন্তু তোমরা তো তাড়াহুড়া করছ।

অধ্যায়ঃ ৭৮/ বল-প্রয়োগে বাধ্য করা (كتاب الإكراه)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৭৫ | 6475 | ٦٤۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৯০৮. জোরপূর্বক কাউকে দিয়ে তার নিজের সম্পদ বা অপরের সম্পদ বিক্রয় করানো
৬৪৭৫। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, একদা আমরা মসজিদে ছিলাম। হঠাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে বেরিয়ে এসে বললেনঃ তোমরা ইহুদীদের কাছে চল। আমি তাঁর সাথে বের হয়ে পড়লাম এবং বায়তুল-মিদরাস নামক শিক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে পৌছলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে তাদেরকে সন্বোধন করে বললেনঃ হে ইহুদী সম্প্রদায়! তোমরা মুসলমান হয়ে যাও, নিরাপদ থাকবে। তারা বলল হে আবূল কাসিম! আপনি (আপনার দায়িত্ব) গৌছে দিয়েছেন। তিনি বললেনঃ এটাই আমি চাই। তারপর দ্বিতীয়বার কথাটি বললেনঃ তারা বলল, হে আবূল কাসিম! আপনি পৌছে দিয়েছেন। এরপর তিনি তৃতীয়বার তা পুনরাবৃত্তি করলেন। আর বললেনঃ তোমরা জেনে রেখো যে, যমীন কেবল আল্লাহ ও তার রাসুলের। আমি তোমাদেরকে দেশান্তর করতে মনস্থ করেছি। তাই তোমাদের যার অস্থাবর সস্পত্তি রয়েছে, তা যেন সে বিক্রি করে নেয়। অন্যথায় জেনে রেখো, যমীন কেবল আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের।

অধ্যায়ঃ ৭৮/ বল-প্রয়োগে বাধ্য করা (كتاب الإكراه)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৭৬ | 6476 | ٦٤۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৯০৯. বলপ্রয়োগকৃত ব্যক্তির বিয়ে জায়েয হয় না। আল্লাহ্‌ বলেন, তোমরা দাসীগণকে ব্যভিচারে বাধ্য করো না। … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২৪ঃ ৩৩)
৬৪৭৬। ইয়াহইয়াহ ইবনু কাযাআ (রহঃ) … খানসা বিনত খিযাম আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাকে তার পিতা (অনুমতি ব্যতীত) বিয়ে দিলেন। আর সে ছিল বিধবা। কিন্তু এ বিয়ে তার পছন্দ হল না। তাই সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে জানাল। ফলে তিনি তার এ বিয়ে রদ (বাতিল) করে দিলেন।

অধ্যায়ঃ ৭৮/ বল-প্রয়োগে বাধ্য করা (كتاب الإكراه)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৭৭ | 6477 | ٦٤۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৯০৯. বলপ্রয়োগকৃত ব্যক্তির বিয়ে জায়েয হয় না। আল্লাহ্‌ বলেন, তোমরা দাসীগণকে ব্যভিচারে বাধ্য করো না। … আয়াতের শেষ পর্যন্ত (২৪ঃ ৩৩)
৬৪৭৭। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! মহিলাদের বিয়ে দিতে তাদের অনুমতি নিতে হবে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি বললাম, কুমারীর কাছে অনুমতি চাইলে তো লজ্জাবোধ করে; ফলে চুপ থাকে। তিনি বললেনঃ তার নীরবতাই তার অনুমতি।

অধ্যায়ঃ ৭৮/ বল-প্রয়োগে বাধ্য করা (كتاب الإكراه)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৭৮ | 6478 | ٦٤۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৯১০. কাউকে যদি বাধ্য করা হয়, যার ফলে সে গোলাম দান করে ফেলে অথবা বিক্রি করে দেয় তবে তা কার্যকর হবে না। কেউ কেউ অনুরূপ রায় পোষণ করেন। অপর দিকে তার মতে ক্রেতা যদি এতে কিছু মানত করে তাহলে তা কার্যকর হবে। অনুরূপ তাকে যদি মুদাব্বর বানিয়ে নেয় তাহলে তা কার্যকর হবে
৬৪৭৮। আবু নু’মান (রহঃ) … জাবিব (রাঃ) থেকে বর্নিত। জনৈক আনসারী ব্যাক্তি তার এক গোলাম মুদাববর বানিয়ে দেয়। অথচ তার এ ছাড়া অন্য কোন মাল ছিল না। এ সংবাদ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছলে তিনি বললেনঃ কে আমার কাছ থেকে এ গোলাম ক্রয় করবে? নূআয়ম ইবনু নাহহাম (রাঃ) আটশ’ দিরহামের বিনিময়ে তাকে ক্রয় করলেন। রাবী বলেন আমি জাবির (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, ঐ গোলামটি কিবতী গোলাম ছিল এবং (ক্রয়ের) প্রথম বছরই মারা যায়।

অধ্যায়ঃ ৭৮/ বল-প্রয়োগে বাধ্য করা (كتاب الإكراه)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৭৯ | 6479 | ٦٤۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৯১১. ‘ইকরাহ’ (বাধ্যকরণ) শব্দ থেকে কারহান ও কুরহান নির্গত, উভয়টির অর্থ অভিন্ন
৬৪৭৯। হুসাইন ইবনু মানসূর (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি এ আয়াতঃ হে মু’মিনগণ! নারীদেরকে জবরদস্তিভাবে তোমাদের উত্তরাধিকার মনে করা তোমাদের জন্য বৈধ নয়- আয়াতের শেষ পর্যন্ত- এর ব্যাখ্যায় বলেন, তাদের রীতি ছিল, যখন কোন ব্যাক্তি মারা যেত তখন তার অভিভাবকগণই তার স্ত্রীর ব্যাপারে অধিক হকদার বলে মনে করত। ইচ্চা করলে তাদর মেধ্য কেউ তাকে বিয়ে করত, ইচ্ছা করলে তাকে (অন্যত্র) বিয়ে দিত, আর ইচ্ছা করলে তাকে বিয়ে দিত না। তারই স্ত্রীর অভিভাবকদের তুলনায় নিজেদের কে অধিক হকদার বলে মনে করত। এ ব্যাপারে উক্ত আয়াত নাযিল হয়।

অধ্যায়ঃ ৭৮/ বল-প্রয়োগে বাধ্য করা (كتاب الإكراه)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮০ | 6480 | ٦٤۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৯১২. যখন কোন মহিলাকে ব্যভিচারে বাধ্য করা হয় তখন তার উপর কোন ‘হদ’ আসে না। কেননা, আল্লাহ বলেন, তবে কেউ যদি তাদেরকে বাধ্য করে সে ক্ষেত্রে জবরদস্তির উপর আল্লাহতো তাদের প্রতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (২৪ঃ ৩৩)
৬৪৮০। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইব্রাহীম (আলাইহিস সালাম) ‘সারা’ (আলাইহিস সালাম) কে নিয়ে হিজরত করে এমন এক জনপদে উপনীত হলেন, যেখানে একজন স্বৈরাচার বাদশা ছিল। সে তাঁকে বলে পাঠাল যে, যেন তিনি ‘সারা’ কে তার কাছে পাঠিয়ে দেন। তিনি তাকে পাঠিয়ে দিলেন। সে “সারার” দিকে অগ্রসর হতে লাগল। অপর দিকে “সারা” উযূ (ওজু/অজু/অযু) করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগলেন। আর বললেন, হে আল্লাহ্! আমি যদি তোমার ও তোমার রাসূলের প্রতি ঈমান এনে থাকি তাহলে আমার উপর ঐ কাফেরকে কর্তৃত্ব প্রদান করো না। ফলে সে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে (মাটিতে পড়ে) গোড়ালী দিয়ে ঘষর্ণ করতে লাগল।

অধ্যায়ঃ ৭৮/ বল-প্রয়োগে বাধ্য করা (كتاب الإكراه)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮১ | 6481 | ٦٤۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৯১৩. যখন কোন ব্যক্তি তার সঙ্গীর ব্যাপারে নিহত হওয়া বা অনুরূপ কিছুর আশঙ্কা করে তখন (তার কল্যাণার্থে) কসম করা যে, সে তার ভাই। অনুরূপভাবে যে কোন বল প্রয়োগকৃতব্যক্তির ব্যাপারে যখন কোন প্রকার আশঙ্কা দেখা দেয়। কেননা, এক মুসলিম অন্য মুসলিমকে জালিমের হাত থেকে রক্ষা করবে। তার জন্য লড়াই করবে, তাকে লাঞ্ছিত করবে না। যদি সে মজলুমের জন্যে লাড়াই করে তাহলে তার উপর কোন ‘হদ’ বা কিসাস নেই। যদি কাউকে বলা হয় তোমাকে অবশ্যই মদ পান করতে হবে, অথবা মৃতের গোশত খেতে হবে, অথবা তোমাকে দাসকে বিক্রি করতে হবে অথবা তোমাকে ঋণ স্বীকার করতে হবে অথবা কিছু দান করতে হবে অথবা কিছু দান করতে হবে বা অনুরূপভাবে যে কোন চুক্তির কথা বলা হয়। অন্যথায় আমরা তোমার পিতাকে অথবা মুসলিম ভাইকে হত্যা করে ফেলব। তখন তার জন্য ঐসব কাজ করার অনুমতি আছে। কেননা, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। কেউ কেউ বলেন, যদি বলা হয়, তোমাকে অবশ্যই মদ পান করতে হবে, অথবা মৃতের গোশত খেতে হবে, অন্যথায় আমরা তোমার পুত্রকে বা তোমার পিতাকে বা তোমার কোন নিকট আত্মীয়কে হত্যা করে ফেলব, তখন তার জন্য এসব কাজ করার অনুমতি নেই। কেননা, সে নিরুপায় নয়। কেউ কেউ এর বিপরীত রায় ব্যক্ত করে বলেন, যদি তাকে বলা হয়, আমরা অবশ্যই তোমার পিতাকে বা তোমার পুত্রকে হত্যা করে ফেলব, না হয় তোমাকে ঔ গোলামটি বিক্রি করতে হবে, অথবা তোমাকে ঋণ স্বীকার করতে হবে, অথবা হেবা স্বীকার করতে হবে, তাহলে কিয়াসের দৃষ্টিতে তার জন্য তা জরুরী হয়ে যায়। তবে ইস্তিহসানের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলি যে এ ক্ষেত্রে বিক্রি, দান বা যে কোন চুক্তি বাতিল গণ্য হবে। অতএব তারা কিতাব (কুরআন), সুন্নাহ ব্যাতিরেকেই নিকটাত্মীয় ও আত্মীয়দের মধ্যে প্রভেদ করে নিল। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেনঃ ইবরাহীম (আঃ) তাঁর স্ত্রী সম্পর্কে বলেছেন, ইনি আমার বোন। আর ওটি ছিল আল্লাহর ব্যাপারে (দীনের ভিত্তিতে)। নাখাঈ (র) বলেন, যে ব্যক্তি হলফ করায়, সে যদি অত্যাচারী হয় তা হলে হলফকারীর নিয়তই গ্রহণীয় হবে। আর যিদ সে মজলুম হয় তাহলে তার নিয়তই কার্যকর হবে।
৬৪৮১। ইয়াহ্ইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক মুসলমান অপর মুসলমানের ভাই, না সে তার প্রতি জুলুম করবে, না তাকে অন্যের হাওলা করবে। যে কেউ তার ভাইয়ের প্রয়োজন মেটাবে আল্লাহ্ তার প্রয়োজন মেটাবেন।

অধ্যায়ঃ ৭৮/ বল-প্রয়োগে বাধ্য করা (كتاب الإكراه)
হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮২ | 6482 | ٦٤۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৯১৩. যখন কোন ব্যক্তি তার সঙ্গীর ব্যাপারে নিহত হওয়া বা অনুরূপ কিছুর আশঙ্কা করে তখন (তার কল্যাণার্থে) কসম করা যে, সে তার ভাই। অনুরূপভাবে যে কোন বল প্রয়োগকৃতব্যক্তির ব্যাপারে যখন কোন প্রকার আশঙ্কা দেখা দেয়। কেননা, এক মুসলিম অন্য মুসলিমকে জালিমের হাত থেকে রক্ষা করবে। তার জন্য লড়াই করবে, তাকে লাঞ্ছিত করবে না। যদি সে মজলুমের জন্যে লাড়াই করে তাহলে তার উপর কোন ‘হদ’ বা কিসাস নেই। যদি কাউকে বলা হয় তোমাকে অবশ্যই মদ পান করতে হবে, অথবা মৃতের গোশত খেতে হবে, অথবা তোমাকে দাসকে বিক্রি করতে হবে অথবা তোমাকে ঋণ স্বীকার করতে হবে অথবা কিছু দান করতে হবে অথবা কিছু দান করতে হবে বা অনুরূপভাবে যে কোন চুক্তির কথা বলা হয়। অন্যথায় আমরা তোমার পিতাকে অথবা মুসলিম ভাইকে হত্যা করে ফেলব। তখন তার জন্য ঐসব কাজ করার অনুমতি আছে। কেননা, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। কেউ কেউ বলেন, যদি বলা হয়, তোমাকে অবশ্যই মদ পান করতে হবে, অথবা মৃতের গোশত খেতে হবে, অন্যথায় আমরা তোমার পুত্রকে বা তোমার পিতাকে বা তোমার কোন নিকট আত্মীয়কে হত্যা করে ফেলব, তখন তার জন্য এসব কাজ করার অনুমতি নেই। কেননা, সে নিরুপায় নয়। কেউ কেউ এর বিপরীত রায় ব্যক্ত করে বলেন, যদি তাকে বলা হয়, আমরা অবশ্যই তোমার পিতাকে বা তোমার পুত্রকে হত্যা করে ফেলব, না হয় তোমাকে ঔ গোলামটি বিক্রি করতে হবে, অথবা তোমাকে ঋণ স্বীকার করতে হবে, অথবা হেবা স্বীকার করতে হবে, তাহলে কিয়াসের দৃষ্টিতে তার জন্য তা জরুরী হয়ে যায়। তবে ইস্তিহসানের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলি যে এ ক্ষেত্রে বিক্রি, দান বা যে কোন চুক্তি বাতিল গণ্য হবে। অতএব তারা কিতাব (কুরআন), সুন্নাহ ব্যাতিরেকেই নিকটাত্মীয় ও আত্মীয়দের মধ্যে প্রভেদ করে নিল। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেনঃ ইবরাহীম (আঃ) তাঁর স্ত্রী সম্পর্কে বলেছেন, ইনি আমার বোন। আর ওটি ছিল আল্লাহর ব্যাপারে (দীনের ভিত্তিতে)। নাখাঈ (র) বলেন, যে ব্যক্তি হলফ করায়, সে যদি অত্যাচারী হয় তা হলে হলফকারীর নিয়তই গ্রহণীয় হবে। আর যিদ সে মজলুম হয় তাহলে তার নিয়তই কার্যকর হবে।
৬৪৮২। মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমার ভাইকে সাহায্য কর। সে জালিম হোক অথবা মজলুম হোক। এক ব্যাক্তি বলল, হে আল্লাহর রাসূল! মজলুম হলে তাকে সাহায্য করব, তা তো বোধ্যগম্য ব্যাপার। কিন্তু জালিম হলে তাকে সাহায্য করব, তা কিভাবে? তিনি বললেনঃ তাকে অত্যাচার থেকে বিরত রাখবে। আর এটাই হচ্ছে তার সাহায্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৩ | 6483 | ٦٤۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৯১৪. কূটকৌশল পরিত্যাগ করা। এবং কসম ইত্যাদিতে যে যা নিয়ত করবে তা-ই তার ব্যাপারে প্রযোজ্য হবে
৬৪৮৩। আবূ নু’মান (রহঃ) … উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ভাষণ দিতে গিয়ে বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, হে জনতা, সকল আমলই নিয়তের সাতে সম্পৃক্ত। যে যা নিয়ত করবে সে তা-ই পাবে। যার হিজরত আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের জন্য হবে তার হিজরত আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের জন্যই হবে। আর যার হিজরত দুনিয়া পাওয়ার জন্য বা কোন রমণীকে বিয়ে করার জন্য হবে, তার হিজরত সে জন্যই হবে, যে জন্য সে হিজরত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৪ | 6484 | ٦٤۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৯১৫. নামায
৬৪৮৪। ইসহাক ইবনু নাযর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বায়ু নির্গত হওয়ার পর উযূ (ওজু/অজু/অযু) না করা পর্যন্ত আল্লাহ তোমাদের কারো সালাত (নামায/নামাজ) কবুল করবেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৫ | 6485 | ٦٤۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৯১৬. যাকাত এবং সদাকা দেওয়ার ভয়ে যেন একত্রিত পুঁজিকে পৃথক করা না হয় এবং পৃথক পুঁজিকে যেন একত্র করা না হয়
৬৪৮৫। মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক নির্ধারিত সাদাকা সম্পর্কে আবূ বকর (রাঃ) তার কাছে একটি ফরমান পাঠান। এতে লিখেন যে, সাদাকা প্রদানের আশংকায় যেন বিচ্ছিন্ন মালকে একত্রিত করা না হয় এবং একাত্রিত মালকে যেন বিচ্ছিন্ন করা না হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৬ | 6486 | ٦٤۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৯১৬. যাকাত এবং সদাকা দেওয়ার ভয়ে যেন একত্রিত পুঁজিকে পৃথক করা না হয় এবং পৃথক পুঁজিকে যেন একত্র করা না হয়
৬৪৮৬। কুতায়বা (রহঃ) … তালহা ইবনু উবায়দুল্লাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক অবিন্যাস্ত কেশধারী বেদুঈন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহ্ আমার উপর সালাত (নামায/নামাজ) থেকে কি ফরয করেছেন, তা বাতলে দিন। তিনি বললেনঃ পাঞ্ছেগানা সালাত (নামায/নামাজ), তবে তুমি কিছু নফল পড়তে পার। সে বলল, আল্লাহ আমার উপর রোযা থেকে কি ফরয করেছেন তা আমাকে অবহিত করুন। তিনি বললেনঃ রমযান মাসের রোযা। তবে তুমি কিছু নফল আদায় করতে পার। সে বলল, আল্লাহ্ আমার উপর যাকাত থেকে কি ফরয করেছেন সে সম্পর্কে আমাকে অবহিত করুন। বর্ণনাকারী বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ইসলামী হুকুম আহকাম সম্পর্কে অবহিত করলেন। সে বলল, ঐ সত্তার কসম! যে আপনাকে সম্মানিত করেছে। আমি নফল কিছু করব না এবং আল্লাহ্ আমার উপর যা ফরয করেছেন তা থেকে কমবেও না। তা শুনে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি লোকটি এর উপর স্থিত থাকে, তাহলে সফলকাম হয়েছে। যদি এ সত্যের উপর স্থিত থাকে তাহলে তাকে জান্নাতে দাখিল করা হবে।

কোন কোন মনীষী বলেন, একশ বিশটি উটের যাকাত হল দুটি হিক্কা। যদি যাকাত এড়ানোর জন্য সে এগুলো স্বেচ্ছায় ধ্বংস করে ফেলে অথবা দান করে দেয় অথবা অন্য কোন কৌশল অবলম্বন করে যাকাত থেকে বেঁচে থাকার জন্য তাহলে তার উপর কোন কিছু ওয়াজিব হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৭ | 6487 | ٦٤۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৯১৬. যাকাত এবং সদাকা দেওয়ার ভয়ে যেন একত্রিত পুঁজিকে পৃথক করা না হয় এবং পৃথক পুঁজিকে যেন একত্র করা না হয়
৬৪৮৭। ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকের সঞ্চিত ধন, যার যাকাত আদায় করা হয়নি, কিয়ামতের দিন টাকাপড়া হিংস্র সাপে পরিণত হবে। সম্পদের মালিক তা থেকে পালাতে থাকবে। কিন্তু সাপ তার পিছু লেগে থাকবে। আর বলবে, আমি তোমার সঞ্চিত সম্পদ। তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! সাপ তার পিছু ধাওয়া করতেই থাকবে। পরিশেষে সে বাধ্য হয়ে তার হাত প্রসারিত করে দেবে। ফলে সাপ তার মুখ গ্রাস করে নেবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ পশুর মালিক যদি তার হক যাকাত আদায় না করে তাহলে পশুকে তার পিছে লাগিয়ে দেয়া হবে। পশু তার মুখমন্ডল পায়ের ক্ষুর দ্বারা আঁচড়ে ফেলবে।

কোন কোন মনীষী বলেন, কোন ব্যাক্তির কয়েকটি উট ছিল, এগুলোতে যাকাত ওয়াজি হয়ে যাবার আশংকায় যাকাত এড়াবার নিমিত্ত কৌশলের আশ্রয় নিয়ে বছর পূর্ণ হওয়ার একদিন আগে সমপরিমাণ উটের বদলে বা ছাগল বা গরুর বা মুদ্রার বিনিময়ে বিক্রি করে ফেলল, তাহলে তার উপর কোন কিছু ওয়াজিব হবে না। অথচ ইনি বলেন, যদি বছর পূর্ণ হওয়ার একদিন অথবা এক বছর আগেই উটের যাকাত দিয়ে দেয় তাহলে তার পক্ষে আদায় হয়ে যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৮ | 6488 | ٦٤۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৯১৬. যাকাত এবং সদাকা দেওয়ার ভয়ে যেন একত্রিত পুঁজিকে পৃথক করা না হয় এবং পৃথক পুঁজিকে যেন একত্র করা না হয়
৬৪৮৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সা’দ ইবনু উবাদা আনসারী (রাঃ) রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাঁর মায়ের মানত সম্পর্কে ফতোয়া চাইলেন, যে মানত তার মায়ের যিম্মায় ছিল। কিন্তু তা আদায় করার পূর্বে তার মৃত্যু হয়। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তার পক্ষ থেকে আদায় করে দাও।

কোন কোন মনীষী বলেন, যখন উটের সংখ্যা বিশে পৌঁছে তখন তার যাকাত হবে চারটি ছাগল। কিন্তু যদি সে যাকাত থেকে রেহাই পাওয়ার উদ্দেশ্যে অথবা যাকাত এড়াবার কৌশল হিসেবে বছর পূর্ণ হওয়ার আগে ঐগুলো দান করে দেয় অথবা বিক্রি করে ফেলে, তাহলে তার উপর কিছু ওয়াজিব হবে না। তদ্রূপ যদি সে ঐগুলো ধ্বংস করে দেয় তারপর সে মারা যায় তাহলেও তার মালের উপর কোন যাকাত ওয়াজিব হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৮৯ | 6489 | ٦٤۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৯১৭. পরিচ্ছেদ নাই
৬৪৮৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিগার থেকে নিষেধ করেছেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি নাফি (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম শিগার কি? তিনি বললেন, কেউ এক ব্যাক্তির মেয়ে বিয়ে করবে এবং সে তার মেয়ে ঐ ব্যাক্তির কাছে বিনা মহরে বিয়ে দেবে।

কোন কোন আলিম বলেন, যদি কেউ কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে শিগারের ভিত্তিতে বিয়ে করে নেয়, তাহলে বিয়ে বলবৎ হয়ে যাবে। তবে শর্তটি বাতিল বলে গণ্য হবে। আর মুতআ সম্পর্কে তিনি বলেন, বিয়ে ফাসিদ ও শর্ত বাতিল। আবার কেউ কেউ বলেন মুত্আ ও শিগার উভয়টি জায়েয হবে। আর শর্ত বাতিল হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯০ | 6490 | ٦٤۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৯১৭. পরিচ্ছেদ নাই
৬৪৯০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … মুহাম্মদ ইবনু আলী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আলী (রাঃ) কে বলা হল- ইবনু আব্বাস (রাঃ) নারীদের মুত্আ বিয়েতে কোন আপত্তি মনে করেন না। তখন তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারের দিন মুত্আ ও গৃহপালিত গাধার গোশত (আহার) থেকে নিষেধ করেছেন।

কোন কোন লোক বলেন, যদি কৌশলের আশ্রয় নিয়ে মুতআ বিয়ের চুক্তি করে নেয় তাহলে বিয়ে ফাসিদ বলে গণ্য হবে। আর কেউ কেউ বলেন, বিয়ে বৈধ হবে আর শর্ত বাতিল হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯১ | 6491 | ٦٤۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৯১৮. ক্রয়-বিক্রয়ে যে কূটকৌশল অপছন্দনীয়। প্রয়োজনাতিরিক্ত ঘাস উৎপাদনে বাধা প্রদানের নিমিত্ত প্রয়োজনাতিরিক্ত পানি সরবরাহে বাধা দেওয়া যাবে না
৬৪৯১। ইসমাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ প্রয়োজনাতিরিক্ত ঘাস উৎপাদনের বাধা দেয়ার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনাতিরিক্ত পানি সরবরাহে বাধা দেয়া যাবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯২ | 6492 | ٦٤۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৯১৯. দালালী করা অশোভনীয় হওয়া প্রসঙ্গে
৬৪৯২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দালালী করা থেকে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৩ | 6493 | ٦٤۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৯২০. ক্রয়-বিক্রয়ে ধোঁকাবাজি নিষেধ হওয়া প্রসঙ্গে। আইয়ুব (রহঃ) বলেন, লোকেরা আল্লাহকে ধোঁকা দিতে চায়, যেন তারা মানুষকে ধোঁকা দেয়। তারা যদি প্রকাশ্যে কাজটি করত তবে তা আমার নিকট অধিক সহজ মনে হত।
৬৪৯৩। ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যাক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উল্লেখ করল যে, সে ক্রয়-বিক্রয়ের সময় প্রতারিত হয়ে যায়। তিনি বললেনঃ যখন তুমি ক্রয়-বিক্রয় করবে তখন বলবে (কোন প্রকার) ধোঁকাবাজি নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৪ | 6494 | ٦٤۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৯২১. অভিভাবকের পক্ষে বাঞ্ছিতা ইয়াতীম বালিকার পুরা মোহর না দেয়ার ব্যাপারে কৌশল অবলম্বন করা হওয়া প্রসঙ্গে
৬৪৯৪। আবুল ইয়ামন (রহঃ) … উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আয়িশা (রাঃ) কে এ আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন, ‏وَإِنْ خِفْتُمْ أَنْ لاَ تُقْسِطُوا فِي الْيَتَامَى فَانْكِحُوا مَا طَابَ لَكُمْ مِنَ النِّسَاءِ তোমরা যদি আশঙ্কা কর যে, ইয়াতীম মেয়েদের প্রতি সুবিচার করতে পারবে না তবে বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমাদের ভাল লাগে। (৪ঃ ৩) তিনি বললেন, এ আয়াত এমন ইয়াতীম মেয়ে প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়েছে, যে তার অভিভাবকের তত্ত্বাবধানে আছে। আর অভিভাবক তার সম্পদ ও সৌন্দর্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ে এবং তার সগোত্রীয় মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রচলিত মহরের চেয়ে কম মহর দিয়ে বিয়ে করে নেয়ার মনস্থ করে। তাই তাদেরকে এমন ইয়াতীম মেয়েদেরকে বিয়ে করা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। তবে যদি পুরোপুরি মহর প্রদান করে তাদের সুবিচার করে। এরপর লোকেরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সম্পর্কে ফতোয়া চাইলে আল্লাহ্ এ আয়াত নাযিল করেনঃ এবং লোকেরা তোমার নিকট নাদীদের বিয়ে পরিস্কারভাবে জানতে চায় (৪ঃ ১২৭)। তারপর হাদীসের (বাকী অংশ) বর্ণনা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৫ | 6495 | ٦٤۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৯২২. যদি কেউ কোন বাঁদী অপহরণ করার পর বলে, সে মারা গেছে এবং বিচারকও মৃত বাঁদীর মূল্যের ফয়সালা করে দেন। এরপর যদি সে বাঁদী মালিকের হস্তগত হয়ে যায়, তখন সে মালিকেরই হবে। তবে মালিক মূল্য ফেরত দেবে। এ মূল্য (বাঁদীর) দাম বলে গণ্য হবে না। কোন কোন মনিষী বলেন, বাঁদীটি অপহরণকারীরই থাকবে, কারণ মালিক মূল্য গ্রহণ করে নিয়েছে। এক্ষেত্রে ঐ লোকের জন্য একটা কূটকৌশল অবলম্বনের ব্যবস্থা গ্রহণ করে দেওয়া হল। যে লোকের কারো দাসী পছন্দ হয়, কিন্তু মালিক তা বিক্রয় করে না, তখন সে তা অপহরণ করে বাহানা করে বলল যে সে মরে গেছে, যাতে করে মালিক মূল্য গ্রহণ করে নেয়। আর অন্যের দাসী অপহরণকারীর জন্য হালাল হয়ে যায়।অথচ নবী (সাঃ) বলেনঃ একে অন্যের মাল হরণ করা তোমাদের জন্য হারাম। প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্য ক্বিয়ামতের দিন একটা পতাকা থাকবে।
৬৪৯৫। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্য কিয়ামতের দিন একটা পতাকা থাকবে, এর মাধ্যমে তাকে চেনা যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৬ | 6496 | ٦٤۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৯২৩. পরিচ্ছেদ নাই
৬৪৯৬। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আমি তো একজন মানুষ। আর তোমরা আমার কাছে বিবাদ মীমাংসার জন্য এসে থাক। তোমাদের এক পক্ষ অপর পক্ষ হতে দলীর প্রমাণ পেশ করার ব্যাপারে অধিকতর পারদর্শী হতে পারে। ফলে আমি আমার শোনা মতে যদি কাউকে তা অন্য ভাইয়ের হক দিয়ে দেই, তাহলে যেন সে তা গ্রহণ না করে। কেননা, আমি তার জন্য জাহান্নামের একটা অংশই পৃথক করে দিচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৭ | 6497 | ٦٤۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৯২৪. বিয়ে
৬৪৯৭। মুসলিম ইবনু ইব্রাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ কুমারী নারী বিয়ে দেয়া যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার অনুমতি গ্রহণ করা হবে। আর বিধবা নারী বিয়ে দেয়া যাবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না তার মত গ্রহণ করা হবে। প্রশ্ন করা হল, হে আল্লাহর রাসূল! তার অনুমতি কিরূপে? তিনি বললেনঃ যখন সে নীরব থাকে। কোন কোন লোক বলেন, যদি কুমারীর অনুমতি নেয়া না হয় এবং তাকে বিয়ে দেয়া না হয়। অতঃপর কোন ব্যাক্তি কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে দু’জন মিথ্যা সাক্ষী এ মর্মে দাঁড় করায় যে, ঐ ব্যাক্তি উক্ত মহিলাকে তার সম্মতি নিয়ে বিয়ে করেছে এবং বিচারকও তার বিয়ে বলবৎ করে দেন, অথচ স্বামী পরিজ্ঞাত যে, স্বাক্ষীটি মিথ্যা, তখন তার জন্য উক্ত মহিলার সাথে সহবাস করতে কোন আপত্তি নেই এবং এটি শুদ্ধ বিয়েতে পরিণত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৮ | 6498 | ٦٤۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৯২৪. বিয়ে
৬৪৯৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … কাসিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, জাফর (রাঃ) এর বংশের জনৈকা মহিলা আশঙ্কা পোষণ করল যে, তার অভিভাবকরা তার অসম্মতিতে বিয়ে দিতে যাচ্ছে তাই সে আনসারী দু’জন মুরব্বী জারিয়ার দুই পুত্র আবদুর রহমান (রাঃ) ও মুজাম্মি (রাঃ) কে এ কথা বলে পাঠাল। তারা বললেন, তোমার ভয়ের কারণ নেই। কেননা, খানসা বিনত খিযাম (রাঃ) কে তার পিতা তার অসম্মতিতে বিয়ে দিয়েছিল। কিন্তু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিয়ে রদ (বাতিল) করে দেন। সুফিয়ান (রহঃ) বলেছেন যে, আমি আবদুর রহমান (রহঃ) কে তাঁর পিতা থেকে إِنَّ خَنْسَاءَ বলতে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৪৯৯ | 6499 | ٦٤۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৯২৪. বিয়ে
৬৪৯৯। আবূ নু’আযম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিধবাকে তার মতামত ছাড়া বিয়ে দেয়া যাবে না এবং কুমারীকে তার অনুমতি ছাড়া বিয়ে দেয়া যাবে না। তারা বললেন, তার অনুমতি কি রূপে? তিনি বললেনঃ তার নীরব থাকা। কেউ কেউ বলেন, যদি কোন লোক কোন বিধবা নারীর মতানুসারে বিয়ে সম্পাদনের ওপর দু’জন মিথ্যা স্বাক্ষীর মাধ্যমে কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করে। আর বিচারকও তাদের এ বিয়েকে বলবৎ করে দেন। অথচ স্বামী পরিজ্ঞাত যে, সে তাকে এর পূর্বে বিয়ে করেনি। তাহলে তার জন্য এ বিয়ে বৈধ ও কার্যকর হয়ে যাবে এবং তার জন্য উক্ত মহিলার সাথে বৈবাহিক জীবন যাপনে কোন বাধা নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০০ | 6500 | ٦۵۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৯২৪. বিয়ে
৬৫০০। আবূ আসিম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুমারীর অনুমতি গ্রহণ করতে হবে। আমি বললাম, কুমারী তো লজ্জাবোধ করবে। তিনি বললেনঃ তবে অনুমতি হল তার নীরবতা। কেউ কেউ বলেন, যদি কোন ইয়াতীম বাঁদী অথবা কোন কুমারী কারো পছন্দ হয়। কিন্তু সে অসম্মতি জানায়, তখন ঐ ব্যাক্তি কৌশলের আশ্রয় নিয়ে দু’জন মিথ্যা সাক্ষ্য এ মর্মে পেশ করে যে, সে তাকে বিয়ে করেছে এবং সে প্রাপ্ত বয়স্কা হবার পর সম্মতি জ্ঞাপন করেছে। আর বিচারকও মিথ্যা সাক্ষ্য কবুল করে নেন। অথচ স্বামী তা মিথ্যা হওয়ার ব্যাপারে অবগত। এ ক্ষেত্রে তার জন্য সহবাস করা বৈধ হয়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০১ | 6501 | ٦۵۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৯২৫. কোন মহিলার জন্য স্বামী ও সতীনের বিরুদ্ধে কৌশল করা অপছন্দনীয় এবং এ ক্ষেত্রে নবী (সাঃ) এর ওপর যা নাযিল হয়েছে
৬৫০১। উবায়দ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিষ্টান্ন ও মধু পছন্দ করতেন এবং যখন আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নিতেন তখন তিনি তাঁর স্ত্রীদের কাছে ঘুরে বেড়াতেন এবং তাঁদের কাছে উপস্থিত হতেন। একদা তিনি হাফসা (রাঃ) এর ঘরে প্রবেশ করলেন এবং সাধারণত যত সময় তাঁর কাছে অবস্থান করতেন এর চেয়ে অধিক সময় তাঁর কাছে অবস্থান করলেন। তাই আমি এর কারণ জিজ্ঞাসা করলাম। তখন আমাকে বলা হল যে, তার স্বগোত্রীয় এক মহিলা এক কৌটা মধু হাদিয়া পাঠিয়েছে। এ থেকে তিনি আল্লাহর রাসূলকে কিছু পান করিয়েছেন। আমি মনে মনে বললাম, আল্লাহর কসম! আমরা অবশ্যই একটা কৌশল অবলম্বন করব।

এরপর আমি এ ব্যাপারে সাওদা (রাঃ) এর সাথে আলোচনা করলাম। আমি বললাম, যখন তিনি তোমার ঘরে আসবেন, তখন তিনি অবশ্যই তোমার সন্নিকটে যাবেন। এ সময় তুমি তাঁকে বলবে, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি মাগাফীর খেয়েছেন? তিনি অবশ্য না-ই বলবেন। তখন তুমি বলবে, তাহলে এ দুর্গন্ধ কিসের? আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাঁর থেকে দুর্গন্ধ পাওয়া যাওয়াটা খুবই গুরুতর মনে হত। তখণ তিনি বলবেনঃ হাফসা আমাকে মধুর শরবত পান করিয়েছে। তখন তুমি তাঁকে বলবে, তাহলে ঐ মধুর পোকা “উরফুত” গাছের রস আহরণ করেছে। আর আমিও একই কথা বলব। হে সাফিয়া! তুমিও তাঁকে এ কথা বলবে।

যখন তিনি সাওদা (রাঃ) এর ঘরে এলেন, তখন সাওদা (রাঃ) বললেন, কসম ঐ সত্তার, যিনি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। যখনই তিনি দরজার কাছে এলেন তখনই আমি তোমার ভয়ে তোমার শিখানো কথাগুলো বলতে উদ্যত হলাম। এরপর তিনি যখন সন্নিকটে এলন, তখন আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনি ‘মাগাফীর’ খেয়েছেন। তিনি বললেন, না। আমি বললাম, তাহলে এ দুর্গন্ধ কিসের? তিনি বললেন, হাফসা আমাকে মধুর শরবত পান করিয়েছে। আমি বললাম, তাহলে এ মধুর পোকা “উরফুত” (বৃক্ষের) রস আহরণ করেছে।

আয়িশা (রাঃ) বললেন, এরপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আমার ঘরে এলেন, তখন আমিও তাঁকে অনুরূপ কথা বললাম। এরপর তিনি সাফিয়া (রাঃ) এর ঘরে গেলেন, সেও তাঁকে অনুরূপ কথা বলল। পুনরায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন হাফসা (রাঃ) এর ঘরে প্রবেশ করলেন তখন তিনি তাঁকে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাকে মধু পান করতে দিব কি? তিনি বললেনঃ এর কোন প্রয়োজন নেই। আয়িশা (রাঃ) বলেন, সাওদা (রাঃ) বললঃ সুবহানাল্লাহ্! আমরা তা হারাম করে দিলাম। আয়িশা (রাঃ) বললেন, আমি সাওদা (রাঃ) কে বললামঃ চুপ কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০২ | 6502 | ٦۵۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৯২৬. প্লেগ মহামারী আক্রান্ত এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য কৌশল গ্রহণ করা নিষিদ্ধ
৬৫০২। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলাম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমির ইবনু রাবী’আ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদা উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) সিরিয়া অভিমুখে রওনা দিলেন। তিনি যখন ‘সারাগ’ নামক স্থানে পৌঁছলেন, তখন তাঁর কাছে সংবাদ পৌঁছল যে, সিরিয়ায় প্লেগ মহমারী আকারে দেখা দিয়েছে। এ সময় আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) তাঁকে অবহিত করলেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমরা কোন এলাকায় মহামারী ছড়িয়ে পড়েছে শুনতে পাবে তখন তোমরা সেখানে যেও না। আর যখন কোন এলাকায় মহামারী ছড়িয়ে পড়ে আর তোমরা সেখানে উপস্থিত থাক, তখন সেখান থেকে পলায়ন করে বেরিয়ে এসো না। এ কথা শুনে উমর (রাঃ) “সারাগ” থেকে প্রত্যাবর্তন করলেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত, উমর (রাঃ) আবদুর রহমানের হাদীসের কারণে ফিরে এসেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৩ | 6503 | ٦۵۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৯২৬. প্লেগ মহামারী আক্রান্ত এলাকা থেকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য কৌশল গ্রহণ করা নিষিদ্ধ
৬৫০৩। আবুল ইয়ামন (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি সা’দ (রাঃ) কে বলেন। একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহামারী প্রসঙ্গে আলোচনাকালে বললেন, এ একটি শাস্তি, কতক জাতিকে এ দ্বারা শাস্তি দেওয়া হয়েছে। তারপর এর কিছু অংশ বাকী রয়ে গেছে। তাই কখনো এ চলে যায় আবার কখনো তা ফিরে আসে। যখন কেউ কোন এলাকায় মহামারীর কথা শুনবে তখন যেন সে তথায় না যায়। আর যে কেউ এমন এলাকায় অবস্থান করে যেখানে এর প্রাদুর্ভাব ঘটেছে, তখন সে যেন সেখান থেকে পলায়ন করে বেরিয়ে না আসে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৪ | 6504 | ٦۵۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৯২৭. হেবা ও শুফ’আর ব্যাপারে কৌশল অবলম্বন। কোন কোন মনিষী বলেন, কেউ কেউ কৌশল করে এক হাজার বা ততোধিক দিরহাম হেবা করে এবং তা কয়েক বছর গ্রহীতার কাছে থেকে যায় এবং এতে কৌশল করে। এরপর হেবাকারী যদি আবার তা ফেরত নিয়ে আসে, তাহলে তাদের উভয়ের কারো উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। আবু আবদুল্লাহ(বুখারী) বলেনঃ তাহলে সে হেবার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বিরুদ্ধাচরণ করল এবং যাকাত ফাঁকি দিল
৬৫০৪। আবু নু’আয়ম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হেবা করে আবার তাকে ফেরত নেয়া ব্যাক্তির তুলনা যেন এমন একটি কুকুর যে বমি করে তা আবার গলাধঃকরণ করে। এরূপ খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন আমাদের জন্য কিছুতেই ঠিক নয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৫ | 6505 | ٦۵۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৯২৭. হেবা ও শুফ’আর ব্যাপারে কৌশল অবলম্বন। কোন কোন মনিষী বলেন, কেউ কেউ কৌশল করে এক হাজার বা ততোধিক দিরহাম হেবা করে এবং তা কয়েক বছর গ্রহীতার কাছে থেকে যায় এবং এতে কৌশল করে। এরপর হেবাকারী যদি আবার তা ফেরত নিয়ে আসে, তাহলে তাদের উভয়ের কারো উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। আবু আবদুল্লাহ(বুখারী) বলেনঃ তাহলে সে হেবার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বিরুদ্ধাচরণ করল এবং যাকাত ফাঁকি দিল
৬৫০৫। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবল ঐ সব ভূমিতে শুফআর অধিকার সাব্যস্ত করেছেন, যেগুলো এখনো বন্টিত হয়নি। আর যখন সীমানা নির্দিষ্ট হয়ে যায় এবং রাস্তা নির্ধারিত হয়ে যায় তখন আর শুফআর (অধিকার) থাকে না। কোন কোন লোক বলেন, প্রতিবেশী হওয়ার দরুনও শুফআর অধিকার সাব্যস্ত হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে যা দৃঢ়তার সাথে ব্যক্ত করলেন তা আবার বাতিল করে দিলেন এবং বললেন, যদি কেউ কোন বাড়ী ক্রয় করার পর আশংকা করে যে, প্রতিবেশী শুফআর অধিকারের ভিত্তিতে নিয়ে যাবে তাই সে শত অংশের এক অংশ প্রথমে ক্রয় করে নেয়, তারপর বাকী অংশ ক্রয় করে। অথচ প্রতিবেশীর জন্য শুফআর অধিকার কেবল প্রথম অংশে ছিল। তাহলে বাড়ীর বাকী অংশে প্রতিবেশীর জন্য শুফআর অধিকার প্রতিষ্ঠিত থাকে না। এক্ষেত্রে সে এ কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৬ | 6506 | ٦۵۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৯২৭. হেবা ও শুফ’আর ব্যাপারে কৌশল অবলম্বন। কোন কোন মনিষী বলেন, কেউ কেউ কৌশল করে এক হাজার বা ততোধিক দিরহাম হেবা করে এবং তা কয়েক বছর গ্রহীতার কাছে থেকে যায় এবং এতে কৌশল করে। এরপর হেবাকারী যদি আবার তা ফেরত নিয়ে আসে, তাহলে তাদের উভয়ের কারো উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। আবু আবদুল্লাহ(বুখারী) বলেনঃ তাহলে সে হেবার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বিরুদ্ধাচরণ করল এবং যাকাত ফাঁকি দিল
৬৫০৬। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আমর ইবনু শারীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মিসওয়ার ইবনু মাখারামা (রাঃ) এসে তাঁর হাত আমার কাঁধে রাখলেন। তারপর আমি তাঁর সাথে সা’দ (রাঃ) এর কাছে গেলাম। তখন আবূ রাফি (রাঃ) মিসওয়ার (রাঃ) কে বললেন, আপনি কি ওকে এ কথা বলছেন যে, সে আমার ঐ ঘরটি ক্রয় করে নেবে, যে ঘরটি তাঁর বাড়ীতে রয়েছে। সা’দ (রাঃ) বললেন, আমি চারশ থেকে বেশী দেব না। তাও আবার কিস্তিতে কিস্তিতে দেব। আবূ রাফি (রাঃ) বললেন, আমাকে নগদ পাঁচশত দেয়া হচ্ছে, অথচ আমি তাকে দিচ্ছি না। আমি যদি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে না শুনতাম যে, প্রতিবেশী তার সংলগ্ন ভূমি ক্রয়ের ব্যাপারে সবচে বেশী হকদার, তাহলে আমি তা তোমার কাছে বিক্রি করতাম না। অথবা বলেছেন, তোমাকে আমি তা দিতাম না।

আমি সুফয়ান (রহঃ) কে বললাম যে, মা’মার তো এমনটি বলেননি। তিনি বললেন, কিন্তু তিনি আমাকে এমনটি বলেছেন। কিছু সংখ্যক লোক বলেন, কেউ যদি কোন ভূমি বিক্রি করে, তাহলে কৌশলের আশ্রয় গ্রহণ করে শুফ্আর অধিকার বাতির করে দিতে পারে। যেমন বিক্রেতা ক্রেতাকে বাড়িটি দান করে দেবে এবং তার সীমানা বর্ণনা করে ক্রেতার কাছে সোপর্দ করে দেবে। এরপর ক্রেতা বিক্রেতাকে এক হাজার দিরহাম দিয়ে দেবে। এমতাবস্থায়, শাফী’র জন্য তাতে শুফ্আর অধিকার থাকবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৭ | 6507 | ٦۵۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৯২৭. হেবা ও শুফ’আর ব্যাপারে কৌশল অবলম্বন। কোন কোন মনিষী বলেন, কেউ কেউ কৌশল করে এক হাজার বা ততোধিক দিরহাম হেবা করে এবং তা কয়েক বছর গ্রহীতার কাছে থেকে যায় এবং এতে কৌশল করে। এরপর হেবাকারী যদি আবার তা ফেরত নিয়ে আসে, তাহলে তাদের উভয়ের কারো উপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। আবু আবদুল্লাহ(বুখারী) বলেনঃ তাহলে সে হেবার ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বিরুদ্ধাচরণ করল এবং যাকাত ফাঁকি দিল
৬৫০৭। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ রাফি (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, সা’দ (রাঃ) তার কাছ থেকে চারশ মিছকালের বিনিময়ে একটি ঘর ক্রয় করার জন্য দর করেন। তখন তিনি বলেন, যদি আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে না শুনতাম যে, “প্রতিবেশী তার সংলগ্ন ভূমি ক্রয়ের ব্যাপারে সবচে বেশী হকদার” তাহলে তোমাকে আমি দিতাম না। কেউ কেউ বলেন, যদি কেউ বাড়ীর কোন অংশ ক্রয় করে এবং শুফ্আর অধিকার বাতিল করে দিতে চায়, তাহলে তার ছোট ছেলেকে তা দান করে দেবে। আর যখন তার ওপর কোন কসমও আসবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৮ | 6508 | ٦۵۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৯২৮. বখশীশ পাওয়ার নিমিত্ত কর্মচারীর কৌশল অবলম্বন
৬৫০৮। উবায়াদ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হমায়দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লুতাবিয়্যা নামে এক ব্যাক্তিকে বণী সুলায়ম গোত্রের যাকাত আদায়কারী নিয়োগ করলেন। যখন সে ফিরে এলো তখন তিনি তার কাছ থেকে হিসাব-নিকাশ গ্রহণ করলেন। সে বলল, এগুলো আপনাদের মাল, আর এগুলো (আমাকে দেয়া) উপঢৌকন। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি তুমি সত্যবাদী হয়ে থাক তাহলে তোমার মা-বাবার ঘরে বসে থাকলে না কেন? সেখানেই তোমার কাছে উপঢৌকন এসে যেত। এরপর তিনি আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও গুণগান করার পর তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের কাউকে এমন কোন কাজে নিয়োগ করি, যার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে আল্লাহ্ আমাকে মনোনীত করেছেন। কিন্তু সে কাজ সম্পাদন করে এসে বলে, এ হল তোমাদের মাল। আর এ হল আমাকে দেয়া উপঢৌকন। তাহলে সে কোন তার মা-বাবার ঘরেই বসে রইল না, সেখানে এমনিতেই তার কাছে তার উপঢৌকন এসে যেত?

আল্লাহর কসম! তোমরা যে কেউ অবৈধভাবে কোন কিছু গ্রহণ করবে, সে কিয়ামতের দিন তা বয়ে নিয়ে আল্লাহর সামনে হাযির হবে। আমি তোমাদের কাউকে ভালভাবেই চিনব যে, সে আল্লাহর কাছে হাজির হবে উট বহন করে, আর উট আওয়াজ দিতে থাকবে। অথবা গাভী বহন করে, আর সেটা ডাকতে থাকবে। অথবা বকরি বহন করে, আর সেটা ডাকতে থাকবে। এরপর তিনি আপন হাতে দু’টি এতদূরে উত্তোলন করলেন যে, তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখা যাচ্ছিল। তিনি বললেন, হে আল্লাহ্! আমি কি পৌঁছে দিয়েছি? আমার চক্ষুযুগল সে অবস্থা অবলোকন করেছে এবং আমার কান শুনেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫০৯ | 6509 | ٦۵۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৯২৮. বখশীশ পাওয়ার নিমিত্ত কর্মচারীর কৌশল অবলম্বন
৬৫০৯। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) … আবূ রাফি (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রতিবেশী তার সংলগ্ন ভূমির ব্যাপারে সর্বাধিক হকদার। কেউ কেউ বলেন, কেউ যদি কোন একটি বাড়ী বিশ হাজার দিরহামের বিনিময়ে ক্রয় করে, ঐ বিশ হাজার দিরহাম পরিশোধ করার সময় এ কৌশল গ্রহণ করাতে কোন দোষ নেই যে, ক্রেতা বিক্রেতাকে ন’হাজার ন’শ নিরানব্বই দিরহাম ও বিশ হাজারের বাকী দিরহামের পরিবর্তে এক দ্বীনার নগদ প্রদান করবে। এখন যদি শুফ্আর অধিকারী শুফ্আর দাবি করে, তাহলে এই বাড়ী বিশ হাজার দিরহামের বিনিময়ে নিতে হবে। এছাড়া তার এ বাড়ী পাওয়ার আর কোন পন্থা নেই। আর যদি এ বাড়ীর কোন মালিক বের হয়ে যায়, তাহলে ক্রেতা বিক্রেতাকে দেয়া দামই ফেরত দেবে। আর তা হল ন’হাজার ন’শ নিরানব্বই দিরহাম ও এক দ্বীনার। কেননা, যখন বিক্রিত বস্তুর মূল মালিক বের হয়ে গেছে তখন দ্বীনারের “রায়এ-সারফ” বাতিল হয়ে গেছে। আর যদি ক্রেতা বাড়ীতে কোন দোষ পায়, তার কোন মালিক বের না হয়, তাহলে ক্রেতা বাড়ী ফেরত দেবে ও বিক্রেতা ক্রেতাকে বিশ হাজার দিরহাম দেবে।

আবূ আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) (রহঃ) বলেনঃ মূলত এরূপ করা মুসলমানদের মধ্যে ধোকাবাজিকে বৈধতা দেওয়ার নামান্তর। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমানদের ক্রয়-বিক্রয়ে কোন রোগব্যাধি, অপবিত্রতা ও ধোঁকাবাজি নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫১০ | 6510 | ٦۵۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৯২৮. বখশীশ পাওয়ার নিমিত্ত কর্মচারীর কৌশল অবলম্বন
৬৫১০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আমর ইবনু শারীফ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবূ রাফি (রাঃ) একটি ঘর ক্রয় করার নিমিত্ত সা’দ ইবনু মালিক (রাঃ) এর সাথে চারশ মিছকাল মূল্য ঠিক করেন। আর বলেন, যদি আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে না শুনতাম যে, প্রতিবেশী তার সংলগ্ন ভূমির ক্রয়ের ক্ষেত্রে সবচে বেশী হকদার, তাহলে তোমাকে আমি প্রদান করতাম না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫১১ | 6511 | ٦۵۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৯২৯. রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর ওয়াহ্‌য়ীর সূচনা হয় ভালো স্বপ্নের মাধ্যমে
৬৫১১। ইয়াহ্ইয়া ইবনু বুকায়র ও আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওহীর সূচনা হয় ঘুমের ঘোরে ভালো স্বপ্নের মাধ্যমে। তিনি যে স্বপ্নই দেখতেন তা ভোরের আলোর ন্যায় উদ্ভাসিত হয়ে প্রতিফলিত হতো। তিনি হেরা গুহায় গমন করে সেখানে বেশ কয়েক রাত ইবাদতে কাটিয়ে দিতেন এবং এজন্য খাদ্য সামগ্রী ও সাথে নিয়ে যেতেন। এরপর খাদীজা (রাঃ) এর কাছে ফিরে আসতেন এবং তিনি তাকে অনুরূপ খাদ্য সামগ্রী প্রস্তুত করে দিতেন। অবশেষে তাঁর কাছে সত্যের বাণী (ওহী) আসল। আর এ সময় তিনি হেরা গুহায় ছিলেন। সেখানে ফেরেশতা এসে তাঁকে বলল, আপনি পড়ুন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমি বললামঃ আমি তো পাঠক নই। তখন তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে চাপ দিলেন। এমনকি এতে আমার খুব কষ্ট হল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিলেন এবং বললেন, আপনি পড়ুন। আমি বললাম, আমি পাঠক নই। তিনি দ্বিতীয়বার আমাকে শক্ত করে চাপ দিলেন। এবারেও এতে আমার খুব কষ্ট হল। অতঃপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, আপনি পড়ুন। আমি বললাম, আমি তো পাঠক নই। এরপর তিনি তৃতীয়বার আমাকে শক্ত করে এমন চাপ দিলেন যে, এবারেও এতে আমার খুব কষ্ট হল। তারপর তিনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললেন, পাঠ করুন, আপনার প্রতিপালকের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন …… যা সে জানত না (৯৪ঃ ১-৫) এ আয়াত পর্যন্ত।

এরপর তিনি তা নিয়ে খাদীজা (রাঃ) এর কাছে কম্পিত হৃদয়ে ফিরে এলনে। আর বললেন, আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও। আমাকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দাও। ফলে তাঁরা তাঁকে কম্বল দিয়ে ঢেকে দিলেন। অবশেষে তাঁর থেকে ভীতি দূর হয়ে গেল। এরপর তিনি বললেন, হে খাদীজা! আমার কি হল? এবং তাকে সমূহ ঘটনা জানালেন। আর বললেনঃ আমি আমার জীবন সম্পর্কে শংকাবোধ করছি। খাদীজা (রাঃ) তাকে বললেন, কখনই না। আপনি সুসংবাদ গ্রহণ করুন। আল্লাহর কসম! আল্লাহ্ আপনাকে কখনই লাঞ্ছিত করবেন না। কেননা, আপনি তো আত্মীয়তার বন্ধন জুড়ে রাখেন, সত্য কথা বলেন, অনাথ অক্ষমদের বোঝা বহন করেন, মেহমানদের মেহমানাদী করেন এবং হকের পথে আগত যাবতীয় বিপদে সাহায্য করেন। অতঃপর খাদীজা (রাঃ) তাঁকে নিয়ে চললেন।

অতঃপর তাঁকে নিয়ে ওরাকা ইবনু নাওফল ইবনু আসাদ ইবনু আবদুল উয়াবা ইবনু কুসাই এর কাছে এলেন। আর তিনি খাদীজা (রাঃ) এর চাচার পুত্র (চাচাত ভাই) এবং তার পিতার পক্ষ থেকে চাচাও ছিলেন। তিনি জাহিলিয়াতের যুগে খৃষ্ট ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তিনি আরবী কিতাব লিখতেন। তিনি ইঞ্জিল আরবীতে ভাষান্তর করেছেন। যতখানি লেখা আল্লাহর মনযুর হত। তিনি ছিলেন অতি বৃদ্ধ, দৃষ্টিশক্তিহীন ব্যাক্তি। খাদীজা (রাঃ) তাকে বললেন, হে আমার চাচাতো ভাই! তোমার ভাতিজার কথা শুন। তখন ওরাকা বললেন, হে ভাতিজা! তুমি কি দেখেছ? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা কিছু দেখেছিলেন তা তাকে অবহিত করেলেন। তখন ওরাকা বললেন, এই তো আল্লাহর সেই নামুস (দূত) যাকে মূসা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে প্রেরণ করা হয়েছিল। হায় আফসোস! যদি সেদিন আমি জীবিত থাকতে পারতাম যে দিন তোমার কাওম তোমাকে বের করে দেবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তারা কি আমাকে বের করে দেবে? ওরাকা বললেন, হ্যাঁ, তুমি যা নিয়ে এসেছ, এমন বস্তু নিয়ে কোন দিনই কেউ আসেনি যার সাথে শত্রুতা করা হয়নি। যদি তোমার জীবনকালে আমাকে পায় তাহলে আমি পরিপূর্ণরূপে তোমাকে সাহায্য করব।

এরপর কিছু দিনের মধ্যেই ওরাকার মৃত্যু হয়। আর কিছু দিনের জন্য ওহীও বন্ধ থাকে। এমনকি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থার প্রেক্ষিতে অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়লেন। এমনকি আমার এ সম্পর্কে তার থেকে জানতে পেরেছি যে, তিনি পাহাড়ের চূড়া থেকে নিচে পড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে একাধিকবার দ্রুত সেখানে চলে গেছেন। যখন নিজেকে নিক্ষেপ করার জন্য পাহাড়ের চূড়া পৌঁছতেন, তখনই জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে বলতেন হে মুহাম্মদ! নিঃসন্দেহে আপনি তো আল্লাহর রাসূল! এতে তাঁর অস্থিরতা প্রশমিত হত এবং নিজে মনে শান্তিবোধ করতেন। তাই সেখান থেকে ফিরে আসতেন। ওহী বন্ধ অবস্থা যখন তাঁর উপর দীর্ঘায়িত হয় তখনই তিনি অনরূপ উদ্দেশ্যে দ্রুত চলে যেতেন। যখনই তিনি পাহাড়ের চূড়ায় পৌঁছতেন, তখনই জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাঁর সামনে আত্মপ্রকাশ করে পূর্বের ন্যায় বলতেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, ‏فَالِقُ الإِصْبَاحِ‏ দিনের বেলায় সূর্যের আলো ও রাতের বেলায় চাঁদের আলো।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫১২ | 6512 | ٦۵۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৯৩০. নেককার লোকদের স্বপ্ন এবং আল্লাহ্‌র বাণীঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর রাসুলের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করেছেন … এক সদ্য বিজয় পর্যন্ত (৪৮ঃ ২৭)
৬৫১২। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫১৩ | 6513 | ٦۵۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৯৩১. (রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বাণীঃ) ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে হয়
৬৫১৩। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর অশুভ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫১৪ | 6514 | ٦۵۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৯৩১. (রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর বাণীঃ) ভাল স্বপ্ন আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে হয়
৬৫১৪। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর উপর আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫১৫ | 6515 | ٦۵۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৯৩২. ভালো স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ
৬৫১৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। আর খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। তাই যখন কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখে তখন যেন তার থেকে আশ্রয় চায় এবং তার বাম দিকে থু থু ফেলে। তাহলে সে স্বপ্ন আর তার কোন ক্ষতি করবে না। আবূ আবদুল্লাহ (ইয়াহইয়া ইবনু আবূ কাসীর) কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫১৬ | 6516 | ٦۵۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৯৩২. ভালো স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ
৬৫১৬। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ মু’মিনের স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। সাবিত, হুমাইদ, ইসহাক ইবনু আবদুল্লাহ ও শুআইব (রহঃ) আনাস (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫১৭ | 6517 | ٦۵۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৯৩২. ভালো স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ
৬৫১৭। ইয়াহ্ইয়া ইবনু কাযা’আ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মু’মিনের স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫১৮ | 6518 | ٦۵۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৯৩২. ভালো স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ
৬৫১৮। ইব্রাহীম ইবনু হামযা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫১৯ | 6519 | ٦۵۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৯৩৩. সুসংবাদবাহী বিষয়াদি
৬৫১৯। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, সু-সংবাদবাহী বিষয়াদি ছাড়া নবুয়তের আর কিছু অবশিষ্ট নেই।। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, সুসংবাদবাহী বিষয়াদি কি? তিনি বললেন, ভাল স্বপ্ন।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫২০ | 6520 | ٦۵۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৯৩৬. একাধিক লোকের অভিন্ন স্বপ্ন দেখা
২৯৩৪. অনুচ্ছেদঃ ইউসুফ (আঃ) এর স্বপ্ন এবং আল্লাহ্‌র বাণীঃ স্মরণ কর, ইউসুফ যখন তার পিতাকে বলেছিল, হে আমার পিতা! আমি একাদশ নক্ষত্র, সূর্য এবং চন্দ্রকে দেখেছি; দেখেছি এদেরকে আমার প্রতি সিজদাবনত অবস্থায় … তোমার প্রতিপালক সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময় (১২ঃ ৪-৬) পর্যন্ত। এবং আল্লাহ্‌র বাণীঃ হে আমার পিতা। এটাই আমার পুর্বেকার স্বপ্নের ব্যাখ্যা … এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত কর (১২ঃ ১০০-১০১)

২৯৩৫. অনুচ্ছেদঃ ইবরাহীম (আঃ) এর স্বপ্ন এবং আল্লাহ্‌র বাণীঃ অততপর সে যখন তার পিতার সঙ্গে কাজ করার মত বয়সে উপনীত হল তখন ইবরাহীম বলল, হে বৎস! আমি স্বপ্নে দেখি যে, তমাকে আমি যবেহ করছি … এভাবেই আমি সৎকর্মপরায়ণদের পুরস্কৃত করে থাকি (৩৭ঃ ১০২-১০৫) পর্যন্ত। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, ‘আসলামা’ শব্দের অর্থ তাদেরকে যে বিষয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল তা তারা মেনে নিল। আর ‘তাল্লাহু’ শব্দের অর্থ তার চেহারা মাটিতে রাখল।

৬৫২০। ইয়াহ্ইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদল লোককে শবে কদর (রমযানের) শেষ সাত রাতের মধ্যে রয়েছে বলে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। আর কিছু সংখ্যক লোককে তা শেষ দশ রাতের মধ্যে দেখানো হয়েছে। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা শবে কদর শেষ সাত রাতের মধ্যেই তালাশ কর।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫২১ | 6521 | ٦۵۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৯৩৭. বন্দী, বিশৃংখলা সৃষ্টিকারী ও মুশরিকদের স্বপ্ন। আল্লাহ বলেন, তাঁর সাথে দু’জন যুবক কারাগারে প্রবেশ করল … যখন দূত তার কাছে উপস্থিত হলো, তখন সে বলল, তুমি তোমার প্রভুর কাছে ফিরে যাও (১২ঃ ৩৬-৫০) পর্যন্ত। ادَّكَرَ এর আসল রূপ ذَكَرَ শব্দ থেকে ইয়াতাকারা। أُمَّةٍ অর্থ যুগ। أَمَهٍ ও পড়া যায়, অর্থ ভুলে যাওয়া। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, يَعْصِرُونَ আঙ্গুল ও তেল নিংড়িয়ে রস বের করবে। تَحْصِنُونَ তোমরা সংরক্ষন করবে।
৬৫২১। আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) যতদিন কারাগারে কাটিয়েছেন, যদি আমি ততদিন কাটাতাম, অতঃপর আমার কাছে (বাদশাহর পক্ষ থেকে) আহবানকারী আসত, তাহলে আমি অবশ্যই তার ডাকে সাড়া দিতাম।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫২২ | 6522 | ٦۵۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৯৩৮. যে ব্যক্তি নবী (সাঃ) কে স্বপ্নে দেখে
৬৫২২। আবদান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যাক্তি আমাকে স্বপ্নে দেখবে সে অচিরেই জাগ্রতাবস্থায়ও আমাকে দেখবে। কেননা শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫২৩ | 6523 | ٦۵۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৯৩৮. যে ব্যক্তি নবী (সাঃ) কে স্বপ্নে দেখে
৬৫২৩। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে আমাকে নিদ্রাবস্থায় দেখল সে আমাকেই দেখল। কারন শয়তান আমার আকৃতি ধারন করতে পারে না। আর মুমিনের স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫২৪ | 6524 | ٦۵۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৯৩৮. যে ব্যক্তি নবী (সাঃ) কে স্বপ্নে দেখে
৬৫২৪। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ভালো স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে ও খারাপ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। যে কেউ এমন কিছু দেখবে, যা সে অপছন্দ করে, সে যেন বামদিকে তিনবার থুথু ফেলে এবং শয়তান থেকে আশ্রয় চায়। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না। আর শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫২৫ | 6525 | ٦۵۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৯৩৮. যে ব্যক্তি নবী (সাঃ) কে স্বপ্নে দেখে
৬৫২৫। খালিদ ইবনু খালিয়্যি (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে আমাকে স্বপ্ন দেখে সে ঠিকই দেখে। ইউনুস ও ইবনু আখীয যুহরী (রহঃ) যুবায়দীর অনুসরন করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫২৬ | 6526 | ٦۵۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৯৩৮. যে ব্যক্তি নবী (সাঃ) কে স্বপ্নে দেখে
৬৫২৬। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যে আমাকে স্বপ্নে দেখে সে সত্যই দেখে। কারন শয়তান আমার আকৃতি ধারণ করতে পারে না।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫২৭ | 6527 | ٦۵۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৯৩৯. রাত্রিকালীন স্বপ্ন। সামুরা (রাঃ) এ সম্পর্কে হাদিস বর্ণনা করেছেন
৬৫২৭। আহমাদ ইবনু মিকদাম ইজলী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে সংক্ষিপ্ত অথচ বিশদ অর্থপূর্ণ বাক্য দান করা হয়েছে। এবং আমাকে প্রভাব সঞ্চারী প্রকৃতি দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে। কোন এক রাতে আমি নিদ্রিত ছিলাম। ইত্যবসরে ভূপৃষ্টের যাবতীয় ভাণ্ডারের চাবি আমার কাছে এনে আমার হাতে রাখা হল। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলে গেছেন। আর তোমরা উক্ত ভাণ্ডার সমূহ হস্তান্তর করে চলছে।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫২৮ | 6528 | ٦۵۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৯৩৯. রাত্রিকালীন স্বপ্ন। সামুরা (রাঃ) এ সম্পর্কে হাদিস বর্ণনা করেছেন
৬৫২৮। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক রাতে আমাকে কা’বা এর কাছে স্বপ্ন দেখানো হল। তখন আমি গৌর বর্ণের সুন্দর এক পুরুষকে দেখলাম। তার মাথায় অতি চমৎকার লম্বা লম্বা চুল ছিল, যেগুলো আচড়িয়ে রেখেছে। চুল থেকে ফোঁটা ফোঁটা পানি ঝরছিল। তিনি দু’ব্যাক্তির ওপর অথবা বলেছেনঃ দু’ব্যাক্তির কাঁধের ওপর ভর করে বায়তূল্লাহর তাওয়াফ করছেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ ব্যাক্তি কে? বলা হলঃ মাসীহ ইবনু মরিয়ম। এরপর অপর এক ব্যাক্তির সাথে আমার সাক্ষাৎ ঘটল। সে ছিল কোঁকড়ানো চুল বিশিষ্ট, ডান চোখ কানা, চোখটি যেন (পানির ওপর) ভাসমান আঙুর। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ ব্যাক্তি কে? সে বলল মাসীহ দাজ্জাল।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫২৯ | 6529 | ٦۵۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৯৩৯. রাত্রিকালীন স্বপ্ন। সামুরা (রাঃ) এ সম্পর্কে হাদিস বর্ণনা করেছেন
৬৫২৯। ইয়াহইয়া (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, আমি রাতে স্বপে দেখেছি। এরপর পুরো হাদীসটি বর্ণনা করেন।

সুলায়মান ইবনু কাসীর, ইবনু আখীয যুহরী ও সুফয়ান ইবনু হুসায়ন (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে ইউনুস (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন। যুবায়দী (রহঃ) ইবনু আব্বাস অথবা আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন শুআয়ব, ইসহাক ইবনু ইয়াহইয়া, আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করতেন। মামার (রহঃ) প্রথমে এ হাদীসের সনদ বর্ণনা করতেন না। কিন্তু পরবর্তীতে করতেন।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৩০ | 6530 | ٦۵۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৯৪০. দিনের বেলায় স্বপ্ন দেখা। ইবন আউন (রহঃ) ইবন সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, দিনের স্বপ্ন রাতের সপ্নের মত।
৬৫৩০। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায়ই উম্মে হারাম বিনত মিলহান (রাঃ) এর ঘরে যেতেন। আর সে ছিল উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) এর স্ত্রী। একদা তিনি তার কাছে এলেন। সে তাকে খানা খাওয়াল। তারপর তার মাথার উকুন বাছতে শুরু করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমিয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর হেসে হেসে জেগে উঠলেন। উম্মে হারাম (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কেন হাসলেন? তিনি বললেনঃ আমার উম্মাতের একদল লোককে আমার কাছে পেশ করা হয়েছে। যারা আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধরত সাগরের মধ্যে জাহাজের ওপর আরোহণ করে বাদশাহর সিংহাসনে অথবা বাদশাহদের মত তারা সিংহাসনে উপবিষ্ট। ইসহাক রাবী সন্দেহ করেছেন। উম্মে হারাম (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল। আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, তিনি যেন আমাকে তাদের দলভুক্ত করে দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য দোয়া করলেন।

এরপর আবার তিনি মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পর আবার হেসে হেসে জেগে উঠলেন। আমি বললাম, আপনি হাসলেন কেন হে আল্লাহর রাসুল! তিনি বললেনঃ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদরত আমার একদল উম্মতকে আমার কাছে পেশ করা হয়েছে। পূর্বের ন্যায় এ দল সম্পর্কেও বললেন। উম্মে হারাম (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল। আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করুন, তিনি যেন আমাকে এ দলভুক্ত করে দেন। তিনি বললেনঃ তুমি প্রথম দলভুক্ত।

উম্মে হারাম (রাঃ) মুআবিয়া ইবনু সুফিয়ান (রাঃ) এর আমলে সামুদ্রিক জাহাজে আরোহন করেন এবং সমুদ্র থেকে পেরিয়ে আসার সময় আপন সাওয়ারী থেকে মাটিতে পড়ে গিয়ে মারা যান।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৩১ | 6531 | ٦۵۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৯৪১. মহিলাদের স্বপ্ন
৬৫৩১। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … খারিজা ইবনু যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উম্মুল আলা নাম্নী জনৈকা আনসারী মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বায়আত গ্রহণ করেন। তিনি তাঁকে জানান যে, আনসারগণ লটারির মাধ্যমে মুহাজিরগণকে ভাগ করে নিয়েছিল। আমাদের ভাগে আসলেন উসমান ইবনু মাযউন (রাঃ)। আমরা তাকে আমাদের ঘরের মেহমান বানিয়ে নিলাম। এরপর তিনি এমন এক ব্যথায় আক্রান্ত হলেন যে, সে ব্যথায় তার মৃত্যু হল। মারা যাবার পর তাঁকে গোসল দেওয়া হল। তার কাপড় দিয়েই তাকে কাফন পরানো হল। ইত্যবসরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন। উম্মুল আলা (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, তোমার ওপর আল্লাহর রহমত হোক, হে আবূ সাইব! আমার সাক্ষ্য তোমার বেলায় এটাই যে আল্লাহ তোমাকে সম্মানিত করেছেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি কি করে জানলে যে আল্লাহ তাকে সম্মানিত করেছেন? আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! আপনার প্রতি আমার পিতা কুরবান হোক! তাহলে কাকে আল্লাহ সম্মানিত করবেন? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহর কসম! তার ব্যাপার তো হল, তার মৃত্যু হয়ে গেছে। আল্লাহর কসম! তার জন্য আমি কল্যাণেরই আশাবাদী। আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহর রাসুল হওয়া সত্ত্বেও জানিনা, আমার সাথে কি ব্যবহার করা হবে? তখন উম্মুল আলা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি আগামীতে কখনো কারো বিশুদ্ধতার প্রত্যয়ন করব না।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৩২ | 6532 | ٦۵۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৯৪১. মহিলাদের স্বপ্ন
৬৫৩২। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … যুহরী (রহঃ) থেকে এ হাদীসে বলা হয়েছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি জানিনা, তার সাথে কি ব্যবহার করা হবে? উম্মুল আলা (রাঃ) বললেন, আমি এতে চিন্তাগ্রস্থ হয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। তখন আমি স্বপ্নে উসমান ইবনু মাযউন (রাঃ) এর জন্য প্রবাহমান ঝর্নাধারা দেখতে পেলাম। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ সষ্পর্কে অবহিত করলাম। তিনি বললেনঃ এটা তার আমল।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৩৩ | 6533 | ٦۵۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৯৪২. খারাফ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। যখন কেউ খারাফ স্বপ্ন দেখে তখন যেন তার বাম দিকে থু থু নিক্ষেপ করে এবং আল্লাহ্‌র আশ্রয় চায়
৬৫৩৩। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ কাতাদা আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, যিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী ও অশ্বারোহী যোদ্ধা ছিলেন। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে এবং খারাপ স্বপ্ন শয়তানের কাছ থেকে হয়ে থাকে। যখন তোমাদের কেউ খারাপ স্বপ্ন দেখে যা তার কাছে অপছন্দনীয় মনে হয়, তখন সে যেন তার বাম দিকে থু থু ফেলে এবং এ স্বপ্ন থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৩৪ | 6534 | ٦۵۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৯৪৩. স্বপ্নে দুধ দেখা
৬৫৩৪। আবদান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আমি একদা ঘুমিয়ে ছিলাম। আমার কাছে একটি দুধের পেয়ালা হাযির করা হল, আমি তা থেকে তৃপ্তি সহকারে পান করলাম। তৃপ্তির চিহ্ন আমার নখ দিয়ে প্রকাশ পেতে লাগল। তারপর অবশিষ্টাংশ উমরকে দিলাম। সাহাবাগগ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি এর কি ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। তিনি বললেনঃ ইল্‌ম।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৩৫ | 6535 | ٦۵۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৯৪৪. যখন স্বপ্নে নিজের চতুর্দিকে বা নখে দুধ প্রবাহিত হতে দেখা যায়
৬৫৩৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদা আমি ঘুমিয়েছিলাম। আমার কাছে দুধের একটি পেয়ালা পেশ করা হল। আমি তৃপ্তি সহকারে তা থেকে পান করলাম। এমনকি তৃপ্তির চিহ্ন আমার চতূর্দিক দিয়ে প্রকাশ পাচ্ছিল। অতঃপর অবশিষ্টাংশ উমর ইবনু খাত্তাবকে প্রদান করলাম। তার আশেপাশে লোকজন জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি এর কি ব্যাখ্যা প্রদান করছেন হে আল্লাহর রাসুল? তিনি বললেনঃ ইল্‌ম।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৩৬ | 6536 | ٦۵۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৯৪৫. স্বপ্নে জামা দেখা
৬৫৩৬। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি একদা ঘুমিয়েছিলাম। একদল লোককে স্বপ্নে দেখলাম, তাদেরকে আমার কাছে আনা হচ্ছে। আর তারা ছিল জামা পরিহিত। কারো কারো জামা স্তন পর্যন্ত আর কারো কারো তার নিচ পর্যন্ত। উমর ইবনু খাত্তাব আমার নিকট দিয়ে অতিক্রম করল। তার গায়ে যে জামা ছিল তা মাটিতে হেঁচড়ে চলছিল। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন হে আল্লাহর রাসুল! আপনি কি ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তিনি বললেনঃ দ্বীন।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৩৭ | 6537 | ٦۵۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৯৪৬. স্বপ্নে জামা হেঁচড়িয়ে চলা
৬৫৩৭। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ আমি একদা নিদ্রিত ছিলাম। আমি দেখলাম, আমার কাছে একদল লোক পেশ করা হল, আর তারা ছিল জামা পরিহিত। কারো কারো জামা ন্তন পর্যন্ত। আর কারো কারো এর নিচ পর্যন্ত। আর উমর ইবনু খাত্তাবকে এমতাবস্থায় আমার কাছে পেশ করা হলো যে, সে তার গায়ের জামা হেঁচড়িয়ে চলছিলেন। সাহাবাগণ বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনি এর কি ব্যাখ্যা দিলেন। তিনি বললেনঃ দ্বীন।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৩৮ | 6538 | ٦۵۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৯৪৭. স্বপ্নের মধ্যে সবুজ রং ও সবুজ বাগিচা দেখা
৬৫৩৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ-আল জুফী (রহঃ) … কায়স ইবনু উবায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এক মজলিসে ছিলাম। যেখানে সা’দ ইবনু মালিক (রাঃ) এবং ইবনু উমর (রাঃ)-ও ছিলেন। এ সময় আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) ঐ পথ দিয়ে অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন। লোকেরা বলল, ঐ লোকটি জান্নাতবাসীদের একজন। আমি তাঁকে বললাম, লোকেরা এরূপ এরূপ বলছে। তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ! তাদের জন্য শোভা পায় না যে, তারা এমন বিষয়ে মতামত ব্যক্ত করবে, যে বিষয় সম্পর্কে তাদের কোন জ্ঞান নেই। আমি স্বপ্নে দেখেছিলাম, যেন একটা স্তম্ভ একটি সবুজ বাগিচায় রাখা হয়েছে এবং সেটা যেথায় স্থাপন করা হয়েছে তার শিরোভাগে একটি রশি ছিল। আর নিচের দিকে ছিল একজন খাদেম। ‘মিনসাফ’ অর্থ খাদেম। বলা হল এ স্তম্ভ বেয়ে উপরে আরোহন কর। আমি উপরের দিকে আরোহণ করতে করতে রশিটি ধরে ফেললাম। এরপর এ স্বপ্ন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বর্ণনা করেছিলাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেনঃ আবদুল্লাহ মযবুত রশি ধারণকারী অবস্থায় মারা যাবে।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৩৯ | 6539 | ٦۵۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৯৪৮. স্বপ্নে মহিলার নিকাব উন্মোচন
৬৫৩৯। উবায়দ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাকে আমায় দু’বার স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। আমি দেখলাম, এক ব্যাক্তি তোমাকে রেশমী এক কাপড়ে জড়িয়ে বহন করে নিয়ে আসছে এবং বলছে ইনি আপনার স্ত্রী। আমি তার নিকাব উন্মোচন করে দেখতে পাই যে ঐ মহিলাটি তুমিই এবং আমি বলছি, যদি এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে তা হলে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৪০ | 6540 | ٦۵٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৯৪৯. স্বপ্নে রেশমি কাপড় দেখা
৬৫৪০। মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাকে (আয়িশাকে) শাদী করার পুর্বেই দু’বার আমাকে দেখানো হয়েছে। আমি দেখেছি, একজন ফেরেশতা তোমাকে রেশমী এক টুকরা কাপড়ে জড়িয়ে বহন করে নিয়ে আসছে। আমি বললাম, আপনি নিকাব উন্মোচন করুন। যখন সে নিকাব উন্মোচন করল তখন আমি দেখতে পেলাম যে, উক্ত মহিলা তুমিই। আমি তখন বললাম, এটা যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে তাহলে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন। এরপর আবার আমাকে দেখানো হল যে, ফেরেশতা তোমাকে রেশমী এক টুকরা কাপড়ে জড়িয়ে বহন করে নিয়ে আসছে। আমি বললাম- আপনি (তার নিকাব) উন্মোচন করুন। সে তা উন্মোচন করলে আমি দেখতে পাই যে, উক্ত মহিলা তুমিই। তখন আমি বললামঃ এটা যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে হযে থাকে তাহলে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৪১ | 6541 | ٦۵٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৯৫০. স্বপ্নে হাতে চাবি দেখা
৬৫৪১। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আমাকে সংক্ষিপ্ত অথচ বিশদ অর্থবহ বানী সহকারে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ভীতি উদ্রেককারী প্রভাব দ্বারা আমাকে সাহায্য করা হয়েছে। একদা আমি ঘুমিয়েছিলাম। আমার কাছে ভূ-পৃষ্ঠের ভাণ্ডার সমুহের চাবি পেশ করে আমার সামনে রাখা হল।

(আবূ আবদুল্লাহ) মুহাম্মাদ বুখারী (রহঃ) বলেন, আমার কাছে এ কথা পৌছেছে যে, সংক্ষিপ্ত অথচ বিশদ অর্থবহ বাণী এর অর্থ হল, আল্লাহর অনেক বিষয় যা পূর্ববতী কিতাব সমুহে লেখা হত- একটি অথবা দুটি বিষয়ে সন্নিবেশিত করে দেন। অথবা এর অর্থ অনুরূপ কিছু।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৪২ | 6542 | ٦۵٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৯৫১. স্বপ্নে হাতল অথবা আংটায় ঝুলা
৬৫৪২। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ ও খলীফা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে দেখলাম যেন আমি একটি বাগিচায় আছি। বাগিচার মাঝখানে একটি স্তম্ভ। স্তম্ভের শিরোভাগে একটি হাতল। তখন আমাকে বলা হল, উপরের দিকে উঠ। আমি বললাম, পারছি না। তখন আমার কাছে একজন খাদেম আসল এবং আমার কাপড় ভিজিয়ে দিল। আমি উপরের দিকে উঠতে উঠতে হাতলটি ধরে ফেললাম। হাতলটি ধরে থাকা অবস্থায় আমি জেগে গেলাম। অতঃপর এ স্বপ্ন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বর্ণনা করলাম। তিনি বললেনঃ ঐ বাগিচা ইসলামের বাগিচা ঐ স্তম্ভ ইসলামের স্তম্ভ, আর ঐ হাতল হল মযবুত হাতল। তুমি মৃত্যু পর্যন্ত ইসলামকে শক্ত করে ধরে থাকবে।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৪৩ | 6543 | ٦۵٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৯৫৩. স্বপ্নে মোটা রেশমী কাপড় দেখা ও জান্নাতে প্রবেশ করতে দেখা
بَابُ عَمُودِ الْفُسْطَاطِ تَحْتَ وِسَادَتِهِ
২৯৫২. স্বপ্নে নিজ বালিশের নিচে তাঁবুর খুঁটি দেখা

৬৫৪৩। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি স্বপ্নে দেখতে পাই, আমার হাতে যেন রেশমী এক টুকরা কাপড়। জান্নাতের যে মানেই তা আমি নিক্ষেপ করি তা আমাকে সে স্থানে উড়িয়ে নিয়ে যায়। এ স্বপ্ন আমি হাফসা (রাঃ) এর নিকট বর্ণনা করলাম। আর হাফসা (রাঃ) তা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বর্ণনা করলেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমার ভাই একজন সৎকর্মপরায়ণ ব্যাক্তি। অথবা বললেনঃ আবদুল্লাহ তো একজন সৎকর্মপরায়ন ব্যাক্তি।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৪৪ | 6544 | ٦۵٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৯৫৪. স্বপ্নে বন্ধন দেখা
৬৫৪৪। আবদুল্লাহ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কিয়ামত নিকটবর্তী হয়ে যাবে তখন মুমিনের স্বপ্ন খুব কমই অবাস্তবায়িত থাকবে। আর মুমিনের স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ। আর নবুয়তের কোন কিছুই অবাস্তব হতে পারে না। রাবী মুহাম্মদ (রহঃ) বলেন, আমি এরূপ বলছি। তিনি বলেন, এ কথা বলা হয়ে থাকে যে, স্বপ্ন তিন প্রকার, মনের কল্পনা, শয়তানের পক্ষ হতে ভীতি প্রদর্শন এবং আল্লাহর তরফ হতে সুসংবাদ। তাই যদি কেউ অপছন্দনীয় কিছু দেখে তবে সে যেন তা কারো কাছে বর্ণনা না করে। বরং উঠে যেন (নফল) সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নেয়।

রাবী বলেন, স্বপ্নে শৃংখল দেখা অপছন্দনীয় মনে করা হত এবং পায়ে বেড়ি দেখাকে তারা পছন্দ করতেন। বলা হত, পায়ে বেড়ি দেখার ব্যাখ্যা হলো দ্বীনের ওপর অবিচল থাকা। কাতাদা, ইউনূস, হিশাম ও আবূ হিলাল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উক্ত হাদীসকে বর্ননা করেছেন। আর কেউ কেউ এসবকে হাদীসের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। (পক্ষান্তরে) আউদের বর্ননাকৃত হাদীস সুষ্পষ্ট। ইউনুস (রহঃ) বলেছেন, আমি বন্ধনের ব্যাখ্যাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পক্ষ থেকেই মনে করি। আবু আবদুল্লাহ ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ শৃংখল গলদেশেই বাধা হয়।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৪৫ | 6545 | ٦۵٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৯৫৫. স্বপ্নে প্রবাহিত ঝর্ণা দেখা
৬৫৪৫। আবদান (রহঃ) … তাদেরই এক মহিলা উম্মুল আলা (রাঃ) যিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে বায়আত করেছিলেন তার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন মুহাজিরদের বাসস্থান নিরূপণের জন্য আনসারগণ লটারী দিলেন, তখন আমাদের ঘরে বসবাসের জন্য উসমান ইবনু মাযউন (রাঃ) আমাদের ভাগে পড়েন। তিনি রোগাক্রান্ত হয়ে পড়লে আমরা তাঁর সেবা-শুশ্রুষা করি। অবশেযে তিনি মারা যান। এরপর আমরা তাকে তার কাপড় দিয়েই কাফন পরিয়ে দেই। ইত্যবসরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ঘরে আসলেন। তখন আমি বললাম, হে আবূ সাইব! তোমার ওপর আল্লাহর রহমত হোক। তোমার বেলায় আমার সাক্ষ্য এই যে আল্লাহ তোমাকে সম্মানিত করেছেন। তিনি বললেনঃ তুমি তা কি করে জানলে? আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি জানি না। তিনি বললেনঃ তার তো মৃত্যু হয়ে গেছে, আমি তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণেরই আশাবাদী। আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহর রাসুল হওয়া সত্ত্বেও জানিনা যে, আমার সাথে এবং তোমাদের সাথে কি ব্যবহার করা হবে? উম্মুল আলা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি আর কখনও কারো শুদ্ধচিত্ততা প্রত্যয়ন করব না। উম্মুল আলা (রাঃ) বলেনঃ আমি স্বপ্নে উসমান (রাঃ) এর জন্য প্রবহমান ঝর্না দেখেছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তা বর্ণনা করলাম। তখন তিনি বললেনঃ এটা তার ‘আমল’ তার জন্য জারি থাকবে।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৪৬ | 6546 | ٦۵٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৯৫৬. স্বপ্নযোগে কূপ থেকে এমনভাবে পানি তুলতে দেখা যে লোকদের তৃষ্ণা নিবারণ হয়ে যায়। নবী (সাঃ) থেকে এ সম্পর্কীয় হাদীস আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন
৬৫৪৬। ইয়াকুব ইরন ইবরাহীম ইবনু কাসীর (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদা (আযি স্বপ্নে দেখলাম) আমি একটি কূপের পাশে বসে কূপ থেকে পানি উত্তোলন করছি। ইত্যবসরে আমার কাছে আবূ বকর ও উমর আসল। আবূ বকর বালতিটি হাতে নিয়ে এক বা দু’বালতি পানি উঠাল। আর তার উত্তোলনে কিছুটা দুর্বলতা হিল। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন। এরপর আবূ বকরের হাত থেকে উমর তা গ্রহণ করল। তার হাতে বালতিটি বেশ বড় হয়ে গেল। আমি কোন শক্তিশালী ব্যাক্তিকে উমরের ন্যায় এতঢী ঝানু কর্মঠ দেখিনি। ফলে লোকেরা তাদের পরিতৃপ্ত উটগুলো নিয়ে বাসস্থানে পৌছে গেল।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৪৭ | 6547 | ٦۵٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৯৫৭. স্বপ্নে দুর্বলতার সাথে কূপ থেকে এক বা দু’বালতি পানি তুলতে দেখা
৬৫৪৭। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … সালিমের পিতা আবদুল্লাহ ইরন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবূ বকর ও উমর (রাঃ) সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্বপ্ন বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি লোকদেরকে সমবেত হতে দেখলাম। তখন আবূ বকর দাঁড়িয়ে এক বা দুবালতি পানি উত্তোলন করল। আর তার উত্তোলনে কিছু দুর্বলতা ছিল। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন। এরপর ইবনুল খাত্তাব দাঁড়াল। আর তার হাতে বালতিটি বেশ বড় হয়ে গেল। আমি লোকদের মধ্যে উমরের ন্যায় এতটা ঝানু কর্মঠ কাউকে দেখিনি। ফলে লোকেরা তাদের পরিতৃপ্ত উটগুলি নিয়ে বাসস্থানে পৌছে গেল।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৪৮ | 6548 | ٦۵٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৯৫৭. স্বপ্নে দুর্বলতার সাথে কূপ থেকে এক বা দু’বালতি পানি তুলতে দেখা
৬৫৪৮। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদা আমি নিন্দ্রিায় ছিলাম। দেখলাম, আমি একটি কূপের পাশে রয়েছি। আর এর নিকট একটি বালতি রয়েছে। আমি কূপ থেকে পানি উত্তোলন করলাম যতখানি আল্লাহর ইচ্ছা ছিল। এরপর বালতিটি ইবনু আবূ কুহাফা গ্রহন করেন। তিনি কূপ থেকে এক বা দু’বালতি পানি উত্তোলন করেন। তার উত্তোলনে কিছুটা দুর্বলতা ছিল। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন। তারপর বালতিটি বেশ বড় হয়ে গেল। তখন তা উমর ইবনুল খাত্তাব গ্রহণ করল। আমি কোন শক্তিশালী ব্যাক্তিকে উমরের ন্যায় পানি উত্তোলন করতে দেখিনি। অবশেষে লোকেরা তাদের পরিতৃপ্ত উটগুলো নিয়ে বাসস্থানে পৌছে গেল।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৪৯ | 6549 | ٦۵٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৯৫৮. স্বপ্নে বিশ্রাম করতে দেখা
৬৫৪৯। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি একদা নিদ্রায় ছিলাম। দেখলাম, আমি একটি হাউযের কাছ থেকে লোকদেরকে পানি পান করাচ্ছি। তখন আমার কাছে আবূ বকর আসল। আমাকে বিশ্রাম দেওয়ার নিমিত্ত আমার হাত থেকে সে বালতিটি নিয়ে গেল এবং দু’ বালতি পানি উঠাল। আর তার উত্তোলনে কিছুটা দুর্বলতা ছিল। আল্লাহ তাকে ক্ষমা করুন। এরপর ইবনুল খাত্তাব এসে তার কাছ থেকে তা নিয়ে নিল এবং পানি উত্তোলন করতে থাকল। অবশেষে লোকেরা (পরিতৃপ্ত হয়ে) ফিরে গেল, অথচ হাউযের পানি প্রবাহিত হচ্ছিল।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৫০ | 6550 | ٦۵۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৯৫৯. স্বপ্নে প্রাসাদ দেখা
৬৫৫০। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বসা ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ আমি এক সময় ঘুমিয়ে ছিলাম। আমি আমাকে জান্নাতে দেখতে পেলাম। একজন মহিলা একটি প্রাসাদের পাশে ওযু করছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এই প্রাসাদটি কার? তারা বলল উমরের। তখন তার আত্নমর্যাদাবোধের কথা স্মরণ করলাম। তাই আমি ফিরে এলাম। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, এ কথা শুনে উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, আমার পিতা-মাতা আপনার ওপর কুরবান হোক! হে আল্লাহর রাসুল (আপনার উপরেও কি) আমি আত্নমর্যাদাবোধ প্রদর্শন করব?

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৫১ | 6551 | ٦۵۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৯৫৯. স্বপ্নে প্রাসাদ দেখা
৬৫৫১। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি জান্নাতে প্রবেশ করলাম। আমি আমাকে একটা দূর্গের প্রাসাদের নিকট দেখতে পেলাম। তখন আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এটা কার? তারা বলল, কুরাইশের জনৈক ব্যাক্তির। হে ইবনুল খাত্তাব! এ প্রাসাদে ঢুকতে আমাকে কিছুই বাধা দিচ্ছিল না। কেবল তোমার আত্মমর্যাদাবোধ, যা আমার জানা ছিল। উমর (রাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনার উপরেও কি আমি আত্নমর্যাদাবোধ প্রদর্শন করব?

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৫২ | 6552 | ٦۵۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৯৬০. স্বপ্নে ওযূ করতে দেখা
৬৫৫২। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক সময় আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বসা ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ আমি একদা ঘুমিয়েছিলাম। আমি আমাকে জান্নাতে দেখতে পেলাম এবং (দেখতে পেলাম) যে একজন মহিলা একটি প্রাসাদের পাশে ওযু করছে। আমি বললামঃ এ প্রাসাদটি কার? তারা বলল উমরের। তখন তার আত্মমর্যাদাবোধের কথা স্মরণ করে আমি ফিরে এলাম। তা শুনে উমর (রাঃ) কেঁদে ফেললেন এবং বললেন, আমার পিতা-মাতা আপনার ওপর কুরবান হোক। হে আল্লাহর রাসুল! আপনার উপরেও কি আমি আত্মমর্যাদাবোধ দেখাব?

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৫৩ | 6553 | ٦۵۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৯৬১. স্বপ্নে কা’বা গৃহ তাওয়াফ করা
৬৫৫৩। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি একদা নিদ্রায় ছিলাম। তখন আমি আমাকে কাবা গৃহ তাওয়াফ রত অবস্থায় দেখতে পেলাম। এমন সময় সোজা চুল বিশিষ্ট একজন পুরুষকে দু’জন পুরুষের মাঝখানে দেখলাম, যার মাথা থেকে পানি ঝরে পড়ছিল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইনি কে? তারা বলল, ইবনু মারিয়াম। এরপর আমি ফিরে আসতে লাগলাম। এ সময় একজন লাল বর্নের মোটাসোটা, কোঁকড়ান চুল বিশিষ্ট, ডান চোখ কানা ব্যাক্তিকে দেখলাম। তার চোখটি যেন ভাসমান আঙ্গুর। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এ ব্যাক্তি কে? তারা বলল, এ হচ্ছে দাজ্জাল। তার সাথে সর্বাধিক সাদৃশ্যপূর্ন ব্যাক্তি হল ইবনু কাতান। আর ইবনু কাতান হল বনূ মুসতালিক গোত্রের থুযাআ বংশের একজন লোক।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৫৪ | 6554 | ٦۵۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৯৬২. স্বপ্নে নিজের বাকী পানীয় থেকে অন্যকে দেয়া
৬৫৫৪। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আমি একদা ঘুমিয়েছিলাম। আমি দেখলাম, দুধের একটা পেয়ালা আমাকে দেওয়া হল। তা থেকে আমি (এত বেশি) পান করলাম যে, আমাতে তৃপ্তির চিহ্ন প্রবাহিত হইল। অতঃপর (অবশিষ্টাংশ) উমরকে দিলাম। সাহাবাগন বললেন, এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা কি প্রদান করলেন হে আল্লাহর রাসুল? তিনি বললেনঃ ইল্‌ম।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৫৫ | 6555 | ٦۵۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৯৬৪. স্বপ্নে ডান দিক গ্রহণ করতে দেখা
৬৫৫৫। উবায়দুল্লাহ ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বেশ ক’জন সাহাবী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে স্বপ্ন দেখতেন। অতঃপর তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তা বর্ণনা করতেন। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ব্যাখ্যা দিতেন যা আল্লাহ ইচ্ছা করতেন। আমি তখন অল্প বয়সী যুবক। আর বিয়ের আগে মসজিদই ছিলো আমার ঘর। আমি মনে মনে নিজেকে সম্বোধন করে বললাম, যদি তোমার মধ্যে কোন কল্যাল থাকত তাহলে তুমি তাদের ন্যায় স্বপ্ন দেখতে। আমি এক রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে বললাম, হে আল্লাহ! আপনি যদি জানেন যে, আমার মধ্যে কোন কল্যাণ নিহিত আছে তাহলে আমাকে কোন একটি স্বপ্ন দেখান। আমি ঐ অবস্থায়ই (ঘুমিয়ে) রইলাম।

দেখলাম আমার কাছে দু’জন ফেরেশতা এসেছেন। তাদের প্রত্যেকের হাতেই লোহার একটি করে হাতূড়ি। তারা আমাকে নিয়ে (জাহান্নামের দিকে) অগ্রসর হতেন। আর আমি তাদের উভয়ের মাঝখানে থেকে আল্লাহর কাছে দোয়া করছি, হে আল্লাহ! আমি জাহান্নাম থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এরপর আমাকে দেখান হল যে, একজন ফেরেশতা আমার কাছে এসেছে। তার হাতে লোহার একটি হাতূড়ি। সে আমাকে বলল, তোমার অবশ্যই কোন ভয় নেই। তুমি খুবই ভাল লোক, যদি বেশি করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে। তারা আমাকে নিয়ে চলল, অবশেষে তারা আমাকে জাহান্নামের (তীরে এনে) দাঁড় করাল, (যা দেখতে) কুপের ন্যায় গোলাকার। আর কুপেবু ন্যায় এরও রয়েছে অনেক শিং। আর দু’শিং এর মাঝখানে একজন ফেরেশতা, যার হাতে লোহার একটি হাতুড়ি। আর আমি এতে কিছু লোককে (জাহান্নামে) শিকল পরিহিত দেখলাম। তাদের মাথা ছিল নিচের দিকে। কুরাইশের কতক ব্যাক্তিকে তথায় আমি চিনে ফেললাম। অতঃপর তারা আমাকে ডানদিকে নিয়ে ফিরল।

এ ঘটনা (স্বপ্নে) আমি হাফসা (রাঃ) এর নিকট বর্ণনা করলাম। আবূ হাফসা (রাঃ) তা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বর্ণনা করলেনঃ তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আবদুল্লাহ তো সৎকর্মপরায়ন লোক। নাফি (রহঃ) বলেনঃ এরপর থেকে তিনি সর্বদা বেশি করে (নফল) সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৫৬ | 6556 | ٦۵۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৯৬৪. স্বপ্নে ডান দিক গ্রহণ করতে দেখা
৬৫৫৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে অবিবাহিত যুবক ছিলাম। আমি মসজিদেই রাত্রি যাপন করতাম। আর যারাই স্বপ্নে কিছু দেখত তারা তা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বর্ণনা করত। আমি বললাম, হে আল্লাহ! যদি তোমার নিকট আমার জন্য কোন কল্যাণ নিহিত থাকে, তাহলে আমাকে কোন স্বপ্ন দেখাও, যাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান করেন।

আমি নিদ্রা গেলাম, তখন দেখতে পেলাম যে দু’জন ফেরেশতা আমার কাছে এসে আমাকে নিয়ে চলল এরপর তাদের সাথে অপর একজন ফেরেশতার সাক্ষাৎ ঘটল। সে আমাকে বলল তোমার কোন ভয়ের কারণ নেই। তুমি তো একজন সৎকর্মপরায়ণ লোক। এরপর তারা আমাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে চলল, এটা যেন কুপের ন্যায় গোলাকার নির্মিত। আর এর মধ্যে বেশ কিছু লোক রয়েছে। এদের কতককে আমি চিনতে পারলাম। এরপর তারা আমাকে ডানদিকে নিয়ে চলল।

যখন সকাল হল, আমি হাফসা (রাঃ) এর নিকট সব ঘটনা উল্লেখ করলাম। পরে হাফসা (রাঃ) বললেন যে, তিনি তা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বর্ণনা করেছেন। আর তিনি বলেছেনঃ আবদুল্লাহ সৎকর্মপরায়ণ লোক। (তিনি আরও বলেছেন) যদি সে রাতে বেশি করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করত। যুহরী (রহঃ) বলেন, এরপর থেকে আবদুল্লাহ (ইবনু উমর) (রাঃ) রাতে বেশি করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগলেন।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৫৭ | 6557 | ٦۵۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৯৬৫. স্বপ্নে পেয়ালা দেখা
৬৫৫৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আমি একদা ঘুমিয়েছিলাম। দেখলাম, আমার কাছে দুধের একটা পিয়ালা আনা হল। আমি তা থেকে পান করলাম। এরপর আমার অবশিষ্টাংশ উমর ইবনুল খাত্তাবকে প্রদান করলাম। সাহাবাগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আপনি এর ব্যাখ্যা কি প্রদান করেছেন। তিনি বললেনঃ ইল্‌ম।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৫৮ | 6558 | ٦۵۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৯৬৬. স্বপ্নে কোন কিছু উড়তে দেখা
৬৫৫৮। সাঈদ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সকল স্বপ্নের উল্লেখ করেছেন আমি আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেন, আমার কাছে উল্লেখ করা হয়েছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি একদা ঘুমিয়েছিলাম, আমাকে দেখানো হলো যে আমার হাত দুটিতে স্বর্ণের দু’টি চুড়ি রাখা হয়েছে। আমি সে দুটি কেটে ফেললাম এবং অপছন্দ করলাম। অতঃপর আমাকে অনুমতি প্রদান করা হল, আমি উভয়টিকে ফুঁ দিলাম, ফলে উভয়টি উড়ে গেল। আমি চুড়ি দু’টির এ ব্যাখ্যা প্রদান করলাম যে, দু’জন মিথ্যা নবুয়তের দাবিদার বের হরে। উবায়দুল্লাহ (রহঃ) বলেন, এদের একজন হল, আল আনসী যাকে ইয়ামানে ফায়রুয (রাঃ) কতল করেছেন। আর অপরজন হল মুসায়লিমা।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৫৯ | 6559 | ٦۵۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৯৬৭. স্বপ্নে গরু যবেহ হতে দেখা
৬৫৫৯। মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখি যে আমি মক্কা থেকে এমন এক স্থানের দিকে হিজরত করছি যেখানে খেজুর বৃক্ষ রয়েছে। তখন আমার ধারণা হল, সেই স্থানটি ইয়ামামা অথবা হাজার হবে। অখচ সে স্থানটি হল মদিনা তথা ইয়াসরিব। আর আমি (স্বপ্নে) সেখানে একটি গরু দেখলাম। আল্লাহর কসম! এটা কল্যাণকরই। গরুর ব্যাখ্যা হল উহুদের যুদ্ধে (শাহাদাত প্রাপ্ত) মুমিনগণ। আর কল্যাণের ব্যাখ্যা হল এটাই, যে কল্যাণ আল্লাহ আমাদের দিয়েছেন এবং সত্যের বিনিময় যা আল্লাহ বদর যুদ্ধের পর আমাদেরকে প্রদান করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৬০ | 6560 | ٦۵٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৯৬৮. স্বপ্নে ফুঁ দেওয়া
৬৫৬০। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হানযালী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমরা সর্বশেষ এবং সর্ব প্রথম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেনঃ একদা আমি ঘুমিয়েছিলাম। দেখলাম আমাকে ভূ-পৃষ্ঠের ভাণ্ডার সমূহ দেওয়া হয়েছে। আর আমার হাতে স্বর্ণের দু’টি চুড়ি রাখা হয় যা আমার কাছে কষ্টকর মনে হল। আর আমাকে চিন্তায় ফেলে দিল। তখন আমাকে নির্দেশ করা হল যেন আমি চুড়ি দুটিতে ফুঁ দেই। তাই আমি উভয়টিতে ফুঁ দিলাম (চুড়ি দু’টি উড়ে গেল)। আমি চুড়ি দু’টির ব্যাখ্যা এভাবে দিলাম যে, (নবুয়তের) দু’জন মিথ্যা দাবিদার রয়েছে, যাদের মাঝখানে আমি আছি। সানআর বাসিন্দা ও ইয়ামামার বাসিন্দা।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৬১ | 6561 | ٦۵٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৯৬৯. কেউ স্বপ্নে দেখল যে, সে একদিক থেকে একটা জিনিস বের করে অন্যত্র রেখেছে
৬৫৬১। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সালিমের পিতা আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি দেখেছি যেন এলোমেলো কেশ বিশিষ্ট একজন কালো মাহীলা মদিনা থেকে বের হয়ে মাহইয়াআ নামক স্থানে গিয়ে দাঁড়িয়েছে আর এটিকে জুহফা বলা হয়। আমি এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা এরূপ প্রদান করলাম যে, মদিনার মহামারী তথায় স্থানান্তরিত হল।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৬২ | 6562 | ٦۵٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৯৭০. স্বপ্নে কালো মহিলা দেখা
৬৫৬২। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ বকর মুকাদ্দামী (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি মদিনা সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্বপ্নের বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন। তিনি বলেছেনঃ আমি দেখেছি এলোমেলো চুল বিশিষ্ট একজন কালো মহিলা মদিনা থেকে বের হয়েছে। অবশেষে মাহইয়াআ নামক স্থানে অবস্থান নিয়েছে। আমি এর ব্যাখ্যা এরূপ প্রদান করলাম যে, মদিনার মহামারী মাহইয়াআ তথা জুহফা নামক স্থানে স্থানান্তরিত হল।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৬৩ | 6563 | ٦۵٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৯৭১. স্বপ্নে এলোমেলো চুলবিশিষ্ট মহিলা দেখা
৬৫৬৩। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … সালিমের পিতা আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখেছি। এলোমেলো চুল বিশিষ্ট একজন কালো মহিলা মদিনা থেকে বের হয়ে মাহইয়াআ তথা জুহফা নামক স্থানে গিয়ে থেমেছে। আমি এর ব্যাখ্যা এরূপ দিলাম যে মদিনার মহামারী তথায় স্থানান্তরিত হল।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৬৪ | 6564 | ٦۵٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৯৭২. স্বপ্নে নিজেকে তরবারী নাড়াচাড়া করতে দেখা
৬৫৬৪। মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্বপ্ন বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেন, তিনি বলেছেনঃ আমি স্বপ্নে দেখলাম একটা তরবারী নাড়াচাড়া করছি। আর এর মধ্যভাগ ভেঙ্গে গেল। এর ব্যাখ্যা হল বিপদ, যা উহুদের যুদ্ধে মুমিনদের ভাগ্যে ঘটেছে। পুনরায় আমি তরবারীটি নাড়লাম। এতে তরবারীটি পূর্ববর্তী অবস্থা থেকে সুন্দর অবস্থায় ফিরে এল। এর ব্যাখ্যা হল আল্লাহর দেওয়া বিজয় ও মুমিনদের ঐক্য।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৬৫ | 6565 | ٦۵٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৩. যে ব্যক্তি স্বীয় স্বপ্ন বর্ণনায় মিথ্যার আশ্রয় নিল
৬৫৬৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি এমন স্বপ্ন দেখার ভান করল যা সে দেখেনি। তাকে দু’টি যবের দানায় পিষ্ট লাগানোর জন্য বাধ্য করা হবে। অথচ সে তা কখনও পারবে না। যে কেউ কোন এক দলের কথার দিকে কান লাগাল। অথচ তারা এটা পছন্দ করে না অথবা বলেছেন, অথচ তারা তার থেকে পলায়নপর। কিয়ামতের দিন তার উভয় কানে সীসা ঢেলে দেওয়া হবে। আর যে কেউ কোন প্রানীর ছবি আঁকে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে এবং তাতে প্রাণ ফুঁকে দেওয়ার জন্য বাধ্য করা হবে। কিন্তু সে প্রাণ ফুঁকতে পারবে না।

সুফয়ান বলেছেন, আইউব এই হাদীসটি আমাদেরকে মওসুল রূপে বর্ণনা করেছেন। কুতায়বা (রহঃ) বলেন, আবূ আওয়ানা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে তার উক্তি বর্ণনা করেন, যে ব্যাক্তি নিজের স্বপ্ন মিথ্যা বর্ণনা করে ……।

শু’বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে তার উক্তি বর্ণনা করেন, যে কেউ ছবি আকে … যে কেউ মিথ্যা স্বপ্ন বর্ননা করে …… যে কেউ কান লাগায় ……।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৬৬ | 6566 | ٦۵٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৩. যে ব্যক্তি স্বীয় স্বপ্ন বর্ণনায় মিথ্যার আশ্রয় নিল
৬৫৬৬। ইসহাক (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। (তিনি বলেন) যে কেউ কান লাগাবে … যে কেউ মিথ্যা স্বপ্ন বর্ণনা করবে … যে কেউ ছবি আকবে … অবশিষ্ট হাদীস অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। হিশাম (রহঃ) ইকরামা থেকে ইবনু আব্বাস সুত্রে খালিদ এর অনুসরণ করেছেন।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৬৭ | 6567 | ٦۵٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৩. যে ব্যক্তি স্বীয় স্বপ্ন বর্ণনায় মিথ্যার আশ্রয় নিল
৬৫৬৭। আলী ইবনু মুসলিম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সবচেয়ে নিকৃষ্ট মিথ্যা হল আপন চক্ষুকে এমন কিছু দেখার (দাবি করা) যা চক্ষুদ্বয় দেখতে পায়নি।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৬৮ | 6568 | ٦۵٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৪. স্বপ্নে স্পছন্দনীয় কোন কিছু দেখলে তা কারো কাছে না বলা এবং সে সম্পর্কে কোন আলোচনা না করা
৬৫৬৮। সাঈদ ইবনু রাবী (রহঃ) … আবূ সালামা (রহঃ) থেকে বর্নিত তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম যা আমাকে রোগাক্রান্ত করে ফেলত। অবশেষে আমি আবূ কাতাদা (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি এমন স্বপ্ন দেখতাম যা আমাকে রোগাক্রান্ত করে ফেলত। অবশেষে আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে। তাই যখন কেউ পছন্দনীয় কোন স্বপ্ন দেখে তখন এমন ব্যাক্তির কাছেই বলবে, যাকে সে পছন্দ করে। আর যখন অপছন্দনীয় কোন স্বপ্ন দেখে তখন যেন সে এর ক্ষতি ও শয়তানের ক্ষতি থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায় এবং তিনবার থু থু ফেলে আর সে যেন তা কারো কাছে বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৬৯ | 6569 | ٦۵٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৪. স্বপ্নে স্পছন্দনীয় কোন কিছু দেখলে তা কারো কাছে না বলা এবং সে সম্পর্কে কোন আলোচনা না করা
৬৫৬৯। ইবরাহিম ইবনু হামযা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন কেউ এমন কোন স্বপ্ন দেখে যা সে পছন্দ করে, তবে মনে করবে যে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়েছে। তখন যেন সে এজন্য আল্লাহর শোকর আদায় করে এবং তা বর্ননা করে। আর যখন এর বিপরীত কোন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে না, মনে করবে তা শয়তানের পক্ষ থেকে হয়েছে তখন যেন সে এর অনিষ্ট থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায় এবং তা কারো কাছে বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করবে না।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৭০ | 6570 | ٦۵۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৫. ভুল ব্যাখ্যাকারীর ব্যাখ্যাকে প্রথমেই চুড়ান্ত বলে মনে না করা
৬৫৭০। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, আমি গত রাতে স্বপ্নে একখন্ড মেঘ দেখতে পেলাম যা থেকে ঘি ও মধু ঝরছে। আমি লোকদেরকে দেখলাম তারা তা থেকে তুলে নিচ্ছে কেউ বেশি পরিমাণ আবার কেউ কম পরিমান। আর দেখলাম একটা রশি যমীন থেকে আসমান পর্যন্ত মিলে রয়েছে। আমি দেখলাম আপনি তা ধরে উপরে চড়ছেন। তারপর অপর এক ব্যাক্তি তা ধরল ও এর সাহায্যে উপরে উঠে গেল। এরপর আরেক জন তা ধরে এর দ্বারা উপরে উঠে গেল। এরপর আরেক জন তা ধরল। কিন্তু তা ছিড়ে গেল। পুনরায় তা জোড়া লেগে গেল।

তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ হে আল্লাহর রাসুল! আপনার প্রতি আমার পিতা কুরবান হোক! আল্লাহর কসম! আপনি অবশ্যই আমাকে এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান করার সুযোগ দিবেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি এর ব্যাখ্যা প্রদান কর। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, মেঘের ব্যাখ্যা হল ইসলাম। আর তার থেকে যে ঘি ও মধু ঝরছে তা হল কুরআন যার সুমিষ্টতা ঝরছে কুরআন থেকে কেউ বেশি আহরণ করছে আর কেউ কম। আসমান থেকে যমীন পর্যন্ত ঝুলন্ত রশিটি হতে ঐ হক (মহা সত্য) যার উপর আপনি প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন। আপনি তা ধরবেন, আর আল্লাহ আপনাকে উচ্চে আরোহন করাবেন।

আপনার পরে আরেক জন তা ধরবে। ফলে এর দ্বারা সে উচ্চে আরোহণ করবে। অতঃপর আরেকজন তা ধরে এর মাধ্যমে সে উচ্চে আরোহণ করবে। এরপর আরেকজন তা ধরবে কিন্তু তা ছিড়ে যাবে। পুনরায় তা জোড়া লেগে যাবে, ফলে সে এর দ্বারা উচ্চে আরোহণ করবে। হে আল্লাহর রাসুল! আমার পিতা আপনার উপর কুরবান হোক। আমাকে বলুন, আমি ঠিক বলেছি, না ভুল?

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কিছু তো ঠিক বলেছ। আর কিছু ভুল বলেছ। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর কসম! আপনি অবশ্যই আমাকে বলে দিবেন যা আমি ভুল করেছি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কসম দিও না।

অধ্যায়ঃ ৮০/ স্বপ্নের ব্যাখ্যা প্রদান (كتاب التعبير)
হাদিস নম্বরঃ ৬৫৭১ | 6571 | ٦۵۷۱

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৬. ফাজরের নামাযের পরে স্বপ্নের ব্যাখ্যা দেয়া
৬৫৭১। মুয়াম্মাল ইবনু হিশাম আবু হিশাম (রহঃ) … সামুরা ইবনু জুনদাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায়ই তাঁর সাহাবীদেরকে বলতেন, তোমাদের কেউ কোন স্বপ্ন দেখেছ কি? রাবী বলেন, যাদের বেলায় আল্লাহর ইচ্ছা, তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে স্বপ্ন বর্ণনা করত।

তিনি একদিন সকালে আমাদেরকে বললেনঃ গত রাতে আমার কাছে দু’জন আগন্তুক আসল। তারা আমাকে উঠাল। আর আমাকে বলল, চলুন। আমি তাদের সাথে চলতে লাগলাম। আমরা কাত হয়ে শায়িত এক ব্যাক্তির কাছে পৌছলাম। দেখলাম, অপর এক ব্যাক্তি তার নিকট পাথর নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সে তার মাথায় পাথর নিক্ষেপ করছে ফলে তার মাথা ফেটে যাচ্ছে। আর পাথর নিচে গিয়ে পতিত হচ্ছে। এরপর অবার সে পাথরটি অনুসরণ করে তা পুনরায় নিয়ে আসছে। তিনি আসতে না আসতেই লোকটির মাথা পুর্বের ন্যায় পুনরায় ভাল হয়ে যায়। ফিরে এসে আবার অনুরূপ আচরণ করে, যা পূর্বে প্রথমবার করেছিল। তিনি বলেনঃ আমি তাদের (সাথীদ্বয়কে) বললাম, সুবহান্নাল্লাহ! এরা কারা? তিনি বললেনঃ তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন।

তিনি বলেনঃ আমরা চললাম, এরপর আমরা চিৎ হয়ে শায়িত এক ব্যাক্তির কাছে পৌছলাম। এখানেও দেখলাম, তার নিকট এক ব্যাক্তি লোহার আকড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। আর সে তার চেহারার একদিকে এসে এটা দ্বারা মুখমন্ডলের একদিক মাথার পিছনের দিক পর্যন্ত এবং অনুরূপভাবে নাসারন্দ্র, চোখ ও মাথার পিছন দিক পর্যন্ত চিরে ফেলছে। আওফ (রহঃ) বলেন, আবূ রাজা (রহঃ) কোন কোন সময় ‘ইয়ুশারশিরু’ শব্দের পরিবর্তে ‘ইয়াশুককু’ শব্দ বলতেন। এরপর ঐ লোকটি শায়িত ব্যাক্তির অপরদিকে যায় এবং প্রথম দিকের সাথে যেরূপ আচরণ করেছে অনুরূপ আচরণই অপরদিকের সাথেও করে। ঐ দিক হতে অবসর হতে না হতেই প্রথম দিকটি পুর্বের ন্যায় ভাল হয়ে যায়। তারপর আবার প্রথমবারের ন্যায় আচরণ করে। তিনি বলেনঃ আমি বললাম, সুবহানাল্লাহ! এরা কারা? তিনি বলেনঃ তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন।

আমরা চললাম এবং চুনা সদৃশ একটি গর্তের কাছে পৌছলাম। রাবী বলেন, আমার মনে হয় যেন তিনি বলেছিলেন, আর তথায় শোরগোলের শব্দ হচ্ছিল। তিনি বলেনঃ আমরা তাতে উঁকি মারলাম, দেখলাম তাতে বেশ কিছু উলঙ্গ নারী ও পুরুষ রয়েছে। আর নিচ থেকে নির্গত আগুনের লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করছে যখনই লেলিহান শিখা তাদেরকে স্পর্শ করে, তখনই তারা উচ্চস্বরে চিৎকার করে উঠে। তিনি বলেনঃ আমি তাদেরকে বললাম, এরা কারা? তারা আমাকে বলল, চলুন , চলুন।

তিনি বলেনঃ আমরা চললাম এবং একটি নদীর (তীরে) গিয়ে পৌছলাম। রাবী বলেনঃ আমার যতদূর মনে পড়ে বলেছিলেন, নদীটি ছিল রক্তের মত লাল। আর দেখলাম, এই নদীতে এক ব্যাক্তি সাঁতার কাটছে। আর নদীর পানিতে অপর এক ব্যাক্তি রয়েছে এবং সে তার কাছে অনেকগুলো পাথর একত্রিত করে রেখেছে। আর ঐ সাতারকারী ব্যাক্তি বেশ কিছুক্ষন সাঁতার কাটার পর সে ব্যাক্তির কাছে এসে পৌছে, যে নিজের নিকট পাথর একত্রিত করে রেখেছে। তথায় এসে সে তার মুখ খুলে দেয় আর ঐ ব্যাক্তিতার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দেয়। এরপর সে চলে যায়, সাঁতার কাটতে থাকে। আবার তার কাছে ফিরে আসে, যখনই সে তার কাছে ফিরে আসে তখনই সে তার মুখ খুলে দেয়, আর ঐ ব্যাক্তি তার মুখে একটি পাথর ঢুকিয়ে দেয়। তিনি বলেনঃ আমি জিজ্ঞাসা করলাম, এরা কারা? তারা বলল, চলুন, চলুন।

তিনি বলেনঃ আমরা চললাম এবং এমন একজন- কুশ্রী ব্যাক্তির কাছে এসে পৌছলাম, যা তোমার দুটিতে সর্বাধীক কুশ্রী বলে মনে হয়। আর দেখলাম, তার নিকট রয়েছে আগুন, যা সে জ্বালাচ্ছে ও তার চতূর্দিকে দৌড়াচ্ছে। তিনি বলেনঃ আমি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলাম, ঐ লোকটি কে? তারা বলল, চলুন, চলুন।

আমরা চললাম এবং একটা সজীব শ্যামল বাগানে উপনীত হলাম, যেখানে বসন্তের হরেক রকম ফুলের কলি রয়েছে। আর বাগানের মাঝে আসমানের থেকে অধিক উচু দীর্ঘকায় একজন পুরুষ রয়েছে যার মাথা যেন আমি দেখতেই পাচ্ছি না। এমনিভাবে তার চতুষ্পার্শ্বে এত বিপুল সংখ্যক বালক-বালিকা দেখলাম যে, এত বেশি আর কখনো আমি দেখিনি। আমি তাদেরকে বললাম, উনি কে? এরা কারা? তারা আমাকে বলল, চলুন, চলুন।

আমরা চললাম এবং একটা বিরাট বাগানে গিয়ে পৌছলাম। এমন বড় এবং সুন্দর বাগান আমি আর কখনো দেখিনি। তিনি বলেনঃ তারা আমাকে বলল, এর ওপরে চড়। আমরা ওপরে চড়লাম। শেষ পর্যন্ত সোনা-রুপার ইটের তৈরি একটি শহরে গিয়ে আমরা উপনীত হলাম। আমরা শহরের দরজায় পৌছলাম এবং দরজা খুলতে বললাম। আমাদের জন্য দরজা খুলে দেয়া হল, আমরা তাতে প্রবেশ করলাম। তখন তথায় আমাদের সাথে এমন কিছু লোক সাক্ষাৎ করল যাদের শরীরের অর্ধেক খুবই সুন্দর, যা তোমার দৃষ্টিতে সর্বাধিক সুন্দর মনে হয়। আর শরীরের অর্ধেক এমনই কুশ্রী ছিল যা তোমার দৃষ্টিতে সর্বাধিক কুশ্রী মনে হয়। তিনি বলেনঃ সাথীদ্বয় ওদেরকে বলল, যাও ঐ নদীতে গিয়ে নেমে পড়। আর সেটা ছিল সুপ্রশস্ত প্রবাহমান নদী, যার পানি ছিল দুধের মত সাদা। ওরা তাতে গিয়ে নেমে পড়ল। অতঃপর এরা আমাদের কাছে ফিরে এল, দেখা গেল তাদের এ কুশ্রীতা হয়ে গিয়েছে এবং তারা খুবই সুন্দর আকৃতির হয়ে গিয়েছে। তিনি বলেনঃ তারা আমাকে বলল, এটা জান্নাতে আদন এবং এটা আপনার বাসস্থান।

তিনি বলেনঃ আমি বেশ উপরের দিকে তাকালাম, দেখলাম ধবধবে সাদা মেঘের ন্যায় একটি প্রাসাদ রয়েছে। তিনি বলেনঃ তারা আমাকে বলল, এটা আপনার বাসগূহ। তিনি বলেনঃ আমি তাদেরকে বললাম, আল্লাহ তোমাদের মাঝে বরকত দিন! আমাকে ছেড়ে দাও। আমি এতে প্রবেশ করি। তারা বলল, আপনি অবশ্য এতে প্রবেশ করবেন। তবে এখন নয়। তিনি বলেন আমি এ রাতে অনেক বিস্ময়কর ব্যাপার দেখতে পেলাম- এগুলোর তাৎপর্য কি?

তারা আমাকে বলল- আচ্ছা! আমরা আপনাকে বলে দিচ্ছি। ঐ যে প্রথম ব্যাক্তিকে যার কাছে আপনি পৌছেছিলেন, যার মাথা পাথর দিয়ে চুর্ন-বিচুর্ণ করা হচ্ছিল, সে হল ঐ ব্যাক্তি যে কুরআন গ্রহন করে তা ছেড়ে দিয়েছে। আর ফরয সালাত (নামায/নামাজ) ছেড়ে ঘুমিয়ে থাকে।

আর ঐ ব্যাক্তি যার কাছে গিয়ে দেখেছেন যে, তার মুখের এক ভাগ মাথার পিছন দিক পর্যন্ত এমনিভাবে নাসারন্ধ্রে ও চোখ মাথার পিছন দিক পর্যন্ত চিরে ফেলা হচ্ছিল। সে হল ঐ ব্যাক্তি, যে সকালে আপন ঘর থেকে বের হয়ে এমন কোন মিথ্যা বলে যা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে।

আর এ সকল উলঙ্গ নারী-পুরুষ যারা চুলা সদৃশ গর্তের অভ্যন্তরে রয়েছে তারা হল ব্যাভিচারী ও ব্যাভিচারিনার দল।

আর ঐ ব্যাক্তি, যার কাছে পৌছে দেখেছিলেন যে, সে নদীতে সাতার কাটছে ও তার মুখে পাথর ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছিল সে হল সুদখোর।

আর ঐ কুশ্রী ব্যাক্তি, যে আগুনের কাছে ছিল এবং আগুন জ্বালাচ্ছিল আর সে এর চতূর্পার্শে দৌড়াচ্ছিল, সে হল জাহান্নামের দারোগা, মালিক ফেরেশতা।

আর ঐ দীর্ঘকায় ব্যাক্তি যিনি বাগানে ছিলেন, তিনি হলেন, ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) আর তার আশেপাশের বালক-বালিকারা হলো ঐসব শিশু, যারা ফিৎরাত (স্বভাবধর্মের) ওপর মৃত্যু বরন করেছে।

তিনি বলেনঃ তখন কিছু সংখ্যক মুসলমান জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! মুশরিকদের শিশু সন্তানরাও কি? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মুশরিকদের শিশু সন্তানরাও। আর ঐসব লোক যাদের অর্ধেকাংশ অতি সুন্দর ও অর্ধেকাংশ অতি কুশ্রী। তারা হল ঐ সম্প্রদায় যারা সৎ-অসৎ উভয় প্রকারের কাজ মিশ্রিতভাবে করেছে। আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৭২ | 6572 | ٦۵۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৭. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তোমরা সেই ফিতনা সম্পর্কে সতর্ক হও যা তোমাদের কেবল জালিমদের উপরই আপতিত হবে না। এবং যা নবী (সাঃ) ফিতনা সম্পর্কে সতর্ক করতেন।
৬৫৭২। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি আমার হাউযের পাশে আগমনকারী লোকদের অপেক্ষায় থাকব। তখন আমার সন্মুখ থেকে কতিপয় লোককে ধরে নিয়ে যাওয়া হবে। আমি বলব, এরা তো আমার উম্মাত। তখন বলা হবে, আপনি জানেন না, এরা (আপনার পথ ছেড়ে) পিছনে চলে গিয়েছিল। (বর্ণনাকারী) ইবনু আবূ মুলায়কা বলেন, হে আল্লাহ! পিছনে ফিরে যাওয়া কিংবা ফিতনায় পতিত হওয়া থেকে আমরা আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৭৩ | 6573 | ٦۵۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৭. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তোমরা সেই ফিতনা সম্পর্কে সতর্ক হও যা তোমাদের কেবল জালিমদের উপরই আপতিত হবে না। এবং যা নবী (সাঃ) ফিতনা সম্পর্কে সতর্ক করতেন।
৬৫৭৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি হাউযে কাওসারের নিকট তোমাদের আগেই উপস্থিত থাকব। তোমাদের থেকে কিছু লোককে আমার নিকট পেশ করা হবে। কিন্তু আমি যখন তাদের পান করাতে অগ্রসর হব, তখন তাদেরকে আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হবে। আমি বলবঃ হে রব! এরা তো আমার সাথী। তখন তিনি বলবেন, আপনার পর তারা নতূন কি ঘটিয়েছে তা আপনি জানেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৭৪ | 6574 | ٦۵۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৭. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তোমরা সেই ফিতনা সম্পর্কে সতর্ক হও যা তোমাদের কেবল জালিমদের উপরই আপতিত হবে না। এবং যা নবী (সাঃ) ফিতনা সম্পর্কে সতর্ক করতেন।
৬৫৭৪। ইয়াইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আমি হাউযের পাড়ে তোমাদের আগে উপস্থিত থাকব। যে সেখানে উপস্থিত হবে, সে সেখান থেকে পান করার সুযোগ পাবে। আর যে একবার সে হাউয থেকে পান করবে সে কখনই তৃষ্ণার্ত হবে না। অবশ্যই এমন কিছু দল আমার কাছে উপস্থিত হবে যাদেরকে আমি (আমার উম্মাত বলে) চিনতে পারব এবং তারাও আমাকে চিনতে পারবে। কিন্তু এর পরই তাদের ও আমার মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে দেওয়া হবে।

আবূ হাযিম (রহঃ) বলেন, আমি হাদীস বর্ণনা করছিলাম, এমতাবস্থায় নুমান ইবনু আবূ আয়াস আমার কাছ থেকে এ হাদীসটি শুনে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি সাহল থেকে হাদীসটি অনুরূপ শুনেছেন। আমি বললাম, হ্যাঁ। তখন সে বলল, আমি সাক্ষ্য প্রদান করছি যে আমি আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) কে এ হাদীসে অতিরিক্ত বলতে শুনেছি যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বলবেনঃ এরা তো আমারই অনুসারী। তখন বলা হবে, আপনি নিশ্চয়ই অবহিত নন যে আপনার পরে এরা দ্বীনের মধ্যে কি পরিবর্তন করেছে। এ শুনে আমি বলব, যারা আমার পরে পরিবর্তন করেছে, তারা দূর হোক, দূর হোক।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৭৫ | 6575 | ٦۵۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৮. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার পরে তোমরা এমন কিছু দেখতে পাবে, যা তোমরা পছন্দ করবে না। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা ধৈর্য ধারণ কর যতক্ষণ না হাউযের পাড়ে আমার সঙ্গে মিলিত হও
৬৫৭৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলেছেনঃ আমার পরে তোমরা অবশ্যই ব্যাক্তি স্বার্থকে প্রাধান্য দেওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করবে। এবং এমন কিছু বিষয় দেখতে পাবে, যা তোমরা পছন্দ করবে না। তারা জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাহলে আমাদের জন্য কি হুকুম করছেন? উত্তরে তিনি বললেনঃ তাদের হক পরিপূর্নরূপে আদায় করবে, আর তোমাদের প্রাপ্য আল্লাহর কাছে চাইবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৭৬ | 6576 | ٦۵۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৮. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার পরে তোমরা এমন কিছু দেখতে পাবে, যা তোমরা পছন্দ করবে না। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা ধৈর্য ধারণ কর যতক্ষণ না হাউযের পাড়ে আমার সঙ্গে মিলিত হও
৬৫৭৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ যদি আমীরের কোন কিছু অপছন্দ করে, তাহলে সে যেন ধৈর্য ধারণ করে। কেননা, যে ব্যাক্তি সুলতানের আনুগত্য থেকে এক বিঘত পরিমাণও সরে যাবে, তার মৃত্যু হবে জাহিলি যুগের মৃত্যুর ন্যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৭৭ | 6577 | ٦۵۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৮. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার পরে তোমরা এমন কিছু দেখতে পাবে, যা তোমরা পছন্দ করবে না। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা ধৈর্য ধারণ কর যতক্ষণ না হাউযের পাড়ে আমার সঙ্গে মিলিত হও
৬৫৭৭। আবূ নুমান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি স্বীয় আমীরের নিকট থেকে অপছন্দনীয় কিছু দেখবে সে যেন এতে ধৈর্য ধারণ করে। কেননা, যে ব্যাক্তি জামাআত থেকে এক বিঘত পরিমাণ বিচ্ছিন্ন হয়ে মরবে তার মৃত্যু হবে অবশ্যই জাহেলী মৃত্যুর ন্যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৭৮ | 6578 | ٦۵۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৮. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার পরে তোমরা এমন কিছু দেখতে পাবে, যা তোমরা পছন্দ করবে না। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা ধৈর্য ধারণ কর যতক্ষণ না হাউযের পাড়ে আমার সঙ্গে মিলিত হও
৬৫৭৮। ইসমাঈল (রহঃ) … জুনাদা ইবনু আবূ উমাইয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন তিনি অসুস্থ ছিলান। আমরা বললাম, আল্লাহ আপনাকে সুস্থ করে দিন। আপনি আমাদের এরূপ একটি হাদীস বর্ণনা করুন, যা আপনাকে উপকৃত করবে এবং যা আপনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন। তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের আহবান করলেন। আমরা তার কাছে বায়আত করলাম। এরপর তিনি (উবাদা) বললেন, আমাদের থেকে যে অঙ্গীকার তিনি গ্রহণ করেছিলেন তাতে ছিল যে, আমরা আমাদের সুখে-দুঃখে, বেদনায় ও আনন্দে এবং আমাদের উপর অন্যকে অগ্রাধিকার দিলেও পূর্ণাঙ্গরূপে শোনা ও মানার উপর বায়আত করলাম। আরও (বায়আত করলাম) যে আমরা ক্ষমতা সংক্রান্ত বিষয়ে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সংঘর্যে লিপ্ত হব না। কিন্তু যদি এমন স্পষ্ট কুফ্‌রী দেখ, তোমাদের নিকট আল্লাহর পক্ষ থেকে যে বিষয়ে সুস্পষ্ট প্রমাণ বিদ্যমান, তবে ভিন্ন কথা।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৭৯ | 6579 | ٦۵۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৮. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার পরে তোমরা এমন কিছু দেখতে পাবে, যা তোমরা পছন্দ করবে না। আবদুল্লাহ ইবন যায়িদ (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা ধৈর্য ধারণ কর যতক্ষণ না হাউযের পাড়ে আমার সঙ্গে মিলিত হও
৬৫৭৯। মুহাম্মাদ ইবনু আরআরা (রহঃ) … উসায়দ ইবনু হুযাহার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি অমুক ব্যাক্তিকে প্রশাসক নিযুক্ত করলেন, অথচ আমাকে নিযুক্ত করলেন না। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ নিশ্চয়ই তোমরা আমার পর অগ্রাধিকারের প্রবণতা দেখবে। সে সময় তোমরা ধৈর্য ধারণ করবে- যতক্ষন না আমার সঙ্গে মিলিত হও।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৮০ | 6580 | ٦۵۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৯৭৯. নবী (সা) এর বাণীঃ কতিপয় নির্বোধ বালকের হাতে আমার উম্মত ধ্বংস হবে।
৬৫৮০। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আমর ইবনু ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ ইবনু আমর ইবনু সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার দাদা আমাকে জানিয়েছেন যে, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সাথে মদিনায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মসজিদে বসা ছিলাম। আমাদের সাথে মারওয়ানও ছিল। এ সময় আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেনঃ আমি আস-সা’দিকুল মাসদুক (সত্যবাদী ও সত্যবাদী হিসাবে স্বীকৃত) কে বলতে শুনেছি আমার উম্মাতের ধ্বংস কুরাইশের কতিপয় বালকের হাতে হবে। তখন মারওয়ান বলল, এ সকল বালকের প্রতি আল্লাহর ‘লানত, বর্ষিত হোক। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেনঃ আমি যদি বলার ইচ্ছা করি যে তারা অমুক অমুক গোত্রের লোক তাহলে বলতে সক্ষম।

আমর ইবনু ইয়াহইয়া বলেন, মারওয়ান যখন সিরিয়ায় ক্ষমতাসীন হল, তখন আমি আমার দাদার সঙ্গে তাদের সেখানে গেলাম। তিনি যখন তাদের অল্প বয়ষ্ক বালক দেখতে পেলেন তখন তিনি আমাদের বললেনঃ সম্ভবত এরা সেই দলেরই অন্তর্ভুক্ত। আমরা বললাম, এ বিষয়ে আপনই ভাল বোঝেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৮১ | 6581 | ٦۵۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৯৮০. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আরবরা অত্যাসন্ন এক দূর্যোগে হালাক হয়ে যাবে।
৬৫৮১। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … যায়নাব বিরত জাহাশ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রক্তবর্ণ চেহারা নিয়ে নিদ্রা থেকে জাগলেন এবং বলতে লাগলেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ! আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। অত্যাসন্ন এক দুর্যোগে আরব ধ্বংস হয়ে যাবে। ইয়াজুজ-মাজুজের (প্রতিরোধ) প্রাচীর আজ এতটুকু পরিমাণ খুলে গেছে। সুফিয়ান নব্বই কিংবা একশতের রেখায় আঙ্গুল রেখে গিট বানিয়ে পরিমাণটুকু দেখালেন। জিজ্ঞাসা করা হল, আমরা কি ধ্বংস হয়ে যাব অথচ আমাদের মধ্যে নেককার লোকও থাকবে? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ, যখন পাপাচার বৃদ্ধি পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৮২ | 6582 | ٦۵۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৯৮০. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আরবরা অত্যাসন্ন এক দূর্যোগে হালাক হয়ে যাবে।
৬৫৮২। আবু নুআয়ম (রহঃ) ও মাহমুদ (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনার টিলাসমুহের একটির উপর উঠে বললেনঃ আমি যা দেখি তোমরা কি তা দেখতে পাও? উত্তরে সাহাবা-ই-কিরাম বললেন, না। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ নিঃসন্দেহে আমি দেখতে পাচ্ছি, তোমাদের ঘরগুলোর ফাঁকে ফাঁকে ফিতনা বৃষ্টিধারার মতো নিপতিত হচ্ছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৮৩ | 6583 | ٦۵۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৯৮১. ফিতনার প্রকাশ
৬৫৮৩। আইয়্যাস ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সময় নিকটবর্তী হতে থাকবে, আর আমল হ্রাস পেতে থাকবে, কার্পণ্য ছড়িয়ে দেওয়া হবে, ফিতনার বিকাশ ঘটরে এবং হারজ (هرج) ব্যাপকতর হবে। সাহাবা-ই-কিরাম জিজ্ঞাসা করলেন, সেটা (هرج) কি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হত্যা, হত্যা। শুআয়ব, ইউনুস, লাইস এবং যুহরীর ভ্রাতুষ্পূত্র আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীসটি বর্ণিত আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৮৪ | 6584 | ٦۵۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৯৮১. ফিতনার প্রকাশ
৬৫৮৪। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … শাকিক থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ও আবূ মূসা (রাঃ) এর সাথে ছিলাম। তাঁরা বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অবশ্যই কিয়ামতের পূর্বে এমন একটি সময় আসবে যখন সর্বত্র মূর্খতা ছড়িয়ে পড়বে এবং তাতে ইল্‌ম উঠিয়ে নেওযা হবে। সে সময় ‘হারজ’ ব্যাপকতর হবে। আর ‘হারজ’ হল (মানুষ) হত্যা।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৮৫ | 6585 | ٦۵۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৯৮১. ফিতনার প্রকাশ
৬৫৮৫। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের পুর্বে এমন একটি সময় আসবে ইল্‌ম উঠিয়ে নেওয়া হবে এবং সর্বত্র মূর্খতা ছড়িয়ে পড়বে, আর তখন হারজ ব্যাপকতর হবে। ‘হারজ’ হলো হত্যা।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৮৬ | 6586 | ٦۵۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৯৮১. ফিতনার প্রকাশ
৬৫৮৬। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পূর্বোক্ত হাদীসের ন্যায় একটি হাদীস বর্ণনা করতে শুনেছি। আর হাবশী ভাষায় হারজ অর্থ (মানুষ) হত্যা।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৮৭ | 6587 | ٦۵۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৯৮১. ফিতনার প্রকাশ
৬৫৮৭। মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তার ব্যাপারে আমার ধারণা, তিনি হাদীসটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মারফূ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, কিয়ামতের পূর্বে হারজ অর্থাৎ হত্যার যুগ শুরু হবে। তখন ইল্‌ম বিলুপ্ত হয়ে যাবে এবং মূর্খতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। আবূ মূসা (রাঃ) বলেনঃ হাবশী ভাষায় হারজ অর্থ (মানুষ) হত্যা।।

আবূ আওয়ানা তাঁর বর্ননা সুত্রে আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন যে, তিনি আবদুল্লাহকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে যুগকে ‘হারজ’ এর যুগ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন সে যুগ সম্পর্কে আপনি কিছু জানেন কি? এর উত্তরে তিনি পূর্বোক্ত হাদীসটি বর্ণনা করেন। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামত যাদের জীবদ্দশায় কায়েম হবে তারাই সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোক।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৮৮ | 6588 | ٦۵۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৯৮২. প্রতিটি যুগের চেয়ে পরবর্তী যুগ আরও নিকৃষ্টতর হবে।
৬৫৮৮। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … যুবায়র ইবনু আদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর নিকট গেলাম এবং হাজ্জাজের পক্ষ থেকে মানুষ যে নির্যাতন ভোগ করছে সে সম্পর্কে অভিযোগ পেশ করলাম। তিনি বললেনঃ ধৈর্য ধারণ কর। কেননা, মহান প্রতিপালকের সহিত মিলিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত (অর্থাৎ মৃত্যুর পুর্বে) তোমাদের উপর এমন কোন যুগ অতিবাহিত হবে না, যার পরবর্তী যুগ তার চেয়েও নিকৃষ্টতর নয়। তিনি বলেনঃ এ কথাটি আমি তোমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শ্রবণ করেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৮৯ | 6589 | ٦۵۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৯৮২. প্রতিটি যুগের চেয়ে পরবর্তী যুগ আরও নিকৃষ্টতর হবে।
৬৫৮৯। আবুল ইয়ামান (রহঃ) ও ইসমাঈল (রহঃ) … নাবী-পত্নী উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন এক রাতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভীত অবস্থায় নিদ্রা থেকে জাগ্রত হয়ে বলতে লাগলেন, সুবহানাল্লাহ, আল্লাহ তাআলা কতই না খাযানা নাযিল করেছেন আর কতই না ফিতনা অবতীর্ণ হয়েছে। কে আছে যে হুজরাবাসিনীদেরকে জাগিয়ে দেবে যেন তারা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে। এ বলে তিনি তার স্ত্রীগণকে উদ্দেশ্য করেছিলেন। তিনি আরও বললেনঃ দুনিয়ার মধ্যে বহু বস্ত্র পরিহিতা পরকালে বিবস্ত্রা থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৯০ | 6590 | ٦۵۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৩. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ যে ব্যক্তি আমাদের উপর অস্ত্র উত্তোলন করবে সে আমাদের দলভূক্ত নয়
৬৫৯০। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আমাদের উপর অস্ত্র উত্তোলন করবে সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৯১ | 6591 | ٦۵۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৩. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ যে ব্যক্তি আমাদের উপর অস্ত্র উত্তোলন করবে সে আমাদের দলভূক্ত নয়
৬৫৯১। মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আমাদের উপর অস্ত্র উত্তোলন করবে সে আমাদের দলভুক্ত নয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৯২ | 6592 | ٦۵۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৩. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ যে ব্যক্তি আমাদের উপর অস্ত্র উত্তোলন করবে সে আমাদের দলভূক্ত নয়
৬৫৯২। মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যেন তার অপর কোন ভাইয়ের প্রতি অস্ত্র উত্তোলন করে ইশারা না করে। কেননা সে জানে না হয়ত শয়তান তার হাতে ধাক্কা দিয়ে বসবে, ফলে (এক মুসলমানকে হত্যার অপরাধে) সে জাহান্নামের গর্তে নিপতিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৯৩ | 6593 | ٦۵۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৩. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ যে ব্যক্তি আমাদের উপর অস্ত্র উত্তোলন করবে সে আমাদের দলভূক্ত নয়
৬৫৯৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সুফিয়ান ইবনু উয়ায়না (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমরকে জিজ্ঞাসা করলাম, হে আবূ মুহাম্মাদ! আপনি কি জাবির ইবনু আবদুল্লাহকে বলতে শুনেছি যে, এক ব্যাক্তি মসজিদে কতক তীর নিয়ে যাচ্ছিল, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তীরের লৌহ ফলাগুলো মুষ্টিবদ্ধ করে রাখ। উত্তরে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৯৪ | 6594 | ٦۵۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৩. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ যে ব্যক্তি আমাদের উপর অস্ত্র উত্তোলন করবে সে আমাদের দলভূক্ত নয়
৬৫৯৪। আবূ নু’মান (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি কতক তীর নিয়ে মসজিদে এলো। সেগুলোর ফলা খোলা অবস্থায় ছিল। তখন তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়, যেন সে তার তীরের ফলাগুলো ধরে রাখে, যাতে কোন মুসলমানের গায়ে আঘাত না লাগে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৯৫ | 6595 | ٦۵۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৩. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ যে ব্যক্তি আমাদের উপর অস্ত্র উত্তোলন করবে সে আমাদের দলভূক্ত নয়
৬৫৯৫। মুহাম্মাদ ইবনু আ’লা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি তীর সঙ্গে নিয়ে আমাদের মসজিদে কিংবা বাজারে যায় তাহলে সে যেন তীরের ফলাগুলো ধরে রাখে, কিংবা তিনি বলেছিলেনঃ তাহলে সে যেন তা মুষ্টিবদ্ধ করে রাখে, যাতে সে তীর কোন মুসলমানের গায়ে লেগে না যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৯৬ | 6596 | ٦۵۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৪. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার পর তোমরা পরস্পরে হানাহানি করে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করো না
৬৫৯৬। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ কোন মুসলমানকে গালি দেওয়া ফাসিকী (জঘন্য পাপ) আর কোন মুসলমানকে হত্যা করা কুফরী।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৯৭ | 6597 | ٦۵۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৪. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার পর তোমরা পরস্পরে হানাহানি করে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করো না
৬৫৯৭। হাজ্জাজ ইরন মিনহাল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, আমার পর তোমরা পরস্পরে হানাহানি করে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৯৮ | 6598 | ٦۵۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৪. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার পর তোমরা পরস্পরে হানাহানি করে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করো না
৬৫৯৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, (একদা) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনতার উদেশে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমরা কি জানো না আজ কোন দিন? তারা বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই এ সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত। (বর্ণনাকারী বলেন) এতে আমরা মনে করলাম হয়ত তিনি অন্য কোন নামে এ দিনটির নামকরণ করবেন। এরপর তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ এটি কি ইয়াওমুন নাহর (কুরবানীর দিন) নয়? আমরা বললাম হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ। এরপর তিনি বললেনঃ এটি কোন নগর? এটি ‘হারাম নগর’ (সংরক্ষিত নগর) নয়? আমরা বললাম হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ নিঃসন্দেহ তোমাদের এ নগরে, এ মাসের এ দিনটি তোমাদের জন্য যেরূপ হারাম, তোমাদের (একের) রক্ত, সম্পদ, ইজ্জত ও চামড়া অপরের জন্য তেমনি হারাম।

শোন! আমি কি তোমাদের নিকট পৌছিয়েছি? আমরা বললাম, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ, তুমি সাক্ষী থাক।(অতঃপর বললেন) উপস্থিত ব্যাক্তি যেন (আমার বানী) অনুপস্থিতের নিকট পৌছিয়ে দেয়। কেননা অনেক প্রচারক এমন ব্যাক্তির নিকট (আমার বানী) পৌছাবে যারা তার চাইতে অধিক সংরক্ষণকারী হবে। বস্তুত ব্যাপারটি তাই। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমার পরে একে অপরের গর্দান মেরে কুফরীর দিকে ফিরে যেয়ো না।

যে দিন জারিয়্যাহ ইবনু কুদামা কর্তৃক আলা ইবনু হাযরামীকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়, সেদিন জারিয়্যাহ তার বাহিনীকে বলেছিল, আবূ বাকরার খবর নাও। তারা বলেছিল এই তো আবূ বাকরা (রাঃ) আপনাকে দেখছেন। আবদুর রহমান বলেন, আমার মা আমার কাছে বর্ণনা করেছেন। আবূ বাকরা (রাঃ) বলেছেন, (সেদিন) যদি তারা আমার গৃহে প্রবেশ করত, তাহলে আমি তাদেরকে একটি বাশের লাঠি নিক্ষেপ (প্রতিহত) করতাম না।

আবু আবদুল্লাহ বলেনঃ হাদীসে ব্যবহৃত بشهث শব্দের অর্থ رميت অর্থাৎ আমি নিক্ষেপ করেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৫৯৯ | 6599 | ٦۵۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৪. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার পর তোমরা পরস্পরে হানাহানি করে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করো না
৬৫৯৯। আহমাদ ইবনু ইশকাব (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার পরে তোমরা একে অপরের গর্দান মেরে কুফরীর দিকে ফিরে যেয়ো না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬০০ | 6600 | ٦٦۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৪. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার পর তোমরা পরস্পরে হানাহানি করে কুফরীর দিকে প্রত্যাবর্তন করো না
৬৬০০। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … জারীর (রহঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন যে, বিদায় হাজ্জে (হজ্জ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ লোকদেরকে নীরব হতে বল। তারপর তিনি বললেনঃ আমার পরে তোমরা একে অপরের গর্দান মেরে কুফরীর দিকে ফিরে যেয়ো না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬০১ | 6601 | ٦٦۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৫. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ ফিতনা ব্যাপক হারে হবে, তাতে দাঁড়ানো ব্যক্তির চাইতে উপবিষ্ট ব্যক্তি উত্তম হবে
৬৬০১। মুহাম্মদ ইবনু উবায়দুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অচিরেই অনেক ফিতনা দেখা দেবে। তখন উপবিষ্ট ব্যাক্তি দাঁড়ানো ব্যাক্তির চাইতে উত্তম। দাঁড়ানো ব্যাক্তি পদাচারী ব্যাক্তির চাইতে উত্তম। পদাচারী ব্যাক্তি ধাবমান ব্যাক্তির চাইতে উত্তম হবে। যে ব্যাক্তি ফিতনার দিকে তাকাবে ফিতনা তাকে পেয়ে বসবে। তখন কেউ যদি কোন আশ্রয়স্থল কিংবা নিরাপদ জায়গা পায়, তাহলে সে যেন তথায় আত্নরক্ষা করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬০২ | 6602 | ٦٦۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৫. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ ফিতনা ব্যাপক হারে হবে, তাতে দাঁড়ানো ব্যক্তির চাইতে উপবিষ্ট ব্যক্তি উত্তম হবে
৬৬০২। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অচিরেই ফিতনা দেখা দেবে। তখন উপবিষ্ট ব্যাক্তি-দাঁড়ানো ব্যাক্তির তুলনায় ভাল (ফিতনামুক্ত) থাকবে, দাঁড়ানো ব্যাক্তি চলমান ব্যাক্তির তুলনায় ভাল থাকবে, চলমান ব্যাক্তি ধাবমান ব্যাক্তির তুলনায় ভাল থাকবে। যে ব্যাক্তি সে ফিতনার দিকে তাকাবে, ফিতনা তাকে পেয়ে বসবে। সুতরাং তখন কেউ যদি (কোথাও) কোন নিরাপদ আশ্রয়স্থল কিংবা আত্নরক্ষার ঠিকানা পায়, তাহলে সে যেন সেখানে আশ্রয় নেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬০৩ | 6603 | ٦٦۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৬. দু’জন মুসলিম তরবারী নিয়ে পরস্পরে মারমুখী হলে
৬৬০৩। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহাব (রহঃ) … হাসান বসরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন ফিতনা কবলিত রজনীতে (অর্থাৎ জঙ্গে জামাল কিংবা জঙ্গে সিফফীনে) আমি হাতিয়ার নিয়ে বের হলাম। হঠাৎ আবূ বাকরা (রাঃ) আমার সামনে পড়লেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কোথায় যাচ্ছ? আমি বললাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চাচাত ভাইয়ের সাহায্যার্থে যাচ্ছি। তখন তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি দু’জন মুসলিম তরবারী নিয়ে পরস্পর সংঘর্যের জন্য মুখোমুখী হয়, তাহলে উভয়েই জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, হত্যাকারী তো জাহান্নামী। কিন্তু নিহত ব্যাক্তির কি অপরাধ? তিনি বললেনঃ সেও তার প্রতিপক্ষকে হত্যা করার সংকল্প করেছিল।

বর্ণনাকারী হাম্মাদ ইবনু যায়িদ বলেন, আমি এ হাদীসটি আইউব ও ইউনুস ইবনু আবদুল্লাহর কাছে পেশ করলাম। আমি চাচ্ছিলাম তাঁরা এ হাদীসটি আমাকে বর্ণনা করবেন। তারা বললেন, এ হাদীসটি হাসান বসরী (রহঃ) আহনাফ ইবনু কায়সের মধ্যস্থতায় আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬০৪ | 6604 | ٦٦۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৬. দু’জন মুসলিম তরবারী নিয়ে পরস্পরে মারমুখী হলে
৬৬০৪। সুলায়মান ইবনু হারব ও মুআম্মাল (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। এ ছাড়া মা’মার আইউব থেকে এটি বর্ণনা করেছেন। বাক্কার ইবনু আবদুল আযীয স্বীয় পিতার মধ্যস্থতায় আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে এটি বর্ননা করেছেন এবং গুনদারও আবূ বাকরা (রাঃ) এর বর্ণনায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তবে সুফিয়ান সাওরী (রহঃ) মানসুর থেকে (পূর্বোক্ত সনদে হাদীসটি বর্ননা করার সময়) মারফূ’ রূপে উল্লেখ করেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬০৫ | 6605 | ٦٦۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৭. যথন জমাআত (মুসলমানরা সংঘবদ্ধ) থাকবে না তখন কি করতে হবে
৬৬০৫। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … হুযায়ফা ইবনু ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকেরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কল্যাণের বিষয়াদি জিজ্ঞাসা করত। কিন্তু আমি তাকে অকল্যাণের বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতাম এ ভয়ে যে, অকল্যাণ আমাকে পেয়ে না বসে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা তো জাহিলিয়্যতেও অকল্যাণের মাঝে ছিলাম। এরপর আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে এ কল্যাণের মধ্যে নিয়ে আসলেন। এ কল্যাণের পর আবারও কি অকল্যাণ আসবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সে অকল্যাণের পর আবার কি কোন কল্যাণ আসবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তবে এর মধ্যে কিছুটা ধূম্রাচ্ছন্নতা থাকবে। আমি প্রশ্ন করলাম এর ধূম্রাচ্ছন্নতাটা কিরূপ? তিনি বললেনঃ এক জামাআত আমার তরীকা ছেড়ে অন্য পথ অবলম্বন করবে। তাদের থেকে ভাল কাজও দেখবে এবং মন্দ কাজও দেখবে।

আমি জিজ্ঞাসা করলাম, সে কল্যাণের পর কি আবার অকল্যাণ আসবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। জাহান্নামের প্রতি আহবানকারী এক সম্প্রদায় হবে। যে ব্যাক্তি তাদের আহবানে সাড়া দেবে, তাকে তারা জাহান্নামে নিক্ষেপ করে ছাড়বে। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাদের কিছু বৈশিষ্ট্যের কথা আমাদের বর্ণনা করুন। তিনি বললেনঃ তারা আমাদের লোকই এবং আমাদের ভাষায়ই কথা বলবে। আমি বললাম, যদি এরূপ পরিস্থিতি আমাকে পেয়ে বসে, তাহলে কি করতে নির্দেশ দেন? তিনি বললেনঃ মুসলিমদের জামাআত ও ইমামকে আকড়ে থাকবে। আমি বললাম, যদি তখন মুসলমানদের কোন (সংঘবদ্ধ) জামাআত ও ইমাম না থাকে? তিনি বললেনঃ তখন সকল দলমত পরিত্যাগ করে সম্ভব হলে কোন গাছের শিকড় কামড়িয়ে পড়ে থাকবে, যতক্ষন না সে অবস্থায় তোমার মৃত্যু উপস্থিত হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬০৬ | 6606 | ٦٦۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৮. যে ফিত্‌নাবাজ ও জালিমদের দল ভারী করাকে অপছন্দনীয় মনে করে
৬৬০৬। আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ ও লাইস (রহঃ) … আবুল আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, একবার মদিনাবাসীদের উপর একটি যোদ্ধাদল প্রস্তুতের সিদ্ধান্ত হল। আমার নামও সে দলের অন্তর্ভুক্ত করা হল। এরপর ইকরামা (রহঃ) এর সঙ্গে দেখা হলে আমি তাকে এ সংবাদ জানালাম। তিনি আমাকে কঠোরভাবে নিষেধ করলেন এবং বললেন, আমাকে ইবনু আব্বাস (রাঃ) অবগত করেছেন যে, মুসলিমদের কতিপয় লোক মুশরিকদের সাথে ছিল। এতে তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুকাবিলায় মুশরিকদের দল ভারী করছিল। তখন কোন তীর আসত যা নিক্ষিপ্ত হত এবং তাদের কাউকে আঘাত করে এটি তাকে হত্যা করত। অথবা কেউ তাকে তরবারীর আঘাতে হত্যা করত। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা আয়াত অবতীর্ণ করলেনঃ যারা নিজেদের উপর যুলুম করে তাদের প্রাণ গ্রহণের সময় ফেরেশতারা বলে …… (৪ঃ ৯৭)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬০৭ | 6607 | ٦٦۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৯৮৯. যখন মানুষের আবর্জনা (নিকৃষ্ট) অবশিষ্ট থাকবে
৬৬০৭। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দুটি হাদীস বর্ণনা করেছিলেন, যার একটি আমি দেখেছি (বাস্তবায়িত হয়েছে) আর অপরটির অপেক্ষায় আছি। তিনি আমাদের বলেন, আমানত মানুষের অন্তর্মুলে প্রবিষ্ট হয়। এরপর তারা কুরআন শিখে, তারপর তারা সুন্নাহর জ্ঞান অর্জন করে। তিনি আমাদের আমানত বিলুপ্ত সম্পর্কেও বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, মানুষ এক সময় ঘুমাবে। তার অন্তর থেকে আমানত উঠিয়ে নেওয়া হবে। তখন একটি বিন্দুর ন্যায় চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে। এরপর সে আবার ঘুমাবে। তারপর আবার তুলে নেওয়া হবে, তখন ফোসকার ন্যায় তার চিহ্ন অবশিষ্ট থাকবে। যেমন একটা জ্বলন্ত অঙ্গারকে যদি তুমি পায়ের উপর রেখে দাও এতে পায়ে ফোসকা পড়ে, তখন তুমি সেটাকে ফোলা দেখবে। অথচ তার মধ্যে কিছুই নেই।

(এ সময়) মানুষ বেচাকেনা করবে বটে কিন্তু কেউ আমানত আদায় করবে না। তখন বলা হবে, অমুক গোত্রে একজন আমানতদার ব্যাক্তি আছেন। কোন কোন লোক সম্পর্কে বলা হবে যে, লোকটি কতই না বুদ্ধিমান, কতই না বিচক্ষণ, কতই না বীর, অথচ তার অন্তরে সরিষার দানা পরিমাণ ঈমান নেই। এরপর হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, আমার উপর দিয়ে এমন একটি যুগ অতিবাহিত হয়েছে তখন আমি তোমাদের কার সাথে লেনদেন করছি এ সম্পর্কে মোটেও চিন্তা-ভাবনা করতাম না। কেননা, সে যদি মুসলিম হয় তাহলে তার দ্বীনই (হক আদায়ের জন্য) তাকে আমার কাছে ফিরিয়ে আনবে। আর যদি সে খৃষ্টান হয়, তাহলে তার অভিভাবকরাই (হক আদায়ের জন্য) তাকে আমার কাছে ফিরে আসতে বাধ্য করবে। কিন্তু বর্তমানে আমি অমুক অমুককে ছাড়া কারো সঙ্গে বেচাকেনা করব না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬০৮ | 6608 | ٦٦۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৯৯০. ফিতনার সময়ে বেদুঈন সুলভ জীবনযাপন করা বাঞ্ছনীয়
৬৬০৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … সালমা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার হাজ্জাজ আমার কাছে এলেন। তখন সে তাঁকে বলল, হে ইবনু আকওয়া! আপনি সাবেক অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করলেন না কি- যে বেদুঈন সুলভ জীবন যাপন করতে শুরু করেছেন? তিনি বললেন, না। বরং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বেদুঈন সুলভ জীবন যাপনের অনুমতি প্রদান করেছেন।

ইয়াযীদ ইবনু আবূ উবায়দুল্লাহ বর্ণনা করেন যে, যখন উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) নিহত হলেন, তখন সালমা ইবনু আকওয়া (রাঃ) ‘রাবাযা’য় চলে যান এবং সেখানে তিনি এক মহিলাকে বিয়ে করেন। সে মহিলার ঘরে তার কয়েকজন সন্তান জন্মলাভ করে। মৃত্যুর কয়েক দিন পূর্বে তিনি মদিনায় আগমন করেন। এর পূর্ব পর্যন্ত তিনি সেখানেই বসবাসরত ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬০৯ | 6609 | ٦٦۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৯৯০. ফিতনার সময়ে বেদুঈন সুলভ জীবনযাপন করা বাঞ্ছনীয়
৬৬০৯। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অদূর ভবিষ্যতে এমন এক সময় আসবে যখন মুসলমানদের সর্বোৎকৃষ্ট সম্পদ হবে ছাগল। ফিতনা থেকে দ্বীন রক্ষার্থে পলায়নের জন্য তারা এগুলো নিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় এবং বারিপাতের স্থানসমূহে গিয়ে আশ্রয় নেবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬১০ | 6610 | ٦٦۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৯৯১. ফিত্‌না থেকে আশ্রয় প্রার্থনা
৬৬১০। মু’আয ইবনু ফাযালা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, লোকেরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে প্রশ্ন করত। এমন কি প্রশ্ন করতে করতে তারা তাঁকে বিরক্ত করে তুলত। একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরে আরোহণ করলেন এবং বললেনঃ তোমরা (আজ) আমাকে যাই প্রশ্ন করবে, আমি তারই উত্তর প্রদান করব। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি ডানে বামে তাকাচ্ছিলাম। দেখতে পেলাম প্রত্যেকেই আপন বস্ত্রে মাথা গুজে কাঁদছে। তখন এমন এক ব্যাক্তি পারস্পরিক বাকবিতণ্ডার সময় যাকে অন্য এক ব্যাক্তির (যে প্রকৃতপক্ষে তার পিতা নয়) সন্তান বলে সন্মোধন করাতে উঠে জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর নাবী! আমার পিতা কে? তিনি বললেনঃ হুযাফা তোমার পিতা।

এরপর উমর (রাঃ) সম্মুখে এলেন আর বললেনঃ আমরা রব হিসেবে আল্লাহকে, দ্বীন হিসাবে ইসলামকে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে রাসুল হিসেবে মেনে পরিতূষ্ট। ফিতনার অনিষ্ট থেকে আমরা আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আজকের মত এত উত্তম বস্তু এবং এত খারাপ বস্তু আমি আর কখনো প্রত্যক্ষ করিনি। আমার সম্মুখে জান্নাত ও জাহান্নাম পেশ করা হয়েছে। এমনকি আমি সে দুটোকে এ দেয়ালের পাশেই দেখতে পাচ্ছিলাম। কাতাদা বলেন, উপরে বর্ণিত হাদীসটি নিন্নোক্ত আয়াত প্রসঙ্গে বলে উল্লেখ করা হয়। ইরশাদ হলোঃ হে যারা ঈমান এনেছ, তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে। (৫ঃ ১০১)।

আব্বাস নারসী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে পূর্বোক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। তবে এ সুত্রে আনাস (রাঃ) كُلُّ رَجُلٍ رَأْسُهُ فِي ثَوْبِهِ يَبْكِي এর স্থলে كُلُّ رَجُلٍ لاف رَأْسُهُ فِي ثَوْبِهِ يَبْكِي (প্রত্যেক ব্যক্তি তার মাথায় কাপড় দিয়ে আচ্ছাদিত করে কাঁদছিল) বলে উল্লেখ করেছেন। এবং نَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ سُوءِ الْفِتَنِ এর স্থলে عَائِذًا بِاللَّهِ مِنْ سُوءِ الْفِتَنِ অথবা أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنْ سُوءِ الْفِتَنِ‏ উল্লেখ করেছেন।

ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, খালীফা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) এর বর্ণনায় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে পূর্বোক্ত হাদিসটি বর্ণনা করেছেন। এ সুত্রে তিনি عَائِذًا بِاللَّهِ مِنْ شَرِّ الْفِتَنِ বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬১১ | 6611 | ٦٦۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৯৯২. নবী (সাঃ) এর বাণী ফিতনা পূর্ব দিক থেকে শুরু হবে
৬৬১১। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … সালিমের পিতা আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে, একদা তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মিম্বরের পাশে দণ্ডায়মান হয়ে বলেছেনঃ ফিতনা এ দিকে, ফিতনা সে দিকে যেখান থেকে শয়তানের শিং উদিত হবে। কিংবা বলেছিলেনঃ সূর্যের মাথা উদিত হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬১২ | 6612 | ٦٦۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৯৯২. নবী (সাঃ) এর বাণী ফিতনা পূর্ব দিক থেকে শুরু হবে
৬৬১২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পূর্ব দিকে মুখ করে বলতে শুনেছেন, সাবধান! ফিতনা সে দিকে যে দিক থেকে শয়তানের শিং উদিত হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬১৩ | 6613 | ٦٦۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৯৯২. নবী (সাঃ) এর বাণী ফিতনা পূর্ব দিক থেকে শুরু হবে
৬৬১৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলোচনা করছিলেন। এক পর্যায়ে তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আমাদের জন্য আমাদের সিরিয়ায় বরকত দাও। হে আল্লাহ! আমাদের জন্য আমাদের ইয়ামানে বরকত দাও। লোকেরা বলল, আমাদের নজদেও। তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আমাদের জন্য আমাদের সিরিয়ায় বরকত দাও। হে আল্লাহ আমাদের জন্য বরকত দাও আমাদের ইয়ামানে। লোকেরা বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের নজদেও। (বর্ণনাকারী বলেন) আমার মনে হয়, তৃতীয়বারে তিনি বললেনঃ সেখানে তো কেবল ভূমিকস্প আর ফিতনা। আর তথা হতে শয়তানের শিং উদিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬১৪ | 6614 | ٦٦۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৯৯২. নবী (সাঃ) এর বাণী ফিতনা পূর্ব দিক থেকে শুরু হবে
৬৬১৪। ইসহাক আল ওয়াসেতী (রহঃ) … সাঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) আমাদের নিকট আসলেন। আমরা আশা করছিলাম যে, তিনি আমাদের একটি উত্তম হাদীস বর্ণনা করবেন। এক ব্যাক্তি তার দিকে আমাদের চেয়ে অগ্রসর হয়ে বলল, হে আবূ আবদুর রহমান! ফিতনার সময় যুদ্ধ করা সম্পর্কে আমাদের কিছু বলুন। কেননা, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেনঃ তাদের সাথে যুদ্ধ কর, যাবত ফিতনার অবসান ঘটে। তখন তিনি বললেনঃ তোমার মা তোমার জন্য বিলাপ করুক। ফিতনা কাকে বলে জানো কি? মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো যুদ্ধ করতেন মুশরিকদের বিরুদ্ধে। কেননা, তাদের শিরকের মধ্যে থাকাটাই মুলত ফিতনা। কিন্তু তা তোমাদের রাজ্য নিয়ে লড়াইর মতো ছিল না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬১৫ | 6615 | ٦٦۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৩. সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় ফিত্‌না তরঙ্গায়িত। ইব্‌ন উয়ায়না (রহঃ) খালফ্‌ ইব্‌ন হাওশাব (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, পূর্ববর্তী লোকেরা নিম্নোক্ত কবিতার দ্বারা ফিত্‌নার উপমা পেশ করতে পছন্দ করতেন। যুদ্ধের প্রাথমিক অবস্থা যুবতীর মত, যে তার রূপ-লাবণ্য দিয়ে অপরিণামদর্শীর উদ্দেশ্যে ছুটাছুটি করে। কিন্তু যখন যুদ্ধের দাবানল দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে এবং তার ফুল্‌কিগুলো হয় পূর্ব যৌবনা, তখন সে বৃদ্ধা বিধবার ন্যায় পালিয়ে যায়, যার চুল অধিকাংশই সাদা হয়ে গেঠে, রঙ হয়ে গেছে ফিকে ও পরিবর্তিত, যার ঘ্রাণ নিতে ও চুমু খেতে ঘৃণা লাগে
৬৬১৫। উমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াস (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে তিনি বলেন, এক সময় আমরা উমর (রাঃ) এর নিকট বসা ছিলাম। হঠাৎ তিনি বললেন, ফিতনা সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বক্তব্য তোমাদের মধ্যে কে স্মরণ রেখেছে? হুযায়ফা (রাঃ) বললেন, (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন) মানুষ নিজের পরিবার, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি ও প্রতিবেশী সংক্রান্ত ব্যাপারে যে ফিতনায় নিপতিত হয় সালাত (নামায/নামাজ), সাদাকা, সৎকাজের আদেশ, অসৎ কাজের নিষেধ তার সে পাপকে মোচন করে দেয়। তিনি বললেন, আমি তোমাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করিনি এবং সে ফিতনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছি যা সাগর লহরীর মত ঢেউ খেলবে।

হুযায়ফা (রাঃ) বললেনঃ হে আমীরুল মুমিনীন! সে ফিতনায় আপনার কোন অসুবিধা হবে না। কেননা, সে ফিতনা ও আপনার মাঝে একটি বন্ধ দরজা রয়েছে। উমর (রাঃ) বললেন, দরজাটি কি ভেঙ্গে ফেলা হবে, না খুলে দেওয়া হবে? তিনি বললেন, না বরং ভেঙ্গে ফেলা হবে। উমর (রাঃ) বললেনঃ তা হলে তো সেটা আর কখনো বন্ধ করা যাবে না। (হুযায়ফা বলেন) আমি বললাম, হ্যাঁ। (আকীক বলেন) আমরা হুযায়ফা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, উমর (রাঃ) কি দরজাটি সম্পর্কে জানতেন? উত্তরে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। যেরুপ আমি সুনিশ্চিতভাবে জানি যে আগামী দিনের পর রাত আসবে। কেননা আমি তাকে এরূপ একটি হাদীস বর্ননা করেছিলাম যা ভ্রান্তিমুক্ত।

(শাকীক বলেন) দরজাটি কে সে সম্পর্কে হুযায়ফা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করতে আমরা ভয় পাচ্ছিলাম, তাই আমরা মাসরুককে জিজ্ঞাসা করতে বললাম। তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, দরজাটি কে? উত্তরে তিনি বললেনঃ উমর (রাঃ) (নিজেই)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬১৬ | 6616 | ٦٦۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৩. সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় ফিত্‌না তরঙ্গায়িত। ইব্‌ন উয়ায়না (রহঃ) খালফ্‌ ইব্‌ন হাওশাব (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, পূর্ববর্তী লোকেরা নিম্নোক্ত কবিতার দ্বারা ফিত্‌নার উপমা পেশ করতে পছন্দ করতেন। যুদ্ধের প্রাথমিক অবস্থা যুবতীর মত, যে তার রূপ-লাবণ্য দিয়ে অপরিণামদর্শীর উদ্দেশ্যে ছুটাছুটি করে। কিন্তু যখন যুদ্ধের দাবানল দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে এবং তার ফুল্‌কিগুলো হয় পূর্ব যৌবনা, তখন সে বৃদ্ধা বিধবার ন্যায় পালিয়ে যায়, যার চুল অধিকাংশই সাদা হয়ে গেঠে, রঙ হয়ে গেছে ফিকে ও পরিবর্তিত, যার ঘ্রাণ নিতে ও চুমু খেতে ঘৃণা লাগে
৬৬১৬। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রয়োজনবশত মদিনার (দেয়াল ঘেরা) বাগানসমূহের কোন একটি বাগানের উদ্দেশ্যে বের হলেন আমি তার পিছনে গেলাম। তিনি যখন বাগানে প্রবেশ করলেন আমি এর দরজায় বসে রইলাম এবং মনে মনে বললাম, অদ্য আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রহরীর কাজ আঞ্জাম দিব। অবশ্য তিনি আমাকে এর নির্দেশ দেননি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভিতরে গেলেন এবং স্বীয় প্রয়োজন সেরে নিলেন। এরপর একটি কূপের পোস্তার উপর বসে পড়লেন এবং হাঁটুর নিচের অংশের কাপড় তুলে নিয়ে উভয় পা কুপের মধ্যে ঝুলিয়ে দিলেন।

এমন সময় আবূ বকর (রাঃ) এসে তার নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। আমি বললাম, আপনি অপেক্ষা করুন, যতক্ষন না আমি আপনার জন্য অনুমতি নিয়ে আসছি। তিনি অপেক্ষা করলেন। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলাম এবং বললাম, হে আল্লাহর নাবী! আবূ বকর (রাঃ) আপনার কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইছেন। তিনি বললেনঃ তাকে আসার অনুমতি দাও এবং তাকে জান্নাতের শুভ সংবাদ দাও। আবু বকর (রাঃ) প্রবেশ করলেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ডান পার্শ্বে গিয়ে বসলেন। এরপর তিনিও হাঁটুর নিচের অংশ অনাবৃত করে উভয় পা কূপের মধ্যে ঝুলিয়ে দিলেন।

এরপর উমর (রাঃ) আসলেন। আমি বললাম, আপনি স্বস্থানে অপেক্ষা করুন। আমি আপনার জন্য অনুমতি নিয়ে আসি। (অনুমতি প্রার্থনা করলে) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাঁকে আসার অনুমতি দাও এবং জানাতের সুসংবাদ দাও। তিনি এসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাম দিকে বসলেন এবং তিনি নিচের অংশ অনাবৃত করে উভয় পা কূপের মধ্যে ঝুলিয়ে দিলেন। এতে কূপের পোস্তা পরিপূর্ণ হয়ে গেল এবং সেখানে বসার আর কোন স্থান অবশিষ্ট রইল না।

এরপর উসমান (রাঃ) আসলেন। আমি বললাম, আপনি স্বস্থানে অপেক্ষো করুন, যতক্ষন আমি আপনার জন্য অনুমতি নিয়ে না আসি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তাঁকে আসার অনুমতি দাও এবং তাকে বিপদাক্রান্ত হওয়াসহ জান্নাতের সুসংবাদ দাও। তিনি প্রবেশ করলেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে বসার কোন স্থান পেলেন না। ফলতঃ তিনি বিপরীত দিকে এসে তাদের মুখোমুখী হয়ে কুয়ার পাড়ে বসে গেলেন এবং হস্তদ্বয়ের নিচের অংশ অনাবৃত করে উভয় পা কুয়ার অভ্যন্তরে ঝুলিয়ে দিলেন। আমি তখন আমার অপর এক ভাই এর (আগমন) কামনা করছিলাম এবং আল্লাহর নিকট দোয়া করছিলাম যেন সে (এ মুহূর্তে) আগমন করে।

ইবনু মূসাইয়্যাব বলেন, আমি এ ঘটনার মর্মার্থ এভাবে গ্রহণ করেছি যে, তা হল তাদের তিনজনের কবরের নমুনা যা এখানে একসঙ্গে হয়েছে। আর উসমান (রাঃ)-র ভিন্ন স্থানে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬১৭ | 6617 | ٦٦۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৩. সমুদ্রের তরঙ্গের ন্যায় ফিত্‌না তরঙ্গায়িত। ইব্‌ন উয়ায়না (রহঃ) খালফ্‌ ইব্‌ন হাওশাব (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, পূর্ববর্তী লোকেরা নিম্নোক্ত কবিতার দ্বারা ফিত্‌নার উপমা পেশ করতে পছন্দ করতেন। যুদ্ধের প্রাথমিক অবস্থা যুবতীর মত, যে তার রূপ-লাবণ্য দিয়ে অপরিণামদর্শীর উদ্দেশ্যে ছুটাছুটি করে। কিন্তু যখন যুদ্ধের দাবানল দাউ দাউ করে জ্বলে উঠে এবং তার ফুল্‌কিগুলো হয় পূর্ব যৌবনা, তখন সে বৃদ্ধা বিধবার ন্যায় পালিয়ে যায়, যার চুল অধিকাংশই সাদা হয়ে গেঠে, রঙ হয়ে গেছে ফিকে ও পরিবর্তিত, যার ঘ্রাণ নিতে ও চুমু খেতে ঘৃণা লাগে
৬৬১৭। বিশর ইবনু খালিদ (রহঃ) … আবূ ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উসামা (রাঃ) কে বলা হল আপনি কি এ ব্যাপারে কিছু বলবেন না? তিনি বললেন, আমি এ ব্যাপারে বলেছি, তবে এমন পন্থায় নয় যে, আমি তোমার জন্য একটি দ্বার (ফিতনার) উন্মোচিত করব যাতে আমিই হব এর প্রথম উন্মোচনকারী এবং আমি এমন ব্যাক্তি নই যে, কোন লোক দুই ব্যাক্তির আমীর নিযুক্ত হওয়ার পর তার সম্পর্কে বলব, আপনি উত্তম। কেননা, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে (কিয়ামতের দিন) এক ব্যাক্তিকে নিয়ে আসা হবে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। এরপর তাকে গাঁধা দিয়ে চাকা ঘুরিয়ে যেমন গম পিষা হয়, সেরূপ পিষে ফেলা হবে। দোযখবাসীরা তার পাশে এসে সমবেত হবে এবং বলবে, হে অমুক! তুমিই কি আমাদের ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করতে না? তখন সে বলবে, হ্যাঁ, আমি ভাল কাজের আদেশ করতাম, তবে আমি নিজে তা করতাম না এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করতাম, তবে আমি নিজেই তা করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬১৮ | 6618 | ٦٦۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৪. পরিচ্ছেদ নাই
৬৬১৮। উসমান ইবনু হায়সাম (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একটি কথা দ্বারা আল্লাহ তা’আলা জঙ্গে জামাল (উষ্ট্রের যুদ্ধ) এর সময় আমাকে বড়ই উপকৃত করেছেন। (সে কথাটি হল) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যখন এ সংবাদ পৌছলে যে, পারস্যের লোকেরা কিসরার কন্যাকে তাদের শাসক নিযুক্ত করেছে তখন তিনি বললেনঃ সে জাতি কখনই সফলকাম হবে না যারা তাদের শাসনভার কোন রমনীর হাতে অর্পণ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬১৯ | 6619 | ٦٦۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৪. পরিচ্ছেদ নাই
৬৬১৯। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ মারিয়াম আবদুল্লাহ ইবনু যিয়াদ আসাদী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তালহা, যুবায়র ও আয়িশা (রাঃ) যখন বসরার দিকে গমন করলেন, তখন আলী (রাঃ) আম্মার ইবনু ইয়াসির ও হাসান ইবনু আলী (রাঃ) কে প্রেরণ করলেন। তাঁরা আমাদের কুফায় আগমন করলেন এবং (মসজিদের) মিম্বরে উপবেশন করলেন। হাসান ইবনু আলী (রাঃ) মিম্বরের সর্বোচ্চ ধাপে উপবিষ্ট ছিলেন, আর আম্মার (রাঃ) হাসান (রাঃ) এর নিচের ধাপে দণ্ডায়মান ছিলেন। আমরা এসে তার নিকট সমবেত হলাম। এ সময় আমি শোনলাম, আম্মার (রাঃ) বলছেন, আয়িশা (রাঃ) বসরা অভিমুখে রওনা হয়ে গেছেন। নিঃসন্দেহে তিনি দুনিয়া ও আখিরাতে তোমাদের (আমাদের) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পত্নী। কিন্তু আল্লাহ তাআলা এ কথা স্পষ্ট করে জেনে নেওয়ার জন্য তোমাদের পরীক্ষায় ফেলেছেন যে, তোমরা কি তাঁরই আনুগত্য কর, না তার অর্থাৎ আয়িশা (রাঃ) এর আনুগত্য কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬২০ | 6620 | ٦٦۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৪. পরিচ্ছেদ নাই
৬৬২০। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … আবূ ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আাম্মার (রাঃ) কুফার (মসজিদের) মিম্বরে দণ্ডায়মান হলেন এবং তিনি আয়িশা (রাঃ) ও তার সফরের কথা উল্লেখ করলেন। এরপর তিনি বললেন, তিনি [আয়িশা (রাঃ)] ইহলোক ও পরলোকে তোমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পত্নী। কিন্তু বর্তমানে তোমরা তাঁকে নিয়ে ভীষণ পরীক্ষার মুখোমুখী হয়েছ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬২১ | 6621 | ٦٦۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৪. পরিচ্ছেদ নাই
৬৬২১। বাদাল ইবনু মুহাব্বার (রহঃ) … আবূ ওয়ায়িল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আলী (রাঃ) যখন আম্মার (রাঃ) কে যুদ্ধে অংশ গ্রহনের আহবান জানাতে কুফাবাসীদের নিকট প্রেরণ করলেন, তখন আবূ মূসা ও আবূ মাসউদ (রাঃ) তার নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন, তোমার ইসলাম গ্রহণের পর থেকে আমাদের জানামতে বর্তমান বিষয়ে (যুদ্ধের জন্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করার বিষয়ে) দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করার চেয়ে অপছন্দনীয় কোন কাজ করতে আমরা তোমাকে দেখিনি। তখন আম্মার (রাঃ) বললেন, যখন থেকে আপনারা ইসলাম গ্রহণ করেছেন আমি আপনাদের কোন কাজ দেখিনি যা আমার কাছে অপছন্দনীয় বিবেচিত হয়েছে বর্তমানের এ কাজে দেরী করা ব্যতীত। তখন আবূ মাসউদ (রাঃ) তাদের দু’জনকেই একজোড়া করে পোশাক পরিধান করিয়ে দিলেন। এরপর সকলেই (কুফা) মসজিদের দিকে রওনা হলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬২২ | 6622 | ٦٦۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৪. পরিচ্ছেদ নাই
৬৬২২। আবদান (রহঃ) … শাকীক ইবনু সালমা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ মাসউদ (রাঃ) আবূ মূসা (রাঃ) ও আম্মার (রাঃ) এর কাছে বসা ছিলাম। তখন আবূ মাসউদ (রাঃ) বললেন, তুমি ব্যতীত তোমার সঙ্গীদের মাঝে এমন কেউ নেই, যার সম্পর্কে আমি ইচ্ছা করলে কিছু না কিছু বলতে না পারি। তবে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গ লাভ করার পর থেকে এ ব্যাপারে দ্রুত উদ্যোগী হওয়ার চাইতে আমার দৃষ্টিতে দূষনীয় কোন কাজ তোমার কাছ থেকে দেখিনি। তখন আাম্মার (রাঃ) বললেন, হে আবূ মাসউদ! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে তোমাদের সঙ্গ লাভ করার পর থেকে এ ব্যাপারে গড়িমসি করার চাইতে আমার দৃষ্টিতে অধিক দূষনীয় কোন কাজ তোমার থেকে এবং তোমার এ সঙ্গী থেকে দেখিনি। আবূ মাসউদ (রাঃ) ধনবান ব্যাক্তি ছিলেন। তিনি (তার চাকরকে) বললেন, হে বৎস! দু’জোড়া পোশাক নিয়ে এস। এরপর তিনি তার একটি আবূ মূসা (রাঃ) কে ও অপরটি আম্মার (রাঃ) কে দিলেন এবং বললেন, এগুলো পরিধান করে জুম আর নামাযে যাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬২৩ | 6623 | ٦٦۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৫. যখন আল্লাহ্ কোন সম্প্রদায় এর উপর আযাব নাযিল করেন
৬৬২৩। আবদুল্লাহ ইবনু উসমান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন আল্লাহ কোন কাওমের উপর আযাব নাযিল করেন তখন সেখানে বসবাসরত সকলের উপরই সেই আযাব নিপতিত হয়। অবশ্য পরে (কিয়ামতের দিন) প্রত্যেককে তার আমল অনুসারে উঠানো হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬২৪ | 6624 | ٦٦۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৬. হাসান ইবন আলী (রাঃ) সম্পর্কে রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর উক্তিঃ অবশ্যই আমার এই পৌত্র সরদার। আর সম্ভবত মহান আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর মাধ্যমে মুসলমানদের (বিবাদমান) দু’টি দলের মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টি করবেন
৬৬২৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … হাসান বসরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন হাসান ইবনু আলী (রাঃ) সেনাবাহিনী নিয়ে মুআবিয়া (রাঃ) এর মুকাবিলায় রওনা হলেন, তখন আমর ইবনু আস (রাঃ) মুআবিয়া (রাঃ) কে বললেন, আমি এরুপ এক সেনাবাহিনী দেখছি, যারা বিপক্ষকে না ফিরিয়ে পিছু হবে না। মুআবিয়া (রাঃ) বললেন, তাহলে মুসলমানদের সন্তান-সন্ততির তত্তাবধান কে করবে? আমর ইবনু আস (রাঃ) বললেন, আমি। এ সময় আবদুল্লাহ ইবনু আমির (রাঃ) ও আব্দুর রহমান ইবনু সামুরা (রাঃ) বললেন, আমরা তার সঙ্গে সাক্ষাত করব এবং তাকে সন্ধির কথা বলব।

হাসান বসরী (রহঃ) বলেনঃ আমি আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে শুনেছি, তিনি বলেন, একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভাষণ দিচ্ছিলেন। এমন সময় হাসান (রাঃ) আসলেন। তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে দেখে) বললেনঃ আমার এ পৌত্র সরদার আর সম্ভবত আল্লাহ-তা’আলা তার মাধ্যমে মুসলমানদের দু’টি (বিবদমান) দলের মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টি করবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬২৫ | 6625 | ٦٦۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৬. হাসান ইবন আলী (রাঃ) সম্পর্কে রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর উক্তিঃ অবশ্যই আমার এই পৌত্র সরদার। আর সম্ভবত মহান আল্লাহ্ তা’আলা তাঁর মাধ্যমে মুসলমানদের (বিবাদমান) দু’টি দলের মধ্যে সমঝোতা সৃষ্টি করবেন
৬৬২৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উসামা (রাঃ) এর গোলাম হারামালা (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, উসামা (রাঃ) আমাকে আলী (রাঃ) এর কাছে পাঠালেন। আর তিনি বলে দিলেন যে, সেখানে যাওয়ার পরই [আলী (রাঃ)] তোমাকে জিজ্ঞাসা করবেন যে, তোমার সঙ্গীকে (আমার সহযোগিতা থেকে) কিসে পিছনে (বিরত) রেখেছে? তুমি তাঁকে বলবে, তিনি আপনার কাছে এ কথা বলে পাঠিয়েছেন যে, যদি আপনি সিংহের মুখে পতিত হন, তবুও আমি আপনার সঙ্গে সেখানে থাকাকে ভাল মনে করব। তবে এ বিষয়টি (অর্থাৎ মূসলমানদের পরস্পরিক যুদ্ধ) আমি ভাল মনে করছি না। (হারামালা বলেন) তিনি [আলী (রাঃ)] আমাকে কিছুই দিলেন না। এরপর আমি হাসান, হুসাইন ও আবদুল্লাহ ইবনু জাফর (রাঃ) এর কাছে গেলাম। তাঁরা আমার বাহন (মাল দিয়ে) বোঝাই করে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬২৬ | 6626 | ٦٦۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৭. যখন কেউ কোন সম্প্রদায়ের কাছে কিছু বলে পরে বেরিয়ে এসে বিপরীত বলে
৬৬২৬। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, যখন মদিনার লোকেরা ইয়াযীদ ইবনু মুআবিয়া (রাঃ) এর বায়আত ভঙ্গ করল, তখন ইবনু উমর (রাঃ) তার বিশেষ ভক্তবৃন্দ ও সন্তানদের সমবেত করলেন এবং বললেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্য একটি করে ঝাণ্ডা (পতাকা) উত্তোলন করা হবে। আর আমরা এ লোকটির (ইয়াযীদের) প্রতি আল্লাহ ও তার রাসুলের বর্ণিত শর্তানুযায়ী বায়আত গ্রহণ করেছি। বস্তুত কোন একজন লোকের প্রতি আল্লাহ ও তার রাসুলের বর্ণিত শর্তানুযারী বায়আত গ্রহণ করার পর তার বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণের চেয়ে বড় কোন বিশ্বাসঘাতকতা আছে বলে আমি জানিনা। আমি যেন কারো সম্পর্কে ইয়াযীদের বায়আত ভঙ্গ করেছে, কিংবা সে আনুগত্য করছে না জানতে না পাই। অন্যথায় তার ও আমার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬২৭ | 6627 | ٦٦۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৭. যখন কেউ কোন সম্প্রদায়ের কাছে কিছু বলে পরে বেরিয়ে এসে বিপরীত বলে
৬৬২৭। আহমাদ ইবনু ইউনূস (রহঃ) … আবুল মিনহাল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু যিয়াদ ও মারওয়ান যখন সিরিয়ার শাসনকর্তা নিযুক্ত ছিলেন এবং ইবনু যুবায়র (রাঃ) মক্কার শাসনক্ষমতা দখল করে নিলেন, আর ক্বারী নামধারীরা (খারেজীরা) বসরায় ক্ষমতায় চেপে বসল, তখন একদিন আমি আমার পিতার সঙ্গে আবূ বারযা আসলামী (রাঃ) এর উদ্দেশ্যে রওনা করে আমরা তার ঘরে প্রবেশ করলাম। এ সময় তিনি তার বাশের তৈরি কুঠরীর ছায়াতলে বসা ছিলেন। আমরা তার কাছে বসলাম। আমার পিতা তার কাছ থেকে কিছু হাদীস শুনতে চাইলেন। পিতা বললেন, হে আবূ বারযা! লোকেরা কি ভীষণ সংকটে পতিত হয়েছে তা কি আপনি লক্ষ্য করছেন না?

সর্বপ্রথম যে কথাটি তাঁকে বলতে শোনলাম তা হল, আমি যে কুরায়শের গোত্রসমূহের প্রতি বিরূপ ভাব পোষণ করি, এজন্য আল্লাহর কাছে অবশ্যই সাওয়াবের প্রত্যাশা করি। হে আরববাসীরা! তোমরা যে কিরূপ গোমরাহী, অভাব-অনটন ও লাঞ্চনাকর অবস্থায় ছিলে তা তোমরা জানো। মহান আল্লাহ তা’আলা ইসলাম ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাধ্যমে সে অবস্থা থেকে মুক্ত করে তোমাদের বর্তমান অবস্থায় পৌছিয়েছেন, যা তোমরা দেখছ। আর এ পার্থিব দুনিয়াই তোমাদের মাঝে বিশৃংখলা সৃষ্টি করেছে। ঐ যে লোকটা সিরিয়ায় (ক্ষমতা দখল করে) আছে, আল্লাহর কসম। একমাত্র দুনিয়ার সার্থ ছাড়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে সে লড়াই করেনি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬২৮ | 6628 | ٦٦۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৭. যখন কেউ কোন সম্প্রদায়ের কাছে কিছু বলে পরে বেরিয়ে এসে বিপরীত বলে
৬৬২৮। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … হুযায়ফা ইবনুু-ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বর্তমান যুগের মুনাফিকরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগের মুনাফিকদের চাইতেও জঘন্য। কেননা, সে যুগে তারা (মুনাফিকী) করত গোপনে আর আজ করে প্রকাশ্যে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬২৯ | 6629 | ٦٦۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৭. যখন কেউ কোন সম্প্রদায়ের কাছে কিছু বলে পরে বেরিয়ে এসে বিপরীত বলে
৬৬২৯। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নিফাক বস্তুত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে ছিল। আর এখন হল তা ঈমান গ্রহণের পর কুফরী।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৩০ | 6630 | ٦٦۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৮. কবরবাসীদের প্রতি ঈর্ষা না জাগা পর্যন্ত কিয়ামত কায়েম হবে না
৬৬৩০। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেনঃ কিয়ামত কায়ম হবে না যতক্ষন এক ব্যাক্তি অপর ব্যাক্তির কবরের পাশে দিয়ে যাওয়ার সময় না বলবে হায়! যদি আমি তার স্থলে হতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৩১ | 6631 | ٦٦۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৯. যামানার এমন পরিবর্তন হবে যে, পূনরায় মূর্তিপূজা শুরু হবে
৬৬৩১। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামত কায়েম হবে না, যতক্ষন ‘যুলখালাসার’ পাশে দাওস গোত্রীয় রমনীদের নিতম্ব দোলায়িত না হবে। ‘যুলখালাসা’ হল দাওস গোত্রের একটি মূর্তি। জাহিলি যুগে তারা এর উপাসনা করত।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৩২ | 6632 | ٦٦۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৯৯৯. যামানার এমন পরিবর্তন হবে যে, পূনরায় মূর্তিপূজা শুরু হবে
৬৬৩২। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামত কায়েম হবে না যতক্ষন না কাহতান গোত্র থেকে এমন এক ব্যাক্তি আবির্ভূত হবে, যে মানুষকে লাঠি দিয়ে তাড়িয়ে নেবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৩৩ | 6633 | ٦٦۳۳

পরিচ্ছদঃ ৩০০০. আগুন বের হওয়া। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ কিয়ামতের সর্বপ্রথম আলামত হবে আগুন, যা মানুষকে পূর্ব থেকে তাড়িয়ে নিয়ে পশ্চিমে সমবেত করবে
৬৬৩৩। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামত কায়েম হবে না যতক্ষন না হিজাযের যমীন থেকে এমন আগুন বের হবে, যা বসরার উটগুলোর গর্দান আলোকিত করে দেবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৩৪ | 6634 | ٦٦۳٤

পরিচ্ছদঃ ৩০০০. আগুন বের হওয়া। আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলূল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ কিয়ামতের সর্বপ্রথম আলামত হবে আগুন, যা মানুষকে পূর্ব থেকে তাড়িয়ে নিয়ে পশ্চিমে সমবেত করবে
৬৬৩৪। আবদুল্লাহ ইবনু সাঈদ কিন্দী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অদ্য ভবিষ্যতে ফোরাত নদী তার গর্ভস্ত স্বর্ণের খনি বের করে দেবে সে সময় যারা উপস্থিত থাকবে তারা যেন তা থেকে কিছুই গ্রহণ না করে।

উকবা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীসটি অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে সেখানে كَنْزٍ مِنْ ذَهَبٍ এর স্থলে جَبَلٍ مِنْ ذَهَبٍ (স্বর্ণের পাহাড়) উল্লেখ আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৩৫ | 6635 | ٦٦۳۵

পরিচ্ছদঃ ৩০০১. পরিচ্ছেদ নাই
৬৬৩৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … হারিসা ইবনু ওয়াহাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, তোমরা সাদাকা কর। কেননা, অচিরেই এমন এক যুগ আসবে যে মানুষ সাদাকা নিয়ে ঘোরাফেরা করবে। কিন্তু সাদাকা গ্রহণ করে এমন কাউকে পাবে না। মুসাদ্দাদ (রহঃ) বলেন, হারিসা উবায়দুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) এর বৈপিত্রেয় ভাই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৩৬ | 6636 | ٦٦۳٦

পরিচ্ছদঃ ৩০০১. পরিচ্ছেদ নাই
৬৬৩৬। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামত কায়েম হবে না যতক্ষন দুটি বড় দল পরস্পরে মহাযুদ্ধে লিপ্ত না হবে। উভয় দলের দাবি হবে অভিন্ন। আর যতক্ষন ত্রিশের কাছাকাছি মিথ্যাবাদী দাজ্জাল এর প্রকাশ না পাবে। তারা প্রত্যেকেই নিজেকে আল্লাহর প্রেরিত রাসুল বলে দাবি করবে এবং যতক্ষন ইল্‌ম তুলে নেওয়া না হবে। আর ভূমিকম্প অধিক হারে না হবে। আর যামানা (কাল) সংক্ষিপ্ত না হবে এবং (ব্যাপক হারে) ফিতনা প্রকাশ না পাবে। আর হারজ ব্যাপকতর হবে। হারজ হল হত্যা। আর যতক্ষন তোমাদের মাঝে ধন-সম্পদ বৃদ্ধি না পাবে। তখন সম্পদের এমন সয়লাব শুরু হবে যে, সম্পদের মালিক তার সাদাকা কে গ্রহণ করবে- এ নিয়ে চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়বে। এমন কি যার নিকট সে সম্পদ পেশ করবে সে বলবে আমার এ মালের কোনই প্রয়োজন নেই। আর যতক্ষন মানুষ সুউচ্চ প্রাসা’দ নির্মাণের ক্ষেত্রে পরস্পরে প্রতিযোণিতায় অবতীর্ন না হবে। আর যতক্ষন এক ব্যাক্তি অপর ব্যাক্তির কবরের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় বলবে হায়! আমি যদি এ কবরবাসীর স্থলে হতাম এবং যতক্ষন সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত না হবে।

যখন সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হবে এবং সকল লোক তা দেখবে। এবং সেদিন সকলেই ঈমান আনবে। কিন্তু সে দিন তার ঈমান কাজে আসবে না, যে ব্যাক্তি এর আগে ঈমান আনেনি। কিংবা ইতিপূর্বে যারা ঈমান আনেনি কিংবা ঈমানের মাধ্যমে কল্যাণ অর্জন করেনি (৬ঃ ১৫৮) আর অবশ্যই কিয়ামত এমন অবস্থায় কায়েম হবে যে দু’ব্যাক্তি (পরস্পরে বেচাকেনার উদ্দেশ্যে) কাপড় খুলবে। কিন্তু তারা বেচাকেনা ও গুটিয়ে রাখা শেষ করতে পারবে না। অবশ্যই কিয়ামত এমন অবস্থায় কায়েম হবে যে, এক ব্যাক্তি তার উটের দুধ দোহন করে নিয়ে ফিরেছে কিন্তু সে তা পান করতে পারবে না। কিয়ামত এমন অবস্থায় কায়েম হবে যে, এক ব্যাক্তি তার হাওয আস্তর করছে, কিন্তু সে পানি পান করাতে পারবে না। অবশ্যই কিয়ামত এমন (অতর্কিত) অবস্থায় কায়েম হবে যে, এক ব্যাক্তি মুখের কাছে লোকমা তুলবে কিন্তু সে তা আহার করতে পারবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৩৭ | 6637 | ٦٦۳۷

পরিচ্ছদঃ ৩০০২. দাজ্জাল সংক্রান্ত আলোচনা
৬৬৩৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাজ্জাল সম্পর্কে যত বেশি প্রশ্ন করতাম সেরূপ আর কেউ করেনি। তিনি আমাকে বললেনঃ তা থেকে তোমার কি ক্ষতি হবে? আমি বললাম, লোকেরা বলে যে, তার সাথে রুটির পাহাড় ও পানির নহর থাকবে। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কাছে তা অতি সহজ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৩৮ | 6638 | ٦٦۳۸

পরিচ্ছদঃ ৩০০২. দাজ্জাল সংক্রান্ত আলোচনা
৬৬৩৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবূ আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেনঃ আমার মনে হয় তিনি হাদীসটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেই বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, দাজ্জালের ডান চক্ষুটি কানা হবে, যেন তা ফোলা আঙ্গুরের ন্যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৩৯ | 6639 | ٦٦۳۹

পরিচ্ছদঃ ৩০০২. দাজ্জাল সংক্রান্ত আলোচনা
৬৬৩৯। সা’দ ইবনু হাফস (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দাজ্জাল আসবে। অবশেষে মদিনার এক পার্শ্বে অবতরণ করবে। (এ সময় মদিনা) তিনবার প্রকম্পিত হবে। তখন সকল কাফের ও মুনাফিক বের হয়ে তার কাছে চলে আসবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৪০ | 6640 | ٦٦٤۰

পরিচ্ছদঃ ৩০০২. দাজ্জাল সংক্রান্ত আলোচনা
৬৬৪০। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ মাসীহ দাজ্জালের ভয় থেকে মদিনায় প্রবেশ করবে না। সে সময় মদিনায় সাতটি প্রবেশ পথ থাকবে। প্রত্যেক প্রবেশ পথে দু’জন করে ফেরেশতা নিয়োজিত থাকবেন।

ইবনু ইসহাক … ইবরাহীম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আমি যখন বসরায় আগমন করলাম তখন আবূ বাকরা (রাঃ) আমাকে বললেন যে, এ হাদীসটি আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৪১ | 6641 | ٦٦٤۱

পরিচ্ছদঃ ৩০০২. দাজ্জাল সংক্রান্ত আলোচনা
৬৬৪১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেনঃ মদিনায় মাসীহ দাজ্জাল এর প্রভাব পড়বেনা। সে সময় মদিনার সাতটি প্রবেশদ্বার থাকবে। প্রতি প্রবেশদ্বারে দু’জন করে ফেরেশতা নিয়োজিত থাকবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৪২ | 6642 | ٦٦٤۲

পরিচ্ছদঃ ৩০০২. দাজ্জাল সংক্রান্ত আলোচনা
৬৬৪২। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) বলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোক সমাবেশে দাঁড়ালেন এবং মহান আল্লাহ তাআলার যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন। এরপর তিনি দাজ্জাল প্রসঙ্গে কথা বললেনঃ তার সম্পর্কে আমি তোমাকে সতর্ক করছি। এমন কোন নাবী নেই তিনি তাঁর কাওমকে এ বিষয়ে সতর্ক করেননি। তবে তার সম্পর্কে আমি তোমাদের এমন একটি কথা বলব যা কোন নাবী তার কাওমকে বলেননি। তা হল যে, সে কানা হবে আর আল্লাহ তাআলা অবশ্যই কানা নন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৪৩ | 6643 | ٦٦٤۳

পরিচ্ছদঃ ৩০০২. দাজ্জাল সংক্রান্ত আলোচনা
৬৬৪৩। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ইবন উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি নিদ্রিত অবস্থায় দেখতে পেলাম যে, আমি কাবার তাওয়াফ করছি। হঠাৎ একজন লোককে দেখতে পেলাম ধূসর বর্ণের আলুথালু কেশধারী, তার মাথা থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে কিংবা টপকে পড়ছে। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, ইনি কে? লোকেরা বলল, ইনি মারিয়ামের পুত্র। এরপর আমি তাকাতে লাগলাম, হঠাৎ দেখতে পেলাম, এক ব্যাক্তি স্থুলকায় লাল বর্ণের কোঁকড়ানো চুল, এক চোখ কানা, চোখটি যেন ফোলা আঙুরের ন্যায়। লোকেরা বলল এ-হল দাজ্জাল! তার সাথে অধিকতর সাদৃশ্যপূর্ন লোক হল ইবনু কাতান, বনী খুযা’আর এক ব্যাক্তি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৪৪ | 6644 | ٦٦٤٤

পরিচ্ছদঃ ৩০০২. দাজ্জাল সংক্রান্ত আলোচনা
৬৬৪৪। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাত (নামায/নামাজ) এর মাঝে দাজ্জালের ফিতনা থেকে পানাহ চাইতে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৪৫ | 6645 | ٦٦٤۵

পরিচ্ছদঃ ৩০০২. দাজ্জাল সংক্রান্ত আলোচনা
৬৬৪৫। আবদান (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি দাজ্জাল সম্পর্কে বলেছেনঃ তার সাথে পানি ও আগুন থাকবে। বস্তুত তার আগুনই হবে শীতল পানি, আর তার পানি হবে আগুন। আবূ মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আমিও এ হাদীসটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৪৬ | 6646 | ٦٦٤٦

পরিচ্ছদঃ ৩০০২. দাজ্জাল সংক্রান্ত আলোচনা
৬৬৪৬। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এমন কোন নাবী প্রেরিত হন নাই যিনি তার উম্মতকে এই কানা মিথ্যুক সম্পর্কে সতর্ক করেননি। জেনে রেখো, সে কিন্তু কানা, আর তোমাদের রব কানা নন। আর তার দুই চোখের মাঝখানে কাফের শব্দটি লিপিবদ্ধ থাকবে। এ বিষয়ে আবূ হুরায়রা (রাঃ) ও ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৪৭ | 6647 | ٦٦٤۷

পরিচ্ছদঃ ৩০০৩. দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না
৬৬৪৭। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে দাজ্জাল সম্পর্কে দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করলেন। তিনি তার সম্পর্কে আমাদেরকে যা কিছু বলেছিলেন, তার মাঝে এও বলেছেন যে, দাজ্জাল আসবে তবে মদিনার প্রবেশপথে তার প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ থাকবে। মদিনার সংলগ্ন বালুময় একটি স্থানে সে অবস্থান গ্রহণ করবে। এ সময় তার দিকে এক ব্যাক্তি গমন করবে। যিনি মানুষের মাঝে উত্তম। কিংবা উত্তম ব্যাক্তিদের একজন। সে বলবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তূই সেই দাজ্জাল, যার সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে তাঁর হাদীস বর্ননা করেছেন। তখন দাজ্জাল বলবে, তোমরা দেখ আমি যদি একে হত্যা করে আবার জীবিত করে দেই তাহলে কি তোমরা এ ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করবে? লোকেরা বলবে, না। এরপর সে তাকে হত্যা করবে এবং পুনরায় জীবিত করবে। তখন সে লোকটি বলবে, আল্লাহর কসম! তোর সম্পর্কে আজকের মত দৃঢ় বিশ্বাসী ছিলাম না। তখন দাজ্জাল তাকে হত্যা করতে চাইবে। কিন্তু সে তা করতে সক্ষম হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৪৮ | 6648 | ٦٦٤۸

পরিচ্ছদঃ ৩০০৩. দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না
৬৬৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মদিনার প্রবেশ পথ সমূহে ফেরেশতা-নিয়োজিত রয়েছে। অতএব সেখানে রোগ ও দাজ্জাল প্রবেশ করবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৪৯ | 6649 | ٦٦٤۹

পরিচ্ছদঃ ৩০০৩. দাজ্জাল মদীনায় প্রবেশ করতে পারবে না
৬৬৪৯। ইয়াহইয়া ইবনু মূসা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, যে, মদিনার দিকে দাজ্জাল আসবে, সে ফেরেশতাদেরকে মদিনা পাহারা দেওয়া অবস্থায় দেখতে পাবে। অতএব দাজ্জাল ও প্লেগ এর (মদিনার) নিকটস্থ হবে না ইনশা আল্লাহ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৫০ | 6650 | ٦٦۵۰

পরিচ্ছদঃ ৩০০৪. ইয়াজূজ ও মা’জূজ
৬৬৫০। আবুল ইয়ামান ও ইসমাঈল (রহঃ) … যায়নাব বিনত জাহাশ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উদ্বিগ্ন অবস্থায় এরূপ বলতে বলতে আমার গৃহে প্রবেশ করলেন যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নাই। আক্ষেপ আরবের জন্য মন্দ থেকে যা অতি নিকটবর্তী। বৃদ্ধাঙ্গুল ও তৎসংলগ্ন আঙ্গুল গোলাকৃতি করে তার দিকে ইঙ্গিত করে বললেনঃ আজ ইয়াজুজ ও মাজুজের প্রাচীর এ পরিমাণ উন্মোচিত হয়েছে। যায়নাব বিনত জাহাশ (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের মাঝে সৎ লোকেরা বিদ্যমান থাকা সত্ত্বেও কি আমরা ধ্বংস হয়ে যাব? উত্তরে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। যদি পাপাচার বেড়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৫১ | 6651 | ٦٦۵۱

পরিচ্ছদঃ ৩০০৪. ইয়াজূজ ও মা’জূজ
৬৬৫১। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ ইয়াজুজ-মাজূজের প্রাচীরটি এ পরিমাণ উন্মোচিত হয়েছে। রাবী শুহায়ব নব্বই সংখ্যা নির্দেশক গোলাকৃতি তৈরি করে (দেখালেন)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৫২ | 6652 | ٦٦۵۲

পরিচ্ছদঃ ৩০০৫. আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর, আনুগত্য করো রাসূলের এবং তাদের যারা তোমাদের মধ্যে ক্ষমতার অধিকারী (৪ঃ ৫৯)
৬৬৫২। আবদান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আমার আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল। আর যে ব্যাক্তি আমার নাফরমানী করল, সে আল্লাহরই নাফরমানী করল। এবং যে ব্যাক্তি আমার (নির্বাচিত) আমীরের আনুগত্য করল, সে আমারই আনুগত্য করল। আর যে ব্যাক্তি আমার (নির্বাচিত) আমীরের নাফরমানী করল সে আমারই নাফরমানী করল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৫৩ | 6653 | ٦٦۵۳

পরিচ্ছদঃ ৩০০৫. আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর, আনুগত্য করো রাসূলের এবং তাদের যারা তোমাদের মধ্যে ক্ষমতার অধিকারী (৪ঃ ৫৯)
৬৬৫৩। ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জেনে রেখো! তোমাদের প্রত্যেকেই একজন দায়িত্বশীল; আর তোমরা প্রত্যেকেই নিজ অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। অতএব ইমাম, যিনি জনগণের দায়িত্বশীল তিনি তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবেন। পুরুষ গৃহকর্তা তার পরিবারের দায়িত্বশীল; সে তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। নারী তার স্বামীর পরিবার, সন্তান-সন্ততির উপর দায়িত্বশীল, সে এসব সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। কোন ব্যাক্তির দাস স্বীয় মালিকের সম্পদের দায়িত্বশীল; সে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। অতএব জেনে রাখ, প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেকেই নিজ নিজ দায়িত্বাধীন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৫৪ | 6654 | ٦٦۵٤

পরিচ্ছদঃ ৩০০৬. আমীর কুরাইশদের থেকে হবে
৬৬৫৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … মুহাম্মাদ ইবনু জুবায়র ইবনু মুতঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, তারা কুরাইশের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মুআবিয়া (রাঃ) এর নিকট ছিলেন। তখন মুআবিয়া (রাঃ) এব নিকট সংবাদ পৌছল যে, আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, অচিরেই কাহতান গোত্র থেকে একজন বাদশাহ হবেন। এ শুনে তিনি ক্ষুদ্ধ হলেন এবং দাঁড়ালেন। এরপর তিনি আল্লাহ তা’আলার যথাযোগ্য প্রশংসা করলেন, তারপর তিনি বললেন, যা হোক! আমার নিকট এ মর্মে সংবাদ পৌছেছে যে, তোমাদের কতিপয় ব্যাক্তি এরূপ কথা বলে থাকে, যা আল্লাহর কিতাবে নেই এবং যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেও বর্ণিত নেই। এরাই তোমাদের মাঝে সবচেয়ে অজ্ঞ। সুতরাং তোমরা এ সকল মনগড়া কথা থেকে যা স্বয়ং বক্তাকেই পথভ্রষ্ট করে সতর্ক থাক। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, (খিলাফতের) এ বিষয়টি কুরাইশদের মধ্যেই থাকবে, যতদিন তারা দ্বীনের উপর কায়েম থাকবে। যে কেউ তাদের সঙ্গে বিরোধিতা করে তবে আল্লাহ তা’আলা তাকেই অধোমুখে নিপতিত করবেন। নুআয়ম (রহঃ) মুহাম্মাদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) সুত্রে শুআয়ব এর অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৫৫ | 6655 | ٦٦۵۵

পরিচ্ছদঃ ৩০০৬. আমীর কুরাইশদের থেকে হবে
৬৬৫৫। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (খিলাফতের) এই বিষয়টি সর্বদাই কুরাইশদের মধ্যেই থাকবে, যতদিন তাদের থেকে দু’জন লোকও অবশিষ্ট থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৫৬ | 6656 | ٦٦۵٦

পরিচ্ছদঃ ৩০০৭. হিকমাত (সঠিক জ্ঞান) এর সাথে বিচার ফায়সালাকারীর প্রতিদান। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ আল্লাহ্ যা অবতীর্ন করেছেন, তদনুসারে যারা বিধান দেয়না তারা সত্যত্যাগী (৫ঃ ৪৭)
৬৬৫৬। শিহাব ইবনু আব্বাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’ধরনের লোক ছাড়া অন্য কারো প্রতি ঈর্ষা করা যায় না। একজন হল ঐমন ব্যাক্তি, যাকে আল্লাহ ধন-সস্পদ দান করেছেন এবং তাকে তা সৎপথে ব্যয় করার ক্ষমতা দিয়েছেন। অপরজন হল, যাকে আল্লাহ হিকমাত (সঠিক জ্ঞান) দান করেছেন, সে তার দ্বারা বিচার ফয়সালা করে এবং তা অপরকে শিক্ষা দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৫৭ | 6657 | ٦٦۵۷

পরিচ্ছদঃ ৩০০৮. ইমামের আনুগত্য ও মান্যতা, যতক্ষন তা নাফরমানীর কাজ না হয়
৬৬৫৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি তোমাদের উপর এরূপ কোন হাবশী দাসকেও শাসক নিযুক্ত করা হয়, যার মাথাটি কিশমিশের ন্যায় তবুও তার কথা শোন ও তার আনুগত্য কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৫৮ | 6658 | ٦٦۵۸

পরিচ্ছদঃ ৩০০৮. ইমামের আনুগত্য ও মান্যতা, যতক্ষন তা নাফরমানীর কাজ না হয়
৬৬৫৮। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কেউ তার আমীর (ক্ষমতাসীন) থেকে এমন কিছু দেখে, যা সে অপছন্দ করে, তাহলে সে যেন ধৈর্য ধারণ করে। কেননা, যে কেউ জামাআত থেকে এক বিঘত পরিমাণ দুরে সরে মরবে, তার মৃত্যু হবে জাহিলিয়াতের মৃত্যু।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৫৯ | 6659 | ٦٦۵۹

পরিচ্ছদঃ ৩০০৮. ইমামের আনুগত্য ও মান্যতা, যতক্ষন তা নাফরমানীর কাজ না হয়
৬৬৫৯। মুসদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, যতক্ষন পর্যন্ত আল্লাহর নাফরমানীর নির্দেশ দেওয়া না হয়, ততক্ষন পছন্দনীয় ও অপছন্দনীয় সব বিষয়ে প্রত্যেক মুসলমানের জন্য তার মান্যতা ও আনুগত্য করা কর্তব্য। যখন নাফরমানীর নির্দেশ দেওয়া হয়, তখন আর কোন মান্যতা ও আনুগত্য নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৬০ | 6660 | ٦٦٦۰

পরিচ্ছদঃ ৩০০৮. ইমামের আনুগত্য ও মান্যতা, যতক্ষন তা নাফরমানীর কাজ না হয়
৬৬৬০। উমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াস (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি ক্ষুদ্র সৈন্যদল প্রেরন করলেন এবং একজন আনসারী ব্যাক্তিকে তাদের আমীর নিযুক্ত করে সেনাবাহিনীকে তার আনুগত্য করার নির্দেশ দিলেন। এরপর তিনি (আমীর) তাদের উপর ক্ষুব্ধ হলেন এবং বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি তোমাদেরকে আমার আনুগত্য করার নির্দেশ দেননি? তারা বললেনঃ হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন, আমি তোমাদের দৃঢ়ভাবে বলছি যে, তোমরা কাঠ সংগ্রহ করবে এবং তাতে আগুন প্রজ্জলিত করবে। এরপর তোমরা তাতে প্রবেশ করবে। তারা কাঠ সংগ্রহ করল এবং তাতে আগুন প্রজ্জলিত করল। এরপর যখন তারা প্রবেশ করতে ইচ্ছা করল- তখন একে অপরের দিকে তাকাতে লাগল। তাঁদের কেউ কেউ বলল আগুন থেকে পরিত্রাণের জন্যই তো আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ করেছি। তাহলে কি আমরা (অবশেষে) আগুনেই প্রবেশ করব? তাঁদের এসব কথোপকথনের মাঝে হঠাৎ আগুন নিভে যায়। আর তার (আমীরের) ক্রোধও অবদমিত হয়ে পড়ে। এ ঘটনা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বর্ণনা করা হলে তিনি বললেনঃ যদি তারা তাতে প্রবেশ করত, তাহলে কোন দিন আর এর থেকে বের হত না। জেনে রেখো! আনুগত্য কেবলমাত্র বিধিসম্মত কাজেই হয়ে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৬১ | 6661 | ٦٦٦۱

পরিচ্ছদঃ ৩০০৯. যে ব্যক্তি মহান আল্লাহর কাছে নেতৃত্ব চায় না, তাকে মহান আল্লাহ্ তা’আলা সাহায্য করেন
৬৬৬১। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ হে আবদুর রহমান ইবনু সামুরা! তুমি নেতৃত্বের সাওয়াল করো না। কারণ চাওয়ার পর যদি তোমাকে তা দেওয়া হয়, তবে তার দায়িত্ব তোমার উপরই বর্তাবে। আর যদি সাওয়াল ছাড়া তা তোমাকে দেওয়া হয় তবে এ ব্যাপারে তোমাকে সাহায্য করা হবে। আর কোন বিষয়ের কসম করার পর তার বিপরীত দিকটিকে যদি তার চেয়ে কল্যানকর মনে কর, তাহলে কসমের কাফফারা আদায় করে দিও এবং কল্যাণকর কাজটি বাস্তবায়িত করো।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৬২ | 6662 | ٦٦٦۲

পরিচ্ছদঃ ৩০১০. যে ব্যক্তি নেতৃত্ব চায়, তা তার উপরই ন্যস্ত করা হয়
৬৬৬২। আবু মামার (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ হে আবদুর রহমান ইবনু সামুরা! নেতৃত্ব চেয়ে নিও না। কেননা, যদি চাওয়ার পর তুমি তা প্রদত্ত হও, তাহলে তার সকল দায়-দায়িত্ব তোমার উপরই অর্পিত হবে। আর যদি না চাওয়া সত্তেও তুমি তা প্রদত্ত হও, তাহলে এ ব্যপারে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) সহযোগিতা করা হবে। আর কোন বিষয়ে কসম কসার পর তার বিপরীত দিকটিকে যদি উত্তম বলে মনে কর তাহলে উত্তম কাজটি করে ফেল আর তোমার কসমের কাফফারা আদায় করে দিও।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৬৩ | 6663 | ٦٦٦۳

পরিচ্ছদঃ ৩০১১. নেতৃত্বের লোভ অপছন্দনীয়
৬৬৬৩। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ তোমরা নিশ্চয়ই নেতৃত্বের লোভ পোষণ কর, অথচ কিয়ামতের দিন তা লজ্জার কারণ হবে। কত উত্তম দুগ্ধদায়িনী এবং কত মন্দ দুগ্ধ পানে বাধাদানকারিণী (এটা) (অর্থাৎ এর প্রথম দিক দুগ্ধদানের ন্যায় তৃপ্তিকর, আর পরিণাম দুধ ছাড়ানোর ন্যায় যন্ত্রণাদায়ক)।

মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর ভাষ্য হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৬৪ | 6664 | ٦٦٦٤

পরিচ্ছদঃ ৩০১১. নেতৃত্বের লোভ অপছন্দনীয়
৬৬৬৪। মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন যে, আমি ও আমার গোত্রের দু’ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গমন করলাম। সে দু’জনের একজন বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে (কোন বিষয়ে) আমীর নিযুক্ত করুন। অপরজনও অনুরূপ কথা বলল। তখন তিনি বললেনঃ যারা নেতৃত্ব চায় এবং এর লোভ পোষণ করে আমরা তাদেরকে এ পদে নিয়োগ করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৬৫ | 6665 | ٦٦٦۵

পরিচ্ছদঃ ৩০১২. জনগনের নেতৃত্ব লাভের পর তাদের কল্যান কামনা না করা
৬৬৬৫। আবু নুআয়ম (রহঃ) … হাসান বসরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, উবায়দুল্লাহ ইবনু যিয়াদ (রহঃ) মাকিল ইবনু ইয়াসারের মৃত্যুশয্যায় তাকে দেখতে গেলেন। তখন মাকিল (রাঃ) তাকে বললেন, আমি তোমাকে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করছি যা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি যে, কোন বান্দাকে যদি আল্লাহ তা’আলা জনগণের নেতৃত্ব প্রদান করেন, আর সে কল্যাণকামিতার সাথে তাদের তত্বাবধান না করে, তাহলে সে বেহেশতের ঘ্রাণও পাবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৬৬ | 6666 | ٦٦٦٦

পরিচ্ছদঃ ৩০১২. জনগনের নেতৃত্ব লাভের পর তাদের কল্যান কামনা না করা
৬৬৬৬। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … হাসান বসরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা মাকিল ইবনু ইয়াসারের কাছে তার শুশ্রুার আসলাম। এ সময় উবায়দুল্লাহ প্রবেশ করল। তখন মাকিল (রাঃ) বললেনঃ আমি তোমাকে এমন একটি হাদীস বর্ণনা করে শোনাব, যা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। তিনি বলেন, যদি কোন দায়িত্বশীল ব্যাক্তি মুসলিম জনগণের দায়িত্ব লাভ করল এবং তার মৃত্যু হল এ অবস্থায় যে, সে ছিল খিয়ানতকারী, তাহলে আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৬৭ | 6667 | ٦٦٦۷

পরিচ্ছদঃ ৩০১৩. যে কঠোর ব্যাবহার করবে মহান আল্লাহ্ তা’আলাও তার প্রতি কঠোর ব্যাবহার করবেন
৬৬৬৭। ইসহাক ওয়াসেতী (রহঃ) … তারীফ আবূ তামীমা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাফওয়ান (রহঃ), জুনদাব (রাঃ) ও তাঁর সাথীদের কাছে ছিলাম। তখন তিনি তাদের উপদেশ দিচ্ছিলেন। তারা জিজ্ঞাসা করল, আপনি কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কোন কথা শুনেছেন? উত্তরে তিনি বললেন, আমি তাকে বলতে শুনেছি যে, যারা মানুষকে শোনাবার জন্য কোন কাজ করে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার এ কথা শুনিয়ে দিবেন। আর যারা অন্যের প্রতি কঠোর ব্যবহার করে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা তার প্রতি কঠোর ব্যবহার করবেন। তাঁরা পুনরায় বলল, আমাদেরকে কিছু উপদেশ দিন। তিনি বললেনঃ মানুষের দেহের যে অংশ প্রথম দুর্গন্ধময় হবে, তা হল তার পেট। সুতরাং যে ব্যাক্তি সামর্থ্য রাখে যে একমাত্র পবিত্র (হালাল) খাদ্য ছাড়া আর কিছু সে আহার করবে না, সে যেন তাই করতে চেষ্টা করে। আর যে ব্যাক্তি সামর্থ্য রাখে যে এক আজলা পরিমাণ রক্তপাত ঘটিয়ে তার ও জান্নাতের মাঝে প্রতিবন্দকতা সৃষ্টি করবে না, সে যেন অবশ্যই তা করে।

ইমাম বুখারী (রহঃ) এর ছাত্র ফেরাবরী) বলেনঃ আমি আবু আবদুল্লাহ (রহঃ) (ইমাম বুখারী) কে জিজ্ঞাসা করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমি শুনেছি- এ কথা কি জুনদাব বলেছিলেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, জুনদাবই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৬৮ | 6668 | ٦٦٦۸

পরিচ্ছদঃ ৩০১৪. রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিচার করা, কিংবা ফাতওয়া দেওয়া। ইয়াহইয়া ইবন ইয়ামার (রহঃ) রাস্তায় বিচার কার্য করেছেন। শাবী (রঃ) তাঁর ঘরের দরজায় বিচার কার্য করেছেন
৬৬৬৮। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি ও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়ে মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলাম। এমন সময় একজন লোক মসজিদের আঙ্গিনায় আমাদের সাথে সাক্ষাত করে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামত কখন হবে? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তার জন্য কি প্রস্তুত গ্রহণ করেছ? এতে লোকটি যেন কিছুটা লজ্জিত হল। তারপর বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! রোযা, সালাত (নামায/নামাজ), সাদাকা খুব একটা তার জন্য করতে পারিনি। তবে আমি আল্লাহ ও তার রাসুলকে ভালবাসি। তিনি বললেনঃ তুমি যাকে ভালবাস (কিয়ামতে) তার সাথেই থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৬৯ | 6669 | ٦٦٦۹

পরিচ্ছদঃ ৩০১৫. উল্লেখ আছে যে, রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর কোন দারোয়ান ছিল না
৬৬৬৯। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … সাবিত বুনানী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) কে তার পরিবারের একজন মহিলাকে এ মর্মে বলতে শুনেছি যে, তুমি কি অমুক মহিলাকে চেন? সে বলল, হ্যাঁ। আনাস (রাঃ) বললেনঃ একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে তখন একটি কবরের পাশে কাঁদছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ আল্লাহকে ভয় কর এবং ধৈর্য ধারণ কর। তখন সে বলল, আমার কাছ থেকে সরে যাও, কেননা তুমি আমার মুসীবত থেকে মুক্ত। আনাস (রাঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে অতিক্রম করে চলে গেলেন। এ সময় অপর লোক তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সে তাকে জিজ্ঞাসা করল, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে কি বললেনঃ। স্ত্রীলোকটি বলল, আমি তো তাকে চিনতে পারিনি। লোকটি বলল, ইনই তো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তিনি বললেন, পরে সে (স্ত্রীলোকটি) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দরজায় আসল। তবে দরজায় কোন দারোয়ান দেখতে পেল না। তখন সে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ! আমি আপনাকে চিনতে পারিনি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ প্রথম আঘাতেই ধৈর্য ধারণ করতে হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৭০ | 6670 | ٦٦۷۰

পরিচ্ছদঃ ৩০১৬. বিচারক উপরস্থ শাসনকর্তার বিনা অনুমতিতেই হত্যাযোগ্য আসামীকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করতে পারেন
৬৬৭০। মুহাম্মাদ ইবনু খালিদ যুহলী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, কায়স ইবনু সা’দ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে এরূপ থাকতেন যেরূপ আমীরের (রাষ্ট্র প্রধানের) সামনে পুলিশ প্রধান থাকেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৭১ | 6671 | ٦٦۷۱

পরিচ্ছদঃ ৩০১৬. বিচারক উপরস্থ শাসনকর্তার বিনা অনুমতিতেই হত্যাযোগ্য আসামীকে মৃত্যুদন্ড প্রদান করতে পারেন
৬৬৭১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (গভর্নর করে) পাঠালেন এবং তার পশ্চাতে মু’আয (রাঃ) কেও পাঠালেন। অন্য সনদে পরবর্তী অংশ আবদুল্লাহ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি ইসলাম গ্রহণ করার পর পূনরায় পূর্ব ধর্ম অবলম্বন করে। তার কাছে মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) এলেন। তখন সে লোকটি আবূ মূসা (রাঃ) এর কাছে ছিল। তিনি [মু’আয (রাঃ)] জিজ্ঞাসা করলেন, এর কি হয়েছে? তিনি বললেন, ইসলাম গ্রহণ করেছিল অতঃপর ইহুদী হয়ে গেছে। মু’আয (রাঃ) বললেন, একে হত্যা না করে আমি বসব না। আল্লাহ ও তার রাসুলের বিধান (এটাই)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৭২ | 6672 | ٦٦۷۲

পরিচ্ছদঃ ৩০১৭. রাগের অবস্থায় বিচারক বিচার করতে এবং মুফতী ফাতওয়া দিতে পারবেন কি
৬৬৭২। আদম (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আবূ বাকরা (রাঃ) তাঁর ছেলেকে লিখে পাঠালেন- সে সময় তিনি সিজিস্থানে অবস্থানরত ছিলেন যে, তুমি রাগের অবস্থায় বিবদমান দু’ব্যাক্তির মাঝে ফায়সালা করো না। কেননা, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে কোন বিচারক রাগের অবস্থায় দু’জনের মধ্যে বিচার করবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৭৩ | 6673 | ٦٦۷۳

পরিচ্ছদঃ ৩০১৭. রাগের অবস্থায় বিচারক বিচার করতে এবং মুফতী ফাতওয়া দিতে পারবেন কি
৬৬৭৩। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবূ মাসউদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর শপথ! আমি অমুক ব্যাক্তির কারণে ফজরের জামাতে উপস্থিত হই না। কেননা, তিনি আমাদেরকে নিয়ে দীর্ঘ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। আবূ মাসউদ (রাঃ) বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কোন ওয়াযে সে দিনের মত অধিক রাগাম্বিত হতে আর দেখিনি। এরপর উনি বললেনঃ হে লোক সকল! তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বিরক্তির উদ্রেককারী রয়েছে। অতএব তোমাদের মধ্যে যে কেউ লোকদেরকে নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে সে যেন সংক্ষিপ্ত করে। কেননা তাদেয় মধ্যে রয়েছে বয়ষ্ক, দুর্বল ও কর্মব্যস্ত লোকেরা।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৭৪ | 6674 | ٦٦۷٤

পরিচ্ছদঃ ৩০১৭. রাগের অবস্থায় বিচারক বিচার করতে এবং মুফতী ফাতওয়া দিতে পারবেন কি
৬৬৭৪। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ ইয়াকুব কিরমানী (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি তাঁর স্ত্রীকে ঋতুবতী অবস্থায় তালাক দিয়েছিলেন। উমর (রাঃ) এ ঘটনা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বর্ণনা করেন। এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাগাম্বিত হন। এরপর তিনি বলেনঃ সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনে এবং তাকে আটকিয়ে রাখে, যতক্ষন পর্যন্ত সে পবিত্র হযে পুনরায় ঋতুবতী না হয় এবং পুনরায় পবিত্র না হয়। এরপরও যদি তার তালাক দেওয়ার প্রয়োজন হয়, তাহলে যেন তখন (পবিত্রাবস্থায়) তালাক দেয়। আবূ আবদুল্লাহ (বুখারী) (রাঃ) বলেন, যুহরী-ই মুহাম্মাদ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৭৫ | 6675 | ٦٦۷۵

পরিচ্ছদঃ ৩০১৮. যে ব্যক্তি মনে করে যে, বিচারকের তার জ্ঞানের ভিত্তিতে লোকদের ব্যাপারে বিচার ফায়সালা করার অধিকার রয়েছে। যদি জনগনের কুধারনা ও অপবাদের ভয় তার না থাকে। যেমন রাসূলূল্লাহ (সাঃ) হিন্দা বিনত উতবাকে বলেছিলেন, তুমি তোমার স্বামীর (আবু সুফিয়ানের) সম্পদ থেকে এতটুকু পরিমান গ্রহন কর, যতটুকু তোমার ও তোমার সন্তানের জন্য যথেষ্ট হবে ন্যায় সঙ্গতভাবে। আর এটা হবে তখন, যখন বিষয়টি খুবই প্রসিদ্ধ
৬৬৭৫। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা হিন্দা বিনত উতবা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর কসম! যমীনের বুকে এমন কোন পরিবার ছিল না, আপনার পরিবারের চেয়ে যার লাঞ্ছনা ও অবমাননা আমার নিকট বেশি প্রিয় ও পছব্দনীয় ছিল। কিন্তু আজ আমার নিকট এরূপ হয়েছে যে, এমন কোন পরিবার যমীনের বুকে নেই, যে পরিবার আপনার পরিবারের চাইতে বেশি উত্তম ও সম্মানিত। তারপর হিন্দা (রাঃ) বলল, আবূ সুফিয়ান (রাঃ) একজন ভীষণ কৃপণ লোক। কাজেই আমি আমাদের সন্তানদেরকে তার সম্পদ থেকে খাওয়াই, আমার জন্য এটা দোষের হবে কি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেনঃ না, তোমার জন্য তাদেরকে খাওয়ানো কোন দোষের হবে না, যদি তা ন্যায়সঙ্গত হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৭৬ | 6676 | ٦٦۷٦

পরিচ্ছদঃ ৩০১৯. মোহরকৃত চিঠির ব্যাপারে সাক্ষ্য, এতে যা বৈধ ও সীমিত করা হয়েছে। রাষ্ট্র পরিচালকের চিঠি প্রশাসকদের কাছে এবং বিচারপতির চিঠি বিচারপতির কাছে। কোন কোন লোক বলেছেন, ‘হদ’ (শরীয়তের নির্ধারিত শাস্তি) ব্যতীত অন্যান্য ব্যাপারে রাষ্ট্র পরিচালককে চিঠি দেওয়া বৈধ। এরপর তিনি বলেছেন, হত্যা যদি ভুলবশত হয় তাহলে রাষ্ট্র পরিচালকের চিঠি বৈধ। কেননা, তাঁর মতে এটি মাল সংক্রান্ত বিষয়। অথচ এটি মাল সংক্রান্ত বিষয় বলে ঐ সময় প্রতীয়মান হবে, যখন হত্যা প্রমানিত হবে। ভুলবশত হত্যা ও ইচ্ছাকৃত হত্যা একই। উমর (রাঃ) তাঁর কর্মকর্তার নিকট জারুদের উথ্থাপিত অভিযোগের ভিত্তিতে চিঠি লিখেছিলেন। উমর ইবন আবদুল আজিজ (রঃ) ভেঙ্গে যাওয়া দাঁতের ব্যাপারে চিঠি লিখেছিলেন। ইবরাহীম (রহঃ) বলেন, লেখা ও মোহর যদি চিনতে পারেন, তাহলে বিচারপতির কাছে অন্য বিচারপতির চিঠি লেখা বৈধ। শাবী, বিচারপতির পক্ষ থেকে মোহরকৃত চিঠি বৈধ মনে করতেন। ইবন উমর (রাঃ) থেকেও অনুরুপ বর্নিত। মুয়াবিয়া ইবন আবদুল কারীম সাকাফী ইবন আবদুল্লাহ ইবন আনাস, বিলাল ইবন আবু বুরদা, আবদুল্লাহ ইবন বুরায়দা, আসলামী, আমের ইবন আবীদা ও আব্বাদ ইবন মানসুরকে প্রত্যক্ষ করেছি, তাঁরা সকলেই সাক্ষীদের অনুপস্থিতিতে বিচারপতিদের চিঠি বৈধ মনে করতেন। চিঠিতে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হতো সে যদি একে মিথ্যা বা জাল বলে দাবি করত, তাহলে তাকে বলা হতো যাও, এ অভিযোগ থেকে মুক্তির পথ অন্বেষন কর। সর্বপ্রথম যারা বিচারপতির চিঠির ব্যাপারে প্রমান দাবি করেছেন তারা হলেন, ইবন আবু লায়লা এবং সাওয়ার ইবন আবদুল্লাহ্। আবু নু’আয়ম (রঃ) আমাদের বলেছেন, ‍উবায়দুল্লাহ্ ইবন মুহরেয আমাদের কাছে বর্ননা করেছেন যে, “আমি বসরার বিচারপতি মূসা ইবন আনাসের কাছ থেকে চিঠি নিয়ে আসলাম। সেখানে আমি তাঁর নিকট এ মর্মে প্রমান পেশ করলাম যে, অমুকের নিকট আমার এতো এতো পাওনা আছে, আর সে কুফায় অবস্থানরত। এ চিঠি নিয়ে আমি কাসেম ইবন আবদুর রহমানের কাছে আসলাম, তিনি তা কার্যকর করলেন। হাসান ও আবু কেলাবা অসিয়্যতনামায় কি লেখা আছে তা না জেনে তার সাক্ষী হওয়াকে মাকরুহ মনে করতেন। কেননা, সে জানেনা, হয়তো এতে কারো প্রতি অবিচার করা হয়েছে। রাসূলূল্লাহ (সাঃ) খায়বারবাসীদের প্রতি চিঠি লিখেছিলেন যে, হয় তোমরা তোমাদের সাথীর ‘দিয়ত’ (রক্তপণ) আদায় কর, না হয় যুদ্ধের ঘোষনা গ্রহন কর। পর্দার অন্তরাল থেকে মহিলাদের ব্যাপারে সাক্ষ্য দেওয়া সম্পর্কে ইমাম ‍যুহরী বলেন, যদি তুমি তাকে চিনতে পার তাহলে তার সম্পর্কে সাক্ষ্য দেবে, তা না হলে সাক্ষ্য দেবে না।
৬৬৭৬। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রোম সম্রাটের কাছে চিঠি লিখতে চাইলেন, তখন লোকেরা বলল, মহরকৃত চিঠি না হলে তারা তা পাঠ করে না। তাই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি রুপার আংটি তৈরি করলেন। [আনাস (রাঃ) বলেন] আমি এখনও যেন এর ঔজ্জল্য প্রত্যক্ষ করছি। তাতে مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ অংকিত ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৭৭ | 6677 | ٦٦۷۷

পরিচ্ছদঃ ৩০২১. প্রশাসক ও প্রশাসনিক কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিদের ভাতা। বিচারপতি শুরায়হ্ (রঃ) বিচার কার্যের জন্য পারিশ্রমিক গ্রহন করতেন। আয়েশা (রাঃ) বলেন, (ইয়াতীমের) তত্ত্বাবধানকারী সম্পদ থেকে তার পারিশ্রমিকের সমপরিমান খেতে পারবেন। আবু বকর (রাঃ) ও উমর (রাঃ) (রাষ্ট্রীয় ভাতা) ভোগ করেছেন।
৩০২০. অনুচ্ছেদ: লোক কখন বিচারক হওয়ার যোগ্য হয়। হযরত হাসান (রঃ) বলেন, মহান আল্লাহ্ তা’আলা বিচারকদের থেকে অঙ্গীকার নিয়েছেন যে, তারা যেন কখনও প্রবৃত্তির অনুসরন না করেন, মানুষকে ভয় না করেন এবং স্বল্প মূল্যের বিনিময়ে মহান আল্লাহর আয়াতকে বিক্রয় না করেন। এরপর তিনি (এর প্রমান হিসাবে পড়লেন। ইরশাদ হলো: হে দাউদ! আমি তোমাকে পৃথিবীতে প্রতিনিধি করেছি। অতএব তুমি লোকদের মধ্যে সুবিচার কর এবং খেয়াল-খুশীর অনুসরন করবে না। কেননা তা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে। যারা মহান আল্লাহর পথ পরিত্যাগ করে তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। কারন তারা বিচার দিবসকে বিস্মৃত হয়ে আছে। (৩৮: ২৬) তিনি আরো পাঠ করলেন, (মহান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন এর বানী) আমি তাওরাত অবতীর্ণ করেছিলাম। এতে ছিল পথনির্দেশ ও আলো। নবীগন, যারা আল্লাহর অনুগত ছিল, তারা ইহুদীদের তদনুসারে বিধান দিত, আরো বিধান দিত রাব্বানীরা এবং বিজ্ঞানীরা, কারন তাদের করা হয়েছিল মহান আল্লাহর কিতাবের রক্ষক ….. মহান আল্লাহ্ তা’আলা যা অবতীর্ন করেছেন তদনুসারে যারা বিধান দেয়না তারাই সত্য প্রত্যাখ্যানকারী। (৫: ৪৪) এবং আরো পাঠ করলেন (মহান আল্লাহ্ তা’আলার বানী) স্মরন কর দাউদ ও সুলায়মানের কথা, যখন তারা বিচার করেছিল শস্যক্ষেত্র সম্পর্কে, এতে রাতে প্রবেশ করেছিল কোন সম্প্রদায়ের মেষ, আমি প্রত্যক্ষ করছিলাম তাদের বিচার এবং সুলায়মানকে এ মিমাংসা বুঝিয়ে দিয়েছিলাম। আমি তাদের প্রত্যেককে দিয়েছিলাম প্রজ্ঞা ও জ্ঞান…..(২১: ৭৮-৭৯)

(মহান আল্লাহ্ তা’আলা) সুলায়মান (আঃ) এর প্রশংসা করেছেন, তবে দাউদ (আঃ) এর তিরস্কার করেননি। যদি মহান আল্লাহ্ তা’আলা দু’জনের অবস্থাকেই উল্লেখ না করতেন, তাহলে মনে করা হতো যে, বিচারকরা ধ্বংস হয়ে গেছেন। তিনি তাঁর (সুলায়মানের) ইলমের প্রশংসা করেছেন এবং (দাউদকে) তাঁর (ভুল) ইজতিহাদের জন্য ক্ষমা করে দিয়েছেন।

মুযাহিম ইবন যুফার (রঃ) বলেন, উমর ইবন আবদুল আযীয (রঃ) আমাদের বলেছেন যে, পাঁচটি গুন এমন যে, কাযীর মধ্যে যদি একটিরও অভাব থাকে তা হলে সেটা তার জন্য দোষ বলে গন্য হবে। তাকে হতে হবে বুদ্ধিমান, ধৈর্যশীল, পূত-পবিত্র চরিত্রের অধিকারী, দৃঢ়প্রত্যয়ী ও জ্ঞানী, জ্ঞানের অনুসন্ধিৎসু।

৬৬৭৭। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু সা’দী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, উমর (রাঃ) এর খিলাফতকালে তিনি একবার তার কাছে আসলেন। তখন উমর (রাঃ) তাকে বললেন, আমাকে কি এ মর্মে অবগত করা হয়নি যে তুমি জনগণের অনেক দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়ে থাক। অথচ যখন তোমাকে এর পারিশ্রমিক প্রদান করা হয়, তখন তুমি তা গ্রহণ কবাকে অপছন্দ কর? আমি বললাম, হ্যাঁ। উমর (রাঃ) বললেন, কি উদ্দেশ্যে তুমি এরূপ কর। আমি বললাম, আমার বহু ঘোড়া ও গোলাম রয়েছে এবং আমি ভাল অবস্থায় আছি। সুতরাং আমি চাই যে, আমার পারিশ্রমিক মুসলমান জনসাধারগের জন্য সাদাকা হিসাবে পরিগণিত হোক।

উমর (রাঃ) বললেনঃ এরূপ করো না। কেননা, আমিও তোমার মত এরূপ ইচ্ছা পোষণ করতাম। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আমাকে কিছু দিতেন, তখন আমি বলতাম, আমার চেয়ে যার প্রয়োজন বেশি তাকে প্রদান করুন। এতে একবার তিনি আমাকে কিছু মাল দিলেন। আমি বললাম, আমার চেয়ে এ মালের প্রয়োজন যার বেশি তাকে দিন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ একে গ্রহণ করে মালদার হও এবং বৃদ্ধি করে তা থেকে সাদাকা কর। আর এই মাল সম্পদের যা কিছু তোমার নিকট এভাবে আসে, তুমি যার প্রত্যাশী নও বা প্রার্থী নও তা গ্রহণ করো। অন্যথায় তাহলে তার পিছনে নিজেকে নিরত করো না।

যুহরী আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে বলেন, তিনি উমর (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে যখন কিছু দান করতেন- তখন আমি বলতাম আমার চেয়ে যার প্রয়োজন বেশি তাকে দিন। এভাবে একবার তিনি আমাকে কিছু মাল দিলেন। আমি বললাম, আমার চেয়ে যার প্রয়োজন বেশি তাকে প্রদান করুন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ একে গ্রহন কর এবং বৃদ্ধি করে তা থেকে সাদাকা কর। আর এই প্রকার মালের যা কিছু তোমার কাছে এমতাবস্থায় আসে যে তুমি তার প্রত্যাশীও নও এবং প্রার্থীও নও তাহলে তা গ্রহণ করা তবে যা এভাবে আসবে না তার পিছনে নিজেকে ধাবিত করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৭৮ | 6678 | ٦٦۷۸

পরিচ্ছদঃ ৩০২২. যে ব্যক্তি মসজিদে বসে বিচার করে ও লি’আন করে। উমর (রাঃ) রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর মিম্বরের সন্নিকটে লি’আন করিয়েছেন। মারওয়ান যায়িদ ইবন সাবিত (রাঃ) এর ‍উপর রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর মিম্বরের কাছে কসম করার রায় দিয়েছিলেন। শুরায়হ্, শাবী, ইয়াহইয়া ইবন ইয়ামার মসজিদে বিচার করেছেন। হাসান ও যুরারাহ্ ইবন আওফা (রঃ) মসজিদের বাইরের চত্বরে বিচার করতেন।
৬৬৭৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আমি দু’জন (স্বামী-স্ত্রী) লিআনকারীকে প্রত্যক্ষ করেছি, তাদের বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। তখন আমার বয়স ছিল পনের বছর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৭৯ | 6679 | ٦٦۷۹

পরিচ্ছদঃ ৩০২২. যে ব্যক্তি মসজিদে বসে বিচার করে ও লি’আন করে। উমর (রাঃ) রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর মিম্বরের সন্নিকটে লি’আন করিয়েছেন। মারওয়ান যায়িদ ইবন সাবিত (রাঃ) এর ‍উপর রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর মিম্বরের কাছে কসম করার রায় দিয়েছিলেন। শুরায়হ্, শাবী, ইয়াহইয়া ইবন ইয়ামার মসজিদে বিচার করেছেন। হাসান ও যুরারাহ্ ইবন আওফা (রঃ) মসজিদের বাইরের চত্বরে বিচার করতেন।
৬৬৭৯। ইয়াহইয়া (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) বনূ সাঈদার ভ্রাতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, এক আনসারী ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, আপনার কি রায়? যদি কোন ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে অন্য কোন পুরুষকে দেখতে পায় তাহলে কি সে তাকে হত্যা করবে? পরে সে ব্যাক্তি ও তার স্ত্রীকে মসজিদে লি’আন করানো হয়েছিল, তখন আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৮০ | 6680 | ٦٦۸۰

পরিচ্ছদঃ ৩০২৩. যে ব্যক্তি মসজিদে বিচার করে। পরিশেষে যখন ‘হদ’ কার্যকর করার সময় হয়, তখন দন্ডপ্রাপ্তকে মসজিদ থেকে বের করে হদ্ কার্যকর করার নির্দেশ দেয়। উমর (রাঃ) বলেন, তোমরা দু’জন একে মসজিদ থেকে বাইরে নিয়ে যাও। আলী (রাঃ) থেকেও এরুপ বর্ননা পাওয়া যায়।
৬৬৮০। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এল। তখন তিনি মসজিদে ছিলেন। লোকটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ডেকে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি যিনা করে ফেলেছি। তিনি তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এভাবে সে যখন নিজের ব্যাপারে চারবার সাক্ষ্য প্রদান করল, তখন তিনি বললেনঃ তুমি কি পাগল? লোকটি বলল, না। তখন তিনি বললেনঃ একে নিয়ে যাও এবং রজম (পাথর মেরে হত্যা) কর।

ইবনু শিহাব বলেন জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে যিনি শুনেছেন, তিনি আমাকে বলেছেন যে, যারা তাকে জানাযা পড়ার স্থানে নিযে রজম করেছিলেন আমি তাদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিলাম। ইউনুস, মা’মার ও ইবনু জুরায়জ (রহঃ) জাবির (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে রজম সম্পর্কে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৮১ | 6681 | ٦٦۸۱

পরিচ্ছদঃ ৩০২৪. বিচারকের বিবাদমান পক্ষকে উপদেশ দেয়া
৬৬৮১। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমিও মানুষ ছাড়া কিছু নই। তোমরা আমার কাছে বিবাদ নিয়ে এসে থাক। হয়ত তোমাদের কেউ অন্যের তুলনার প্রমাণ উপস্থাপনের ব্যাপারে অধিক স্পষ্টবাদী। আর আমি তো যেরূপ শুনি সে ভিত্তিতেই বিচার করে থাকি। সুতরাং আমি যদি কারোর জন্য তার অপর কোন ভাইয়ের হক সম্পর্কে কোন ফায়সালা দেই, তবে সে যেন তা গ্রহণ না করে। কেননা, আমি তার জন্য যে অংশ নির্ধারিত করলাম তা তো এক টুকরা অগ্নি মাত্র।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৮২ | 6682 | ٦٦۸۲

পরিচ্ছদঃ ৩০২৫. বিচারক নিজে বিবাদের সাক্ষী হলে, চাই তা বিচারকের পদে সমাসীন থাকাকালেই হোক কিংবা তার পূর্বে। বিচারক শুরায়হকে এক ব্যক্তি তার পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ার আবেদন করলে তিনি বললেন, তুমি শাসকের কাছে যাও, সেখানে আমি তোমার পক্ষে সাক্ষ্য দিব। ইকরামা (রহঃ) বলেন যে, উমর (রাঃ) আবদুর রহমান ইবন আওফ (রাঃ) কে বললেন, যদি তুমি শাসক হও, আর তুমি নিজে কোন ব্যক্তিকে হদের কাজ ‍যিনা বা চুরিতে লিপ্ত দেখ (তাহলে তুমি কি করবে?) উত্তরে তিনি বললেন (আপনি শাসক হওয়া সত্ত্বেও) আপনার সাক্ষ্য একজন সাধারন মুসলমানের সাক্ষ্যের মতোই। তিনি [উমর (রাঃ)] বললেন, তুমি ঠিকই বলেছ। উমর (রাঃ) বলেন, যদি মানুষ এরূপ বলবে বলে আশংকা না হতো যে, উমর আল্লাহর কিতাবে নিজের পক্ষ থেকে বৃদ্ধি করেছে, তাহলে আমি নিজ হাতে রজমের আয়াত লিখে দিতাম। মায়েয রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর কাছে চারবার যিনার কথা স্বীকার করেছিলেন, তখন তাকে রজম করার নির্দেশ দেন। আর এরূপ বর্ননা পাওয়া যায়না যে, রাসূলূল্লাহ (সাঃ) উপস্থিত ব্যক্তিদের থেকে সাক্ষ্য গ্রহন করেছেন। হাম্মাদ (রহঃ) বলেন, বিচারকের নিকট কেউ একবার স্বীকার করলে তাকে রজম করা হবে। আর হাকাম (রহঃ) বলেন, চারবার স্বীকার করতে হবে
৬৬৮২। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হুনায়নের দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন শক্রপক্ষের কোন নিহত ব্যাক্তিকে হত্যা করার ব্যাপারে যার সাক্ষী আছে, সেই তার পরিত্যক্ত সম্পদ পাবে। (রাবী বলেন) আমি আমার কর্তৃক নিহত ব্যাক্তির সাক্ষী তালাশ করতে লাগলাম। কিন্তু আমার ব্যাপারে সাক্ষ্য দিবে এমন কাউকে দেখতে পেলাম না, সুতরাং আমি বসে গেলাম। তারপর আমার খেয়াল হল। আমি তার হত্যার বিষয়টিকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উল্লেখ করলাম। তখন তাঁর নিকট উপবিষ্ট ব্যাক্তিদের মধ্যে একজন বলল, যে নিহত ব্যাক্তির আলোচনা হচ্ছে তার হাতিয়ার আমার কাছে রয়েছে অতএব আপনি তাকে আমার পক্ষ হয়ে সন্তুষ্ট করে দিন। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, কখনো না। আপনি এই পাংশু কুরাইশকে কখনো দিবেন না। আল্লাহ ও রাসুলের পক্ষে যে আল্লাহর সিংহ যুদ্ধ করছে, তাকে আপনি বঞ্চিত করবেন। রাবী বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষয়টি অনুধাবন করলেন এবং তা (হাতিয়ার ইত্যাদি) আমাকে প্রদান করলেন। আমি তা দিয়ে একটি বাগান খরিদ করলাম। এটাই ছিল আমার প্রথম-সম্পদ, যা আমি মূলধন হিসাবে সংরক্ষন করেছিলাম।

আবদুল্লাহ (রহঃ) লাইহের সূত্রে হাদীসটি বর্ণনা করতে فعلم رسول الله صلى الله عليه وسلم (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিযয়টি অনুধাবন করলেন) এর স্থলে فَقَامَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে গেলেন) বর্ণনা করেছেন।

হিজাযের আলেমরা বলেন, শাসক তার জ্ঞানানুসারে বিচার করবে না, চাহে তা দায়িত্বকালে প্রত্যক্ষ করে থাকুক, কিংবা তার পূর্বেই। তাদের কারো কারো মতে যদি বাদী বিবাদীর কোন এক পক্ষ অপর পক্ষের হক সম্পর্কে বিচার চলাকালে তার সস্মুখেও স্বীকার করে তবুও তার ভিত্তিতে ফয়সালা করা যাবে না, যতক্ষন পর্যন্ত দু’জন সাক্ষী ডেকে সে ব্যাক্তির স্বীকারোক্তির সময় তাদের উপস্থিত না রাখবেন। কোন কোন ইরাকী আলেম বলেন, বিচার চলাকালে যা কিছু শুনবে বা দেখবে সে অনুযায়ি ফায়সালা করবে। তবে অন্য স্থানে যা কিছু টনবে বা দেখবে দু’জন সাক্ষী ছাড়া ফায়সালা করতে পারবে না। তাদের অন্যরা বলেন বরং সে ভিত্তিতে ফায়সালা করতে পারবে। কেননা সে তো বিশ্বস্ত। আর সাক্ষ্য গ্রহণের উদ্দেশ্য তো প্রকৃত সত্যকে অনুধাবন করা।

সুতরাং তার জানা (সাক্ষীর) সাক্ষ্যের চেয়ে অধিক নির্ভরযোগ্য। তাদের অন্য কেউ বলেন যে, মাল সংক্রান্ত বিষয়ে বিচারক তার নিজের জানার ভিত্তিতে ফায়সালা করবে। তবে অন্য ব্যাপারে নয়। কাসেম (রহঃ) বলেন যে, অন্যের সাক্ষ্য গ্রহণ ছাড়া শাসকের নিজের জ্ঞানানুসারে ফয়সালা করা উচিত নয় যদিও তার জানা অন্যের সাক্ষীর চেয়ে অধিক নির্ভরযোগ্য তবুও। এতে মুসলিম জনসাধারণের কাছে নিজেকে অপবাদের সন্মুখীন হতে হয় এবং তাদেরকে (মিথ্যা) সন্দেহে ফেলা হয়। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্দেহ করাকে পছন্দ করতেন না। এজন্যই তিনি পথচারীকে ডেকে বলে দিয়েছেনঃ এ হচ্ছে (আমার স্ত্রী) সাফিয়্যা।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৮৩ | 6683 | ٦٦۸۳

পরিচ্ছদঃ ৩০২৫. বিচারক নিজে বিবাদের সাক্ষী হলে, চাই তা বিচারকের পদে সমাসীন থাকাকালেই হোক কিংবা তার পূর্বে। বিচারক শুরায়হকে এক ব্যক্তি তার পক্ষে সাক্ষ্য দেওয়ার আবেদন করলে তিনি বললেন, তুমি শাসকের কাছে যাও, সেখানে আমি তোমার পক্ষে সাক্ষ্য দিব। ইকরামা (রহঃ) বলেন যে, উমর (রাঃ) আবদুর রহমান ইবন আওফ (রাঃ) কে বললেন, যদি তুমি শাসক হও, আর তুমি নিজে কোন ব্যক্তিকে হদের কাজ ‍যিনা বা চুরিতে লিপ্ত দেখ (তাহলে তুমি কি করবে?) উত্তরে তিনি বললেন (আপনি শাসক হওয়া সত্ত্বেও) আপনার সাক্ষ্য একজন সাধারন মুসলমানের সাক্ষ্যের মতোই। তিনি [উমর (রাঃ)] বললেন, তুমি ঠিকই বলেছ। উমর (রাঃ) বলেন, যদি মানুষ এরূপ বলবে বলে আশংকা না হতো যে, উমর আল্লাহর কিতাবে নিজের পক্ষ থেকে বৃদ্ধি করেছে, তাহলে আমি নিজ হাতে রজমের আয়াত লিখে দিতাম। মায়েয রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর কাছে চারবার যিনার কথা স্বীকার করেছিলেন, তখন তাকে রজম করার নির্দেশ দেন। আর এরূপ বর্ননা পাওয়া যায়না যে, রাসূলূল্লাহ (সাঃ) উপস্থিত ব্যক্তিদের থেকে সাক্ষ্য গ্রহন করেছেন। হাম্মাদ (রহঃ) বলেন, বিচারকের নিকট কেউ একবার স্বীকার করলে তাকে রজম করা হবে। আর হাকাম (রহঃ) বলেন, চারবার স্বীকার করতে হবে
৬৬৮৩। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আলী ইবনু হুসাইন (রহঃ) থেকে বর্ণিত। উম্মুল মু’মিনীন সাফিয়্যা বিনত হুয়াই (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসেছিলেন। যখন তিনি প্রত্যাবর্তন করছিলেন তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে সাথে হাটছিলেন। এমতাবস্থায় দু’জন আনসারী ব্যাক্তি তার পাশ দিয়ে অতিক্রম করল। তিনি তাঁদেরকে ডাকলেন এবং বললেনঃ এ হচ্ছে সাফিয়্যা। তাঁরা (অবাক হয়ে) বলল, সুবহানাল্লাহ (আমরা কি আপনার ব্যাপারে সন্দেহ করতে পারি?) তিনি বললেনঃ শয়তান বনী আদমের ধমনীতে বিচরণ করে থাকে।

শুআয়ব … সাফিয়্যা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৮৪ | 6684 | ٦٦۸٤

পরিচ্ছদঃ ৩০২৬. দু’জন আমীরের প্রতি শাসনকর্তার নির্দেশ, যখন তাদের কোন স্থানের দায়িত্ব দিয়ে পাঠানো হয়, যেন তারা পরস্পরকে মেনে চলে, বিরোধিতা না করে
৬৬৮৪। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পিতা ও মু’আয ইবনু জাবালকে ইয়ামানে পাঠালেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা সহজ আচরণ করো, কঠোরতা প্রদর্শন করো না, তাদের সুসংবাদ শোনাও, ভীতি প্রদর্শন করো না এবং একে অপরকে মেনে চলো। তখন আবূ মূসা (রাঃ) তাকে বললেন, আমাদের দেশে ‘বিত’ নামক এক প্রকার পানীয় প্রস্তুত করা হয় (যা মধুর সিরকা থেকে তৈরি)। উত্তরে তিনি বললেনঃ প্রত্যেক নেশা সৃষ্টিকারী বস্তুই হারাম।

নাযর আবূ দাঊদ, ইয়াযিদ ইবনু হারুন, ওকী (রহঃ) … সাঈদ এর দাদা আবূ মূসা (রাঃ) সুত্রে এ হাদীসটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৮৫ | 6685 | ٦٦۸۵

পরিচ্ছদঃ ৩০২৭. প্রশাসকের দাওয়াত কবুল করা। উসমান (রাঃ), মুগীরা ইবন শুবা (রাঃ) এর গোলামের দাওয়াত কবুল করেছিলেন।
৬৬৮৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবু মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বন্দীদের মুক্ত কর, আর দাওয়াতকারীর দাওয়াত কবুল কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৮৬ | 6686 | ٦٦۸٦

পরিচ্ছদঃ ৩০২৮. কর্মকর্তাদের হাদিয়া গ্রহন করা
৬৬৮৬। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুমায়দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনী আসাদ গোত্রের ইবনু লুতাবিয়্যা নামক জনৈক ব্যাক্তিকে যাকাত আদায়ের জন্য কর্মচারী বানালেন। সে যখন ফিরে আসল, তখন বলল, এগুলো আপনাদের। আর এগুলো আমাকে হাদিয়া দেওয়া হয়েছে। এ কথা শোনার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরের উপর দাঁড়ালেন। সুফিয়ান কখনো বলেন, তিনি মিম্বরের উপর আরোহণ করলেন এবং আল্লাহর হামদ ও সানা বর্ননা করলেন। এরপর বললেনঃ কর্মকর্তার কি হল! আমি তাকে প্রেরণ করি, তারপর সে ফিরে এসে বলল, এগুলো আপনার, আর এগুলো আমার। সে তার বাপের বাড়ি কিংবা মায়ের বাড়িতে বসে থেকে দেখত যে, তাকে হাদিয়া দেওয়া হয় কিনা?

যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর শপথ! যা কিছুই সে (অবৈধভাবে) গ্রহণ করবে, কিয়ামতের দিন তা কাঁধে বহন করে নিয়ে উপস্থিত হবে। যদি উট হয়, তাহলে তা চিৎকার করবে, যদি গাভী হয় তাহলে তা হাম্বা হাম্বা করবে, অথবা যদি বকরী হয় তাহলে তা ভ্যাঁ ভ্যাঁ করবে। তারপর তিনি উভয় হাত উঠালেন। এমনকি আমরা তার উভয় বগলের শুভ্র ঔজ্জ্বল্য দেখতে পেলাম। তারপর বললেনঃ শোন! আমি কি আল্লাহর কথা পৌছে দিয়েছি? এ কথাটি তিনি তিনবার বললেন।

সুফিয়ান বলেন, আমাদের কাছে যুহরী এ রেওয়ায়াত বর্ণনা করেছেন। তবে হিশাম তার পিতার সুত্রে আবূ হুমায়দ থেকে বর্ণনা করতে আর একটু বাড়িয়ে বলেছেন যে, তিনি (আবূ হুমায়দ) বলেছেন, আমার উভয় কান তা শুনেছে এবং দু’ চোখ তা দেখেছে। যায়িদ ইবনু সাবিতকে জিজ্ঞাসা কর, সেও আমার সাথে শুনেছিল। আমি বললাম, “উভয় কান শুনেছে এবং দু’ চোখ তাকে দেখেছে।” যুহরী এ কথা বলেননি।

[বুখারী (রহঃ) বলেন] خُوَارٌ বলা হয় শব্দকে। আর جُؤَارُ থেকে يحرءون গরুর আওয়াজের মত চিৎকার করা।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৮৭ | 6687 | ٦٦۸۷

পরিচ্ছদঃ ৩০২৯. আযাদকৃত ক্রীতদাসকে বিচারক কিংবা প্রশাসক নিযুক্ত করা
৬৬৮৭। উসমান ইবনু সালিহ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ হুযায়ফার আযাদকৃত দাস সালিম (রাঃ) মসজিদে কুবাতে প্রথম সারির মুহাজেরীন ও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের ইমামতি করতেন। তাদের মাঝে আবূ বকর, উমর, আবূ সালামা, যায়িদ ও আমির ইবনু রাবীআ (রাঃ) ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৮৮ | 6688 | ٦٦۸۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৩০. লোকের জন্য প্রতিনিধি থাকা
৬৬৮৮। ইসমাঈল ইবনু আবূ ওয়ায়স (রহঃ) … উরওয়া ইবনু যুবায়র (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, মারওয়ান ইবনু হাকাম ও মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) তার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, হাওয়াযেনের বন্দীদেরকে আযাদ করে দেওয়ার ব্যাপারে মুসলমানরা যখন সর্বসম্মতিতে এসে অনুমতি দিলেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাদের মধ্যে কে অনুমতি দিয়েছ, আর কে দাওনি, তা আমি বুঝতে পারিনি। অতএব তোমরা ফিরে যাও, তোমাদের প্রতিনিধিরা তোমাদের মতামত নিয়ে আমার কাছে আসবে। লোকেরা ফিরে গেল এবং তাদের প্রতিনিধিরা তাদের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করল। পরে তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ফিরে এসে জানাল যে, লোকেরা খুশী মনে অনুমতি দিয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৮৯ | 6689 | ٦٦۸۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৩১. শাসকের প্রশংসা করা এবং তার নিকট থেকে বেরিয়ে এলে তার বিপরীত কিছু বলা নিন্দনীয়
৬৬৮৯। আবু নুআয়ম (রহঃ) … মুহাম্মদ ইবনু যায়িদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উমর তার পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কতিপয় লোক ইবনু উমর (রাঃ) কে বলল, আমাদের শাসকের নিকট গিয়ে তার এমন কিছু গুনগান করি, যা তার নিকট থেকে বাইরে আসার পর কবিতার চেযে ভিন্নতর। এ কথা শুনে তিনি বললেন, আমরা এটাকেই নিফাক মনে করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৯০ | 6690 | ٦٦۹۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৩১. শাসকের প্রশংসা করা এবং তার নিকট থেকে বেরিয়ে এলে তার বিপরীত কিছু বলা নিন্দনীয়
৬৬৯০। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন। দ্বীমুখী লোকেরা সবচাইতে নিকৃষ্ট, তারা এদের কাছে এক চেহারা নিয়ে উপস্থিত হয় আবার ওদের কাছে আর এক চেহারা নিয়ে উপস্থিত হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৯১ | 6691 | ٦٦۹۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৩২. অনুপস্থিত ব্যক্তির বিচার
৬৬৯১। মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, হিন্দা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলল, আবূ সুফিয়ান (রাঃ) বড়ই কৃপন ব্যাক্তি। অতএব (তার অগোচরে) তার সম্পদ থেকে কিছু নিতে আমি বাধ্য হয়ে পড়ি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার ও সন্তানের যতটুকু প্রয়োজন হয় ন্যায়সঙ্গতভাবে সেই পরিমাণ নিতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৯২ | 6692 | ٦٦۹۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৩৩. যার জন্য বিচারক, তার ভাই এর হক (প্রাপ্য) প্রদান করে, সে যেন তা গ্রহন না করে। কেননা, বিচারকের ফায়সালা হারামকে হালাল এবং হালালকে হারাম করতে পারেনা
৬৬৯২। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … যায়নাব বিনত আবূ সালামা (রহঃ) বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহধর্মিণী উম্মে সালামা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে তার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, একদা তিনি তার হুজরার দরজায় বাদানুবাদের শব্দ শুনতে পেলেন। এরপর তিনি তাদের কাছে এসে বললেনঃ আমি তো একজন মানুষ। আমার নিকট বাদী-বিবাদীরা আসে। হয়ত তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ অন্যের তুলনায় বাকপটু থাকে। আমি তার কথায় হয়ত তাকে সত্যবাদী মনে করি। অতএব আমি তার পক্ষে ফায়সালা করি। কিন্তু আমি যদি অপর কোন মুসলমানের হক কারো জন্য ফায়সালা করি, তাহলে সেটা এক গুচ্ছ আগুন ছাড়া আর কিছু নয়। অতএব সে চাহে তা গ্রহন করুক অথবা তা বর্জন করুক।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৯৩ | 6693 | ٦٦۹۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৩৩. যার জন্য বিচারক, তার ভাই এর হক (প্রাপ্য) প্রদান করে, সে যেন তা গ্রহন না করে। কেননা, বিচারকের ফায়সালা হারামকে হালাল এবং হালালকে হারাম করতে পারেনা
৬৬৯৩। ইসমাঈল (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পত্নী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উতবা ইবনু আবু ওয়াক্কাস তার ভাই সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাসকে এ মর্মে ওসিয়ত করেন যে, যামআ এর বাদীর গর্ভজাত সন্তানটি আমার ঔরস থেকে জন্মলাভ করেছে। অতএব তাকে তুমি তোমার তত্ত্বাবধানে নিয়ে এসো। মক্কা বিজয়ের পরে সা’দ (রাঃ) তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধরলেন এবং বললেন, আমার ভাই এ ছেলের ব্যাপারে আমাকে ওসিয়ত করেছিলেন। আবদ ইবনু যামআ দাঁড়িয়ে বলল, এ আমার ভাই, আমার পিতার বাদীর গর্ভজাত সন্তান। আমার পিতার ঔরসে তার জন্ম। তারপর তারা উভয়েই বিষয়টি নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বিচার প্রার্থী হলেন।

সা’দ বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ আমার ভাইয়ের ছেলে। আমার ভাই এ সম্পর্কে আমাকে ওসিয়ত করে গেছেন। আবদ ইবনু যামআ বলল, এ আমার ভাই, আমার পিতার বাদীর গর্ভজাত সন্তান। আমার পিতার ঔরসেই তার জন্ম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আবদ ইবনু যামআ! এ তোমারই। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সন্তান বিছানার মালিকেরই আর ব্যভিচারীর জন্য পাথর। পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উতবার সাথে এ ছেলেটির সাদৃশ্য লক্ষ্য করার কারণে, সাওদা বিনত যামআ (রাঃ) কে বললেনঃ এর থেকে পর্দা করে চলো। সে জন্য মৃত্যুর পুর্বে সে ছেলে সাওদাকে কোন দিন দেখতে পায়নি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৯৪ | 6694 | ٦٦۹٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৩৪. কুয়া ইত্যাদি সংক্রান্ত বিচার
৬৬৯৪। ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি মাল আত্মসাৎ করার জন্য মিথ্যা কসম করে, সে আল্লাহ তা’আলার সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করবে যে, তিনি তার প্রতি ভীষণ রাগাম্বিত থাকবেন। এ মর্মে আল্লাহ তা’আলা এই আয়াত অবতীর্ণ করেছেনঃ “যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তূচ্ছ মূল্য বিক্রয় করে। (৩ঃ ৭৭) যখন আবদুল্লাহ (রাঃ) তাদেরকে হাদীস বর্ণনা করছিলেন, তখন আশআছ ইবনু কায়স (রাঃ) এলেন এবং বললেন যে এই আয়াতই আমি ও অপর একটি লোক সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে। একটি কুয়ার বিষয়ে যার সাথে আমি বিবাদ করেছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন তোমার কাছে প্রমাণ আছে কি? আমি বললাম, না। তিনি বললেনঃ তাহলে সে কসম করুক। আমি বললাম সে কসম খাবেই। তখন এই আয়াত অবতীর্ন হয়ঃ যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছ মূল্যে বিক্রয় করে …… (৩ঃ ৭৭)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৯৫ | 6695 | ٦٦۹۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৩৫. মাল অল্প হোক আর অধিক, এর বিচার একই। ইবন উয়ায়না ইবন শুবরুমা এর সূত্রে বলেন যে, অল্প সম্পদ ও অধিক সম্পদের বিচারের বিধান একই
৬৬৯৫। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … উম্মু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দরজার পাশে ঝগড়ার শোরগোল শুনতে পেলেন। তাই তিনি তাদের কাছে বেরিয়ে গেলেন এবং বললেনঃ আমি তো একজন মানুষ। বিবদমান ব্যাক্তিরা ফয়সালার জন্য আমার নিকট আসে। হয়ত তাদের কেউ অন্যের তুলনায় অধিক বাকপটু। আমি তার কথার ভিত্তিতে তার পক্ষে ফায়সালা করি এবং আমি মনে করি সে সত্যবাদী। সুতরাং আমি যদি কাউকে অন্য মুসলমানের হকের সাথে ফায়সালা করে দেই তাহলে তা (তার জন্য) একখন্ড আগুন ছাড়া কিছু নয়। সুতরাং সে চাহে তা গ্রহণ করুক অথবা ছেড়ে দিক।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৯৬ | 6696 | ٦٦۹٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৩৬. ইমাম কর্তৃক লোকের মাল ও ভূসম্পদ বিক্রি করা। রাসূলূল্লাহ (সাঃ) নুআয়ম ইবন নাহহামের পক্ষে বিক্রি করেছেন
৬৬৯৬। ইবনু নুমায়র (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সংবাদ পৌছল যে, তাঁর সাহাবীদের একজন তার গোলামকে মৃত্যুর পরে কার্যকর হবে এই শর্তে আযাদ করলেন। অথচ তার এ ছাড়া আর কোন মাল ছিল না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে গোলমটিকে আটশ’ দিরহামের বিনিময়ে বিক্রি করে দেন এবং প্রাপ্তমূল্য তার নিকট পাঠিয়ে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৯৭ | 6697 | ٦٦۹۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৩৭. না জেনে যে ব্যক্তি আমীরের সমালোচনা করে, তার সমালোচনা গ্রহনযোগ্য নয়
৬৬৯৭। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেনাদল প্রেরণ করেন এবং উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) কে তাদের আমীর নিযুক্ত করেন। কিন্তু তার নেতৃত্বের ব্যাপারে সমালোচনা করা হল। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা যদি তার নেতৃত্বের সমালোচনা কর, তোমরা ইতিপূর্বে তার পিতার নেতৃত্বেরও সমালোচনা করেছিলে। আল্লাহর কসম! সে নেতৃত্বের উপযুক্ত ছিল। আর সে ছিল আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয়। আর তারপরে এ হল আমার কাছে সবচাইতে প্রিয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৯৮ | 6698 | ٦٦۹۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৩৮. অত্যন্ত ঝগড়াটে সে, যে সর্বক্ষন ঝগড়ায় লিপ্ত থাকে। لُدًّا عُوجًا অর্থাৎ বক্রতা।
৬৬৯৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর কাছে সবচাইতে ঘৃণ্য ব্যাক্তি হল সে, যে সর্বক্ষণ ঝগড়ায় লিপ্ত থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৬৯৯ | 6699 | ٦٦۹۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৩৯. বিচারক যদি রায় প্রদানের ক্ষেত্রে অবিচার করেন কিংবা আহলে ইলমের মতামতের উল্টো ফায়সালা প্রদান করেন তাহলে তা গ্রহনযোগ্য নয়
৬৬৯৯। মাহমুদ ও নুআয়ম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খালিদ ইবনু ওয়ালীদকে জাযীমা গোত্রের দিকে প্রেরণ করলেন। কিন্তু তারা উত্তমরূপে ‘আমরা ইসলাম গ্রহণ করেছি’ কথাটি বলতে পারল না। বরং বলল, ‘সাবানা’ ‘সাবানা’ (আমরা পুরাতন ধর্ম ত্যাগ করে নতুন ধর্ম গ্রহণ করেছি)। এরপর খালিদ তাদের হত্যা ও বন্দী করতে শুরু করলেন। আর আমাদের প্রত্যেকের কাছে বাদী হাওয়ালা করলেন এবং প্রত্যেককে নিজ বন্দীকে হত্যা করার নির্দেশ দিলেন। আমি বললাম, আল্লাহর কসম! আমি আমার বন্দীকে হত্যা করব না এবং আমার সঙ্গীদের কেউ তার বন্দীকে হত্যা করবে না। এরপর এ ঘটনা আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বর্ণনা করলাম। তখন তিনি বললেনঃ ইয়া আল্লাহ! খালিদ ইবনু ওয়ালীদ যা করেছে তা থেকে আমি আপনার অব্যাহতি কামনা করছি। এ কথাটি তিনি দু’বার বললেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭০০ | 6700 | ٦۷۰۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৪০. ইমামের কোন গোত্রের কাছে গিয়ে তাদের মধ্যে নিষ্পত্তি করে দেওয়া
৬৭০০। আবু নুমান (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বনী আমের গোত্রে (আত্নঘাতী) সংঘর্ষ ছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সংবাদ পৌছল। তিনি যোহরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করার পর তাদের মধ্যে মিমাংসা করার জন্য আসলেন। (আসার সময়) তিনি বিলালকে বললেনঃ যদি সালাত (নামায/নামাজ) এর সময় হয়ে যায় আর আমি এসে না পৌছি, তাহলে আবূ বকরকে বলবে, সে যেন লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে। যখন আসরের সময় হল, বিলাল (রাঃ) আযান দিলেন। অতঃপর ইকামত দিয়ে আবূ বকরকে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে বললেন। আবূ বকর (রাঃ) সামনে গেলেন। আবূ বকর (রাঃ) এর সালাত (নামায/নামাজ)রত অবস্থায়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন এবং মানুষকে ফাঁক করে আবূ বকরের পিছনে দাঁড়ালেন। অর্থাৎ আবূ বকরের সংলগ্ন কাতার পর্যন্ত অগ্রসর হলেন। রাবী বলেন, লোকেরা হাততালি দিল। তিনি আরও বলেন যে, আবূ বকর (রাঃ) যখন সালাত (নামায/নামাজ) শুরু করতেন তখন সালাত (নামায/নামাজ) শেষ না হওয়া পর্যন্ত এদিক-সেদিক তাকাতেন না।

তিনি যখন দেখলেন যে, হাততালি বন্ধ হচ্ছে না তখন তিনি তাকালেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার পিছনে দেখতে পেলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাতের ইশারায় তাকে সালাত (নামায/নামাজ) পুর্ণ করতে বললেন এবং যেভাবে আছো সে ভাবেই থাকতে বললেন। আবূ বকর (রাঃ) কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশের উপর আল্লাহর প্রশংসা করলেন। এরপর পিছনে সরে আসলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অবস্থা দেখে সামনে গেলেন এবং লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। যখন সালাত (নামায/নামাজ) শেষ হল, তখন তিনি আবূ বকরকে বললেনঃ আমি যখন তোমাকে ইশারা করলাম, তখন তোমায় কি জিনিস বাধা দিল যে, তুমি সালাত (নামায/নামাজ) পূর্ন করলে না। তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইমামত করার দুঃসাহস ইবনু আবূ কুহাফার কখনই নেই। এরপর তিনি লোকদের বললেনঃ সালাতে তোমাদের কোনরূপ জটিলতা সৃষ্টি হলে পুরুষরা সুবহানাল্লাহ বলবে আর নারীরা হাতের উপর হাত মেরে আওয়াজ দেবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭০১ | 6701 | ٦۷۰۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৪১. লিপিবদ্ধকারীকে আমানতদার ও বুদ্ধিমান হওয়া বাঞ্ছনীয়
৬৭০১। আবূ সাবিত মুহাম্মাদ ইবনু উবায়দুল্লাহ (রহঃ) … যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আবূ বকর (রাঃ) আমার নিকট লোক পাঠালেন, ইয়ামামার যুদ্ধে শাহাদত বরণকারীদের কারণে তখন তার কাছে উমর (রাঃ)-ও উপস্থিত ছিলেন। আবূ বকর (রাঃ) বললেন, উমর (রাঃ) আমার কাছে এসে বলেছেন যে, কুরআনের বহু সংখ্যক হাফিয ইয়ামামার যুদ্ধে শহীদ হয়েছে। এজন্য আমার ভয় হচ্ছে যে, আরো অনেক স্থানে যদি কুরআনের হাফিযগণ এরূপ ব্যাপক হারে শহীদ হন তাহলে কুরআনের বহু অংশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। সুতরাং আমি মনে করি যে, আপনি কুরআন সংকলনের নির্দেশ দিন। আমি বললাম, কি করে আমি এমন কাজ করব যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেননি। উমর (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! এটা একটা ভাল কাজ। উমর (রাঃ) আমাকে এ ব্যাপারে বারবার বলছিলেন। এক পর্যায়ে আল্লাহ তা’আলা এ বিষয়ে আমার অন্তরে প্রশান্তি দান করলেন। যে বিষয়ে তিনি উমর (রাঃ) এর অন্তরেও প্রশান্তি দান করেছিলেন এবং আমিও এ বিষয়ে একমত পোযণ করলাম যা উমর (রাঃ) মত পোষন করেছিলেন।

যায়িদ (রাঃ) বলেন যে, এরপর আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ তুমি একজন বুদ্ধিদীপ্ত যুবক, তোমার ব্যাপারে আমাদের কোন অভিযোগ নেই। তাছাড়া তুমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওহী লিপিবদ্ধ করতে। সুতরাং কুরআনকে তুমি অনুসন্ধান কর এবং তা একত্রিত কর। যায়িদ (রাঃ) বলেন, আল্লাহর শপথ! কুরআন সংগ্রহ করে একত্রিত করার আদেশ না দিয়ে যদি আমাকে একটি পাহাড়কে সরিয়ে নেওয়ার গুরু ভার অর্পণ করতো, তাও আমার জন্য ভারী মনে হত না। আমি বললাম, কি করে আপনারা এমন একটি কাজ করবেন যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম করেননি। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর শপথ! এটি একটি ভাল কাজ। আমার পক্ষ থেকে এ কথা বারবার উন্থাপিত হতে থাকল। এক পর্যায়ে আল্লাহ তা’আলা আমার অন্তরে প্রশান্তি দান করলেন, যে বিষয়ে আবূ বকর (রাঃ) ও উমর (রাঃ)-এর অন্তরে প্রশান্তি দান করেছিলেন। এবং তারা যা ভাল মনে করলেন আমিও তা ভাল মনে করলাম।

সুতরাং আমি কুরআন অনুসন্ধান করতে শুরু করলাম। খেজুরের ডাল, পাতলা চামড়ার টুকরা, শ্বেত পাথর ও মানুষের অন্তঃকরণ থেকে আমি কুরআনকে একত্রিত করলাম। সুরা তাওবার শেষ অংশ ‏لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ‏ إِلَى آخِرِهَا “তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের কাছে এক রাসুল এসেছেন …” (৯ঃ ১২৮) থেকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত এই অংশটুকু খুযায়মা কিংবা আবূ খুযায়মার কাছে পেলাম। আমি তা সূরার সাথে সংযোজন করলাম। কুরআনের এই সংকলিত সহীফাগুলো আবূ বকরের জীবনকাল পর্যন্ত তাঁর কাছে ছিল। এরপর আল্লাহ তা’আলা তাকে ওফাত দিলেন। পরে উমরের জীবনকাল পর্যন্ত তার নিকট ছিল। তাঁর মৃত্যুর পর তা হাফসা বিনত উমর (রাঃ) এর কাছে ছিল। মুহাম্মদ ইবনু উবায়দুল্লাহ বলেনঃ হাদীসে ব্যবহাত اللِّخَافُ অর্থ হল চাঁড়া।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭০২ | 6702 | ٦۷۰۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৪২. শাসকের পত্র কর্মকর্তাদের প্রতি এবং বিচারকের পত্র সচিবদের প্রতি
৬৭০২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ ও ইসমাঈল (রহঃ) … সাহল ইবনু আবূ হাসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ও তাঁর গোত্রের কতিপয় বড় বড় ব্যাক্তি বর্ণনা করেন যে, আবদুল্লাহ ইবনু সাহল ও মুহাইয়াসা ক্ষুধায় আক্রান্ত হয়ে খায়বারে আসেন। একদা মুহাইয়াসা জানতে পারেন যে, আবদুল্লাহ নিহত হয়েছে এবং তার লাশ একটি গর্তে অথবা কূপে ফেলে দেওয়া হয়েছে। তখন তিনি ইহুদীদের কাছে এসে বললেন, আল্লাহর শপথ! নিঃসন্দেহে তোমরাই তাকে হত্যা করেছ। তারা বলল, আল্লাহর কসম করে বলছি, আমরা তাকে হত্যা করিনি। তারপর তিনি তার গোত্রের নিকট এসে এ ঘটনা বর্ণনা করলেন। পরে তিনি, তার বড় ভাই হুওয়াইয়াসা এবং আবদুর রহমান ইবনু সাহল আসলেন। মুহাইয়াসা যিনি খায়বারে ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে এ ঘটনা বলার জন্য অগ্রসর হলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বড়কে কথা বলতে দাও, বড়কে কথা বলতে দাও। তিনি এতে উদ্দেশ্য করেছেন বয়সে প্রবীণকে।

তখন হুওয়াইয়াসা প্রথমে ঘটনা বর্ণনা করলেন। এরপর কথা বললেন, মুহাইয়াসা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হয়ত তারা তোমাদের মৃত সঙ্গীর রক্তপণ আদায় করবে, না হয় তাদের সাথে যুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে এ মর্মে চিঠি লিখলেন। জবাবে তাদের পক্ষ থেকে লেখা হল যে, আমরা তাকে হত্যা করিনি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হুওয়াইয়াসা, মুহাইয়াসা ও আবদুর রহমানকে বললেনঃ তোমরা কি কসম খেয়ে বলতে পারবে? তাহলে তোমরা তোমাদের সাথীর রক্তপণের অধিকারী হতে পারবে। তারা বলল, না। তিনি বললেনঃ তাহলে ইহুদীরা কি তোমাদের সামনে কসম করবে? তাঁরা বলল, এরা তো মুসলিম নয়। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের পক্ষ থেকে একশ, উট রক্তপণ হিসাবে আদায় করে দিলেন। শেষ পর্যন্ত উটগুলোকে ঘরে প্রবেশ করানো হল। সাহল বলেন, একটি উট আমাকে লাথি মেরেছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭০৩ | 6703 | ٦۷۰۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৩. কোন বিষয়ের তদন্ত করার জন্য প্রশাসকের পক্ষ থেকে একজন মাত্র লোককে পাঠানো বৈধ কিনা?
৬৭০৩। আদম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা ও যায়িদ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বর্ননা করেন যে, একজন বেদুঈন এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে বিচার করুন। তার বিবাদী পক্ষ দাঁড়িয়ে বলল, সে ঠিকই বলছে। আপনি আমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে ফায়সালা করুন। তারপর বেদুঈন বলল যে, আমার ছেলে এই লোকটির এখানে মজুর হিসাবে কাজ করত। সে তার স্ত্রীর সাথে যিনা করে ফেলেছে। লোকেরা আমাকে বলল তোমার ছেলেকে রজম (প্রস্তরঘাতে হত্যার দণ্ড) করা হবে। আমি একশ’ বকরী ও একটি দাসী দিয়ে আমার ছেলেকে তার থেকে মুক্ত করে এনেছি।

পরে আমি এ বিষয়ে আলেমদের জিজ্ঞাসা করলে তাঁরা বললেন, তোমার পুত্রকে একশ’ বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তরের শাস্তি ভোগ করতে হবে। (এ শুনে) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি অবশ্যই আল্লাহর কিতাবের ভিত্তিতে তোমাদের মাঝে ফায়সালা করব। দাসী ও বকরীগুলো তুমি ফেরত পাবে। আর তোমার ছেলেকে একশ’ বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তরের শাস্তি ভোগ করতে হবে। হে উনায়স! তুমি কাল এ লোকের স্ত্রীর নিকট যাও এবং তাকে রজম কর। অতঃপর উনায়স সেই স্ত্রী লোকের কাছে গিয়ে তাকে রজম করল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭০৪ | 6704 | ٦۷۰٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৪. প্রশাসকদের দোভাষী নিয়োগ করা এবং একজন মাত্র দোভাষী নিয়োগ বৈধ কিনা? খারিজা ইবন যায়িদ ইবন সাবিত (রঃ) ….. যায়িদ ইবন সাবিত (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, রাসূলূল্লাহ (সাঃ) তাকে ইহুদীদের লিখন পদ্ধতি শিক্ষা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, যার ফলে আমি রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর পক্ষ থেকে তাঁর চিঠিপত্র লিখতাম এবং তারা কোন চিঠিপত্র লিখলে তা তাকে পাঠ করে শোনাতাম্। উমর (রাঃ) বললেন, তখন তাঁর কাছে উপস্থিত ছিলেন আলী, আবদুর রহমান ও উসমান (রাঃ)। এই স্ত্রীলোকটি কি বলছে? আবদুর রহমান ইবন হাতিব বলেন, আমি বললাম, স্ত্রীলোকটি তার এক সঙ্গী সম্পর্কে আপনার নিকট অভিযোগ করছে যে, সে তার সাথে অপকর্ম করেছে। আবু জামরা বলেন, আমি ইবন আব্বাস (রাঃ) ও লোকদের মধ্যে দোভাষীর কাজ করতাম। আর কেউ কেউ বলেছেন, প্রত্যেক প্রশাসকের জন্য দু’জন করে দোভাষী থাকা অত্যাবশ্যকীয়
৬৭০৪। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ সুফিয়ান ইবনু হারব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, কুরাইশদের কাফেলা নিয়ে অবস্থানকালে সম্রাট হিরাক্লিয়াস তাকে ডেকে পাঠালেন। এরপর সম্রাট তার দোভাষীকে বললেন, তাদেরকে বল যে, আমি এ লোকটিকে কিছু প্রশ্ন করতে চাই। যদি সে আমার সাথে মিথ্যা বলে তাহলে তারা যেন তাকে মিথ্যাবাদী বলে। তারপর দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন। পরে হিরাক্লিয়াস তার দোভাষীকে বললেন, একে বলে দাও যে, সে যা বলেছে তা যদি সত্য হয়, তাহলে তিনি (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) শীঘ্রই আমার পদতলের ভূমিরও মালিক হবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭০৫ | 6705 | ٦۷۰۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৫. শাসনকর্তা (কর্তৃক) কর্মচারীদের জবাবদিহি নেওয়া
৬৭০৫। মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুমায়দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবনু লুতাবিয়্যাকে বনী সুলায়ম এর সাদাকা আদায়ের জন্য নিয়োগ করলেন। যখন সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফিরে আসল এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে জবাবদিহি করলেন, তখন সে বলল, এই অংশ আপনাদের আর এগুলো হাদিয়ার মাল যা আমাকে হাদিয়া হিসাবে দেওয়া হয়েছে তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার কথা যদি সত্যি হয় তাহলে তুমি তোমার বাবার ঘরে ও মায়ের ঘরে কেন বসে থাকলে না, যাতে তোমার হাদিয়া তোমার কাছে আসে? এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে দাঁড়ালেন এবং লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। তিনি আল্লাহর প্রশংসা ও গুনগান করলেন। তারপর তিনি বললেনঃ এরপর আল্লাহ তা’আলা আমার উপর যেসব দায়িত্ব ন্যাস্ত করেছেন তন্মধ্য হতে কিছু কিছু কাজের জন্য তোমাদের কতিপয় লোককে নিযুক্ত করে থাকি।

তাদের মধ্যে কেউ কেউ এসে বলে এই অংশ আপনাদের আর এই অংশ হাদিয়া যা আমাকে প্রদান করা হয়েছে। যদি তার কথা সত্য হয় তাহলে সে তার বাবার ঘরে ও মায়ের ঘরে কেন বসে থাকল না, যাতে তার হাদিয়া তার কাছে আসে? আল্লাহব শপথ! তোমাদের কেউ যেন তা থেকে অন্যায়ভাবে কিছু গ্রহণ না করে। অন্যথায় সে কিয়ামতের দিন তা বহন করে আল্লাহর কাছে আসবে। সাবধান! আমি অবশ্যই চিনতে পারব যা নিয়ে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। এক ব্যাক্তি উট নিয়ে আসবে যা চিৎকার করতে থাকবে অথবা গরু নিয়ে আসবে যে গরুটি হাম্বা হাম্বা করতে থাকবে, অথবা বকরী নিয়ে আসবে যে বকরী ভ্যাঁ ভ্যাঁ করতে থাকবে। তারপর তিনি দু’হস্তদ্বয় উপরের দিকে এতটুকু উত্তোলন করলেন যে, আমি তার বগলের উজ্জ্বল শুভ্রতা দেখতে পেলাম। এবং বললেনঃ শোন! আমি কি (আল্লাহর বিধান তোমাদের নিকট) পৌছিয়েছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭০৬ | 6706 | ٦۷۰٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৬. রাষ্ট্রপ্রধানের একান্ত ব্যক্তি ও পরামর্শদাতা। بِطَانَةُ শব্দটি دخلاء এর অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে (অর্থাৎ, ‍যিনি একান্তে বসে রাষ্ট্রপ্রধানের সাথে কথোপকথন করেন এবং তাঁর অজ্ঞাত বিষয় সম্পর্কে তাঁকে অবগত করেন এবং তিনিও গোপন কথা তাকে বলেন ও বিশ্বাস করেন)
৬৭০৬। আসবাগ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা কবেন। তিনি বলেন, আল্লাহ যাকেই নাবী হিসাবে প্রেরণ করেন এবং যাকেই খলীফা হিসাবে নিযুক্ত করেন, তার জন্য দু’জন করে (একান্ত) গুপ্তচর থাকে। একজন গুপ্তচর তাকে ভাল কাজের নির্দেশ দেয় এবং তাকে তৎপ্রতি অনুপ্রাণিত করে। আর একজন গুপ্তচর তাকে মন্দ কাজের পরামর্শ দেয় এবং তৎপ্রতি উৎসাহিত করে। সুতরাং মাসুম ঐ ব্যাক্তই যাকে আল্লাহ তাআলা রক্ষা করেন।

সূলায়মান ইবনু শিহাব থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেন এবং ইবনু আবু আতীক ও মূসার সুত্রে ইবনু শিহাব থেকে অনুরূপ একটি হাদীস বর্ণনা করেন। তাছাড়া শুআয়ব (রহঃ)-ও আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেন। আওযায়ী ও মুআবিয়া ইবনু সাল্লাম (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেন। ইবনু আবূ হুসাইন ও সাঈদ ইবনু যিয়াদ (রহঃ)-ও আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। উবায়দুল্লাহ ইবনু আবূ জাফর (রহঃ) আবূ অইউব (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭০৭ | 6707 | ٦۷۰۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৭. রাষ্ট্রপ্রধান কিভাবে জনগনের কাছ থেকে বায়’আত গ্রহন করবেন
৬৭০৭। ইসমাঈল (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ মর্মে বায়আত গ্রহণ করলাম যে, সুখে দুঃখে সর্বাবস্থায় আমরা তাঁর কথা শুনব ও তার আনুগত্য করব। রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধাচরণ করব না। যেখানেই থাকি না কেন সর্বদা সত্যের উপর অবিচল থাকব কিংবা বলেছিলেন সর্বদা সত্য কথা বলব এবং আল্লাহর পথে কোন নিন্দাকারীর নিন্দার ভয় করব না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭০৮ | 6708 | ٦۷۰۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৭. রাষ্ট্রপ্রধান কিভাবে জনগনের কাছ থেকে বায়’আত গ্রহন করবেন
৬৭০৮। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শীতের এক সকালে বের হলেন। মুহাজির ও আনসাররা তখন খন্দক (পরিখা) খননের কাজে লিপ্ত ছিল। তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আখেরাতের কল্যাণই তো প্রকৃত কল্যাণ, অতএব তুমি আনসার ও মুহাজিরদের ক্ষমা করে দাও। তারা এর জবাবে বলল, আমরাও সেই জামাআত যারা আমরণ জিহাদ করার জন্য মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে বায়আত গ্রহণ করেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭০৯ | 6709 | ٦۷۰۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৭. রাষ্ট্রপ্রধান কিভাবে জনগনের কাছ থেকে বায়’আত গ্রহন করবেন
৬৭০৯। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাঁর কথা শোনা ও তার আনুগত্যের বায়আত গ্রহণ করতাম। তখন তিনি আমাদের বলতেনঃ যা তোমার সাধ্যের মধ্যে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭১০ | 6710 | ٦۷۱۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৭. রাষ্ট্রপ্রধান কিভাবে জনগনের কাছ থেকে বায়’আত গ্রহন করবেন
৬৭১০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু দ্বীনার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকেরা যখন আবদুল মালিকের খিলাফতের ব্যাপারে ঐকমতে পৌছল, তখন আমি ইবনু উমর (রাঃ) এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি পত্র লিখলেন যে, আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের আদর্শ অনুসারে আল্লাহর বান্দা, আমীরুল মুমিনীন আবদুল মালিকের কথা যথাসাধ্য শোনা ও তার আনুগত্য করার অঙ্গীকার করছি। আমার সন্তানরাও অনুরূপ অঙ্গীকার করছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭১১ | 6711 | ٦۷۱۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৭. রাষ্ট্রপ্রধান কিভাবে জনগনের কাছ থেকে বায়’আত গ্রহন করবেন
৬৭১১। ইয়াকুব ইবনু ইররাহীম (রহঃ) … জারীর ইবন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তার কথা শোনা ও তাঁর আনুগত্য করা ও প্রত্যেক মুসলমানের জন্য কল্যাণ কামনার ব্যাপারে বায়আত গ্রহণ করলাম। তিনি আমাকে এ কথা বলতে শিখিয়ে দিলেন যে, আমার সাধ্যের আওতাভুক্ত বিষয়ে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭১২ | 6712 | ٦۷۱۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৭. রাষ্ট্রপ্রধান কিভাবে জনগনের কাছ থেকে বায়’আত গ্রহন করবেন
৬৭১২। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু দ্বীনার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন লোকেরা আবদুল মালিকের কাছে বায়আত গ্রহন করল, তখন আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) তার কাছে চিঠি লিখলেন। আল্লাহর বান্দা, আবদুল মালিক, আমীরুল মুমিনীনের প্রতি! আমি আমার সাধ্যের আওতাভুক্ত বিষয়ে আল্লাহ ও তার রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশিত পন্থায় তাঁর কথা শোনা ও তার আনুগত্য করার অঙ্গীকার করছি আর আমার সন্তানরাও অনুরূপ অঙ্গীকার করছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭১৩ | 6713 | ٦۷۱۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৭. রাষ্ট্রপ্রধান কিভাবে জনগনের কাছ থেকে বায়’আত গ্রহন করবেন
৬৭১৩। আবদুল্লাহ ইরন মাসলামা (রহঃ) … ইয়াযীদ ইবনু আবূ উবায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সালামাকে জিজ্ঞাসা করলাম, হুদায়বিয়ার দিন আপনারা কোন বিষয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বায়’আত করেছিলেন? তিনি বললেনঃ মৃত্যুর উপর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭১৪ | 6714 | ٦۷۱٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৭. রাষ্ট্রপ্রধান কিভাবে জনগনের কাছ থেকে বায়’আত গ্রহন করবেন
৬৭১৪। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ ইবনু আসমা (রহঃ) … মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর (রাঃ) যে দলটিকে খলীফা নির্বাচনের ব্যাপারে দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তাঁরা একত্রিত হয়ে নিজেদের মধ্যে এ ব্যাপারে পরামর্শ করলেন। আবদুর রহমান (রাঃ) তাদেরকে বললেন, আমি তো এমন ব্যাক্তি নই যে এ ব্যাপারে প্রত্যাশা করব। তবে আপনারা যদি চান তাহলে আপনাদের থেকে একজনকে আমি নির্বাচিত করে দিতে পারি। তাঁরা এ দায়িত্ব আবদুর রহমানের উপর অর্পণ করলেন, যখন তারা এ বিষয়টি আবদুর রহমানের উপর অর্পন করলেন, তখন সকল লোক আবদুর রহমানের প্রতি ঝুঁকে পড়ল। এমনকি আমি একজন লোককেও সেই দলের অনুসরণ করতে কিংবা তাদের পিছনে যেতে দেখলাম না। লোকেরা আবদুর রহমানের প্রতিই ঝুঁকে পড়ল এবং কয়েক রাত তাঁর সাথে পরামর্শ করতে থাকল।

অবশেষে সেই রাত আসল, যে রাতের শেষে আমরা উসমান (রাঃ) এর হাতে বায়আত গ্রহণ করলাম। মিসওয়ার (রাঃ) বলেন, রাতের একাংশ অতিবাহিত হওয়ার পর আবদুর রহমান (রাঃ) আমার কাছে আসলেন এবং দরজা খটখটালেন। ফলে আমি জাগ্রত হয়ে গেলাম। তিনি বললেন, তোমাকে দেখছি ঘুমাচ্ছ আল্লাহর কসম! আমি এ তিন রাতের মাঝে খুব একটা ঘুমাতে পারিনি। যাও, যুবায়র ও সা’দকে ডেকে আন। আমি তাদেরকে তার কাছে ডেকে আনি। তিনি তাদের দু’জনের সাথে পরামর্শ করলেন। তারপর আমাকে আবার ডেকে বললেন, আলীকে আমার কাছে ডেকে আন। আমি তাঁকে ডেকে আনলাম। তিনি তাঁর সাথে অর্ধেক রাত পর্যন্ত চুপিচুপি পরামর্শ করলেন।

তারপর আলী (রাঃ) তার কাছ থেকে উঠে গেলেন। তবে তিনি আশাবাদী ছিলেন। আর আবদুর রহমান (রাঃ) আলী (রাঃ) থেকে কিছু (বিরোধিতার) আশংকা করছিলেন। তারপর তিনি বললেনঃ উসমানকে আমার কাছে ডেকে আন। তিনি তাঁর সাথে চুপিচুপি আলাপ করলেন। ফজরের সময় মু’আযযিন তাদের উভয়কে পৃথক করল অর্থাৎ আযান পর্যন্ত আলাপ করলেন লোকদেরকে যখন ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) পড়িয়ে দেয়া হলো এবং সেই দলটি মিম্বরের কাছে একত্রিত হলো তখন তিনি মুহাজির ও আনসারদের যারা উপস্থিত ছিলেন তাদেরকে ডেকে আনতে পাঠালেন এবং প্রত্যেক সেনা প্রধানকেও ডেকে আনতে পাঠালেন এবং এরা সবাই উমরের সাথে গত হাজ্জে (হজ্জ) অংশগ্রণ করেছিলেন।

যখন সকলে এসে সমবেত হল, তখন আবদুর রহমান (রাঃ) ভাষণ শুরু করলেন। তারপর বললেন, হে আলী! আমি জনমত পরীক্ষা করেছি, তারা উসমানের সমকক্ষ কাউকে মনে করে না। সুতরাং তুমি তোমার জন্য অন্য পথ অবলম্বন করো না। তখন তিনি আলী ও উসমান (রাঃ) কে সন্বোধন করে বললেন, আমি আল্লাহর নির্দেশ ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশিত পরায় ও তারপরবর্তী উভয় খলীফার আদর্শানুযায়ী আপনার নিকট বায়আত গ্রহণ করছি। তারপর আবদুর রহমান (রাঃ) তাঁর কাছে বায়আত গ্রহন করলেন। এরপর মুহাজির, আনসার, সেনাপ্রধান এবং সাধারণ মুসলমান তাঁর কাছে বায়াআত গ্রহণ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭১৫ | 6715 | ٦۷۱۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৮. যে ব্যক্তি দু’বার বায়আত গ্রহন করে
৬৭১৫। আবূ আসিম (রহঃ) … সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বৃক্ষের নিচে বায়আত (বায়আতে রিদওয়ান) গ্রহণ করেছিলাম। পরে তিনি আমাকে বললেনঃ হে সালামা! তুমি বায়’আত গ্রহণ করবে না? আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি তো প্রথমবার বায়আত গ্রহন করেছি। তিনি বললেনঃ দ্বিতীয়বারও গ্রহণ কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭১৬ | 6716 | ٦۷۱٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৪৯. বেদুঈনদের বায়আত গ্রহন
৬৭১৬। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … জাবির ইবন আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক বেদুইন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ইসলামের বায়আত গ্রহন করল। তারপর সে জ্বরে আক্রান্ত হল। তখন সে বলল, আমার বায়’আত প্রত্যাহার করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা করতে অস্বীকৃতি জানালেন। সে পুনরায় তার কাছে আসল। তিনি পুনরায় অস্বীকৃতি জানালেন। সে পুনরায় তার কাছে এসে বলল, আমার বায়’আত ফেরত নিন। তিনি আবারও অস্বীকৃতি জানালেন। তখন সে বেরিয়ে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মদিনা (কামারের) হাঁপরের ন্যায়, সে তার মধ্যকার আবর্জনাকে দূরীভূত করে এবং খাঁটিটুকু ধরে রাখে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭১৭ | 6717 | ٦۷۱۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৫০. বালকদের বায়আত গ্রহন
৬৭১৭। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাক্ষাত লাভ করেছেন। তার মা যয়নব বিনত হুমায়দ (রাঃ) তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে গিয়ে বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! একে বায়াআত করুন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন?, সে তো ছোট। তিনি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন এবং তার জন্য দোয়া করলেন। এই আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাঃ) তার পরিবারের সকলের পক্ষ থেকে একটি বকরী কুরবানী করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭১৮ | 6718 | ٦۷۱۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৫১. কারো হাতে বায়আত গ্রহন করার পর অত:পর তা প্রত্যাহার করা
৬৮১৮। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক বেদুঈন এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে ইসলামের বায়আত গ্রহণ করল। মদিনায় সে জ্বরে আক্রান্ত হল। তখন সেই বেদুঈন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার বায়আত প্রত্যাহার করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অম্বীকৃতি জানালেন। সে পুনরায় এসে বলল, আমার বায়’আত প্রত্যাহার করুন। তিনি এবারও অম্বীকৃতি জানালেন। সে পুনরায় এসে বলল, আমার বায়আত প্রত্যাহার করুন। তিনি অম্বীকৃতি জানালেন। তখন বেদুঈন বেরিয়ে গেল। অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মদিনা হল কামারের হাপরের ন্যায়, যে তার মধ্যকার আবর্জনাকে বিদুরিত করে এবং খাঁটিটুকু ধরে রাখে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭১৯ | 6719 | ٦۷۱۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৫২. কেবলমাত্র দুনিয়ার স্বার্থে কারো বায়’আত গ্রহন করা
৬৭১৯। আবদান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন ধরনের লোকের সাথে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা কথাও বলবেন না এবং তাদেরকে পবিত্রও করবেন না, আর তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি। (এক) সে ব্যাক্তি, যে বাস্তার পার্শ্বে অতিরিক্ত পানির অধিকারী কিন্তু মুসাফিরকে তা থেকে পান করতে দেয় না। (দুই) সে লোক যে কেবলমাত্র দুনিয়ার সার্থে ইমামের বায়’আত গ্রহণ করে। (বাদশাহ) যদি তার মনোকামনা পূর্ণ করে তাহলে সে তার বায়আত পূর্ণ করে। আর যদি তা না হয়, তাহলে বায়আত ভঙ্গ করে। (তিন) সে ব্যাক্তি যে আসরের পর অন্য লোকের নিকট দ্রব্য সামগ্রী বিক্রয় করতে যেয়ে এরূপ কসম খায় যে, আল্লাহর শপথ! এটা এত টাকা দাম হয়েছে। তাকে বিশ্বাস করে সে দ্রব্য ক্রয় করে নিয়ে যায়। অথচ সে দ্রব্যের এত দাম দেওয়া হয়নি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭২০ | 6720 | ٦۷۲۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৩. স্ত্রীলোকদের বায়’আত গ্রহন। এ বিষয়টি ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে
৬৭২০। আবুল ইয়ামান (রহঃ) ও লাইছ (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা এক মজলিসে বসা ছিলাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বললেনঃ তোমরা আমার নিকট এ মর্মে বায়’আত গ্রহণ কর যে, আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করবে না, চুরি করবে না, যিনা করবে না; তোমাদের সন্তানদের হত্যা করবে না এবং কাউকে এরূপ মিথ্যা অপবাদ দেবে না, যা তোমাদেরই গড়া আর শরীয়ত সন্মত কাজে আমার নাফরমানী করবে না। তোমাদের মধ্যে যারা এই অঙ্গীকার পূর্ণ করবে, তার প্রতিদান আল্লাহর কাছে। আর যারা এর কোন একটি করবে এবং দুনিয়ায় এ কারনে তাকে শাস্তি প্রদান করা হবে, তাহলে এটা তার কাফফারা (পাপ মোচন) হয়ে যাবে। আর যদি কেউ এর কোন একটি অপরাধ করে ফেলে আর আল্লাহ তা গোপন করে রাখেন, তাহলে তার বিযয়াটি আল্লাহর উপর ন্যাস্ত থাকবে। তিনি ইচ্ছা করলে তাকে শাস্তি দিবেন আর ইচ্ছা করলে তাকে মাফ করে দিবেন। এরপর আমরা এর উপর বায়’আত গ্রহন করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭২১ | 6721 | ٦۷۲۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৩. স্ত্রীলোকদের বায়’আত গ্রহন। এ বিষয়টি ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে
৬৭২১। মাহমুদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম “আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করো না” এই আয়াত পাঠ করে স্ত্রীলোকদের কাছ থেকে বায়আত নিতেন। তিনি আরও বলেন, বৈধ অধিকার প্রাপ্ত মহিলা ছাড়া রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাত অন্য কোন স্ত্রী লোকের হাত স্পর্শ করেনি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭২২ | 6722 | ٦۷۲۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৩. স্ত্রীলোকদের বায়’আত গ্রহন। এ বিষয়টি ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে
৬৭২২। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বায়আত গ্রহন করলাম। তিনি আমার সামনে পাঠ করলেনঃ স্ত্রীলোকেরা যেন আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক না করে। এবং তিনি আমাদেরকে বিলাপ করতে নিষেধ করলেন। এমতাবস্থায় আমাদের মধ্য থেকে একজন স্ত্রীলোক তার হাত গুটিয়ে নিল এবং বলল, অমুক স্ত্রীলোক একবার আমার সাথে বিলাপে সহযোগিতা করেছে। সুতরাং আমি তার প্রতিদান দেওয়ার ইচ্ছা রাখি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু বললেন না। স্ত্রীলোকটি চলে গেল এবং পরে এসে বায়আত গ্রহন করল। তবে তাদের মধ্যে উম্মু সুলায়ম, উম্মুল আলা, আর মু’আয (রাঃ) এর স্ত্রী আবূ সাবরা এর কন্যা, কিংবা বলেছিলেন, আবূ সাবরা এর কন্যা ও মু’আয এর স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোন স্ত্রীলোক এই অঙ্গীকার পূর্ণ করেনি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭২৩ | 6723 | ٦۷۲۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৪. যে ব্যক্তি বায়’আত ভঙ্গ করে। মহান আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যারা তোমার বায়’আত গ্রহন করে তারাও মহান আল্লাহরই বায়’আত গ্রহন করে……. (৪৮ঃ ১০)
৬৭২৩। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক বেদুঈন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, ইসলামের উপর আমার বায়আত নিন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসলামের উপর তার বায়আত নিলেন। পরদিন সে জ্বরাক্রান্ত অবস্থায় এসে বলল, আমার বায়আত প্রত্যাহার করুন। তিনি অম্বীকৃতি জানালেন। যখন সে চলে গেল, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মদিনা কামারের হাপরের ন্যায়, সে তার মধ্যকার আবর্জনাকে বের করে এবং খাঁটিটুকু ধরে রাখে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭২৪ | 6724 | ٦۷۲٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৫. খলীফা বানানো
৬৭২৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) একদিন বললেন, হায়! আমার মাথা। (এ কথা শুনে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমার জীবদ্দশায় যদি তা ঘটে, তাহলে আমি তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করব এবং তোমার জন্য দোয়া করব। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ হায় সর্বনাশ! আল্লাহর শপথ! আমার মনে হয় আপনি আমার মৃত্যু পছন্দ করছেন। হ্যাঁ, যদি এমনটি হয়, তাহলে আপনি সেদিনের শেষে অপর কোন স্ত্রীর সাথে বাসর যাপন করবেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি বলছি আক্ষেপ আমার মাথা ব্যথা। অথচ আমি সংকল্প করেছি কিংবা রাবী বলেছেন, ইচ্ছে করেছি যে, আবূ বকর ও তার পূত্রের কাছে লোক পাঠাব এবং (তার খিলাফতের) অসিয়্যাত করে যাব, যাতে এ ব্যাপারে কেউ কিছু বলতে না পারে। কিংবা কোন প্রত্যাশী এ ব্যাপারে কোনরূপ প্রত্যাশা করতে না পারে। (কিন্তু ভেবে চিন্তে) পরে বললাম (আবূ বকরের পরিবর্তে অন্য কারো খলীফা হওয়ার বিষয়টি) আল্লাহ তা অস্বীকার করবেন এবং মুমিনরাও তা প্রত্যাখ্যান করবে। কিংবা বলেছিলেন, আল্লাহ প্রত্যাখ্যান করবেন এবং মু’মিনরা তা অস্বীকার করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭২৫ | 6725 | ٦۷۲۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৫. খলীফা বানানো
৬৭২৫। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর (রাঃ) কে বলা হল, আপনি কি (আপনার পরবর্তী) খলীফা মনোনীত করে যাবেন না? তিনি বললেন, যদি আমি খলীফা মনোনীত করি, তাহলে আমার চেয়ে যিনি শ্রেষ্ট ছিলেন তিনি খলীফা মনোনীত করে গিয়ে ছিলেন, অর্থাৎ আবূ বকর। আর যদি মনোনীত না করি, তাহলে আমার চেয়ে যিনি শ্রেষ্ট্র ছিলেন তিনি খলীফা মনোনীত করে যাননি। অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এতে লোকেরা তার প্রশংসা করল। তারপর তিনি বললেন, কেউ এ ব্যাপারে আকাঙ্ক্ষী আর কেউ ভীত। আর আমি পছন্দ করি আমি যেন এ থেকে মুক্তি পাই সমানে সমান, না পুরস্কার না শাস্তি। আমি জীবদ্দশায় ও মৃত্যুর পরে এর দায়িত্ব বহন করতে পারব না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭২৬ | 6726 | ٦۷۲٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৫. খলীফা বানানো
৬৭২৬। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি উমর (রাঃ) এর দ্বিতীয় ভাষণটি শুনেছেন যা তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের পরদিন মিম্বরে বসে দিয়েছিলেন। তিনি ভাষণ শুরু করলেন, তখন আবূ বকর (রাঃ) কোন কথা না বলে চুপ রয়েছেন। তিনি বলেন, আমি তো আশা করছিলাম যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন এবং আমাদের পিছনে যাবেন। এ থেকে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল যে, তিনি সবার শেষে ইন্তেকাল করবেন। তবে মুহাম্মাদ যদিও ইন্তেকাল করেছেন, তবে আল্লাহ তা’আলা তোমাদের মাঝে এমন এক নূর রেখেছেন, যার দ্বারা তোমরা হেদায়াত পাবে। আল্লাহ তা’আলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে (এ নুর দিয়ে) হেদায়াত করেছিলেন।

আর আবূ বকর (রাঃ) ছিলেন তাঁর সঙ্গী এবং দু’জনের দ্বিতীয় জন। তোমাদের এ দায়িত্ব বহনের জন্য মুসলমানদের মধ্যে তিনই সর্বোত্তম। সুতরাং তোমরা উঠ এবং তার হাতে বায়’আত গ্রহণ কর। অবশ্য এক জামাআত ইতিপূর্বে বনী সাঈদা গোত্রের ছায়ানীড়ে তার হাতে বায়’আত গ্রহণ করেছিল। আর সাধারণ বায়’আত হয়েছিল মিম্বরের উপর। যুহরী (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, আমি সেদিন উমর (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি আবূ বকর (রাঃ)-কে বলছেন, মিম্বরে আরোহণ করুন। তিনি বারবার এ কথা বলতে বলতে অবশেষে আবূ বকর (রাঃ) মিম্বরে আরোহণ করলেন। অতঃপর তাঁর কাছে লোকেরা সাধারণ বায়’আত গ্রহণ করল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭২৭ | 6727 | ٦۷۲۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৫. খলীফা বানানো
৬৭২৭। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … যুবায়র ইবনু মুতঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক স্ত্রীলোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসল এবং কোন এক ব্যাপারে তার সাথে কথা বলল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে পুনরায় আসার নির্দেশ দিলেন। স্ত্রীলোকটি বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি পুনরায় এসে যদি আপনাকে না পাই? স্ত্রীলোকটি এ বলে (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর) ইন্তেকালের কথা বোঝাতে চাইছিল। তিনি বললেনঃ যদি আমাকে না পাও, তাহলে আবূ বকরের কাছে আসবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭২৮ | 6728 | ٦۷۲۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৫. খলীফা বানানো
৬৭২৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বুযাখা প্রতিনিধিদলকে বলেছিলেন যতদিন না আল্লাহ তাআলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খলীফা ও মুহাজিরীনদের এমন একটা পথ দেখিয়ে দেন যাতে তারা তোমাদের ওযর গ্রহন করেন, ততদিন পর্যন্ত তোমরা উটের লেজের পিছনে লেগে থাকবে (অর্থাৎ যাযাবর জীবন যাপন করবে)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭২৯ | 6729 | ٦۷۲۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৬. পরিচ্ছেদ নাই
৬৭২৯। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … জাবির ইবনু সামুরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, বারজন আমীর হবে। এরপর তিনি একটি কথা বলছিলেন যা আমি শুনতে পারিনি। তবে আমার পিতা বলেছেন যে, তিনি বলেছিলেন সকলেই কুরাইশ গোত্র থেকে হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৩০ | 6730 | ٦۷۳۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৭. বিবাদমান সন্দেহযুক্ত ব্যক্তিদের ব্যাপারে জ্ঞান লাভ করার পর তাদেরকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া। আবু বকর (রাঃ) এর বোনকে মৃত ব্যক্তির উপর বিলাপ করার কারনে ঘর থেকে বের করে দিয়েছিলেন
৬৭৩০। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ করে বলছি! আমার ইচ্ছা হয় যে, আমি জালানি কাঠ সংগ্রহের নির্দেশ দেই। তারপর সালাত (নামায/নামাজ) এর আযান দেওয়ার জন্য হুকুম করি এবং একজনকে লোকদের ইমামত করাতে বলি। এরপর আমি জামায়াতে আসে নাই সেসব লোকদের কাছে যাই আর তাদেরসহ তাদের ঘরগুলো জালিয়ে দেই। আমার প্রাণ যে সত্তার হাতে তার শপথ করে বলছি, যদি তারা জানত যে, একটি গোশতবহুল হাড় কিংবা দুটি বকরীর ক্ষুর পাবে তাহলে তারা এশার জামাআতে অবশ্যই হাযির হত।

মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহঃ) বলেনঃ مِرْمَاةٌ অর্থ বকরীর ক্ষুরের মধ্যবর্তী গোশত। ছন্দগতভাবে مِنْسَاةٍ وَمِيضَاةٍ‏ এর ন্যায় مِرْمَاةٌ এর মীম বর্ণটি যেরযুক্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৩১ | 6731 | ٦۷۳۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৮. শাসক আসামী ও অপরাধীদেরকে তার সাথে কথা বলা, দেখা-সাক্ষাৎ ইত্যাদি থেকে বারন করতে পারবেন কিনা?
৬৭৩১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ), কা’ব (রাঃ) অন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তাঁর সন্তানদের থেকে তিনি তাঁকে (কা’ব) পথ দেখাতেন। তিনি বলেন, আমি কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) কে বলতে শুনেছি তিনি বলেন যে, যখন তিনি তাবুকের যুদ্ধে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে যোগদান না করে রয়ে গেলেন। তারপর তিনি পূর্ণ ঘটনা বর্ণনা করে বললেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদেরকে আমাদের সাথে কথা বলতে নিষেধ করে দিলেন। ফলে পঞ্চাশ রাত আমরা এভাবে অবস্থান করলাম। এরপর আল্লাহ তাআলা আমাদের তওবা কবুল করেছেন বলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানিয়ে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৩২ | 6732 | ٦۷۳۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৯. আকাঙ্ক্ষা করা এবং ‍যিনি শাহাদাত প্রত্যাশা করেন
৬৭৩২। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, সেই সত্তার শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ! যদি কিছু লোক আমার সঙ্গে শরীক না হয়ে পিছনে থেকে যাওয়াটা অপছন্দ না করত, আর সবাইকে বাহন (যুদ্ধ সরঞ্জাম) সরবরাহ করতে আমি অক্ষম না হতাম, তাহলে আমি কোন যুদ্ধ থেকেই পিছনে থাকতাম না। আমার বড়ই কামনা হয় যে, আমাকে আল্লাহর পথে শহীদ করা হয়, আবার জীবিত করা হয়। আবার শহীদ করা হয় আবার জীবিত করা হয়। আবার শহীদ করা হয় আবার জীবিত করা হয়। আবার শহীদ করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৩৩ | 6733 | ٦۷۳۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৫৯. আকাঙ্ক্ষা করা এবং ‍যিনি শাহাদাত প্রত্যাশা করেন
৬৭৩৩। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তার শপথ! আমি কামনা করি যেন আল্লাহর পথে যুদ্ধ করি। এতে আমাকে শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয় আবার শহীদ করা হয়। আবার জীবিত করা হয় আবার শহীদ করা হয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেন, বাক্যটি তিনি তিনবার বলেছের। এ ব্যাপারে আমি আল্লাহর নামে সাক্ষ্য দিচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৩৪ | 6734 | ٦۷۳٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৬০. কল্যানের প্রত্যাশা করা। রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর বাণীঃ যদি ওহুদ পাহাড় আমার জন্য স্বর্নে পরিনত হতো
৬৭৩৪। ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যদি ওহুদ (পাহাড়) পরিমাণ স্বর্ণ আমার কাছে থাকত, তাহলে আমি মনে করতাম যে, তিন রাতও এরূপ অবস্থায় অতিবাহিত না হোক যে ঋন, আদায় করার জন্য ব্যতীত একটি দ্বীনারও আমার কাছে থাকুক যা গ্রহণ করার মত লোক পাই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৩৫ | 6735 | ٦۷۳۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৬১. রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর বাণীঃ কোন কাজ সম্পর্কে যা পরে জানতে পেরেছি, তা যদি আগে জানতে পারতাম
৬৭৩৫। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়য় (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার এ ব্যাপারে যদি আমি পূর্বে জানতাম যা পরে জানতে পেরেছি তাহলে আমি হাদী (কুরবানীর পশু) সঙ্গে আনতাম না এবং লোকেরা যখন হালাল হয়েছে, তখন আমিও (ইহরাম) ছেড়ে হালাল হয়ে যেতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৩৬ | 6736 | ٦۷۳٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৬১. রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর বাণীঃ কোন কাজ সম্পর্কে যা পরে জানতে পেরেছি, তা যদি আগে জানতে পারতাম
৬৭৩৬। হাসান ইবনু উমর (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম এবং আমরা হাজ্জের তালবিয়া পাঠ করলাম। তারপর যিলহাজ্জ মাসের চারদিন অতিবাহিত হওয়ার পর আমরা মক্কায় এসে পৌছলাম তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করতে এবং সাফা ও মারওয়ার সায়ী করতে আদেশ দিলেন এবং এটাকে উমরা বানাতে ও ইহরাম খুলে হালাল হতে বললেন। তবে যাদের সাথে হাদী ছিল তাদের এ হুকুম দেননি। জাবির (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তালহা (রাঃ) ছাড়া আমাদের আর কারো সাথে হাদী ছিল না। এ সময় আলী (রাঃ) ইয়ামান থেকে আসলেন। তাঁর সাথে হাদী ছিল। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রূপ ইহরাম বেঁধেছেন, আমিও সেরূপ ইহরাম বেধেছি।

সাহাবা কিরাম (রাঃ) বললেন, আমরা মিনার দিকে যাচ্ছি অথচ আমাদের কারো কারো পুরুষাঙ্গ বীর্য টপকাচ্ছে তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি আমার এ বিষয়ে যদি পুর্বে জানতাম যা আমি পরে জানতে পেরেছি, তাহলে আমি হাদী সঙ্গে আনতাম না। আর আমার সঙ্গে যদি হাদী না থাকত তাহলে আমি অবশ্যই হালাল হয়ে যেতাম। রাবী বলেন, পরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জামরা-ই-আকাবাতে কংকর নিক্ষেপ করছিলেন, এমতাবস্থায় তার সাথে সুরাকা ইবনু মালিক (রাঃ) সাক্ষাৎ করলেন। তখন তিনি বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটা কি শুধু আমাদের জন্যই? তিনি বললেনঃ না, বরং এটা চিরদিনের জন্য।

জাবির (রাঃ) বলেন, আয়িশা (রাঃ) ঋতুমতী অবস্থায় মক্কায় পৌছে ছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে নির্দেশ দিলেন যে, হাজ্জের (হজ্জ) যাবতীয় কাজকর্ম যথারীতি করে যাও, তবে পবিত্র হওযার আগ পর্যন্ত বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করো না এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করো না। তারা যখন বুতহা নামক স্থানে অবতরণ করলেন, আয়িশা (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনারা একটি হাজ্জ (হজ্জ) ও একটি উমরা নিয়ে ফিরলেন। আর আমি কি শুধুমাত্র একটি হাজ্জ (হজ্জ) নিয়ে ফিরব? জাবির (রাঃ) বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকর সিদীক (রাঃ) কে তাকে তানঈমে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। পরে আয়িশা (রাঃ) যিলহাজ্জ্ব মাসে হাজ্জের (হজ্জ) দিনগুলোর পরে একটি উমরা আদায় করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৩৭ | 6737 | ٦۷۳۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৬২. রাসূলূল্লাহ (সাঃ) এর বাণীঃ যদি এরূপ এরূপ হতো
৬৭৩৭। খালিদ ইবনু মুখাল্লাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক রাত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাগ্রত রইলেন। পরে তিনি বললেনঃ যদি আমার সাহাবীদের কোন এক নেক ব্যাক্তি আজ রাত আমার পাহারাদারী করত! হঠাৎ আমরা অস্ত্রের আওয়াজ শুনতে পেলাম। তখন তিনি বললেনঃ এ কে? বলা হল, এ হচ্ছে সা’দ, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার পাহারাদারীর জন্য এসেছি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুমালেন, এমন কি আমরা তার নাক ডাকার আওয়াজ শুনতে পেলাম। আয়িশা (রাঃ) বলেন, বিলাল (রাঃ) আবৃতি করেছিল, হায়! আমার উপলব্ধি, আমি কি উপত্যকায় রাত যাপন করতে পারব, যখন আমার পাশে হবে জালীল ও ইযখির ঘাস। পরে আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ খবর পৌছিয়ে ছিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৩৮ | 6738 | ٦۷۳۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৩. কুরআন (অধ্যয়ন) ও ইলম (জ্ঞানার্জনের) আকাঙ্ক্ষা করা
৬৭৩৮। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুটি বিযয় ছাড়া ঈর্ষা করা যায় না। একটি হল এমন ব্যাক্তি, যাকে আল্লাহ তা’আলা কুরআন দান করেছেন। সে তা দিবারাত্রি তিলাওয়াত করে। (শ্রোতাদের) কেউ বলল, একে যা দান করা হয়েছে, যদি আমাকেও তা দান করা হত, তবে সে যেরূপ করছে, আমিও সেরূপ করতাম। অপরটি হল, এমন ব্যাক্তি যাকে আল্লাহ মাল দান করেছেন, সে তা ন্যায় সঙ্গতভাবে খরচ করে। (তা দেখে) কেউ বলল, যদি তাকে যা প্রদান করা হয়েছে তা আমাকে প্রদান করা হত তাহলে সে যা করে আমিও তা করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৩৯ | 6739 | ٦۷۳۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৪. যে বিষয়ে আকাঙ্ক্ষা করা নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ যা দ্বারা মহান আল্লাহ্ তোমাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন, তোমরা তার লালসা করোনা……. (৪ঃ ৩২)
৬৭৩৯। হাসান ইবনু রাবী (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যদি আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা না বলতে শুনতাম যে, তোমরা মৃত্যুর কামনা করো না, তাহলে অবশ্যই আমি (মৃত্যু) কামনা করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৪০ | 6740 | ٦۷٤۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৪. যে বিষয়ে আকাঙ্ক্ষা করা নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ যা দ্বারা মহান আল্লাহ্ তোমাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন, তোমরা তার লালসা করোনা……. (৪ঃ ৩২)
৬৭৪০। মুহাম্মাদ (রহঃ) … কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমরা খাব্বাব ইবনু আরাত (রাঃ) এয় শুশ্রুষায় গেলাম। তিনি সাতটি দাগ লাগিয়ে ছিলেন। তখন তিনি বললেন, যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে মউতের জন্য দোয়া করতে নিষেধ না করতেন তাহলে আমি অবশ্যই এর দোয়া করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৪১ | 6741 | ٦۷٤۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৪. যে বিষয়ে আকাঙ্ক্ষা করা নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ যা দ্বারা মহান আল্লাহ্ তোমাদের কাউকে কারো উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন, তোমরা তার লালসা করোনা……. (৪ঃ ৩২)
৬৭৪১। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ মৃত্যু কামনা করবে না। কেননা, (কামনাকারী) সে যদি সৎকর্মশীল হয় তবে (বেঁচে থাকলে) হয়ত সে সৎকর্ম করবে। কিংবা সে পাপাচারী হবে, তাহলে হয়ত সে অনুতপ্ত হয়ে তাওবা করবে। আবু আবদুল্লাহ [বুখারী (রহঃ)] বলেন, আবূ উবায়দ এর নাম হচ্ছে সা’দ ইবনু উবায়দ আবদুর রহমান ইবনু আযহার এর আযাদকৃত গোলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৪২ | 6742 | ٦۷٤۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৫. কারোর উক্তি: যদি মহান আল্লাহ্ তা’আলা না করতেন, তাহলে আমরা কেউ হেদায়েত লাভ করতাম না
৬৭৪২। আবদান (রহঃ) … বারাআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, খন্দকের যুদ্ধে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাথে মাটি উঠাচ্ছিলেন। আমি তাকে দেখতে পেলাম তার পেটের শুভ্রতাকে মাটি আচ্ছাদিত করে ফেলেছে। তিনি পড়ছিলেনঃ

(হে আল্লাহ) যদি আপনি না করতেন তাহলে আমরা হেদায়েত লাভ করতাম না এবং আমরা সাদাক করতাম না, আর সালাত (নামায/নামাজ)ও পড়তাম না। অতএব আপনি আমাদের উপর শান্তি অবতীর্ন করুন। নিঃসন্দেহে প্রথম দলটি আমাদের উপর যুলুম করেছে; কখনো বলতেন, নিঃসন্দেহে একদল লোক আমাদের উপর যুলুম করেছে, যখন তারা কোনরূপ ফিতনার ইচ্ছা করে আমরা তা প্রত্যাখ্যান করি। “প্রত্যাখ্যান করি” এ কথাটি উচ্চস্বরে বলতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৪৩ | 6743 | ٦۷٤۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৬. শত্রুর মুখোমুখী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা করা নিষিদ্ধ। এ মর্মে আরাজ (রহঃ) আবু হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে রাসূলূল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন
৬৭৪৩। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ নাযর সালিম (রাঃ) যিনি উমর ইবনু উবায়দুল্লাহর আযাদকৃত গোলাম এবং তার কাতিব (সচিব) ছিলেন, বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, তার কাছে আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) একট চিঠি লিখলেন, আমি তা পাঠ করলাম। তাতে লেখা ছিল, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা শত্রুর মুখোমুখী হওয়া কামনা করো না বরং আল্লাহ তায়াআলার কাছে শান্তি কামনা কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৪৪ | 6744 | ٦۷٤٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৭. لَوْ ‘যদি’ শব্দটা বলা কতখানি বৈধ। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমাদের উপর যদি আমার শক্তি থাকত (১১ঃ ৮০)
৬৭৪৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) দু’জন লিআনকারীর ঘটনা বর্ণনা করলেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনু শাদ্দাদ বললেন, এ কি সেই স্ত্রীলোক যার সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন, যদি বিনা প্রমাণে কোন স্ত্রীলোককে রজম করতাম? তিনি বললেনঃ না! সে স্ত্রীলোকটি প্রকাশ্যে অশ্নীল কাজ করেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৪৫ | 6745 | ٦۷٤۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৭. لَوْ ‘যদি’ শব্দটা বলা কতখানি বৈধ। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমাদের উপর যদি আমার শক্তি থাকত (১১ঃ ৮০)
৬৭৪৫। আলী (রহঃ) … আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এশার সালাত (নামায/নামাজ) বিলম্ব হল। তখন উমর (রাঃ) বেরিয়ে এসে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাত (নামায/নামাজ)। (এদিকে) মহিলা ও শিশুরা ঘুমিয়ে যাচ্ছিল। তখন তিনি বেরিয়ে এলেন, তার মাথা থেকে পানি টপকে পড়ছে। তিনি বলছিলেন, যদি আমার উম্মাতের জন্য, কিংবা বলেছিলেন, লোকের জন্য সুফিয়ানও বলেছেন, আমার উম্মাতের জন্য কষ্টসাধ্য মনে না করতাম, তাহলে অবশ্যই তাদের এ সময়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের নির্দেশ দিতাম।

ইবনু জুরায়জ আতার সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই সালাত (নামায/নামাজ) বিলম্ব করলেন। ফলে উমর (রাঃ) এসে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! মহিলা ও শিশুরা ঘুমিয়ে যাচ্ছে। তখন তিনি তাঁর মাথার পার্শ্ব থেকে পানি মুছতে মুছতে বেরিয়ে এসে বললেনঃ আসলে এটাই সময়। এরপর বললেনঃ যদি আমি আমার উম্মাতের উপর কইসাধ্য মনে না করতাম…।

আমর এ হাদীসটি আতা থেকে বর্ণনা করেন, সে সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর নাম নেই। তবে আমর বলেছেন যে, তার মাথা থেকে পানি টপকে পড়ছিল। আর ইবনু জুরায়জ বলেন, তিনি তার এক পার্শ্ব থেকে পানি মুছছিলেন। আবার আমরের সুত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যদি আমি আমার উম্মাতের উপর কষ্টসাধ্য মনে না করতাম। আর ইবনু জুরায়জ বলেন, এটাই সময়। যদি আমি আমার উম্মাতের উপর কষ্টসাধ্য মনে না করতাম …। তবে ইবরাহীম ইবনু মুনযির ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীসটি বর্ণিত আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৪৬ | 6746 | ٦۷٤٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৭. لَوْ ‘যদি’ শব্দটা বলা কতখানি বৈধ। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমাদের উপর যদি আমার শক্তি থাকত (১১ঃ ৮০)
৬৭৪৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি আমার উম্মাতের উপর কষ্টসাধ্য মনে না করতাম, তাহলে আমি তাদের মিসওয়াক করার নির্দেশ দিতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৪৭ | 6747 | ٦۷٤۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৭. لَوْ ‘যদি’ শব্দটা বলা কতখানি বৈধ। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমাদের উপর যদি আমার শক্তি থাকত (১১ঃ ৮০)
৬৭৪৭। আইয়াস ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে (একটি) মাসের শেষাংশে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিরতিহীন রোযা রাখলেন এবং আরো কতিপয় লোকও বিরতিহীনভাবে রোযা পালন করতে লাগল। এ সংবাদ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছলে তিনি বললেনঃ যদি আমার এ মাস দীর্ঘায়িত হত, তবুও আমি এভাবে বিরতিহীন রোযা রাখতাম। যাতে অধিক কষ্টকারীরা তাদের কষ্ট করা ছেড়ে দেয়। আমি তো তোমাদের মত নই, আমার প্রতিপালক আমাকে আহার করায় এবং পান করায়। সুলায়মান ইবনু মুগীরা আনাস (রাঃ)-এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হুমায়দ এর অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৪৮ | 6748 | ٦۷٤۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৭. لَوْ ‘যদি’ শব্দটা বলা কতখানি বৈধ। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমাদের উপর যদি আমার শক্তি থাকত (১১ঃ ৮০)
৬৭৪৮। আবুল ইয়ামান (রহঃ) ও লাইছ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিরতিহীন রোযা রাখতে নিষেধ করলেন। সাহাবাগণ বললেন, আপনি বিরতিহীন রোযা রাখছেন? তিনি বললেনঃ তোমাদের কে আছ আমার মতো? আমি তো রাত্রি যাপন করি এমতাবস্থায় যে আমার প্রতিপালক আমাকে আহার করান ও পান করান। কিন্তু তারা যখন বিরত থাকতে অস্বীকার করলেন, তখন তিনি তাদেরসহ একদিন, তারপর আর একদিন রোযা রাখলেন। তারপর তারা নতুন চাঁদ দেখতে পেলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি চাঁদ আরো দেরীতে উদিত হত, তাহলে আমিও তোমাদের (রোযা) বাড়াতাম। তিনি যেন তাদেরকে শ্বাসাচ্ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৪৯ | 6749 | ٦۷٤۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৭. لَوْ ‘যদি’ শব্দটা বলা কতখানি বৈধ। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমাদের উপর যদি আমার শক্তি থাকত (১১ঃ ৮০)
৬৭৪৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কাবার বাইরের দেওয়াল (যাকে হাতীমে কাবা বলা হয়) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, এটা কি কা’বা ঘরের অংশ ছিল? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আমি বললাম, তাহলে তারা এ অংশকে (কাবা) ঘরের ভিতরে শামিল করল না কেন? তিনি বললেনঃ তোমার গোত্রের খরচে অনটন দেখা দিয়েছিল। আমি বললাম, এর দরজাটি এত উচ্চ স্থাপিত হল কেন? তিনি বললেনঃ এটা তোমার গোত্র এজন্য করেছিল যাতে তারা যাকে ইচ্ছা প্রবেশ করতে দেবে এবং যাকে ইচ্ছা বাধা প্রদান করবে। তবে যদি তোমার গোত্র সদ্য জাহেলিয়াত মুক্ত না হত, এরপর তাদের অন্তর বিগড়িয়ে যাওয়ার ভয় না হত তাহলে আমি বহির্ভূত দেওয়ালকে কা’বা ঘরের মাঝে শামিল করে দিতাম এবং এর দরজাকে মাটির বরাবরে মিলিয়ে দিতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৫০ | 6750 | ٦۷۵۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৭. لَوْ ‘যদি’ শব্দটা বলা কতখানি বৈধ। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমাদের উপর যদি আমার শক্তি থাকত (১১ঃ ৮০)
৬৭৫০। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি হিজরত না হত, তাহলে আমি আনসারদের অন্তর্ভুক্ত একজন হতাম। আর লোকেরা যদি এক উপত্যকা দিয়ে গমন করত আর আনসাররা যদি অন্য উপত্যকা দিয়ে কিংবা গিরিপথ দিয়ে গমন করত তাহলে আমি আনসারদের উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়েই গমন করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৫১ | 6751 | ٦۷۵۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৭. لَوْ ‘যদি’ শব্দটা বলা কতখানি বৈধ। মহান আল্লাহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমাদের উপর যদি আমার শক্তি থাকত (১১ঃ ৮০)
৬৭৫১। মূসা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু যায়িদ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, যদি হিজরত না হত, তাহলে আমি আনসারদের অন্তর্ভুক্ত একজন হতাম। আর লোকেরা যদি কোন এক উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়ে গমন করত, তাহলে আমি আনসারদের উপত্যকা বা গিরিপথ দিয়ে গমন করতাম। আবূ তাইয়াহ (রহঃ) আনাস (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরুপ হাদীস উপত্যকার কথা উল্লেখ করে আব্বাদ ইবনু তামীম এর অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৫২ | 6752 | ٦۷۵۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৮. সত্যবাদী বর্ণনাকারীর খবরে ওয়াহিদ আযান, নামায, রোযা, ফরয ও অন্যান্য আহকামের বিষয় গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন? যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয় (৯ঃ ১২২)। طَائِفَة শব্দটি এক ব্যক্তিকেও বলা যায়। কেননা আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দে লিপ্ত হলে … (৪৯ঃ ৯) অতএব যদি দুই ব্যক্তি দ্বন্দে লিপ্ত হয় তবে তা এ আয়াতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি কোন পাপাচারী তোমাদের কাছে কোন বার্তা আনয়ন করে তোমরা তা পরিক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না করে … (৪৯ঃ ৬)। নবী (সাঃ) কিরূপে তার আমীরদের পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজনকে পাঠাতেন – যেন তাদের কেউ ভুল করলে তাকে সুন্নাতের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
৬৭৫২। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … মালিক ইবনু হুওয়ায়রিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলাম। আমাদের সকলেই সমবয়সী যুবক ছিলাম। আমরা বিশ রাত পর্যন্ত তাঁর কাছে অবস্থান করলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন কোমল হৃদয়ের অধিকারী। তিনি যখন অনুমান করতে পারলেন যে আমরা আমাদের স্ত্রী-পরিজনের প্রতি আগ্রহী হয়ে পড়েছি, কিংরা আসক্ত হয়ে পড়েছি তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন যে, আমরা বাড়িতে কাদেরকে রেখে এসেছি। আমরা তাকে অবহিত করলাম। তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের পরিজনের নিকট ফিরে যাও এবং তাদের মাঝে অবস্থান কর, আর তাদেরকে (দ্বীন) শিক্ষা দিও। আর তাদের নির্দেশ দিও। তিনি (মালিক) কতিপয় বিষয়ের উল্লেখ করেছিলেন, যা আমি স্মরণ রেখেছি বা রাখতে পারিনি। (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছিলেন) তোমরা আমাকে যেভাবে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখছ সেভাবে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা যখন সালাত (নামায/নামাজ) এর সময় উপস্থিত হয়, তখন যেন তোমাদের কোন একজন তোমাদের উদ্দেশ্যে আযান দেয়, আর তোমাদের মধ্যে যে বড় সে যেন তোমাদের ইমামতি করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৫৩ | 6753 | ٦۷۵۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৮. সত্যবাদী বর্ণনাকারীর খবরে ওয়াহিদ আযান, নামায, রোযা, ফরয ও অন্যান্য আহকামের বিষয় গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন? যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয় (৯ঃ ১২২)। طَائِفَة শব্দটি এক ব্যক্তিকেও বলা যায়। কেননা আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দে লিপ্ত হলে … (৪৯ঃ ৯) অতএব যদি দুই ব্যক্তি দ্বন্দে লিপ্ত হয় তবে তা এ আয়াতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি কোন পাপাচারী তোমাদের কাছে কোন বার্তা আনয়ন করে তোমরা তা পরিক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না করে … (৪৯ঃ ৬)। নবী (সাঃ) কিরূপে তার আমীরদের পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজনকে পাঠাতেন – যেন তাদের কেউ ভুল করলে তাকে সুন্নাতের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
৬৭৫৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিলালের আযান যেন তোমাদের কাউকে স্বীয় সাহরী খাওয়া থেকে বিরত না করে। কেননা, সে আযান দিয়ে থাকে, কিংবা বলেছিলেন ঘোষনা দিয়ে থাকে, তোমাদের যারা সালাতে নিরত হচ্ছিল তারা যেন সালাত (নামায/নামাজ) থেকে বিরত হয় এবং যারা ঘুমিয়েছিল তারা যেন জাগ্রত হয়। এরূপ হলে ফজর হয় না- এই বলে ইয়াহইয়া উভয় হাতের তালুদ্বয়কে একত্রিত করলেন (অর্থাৎ আলো আকাশের দিকে দীর্ঘ হলে) বরং এরূপ হলে ফজর হয়, এ বলে ইয়াহইয়া তার দুই তর্জনীকে ডানে-বামে প্রসারিত করলেন অর্থাৎ ভোরের আলো পূর্বাকাশে উত্তরে দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়লে)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৫৪ | 6754 | ٦۷۵٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৮. সত্যবাদী বর্ণনাকারীর খবরে ওয়াহিদ আযান, নামায, রোযা, ফরয ও অন্যান্য আহকামের বিষয় গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন? যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয় (৯ঃ ১২২)। طَائِفَة শব্দটি এক ব্যক্তিকেও বলা যায়। কেননা আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দে লিপ্ত হলে … (৪৯ঃ ৯) অতএব যদি দুই ব্যক্তি দ্বন্দে লিপ্ত হয় তবে তা এ আয়াতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি কোন পাপাচারী তোমাদের কাছে কোন বার্তা আনয়ন করে তোমরা তা পরিক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না করে … (৪৯ঃ ৬)। নবী (সাঃ) কিরূপে তার আমীরদের পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজনকে পাঠাতেন – যেন তাদের কেউ ভুল করলে তাকে সুন্নাতের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
৬৭৫৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেনঃ বিলাল (রাঃ) রাত থাকতে আযান দিয়ে থাকে, অতএব তোমরা পানাহার করতে পার যতক্ষন না ইবনু উম্মে মাকতূম (রাঃ) আযান দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৫৫ | 6755 | ٦۷۵۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৮. সত্যবাদী বর্ণনাকারীর খবরে ওয়াহিদ আযান, নামায, রোযা, ফরয ও অন্যান্য আহকামের বিষয় গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন? যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয় (৯ঃ ১২২)। طَائِفَة শব্দটি এক ব্যক্তিকেও বলা যায়। কেননা আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দে লিপ্ত হলে … (৪৯ঃ ৯) অতএব যদি দুই ব্যক্তি দ্বন্দে লিপ্ত হয় তবে তা এ আয়াতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি কোন পাপাচারী তোমাদের কাছে কোন বার্তা আনয়ন করে তোমরা তা পরিক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না করে … (৪৯ঃ ৬)। নবী (সাঃ) কিরূপে তার আমীরদের পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজনকে পাঠাতেন – যেন তাদের কেউ ভুল করলে তাকে সুন্নাতের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
৬৭৫৫। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে যুহরের সালাত (নামায/নামাজ) পড়তে পাঁচ রাকাত আদায় করলেন। তাকে বলা হল সালাত (নামায/নামাজ) কি বর্ধিত করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ তোমার কি হয়েছে? তারা বললেনঃ আপনি পাঁচ রাকাত আদায় করেছেন। তখন তিনি সালাম শেষে দুটো সিজদা (সিজদায়ে সাহু) দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৫৬ | 6756 | ٦۷۵٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৮. সত্যবাদী বর্ণনাকারীর খবরে ওয়াহিদ আযান, নামায, রোযা, ফরয ও অন্যান্য আহকামের বিষয় গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন? যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয় (৯ঃ ১২২)। طَائِفَة শব্দটি এক ব্যক্তিকেও বলা যায়। কেননা আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দে লিপ্ত হলে … (৪৯ঃ ৯) অতএব যদি দুই ব্যক্তি দ্বন্দে লিপ্ত হয় তবে তা এ আয়াতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি কোন পাপাচারী তোমাদের কাছে কোন বার্তা আনয়ন করে তোমরা তা পরিক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না করে … (৪৯ঃ ৬)। নবী (সাঃ) কিরূপে তার আমীরদের পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজনকে পাঠাতেন – যেন তাদের কেউ ভুল করলে তাকে সুন্নাতের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
৬৭৫৬। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই রাকাত আদায় করেই সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করে দিলেন। তখন যুল ইয়াদাইন (রাঃ) তাকে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! সালাত (নামায/নামাজ) কি সংক্ষিপ্ত করে দেওয়া হয়েছে, না আপনি ভুলে গেছেন। তিনি বললেনঃ যুল ইয়াদাইন কি সত্য বলছে? লোকেরা বলল, হ্যাঁ। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়ালেন এবং অবশিষ্ট দু’রাকাত আদায় করলেন। তারপর তিনি সালাম ফিরালেন এবং তাকবীর বলে পূর্বের সিজদার ন্যায় কিংবা তার চেয়ে দীর্ঘ করে সিজদা করলেন এবং মাথা উঠালেন, তারপর আবার তাকবীর বলে পূর্বের ন্যায় সিজদা করলেন ও মাথা উঠালেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৫৭ | 6757 | ٦۷۵۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৮. সত্যবাদী বর্ণনাকারীর খবরে ওয়াহিদ আযান, নামায, রোযা, ফরয ও অন্যান্য আহকামের বিষয় গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন? যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয় (৯ঃ ১২২)। طَائِفَة শব্দটি এক ব্যক্তিকেও বলা যায়। কেননা আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দে লিপ্ত হলে … (৪৯ঃ ৯) অতএব যদি দুই ব্যক্তি দ্বন্দে লিপ্ত হয় তবে তা এ আয়াতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি কোন পাপাচারী তোমাদের কাছে কোন বার্তা আনয়ন করে তোমরা তা পরিক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না করে … (৪৯ঃ ৬)। নবী (সাঃ) কিরূপে তার আমীরদের পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজনকে পাঠাতেন – যেন তাদের কেউ ভুল করলে তাকে সুন্নাতের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
৬৭৫৭। ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্গিত। তিনি বলেন, লোকেরো কুবার মসজিদে ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) রত ছিলেন, এমন সময় একজন আগন্তুক এসে বলল, (গত) রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং কা’বাকে কিবলা বানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুতরাং তোমরা কাবা এর দিকে মুখ করে দাঁড়াও। তখন তাদের চেহারা ছিল সিরিয়ার দিকে, তারপর তারা কাবার দিকে ঘুরে দাঁড়ালেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৫৮ | 6758 | ٦۷۵۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৮. সত্যবাদী বর্ণনাকারীর খবরে ওয়াহিদ আযান, নামায, রোযা, ফরয ও অন্যান্য আহকামের বিষয় গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন? যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয় (৯ঃ ১২২)। طَائِفَة শব্দটি এক ব্যক্তিকেও বলা যায়। কেননা আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দে লিপ্ত হলে … (৪৯ঃ ৯) অতএব যদি দুই ব্যক্তি দ্বন্দে লিপ্ত হয় তবে তা এ আয়াতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি কোন পাপাচারী তোমাদের কাছে কোন বার্তা আনয়ন করে তোমরা তা পরিক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না করে … (৪৯ঃ ৬)। নবী (সাঃ) কিরূপে তার আমীরদের পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজনকে পাঠাতেন – যেন তাদের কেউ ভুল করলে তাকে সুন্নাতের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
৬৭৫৮। ইয়াহইয়া (রহঃ) … বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আগমন করেন, তখন যোল অথবা সতের মাস বায়তুল মুকাদ্দাসের দিকে মুখ করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আর তিনি কাবার দিকে মুখ করে দাঁড়াতে খুবই আগ্রহী ছিলেন। তারপর আল্লাহ নাযিল করলেনঃ আকাশের দিকে তোমার বারবার তাকানোকে আমি অবশ্যই লক্ষ করছি। সুতরাং তোমাকে এমন কিবলার দিকে ফিরিয়ে দিচ্ছি যা তুমি পছন্দ কর। (২ঃ ১৪৪) তখন তাঁকে কাবার দিকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আর তারসাথে এক ব্যাক্তি আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছিল। এরপর সে বেরিয়ে এক সম্প্রদায়ের কাছ দিয়ে গমন করল এবং সে সাক্ষ্য দিয়ে বলল যে, সে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে এসেছে আর কিবলা কাবার দিকে ফিরিয়ে দেওয় হয়েছে। তখন তারা দিক পরিবর্তন করলেন। এ সময় তাঁরা আসরের সালাত (নামায/নামাজ)-এ রুকু অবস্থায় ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৫৯ | 6759 | ٦۷۵۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৮. সত্যবাদী বর্ণনাকারীর খবরে ওয়াহিদ আযান, নামায, রোযা, ফরয ও অন্যান্য আহকামের বিষয় গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন? যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয় (৯ঃ ১২২)। طَائِفَة শব্দটি এক ব্যক্তিকেও বলা যায়। কেননা আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দে লিপ্ত হলে … (৪৯ঃ ৯) অতএব যদি দুই ব্যক্তি দ্বন্দে লিপ্ত হয় তবে তা এ আয়াতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি কোন পাপাচারী তোমাদের কাছে কোন বার্তা আনয়ন করে তোমরা তা পরিক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না করে … (৪৯ঃ ৬)। নবী (সাঃ) কিরূপে তার আমীরদের পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজনকে পাঠাতেন – যেন তাদের কেউ ভুল করলে তাকে সুন্নাতের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
৬৭৫৯। ইয়াহইয়া ইবনু কাযাআ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ তালহা আনসারী, আবূ উবায়দা ইবনু জাররাহ ও উবাই ইবনু কাবকে আধাপাকা খেজুরের তৈরি শারাব পরিবেশন করতাম। তখন তাদের কাছে একজন আগন্তুক এসে বলল, নিঃসন্দেহে শরাব হারাম করে দেওয়া হয়েছে। আবূ তালহা (রাঃ) বললেন, হে আনাস! তুমি গিয়ে এ মটকাগুলো ভেঙ্গে ফেল। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি উঠে গিয়ে আমাদের ঘটি দিয়ে তার তলায় আঘাত করলাম আর তা ভেঙ্গে গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৬০ | 6760 | ٦۷٦۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৮. সত্যবাদী বর্ণনাকারীর খবরে ওয়াহিদ আযান, নামায, রোযা, ফরয ও অন্যান্য আহকামের বিষয় গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন? যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয় (৯ঃ ১২২)। طَائِفَة শব্দটি এক ব্যক্তিকেও বলা যায়। কেননা আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দে লিপ্ত হলে … (৪৯ঃ ৯) অতএব যদি দুই ব্যক্তি দ্বন্দে লিপ্ত হয় তবে তা এ আয়াতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি কোন পাপাচারী তোমাদের কাছে কোন বার্তা আনয়ন করে তোমরা তা পরিক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না করে … (৪৯ঃ ৬)। নবী (সাঃ) কিরূপে তার আমীরদের পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজনকে পাঠাতেন – যেন তাদের কেউ ভুল করলে তাকে সুন্নাতের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
৬৭৬০। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজরানের অধিবাসীদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ আমি তোমাদের জন্য এমন একজন লোক পাঠাব, যিনি সস্পূর্ণরূপে বিশ্বস্ত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীরা এর জন্য প্রতীক্ষা করছিলেন। পরে তিনি আবূ উবাদাকে পাঠালেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৬১ | 6761 | ٦۷٦۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৮. সত্যবাদী বর্ণনাকারীর খবরে ওয়াহিদ আযান, নামায, রোযা, ফরয ও অন্যান্য আহকামের বিষয় গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন? যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয় (৯ঃ ১২২)। طَائِفَة শব্দটি এক ব্যক্তিকেও বলা যায়। কেননা আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দে লিপ্ত হলে … (৪৯ঃ ৯) অতএব যদি দুই ব্যক্তি দ্বন্দে লিপ্ত হয় তবে তা এ আয়াতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি কোন পাপাচারী তোমাদের কাছে কোন বার্তা আনয়ন করে তোমরা তা পরিক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না করে … (৪৯ঃ ৬)। নবী (সাঃ) কিরূপে তার আমীরদের পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজনকে পাঠাতেন – যেন তাদের কেউ ভুল করলে তাকে সুন্নাতের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
৬৭৬১। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক উম্মাতের মাঝে একজন বিশ্বস্ত লোক থাকে আর এ উম্মাতের বিশ্বস্ত ব্যাক্তিটি হল আবূ উবায়দা ইবনু জাররাহ (রাঃ)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৬২ | 6762 | ٦۷٦۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৮. সত্যবাদী বর্ণনাকারীর খবরে ওয়াহিদ আযান, নামায, রোযা, ফরয ও অন্যান্য আহকামের বিষয় গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন? যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয় (৯ঃ ১২২)। طَائِفَة শব্দটি এক ব্যক্তিকেও বলা যায়। কেননা আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দে লিপ্ত হলে … (৪৯ঃ ৯) অতএব যদি দুই ব্যক্তি দ্বন্দে লিপ্ত হয় তবে তা এ আয়াতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি কোন পাপাচারী তোমাদের কাছে কোন বার্তা আনয়ন করে তোমরা তা পরিক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না করে … (৪৯ঃ ৬)। নবী (সাঃ) কিরূপে তার আমীরদের পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজনকে পাঠাতেন – যেন তাদের কেউ ভুল করলে তাকে সুন্নাতের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
৬৭৬২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, জনৈক আনসারী সাহাবী ছিলেন, তিনি যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে অনুপস্থিত থাকতেন আমি তার কাছে উপস্থিত থাকতাম। তাহলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এখানে যা কিছু ঘটত তা আমি তাকে বর্ণনা করতাম। আর যদি আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুপস্থিত থাকতাম আর তিনি উপস্থিত থাকতেন, তাহলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে যা কিছু ঘটত তিনি এসে তা আমাকে বর্ণনা করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৬৩ | 6763 | ٦۷٦۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৮. সত্যবাদী বর্ণনাকারীর খবরে ওয়াহিদ আযান, নামায, রোযা, ফরয ও অন্যান্য আহকামের বিষয় গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন? যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয় (৯ঃ ১২২)। طَائِفَة শব্দটি এক ব্যক্তিকেও বলা যায়। কেননা আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দে লিপ্ত হলে … (৪৯ঃ ৯) অতএব যদি দুই ব্যক্তি দ্বন্দে লিপ্ত হয় তবে তা এ আয়াতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি কোন পাপাচারী তোমাদের কাছে কোন বার্তা আনয়ন করে তোমরা তা পরিক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না করে … (৪৯ঃ ৬)। নবী (সাঃ) কিরূপে তার আমীরদের পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজনকে পাঠাতেন – যেন তাদের কেউ ভুল করলে তাকে সুন্নাতের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
৬৭৬৩। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি ক্ষুদ্র সেনাদল প্রেরণ করলেন এবং এক ব্যাক্তিকে তাদের আমীর নিযুক্ত করে দিলেন। তিনি (আমীর) অগ্নিকুণ্ড প্রজ্জলিত করে বললেন, তোমরা এতে প্রবেশ কর। কতিপয় লোক (আমীরের আনুগত্যের মানসে) তাতে প্রবেশ করতে যাচ্ছিল। এ সময় অন্যরা বলল, আমরা তো (ইসলাম গ্রহণ করে) আগুন থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে চেয়েছি। পরে তারা এ ঘটনা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ব্যক্ত করলেন। তখন তিনি যারা আগুনে প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন তাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, যদি তারা তাতে প্রবেশ করত তাহলে কিয়ামত পর্যন্তই সেখানে থাকত। আর অন্যদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেনঃ আল্লাহর নাফরমানীর কাজে কোনরূপ আনুগত্য নেই। আনুগত্য করতে হবে কেবলমাত্র বৈধ কাজে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৬৪ | 6764 | ٦۷٦٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৮. সত্যবাদী বর্ণনাকারীর খবরে ওয়াহিদ আযান, নামায, রোযা, ফরয ও অন্যান্য আহকামের বিষয় গ্রহণযোগ্য। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ “তাদের প্রত্যেক দলের এক অংশ বহির্গত হয় না কেন? যাতে তারা দ্বীন সম্বন্ধে জ্ঞানানুশীলন করতে পারে এবং তাদের সম্প্রদায়কে সতর্ক করতে পারে, যখন তারা তাদের নিকট ফিরে আসবে, যাতে তারা সতর্ক হয় (৯ঃ ১২২)। طَائِفَة শব্দটি এক ব্যক্তিকেও বলা যায়। কেননা আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ মু’মিনদের দুই দল দ্বন্দে লিপ্ত হলে … (৪৯ঃ ৯) অতএব যদি দুই ব্যক্তি দ্বন্দে লিপ্ত হয় তবে তা এ আয়াতের অর্থের অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ যদি কোন পাপাচারী তোমাদের কাছে কোন বার্তা আনয়ন করে তোমরা তা পরিক্ষা করে দেখবে যাতে অজ্ঞতাবশত তোমরা কোন সম্প্রদায়কে ক্ষতিগ্রস্ত না করে … (৪৯ঃ ৬)। নবী (সাঃ) কিরূপে তার আমীরদের পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজনকে পাঠাতেন – যেন তাদের কেউ ভুল করলে তাকে সুন্নাতের দিকে ফিরিয়ে আনা হয়।
৬৭৬৪। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) ও যায়িদ ইবনু খালিদ (রাঃ) বর্ণনা করেন যে দু’ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একটি মুকাদ্দামা দায়ের করল। তবে আবুল ইয়ামান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে এ বর্ননায় উল্লেখ করা হয় যে, তিনি [আবূ হুরায়রা (রাঃ)] বলেছেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় একজন বেদুঈন দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ তা’আলার কিতাব অনুসারে আমার (বিচারের) ফায়সালা করে দিন। তখন তার প্রতিপক্ষ দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি ঠিকই বলেছেন, আল্লাহর কিতাব অনুসারে তার ফায়সালা করে দিন। এবং (অনুগ্রহ করে) আমাকে বলার অনুমতি দিন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি বল। তখন সে বলল, আমার ছেলে এ লোকটির বাড়িতে মজুর ছিল। বর্ণনাকারী বলেন, হাদীসে উক্ত عَسِيفاً শব্দটি শ্রমিকের অর্থে ব্যবহত হয়েছে। সে ছেলে এ লোকের স্ত্রীর সাথে যিনায় লিপ্ত হয়। কতিপয় লোক আমাকে বলল যে, আমার ছেলের উপর ‘রজম’ (প্রস্তর নিক্ষেপে হত্যা) এর বিধান কার্যকর হবে।

তখন আমি আমার ছেলের মুক্তিপণ হিসাবে সেই মহিলাকে) একশ বকরী ও একটি দাসী দেই। এরপর আমি আলেমদের নিকট এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করি। তাঁরা আমাকে বললেনঃ যে, তাঁর স্ত্রীর উপর ‘রজম’ এর হুকুম অবধারিত। আর আমার ছেলের জন্য রয়েছে একশ’ বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তরের হুকুম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ, তাঁর শপথ করে বলছি, অবশ্যই আমি তোমাদের দু’জনের মাঝে আল্লাহর কিতাব অনুসারে ফায়সালা করব। বকরী ও বাঁদী ফিরিয়ে নাও, আর তোমার ছেলের উপর একশ বেত্রাঘাত ও এক বছরের জন্য দেশান্তরের হুকুম কার্যকর হবে। এরপর তিনি আসলাম গোত্রের জনৈক ব্যাক্তিকে সম্বোধন করে বললেনঃ হে উনায়স! তুমি এর স্ত্রীর নিকট যাও, যদি সে স্বীকার করে তাহলে তাকে ‘রজম’ করো। উনায়স সেই স্ত্রীলোকটির নিকট গেলেন, সে স্বীকার করল তখন তিনি তাকে রজম করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৬৫ | 6765 | ٦۷٦۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৬৯. নবী (সাঃ) একা যুবায়র (রা.)-কে শত্রুপক্ষের সংবাদ সংগ্রহের জন্য প্রেরণ করেছিলেন।
৬৭৬৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, খন্দকের যুদ্ধে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদেরকে আহবান জানালেন। যুবায়র (রাঃ) তাঁর আহবানে সাড়া দিলেন। তিনি আবার আহবান জানালেন। এবারও যুবায়র (রাঃ) সাড়া দিলেন। তিনি পুনরায় আহবান জানালেন। এবারেও যুবায়র (রাঃ) সাড়া দিলেন। তিনবার এরূপ হওয়ার পর তিনি বললেনঃ প্রত্যেক নাবীর একজন হাওয়ারী (সাহায্যকারী) থাকে, আর যুবায়র হল আমার হাওয়ারী।

সুফিয়ান (রহঃ) বলেনঃ আমি এ হাদীসটি মুহাম্মদ ইবনু মুনকাদির থেকে হিফয করেছি। একবার আইউব তাকে বললেন, হে আবূ বকর (রাঃ), আপনি জাবির (রাঃ) এর হাদীস বর্ণনা করুন। কেননা, লোকদের নিকট জাবির (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদীস খুবই পছন্দনীয়। তখন তিনি সে মজলিসে বললেন, আমি জাবির (রাঃ) থেকে শুনেছি। এ বলে তিনি ধারাবাহিক অনেক হাদীস বর্ননা করলেন, যেগুলো আমিও জাবির (রাঃ) থেকে শুনছি। আমি সুফিয়ানকে বললাম যে, সাওরী বলেছেন যে, সেটা ছিল বনূ কুরায়যার যুদ্ধের দিন। তিনি বললেন, তুমি যেমন আমার কাছে বসা, ঠিক তেমনি কাছে বসে আমি মুহাম্মাদ ইবনুল মুনকাদির থেকে হিফয করেছি যে, সেটি ছিল খন্দকের দিন। সুফিয়ান বলেন, এটা একই দিন। তারপর তিনি মুচকি হাসি দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৬৬ | 6766 | ٦۷٦٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৭০. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ হে মু’মিনগণ! তোমরা নবীর গৃহে প্রবেশ করো না, যদি না তোমাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়। …… (২৪ঃ ২৭) যদি একজন তাকে অনুমতি দেয় তাহলে প্রবেশ করা বৈধ
৬৭৬৬। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি বাগানে প্রবেশ করলেন এবং আমাকে দরজায় পাহাবাদারী করার জন্য নির্দেশ দিলেন। এক লোক এসে প্রবেশের অনুমতি চাইল। তিনি বললেনঃ তাকে অনুমতি দাও এবং তাকে জান্নাতের খোশখবরী দাও। তিনি ছিলেন আবূ বকর (রাঃ)। তারপর উমর (রাঃ) আসলেন। তিনি বললেনঃ তাকেও অনুমতি দাও এবং জান্নাতের খোশখবরী দাও। তারপর উসমান (রাঃ) আসলেন। তিনি বললেনঃ তাকেও অনুমতি দাও এবং জান্নাতের খোশখবরী দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৬৭ | 6767 | ٦۷٦۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৭০. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ হে মু’মিনগণ! তোমরা নবীর গৃহে প্রবেশ করো না, যদি না তোমাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়। …… (২৪ঃ ২৭) যদি একজন তাকে অনুমতি দেয় তাহলে প্রবেশ করা বৈধ
৬৭৬৭। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আসলাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দ্বিতল কক্ষে অবস্থানরত ছিলেন। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কৃষ্ণকায় গোলামটি দরজার সন্মুখে দাঁড়ানো। আমি তাকে বললাম, তুমি বল এই উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এসেছে। তিনি আমাকে অনুমতি দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৬৮ | 6768 | ٦۷٦۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৭১. নবী (সাঃ) আমীর ও দূতদেরকে পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজন করে পাঠাতেন। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) দাহইয়া কালবী (রাঃ) কে তাঁর চিঠি দিয়ে বসরার গভর্নরের নিকট পাঠিয়েছিলেন, যেন সে তা (রোম সম্রাট) কায়সারের নিকট পৌঁছিয়ে দেয়
৬৭৬৮। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (পারস্য সম্রাট) কিসরার নিকট তার চিঠি পাঠালেন। তিনি ডেকে এ মর্মে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে, সে যেন এ চিঠি নিয়ে বাহরাইনের শাসনকর্তার নিকট দেয়। আর বাহরাইনের শাসনকর্তা যেন তা (সম্রাট) কায়সারের নিকট পৌছিয়ে দেয়। কায়সার এ চিঠি পাঠ করার পর তা টুকরা টুকরা করে ফেলল। ইবনু শিহাব বলেন আমার ধারণা ইবনু মূসাইয়্যেব বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের প্রতি বদ দোয়া করেছিলেন, তাদেরকেও আল্লাহ তা’আলা পূর্ণরূপে টুকরা টুকরা করে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৬৯ | 6769 | ٦۷٦۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৭১. নবী (সাঃ) আমীর ও দূতদেরকে পর্যায়ক্রমে একজনের পর একজন করে পাঠাতেন। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) দাহইয়া কালবী (রাঃ) কে তাঁর চিঠি দিয়ে বসরার গভর্নরের নিকট পাঠিয়েছিলেন, যেন সে তা (রোম সম্রাট) কায়সারের নিকট পৌঁছিয়ে দেয়
৬৭৬৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরা (আশুরা/আসুরা/আসূরা)র দিন আসলাম কবীলার এক ব্যাক্তিকে বললেনঃ তোমার গোত্রে ঘোষনা কর কিংবা বলেছিলেনঃ লোকের মাঝে ঘোষণা কর যে, যারা আহার করে ফেলেছে তারা যেন অবশিষ্ট দিন পূর্ন করে, আর যারা আহার করেনি তারা যেন রোযা পালন করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৭০ | 6770 | ٦۷۷۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৭২. আরবের বিভিন্ন প্রতিনিধিদলের প্রতি নবী (সাঃ) এর ওসিয়ত ছিল, যেন তারা (তাঁর কথাগুলো) তাদের পরবর্তী লোকদের পৌঁছিয়ে দেয়। এ বিষয়টি মালিক ইবন হুওয়ারিস থেকে বর্ণিত
৬৭৭০। আলী ইবনু জাদ (রহঃ) ও ইসহাক (রহঃ) … আবূ জামরা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি-বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) আমাকে তার খাটে বসাতেন। তিনি আমাকে বললেন, আবদুল কায়েস গোত্রের প্রতিনিধিদল যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসল। তিনি। বললেনঃ এ কোন প্রতিনিধিদল? তারা বলল, আমরা রাবীআ গোত্রের। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ গোত্র ও তার প্রতিনিধিদলকে ধন্যবাদ, যারা অপমানিত হয়নি এবং লজ্জিতও হয়নি। তারা বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার ও আমাদের মাঝে মুদার গোত্রের কাফেররা (প্রতিবন্ধক) রয়েছে। সুতরাং আমাদের এমন নির্দেশ দিন, যাতে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারি এবং আমাদের পরবর্তীদেরকেও অবহিত করতে পারি।

তারা পানীয় দ্রব্য সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসা করল। তিনি তাদের চারটি বিষয় থেকে বারণ করলেন এবং চারটি বিষয়ের নির্দেশ দিলেন। তিনি তাদের আল্লাহর প্রতি ঈমান আনতে নির্দেশ দিলেন। তিনি বললেনঃ আল্লাহর প্রতি ঈমান কি তোমরা জানো? তারা বলল, আল্লাহ ও তার রাসুলই অধিক জানেন। তিনি বললেনঃ এ মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করা যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই, তিনি একক, তার কোন শরীক নেই। আর মুহাম্মাদ আল্লাহর রাসুল এবং সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করা, যাকাত প্রদান করা। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমার মনে হয় তাতে রোযার কথাও ছিল। আর গনীমতের মাল থেকে এক-পঞ্চমাংশ প্রদান কর এবং তিনি তাদের (লাউয়ের খোলস থেকে তৈরি পাত্র) হানতাম (মাটির সবুজ রঙের পাত্র), মুযাফফাত তৈলাক্ত পাত্র বিশেষ), নাফীর (কাঠের খোদাই করা পাত্র) থেকে নিষেধ করলেন। কোন কোন বর্ণনায় ‘নাকীর’ এর স্থলে ‘মুকাইয়ার’ শব্দের উল্লেখ রয়েছে। এবং তিনি তাদের বললেনঃ এ কথাগুলো ভাল করে মনে রেখ এবং তোমাদের পিছনে যারা রয়েছে তাদের নিকট পৌছিয়ে দিও।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৭১ | 6771 | ٦۷۷۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৩. একজন মাত্র মহিলা প্রদত্ত খবর
৬৭৭১। মুহাম্মাদ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … তাওবা আনবারী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, শাবী আমাকে বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাসান (রাঃ) বর্ণিত হাদীসের (সংখ্যাধিক্যের) বিষয়টি কি দেখতে পাচ্ছো না? অথচ আমি ইবনু উমর (রাঃ) এর সাথে দুই বছর কিংবা দেড় বছর অবস্থান করেছি। কিন্তু তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এই হাদীসটি ছাড়া অন্য কোন হাদীস বর্ণনা করতে শুনিনি। তিনি বলেছেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের মাঝে কতিপয় ব্যাক্তি সমবেত ছিলেন, তাদের মাঝে সা’দও ছিলেন, তারা গোশত খাচ্ছিলেন। এমন সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণীদের কেউ তাদের ডেকে বললেন যে, এটা গুই সাপের গোশত। তারা (আহার থেকে) বিরত রইলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ খাও বা আহার কর, এটা হালাল। কিংবা তিনি বলেছিলেনঃ এটা (খেতে) কোন অসুবিধা নেই। তবে এটা আমার খাদ্য নয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৭২ | 6772 | ٦۷۷۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৪. কিতাব (কুরআন) ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করা
৬৭৭২। হুমায়দী (রহঃ) … তারিক ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, এক ইহুদী উমর (রাঃ) কে বলল, হে আমীরুল মুমিনীন! আমাদের উপর যদি এই আয়াত “আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম ও তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সস্পূর্ন করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের দ্বীন মনোনীত করলাম” (৫ঃ ৩) অবতীর্ন হত, তাহলে সে দিনটিকে আমরা ঈদ (উৎসবের) দিন হিসাবে গণ্য করতাম। উমর (রাঃ) বললেন, আমি অবশ্যই জানি এ আয়াতটি কোন দিন অবতীর্ণ হয়েছিল। আরাফার দিন জুমুআ দিবসে এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়েছিল।

হাদীসটি সুফিয়ান (রহঃ) মিসআর (রহঃ) থেকে, মিসআর কায়স থেকে, কায়স (রহঃ) তারিক থেকে শুনেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৭৩ | 6773 | ٦۷۷۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৪. কিতাব (কুরআন) ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করা
৬৭৭৩। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, দ্বিতীয় দিবসে যখন মুসলিমরা আবূ বকর (রাঃ) এর বায়আত গ্রহণ করেছিল এবং তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিম্বরের উপর উপবিষ্ট ছিলেন। উমর (রাঃ) কে আবূ বকর (রাঃ) এর পুর্বে হামদ ও ছানা ও কালেমা শাহাদাত পাঠ করতে তিনি (আনাস) শুনেছেন। তিনি বললেন, এরপর আল্লাহ তা’আলা তাঁর রাসূলের জন্য তোমাদের কাছে যা ছিল তার চেয়ে তার নিকট যা আছে সেটাকেই পছন্দ করেছেন। আর এই সে কিতাব যার মাধ্যমে আল্লাহ তোমাদের রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হেদায়েত করেছেন। সুতরাং একে তোমরা আকড়িয়ে ধর। তাহলে এর দ্বারা আল্লাহ তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যে হেদায়েত দান করেছিলেন তোমরাও সেই হেদায়েত লাভ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৭৪ | 6774 | ٦۷۷٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৪. কিতাব (কুরআন) ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করা
৬৭৭৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাঁর দেহের সাথে) আমাকে জড়িয়ে ধরলেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহ! একে কিতাবের জ্ঞান দান কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৭৫ | 6775 | ٦۷۷۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৪. কিতাব (কুরআন) ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করা
৬৭৭৫। আবদুল্লাহ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … আবূ বারযা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে ইসলাম ও মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দ্বারা অমুখাপেক্ষী করেছেন। কিংবা বলেছেন, পরিপূর্ণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৭৬ | 6776 | ٦۷۷٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৪. কিতাব (কুরআন) ও সুন্নাহকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করা
৬৭৭৬। ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু দ্বীনার (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) আবদুল মালিক ইবনু মারওয়ানের বায়আত গ্রহন প্রসঙ্গে লিখলেন। আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নাতের ভিত্তিতে আমার সাধ্যানুসারে (আপনার নির্দেশ) শোনা ও মানার অঙ্গীকার করছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৭৭ | 6777 | ٦۷۷۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৫. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমি ‘জাওয়ামিউল কালিম’ (ব্যাপক মর্মজ্ঞাপক সংক্ষিপ্ত বাক্য) সহ প্রেরিত হয়েছি
৬৭৭৭। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ‘জাওয়ামিউল কালিম’ (ব্যাপক অর্থবোধক সংক্ষিপ্ত বাক্য) সহ প্রেরিত হয়েছি এবং আমাকে প্রভাব দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে। একবার আমি ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে পেলাম, পৃথিবীর ভাণ্ডারসমুহের চাবি আমাকে দান করা হয়েছে এবং তা আমার হাতে রেখে দেওয়া হায়ছে।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করেছেন। আর তোমরা তা ব্যবহার করছ কিংবা বলেছিলেন তোমরা তা থেকে উপকৃত হচ্ছ কিংবা তিনি অনুরূপ কোন বাক্য বলেছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৭৮ | 6778 | ٦۷۷۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৫. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমি ‘জাওয়ামিউল কালিম’ (ব্যাপক মর্মজ্ঞাপক সংক্ষিপ্ত বাক্য) সহ প্রেরিত হয়েছি
৬৭৭৮। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, প্রত্যেক নাবী কেই কোন-না-কোন বিশেষ নিদর্শন প্রদান করা হয়েছে। যার অনুরূপ তাঁর উপর ঈমান আনা হয়েছে, কিংবা লোকেরা তার উপর ঈমান এনেছে। আর আমাকে যা দেওয়া হয়েছে, সে হল ওহী, যা আল্লাহ তা’আলা আমার উপর অবতীর্ন করেছেন। সুতরাং আমি আশা করি যে, কিয়ামতের দিন আমার অনুসারীর সংখ্যা তাদের তুলনায় সর্বাধিক হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৭৯ | 6779 | ٦۷۷۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৬. নবী (সাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণ বাঞ্জনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর (২৫ঃ ৭৪)। জনৈক বর্ণনাকারী বলেছেন, এরূপ ইমাম যে আমরা আমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করব, আর আমাদের পরবর্তীরা আমাদের অনুসরণ করবে। ইবন আউন বলেন, তিনটি জিনিস আমি আমার নিজের জন্য ও আমার ভাইদের জন্য পছন্দ করি। (তার একটি হল) এই সুন্নাত, যা শিখবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। (দ্বিতীয়টি হল) কুরআন যা তারা ভালভাবে বুঝতে চেষ্টা করবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। এবং কল্যাণ ব্যতীত লোকদের থেকে পৃথব থাকবে (অর্থাৎ কল্যাণের প্রতি আহবান করবে)
৬৭৭৯। আমর ইবনু আব্বাস (রহঃ) … আবূ ওয়ায়েল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এই মসজিদে শায়বার (রহঃ) এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। তিনি বললেন, তুমি যেরূপ (আমার কাছে) বসে আছ, উমর (রাঃ) অনুরূপভাবে এ জায়গায় বসা ছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন, আমি ইচ্ছা করছি যে, এতে সোনা ও রুপার কোন কিছুই অবশিষ্ট রাখব না বরং সবকিছু মুসলমানদের মাঝে বণ্টন করে দিয়ে দিব। আমি বললাম, আপনার জন্য এটা করা ঠিক হবে না। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কেন? আমি বললাম, আপনার সঙ্গীদ্বয় [অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ)] এটা করেননি। তিনি বললেন, তাঁরা দু’জন অনুসরণ করার মত ব্যাক্তিই ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৮০ | 6780 | ٦۷۸۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৬. নবী (সাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণ বাঞ্জনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর (২৫ঃ ৭৪)। জনৈক বর্ণনাকারী বলেছেন, এরূপ ইমাম যে আমরা আমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করব, আর আমাদের পরবর্তীরা আমাদের অনুসরণ করবে। ইবন আউন বলেন, তিনটি জিনিস আমি আমার নিজের জন্য ও আমার ভাইদের জন্য পছন্দ করি। (তার একটি হল) এই সুন্নাত, যা শিখবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। (দ্বিতীয়টি হল) কুরআন যা তারা ভালভাবে বুঝতে চেষ্টা করবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। এবং কল্যাণ ব্যতীত লোকদের থেকে পৃথব থাকবে (অর্থাৎ কল্যাণের প্রতি আহবান করবে)
৬৭৮০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, আমানত আসমান থেকে মামুষের অন্তর্মুলে অবগামী হয়েছে, তারপর কুরআন অবতীর্ন হয়েছে এবং মানুষ তা পাঠ করেছে এবং সুন্নাত শিক্ষা করেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৮১ | 6781 | ٦۷۸۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৬. নবী (সাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণ বাঞ্জনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর (২৫ঃ ৭৪)। জনৈক বর্ণনাকারী বলেছেন, এরূপ ইমাম যে আমরা আমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করব, আর আমাদের পরবর্তীরা আমাদের অনুসরণ করবে। ইবন আউন বলেন, তিনটি জিনিস আমি আমার নিজের জন্য ও আমার ভাইদের জন্য পছন্দ করি। (তার একটি হল) এই সুন্নাত, যা শিখবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। (দ্বিতীয়টি হল) কুরআন যা তারা ভালভাবে বুঝতে চেষ্টা করবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। এবং কল্যাণ ব্যতীত লোকদের থেকে পৃথব থাকবে (অর্থাৎ কল্যাণের প্রতি আহবান করবে)
৬৭৮১। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, সর্বোত্তম কালাম হল আল্লাহর কিতাব, আর সর্বোত্তম আদর্শ হল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদর্শ আর সবচেয়ে নিকৃষ্টতম বিষয় হল কুসংস্কারসমুহ। তোমাদের কাছে যা ঘোষণা করা হচ্ছে তা বাস্তবায়িত হবেই, তোমরা ব্যর্থ করতে পারবে না (৬ঃ ১৩৪)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৮২ | 6782 | ٦۷۸۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৬. নবী (সাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণ বাঞ্জনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর (২৫ঃ ৭৪)। জনৈক বর্ণনাকারী বলেছেন, এরূপ ইমাম যে আমরা আমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করব, আর আমাদের পরবর্তীরা আমাদের অনুসরণ করবে। ইবন আউন বলেন, তিনটি জিনিস আমি আমার নিজের জন্য ও আমার ভাইদের জন্য পছন্দ করি। (তার একটি হল) এই সুন্নাত, যা শিখবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। (দ্বিতীয়টি হল) কুরআন যা তারা ভালভাবে বুঝতে চেষ্টা করবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। এবং কল্যাণ ব্যতীত লোকদের থেকে পৃথব থাকবে (অর্থাৎ কল্যাণের প্রতি আহবান করবে)
৬৭৮২। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) ও যায়িদ ইবনু খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। (এ সময়) তিনি বললেনঃ অবশ্যই আমি আল্লাহ তা’আলার কিতাব অনুযাযী তোমাদের মাঝে ফায়সালা করব।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৮৩ | 6783 | ٦۷۸۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৬. নবী (সাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণ বাঞ্জনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর (২৫ঃ ৭৪)। জনৈক বর্ণনাকারী বলেছেন, এরূপ ইমাম যে আমরা আমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করব, আর আমাদের পরবর্তীরা আমাদের অনুসরণ করবে। ইবন আউন বলেন, তিনটি জিনিস আমি আমার নিজের জন্য ও আমার ভাইদের জন্য পছন্দ করি। (তার একটি হল) এই সুন্নাত, যা শিখবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। (দ্বিতীয়টি হল) কুরআন যা তারা ভালভাবে বুঝতে চেষ্টা করবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। এবং কল্যাণ ব্যতীত লোকদের থেকে পৃথব থাকবে (অর্থাৎ কল্যাণের প্রতি আহবান করবে)
৬৭৮৩। মুহাম্মদ ইবনু সিনান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার সকল উম্মতই জান্নাতে প্রবেশ করবে, কিন্তু যে অস্বীকার করে। তারা বললেন, কে অস্বীকার করে। তিনি বললেনঃ যারা আমার অনুসরণ করে তারা জান্নাতে প্রবেশ করবে, আর যে আমার অবাধ্য হবে সে-ই অস্বীকার করল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৮৪ | 6784 | ٦۷۸٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৬. নবী (সাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণ বাঞ্জনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর (২৫ঃ ৭৪)। জনৈক বর্ণনাকারী বলেছেন, এরূপ ইমাম যে আমরা আমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করব, আর আমাদের পরবর্তীরা আমাদের অনুসরণ করবে। ইবন আউন বলেন, তিনটি জিনিস আমি আমার নিজের জন্য ও আমার ভাইদের জন্য পছন্দ করি। (তার একটি হল) এই সুন্নাত, যা শিখবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। (দ্বিতীয়টি হল) কুরআন যা তারা ভালভাবে বুঝতে চেষ্টা করবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। এবং কল্যাণ ব্যতীত লোকদের থেকে পৃথব থাকবে (অর্থাৎ কল্যাণের প্রতি আহবান করবে)
৬৭৮৪। মুহাম্মদ ইবনু আবাদা (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদল ফেরেশতা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আগমন করলেন। তিনি তখন ঘুমন্ত ছিলেন। একজন ফেরেশতা বললেন, তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিদ্রিত। অপর একজন বললেন, চক্ষু নিদ্রিত বটে, কিন্তু অন্তর জাগ্রত। তখন তারা বললেন, তোমাদের এ সাথীর একটি উপমা আছে সুতরাং তার উপমাটি তোমরা বর্ণনা কর। তখন তাদের কেউ বলল, তিনি তো নিদ্রিত, আর কেউ বলল, চক্ষু নিদ্রিত তবে অন্তরাত্মা জাগ্রত।

তখন তারা বলল, তাঁর উপমা হল সেই ব্যাক্তির মত, যে একটি গৃহ নির্মান করল। তারপর সেখানে খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করল এবং একজন আহবানকারীকে (লোকদের ডাকতে) পাঠাল। যারা আহবানকারীর আহবানে সাড়া দিল, তারা গৃহে প্রবেশ করে খালা খাওয়ার সুযোগ লাভ করল। আর যারা আহবানকারীর আহবানে সাড়া দিল না, তারা গৃহেও প্রবেশ করতে পারল না এবং খানাও খেতে পারল না। তখন তারা বললেনঃ উপমাটির ব্যাখ্যা করুন, যাতে তিনি বুঝতে পারেন। তখন কেউ বলল, তিনি তো নিদ্রিত, আর কেউ বলল, চক্ষু নিদ্রিত, তবে অন্তরাত্তা জড়িত।

তখন তারা বললেন, গৃহটি হল জান্নাত, আহবানকারী হলেন মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসরণ করল, তারা আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যারা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অবাধ্যতা করল, তারা প্রকৃতপক্ষে আল্লাহরই অবাধ্যতা করল। মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হলেন মানুষের মাঝে পার্থক্যের মানদণ্ড। কুতায়বা জাবির (রাঃ) থেকে অনুরূপ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন, তবে তিনি “নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে বের হয়ে আসলেন” এই বাক্যটি বলছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৮৫ | 6785 | ٦۷۸۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৬. নবী (সাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণ বাঞ্জনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর (২৫ঃ ৭৪)। জনৈক বর্ণনাকারী বলেছেন, এরূপ ইমাম যে আমরা আমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করব, আর আমাদের পরবর্তীরা আমাদের অনুসরণ করবে। ইবন আউন বলেন, তিনটি জিনিস আমি আমার নিজের জন্য ও আমার ভাইদের জন্য পছন্দ করি। (তার একটি হল) এই সুন্নাত, যা শিখবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। (দ্বিতীয়টি হল) কুরআন যা তারা ভালভাবে বুঝতে চেষ্টা করবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। এবং কল্যাণ ব্যতীত লোকদের থেকে পৃথব থাকবে (অর্থাৎ কল্যাণের প্রতি আহবান করবে)
৬৭৮৫। আবু নুআয়ম (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে কুরআন পাঠকারী সমাজ! তোমরা (কুরআন ও সুন্নাহর উপর) সুদৃঢ় থাক। নিশ্চয়ই তোমরা অনেক পিছনে পড়ে আছ। আর যদি তোমরা (সিরাতে মুস্তাকীম থেকে সরে গিয়ে) ডান কিংবা বামের পথ অনুসরণ কর তাহলে তোমরা (হেদায়েত থেকে) অনেক দুরে সরে যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৮৬ | 6786 | ٦۷۸٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৬. নবী (সাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণ বাঞ্জনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর (২৫ঃ ৭৪)। জনৈক বর্ণনাকারী বলেছেন, এরূপ ইমাম যে আমরা আমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করব, আর আমাদের পরবর্তীরা আমাদের অনুসরণ করবে। ইবন আউন বলেন, তিনটি জিনিস আমি আমার নিজের জন্য ও আমার ভাইদের জন্য পছন্দ করি। (তার একটি হল) এই সুন্নাত, যা শিখবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। (দ্বিতীয়টি হল) কুরআন যা তারা ভালভাবে বুঝতে চেষ্টা করবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। এবং কল্যাণ ব্যতীত লোকদের থেকে পৃথব থাকবে (অর্থাৎ কল্যাণের প্রতি আহবান করবে)
৬৭৮৬। আবূ কুরায়ব (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার ও আমাকে আল্লাহ যা কিছু দিয়ে প্রেরন করেছেন তার উপমা হল এমন যে, এক ব্যাক্তি কোন এক সম্প্রদায়ের নিকট এসে বলল, হে কাওম! আমি নিজের চোখে সেনাবাহিনীকে দেখে এসেছি। আমি সুস্পষ্টসতর্ককারী। সুতরাং তোমরা আত্মরক্ষার চেষ্টা কর। কাওমের কিছু লোক তার কথা মেনে নিল, সুতরাং রাতের প্রথম ভাগে তারা সে স্থান ছেড়ে রওনা হল এবং একটি নিরাপদ স্থানে গিয়ে পৌছল। ফলে তারা রক্ষা পেল তাদের থেকে আর একদল লোক তার কথা অবিশ্বাস করল, ফলে তারা নিজেদের আবাসস্থলেই রয়ে গেল। প্রভাভে শক্রবাহিনী তাদের উপর আক্রমণ করল, তাদেরকে ধ্বংস করে দিল এবং তাদেরকে নির্মূল করে দিল। এটাই হল তাদের উপমা, যারা আমার আনুগত্য করে এবং আমি যা নিয়ে এসেছি তার অনুসরণ করে। আর যারা আমার নাফরমানী করে এবং আমি যে সত্য নিয়ে এসেছি তাকে নিথ্যা প্রতিপন্ন করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৮৭ | 6787 | ٦۷۸۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৬. নবী (সাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণ বাঞ্জনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর (২৫ঃ ৭৪)। জনৈক বর্ণনাকারী বলেছেন, এরূপ ইমাম যে আমরা আমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করব, আর আমাদের পরবর্তীরা আমাদের অনুসরণ করবে। ইবন আউন বলেন, তিনটি জিনিস আমি আমার নিজের জন্য ও আমার ভাইদের জন্য পছন্দ করি। (তার একটি হল) এই সুন্নাত, যা শিখবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। (দ্বিতীয়টি হল) কুরআন যা তারা ভালভাবে বুঝতে চেষ্টা করবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। এবং কল্যাণ ব্যতীত লোকদের থেকে পৃথব থাকবে (অর্থাৎ কল্যাণের প্রতি আহবান করবে)
৬৭৮৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকাল করলেন। আর তার পরে আবূ বকর (রাঃ) কে খলীফা নির্বাচন করা হল এবং আরবের যারা কাফের হওয়ার তারা কাফের হরে গিয়েছিল। তখন উমর (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ) কে বললেন, আপনি কি করে লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন, অথচ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি মানুষের সাথে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলার পূর্ব পর্যন্ত যুদ্ধ করে যাওয়ার জন্য নির্দেশিত হয়েছি। অতএব যে ব্যাক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলে ফেলল সে তার জান ও মাল আমার থেকে নিরাপদ ও সংরক্ষিত করে ফেলল। তবে ইসলামী বিধানের আওতায় পড়ে গেলে সে ভিন্নকথা। তাদের প্রকৃত হিসাব আল্লাহর কাছে হবে।

আবূ বকর (রাঃ) বললেন, যারা সালাত (নামায/নামাজ) ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য করে, আমি অবশ্যই তাদের সাথে যুদ্ধ করব। কেননা, যাকাত হল সম্পদের হক (অবশ্য পালনীয় বিধান)। আল্লাহর শপথ! যদি তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যা আদায় করত, এখন তা (সেভাবে) দিতে অস্বীকার করে, তাহলেও আমি তাদের সাথে যুদ্ধ করব। উমর (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি দেখছিলাম যে, যুদ্ধ করার ব্যাপারে আল্লাহ তা আলা আবূ বকরের সিনা উন্মুক্ত করে দিয়েছেন। সুতরাং আমি বুঝতে পারলাম এ সিদ্ধান্তই সঠিক।

(ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন) ইবন বুকায়র ও আবদুল্লাহ (রহঃ) লায়স এর সুত্রে উকায়ল থেকে বর্ণনা করতে গিয়ে لو منعوني كذا (যদি তারা এই পরিমাণ দিতে অস্বীকার করে) এর স্থলে لو منعوني عناقا (যদি তারা একটি ছোট উটের বাচ্ছাও দিতে অস্বীকার করে) উল্লেখ করেছেন। আর এটাই বিশুদ্ধতম। আর এতিকে লোকেরা عناقا বর্ণনা করেছেন। عز وجل বস্তুত এ স্থানে عقالا পড়া বৈধ নয়। আর عقالا শব্দটি শাবী এর হাদীসে মুরসাল সুত্রে বর্ণিত হয়েছে। অনুরূপভাবে কুতায়বা (রহঃ) عقالا বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৮৮ | 6788 | ٦۷۸۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৬. নবী (সাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণ বাঞ্জনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর (২৫ঃ ৭৪)। জনৈক বর্ণনাকারী বলেছেন, এরূপ ইমাম যে আমরা আমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করব, আর আমাদের পরবর্তীরা আমাদের অনুসরণ করবে। ইবন আউন বলেন, তিনটি জিনিস আমি আমার নিজের জন্য ও আমার ভাইদের জন্য পছন্দ করি। (তার একটি হল) এই সুন্নাত, যা শিখবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। (দ্বিতীয়টি হল) কুরআন যা তারা ভালভাবে বুঝতে চেষ্টা করবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। এবং কল্যাণ ব্যতীত লোকদের থেকে পৃথব থাকবে (অর্থাৎ কল্যাণের প্রতি আহবান করবে)
৬৭৮৮। ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উয়ায়না ইবনু হিসন ইবনু হুযায়ফা ইবনু বাদর (রহঃ) তাঁর ভ্রাতূষ্পুত্র হুর ইবনু কায়স ইবনু হিসন এর নিকট এলেন। উমর (রাঃ) যাদের নিজের সান্নিধ্যে রাখতেন, হুর ইবনু কায়স (রহঃ) ছিলেন তাদেরই একজন। যুবক হোক কিংবা বৃদ্ধ কারী (আলিম) ব্যাক্তিরাই উমর (রাঃ) এর মজলিসের সভাসদ ও পরামর্শদাতা ছিলেন। উয়ায়না তার ভাতিজাকে বললেন, হে ভাতিজা! তোমার কি আমীরের নিকট এতটুকু প্রভাব আছে যে আমার জন্য সাক্ষাতের অনুমতি গ্রহণ করতে পারবে? সে বলল, আমি আপনার ব্যাপারে তাঁর নিকট অনুমতি প্রার্থনা করব। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ তিনি (হুর) উয়ায়নার জন্য অনুমতি চাইলেন।

তারপর যখন উয়ায়না উমর (রাঃ) এর নিকট গেলেন, তখন সে বলল, হে ইবনু খাত্তাব! আপনি আমাদের (প্রচুর পরিমাণে) মাল দিচ্ছেন না, আবার ইনসাফের ভিত্তিতে আমাদের মাঝে ফায়সালাও করছেন না। তখন উমর (রাঃ) রাগান্বিত হলেন, এমন কি তিনি তাকে প্রহার করতে উদ্যত হলেন। তখন হুর বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন। আল্লাহ তাঁর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলেছেন, তুমি ক্ষমাপরায়ণতা অবলম্বন কর, সৎকাজের নির্দেশ দাও, আর অজ্ঞদেরকে উপেক্ষা কর। (৭ঃ ১৯৯)। এ লোকটি নিঃসন্দেহে একজন মুর্খ। আল্লাহর শপথ! উমর (রাঃ) এর সামনে এই আয়াতটি পাঠ করা হলে তিনি মোটেও তা লংঘন করলেন না। বস্তুত তিনি মহান আল্লাহ তা’আলার কিতাবের বড়ই অনুগত ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৮৯ | 6789 | ٦۷۸۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৬. নবী (সাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণ বাঞ্জনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর (২৫ঃ ৭৪)। জনৈক বর্ণনাকারী বলেছেন, এরূপ ইমাম যে আমরা আমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করব, আর আমাদের পরবর্তীরা আমাদের অনুসরণ করবে। ইবন আউন বলেন, তিনটি জিনিস আমি আমার নিজের জন্য ও আমার ভাইদের জন্য পছন্দ করি। (তার একটি হল) এই সুন্নাত, যা শিখবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। (দ্বিতীয়টি হল) কুরআন যা তারা ভালভাবে বুঝতে চেষ্টা করবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। এবং কল্যাণ ব্যতীত লোকদের থেকে পৃথব থাকবে (অর্থাৎ কল্যাণের প্রতি আহবান করবে)
৬৭৮৯। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আসমা বিনত আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার সুর্যগ্রহণের সময় আমি আয়িশা (রাঃ) এর নিকট এলাম। লোকেরা তখন (সালাতে) দাঁড়িয়েছিল এবং তিনিও দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, লোকদের কি হল? তিনি হাত দিয়ে আসমানের দিকে ইশারা করলেন এবং বললেন, সুবহানাল্লাহ! আমি বললাম, এটা কি কোন নিদর্শন? তখন তিনি মাথা দুলিয়ে হ্যাঁ বললেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করলেন, তখন (প্রথমে) তিনি আল্লাহর হামদ ও ছানা পাঠ করলেন। তারপর বললেনঃ আমি যা দেখিনি তার সবকিছুই আজকের এই স্থানে দেখেছি। এমন কি জান্নাত ও জাহান্নামও দেখেছি।

আর আমার নিকট ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, কবরে তোমাদের পরীক্ষায় ফেলা হবে, যা প্রায় দাজ্জালের পরীক্ষার ন্যায়ই (কঠিন) হবে। তবে যারা মুমিন হবে, অথবা (বলেছিলেন) মুসলিম হবে। বর্ণনাকারী বলেন, আসমা (রাঃ) ‘মুমিন’ বলেছিলেন, না ‘মুসলিম’ বলেছিলেন তা আমার স্মরণ নেই। তারা বলবে, মুহাম্মাদ আমাদের কাছে সূস্পষ্ট দলীল নিয়ে এসেছিলেন, আমরা তার আহবানে সাড়া দিয়েছি এবং ঈমান এনেছি। তখন তাকে বলা হবে, তুমি আরামে ঘুমিয়ে থাক, আমরা জানি তুমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী ছিলে। আর যারা মুনাফিক হবে অথবা (বলেছিলেন) সন্দেহকারী হবে, বর্ণনাকারী বলেন, আসমা ‘মুনাফিক’ বলেছিলেন না ‘সন্দেহকারী’ বলেছিলেন তা আমার মনে নেই। তারা বলবে, আমি কিছুই জানিনা, আমি মানুষকে কিছু কথা বলতে শুনেছি, আমিও তাই বলেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৯০ | 6790 | ٦۷۹۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৬. নবী (সাঃ) এর সুন্নাতের অনুসরণ বাঞ্জনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর (২৫ঃ ৭৪)। জনৈক বর্ণনাকারী বলেছেন, এরূপ ইমাম যে আমরা আমাদের পূর্ববর্তীদের অনুসরণ করব, আর আমাদের পরবর্তীরা আমাদের অনুসরণ করবে। ইবন আউন বলেন, তিনটি জিনিস আমি আমার নিজের জন্য ও আমার ভাইদের জন্য পছন্দ করি। (তার একটি হল) এই সুন্নাত, যা শিখবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। (দ্বিতীয়টি হল) কুরআন যা তারা ভালভাবে বুঝতে চেষ্টা করবে এবং জানবার জন্য এর সম্পর্কে প্রশ্ন করবে। এবং কল্যাণ ব্যতীত লোকদের থেকে পৃথব থাকবে (অর্থাৎ কল্যাণের প্রতি আহবান করবে)
৬৭৯০। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, তোমরা আমাকে প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাক, যতক্ষন না আমি তোমাদের কিছু বলি। কেননা, তোমাদের পূর্বে যারা ছিল, তারা তাদের নাবীদের অধিক প্রশ্ন করা ও নাবীদের সাথে মতবিরোধ করার কারনেই ধ্বংস হয়েছে। তাই আমি যখন তোমাদের কোন বিষয়ে নিষেধ করি তখন তা থেকে বেঁচে থাক। আর যদি কোন বিষয়ে আদেশ করি তাহলে সাধ্যমত পালন কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৯১ | 6791 | ٦۷۹۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৭. অধিক প্রশ্ন করা এবং অনর্থক কষ্ট করা নিন্দনীয় এবং আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে (৫ঃ ১০১)
৬৭৯১। আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ মুকরী (রহঃ) … আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিমদের সবচেয়ে বড় অপরাধী সেই ব্যাক্তি যে এমন বিষয়ে প্রশ্ন করে যা পূর্বে হারাম ছিল না। কিন্তু তার প্রশ্নের কারণে তা হারাম হয়ে গেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৯২ | 6792 | ٦۷۹۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৭. অধিক প্রশ্ন করা এবং অনর্থক কষ্ট করা নিন্দনীয় এবং আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে (৫ঃ ১০১)
৬৭৯২। ইসহাক (রহঃ) … যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাটাই দিয়ে মসজিদে একটি কামরা তৈরি করেছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাতে কয়েক রাত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এতে লোকেরা তার সঙ্গে সমবেত হত। তারপর এক রাতে তারা তার আওয়াজ শুনতে পেল না এবং তারা মনে করল তিনি ঘুমিয়ে পড়েছেন। তাদের কেউ কেউ গলা খাকার দিতে শুরু করল, যেন তিনি তাদের কাছে বেরিয়ে আসেন। তখন তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমাদের নিত্য দিনের কার্যকলাপ আমি লক্ষ্য করছি, তাতে আমার ভয় হচ্ছে যে, তোমাদের উপর তা ফরয করে দেওয়া হয়। কিন্তু যদি তোমাদের উপর ফরব করে দেওয়া হয় তাহলে তোমরা তা কায়েম করবে না। অতএব হে লোকেরা! তোমরা নিজ নিজ ঘরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করো। কেননা, ফরয সালাত (নামায/নামাজ) ছাড়া একজন লোকের সবচেয়ে উত্তম সালাত (নামায/নামাজ) হল যা সে তার ঘরে আদায় করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৯৩ | 6793 | ٦۷۹۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৭. অধিক প্রশ্ন করা এবং অনর্থক কষ্ট করা নিন্দনীয় এবং আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে (৫ঃ ১০১)
৬৭৯৩। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এমন কতিপয় বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন করা হল যা তিনি অপছন্দ করেন। কিন্তু লোকেরা যখন তাকে বেশি বেশি প্রশ্ন করতে শুরু করল, তিনি রাগাম্বিত হলেন এবং বললেনঃ আমাকে প্রশ্ন কর। তখন এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার পিতা কে? ডিনি বললেনঃ তোমার পিতা হল হুযাফা। এরপর আর একজন দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার পিতা কে? তিনি বললেনঃ তোমার পিতা শায়বার আযাদকৃত গোলাম সালিম। উমর (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারায় রাগের লক্ষণ দেখতে পেয়ে বললেনঃ আমরা আল্লাহর নিকট তাওবা করছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৯৪ | 6794 | ٦۷۹٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৭. অধিক প্রশ্ন করা এবং অনর্থক কষ্ট করা নিন্দনীয় এবং আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে (৫ঃ ১০১)
৬৭৯৪। মূসা (রহঃ) … মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) এর কাতিব (কেরানী) ওয়াররাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মুআবিয়া (রাঃ) মুগীরা (রাঃ) এর নিকট এ মর্মে লিখে পাঠালেন যে, তুমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যা কিছু শুনেছ তা আমাকে লিখে পাঠাও। তিনি বলেন, তিনি তাকে লিখলেন যে, আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি সালাত (নামায/নামাজ)-এর পর বলতেনঃ আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই। তিনি একক, তার কোন শরীক নেই, সম্রাজ্য কেবলমাত্র তারই, আর সকল প্রশংসা একমাত্র তারই জন্য, তিনি সকল বিষয়ের উপর ক্ষমতাবান। হে আল্লাহ! তুমি যা দান করবে তাকে ঠেকাবার মত কেউ নেই, আর তুমি যে বিষয়ে বাধা প্রদান করবে তা দেওয়ার মত কেউ নেই। ধন-প্রাচুর্য তোমার নিকটে প্রাচুর্যধারীদের কোনই উপকারে আসবে না।

তিনি আরো লিখেছিলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তর্ক-বিতর্কে প্রবৃত্ত হওয়া, অধিক প্রশ্ন করা ও ধন-সস্পদ অনর্থক বিনষ্ট করা থেকে নিষেধ করতেন। আর তিনি মায়েদের অবাধ্যতা, কন্যা সন্তানদের জীবন্ত প্রোথিত করা ও প্রাপকের প্রাপ্য দিতে হাত গুটিয়ে নেওয়া এবং আদায়ের ব্যাপারে হাত বাড়িয়ে দেওয়া থেকে নিষেধ করতেন। আবু আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহঃ) বলেন, তারা (কাফের) জাহিলিয়াতের যুগে স্বীয়-কন্যাদেরকে হত্যা করতেন। অতঃপর আল্লাহ তা’আলা তা হারাম করে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৯৫ | 6795 | ٦۷۹۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৭. অধিক প্রশ্ন করা এবং অনর্থক কষ্ট করা নিন্দনীয় এবং আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে (৫ঃ ১০১)
৬৭৯৫। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা উমর (রাঃ) এর কাছে (উপবিষ্ট) ছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ আমাদের কৃত্রিমতা থেকে নিষেধ করা হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৯৬ | 6796 | ٦۷۹٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৭. অধিক প্রশ্ন করা এবং অনর্থক কষ্ট করা নিন্দনীয় এবং আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে (৫ঃ ১০১)
৬৭৯৬। আবুল ইযামান (রহঃ) ও মাহমূদ ইবনু গায়লান (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। দ্বিপ্রহরের পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে আসলেন এবং যুহরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। সালাম ফিরানোর পর তিনি মিম্বরে উঠে দাঁড়ালেন এবং কিয়ামত সম্পর্কে আলোচনা করলেন। তিনি উল্লেখ করলেন যে, কিয়ামতের পূর্বে অনেক বড় বড় ঘটনা সংঘটিত হবে। তারপর তিনি বললেনঃ কেউ যদি আমাকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে ভাল মনে করে, তাহলে সে তা করতে পাররে। আল্লাহর শপথ! আমি এখানে অবস্থান করা পর্যন্ত তোমরা আমাকে যে বিষয়েই জিজ্ঞাসা করবে, আমি তা তোমাদের অবহিত করব।

আনাস (রাঃ) বলেন, এতে লোকেরা খুব কাঁদতে থাকল। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুব বলতে থাকলেন। তোমরা আমার কাছে প্রশ্ন কর। আনাস (রাঃ) বলেন, তখন এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার আশ্রয়স্থল কোথায়? তিনি বললেনঃ জাহান্নাম। তারপর আবদুল্লাহ ইবনু হুযাফা (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার পিতা কে? তিনি বললেনঃ তোমার পিতা হুযাফা। আনাস (রাঃ) বলেনঃ তারপর তিনি বার বার বলতে থাকলেন তোমরা আমার কাছে প্রশ্ন জিজ্ঞাসা কর। তোমরা আমার কাছে প্রশ্ন কর।

এতে উমর (রাঃ) হাঁটু গেড়ে বসে পড়লেন এবং বললেন, আমরা আল্লাহকে রব হিসাবে মেনে, ইসলামকে দ্বীন হিসাবে গ্রহণ করে এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে রাসুল হিসাবে বিশ্বাস করে সন্তুষ্ট আছি। আনাস (রাঃ) বলেন, উমর (রাঃ) যখন এ কথা বললেন তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব হয়ে গেলেন। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উত্তম! যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম করে বলছি, এইমাত্র আমি যখন সালাত (নামায/নামাজ)-এ ছিলাম তখন এই দেয়ালের প্রস্থে জান্নাত ও জাহান্নাম আমার সন্মুখে পেশ করা হয়েছিল। আজকের ন্যায় এমন কল্যান ও অকল্যান আমি আর দেখিনি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৯৭ | 6797 | ٦۷۹۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৭. অধিক প্রশ্ন করা এবং অনর্থক কষ্ট করা নিন্দনীয় এবং আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে (৫ঃ ১০১)
৬৭৯৭। মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রহীম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি জিজ্ঞাসা করল, হে আল্লাহর নাবী! কে আমার পিতা? তিনি বললেনঃ তোমার পিতা অমুক। তারপর এই আয়াত অবতীর্ন হল (মহান আল্লাহর বানী) হে মুমিনরা! তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করবে না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে … (৫ঃ ১০১)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৯৮ | 6798 | ٦۷۹۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৭. অধিক প্রশ্ন করা এবং অনর্থক কষ্ট করা নিন্দনীয় এবং আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে (৫ঃ ১০১)
৬৭৯৮। হাসান ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ লোকেরা পরস্পরে প্রশ্ন করতে থাকবে যে, ইনি (আল্লাহ) সবকিছুরই স্রষ্টা, তবে আল্লাহকে কে সৃষ্টি করলেন?

হাদিস নম্বরঃ ৬৭৯৯ | 6799 | ٦۷۹۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৭. অধিক প্রশ্ন করা এবং অনর্থক কষ্ট করা নিন্দনীয় এবং আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তোমরা সেসব বিষয়ে প্রশ্ন করো না, যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে (৫ঃ ১০১)
৬৭৯৯। মুহাম্মাদ ইবনু উবায়দ ইবনু মায়মূন (রহঃ) … ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মদিনার এক শস্যক্ষেত্রে ছিলাম। তিনি একটি খেজুরের ডালে ভর দিয়ে হাঁটছিলেন। এ সময় ইহুদীদের একটি দলের নিকট দিয়ে তিনি যাচ্ছিলেন। তাদের কেউ বলল, তাকে রূহ (আত্না) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা কর। আর কেউ বলল তাকে জিজ্ঞাসা করো না এতে তোমাদের অপছন্দনীয় উত্তর শুনতে হতে পারে। তারপর তারা তার কাছে উঠে গিয়ে বলল, হে আবূল কাসিম! আমাদের রূহ সম্পর্কে অবহিত করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তাকিয়ে রইলেন। আমি বুঝতে পারলাম, তাঁর কাছে ওহী নাযিল হলে, আমি তার থেকে একটু পিছু সরে দাঁড়ালাম। ওহী অবতরণ শেষ হল। তারপর তিনি বললেনঃ (মহান আল্লাহর বাণীঃ) তোমাকে তারা রূপ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, রূহ আমার প্রতিপালকের আদেশ (১৭ঃ ৮৫)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮০০ | 6800 | ٦۸۰۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৮. নবী (সাঃ) এর কাজকর্মের অনুসরণ
৬৮০০। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি স্বর্ণের আংটি বানিয়ে ছিলেন। (তার দেখাদেখি) লোকেরাও স্বর্নের আংটি বানিয়েছিল। এরপর (একদিন) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি অবশ্য স্বর্ণের আংটি বানিয়েছিলাম- তারপর তিনি তা ছুড়ে ফেলে দিলেন এবং বললেনঃ আমি আর কোন দিনই তা পরিধান করব না। ফলে লোকেরা তাদের আংটিগুলো ছুড়ে ফেলে দিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮০১ | 6801 | ٦۸۰۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৯. দীনের ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত কঠোরতা অবলম্বন, তর্ক-বিতর্কে প্রবৃত্ত হওয়া, বাড়িবাড়ি করা এবং বিদ্আত অপছন্দীয়। কেননা, আল্লাহ্‌ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ হে কিতাবীরা! তোমরা দীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না এবং আল্লাহ্‌ সম্পর্কে সত্য ব্যতীত বলো না ……. (৪ঃ ১৭১)।
৬৮০১। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা (ইফতার না করে) লাগাতার রোযা পালন করো না। সাহাবীরা বললেন, আপনি তো (ইফতার না করে) লাগাতার রোযা পালন করেন। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের মতো নই। আমি এভাবে রাত যাপন করি যে, আমার প্রভু আমাকে পানাহার করান। কিন্তু তাঁরা লাগাতার রোযা পালন করা থেকে বিরত হল না। ফলে তাদের সঙ্গে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুই দিন অথবা (বর্ণনাকারী বলেছিলেন) দু’রাত লাগাতার রোযা পালন করেন। এরপর তারা (ঈদের) চাঁদ দেখতে পেলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি চাঁদ (আরও কয়েক দিন) দেরী করে উদিত হত, তাহলে আমিও (লাগাতার রোযা পালন করে) তোমাদের রোযার সময়কে দীর্ঘায়িত করতাম, যেন তিনি তাঁদের কাজকে পছন্দ করলেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮০২ | 6802 | ٦۸۰۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৯. দীনের ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত কঠোরতা অবলম্বন, তর্ক-বিতর্কে প্রবৃত্ত হওয়া, বাড়িবাড়ি করা এবং বিদ্আত অপছন্দীয়। কেননা, আল্লাহ্‌ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ হে কিতাবীরা! তোমরা দীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না এবং আল্লাহ্‌ সম্পর্কে সত্য ব্যতীত বলো না ……. (৪ঃ ১৭১)।
৬৮০২। উমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াস (রহঃ) … ইবরাহীম তায়মী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার পিতা বর্ণনা করেছেন যে, একবার আলী (রাঃ) পাকা ইটে নির্মিত একটি মিম্বরে আরোহণ করে আমাদের খুতবা পাঠ করলেন। তাঁর সঙ্গে একটি তরবারী ছিল, যার মাঝে একটি সহীফা ঝুলন্ত ছিল। তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমাদের নিকট আল্লাহর কিতাব এবং যা এই সহীফাতে লিপিবদ্ধ আছে এ ছাড়া অন্য এমন কোন কিতাব নেই যা পাঠ করা যেতে পারে। তারপর তিনি তা খুললেন। তাতে উটের বয়স সম্পর্কে লেখা ছিল এবং লেখা ছিল যে, “আয়র” (পর্বত) থেকে অমুক স্থান পর্যন্ত মদিনা হারাম (পবিত্র এলাকা) বলে বিবেচিত হবে। যে কেউ এখানে কোন অন্যায় করবে তার উপর আল্লাহ, ফেরেশতাকুল ও সমস্ত মানব সম্প্রদায়ের অভিসস্পাত। আর আল্লাহ তাঁআলা তার ফরয ও নফল কোন ইবাদতই কবুল করবেন না এবং তাতে আরও ছিল যে, এখানকার সকল মুসলমানের নিরাপত্তা একই পর্যায়ের। একজন-নিম্ন পর্যায়ের ব্যাক্তিও (অন্য কাউকে) নিরাপত্তা দান করতে পারবে। যদি কোন ব্যাক্তি অপর একজন মুসলমানের প্রদত্ত নিরাপত্তাকে লংঘন করে, তাহলে তার উপর আল্লাহর, ফেরেশতাকুলের ও সমস্ত মানব সম্প্রদায়ের লানত (অভিসস্পাত)। আল্লাহ তা’আলা তার ফরয ও নফল কোন ইবাদতই কবুল করবেন না। তাতে আরও ছিল, যদি কোন ব্যাক্তি তার (আযাদকারী) মনিবের অনুমতি ছাড়া অন্য কাউকে নিজের (গোলাম থাকাকালীন সময়ের) মনিব বলে উল্লেখ করে, তাহলে তার উপর আল্লাহর, ফেরেশতাকুলের ও সমস্ত মানব সম্প্রদায়ের অভিসম্পাত। আর আল্লাহ তা’আলা তার ফরয, নফল কোন ইবাদতই গ্রহণ করবেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮০৩ | 6803 | ٦۸۰۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৯. দীনের ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত কঠোরতা অবলম্বন, তর্ক-বিতর্কে প্রবৃত্ত হওয়া, বাড়িবাড়ি করা এবং বিদ্আত অপছন্দীয়। কেননা, আল্লাহ্‌ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ হে কিতাবীরা! তোমরা দীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না এবং আল্লাহ্‌ সম্পর্কে সত্য ব্যতীত বলো না ……. (৪ঃ ১৭১)।
৬৮০৩। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে একটি কাজ করলেন এবং তাতে তিনি অবকাশ দিলেন। তবে কিছু লোক এর থেকে বিরত রইল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সংবাদ পৌছল। তিনি আল্লাহর হামদ ও ছানা পাঠ করলেন, তারপর বললেন, লোকদের কি হল যে, তারা এমন কাজ থেকে বিরত থাকে যা আমি নিজে করি। আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহ সম্পর্কে তাদের থেকে অধিক জানি এবং আমি তাদের তুলনায় আল্লাহকে অধিক ভয় করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮০৪ | 6804 | ٦۸۰٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৯. দীনের ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত কঠোরতা অবলম্বন, তর্ক-বিতর্কে প্রবৃত্ত হওয়া, বাড়িবাড়ি করা এবং বিদ্আত অপছন্দীয়। কেননা, আল্লাহ্‌ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ হে কিতাবীরা! তোমরা দীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না এবং আল্লাহ্‌ সম্পর্কে সত্য ব্যতীত বলো না ……. (৪ঃ ১৭১)।
৬৮০৪। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … ইবনু আবূ মুলায়কা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, দুইজন অতি ভাল লোক ধ্বংসের কাছাকাছি পৌছে গিয়েছিলেন। তারা হলেন আবূ বকর (রাঃ) ও উমর (রাঃ)। বনী তামীমের প্রতিনিধি দল যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসল, তখন তাদের একজন [উমর (রাঃ)] আকরা ইবনু হাবিস হানযালী নামে বনী মুজাশে গোত্রের ভ্রাতা জনৈক ব্যাক্তির দিকে ইশারা করলেন, অপরজন [আবূ বকর (রাঃ)] অন্য আর একজনের প্রতি ইশারা করলেন। এতে আবূ বকর (রাঃ) উমর (রাঃ) কে বললেন, আপনার ইচ্ছা হল আমার বিরোধিতা করা। উমর (রাঃ) বললেন, আমি আপনার বিরোধিতার ইচ্ছা করিনি।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে তাঁদের দু’জনেরই আওয়াজ বুলন্দ হয়ে যায়। ফলে (নিন্নোক্ত আয়াতটি) নাযিল হয়ঃ হে মুমিনগগ! তোমরা নাবীর কণ্ঠস্বরের উপর নিজেদের কণ্ঠস্বর উচু করবে না (৪৯ঃ ২)। ইবনু আবূ মুলায়কা বলেনঃ ইবনু যুবায়র (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, এরপরে উমর (রাঃ) যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে কোন কথা বলতেন, তখন গোপন বিষয়ের আলাপকারীর ন্যায় চুপেচুপে বলতেন, এমন কি তা শোনা যেত না, যতক্ষন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থেকে পুনরায় জিজ্ঞাসা না করতেন। এ হাদীসের রাবী ইবনু যুবায়র তার পিতা অর্থাৎ নানা আবূ বকর (রাঃ) থেকে উল্লেখ করেননি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮০৫ | 6805 | ٦۸۰۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৯. দীনের ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত কঠোরতা অবলম্বন, তর্ক-বিতর্কে প্রবৃত্ত হওয়া, বাড়িবাড়ি করা এবং বিদ্আত অপছন্দীয়। কেননা, আল্লাহ্‌ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ হে কিতাবীরা! তোমরা দীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না এবং আল্লাহ্‌ সম্পর্কে সত্য ব্যতীত বলো না ……. (৪ঃ ১৭১)।
৬৮০৫। ইসমাঈল (রহঃ) … উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর অসুস্থতার সময় বললেন, তোমরা আবূ বকরকে বল, লোকদের নিয়ে যেন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি বললাম যে, আবূ বকর (রাঃ) যদি আপনার স্থানে দাঁড়ান তাহলে কান্নার কারনে মানুষকে তার আওয়াজ শুনতে পারবেন না। সুতরাং আপনি উমর (রাঃ) কে নির্দেশ দিন, তিনি যেন লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। তিনি পুনরায় বললেনঃ তোমরা আবূ বকরকে বল, যেন তিনি লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি হাফসা (রাঃ) কে বললাম, তুমি বল যে, আবূ বকর আপনার জায়গায় দাঁড়ালে কান্নার কারনে লোকদের তার আওয়াজ শোনাতে পারবেন না। সুতরাং আপনি উমর (রাঃ) কে নির্দেশ দিন। তিনি যেন লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। হাফসা (রাঃ) তাই করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তো ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর (বিভ্রান্তকারিণী) মহিলাদের ন্যায়। আবূ বকরকে বল, তিনি যেন লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। হাফসা (রাঃ) আয়িশা (রাঃ) কে বললেন, আমি আপনার কাছ থেকে কখনই ভাল কিছু পাওয়ার মত নই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮০৬ | 6806 | ٦۸۰٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৯. দীনের ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত কঠোরতা অবলম্বন, তর্ক-বিতর্কে প্রবৃত্ত হওয়া, বাড়িবাড়ি করা এবং বিদ্আত অপছন্দীয়। কেননা, আল্লাহ্‌ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ হে কিতাবীরা! তোমরা দীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না এবং আল্লাহ্‌ সম্পর্কে সত্য ব্যতীত বলো না ……. (৪ঃ ১৭১)।
৬৮০৬। আদম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উওয়ায়মির (রাঃ) আসিম ইবনু আদীর কাছে এসে বলল, আচ্ছা বলুন তো, যদি কোন ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে অন্য কাউকে পায় এবং তাকে হত্যা করে ফেলে, তাহলে এর জন্য (কিসাস হিসাবে) আপনারা কি তাকে হত্যা করবেন? হে আসিম! আপনি আমার জন্য এ বিষয়টি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করুন। তিনি জিজ্ঞাসা করলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এহেন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করাকে অপছন্দ করলেন এবং দূষণীয় মনে করলেন। আসিম (রাঃ) ফিরে এসে তাকে জানাল যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিষয়টিকে খারাপ মনে করেছেন। উওয়ায়মির (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি নিজেই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যাব। তারপর তিনি আসলেন। আসিম (রাঃ) চলে যাওয়ার পরেই আল্লাহ তা’আলা কুরআন নাযিল করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তোমাদের ব্যাপারে আল্লাহ তা’আলা কুরআনের আয়াত নাযিল করেছেন।

তিনি তাদের দু’জনকেই (সে ও তার স্ত্রী) ডাকলেন। তারা উপস্থিত হল এবং লি’আন করল। তারপর উওয়ায়মির (রাঃ) বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি আমি তাকে আটকিয়ে রাখি তাহলে তো আমি তার উপর মিথ্যা আরোপ করেছি, এ বলে তিনি তার সাথে বিবাহ বন্ধনকে ছিন্ন করলেন। অবশ্য নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করতে বলেননি। পরে লিআন কারীদের মাঝে (বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করার) এ প্রথাই প্রচলিত হয়ে পড়ে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মহিলাটি সম্পর্কে) বললেনঃ একে লক্ষ্য রেখ, যদি সে খাটো ওয়াহারার (এক জাতীয় পোকা) ন্যায় লালচে সন্তান প্রসব করে, তাহলে আমি মনে করব উওয়ায়মির মিথ্যাই বলেছে। আর যদি সে কাল চোখবিশিষ্ট ও অপেক্ষাকৃত বৃহৎ নিতম্বধারী সন্তান প্রসব করে, তাহলে মনে করব উওয়ায়মির তার সম্পর্কে সত্যই বলেছে। পরে সে অবাঞ্ছিত সন্তানই প্রসব করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮০৭ | 6807 | ٦۸۰۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৭৯. দীনের ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত কঠোরতা অবলম্বন, তর্ক-বিতর্কে প্রবৃত্ত হওয়া, বাড়িবাড়ি করা এবং বিদ্আত অপছন্দীয়। কেননা, আল্লাহ্‌ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ হে কিতাবীরা! তোমরা দীনের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করো না এবং আল্লাহ্‌ সম্পর্কে সত্য ব্যতীত বলো না ……. (৪ঃ ১৭১)।
৬৮০৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মালিক ইবনু আওস নাযরী (রহঃ) আমাকে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। অবশ্য মুহাম্মাদ ইবনু জুবায়র ইবনু মুতঈম এ সম্পর্কে কিছু কথা বলেছিলেন। পরে আমি মালিকের নিকট যাই এবং তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করি। তখন তিনি বলেন, উমর (রাঃ) এর সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে তার নিকটে উপস্থিত হলাম। এমন সময় তার দাররক্ষক ইয়ারফা এসে বলল, উসমান, আবদুর রহমান, যুবাইর এবং সা’দ (রাঃ) আসতে চাচ্ছেন। আপনার পক্ষ থেকে অনুমতি আছে কি? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তারপর তাঁরা প্রবেশ করলেন এবং সালাম দিয়ে আসন গ্রহণ করলেন। দাররক্ষক (পুনরায় এসে) বলল, আলী এবং আব্বাসের ব্যাপারে আপনার অনুমতি আছে কি? তিনি তাদের উভয়কে অনুমতি দিলেন। আব্বাস (রাঃ) এসে বললেন, হে আমীরুল মুমিনীন! আমার ও সীমালংঘননকারীর মাঝে ফায়সালা করে দিন। এবং তারা পরস্পরে গালমন্দ করলেন। তখন দলটি বললেন, উসমান ও তার সঙ্গীরা, হে আমীরুল মুমিনীন! এ দু’জনের মাঝে ফায়সালা করে দিয়ে একজনকে অপরজন থেকে শান্তি দিন।

উমর (রাঃ) বললেন, আপনারা একটু ধৈর্য ধরুন। আমি আপনাদেরকে সেই আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি যার নামে আসমান ও যমীন স্বস্থানে বিদ্যমান, আপনারা কি এ কথা জানেন? যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেনঃ আমাদের সস্পদ উত্তরাধিকারীদের মধ্যে বন্টন হয় না, আমরা যা রেখে যাই তা সাদাকা হিসাবে গণ্য হয়। এ কথা দ্বারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেকেই উদ্দেশ্য করেছিলেন। (আগত) দলের সকলেই বললেন, হ্যাঁ তিনি এ কথা বলেছিলেন। তারপর উমর (রাঃ) আলী ও আব্বাস (রাঃ) এর দিকে ফিরে বললেন, আপনাদের দু’জনকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আপনারা কি জানেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছিলেন? তাঁরা দু’জনেই বললেনঃ হ্যাঁ।

উমর (রাঃ) বললেন, আমি আপনাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছি যে, আল্লাহ তা’আলা এই সম্পদের একাংশ তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছিলেন, অপর কারো জন্য দেওয়া হয়নি। এ মর্মে আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেনঃ আল্লাহ ইহুদীদের কাছ থেকে তার রাসূলকে যে ফায় দিয়েছেন তার জন্য তোমরা ঘোড়া কিংবা উটে আরোহণ করে যুদ্ধ করনি (৫৯ঃ ৬)। সুতরাং এ সম্পদ একমাত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্যই নির্দিষ্ট ছিল। তারপর আল্লাহর কসম! তিনি আপনাদেরকে বাদ দিয়ে এককভাবে নিজের জন্য তা সষ্ণিত করে রাখেননি কিংবা এককভাবে আপনাদেরকেও দিয়ে দেননি। বরং তিনি আপনাদের সকলকেই তা থেকে প্রদান করেছেন এবং সকলের মাঝে বণ্টন করে দিয়েছেন। অবশেষে তা থেকে এই পরিমান সস্পদ অবশিষ্ট রয়েছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই সস্পদ থেকে তার পরিবার-পরিজনের জন্য তাদের বছরের খরচ দিতেন। এরপর যা অবশিষ্ট থাকত তা আল্লাহর মাল যে পথে ব্যয় হয় সে পথে ব্যয়ের জন্য রেখে দিতেন।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর জীবদ্দশায় এরূপ করতেন। আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আপনারা কি এ সম্পর্কে অজ্ঞাত আছেন? সকলেই বললেন, হ্যাঁ। তারপর আলী (রাঃ) ও আব্বাস (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেন, আল্লাহর কসম দিয়ে আপনাদের দু’জনকে জিজ্ঞাসা করছি, আপনারা কি এ সম্পর্কে জানেন? তারা দু’জনেই বললেন, হ্যাঁ। এরপর আল্লাহ তার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ওফাত দান করলেন। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্থলাভিষিক্ত। অতএব তিনি সে সম্পদ অধিগ্রহণ করলেন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে খাতে এ সম্পদ খরচ করতেন তিনিও হুবহু সেভাবেই খরচ করতেন। আপনারা তখন ছিলেন। তারপর আলী (রাঃ) ও আব্বাস (রাঃ) এর দিকে ফিরে বললেন, আপনারা দু’জন তখনও মনে করতেন যে আবূ বকর (রাঃ) এ ব্যাপারে এরূপ ছিলেন। আল্লাহ জানেন তিনি এ ব্যাপারে সত্যবাদী, সৎপরায়ণ, ন্যায়নিণ্ঠ ও হকের অনুসারী ছিলেন।

তারপর আল্লাহ তাআ’লা আবূ বকর (রাঃ) কেও ওফাত দিলেন। তখন আমি বললাম, এখন আমি আবূ বকর ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্থলাভিষিক্ত। সুতরাং দু’বছর আমি তা আমার তত্ত্বাবধানে রাখলাম এবং আবূ বকর (রাঃ) ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা যে খাতে ব্যয় করতেন, আমিও অনুরূপ করতে লাগলাম। তারপর আপনারা দু’জন আমার কাছে এলেন। আপনাদের দু’জনের একই কথা ছিল, দাবিও ছিল অভিন্ন। আপনি এসেছিলেন স্বীয় ভ্রাতুষ্পুত্র থেকে নিজের অংশ আদায় করে নেওয়ার দাবি নিয়ে, আর ইনি (আলী) এসেছিলেন তাঁর স্ত্রীর পৈতৃক সুত্রে প্রাপ্ত অংশ আদায় করে নেওয়ার দাবি নিয়ে। আমি বললাম, যদি আপনারা চান তাহলে আমি আপনাদেরকে তা দিয়ে দিতে পারি, তরে এ শর্তে যে, আপনারা আল্লাহর নামে এই অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হবেন যে, এ সস্পদ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) যে ভাবে ব্যয় করতেন এবং আমি এর দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর যেভাবে তা ব্যয় করেছি, আপনারাও অনুরূপভাবে ব্যায় করবেন। তখন আপনারা দু’জনে বলেছিলেন, এ শর্তেই আপনি তা আমাদের হাতে অর্পণ করুন। ফলে আমি তা আপনাদের কাছে সোপর্দ করে দিয়েছিলাম।

আল্লাহর কসম দিয়ে আপনাদেরকে জিজ্ঞাসা করছি, আমি কি সেই শর্তের উপর এদের কাছে সে সম্পদ দিয়ে দেইনি? সকলেই বলল, হ্যাঁ। তখন তিনি আলী (রাঃ) ও আব্বাস (রাঃ) এর দিকে ফিরে বললেন, আল্লাহর কসম দিয়ে আপনাদের দু’জনকে জিজ্ঞাসা করছি, আমি কি ঐ শর্তে আপনাদেরকে সে সস্পদ দিয়ে দেইনি? তারা দু’জন বললেন, হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ আপনারা কি আমার কাছ থেকে এর ভিন্ন কোন মিমাংসা পেতে চান? সে সত্তার কসম করে বলছি, যার নির্দেশে আকাশ ও যমীন স্বস্থানে বিদ্যমান, কিয়ামতের পুর্বে আমি এ ব্যাপারে নতুন কোন মিমাংসা করব না। যদি আপনারা এর তত্ত্বাবধানে অক্ষম হন, তাহলে তা আমার নিকট দিয়ে দিন। আপনাদের দু’জনের স্থলে আমি একাই এর তত্ত্বাবধায়ের জন্য যথেষ্ট।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮০৮ | 6808 | ٦۸۰۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৮০. বিদআত এর প্রবর্তকদের আশ্রয়দানকারীর অপরাধ। আলী (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে এ মর্মে একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন
৬৮০৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আসিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি মদিনাকে হারাম (সংরক্ষিত এলাকা) হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। উত্তরে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, অমুক স্থান থেকে অমুক স্থান পর্যন্ত। এ এলাকার কোন গাছ কাটা যাবে না, আর যে ব্যাক্তি এখানে বিদআত সৃষ্টি করবে তার উপর আল্লাহ তা’আলা, ফেরেশতা ও সকল মানব সম্প্রদায়ের লানত। আসিম বলেনঃ আমাকে মূসা ইবনু আনাস বলেছেন, বর্ননাকারী أَوْ آوَى مُحْدِثًا‏ ‘কিংবা বিদআত সৃষ্টিকারীকে আশ্রয় দেয় বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮০৯ | 6809 | ٦۸۰۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৮১. মনগড়া মত ও ভিত্তিহীন কিয়াস নিন্দনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার অনুসরণ করো না……. (১৭ঃ ৩৬)
৬৮০৯। সাঈদ ইবনু তালীদ (রহঃ) … উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) আমাদের এ দিক দিয়ে হাজ্জে (হজ্জ) যাচ্ছিলেন। আমি শুনতে পেলাম, তিনি বলছেন যে, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে যে ইল্‌ম দান করেছেন, তা হঠাৎ করে ছিনিয়ে নেবেন না বরং ইল্‌মের বাহক উলামায়ে কিরামকে তাদের ইল্‌মসহ ক্রমশ তুলে নেবেন। তখন শুধুমাত্র মূর্খ লোকেরা অবশিষ্ট থাকবে। তাদের কাছে ফাতওয়া চাওয়া হবে। তারা মনগড়া ফাতওয়া দেবে। ফলে নিজেরাও পথভ্রষ্ট হবে, অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করবে।

উরওয়া বলেন, আমি এ হাদীসটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) কে বললাম। তারপর আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) পুনরায় হজ্জ করতে এলেন। তখন আয়িশা (রাঃ) আমাকে বললেন, হে ভাগ্নে! তুমি আবদুল্লাহর কাছে যাও এবং তার থেকে যে হাদীসটি তুমি আমাকে বর্ণনা করেছিলে, তার সত্যাতা পুনরায় তাঁর নিকট থেকে যাচাই করে আস। আমি তার নিকট গেলাম এবং জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি আমাকে ঠিক সেরূপই বর্ণনা করলেন, যেরূপ পূর্বে বর্ণনা করেছিলেন। আমি আয়িশা (রাঃ) এর কাছে ফিরে এসে এ কথা জানালাম। তিনি আশ্চর্য হয়ে গেলেন এবং বললেন, আল্লাহর কসম! আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) ঠিকই স্মরণ রেখেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮১০ | 6810 | ٦۸۱۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৮১. মনগড়া মত ও ভিত্তিহীন কিয়াস নিন্দনীয়। আর আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার অনুসরণ করো না……. (১৭ঃ ৩৬)
৬৮১০। আবদান (রহঃ) … আমাস (রহঃ) বলেন। আমি আবূ ওয়ায়েলকে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি সিফফীনের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। মূসা ইবনু ইসমাঈল সাহল ইবনু হুনায়ফ (রাঃ) বলেন, হে লোকেরা! দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের মনগড়া মতামতকে নির্ভরযোগ্য মনে করো না। কেননা আবূ জানদাল দিবসে (হুদায়বিয়ার দিবসে) আমার এমন মনে হচ্ছিল যে, যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করতে পারতাম তাহলে অবশ্যই আমি তা প্রত্যাখ্যান করতাম। যে কোন ভয়ষ্কর যুদ্ধের জন্য আমরা যখনই তরবারী কাঁধে ধারণ করেছি, তখনই তরবারী আমাদের কাঙ্ক্ষিত লড়ার দিকে পথ সুগম করে দিয়েছে। বর্তমান বিষয়টি স্বতস্ত্র। রাবী বলেন, আবূ ওয়ায়েল (রাঃ) বলেছেনঃ আমি সিফফীনের যুদ্ধে শরীক ছিলাম; বড়ই মন্দ ছিল সিফফীনের লড়াই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮১১ | 6811 | ٦۸۱۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৮২. ওহী অবতীর্ণ হয়নি এমন কোন বিষয়ে নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলতেনঃ আমি জানি না কিংবা সে ব্যাপারে ওহী অবতীর্ণ না হওয়া পর্যন্ত কোন জবাব দিতেন না এবং তিনি ব্যক্তিগত মতের উপর ভিত্তি করে কিংবা অনুমান করে কিছু বলতেন না। কেননা, আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আল্লাহ্‌ আপনাকে যা কিছু জানিয়ে দিয়েছেন তার দ্বারা (ফয়সালা করুন)। ইব্ন মাসঊদ (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) কে রূহ্ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে ওহী অবতীর্ণ হওয়া পর্যন্ত তিনি চুপ ছিলেন
৬৮১১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) আমাকে দেখতে এলেন। তাঁরা দু’জনেই হেঁটে এসেছিলেন। তারা যখন আমার কাছে আসলেন, তখন আমি বেহুশ অবস্থায় ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওযু করলেন এবং ওযুর পানি আমার উপর ঢেলে দিলেন। ফলে আমি হুশ ফিরে পেলাম। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! বর্ণনাকারী সুফিয়ান কোন কোন সময় বলতেন হে আল্লাহর রাসুল, আমার সম্পদের ব্যাপারে কি ফায়সালা করব? আমার সম্পদগুলো কি করব? তিনি আমাকে কোন জবাব দিলেন না অবশেষে মীরাসের আয়াত নাযিল হল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮১২ | 6812 | ٦۸۱۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৮৩. নবী (সাঃ) নারী-পুরুষ নির্বিশেষে তাঁর উম্মতদেরকে সে বিষয়েরই শিক্ষা দিতেন, যা আল্লাহ্‌ তাঁকে শিখিয়ে দিতেন, ব্যক্তিগত মত বা দৃষ্টান্তের উপর ভিত্তি করে নয়
৬৮১২। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈকা মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার হাদীস তো কেবলমাত্র পুরুষ শুনভে পায়। সুতরাং আপনার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য একটি দিন নির্ধারন করে দিন, যে দিন আমরা আপনার নিকট আসব, আল্লাহ আপনাকে যা কিছু শিক্ষা দিয়েছেন তা থেকে আপনি আমাদের শিক্ষা দিবেন। তিনি বললেন, তোমরা অমুক অমুক দিন অমুক অমুক স্থানে সমবেত হবে। তারপর (নির্দিষ্ট দিনে) তাঁরা সমবেত হলেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে এলেন এবং আল্লাহ তাকে যা কিছু শিক্ষা দিয়েছেন তা থেকে তাদের শিক্ষা দিলেন এবং বললেনঃ তোমাদের কেউ যদি সন্তানদের থেকে তিনটি সন্তান আগে পাঠিয়ে দেয় (মৃত্যুবরণ করে) তাহলে এ সন্তানরা তার জন্য জাহান্নামের পথে অন্তরায় হয়ে যাবে। তাদের মাঝ থেকে একজন মহিলা জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! যদি দু’জন হয়? বর্ণনাকারী বলেনঃ মহিলা কথাটি পরপর দুইবার জিজ্ঞাসা করলেন। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ দু’জন হলেও, দু’জন হলেও, দু’জন হলেও।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮১৩ | 6813 | ٦۸۱۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৮৪. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার উম্মতের মাঝে এক জামাআত সর্বদাই হকের উপর বিজয়ী থাকবেন। আর তারা হলেন আহলে ইল্ম (দীনি ইল্মে বিশেষজ্ঞ)
৬৮১৩। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর হুকুম অর্থাৎ কিয়ামত আসা পর্যন্ত আমার উম্মাতের এক জামাআত সর্বদাই বিজয়ী থাকবে। আর তাঁরা হলেন (সেই দল যারা প্রতিপক্ষের উপর) প্রভাবশালী।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮১৪ | 6814 | ٦۸۱٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৮৪. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার উম্মতের মাঝে এক জামাআত সর্বদাই হকের উপর বিজয়ী থাকবেন। আর তারা হলেন আহলে ইল্ম (দীনি ইল্মে বিশেষজ্ঞ)
৬৮১৪। ইসমাঈল (রহঃ) … মুআবিয়া ইরন আবূ সুফয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ তা’আলা যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন। আমি তো (ইল্‌মের) বন্টনকারী মাত্র; আল্লাহ তা প্রদান করে থাকেন। এ উম্মাতের কর্মকাণ্ড কিয়ামত পর্যন্ত কিংবা বলেছিলেন, মহান আল্লাহ তা’আলার হুকুম আসা পর্যন্ত (সত্যের উপর) সুদৃঢ় থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮১৫ | 6815 | ٦۸۱۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৮৫. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ অথবা তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করতে ……… (৬ঃ ৬৫)
৬৮১৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর এই আয়াতঃ বল, তিনি সক্ষম তোমাদের ঊর্ধ্বদেশ থেকে শাস্তি প্রেরণ করতে …… নাযিল হল, তখন তিনি বললেনঃ (হে আল্লাহ!) আমি আপনার কাছে (এহেন আযাব থেকে) আশ্রয় প্রার্থনা করি (তারপর যখন নাযিল হল) অথবা তোমাদের পায়ের নিচে থেকে। তখনও তিনি বললেনঃ (হে আল্লাহ!) আমি আপনার নিকট (এহেন আযাব থেকে) আশ্রয় প্রার্থনা করি। এরপর যখন অবতীর্ণ হলঃ অথবা তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করতে এবং একদলকে অপর দলের সংঘর্ষের স্বাদ গ্রহন করাতে তখন তিনি বললেনঃ এ দুটি অপেক্ষাকৃত নরম অথবা বলেছেনঃ সহজ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮১৬ | 6816 | ٦۸۱٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৮৬. কোন বিষয় সম্পর্কে প্রশ্নকারীকে সুষ্পষ্টরূপে বুঝিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে (আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে) সুষ্পষ্ট হুকুম বর্ণিত আছে এরূপ কোন বিষয়ের সাথে অন্য আর একটি বিষয়ের নিয়ম মোতাবেক তুলনা করা
৬৮১৬। আসবাগ ইবনু ফারজ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক বেদুঈন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, আমার স্ত্রী একটি কালো সন্তান প্রসব করেছে। আর আমি তাকে (আমার সন্তান হিসাবে) অস্বীকার করছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার কি উট আছে? সে বলল হ্যাঁ আছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, সেগুলোর কি রং? সে বলল, লাল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, সেগুলোর মাঝে সাদা কালো মিশ্রিত রঙের কোন উট আছে কি? সে বলল, হ্যাঁ, সাদা কালো মিশ্রিত রঙের অনেকগুলোই আছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন এ রং কি করে এল বলে তুমি মনে কর? সে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! বংশের পূর্ব সুত্রের প্রভাবে এরূপ হয়েছে। তিনি বললেনঃ সম্ভবত তোমার সন্তানও বংশের পূর্ব সূত্রের প্রভাবে এরূপ হয়েছে (অর্থাৎ পূর্বপুরুষের কারো বর্ণ কালো ছিল বলে এ সন্তান কালো হয়েছে) এবং তিনি এ সন্তানকে অস্বীকার কবার অনুমতি তাকে দিলেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮১৭ | 6817 | ٦۸۱۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৮৬. কোন বিষয় সম্পর্কে প্রশ্নকারীকে সুষ্পষ্টরূপে বুঝিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে (আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে) সুষ্পষ্ট হুকুম বর্ণিত আছে এরূপ কোন বিষয়ের সাথে অন্য আর একটি বিষয়ের নিয়ম মোতাবেক তুলনা করা
৬৮১৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈকা মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল, আমার মাতা হাজ্জ (হজ্জ) কবার মানত করেছিলেন। এরপর তিনি হাজ্জ (হজ্জ) করার পুর্বেই মৃত্যু বরণ করেন। এখন আমি কি তার পক্ষ থেকে হাজ্জ (হজ্জ) আদায় করে দেব? উত্তরে তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তার পক্ষ থেকে হাজ্জ (হজ্জ) আদায় করে দাও। মনে কর যদি তার উপর ঋণ থাকত তাহলে কি তুমি তা আদায় করতে? সে বলল, নিশ্চয়ই। তিনি বললেনঃ অতএব তার উপর যে মানত রয়েছে তা তুমি আদায় করে দাও। আল্লাহ তাআলা অধিক হকদার, তার মানত পূর্ণ করার।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮১৮ | 6818 | ٦۸۱۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৮৭. আল্লাহ্‌ তা’আলা যা অবতীর্ণ করেছেন, তার আলোকে ফায়সালার মধ্যে ইজতিহাদ করা। কেননা, আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আল্লাহ্‌ যা অবতীর্ণ করেছেন তদনুসারে যারা বিধান দেয় না তারাই যালিম …… (৫ঃ ৪৫)। যারা হিকমতের সাথে বিচার করে ও হেকমতের তালীম দেন এবং মনগড়া কোন ফায়সালা করেন না, (এরূপ হিকমতের অধিকারী ব্যক্তির) নবী (সাঃ) প্রশংসা করেছেন। খলীফাদের সাথে পরামর্শ করা এবং বিচারকদের আহলে ইলমদের কাছে জিজ্ঞাসা করা
৬৮১৮। শিহাব ইবনু আব্বাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’রকম লোক ছাড়া কারো প্রতি ঈর্ষা করা বৈধ নয়। (এক) যাকে আল্লাহ তাআলা সম্পদ দিয়েছেন এবং ন্যায়পথে ব্যয় করার ক্ষমতা দান করেছেন। (দুই) যাকে আল্লাহ তা’আলা হিকমাত (শরয়ী বিচক্ষণতা) দান করেছেন, আর সে এর আলোকে বিচার করে এবং তা অপরকে শিক্ষা দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮১৯ | 6819 | ٦۸۱۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৮৭. আল্লাহ্‌ তা’আলা যা অবতীর্ণ করেছেন, তার আলোকে ফায়সালার মধ্যে ইজতিহাদ করা। কেননা, আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আল্লাহ্‌ যা অবতীর্ণ করেছেন তদনুসারে যারা বিধান দেয় না তারাই যালিম …… (৫ঃ ৪৫)। যারা হিকমতের সাথে বিচার করে ও হেকমতের তালীম দেন এবং মনগড়া কোন ফায়সালা করেন না, (এরূপ হিকমতের অধিকারী ব্যক্তির) নবী (সাঃ) প্রশংসা করেছেন। খলীফাদের সাথে পরামর্শ করা এবং বিচারকদের আহলে ইলমদের কাছে জিজ্ঞাসা করা
৬৮১৯। মুহাম্মাদ (রহঃ) … মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর (রাঃ) মহিলাদের গর্ভপাত সংক্রান্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন অর্থাৎ তার পেটে আঘাত কবা হয় যার ফলে সন্তানের গর্ভপাত ঘটে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাদের মধ্যে কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ ব্যাপারে কিছু শুনেছ? আমি বললাম আমি শুনেছি তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, কি শুনেছ? আমি বললাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ ব্যাপারে আমি বলতে শুনেছি যে, এ কারণে গুররা অর্থাৎ একটি দাস কিংবা দাসী প্রদান করতে হবে। এ শুনে তিনি বললেন, তুমি যে হাদীস বর্ণনা করেছ এর প্রমাণ উপস্থিত না করা পর্যন্ত তুমি এখান থেকে যেও না। তারপর আমি বের হলাম এবং মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা (রাঃ) কে পেলাম। আমি তাকে নিয়ে উপস্থিত হলাম, সে আমার পক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করল যে, তিনিও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, এতে গুররা অর্থাৎ একটি গোলাম কিংবা বাঁদী প্রদান করতে হবে।

ইবনু আবূ যিনাদ … মুগীরা (রাঃ) থেকে অনুরূপ একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮২০ | 6820 | ٦۸۲۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৮৮. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ অবশ্যই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের আচার-আচরণের অনুকরণ করতে থাকবে
৬৮২০। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, কিয়ামত কায়েম হবে না যতক্ষন না আমার উম্মাত পূর্বপুরুষদের আচার-অভ্যাসকে বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে গ্রহন না করবে। জিজ্ঞাসা করা হল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! পারস্য ও রোমকদের মত কি? তিনি বললেনঃ লোকদের মধ্যে আর কারা? এরাই তো।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮২১ | 6821 | ٦۸۲۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৮৮. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ অবশ্যই তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের আচার-আচরণের অনুকরণ করতে থাকবে
৬৮২১। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন, নিশ্চয় তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের আচার-আচরণকে বিঘতে বিঘতে, হাতে হাতে অনুকরণ করবে। এমনকি তারা যদি দব্বের (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) গর্তেও প্রবেশ করে থাকে, তাহলে তোমরাও এতে তাদের অনুকরন করবে। আমরা বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ এরা কি ইহুদি ও নাসারা? তিনি বললেনঃ আর কারা?

হাদিস নম্বরঃ ৬৮২২ | 6822 | ٦۸۲۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৮৯. গোমরাহীর দিকে আহবান করা অথবা কোন খারাপ তরীকা প্রবর্তনের অপরাধ। কারণ আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ এবং পাপভার তাদেরও যাদের তারা অজ্ঞতাহেতু বিভ্রান্ত করেছে…… (১৬ঃ ২৫)
৬৮২২। হুমায়দী (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কোন ব্যাক্তিকেই অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়, তার পাপের হিস্যা আদম (আলাইহিস সালাম) এর প্রথম (হত্যাকারী) পুত্রের উপরও বর্তাবে। রাবী সুফিয়ান (রহঃ) مِنْ دَمِهَا তার রক্তপাত ঘটানোর অপরাধ তার উপরেও বর্তাবে উল্লেখ করেছেন। কারণ সেই সর্বপ্রথম হত্যার রীতি প্রবর্তন করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮২৩ | 6823 | ٦۸۲۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮২৩। ইসমাঈল (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ সালামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক বেদুঈন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ইসলামের উপর বায়’আত গ্রহণ করল। এরপর সে মদিনায় জ্বরে আক্রান্ত হল। বেদুঈন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে হাযির হয়ে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার বায়আত প্রত্যাহার করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলেন। পূনরায় সে এসে বলল, আমার বায়আত প্রত্যাহার করুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অস্বকৃতি জানালেন। এরপর সে আবার এসে বলল, আমার বায়আত প্রত্যাহার করুন। এবারও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অস্বীকৃতি জানালে বেদুঈন বেরিয়ে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মদিনা হচ্ছে কামারের হাপরের মত। সে তার মধ্যকার-আবর্জনাকে বিদূরিত করে এবং খাঁটিটুকু ধরে রাখে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮২৪ | 6824 | ٦۸۲٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮২৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) কে পবিত্র কুরআনের তালীম দিতাম। উমর (রাঃ) যখন জীবনের সর্বশেষ হাজ্জ (হজ্জ) পালন করতে আসলেন, তখন আবদুর রহমান (রাঃ) মিনায় আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, তুমি আজ আমীরুল মুমিনীনদের নিকট থাকলে দেখতে পেতে যে, তার কাছে এক ব্যাক্তি এসে বলল, জনৈক ব্যাক্তি বলেছে, যদি আমীরুল মু’মিনীন মারা যেতেন, তাহলে আমরা অমুক ব্যাক্তির হাতে বায়’আত নিতে পারতাম। উমর (রাঃ) বললেন, আজ বিকেলে দাঁড়িয়ে আমি তাদেরকে সতর্ক করব, যারা মুসলমানদের অধিকারকে ছিনিয়ে নিতে চায়। আমি বললাম, আপনি এটি করবেন না। কেননা, এখন হাজ্জের (হজ্জ) মৌসুম। এখন সাধারণ লোকের উপস্থিতির সময়। তারা আপনার মজলিসকে ঘিরে ফেলবে।

আমার ভয় হচ্ছে যে, তারা আপনার বক্তব্য যথাযথভাবে অনুধাবন করবে না। রদবদল করে চারদিকে ছড়িয়ে দেবে। বরং এখন আপনি হিজরত ও সুন্নাতের আবাসগৃহ মদিনায় পৌছা পর্যন্ত একটু অপেক্ষা করুন। এরপর একমাত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুহাজির ও আনসার সাহাবাদের নিকট আপনার বক্তব্য পেশ করুন। তারা আপনার বক্তব্য সংরক্ষণ করবে এবং তার যথাযথ মর্যাদা প্রদান করবে। উমর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি মদিনায় পৌছলে সবচেয়ে আগে এটি করব। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমরা মদিনায় উপিস্থিত হলাম। তখন উমর (রাঃ) ভাষণ প্রসঙ্গে বললেন, আল্লাহ তাআলা মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সত্য বাণী দিয়ে প্রেরণ করেছেন, তাঁর উপর কিতাব অবতীর্ণ করেছেন। তন্মধ্যে ‘রজম’ (তথা পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা) এর আয়াতও রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮২৫ | 6825 | ٦۸۲۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮২৫। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর নিকটে ছিলাম। তিনি লাল রঙের দুটি কাতান পরিহিত ছিলেন। এরপর তিনি নাক পরিষ্কার করলেন এবং বললেনঃ বাহ! বাহ! আবূ হুরায়রা আজ কাতান দ্বারা নাক পরিস্কার করছে। অথচ আমি এমন অবস্থায়ও ছিলাম, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিম্বর ও আয়িশা (রাঃ) এর হুজরার মধ্যবর্তী স্থানে বেহুশ অবস্থায় পড়ে থাকতাম। আগন্তুক আসত, তার স্বীয় পা আমার গর্দানে রাখত! মনে হতো আমি যেন পাগল। অথচ আমার কিঞ্চিতও পাগলামী ছিল না। একমাত্র ক্ষুধার যন্ত্রণায় এমনটি হত।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮২৬ | 6826 | ٦۸۲٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮২৬। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু আবিস (রহঃ) থেকে বর্ণিত। আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, আপনি কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে কোন ঈদে অংশ গ্রহণ করেছেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। যদি তার নিকটে আমার বিশেষ একটা অবস্থান না থাকত তবে এত অল্প বয়সে তার সাথে যোগদানের সুযোগ পেতাম না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাসীর ইবনু সালতের বাড়ির নিকটস্থ স্থানের পতাকার কাছে তশরীফ আনলেন। এরপর ঈদের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তারপর তিনি ভাষণ প্রদান করলেন। রাবী আযান এবং ইকামত এর উল্লেখ করেননি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শ্রোতাদেরকে সাদাকা আদায়ের হুকম করলেন। নারীরা স্বীয় কান ও গলার (অলংকার) দিকে ইঙ্গিত করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিলাল (রাঃ) কে (তাদের কাছে যাওয়ার জন্য) নির্দেশ দিলেন। বিলাল (রাঃ) (তাদের নিকট থেকে অলংকারাদি নিয়ে) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ফিরে এলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮২৭ | 6827 | ٦۸۲۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮২৭। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবার মসজিদে কখনো পায়ে হেঁটে আবার কখনো সাওয়ার হয়ে আসতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮২৮ | 6828 | ٦۸۲۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮২৮। উবায়দ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়রকে বললেনঃ আমার মৃত্যুর পর আমাকে আমার অন্যান্য সঙ্গিনী (উম্মাতুল মুমিনীন) দের সাথে দাফন করবে। আমাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে হুজরায় দাফন করবে না। কেননা তাতে আমাকে প্রাধান্য দেয়া হবে, আমি তা পছন্দ করি না। বর্ণনাকারী হিশাম তার পিতা উরওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, উমর (রাঃ) আয়িশা (রাঃ) এর নিকট লোক পাঠালেন, আমাকে আমার সঙ্গী তথা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) এর সাথে দাফন হওয়ার অনুমতি দিন। আয়িশা (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ। আল্লাহর কসম! বর্ণনাকারী আরো বলেন, আয়িশা (রাঃ) এর নিকট যখনই সাহাবাদের কেউ এই অনুমতির জন্য কাউকে পাঠাতেন, তখনি তিনি বলতেন, না। আল্লাহর কসম! আমি তাদের সঙ্গে কাউকে প্রাধান্য দেব না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮২৯ | 6829 | ٦۸۲۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮২৯। আইউব ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। অতঃপর আমরা ‘আওয়ালী’ (মদিনার পার্শ্বে উচ্চ টিলাবিশিষ্ট স্থান) যেতাম। তখন সূর্য উপরে থাকত। বর্ণনাকারী লায়স (রহঃ) ইউনুস (রহঃ) হতে আরো বর্ননা করেছেন যে, ‘আওয়ালী’ মদিনা হতে চার অথবা তিন মাইল দুরে অবস্থিত।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৩০ | 6830 | ٦۸۳۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৩০। আমর ইবনু যুরারা (রহঃ) … সাইব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যেগের সা’ তোমাদের বর্তমানের এক মুদ ও এক মুদের এক-তৃতীয়াংশের বরাবর ছিল। অবশ্য (পরবর্তীকালে) তা বৃদ্ধি পেয়েছে (উক্ত হাদীসটি) কাসিম ইবনু মালিক (রহঃ) যুআয়দ (রহঃ) থেকে শুনেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৩১ | 6831 | ٦۸۳۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৩১। আবদুল্লাহ ইবনু মাসালামা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই বলে দোয়া করেছেনঃ হে আল্লাহ! মদিনাবাসীদের পরিমাপে বরকত দান করুন, বরকত দান করুন তাদের সা’ এবং মুদে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৩২ | 6832 | ٦۸۳۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৩২। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইহুদীগণ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে এক ব্যভিচারী পুরুষ এবং এক ব্যভিচারিণী মহিলাকে নিয়ে উপস্থিত হল। তখন তিনি তাদের উভয়কে শাস্তি দানের হুকুম দিলে মসজিদে নববীর জানাযা রাখার নিকটবর্তী স্থানে তাদেরকে পাথর নিক্ষেপ (রজম) করে মারা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৩৩ | 6833 | ٦۸۳۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৩৩। ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একদা (পথিমধ্যে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উহুদ পাহাড় দেখতে পেয়ে বললেনঃ এই পাহাড় আমাদেরকে ভালবাসে আর আমরাও এই পাহাড়কে ভালবাসি। হে আল্লাহ! ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) মক্কাকে হারামের মর্যাদা প্রদান করেছেন, আর আমি এই মদিনার দু’টি প্রস্তরময় প্রান্তের মধ্যবর্তী স্থানকে সেই মর্যাদা প্রদান করছি। উহুদের বিষয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এই হাদীস বর্ণনায় সাহাল (রাবী) আনাস (রাঃ) এর অনুসরণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৩৪ | 6834 | ٦۸۳٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৩৪। ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … সাহল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মসজিদে নববীর কিবলার দিকের প্রাচীর ও মিম্বরের মধ্যে মাত্র একটি বকরী যাতায়াতের স্থান ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৩৫ | 6835 | ٦۸۳۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৩৫। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার গৃহ ও আমার মিম্বরের মধ্যবর্তী স্থান বেহেশতের বাগানগুলোর থেকে একটি বাগান। আর আমার মিম্বর আমার হাওযের উপর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৩৬ | 6836 | ٦۸۳٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৩৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোড়দৌড়ের প্রতিযোগিতা করিয়েছিলেন। তীব্র গমনের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ঘোড়াগুলোর প্রতিযোগিতার স্থান ছিল হাফয়া হতে সানীয়্যাতুল বিদা পর্যন্ত। আর প্রশিক্ষণ বিহীনগুলোর স্থান ছিল সানীয়্যাতূল বিদা হতে বনী যুরায়ক এর মসজিদ-পর্যন্ত। আবদুল্লাহও প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহনকারীদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৩৭ | 6837 | ٦۸۳۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৩৭। ইসহাক (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উমর (রাঃ) কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিম্বরে দাঁড়িয়ে (খুতবা দিতে) শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৩৮ | 6838 | ٦۸۳۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৩৮। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … সাইব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিম্বরে দাঁড়িয়ে খুতবা দিতে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৩৯ | 6839 | ٦۸۳۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৩৯। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গোসল করার জন্য এই পাত্রটি রাখা হত। আমরা সকলে এর থেকে গোসল করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৪০ | 6840 | ٦۸٤۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৪০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসার ও মুহাজিরদেরকে আমার মদিনার বাড়িতে সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করেছিলেন এবং বনী সুলায়মের গোত্রের জন্য বদদোয়া করার নিমিত্ত এক মাস কাল যাবত তিনি (ফজরের সালাতে) কুনূত (নাযিলা) পড়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৪১ | 6841 | ٦۸٤۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৪১। আবু কুরায়ব (রহঃ) … আবূ বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মদিনায় আগমন করলে আবদুল্লাহ ইবনু সালাম (রাঃ) আমার সাথে সাক্ষাৎ করেন। তিনি আমাকে বললেনঃ চলুন ঘরে যাই। আমি আপনাকে এমন একটি পাত্রে পান করাবো, যেটিতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান করেছেন। আপনি ঐ সালাত (নামায/নামাজ) এর জায়গাটিতে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে পারবেন, যেখানে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছিলেন। এরপর আমি তার সঙ্গে গেলাম। তিনি আমাকে ছাতুর শরবত পান করালেন এবং খেজুর খাওয়ালেন। তারপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের স্থানটিতে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৪২ | 6842 | ٦۸٤۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৪২। সাঈদ ইবনু রাবী (রহঃ) … উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেনঃ আকীক নামক স্থানে অবস্থানকালে এক রাতে আমার পরওয়ারদিগারের নিকট থেকে একজন আগন্তুক (ফেরেশতা) আমার কাছে এলেন। তিন বললেন, এই বরকতময় প্রান্তরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করুন এবং বলুন উমরা ও হাজ্জের নিয়ত করছি। এদিকে হারুন ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) বলেন, আলী (রাঃ) আমার কাছে হজ্জের সাথে ‘উমরার নিয়ত করুন’ শব্দ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৪৩ | 6843 | ٦۸٤۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৪৩। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মীকাত নির্ধারণ করেছেন নজদবাসীদের জন্য কারনকে, সিরিয়াবাসীদের জন্য জুহফাকে এবং মদিনাবাসীদের জন্য যুল হুলায়ফাকে ইবনু উমর (রাঃ) বলেনঃ আমি এগুলো (স্বয়ং) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি। আমার কাছে আরো সংবাদ পৌছেছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইয়ামানবাসীদের মীকাত হচ্ছে ইয়ালামলাম এবং ইরাকের কথা উল্লেখ করা হলে ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, তখন তো ইরাক ছিল না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৪৪ | 6844 | ٦۸٤٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৯০. নবী (সাঃ) যা বলেছেন এবং আলেমদেরকে ঐক্যের প্রতি যে উৎসাহ প্রদান করেছেন। আর যেসব বিষয়ে হারামাঈন মক্কা ও মদীনার আলেমগণ ঐকমত্য পোষণ করেছেন। মদীনায় নবী করীম (সাঃ) মুহাজির ও আনসারদের স্মৃতিচিহ্ন এবং নবী (সাঃ) এর নামাযের স্থান, মিন্বর ও কবর সম্পর্কে
৬৮৪৪। আবদুর রহমান ইবনু মুবারাক (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে, তিনি যুল হুলায়ফা নামক স্থানে রাতের শেষ প্রহরে অবস্থানকালে তাকে বলা হলো আপনি একটি বরকতময় স্থানে রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৪৫ | 6845 | ٦۸٤۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৯১. মহান আল্লাহর বাণীঃ (হে আমার হাবীব!) চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহনের দায়িত্ব আপনার নয়
৬৮৪৫। আহমাদ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) এর শেযে রুকু থেকে মাথা উঠানোর সময় বলতে শুনেছেন, اللَّهُمَّ رَبَّنَا وَلَكَ الْحَمْدُ الخ (হে আল্লাহ! আমাদের প্রতিপালক, সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আপনারই জন্য। তিনি আরো বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনি অমুক অমুক ব্যাক্তির প্রতি লানত করুন। এরপর আল্লাহ নিম্নোক্ত আয়াতখানা অবতীর্ন করেনঃ (হে নাবী) চুড়ান্তভাবে কোন কিছুর সিদ্ধান্ত গ্রহণের দারিত্ব আপনার হাতে নেই। আল্লাহ হয়ত তাদেরকে তাওবার তাওফীক দিবেন নয়ত তাদেরকে শান্তি দিবেন। কেননা তারা সীমালংঘনকারী।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৪৬ | 6846 | ٦۸٤٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৯২. মহান আল্লাহর বাণীঃ মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্কপ্রিয় (১৮ঃ ৫৪)। মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা কিতাবীদের সাথে বিতর্ক করবে না………. (২৯ঃ ৪৬)
৬৮৪৬। আবুল ইয়ামান ও মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) এর নিকট আসলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছ কি? আলী (রাঃ) বলেনঃ আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের জীবন তো আল্লাহর হাতে। তিনি আমাদেরকে যখন (সালাত (নামায/নামাজ) এর জন্য ঘুম থেকে) জাগিয়ে দিতে চান, জাগিয়ে দেন। আলী (রাঃ) এর এ কথা বলার সাথে সাথেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলে গেলেন, আলীর কথার কোন প্রতিউত্তর তিনি আর দিলেন না। আলী (রাঃ) বলেন, আমি শুনতে পেলাম, তিনি চলে যাচ্ছে, আর ঊরুতে হাত মেরে মেরে বললেনঃ মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্ক প্রিয়।

আবূ আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহঃ) বলেনঃ তোমার কাছে রাতে যে আগন্তুক আসে তাকে ‘তাবিক’ বা নৈশ অতিথি বলে। ‘তারিক’ একটি নক্ষত্রকেও বলা হয়। আর ‘ছাকিব’ অর্থ হল জ্যোতিষ্মান। এইজন্যই আগুন যে জালায় তাকে লক্ষ্য করে সাধারণত বলা হয়ে থাকে, তুমি আগুন জ্বালিয়ে তোল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৪৭ | 6847 | ٦۸٤۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৯২. মহান আল্লাহর বাণীঃ মানুষ অধিকাংশ ব্যাপারেই বিতর্কপ্রিয় (১৮ঃ ৫৪)। মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা কিতাবীদের সাথে বিতর্ক করবে না………. (২৯ঃ ৪৬)
৬৮৪৭। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা মসজিদে নববীতে ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদ থেকে বের হয়ে আমাদেরকে বললেনঃ তোমরা চলো ইহুদীদের সেখানে যাই। আমরা তাঁর সঙ্গে বেরিয়ে এলাম। অবশেষে আমরা বায়তুল মিদরাসে (তাদের শিক্ষাগারে) পৌছলাম। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে দাঁড়িয়ে তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেনঃ হে ইহুদী সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম কবুল কর, এতে তোমরা নিরাপদে থাকবে। ইহুদীরা বলল, হে আবূল কাসিম! আপনার পৌছানোর দায়িত্ব আপনি পালন করেছেন। এরপর তিনি বললেনঃ আমার ইচ্ছা তোমরা ইসলাম কবুল কর এবং শান্তিতে থাক। তারাও আবার বলল, হে আবূল কাসিম! আপনার পৌছানোর দায়িত্ব আপনি পালন করেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বললেনঃ আমি এরূপই ইচ্ছা রাখি। তৃতীয়বারেও তিনি তাই বললেন। পরিশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ জেনে রেখো, যমীন একমাত্র আল্লাহ ও তার রাসুলের। আমি তোমাদেরকে এই এলাকা থেকে উচ্ছেদ করে দিতে চাই। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যাদের অস্থাবর সম্পত্তি আছে, তা যেন সে বিক্রি করে দেয়। অন্যথায় জেনে রেখো যমীন আল্লাহ ও তার রাসুলের।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৪৮ | 6848 | ٦۸٤۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৯৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ এভাবে আমি তোমাদেরকে এক মধ্যপন্থী জাতিরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছি, যাতে তোমরা মানব জাতির জন্য সাক্ষীস্বরূপ হবে। (২ঃ ১৪৩) নবী (সাঃ) জামায়াতকে আঁকড়ে ধরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। আর জামাআত বলতে আলেমদের জামাআতকেই বলা হয়েছে
৬৮৪৮। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন নূহ (আলাইহিস সালাম) কে (আল্লাহর সমীপে) হাযির করে জিজ্ঞাসা করা হবে, তুমি কি (দ্বীনের দাওয়াত) পৌছে দিয়েছ? তখন তিনি বলবেন, হ্যাঁ। হে আমার পরওয়ারদিগার। এরপর তাঁর উম্মতকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তোমাদের কাছে নূহ (দাওয়াত) পৌছিয়েছে কি? তারা সবাই বলে উঠবে, আমাদের কাছে কোন ভীতি প্রদর্শকই (নাবী ও রাসুল) আসেনি। তখন নূহ (আলাইহিস সালাম) কে বলা হবে, তোমার (দাবির পক্ষে) কোন সাক্ষী আছে কি? তিনি বলবেন, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর উম্মতগণই (আমার সাক্ষী)। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমাদেরকে তখন নিসে আসা হবে এবং তোমরা নূহ (আলাইহিস সালাম) এব পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ পাকের নিম্নোক্ত বাণী পাঠ করলেনঃ এভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে মধ্যমপন্থী উম্মাতে নির্ধারণ করেছেন। (وَسَطًا‏ অর্থ ভারসাম্যপূর্ণ) তাহলে তোমরা মানব জাতির জন্য সাক্ষী হতে পারবে আর রাসুল তোমাদের জন্য সাক্ষী হবেন।

জাফর ইবনু আউন (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৪৯ | 6849 | ٦۸٤۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৯৪. কোন কর্মকর্তা-কর্মচারী কিংবা বিচারক অজ্ঞতাবশত ইজ্তিহাদে ভূল করে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর মতের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত দিলে তা অগ্রাহ্য হবে। কেননা, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি যদি এমন কাজ করে, যার আমি নির্দেশ করিনি তা অগ্রাহ্য
৬৮৪৯। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনী আদী আনসারী গোত্রের অনেক ব্যাক্তিকে খায়বারের কর্মকর্তা নিয়োগ করে পাঠালেন। এরপর সে প্রত্যাবর্তন করল উন্নতমানের খেজুর নিয়ে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, খায়বারের সব খেজুরই কি এত উন্নতমানের হয়? তিনি বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আল্লাহর কসম! সব খেজুরই এমন নয়। আমরা দুই সা’ মন্দ খেজুরের বিনিময়ে এরূপ এক সা’ ভাল খেজুব খরিদ করেছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এমনটি করো না। বরং সমানে সমানে ক্রয়-বিক্রয় করো। কিংবা এগুলো বিক্রয় করে এর মূল্য দ্বারা সেগুলো খরিদ করো। যেসব জিনিস ওযন করে কেনাবেচা হয়, সেসব ক্ষেত্রেও এই আদেশ সমভাবে প্রযোজ্য।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৫০ | 6850 | ٦۸۵۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৯৫. বিচারক ইজতিহাদে সঠিক কিংবা ভুল সিদ্ধান্ত নিলেও তার প্রতিদান রয়েছে।
৬৮৫০। আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) … আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এই কথা বলতে শুনেছেন, কোন বিচারক ইজতিহাদে সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে তার জন্য রয়েছে দু’টি পুরস্কার। আর যদি কোন বিচারক ইজতিহাদে ভুল করেন তার জন্যও রয়েছে একটি পুরস্কার। রাবী বলেন, আমি হাদীসটি আবূ বকর ইবনু মুহাম্মাদ ইবনু আমর ইবনু হায়িম (রহঃ) এর নিকট বর্ণনা করলে তিনি বললেন, আবূ সালামা ইবনু আবদুর রহমান আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে এরূপ বর্ণনা করেছেন এবং আবদুল আযীয ইবনু আবদুল মুত্তালিব আবূ সালামা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৫১ | 6851 | ٦۸۵۱

পরিচ্ছদঃ ৩০৯৬. প্রমান তাদের উক্তির বিরুদ্ধে, যারা বলে নবী (সাঃ) এর সব কাজই সুষ্পষ্ট ছিল। কোন কোন সাহাবী নবী (সাঃ) এর দরবার থেকে অনুপস্থিত থাকা যে স্বাভাবিক ছিল যদ্দরুন তাঁদের জন্য ইসলামের বিধিবিধান থেকে লাওয়াকিফ থাকাও স্বাভাবিক ছিল এর প্রমান
৬৮৫১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … উবায়দ ইবনু উমায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ মূসা (রাঃ) উমার (রাঃ)-এর কাছে আসার অনুমতি চাইলেন। আবূ মূসা (রাঃ) তাকে যেন কোন কাজে ব্যস্ত ভেবে চলে যাচ্ছিলেন। উমর (রাঃ) বললেন, আমি কি আবদুল্লাহ ইবনু কায়স এর আওয়াজ শুনিনি? তাকে এখানে আসার অনুমতি দাও। এরপর তাকে ডেকে আনা হলে উমর (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, কি জিনিস আপনাকে ফিরে যেতে বাধ্য করল? আবূ মূসা (রাঃ) বললেন, আমাদেরকে এরূপই করার নির্দেশ দেয়া হত। উমর (রাঃ) বললেন, আপনার উক্তির সপক্ষে প্রমাণ পেশ করুন, অন্যথায় আপনার সাথে মোকাবেলা করব। এরপর তিনি আনসারদের এক মজলিসে চলে গেলেন। তারা বলে উঠল আমাদের বালকরাই এর পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। এরপর আবূ সাঈদ (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেন, হ্যাঁ, আমাদেরকে এরূপ করারই নির্দেশ দেওয়া হত। এরপর উমর (রাঃ) বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এমন আদেশটি আমার অজানা রয়ে গেল। বাজারের বেচাকেনার ব্যস্ততা আমাকে এ কথা জানা থেকে বঞ্চিত রেখেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৫২ | 6852 | ٦۸۵۲

পরিচ্ছদঃ ৩০৯৬. প্রমান তাদের উক্তির বিরুদ্ধে, যারা বলে নবী (সাঃ) এর সব কাজই সুষ্পষ্ট ছিল। কোন কোন সাহাবী নবী (সাঃ) এর দরবার থেকে অনুপস্থিত থাকা যে স্বাভাবিক ছিল যদ্দরুন তাঁদের জন্য ইসলামের বিধিবিধান থেকে লাওয়াকিফ থাকাও স্বাভাবিক ছিল এর প্রমান
৬৮৫২। আলী (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাদের ধারনা আবূ হুরায়রা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীস বর্ণনায় বাড়াবাড়ি করছে। আল্লাহর কাছে একদিন আমাদেরকে হাযির হতে হবে। আমি ছিলাম একজন মিসকীন। খেয়ে না খেয়েই আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সান্নিধ্যে লেগে থাকতাম। মুহাজিরদেরকে বাজারের বেচাকেনা লিপ্ত রাখত। আর আনসারগণকে ব্যস্ত রাখত তাদের ধন দৌলতের ব্যবস্তাপনা। একদা আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে উপস্থিত ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমার কথা শেষ হওয়া পর্যন্ত যে ব্যাক্তি স্বীয় চাঁদর বিছিয়ে তারপর তা গুটিয়ে নেবে, সে আমার কাছ থেকে শ্রুত বানী কোন দিন ভুলবে না। তখন আমি আমার গায়ের চাদরখানা বিছিয়ে দিলাম। সে সত্তার কসম, যিনি তাঁকে হকের সাথে প্রেরণ করেছেন। এরপর থেকে আমি তার কাছে যা শুনেছি, আর ভুলিনি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৫৩ | 6853 | ٦۸۵۳

পরিচ্ছদঃ ৩০৯৭. কোন বিষয় নবী (সাঃ) কর্তৃক অস্বীকৃতি জ্ঞাপন না করাই তা বৈধ হওয়ার প্রমাণ। অন্য কারো অস্বীকৃতি বৈধতার প্রমান নয়
৬৮৫৩। হাম্মাদ ইবনু হুমায়দ (রহঃ) … মুহাম্মদ ইবনু মুনকাদির (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) কে আল্লাহর কসম খেয়ে বলতে শুনেছি যে, ইবনু সায়িদ অবশ্যই (একটা) দাজ্জাল। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম, আল্লাহর কসম খেয়ে বলছেন? তিনি উত্তরে বললেনঃ আমি উমর (রাঃ) কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপস্থিতিতে কসম খেয়ে এ কথা বলতে শুনেছি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা অস্বীকার করেননি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৫৪ | 6854 | ٦۸۵٤

পরিচ্ছদঃ ৩০৯৮. দলীল-প্রমাণাদির দ্বারা যেসব বিধিবিধান সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়। দলীল প্রমাণাদির অর্থ ও বিশ্লেষণ কিভাবে করা যায়? নবী (সাঃ) ঘোড়া ইত্যাদির হুকুম বলে দিয়েছেন। এরপর তাঁকে গাধার হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি মহান আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীর দিকে ইশারা করেনঃ কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলেও তা দেখতে পাবে (৯৯ঃ ৭)। নবী (সাঃ) কে ‘দব্ব’ (গুঁইসাপ) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ আমি এটি খাই না, তবে হারামও বলি না। নবী (সাঃ) এর দস্তরখানে (‘দব্ব’ খাওয়া হয়েছে। এর দ্বারা ইবন আব্বাস (রাঃ) প্রমাণ করেছেন যে, ‘দব্ব’ হারাম নয়
৬৮৫৪। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ঘোড়া ব্যবহারের দিক দিয়ে মানুষ তিন প্রকার। এক প্রকার লোকের জন্য ঘোড়া সাওয়ারের মাধ্যম আর এক প্রকার লোকের জন্য তা গুনাহ থেকে রক্ষা পাওয়ার অবলম্বন এবং আর এক প্রকার লোকের ব্জন্য তা শাস্তির কারণ। যার জন্য ঘোড়া সাওয়ারের মাধ্যম সে এমন ব্যাক্তি যে ঘোড়াকে আল্লাহর রাস্তায় ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত রাখে এবং চারণভূমি বা বাগানে প্রশস্ত রশিতে বেধে বিচরণ করতে দেয়। এই রশি যত প্রশস্ত এবং যত দুরত্বে ঘোড়া বিচরণ করতে পারে, সে তত বেশি প্রতিদান পায়। যদি ঘোড়া এ রশি ছিড়ে এক চক্কর অথবা দু’টি চক্কর দেয়। তবে ঐ ঘোড়ার প্রতিটি পদক্ষেপ এবং মালের বিনিময়ে তাকে প্রতিদান দেওয়া হয়। ঘোড়া যদি কোন নদী বা নালায় গিয়ে পানি পান করে ফেলে অথচ মালিক পানি পান করানোর নিয়ত করেনি। এগুলো খুবই নেক কাজ। এর জন্য এ ব্যাক্তির সওয়াব রয়েছে।

আর যে ব্যাক্তি ঘোড়া পালন করে একমাত্র স্বয়ংসম্পূর্নতা এবং সুনির্ভরতা বজায় বাখার জন্য; এর সাথে সাথে ঘোড়ার ঘাড় ও পিঠে বর্তানো আল্লাহর হক সমূহও আদায় করতেও সে ভুলে যায় না। এ ক্ষেত্রে ঘোড়া তার জন্য শাস্তি থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায় হবে। আর যে ব্যাক্তি অহংকার ও আত্মগৌরব প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে ঘোড়া পোষে, তার জন্য এই ঘোড়া শাস্তির কারন হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হল গাধা সম্পর্কে তখন তিনি বললেনঃ এ সম্পর্কে আমার প্রতি ব্যাপক অর্থবোধক একটি আয়াত ছাড়া আল্লাহ আর কিছু নাযিল করেননি। (তা হল এই) যে অণু পরিমাণ ভাল কাজও করবে, সে তাও দেখতে পাবে এবং যে অনু পরিমাণ খারাপ কাজ করবে সেও তা দেখতে পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৫৫ | 6855 | ٦۸۵۵

পরিচ্ছদঃ ৩০৯৮. দলীল-প্রমাণাদির দ্বারা যেসব বিধিবিধান সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়। দলীল প্রমাণাদির অর্থ ও বিশ্লেষণ কিভাবে করা যায়? নবী (সাঃ) ঘোড়া ইত্যাদির হুকুম বলে দিয়েছেন। এরপর তাঁকে গাধার হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি মহান আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীর দিকে ইশারা করেনঃ কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলেও তা দেখতে পাবে (৯৯ঃ ৭)। নবী (সাঃ) কে ‘দব্ব’ (গুঁইসাপ) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ আমি এটি খাই না, তবে হারামও বলি না। নবী (সাঃ) এর দস্তরখানে (‘দব্ব’ খাওয়া হয়েছে। এর দ্বারা ইবন আব্বাস (রাঃ) প্রমাণ করেছেন যে, ‘দব্ব’ হারাম নয়
৬৮৫৫। ইয়াহইয়া ও মুহাম্মাদ ইবনু উকবা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করল, হায়েয থেকে গোসল (পবিত্রতা অর্জন) কিভাবে করতে হয়? তিনি বললেনঃ তুমি সুগন্ধিমুক্ত এক টুকরা কাপড় হাতে নেবে। তারপর এর সারা পবিত্রতা অর্জন করে নেবে। মহিলা বলে উঠল, আমি এর দ্বারা কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করে নেব? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি এর দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করে নেবে। মহিলা আবার বলে উঠল, এর দ্বারা কিভাবে পবিত্রতা অর্জন করে নেব? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি এর দ্বারা পবিত্রতা অর্জন করে নেবে। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ আমি বুঝতে পারলাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দ্বারা কি বোঝাতে চাচ্ছেন। এরপর মহিলাটিকে আমার দিকে টেনে আনলাম এবং বিযয়টি তাকে জানিয়ে দিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৫৬ | 6856 | ٦۸۵٦

পরিচ্ছদঃ ৩০৯৮. দলীল-প্রমাণাদির দ্বারা যেসব বিধিবিধান সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়। দলীল প্রমাণাদির অর্থ ও বিশ্লেষণ কিভাবে করা যায়? নবী (সাঃ) ঘোড়া ইত্যাদির হুকুম বলে দিয়েছেন। এরপর তাঁকে গাধার হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি মহান আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীর দিকে ইশারা করেনঃ কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলেও তা দেখতে পাবে (৯৯ঃ ৭)। নবী (সাঃ) কে ‘দব্ব’ (গুঁইসাপ) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ আমি এটি খাই না, তবে হারামও বলি না। নবী (সাঃ) এর দস্তরখানে (‘দব্ব’ খাওয়া হয়েছে। এর দ্বারা ইবন আব্বাস (রাঃ) প্রমাণ করেছেন যে, ‘দব্ব’ হারাম নয়
৬৮৫৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হারিস ইবনু হাযনের কন্যা উম্মে হুফায়দ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উদ্দেশ্যে ঘি, পনির এবং কতগুলো দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) হাদিয়া পাঠালেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলো চেয়ে নিলেন এবং এগুলো তাঁর দস্তরখানে বসে খাওয়া হল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে এগুলো ঘৃণার কারণে খেতে অপছন্দ করলেন। যদি এগুলো হারাম হত, তবে তাঁর দস্তরখানে তা খাওয়া যেত না এবং তিনিও এগুলো খাওয়ার অনুমতি দিতেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৫৭ | 6857 | ٦۸۵۷

পরিচ্ছদঃ ৩০৯৮. দলীল-প্রমাণাদির দ্বারা যেসব বিধিবিধান সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়। দলীল প্রমাণাদির অর্থ ও বিশ্লেষণ কিভাবে করা যায়? নবী (সাঃ) ঘোড়া ইত্যাদির হুকুম বলে দিয়েছেন। এরপর তাঁকে গাধার হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি মহান আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীর দিকে ইশারা করেনঃ কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলেও তা দেখতে পাবে (৯৯ঃ ৭)। নবী (সাঃ) কে ‘দব্ব’ (গুঁইসাপ) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ আমি এটি খাই না, তবে হারামও বলি না। নবী (সাঃ) এর দস্তরখানে (‘দব্ব’ খাওয়া হয়েছে। এর দ্বারা ইবন আব্বাস (রাঃ) প্রমাণ করেছেন যে, ‘দব্ব’ হারাম নয়
৬৮৫৭। আহমাদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি রসুন কিংবা পেঁয়াজ কাঁচা খায়, সে ব্যাক্তি যেন আমাদের থেকে কিংবা আমাদের মসজিদ থেকে পৃথক থাকে। আর সে যেন তার ঘরে বসে খাকে। এরপর তার খেদমতে একটি পাত্র আনা হল। বর্ণনাকারী ইবনু ওয়াহব (রাঃ) বলেন, অর্থাৎ শাক-সবজির একটি বড় পাত্র। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই পাত্রে এক প্রকার গন্ধ অনুভব করলে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তাকে-পাত্রের মধ্যকার শাক-সবজি সম্পর্কে অবগত করা হল। তিনি তা জনৈক সাহাবীকে খেতে দিতে বললেন যিনি তার সাথে উপস্থিত রয়েছেন। এরপর তিনি যখন অনুভব করলেন, সে তা খেতে অপছন্দ করছে তখন তিনি বললেনঃ খাও। কারণ আমি যার সাথে গোপনে কথোপকথন করি, তুমি তাঁর সাথে তা কর না।

ইবনু উফায়র (রহঃ) … ইবনু ওয়াহব (রহঃ) طَبَقًا فِيهِ خَضِرَاتٌ এর স্থলে بِقِدْرٍ فِيهِ خَضِرَاتٌ (শাক-সজির একটি হাড়ি) বর্ণনা করেছেন। পক্ষান্তরে লায়স ও আবূ সাফওয়ান (রহঃ) ইউনুস (রহঃ) থেকে হাড়ির ঘটনা উল্লেখ করেননি। এটি কি হাদীস বর্ণিত না যুহরী (রহঃ) এর উক্তি এ সম্পর্কে আমার জানা নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৫৮ | 6858 | ٦۸۵۸

পরিচ্ছদঃ ৩০৯৮. দলীল-প্রমাণাদির দ্বারা যেসব বিধিবিধান সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়। দলীল প্রমাণাদির অর্থ ও বিশ্লেষণ কিভাবে করা যায়? নবী (সাঃ) ঘোড়া ইত্যাদির হুকুম বলে দিয়েছেন। এরপর তাঁকে গাধার হুকুম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি মহান আল্লাহর নিম্নোক্ত বাণীর দিকে ইশারা করেনঃ কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করলেও তা দেখতে পাবে (৯৯ঃ ৭)। নবী (সাঃ) কে ‘দব্ব’ (গুঁইসাপ) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ আমি এটি খাই না, তবে হারামও বলি না। নবী (সাঃ) এর দস্তরখানে (‘দব্ব’ খাওয়া হয়েছে। এর দ্বারা ইবন আব্বাস (রাঃ) প্রমাণ করেছেন যে, ‘দব্ব’ হারাম নয়
৬৮৫৮। উবায়দুল্লাহ ইবনু সা’দ ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … জুবায়র ইবনু মুতঈম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে হাযির হল এবং তার সাথে কিছু বিষয়ে কথাবার্তা বলল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে কোন এক বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে দিলেন। এরপর মহিলা আবেদন করল, হে আল্লাহর রাসুল! আপনাকে যখন পাব না তখন কি করব? তিনি উত্তর দিলেনঃ যখন আমাকে পাবে না, তখন আসবে আবূ বকর (রাঃ) এর কাছে।

আবূ আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, বর্ণনাকারী হুমায়দী (রহঃ) ইবরাহীম ইবনু সা’দ (রহঃ) থেকে আরো অতিরিক্ত বলেছেন, মহিলাটি সম্ভবত সেই আবেদন দ্বারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৫৯ | 6859 | ٦۸۵۹

পরিচ্ছদঃ ৩০৯৯. রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর বাণীঃ আহলে কিতাবদের কাছে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করো না। আবুল ইয়ামান (রহঃ) বলেন, শুয়াইব (রহঃ), ইমাম যুহরী (রহঃ) হুমায়দ ইবন আবদুর রহমান (রহঃ) সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি মু’আবিয়া (রাঃ) কে মদীনায় বসবাসরত কুরায়শ বংশীয় কতিপয় লোককে আলাপ-আলোচনা করতে শুনেছেন। তখন কা’ব আহযাবের কথা এসে যায়। মু’আবিয়া (রাঃ) বললেন, যারা পূর্ববর্তী কিতাব সম্পর্কে আলোচনা করেন, তাদের মধ্যে তিনি অধিকতর সত্যবাদী, যদিও বর্ণিত বিষয়সমূহ ভিত্তিহীন
৬৮৫৯। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আহলে কিতাব হিব্রু ভাষায় তাওরাত পাঠ করে মুসলমানদের সামনে তা আরবী ভাষায় ব্যাখ্যা করত। (এই প্রেক্ষিতে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আহলে কিতাবকে তোমরা সত্যবাদী মনে করো না এবং তাদেরকে মিথ্যাবাদীও ভেবো না। তোমরা বলে দাও, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর প্রতি এবং আমাদের প্রতি যা অবতীর্ন হয়েছে এর প্রতি …… শেষ পর্যন্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৬০ | 6860 | ٦۸٦۰

পরিচ্ছদঃ ৩০৯৯. রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর বাণীঃ আহলে কিতাবদের কাছে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা করো না। আবুল ইয়ামান (রহঃ) বলেন, শুয়াইব (রহঃ), ইমাম যুহরী (রহঃ) হুমায়দ ইবন আবদুর রহমান (রহঃ) সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি মু’আবিয়া (রাঃ) কে মদীনায় বসবাসরত কুরায়শ বংশীয় কতিপয় লোককে আলাপ-আলোচনা করতে শুনেছেন। তখন কা’ব আহযাবের কথা এসে যায়। মু’আবিয়া (রাঃ) বললেন, যারা পূর্ববর্তী কিতাব সম্পর্কে আলোচনা করেন, তাদের মধ্যে তিনি অধিকতর সত্যবাদী, যদিও বর্ণিত বিষয়সমূহ ভিত্তিহীন
৬৮৬০। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, তোমরা কিভাবে আহলে কিতাবদেরকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা কর? অথচ তোমাদের কিতাব (আল-কুরআন) তাঁর রাসূলের উপর সদ্য নাযিল হয়েছে, তা তোমরা পড়ছ। যা পূত-পবিত্র ও নির্ভেজাল। এই কিতাব তোমাদেরকে বলে দিচ্ছে, আহলে কিতাবগণ আল্লাহর কিতাবকে পরিবর্তন ও বিকৃত করে দিয়েছে। তারা স্বহস্তে কিতাব লিখে তা আল্লাহর কিতাব বলে ঘোষণা দিয়েছে, যাতে তার দ্বারা সামান্য সুবিধা লাভ করতে পারে। তোমাদের কাছে যে (কিতাব ও সুন্নাহর) ইল্‌ম রয়েছে তা কি তোমাদেরকে তাদের কাছে কোন মাসআলা জিজ্ঞাসা করতে নিষেধ করছে না? আল্লাহর কসম! আমরা তো তাদের কাউকে দেখিনি কখনো তোমাদের উপর অবতীর্ণ কিতাবের বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করতে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৬১ | 6861 | ٦۸٦۱

পরিচ্ছদঃ ৩১০০. নবী (সাঃ) এর নিষেধাজ্ঞা দ্বারা হারাম সাব্যস্ত হয়। তবে অন্য দলীলের দ্বারা যা মুবাহ্ হওয়া প্রমাণিত তা ব্যতীত। অনুরূপ তাঁর নির্দেশ দ্বারা ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়। তবে অন্য দলীল দ্বারা তা মুবাহ্ হওয়া প্রমাণিত হলে ভিন্ন কথা। যেমন নবী (সাঃ) এর বাণীঃ যখন তোমরা হালাল (ইহরাম থেকে) হয়ে যাও, নিজ স্ত্রীর সাথে সহবাস করবে। জাবির (রাঃ) বলেন, এ কাজ তাদের জন্য ওয়াজিব করা হয়নি। বরং তাদের জন্য (স্ত্রী ব্যবহার) হালাল করা হয়েছে। উম্মে আতীয়্যা (রাঃ) বলেছেন, আমাদেরকে (মহিলাদের) জানাযার সাথে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা আমাদের উপর বাধ্যতামূলক নয়
৬৮৬১। মাক্কী ইবনু ইবরাহীম ও মুহাম্মাদ ইবনু বাকর (রহঃ) … আতা (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি জাবির ইবনু আবদুল্লাহকে এই কথা বলতে শুনেছি যে, তার সাথে তখন আরো কিছু লোক ছিল। আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ হাজ্জের (হজ্জ) নিয়তে ইহরাম বেধেছিলাম। এর সাথে উমরার নিয়ত ছিল না। বর্ণনাকারী আতা (রহঃ) বলেন, জাবির (রাঃ) বলেছেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিলহাজ্জ মাসের চার তারিখ সকাল বেলায় (মক্কায়) আগমন করলেন। এরপর আমরাও যখন আগমন করলাম, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ইহরাম খুলে ফেলার নির্দেশ দিলেন। তিনি বললেনঃ তোমরা ইহরাম খুলে ফেল এবং স্ত্রীদের সাথে মিলিত হও।

(রাবী) আতা (রহঃ) বর্ণনা করেন, জাবির (রাঃ) বলেছেনঃ (স্ত্রীদের সাথে সহবাস করা) তিনি তাদের উপর বাধ্যতামূলক করেননি বরং মুবাহ করে দিয়েছেন। এরপর তিনি অবহিত হন যে, আমরা বলাবলি করছি আমাদের ও আরাফার দিনের মাঝখানে মাত্র পাঁচদিন বাকি। তিনি আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, আমরা ইহরাম খুলে স্ত্রীদের সাথে মিলিত হই। তখন তো আমরা পৌছব আরাফায় আর আমাদের পুরুষাঙ্গ থেকে মযী ঝরতে থাকবে।

আতা বলেনঃ জাবির (রাঃ) এ কথা বোঝানোর জন্য হাত দিয়ে ইঙ্গিত করেছিলেন কিংবা হাত নেড়েছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁড়িয়ে বললেনঃ তোমরা জানো, আমি তোমাদের মধ্যে আল্লাহকে অধিক ভয় করি, তোমাদের তুলনায় আমি বেশি সত্যবাদী ও নিষ্ঠাবান। আমার সাথে যদি কুরবানীর পশু না থাকত আমিও তোমাদের মত ইহরাম খুলে ফেলতাম। সুতরাং তোমরা ইহরাম খুলে ফেল। আমি যদি আমার কাজের পরিণাম আগে জানতাম যা পরে অবগত হয়েছি তবে আমি কুরবানীর পশু সঙ্গে আনতাম না। অতএব আমরা ইহরাম খুলে ফেললাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশ শোনলাম এবং তাঁর আনুগত্য করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৬২ | 6862 | ٦۸٦۲

পরিচ্ছদঃ ৩১০০. নবী (সাঃ) এর নিষেধাজ্ঞা দ্বারা হারাম সাব্যস্ত হয়। তবে অন্য দলীলের দ্বারা যা মুবাহ্ হওয়া প্রমাণিত তা ব্যতীত। অনুরূপ তাঁর নির্দেশ দ্বারা ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়। তবে অন্য দলীল দ্বারা তা মুবাহ্ হওয়া প্রমাণিত হলে ভিন্ন কথা। যেমন নবী (সাঃ) এর বাণীঃ যখন তোমরা হালাল (ইহরাম থেকে) হয়ে যাও, নিজ স্ত্রীর সাথে সহবাস করবে। জাবির (রাঃ) বলেন, এ কাজ তাদের জন্য ওয়াজিব করা হয়নি। বরং তাদের জন্য (স্ত্রী ব্যবহার) হালাল করা হয়েছে। উম্মে আতীয়্যা (রাঃ) বলেছেন, আমাদেরকে (মহিলাদের) জানাযার সাথে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা আমাদের উপর বাধ্যতামূলক নয়
৬৮৬২। আবূ মা’মার (রহঃ) … আবদুল্লাহ মুযানী (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ মাগরিবের সালাত (নামায/নামাজ)-এর পূর্বে তোমরা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে। তবে তৃতীয়বারে তিনি বললেনঃ যার ইচ্ছা সে তা আদায় করতে পারে। লোকেরা (সাহাবীগণ) এটাকে সুন্নাত বলে ধরে নিক এটা তিনি পছন্দ করলেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৬৩ | 6863 | ٦۸٦۳

পরিচ্ছদঃ ৩১০১. মতবিরোধ অপছন্দীয়
৬৮৬৩। ইসহাক (রহঃ) … জুনদাব ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা কুরআন তিলাওয়াত করতে থাক, যাবত এর প্রতি তোমাদের হৃদয়ের আকর্যণ অব্যাহত থাকে। আর যখন তোমাদের মধ্যে কোন প্রকার মতবিরোধ দেখা দেয় তখন তা থেকে উঠে যাও। আবূ আবদুল্লাহ (বুখারী) (রহঃ) বলেন, আবদুর রহমান (রহঃ) সাল্লাম থেকে (উক্ত হাদীসটি) শুনেছেন (সুত্রে) বর্ণিত হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৬৪ | 6864 | ٦۸٦٤

পরিচ্ছদঃ ৩১০০. নবী (সাঃ) এর নিষেধাজ্ঞা দ্বারা হারাম সাব্যস্ত হয়। তবে অন্য দলীলের দ্বারা যা মুবাহ্ হওয়া প্রমাণিত তা ব্যতীত। অনুরূপ তাঁর নির্দেশ দ্বারা ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়। তবে অন্য দলীল দ্বারা তা মুবাহ্ হওয়া প্রমাণিত হলে ভিন্ন কথা। যেমন নবী (সাঃ) এর বাণীঃ যখন তোমরা হালাল (ইহরাম থেকে) হয়ে যাও, নিজ স্ত্রীর সাথে সহবাস করবে। জাবির (রাঃ) বলেন, এ কাজ তাদের জন্য ওয়াজিব করা হয়নি। বরং তাদের জন্য (স্ত্রী ব্যবহার) হালাল করা হয়েছে। উম্মে আতীয়্যা (রাঃ) বলেছেন, আমাদেরকে (মহিলাদের) জানাযার সাথে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা আমাদের উপর বাধ্যতামূলক নয়
৬৮৬৪। ইসহাক (রহঃ) … জুনদাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ততক্ষণ কুরআন তিলাওয়াত করতে থাক, যতক্ষন এর প্রতি তোমাদের হৃদয়ের আকর্যণ অব্যাহত থাকে। আর যখন বিরাগ মনা হয়ে যাও, তখন তা থেকে উঠে দাঁড়াও। ইয়াযিদ ইবনু হারুন (রহঃ) জুনদাব (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৬৫ | 6865 | ٦۸٦۵

পরিচ্ছদঃ ৩১০১. মতবিরোধ অপছন্দীয়
৬৮৬৫। ইররাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের সময় ঘনিয়ে এল। রাবী বলেন, ঘরের মধ্যে তখন বহু লোক ছিল। তাদের মধ্যে ছিলেন উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ)। তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তোমরা লেখার সামগ্রী নিয়ে এসো, আমি তোমাদের জন্য লিখে যাব এমন জিনিস, যা দ্বারা তার পরে তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না। উমর (রাঃ) মন্তব্য করলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুবই কষ্টে রয়েছেন। তোমাদের কাছে তো কুরআন রয়েছেই, আল্লাহর এই কিতাবই আমাদেরব জন্য যথেষ্ট। এ সময় গৃহে অবস্থানকারীদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হল। এবং তারা বিতর্কে লিপ্ত হয়ে গেল। তাদের মধ্যে কেউ কেউ বলল, লেখার সামগ্রী তোমরা নিয়ে এসো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের জন্য লিখে দিবেন এমন জিনিস যা সারা তার পরে তোমরা পথহারা হবে না। আবার কারো কারো মন্তব্য ছিল উমর (রাঃ)-এর কথারই অনুরূপ।

যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে তাদের কথা কাটাকাটি এবং মতপার্থক্য বৃদ্ধি পেল, তখন তিনি বললেনঃ তোমরা আমার কাছ থেকে উঠে যাও। বর্ণনাকারী উবায়দুল্লাহ বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলতেন, সমস্ত জটিলতার মূল উৎস ছিল তা-ই, যা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার লেখার মাঝখানে অন্তরায় সৃষ্টি হয়েছিল। অর্থাৎ তা ছিল তাদের মতবিরোধ ও কথা কাটাকাটি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৬৬ | 6866 | ٦۸٦٦

পরিচ্ছদঃ ৩১০২. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শের মাধ্যমে নিজেদের কর্ম সম্পাদন করে। (৪০ঃ ৩৮) এবং পরামর্শ করো তাঁদের সাথে (দীনী) কর্মের ব্যাপারে। পরামর্শ হলো স্থির সিদ্ধান্ত ও লক্ষ্য নির্ধারণের পূর্বে। যেমন, মহান আল্লাহর বাণীঃ এরপর যখন তুমি দৃঢ়সংকল্প হও, তখন আল্লাহর উপর ভরসা কর। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) যখন কোন বিষয়ে দৃঢ়সংকল্প হন, তখন আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলের মতের পরিপন্থী অগ্রসর হওয়ার ব্যাপারে কারো কোন অধিকার থাকে না। ওহুদের যুদ্ধের দিনে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাঁর সাহাবীদের সাথে এ পরামর্শ করেন যে, যুদ্ধ কি মদীনায় অবস্থান করেই চালাবেন, না বাইরে গিয়ে? সাহাবাগণ মদীনার বাইরে গিয়ে যুদ্ধ করাকে রায় দিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) যুদ্ধের পোশাক পরিধান করলেন এবং যখন যুদ্ধের জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলেন, তখন সাহাবাগণ আরয করলেন, মদীনায়ই অবস্থান করুন। কিন্তু তিনি দৃঢ়সংকল্প হওয়ার পর তাঁদের এই মতামতের প্রতি ভ্রক্ষেপ করলেন না। তিনি মন্তব্য করলেনঃ কোন নবীর সামরিক পোশাক পরিধান করার পর আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তা খুলে ফেলা সমীচীন নয়। তিনি আলী (রাঃ) ও উসামা (রাঃ) এর সাথে আয়েশার উপর যিনার মিথ্যা অপবাদ লাগানোর ব্যাপারে পরামর্শ করেন। তাদের কথা তিনি শোনেন। এরপর কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয়। মিথ্যা অপবাদকারীদেরকে তিনি বেত্রাঘাত করেন। তাঁদের পরস্পর মতান্তরের দিকে লক্ষ্য না করে আল্লাহর নির্দেশানুসারেই সিদ্ধান্ত নেন। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর পরে ইমামগণ মুবাহ্ বিষয়াদিতে বিশ্বস্ত আলেমদের কাছে পরামর্শ চাইতেন, যেন তুলনামূলক সহজ পথ তারা গ্রহন করতে পারেন। হ্যাঁ, যদি কিতাব কিংবা সুন্নাহতে আলোচ্য বিষয়ে কোন পরিষ্কার ব্যাখ্যা পাওয়া যেত, তখন তারা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর কথারই অনুসরণ করতেন, অন্য কারো কথার প্রতি ভ্রক্ষেপ করতেন না। (নবী (সাঃ) এর অনুসরণেই) যাকাত যারা বন্ধ করে দিয়েছিল, আবু বকর (রাঃ) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করলেন। উমর (রাঃ) তখন বললেন, আপনি কিভাবে লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন, অথচ রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ আমি এতক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি, যতক্ষণ না তারা বলবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’। তারা যখন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলবে তখন তারা আমার কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা লাভ করবে। তবে ইসলামের হকের ব্যাপার ভিন্নতর। আর সে ব্যাপারে তাদের হিসাব-নিকাশ আল্লাহর উপর। আবু বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অবশ্যই করব, যারা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর সুসংহত বিষয়ের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করে। পরিশেষে উমর (রাঃ) তাঁর সিদ্ধান্তই মেনে নিলেন। আবু বকর (রাঃ) এ ব্যাপারে (কারো সাথে) পরামর্শ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি। কেননা, যারা নামায ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে এবং ইসলাম এর নির্দেশাবলী পরিবর্তন ও বিকৃতি সাধনের অপচেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর সিদ্ধান্ত তাঁর সামনে বিদ্যমান ছিল। কেননা, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের দীনকে পরিবর্তন করে তাকে হত্যা কর। উমর (রাঃ) এর পরামর্শ পরিষদের সদস্যগণ কুরআন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। চাই তারা বয়োবৃদ্ধ হোক কিংবা যুবক। আল্লাহর কিতাবের (সিদ্ধান্তের) প্রতি উমর (রাঃ) ছিলেন অধিক অবহিত
৬৮৬৬। আল উওয়ায়সী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। যখন মিথ্যা অপবাদকারীরা তাঁর (আয়িশার) বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন (যিনার) অপবাদ রটিয়েছিল। তিনি বলেন, ওহী আসতে বিলম্ব হচ্ছিল, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী ইবনু আবূ তালিব ও উসামা ইবনু যায়িদের কাছে কিছু পরামর্শ করার জন্য তাদেরকে ডাকলেন এবং তার সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) কে পৃথক করে দেওয়া সম্পর্কে পরামর্শ চাইলেন। উসামা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবারের পবিত্রতা সম্পর্কে তার যা জানাছিল তা উল্লেখ করলেন। আর আলী (রাঃ) বললেন, আল্লাহ আপনার জন্য তো কোন সীমাবদ্ধতা আরোপ করেননি। মহিলা তো তিনি ব্যতীত আরও অনেক আছেন। আপনি বাদীটির কাছে জিজ্ঞাসা করুন, সে আপনাকে সত্য যা, তাই বলবে।

তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বারীরাকে ডাকলেন। তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি সন্দেহের কিছু অবলোকন করেছ? তিনি বললেন, আমি এ ছাড়া আর অধিক কিছুই জানিনা যে, আয়িশা (রাঃ) হচ্ছে অল্পবয়স্কা মেয়ে। তিনি নিজের ঘরের আটা পিষে ঘুমিয়ে পড়েন, এমতাবস্থায় বকরী এসে তা খেয়ে ফেলে। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বরে দাঁড়িয়ে বললেনঃ হে মুসলিমগণ! যে ব্যাক্তি আমার পরিবারের অপবাদ রটিয়ে আমাকে কষ্ট দিয়েছে তার প্রতিকার করতে আমাকে সাহায্য করার মত কেউ আছ কি? আল্লাহর কসম! আমি আমার পরিবার সম্পর্কে ভালো ছাড়া মন্দ কিছুই জানিনা এবং তিনি আয়িশা (রাঃ) এর পবিত্রতার কথা বর্ণনা করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৬৭ | 6867 | ٦۸٦۷

পরিচ্ছদঃ ৩১০২. মহান আল্লাহর বাণীঃ তারা নিজেদের মধ্যে পরামর্শের মাধ্যমে নিজেদের কর্ম সম্পাদন করে। (৪০ঃ ৩৮) এবং পরামর্শ করো তাঁদের সাথে (দীনী) কর্মের ব্যাপারে। পরামর্শ হলো স্থির সিদ্ধান্ত ও লক্ষ্য নির্ধারণের পূর্বে। যেমন, মহান আল্লাহর বাণীঃ এরপর যখন তুমি দৃঢ়সংকল্প হও, তখন আল্লাহর উপর ভরসা কর। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) যখন কোন বিষয়ে দৃঢ়সংকল্প হন, তখন আল্লাহ্‌ ও তাঁর রাসূলের মতের পরিপন্থী অগ্রসর হওয়ার ব্যাপারে কারো কোন অধিকার থাকে না। ওহুদের যুদ্ধের দিনে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাঁর সাহাবীদের সাথে এ পরামর্শ করেন যে, যুদ্ধ কি মদীনায় অবস্থান করেই চালাবেন, না বাইরে গিয়ে? সাহাবাগণ মদীনার বাইরে গিয়ে যুদ্ধ করাকে রায় দিলেন। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) যুদ্ধের পোশাক পরিধান করলেন এবং যখন যুদ্ধের জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হলেন, তখন সাহাবাগণ আরয করলেন, মদীনায়ই অবস্থান করুন। কিন্তু তিনি দৃঢ়সংকল্প হওয়ার পর তাঁদের এই মতামতের প্রতি ভ্রক্ষেপ করলেন না। তিনি মন্তব্য করলেনঃ কোন নবীর সামরিক পোশাক পরিধান করার পর আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তা খুলে ফেলা সমীচীন নয়। তিনি আলী (রাঃ) ও উসামা (রাঃ) এর সাথে আয়েশার উপর যিনার মিথ্যা অপবাদ লাগানোর ব্যাপারে পরামর্শ করেন। তাদের কথা তিনি শোনেন। এরপর কুরআনের আয়াত অবতীর্ণ হয়। মিথ্যা অপবাদকারীদেরকে তিনি বেত্রাঘাত করেন। তাঁদের পরস্পর মতান্তরের দিকে লক্ষ্য না করে আল্লাহর নির্দেশানুসারেই সিদ্ধান্ত নেন। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর পরে ইমামগণ মুবাহ্ বিষয়াদিতে বিশ্বস্ত আলেমদের কাছে পরামর্শ চাইতেন, যেন তুলনামূলক সহজ পথ তারা গ্রহন করতে পারেন। হ্যাঁ, যদি কিতাব কিংবা সুন্নাহতে আলোচ্য বিষয়ে কোন পরিষ্কার ব্যাখ্যা পাওয়া যেত, তখন তারা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর কথারই অনুসরণ করতেন, অন্য কারো কথার প্রতি ভ্রক্ষেপ করতেন না। (নবী (সাঃ) এর অনুসরণেই) যাকাত যারা বন্ধ করে দিয়েছিল, আবু বকর (রাঃ) তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহন করলেন। উমর (রাঃ) তখন বললেন, আপনি কিভাবে লোকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন, অথচ রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ আমি এতক্ষণ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আদিষ্ট হয়েছি, যতক্ষণ না তারা বলবে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’। তারা যখন ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্’ বলবে তখন তারা আমার কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা লাভ করবে। তবে ইসলামের হকের ব্যাপার ভিন্নতর। আর সে ব্যাপারে তাদের হিসাব-নিকাশ আল্লাহর উপর। আবু বকর (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম! আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অবশ্যই করব, যারা রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর সুসংহত বিষয়ের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করে। পরিশেষে উমর (রাঃ) তাঁর সিদ্ধান্তই মেনে নিলেন। আবু বকর (রাঃ) এ ব্যাপারে (কারো সাথে) পরামর্শ করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেননি। কেননা, যারা নামায ও যাকাতের মধ্যে পার্থক্য সৃষ্টি করে এবং ইসলাম এর নির্দেশাবলী পরিবর্তন ও বিকৃতি সাধনের অপচেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে রাসূলুল্লাহ্ (সা)-এর সিদ্ধান্ত তাঁর সামনে বিদ্যমান ছিল। কেননা, রাসূলুল্লাহ্ (সা) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিজের দীনকে পরিবর্তন করে তাকে হত্যা কর। উমর (রাঃ) এর পরামর্শ পরিষদের সদস্যগণ কুরআন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। চাই তারা বয়োবৃদ্ধ হোক কিংবা যুবক। আল্লাহর কিতাবের (সিদ্ধান্তের) প্রতি উমর (রাঃ) ছিলেন অধিক অবহিত
৬৮৬৭। আবূ উসামা ও মুহাম্মদ ইবনু হারব (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের (সামনে) খুতবা দিলেন। আল্লাহর প্রশংসা ও গুনগান বর্ণনা করলেন। এরপর তিনি বললেনঃ যারা আমার স্ত্রীর অপবাদ রটিয়ে ফিরছে, তাদের সম্পর্কে তোমরা আমাকে কি পরামর্শ দাও। আমি আমার পরিবারের কারো মধ্যে কোন প্রকার অশ্লীলতা বিন্দুমাত্র অনুভব করিনি।

উরওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশাকে সেই অপবাদ সম্পর্কে অবহিত করা হলে তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে আমার পরিজনের (বাবা-মার) কাছে যাওয়ার অনুমতি দিবেন কি? তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি দিলেন এবং তার সাথে একজন গোলামও পাঠালেন। জনৈক আনসারী বললেন, তুমিই পবিত্র হে আল্লাহ! এ ধরনের কথা আমাদের মুখে শোভা পায় না। এটা ভিত্তিহীন ঘৃণ্য মিথ্যা অপবাদ। তোমারই পবিত্রতা হে আল্লাহ!

 

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৬৮ | 6868 | ٦۸٦۸

পরিচ্ছদঃ ৩১০৩. মহান আল্লাহ্‌ তা’আলার তাওহীদের প্রতি উম্মতকে নবী (সাঃ) এর দাওয়াত
৬৮৬৮। আবূ আসিম ও আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আসওয়াদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাসের আযাদকৃত গোলাম আবূ মা’বাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) কে ইয়ামান (বাসীদের) উদেশ্যে পাঠালেন, তখন তিনি তাকে বললেনঃ তুমি আহলে কিতাবিদের একটি কাওমের কাছে চলেছ। অতএব, তাদের প্রতি তোমার প্রথম দাওয়াত হবে, তারা যেন আল্লাহর একাত্ববাদকে স্বীকার করে নেয়। তারা তা স্বীকার করার পর তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, আল্লাহ তাআলা দিনে রাতে তাদের প্রতি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) ফরয করে দিয়েছেন। যখন তারা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে, তখন তুমি তাদেরকে জানিয়ে দাও যে, তাদের ধন-সম্পদে আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি যাকাত ফরয করেছেন। তা (এই যাকাত) তাদেরই ধনশালীদের থেকে গ্রহণ করা হবে। আবার তাদের ফকীরদেরকে তা (বণ্টন করে) দেওয়া হবে। যখন তারা তা স্বীকার করে নেবে, তখন তাদের থেকে (যাকাত) গ্রহণ কর। তবে লোকজনের ধন-সম্পদের উত্তমাংশ গ্রহণ থেকে সংযমী হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৬৯ | 6869 | ٦۸٦۹

পরিচ্ছদঃ ৩১০৩. মহান আল্লাহ্‌ তা’আলার তাওহীদের প্রতি উম্মতকে নবী (সাঃ) এর দাওয়াত
৬৮৬৯। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে মু’আয তোমার কি জানা আছে, বান্দার উপর আল্লাহর হক কি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বান্দা আল্লাহর সাথে কাউকে অংশীদার না বানিয়ে একমাত্র তারই ইবাদত করবে। (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনরায় তাকে জিজ্ঞাসা করলেন) আল্লাহর উপর বান্দার হক কি তা কি তুমি জানো? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুলই ভাল জানেন। তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ তা হচ্ছে বান্দাদেরকে শাস্তি প্রদান না করা।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৭০ | 6870 | ٦۸۷۰

পরিচ্ছদঃ ৩১০৩. মহান আল্লাহ্‌ তা’আলার তাওহীদের প্রতি উম্মতকে নবী (সাঃ) এর দাওয়াত
৬৮৭০। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক ব্যাক্তি অপর এক ব্যাক্তিকে বারবার “ইখলাস” সূরাটি তিলাওয়াত করতে শুনল। সকাল বেলা সে ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত হয়ে তার নিকট এ ব্যাপারটি উল্লেখ করল। সে ব্যাক্তিটি যেন সূরা ইখলাসের (মহত্তকে) কম করে দেখছিল। এই প্রেক্ষিতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে মহান সত্তার হাতে আমার জীবন, তাঁর কসম করে বলছি! এই সূরাটি মর্যাদার দিক দিয়ে অবশ্যই কুরআনের এক-তৃতীয়াংশ।

ইসমাঈল ইবনু জাফর কাতাদা ইবনু আল নুমান (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে (কিছুটা) বৃদ্ধি সহকারে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৭১ | 6871 | ٦۸۷۱

পরিচ্ছদঃ ৩১০৩. মহান আল্লাহ্‌ তা’আলার তাওহীদের প্রতি উম্মতকে নবী (সাঃ) এর দাওয়াত
৬৮৭১। মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সাহাবীকে একটি মুজাহিদ দলের প্রধান করে জিহাদে পাঠালেন। সালাতে তিনি যখন তাঁর সাথীদের নিয়ে ইমামতি করতেন, তখন ইখলাস সূরাটি দিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করতেন। মুজাহিদগণ সেই অভিযান থেকে প্রত্যাবর্তন করে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে বিষয়টি আলোচনা করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাঁকেই জিজ্ঞাসা কর কেনই বা সে এই কাজটি করেছে? এরপর তাঁরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উত্তর দিলেন, এই সুরাটিতে আল্লাহ তা’আলার গুনাবলি রয়েছে। এই জন্য সুরাটি তিলাওয়াত করতে আমি ভালোবাসি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাকে জানিয়ে দাও, আল্লাহ পাক তাঁকে ভালবাসেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৭২ | 6872 | ٦۸۷۲

পরিচ্ছদঃ ৩১০৪. আপনি বলে দিন, তোমরা আল্লাহ্‌ নামে আহবান কর বা রাহমান নামে আহবান কর। তোমরা যেই নামেই আহবান কর সকল সুন্দর নামই তাঁর (১৭ঃ ১১০)
৬৮৭২। মুহাম্মদ (রহঃ) … জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তার প্রতি দয়া দেখান না, যে মানুষের প্রতি দয়া দেখায় না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৭৩ | 6873 | ٦۸۷۳

পরিচ্ছদঃ ৩১০৪. আপনি বলে দিন, তোমরা আল্লাহ্‌ নামে আহবান কর বা রাহমান নামে আহবান কর। তোমরা যেই নামেই আহবান কর সকল সুন্দর নামই তাঁর (১৭ঃ ১১০)
৬৮৭৩। আবূ নু’মান (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক সময় আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন এক কন্যার পক্ষ থেকে একজন সংবাদবাহক এসে তাকে জানাল যে, তার কন্যার পুত্রের মৃত্যুযন্ত্রনা আরম্ভ হয়েছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সংবাদবাককে বলে দিলেন, তুমি ফিরে যাও এবং তাকে জানিয়ে দাও, আল্লাহ যা নিয়ে নিয়েছেন এবং তিনি যা দিয়ে রেখেছেন সবেরই তিনি মালিক। তার কাছে প্রতিটি জিনিসের মেয়াদ সুনির্ধারিত। সুতরাং তাকে গিয়ে সবর করতে এবং প্রতিদানের আশা রাখিতে বল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা পুনরায় সংবাদ বাহককে পাঠালেন। সে এসে বলল, আপনাকে তার কাছে যাওয়ার জন্য তিনি কসম দিয়ে বলেছেন।

এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাওয়ার জন্য দাঁড়ালেন, তাঁর সঙ্গে সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ), মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ)-ও দাঁড়িয়ে গেলেন। এরপর শিশুটিকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে দেওয়া হল। তখন শিশুটির শ্বাস এমনভাবে ক্ষীণ হয়ে আসছিল, যেন তা একটি মশকে রয়েছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চোখ সিক্ত হয়ে গেল। সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ (এটা কি?) তিনি বললেনঃ এটই রহমত- দয়ামায়া, যা আল্লাহ তার বান্দাদের অন্তরে সৃষ্টি করে দিয়েছেন। বস্তুত আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে যারা দয়ালু আল্লাহ তাদের প্রতিই দয়া প্রদর্শন করে থাকেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৭৪ | 6874 | ٦۸۷٤

পরিচ্ছদঃ ৩১০৫. আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ তো রিযিক দান করেন এবং তিনি প্রবল, পরাক্রান্ত। (৫১ঃ ৫৮)
৬৮৭৪। আবদান (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এমন কেউই নেই যে কষ্টদায়ক বিষয়ে কিছু শোনার পর, সে ব্যাপারে আল্লাহর চেয়ে অধিক সবর করতে পারে। লোকেরা আল্লাহ তা’আলার সন্তান আছে বলে দাবি করে, অথচ এর পরেও তিনি তাদেরকে শান্তিতে রাখেন এবং রিযিক দান করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৭৫ | 6875 | ٦۸۷۵

পরিচ্ছদঃ ৩১০৬. আল্লাহর বাণীঃ তিনি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না। (৭২ঃ ২৬)। (মহান আল্লাহর বাণী) কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর কাছে রয়েছে (৩১ঃ ৩৪)। তা তিনি জেনে শুনে অবতীর্ণ করেছেন (৪ঃ ১৬৬)। কোন নারী তার গর্ভে কি ধারণ করবে এবং কখন তা প্রসব করবে তা তাঁর জানা আছে। কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহ্‌র হাতেই ন্যস্ত। আবূ আবদুল্লাহ্ [(বুখারী (রহঃ)] বলেন, ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) বলেছেন, মহান আল্লাহ্‌ জ্ঞানের আলোকে সমস্ত সৃষ্টির উপর প্রকাশমান, আবার তিনি জ্ঞানের আলোকে সবকিছুতেই পরিলুপ্ত
৬৮৭৫। খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ গায়েবের কুঞ্জি পাঁচটি, যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউই জাননা। (১) মাতৃজঠরে কি গুপ্ত রয়েছে তা জানেন একমাত্র আল্লাহ। (২) আগামীকাল কি সংঘটিত হবে তাও জানেন একমাত্র আল্লাহ (৩) বৃষ্টিপাত কখন হবে তাও একমাত্র আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউই জানে না। (৪) কে কোন ভূমিতে মারা যাবে তা আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউই জানে না। (৫) আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউই জানে না, কিয়ামত কখন সংঘটিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৭৬ | 6876 | ٦۸۷٦

পরিচ্ছদঃ ৩১০৬. আল্লাহর বাণীঃ তিনি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা, তিনি তাঁর অদৃশ্যের জ্ঞান কারো কাছে প্রকাশ করেন না। (৭২ঃ ২৬)। (মহান আল্লাহর বাণী) কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর কাছে রয়েছে (৩১ঃ ৩৪)। তা তিনি জেনে শুনে অবতীর্ণ করেছেন (৪ঃ ১৬৬)। কোন নারী তার গর্ভে কি ধারণ করবে এবং কখন তা প্রসব করবে তা তাঁর জানা আছে। কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহ্‌র হাতেই ন্যস্ত। আবূ আবদুল্লাহ্ [(বুখারী (রহঃ)] বলেন, ইয়াহ্ইয়া (রহঃ) বলেছেন, মহান আল্লাহ্‌ জ্ঞানের আলোকে সমস্ত সৃষ্টির উপর প্রকাশমান, আবার তিনি জ্ঞানের আলোকে সবকিছুতেই পরিলুপ্ত
৬৮৭৬। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে ব্যাক্তি তোমাকে বলে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় প্রতিপালককে দেখেছে, অবশ্যই সে মিথ্যা বলল। কেননা তিনি (আল্লাহ) বলছেন, চক্ষুরাজি কখনো তাকে দেখতে পায় না। আর যে ব্যাক্তি তোমাকে বলে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গায়েব জানেন, অবশ্য সেও মিথ্যা বলল। কেননা তিনি (আল্লাহ) বলেন, গায়েব জানেন একমাত্র আল্লাহ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৭৭ | 6877 | ٦۸۷۷

পরিচ্ছদঃ ৩১০৭. আল্লাহর বাণীঃ তিনিই শান্তি, তিনিই নিরাপত্তা বিধায়ক
৬৮৭৭। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পেছনে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতাম। তখন আমরা বলতাম, আল্লাহর উপর সালাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তো নিজেই সালাম। হ্যাঁ, তোমরা বল, التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ মৌখিক, শারীরিক ও আর্থিক সর্ব প্রকার ইবাদত একমাত্র আল্লাহর জন্য। হে নাবী! আপনার উপর শান্তি, আল্লাহর রহমত ও বরকত নাযিল হোক। আমাদের উপর এবং আল্লাহর নিষ্ঠাবান বান্দাদের উপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসূল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৭৮ | 6878 | ٦۸۷۸

পরিচ্ছদঃ ৩১০৮. আল্লাহ্‌র বাণীঃ মানুষের অধিপতি (১১৪ঃ ২) এ বিষয়ে আবদুল্লাহ্ ইবন উমর (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন
৬৮৭৮। আহমদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহ কিয়ামতের দিন পৃথিবী আপন মুষ্টিতে ধরবেন এবং আসমান তাঁর ডান হাতে জড়িয়ে ধরে বলবেনঃ আমিই একমাত্র অধিপতি। পৃথিবীর অধিপতিরা কোথায়? শুআয়ব, যুবায়দী, ইবনু মুসাফির, ইসহাক ইবনু ইয়াহিয়া, ইমাম যুহরী (রহঃ) আবু সালামা (রহঃ) সুত্রে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৭৯ | 6879 | ٦۸۷۹

পরিচ্ছদঃ ৩১০৯. আল্লাহ্‌র বাণীঃ তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় (৫৯ঃ ২৪)। (তারা যা আরোপ করে তা থেকে) পবিত্র ও মহান তোমার প্রতিপালক, ইযযতের অধিকারী প্রতিপালক। ইয্যত তো আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রাসূলেরই। (৬৩ঃ ৮) কেউ যদি আল্লাহ্‌র ইয্যত ও সিফাতের হলফ করে (তার হুকুম কি হবে)? আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সা) বলেছেনঃ জাহান্নাম বলবে, হে আল্লাহ্‌! তোমার ইয্যতের কসম, যথেষ্ট হয়েছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সা) থেকে বর্ণনা করেছেন, জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ লাভ করে সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তিটি অবস্থান করবে জাহান্নাম ও জান্নাতের মধ্যখানে। তখন সে (আর্তনাদ করে) বলবে, হে আমার প্রতিপালক! আমার চেহারাখানি জাহান্নাম থেকে ফিরে (একটু জান্নাতের দিকে করে) দিন। আপনার ইয্যতের কসম। আপনার কাছে এ ছাড়া আমি আর কিছুই চাইব না। আবূ সাঈদ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ তখন আল্লাহ্‌ তা’আলা (ঐ ব্যক্তিকে) বলবেন, তোমাকে তা প্রদান করা হল এবং এর সাথে আরো দশগুণ অধিক দেওয়া হল। নবী আইউব (আঃ) দোয়া করেছেনঃ হে আল্লাহ্‌! আপনার ইয্যতের কসম! আমি আপনার বরকতের সুষমা থেকে নিজেকে অমুখাপেক্ষী মনে করি না
৬৮৭৯। আবূ মামার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলে দোয়া করতেনঃ আমি আপনার ইজ্জতের আশ্রয় চাচ্ছি, আপনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আর আপনার কোন মৃত্যু নেই। অথচ জ্বীন ও মানুষ সবই মরণশীল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৮০ | 6880 | ٦۸۸۰

পরিচ্ছদঃ ৩১০৯. আল্লাহ্‌র বাণীঃ তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় (৫৯ঃ ২৪)। (তারা যা আরোপ করে তা থেকে) পবিত্র ও মহান তোমার প্রতিপালক, ইযযতের অধিকারী প্রতিপালক। ইয্যত তো আল্লাহ্‌ এবং তাঁর রাসূলেরই। (৬৩ঃ ৮) কেউ যদি আল্লাহ্‌র ইয্যত ও সিফাতের হলফ করে (তার হুকুম কি হবে)? আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সা) বলেছেনঃ জাহান্নাম বলবে, হে আল্লাহ্‌! তোমার ইয্যতের কসম, যথেষ্ট হয়েছে। আবূ হুরায়রা (রাঃ) নবী (সা) থেকে বর্ণনা করেছেন, জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ লাভ করে সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশকারী ব্যক্তিটি অবস্থান করবে জাহান্নাম ও জান্নাতের মধ্যখানে। তখন সে (আর্তনাদ করে) বলবে, হে আমার প্রতিপালক! আমার চেহারাখানি জাহান্নাম থেকে ফিরে (একটু জান্নাতের দিকে করে) দিন। আপনার ইয্যতের কসম। আপনার কাছে এ ছাড়া আমি আর কিছুই চাইব না। আবূ সাঈদ (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেনঃ তখন আল্লাহ্‌ তা’আলা (ঐ ব্যক্তিকে) বলবেন, তোমাকে তা প্রদান করা হল এবং এর সাথে আরো দশগুণ অধিক দেওয়া হল। নবী আইউব (আঃ) দোয়া করেছেনঃ হে আল্লাহ্‌! আপনার ইয্যতের কসম! আমি আপনার বরকতের সুষমা থেকে নিজেকে অমুখাপেক্ষী মনে করি না
৬৮৮০। ইবনু আবুল আসওয়াদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, লোকদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। খালীফা ও মুতামির (রহঃ) আনাস (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, জাহান্নামীদের জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হতে থাকবে। তখন জাহান্নাম বলতে থাকবে আরো অধিক আছে কি? আর শেষে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন, তাঁর কদম (পা) জাহান্নামে রাখবেন। তখন এর এক অংশ আরেক অংশের সাথে মিশ্রিত হয়ে স্থির হতে থাকবে। আর বলবে আপনার ইজ্জত ও করমের কসম! যথেষ্ট হয়েছে। জান্নাতের কিছু জায়গা শূন্য থাকবে। অবশেষে আল্লাহ সেই শূন্য জায়গার জন্য নতুন করে কিছু মাখলুক সৃষ্টি করবেন এবং এদের জন্য জান্নাতের সেই শূন্যস্থানে বসতি বপন করে দিবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৮১ | 6881 | ٦۸۸۱

পরিচ্ছদঃ ৩১১০. আল্লাহ্‌র বাণীঃ এবং তিনিই সে সত্তা, যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন যথাবিধি
৬৮৮১। কাবীসা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের বেলায় এ বলে দোয়া করতেনঃ হে আল্লাহ! আপনারই জন্য সব প্রশংসা। আসমানসমূহ এবং যমীনের প্রতিপালক! আপনারই সব প্রশংসা। আপনি সব আসমান ও যমীন এবং এগুলোর মধ্যকার সবকিছু সুনিয়ন্ত্রক। আপনারই সব প্রশংসা। আসমানসমুহ এবং যমীনের নূর আপনিই। আপনার বাণীই যথার্থ। আপনার প্রতিশ্রুতিই যথাযথ। যখাযথ আপনার মুলাকাত। জান্নাত সত্য। জাহান্নাম সত্য। কিয়ামত সত্য। হে আল্লাহ! আপনারই প্রতি আমি নিবেদিত। আপনার প্রতিই আমি ঈমান এনেছি। একমাত্র আপনারই ওপর ভরসা করেছি। ফিরে এসেছি আপনারই সমীপে। আপনারই সাহায্যে দুশমনের মুকাবিলা করেছি। (হক ও বাতিলের ফায়সালা) আপনারই উপর ন্যাস্ত করেছি। সুতরাং আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন, ক্ষমা করে দিন আমার পূর্বের এবং পরের গুনাহ, যা আমি গোপনে ও প্রকাশ্যে করেছি এবং আপনি আমার ইলাহ, আপনি ব্যতীত আমার কোন ইলাহ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৮২ | 6882 | ٦۸۸۲

পরিচ্ছদঃ ৩১১০. আল্লাহ্‌র বাণীঃ এবং তিনিই সে সত্তা, যিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন যথাবিধি
৬৮৮২। সাবিত ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … সুফিয়ান (রহঃ) এরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে এতে বর্ণিত আছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আপনই সত্য এবং আপনার বানীই যখার্থ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৮৩ | 6883 | ٦۸۸۳

পরিচ্ছদঃ ৩১১১. আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা (৫৮ঃ ১), আমাশ তামীম, উরওয়া (রহঃ), আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, সকল প্রশংসা সেই মহান আল্লাহ্‌র, যার শ্রবনশক্তি শব্দরাজিকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে। এরই পরে আল্লাহ্‌ তা’আলা নবী (সাঃ) এর উপর নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ করেন। হে রাসূল! আল্লাহ্‌ শুনেছেন সেই নারীর কথা, তার স্বামীর বিষয়ে আপনার সাথে বাদানুবাদ করছে। (৫৮ঃ ১)
৬৮৮৩। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা কোন এক সফরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। আমরা উঁচু স্থানে উঠার সময় তাকবীর বলতাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তোমাদের-নফসের উপর একটু সদয় হও। কেননা, তোমরা ডাকছ না বধির কিংবা অনুপস্থিত কাউকে। বরং তোমরা ডাকছ সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা এবং ঘনিষ্টতমকে। এরপর তিনি আমার কাছে আসলেন। তখন আমি মনে মনে لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ পড়ছিলাম। তিনি আমাকে বললেনঃ হে আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! পড় لاَ حَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إِلاَّ بِاللَّهِ কেননা এটি জান্নাতের খাযানা সমুহের একটি। অথবা তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাকে সেই বাক্যটির দিকে পথ প্রদর্শন করব না (যা হচ্ছে জান্নাতের খাযানা)?

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৮৪ | 6884 | ٦۸۸٤

পরিচ্ছদঃ ৩১১১. আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা (৫৮ঃ ১), আমাশ তামীম, উরওয়া (রহঃ), আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, সকল প্রশংসা সেই মহান আল্লাহ্‌র, যার শ্রবনশক্তি শব্দরাজিকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে। এরই পরে আল্লাহ্‌ তা’আলা নবী (সাঃ) এর উপর নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ করেন। হে রাসূল! আল্লাহ্‌ শুনেছেন সেই নারীর কথা, তার স্বামীর বিষয়ে আপনার সাথে বাদানুবাদ করছে। (৫৮ঃ ১)
৬৮৮৪। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে লক্ষ্য করে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে এমন একটি দোয়া শিখিয়ে দিন যা দিয়ে আমি আমার সালাত (নামায/নামাজ)-এ দোয়া করতে পারি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি বল, اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا، وَلاَ يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلاَّ أَنْتَ، فَاغْفِرْ لِي مِنْ عِنْدِكَ مَغْفِرَةً، إِنَّكَ أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ হে আল্লাহ! আমি আমার নফসের ওপর অত্যধিক যুলম করেছি। অথচ আপনি ছাড়া আমার গুনাহসমূহ মাফ করার কেউই নেই। সুতরাং আপনার পক্ষ থেকে আমাকে সস্পূর্ণভাবে মাফ করে দিন। নিশ্চয়ই আপনিই অধিক ক্ষমাপরায়ণ ও দয়াবান।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৮৫ | 6885 | ٦۸۸۵

পরিচ্ছদঃ ৩১১১. আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা (৫৮ঃ ১), আমাশ তামীম, উরওয়া (রহঃ), আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আয়েশা (রাঃ) বলেছেন, সকল প্রশংসা সেই মহান আল্লাহ্‌র, যার শ্রবনশক্তি শব্দরাজিকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে। এরই পরে আল্লাহ্‌ তা’আলা নবী (সাঃ) এর উপর নিম্নোক্ত আয়াত অবতীর্ণ করেন। হে রাসূল! আল্লাহ্‌ শুনেছেন সেই নারীর কথা, তার স্বামীর বিষয়ে আপনার সাথে বাদানুবাদ করছে। (৫৮ঃ ১)
৬৮৮৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জিবরীল আমাকে ডেকে বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা তো আপনার সম্প্রদায়ের লোকদের উক্তি শুনেছেন এবং তারা আপনার সাথে যে প্রতি উত্তর করেছে তাও তিনি শুনেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৮৬ | 6886 | ٦۸۸٦

পরিচ্ছদঃ ৩১১২. আল্লাহ্‌র বাণীঃ আপনি বলে দিন, তিনিই প্রকৃত শক্তিশালী
৬৮৮৬। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ সালামী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবাগণকে সকল কাজে এভাবে ইসতিখারা শিক্ষা দিতেন, যেভাবে তিনি তাদের কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন। তিনি বলতেনঃ তোমাদের কেউ যখন কোন কাজ করার ইচ্ছা করে, তখন সে যেন দুই রাকাত নফল সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নেয়। তারপর এ বলে দোয়া করে, হে আল্লাহ! আমি আপনারই ইল্‌মের সাহায্যে মঙ্গল তলব করছি। আর আপনারই কুদরতের সাহায্যে আমি শক্তি অন্বেষণ করছি। আর আপনারই অনুগ্রহ প্রার্থনা করছি। কেননা, আপনই শক্তি রাখেন, আমি কোন শক্তি রাখি না। আপনই সব কিছু জানেন, আমি কিছু জানিনা। গায়বী বিষয়াদির বিশেষজ্ঞ একমাত্র আপনি। এরপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায়কারী মনে মনে স্বীয় উদ্দেশ্য উল্লেখ করে বলবে, হে আল্লাহ! আপনি যদি জানেন যে, এ কাজটি আমার জন্য বর্তমানে ও ভবিষ্যতে মঙ্গলজনক বর্ণনাকারী বলেন, কিংবা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই স্থানে বলেছেনঃ আমার দ্বীন-দুনিয়া ও পরিনামের ক্ষেত্রে কল্যাণকর, তা হলে আমার জন্য তা নির্ধারন করে দিন এবং তা সুগম করে দিন, আর আমার জন্য এতে বরকত প্রদান করুন। হে আল্লাহ! আর যদি আপনি জানেন যে, এটি আমার দ্বীন, দুনিয়া ও পরিণামের ক্ষেত্রে অথবা আমার তাৎক্ষণিক ও আপেক্ষিক ব্যাপারে অমঙ্গলজনক, তবে তা থেকে আমাকে বিরত রাখুন। আর নির্ধারণ করুন আমার জন্য যা হয় কল্যাণকর এবং সেটিতেই আমাকে সস্তুষ্ট রাখুন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৮৭ | 6887 | ٦۸۸۷

পরিচ্ছদঃ ৩১১৩. আল্লাহ্‌র বাণীঃ আমিও তাদের অন্তরসমূহ ও নয়নগুলোতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করব
৬৮৮৭। সাঈদ ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময় কসম করতেন এই বলে (না সূচক বিষয়ে) না। তাঁর কসম, যিনি অন্তরসমূহ পরিবর্তন করে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৮৮ | 6888 | ٦۸۸۸

পরিচ্ছদঃ ৩১১৪. আল্লাহ্‌ তা’আলার একশত থেকে এক কম (নিরানব্বইটি) নাম রয়েছে। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ ذُو الْجَلاَلِ এর অর্থ মহানত্বের অধিকারী, الْبَرُّ এর অর্থ দয়ালু
৬৮৮৮। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলার নিরানব্বইটি (এক কম একশতটি) নাম আছে। যে ব্যাক্তি এ নামসমূহ মুখস্থ করে রাখবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। أَحْصَيْنَاهُ এর অর্থ حَفِظْنَاهُ‏ অর্থাৎ আমরা একে মুখস্থ করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৮৯ | 6889 | ٦۸۸۹

পরিচ্ছদঃ ৩১১৫. আল্লাহ্‌ তা‘আলার নামসমূহের মাধ্যমে প্রার্থনা করা ও পানাহ চাওয়া
৬৮৮৯। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ তোমরা কেউ (ঘুমানোর উদ্দেশ্যে) শয্যায় গেলে তখন যেন সে তার কাপড়ের আচল দিয়ে তা তিনবার ঝেড়ে নেয়। আর বলে, হে আমার প্রতিপালক! একমাত্র তোমারই নামে আমার শরীরের পার্শ্বদেশ বিছানায় রাখলাম এবং তোমারই সাহায্যে আবার তা উঠাব। তুমি যদি আমার জীবনটুকু আটকিয়ে রাখ; তাহলে তাকে মাফ করে দিবে। আর যদি তা ফিরিয়ে দাও তা হলে তোমার নিষ্ঠাবান বান্দাদেরকে যেভাবে হিফাযত কর, সেভাবে তার হিফাযত করবে। এই হাদীসেরই অনুকরণে ইয়াহইয়া ও বিশর ইবনু মুফাদ্দাল (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

যুহায়র, আবূ যামরা, ইসমাঈল ইবনু যাকারিয়া (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। ইবনু আজলান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৯০ | 6890 | ٦۸۹۰

পরিচ্ছদঃ ৩১১৫. আল্লাহ্‌ তা‘আলার নামসমূহের মাধ্যমে প্রার্থনা করা ও পানাহ চাওয়া
৬৮৯০। মুসলিম (রহঃ) হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আপন শয্যায় যেতেন, তখন এই বলে দোয়া করতেন – হে আল্লাহ! আমি তোমারই নামে মৃত্যুবরণ করি, আবার তোমারই নামে জীবিত হই। আবার ভোর হলে বলতেনঃ সমস্ত প্রশংসা সেই আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে মৃত্যুর (ঘুম) পর জীবিত করেছেন এবং তাঁরই কাছে আমাদের শেষ উত্থান।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৯১ | 6891 | ٦۸۹۱

পরিচ্ছদঃ ৩১১৫. আল্লাহ্‌ তা‘আলার নামসমূহের মাধ্যমে প্রার্থনা করা ও পানাহ চাওয়া
৬৮৯১। সা’দ ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ যর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রিতে যখন তাঁর শয্যায় যেতেন তখন বলতেনঃ আমরা তোমারই নামে মৃত্যু বরণ করছি ও জীবিত হচ্ছি (নিদ্রায় যাচ্ছি, নিদ্রা থেকে জাগ্রত হচ্ছি) এবং তিনি যখন জাগ্রত হতেন তখন বলতেনঃ সমস্ত প্রশাংসা সেই আল্লাহর, যিনি মৃত্যুর পর আমাদের জীবিত করেন এবং তাঁরই কাছে আমাদের শেষ উত্থান।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৯২ | 6892 | ٦۸۹۲

পরিচ্ছদঃ ৩১১৫. আল্লাহ্‌ তা‘আলার নামসমূহের মাধ্যমে প্রার্থনা করা ও পানাহ চাওয়া
৬৮৯২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন স্ত্রীর সাথে সহবাসের ইচ্ছা করে এবং সে বলে আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ! আমাদেরকে শয়তান থেকে পৃথক রাখুন। এবং আপনি আমাদের যে রিযিক দান করেন তা থেকে শয়তানকে পৃথক রাখুন এবং উভয়ের মাধ্যমে যদি কোন সন্তান নির্ধারণ করা হয় তাহলে শয়তান কখনো তার ক্ষতি করতে পারে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৯৩ | 6893 | ٦۸۹۳

পরিচ্ছদঃ ৩১১৫. আল্লাহ্‌ তা‘আলার নামসমূহের মাধ্যমে প্রার্থনা করা ও পানাহ চাওয়া
৬৮৯৩। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম। আমি আমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর (শিকারের জন্য) ছেড়ে দেই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যখন তুমি আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরগুলো ছেড়ে দেবে এবং যদি সে কোন শিকার ধরে আনে তাহলে তা খেতে পার। আর যদি ধারাল তীর নিক্ষেপ কর এবং এতে যদি শিকারের দেহ ফেড়ে দেয়, তবে তা খেতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৯৪ | 6894 | ٦۸۹٤

পরিচ্ছদঃ ৩১১৫. আল্লাহ্‌ তা‘আলার নামসমূহের মাধ্যমে প্রার্থনা করা ও পানাহ চাওয়া
৬৮৯৪। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাহাবীগণ বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ এখানে এমন কতিপয় কাওম আছে, যারা সদ্য শিরক বর্জন করে ইসলাম গ্রহণ করেছে। তারা আমাদের জন্য গোশত নিয়ে আসে। সেগুলো যবাই করার সময় তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে কিনা তা আমরা জানিনা। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে নেবে এবং তা খাবে। এই হাদীস বর্ণনায় আবূ খালিদ (রহঃ) এর অনুসরণ করেছেন মুহাম্মাদ ইবনু আবদুর রহমান, দায়াওনীদী এবং উসামা ইবনু হাফস।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৯৫ | 6895 | ٦۸۹۵

পরিচ্ছদঃ ৩১১৫. আল্লাহ্‌ তা‘আলার নামসমূহের মাধ্যমে প্রার্থনা করা ও পানাহ চাওয়া
৬৮৯৫। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিসমিল্লাহ পড়ে এবং তাকবীর বলে দুইটি ভেড়া কুরবানী করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৯৬ | 6896 | ٦۸۹٦

পরিচ্ছদঃ ৩১১৫. আল্লাহ্‌ তা‘আলার নামসমূহের মাধ্যমে প্রার্থনা করা ও পানাহ চাওয়া
৬৮৯৬। হাফস ইবনু উমার (রহঃ) … জুনদাব ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি কুরবানীর দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত ছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরপর খুৎবা দিলেন এবং বললেনঃ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করার পূর্বে যে ব্যাক্তি কুরবানীর পশু যবাই করেছে, সে যেন এর স্থলে আরেকটি কুরবানী করে। আর যে ব্যাক্তি (সালাত (নামায/নামাজ)-এর পূর্বে) যবাই করেনি সে যেন আল্লাহর নামে যবাই করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৯৭ | 6897 | ٦۸۹۷

পরিচ্ছদঃ ৩১১৫. আল্লাহ্‌ তা‘আলার নামসমূহের মাধ্যমে প্রার্থনা করা ও পানাহ চাওয়া
৬৮৯৭। আবূ নুআঈম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের বাপ-দাদার নামে কসম করো না। কারো কসম করতে হলে সে যেন আল্লাহর নামেই কসম করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৯৮ | 6898 | ٦۸۹۸

পরিচ্ছদঃ ৩১১৬. আল্লাহ্‌ তা‘আলার মূল সত্তা, গুনাবলি ও নামসমূহের বর্ণনা। খুবায়ব (রাঃ) বলেছিলেন, وَذَلِكَ فِي ذَاتِ الإِلَهِ (এবং ওটি আল্লাহ্‌র সত্তার স্বার্থে) আর তিনি মূল সত্তাকে তাঁর নামের সাথে সংযোজন করে বলেছিলেন
৬৮৯৮। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দশজন সাহাবীর একটি দল পাঠালেন। তাদের মধ্যে খুবায়ব আনসারীও ছিলেন। বর্ণনাকারী ইমাম যুহরী (রহঃ) বলেন, উবায়দুল্লাহ ইবনু আয়ায আমার কাছে বর্ণনা করেছেন যে, হারিসের কন্যা তাকে জানিয়েছেন, যখন খুবায়ব (রাঃ) কে হত্যা করার জন্য তারা সবাই একত্রিত হল, তখন খুবায়ব (রাঃ) পাক-সাফ হওয়ার জন্য তার থেকে একখানা ক্ষুর চেয়ে নিলেন। আর যখন তারা খুবায়বকে হত্যা করার জন্য হারামের বাইরে নিয়ে এল, তখন খুবায়ব আনসারী (রাঃ) কবিতা আবৃতি করে বললেনঃ “মুসলমান হওয়ার কারণেই যখন আমাকে হত্যা করা হচ্ছে, তখন এতে আমার কোন আফসোস নেই। যে পার্শ্বেই ঢলে পড়ি না কেন, আল্লাহর জন্যই আমার এ মরণ। একমাত্র আল্লাহর সত্তার সার্থে আমার এ জীবন দান। যদি তিনি চান তবে আমার কর্তিত অঙ্গরাজির প্রতিটি টুকুরায় তিনি বরকত দিবেন।” এরপর হারিসের পুত্র তাঁকে শহীদ করল। তাঁদের সে মসীবতের খবরটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবাগণকে সেদিনই জানিয়ে দিয়েছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৮৯৯ | 6899 | ٦۸۹۹

পরিচ্ছদঃ ৩১১৭. আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তাঁর নিজের সম্বন্ধে তোমাদেরকে সাবধান করছেন (৩ঃ ২৮)। আল্লাহ্‌র বাণীঃ আমার অন্তরের কথা তো আপনি অবগত আছেন, কিন্তু আপনার অন্তরের কথা আমি অবগত নই ( ৫ঃ ১১৬)
৬৮৯৯। উমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহর চেয়ে বেশি আত্মমর্যাদা সম্পন্ন আর কেউ নেই। এই কারণেই তিনি অশ্লীলতাকে হারাম করে দিয়েছেন। এমন কেউ নেই যে, আত্নপ্রশংসা আল্লাহর চেয়ে অধিক ভালবাসে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯০০ | 6900 | ٦۹۰۰

পরিচ্ছদঃ ৩১১৭. আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তাঁর নিজের সম্বন্ধে তোমাদেরকে সাবধান করছেন (৩ঃ ২৮)। আল্লাহ্‌র বাণীঃ আমার অন্তরের কথা তো আপনি অবগত আছেন, কিন্তু আপনার অন্তরের কথা আমি অবগত নই ( ৫ঃ ১১৬)
৬৯০০। আবদান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ যখন মাখলুক সৃষ্টি করলেন, তখন তা তাঁর কিতাবে লিপিবদ্ধ করলেন এবং তিনি আপন সত্তা সম্পর্কে লিখছেন যা তার কাছে আরশের উপর সংরক্ষিত আছে। আমার গযবের উপর আমার রহমতের প্রধান্য রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯০১ | 6901 | ٦۹۰۱

পরিচ্ছদঃ ৩১১৭. আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তাঁর নিজের সম্বন্ধে তোমাদেরকে সাবধান করছেন (৩ঃ ২৮)। আল্লাহ্‌র বাণীঃ আমার অন্তরের কথা তো আপনি অবগত আছেন, কিন্তু আপনার অন্তরের কথা আমি অবগত নই ( ৫ঃ ১১৬)
৬৯০১। উমার ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ঘোষনা করেন, আমি সেইরূপই, যেরূপ বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। আমি তার সাথে থাকি যখন সে আমাকে স্মরণ করে। যদি সে মনে মনে আমাকে স্মরণ করে আমিও তাকে নিজে স্মরণ করি। আর যদি সে লোক-সমাবেশে আমাকে স্মরণ করে তবে আমিও তাদের চেয়ে উত্তম সমাবেশে তাকে স্মরণ করি। যদি সে আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়, তবে আমি তার দিকে এক হাত অগ্রসর হই, যদি সে আমার দিকে এক হাত অগ্রসর হয়; আমি তার দিকে দু হাত অগ্রসর হই। আর সে যদি আমার দিকে হেঁটে অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে দৌড়ে অগ্রসর হই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯০২ | 6902 | ٦۹۰۲

পরিচ্ছদঃ ৩১১৮. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌র সত্তা ব্যতীত সব কিছুই ধ্বংসশীল (২৮ঃ ৮৮)
৬৯০২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এই আয়াতটি যখন নাযিল হলঃ “হে নাবী আপনি বলে দিন তোমাদের ঊর্ধ্বদেশ থেকে তোমাদের ওপর শাস্তি প্রেরন করতে তিনিই সক্ষম” (৬ঃ ৬৫)। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আল্লাহ! আমি আপনার সত্তার সাহায্যে পানাহ চাচ্ছি। আল্লাহ তখন বললেনঃ “কিংবা তোমাদের পদতল থেকে”; তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি আপনার সত্তার সাহায্যে পানা চাচ্ছি। আল্লাহ বললেনঃ তোমাদেরকে বিভিন্ন দলে বিভক্ত করে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটি তুলনামূলক সহজ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯০৩ | 6903 | ٦۹۰۳

পরিচ্ছদঃ ৩১১৯. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ যাতে তুমি আমার তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত হও (২০ঃ ৩৯)। মহান আল্লাহর বাণীঃ যা চলত আমার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে (৫৪ঃ ১৪)
৬৯০৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে দাজ্জাল সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তা’আলা তোমাদের কাছে গোপন থাকবেন না। অবশ্যই আল্লাহ অন্ধ নন। এর সাথে সাথে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত দিয়ে স্বীয় চোখের দিকে ইশারা করলেন। মাসীহ দাজ্জালের ডান চোখ তো কানা। তার চোখটি যেন আংগুরের ন্যায় ভাসা ভাসা।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯০৪ | 6904 | ٦۹۰٤

পরিচ্ছদঃ ৩১১৯. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ যাতে তুমি আমার তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত হও (২০ঃ ৩৯)। মহান আল্লাহর বাণীঃ যা চলত আমার প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে (৫৪ঃ ১৪)
৬৯০৪। হাফস ইবনু উমার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ এমন কোন নাবী প্রেরণ করেননি যিনি তার কওমকে কানা মিথ্যুকটি সম্পর্কে সাবধান করেননি। এই মিথ্যুকটি তো কানা (দাজ্জাল)। আর তোমাদের প্রতিপালক তো অন্ধ নন। তার (দাজ্জালের) দু’চোখের মাঝখানে কাফের (লেখা থাকবে )।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯০৫ | 6905 | ٦۹۰۵

পরিচ্ছদঃ ৩১২০. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তিনিই আল্লাহ্‌ সৃজনকর্তা, উদ্ভাবনকর্তা, রূপদাতা (৫৯ঃ ২৪)
৬৯০৫। ইসহাক (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বনী মুসতালিক যুদ্ধ সম্পর্কে বর্ণনা করেন যে, মুসলিম মুজাহিদগণ যুদ্ধে কতিপয় বন্দিনী লাভ করেছিল। এরপর তারা এদেরকে ভোগ করতে চাইলেন। আবার তারা যেন গর্ভবতী হয়ে না পড়ে সে ইচ্ছাও পোষণ করছিলেন। তাই তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আযল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এতে তোমাদের কোন লাভ নেই। কারণ আল্লাহ তা’আলা কিয়ামত পর্যন্ত যত জীবন সৃষ্টি করবেন, তা সবই লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন।

মুজাহিদ (রহঃ) কাযআ (রহঃ) এর মধ্যস্থতায় আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যত জীবন সৃষ্টি করার সিদ্ধান্ত করা হয়েছে আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই তা সৃষ্টি করবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯০৬ | 6906 | ٦۹۰٦

পরিচ্ছদঃ ৩১২১. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ যাকে আমি নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি
৬৯০৬। মু’আয ইবনু ফাদালা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন আল্লাহ ঈমানদারদেরকে সমবেত করবেন তখন তারা উক্তি করবে আমরা আমাদের প্রতিপালকের কাছে কোন সুপারিশ যদি নিয়ে যেতাম; তাহলে তিনি আমাদেরকে এই স্থানটি থেকে বের করে শান্তি প্রদান করতেন। এরপর তারা আদম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে গিয়ে বলবে, হে আদম (আলাইহিস সালাম)! আপনি কি মানুষের অবস্থা দেখছেন না? অথচ আল্লাহ আপনাকে নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন। আপনাকে তিনি তাঁর ফেরেশতাগণ দিয়ে সিজদা করিয়েছেন। আর আপনাকে সব জিনিসের নাম শিক্ষা দিয়েছেন সুতরাং আপনি আমাদের প্রতিপালকের কাছে সুপারিশ করুন, যেন এই স্থানটি থেকে আমাদেরকে তিনি শান্তি প্রদান করেন। আদম (আলাইহিস সালাম) তখন বলবেন, এই কাজের জন্য আমি যোগ্য নই। এবং আদম (আলাইহিস সালাম) তাদের কাছে স্বীয় ভুলের কথা স্মরণ করবেন এবং বলবেন, তোমরা বরং নূহ (আলাইহিস সালাম) এর কাছে যাও। যেহেতু তিনিই আল্লাহর প্রথম রাসুল। যাকে তিনি যমীনবাসীর কাছে প্রেরণ করেছিলেন।

(এ কথা শুনে) তারা নূহ (আলাইহিস সালাম) এর কাছে আসবে। তিনিও বলবেন, আমি তোমাদের এই কাজের জন্য যোগ্য নই। তিনি তাঁর কৃত ত্রুটির কথা স্মরণ করে বলবেন, তোমরা বরং আল্লাহর খলীল (বন্ধু) ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে যাও। তখন তারা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে চলে আসবে। তিনিও তাদের কাছে স্বীয় কৃত ত্রুটিসমুহর কথা উল্লেখ পূর্বক বলবেন, আমি তোমাদের এই কাজের জন্য যোগ্য নই। তোমরা বরং মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে যাও। তিনি এমন একজন বান্দা যাকে আল্লাহ তাওরাত প্রদান করেছিলেন এবং তাঁর সাথে তিনি প্রত্যক্ষ বাক্যালাপ করেছিলেন। তারা তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে আসবে। মূসা (আলাইহিস সালাম)-ও বলবেন, আমি তোমাদের এই কাজের জন্য যোগ্য নই। তাদের কাছে তিনি স্বীয়কৃত ক্রটির কথা উল্লেখ পূর্বক বলবেন, তোমরা বরং ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে যাও। যিনি আল্লাহর বান্দা, তাঁর রাসুল, কালেমা ও রুহ।

তখন তারা ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে আসবে। তখন ঈসা (আলাইহিস সালাম) বলবেন, আমি তোমাদের এই কাজের যোগ্য নই। তোমরা বরং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে যাও। তিনি এমন একজন বান্দা, যার আগের ও পরের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছে। তাবা সবাই আমার কাছে আসবে। আমি তখন আমার প্রতিপালকের কাছে অনুমতি প্রার্থনা করবা আমাকে এর অনুমতি দেওয়া হবে। আমি আমার প্রতি পালককে যখন দেখতে পাব, তখনই আমি তাঁর সামনে সিজদায় পড়বো। আল্লাহ তার মরজী অনুসারে যতক্ষন আমাকে সেভাবে রাখার রেখে দেবেন। তারপর আমাকে বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠান। (যা বলার) বলুন। শোনা হবে। (যা চাওয়ার) চান, দেয়া হবে। (যা সুপারিশ করার) করুন, গ্রহণ করা হবে।

তখন আমার প্রতিপালকের শিখিয়ে দেয়া প্রশংসারাজির দ্বারা আমি তাঁর প্রশংসা করব। তারপর আমি শাফাআত করব। আমার জন্য একটা সীমা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে। এরপর আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেব। তারপর আমি ফিরে আসব। যখন আমি আমার প্রতিপালককে দেখতে পাব তখন তাঁর জন্য সিজদায় পড়বো। আল্লাহর মরজী অনুসারে যতক্ষন আমাকে এভাবে রাখতে চাইবেন রেখে দিবেন। তারপর আমাকে বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠান। বলুন, শোনা হবে। চান, দেওয়া হবে। সুপারিশ করুন, গ্রহণ করা হবে। তখন আমার প্রতিপালকের শিখিয়ে দেয়া প্রশংসারাজি দিয়ে আমি তার প্রশংসা করব এবং সুপারিশ কবর। তখনো আমার জন্য একটা সীমা নির্ধারন করা হবে। আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেব। তারপর আমি আবার ফিরে আসব।

আমি এবারও আমার প্রতিপালককে দেখামাত্র সিজদায় পড়বো। আল্লাহ তা’আলা তাঁর মরজী অনুসারে যতক্ষন ইচ্ছা আমাকে সেই অবস্থায় রেখে দিবেন। তারপর বলা হবে, হে মুহাম্মাদ! মাথা উঠান। বলুন, শোনা হবে। চান, দেয়া হবে। সুপারিশ করুন, কবুল করা হবে। তখন আমার রব আমাকে শিখিয়ে দেয়া প্রশংসারাজি দ্বারা প্রশংসা করে শাফাআত করব। তখনও একটা সীমা বাতলানো থাকবে। আমি তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেব। এরপর আমি তার কাছে ফিরে গিয়ে বলব, হে প্রতিপালক! এখন একমাত্র তারাই জাহান্নামে অবশিষ্ট রয়েছে, যাদেরকে কুরআন আটক করে রেখে দিয়েছে এবং যাদের উপর স্থায়ীভাবে জাহান্নাম অবধারিত হয়ে গিয়েছে।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়েছে, অথচ তার হৃদয়ে একটি যবের ওজন পরিমাণ কল্যাণ ঈমান আছে, তাকেও জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। তারপর বের করা হবে জাহান্নাম থেকে তাদেরকেও, যারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়েছে এবং তার হৃদয়ে একটি গমের ওযন পরিমাণ কল্যান (ঈমান) আছে। (সর্বশেষে) জাহান্নাম থেকে তাকে বের করা হবে, যে ব্যাক্তি ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ পড়েছে এবং তার হৃদয়ে অণু পরিমাণ মাত্র কল্যাণ (ঈমান) আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯০৭ | 6907 | ٦۹۰۷

পরিচ্ছদঃ ৩১২১. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ যাকে আমি নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি
৬৯০৭। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর হাত পরিপূর্ণ, রাত দিন খরচ করলেও তাতে ঘাটতি আসে না। তিনি আরো বলেছেনঃ তোমরা লক্ষ্য করেছ কি? আসমান যমীন পয়দা করার পর থেকে তিনি যে কত খরচ করেছেন, এতদসত্ত্বেও তার হাতে যা আছে, তাতে কিঞ্চিতও কমেনি। এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তখন তার আরশ পানির উপর অবস্থান করছিল। তার অপর হাতটিতে রয়েছে পাল্লা, যা কখনও তিনি নিচে নামান আবার কখনও উপরে উঠান।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯০৮ | 6908 | ٦۹۰۸

পরিচ্ছদঃ ৩১২১. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ যাকে আমি নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি
৬৯০৮। মুকাদ্দাম ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা কিয়ামতের দিন পৃথিবীটা তাঁর মুঠোতে নিয়ে নেবেন। আসমানকে তাঁর ডান হাতে জড়িয়ে বলবেন; বাদশাহ একমাত্র আমিই। সাঈদ (রহঃ) মালিক (রহঃ) থেকে এমনই বর্ণনা করেছেন। উমর ইবনু হামযা (রহঃ) সালিম (রহঃ) এর মাধ্যমে ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এরূপ বর্ণনা করেছেন। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা যমীনকে তার মুঠোয় নিয়ে নেবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯০৯ | 6909 | ٦۹۰۹

পরিচ্ছদঃ ৩১২১. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ যাকে আমি নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি
৬৯০৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহ কিয়ামতের দিনে আসমানগুলোকে এক আঙ্গুলের ওপর, যমীনগুলোকে এক আঙ্গুলের ওপর, পর্বতমালাকে এক আঙ্গুলের ওপর, বৃক্ষরাজিকে এক আঙ্গুলের ওপর এবং অবশিষ্ট সৃষ্টিকে এক আঙ্গুলের ওপর তুলে বলবেন, বাদশাহ একমাত্র আমিই। এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে দিলেন। এমনকি তাঁর মাড়ির দাঁত মুবারক পর্যন্ত বের হয়ে উঠল। তারপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ তারা আল্লাহ তা’আলার যথোচিত মর্যাদা উপলব্দি করেনি। ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ বলেনঃ এই বর্ণনায় একটু সংযোজন করেছেন, ফুদায়ল ইবনু আয়ায … আবিদা (রহঃ) সূত্রে আবদুল্লাহ থেকে যে, এ কথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশ্চার্যান্বিত হয়ে তার সমর্থনে হেসে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯১০ | 6910 | ٦۹۱۰

পরিচ্ছদঃ ৩১২১. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ যাকে আমি নিজ হাতে সৃষ্টি করেছি
৬৯১০। উমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আহলে কিতাবদের থেকে জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, হে আবুল কাসিম! (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ তা’আলা আসমানসমূহকে এক আঙ্গুলের ওপর, যমীনগুলোকে এক আঙ্গুলের ওপর, গাছ ও কাদামাটিকে এক আঙ্গুলের ওপর এবং বাকি সৃষ্টিরাজিকে এক আঙ্গুলের ওপর তুলে বলবেন, বাদশাহ একমাত্র আমিই, বাদশাহ একমাত্র আমিই। বর্ণনাকারী বলেনঃ আমি দেখতে পেলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে ফেললেন। এমনকি তার মাড়ির দাঁতগুলো প্রকাশিত হয়ে ওঠলো। এরপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ আর তারা আল্লাহ পাকের মহানত্বের যথোচিত মর্যাদা উপলব্ধি করেনি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯১১ | 6911 | ٦۹۱۱

পরিচ্ছদঃ ৩১২২. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ আল্লাহ্‌ অপেক্ষা বেশি আত্মমর্যাদাসম্পন্ন কেউই নয়
৬৯১১। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) বললেন, আমি আমরে স্ত্রীর সাথে অন্য কোন পুরুষকে যদি দেখি, তাকে তরবারি দ্বারা হত্যা করব। এই উক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছলে তিনি বললেনঃ তোমরা কি সা’দের আত্নমর্যাদাবোধ দেখে আাশ্চার্যান্বিত হচ্ছ? আল্লাহর কসম! আমি তার চেয়েও বেশি আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন। আর আল্লাহ আমার চেয়েও বেশি আত্মমর্যাদাবোধ সম্পন্ন। আল্লাহ আত্নমর্যাদাবোধ সস্পন্ন হওয়ার কারণে প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য (সর্বপ্রকার) অশ্লীলতাকে হারাম করে দিয়েছেন। অক্ষমতা প্রকাশকে আল্লাহর চাইতে বেশি পছন্দ করেন এমন কেউই নেই। আর এই জন্য তিনি ভীতি প্রদর্শনকারী ও সুসংবাদদাতাদেরকে পাঠিয়েছেন। আত্মস্তুতি আল্লাহর চেয়ে বেশি কারো কাছে প্রিয় নয়। তাই তিনি জান্নাতের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯১২ | 6912 | ٦۹۱۲

পরিচ্ছদঃ ৩১২৩. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ বল, সাক্ষ্য প্রদানে সর্বশ্রেষ্ঠ কে? বল, আল্লাহ্‌। এখানে আল্লাহ্‌ তা‘আলা নিজেকে ‘শাইউন’ (বস্তু) বলে আখ্যায়িত করেছেন। আবার নবী (সাঃ) কুরআনকে বস্তু আখ্যায়িত করেছেন। অথচ এটি আল্লাহ্‌র গুণাবলির মধ্যে একটি গুন। মহান আল্লাহ্‌ বলেছেনঃ আল্লাহ্‌র সত্তা ব্যতীত সমস্ত কিছুই ধ্বংসশীল
৬৯১২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … সাহাল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে (সাহাবী) বললেনঃ তোমার কাছে কুরআনের কোন বস্তু আছে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, অমুক সূরা অমুক সূরা। তিনি সূরাগুলোর নাম উল্লেখ করেছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯১৩ | 6913 | ٦۹۱۳

পরিচ্ছদঃ ৩১২৪. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তখন তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল। তিনি আরশে আযীমের প্রতিপালক। আবুল আলীয়া (রহঃ) বলেন, اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ এর মমার্থ হচ্ছে আসমানকে উড্ডীন করেছেন। فَسَوَّاهُنَّ এর মর্মার্থ হচ্ছে, তিনি আসমানরাজিকে সৃষ্টি করেছেন। মুজাহিদ (র) বলেছেন, اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ এর মর্মাথ হল, আরশের উপর অধিষ্ঠিত হলেন। আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, مَجِيد অর্থ সম্মানতি, الوَدُود অর্থ প্রিয়। বলা হয়ে থাকে, حَمِيدٌ مَجِيدٌ মূলত প্রশংসনীয় ও পবিত্র। বস্তুত এটি مَاجِدٍ থেকে فَعِيلٌ এর ওযনে এসেছে। আর مَحْمُودٌ (প্রশংসনীয়) এসেছে حمد থেকে
৬৯১৩। আবদান (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম। এমন সময় তাঁর কাছে বনূ তামীম এর কাওমটি এল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে লক্ষ্য করে বললেনঃ হে বনূ তামীম। তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। প্রতি উত্তরে তারা বলল, আপনি আমাদেরকে শুভ সংবাদ যখন প্রদান করেছেন, তাহলে কিছু দান করুন। এ সময় ইয়ামানবাসী কতিপয় লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সেখানে উপস্থিত হল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উদ্দেশ্যে বললেনঃ হে ইয়ামানবাসী! তোমাদের জন্য সুসংবাদ। বনূ তামীম তা গ্রহন করল না। তারা বলে উঠল, আমরা গ্রহণ করলাম শুভ সংবাদ। যেহেতু আমরা আপনার কাছে এসেছি দ্বীনী জ্ঞান হাসিল করার উদ্দেশ্যে এবং জিজ্ঞাসা করার জন্য এসেছি যে, এ দুনিয়া সৃষ্টির আগে কি ছিল? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তখন ছিলেন, তাঁর আগে আর কিছু ছিল না। তার আরশ তখন পানির ওপর ছিল। এরপর তিনি আসমান সমুহ ও যমীন সৃষ্টি করলেন। এবং লাওহে মাফফুযে সব বস্তু সম্পর্কে লিখে রাখলেন। রাবী বলেন, এরপর আমার কাছে এক ব্যাক্তি এসে বলল, হে ইমরান! তোমার উষ্ট্রী পালিয়ে গিয়েছে, তার খবর নাও। আমি উষ্ট্রীর সন্ধানে চললাম। দেখলাম, উষ্ট্রী মরীচিকার আড়ালে আছে। আমি আল্লাহর কসম করে বলছি! আমার মন চাচ্ছিল উষ্ট্রী চলে যায় যাক তবুও আমি মজলিস ছেড়ে যেন না উঠি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯১৪ | 6914 | ٦۹۱٤

পরিচ্ছদঃ ৩১২৪. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তখন তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল। তিনি আরশে আযীমের প্রতিপালক। আবুল আলীয়া (রহঃ) বলেন, اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ এর মমার্থ হচ্ছে আসমানকে উড্ডীন করেছেন। فَسَوَّاهُنَّ এর মর্মার্থ হচ্ছে, তিনি আসমানরাজিকে সৃষ্টি করেছেন। মুজাহিদ (র) বলেছেন, اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ এর মর্মাথ হল, আরশের উপর অধিষ্ঠিত হলেন। আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, مَجِيد অর্থ সম্মানতি, الوَدُود অর্থ প্রিয়। বলা হয়ে থাকে, حَمِيدٌ مَجِيدٌ মূলত প্রশংসনীয় ও পবিত্র। বস্তুত এটি مَاجِدٍ থেকে فَعِيلٌ এর ওযনে এসেছে। আর مَحْمُودٌ (প্রশংসনীয়) এসেছে حمد থেকে
৬৯১৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহর ডান হাত পরিপূর্ণ, রাত দিনের খরচেও তা কমে না। তোমরা ভেবে দেখেছ কি? আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টিলগ্ন থেকে তিনি কত খরচ করে চলেছেন। তবুও তাঁর ডান হাতের কিছুই কমেনি। তার আরশ পানির ওপর অবস্থান করছে। তাঁর অপর হাতটিতে রয়েছে দেওয়া এবং নেওয়া। তা তিনি উঠান ও নামান।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯১৫ | 6915 | ٦۹۱۵

পরিচ্ছদঃ ৩১২৪. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তখন তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল। তিনি আরশে আযীমের প্রতিপালক। আবুল আলীয়া (রহঃ) বলেন, اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ এর মমার্থ হচ্ছে আসমানকে উড্ডীন করেছেন। فَسَوَّاهُنَّ এর মর্মার্থ হচ্ছে, তিনি আসমানরাজিকে সৃষ্টি করেছেন। মুজাহিদ (র) বলেছেন, اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ এর মর্মাথ হল, আরশের উপর অধিষ্ঠিত হলেন। আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, مَجِيد অর্থ সম্মানতি, الوَدُود অর্থ প্রিয়। বলা হয়ে থাকে, حَمِيدٌ مَجِيدٌ মূলত প্রশংসনীয় ও পবিত্র। বস্তুত এটি مَاجِدٍ থেকে فَعِيلٌ এর ওযনে এসেছে। আর مَحْمُودٌ (প্রশংসনীয়) এসেছে حمد থেকে
৬৯১৫। আহমদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যায়িদ ইবনু হারিসা (রাঃ) অভিযোগ নিয়ে আসলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলতে লাগলেন, তুমি আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমার স্ত্রীকে তোমার কাছে রেখে দাও। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যদি কোন জিনিস গোপনই করতেন, তাহলে এই আয়াতটি অবশ্যই গোপন করতেন। বর্ণনাকারী বলেন, [যায়নাব (রাঃ)] অপরাপর নাবী সহধর্মিণীর কাছে এই বলে গৌরব করতেন যে, তোমাদেরকে বিবাহ দিয়েছে তোমাদের পরিবার-পরিজন আর আমাকে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা সাত আসমানের ওপরে বিয়ে দিয়েছেন। বর্ণনাকারী সাবিত (রাঃ) বলেছেন, আল্লাহর বানীঃ (হে নাবী) আপনি আপনার অন্তরে যা গোপন করতেন আল্লাহ তা প্রকাশ করে দিচ্ছেন, আপনি লোকদের ভয় করছিলেন। এই আয়াতটি যায়নাব ও যায়িদ ইবনু হারিসা (রাঃ) সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯১৬ | 6916 | ٦۹۱٦

পরিচ্ছদঃ ৩১২৪. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তখন তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল। তিনি আরশে আযীমের প্রতিপালক। আবুল আলীয়া (রহঃ) বলেন, اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ এর মমার্থ হচ্ছে আসমানকে উড্ডীন করেছেন। فَسَوَّاهُنَّ এর মর্মার্থ হচ্ছে, তিনি আসমানরাজিকে সৃষ্টি করেছেন। মুজাহিদ (র) বলেছেন, اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ এর মর্মাথ হল, আরশের উপর অধিষ্ঠিত হলেন। আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, مَجِيد অর্থ সম্মানতি, الوَدُود অর্থ প্রিয়। বলা হয়ে থাকে, حَمِيدٌ مَجِيدٌ মূলত প্রশংসনীয় ও পবিত্র। বস্তুত এটি مَاجِدٍ থেকে فَعِيلٌ এর ওযনে এসেছে। আর مَحْمُودٌ (প্রশংসনীয়) এসেছে حمد থেকে
৬৯১৬। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, যায়নাব বিনত জাহাশ (রাঃ) কে কেন্দ্র করে পর্দার আয়াত নাযিল হয়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়নাবের সাথে তার বিবাহ উপলক্ষে ওয়ালিমা হিসাবে সেদিন রুটি ও গোশত আহার করিয়ে ছিলেন। সহধর্মিণীদের উপর যায়নাব (রাঃ) গৌরব করে বলতেন, আল্লাহ তো আসমানে আমার বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯১৭ | 6917 | ٦۹۱۷

পরিচ্ছদঃ ৩১২৪. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তখন তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল। তিনি আরশে আযীমের প্রতিপালক। আবুল আলীয়া (রহঃ) বলেন, اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ এর মমার্থ হচ্ছে আসমানকে উড্ডীন করেছেন। فَسَوَّاهُنَّ এর মর্মার্থ হচ্ছে, তিনি আসমানরাজিকে সৃষ্টি করেছেন। মুজাহিদ (র) বলেছেন, اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ এর মর্মাথ হল, আরশের উপর অধিষ্ঠিত হলেন। আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, مَجِيد অর্থ সম্মানতি, الوَدُود অর্থ প্রিয়। বলা হয়ে থাকে, حَمِيدٌ مَجِيدٌ মূলত প্রশংসনীয় ও পবিত্র। বস্তুত এটি مَاجِدٍ থেকে فَعِيلٌ এর ওযনে এসেছে। আর مَحْمُودٌ (প্রশংসনীয়) এসেছে حمد থেকে
৬৯১৭। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আল্লাহ যখন সকল মাখলুক পয়দা করার কাজ সম্পন্ন করলেন, তখন তার আরশের উপর তারই কাছে লিপিবদ্ধ করে রাখলেন “অবশ্যই আমার রহমত আমার গযব থেকে অগ্রগামী।”

হাদিস নম্বরঃ ৬৯১৮ | 6918 | ٦۹۱۸

পরিচ্ছদঃ ৩১২৪. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তখন তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল। তিনি আরশে আযীমের প্রতিপালক। আবুল আলীয়া (রহঃ) বলেন, اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ এর মমার্থ হচ্ছে আসমানকে উড্ডীন করেছেন। فَسَوَّاهُنَّ এর মর্মার্থ হচ্ছে, তিনি আসমানরাজিকে সৃষ্টি করেছেন। মুজাহিদ (র) বলেছেন, اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ এর মর্মাথ হল, আরশের উপর অধিষ্ঠিত হলেন। আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, مَجِيد অর্থ সম্মানতি, الوَدُود অর্থ প্রিয়। বলা হয়ে থাকে, حَمِيدٌ مَجِيدٌ মূলত প্রশংসনীয় ও পবিত্র। বস্তুত এটি مَاجِدٍ থেকে فَعِيلٌ এর ওযনে এসেছে। আর مَحْمُودٌ (প্রশংসনীয়) এসেছে حمد থেকে
৬৯১৮। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের প্রতি ঈমান আনে, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করে, রমযান মাসের রোযা পালন করে, আল্লাহ তার ব্যাপারে এ দায়িত্ব নিয়েছেন যে, তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সে আল্লাহর রাস্তায় হিজরত করুক কিংবা তার জন্মভূমিতে অবস্থান করুক। সাহাবীগণ বলে উঠলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! এই বিষয়টি আমরা লোকদের জানিয়ে দেব না? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ অবশ্যই, জান্নাতে একশ’টি স্তর রয়েছে। এগুলো আল্লাহ তাঁর রাস্তায় জিহাদকারীদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন। প্রতি দুটি স্তরের মাঝখানে আসমান ও যমীনের দূরত্ব বিদ্যমান রয়েছে। কাজেই যখন তোমরা আল্লাহর কাছে চাইবে, তখন ফিরদাওস জান্নাত চাইবে। কেননা সেটি হচ্ছে সর্বোত্তম ও সর্বোচ্চ জান্নাত। আর দয়ালু (আল্লাহর) আরশটি এরই উপর অবস্থিত। এই ফিরদাওস থেকেই জান্নাতের ঝর্নাগুলো প্রবাহিত হয়ে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯১৯ | 6919 | ٦۹۱۹

পরিচ্ছদঃ ৩১২৪. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তখন তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল। তিনি আরশে আযীমের প্রতিপালক। আবুল আলীয়া (রহঃ) বলেন, اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ এর মমার্থ হচ্ছে আসমানকে উড্ডীন করেছেন। فَسَوَّاهُنَّ এর মর্মার্থ হচ্ছে, তিনি আসমানরাজিকে সৃষ্টি করেছেন। মুজাহিদ (র) বলেছেন, اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ এর মর্মাথ হল, আরশের উপর অধিষ্ঠিত হলেন। আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, مَجِيد অর্থ সম্মানতি, الوَدُود অর্থ প্রিয়। বলা হয়ে থাকে, حَمِيدٌ مَجِيدٌ মূলত প্রশংসনীয় ও পবিত্র। বস্তুত এটি مَاجِدٍ থেকে فَعِيلٌ এর ওযনে এসেছে। আর مَحْمُودٌ (প্রশংসনীয়) এসেছে حمد থেকে
৬৯১৯। ইয়াহইয়া ইবনু জাফর (রহঃ) … আবূ যর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মসজিদে নববীতে প্রবেশ করলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন সেখানে বসা ছিলেন। যখন সূর্য অস্ত গেল, তিনি বললেনঃ হে আবূ যর! তোমার কি জানা আছে, এই সূর্য কোথায় যাচ্ছে? আবূ যর (রাঃ) বলেন, আমি বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই সর্বাপেক্ষা বেশি জানেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সূর্য যাচ্ছে এবং অনুমতি চাচ্ছে সিজাদার জন্য। তারপর সিজদার জন্য তাকে অনুমতি দেয়া হয়। একদিন তাকে হুকুম দেয়া হবে, যেখান থেকে এসেছ সেখানে ফিরে যাও। তখন সে তার অস্তের স্থল থেকে উদিত হবে। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিলাওয়াত করলেন, “এটিই তার অবস্থান স্থল” আবদুল্লাহ (রাঃ) এর কিরআত অনুযাযী।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯২০ | 6920 | ٦۹۲۰

পরিচ্ছদঃ ৩১২৪. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তখন তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল। তিনি আরশে আযীমের প্রতিপালক। আবুল আলীয়া (রহঃ) বলেন, اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ এর মমার্থ হচ্ছে আসমানকে উড্ডীন করেছেন। فَسَوَّاهُنَّ এর মর্মার্থ হচ্ছে, তিনি আসমানরাজিকে সৃষ্টি করেছেন। মুজাহিদ (র) বলেছেন, اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ এর মর্মাথ হল, আরশের উপর অধিষ্ঠিত হলেন। আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, مَجِيد অর্থ সম্মানতি, الوَدُود অর্থ প্রিয়। বলা হয়ে থাকে, حَمِيدٌ مَجِيدٌ মূলত প্রশংসনীয় ও পবিত্র। বস্তুত এটি مَاجِدٍ থেকে فَعِيلٌ এর ওযনে এসেছে। আর مَحْمُودٌ (প্রশংসনীয়) এসেছে حمد থেকে
৬৯২০। মূসা (রহঃ) … যায়িদ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ বকর (রাঃ) আমার কাছে লোক প্রেরণ করলেন। তাই আমি কুরআনের বিভিন্ন অংশ অনুসন্ধানে নেমে পড়লাম। পরিশেষে সূরা তাওবার শেষাংশ একমাত্র আবু খুযায়মা আনসারী (রাঃ) ব্যতীত আর কারো কাছে পেলাম না। (আর তা হচ্ছে) لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ থেকে সুরা বারাআতের শেষ পর্যন্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯২১ | 6921 | ٦۹۲۱

পরিচ্ছদঃ ৩১২৪. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তখন তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল। তিনি আরশে আযীমের প্রতিপালক। আবুল আলীয়া (রহঃ) বলেন, اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ এর মমার্থ হচ্ছে আসমানকে উড্ডীন করেছেন। فَسَوَّاهُنَّ এর মর্মার্থ হচ্ছে, তিনি আসমানরাজিকে সৃষ্টি করেছেন। মুজাহিদ (র) বলেছেন, اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ এর মর্মাথ হল, আরশের উপর অধিষ্ঠিত হলেন। আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, مَجِيد অর্থ সম্মানতি, الوَدُود অর্থ প্রিয়। বলা হয়ে থাকে, حَمِيدٌ مَجِيدٌ মূলত প্রশংসনীয় ও পবিত্র। বস্তুত এটি مَاجِدٍ থেকে فَعِيلٌ এর ওযনে এসেছে। আর مَحْمُودٌ (প্রশংসনীয়) এসেছে حمد থেকে
৬৯২১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ইউনূস (রহঃ) থেকে হাদীসটি অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তিনিও আবূ খুযায়মা আনসারীর কাছে এ আয়াত পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯২২ | 6922 | ٦۹۲۲

পরিচ্ছদঃ ৩১২৪. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তখন তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল। তিনি আরশে আযীমের প্রতিপালক। আবুল আলীয়া (রহঃ) বলেন, اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ এর মমার্থ হচ্ছে আসমানকে উড্ডীন করেছেন। فَسَوَّاهُنَّ এর মর্মার্থ হচ্ছে, তিনি আসমানরাজিকে সৃষ্টি করেছেন। মুজাহিদ (র) বলেছেন, اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ এর মর্মাথ হল, আরশের উপর অধিষ্ঠিত হলেন। আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, مَجِيد অর্থ সম্মানতি, الوَدُود অর্থ প্রিয়। বলা হয়ে থাকে, حَمِيدٌ مَجِيدٌ মূলত প্রশংসনীয় ও পবিত্র। বস্তুত এটি مَاجِدٍ থেকে فَعِيلٌ এর ওযনে এসেছে। আর مَحْمُودٌ (প্রশংসনীয়) এসেছে حمد থেকে
৬৯২২। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, দুঃখ যাতনার সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দোয়া করতেন এই বলেঃ আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই। যিনি মহাজ্ঞানী ও ধৈর্যশীল। তিনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই, তিনি আরশ আযীমের প্রতিপালক। তিনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই, তিনি আসমান-যমীনের প্রতিপালক এবং সম্মানিত আরশের অধিপতি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯২৩ | 6923 | ٦۹۲۳

পরিচ্ছদঃ ৩১২৪. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তখন তাঁর আরশ পানির ওপর ছিল। তিনি আরশে আযীমের প্রতিপালক। আবুল আলীয়া (রহঃ) বলেন, اسْتَوَى إِلَى السَّمَاءِ এর মমার্থ হচ্ছে আসমানকে উড্ডীন করেছেন। فَسَوَّاهُنَّ এর মর্মার্থ হচ্ছে, তিনি আসমানরাজিকে সৃষ্টি করেছেন। মুজাহিদ (র) বলেছেন, اسْتَوَى عَلَى الْعَرْشِ এর মর্মাথ হল, আরশের উপর অধিষ্ঠিত হলেন। আবদুল্লাহ্ ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, مَجِيد অর্থ সম্মানতি, الوَدُود অর্থ প্রিয়। বলা হয়ে থাকে, حَمِيدٌ مَجِيدٌ মূলত প্রশংসনীয় ও পবিত্র। বস্তুত এটি مَاجِدٍ থেকে فَعِيلٌ এর ওযনে এসেছে। আর مَحْمُودٌ (প্রশংসনীয়) এসেছে حمد থেকে
৬৯২৩। মুহাস্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন সব মানুষ বেহুশ হয়ে পড়বে। (যখন আমার হুশ ফিরে আসবে) তখন আমি মূসা (আলাইহিস সালাম) কে আরশের একটি পায়া ধরে দণ্ডায়মান দেখতে পাব। বর্ণনাকারী মাজিশুন আবদুল্লাহ ইবনু ফাজল ও আবূ সালামার মাধ্যমে আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আমি সবচাইতে আগে পুনরুত্থিত হব। তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) কে দেখব, তিনি আরশ ধরে আছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯২৪ | 6924 | ٦۹۲٤

পরিচ্ছদঃ ৩১২৫. আল্লাহ্‌র বাণীঃ ফেরেশতা এবং রূহ্ আল্লাহ্‌র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয়। (৭০ঃ ৪)। এবং আল্লাহ্‌র বাণীঃ তাঁরই দিকে পবিত্র বাণীসমূহ আরোহণ করে (৩৫ঃ ১০)। আবূ জামরা (রহঃ) ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, নবী (সাঃ) এর নবুয়ত প্রাপ্তির খবর শুনে আবূ যর (রাঃ) তাঁর ভাইকে বললেন, আমার জন্য ঐ ব্যক্তির অবস্থাটি অবহিত হয়ে নাও, যিনি ধারণা করেছেন যে, আসমান থেকে তাঁর কাছে খবর আসে। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, নেক কাজ পবিত্র কথাকে ঊর্ধ্বগামী করে। ذِي الْمَعَارِجِ এর ব্যাপারে বলা হয়- ঐ সকল ফেরেশতা যারা আল্লাহ্‌র দিকে উর্ধ্বগামী হয়
৬৯২৪। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মাঝে রাত ও দিনে ফেরেশতাগণ পালাক্রমে আগমন করেন। আর তারা একত্রিত হন আসর ও ফজরের সালাতে। তারপর যারা তোমাদের মাঝে রাত্রি যাপন করেছেন তারা উঠে যান। তখন তাদের প্রতিপালক তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, অথচ তিনি তোমাদের ব্যাপারে সবচাইতে অধিক জ্ঞাত; কেমন অবস্থায় আমার বান্দাদেরকে তোমরা ছেড়ে এসেছ? তারা তখন উত্তর দেবে, আমরা ওদেরকে সালাত (নামায/নামাজ) রত অবস্থায় রেখে এসেছি প্রথম গিয়েও আমরা ওদেরকে সালাতে পেয়েছিলাম।

খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি তার হালাল ও পবিত্র উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণও দান করে, আল্লাহ তা আলা তা তাঁর ডান হাত দ্বারা কবুল করেন। আর পবিত্র ও হালাল জিনিস ছাড়া আল্লাহর দিকে কোন কিছু আগ্রগমন করতে পারে না। তারপর এটি তার মালিকের জন্য লালন-পালন ও দেখাশোনা করতে থাকে, তোমরা যেমন ঘোড়ার বাচ্চাকে লালন-পালন করতে থাক। পরিশেষে তা পাহাড়ের ন্যায় বিরাট আকার ধারণ করে। ওয়ারকা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ তা’আলার দিকে পবিত্র জিনিস ছাড়া কোন কিছুই গমন করতে পারে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯২৫ | 6925 | ٦۹۲۵

পরিচ্ছদঃ ৩১২৫. আল্লাহ্‌র বাণীঃ ফেরেশতা এবং রূহ্ আল্লাহ্‌র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয়। (৭০ঃ ৪)। এবং আল্লাহ্‌র বাণীঃ তাঁরই দিকে পবিত্র বাণীসমূহ আরোহণ করে (৩৫ঃ ১০)। আবূ জামরা (রহঃ) ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, নবী (সাঃ) এর নবুয়ত প্রাপ্তির খবর শুনে আবূ যর (রাঃ) তাঁর ভাইকে বললেন, আমার জন্য ঐ ব্যক্তির অবস্থাটি অবহিত হয়ে নাও, যিনি ধারণা করেছেন যে, আসমান থেকে তাঁর কাছে খবর আসে। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, নেক কাজ পবিত্র কথাকে ঊর্ধ্বগামী করে। ذِي الْمَعَارِجِ এর ব্যাপারে বলা হয়- ঐ সকল ফেরেশতা যারা আল্লাহ্‌র দিকে উর্ধ্বগামী হয়
৬৯২৫। আবদুল আলা ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, দুঃখ-যাতনার সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই বলে দোয়া করতেনঃ মহান ও ধৈর্যশীল আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, মহান আরশের প্রতিপালক আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই, আসমানসমূহের মালিক এবং মহান আরশের অধিপতি আল্লাহ ছাড়া কোন মাবুদ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯২৬ | 6926 | ٦۹۲٦

পরিচ্ছদঃ ৩১২৫. আল্লাহ্‌র বাণীঃ ফেরেশতা এবং রূহ্ আল্লাহ্‌র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয়। (৭০ঃ ৪)। এবং আল্লাহ্‌র বাণীঃ তাঁরই দিকে পবিত্র বাণীসমূহ আরোহণ করে (৩৫ঃ ১০)। আবূ জামরা (রহঃ) ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, নবী (সাঃ) এর নবুয়ত প্রাপ্তির খবর শুনে আবূ যর (রাঃ) তাঁর ভাইকে বললেন, আমার জন্য ঐ ব্যক্তির অবস্থাটি অবহিত হয়ে নাও, যিনি ধারণা করেছেন যে, আসমান থেকে তাঁর কাছে খবর আসে। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, নেক কাজ পবিত্র কথাকে ঊর্ধ্বগামী করে। ذِي الْمَعَارِجِ এর ব্যাপারে বলা হয়- ঐ সকল ফেরেশতা যারা আল্লাহ্‌র দিকে উর্ধ্বগামী হয়
৬৯২৬। কবীসা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেছেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমীপে সামান্য কিছু স্বর্ণ পাঠানো হলে তিনি চারজনকে বণ্টন করে দেন। ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আলী (রাঃ) ইয়ামানে অবস্থানকালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কিছু মাটি মিশ্রিত সোনা পাঠিয়েছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ মুজাশি গোত্রের আকরা ইবনু হাবিস হানযালী, উয়য়না ইবনু হিসন ইবনু বদর ফাযারী, আলকামা ইবনু উলাছা আমিরী ও বনূ কিলাবের একজন এবং বনূ নাবহান গোত্রের যায়িদ আল খায়ল তাঈর মধ্যে তা বন্টন করে দেন। এই কারণে কুরাইশ ও আনসারীগণ অসন্তুষ্ট হয়ে বলল, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাজদবাসী সরদারদেরকে দিচ্ছেন। আর আমাদেরকে বিমুখ করছেন। এই প্রেক্ষিতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি তাদের হৃদয় আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছি। তখন কোটরাগত চোখ, উচু কপাল, অধিক দাঁড়ি, উচ্চ চোয়াল ও মুণ্ডানো মাথা বিশিষ্ট এক ব্যাক্তি সামনে এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহকে ভয় কর।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমিই যদি তার নাফরমানী করি, তবে তাঁর অনুগত হবে আর কে? আর এজন্যই তিনি আমাকে লোকের উপর আমানতদার নির্ধারণ করেছেন। অথচ তোমরা আমাকে আমানতদার মনে করছ না। এমন সময় দলের মধ্য থেকে এক লোক, সম্ভবত খালিদ ইবনু ওয়ালিদ (রাঃ), সেই ব্যাক্তিটিকে হত্যা করার জন্য নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে অনুমতি চাইলে তিনি তাকে নিষেধ করলেন। সে লোকটি চলে যাওয়ার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ ব্যাক্তির বংশ থেকে এমন কিছু লোক আসবে, যারা কুরআন পড়বে, তবে কুরআন তাদের কন্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা ইসলাম থেকে এমনভাবে বের হয়ে যাবে, যেভাবে শিকারের দেহ ভেদ করে তীর বের হয়ে যায়। মূর্তীপূজারীদেরকে তারা ছেড়ে দিয়ে মুসলমানদেরকে হত্যা করবে। যদি আমি তাদেরকে পাই, তাহলে আদ জাতির হত্যার মত তাদেরকে হত্যা করব।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯২৭ | 6927 | ٦۹۲۷

পরিচ্ছদঃ ৩১২৫. আল্লাহ্‌র বাণীঃ ফেরেশতা এবং রূহ্ আল্লাহ্‌র দিকে ঊর্ধ্বগামী হয়। (৭০ঃ ৪)। এবং আল্লাহ্‌র বাণীঃ তাঁরই দিকে পবিত্র বাণীসমূহ আরোহণ করে (৩৫ঃ ১০)। আবূ জামরা (রহঃ) ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন, নবী (সাঃ) এর নবুয়ত প্রাপ্তির খবর শুনে আবূ যর (রাঃ) তাঁর ভাইকে বললেন, আমার জন্য ঐ ব্যক্তির অবস্থাটি অবহিত হয়ে নাও, যিনি ধারণা করেছেন যে, আসমান থেকে তাঁর কাছে খবর আসে। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, নেক কাজ পবিত্র কথাকে ঊর্ধ্বগামী করে। ذِي الْمَعَارِجِ এর ব্যাপারে বলা হয়- ঐ সকল ফেরেশতা যারা আল্লাহ্‌র দিকে উর্ধ্বগামী হয়
৬৯২৭। আইয়াশ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … আবূ যর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিম্নোক্ত আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি, “আর সূর্য ভ্রমণ করে তার নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে।” তিনি বলেছেনঃ সুর্যের নির্দিষ্ট গন্তব্য হল আরশের নিচে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯২৮ | 6928 | ٦۹۲۸

পরিচ্ছদঃ ৩১২৬. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সেদিন কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে
৬৯২৮। আমর ইবনু আওন (রহঃ) … জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বসা ছিলাম। তিনি পূর্ণিমার রাতে চাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ তোমরা অবশ্যই অচিরেই তোমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাবে যেমনি তোমরা এই চাঁদটিকে দেখতে পাচ্ছ। অথচ তোমরা এটি দেখতে কোন বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছ না। অতএব, যদি তোমরা সক্ষম হও তবে সুর্য উদয়ের পূর্বের সালাত (নামায/নামাজ) এবং সূর্যাস্তের পূর্বের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে যেন পরাজিত না হও। তাহলে তাই কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯২৯ | 6929 | ٦۹۲۹

পরিচ্ছদঃ ৩১২৬. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সেদিন কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে
৬৯২৯। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অবশ্যই তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে প্রকাশ্যভাবে দেখতে পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৩০ | 6930 | ٦۹۳۰

পরিচ্ছদঃ ৩১২৬. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সেদিন কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে
৬৯৩০। আবদা ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা পূর্নিমার রাতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমেদের কাছে বের হয়ে আসলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ অবশ্যই তোমরা অচিরেই তোমাদের প্রতিপালককে কিয়ামতের দিন দেখতে পাবে যেমন এই চাঁদটিকে তোমরা দেখছ এবং একে দেখতে তোমরা বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছ না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৩১ | 6931 | ٦۹۳۱

পরিচ্ছদঃ ৩১২৬. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সেদিন কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে
৬৯৩১। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকেরা (সাহাবাগণ) জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামতের দিন আমরা কি আমাদের প্রতিপালককে দেখতে পাব? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা কি পূর্ণিমার রাতে চাঁদ দেখতে বাধাপ্রাপ্ত হও? সবাই বলে উঠলেন, না ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি আবার বললেনঃ মেঘমুক্ত আকাশে সূর্য দেখতে কি তোমরা বাধা-পাপ্ত হও? সবাই বলে উঠলেন, না, ইয়া রাসুলাল্লাহ। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা অনুরূপ আল্লাহকে দেখতে পাবে।

কিয়ামতের দিন আল্লাহ লোকদেরকে সমবেত করে বলবেন, যে যার ইবাদত করছিলে সে যেন তার অনুসরণ করে। তারপর যারা সূর্যের ইবাদত করত, সূর্যের অনুসরণ করবে। যারা চাঁদের ইবাদত করত, তারা চাঁদের অনুসরণ করবে। আর যারা তাগুদের পূজা করত, তারা তাদের অনুসরণ করবে। অবশিষ্ট থাকবে এই উম্মাত। এদের মধ্যে এদের সুপারিশকারীরাও থাকবে অথবা রাবী বলেছেন, মুশরিকরাও থাকবে। এখানে বর্ণনাকারী ইবরাহীম (রহঃ) সন্দেহ পোষণ করেছেন।

তরপর মহান আল্লাহ তাদের কাছে এসে বলবেনঃ আমিই তোমাদের রব। তখন তারা বলবে যতক্ষন আমাদের রব আমাদের কাছে না আসবেন, ততক্ষন আমরা এ স্থানেই অবস্থান করব। আমাদের রব যখন আসবেন, তখন আমরা তাকে চিনতে পারব। তারপর আল্লাহ এমন এক আকৃতিতে তাদের কাছে আসবেন, যে সুরতে তারা তাঁকে চিনবে। তখন তিনি বলবেন, তোমাদের রব আমিই। তারাও বলে উঠবে হ্যাঁ, আপনই আমাদের রব। তারপর তারা তাঁর অনুসরণ করবে।

এরপর দোযখের উপর পুল কায়েম করা হবে। যারা পুল অতিক্রম করবে, আমি এবং আমার উম্মাত তাদের মধ্যে প্রথম থাকব। সেদিন একমাত্র রাসুলগন ছাড়া আর কেউই কথা বলতে পারবে না। আর রাসুলগণেরও আবেদন হবে শুধু আল্লাহুম্মা সাল্লিম, সাল্লিম (আয় আল্লাহ! নিরাপদে রাখুন, নিরাপদে রাখুন) এবং জাহান্নামে সাদান এর কাটার মত অকড়া থাকবে। তোমরা দেখেছ কি সাদান এর কাটা? সাহাবাগণ বললেন, জী হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ জাহান্নামের যে কাটাগুলো এ সাদান এর কাঁটার মত। হ্যাঁ, তরে সেগুলো যে কত বড় হবে তা একমাত্র আল্লাহই জানেন। ওসব কাটা মানুষকে তাদের কর্য অনুপাতে বিদ্ধ করবে।

কতিপয় মানুষ থাকবে ঈমানদার, তারা তাদের আমলের কারণে নিরাপদ থাকবে। আর কেউ কেউ তার আমলের কারণে ধংস হবে। কাউকে নিক্ষেপ করা হবে আর কাউকে প্রতিদান দেওয়া হবে। কিংবা অনুরূপ কিছু রাবী বলেছেনঃ তারপর (মহান আল্লাহ) প্রকাশমান হবেন। তিনি বান্দাদের বিচারকার্য সমাপন করে যখন আপন রহমতে কিছু সংখ্যক দোযখবাসীকে বের করতে চইবেন, তখন তিনি তাদের মধ্যকার শিরক-মুক্তদেরকে দোযখ থেকে বের করে দেয়ার জন্য ফেরেশতাদেরকে নির্দেশ দিবেন। তারাই হচ্ছে ওসব বান্দা যাদের উপর আল্লাহ রহমত করবেন, যারা সাক্ষ্য দিয়েছে যে, আল্লাহ ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। সিজদার চিহ্ন দ্বারা তাদের ফেরেশতাগণ চিনতে পারবেন।

সিজদার চিহ্ন ছাড়া সেসব আদম সন্তানের সারা দেহ জাহান্নামের আগুন ভষ্মীভূত করে দেবে। সিজদার চিহ্নসমূহ জ্বালিয়ে দেওয়া আল্লাহ জাহান্নামের উপর হারাম করে দিয়েছেন। অতঃপর তাদেরকে আগুনে বিদগ্ধ অবস্থায় জাহান্নাম থেকে বের করা হবে। তাদের ওপর ঢালা হবে সঞ্জীবনীর পানি। এর ফলে নিম্নদেশ থেকে তারা এমনভাবে সজীব হয়ে ওঠবে, প্লাবনে ভাসমান বীজ মাটি থেকে যেভাবে গজিয়ে ওঠে। এরপর আল্লাহ তাআলা বান্দাদের বিচার ফায়সালা সমাপন করবেন।

এদের মধ্য থেকে একজন অবশ্যই রয়ে যাবে, যে জাহান্নামের দিকে মুখ করে থাকবে। জাহান্নামীদের মধ্যে এই হচ্ছে সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশকারী। তখন সে বলবে, হে আমার রব! আমার, চেহারাটা জাহান্নাম থেকে ফিরিয়ে দাও। কেননা, জাহান্নামের (দুর্গন্ধময়) হাওয়া আমাকে অস্থির করে তুলছে এবং এর শিখা আমাকে জ্বালাচ্ছে। তখন সে আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী তার কাছে প্রার্থনা করবে। তারপর আল্লাহ তাআলা বলবেন, তোমার প্রার্থনার জিনিস যদি তোমাকে প্রদান করা হয়, তবে অন্য কিছু চাইবে না তো? তখন সে বলবে, না, তোমার ইজ্জতের কসম করে বলছি, তা ছাড়া আমি আর কিছু চাইব না। তখন সে আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী তাকে বহু অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি দেবে। ফলে আল্লাহ তার চেহারা জাহান্নাম থেকে ফিরিয়ে দিবেন।

যখন সে জান্নাতের দিকে মুখ ফিরাবে এবং জান্নাতকে দেখবে, সে আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী যতক্ষন চুপ থাকার চুপ থেকে বলবে, হে আমার রব! আমাকে জান্নাতের দার পর্যন্ত এগিয়ে দাও। আল্লাহ তখন তাকে বলবেন, তুমি কি বহু প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার দাওনি যে তোমাকে যা দেওয়া হবে, তা ছাড়া আর কিছু তুমি কখনো চাইবে না। সর্বনাশ তোমার, হে আদম সন্তান! কতই না প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী তুমি। তখন সে বলবে, হে আমার রব! আল্লাহ তখন তাকে বলবেন, আচ্ছা, এটি যদি তোমাকে দেওয়া হয়, আর কিছু তো চাইবে না? সে বলবে, তোমার ইজ্জতের কসম! সেটি ছাড়া আমি আর কিছুই চাইব না। তারপর আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার দেবে আর আল্লাহ তাকে জান্নাতের দরজা পঁর্যন্ত এগিয়ে নেবেন।

যখন সে জান্নাতের দরজার কাছে দাঁড়াবে, তখন তার জন্য জান্নাত উন্মুক্ত হয়ে যাবে, তখন সে এর মধ্যকার আরাম আয়েশ-ও ভোগ বিলাসের প্রাচুর্য দেখতে পাবে। তখন সে আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী নীরব থেকে, পরে বলবে, হে আমার রব! আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিন। আল্লাহ বলবেনঃ তুমি কি আমাকে এই প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার দাওনি যে, তোমাকে যা দেওয়া হবে, তা ছাড়া আর কিছু প্রার্থনা করবে না? সর্বনাশ তোমার! হে বনী আদম! কতই না প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী তুমি। তখন সে বলবে, হে আমার রব! আমি তোমার সৃষ্টিরাজির মধ্যে নিকৃষ্টতর হতে চাই না। তখন সে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে থাকবে। অবশেষে আল্লাহ এতে হেসে দিবেন।

আল্লাহ তার অবস্থার প্রেক্ষিতে হেসে তাকে নির্দেশ দিবেন, তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর। সে জান্নাতে প্রবেশ করলে আল্লাহ তাকে সম্বোধন করে বলবেন এবার তুমি চাও। সে তখন রবের কাছে যাঞ্চা করবে এবং আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করবে। পরিশেষে আল্লাহ স্বয়ং তাকে বরণ করিয়ে দিয়ে বলবেন, এটা, ওটা চাও। এতে তার আরয-আকাঙ্ক্ষা সমাপ্ত হলে আল্লাহ বললেনঃ তোমাকে ওগুলো দেয়া হল, সাথে সাথে সে পরিমাণ আরো দেয়া হল। আতা ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) বলেনঃ আবূ হুরায়রা (রাঃ) যখন হাদীসটির বর্ণনা দিচ্ছিলেন, তখন আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ)ও তার সাথে ছিলেন। তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর এই বর্ণিত হাদীসের কোথাও প্রতিবাদ করলেন না।

বর্ণনার শেষাংশে এসে আবূ হুরায়রা (রাঃ) যখন বর্ণনা করলেন, আল্লাহ তা’আলা তাকে বললেনঃ ওসব তোমাকে দেওয়া হলো, আরো তার সমপরিমাণ তার সাথে দেওয়া হল তখন আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) প্রতিবাদ করে বললেনঃ হে আবূ হুরায়রা (রাঃ), রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো বলেছেনঃ তার সাথে আরো দশগুন। তখন আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ আমি সংরক্ষণ করেছি এভাবে-ওসব তোমাকে দেওয়া হল, আর এর সাথে আরো এক গুণ দেওয়া হল। আবূ সাঈদ (রাঃ) বললেনঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছ থেকে এভাবে সংরক্ষণ করেছি- ও সবই তোমাকে দেওয়া হল এর সাথে তোমাকে দেওয়া হল আরো দশ গুণ। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ এই হচ্ছে জান্নাতে প্রবেশকারীদের মধ্যে সর্বশেষ ব্যাক্তি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৩২ | 6932 | ٦۹۳۲

পরিচ্ছদঃ ৩১২৬. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সেদিন কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে
৬৯৩২। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা কিয়ামতের দিন আমাদের প্রতিপালকের দর্শন লাভ করব কি? তিনি বললেনঃ মেঘমুক্ত আকাশে তোমরা সুর্য দেখতে কোন বাধা প্রাপ্ত হও কি? আমরা বললাম, না। তিনি বললেনঃ সেদিন তোমরাও তোমাদের প্রতিপালককে দেখতে বাধাপ্রাপ্ত হবে না। এতটুকু ব্যতীত যতটুকু সূর্য দেখার সময় পেয়ে থাক। সেদিন একজন ঘোষনাকারী ঘোষণা করবেন যারা যে জিনিসের ইবাদত করতে, তারা সে জিনিসের কাছে গমন কর। এরপর যারা ক্রুশধারী ছিল তারা যাবে তাদের ক্রুশের কাছে। মূর্তিপূজারীরা যাবে তাদের মূর্তির সাথে। সকলেই তাদের উপাস্যের সাথে যাবে। অবশ্যই থাকবে একমাত্র আল্লাহর ইবাদতকারীরা নেককার ও গুনাহগার সবাই। এবং আহলে কিতাবের কিছু সংখ্যক লোকও থাকবে।

অতঃপর জাহান্নামকে আনা হবে। সেটি তখন থাকবে মরীচিকার মত। ইহুদীদেরকে সন্মোধন করে জিজ্ঞাসা করা হবে, তোমরা কিসের ইবাদত করতে? তারা উত্তর করবে, আমরা আল্লাহর পুত্র উযায়র (আলাইহিস সালাম) এর ইবাদত করতাম। তখন তাদেরকে বলা হবে, তোমরা মিথ্যা বলছ। কারণ আল্লাহর কোন স্ত্রীও নেই এবং নেই তার কোন সন্তান। এখন তোমরা কি চাও? তারা বলবে, আমরা চাই, আমাদেরকে পানি পান করান। তখন তাদেরকে বলা হবে, তোমরা পানি পান কর। এরপর তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হতে থাকবে।

তারপর নাসারাদেরকে বলা হবে, তোমরা কিসের ইবাদত করতে? তারা বলে উঠরে, আমরা আল্লাহর পুত্র মসীহের ইবাদত করতাম। তখন তাদেরকে বলা হবে, তোমরা মিথ্যা বলছ। আল্লাহর কোন স্ত্রীও ছিল না, সন্তানও ছিল না। এখন তোমরা কি চাও? তারা বলবে, আমাদের ইচ্ছা আপনি আমাদেরকে পানি পান করতে দিন। তাদেরকে উত্তর দেওয়া হবে, তোমরা পান কর। তারপর তারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হতে থাকবে।

পরিশেষে অবশিষ্ট থাকবে একমাত্র আল্লাহর ইবাদতকারীগগ। তাদের নেককার ও গুনাহগার সবাই। তাদেরকে লক্ষ্য করে বলা হবে, কোন জিনিস তোমাদেরকে আটকে রেখেছে? অথচ অন্যরা তো চলে গিয়েছে। তারা বলবে আমরা তো সেদিন তাদের থেকে পৃথক রয়েছি, যেদিন আজকের অপেক্ষা তাদের বেশি প্রয়োজন ছিল। আমরা একজন ঘোষণাকারীর এ ঘোষণানা দিতে শুনেছি যে যারা যাদের ইবাদত করত তারা যেন ওদের সাথে যায়। আমরা প্রতীক্ষা করছি আমাদের প্রতিপালকের জন্য।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এরপর মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ তাদের কাছে আগমন করবেন। এবার তিনি সে আকৃতিতে আগমন করবেন না, যেটিতে তাঁকে প্রথমবার ঈমানদারগন দেখেছিলেন। এসে তিনি ঘোষণা দিবেন আমি তোমাদের প্রতিপালক সবাই তখন বলে উঠবে আপনিই আমাদের প্রতিপালক। আর সেদিন নাবীগণ ছাড়া তার স্থানে কেউ কথা বলতে পারবে না। আল্লাহ তাদেরকে বলবেন, তোমাদের এবং তাঁর মাঝখানে পরিচায়ক কোন আলামত আছে কি? তারা বলবেনঃ পায়ের নলা। তখন পায়ের নলা খুলে দেয়া হবে। এই দেখে ঈমানদারগণ সবাই সিজদায় পতিত হবে। বাকি থাকবে তারা, যারা লোক-দেখানো এবং লোক-শোনানো সিজদা করেছিল। তবে তারা সিজদার মনোবৃত্তি নিয়ে সিজদা করার জন্য যাবে, কিন্তু তাদের মেরু-দন্ড একটি তক্তার ন্যায় শক্ত হয়ে যাবে।

এমন সময় পুল স্থাপন করা হবে জাহান্নামের উপর। সাহাবীগন আরয করলেন, সে পুলটি কি ধরনের হবে ইয়া রাসুলুল্লাহ? তিনি বললেনঃ দুর্ঘম পিচ্ছিলে জায়গা। এর ওপর আংটা ও হুক থাকবে, শক্ত চওড়া উল্টো কাঁটা বিশিষ্ট হবে, যা নাজদ দেশের সাদান বৃক্ষের কাটার মত হবে। সে পুলের উপর দিয়ে ঈমানদারগণের কেউ অতিক্রম করবে চোখের পলকের মতো, কেউ বিজলীর মতো। কেউ বা বাতাসের মতো আবার কেউ তীব্রগামী ঘোড়া ও সাওয়ারের মতো। তবে মুক্তি প্রাপ্তগণ কেউ নিরাপদে চলে আসবেন, আবার কেউ জাহান্নামের আগুনে ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাবে। একবারে শেষে পার হবে যে ব্যাক্তিটি, সে হেঁচড়িয়ে কোন রকমে পার হয়ে আসবে। এখন তোমরা হকের ব্যাপারে আমার অপেক্ষা বেশি কঠোর নও, যতটুকু সেদিন ঈমানদারগণ আল্লাহর সমীপে হয়ে থাকবে, যা তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

যখন ঈমানদারগন এই দৃশ্যটি অবলোকন করবে যে, তাদের ভাইদেরকে রেখে একমাত্র তারাই নাজাত পেয়েছে, তখন তারা বলবে, হে আমাদের রব! আমাদের সেসব ভাই কোথায়, যারা আমাদের সঙ্গে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করত, রোযা পালন করত, নেক কাজ করত? তখন আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে বলবেনঃ তোমরা যাও, যাদের অন্তরে এক দীনার বরাবর ঈমান পাবে, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে আন। আল্লাহ তাআলা তাদের মুখমন্ডল জাহান্নামের ওপর হারাম করে দিয়েছেন। এদের কেউ কেউ দু’পা ও দু’পায়ের নলীর অধিক পর্যন্ত জাহান্নামের মধ্যে থাকবে। তারা যাদেরকে চিনতে পারে, তাদেরকে বের করবে। তারপর এরা আবার প্রত্যাবর্তন করবে।

আল্লাহ আবার তাদেরকে বলবেন, তোমরা যাও, যাদের অন্তরে অর্ধ দীনার পরিমাণ ঈমান পাবে তাদেরকে বের করে নিয়ে আসবে। তারা গিয়ে তাদেরকেই বের করে নিয়ে আসবে যাদেরকে তারা চিনতে পারবে। তারপর আবার প্রত্যাবর্তন করবে। আল্লাহ তাদেরকে আবার বলবেন, তোমরা যাও, যাদের অন্তরে অনু পরিমাণ ঈমান পাবে, তাদেরকে বের করে নিয়ে আসবে। তারা যাদেরকে চিনতে পাবে তাদেরকে বের করে নিয়ে আসবে। বর্ণনাকারী আর সাঈদ খুদরী (রাঃ) বলেনঃ তোমরা যদি আমাকে বিশ্বাস না কর, তাহলে আল্লাহর এ বানীটি পড়ঃ আল্লাহ অণু পরিমানও জুলুম করেন না। এবং অণু পরিমান পূণ্য কাজ হলেও আল্লাহ তাকে দ্বিগুণ করেন (৪ঃ ৪০)।

তারপর নাবী ফেরেশতা ও মুমিনগণ সুপারিশ করবেন। তখন মহান পরাক্রমশালী আল্লাহ বলবেন, এখন একমাত্র আমার শাফাআতই অবশিষ্ট রয়েছে। তিনি জাহান্নাম থেকে একমুষ্টি ভরে এমন কতগুলো কওমকে বের করবেন, যারা জ্বলে পুড়ে দগ্ধ হয়ে গিয়েছে। তারপর তাদেরকে বেহেশতের সামনে অবস্থিত ‘হায়াত’ নামক নহরে ঢালা হবে। তারা সে নহরের দুপার্শ্বে এমনভাবে উদ্ভুত হবে, যেমন পাথর এবং গাছের কিনারে বহন করে আনা আবর্জনায় নীচ থেকে তৃণ উদ্ভুত হয়। দেখতে পাও তন্মধ্যে সূর্যের আলোর অংশের গাছগুলো সাধারণত সবুজ হয়, ছায়ার অংশগুলো সাদা হয়। তারা সেখান থেকে মুক্তার দানার মত বের হবে। তাদের গর্দানে মোহর লাগানো হবে। জান্নাতে তারা যখন প্রবেশ করবে, তখন অপরাপর জান্নাতবাসীরা বলবেন, এরা হলেন রাহমান কর্তৃক মুক্তিপ্রাপ্ত যাদেরকে আল্লাহ তা’আলা কোন নেক আমল কিংবা কল্যাণ কাজ ছাড়া জান্নাতে দাখিল করেছেন। তখন তাদেরকে ঘোষনা দেয়া হবেঃ তোমরা যা দেখেছ, সবই তো তোমাদের এর সাথে আরো সমপরিমান দেওয়া হল তোমাদেরকে।

হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঈমানদারদেরকে কিয়ামতের দিন আবদ্ধ করে রাখা হবে। পরিশেষে তারা পেরেশান হয়ে ওঠবে এবং বলবে, আমরা যদি আমাদের রবের কাছে কারো দ্বারা শাফাআত করাই যিনি আমাদের সস্তি দান করেন। তারপর তারা আদম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে এসে বলবে, আপনিই তো সে আদম, যিনি মানবকুলের পিতা, স্বয়ং আল্লাহ নিজ হাত দিয়ে আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। আপনাকে বসবাসের সুযোগ প্রদান করেছেন তাঁর জান্নাতে, ফেরেশতাদের দ্বারা আপনাকে সিজদা করিয়েছেন এবং আপনাকে সব জিনিসের নামের তালীম দিয়েছেন। আমাদের এ স্থান থেকে প্রদানের নিমিত্ত আপনার সেই রবের কাছে শাফাআত করুন। তখন আদম (আলাইহিস সালাম) বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের জন্য নই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এরপর তিনি নিষিদ্ধ গাছের ফল খাওয়ার ভুলের কথাটি উল্লেখ করবেন। তিনি বলবেন, বরং তোমরা নূহ (আলাইহিস সালাম) এর কাছে যাও, যিনি পৃথিবীবাসীদের প্রতি প্রেরিত নাবীগণের মধ্যে প্রথম নাবী।

তারপর তারা নূহ (আলাইহিস সালাম) এর কাছে এলে তিনি তাদেরকে বলবেন আমি তোমাদের এ কাজের জন্য নই। আর তিনি না জেনে তাঁর রবের কাছে প্রার্থনার ভুলটি উল্লেখ করবেন এবং বলবেন বরং তোমরা রাহমানের বন্ধু ইবরাহীমের কাছে যাও। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ অতঃপর তারা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে আসবে। তখন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের জন্য নই। আর তিনি এরূপ তিনটি বাক্যের কথা উল্লেখ করবেন যেগুলো বাহ্যত বাস্তব-পরিপন্হী ছিল। পরে বলবেন, তোমরা বরং মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে যাও। আল্লাহর এমন এক বান্দা যাকে আল্লাহ তাওরাত দান করেছিলেন, তার সাথে কথা বলেছিলেন এবং গোপন বাক্যালাপের মাধ্যমে তাঁকে সান্নিধ্য দান করেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সবাই তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে আসবে। তিনিও বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের জন্য নই। এবং তিনি (অনিাচ্ছাকৃত) হত্যার ভুলের কথা উল্লেখ করবেন। তিনি বলবেন, তোমরা বরং ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে যাও। যিনি আল্লাহর বান্দা ও তাঁর রাসুল এবং তার রূহ ও বাণী।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তারা সবাই তখন ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে আসবে। ঈসা (আলাইহিস সালাম) বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের জন্য নই। তিনি বলবেন, তোমরা বরং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে যাও। তিনি আল্লাহর এমন এক বান্দা যার পূর্বের ও পরের ভুল মাফ করে দিয়েছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তারা তখন আমার কাছে আসবে। আমি তখন আমার রবের কাছে তার নিকটে হাযির হওয়ার অনুমতি চাইব। আমাকে তাঁর কাছে যাওয়ার অনুমতি প্রদান করা হবে। তাঁর দর্শন লাভ করার সাথে সাথে আমি সিজদায় পড়ে যাবো। তিনি আমাকে সে অবস্থায় যতক্ষন রাখতে চাইবেন ততক্ষন বাখবেন।

এরপর আল্লাহ তা’আলা বলবেন, মুহাম্মাদ, মাথা ওঠান; বলুন, আপনার কথা শোনা হবে, আর শাফাআত করুন, কবুল করা হবে, চান আপনাকে দেওয়া হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তখন আমি আমার মাথা ওঠাবো। তারপর আমি আমার প্রতিপালকের এমন শ্রুতি ও প্রশংসা (হামদ ও সানা) করবো যা তিনি আমাকে শিখিয়ে দিবেন। এরপর আমি সুপারিশ করবো, তবে আমার জন্য একটা সীমা নির্ধারণ করা হবে। আমি বের হয়ে তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাবো। বর্ণনাকারী কাতাদা (রহঃ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে এ কথাও বলতে শুনেছি যে, আমি বের হবো এবং তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করবো এবং জান্নাতে প্রবেশ করাব। তারপর আমি ফিরে এসে আমার প্রতিপালকের নিকটে হাযির হওয়ার অনুমতি চাইব। আমাকে অনুমতি দেওয়া হবে।

আমি তাঁকে দেখার পর সিজদায় পড়ে যাব। আল্লাহ তাআলা যতক্ষন রাখতে চাইবেন, আমাকে সে অবস্থায় রাখবেন। তারপর বলবেন, মুহাম্মদ! মাথা উঠান। বলুন, তা শোনা হবে, শাফাআত করুন, কবুল করা হবে, চান দেওয়া হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তারপর আমি আমার মাথা উঠাবো। আমার রবের এমন প্রশংসা ও শ্রুতি করব, যা তিনি আমাকে শিখিয়ে দিবেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এরপর আমি শাফাআত করব, আমার জন্য একটা সীমা নির্ধারণ করা হবে। আমি বের হয়ে তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাব। বর্ণনাকারী কাতাদা (রহঃ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তখন আমি বের হব এবং তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করব এবং জান্নাতে প্রবেশ করাব।

তারপর তৃতীয়বারের মত ফিরে আসব এবং আমার রবের নিকটে প্রবেশ করার অনুমতি চাইব। আমাকে অনুমতি দেওয়া হবে। আমি তাকে দেখার পর সিজদায় পড়ে যাব। আল্লাহ আমাকে সে অবস্থায় রাখবেন, যতক্ষন তিনি চাইবেন। তারপর আল্লাহ বলবেন, মুহাম্মাদ! মাথা উঠান এবং বলুন, শোনা হবে, সুপারিশ করুন, তা কবুল করা হবে, চান, দেওয়া হবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি মাথা উঠিয়ে আমার রবের এমন শ্রুতি ও প্রশংসা (হামদ ও সানা) করব, যা আমাকে শিখিয়ে দেবেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এরপর আমি শাফাআত করব, আমার জন্য একটা সীমা নির্ধারন করা হবে। তারপর আমি বের হয়ে তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করাব।

বর্ণনাকারী কাতাদা (রহঃ) বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি সেখান থেকে বের হয়ে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে জান্নাতে প্রবেশ করাব। পরিশেষে জাহান্নামে অবশিষ্ট থাকবে একমাত্র তারা। কুরআন যাদেরকে আটকে রেখেছে। অর্থাৎ যাদের ওপর জাহান্নামের স্থায়ীবাস অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। আনাস (রাঃ) বলেন, তিনি কুরআনের এ আয়াত তিলাওয়াত করলেন। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আশা করা যায় তোমার প্রতিপালক তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে (১৭ঃ ৭৯) এবং তিনি বললেন, তোমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য প্রতিশ্রুতি ‘মাকামে মাহমুদ’ হচ্ছে এটিই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৩৩ | 6933 | ٦۹۳۳

পরিচ্ছদঃ ৩১২৬. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সেদিন কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে
৬৯৩৩। উবায়দুল্লাহ ইবনু সা’দ ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের কাছে (লোক) পাঠালেন। তাদেরকে একটা তাঁবুর মধ্যে সমবেত করলেন এবং তাদের বললেনঃ তোমরা আল্লাহ ও তার রাসুলের সঙ্গে মুলাকাত পর্যন্ত ধৈর্য ধারণ করবে। আমি হাওযের (কাওসারের) কাছে থাকব।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৩৪ | 6934 | ٦۹۳٤

পরিচ্ছদঃ ৩১২৬. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সেদিন কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে
৬৯৩৪। সাবিত ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে যখন তাহাজ্জুদের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন, তখন বলতেনঃ হে আমাদের প্রতিপালক আল্লাহ! সব প্রশংসা একমাত্র আপনারই, আসমান ও যমীনের তত্ত্বাবধায়ক আপনিই এবং আপনারই জন্য সব স্তুতি। আসমান ও যমীন এবং এসবের মধ্যকার সবকিছুর প্রতিপালক আপনিই এবং আপনার জন্য সব প্রশংসা আসমান যমীন ও এগুলোর মধ্যকার সব কিছুর নূর আপনিই। আপনি হক, আপনার বান্দা হক, আপনার ওয়াদা হক, আপনার সাক্ষাৎ হক, জান্নাত হক, জাহান্নাম হক এবং কিয়ামত হক। ইয়া আল্লাহ! আপনারই উদ্দেশ্যে আমি ইসলাম কবুল করেছি এবং আপনারই প্রতি ঈমান এনেছি, তাওয়াক্কুল করেছি আপনারই ওপর, আপনারই কাছে বিবাদ হাওয়ালা করেছি; আপনারই কাছে ফায়সালা চেয়েছি। তাই আপনি আমার পূর্বের ও পরের গুপ্ত ও প্রকাশ্য এবং যা আপনি আমার চাইতে বেশি জ্ঞাত তা সবই মাফ করে দিন। আপনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। বর্ণনাকারী তাঊস (রহঃ) থেকে কায়স ইবনু সা’দ (রহঃ) এবং আবূ যুবায়র (রহঃ) قيم এর এর স্থলে قيام বর্ণনা করেছেন। বর্ণনাকারী মুজাহিদ বলেনঃ قيوم সবকিছু পরিচালককে বলা হয়ে থাকে। উমর (রাঃ) قيام পড়েছেন। মূলত শব্দ উভয়টই প্রশংসার জন্য ব্যবহত হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৩৫ | 6935 | ٦۹۳۵

পরিচ্ছদঃ ৩১২৬. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সেদিন কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে
৬৯৩৫। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকের সাথে অচিরেই তার প্রতিপালক আলাপ করবেন তখন প্রতিপালক ও তার মাঝখানে কোন দোভাষী ও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী পর্দাও থাকবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৩৬ | 6936 | ٦۹۳٦

পরিচ্ছদঃ ৩১২৬. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সেদিন কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে
৬৯৩৬। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুটি জান্নাত এমন হবে, সেগুলোর পানপাত্র ও অভ্যন্তরস্থ সব কিছুই হবে রুপার। আর দুটি জান্নাত এমন হবে, সেগুলোর পানপাত্র ও অভ্যন্তরস্থ সবকিছুই হবে স্বর্ণের। জান্নাতে আদনে তাদের ও তাদের প্রতিপালকের দর্শনের মধ্যে তার চেহারার গর্বের চাদর ছাড়া আর কোন কিছু অন্তরায় থাকবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৩৭ | 6937 | ٦۹۳۷

পরিচ্ছদঃ ৩১২৬. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সেদিন কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে
৬৯৩৭। হুমায়দী (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি মিথ্যা কসম করে কোন মুসলমানের সম্পদ থেকে আত্মসাৎ করবে, সে কিয়ামতের দিন আল্লাহর সাথে মিলিত হবে এমতাবস্থায় যে, তিনি তার ওপর রাগান্বিত থাকবেন। আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বাণীর সমর্থনে আল্লাহর কিতাবের আয়াত তিলাওয়াত করেনঃ যারা আল্লাহর সঙ্গে কৃত প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে তুচ্ছমূল্যে বিক্রয় করে, পরকালে তাদের কোন অংশ নেই। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না … (৩ঃ ৭৭)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৩৮ | 6938 | ٦۹۳۸

পরিচ্ছদঃ ৩১২৬. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সেদিন কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে
৬৯৩৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিন প্রকারের মানুষ, যাদের সাথে কিয়ামতের দিন আল্লাহ কথা বলবেন না এবং তাদের দিকে তাকাবেনও না। (১) যে ব্যাক্তি তার দ্রব্যের উপর এই মিথ্যা কসম করে যে, একে এখন যে মূল্যে দেওয়া হল এর চেয়ে অধিক মূল্যে তা বিক্রয় করা যাচ্ছিল। (২) যে ব্যাক্তি কোন মুসলমানের মাল আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে আসরের সালাত (নামায/নামাজ) এর পর মিথ্যা কসম করে। (৩) এবং ব্যাক্তি সে, যে প্রযোজনের অতিরিক্ত পানি আটকিয়ে রাখে। আল্লাহ তা’আলা তাকে লক্ষ্য করে কিয়ামতের দিন বলবেন, আজ আমি আমার মেহেরবানী থেকে তোমাকে বঞ্চিত করব, যেমনি তুমি যা তোমার হাতের অর্জিত নয় তা থেকে বিমুখ করতে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৩৯ | 6939 | ٦۹۳۹

পরিচ্ছদঃ ৩১২৬. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ সেদিন কোন কোন মুখমন্ডল উজ্জ্বল হবে; তারা তাদের প্রতিপালকের দিকে তাকিয়ে থাকবে
৬৯৩৯। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ আসমান ও যমীনকে যেদিন সৃষ্টি করেছিলেন, সেদিনকার অবস্থায় যামানা পুনরায় প্রত্যবর্তন করেছে। বারটি মাসে এক বছর হয়। তন্মধ্যে চারটি মাস (বিশেষভাবে) মর্যাদাসম্পন্ন। যুলকাদা, যুলহাজ্জ ও মুহাররম এই তিনটা মাস একাধারে এসে থাকে। আর মুযার গোত্রের রজব মাস যা জুমাদা ও শাবান মাসের মাঝে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটি কোন মাস? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তার রাসুলই ভালো জানেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চুপ থাকলেন, যদ্দরুন আমরা ভেবেছিলাম, তিনি এই নামটি পাল্টিয়ে অন্য কোন নাম রাখবেন। তিনি বললেনঃ এটি কি যুলহাজ্জা নয়? আমরা উত্তর করলাম, হ্যাঁ, এটি যুলহাজ্জার মাস। তিনি বললেনঃ এটি কোন শহর? আমরা বললাম, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই বেশি ভাল জানেন। তিনি নীরব রইলেন। আমরা ভেবেছিলাম তিনি হয়ত শহরটির নাম পাল্টিয়ে অন্য কোন নাম রেখে দিবেন। তিনি বললেনঃ এটি কি সেই (পবিত্র) শহরটি নয়? আমরা উত্তর করলাম, হ্যাঁ। তারপর তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন আজকের এই দিনটি কোন দিন? আমরা উত্তর করলাম, আল্লাহ ও তার রাসুলই বেশি ভাল জানেন। তিনি নীরব রইলেন যার দরুন আমরা ভাবলাম তিনি সম্ভবত এর নামটা পাল্টিয়েই দিবেন। তিনি বললেনঃ এটি কি কুরবানীর দিন নয়? আমরা বললাম, হ্যাঁ।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেনঃ তোমাদের রক্ত এবং সম্পদ বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেছেন, আমার ধারণা হচ্ছে, আবূ বাকরা (রাঃ) তোমাদের ‘ইযযত’ কথাটিও বর্ণনা করেছিলেন, অর্থাৎ ওসব এ পবিত্র দিনে, এ পবিত্র শহরে, এ পবিত্র মাসটির ন্যায় পবিত্র ও মর্যাদা সম্পন্ন এবং অতিশীঘ্রই তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের সাক্ষাৎ লাভ করবে। তখন তিনি তোমাদেরকে তোমাদের আমল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন। সাবধান, আমার ওফাতের পরে তোমরা পথভ্রষ্ট হয়ে একে অপরকে হত্যা করো না। সাবধান! উপস্থীতগণ অনুপস্থিত লোকদের কাছে (কথাগুলো) পৌছিয়ে দেবে। কেননা, হয়ত যার কাছে (রেওয়াত) পৌছানো হবে, তাদের মধ্যে এমন ব্যাক্তিও থাকবে, যারা (রেওয়াত) প্রত্যক্ষ শ্রোতার চাইতে বেশি সংরক্ষণকারী হবে। মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন (রহঃ) যখন এ হাদীসটি বর্ণনা করতেন, তখন বলতেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্যই বলেছিলেন। অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি পৌছিয়ে দিয়েছি কি? আমি পৌছিয়ে দিয়েছি কি?

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪০ | 6940 | ٦۹٤۰

পরিচ্ছদঃ ৩১২৭. আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ সৎকর্মপরায়নদের নিকটবর্তী (৭ঃ ৫৬)
৬৯৪০। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জনৈকা কন্যার এক ছেলের জীবনসায়াহ্নে তার কন্যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যাওয়ার জন্য (অনুরোধ করে) একজন লোক পাঠালেন। উত্তরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেনঃ আল্লাহ যা নিয়ে নেন এবং যা দান করেন সবই তারই জন্য। আর প্রতিটি বস্তুর জন্য একটা সময়সীমা নির্ধারিত রয়েছে। সুতরাং সে যেন সবর করে এবং সাওয়াবের আশা করে। তারপর নাবী-তনয়া নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পুনরায় যাওয়ার জন্য কসম দিয়ে লোক পাঠালেন। তিনি যাওয়ার জন্য, ওঠে দাঁড়ালেন। বর্ণনাকারী উসামা ইবনু যায়িদ (রাঃ) বলেন, আমি, মু’আয ইবনু জাবাল, উবায় ইবনু কাব, উবাদা ইবনু সামিতও তাঁর সঙ্গে যাওয়ার জন্য ওঠে দাঁড়ালাম। আমরা যখন সেখানে গিয়ে প্রবেশ করলাম তখন তারা বাচ্চাটাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে দিলেন। অথচ তখন বাচ্চার বুকের মধ্যে এক অস্বস্তি বোধ হচ্ছিল। বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বলেছিলেনঃ এ তো যেন মশকের মত। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কাঁদলেন। তা দেখে সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) বললেনঃ আপনি কাঁদছেন? তিনি বললেনঃ অবশ্যই আল্লাহ তাঁর দয়ার বান্দাদের প্রতিই দয়া প্রদর্শন করে থাকেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪১ | 6941 | ٦۹٤۱

পরিচ্ছদঃ ৩১২৭. আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ সৎকর্মপরায়নদের নিকটবর্তী (৭ঃ ৫৬)
৬৯৪১। উবায়দুল্লাহ ইবনু সা’দ ইবনু ইবরাহিম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জান্নাত ও জাহান্নাম উভয়টি স্বীয় প্রতিপালকের কাছে অভিযোগ করল। জান্নাত বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমার ব্যাপারটি কি হলো যে তাতে শুধু নিঃস্ব ও নিম্ন শ্রেনীর লোকেরাই প্রবেশ করবে। এদিকে জাহান্নামও অভিযোগ করল অর্থাৎ আপনি শুধুমাত্র অহংকারীদেরকেই আমাতে প্রাধান্য দিলেন। আল্লাহ জান্নাতকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তুমি আমার রহমত। জাহান্নামকে বললেনঃ তুমি আমার আযাব। আমি যাকে চাইব, তোমাকে দিয়ে শাস্তি পৌছাব। তোমাদের উভয়কেই পূর্ণ করা হবে। তবে আল্লাহ তা’আলা তার সৃষ্টির কারো উপর যুলম করবেন না। তিনি জাহান্নামের জন্য নিজ ইচ্ছানুযায়ী নতুন সৃষ্টি পয়দা করবেন। তাদেরকে যখন জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে, তখন জাহান্নাম বলবে, আরো অভিরিক্ত আছে কি? জাহান্নামে আরো নিক্ষেপ করা হবে, তখনো বলবে, আরো অতিরিক্ত আছে কি? এভাবে তিনবার বলবে। পরিশেষে আল্লাহ তাআলা তাঁর কদম (পা) জাহান্নামে প্রবেশ করিয়ে দিলে তা পরিপূর্ন হয়ে যাবে। তখন জাহান্নামের একটি অংশ আরেকটি অংশকে এই উত্তর করবে যথেষ্ট হয়েছে যথেষ্ট হয়েছে ষথেষ্ট হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪২ | 6942 | ٦۹٤۲

পরিচ্ছদঃ ৩১২৭. আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌র অনুগ্রহ সৎকর্মপরায়নদের নিকটবর্তী (৭ঃ ৫৬)
৬৯৪২। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কতিপয় কাওম তাদের গুনাহর কারণে শাস্তিস্বরূপ জাহান্নামের অগ্নিশিখায় পৌছবে। তারপর আল্লাহ তা’আলা নিজ করুণার বদৌলতে তাদেরকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দেবেন। তাদেরকে জাহান্নামী বলে আখ্যায়িত করা হবে। হাম্মাম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উক্ত হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪৩ | 6943 | ٦۹٤۳

পরিচ্ছদঃ ৩১২৮. আল্লাহ্‌র বাণীঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ আকাশসমূহ ও পৃথিবীকে সংরক্ষণ করেন, যাতে এরা স্থানচ্যুত না হয়
৬৯৪৩। মূসা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ইহুদী পণ্ডিত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহ কিয়ামতের দিন আসমানকে এক আঙ্গুলের ওপর, পৃথিবীকে এক আঙ্গুলের ওপর, পর্বতমালাকে একটি আঙ্গুলের ওপর, বৃক্ষলতা ও নদ্বীনালাকে আরেকটি আঙ্গুলের ওপর এবং সকল সৃষ্টিকে এক আঙ্গুলের ওপর রেখে দিবেন এবং নিজ হাতে ইশারা দিয়ে বলবেন, সম্রাট একমাত্র আমিই। এর সাথে সাথে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন এবং বললেনঃ তারা আল্লাহর যথার্থ মর্যাদা উপলদ্ধি করেনি (৬ঃ ৯১)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪৪ | 6944 | ٦۹٤٤

পরিচ্ছদঃ ৩১২৯. আসমান, যমীন ইত্যাদির সৃষ্টি সম্পর্কে; এটি প্রতিপালকের কাজ ও নির্দেশ। অতএব প্রতিপালক তাঁর গুনাবলি, কাজ, নির্দেশ ও কালামসহ তিনি স্রষ্টা ও অস্তিত্বদানকারী। তিনি অসৃষ্ট। তার কাজ, নির্দেশ ও সৃষ্টি এবং অস্তিত্ব দানে যা সম্পাদিত হয়, তাই হলো কর্ম, সৃষ্টও অস্তিত্ব লাভকারী বস্তু
৬৯৪৪। সাঈদ ইবনু আবূ মারিয়াম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা মায়মুনা (রাঃ) এর ঘরে রাত যাপন করলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে ছিলেন। রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সালাত (নামায/নামাজ) কিরূপ হয় তা প্রত্যক্ষ করার জন্য। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পরিবারের সাথে কিছু সময় কথা বললেন এবং ঘুমিয়ে পড়লেন। এরপর যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ কিংবা শেষের কিছু অংশ অবশিষ্ট রইল, তিনি উঠে বসলেন এবং আসমানের দিকে তাকিয়ে তিলাওয়াত করলেনঃ আকাশসমুহ ও পৃথিবী সৃষ্টিতে …… বোধশক্তি সম্পন্ন লোকদের জন্য পর্যন্ত (৩ঃ ১৯০)। তারপর তিনি উঠে গিয়ে ওযু ও মিসওয়াক করলেন। অতঃপর এগার রাকাত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। বিলাল (রাঃ) সালাত (নামায/নামাজ) এর (ফজরের) আযান দিলে তিনি দু’রাকাত সালাত (নামায/নামাজ) পড়ে নিলেন। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে সাহাবাদেরকে ফজরের (দু’রাকআত) সালাত (নামায/নামাজ) পড়িয়ে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪৫ | 6945 | ٦۹٤۵

পরিচ্ছদঃ ৩১৩০. আল্লাহ্‌ তা‘আলার বাণীঃ আমার প্রেরিত বান্দাদের সম্পর্কে আমার এ বাক্য পূর্বেই স্থির হয়েছে। (৩৭ঃ ১৭১)
৬৯৪৫। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা যখন (সৃষ্টির) কাজ সম্পূর্ণ করলেন, তখন তার নিকটে তাঁর আরশের উপর লিপিবদ্ধ করে দিলেন, “আমার রহমত আমার ক্রোধের উপর প্রবল হয়েছে।”

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪৬ | 6946 | ٦۹٤٦

পরিচ্ছদঃ ৩১৩০. আল্লাহ্‌ তা‘আলার বাণীঃ আমার প্রেরিত বান্দাদের সম্পর্কে আমার এ বাক্য পূর্বেই স্থির হয়েছে। (৩৭ঃ ১৭১)
৬৯৪৬। আদম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যিনি সত্যবাদী এবং সত্যবাদী বলে স্বীকৃত আমাদের কাছে বর্ণনা করেছেন যে, তোমাদের প্রত্যেকের সৃষ্টি হল এরূপ বীর্য থেকে যাকে মায়ের পেটে চল্লিশ দিন কিংবা চল্লিশ রাত একত্রিত রাখা হয়। তারপর অনুরূপ সময়ে আলাক হয়, তারপর অনুরূপ সময়ে গোশতপিন্ডে পরিণত হয়। তারপর আল্লাহ তা’আলা তার কাছে ফেরেশতা প্রেরণ করেন। এই ফেরেশতাকে চারটি জিনিস সম্পর্কে লিপিবদ্ধ করার জন্য হুকুম দেয়া হয়। যার ফলে ফেরেশতা তার রিযিক, আমল, আয়ু এবং সৌভাগ্য কিংবা হতভাগ্য হওয়া সম্পর্কে লিখে দেয়। তারপর তার মধ্যে প্রাণ সঞ্চার করা হয়। এজন্যই তোদের কেউ জান্নাতীদের আমল করে এতটুকু অগ্রগামী হয়ে যায় যে, তার ও জান্নাতের মাঝখানে মাত্র এক গজেঁর দূরত্ব থাকতেই তার ওপর লিখিত তাকদীর প্রবল হয়ে যায়। তখন সে দোযখীদের আমল করে। পরিশেষে সে দোযখেই প্রবেশ করে। আবার তোমাদের কেউ দোযখীদের ন্যয় আমল করে। এমন পর্যায়ে পৌছে যে, তার ও দোযখের মধ্যে মাত্র এক গজের দূরত্ব থাকতে তার উপর তাকদীরের লেখনী প্রবল হয়, যদ্দরুন সে জান্নাতীদের ন্যায় আমল করে, ফলে জান্নাতেই প্রবেশ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪৭ | 6947 | ٦۹٤۷

পরিচ্ছদঃ ৩১৩০. আল্লাহ্‌ তা‘আলার বাণীঃ আমার প্রেরিত বান্দাদের সম্পর্কে আমার এ বাক্য পূর্বেই স্থির হয়েছে। (৩৭ঃ ১৭১)
৬৯৪৭। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরীলকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে জিবরীল! আপনি আমাদের সাথে যে পরিমাণ সাক্ষাৎ করেন তার চাইতে অধিক সাক্ষাৎ করতে কিসে বাধা দেয়? এরই প্রেক্ষিতে কুরআনের নিন্মোক্ত আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ আমরা আপনার প্রতিপালকের আদেশ ব্যতীত অবতরণ করব না, যা আমাদের সন্মুখে ও পিছনে আছে এবং যা এ দুয়ের অন্তবর্তী তা তারই। আর আপনার প্রতিপালক ভুলবার নন (৯৯ঃ ৬৪)। আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ এটি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রশ্নের জবাব।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪৮ | 6948 | ٦۹٤۸

পরিচ্ছদঃ ৩১৩০. আল্লাহ্‌ তা‘আলার বাণীঃ আমার প্রেরিত বান্দাদের সম্পর্কে আমার এ বাক্য পূর্বেই স্থির হয়েছে। (৩৭ঃ ১৭১)
৬৯৪৮। ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে মদিনায় একটি কৃষিক্ষেত দিয়ে চলছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন একটি খেজুরের ডালের উপর ভর দিয়ে চলছিলেন। তারপর তিনি যখন ইহুদীদের এক গোত্রের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন তারা একে অপরকে বলতে লাগল, তাকে রুহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা কর। আবার কেউ কেউ বলল, তাঁকে কিছু জিজ্ঞাসা করো না। পরিশেষে তাঁরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করল। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুরের শাখার ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন আমি তার পেছনেই ছিলাম। আমি ধারণা করছিলাম, তার ওপর ওহী অবতীর্ণ হয়েছিল পরে তিনি বললেনঃ “তোমাকে ওরা রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে, বল, রূহ আমার প্রতিপালকের আদেশ ঘটিত এবং তোমাদের সামান্য জ্ঞানই দেওয়া হয়েছে” (১৭ঃ ৮৫)। তখন তাদের একজন আরেকজনকে বলতে লাগল, বলেছিলাম তোমাদেরকে তাকে কোন প্রশ্ন করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৪৯ | 6949 | ٦۹٤۹

পরিচ্ছদঃ ৩১৩০. আল্লাহ্‌ তা‘আলার বাণীঃ আমার প্রেরিত বান্দাদের সম্পর্কে আমার এ বাক্য পূর্বেই স্থির হয়েছে। (৩৭ঃ ১৭১)
৬৯৪৯। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের উদ্দেশ্য নিয়ে যে ব্যাক্তি বের হয়, আর আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ এবং তার কলেমার বিশ্বাসই যদি তাকে বের করে থাকে, এমন ব্যাক্তির জন্য আল্লাহ স্বয়ং যিম্মাদার হয়ে যান। হয়তো তাকে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, নয়তো যে স্থান থেকে সে বের হয়েছিল সাওয়াব কিংবা গনীমতসহ তাকে সে স্থানে প্রত্যাবর্তন করাবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৫০ | 6950 | ٦۹۵۰

পরিচ্ছদঃ ৩১৩০. আল্লাহ্‌ তা‘আলার বাণীঃ আমার প্রেরিত বান্দাদের সম্পর্কে আমার এ বাক্য পূর্বেই স্থির হয়েছে। (৩৭ঃ ১৭১)
৬৯৫০। মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, কেউ লড়াই করছে মর্যাদার জন্য, কেউ বীরত্বের জন্য, কেউ লোক দেখানোর জন্য। এদের কার লড়াইটা আল্লাহর পথে হচ্ছে? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহর বাণীকে বুলন্দ রাখার জন্য লড়াই করছে, সেটাই আল্লাহর পথে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৫১ | 6951 | ٦۹۵۱

পরিচ্ছদঃ ৩১৩১. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আমার বাণী কোন বিষয়ে…… (২৭ঃ ৪০)
৬৯৫১। শিহাব ইবনু আব্বাদ (রহঃ) … মুগীরা ইবনু শুবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মতের মধ্যে এমন একটি দল থাকবে, যারা আল্লাহর হুকুম আসা পর্যন্ত অন্যান্য লোকের বিরুদ্ধে সর্বদাই জয়ী থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৫২ | 6952 | ٦۹۵۲

পরিচ্ছদঃ ৩১৩১. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আমার বাণী কোন বিষয়ে…… (২৭ঃ ৪০)
৬৯৫২। হুমায়দী (রহঃ) … মুআবিয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আমার উম্মত থেকে একটি দল সব সময় আল্লাহর হুকুমের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে। যারা তাদেরকে মিথ্যুক প্রতিপন্ন করতে চাইবে কিংবা বিরোধিতা করবে তারা এদের কোন প্রকার ক্ষতি সাধন করতে পারবে না। কিয়ামত আসা পর্যন্ত তারা এ অবস্থায় থাকবে। মালিক ইবনু ইয়ুখামির (রহঃ) বলেনঃ আমি মু’আয (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, তারা হবে সিরিয়ার অধিবাসী। মুআবিয়া (রাঃ) বলেন, মালিক ইবনু ইয়ুখামির (রাঃ) বলেন, তিনি মু’আয (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন, তাঁরা হবে সিরিয়ার।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৫৩ | 6953 | ٦۹۵۳

পরিচ্ছদঃ ৩১৩১. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আমার বাণী কোন বিষয়ে…… (২৭ঃ ৪০)
৬৯৫৩। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা মুসায়লামার কাছে একটু অবস্থান করলেন। তখন সে তার সাথী-সঙ্গীদের মধ্যে ছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তুমি যদি আমার কাছে এ টুকরাটিও চাও, তা হলে আমি তোমাকে তাও তো দিচ্ছি না। তোমার ব্যাপারে আল্লাহ যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন তা তুমি অতিক্রম করতেও পারবে না। আর যদি তুমি ফিরে যাও, তা হলে আল্লাহ স্বয়ং তোমাকে ধ্বংস করে দিবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৫৪ | 6954 | ٦۹۵٤

পরিচ্ছদঃ ৩১৩১. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আমার বাণী কোন বিষয়ে…… (২৭ঃ ৪০)
৬৯৫৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মদিনায় এক কৃষিক্ষেত কিংবা অনাবাদী জায়গা দিয়ে চলছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের সাথে রক্ষিত একটা খেজুরের শাখার উপর ভর দিয়ে চলছিলেন। তারপর আমরা একদল ইহুদিকে অতিক্রম করে যাচ্ছিলাম। তাদের একে অপরকে বলতে লাগল, তাঁকে রূহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা কর। আবার তাদের কেউ কেউ বলল, তাঁকে জিজ্ঞাসা করো না। হয়তো তিনি এমন জিনিস উপস্থাপন করে দিবেন, যা তোমাদের কাছে অপছন্দনীয় লাগবে। তা সত্বেও তাদের কেউ বলে উঠল, আমরা অবশ্যই তাকে জিজ্ঞাসা করব। তারপর তাদেরই একজন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিকে এগিয়ে জিজ্ঞাসা করল, হে আবূল কাসিম! রূহ কি? এতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নীরব রইলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আমি তখন বুঝতে পেরেছিলাম তার প্রতি ওহী অবতীর্ন হচ্ছে, এরপর তিনি (নিম্নোক্ত আয়াত) পড়লেনঃ “তোমাকে ওরা রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, রুহ আমার প্রতিপালকের আদেশ ঘটিত। এবং তোমাদের সামান্য জ্ঞানই দেওয়া হয়েছে” (১৭ঃ ৮৫)। আ’মাশ বললেনঃ আয়াতে ‘وَمَا أُوتُوا আমাদের কিরাআতে এমনই বিদ্যমান আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৫৫ | 6955 | ٦۹۵۵

পরিচ্ছদঃ ৩১৩২. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ বল, আমার প্রতিপালকের কথা লিপিবদ্ধ করার জন্য সমুদ্র যদি কালি হয়….. শেষ পর্যন্ত (১৮ঃ ১০৯)। মহান আল্লাহর বাণীঃ পৃথিবীর সমস্ত বৃক্ষ যদি কলম হয় এবং এই যে সমুদ্র এর সাথে যদি আরও সাত সমুদ্র যুক্ত হয়ে কালি হয়, তবুও আল্লাহ্‌র বাণী নিঃশেষ হবে না। আল্লাহ্‌ পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় (৩১ঃ ২৭)। মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্‌, যিনি আকাশ সমূহ ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। তারপর তিনি আরশে অধিষ্ঠিত হন….. মহিমাময় প্রতিপালক আল্লাহ্‌, জগতসমূহের প্রতিপালক। (৭ঃ ৫৪) سخر অর্থ ذلل অধীন করা
৬৯৫৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহর পথে জিহাদের উদ্দেশ্য নিয়ে যে ব্যাক্তি বের হবে এবং আল্লাহর পথে জিহাদ এবং তার কলেমার প্রতি বিশ্বাস ব্যতীত অন্য কিছু তাকে তার ঘর থেকে বের করেনি, তবে এমন ব্যাক্তির জন্য আল্লাহ যামিন হয়ে যান। হয়তো বা তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করিয়ে দিবেন, নতুবা সে যে সাওয়াব ও গনীমাত হাসিল করেছে, তা সহ তিনি তাকে তার আবাসস্থলে প্রত্যাবর্তিত করবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৫৬ | 6956 | ٦۹۵٦

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৫৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করবে, তখন দোয়ায় দৃঢ় ও সংকল্পবদ্ধ থাকবে। তোমাদের কেউই এমন কথা কখনো বলা চাই না যে, (হে আল্লাহ!) তুমি যদি চাও, তাহলে আমাকে দান কর। কেননা আল্লাহকে বাধ্যকারী এমন কেউ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৫৭ | 6957 | ٦۹۵۷

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৫৭। আবুল ইয়ামান ও ইসমাঈল (রহঃ) … আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ও রাসূল-তনয়া ফাতিমার কাছে রাতে এসেছেন। তিনি তাদেরকে বললেনঃ তোমরা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছ না? আলী বলেন, তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের জীবন অবশ্যই আল্লাহর হাতে। তিনি যখন আমাদেরকে ঘুম থেকে জাগিয়ে ওঠাতে চান জাগিয়ে ওঠান। আমি এ কথা বলার পর, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে চললেন। আর আমার কথার কোন উত্তর করলেন না। যাওয়ার সময় তাঁকে উরুর ওপর হাত মেরে বলতে শুনেছি, মানুয অধিকাংশ বিষয়েই বড্ড ঝগড়াটে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৫৮ | 6958 | ٦۹۵۸

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৫৮। মুহাম্মাদ ইবনু সিনান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঈমানদার শস্যক্ষেতের নরম ডগার মত। জোরে বাতাস এলেই তার পাতা ঝুঁকে পড়ে। যখন বাতাস থেমে যায়, তখন আবার স্থির হয়ে যায়। ঈমানদারদেরকে বালা-মূসিবত দ্বারা এভাবেই ঝুঁকিয়ে রাখা হয়। আর কাফেরের উদাহরণ দেবদারু গাছ, যা একেবারেই কঠিন ও সোজা হয়। যদ্দরুন আল্লাহ যখন ইচ্ছা করেন সেটিকে মুলসহ উপড়ে ফেলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৫৯ | 6959 | ٦۹۵۹

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৫৯। আল হাকাম ইবনু নাফি (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যখন তিনি মিম্বরে উপবিষ্ট ছিলেন। তিনি বললেনঃ তোমাদের আগের উম্মাতদের তুলনায় তোমাদের অবস্থানকাল আসরের সালাত (নামায/নামাজ) ও সুর্যাস্তের মধ্যবর্তী সময়। তাওরাতের ধারকগণকে তাওরাত প্রদান করা হলে তারা সে অনুযায়ী আমল করল, তবে দুপুর হলে তারা অপারগ হয়ে পড়ল। এ জন্য তাদেরকে এক এক কীরাত করে পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া হল। অতঃপর ইনজীলের ধারকগণকে ইনজীল প্রদান করা হল, তারা তদনুযারী আমল করল আসরের সালাত (নামায/নামাজ) পর্যন্ত, তারপর তারা অক্ষম হয়ে পড়ায় তাদেরকে দেওয়া হল এক এক কীরাত করে। (সর্বশেষে) তোমাদেরকে কুরআন দেওয়া হল। ফলে এই কুরআন অনুযায়ী তোমরা আসর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আমল করেছ। এ জন্য তোমাদেরকে দুই কিরাত দুই কিরাত করে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছে। তাওরাতের ধারকগণ বললো, হে আমাদের প্রতিপালক! এরাতো আমলে সর্বাপেক্ষা কম আবার পারিশ্রমিকে সবচেয়ে বেশি। আল্লাহ তখন বললেনঃ তোমাদের পারিশ্রমিকে তোমাদেরকে কিছু জুলম করা হয়েছে কি? তারা বলল, না। তখন আল্লাহ বললেনঃ সেটি হচ্ছে আমার অনুগ্রহ আমি যাকে চাই তাকে দিয়ে থাকি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৬০ | 6960 | ٦۹٦۰

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৬০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদল লোকের সাথে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বায়আত করেছি। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের বায়আত এ শর্তে করছি যে, তোমরা আল্লাহর সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না, চুরি করবে না, তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করবে না তোমাদের হাত ও পায়ের মধ্যবর্তী লজ্জাস্থানকে কেন্দ্র করে কোন ভিত্তিহীন জিনিস গড়বেনা, কোন ভাল কাজে আমার অবাধ্য হবে না। তোমাদের থেকে যারা ওসব যথাযথ পুরা করবে, আল্লাহর কাছে তার প্রতিদান রয়েছে। আর যারা ওসব নিযিদ্ধ জিনিসের কোনটায় লিপ্ত হয়ে গেলে তাকে যদি সে কারণে দুনিয়ায় শাস্তি প্রদান করা হয়, তা হলে তা হবে তার জন্য কাফফারা এবং পবিত্রতা। আর যাদের দোষ আল্লাহ ঢেকে রাখেন সেটি আল্লাহর ইচ্ছাধীন বিষয়। তিনি ইচ্ছা করলে শাস্তি দিবেন ইচ্ছা করলে ক্ষমা করে দিবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৬১ | 6961 | ٦۹٦۱

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৬১। মুআল্লা ইবনু আসা’দ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর নাবী সুলায়মানের ষাটজন স্ত্রী ছিল। একদা সুলায়মান (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ আজ বাতে আমার সব স্ত্রীর কাছে যাব। যার ফলে স্ত্রীরা সবাই গর্ভবতী হয়ে এক একজন সন্তান প্রসব করবে, যারা অশ্বারোহী অবস্থায় আল্লাহর পথে জিহাদ করবে। অতএব সুলায়মান (রাঃ) তাঁর সব স্ত্রীর কাছে গেলেন, তবে তাদের থেকে একজন স্ত্রী ছাড়া আর কেউ গর্ভবতী হলো না। সেও প্রসব করলো একটি অপূর্ণাঙ্গ সন্তান। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি সুলায়মান (আলাইহিস সালাম) ইনশা আল্লাহ বলতেন, তাহলে স্ত্রীরা সবাই গর্ভবতী হয়ে যেতো এবং প্রসব করতো এমন সন্তান যারা অশ্বারোহী অবস্থায় আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করত।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৬২ | 6962 | ٦۹٦۲

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৬২। মুহাম্মাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক বেদুঈনের কাছে প্রবেশ করলেন তার রোগের খোজ খবর নিতে। তিনি বললেনঃ তোমার চিন্তার কোন কারণ নেই ইনশা আল্লাহ তুমি সুস্থ হয়ে যাবে। বেদুঈন বলল সুস্থতা? না, বরং এটি এমন জ্বর যা একজন প্রবীণ বুড়োকে সিদ্ধ করছে, ফলে তাকে কবরে নিয়ে ছাড়বে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ, তাহলে সেরূপই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৬৩ | 6963 | ٦۹٦۳

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৬৩। ইবনু সালাম (রহঃ) … আবূ কাতাদা তাঁর পিতা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। যখন তারা সালাত (নামায/নামাজ) থেকে ঘুমিয়ে ছিলেন তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেনঃ আল্লাহ তা’আলা যখন ইচ্ছা করেন তোমাদের রূহকে নিয়ে যান, আর যখন ইচ্ছা ফিরিয়ে দেন। এরপর তারা তাদের প্রয়োজন সেরে নিলেন এবং উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। এতে সূর্য উদিত হয়ে শ্বেতবর্ন হয়ে গেল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠলেন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৬৪ | 6964 | ٦۹٦٤

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৬৪। ইয়াহইয়া ইবনু কাযাআ ও ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা একজন মুসলমান ও একজন ইহুদি পরম্পর গালমন্দ করল। মুসলিম ব্যাক্তিটি বলল, সে মহান সত্তার কসম! যিনি জগতসমূহের ওপর মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মনোনীত করেছেন। এরপর ইহুদীটিও বলল, সে মহান সত্তার কসম! যিনি জগতসমুহের ওপর মূসা (আলাইহিস সালাম) কে মনোনীত করেছেন। এরপরই মুসলিম লোকটি হাত উঠিয়ে ইহুদীকে চপেটাঘাত করল। এই প্রেক্ষিতে ইহুদী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেল এবং তার ও মুসলিম ব্যাক্তির মধ্যে যা ঘটেছে তা জানাল। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা আমাকে মূসার উপর প্রাধান্য দিও না। কেননা, সব মানুষ (শিঙ্গায় ফুৎকারে) বেহুশ হয়ে যাবে। তখন সর্ব প্রথম আমি হুশ ফিরে পাব। পেয়েই দেখব, মূসা (আলাইহিস সালাম) আরশের একপাশ ধরে আছেন। অতএব আমি জানিনা, তিনি কি বেহুশ হয়ে আমার আগেই হুশ ফিরে পেয়ে গেলেন, নাকি তিনি তাঁদের অন্তর্ভুক্ত, যাদেরকে আল্লাহ বেহুশ হওয়া থেকে মুক্ত রেখেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৬৫ | 6965 | ٦۹٦۵

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৬৫। ইসহাক ইবনু আবূ ঈসা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দাজ্জাল মদিনার উদ্দেশ্যে আসবে, তবে সে ফেরেশতাদেরকে মদিনা পাহারারত দেখতে পাবে। সুতরাং দাজ্জাল ও প্লেগ মদিনার কাছেও আসতে পারবে না ইনশা আল্লাহ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৬৬ | 6966 | ٦۹٦٦

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৬৬। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক নাবীর একটি (বিশেষ) দোয়া রয়েছে। আমার সে দোয়টি কিয়ামতের দিন আমার উম্মতের শাফাআতের জন্য লুকিয়ে রাখার ইচ্ছা করছি ইনশা আল্লাহ।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৬৭ | 6967 | ٦۹٦۷

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৬৭। ইয়াসারা ইবনু সাফওয়ান ইবনু জামীল লাখিমী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদা আমি ঘুমন্ত অবস্থায় আমাকে একটি কূপের কাছে দেখতে পেলাম। তারপর আমি সে কূপ থেকে আল্লাহর ইচ্ছা অনুযাযী পানি ওঠালাম। তারপর আবূ কুহাফার পুত্র (আবূ বকর) তা (হাতে) নিলেন এবং তিনি এক বা দুই বালতি উঠালেন। তার ওঠানোর মধ্যে একটু দুর্বলতা ছিল। তাকে আল্লাহ মাফ করতন। তারপর উমর তা (হাতে) নিলেন। তখন তা বিরাট একটি বালতিতে রুপান্তরিত হল। আমি লোকের মধ্যে কোন সাহাবীরকেও তার মত পানি তুলতে আর দেখিনি। এমনকি লোকেরা কূপটির পার্শ্বে উটশালা তৈরী করে নিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৬৮ | 6968 | ٦۹٦۸

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৬৮। মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অভ্যাস ছিল, তার কাছে কোন ভিক্ষুক কিংবা অভাবী লোক এলে সাহাবাদের বলতেন, তোমরা তার জন্য সূপারিশ কর, এর প্রতিদান পাবে। আর আল্লাহ তাঁর রাসূলের মুখ দিয়ে তাই প্রকাশ করে থাকেন, যা তিনি চান।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৬৯ | 6969 | ٦۹٦۹

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৬৯। ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ এভাবে দোয়া করো না, হে আল্লাহ! আমাকে মাফ করে দাও, যদি তুমি চাও। আমার প্রতি রহম কর, যদি তুমি চাও। আমাকে তুমি দাও, যদি তুমি চাও। বরঞ্চ দোয়া প্রার্থী খুবই দৃঢ়তার সাথে প্রার্থনা করবে। কেননা তিনি যা চান তাই করেন। তাকে বাধ্য করার মত কেউ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৭০ | 6970 | ٦۹۷۰

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৭০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি এবং ইবনু ইবনু কায়স ইবনু হিসন ফাযারী (রাঃ) মূসা (আলাইহিস সালাম) এর সঙ্গীটি সম্পর্কে এ ব্যাপারে দ্বিমত করছিলেন যে, তিনি কি খাযির ছিলেন? এমন সময় তাদের পাশ দিয়ে উবায় ইবনু কাব আনসারী (রাঃ) যাচ্ছিলেন। আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) তাঁকে ডেকে বললেন, আমি এবং আমার এ বন্ধু মূসা (আলাইহিস সালাম) এর সথী সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছি। মূসা (আলাইহিস সালাম) যার সাথে সাক্ষাতের পথের সন্ধান চেয়েছিলেন। আপনি কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার সম্বন্ধে কিছু বলতে শুনেছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। অবশ্যই আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার সম্পর্কে উল্লেখ করে বলতে শুনেছি যে, এক সময় মূসা (আলাইহিস সালাম) বনী ইসরাঈলের একদল লোকের মধ্যে ছিলেন। এমন সময় জনৈক ব্যাক্তি তার কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলো, মূসা! আপনি কি জানেন, আপনার চাইতে অধিক জ্ঞানী কেউ আছেন?

মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ না। তারপর মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে ওহী অবতীর্ণ হল যে, হ্যাঁ। আছেন আমার বান্দা খাযির। তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) তার সাথে সাক্ষাতের পথ সম্পর্কে জানতে চাইলেন। সুতরাং আল্লাহ তা’আলা সেজন্য একটি মাছকে নিদর্শন স্বরূপ ঠিক করলেন এবং তাকে বলা হল মাছটিকে যখন হারিয়ে ফেলবে তখন সেদিকে ফিরে যাবে, তবে তুমি তার সাক্ষাৎ পাবে। এরই প্রেক্ষিতে মূসা (আলাইহিস সালাম) সাগরে মাছের চিহ্ন ধরে তালাশ করতে থাকলে মূসার সঙ্গী যুবকটি মূসাকে উদ্দেশ্য করে বলল, আমরা যখন শিলাখণ্ডে বিশ্রাম করলাম, তখন আমি মাছের কথা ভুলে গিয়েছিলাম। শয়তানই ওর কথা বলতে আমাকে ভূলিয়ে দিয়েছিল (১৮ঃ ৬৩)। মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ আমরা তো সেই স্থানটির অনুসন্ধান করছিলাম। তারপর তারা দু’জনেই নিজেদের পদচিহ্ন ধরে ফিরে চললো (১৮ঃ ৬৫)। তাদের এই দু’জনের ঘটনা যা ঘটলো, আল্লাহ তারই বর্ণনা দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৭১ | 6971 | ٦۹۷۱

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৭১। আবুল ইয়ামান ও আহমাদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেনঃ আমরা আগমী দিন বনী কিনানা গোত্রের উপত্যকায় অবস্থান করব ইনশা আল্লাহ, যে স্থানে কাফেরগণ কুফরীর উপর অটল থাকার শপথ নিয়েছিল। তিনি মুহাসসাবকে উদ্দেশ্য করছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৭২ | 6972 | ٦۹۷۲

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৩. আল্লাহ্‌র ইচ্ছা ও চাওয়া। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা ইচ্ছা করবে না যদি না আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করেন (৭৬ঃ ৩০)। আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা প্রদান কর (৩ঃ ২৬)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কখনই তুমি কোন বিষয়ে বলবে না, ‘আমি তা আগামী কাল করব, আল্লাহ্‌ ইচ্ছা করলে,’ এ কথা না বলে (১৮ঃ ২৩-২৪)। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি যাকে ভালবাস, ইচ্ছা করলেই তাকে সৎপথে আনতে পারবে না। তবে আল্লাহ্‌ যাকে চান তাকে সৎপথে আনয়ন করেন। (২৮ঃ ৫৬)। সাঈদ ইব্নুল মুসাইয়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা মুসাইয়্যাব থেকে বলেন, উপরোক্ত আয়াত আবূ তালিব সম্পর্কে নাযিল হয়েছে। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের জন্য যা সহজ তা চান এবং যা তোমাদের জন্য কষ্টকর তা চান না (২ঃ ১৮৫)
৬৯৭২। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়েফবাসীদেরকে ঘেরাও করলেন। তবে তা বিজয় করতে পারলেন না। এইজন্য তিনি বললেনঃ আমরা ইনশা আল্লাহ ফিরে ষাব। মুসলিমগণ বলে উঠল, “আমরা কি ফিরে যাবো? অথচ বিজয় হল না”। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আগামীকাল ভোরে যুদ্ধ কর। পরদিন তারা যুদ্ধ করল। বহু লোক আহত হল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনরায় বললেনঃ আমরা ইনশা আল্লাহ আগামী কাল ভোরে ফিরে যাব। এবারের উক্তিটি যেন মুসলিমগণের কাছে খুবই আনন্দের মনে হল। ফলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হাসলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৭৩ | 6973 | ٦۹۷۳

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৪. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ যাকে অনুমতি দেয়া হয়, সে ব্যতীত আল্লাহ্‌র কাছে কারো সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। পরে যখন তাদের অন্তর থেকে ভয় বিদূরিত হবে, তখন পরস্পরের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তোমাদের প্রতিপালক কি বললেন। তদুত্তরে তারা বলবে, যা সত্য তিনি তাই বলেছেন। তিনি সমুচ্চ মহান (৪৩ঃ ২৩)। আর এখানে এ কথা বলা হয়নি, তোমাদের প্রতিপালক কি সৃষ্টি করেছেন? আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেনঃ কে সে যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? (২ঃ ২৫৫)। বর্ণনাকারী মাসরুক (রহঃ) আবদুল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রাঃ) তাকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আল্লাহ্‌ যখন ওহীর দ্বারা বলেন, তখন আসমানের অধিবাসিগণ কিছু শুনতে পায়। তাদের অন্তর থেকে যখন ভয় দূর করে দেয়া হয়। আর ধ্বনি স্তিমিত হয়ে যায়। তখন তারা উপলদ্ধি করে যে, যা ঘটেছে তা অবশ্যই একটা বাস্তব সত্য। তারা পরস্পরকে এ কথা জিজ্ঞাসা করতে থাকে যে, তোমাদের প্রতিপালক কি বলেছেন? তারা বলে ‘হক’ বলেছেন জাবির (রাঃ) আবদুল্লাহ্ ইব্ন উনায়স (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি নবী (সাঃ) থেকে শুনেছি, আল্লাহ্‌ সমস্ত বান্দাকে হাশরে একত্রিত করে এমন আওয়াযে ডাকবেন যে, নিকটবর্তীদের মত দূরবর্তীরাও শুনতে পাবে। আল্লাহ্‌র ভাষ্য থাকবে আমি মহা সম্রাট আমি প্রতিদানকারী
৬৯৭৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তায়ালা যখন আসমানে কোন হুকুম জারি করেন ফেরেশতাগণ তার হুকুমের প্রতি বিনয় ও আনুগত্য প্রকাশার্থে স্বীয় পাখাসমূহ হেলাতে থাকেন। তাদের পাখার হেলানোর ধ্বনিটা যেন পাথরের উপর শিকলের ঝনঝনির ধ্বনি। বর্ণনাকারী আলী (রহঃ) এবং সাফওয়ান ব্যতীত অন্যরা বর্ণনা করেছেন। আল্লাহ যে হুকুম তাদের প্রতি জারি করেন। এরপর ফেরেশতাদের হদয় থেকে যখন ভীতী দূরীভূত করা হয় তখন তারা একে অপরকে বলতে থাকে, তোমাদের প্রতিপালক কি হুকুম জারি করেছেন? তারা বলেন, তিনি বলেছেন, হক। তিনি মহান ও সর্বোচ্চ।

বর্ণনাকারী আলী … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম فُزِّعَ‏ পড়েছেন। বর্ণনাকারী সুফিয়ান (রহঃ) বলেছেন যে, আমর (রহঃ)-ও এভাবেই পড়েছেন। তিনি বলেছেন, আমার- জানা নেই যে, বর্ণনাকারী এরূপ শুনেছেন কি না? তবে আমাদের কিরাআত এরূপই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৭৪ | 6974 | ٦۹۷٤

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৪. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ যাকে অনুমতি দেয়া হয়, সে ব্যতীত আল্লাহ্‌র কাছে কারো সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। পরে যখন তাদের অন্তর থেকে ভয় বিদূরিত হবে, তখন পরস্পরের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তোমাদের প্রতিপালক কি বললেন। তদুত্তরে তারা বলবে, যা সত্য তিনি তাই বলেছেন। তিনি সমুচ্চ মহান (৪৩ঃ ২৩)। আর এখানে এ কথা বলা হয়নি, তোমাদের প্রতিপালক কি সৃষ্টি করেছেন? আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেনঃ কে সে যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? (২ঃ ২৫৫)। বর্ণনাকারী মাসরুক (রহঃ) আবদুল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রাঃ) তাকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আল্লাহ্‌ যখন ওহীর দ্বারা বলেন, তখন আসমানের অধিবাসিগণ কিছু শুনতে পায়। তাদের অন্তর থেকে যখন ভয় দূর করে দেয়া হয়। আর ধ্বনি স্তিমিত হয়ে যায়। তখন তারা উপলদ্ধি করে যে, যা ঘটেছে তা অবশ্যই একটা বাস্তব সত্য। তারা পরস্পরকে এ কথা জিজ্ঞাসা করতে থাকে যে, তোমাদের প্রতিপালক কি বলেছেন? তারা বলে ‘হক’ বলেছেন জাবির (রাঃ) আবদুল্লাহ্ ইব্ন উনায়স (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি নবী (সাঃ) থেকে শুনেছি, আল্লাহ্‌ সমস্ত বান্দাকে হাশরে একত্রিত করে এমন আওয়াযে ডাকবেন যে, নিকটবর্তীদের মত দূরবর্তীরাও শুনতে পাবে। আল্লাহ্‌র ভাষ্য থাকবে আমি মহা সম্রাট আমি প্রতিদানকারী
৬৯৭৪। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাঁর কোন এক নাবী থেকে (মধুময় স্বরে) যেভাবে কুরআন শ্রবন করেছেন, সেভাবে আর কিছুই তিনি শোনেননি। আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর এক সাথী বলেছে, يَتَغَنَّى بِالْقُرْآنِ এর অর্থ আবূ হুরায়রা (রাঃ) উচ্চস্বরে কুরআন পড়া বোঝাতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৭৫ | 6975 | ٦۹۷۵

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৪. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ যাকে অনুমতি দেয়া হয়, সে ব্যতীত আল্লাহ্‌র কাছে কারো সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। পরে যখন তাদের অন্তর থেকে ভয় বিদূরিত হবে, তখন পরস্পরের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তোমাদের প্রতিপালক কি বললেন। তদুত্তরে তারা বলবে, যা সত্য তিনি তাই বলেছেন। তিনি সমুচ্চ মহান (৪৩ঃ ২৩)। আর এখানে এ কথা বলা হয়নি, তোমাদের প্রতিপালক কি সৃষ্টি করেছেন? আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেনঃ কে সে যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? (২ঃ ২৫৫)। বর্ণনাকারী মাসরুক (রহঃ) আবদুল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রাঃ) তাকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আল্লাহ্‌ যখন ওহীর দ্বারা বলেন, তখন আসমানের অধিবাসিগণ কিছু শুনতে পায়। তাদের অন্তর থেকে যখন ভয় দূর করে দেয়া হয়। আর ধ্বনি স্তিমিত হয়ে যায়। তখন তারা উপলদ্ধি করে যে, যা ঘটেছে তা অবশ্যই একটা বাস্তব সত্য। তারা পরস্পরকে এ কথা জিজ্ঞাসা করতে থাকে যে, তোমাদের প্রতিপালক কি বলেছেন? তারা বলে ‘হক’ বলেছেন জাবির (রাঃ) আবদুল্লাহ্ ইব্ন উনায়স (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি নবী (সাঃ) থেকে শুনেছি, আল্লাহ্‌ সমস্ত বান্দাকে হাশরে একত্রিত করে এমন আওয়াযে ডাকবেন যে, নিকটবর্তীদের মত দূরবর্তীরাও শুনতে পাবে। আল্লাহ্‌র ভাষ্য থাকবে আমি মহা সম্রাট আমি প্রতিদানকারী
৬৯৭৫। উমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াস (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা আদমকে বলবেন, হে আদম! আদম (আলাইহিস সালাম) উত্তরে বলবেন, ইয়া আল্লাহ! তোমার নিকটে আমি হাযির, তোমার নিকটে আমি বহু ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি। এরপর আল্লাহ তাকে এ স্বরে ডাকবেন, অবশ্যই আল্লাহ তোমাকে হুকুম করছেন, তোমার সন্তানদের মধ্য থেকে জাহান্নামে পাঠানোর জন্য একটি দলকে তুমি বের কর।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৭৬ | 6976 | ٦۹۷٦

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৪. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ যাকে অনুমতি দেয়া হয়, সে ব্যতীত আল্লাহ্‌র কাছে কারো সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না। পরে যখন তাদের অন্তর থেকে ভয় বিদূরিত হবে, তখন পরস্পরের মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তোমাদের প্রতিপালক কি বললেন। তদুত্তরে তারা বলবে, যা সত্য তিনি তাই বলেছেন। তিনি সমুচ্চ মহান (৪৩ঃ ২৩)। আর এখানে এ কথা বলা হয়নি, তোমাদের প্রতিপালক কি সৃষ্টি করেছেন? আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেনঃ কে সে যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? (২ঃ ২৫৫)। বর্ণনাকারী মাসরুক (রহঃ) আবদুল্লাহ্ ইবন মাসউদ (রাঃ) তাকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, আল্লাহ্‌ যখন ওহীর দ্বারা বলেন, তখন আসমানের অধিবাসিগণ কিছু শুনতে পায়। তাদের অন্তর থেকে যখন ভয় দূর করে দেয়া হয়। আর ধ্বনি স্তিমিত হয়ে যায়। তখন তারা উপলদ্ধি করে যে, যা ঘটেছে তা অবশ্যই একটা বাস্তব সত্য। তারা পরস্পরকে এ কথা জিজ্ঞাসা করতে থাকে যে, তোমাদের প্রতিপালক কি বলেছেন? তারা বলে ‘হক’ বলেছেন জাবির (রাঃ) আবদুল্লাহ্ ইব্ন উনায়স (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, আমি নবী (সাঃ) থেকে শুনেছি, আল্লাহ্‌ সমস্ত বান্দাকে হাশরে একত্রিত করে এমন আওয়াযে ডাকবেন যে, নিকটবর্তীদের মত দূরবর্তীরাও শুনতে পাবে। আল্লাহ্‌র ভাষ্য থাকবে আমি মহা সম্রাট আমি প্রতিদানকারী
৬৯৭৬। উবায়দ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন মহিলার ব্যাপারে আমি এতটুকু ঈর্ষা বোধ করিনি, যতটুকু খাদিজা (রাঃ) এর ব্যাপারে করেছি। আর তা এ জন্য যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতিপালক তাকে হুকুম দিয়েছেন যে, খাদিজা (রাঃ) কে জান্নাতের একটি ঘরের সুসংবাদ দিয়ে দিন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৭৭ | 6977 | ٦۹۷۷

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৫. জিবরীলের সাথে প্রতিপালকের কথাবার্তা, ফেরেশতাদের প্রতি আল্লাহ্‌র আহবান। মা’মার (রহঃ) বলেন, إِنَّكَ لَتُلَقَّى الْقُرْآنَ এর অর্থ হচ্ছে তোমার উপর কুরআন নাযিল করা হয়। تَلَقَّاهُ أَنْتَ এর অর্থ তুমি কুরআন তাদের কাছ থেকে গ্রহণ কর। যেমন বলা হয়েছে فَتَلَقَّى آدَمُ مِنْ رَبِّهِ كَلِمَاتٍ আদম (আঃ) তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ থেকে কয়েকটি বাণী গ্রহণ করলেন
৬৯৭৭। ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ যখন কোন বান্দাকে ভালবাসেন, তখন তিনি জিবরীলকে ডেকে বলেন, আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালবাসেন, তাই তুমিও তাকে ভালবাস। সুতরাং জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাকে ভালবাসেন। তারপর জিবরীল (আলাইহিস সালাম) আসমানে এ ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহ অমুক বান্দাকে ভালবাসেন, তোমরাও তাকে ভালবাসা তখন তাকে আসমানবাসীরা ভালবাসে এবং যমীনবাসীদের মাঝেও তাকে মকবুল করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৭৮ | 6978 | ٦۹۷۸

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৫. জিবরীলের সাথে প্রতিপালকের কথাবার্তা, ফেরেশতাদের প্রতি আল্লাহ্‌র আহবান। মা’মার (রহঃ) বলেন, إِنَّكَ لَتُلَقَّى الْقُرْآنَ এর অর্থ হচ্ছে তোমার উপর কুরআন নাযিল করা হয়। تَلَقَّاهُ أَنْتَ এর অর্থ তুমি কুরআন তাদের কাছ থেকে গ্রহণ কর। যেমন বলা হয়েছে فَتَلَقَّى آدَمُ مِنْ رَبِّهِ كَلِمَاتٍ আদম (আঃ) তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ থেকে কয়েকটি বাণী গ্রহণ করলেন
৬৯৭৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়য়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মাঝে ফেরেশতাগন আসেন, একদল রাতে এবং একদল দিনে। তারা আবার একত্রিত হন আসরের সালাত (নামায/নামাজ) ও ফজরের সালাতে। তারপর তোমাদের মাঝে যারা রাতে ছিলেন তাঁরা ঊর্ধ্ব জগতে চলে যান। তখন আল্লাহ তাদেরকে জিজ্ঞাসা করেন, অথচ তিনি সবচাইতে বেশি জানেন, তোমরা আমার বান্দাদেরকে কি হালে রেখে এসেছ? তখন তারা বলেন, আমরা তাদেরকে সালাত (নামায/নামাজ)রত অবস্থায় ছেড়ে এসেছি আর যখন আমরা তাদের কাছে গিয়েছিলাম, তখনও তারা সালাত (নামায/নামাজ)রত অবস্থায়ই ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৭৯ | 6979 | ٦۹۷۹

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৫. জিবরীলের সাথে প্রতিপালকের কথাবার্তা, ফেরেশতাদের প্রতি আল্লাহ্‌র আহবান। মা’মার (রহঃ) বলেন, إِنَّكَ لَتُلَقَّى الْقُرْآنَ এর অর্থ হচ্ছে তোমার উপর কুরআন নাযিল করা হয়। تَلَقَّاهُ أَنْتَ এর অর্থ তুমি কুরআন তাদের কাছ থেকে গ্রহণ কর। যেমন বলা হয়েছে فَتَلَقَّى آدَمُ مِنْ رَبِّهِ كَلِمَاتٍ আদম (আঃ) তাঁর প্রতিপালকের পক্ষ থেকে কয়েকটি বাণী গ্রহণ করলেন
৬৯৭৯। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ যর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার কাছে জিবরীল (আলাইহিস সালাম) এসে এ সুসংবাদ দিল যে, আল্লাহর সাথে শরীক না করে যদি কেউ মারা যায়, তবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, চুরি ও যিনা করলেও কি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ চুরি ও যিনা করলেও।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৮০ | 6980 | ٦۹۸۰

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৬. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তা তিনি জেনেশুনে অবতীর্ণ করেছেন। আর ফেরেশতারা এর সাক্ষী (৪ঃ ১৬৬)। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, ‘ওদের মধ্যে নেমে আসে তাঁর নির্দেশ’ (৬৫ঃ ১২) (এর অর্থ) সপ্তম আকাশ ও সপ্তম যমীনের মধ্যখানে
৬৯৮০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … বারআ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা বলেছেনঃ হে অমুক! যখন তুমি তোমার শয্যা গ্রহন করতে যাবে তখন বলবে, হে আল্লাহ! আমি আমার নিজকে তোমারই কাছে সমর্পণ করছি। আমার চেহারাকে তোমার দিকে ফিরাচ্ছি! আমার কর্ম তোমার কাছে সোপর্দ করছি। আমার নির্ভরশীলতা তোমারই প্রতি আশা ও ভয় উভয় অবস্থায়। তোমার কাছে ছাড়া আর কোথাও আশ্রয় ও মুক্তির জায়গা নেই। আমি ঈমান এনেছি তোমার কিতাবের প্রতি যা তুমি অবতীর্ণ করেছ এবং তোমার নাবীর প্রতি যাকে তুমি প্রেরণ করেছ। অনন্তর এ রাত্রিতে যদি তোমার মৃত্যু হয়, তা হলে ফিতরাতের ওপর তোমার মৃত্যু হবে। আর যদি (জীবিতাবস্থায়) তোমার ভোর হয়, তুমি কল্যাণের অধিকারী হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৮১ | 6981 | ٦۹۸۱

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৬. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তা তিনি জেনেশুনে অবতীর্ণ করেছেন। আর ফেরেশতারা এর সাক্ষী (৪ঃ ১৬৬)। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, ‘ওদের মধ্যে নেমে আসে তাঁর নির্দেশ’ (৬৫ঃ ১২) (এর অর্থ) সপ্তম আকাশ ও সপ্তম যমীনের মধ্যখানে
৬৯৮১। কুতায়রা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহযাব দিবসে বলেছেনঃ কিতাব অবতীর্ণকারী, দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী আল্লাহ তুমি দলসমূহকে পরাভূত কর এবং তাদেরকে কম্পিত কর। অতিরিক্ত এক বর্ননায় হুমায়দী (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৮২ | 6982 | ٦۹۸۲

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৬. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তা তিনি জেনেশুনে অবতীর্ণ করেছেন। আর ফেরেশতারা এর সাক্ষী (৪ঃ ১৬৬)। মুজাহিদ (রহঃ) বলেছেন, ‘ওদের মধ্যে নেমে আসে তাঁর নির্দেশ’ (৬৫ঃ ১২) (এর অর্থ) সপ্তম আকাশ ও সপ্তম যমীনের মধ্যখানে
৬৯৮২। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি কুরআনের নিন্নোক্ত আয়াতঃ তুমি সালাতে স্বর উচু করবে না এবং অতিশয় ক্ষীণও করবে না …… (১৭ঃ ১১০)। এর তাফসীরে তিনি বলেনঃ এ আয়াতটি তখন অবতীর্ণ হয়, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মকায় লুক্কায়িত ছিলেন। সুতরাং যখন তিনি তাঁর স্বর উঁচু করতেন তাতে মুশরিকরা শুনে গালমন্দ করত কুরআনকে কুরআন অবতীর্ণকারীকে এবং যার প্রতি কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে তাঁকে। এ প্রেক্ষিতে আল্লাহ বললেনঃ (হে নাবী) তুমি সালাতে তোমার স্বর উঁচু করবে না, যাতে মুশরিকরা শুনতে পায়। আর তা অতিশয় ক্ষীণও করবে না যাতে তোমার সঙ্গীরাও শুনতে না পায়। এই দু’য়ের মধ্যপথ অবলম্বন কর। তুমি স্বর উঁচু করবে না, তারা শুনে পাঠ করবে যেন তারা তোমার কাছ থেকে কুরআন শিখতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৮৩ | 6983 | ٦۹۸۳

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৮৩। হুমায়দী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেন আমাকে আদম সন্তান কষ্ট দিয়ে থাকে। কারণ তারা কালকে গালি দেয়। পক্ষান্তরে আমিই দাহর বা কাল। কেননা আমার হাতেই সব বিষয়। আমিই রাত ও দিনের পরিবর্তন ঘটাই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৮৪ | 6984 | ٦۹۸٤

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৮৪। আবূ নুআঈম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ঘোষণা করেন যে, রোযা আমার জন্যই, আর আমিই এর প্রতিদান দেব। যেহেতু সে আমারই সন্তুষ্টি লাভের উদেশ্যে তার প্রবৃত্তি, পান ও আহার ত্যাগ করেছে। আর রোযা হচ্ছে, ঢাল। রোযা পালনকারীর জন্য রয়েছে দু’টি আনন্দ। এক আনন্দ হল যখন সে ইফতার করে, আর এক আনন্দ হলো যখন সে তার প্রতিপালকের সাথে মিলিত হবে। আল্লাহর কাছে রোযা পালনকারী মুখের গন্ধ মিস্‌কের সুগন্ধির চেয়েও উত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৮৫ | 6985 | ٦۹۸۵

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৮৫। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদা আইউব (আলাইহিস সালাম) বিবস্ত্র অবস্থায় গোসল করছিলেন। তখন স্বর্ণের একদল পঙ্গপাল তার উপর পতিত হলে তিনি তা তাঁর কাপড়ে ভরতে থাকেন। তখন তার প্রতিপালক আহবান করে বললেনঃ হে আইউব! তুমি যা দেখছ, এর থেকে তোমাকে কি আমি অভাবমুক্ত করিনি? আইউব (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ হ্যাঁ হে আমার প্রতিপালক! তবে তোমার বরকত থেকে আমি অভাবমুক্ত নই।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৮৬ | 6986 | ٦۹۸٦

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৮৬। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদের প্রতিপালক প্রতি রাতের যখন রাতের শেষ তৃতীয়াং অবশিষ্ট থাকে তখন পৃথিবীর আসমানে অবতরণ করেন এবং বলেনঃ আমার কাছে যে দোয়া করবে, আমি তার দোয়া গ্রহণ করব। আমার কাছে যে চাইবে, আমি তাকে দান করব। আমার কাছে যে মাগফিরাত প্রার্থনা করবে তাকে আমি মাফ করে দেব।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৮৭ | 6987 | ٦۹۸۷

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৮৭। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন। আমরা পৃথিবীতে সর্বশেষ আগমনকারী, তবে কিয়ামতের দিন আমরাই থাকব অগ্রগামী। হাদীসটির এ সনদে আরো আছে যে, আল্লাহ বলেন, তুমি খরচ কর, তা হলে আমিও তোমার ওপর খরচ করব।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৮৮ | 6988 | ٦۹۸۸

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৮৮। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জিবরীল (আলাইহিস সালাম) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেনঃ এই তো খাদিজা আপনার জন্য একটি পাত্র ভর্তি খাবার করে নিয়ে এসেছেন। বর্ননাকারী সন্দেহে বলেছেন, অথবা পাত্র নিয়ে এসেছেন, যাতে পানীয় রয়েছে। আপনি তাঁকে তার রবের পক্ষ থেকে সালাম করুন। আর তাঁকে এমন একটি (প্রশস্ত অব্যন্তর শূন্য) মোতির তৈরি প্রাসাদের সুসংবাদ দিন, যেখানে শোরগোল বা ক্লেশ থাকবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৮৯ | 6989 | ٦۹۸۹

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৮৯। মু’আয ইবনু আসা’দ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ঘোষণা করলেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য এমন বস্তু প্রস্তুত করে রেখেছি, যা কোন চোখ কখনো দেখেনি, কোন কান কখনো শোনেনি, এমনকি কোন মানুষের অন্তরে কল্পনায়ও আসেনি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৯০ | 6990 | ٦۹۹۰

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৯০। মাহমুদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে যখন তাহাজ্জুদের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন তখন এ দোয়া করতেনঃ হে আল্লাহ! সব প্রশংসা একমাত্র তোমারই, তুমিই আসমান ও যমীনের নূর। তোমারই সমন্ত প্রশংসা, তুমিই আসমান ও যমীনের একমাত্র পরিচালক। তোমারই সব প্রশংসা, তুমিই আসমান ও যমীন এবং এ দু’য়ের মধ্যে বিদ্যমান সব কিছুর প্রতিপালক। তুমি মহাসত্য। তোমার প্রতিশ্রুতি সত্য। তোমার বাণী সত্য। তোমার সাক্ষাৎ সত্য। জান্নাত সত্য। জাহান্নাম সত্য। নাবীগণ সত্য। কিয়ামত সত্য। হে আল্লাহ! তোমারই জন্য আনুগত্য (ইসলাম) স্বীকার করি। তোমারই প্রতি ঈমান আনি। তোমারই ওপর তাওয়াক্কুল করি এবং তোমারই দিকে রুজু করি। তোমারই উদ্দেশ্যে বিতর্ক করি। তোমার কাছেই আমি ফায়সালা চাই। সুতরাং আমার আগের ও পরের গোপনীয় ও প্রকাশ্য সর্বপ্রকার গুনাহ মাফ করে দাও। তুমিই আমার একমাত্র মাবুদ। তুমি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৯১ | 6991 | ٦۹۹۱

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৯১। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … উরওয়া ইবনু যুবায়র, সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব, আলকামা ইবনু ওয়াক্কাস ও উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) এর ঘটনা সম্পর্কে বর্ণনা করেন। যখন অপবাদ রটনাকারীরা তার সম্পর্কে যা বলার তা বলল। তখন আল্লাহ তা’আলা তাদের অপবাদ থেকে তাকে পবিত্র বলে ঘোষণা দিলেন। বর্ণনাকারী বলেন, আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণনাকারীদের প্রত্যেকে হাদীসটির কিছু কিছু অংশ আমাকে বর্ণনা করেছেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, কিন্তু আল্লাহর কসম! আমি ধারণাও করিনি যে, আল্লাহ আমার পবিত্রতার সপক্ষে এমন ওহী অবতীর্ণ করবেন যা তিলাওয়াত করা হবে। আমার মর্যাদা আমার কাছে এর চাইতে তুচ্ছ ছিল যে, আল্লাহ তা’আলা আমার বিষয়ে এমন কোন কালাম করবেন যা তিলাওয়াত করা হবে। তবে আমি আশা করতাম যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বপ্নে এমন কিছু দেখবেন, যাদ্দ্বারা আল্লাহ আমার পবিত্রতা ঘোযণা করবেন। অথচ আল্লাহ অবতীর্ন করলেনঃ যারা অপবাদ রটনা করেছে … থেকে দশটি আয়াত (১০ঃ ২১)।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৯২ | 6992 | ٦۹۹۲

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৯২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ বলেনঃ আমার বান্দা কোন গুনাহর কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করে। তা না করা পর্যন্ত তার গুনাহ লেখো না। আর যদি তা করেই ফেলে, তাহলে তা সমপরিমাণ লেখা হয়। আর যদি আমার কারণে তা পরিহার করে, তাহলে তার পক্ষে একটি নেকী লিখে এবং যদি বান্দা কোন ভাল কাজের ইচ্ছা করে কিন্তু তা না করে, তবুও তোমরা তার জন্য একটি নেকী লিপিবদ্ধ করবে। তারপর যদি তা সম্পাদন করে, তবে তোমরা তার জন্য কাজটির দশ গুন থেকে সাতশ গুন পর্যন্ত লেখো।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৯৩ | 6993 | ٦۹۹۳

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৯৩। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তো সমস্ত সৃষ্টিকে পয়দা করলেন। তারপর যখন তিনি এর থেকে অবসর হলেন তখন “রাহিম” (আত্নীয়তার বন্ধন) উঠে দাঁড়াল। আল্লাহ সেটিকে লক্ষ্য করে বললেনঃ তুমি থাম। আত্নীয়তার-বন্ধন তখন বলল, আমাকে ছিন্নকারী থেকে পানাহ প্রার্থনার স্থল এটিই। এতে আল্লাহ ঘোষনা করলেন, তুমি এতে রাযী নও কি? যে ব্যাক্তি তোমার সাথে সৎভাব রাখবে আমিও তার সাথে সৎভাব রাখব। আর যে তোমাকে ছিন্ন করবে, আমিও তাকে ছিন্ন করব। সে বলল, আমি এতে সত্তুষ্ট, হে প্রতিপালক! আল্লাহ বললেনঃ তা-ই তোমার জন্য। তারপর আবূ হুরায়রা (রাঃ) তিলাওয়াত করলেনঃ ‏فَهَلْ عَسَيْتُمْ إِنْ تَوَلَّيْتُمْ أَنْ تُفْسِدُوا فِي الأَرْضِ وَتُقَطِّعُوا أَرْحَامَكُمْ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে সম্ভবত তোমরা বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং তোমাদের আত্নীয়তার বন্ধন ছিন্ন করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৯৪ | 6994 | ٦۹۹٤

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৯৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … যায়িদ ইবনু খালিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সময় একবার বৃষ্টি হলো। তিনি বললেনঃ আল্লাহ বলছেন, বৃষ্টিকে কেন্দ্র করে) আমার বান্দাদের কিছু সংখ্যক আমার সাথে কুফরী করছে, আর কিছু সংখ্যক ঈমান এনেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৯৫ | 6995 | ٦۹۹۵

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৯৫। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ বলেনঃ আমার বান্দা আমার সাক্ষাৎ পছন্দ করলে আমিও তার সাক্ষাত পছন্দ করি। আর সে আমার সাক্ষাতকে অপছন্দ করলে আমিও তার সাক্ষাতকে অপছন্দ করি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৯৬ | 6996 | ٦۹۹٦

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৯৬। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ইরশাদ করেনঃ আমার বিষয়ে আমার বান্দার ধারণার অনুরূপ ব্যবহার করে থাকি।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৯৭ | 6997 | ٦۹۹۷

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৯৭। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জনৈক ব্যাক্তি (জীবনেও) কোন ভাল আমল করেনি। মৃত্যুর সময় সে বলল, মারা যাওয়ার পর তোমরা তাকে পুড়িয়ে ফেল। আর অর্ধেক স্থলে আর অর্ধেক সাগরে ছড়িয়ে দাও। সে আরো বলল, আল্লাহর কসম! আল্লাহ যদি তাকে পেয়ে যান তাহলে অবশ্যই তাকে এমন শাস্তি দিবেন যা জগতসমুহের আর কাউকে দিবেন না। তারপর আল্লাহ সাগরকে হুকুম দিলে সাগর এর মধ্যকার অংশকে একত্রিত করল। স্থলকে হুকুম দিলে সেও তার মধ্যকার অংশ একত্রিত করল। তারপর আল্লাহ বললেনঃ তুমি কেন এরুপ করলে? সে উত্তর করল, তোমার ভয়ে। আর তুমি অধিক জ্ঞাত। এর প্রেক্ষিতে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৯৮ | 6998 | ٦۹۹۸

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৯৮। আহমাদ ইবনু ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছি, এক বান্দা গুনাহ করল। বর্ণনাকারী أَصَابَ ذَنْبًا না বলে কখনো أَذْنَبَ ذَنْبًا বলেছেন। তারপর সে বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমি তো গুনাহ করে ফেলেছি। বর্ণনাকারী أَذْنَبْتُ এর স্থলে কখনো أَصَبْتُ বলেছেন। তাই আমার গুনাহ মাফ করে দাও। তার প্রতিপালক বললেনঃ আমার বান্দা কি একথা জেনেছে যে, তার রয়েছে একজন প্রতিপালক যিনি গুনাহ মাফ করেন এবং এর কারণে শাস্তিও দেন। আমার বান্দাকে আমি ক্ষমা করে দিলাম। তারপর সে আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী কিছুকাল অবস্থান করল এবং সে আবার গুনাহতে লিপ্ত হল। বর্ণনাকারীর সন্দেহ أَصَابَ ذَنْبًا কিংবা أَذْنَبَ ذَنْبًا বলা হয়েছে। বান্দা আবার বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমি তো আবার গুনাহ করে বসেছি। এখানে أَذْنَبْتُ কিংবা أَصَبْتُ বলা হয়েছে। আমার এ গুনাহ তুমি ক্ষমা করে দাও। এর প্রেক্ষিতে আল্লাহ পাক বললেনঃ আমার বান্দা কি জেনেছে যে, তার রয়েছে একজন প্রতিপালক যিনি গুনাহ মাফ করেন এবং এর কারণ শাস্তিও দেন। আমি আমার বান্দার গুনাহ মাফ করে দিয়েছি এরপর সে বান্দা আল্লাহর ইচ্ছানুযায়ী কিছুদিন সে অবস্থায় অবস্থান করল। আবারও সে গুনাহতে লিপ্ত হয়ে গেল। এখানে أَذْنَبَ ذَنْبًا কিংবা أَصَابَ ذَنْبًا বলা হয়েছে। সে বলল, হে আমার প্রতিপালক! আমি তো আরো একটি গুনাহ করে ফেলেছি। এখানে أَصَبْتُ কিংবা أَذْنَبْتُ বলা হয়েছে। আমার এ গুনাহ ক্ষমা করে দাও। তখন আল্লাহ বললেনঃ আমার বান্দা কিছু জেনেছে যে, তার একজন প্রতিপালক রয়েছেন, যিনি গুনাহ ক্ষমা করেন এবং এর কারণে শান্তিও দেন। আমি আমার এ বান্দাকে ক্ষমা করে দিলাম। এরূপ তিনবার বললেন।

হাদিস নম্বরঃ ৬৯৯৯ | 6999 | ٦۹۹۹

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৬৯৯৯। আবদুল্লাহ ইবনু আবুল আসওয়াদ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অতীত যুগের এক ব্যাক্তি সম্পর্কে আলোচনা করলেন। অথবা তিনি বলেছেনঃ তোমাদের পূর্বে যারা ছিলেন তাদের এক ব্যাক্তি তিনি তার সম্পর্কে বললেন, অর্থাৎ আল্লাহ তাকে সম্পদ ও সন্তান দান করলেন। যখন তার মৃত্যু উপস্থিত হল তখন সে তার সন্তানদেরকে বলল, আমি তোমাদের জন্য কেমন পিতা ছিলাম? তারা বলল, উত্তম পিতা। তখন সে বলল, সে যে আল্লাহর কাছে কোন প্রকার নেক আমল রেখে যেতে পারেনি। এখান لَمْ يَبْتَئِرْ কিংবা لَمْ يَبْتَئِزْ বলেছেন। অতএব, আল্লাহ (তার উপর) সমর্থ হলে, অবশ্যই তাকে আযাব দিবেন। অতএব তোমরা লক্ষ্য রাখবে, আমার মৃত্যু হলে তোমরা আমাকে আগুনে পুড়িয়ে দেবে। এরপর যখন আমি কয়লা হয়ে যাব, তখন ছাই করে ফেলবে। বর্ণনাকারী এখানে فَاسْحَقُونِي কিংবা فَاسْحَكُونِي বলেছেন। তারপর যেদিন প্রচুর বাতাসের দিন হবে সেদিন বাতাসে উড়িয়ে দেবে।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ পিতা এ বিষয়ে সন্তানদের থেকে প্রতিশ্রুতি গ্রহণ করল। আমার প্রতিপালকের কসম! সন্তানরা তাই করল। এক প্রচণ্ড বাতাসের দিনে তাকে ছড়িয়ে দিল। তারপর মহান আল্লাহ নির্দেশ দিলেন। তুমি অতিতে এসে যাও। তৎক্ষণাৎ সে উঠে দাঁড়াল। মহান আল্লাহ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আমার বান্দাহ তুমি যা করেছ তা কেন করলে? সে উত্তর করল, তোমার ভয়ে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এর বিনিময়ে তাকে মাফ করে দিলেন। রাবী আবার অন্য বর্ণনায় বলেছেন, আল্লাহ ক্ষমা দ্বারাই এর বিনিময় দিলেন। বর্ননাকারী বলেন, আমি এ হাদীস আবূ উসমানের কাছে বর্ণনা করলে তিনি বললেন, আমি হাদীসটি সালমান (রাঃ) থেকে শুনেছি। তবে তিনি এটুকু সংযোগ করেছেন, أَذْرُونِي فِي الْبَحْرِ আমাকে সমুদ্রে ছড়িয়ে দাও। রাবী বলেন, কিংবা তিনি বলেছেন, অথবা যেরূপ তিনি বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৭০০০ | 7000 | ۷۰۰۰

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৭. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ তারা আল্লাহ্‌র প্রতিশ্রুতি পরিবর্তন করতে চায় (৪৮ঃ ১৫) لَقَوْلٌ فَصْلٌ অর্থাৎ চিরসত্য। وَمَا هُوَ بِالْهَزْلِ এর অর্থ কুরআন খেল-তামাশার বস্তু নয়
৭০০০। মূসা (রহঃ) … মুতামির (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি لَمْ يَبْتَئِرْ বর্ণনা করেছেন। খালীফা (রহঃ) মূতামির থেকে لَمْ يَبْتَئِزْ বর্ণনা করেছেন। কাতাদা (রহঃ) এ সবের বিশ্লেষণ করেছেন لَمْ يَدَّخِرْ অর্থাৎ ‘সঞ্চয় করেনি’ দ্বারা।

হাদিস নম্বরঃ ৭০০১ | 7001 | ۷۰۰۱

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৮. কিয়ামতের দিনে নবী ও অপরাপরের সাথে মহান আল্লাহ্‌র কথাবার্তা
৭০০১। ইউসুফ ইবনু রাশিদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের দিন যখন আমাকে সুপারিশ করার অনুমতি দেওয়া হবে তখন আমি বলব, হে আমার প্রতিপালক! যার অন্তরে এক সরিষা পরিমাণ ঈমান আছে, তাকে তুমি জান্নাতে দাখিল করো। তারপর তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করা হবে। তারপর আমি বলব, তাকেও জান্নাতে প্রবেশ করাও, যার অন্তরে সামান্য ঈমানও আছে। আনাস (রাঃ) বলেনঃ আমি যেন এখনো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতের আঙুলগুলো দেখছি।

হাদিস নম্বরঃ ৭০০২ | 7002 | ۷۰۰۲

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৮. কিয়ামতের দিনে নবী ও অপরাপরের সাথে মহান আল্লাহ্‌র কথাবার্তা
৭০০২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … মাবাদ ইবনু হিলাল আল আনাযী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা বসরার অধিবাসী কিছু লোক একত্রিত হয়ে আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর কাছে গেলাম। আমাদের সাথে সাবিত (রাঃ) কে নিলাম, যাতে তিনি আমাদের কাছে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত শাফাআত সম্পর্কে হাদীস জিজ্ঞাসা করেন। আমরা তাকে তার মহলেই চাশতের সালাত (নামায/নামাজ) আদায়রত পেলাম। তার কাছে প্রবেশের অনুমতি চাইলে তিনি আমাদেরকে অনুমতি দিলেন। তখন তিনি তার বিছানায় বসা অবস্থায় আছেন। অতঃপর আমরা সাবিত (রাঃ) কে অনুরোধ করলাম, তিনি যেন শাফাআতের হাদীসটি জিজ্ঞাসার পূর্বে অন্য কিছু জিজ্ঞাসা না করেন। তখন সাবিত (রাঃ) বললেন, হে আবূ হামযা! এরা বসরাবাসী আপনার ভাই, তারা শাফাআতের হাদীস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে এসেছে।

তারপর আনাস (রাঃ) বললেন, আমাদের কাছে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, কিয়ামতের দিন মানুষ সমুদ্রের ঢেউয়ের মত ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়বে। তাই তারা আদম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে এসে বলবে, আমাদের জন্য আপনার প্রতিপালকের কাছে সুপারিশ করুন। তিনি বলবেনঃ এ কাজের জন্য আমি নই। বরং তোমরা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে যাও। কেননা, তিনি হলেন আল্লাহর খলীল।

তখন তারা ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে আসবে। তিনি বলবেনঃ আমি এ কাজের জন্য নই। তবে তোমরা মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে যাও। কারণ তিনি আল্লাহর সাথে বাক্যালাপ করেছেন। তখন তারা মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে আসবে তিনি বলবেনঃ আমি তো এ কাজের জন্য নই। তোমরা বরং ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে যাও। যেহেতু তিনি আল্লাহর রুহ ও বাণী।

তারা তখন ঈসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে আসবে। তিনি বলবেন আমি তো এ কাজের জন্য নই। তোমরা বরং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে যাও। এরপর তারা আমার কাছে আসবে। আমি বলব, আমিই এ কাজের জন্য। আমি তখন আমার প্রতিপালকের কাছে অনুমতি চাইব। আমাকে অনুমতি দেওয়া হবে। আমাকে প্রশংসা সম্বলিত বাক্য ইলহাম করা হবে। যা দিয়ে আমি আল্লাহর প্রশংসা করব, যেগুলো এখন আমার জানা নেই। আমি সেসব প্রশংসা বাক্য দিয়ে প্রশংসা করব এবং সিজদায় পড়ে যাব। তখন আমাকে বলা হবে, ইয়া মুহাম্মাদ! মাথা ওঠাও। তুমি বল, তোমার কথা শোনা হবে। চাও, তা দেওয়া হবে। সুপারিশ কর, গ্রহণ করা হবে।

তখন আমি বলবো, হে আমার প্রতিপালক! আমার উম্মাত! আমার উম্মাত! বলা হবে, যাও, যাদের হৃদয়ে যবের দানা পরিমান ঈমান আছে, তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের করে দাও, আমি যেয়ে এমনই করব। তারপর আমি ফিরে আসব এবং পুনরায় সেসব প্রশংসা বাক্য দ্বারা আল্লাহর প্রশংসা করবো এবং সিজদায় পড়ে যাবো। তখন বলা হবে, ইয়া মুহাম্মাদ! মাথা ওঠাও। তোমার কথা শোনা হবে। চাও, দেয়া হবে। সুপারিশ কর, গ্রহন করা হবে। তখনো আমি বলব, হে আমার প্রতিপালক! আমার উম্মাত! আমার উম্মাত! অতঃপর বলা হবে, যাও, যাদের এক অনু কিংবা সরিষা পরিমাণ ইমান আছে তাদেরকে জাহান্নাম থেকে বের কর। আমি গিয়ে তাই করব।

আমি পুনরায় প্রত্যাবর্তন করবো এবং সেসব প্রশংসা বাক্য দিয়ে আল্লাহর প্রশংসা করবো। আর সিজদায় পড়ে যাবো। আমাকে বলা হবে, ইয়া মুহাম্মাদ! মাথা উঠাও। বল, তোমার বক্তব্য শোনা হবে। চাও, দেওয়া হবে। সুপারিশ কর, গ্রহণ করা হবে। আমি তখন বলবো, হে আমার প্রতিপালক, আমার উম্মাত, আমার উম্মাত। এরপর আল্লাহ বলবেন, যাও, যাদের অন্তরে সরিষার দানা অপেক্ষা ক্ষুদ্র পরিমাণও ঈমান থাকে, তাদেরকেও জাহান্নাম থেকে বের করে আন। আমি যাবো এবং তাই করবো। আমরা যখন আনাস (রাঃ) এর নিকট থেকে বের হয়ে আসছিলাম, তখন আমি আমার সাথীদের কোন একজনকে বললাম, আমরা যদি আবূ খলীফার বাড়িতে আত্নগোপনরত হাসান বসরীর কাছে গিয়ে আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর বর্ণিত হাদীসটি তাঁর কাছে বর্ণনা করতাম।

এরপর আমরা হাসান বসরীর কাছে এসে তাকে অনুমতির সালাম দিলাম। তিনি আমাদেরকে প্রবেশ করতে অনুমতি দিলেন। আমরা তাকে বললাম, হে আবূ সাঈদ! আমরা আপনারই ভাই আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর কাছ থেকে আপনার কাছে আসলাম। শাফাআত সম্পর্কে তিনি যেরূপ বর্ণনা দিয়েছেন, অনুরূপ বর্ণনা করতে আর আর কাউকে দেখিনি। তিনি বললেনঃ আমার কাছে সেটি বর্ণনা কর। আমরা তাঁকে হাদীসটি বর্ণনা করে শোনালাম। এরপর আমরা শেষস্থলে এসে বর্ণনা শেষ করলাম। তিনি বললেন, আরো বর্ণনা কর। আমরা বললাম, তিনি তো এর বেশি আমাদের কাছে বর্ণনা দেননি। তিনি বললেন, জানিনা, তিনি কি ভুলেই গেলেন, না তোমরা নির্ভরশীল হয়ে পড়বে বলে অবশিষ্টটুকু বর্ণনা করতে অপছন্দ করলেন।

বিশ বছর পুর্বে যখন তিনি শক্তি সামর্থ্যে ও শক্তিতে মজবুত ছিলেন, তখন আমার কাছেও হাদীসটি বর্ণনা করেছিলেন। আমরা বললাম, হে আবূ সাঈদ! আমাদের কাছে হাদীসটি বর্ণনা করুন। তিনি হাসলেন এবং বললেন, সৃষ্টি করা হয়েছে, মানুষ তো অতিমাত্রায় ত্বরা প্রিয়। আমি তো বর্ণনার উদ্দেশ্যেই তোমাদের কাছে বিষয়টি উল্লেখ করলাম। তিনি তোমাদের কাছে যা বর্ণনা করেছেন, আমার কাছেও তা বর্ণনা করেছেন, তবে পরে এটুকুও বলেছিলেন, আমি চতূর্থবার ফিরে আসবো এবং সেসব প্রশংসা বাক্য দিয়ে আল্লাহর গ্রশংসা করব এবং সিজদায় পড়ে যাবো। তখন বলা হবে, ইয়া মুহাম্মাদ! মাথা উঠাও। বল, তোমার কথা শোনা হবে। চাও! দেওয়া হবে। শাফাআত কর, গ্রহণ করা হবে। আমি বলব, হে আমার প্রতিপালক! আমাকে তাদের সম্পর্কে শাফাআত করার অনুমতি দান কর, যারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলেছে। তখন আল্লাহব লবেন, আমার ইজ্জত, আমার পরাক্রমশীলতা, আমার বড়ত্ব ও আমার মহত্তের কসম! যারা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলেছে, আমি অবশ্যই তাদের সবাইকে জাহান্নাম থেকে বের করে আনব।

হাদিস নম্বরঃ ৭০০৩ | 7003 | ۷۰۰۳

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৮. কিয়ামতের দিনে নবী ও অপরাপরের সাথে মহান আল্লাহ্‌র কথাবার্তা
৭০০৩। মুহাম্মাদ ইবনু খালিদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সর্বশেষে জান্নাতে প্রবেশকারী এবং জাহান্নাম থেকে সর্বশেষ পরিত্রাণ লাভকারী ব্যাক্তিটি জাহান্নাম থেকে হামাগুড়ি দিয়ে বের হয়ে আসবে। তার প্রতিপালক তাকে বলবেন, তুমি জান্নাতে প্রবেশ কর। সে বলবে, হে আমার প্রতিপালক! জান্নাত তো পরিপূর্ণ! আল্লাহ এভাবে তাকে তিনবার বলবেন। প্রত্যেকবারই সে উত্তর দেবে, জানোাত তো পরিপূর্ণ। পরিশেষে আল্লাহ তাকে বলবেন, তোমার জন্য রয়েছে এ পৃথিবীর ন্যায় দশ গুন।

হাদিস নম্বরঃ ৭০০৪ | 7004 | ۷۰۰٤

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৮. কিয়ামতের দিনে নবী ও অপরাপরের সাথে মহান আল্লাহ্‌র কথাবার্তা
৭০০৪। আলী ইবনু হুজর (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের প্রত্যেকের সঙ্গে তার প্রতিপালক অতিসত্বর বাক্যালাপ করবেন। তার ও আল্লাহর মাঝখানে কোন দোভাষী থাকবে না। এরপর সে তাকাবে ডান দিকে, তখন তার অতীত আমল ছাড়া সে আর কিছু দেখবে না। আবার তাকাবে বাম দিকে, তখনো অতীত আমল ছাড়া আর কিছু সে দেখবে না। আর সামনে তাকাবে তখন সে জাহান্নামের অবস্থান ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাবে না। সুতরাং জাহান্নামকে ভয় কর এক টুকরো খেজুরের বিনিময়ে হলেও।

বর্ণনাকারী আমাশ (রহঃ) … খায়সামা (রহঃ) থেকে অনুরূপই বর্ণনা দিয়েছেন। তবে তিনি যদি وَلَوْ بِكَلِمَةٍ طَيِّبَةٍ পবিত্র কালেমার বিনিময়েও হয়-কথাটুকু সংযোগ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৭০০৫ | 7005 | ۷۰۰۵

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৮. কিয়ামতের দিনে নবী ও অপরাপরের সাথে মহান আল্লাহ্‌র কথাবার্তা
৭০০৫। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ইহুদী পণ্ডিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললো, কিয়ামতের দিন আল্লাহ আসমান সমূহকে এক আঙ্গুলে, ভূমন্ডলকে এক আঙ্গুলে, পানি ও কাদামাটি এক আঙ্গুলে এবং অবশিষ্ট সৃষ্টিকে এক আঙ্গুলে উঠিয়ে ঝাঁকুনি দিয়ে বলবেন, আমিই একমাত্র বাদশাহ, আমিই একমাত্র বাদশাহ। আমি তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখলাম, তিনি তার উক্তির সত্যতার প্রতি বিস্মিত হয়ে এমনভাবে হাসলেন যে, তার মাড়ির দাঁতগুলো প্রকাশিত হয়ে পড়ল। অতঃপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআনের বানীঃ وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ পড়লেন। তারা আল্লাহর যথার্থ মর্যাদা উপলদ্ধি করেনি (৬ঃ ৯১)। والأرض جميعا قبضته يوم القيامة والسماوات مطويات بيمينه سبحانه وتعالى عما يشركون কিয়ামতের দিন সমস্ত পৃথিবী থাকবে তার হাতের মুষ্টিতে এবং আকাশসমূহ থাকবে তার করায়ত্ত, পবিত্র ও মহান তিনি এরা যাকে শরীক করে, তিনি তার ঊর্ধ্বে (৩৯ঃ ৬৭)

হাদিস নম্বরঃ ৭০০৬ | 7006 | ۷۰۰٦

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৮. কিয়ামতের দিনে নবী ও অপরাপরের সাথে মহান আল্লাহ্‌র কথাবার্তা
৭০০৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … সাফওয়ান ইবনু মুহরিয (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি ইবনু উমর (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করল, আল্লাহর সাথে বান্দার গোপন আলাপ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আপনি কি বলতে শুনেছেন? তিনি বললেনঃ আমাদের কেউ তার প্রতিপালকের নিকটস্থ হলে তিনি তাঁর ওপর রহমতের আবরণ বিস্তার করে জিজ্ঞাসা করবেন, তুমি কি এই কাজ করেছ? সে বলবে, হ্যাঁ। আল্লাহ আবারো জিজ্ঞাসা করবেন, তুমি কি এই কাজ করেছ? সে তখনো বলবে, হ্যাঁ। আল্লাহ এভাবে তার স্বীকারোক্তি নেবেন। তারপর আল্লাহ বলবেন, আমি দুনিয়ায় তোমার ওসব কাজ গোপন রেখেছিলাম। আমি আজকেও তোমার জন্য তা মাফ করে দিলাম।

আদম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৭০০৭ | 7007 | ۷۰۰۷

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৯. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ এবং মূসা (আঃ) এর সাথে আল্লাহ্‌ সাক্ষাৎ বাক্যালাপ করেছিলেন (৪ঃ ১৬৪)
৭০০৭। ইয়াহইয়া ইবন বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আদম ও মূসা (আলাইহিমা সালাম) বিতর্কে রত হলেন। মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, আপনি সেই আদম, যিনি আপন সন্তানদের জান্নাত হতে বের করে দিলেন। আদম (আলাইহিস সালাম) বললেন, আপনি হচ্ছেন সেই মূসা যাকে আল্লাহ রিসালত দিয়ে সম্মানিত করলেন এবং যার সাথে বাক্যালাপ করে তার মর্যাদাকে বৃদ্ধি করে দিলেন। আপনি এমন একটি বিষয়ে কেন আমাকে অভিযুক্ত করছেন, আমাকে পয়দা করারও আগে যেটির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ে গিয়েছে। তাই আদম (আলাইহিস সালাম) মূসা (আলাইহিস সালাম) এর ওপর বিজয়ী হল।

হাদিস নম্বরঃ ৭০০৮ | 7008 | ۷۰۰۸

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৯. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ এবং মূসা (আঃ) এর সাথে আল্লাহ্‌ সাক্ষাৎ বাক্যালাপ করেছিলেন (৪ঃ ১৬৪)
৭০০৮। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন ঈমানদারদের সমবেত করা হবে। তখন তারা বলবে, আমরা যদি আমাদের প্রতিপালকের কাছে সুপারিশ নিয়ে যেতাম তাহলে তিনি আমাদের এই স্থানটি হতে শাস্তি দান করতেন। তখন তারা আদম (আলাইহিস সালাম) এর কাছে এসে আবেদন জানোবে, আপনি মানবকুলের পিতা আদম। মহান আল্লাহ আপনাকে সৃষ্টি করেছেন আপন হাতে এবং তার ফেরেশতাদের দিয়ে আপনাকে সিজদা করিয়েছেন। আর সব জিনিসের নাম আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন। তাই আপনি আমাদের প্রতিপালকের কাছে আমাদের জন্য সুপারিশ করুন, তিনি যেন আমাদের শাস্তি না দেন। তখন আদম (আলাইহিস সালাম) তাদের লক্ষ্য করে বলবেন, আমি তোমাদের এ কাজের জন্য নই। তারপর তিনি তাদের কাছে নিজের সে ভুলের কথা উল্লেখ করবেন, যেটিতে তিনি লিপ্ত হয়েছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৭০০৯ | 7009 | ۷۰۰۹

পরিচ্ছদঃ ৩১৩৯. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ এবং মূসা (আঃ) এর সাথে আল্লাহ্‌ সাক্ষাৎ বাক্যালাপ করেছিলেন (৪ঃ ১৬৪)
৭০০৯। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস ইবনু সালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এক রাতে কাবার মসজিদ থেকে সফর করানো হল। বিবরণটি হচ্ছে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ বিষয়ে ওহী প্রেরণের পুর্বে তার কাছে তিনজন ফেরেশতার একটি জামাআতে আসল। অথচ তখন তিনি মসজিদুল হারামে ঘুমন্ত ছিলেন। এদের প্রথমজন বলল, তিনি কে? মধ্যের জন বলল, তিনি এদের উত্তম ব্যাক্তি। সর্বশেষ জন বলল, তা হলে তাদের উত্তম ব্যাক্তিকেই নিয়ে চল। সে রাতটির ঘটনা এটুকুই। এ জন্য তিনি আর তাদেরকে দেখেননি। অবশেষে তারা অন্য এক রাতে আগমন করলেন যা তিনি অন্তর দ্বারা দেখছিলেন। তার চোখ ঘুমন্ত, অন্তর ঘুমায় না। অনুরূপ অন্য নাবীগণেরও চোখ ঘুমিয়ে থাকে, অন্তর ঘুমায় না।

এ রাতে তারা তার সাথে কোন কথা না বলে তাকে উঠিয়ে নিয়ে যমযম কূপের কাছে রাখলেন। জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তার সাথীদের থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দায়িত্ব গ্রহণ করলেন। জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তার গলার নিচ হতে বক্ষস্থল পর্যন্ত ছেদন করলেন এবং তার বক্ষ ও পেট থেকে সবকিছু নেড়েচেড়ে যমযমের পানি দ্বারা নিজ হাতে ধৌত করেন। সেগুলোকে পরিছন্ন করলেন, তারপর সেখানে একটি তশতরী আনা হয় এবং তাতে ছিল একটি সোনার পাত্র যা পরিপূর্ণ ছিল ঈমান ও হিকমতে। তাঁর বক্ষ ও গলার রগগুলি এর দ্বারা পূর্ণ করলেন।

তারপর সেগুলো যখাস্থানে স্থাপন করে বন্ধ করে দিলেন। তারপর তাঁকে নিয়ে ফিরে আসমানের দিকে আরোহণ করলেন। আসমানের দরজাগুলো হতে একটি দরজাতে নাড়া দিলেন। ফলে আসমানবাসিগণ তাকে ডাক দিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, এ কে? তিনি উত্তরে বললেনঃ জিবরীল। তারা আবার জিজ্ঞাসা করলেন, আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেনঃ আমার সঙ্গে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। জিজ্ঞাসা করলেন, তার কাছে কি দুত পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন তারা বললেনঃ মারহাবান ওয়া আহলান (আপনাকে ধন্যবাদ, আপনি আপনজনের মধ্যে এসেছেন) শুভাগমনে আসমানবাসীরা খুবই আনন্দিত। বস্তুত আল্লাহ তায়ালা যমীনে কি করতে চাচ্ছেন তা আসমানবাসীদেরকে না জানানো পর্যন্ত তারা জানতে পারে না।

দুনিয়ার আসমানে তিনি আদম (আলাইহিস সালাম) কে পেলেন। জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাঁকে দেখিয়ে বললেন, তিনি আপনার পিতা, তাকে সালাম দিন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সালাম দিলেন। আদম (আলাইহিস সালাম) তার সালামের উত্তর দিলেন। এবং বললেনঃ মারহাবান ওয়া আহলান হে আমার পুত্র। তুমি আমার কতইনা উত্তম পুত্র। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টি প্রবাহমান নহর দুনিয়ার আসমানে অবলোকন করলেন। জিজ্ঞাসা করলেন, এ নহর দুটি কোন নহর হে জিবরীল! জিবরীল (আলাইহিস সালাম) বললেন, এ দুটি হলো নীল ও ফুরাতের মুল।

এরপর জিবরীল (আলাইহিস সালাম) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সঙ্গে নিয়ে এ আসমানে ঘুরে বেড়ালেন। তিনি আরো একটি নহর অবলোকন করলেন। এর ওপর প্রতিঠিত ছিল মোতি ও জাবারজাদের তৈরি একটি প্রাসাদ। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নহরে হাত মারলেন। তা ছিল অতি উন্নতমানের মিসক। তিনি বললেনঃ হে জিবরীল! এটি কি? জিবরীল (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ হাউযে কাওসার। যা আপনার প্রতিপালক আপনার জন্য সংরক্ষিত করে রেখেছেন।

তারপর তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সঙ্গে করে দ্বিতীয় আসমানে গমন করলেন। প্রথম আসমানে অবস্থানরত ফেরেশতাগণ তাকে যা বলেছিলেন এখানেও তা বললেনঃ তারা জানতে চাইল, তিনি কে? তিনি বললেনঃ জিবরীল। তারা বললেনঃ আপনার সঙ্গে কে? তিনি বললেনঃ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তারা বললেনঃ তার কাছে কি দুত পাঠানো হয়েছে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তাঁরা বললেন, মারহাবান ওয়া আহলান।

তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সঙ্গে করে তিনি তৃতীয় আসমানের দিকে গমন করলেন। প্রথম ও দ্বিতীয় আসমানে অবস্থানরত ফেরেশতারা যা বলেছিলেন তৃতীয় আসমানের ফেরেশতাগণও তাই বললেন। তারপর তাকে সঙ্গে করে তিনি চতুর্থ আসমানের দিকে গমন করলেন। তারাও তাঁকে পুর্বের ন্যায়ই বললেন। তারপর তাঁকে নিয়ে তিনি পঞ্চম আসমানে গমন করলেন। তাঁরাও পূর্বের মতো বললেন। এরপর তিনি তাঁকে নিয়ে ষষ্ঠ আসমানের দিকে গমন করলেন। সেখানেও ফেরেশতারা পূর্বের মতই বললেন। সর্বশেষে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিয়ে সপ্তম আসমানে গমন করলে সেখানেও ফেরেশতারা তাকে পূর্বের ফেরেশতাদের মতো বললেন। প্রত্যেক আসমানেই নাবীগণ রয়েছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের নাম উল্লেখ করেছেন।

তন্মধ্যে আমি সংরক্ষিত করেছি যে, দ্বিতীয় আসমানে ইদরীস (আলাইহিস সালাম), চতূর্থ আসমানে হারুন (আলাইহিস সালাম), পঞ্চম আসমানে অন্য একজন নাবী যায় নাম আমি স্মরণ রাখতে পারিনি। ষষ্ঠ আসমানে রয়েছেন ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এবং আল্লাহর সাথে বাক্যলাপের মর্যাদার কারণে মূসা (আলাইহিস সালাম) আছেন সপ্তম আসমানে।

সে সময় মূসা বললেনঃ হে আমার প্রতিপালক। আমি তো ধারনা করিনি আমার ওপর কাউকে উচ্চমর্যাদা দান করা হবে। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এত ঊর্ধ্বে আরোহণ করান হলো, যা সম্পর্কে আল্লাহ ছাড়া আর কেউই জানে না। অবশেষে তিনি সিদরাতুল মুনতাহায় আগমন করলেন। এখানে প্রবল পরাক্রমশালী আল্লাহ তাঁর নিকটবর্তী হলেন। অতিনিকটবর্তীর ফলে তাঁদের মধ্যে দু’ধনুকের ব্যবধান রইল অথবা তারও কম। তখন আল্লাহ তার প্রতি ওহী পাঠালেন। অর্থাৎ তাঁর উম্মাতের উপর রাত ও দিনে পঞ্চাশ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের কথা ওহী যোগে পাঠানো হলো।

তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবতরণ করেন। আর মূসার কাছে পৌছলে মূসা (আলাইহিস সালাম) তাঁকে আটকিয়ে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আপনার প্রতিপালক আপনাকে কি নির্দেশ দিলেন? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ রাত ও দিনে পঞ্চাশ বার সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের। তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেন, আপনার উম্মাত তা আদায়ে সক্ষম হবে না। সুতরাং আপনি ফিরে যান তাহলে আপনার প্রতিপালক আপনার এবং আপনার উম্মাতের থেকে এ আদেশটি সহজ করে দিবেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিবরীলের দিকে এমনভাবে লক্ষ্য করলেন, যেন তিনি এ বিষয়ে তার থেকে পরামর্শ চাচ্ছিলেন। জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাঁকে ইঙ্গিত করে বললেনঃ হ্যাঁ। আপনি চাইলে তা হতে পারে। তাই তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিয়ে প্রথমে আল্লাহর কাছে গেলেন।

তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যথাস্থানে থেকে বললেনঃ হে আমার প্রতিপালক! আমার উম্মাত এটি আদায়ে সক্ষম হবে না। তখন আল্লাহ দশ ওয়াক্ত সালাত (নামায/নামাজ) কমিয়ে দিলেন। এরপর মূসা (আলাইহিস সালাম) এর কাছে ফিরে আসলে তিনি তাঁকে নামালেন। এভাবেই মূসা তাকে তাঁর প্রতিপালকের কাছে পাঠাতে থাকলেন। পরিশেষে পাঁচ ওয়াক্ত অবশিষ্ট থাকল। পাঁচ সংখ্যায়ও মূসা (আলাইহিস সালাম) তাঁকে থামিয়ে বললেন, হে মুহাম্মাদ! আমি আমার বনী ইসরাঈল কাওমের কাছে এর চেয়েও নামান্য কিছু পেতে চেয়েছি। তদুপরি তারা দুর্বল হয়েছে এবং পরিত্যাগ করেছেন অথচ আপনার উম্মাত দৈহিক, মানসিক, শারীরিক সৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণক্ষমতা সব দিকে আরো দুর্বল।

সুতরাং আপনি আবার যান এবং আপনার প্রতিপালক থেকে নির্দেশটি আরো সহজ করে আনুন। প্রতিবারই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরামর্শের জন্য জিবরীলের দিকে তাকাতেন। পঞ্চমবারেও জিবরীল তাঁকে নিয়ে গমন করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আমার প্রতিপালক। আমার উম্মাতের শরীর, মন, শ্রবণশক্তি ও দেহ নিতান্তই দুর্বল। তাই নির্দেশটি আমাদের থেকে আরো সহজ করে দিন। এরপর পরাক্রমশালী আল্লাহ বললেনঃ মুহাম্মাদ! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি আপনার নিকটে হাযির, বারবার হাযির।

আল্লাহ বললেনঃ আমার বান্দার কোন প্রকার পরিবর্তন পরিবর্ধন হয় না। আমি তোমাদের উপর যা ফরয করেছি তা ‘উম্মুল কিতাব’ তথা লাওহে মাহফুযে সংরক্ষিত আছে। প্রতিটি নেক আমলের দশটি নেকী রয়েছে। উম্মুল কিতাবে সালাত (নামায/নামাজ) পঞ্চাশ ওয়াক্তই লিপিবদ্ধ আছে। তবে আপনার ও আপনার উম্মাতের জন্য তা পাঁচ ওয়াক্ত করা হলো। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মূসার কাছে প্রত্যাবর্তন করলে মূসা (আলাইহিস সালাম) তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি ব্যবস্থা নিয়ে এসেছেন?

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ আমাদের জন্য সহজ করে দিয়েছেন। তিনি আমাদেরকে প্রতিটি নেক আমলের বিনিময়ে দশটি সাওয়াব নির্ধারণ করেছেন। তখন মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি বনী ইসরাঈলের কাছ থেকে এর চাইতেও সামান্য জিনিসের প্রত্যাশ্য করছি। কিন্তু তারা তাও আদায় করেনি। আপনার প্রতিপালকের কাছে আপনি আবার ফিরে যান, যেন আরো একটু কমিয়ে দেন।

এবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে মূসা, আল্লাহর কসম! আমি আমার প্রতিপালকের কাছে বারবার গিয়েছি। আবার যেতে লজ্জাবোধ করছি, যেন তার সাথে মতান্তর করছি। এরপর মূসা (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ অবতরণ করতে পারেন আল্লাহর নামে। এ সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাগ্রত হয়ে দেখলেন, তিনি মসজিদে হারামে আছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৭০১০ | 7010 | ۷۰۱۰

পরিচ্ছদঃ ৩১৪০. জান্নাতবাসীদের সাথে প্রতিপালকের বাক্যালাপ
৭০১০। ইয়াহইয়া ইরন সুলায়মান (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ জান্নাতবাসীদেরকে বলবেন, হে জান্নাতীগণ! তখন জান্নাতীগণ বলবেন, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা হাযির, আপনার কাছে হাযির হতে পেরে আমরা সৌভাগ্যবান। কল্যাণ আপনারই হাতে। আল্লাহ বলবেন, তোমরা সন্তুষ্ট হয়েছ কি? তারা বলবেন, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা কেন সন্তুষ্ট হব না? অথচ আপনি আর কোন সৃষ্টিকে যা দান করেননি, তা আমাদেরকে দান করেছেন। তখন আল্লাহ বলবেন, আমি কি তোমাদেরকে এর চাইতেও উত্তম জিনিস দান করব না? তারা বলবেনঃ হে প্রতিপালক! এর চাইতে উত্তম বস্তু কোনটি? আল্লাহ বলবেন, তোমাদের ওপর আমার সন্তুষ্টি নির্ধারিত করলাম। এরপর আমি তোমাদের উপর কখনো অসন্তুষ্টি হবো না।

হাদিস নম্বরঃ ৭০১১ | 7011 | ۷۰۱۱

পরিচ্ছদঃ ৩১৪০. জান্নাতবাসীদের সাথে প্রতিপালকের বাক্যালাপ
৭০১১। মুহাম্মাদ ইবনু সিনান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা আলোচনারত ছিলেন। তখন তার সেখানে একজন গ্রাম্য লোকও উপস্থিত হল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছিলেন, একজন জান্নাতবাসী অনুমতি প্রার্থনা করবে কৃষিকার্য করার জন্য। আল্লাহ তাকে বলবেন, তুমি যা চাও তা কি পাওনি? সে বলবে, হ্যাঁ, পেয়েছি। তবে আমি কৃষিকাজ করতে পছন্দ করছি। অতি সত্তর ব্যবস্থা করা হবে। এবং বীজ বোনা হবে। তখনই নিমিষে চারা গজাবে, সোজা হয়ে দাড়াবে এবং তা কাটা হবে আর তা পর্যাপ্ত পরিমাণ ভুনাকৃত করা হবে। আল্লাহ তখন বলবেন, হে আদম সন্তান, লও। কারণ, তোমাকে কোন কিছুই ত্বড়িৎ দেবে না। এমন সময় জনৈক বেদূুঈন বললো, ইয়া রাসুলাল্লাহ! ঐ লোকটিকে আপনি কুরাইশী কিংবা আনসারী পাবেন। কেননা, তাঁরা হলেন কৃষিজীবী। আর আমরা কৃষিজীবী নই! এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৭০১২ | 7012 | ۷۰۱۲

পরিচ্ছদঃ ৩১৪২. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ সুতরাং জেনেশুনে কাউকেও আল্লাহ্‌র সমকক্ষ দাঁড় করো না (২ঃ ২২)। এবং তোমরা তাঁর সমকক্ষ দাঁড় করতে চাও? তিনি তো জগতসমূহের প্রতিপালক (২ঃ ৯)। এবং তারা আল্লাহ্‌র সঙ্গে কোন ইলাহ্কে ডাকে না (২৫ঃ ৬৮)। তোমার প্রতি ও তোমার পূর্ববর্তীদের প্রতি অবশ্যই ওহী হয়েছে। তুমি আল্লাহ্‌র শরীক স্থির করলে তোমার কর্ম তো নিষ্ফল হবে এবং তুমি হবে ক্ষতিগ্রস্ত। অতএব, তুমি আল্লাহ্‌রই ইবাদত কর এবং কৃতজ্ঞ হও। (৩৯ঃ ৬৫, ৬৬) এ আয়াতের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে ইকরিমা (রহঃ) বলেন, তাদের অধিকাংশ আল্লাহতে বিশ্বাস করে, কিন্তু তাঁর শরীক করে (১২ঃ ১০৬)। যদি তাদেরকে তুমি জিজ্ঞাসা কর, আসমানসমূহ ও যমীন সৃষ্টি করেছে কে? তারা বলবে আল্লাহ্‌! এটিই তাদের বিশ্বাস। অথচ তারা আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্যের ইবাদত করছে। বান্দার কর্ম ও অর্জন সবই সৃষ্টির অন্তর্ভুক্ত। কারণ আল্লাহ্‌ ইরশাদ করছেন وَخَلَقَ كُلَّ شَيْءٍ فَقَدَّرَهُ تَقْدِيرًا তিনি সমস্ত কিছু পরিমিত সৃষ্টি করেছেন যথাযথ অনুপাতে (২৫ঃ ২)। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, আমি ফেরেশতাগণকে প্রেরণ করি না হক ব্যতীত ……. (১৫ঃ ৮)। এখানে ‘হক’ শব্দের অর্থ রিসালাত ও আযাব। সত্যবাদীদের তাদের সত্যবাদিতা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করার জন্য (৩৩ঃ ৮)। এখানে صادِقِينَ শব্দের অর্থ মানুষের কাছে যেসব রাসূল আল্লাহ্‌র বাণী পৌঁছান। এবং আমিই এর সংরক্ষক (১৫ঃ ৯)। আমাদের কাছে রয়েছে এর সংরক্ষণকারিগণ। وَالَّذِي جَاءَ بِالصِّدْقِ যারা সত্য এনেছে (৩৯ঃ ৩৩)। এখানে صدق এর অর্থ কুরআন, صَدَّقَ بِهِ এর অর্থ ঈমানদার। কিয়ামতের দিন ঈমানদার বলবে, আপনি আমাকে যা দিয়েছিলেন, আমি সে অনুযায়ি আমল করেছি
৩১৪১. অনুচ্ছেদঃ নির্দেশের মাধ্যমে আল্লাহ্ কর্তৃক বান্দাকে স্মরণ করা এবং দোয়া, মিনতি, বার্তা ও বাণী প্রচারের মাধ্যমে বান্দা কর্তৃক আল্লাহকে স্মরণ করা। আল্লাহহ্ তা’আলার বাণীঃ তোমরা আমাকে স্মরণ করো, আমি তোমাদের স্মরণ করব। তাদেরকে নূহ্ এর বৃত্তান্ত শোনাও, সে তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিল, হে আমার সম্প্রদায়! আমার অবস্থিতি ও আল্লাহর নিদর্শন দ্বারা আমায় উপদেশ দান তোমাদের কাছে যদি দুঃসহ হয়, তবে আমি তো আল্লাহর উপর নির্ভর করি, তোমরা যাদেরকে শরীক করেছ, তা-সহ তোমাদের কর্তব্য স্থির করে লও, পরে যেন কর্তব্য বিষয়ে তোমাদের কোন সংশয় না থাকে। আমি তো আত্মসমর্পনকারীদের অন্তর্ভুক্ত (১০ঃ ৭১-৭২)

غُمَّةٌ এর অর্থ পেরেশানী, সংকট। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, اقْضُوا إِلَيَّ এর ভাবার্থ হচ্ছে- তোমাদের মনে যা কিছু আছে। আরবীতে বলা হয়, افْرُقِ اقْضِ তুমি স্পষ্ট করে বল, তবে আমি ফায়সালা দেব। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন وَإِنْ أَحَدٌ مِنَ الْمُشْرِكِينَ اسْتَجَارَكَ এর ভাবার্থ হচ্ছে, কোন ব্যক্তি নবী (সা) এর কাছে এসে তাঁর অথবা কুরআনের বাণী শুনতে চাইলে সে নিরাপদ স্থানে গিয়ে পৌঁছা পর্যন্ত ও আশ্রয়প্রাপ্ত বলে স্বীকৃত। النَّبَأُ الْعَظِيمُ এর অর্থ আল-কুরআন, صَوَابًا এর অর্থ দুনিয়ায় হক (কথ) বলেছে এবং এতে (নেক) আমল করেছে।

৭০১২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, আল্লাহর কাছে গুনাহ কোনটি সবচেয়ে বড়? তিনি বললেনঃ আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা। অথচ তিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি বললাম এটি অবশ্যই বড় গুনাহ। এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ তোমার সন্তান তোমার সঙ্গে খাবে এই আশংকায় তাকে হত্যা করা। আমি বললাম এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ এরপর তুমি তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে যিনা করা।

হাদিস নম্বরঃ ৭০১৩ | 7013 | ۷۰۱۳

পরিচ্ছদঃ ৩১৪৩. আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা কিছু গোপন করতে না এ বিশ্বাসে যে, তোমাদের কান, চক্ষু এবং ত্বক তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে না। উপরন্তু তোমরা মনে করতে যে, তোমরা যা করতে তার অনেক কিছুই আল্লাহ্‌ জানেন না (৪১ঃ ২২)
৭০১৩। হুমায়দী (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন বায়তুল্লাহর কাছে একত্রিত হলো দুজন সাকাফী ও একজন কুরাইশী অথবা দু’জন কুরাইশী ও একজন সাকাফী। তাদের পেট চর্বিতে পরিপূর্ণ ছিলো বটে; তবে তাদের হৃদয়ে নিতান্তই স্বল্প অনুধাবন ক্ষমতা ছিল। এরপর তাদের একজন বলে উঠল, তোমাদের অভিপ্রায় কি? আমরা যা বলছি আল্লাহ কি সবই শুনতে পান? দ্বিতীয় ব্যাক্তি বলল, হ্যাঁ শোনেন, যদি আমরা উচ্চস্বরে বলি। আর যদি চুপে চুপে বলি তবে তা আর শোনেন না। তৃতীয় জন বলল, যদি তিনি উচ্চস্বরে বললে শোনেন, তা হলে অনুচ্চস্বরে বললেও শুনবেন। এরই প্রেক্ষাপটে মহান আল্লাহ নিম্নোক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ করলেনঃ তোমরা কিছু গোপন করতে না এই বিশ্বাসে যে, তোমাদের কান, চক্ষু তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে না …… আয়াতের শেয পর্যন্ত। (৪১ঃ ২২)।

হাদিস নম্বরঃ ৭০১৪ | 7014 | ۷۰۱٤

পরিচ্ছদঃ ৩১৪৪. মহান আল্লাহর বাণীঃ তিনি প্রত্যহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে রত (৫৫ঃ ২৯)। যখনই তাদের কাছে দয়াময়ের নিকট হতে কোন নতুন উপদেশ আসে (২৬ঃ ৫)। হয়ত আল্লাহ্‌ এরপর কোন উপায় করে দেবেন (৬৫ঃ ১)। তিনি যদি কিছু বলেন, সৃষ্টির কথার মত হয় না। কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নেই। তিনি সব কিছু শোনেন, সব কিছু দেখেন (৪২ঃ ১১)। ইবন মাসউদ (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহ্‌ তা’আলা নতুন কিছু আদেশের ইচ্ছা করলে তা করেন। তন্মধ্যে নতুন নির্দেশের মধ্যে এটিও যে, তোমরা নামাযের মধ্যে কথা বলো না
৭০১৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তোমরা আহলে কিতাবদেরকে তাদের কিতাব সম্পর্কে কিভাবে প্রশ্ন করে থাক? অথচ তোমাদের কাছে মহান আল্লাহর কিতাব বিদ্যমান রয়েছে যা অপরাপর আসমানী কিতাবের তূলনায় আল্লাহ কাছে বেশি প্রিয়, যা তোমরা (অহরহ) পাঠ করছ, যা পুরো খাঁটি, যেখানে কোন প্রকারের ভেজালের লেশ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৭০১৫ | 7015 | ۷۰۱۵

পরিচ্ছদঃ ৩১৪৪. মহান আল্লাহর বাণীঃ তিনি প্রত্যহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে রত (৫৫ঃ ২৯)। যখনই তাদের কাছে দয়াময়ের নিকট হতে কোন নতুন উপদেশ আসে (২৬ঃ ৫)। হয়ত আল্লাহ্‌ এরপর কোন উপায় করে দেবেন (৬৫ঃ ১)। তিনি যদি কিছু বলেন, সৃষ্টির কথার মত হয় না। কোন কিছুই তাঁর সদৃশ নেই। তিনি সব কিছু শোনেন, সব কিছু দেখেন (৪২ঃ ১১)। ইবন মাসউদ (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহ্‌ তা’আলা নতুন কিছু আদেশের ইচ্ছা করলে তা করেন। তন্মধ্যে নতুন নির্দেশের মধ্যে এটিও যে, তোমরা নামাযের মধ্যে কথা বলো না
৭০১৫। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে মুসলিম সমাজ! তোমরা কি করে আহলে কিতাবদেরকে কোন বিষয়ে জিজ্ঞাসা কর? অথচ তোমাদের সে কিতাব যেটি আল্লাহ পাক তোমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওপর অবতীর্ণ করেছেন, তা আল্লাহর কিতাবগুলোর মধ্যে সর্বাপেক্ষা সময়োপযোগী। যা সনাতন ও নির্ভেজাল। অথচ আল্লাহ তোমাদেরকে বলে দিয়েছেন, আহলে কিতাবগণ আল্লাহর কিতাবসমূহকে রদবদল করেছে এবং , স্বহস্তে লিখে দাবি করছে এগুলো আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ এর দ্বারা তারা তুচ্ছ সুবিধা লুটতে চাচ্ছে। তোমাদের কাছে যে ইল্‌ম বিদ্যমান রয়েছে, তা কি তোমাদেরকে তাদের কাছে কিছু জিজ্ঞাসা করতে বাধা দিচ্ছে না? আল্লাহর কসম! তাদের কাউকে তোমাদের ওপর অবতীর্ণ বিষয় সম্পর্কে কখনো জিজ্ঞাসা করতে আমি দেখি না।

হাদিস নম্বরঃ ৭০১৬ | 7016 | ۷۰۱٦

পরিচ্ছদঃ ৩১৪৫. আল্লাহ্‌র বাণীঃ তাড়াতাড়ি ওহী আয়ত্ত করার জন্য তুমি তোমার জিহবা এর সাথে সঞ্চালন করো না (৭৫ঃ ১৬)। ওহী অবর্তীণ হওয়ার সময় নবী (সাঃ) এমনটি করেছেন। আবূ হুরায়রা (রা) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, আল্লাহ্‌ বলেন, আমি আমার বান্দার সাথে ততক্ষণ পর্যন্ত থাকি, যতক্ষণ সে আমাকে স্মরণ করে এবং আমার জন্য তার ঠোঁট দু’টো নাড়াচাড়া করে
৭০১৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর বানীঃ “কুরআনের কারণে আপনার জিহ্বা নাড়াচাড়া করবেন না” এ আয়াত প্রসঙ্গে বলেনঃ ওহী অবতীর্ণ হওয়া শুরু হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুবই কষ্টসাধ্য অবস্থার সম্মুখীন হতেন, যে কারণে তিনি ঠোট দু’টি নাড়াচাড়া করতেন। বর্ণনাকারী বলেনঃ ইবনু আব্বাস (রাঃ) আমাকে বললেনঃ আমি তোমাকে বোঝানোর জন্য ঠোট দুটি সেভাবে নাড়ছি, যেভাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নেড়েছিলেন। এহাপর বর্ণনাকারী সাঈদ (রহঃ) বললেন, আমিও ঠোট দু’টি তেমনি নেড়ে দেখাছি, যেমনি ইবনু আব্বাস (রাঃ) নেড়ে আমাকে দেখিয়েছিলেন। তিনি তাঁর ঠোট দু’টি নাড়লেন।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এ অবস্থা প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলা অবতীর্ন করলেনঃ তাড়াতাড়ি ওহী আয়ত্ত করার জন্য তুমি তোমার জিহ্বা এর সাথে সঞ্চালন করো না, এর সংরক্ষণ ও পাঠ করাবার দায়িত্ব আমারই (৭৫ঃ ১৬, ১৭)। তিনি বলেনঃ جَمْعُهُ এর অর্থ আপনার বক্ষে তা এভাবে সংরক্ষিত করা, যেন পরে তা পড়তে সক্ষম হন। সুতরাং আমি যখন তা পাঠ করি, তুমি সে পাঠের অনুসরণ কর (৭৫ঃ ১৮ )। এর অর্থ হচ্ছে, আপনি তা শ্রবণ করুন এবং চুপ থাকুন। এরপর আপনি কুরআন পাঠ করবেন সে দায়িত্ব আমাদের উপর। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জিবরীল (আলাইহিস সালাম) যখন আসতেন, তিনি তখন একাগ্রচিত্তে তা শ্রবণ করতেন। জিবরীল (আলাইহিস সালাম) চলে গেলে তিনি ঠিক তেমনিভাবে পাঠ করতেন, যেমনি তাকে পাঠ করিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৭০১৭ | 7017 | ۷۰۱۷

পরিচ্ছদঃ ৩১৪৬. আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা আমাদের কথা গোপনই বল অথবা প্রকাশ্যেই বল তিনি তো অন্তর্যামী (৬৭ঃ ১৩)। (আল্লাহ্‌র বাণী) যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? তিনি সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবগত (৬৭ঃ ১৪)। يَتَخَافَتُونَ এর অর্থ يَتَسَارُّونَ (চুপে চুপে পড়ে)
৭০১৭। উমর ইবনু যুরারা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি মহান আল্লাহর বানীঃ সালাতে স্বর উচ্চ করবে না এবং অতিশয় ক্ষীনও করবে না … (১৭ঃ ১১০) এ প্রসঙ্গে বলেনঃ এ নির্দেশ যখন নাযিল হল তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় গোপনে অবস্থান করতেন। অথচ তিনি যখন সাহাবীগণকে নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন, কুরআন উচ্চস্বরে পড়তেন। মুশরিকরা এ কুরআন শুনলে কুরআন, কুরআন এর অবতীর্ণকারী এবং বাহক সবাইকে গালমন্দ করত। এরই প্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’আলা তার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলে দিলেন, আপনার সালাত (নামায/নামাজ) কে এমন উচ্চস্বরে করবেন না অর্থাৎ আপনার কিরাআতকে। তাহলে মুশরিকরা শুনতে পেয়ে কুরআন সম্পর্কে গালমন্দ করবে। আর এ কুরআন আপনার সাহাবীদের কাছে এত ক্ষীন স্বরেও পড়বেন না, যাতে আপনার কিরাআত তারা শুনতে না পায়। বরং এ দুয়ের মাঝামাঝি পথ অবলম্বন করুন।

হাদিস নম্বরঃ ৭০১৮ | 7018 | ۷۰۱۸

পরিচ্ছদঃ ৩১৪৬. আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা আমাদের কথা গোপনই বল অথবা প্রকাশ্যেই বল তিনি তো অন্তর্যামী (৬৭ঃ ১৩)। (আল্লাহ্‌র বাণী) যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? তিনি সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবগত (৬৭ঃ ১৪)। يَتَخَافَتُونَ এর অর্থ يَتَسَارُّونَ (চুপে চুপে পড়ে)
৭০১৮। উবায়দ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এ আয়াতটি “আপনি আপনার সালাত (নামায/নামাজ) কে উচ্চস্বরেও পড়বেন না এবং ক্ষীনও করবেন না” দোয়া সম্পর্কে অবতীর্ণ হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৭০১৯ | 7019 | ۷۰۱۹

পরিচ্ছদঃ ৩১৪৬. আল্লাহ্‌র বাণীঃ তোমরা আমাদের কথা গোপনই বল অথবা প্রকাশ্যেই বল তিনি তো অন্তর্যামী (৬৭ঃ ১৩)। (আল্লাহ্‌র বাণী) যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কি জানেন না? তিনি সূক্ষ্মদর্শী, সম্যক অবগত (৬৭ঃ ১৪)। يَتَخَافَتُونَ এর অর্থ يَتَسَارُّونَ (চুপে চুপে পড়ে)
৭০১৯। ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ভাল আওয়াজে কুরআন পড়ে না, সে আমাদের নয়। আবূ হুরায়রা (রাঃ) ছাড়া অন্যরা يَجْهَرُ بِهِ উচ্চস্বরে কুরআন পড়ে না, কথাটুকু বৃদ্ধি করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৭০২০ | 7020 | ۷۰۲۰

পরিচ্ছদঃ ৩১৪৭. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ এক ব্যক্তিকে আল্লাহ্‌ কুরআন দান করেছেন। সে রাতদিন তা পাঠ করছে। আরেক ব্যক্তি বলে, এ ব্যক্তিকে যা দেওয়া হয়েছে, আমাকে যদি তা দেওয়া হতো, আমিও সেরূপ করতাম যেরূপ সে করছে। এই প্রেক্ষিতে আল্লাহ্‌ স্পষ্ট করে বলেন, ব্যক্তিটির কুরআনের সাথে কায়েম থাকার অর্থ তার কুরআন তিলাওয়াত করা। এবং তিনি বললেন, তাঁর নির্দেশনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র (৩০ঃ ২২) নবী (সাঃ) তিলাওয়াত করলেন, وَافْعَلُوا الْخَيْرَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ সৎকর্ম কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার (২২ঃ ৭৭)
৭০২০। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’টি বিষয় ছাড়া ঈর্ঘা করা যায় না। এক ব্যাক্তি হচ্ছে, আল্লাহ যাকে কুরআন দান করেছেন, আর সে দিবারাত্র তা তিলাওয়াত করে। অপর ব্যাক্তি বলে, এ লোকটিকে যা দেওয়া হয়েছে আমাকে যদি অনুরূপ দেওয়া হতো, তা হলে আমিও অনুরূপ করতাম, সে যেরূপ করছে। আরেক ব্যাক্তি হচ্ছে সে, যাকে আল্লাহ ধন-সম্পদ দিয়েছেন। ফলে সে তা যখাযথভাবে ব্যয় করছে। তখন অপর ব্যাক্তি বলে, একে যা দেওয়া হয়েছে, আমাকেও যদি অনুরূপ দেওয়া হতো, আমিও তাই করতাম, সে যা করেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৭০২১ | 7021 | ۷۰۲۱

পরিচ্ছদঃ ৩১৪৭. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ এক ব্যক্তিকে আল্লাহ্‌ কুরআন দান করেছেন। সে রাতদিন তা পাঠ করছে। আরেক ব্যক্তি বলে, এ ব্যক্তিকে যা দেওয়া হয়েছে, আমাকে যদি তা দেওয়া হতো, আমিও সেরূপ করতাম যেরূপ সে করছে। এই প্রেক্ষিতে আল্লাহ্‌ স্পষ্ট করে বলেন, ব্যক্তিটির কুরআনের সাথে কায়েম থাকার অর্থ তার কুরআন তিলাওয়াত করা। এবং তিনি বললেন, তাঁর নির্দেশনাবলীর মধ্যে রয়েছে আকাশসমূহ ও পৃথিবীর সৃষ্টি এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র (৩০ঃ ২২) নবী (সাঃ) তিলাওয়াত করলেন, وَافْعَلُوا الْخَيْرَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ সৎকর্ম কর যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার (২২ঃ ৭৭)
৭০২১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সালিম তার পিতা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, একমাত্র দুটি বিষয়েই ঈর্ষা করা যায়। একজন হচ্ছে, যাকে আল্লাহ কুরআন দান করেছেন, আর সে তা রাতদিন তিলাওয়াত করে, আরেকজন হচ্ছে, যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন আর সে রাতদিন তা ব্যায় করে। আমি সুফয়ান (রহঃ) কে একাধিকবার শুনেছি কিন্তু তাকে الْخَبَرَ উল্লেখ করতে শুনিনি। অর্থাৎ এটি তার বিরুদ্ধ হাদীসগুলোর অন্যতম।

হাদিস নম্বরঃ ৭০২২ | 7022 | ۷۰۲۲

পরিচ্ছদঃ ৩১৪৮. আল্লাহ্‌র বাণীঃ হে রাসূল! তোমার প্রতিপালকের নিটক হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তা প্রচার কর। যদি না কর তবে তো তুমি বার্তা প্রচার করলে না (৫ঃ৬৭)। যুহরী (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে হচ্ছে বার্তা প্রেরণ আর রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর দায়িত্ব হলো পৌঁছানো, আর আমাদের কর্তব্য হলো মেনে নেয়া। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেনঃ রাসূলগণ তাঁদের প্রতিপালকের বাণী পৌঁছে দিয়েছেন কিনা তা জানার জন্য (৭২ঃ ২৮)। তিনি আরো বলেনঃ আমি তোমাদের কাছে আল্লাহ্‌র বার্তাসমূহ পৌঁছে দিচ্ছি। কা’ব ইবন মালিক (রাঃ) যখন নবী (সাঃ) এর সঙ্গে (তাবুক যুদ্ধে শরীক হওয়া) থেকে পিছনে রয়ে গেলেন, তখন আল্লাহ্‌ বলেনঃ আল্লাহ্‌ তো তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করবেন এবং তাঁর রাসূল ও মু’মিনগণও (৯ঃ ১০৫)। আয়েশা (রাঃ) বলেন, কারো ভালো কাজে তোমাকে আনন্দিত করলে বলো, আমল কর, তোমার এ আমল আল্লাহ্‌, আল্লাহ্‌র রাসূল, সমস্ত মু’মিন দেখবেন। আর তোমাকে কেউ যেন বিচলিত করতে না পারে। মা’মার (র) বলেন, ذَلِكَ الْكِتَابُ এর অর্থ হচ্ছে এ কুরআন, هُدًى لِلْمُتَّقِينَ এর অর্থ বর্ণনা ও পথ প্রদর্শন। আল্লাহ্‌র এ বাণীর মত ذَلِكُمْ حُكْمُ اللَّهِ এর অর্থ এটি আল্লাহ্‌র হুকুম। لاَ رَيْبَ এর অর্থ এতে কোন সন্দেহ নেই। تِلْكَ آيَاتُ অর্থাৎ এগুলো কুরআনের নিদর্শন। এর উদাহরণ আল্লাহ্‌রই বাণীঃ যখন তোমরা নৌকায় অবস্থান করো আর চলতে থাকে সেগুলো তাদের নিয়ে। এখানে بِهِمْ এর অর্থ بِكُمْ অর্থাৎ তোমাদের নিয়ে। আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর মামা হারমকে তাঁর গোত্রের কাছে পাঠালেন। তিনি সেখানে গিয়ে বললেন, তোমরা আমাকে বিশ্বাস কর কি? আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাঃ) এর বার্তা পৌঁছিয়ে দিচ্ছি। এই বলে তিনি তাদের সাথে আলাপ করতে লাগলেন
৭০২২। ফাযল ইবনু ইয়াকুব (রহঃ) … মুগীরা (রাঃ) বলেন। আমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে আমাদের প্রতিপালকের বার্তা সম্পর্কে অবহিত করেছেন যে আমাদের মধ্য থেকে যাকে হত্যা (শহীদ) করা হবে, সে জান্নাতে চলে যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৭০২৩ | 7023 | ۷۰۲۳

পরিচ্ছদঃ ৩১৪৮. আল্লাহ্‌র বাণীঃ হে রাসূল! তোমার প্রতিপালকের নিটক হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তা প্রচার কর। যদি না কর তবে তো তুমি বার্তা প্রচার করলে না (৫ঃ৬৭)। যুহরী (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে হচ্ছে বার্তা প্রেরণ আর রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর দায়িত্ব হলো পৌঁছানো, আর আমাদের কর্তব্য হলো মেনে নেয়া। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেনঃ রাসূলগণ তাঁদের প্রতিপালকের বাণী পৌঁছে দিয়েছেন কিনা তা জানার জন্য (৭২ঃ ২৮)। তিনি আরো বলেনঃ আমি তোমাদের কাছে আল্লাহ্‌র বার্তাসমূহ পৌঁছে দিচ্ছি। কা’ব ইবন মালিক (রাঃ) যখন নবী (সাঃ) এর সঙ্গে (তাবুক যুদ্ধে শরীক হওয়া) থেকে পিছনে রয়ে গেলেন, তখন আল্লাহ্‌ বলেনঃ আল্লাহ্‌ তো তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করবেন এবং তাঁর রাসূল ও মু’মিনগণও (৯ঃ ১০৫)। আয়েশা (রাঃ) বলেন, কারো ভালো কাজে তোমাকে আনন্দিত করলে বলো, আমল কর, তোমার এ আমল আল্লাহ্‌, আল্লাহ্‌র রাসূল, সমস্ত মু’মিন দেখবেন। আর তোমাকে কেউ যেন বিচলিত করতে না পারে। মা’মার (র) বলেন, ذَلِكَ الْكِتَابُ এর অর্থ হচ্ছে এ কুরআন, هُدًى لِلْمُتَّقِينَ এর অর্থ বর্ণনা ও পথ প্রদর্শন। আল্লাহ্‌র এ বাণীর মত ذَلِكُمْ حُكْمُ اللَّهِ এর অর্থ এটি আল্লাহ্‌র হুকুম। لاَ رَيْبَ এর অর্থ এতে কোন সন্দেহ নেই। تِلْكَ آيَاتُ অর্থাৎ এগুলো কুরআনের নিদর্শন। এর উদাহরণ আল্লাহ্‌রই বাণীঃ যখন তোমরা নৌকায় অবস্থান করো আর চলতে থাকে সেগুলো তাদের নিয়ে। এখানে بِهِمْ এর অর্থ بِكُمْ অর্থাৎ তোমাদের নিয়ে। আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর মামা হারমকে তাঁর গোত্রের কাছে পাঠালেন। তিনি সেখানে গিয়ে বললেন, তোমরা আমাকে বিশ্বাস কর কি? আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাঃ) এর বার্তা পৌঁছিয়ে দিচ্ছি। এই বলে তিনি তাদের সাথে আলাপ করতে লাগলেন
৭০২৩। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমাকে যে বলবে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (ওহীর) কিছু জিনিস গোপন করেছেন। মুহাম্মাদ (রহঃ) … বলেন আয়িশা (রাঃ) বলেছেন, যে ব্যাক্তি তোমার কাছে বলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওহীর কোন কিছু গোপন করেছেন, তাকে তুমি সত্যবাদী মনে করো না। মহান আল্লাহ বলেনঃ হে রাসুল! তোমার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে তোমার কাছে যা অবতীর্ণ হয়েছে, তা প্রচার কর (৫ঃ ৬৭)।

হাদিস নম্বরঃ ৭০২৪ | 7024 | ۷۰۲٤

পরিচ্ছদঃ ৩১৪৮. আল্লাহ্‌র বাণীঃ হে রাসূল! তোমার প্রতিপালকের নিটক হতে তোমার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তা প্রচার কর। যদি না কর তবে তো তুমি বার্তা প্রচার করলে না (৫ঃ৬৭)। যুহরী (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে হচ্ছে বার্তা প্রেরণ আর রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) এর দায়িত্ব হলো পৌঁছানো, আর আমাদের কর্তব্য হলো মেনে নেয়া। আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেনঃ রাসূলগণ তাঁদের প্রতিপালকের বাণী পৌঁছে দিয়েছেন কিনা তা জানার জন্য (৭২ঃ ২৮)। তিনি আরো বলেনঃ আমি তোমাদের কাছে আল্লাহ্‌র বার্তাসমূহ পৌঁছে দিচ্ছি। কা’ব ইবন মালিক (রাঃ) যখন নবী (সাঃ) এর সঙ্গে (তাবুক যুদ্ধে শরীক হওয়া) থেকে পিছনে রয়ে গেলেন, তখন আল্লাহ্‌ বলেনঃ আল্লাহ্‌ তো তোমাদের কার্যকলাপ লক্ষ্য করবেন এবং তাঁর রাসূল ও মু’মিনগণও (৯ঃ ১০৫)। আয়েশা (রাঃ) বলেন, কারো ভালো কাজে তোমাকে আনন্দিত করলে বলো, আমল কর, তোমার এ আমল আল্লাহ্‌, আল্লাহ্‌র রাসূল, সমস্ত মু’মিন দেখবেন। আর তোমাকে কেউ যেন বিচলিত করতে না পারে। মা’মার (র) বলেন, ذَلِكَ الْكِتَابُ এর অর্থ হচ্ছে এ কুরআন, هُدًى لِلْمُتَّقِينَ এর অর্থ বর্ণনা ও পথ প্রদর্শন। আল্লাহ্‌র এ বাণীর মত ذَلِكُمْ حُكْمُ اللَّهِ এর অর্থ এটি আল্লাহ্‌র হুকুম। لاَ رَيْبَ এর অর্থ এতে কোন সন্দেহ নেই। تِلْكَ آيَاتُ অর্থাৎ এগুলো কুরআনের নিদর্শন। এর উদাহরণ আল্লাহ্‌রই বাণীঃ যখন তোমরা নৌকায় অবস্থান করো আর চলতে থাকে সেগুলো তাদের নিয়ে। এখানে بِهِمْ এর অর্থ بِكُمْ অর্থাৎ তোমাদের নিয়ে। আনাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর মামা হারমকে তাঁর গোত্রের কাছে পাঠালেন। তিনি সেখানে গিয়ে বললেন, তোমরা আমাকে বিশ্বাস কর কি? আমি আল্লাহ্‌র রাসূল (সাঃ) এর বার্তা পৌঁছিয়ে দিচ্ছি। এই বলে তিনি তাদের সাথে আলাপ করতে লাগলেন
৭০২৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি আরয করল হে আল্লাহর রাসুল! আল্লাহর কাছে কোন গুনাহটি সব চাইতে বড়? তিনি বললেনঃ আল্লাহর বিপরীত কাউকে আহবান করা অথচ তিনই (আল্লাহ) তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। সে বলল, এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ এর পর তোমার সঙ্গে আহার করবে এই ভয়ে (তোমার) সন্তানকে হত্যা করা। সে বলল, এরপর কোনটি? তিনি বললেনঃ এরপর তোমাদের প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে ব্যাভিচার করা। এরই সমর্থনে আল্লাহ অবতীর্ণ করলেন এবং তারা আল্লাহর সঙ্গে কোন ইলাহকে ডাকে না। আল্লাহ যার হত্যা হারাম করেছেন, যথার্থ কারণ ছাড়া তাকে হত্য করে না এবং ব্যাভিচার করে না। যে এগুলো করে সে শাস্তি ভোগ করবে (২৫ঃ ৬৮)।

হাদিস নম্বরঃ ৭০২৫ | 7025 | ۷۰۲۵

পরিচ্ছদঃ ৩১৪৯. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ বল, যদি তোমরা সত্যবাদী হও তবে তাওরাত আন এবং পাঠ কর (৩ঃ ৯৩)। নবী (সাঃ) এর বাণীঃ তাওরাতের ধারকদেরকে তাওরাত দেওয়া হলে তারা সে অনুযায়ী আমল করল। ইনজীলের ধারকদেরকে ইনজীল দেওয়া হলে তারাও সে আনুযায়ি আমল করল। তোমাদেরকে দেওয়া হলো কুরআন, সুতরাং তোমরা এ অনুযায়ী আমল কর আবূ রাযীন (র) বলেন, يَتْلُونَهُ এর অর্থ তাঁর নির্দেশকে যথাযথভাবে পালন করার মাধ্যমে অনুসরণ করা। আবূ আবদুল্লাহ্ (রহঃ) বলেন, يُتْلَى অর্থ يُقْرَأُ পাঠ করা হয়। حَسَنُ التِّلاَوَةِ অর্থ কুরআন সুন্দরভাবে পাঠ করা। لاَ يَمَسُّهُ এর অর্থ কুরআনের স্বাদ ও উপকারিতা কুরআনের প্রতি বিশ্বাসীদের ব্যতীত না পাওয়া। কুরআনের উপর সঠিক আস্থা স্থাপনকারী ছাড়া কেউই তা যথাযথভাবে বহন করতে সক্ষমম হবে না। কেননা, মহান আল্লাহ্‌ বলেনঃ যাদেরকে তাওরাতের দায়িত্বভার অর্পণ করা হয়েছিল এরা তা বহন করেনি। তাদের দৃষ্টান্ত পুস্তক বহনকারী গর্দভ। কত নিকৃষ্ট সে সম্প্রদায়ের দৃষ্টান্ত! যারা আল্লাহ্‌র আয়াতকে মিথ্যা বলে। আল্লাহ্‌ যালিম সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না (৬২ঃ ৫)
৭০২৫। আবদান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অতীত উম্মাতদের তুলনায় তোমাদের অবস্থানকালের উদাহরণ হচ্ছে, আসরের সালাত (নামায/নামাজ) এবং সূর্যাস্তের মাঝখানের সময়। তাওরাতধারীদেরকে তাওরাত প্রদান করা হলে তারা সে অনুযায়ী আমল করল। এভাবে দুপুর হয়ে গেল এবং তারাও দুর্বল হয়ে পড়ল। তাদেরকে এক কীরাত করে পারিশ্রমিক দেওয়া হল। তারপর ইনজীলের ধারকদেরকে ইনজীল দেওয়া হলে তারা সে অনুযায়ী আমল করল। এমনিতে আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা হল। তারাও ক্লান্ত হয়ে পড়ল। তারপর তাদেরকেও এক কীরাত করে দেওয়া হল। পরিশেষে তোমাদেরকে কুরআন প্রদান করা হয়। তোমরা তদনুযায়ী আমল করেছ। এমনিতে সূর্যাস্ত হয়ে গেল। আর তোমাদেরকে দেওয়া হল দু’কীরাত করে। ফলে কিতাবীগণ বলল, এরা তো আমাদের তুলনায় কাজ করল কম, অথচ পারিশ্রমিক পেল বেশি। এতে আল্লাহ বললেনঃ তোমাদের হক থেকে তোমাদের কিছু জুলম করা হয়েছে কি? এরা বলবে, না। আল্লাহ বললেনঃ এটই আমার অনুগ্রহ, তা আমি যাকে চাই তাকে প্রদান করে থাকি।

হাদিস নম্বরঃ ৭০২৬ | 7026 | ۷۰۲٦

পরিচ্ছদঃ ৩১৫০. নবী (সাঃ) নামাযকে আমল বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি সূরা ফাতিহা নামাযে পাঠ করল না, তার নামায আদায় হল না
৭০২৬। সুলায়মান (রহঃ) ও আব্বাদ ইবনু ইয়াকুব আসাদী (রহঃ) … ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক ব্যাক্তি (সাহাবী) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন, কোন আমলটি সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ যথাসময়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা, মাতাপিতার সাথে সদ্ব্যবহার করা। অতঃপর আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।

হাদিস নম্বরঃ ৭০২৭ | 7027 | ۷۰۲۷

পরিচ্ছদঃ ৩১৫১. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ মানুষ তো সৃজিত হয়েছে অতিশয় অস্থির চিত্তরূপে। যখন বিপদ তাকে স্পর্শ করে সে হয় হা-হুতাশকারী আর যখন কল্যাণ স্পর্শ করে, সে হয় অতি কৃপণ (৭০ঃ ১৯, ২০, ২১)
৭০২৭। আবু নুমান (রহঃ) … আমর ইবনু তাগলিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কিছু মাল এল। এর থেকে তিনি এক দলকে দিলেন। আর একটি দলকে দিলেন না। অতঃপর তার কাছে এ খবর পৌছল যে, যারা পেলো না তারা অন্তুষ্ট হয়েছে। এতে তিনি বললেনঃ আমি একজনকে দিয়ে আবার আরেক জনকে দেই না। পক্ষান্তরে যাকে আমি দেই না, সেই আমার কাছে তুলনামূলক বেশি প্রিয়। কিছু সম্প্রদায়কে আমি দিয়ে থাকি, যাদের অন্তরে রয়েছে অস্থিরতা ও দ্বন্দ। আর কিছু সম্প্রদায়কে আমি মাল না দিয়ে তাদের অন্তরে আল্লাহ যে স্বচ্ছতা ও কল্যাণ রেখেছেন তার উপর সোপর্দ করি। এদেরই একজন হলেন, আমর ইবনু তাগলিব (রাঃ)। আমর (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এই উক্তিটির বিনিময়ে আমি একপাল লাল বর্ণের উটের মালিক হওয়াও পছন্দ করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৭০২৮ | 7028 | ۷۰۲۸

পরিচ্ছদঃ ৩১৫২. নবী (সাঃ) কর্তৃক তাঁর প্রতিপালক থেকে রিওয়ায়াতের বর্ণনা
৭০২৮। মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রাহমান (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ আমার বান্দা যখন আমার দিকে এক বিঘত পরিমাণ নিকটবর্তী হয় আমি তখন তার দিকে এক হাত পরিমাণ নিকটবর্তী হই। আর সে যখন আমার দিকে এক হাত পরিমাণ নিকটবর্তী হয়, আমি তখন তার দিকে দু’হাত নিকটবর্তী হই। সে যদি আমার দিকে হেঁটে আসে আমি তার দিকে দৌড়ে যাই।

হাদিস নম্বরঃ ৭০২৯ | 7029 | ۷۰۲۹

পরিচ্ছদঃ ৩১৫২. নবী (সাঃ) কর্তৃক তাঁর প্রতিপালক থেকে রিওয়ায়াতের বর্ণনা
৭০২৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটি একাধিকবার বর্ণনা করেছেন যে, (আল্লাহ বলেন) আমার বান্দা যদি আমার কাছে এক বিঘত পরিমাণ এগিয়ে আসে আমি তার দিকে এক হাত পরিমাণ এগিয়ে যাই। আর সে যদি আমার কাছে এক হাত পরিমাণ এগিয়ে মাসে, আমি তায় দিকে দুই হাত পরিমাণ এগিয়ে যাই। বর্ণনাকারী এখানে بَاعًا কিংবা بُوعًا বলেছেন।

মুতামির (রহঃ) বলেন, আমি আমার পিতা থেকে শুনেছি, তিনি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছেন, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। আর তিনি তাঁর প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৩০ | 7030 | ۷۰۳۰

পরিচ্ছদঃ ৩১৫২. নবী (সাঃ) কর্তৃক তাঁর প্রতিপালক থেকে রিওয়ায়াতের বর্ণনা
৭০৩০। আদম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের প্রতিপালক থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, প্রতিটি আমলের কাফফারা রয়েছে, কিন্তু রোযা আমার জন্যই, আমি নিজেই এর প্রতিদান প্রদান করব। রোযা পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিসকের চাইতেও অধিক সুগন্ধময়।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৩১ | 7031 | ۷۰۳۱

পরিচ্ছদঃ ৩১৫২. নবী (সাঃ) কর্তৃক তাঁর প্রতিপালক থেকে রিওয়ায়াতের বর্ণনা
৭০৩১। হাফস ইবনু উমর ও খালীফা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর প্রতিপালকের কাছ থেকে বর্ণনা করেন যে, মহান আল্লাহ বলেনঃ কোন বান্দার জন্য এ দাবি করা সঙ্গত নয় যে, সে ইউনুস ইবনু মাত্তার চাইতে উত্তম। এখানে ইউনুস (আলাইহিস সালাম) কে তাঁর পিতার দিকে সম্পর্ক যুক্ত করা হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৩২ | 7032 | ۷۰۳۲

পরিচ্ছদঃ ৩১৫২. নবী (সাঃ) কর্তৃক তাঁর প্রতিপালক থেকে রিওয়ায়াতের বর্ণনা
৭০৩২। আহমদ ইবনু আবূ সুরায়জ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল আল মুযানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মক্কা বিজয়ের দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর উটনীর উপর উপবিষ্ট অবস্থায় সূরা ফাতহ কিংবা সুরা ফাতহের কিছু অংশ পড়তে দেখেছি। বর্ণনাকারী বলেন, তিনি তারজীসহ তা পাঠ করলেন। বর্ণনাকারী বলেন, মুআবিয়া (রাঃ) ইবনুল মুগাফফালের কিরাআত নকল করে পড়ছিলেন। তিনি বললেন, যদি তোমাদের কাছে লোকজন ভিড় জমানোর আশংকা না হত, তবে আমিও তারজী করে ঠিক সেভাবে পাঠ করতাম, যেভাবে ইবনুুূল মুগাফফাল (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কিরাআত নকল করে তারজী সহকারে পাঠ করেছিলেন। তারপর আমি মুআবিয়া (রাঃ) কে বললাম, তার তারজী কিরূপ ছিল? তিনি বললেনঃ আ, আ, আ, তিনবার।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৩৩ | 7033 | ۷۰۳۳

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৩. তাওরাত ও অপরাপর আসমানী কিতাব আরবী ইত্যাদি ভাষায় ব্যাখ্যা করা বৈধ। কেননা, আল্লাহ্‌র বাণীঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তবে তাওরাত আন এবং পাঠ কর (৩ঃ ৯৩) ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, আবূ সুফিয়ান ইবন হারব (রাঃ) আমাকে এ খবর দিয়েছেন, হিরাক্লিয়াস তাঁর দোভাষীকে ডাকলেন। তারপর তিনি নবী (সাঃ) এর পত্রখানা আনার জন্য হুকুম করলেন এবং তা পড়লেন। (তাতে লিপিবদ্ধ ছিল) বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম- আল্লাহ্‌র বান্দা ও রাসূল মুহাম্মদ (সাঃ) এর পক্ষ থেকে হিরাক্লিয়াসের প্রতি এ পত্র প্রেরিত। তাতে আরও লেখা ছিল يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ (হে কিতাবীগণ এস সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই)
৭০৩৩। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আহলে কিতাব তাওরাত হিব্রু ভাষায় পাঠ করত, আর মুসলমানদের জন্য আরবী ভাষায় এর ব্যাখা করত। এ প্রেক্ষিতে তিনি বললেনঃ কিতাবধারীদেরকে তোমরা বিশ্বাস করো না আবার তাদেরকে মিথ্যারোপও করো না বরং তোমরা আল্লাহর এ বাণীটি آمَنَّا بِاللَّهِ وَمَا أُنْزِلَ‏}‏ الآيَةَ (আমরা আল্লাহতে এবং আমাদের ও তোমাদের প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে ঈমান এনেছি) বল।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৩৪ | 7034 | ۷۰۳٤

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৩. তাওরাত ও অপরাপর আসমানী কিতাব আরবী ইত্যাদি ভাষায় ব্যাখ্যা করা বৈধ। কেননা, আল্লাহ্‌র বাণীঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও, তবে তাওরাত আন এবং পাঠ কর (৩ঃ ৯৩) ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, আবূ সুফিয়ান ইবন হারব (রাঃ) আমাকে এ খবর দিয়েছেন, হিরাক্লিয়াস তাঁর দোভাষীকে ডাকলেন। তারপর তিনি নবী (সাঃ) এর পত্রখানা আনার জন্য হুকুম করলেন এবং তা পড়লেন। (তাতে লিপিবদ্ধ ছিল) বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম- আল্লাহ্‌র বান্দা ও রাসূল মুহাম্মদ (সাঃ) এর পক্ষ থেকে হিরাক্লিয়াসের প্রতি এ পত্র প্রেরিত। তাতে আরও লেখা ছিল يَا أَهْلَ الْكِتَابِ تَعَالَوْا إِلَى كَلِمَةٍ سَوَاءٍ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمْ (হে কিতাবীগণ এস সে কথায়, যা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে একই)
৭০৩৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, দুজন ইহুদী নারী-পুরুষকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আনা হলো। তারা যিনা করেছিল। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা ইহুদীগণ এ যিনাকারী ও যিনাকারিনাদের সাথে কি আচরণ করে থাক? তারা বলল, আমরা এদেরকে (এক পদ্ধতিতে) মুখ কালো ও লাঞ্ছিত করে থাকি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তাওরাত এনে তা তিলাওয়াত কর, যদি তোমরা সত্যবাদী হও। তারা তাওরাত নিয়ে আসল এবং তাদেরই খুশিমত এক ব্যাক্তিকে ডেকে বলল, হে আওয়ার! তুমি পাঠ কর। সে পাঠ করতে লাগল। পরিশেষে এক স্থানে এসে সে তাতে আপন হাত রেখে দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার হাতটি উঠাও। সে হাত উঠাল। হঠাৎ যিনার শাস্তি পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা (রজম) এর আয়াতটি স্পষ্টত দেখা যাচ্ছিল। তিলাওয়াতকারী বলল, হে মুহাম্মাদ! এদের (দু’জনের) মধ্যখানে শাস্তি পক্ষান্তরে রজমই, কিন্তু আমরা পরস্পর তা গোপন করছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে রজম করার নির্দেশ দিলে তাদেরকে রজমই করা হয়। বর্ণনাকারী বলেন, যিনাকারী পুরুষটিকে মেয়ে লোকটির উপর ঝুকে পড়ে তাকে পাথর থেকে রক্ষার চেষ্টা করতে দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৩৫ | 7035 | ۷۰۳۵

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৪. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ কুরআন বিষয়ক পারদর্শী ব্যক্তি জান্নাতে সম্মানিত পূত-পবিত্র কাতিব ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবে। অতএব, তোমাদের কণ্ঠ দ্বারা কুরআনকে সৌন্দর্যমন্ডিত কর
৭০৩৫। ইবরাহীম ইবনু হামযা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ উচ্চস্বরে মধুর কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াতকারী নাবীর প্রতি যেরূপ সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন, অন্য কিছুর প্রতি সেরূপ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৩৬ | 7036 | ۷۰۳٦

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৪. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ কুরআন বিষয়ক পারদর্শী ব্যক্তি জান্নাতে সম্মানিত পূত-পবিত্র কাতিব ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবে। অতএব, তোমাদের কণ্ঠ দ্বারা কুরআনকে সৌন্দর্যমন্ডিত কর
৭০৩৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে উরওয়া ইবনু যুবায়র, সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব, আলকামা ইবনু ওয়াক্কাস, উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ), আয়েশা (রাঃ) এর হাদীস সম্পর্কে বলেছেন। তাকে যখন অপবাদকারিগণ অপবাদ দিয়েছিল। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেন, বর্ণনাকারীদের এক একজন সে সম্পর্কে আমার কাছে হাদীসের এক এক অংশে বর্ণনা করেছেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, এর দরুন আমি আমার বিছানায় শুয়ে পড়লাম। অথচ আমি তখন জানি, আমি নির্দোষ পবিত্র এবং আল্লাহ আমাকে নির্দোষ বলে প্রমান করবেন। আল্লাহর কসম! কিন্তু আমার মর্যাদা আমার কাছে এরূপ উপযুক্ত ছিল না যে, এ ব্যাপারে ওহীই নাযিল করবেন। যা তিলাওয়াত করা হবে আমার মর্যাদা আমার কাছে তার চাইতে তুচ্ছ ছিল যে, আল্লাহ তাআলা আমার বিষয়ে এমন কোন কালাম করবেন যা তিলাওয়াত করা হবে। এ প্রসঙ্গে মহামহিম আল্লাহ অবতীর্ণ করলেনঃ যারা এমন জঘন্য অপবাদ এনেছে … পূর্ণ দশটি আয়াত।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৩৭ | 7037 | ۷۰۳۷

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৪. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ কুরআন বিষয়ক পারদর্শী ব্যক্তি জান্নাতে সম্মানিত পূত-পবিত্র কাতিব ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবে। অতএব, তোমাদের কণ্ঠ দ্বারা কুরআনকে সৌন্দর্যমন্ডিত কর
৭০৩৭। আবু নুআয়ম (রহঃ) … বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এশার সালাতে وَالتِّينِ وَالزَّيْتُونِ পড়তে শুনেছি। তাঁর চেয়ে সুন্দর স্বর কিংবা তাঁর চেয়ে সুন্দর কিরাআত আর কারো থেকে আমি শুনিনি।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৩৮ | 7038 | ۷۰۳۸

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৪. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ কুরআন বিষয়ক পারদর্শী ব্যক্তি জান্নাতে সম্মানিত পূত-পবিত্র কাতিব ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবে। অতএব, তোমাদের কণ্ঠ দ্বারা কুরআনকে সৌন্দর্যমন্ডিত কর
৭০৩৮। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কায় গোপনে থাকতেন। আর তিনি উচ্চস্বরে (তিলাওয়াত) করতেন। যখনা তা মুশরিকরা শুনল, তারা কুরআন ও এর বাহককে গালমন্দ করল। এরই প্রেক্ষিতে আল্লাহ তার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানিয়ে দিলেন, আপনি আপনার কুরআন উচ্চস্বরেও পড়বেন না এবং খুব চুপে চুপেও পড়বেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৩৯ | 7039 | ۷۰۳۹

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৪. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ কুরআন বিষয়ক পারদর্শী ব্যক্তি জান্নাতে সম্মানিত পূত-পবিত্র কাতিব ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবে। অতএব, তোমাদের কণ্ঠ দ্বারা কুরআনকে সৌন্দর্যমন্ডিত কর
৭০৩৯। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবদুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান ইবনু আবূ সা’সাআ (রহঃ) কে বললেন, আমি তোমাকে লক্ষ্য করছি, তুমি বকরী পাল ও ময়দানকে ভালবাস। সুতরাং তুমি যখন বকরীর পাল কিংবা ময়দানে থাকবে, তখন সালাত (নামায/নামাজ) এর জন্য উচ্চস্বরে আযান দেবে। কারণ মুআযযীনের আযানের স্বর যতদূর পৌছাব, ততদুরের জ্বীন, ইনসান, অন্যান্য জিনিস যারাই শুনবে, কিয়ামতের দিন তারা তার সপক্ষে সাক্ষী দেবে। আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, আমি এটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৪০ | 7040 | ۷۰٤۰

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৪. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ কুরআন বিষয়ক পারদর্শী ব্যক্তি জান্নাতে সম্মানিত পূত-পবিত্র কাতিব ফেরেশতাদের সঙ্গে থাকবে। অতএব, তোমাদের কণ্ঠ দ্বারা কুরআনকে সৌন্দর্যমন্ডিত কর
৭০৪০। কাবীসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কুরআন পাঠ করতেন তখন তার মাথা মুবারক থাকত আমার কোলে অথচ আমি তখন ঋতুমতী অবস্থায় ছিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৪১ | 7041 | ۷۰٤۱

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৫. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ কাজেই কুরআনের যতটুকু আবৃত্তি করা তোমাদের জন্য সহজ ততটুকু আবৃত্তি কর (৭৩ঃ ২০)
৭০৪১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রহঃ) ও আবদুর রহমান ইবনু আবদুল কারী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তাঁরা উভয়ে উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবদ্দশায় আমি হিশাম ইবনু হাকীম (রাঃ) কে (সালাতে) সূরায়ে ফুরকান তিলাওয়াত করতে শুনেছি। আমি একাগ্রচিত্তে তাঁর তিলাওয়াত শুনছিলাম। তিনি এমন অনেকগুলো শব্দ তিলাওয়াত করছিলেন, যেগুলো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তিলাওয়াত করাননি। এতে আমি তাঁকে সালাত (নামায/নামাজ) রত অবস্থায় ধরে ফেলতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সালাম ফেরানো পর্যন্ত আমি ধৈর্য ধরলাম। তারপর আমি তার চাদর দিয়ে তাকে জড়িয়ে ধরলাম আর বললাম, আমি তোমাকে যে সূরা পাঠ করতে শুনলাম, তা তোমাকে কে শিখিয়েছে? তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। আমি বললাম, তুমি মিথ্যে বলেছ, তিনি আমাকে শিখিয়েছেন, তবে তোমার কিরাআতের মত নয়।

তারপর আমি তাঁকে টেনে টেনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে চললাম। এরপর আমি বললাম, আমি শুনলাম একে ভিন্ন শব্দ দ্বারা সূরা ফুরকান পাঠ করতে, যা আপনি আমাকে শিখাননি। তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ আচ্ছা, তাকে ছেড়ে দাও। তুমি পড়, হে হিশাম! এরপর আমি যেরূপ কিরাআত শুনেছিলাম তিনি সেরূপ কিরাআত পড়লেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কুরআন অনুরূপই অবতীর্ণ হয়েছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উমর! তুমি পাঠ কর। আমি সেভাবে পড়লাম যেভাবে আমাকে শিখানো হয়েছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এরূপই অবতীর্ণ হয়েছে। এ কুরআন সাত হরফের (পাঠ) নাযিল করা হয়েছে। অতএব যেভাবে সহজ হয় তা সেভাবে তোমরা পাঠ কর।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৪২ | 7042 | ۷۰٤۲

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৬. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমি কুরআন সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য। অতএব, উপদেশ গ্রহণকারী আছে কি? (৪৫ঃ ৩২)। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ প্রত্যেক ব্যক্তি যাকে যে কাজের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে কাজ সহজ করে দেয়া হয়। مُيَسَّرٌ অর্থ প্রস্তুতকৃত। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, يَسَّرْنَا الْقُرْآنَ بِلِسَانِكَ এর অর্থ আমি কুরআন তিলাওয়াত আপনার জন্য সহজ করে দিয়েছি
৭০৪২। আবু মা’মার (রহঃ) … ইমরান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমলকারীরা কিসে আমল করছে? তিনি বললেনঃ যাকে যে কাজ করার জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে কাজ করা সহজ করে দেওয়া হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৪৩ | 7043 | ۷۰٤۳

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৬. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ আমি কুরআন সহজ করে দিয়েছি উপদেশ গ্রহণের জন্য। অতএব, উপদেশ গ্রহণকারী আছে কি? (৪৫ঃ ৩২)। নবী (সাঃ) বলেছেনঃ প্রত্যেক ব্যক্তি যাকে যে কাজের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে, তার জন্য সে কাজ সহজ করে দেয়া হয়। مُيَسَّرٌ অর্থ প্রস্তুতকৃত। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, يَسَّرْنَا الْقُرْآنَ بِلِسَانِكَ এর অর্থ আমি কুরআন তিলাওয়াত আপনার জন্য সহজ করে দিয়েছি
৭০৪৩। মুহাস্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আলী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি একবার কোন জানাযায় ছিলেন। তারপর তিনি একটি কাঠের টুকরা হাতে নিয়ে তা দিয়ে মাটি খোঁচাচ্ছিলেন এবং বলছিলেন, তোমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার ঠিকানা জাহান্নাম কিংবা জান্নাতে নির্ধারিত করা হয়নি। সাহাবীগণ বললেনঃ তা হলে আমরা কি এর উপর ভরসা করব না? তিনি বললেনঃ তোমরা আমল করতে থাক। প্রত্যেককেই সহজ করে দেয়া হয়। (অতঃপর তিনি তিলাওয়াত করলেনঃ ‏فَأَمَّا مَنْ أَعْطَى وَاتَّقَى‏.‏ الآيَةَ‏ সুতরাং কেউ দান করলে মুত্তাকী হলে……।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৪৪ | 7044 | ۷۰٤٤

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৭. আল্লাহ্‌র বাণীঃ বস্তুত এটি সম্মানিত কুরআন, সংরক্ষিত ফলকে লিপিবদ্ধ (৮৫ঃ ২১, ২২) শপথ তূর পর্বতের। শপথ কিতাবের, যা লিখিত আছে। (৫২ঃ ১, ২) কাতাদা (র) বলেন, مَسْطُورٍ অর্থ লিপিবদ্ধ يَسْطُرُونَ অর্থ তারা লিখেছ أُمِّ الْكِتَابِ অর্থাৎ কিতাবের স্তর ও মূল مَا يَلْفِظُ অর্থ যা কিছু বলা হয়, তা লিপিবদ্ধ হয়। এর ব্যাখ্যায় ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, ভালমন্দ সব লিপিবদ্ধ করা হয়। يُحَرِّفُونَ এর অর্থ পবির্তন করা। এমন কেই নেই, যে আল্লাহ্‌র কোন কিতাবের শব্দ পরিবর্তন করতে পারে। তবে তারা তাহরীফ তথা অপব্যাখ্যা করতে পারে। دِرَاسَتُهُمْ অর্থ তাদের তিলাওয়াত وَاعِيَةٌ অর্থ সংরক্ষণকারী تَعِيَهَا অর্থ তা সংরক্ষণ করে। এবং এই কুরআন আমার নিকট প্রেরিত হয়েছে, যেন তোমাদেরকে এর দ্বারা আমি সতর্ক করি (৬ঃ ১৯)। অর্থাৎ মক্কাবাষী এবং যাদের কাছে এ কুরআন প্রচারিত হবে, রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) তাদের জন্য সতর্ককারী। আমার কাছে খলীফা (রহঃ) বলেছেন, মুতামির (র) ….. আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। নবী (সা) বলেছেনঃ আল্লাহ্‌ যখন তাঁর মাখলুকাত সৃষ্টি করলেন, তাঁর কাছে একটি কিতাব লিপিবদ্ধ রাখলেন। ‘‘আমার গযবের উপর আমার রহমত প্রবল হয়েছে’’ এটি তাঁর কাছে আরশের ওপর সংরক্ষিত রয়েছে
৭০৪৪। মুহাম্মাদ ইবনু আবূ গালিব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তা আলা সমস্ত সৃষ্টিকে সৃষ্টি করার পূর্বে একটি লেখা লিপিবদ্ধ করে রেখেছেন। তা হলো “আমার ক্রোধের উপর আমার রহমত অগ্রগামী রয়েছে” এটি তাঁরই নিকটে আরশের ওপর লিপিবদ্ধ আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৪৫ | 7045 | ۷۰٤۵

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৮. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ্‌ই সৃষ্টি করেন তোমাদেরকে এবং তোমরা যা তৈরী কর তাও (৩৭ঃ ৯৬)। আমি প্রত্যেক কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে (৫৪ঃ ৪৯)। ছবি নির্মাতাদের বলা হবে, তোমরা যা তৈরি করেছ, তাতে জীবন দাও। তোমাদের প্রতিপালক যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেন। তারপর তিনি আরশে অধিষ্ঠিত হন। তিনিই দিনতে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন যেন এদের একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে। আর সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি যা তাঁর আজ্ঞাধীন, তা তিনিই সৃষ্টি করেছেন। জেনে রাখ সৃজন ও আদেশ তাঁরই। মহিমাময় জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ্‌ (৭ঃ ৫৪) ইবন উয়ায়না (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্‌ খালক্কে আমর থেকে পৃথক করে বর্ণনা করেছেন। কেননা তার বাণী হলোঃ أَلاَ لَهُ الْخَلْقُ وَالأَمْرُ জেনে রাখ সৃজন ও আদেশ তাঁরই। নবী (সাঃ) ঈমানকেও আমল বলে উল্লেখ করেছেন। আবূ যার (রাঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হল, কোন আমলীট সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনা, তাঁরা রাস্তায় জিহাদ করা। মহান আল্লাহ্‌ বলেনঃ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ এটা তাদের কাজেরই প্রতিদান। আবদুল কায়সের প্রতিনিধি দল নবী (সাঃ) এর কাছে এসে বললেন, আমাদের কিছু সংক্ষিপ্ত বিষয়ের নির্দেশ দিন, যেগুলো মেনে চললে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি তাদের আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনা, রাসূলের রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান, নামায কায়েম করা এবং যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিলেন। এসবকেই তিনি আমলরূপে উল্লেখ করেছেন
৭০৪৫। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহহাব (রহঃ) … যাহদাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জারমের এ গোত্রটির সাথে আশআরী গোত্রের গভীর ভালবাসা ও ভ্রাতৃত্ব ছিল। এক সময় আমরা আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তার কাছে খাবার আনা হল। এতে মুরগীর গোশতও ছিল। এ সময় তার নিকট বনী তায়মুলাহর এক ব্যাক্তি ছিল। সে (দেখতে) যেন আযাদকৃত গোলাম (অনারব)। তাকেও আবূ মূসা (রাঃ) খেতে ডাকলেন। সে বলল, আমি এ মুরগীকে এমন কিছু জিনিস খেতে দেখেছি, যার ফলে এটি খেতে আমি ঘৃণা করি। এই জন্য কসম করেছি, আমি, তা আর খাব না।

আবূ মূসা (রাঃ) বললেনঃ তুমি এদিকে এসো, এ সম্পর্কে আমি তোমাকে একটি হাদীস শোনাব। আমি এক সময় আশআরী গোত্রের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বাহন চাওয়ার জন্য উপস্থিত হয়েছি। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি তোমাদের বাহন দেব না। আর তোমাদের দেওয়ার মত আমার কাছে বাহন নেই। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গনীমতের কিছু উট আনা হলে তিনি আমাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন এবং বললেনঃ আশ’আরীদের দলটি কোথায়? তারপর তিনি পাঁচটি মোটা তাজা ও উত্তম উট আমাদের দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিলেন।

আমরা এগুলো নিয়ে ফিরার পথে বলতে লাগলাম, আমরা যে কি করলাম! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কসম করে বললেন, আমাদের বাহন দেবেন না এবং তাঁর কাছে দেওয়ার মত বাহন নেই। তারপরও তো তিনি আমাদের বাহন দিয়ে দিলেন। হয়ত আমরা তাকে তাঁর কসম সম্পর্কে অজ্ঞাত অবস্থায় পেয়েছিলাম। আল্লাহর কসম! আমরা কখনো সফলকাম হবো না। তাই আমরা তাঁর কাছে আবার গেলাম এবং তা তাকে বললাম। তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের বাধা দেইনি, বরং দিয়েছেন আল্লাহ। আল্লাহর কসম! আমি কোন বিষয়ে কসম করি যদি তার বিপরীতে মঙ্গল দেখতে পাই, তবে তা করে নেই এবং (কাফফারা দিয়ে) কসম থেকে বের হয়ে আসি।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৪৬ | 7046 | ۷۰٤٦

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৮. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ্‌ই সৃষ্টি করেন তোমাদেরকে এবং তোমরা যা তৈরী কর তাও (৩৭ঃ ৯৬)। আমি প্রত্যেক কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে (৫৪ঃ ৪৯)। ছবি নির্মাতাদের বলা হবে, তোমরা যা তৈরি করেছ, তাতে জীবন দাও। তোমাদের প্রতিপালক যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেন। তারপর তিনি আরশে অধিষ্ঠিত হন। তিনিই দিনতে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন যেন এদের একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে। আর সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি যা তাঁর আজ্ঞাধীন, তা তিনিই সৃষ্টি করেছেন। জেনে রাখ সৃজন ও আদেশ তাঁরই। মহিমাময় জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ্‌ (৭ঃ ৫৪) ইবন উয়ায়না (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্‌ খালক্কে আমর থেকে পৃথক করে বর্ণনা করেছেন। কেননা তার বাণী হলোঃ أَلاَ لَهُ الْخَلْقُ وَالأَمْرُ জেনে রাখ সৃজন ও আদেশ তাঁরই। নবী (সাঃ) ঈমানকেও আমল বলে উল্লেখ করেছেন। আবূ যার (রাঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হল, কোন আমলীট সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনা, তাঁরা রাস্তায় জিহাদ করা। মহান আল্লাহ্‌ বলেনঃ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ এটা তাদের কাজেরই প্রতিদান। আবদুল কায়সের প্রতিনিধি দল নবী (সাঃ) এর কাছে এসে বললেন, আমাদের কিছু সংক্ষিপ্ত বিষয়ের নির্দেশ দিন, যেগুলো মেনে চললে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি তাদের আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনা, রাসূলের রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান, নামায কায়েম করা এবং যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিলেন। এসবকেই তিনি আমলরূপে উল্লেখ করেছেন
৭০৪৬। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আবূ জামরা দুবায়ী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে বললাম। তিনি বললেন, আবদুল কায়সের প্রতিনিধিদল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল, আমাদের এবং আপনাদের মাঝখানে মুযার গোত্রের মুশরিকদের বসবাস। যদ্দরুন আমরা সম্মানিত মাস (আশহুরে হুরম) ছাড়া আর কোন সময় আপনার কাছে আসতে পারি না। সুতরাং আমাদের সংক্ষিপ্ত কিছু বিষয়ের নির্দেশ দিন, যা মেনে চললে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করব এবং আমরা যাদের রেখে এসেছি তাদেরও আহবান জানাতে পারব। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি তোমাদের চারটি বিষয়ের নির্দেশ দিচ্ছি। আর চারটি বিষয় থেকে নিষেধ করছি। আমি তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনার। আর তোমরা জানো কি, আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা কাকে বলে? তা হল, সাক্ষ্য দেয়া যে আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করা, যাকাত দেয়া, গনীমতের মালের এক পঞ্চমাংশ দেওয়া। তোমাদের চারটি বিষয় থেকে নিষেধ করছি, (তা হলো) লাউয়ের খোল দ্বারা তৈরি পাত্রে, খেজুর গাছের মূল খোদাই করে তৈরি পাত্রে, আলকাতরা জাতীয় (রাসায়নিক) দ্রব্য দিয়ে প্রলেপ দেওয়া গাত্রে, মাটির সবুজ ঘটিতে তোমরা পান করবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৪৭ | 7047 | ۷۰٤۷

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৮. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ্‌ই সৃষ্টি করেন তোমাদেরকে এবং তোমরা যা তৈরী কর তাও (৩৭ঃ ৯৬)। আমি প্রত্যেক কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে (৫৪ঃ ৪৯)। ছবি নির্মাতাদের বলা হবে, তোমরা যা তৈরি করেছ, তাতে জীবন দাও। তোমাদের প্রতিপালক যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেন। তারপর তিনি আরশে অধিষ্ঠিত হন। তিনিই দিনতে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন যেন এদের একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে। আর সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি যা তাঁর আজ্ঞাধীন, তা তিনিই সৃষ্টি করেছেন। জেনে রাখ সৃজন ও আদেশ তাঁরই। মহিমাময় জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ্‌ (৭ঃ ৫৪) ইবন উয়ায়না (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্‌ খালক্কে আমর থেকে পৃথক করে বর্ণনা করেছেন। কেননা তার বাণী হলোঃ أَلاَ لَهُ الْخَلْقُ وَالأَمْرُ জেনে রাখ সৃজন ও আদেশ তাঁরই। নবী (সাঃ) ঈমানকেও আমল বলে উল্লেখ করেছেন। আবূ যার (রাঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হল, কোন আমলীট সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনা, তাঁরা রাস্তায় জিহাদ করা। মহান আল্লাহ্‌ বলেনঃ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ এটা তাদের কাজেরই প্রতিদান। আবদুল কায়সের প্রতিনিধি দল নবী (সাঃ) এর কাছে এসে বললেন, আমাদের কিছু সংক্ষিপ্ত বিষয়ের নির্দেশ দিন, যেগুলো মেনে চললে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি তাদের আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনা, রাসূলের রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান, নামায কায়েম করা এবং যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিলেন। এসবকেই তিনি আমলরূপে উল্লেখ করেছেন
৭০৪৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এসব ছবি নির্মাতাকে কিয়ামতের দিন আযাব দেওয়া হবে। তখন তাদেরকে হুকুম করা হবে তোমরা যা তৈরি করেছ তাতে প্রাণ দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৪৮ | 7048 | ۷۰٤۸

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৮. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ্‌ই সৃষ্টি করেন তোমাদেরকে এবং তোমরা যা তৈরী কর তাও (৩৭ঃ ৯৬)। আমি প্রত্যেক কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে (৫৪ঃ ৪৯)। ছবি নির্মাতাদের বলা হবে, তোমরা যা তৈরি করেছ, তাতে জীবন দাও। তোমাদের প্রতিপালক যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেন। তারপর তিনি আরশে অধিষ্ঠিত হন। তিনিই দিনতে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন যেন এদের একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে। আর সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি যা তাঁর আজ্ঞাধীন, তা তিনিই সৃষ্টি করেছেন। জেনে রাখ সৃজন ও আদেশ তাঁরই। মহিমাময় জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ্‌ (৭ঃ ৫৪) ইবন উয়ায়না (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্‌ খালক্কে আমর থেকে পৃথক করে বর্ণনা করেছেন। কেননা তার বাণী হলোঃ أَلاَ لَهُ الْخَلْقُ وَالأَمْرُ জেনে রাখ সৃজন ও আদেশ তাঁরই। নবী (সাঃ) ঈমানকেও আমল বলে উল্লেখ করেছেন। আবূ যার (রাঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হল, কোন আমলীট সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনা, তাঁরা রাস্তায় জিহাদ করা। মহান আল্লাহ্‌ বলেনঃ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ এটা তাদের কাজেরই প্রতিদান। আবদুল কায়সের প্রতিনিধি দল নবী (সাঃ) এর কাছে এসে বললেন, আমাদের কিছু সংক্ষিপ্ত বিষয়ের নির্দেশ দিন, যেগুলো মেনে চললে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি তাদের আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনা, রাসূলের রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান, নামায কায়েম করা এবং যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিলেন। এসবকেই তিনি আমলরূপে উল্লেখ করেছেন
৭০৪৮। আবু নুমান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এসব ছবি নির্মাতাকে কিয়ামতের দিন শাস্তি দেওয়া হবে। আর তাদের বলা হবে, যা তোমরা সৃষ্টি করেছ, তা জীবিত কর।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৪৯ | 7049 | ۷۰٤۹

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৮. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ্‌ই সৃষ্টি করেন তোমাদেরকে এবং তোমরা যা তৈরী কর তাও (৩৭ঃ ৯৬)। আমি প্রত্যেক কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে (৫৪ঃ ৪৯)। ছবি নির্মাতাদের বলা হবে, তোমরা যা তৈরি করেছ, তাতে জীবন দাও। তোমাদের প্রতিপালক যিনি আকাশমন্ডলী ও পৃথিবী ছয় দিনে সৃষ্টি করেন। তারপর তিনি আরশে অধিষ্ঠিত হন। তিনিই দিনতে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করেন যেন এদের একে অন্যকে দ্রুতগতিতে অনুসরণ করে। আর সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্ররাজি যা তাঁর আজ্ঞাধীন, তা তিনিই সৃষ্টি করেছেন। জেনে রাখ সৃজন ও আদেশ তাঁরই। মহিমাময় জগতসমূহের প্রতিপালক আল্লাহ্‌ (৭ঃ ৫৪) ইবন উয়ায়না (রহঃ) বলেন, আল্লাহ্‌ খালক্কে আমর থেকে পৃথক করে বর্ণনা করেছেন। কেননা তার বাণী হলোঃ أَلاَ لَهُ الْخَلْقُ وَالأَمْرُ জেনে রাখ সৃজন ও আদেশ তাঁরই। নবী (সাঃ) ঈমানকেও আমল বলে উল্লেখ করেছেন। আবূ যার (রাঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হল, কোন আমলীট সর্বোত্তম? তিনি বললেনঃ আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনা, তাঁরা রাস্তায় জিহাদ করা। মহান আল্লাহ্‌ বলেনঃ جَزَاءً بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ এটা তাদের কাজেরই প্রতিদান। আবদুল কায়সের প্রতিনিধি দল নবী (সাঃ) এর কাছে এসে বললেন, আমাদের কিছু সংক্ষিপ্ত বিষয়ের নির্দেশ দিন, যেগুলো মেনে চললে আমরা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারব। তিনি তাদের আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান আনা, রাসূলের রিসালাতের সাক্ষ্য প্রদান, নামায কায়েম করা এবং যাকাত আদায়ের নির্দেশ দিলেন। এসবকেই তিনি আমলরূপে উল্লেখ করেছেন
৭০৪৯। মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা ঘোষনা করেছেন। তাদের অপেক্ষা বড় যালিম আর কে হতে পারে যে আমার সৃষ্টির সদৃশ সৃষ্টি করার জন্য প্রস্তুত হয়েছে? তাহলে তারা একটা শস্যদানা কিংবা যব তৈরি করুক।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৫০ | 7050 | ۷۰۵۰

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৯. গুনাহ্গার ও মুনাফিকের কিরাআত, তাদের স্বর ও তাদের কিরাআত কণ্ঠনালী অতিক্রম করে না
৭০৫০। হুদবা ইবনু খালিদ (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুরআন তিলাওয়াতকারী ঈমানদারের উদাহরণ উৎরুজ্জার (কমলালেবু) মত। এর স্বাদও উত্তম এবং ঘ্রানও হৃদয়গ্রাহী। আর যে মুমিন কুরআন তিলাওয়াত করে না তার উদাহরণ যেন খেজুর। এটি খেজুর স্বাদ বটে, তবে তার কোন সুঘ্রাণ নেই। কুরআন তিলাওয়াতকারী গুনাহগার ব্যাক্তিটি সুগন্ধি ঘামের তূল্য। এর ঘ্রাণ আছে বটে, তবে স্বাদে তিক্ত। আর যে অতি গুনাহগার হয়ে আবার কুরআনও তিলাওয়াত করে না সে মাকাল ফলের মত। এ ফল স্বাদেও তিক্ত এবং এর কোন সুঘ্রাণও নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৫১ | 7051 | ۷۰۵۱

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৯. গুনাহ্গার ও মুনাফিকের কিরাআত, তাদের স্বর ও তাদের কিরাআত কণ্ঠনালী অতিক্রম করে না
৭০৫১। আলী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লোকজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জ্যোতিষদের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করল। তিনি বললেনঃ তারা মূলত কিছুই নয়। তারা জিজ্ঞাসা করল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কখনো কখনো তারা তো এমন কিছু কথাও বলে ফেলে যা সত্য হয়। এতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এসব কথা সত্য। জ্বীনেরা এসব কথা প্রথম শোনে, (মনে রেখে) পরে এদের দোসরদের কানে মুরগির মত করকর রবে নিক্ষেপ করে দেয়। এরপর এসব জ্যোতিষী সামান্য সত্যের সাথে শত মিথ্যার মিশ্রণ ঘটায়।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৫২ | 7052 | ۷۰۵۲

পরিচ্ছদঃ ৩১৫৯. গুনাহ্গার ও মুনাফিকের কিরাআত, তাদের স্বর ও তাদের কিরাআত কণ্ঠনালী অতিক্রম করে না
৭০৫২। আবু নুমান (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পূর্বাচল থেকে একদল লোকের অভ্যুদয় ঘটবে। তারা কুরআন পাঠ করবে, তবে তাদের এ পাঠ তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে, যেভাবে শিকার (ধনুক) থেকে তীর বেরিয়ে যায়। তারা আর ফিরে আসবে না, যে পর্যন্ত তীর ধনুকের ছিলায় না আসে। বলা হল, তাদের আলামত কি? তিনি বললেনঃ তাদের আলামত হল মাথা মুণ্ডন।

হাদিস নম্বরঃ ৭০৫৩ | 7053 | ۷۰۵۳

পরিচ্ছদঃ ৩১৬০. আল্লাহ্‌ তা’আলার বাণীঃ কিয়ামত দিবসে আমি স্থাপন করব ন্যায়বিচারের মানদন্ড (২১ঃ ৪৭)। আদম সন্তানদের আমল ও কথা পরিমাপ করা হবে। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, রুমীদের (ইটালীয়দের) ভাষায় الْقُسْطَاسُ অর্থ ন্যায় ও ইনসাফ। الْمُقْسِطِ শব্দমূল হল الْقِسْطُ ُ الْمُقْسِطِ অর্থ ন্যায়পরায়ণ। অপর পক্ষে الْقَاسِطُ এর অর্থ (কিন্তু) জালিম
৭০৫৩। আহমাদ ইবনু আশকাব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুটি কলেমা (বানী) রয়েছে, যেগুলো দয়াময় আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়, উচ্চারণে খুবই সহজ (আমলের) পাল্লায় অত্যন্ত ভারী। (বাণী দু’টি হচ্ছে), “সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহান্নাল্লাহিল আযীম” আমরা আল্লাহ তায়ালার প্রশংসাসহ তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করছি, মহান আল্লাহ অতীব পবিত্র।

Exit mobile version