Site icon BnBoi.Com

সহিহ বুখারী ০৯ম খণ্ড (৪৮৭৫-৫৯৬৪)

Sahi Bukhari 9th Part by Imam Bukhari

 

সহিহ বুখারী ০৯ম খণ্ড (৪৮৭৫-৫৯৬৪)

তালাক অধ্যায় (৪৮৭৫-৪৯৫৯)

হাদীস নং ৪৮৭৫ – আল্লাহর বাণী: হে নবী ! তোমরা যখন তোমাদের স্ত্রীগণকে তালাক দিতে ইচ্ছা কর, তখন ইদ্দতের প্রতি লক্ষ্য রেখে তাদের তালাক দিবে।

ইসমাঈল ইবনে আবদুল্লাহ রহ………..আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সময়ে তাঁর স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দিলেন। উমর ইবনে খাত্তাব রা. এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলেন।তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে নির্দেশ দাও, সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনে এবং নিজের কাছে লেখে দেয় যতক্ষণ না সে মহিলা পবিত্র হয়ে পুনরায় ঋতুবতী হয় এবং আবার পবিত্র হয়। এরপর সে যদি ইচ্ছা করে, তাকে রেখে দিবে, আর যদি ইচ্ছা করে তবে সহবাসের পূর্বে তাকে তালাক দেবে। আর ঐ-ই তালাকের পদ্ধতি, যে পদ্ধতিতে আল্লাহ তায়ালা স্ত্রীদের তালাক দেওয়ার বিধান রেখেছেন।

হাদীস নং ৪৮৭৬ – হায়েয অবস্থায় তালাক দিলে তা তালাক হিসাবে পরিগণিত হবে

সুলাইমান ইবনে হারব রহ…………ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিত যে, তিনি তাঁর স্ত্রীকে হায়েয অব্স্থায় তালাক দিলেন, উমর রা. বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে উল্লেখ করলেন। তখন তিনি বললেন, সে যেন তাকে ফিরিয়ে আনে। রাবী (ইবনে সীরীন) বলেন, আমি বললাম, তালাকটি কি গণ্য করা হবে? তিনি (ইবনে উমর) বললেন, তবে কি হবে? কাতাদা রহ. ইউনুস ইবনে জুবাইর রহ. থেকে, তিনি ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তাকে নির্দেশ দাও সে যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনে। আমি (ইউনুস) বললাম, তালাকটি কি পরিগণিত হবে? তিনি (ইবনে উমর) বললেন, তুমি কি মনে কর? যদি সে অক্ষম হয় এবং স্বেচ্ছায় আহমকী করে। আবু মামার বলেন, আবদুল ওয়ারিস আইউব থেকে, তিনি সাঈদ ইবনে জুবাইর থেকে, তিনি ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, এটিকে আমার উপর এক তালাক ধরা হয়েছিল।

হাদীস নং ৪৮৭৭ – তালাক দেওয়ার সময় স্বামী কি তার স্ত্রীর সামনাসামনি হয়ে তালাক দেবে?

হুমাইদী রহ………আওযাঈ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি যুহরী রহ.-কে জিজ্ঞাসা করলাম, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোন সহধর্মিণী তাঁর থেকে পরিত্রাণ চেয়েছিল? উত্তরে তিনি বললেন, উরওয়া রা. আয়েশা রা. থেকে আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, জাওনের কন্যাকে যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট (একটি ঘরে) পাঠানো হল আর তিনি তার নিকটবর্তী হলেন, তখন সে মহান সত্তার কাছে পানাহ চেয়েছ। তুমি তোমার পরিবারের কাছে চলে যাও। আবু আবদুল্লাহ রহ. বলেন, হাদীসটি হজ্জাজ ইবনে আবু মানী ও বর্ণনা করেছেন, তাঁর পিতামহ থেকে তিনি যুহরী থেকে, তিনি উরওয়া থেকে এবং আয়েশা রা. থেকে।

হাদীস নং ৪৮৭৮

আবু নুয়াইম রহ……….আবু উসাইদ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে বের হয়ে শাওত নামক বাগানের নিকট দিয়ে চলতে চলতে দুটি বাগান পর্যন্ত পৌঁছলাম। তিনি (ভিতরে) প্রবেশ করলেন। তখন নুমান ইবনে শারাহীলের কন্যা জুয়াইনাকে উমাইমার খেজুর বাগানস্থিত ঘরে পৌঁছান হয়। আর তাঁর সাথে তাঁর সেবার জন্য ধাত্রীও ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তার কাছে গিয়ে বললেন, তুমি নিজেকে আমার কাছে সমর্পণ কর। তখন সে বলল, কোন রাজুকুমারী কি কোন বাজারী (নীচ) ব্যক্তির কাছে নিজেকে সমর্পণ করে? রাবী বলেন, এরপর তিনি তার হাত প্রসারিত করলেন তার শরীরে রাখার জন্য, যাতে সে শান্ত হয়। সে বলল, আমি তোমার থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। তিনি বলরেন, তুমি উপযুক্ত সত্তারই আশ্রয় নিয়েছ। এরপর তিনি আমাদের নিকট বেরিয়ে আসলেন এবং বললেন, হে আবু উসাইদ ! তাকে দু’খানা কাতান কাপড় পরিয়ে দাও এবং তাকে পরিবারের নিকট পৌঁছিয়ে দাও। হুসাইন ইবনে ওয়ালীদ নিশাপুরী রহ………সাহল ইবনে সাদ ও আবু উসায়দ রা. থেকে বর্ণনা করেন। তাঁরা বলেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমাইয়া বিনতে শারাহীলকে বিবাহ করেন। পরে তাকে তার কাছে আনা হলে তিনি তার দিকে হাত বাড়ালেন। সে এটি অপছন্দ করল। এরপর তিনি আবু উসাইদ নির্দেশ দিলেন। তার জিনিস গুটিয়ে এবং দু’খানা কাতান বস্ত্র পরিয়ে তাকে তার পরিবারে পৌঁছে দিতে।

হাদীস নং ৪৮৭৯

আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ রহ………আবু উসাইদ ও সাহল ইবনে সাদ রা. থেকে অনুরূপ বর্ণিত আছে।

হাদীস নং ৪৮৮০

হাজ্জাজ ইবনে মিনহাল রহ……….আবু গাল্লাব ইউনুস ইবনে জুবাইর রহ. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি ইবনে উমরকে বললাম, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দিয়েছে। তিনি বললেন, তুমি ইবনে উমরকে চেন। ইবনে উমর রা. তাঁর স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দিয়েছিল। তখন উমর রা. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বিষয়টি তাকে অবহিত করলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আদেশ দিলেন। পরে তার স্ত্রী পবিত্র হলে, সে যদি চায় তবে তাকে তালাক দেবে। আমি বললাম, এতে কি তালাক গণনা করা হয়েছিল? তিনি বললেন, তুমি কি মনে কর? যদি সে অক্ষম হয় এবং স্বেচ্ছায় বোকামী করে।

হাদীস নং ৪৮৮১ – যারা তিন তালাক কে জায়েয মনে করেন।

আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ রহ…………সাহল ইবনে সাদ সাঈদী রা. থেকে বর্ণিত যে, উওয়াইমির আজলানী রা. আসেম ইবনে আদী আনসারী রা.-এর নিকট এসে তাকে বললেন, হে আসিম! যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীর সাথে অপর কোন পুরুষকে (ব্যভিচার-রত) দেখতে পায় তবে সে তাকে হত্যা করে ফেলে, তবে কি তোমরা তাকে হত্যা করবে? (আর যদি হত্যা না করে) তবে সে কি করবে? হে আসিম! আমার পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে তুমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের জিজ্ঞাসাবাদকে অপছন্দনীয় এবং দূষণীয় মনে করলেন। এমন কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উক্তি শুনে আসিম রা. ঘাবড়ে গেলেন। এরপর আসিম রা. স্বীয় গৃহে প্রত্যাবর্তন করলে উওয়াইমির রা. এসে বললেন, হে আসিম! রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে জিজ্ঞাসিত বিষয়কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম না তুমি কল্যাণকর কিছু নিয়ে আমার কাছে আসনি। তোমার জিজ্ঞাসিত বিষয়কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম না পছন্দ করেছেন। উওয়াইমির রা. বললেন, আল্লাহর কসম! (উত্তর না পাওয়া পর্যন্ত) এ বিষয়ে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতেই থাকব। উওয়াইমির রা. এসে লোকদের মাঝে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পেলেন এবং বললেন, হে আল্লাহ রাসূল ! যদি কেউ তার স্ত্রীর সাথে পরপুরুষকে (ব্যভিচার-রত) দেখতে পায়, আর তাকে হত্যা করে ফেলে, তবে আপনার কি তাকে হত্যা করবেন? আর যদি সে (স্বামী) হত্যা না করে, তবে কি করবে? তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ও তোমার স্ত্রীর ব্যাপারে আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে। সুতরাং তুমি গিয়ে তাকে (তোমার পত্নীকে) নিয়ে আস। সাহল রা. বলেন, এরপর তারা দু’জনে লিআন করল। আমি সে সময (অন্যান্য) লোকের সাথে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে ছিলাম। উভয়ের লিআন করা হয়ে গেলে উওয়াইমির রা. বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এখন যদি আমি তাকে (স্ত্রীত্বে) রাখি তবে এটা তার উপর মিথ্যা আরোপ করা হবে। এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আদেশ দেওয়ার পূর্বেই তিনি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিলেন। ইবনে শিহাব রহ. বলেন, পরবর্তীতে লিআনকারীদ্বয়ের পন্থা হল ঐ বিচ্ছিন্নতা।

হাদীস নং ৪৮৮২

সাঈদ ইবনে উফাইর রহ……….আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রিফাআ কুরাযীর স্ত্রী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! রিফাআ আমাকে পূর্ণ সম্পর্কচ্ছেদ তালাক (তিন তালাক) দিয়েছে। পরে আমি আবদুর রহমান ইবনে যুবাইর কুরাযীকে বিবাহ করি। কিন্তু তার কাছে কাপড়ের কিনারা সদৃশ বৈ কিছু নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, সম্ভবত তুমি রিফাআর নিকট ফিরে যেতে ইচ্ছা করছ। কিন্তু তা তো সম্ভব নয়, যতক্ষণ না সে তোমার স্বাদ গ্রহণ করে এবং তুমি তার স্বাদ গ্রহণ কর।

হাদীস নং ৪৮৮৩

মুহাম্মদ ইবনে বাশশার রহ………..আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যে, জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিলে সে (স্ত্রী) অন্যত্র বিবাহ করল। পরে দ্বিতীয় স্বামীও তাকে তালাক দিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করা হল: মহিলাটি কি প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হবে? তিনি বললেন, না। যতক্ষণ না সে (দ্বিতীয় স্বামী) তার স্বাদ গ্রহণ করবে, যেমন করেছিল প্রথম স্বামী।

হাদীস নং ৪৮৮৪ – যে ব্যক্তি তার স্ত্রীদেরকে ইখতিয়ার দিল।

আবুল ইয়ামান রহ………নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সহধর্মিণী আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, স্বীয় স্ত্রীদেরকে ইখতিয়ার দেওয়ার জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদিষ্ট হলে প্রথমে তিনি আমার নিকট এসে বলেন, আমি তোমার নিকট এমন একটি বিষয় উল্লেখ করছি, সে সম্পর্কে তুমি আপন মাতা-পিতার সাথে পরামর্শ ব্যতীত তড়িঘড়ি করে কোন সিদ্ধান্ত নিবে না। আয়েশা রা. বলেন, আর তিনি তো জানেন যে, আমার মাতা-পিতা আমাকে তাঁর থেকে বিচ্ছেদের আদেশ দিবেন না। তিনি বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে নবী ! আপনার সহধর্মিণীদেরকে বলুন –তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার ভূষণ চাও, তবে এস আমি তোমাদেরকে ভোগ সামগ্রীর ব্যবস্থা করে দেই……..। আয়েশা রা. বলেন, আমি বললাম, এই তুচ্ছ বিষয়ে আমাকে মাত-পিতার সাথে পরামর্শ করতে হবে? আমি তো আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও পরকালের আবসই কামনা করছি। তিনি বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর অন্যান্য স্ত্রীও আমার ন্যায় উত্তর দিলেন।

হাদীস নং ৪৮৮৫

উমর ইবনে হাফস রহ……….আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের ইখতিয়ার দিলে আমরা ও তাঁর রাসূলকেই গ্রহণ করলাম। আর এতে আমাদের প্রতি তালাক সাব্যস্ত হয়নি।

হাদীস নং ৪৮৮৬

মুসাদ্দাদ রহ………..মাসরূক রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আয়েশা রা.-কে ইখতিয়ার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম (অর্থাৎ এতে তালাক হবে কিনা) তিনি উত্তর দিলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে ইখতিয়ার দিয়েছিলেন। তাহলে সেটা কি তালাক ছিল? মাসরূক বলেন, তবে সে (স্ত্রী) আমাকে গ্রহণ করার পর আমি তাকে একবার ইখতিয়ার দিই বা শতবার দিই-(তাতে কিছু মনে করব না)।

হাদীস নং ৪৮৮৭ – যে ব্যক্তি তার স্ত্রীকে বলল, “তুমি আমার জন্য হারাম”।

মুহাম্মদ রহ………..আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তালাক দিলে সে (স্ত্রী) অন্য স্বামীকে বিবাহ করে। পরে সেও তাকে তালাক দেয়। তার লিঙ্গ ছিল কাপড়ের কিনারা সদৃশ। সুতরাং মহিলা তার থেকে নিজের মনস্কামনা সিদ্ধ করতে পারল না। দ্বিতীয় স্বামী অবিলম্বে তালাক দিলে সে (মহিলা) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আমার স্বামী আমাকে তালাক দিলে আমি অন্য স্বামীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হই। এরপর সে আমার সাথে সংগত হয়। কিন্তু তার সাথে কাপড়ের কিনারা সদৃশ বৈ কিছুই নেই। তাই সে একবারের অধিক আমার নিকটস্থ হল না এবং আপন মনস্কামনা সিদ্ধ করতে সক্ষম হল না। এরূপ অবস্থায় আমি আমার প্রথম স্বামীর জন্য বৈধ হব কি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি ততক্ষণ পর্যন্ত তোমার প্রথম স্বামীর জন্য হালাল হবে না, যতক্ষণ না দ্বিতীয় স্বামী তোমার কিছু স্বাদ উপভোগ করে আর তুমিও তার কিছু স্বাদ আস্বাদন কর।

হাদীস নং ৪৮৮৮ – (মহান আল্লাহর বাণী) : এমন বস্তুকে আপনি কেন হারাম করছেন যা আল্লাহ আপনার জন্য হালাল করে দিয়েছেন?

হাসান ইবনে সাব্বাহ রহ………..সাঈদ ইবনে যুবাইর রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি ইবনে আব্বাস রা.-কে বলতে শুনেছেন যে, যদি কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে হারাম ঘোষণা করে তবে তাতে কিছু (তালাক) হয় না। তিনি আরও বলেন : নিশ্চয় তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর মধ্যে উত্তম আদর্শ রয়েছে।

হাদীস নং ৪৮৮৯

হাসান ইবনে মুহাম্মদ ইবনে সাব্বাহ রহ……….আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়নাব বিনতে জাহাশের নিকট কিছু বিলম্ব করতে এবং সেখানে তিনি মধু পান করতেন। আমি ও হাফসা পরামর্শক্রমে ঠিক করলাম যে, আমাদের মধ্যে যার কাছেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রবেশ করবেন, সেই যেন বলি- আমি আপনার থেকে মাগফীর-এর গন্ধ পাচ্ছি। আপনিকি মাগাফীর খেয়েছেন। এরপর তিনি তাদের একজনের নিকট প্রবেশ করলে তিনি তাকে অনুরূপ বললেন। তিনি বললেন, বরং আমি যায়নাব বিনতে জাহাশের নিকট মধু পান করেছি। আমি পুনঃ এ কাজ করব না। এ প্রসঙ্গেই অবতীর্ণ হয় (মহান আল্লাহ বাণী): ‘হে নবী ! এমন বস্তুকে হারাম করছেন কেন, যা আল্লাহ আপনার জন্য হালাল করেছেন……..যদি তোমরা উভয়ে আল্লাহর নিকট তাওবা কর’ পর্যন্ত। এখানে আয়েশা ও হাফসা রা.-কে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে। আর আল্লাহর বাণী: যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের একজনকে গোপনে কিছু বলেছিলেন-বরং আমি মধু পান করেছি- এ কথার প্রেক্ষিতে নাযিল হয়।

হাদীস নং ৪৮৯০

ফারওয়া ইবনে আবুল মাগরা রহ……….আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মধু ও হালুয়া (মিষ্টি) পছন্দ করতেন। আসরের সালাত শেষে তিনি তাঁর সহধর্মিণীদের নিকট যেতেন। এরপর তাদের একজনের ঘনিষ্ঠ হতেন। একদা তিনি হাফসা বিনতে উমরের কাছে গেলেন এবং অন্যান্য দিন অপেক্ষা বেশী সময় অতিবাহিত করলেন। এতে আমি ঈর্ষা করলাম। পরে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করে অবগত হলাম যে, তাঁর (হাফসার) গোত্রের জনৈকা মহিলা তাকে এক পাত্র মধু হাদিয়া দিয়েছিল। তা থেকেই তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে কিছু পান করিয়েছেন। আমি বললাম : আল্লাহর কসম, আমরা এজন্য একটি ফন্দি আটব। এরপর আমি সাওদা বিনতে যামআকে বললাম তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তো এখনই তোমার কাছে আসছেন, তিনি তোমার নিকটবর্তী হলেই তুমি বলবে, আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? তিন বললেন: হাফসা আমাকে কিছু মধু পান করিয়েছে। তুমি তখন বলবে, এর মৌমাছি মনে হয় উরফুত (এক জাতীয় গাছ) নামক বৃক্ষ থেকে মধু আহরণ করেছে। আমিও তাই বলব। সাফিয়্যা তুমিও তাই বলবে। আয়েশা রা. বলেন, সাওদা রা. বললেন, আল্লাহর কসম! তিনি দরজার নিকট আসতেই আমি তোমার ভয়ে তোমার আদিষ্ট কাজ পালনে প্রস্তুত হলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তাঁর নিকটবর্তী হলেন, তখন সাওদা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! আপনি কি মাগাফীর খেয়েছেন? তিনি বললেন, হাফসা আমাকে কিছু মধু পান করিয়েছে। সাওদা বললেন, এর মধু মক্ষিকা উরফুত নামক বৃক্ষের মধু আহরণ করেছে। এরপর তিনি ঘুরে যখন আমার এলেন, তখন আমিও অনুরূপ বললাম। তিনি সাফিয়্যার কাছে গেলে তিনিও এরূপ উক্তি করলেন। পরদিন যখন তিনি হাফসার কাছে গেলেন: তখন তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনাকে মধু পান করাব কি? উত্তরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এর আমার কোন প্রয়োজন নেই। আয়েশা রা. বর্ণনা করেন, সাওদা বললেন, আল্লাহর কসম! আমরা তাকে বিরত রেখেছি। আমি তাকে বললাম, চুপ কর।

হাদীস নং ৪৮৯১ – বাধ্য হয়ে, মাতাল ও পাগল অবস্থায় তালাক দেওয়া এবং এতদুভয়ের বিধান সম্বন্ধে।

মুসলিম ইবনে ইবরাহীম রহ………আবু হুরায়রা রা. সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন, আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে জাগ্রত ধারণা সমূহ ক্ষমা করে দিয়েছেন, যতক্ষণ না সে কার্যে পরিণত করে বা ব্যক্ত করে। কাতাদা রহ. বলেন, মনে মনে তালাক দিলে তাতে কিছুই হবে না।

হাদীস নং ৪৮৯২

আসবাগ রহ……….জাবির রা. থেকে বর্ণিত যে, আসলাম গোত্রের জনৈক ব্যক্তি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এল; তখন তিনি ছিলেন মসজিদে। সে বলল, সে ব্যভিচার করেছে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিলেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেদিকে মুখ ফিরিয়েছিলেন, সেদিকে এসে উক্ত ব্যক্তি নিজের সম্পর্কে বারবার (ব্যভিচারের) সাক্ষ্য দিল। তিনি লোকটিকে ডেকে বললেন, তুমি কি পাগল হয়েছ? তুমি কি বিবাহিত? সে বলল, হ্যাঁ, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ঈদগাহে নিয়ে রজম করার নির্দেশ দিলেন। প্রস্তরাঘাত যখন তাকে অতিষ্ঠ করে তুলল, তখন সে পালিয়ে গেল। অবশেষে তাকে হাররা নামক স্থানে পাকড়াও করা হল এবং হত্যা করা হল।

হাদীস নং ৪৮৯৩

আবূল ইয়ামান (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আসলাম গোত্রের এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ ﷺ -এর কাছে এল, তখন তিনি মসজিদে ছিলেন। লোকটিতাকে ডেকে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! হতভাগ্য ব্যভিচার করেছে। সে একথা দিয়ে নিজেকে বোঝাতে চাইল। রাসুলুল্লাহ ﷺ এর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলেন। তিনি যে দিক ফিরলেন সে সেদিকে গিয়ে আবার বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! হতভাগ্য যিনা করেছে। তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। এরপর সেও সে দিকে গেল যে দিকে তিনি মুখ ফিরালেন এবং পুনরায় সে কথা বলল। তিনি চতুর্থবার মুখ ফিরিয়ে নিলে সেও সেদিকে গেল। যখন সে নিজের সম্পর্কে চারবার সাক্ষী দিল, তখন রাসুলুল্লাহ ﷺ তাকে ডেকে বললেনঃ তুমি কি পাগল হয়েছ? সে বলল, না। নাবী ﷺ বললেনঃ তাকে নিয়ে যাও এবং রজম কর। (পাথর মেরে হত্যা কর) লোকটি ছিল বিবাহিত। যুহরী (রহঃ) বলেন, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে যিনি শুনেছেন, তিনি আমাকে বলেছেনঃ রজমকারীদের মধ্যে আমিও একজন ছিলাম। আমরা মদিনার মুসল্লায় (ঈদগাহে) তাকে রজম করলাম। পাথর যখন তাকে অতিষ্ঠ করে তুললো, সে তখন পালিয়েগেল। হাররা নামক স্থানে আমরা তাকে ধরলাম এবং রজম করলাম। অবশেষে সে মারা গেল।

হাদীস নং ৪৮৯৪ – খোলার বর্ণনা এবং তালাক হওয়ার নিয়ম

আযহার ইবনে জামীল রহ……….ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, সাবিত ইবনে কায়েস এর স্ত্রী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ ! চারিত্রিক বা ধর্মীয় বিষয়ে সাবিত ইবনে কায়েসের উপর আমি কোন দোষারূপ করছি না। তবে আমি ইসলামে থেকে কুফরী করা (অর্থাৎ স্বামীর সাথে অমিল) পছন্দ করছি না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি কি তার বাগানটি ফিরিয়ে দেবে? মহিলা উত্তর দিল, হ্যাঁ। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি বাগানটি নিয়ে তাকে (মহিলাকে) তালাক দিয়ে দাও।

হাদীস নং ৪৮৯৫

ইসহাক ওয়াসিতী (রহঃ) আবদুল্লাহ ইবনু উবায়ের ভগ্নী থেকেও উক্ত হাদীসটি বর্ণিত। তাতে রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ তুমি কি তায় বাগানটি ফিরিয়ে দেবে? মহিলা বলল: হ্যা। পরে সে বাগানটি ফেরত দিল, আর রাসুলুল্লাহ ﷺ , তাকে তালাক দেওয়ার জন্য তার স্বামীকে নির্দেশ দিলেন। ইবরাহীম ইবনু তাহমান খালিদ থেকে, তিনি ইকরামা থেকে তিনি নাবী ﷺ থেকে তাকে তালাক দাও কথাটিও বর্ননা করেছেন। অন্য বর্ননায় ইবনু আবূ তামীমা ইকরামা সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ সাবিত ইবনু কায়স- (রাঃ)-এর স্ত্রী রাসুলুল্লাহ ﷺ -এর নিকট এসে বললঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ সাবিতের দ্বীনদারী ও চরিত্র সম্পর্কে আমি কোন দোষ দিচ্ছি না তবে আমি তার সাথে সংসার জীবন যাপন করতে পারছি না। রাসুলুল্লাহ ﷺ জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি তার বাগানটি ফিরিয়ে দেবে? সে বললঃ হ্যা।

হাদীস নং ৪৮৯৬

মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু মুবারক মুখাররেমী (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাবিত ইবনু কায়স ইবনু শাম্মাস (রাঃ)-এর স্ত্রী নাবী ﷺ -এর কাছে এসে বললঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ আমি সাবিতের ধর্ম ও-চরিত্র সম্পর্কে কোন দোষ দিচ্ছি না। তষে আমি কুফরীর আশংকা করছি। রাসুসুল্লাহ তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি তার বাগানটি ফেরৎ দিতে প্রস্তুত আছ? সে বল (রহঃ) হ্যা। এরপর সে বাগানটি তাকে। (তার স্বামীকে) ফিরিয়ে দিল। আর রাসুলুল্লাহ ﷺ তার স্বামীকে নির্দেশ দিলে, সে মহিলাকে পৃথক করে দিল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৮৯৭

পরিচ্ছদঃ ২০৫১. খোলার বর্ণনা এবং তালাক হওয়ার নিয়ম। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘তোমরা নারীদের যা দিয়েছ তা থেকে কিছু গ্রহণ করা তোমাদের জন্য হালাল হবে না ……. অত্যাচারী পর্যন্ত।’’ উমার (রা) কাযীর অনুমতি ছাড়া খুলা’কে বৈধ বলেছেন। ‘উসমান (রা) মাথার বেনী ছাড়া অন্য সব কিছুর পরিবর্তে খুলা’ করার অনুমতি দিয়েছেন। তাউস (র) বলেন, যদি তারা উভয় আল্লাহর সীমা ঠিক না রাখতে পারার আশংকা করে অর্থাৎ সংসার জীবনে তাদের প্রত্যেকের উপর যে দায়িত্ব আল্লাহ্ অর্পণ করেছেন সে ব্যপারে তিনি বোকাদের মাঝে একথা বলেননি যে, খুলা ততক্ষণ বৈধ হবে না, যতক্ষণ না মহিলা তাকে সহবাস থেকে বাধা দিবে।
৪৮৯৭। সুলায়মান (রহঃ) … ইকরামা (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, জামীলা (সাবিতের স্ত্রী) এরপর উক্ত হাদীসটি উল্লেখ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৮৯৮ | 4898 | ٤۸۹۸

পরিচ্ছদঃ ২০৫২. স্বামী-স্ত্রী দ্বন্দ ক্ষতির আশংকায় খুলা’র প্রতি ইঙ্গিত করতে পারে কি ? মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘ যদি তোমরা তাদের উভয়ের মধ্যে বিরোধের আশংকা কর, তবে উভয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে একজন করে সালিশ নিযুক্ত কর। যদি তারা (স্বামী-স্ত্রী) উভয়ে সংশোধন হতে চায়, তবে আল্লাহ তাদের জন্য সে উপায় বের করে দেবেন। নিঃসন্দেহে আল্লাহ্ সর্ব বিষয়ে অবহিত এবং তিনি সব কিছুর খবর রাখেন।’’ (৪ঃ৩৫)
৪৮৯৮। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … মিস্ওয়ার ইবনু মাখারামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, ‘বনু মুগীরার লোকেরা তাদের মেয়েকে ‘আলীর সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য আমার অনুমতি প্রার্থনা করছে, আমি এর অনুমতি দিতে পারি না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৮৯৯ | 4899 | ٤۸۹۹

পরিচ্ছদঃ ২০৫৩. বিক্রয়ের কারণে দাসী তালাক হয় না
৪৮৯৯। ইসমাঈল ইবনু ‘আবদুল্লাহ (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহধর্মিণী ‘আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বারীরার মাধ্যমে (শরীয়তের) তিনটি বিধান জানা গেছে। এক. তাকে আযাদ করা হল, এরপর তাকে তার স্বামীর সাথে থাকা বা না থাকার ইখ্তিয়ার দেওয়া হল। দুই. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আযাদকারী আযাদকৃত গোলামের পরিত্যক্ত সম্পত্তির মালিক হবে। তিন. রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করলেন, দেখতে পেলেন ডেগে গোশত উথলিয়ে উঠছে। তাঁর কাছে রুটি ও ঘরের অন্য তরকারী উপস্থিত করা হল। তখন তিনি বললেনঃ গোশতের পাত্র দেখছি না যে যার ভিতর গোশত ছিল? লোকেরা জবাব দিল, হাঁ, কিন্তু সে গোশত বারীরাকে সাদাকা হিসাবে দেওয়া হয়েছে। আর আপনি তো সাদাকা খান না? তিনি বললেনঃ তার জন্য সাদাকা, আর আমাদের জন্য এটা হাদিয়া।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০০ | 4900 | ٤۹۰۰

পরিচ্ছদঃ ২০৫৪. দাসী স্ত্রী আযাদ হওয়ার পরে গোলাম স্বামীর সাথে থাকা বা না থাকার ইখ্তিয়ার
৪৯০০। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি তাকে অর্থাৎ বারীরার স্বামীকে ক্রীতদাস অবস্থায় দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০১ | 4901 | ٤۹۰۱

পরিচ্ছদঃ ২০৫৪. দাসী স্ত্রী আযাদ হওয়ার পরে গোলাম স্বামীর সাথে থাকা বা না থাকার ইখ্তিয়ার
৪৯০১। আবদুল আলা ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ অমুক গোত্রের গোলাম এই মুগীস অর্থাৎ বারীরার স্বামী; আমি যেন তাকে এখনও মদিনার অলিতে গলিতে ক্রন্দনরত অবস্থায় বারীরার পিছু পিছু ঘুরতে দেখতে পাচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০২ | 4902 | ٤۹۰۲

পরিচ্ছদঃ ২০৫৪. দাসী স্ত্রী আযাদ হওয়ার পরে গোলাম স্বামীর সাথে থাকা বা না থাকার ইখ্তিয়ার
৪৯০২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বারীরার স্বামী কালো গোলাম ছিল। তার নাম মুনাস। সে অমুক গোত্রের গোলাম ছিল। আমি যেন এখনো দেখতে পাচ্ছি সে মদিনার অলিতে গলিতে বারীরার পিছু পিছু ঘুরছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৩ | 4903 | ٤۹۰۳

পরিচ্ছদঃ ২০৫৫. বারীরার স্বামীর ব্যাপারে নবী (সাঃ) এর সুপারিশ
৪৯০৩। মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, বারীরার স্বামী ক্রীতদাস ছিল। মুগীস বলে তাকে ডাকা হত। আমি যেন এখনও তাকে দেখছি সে বারীরার পিছনে কেঁদে কেঁদে ঘুরছে আর তার দাঁড়ি বেয়ে অশ্রু ঝরছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আব্বাস! বারীরার প্রতি মুগীসের ভালবাসা এবং মুগীসের প্রতি বারীরার অনাসক্তি দেখে তুমি কি আশ্চর্যান্বিত হও না? এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ (বারীরা) তুমি যদি তার কাছে আবার ফিরে যেতে? সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি আমাকে নির্দেশ দিচ্ছেন? তিনি বললেনঃ আমি সুপারিশ করছি মাত্র। সে বললঃ আমার তার কোন প্রয়োজন নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৪ | 4904 | ٤۹۰٤

পরিচ্ছদঃ ২০৫৬. পরিচ্ছেদ নাই
৪৯০৪। আবদুল্লাহ ইবনু রাজা (রহঃ) … আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আয়শা (রাঃ) বারীরাকে ক্রয় করতে চাইলেন। কিন্তু তার মালিকগণ ওলীর (অভিভাবকত্বের অধিকার) শর্ত ছাড়া বিক্রয় করতে সম্মত হল না। তিনি বিষয়টি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তুলে ধরলে তিনি বললেনঃ তুমি তাকে ক্রয় কর এবং আযাদ করে দাও। কেননা, ওলীর অধিকার আযাদকারীর জন্যই সংরক্ষিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কিছু গোশত আনা হল এবং বলা হল এ গোশত বারীরাকে সাদাকা করা হয়েছে। তিনি বললেনঃ তার জন্য সাদাকা বটে, তবে তা আমাদের জন্য হাদিয়া।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৫ | 4905 | ٤۹۰۵

পরিচ্ছদঃ ২০৫৬. পরিচ্ছেদ নাই
৪৯০৫। আদম (রহঃ) বর্ণনা করেন শোবা আমাদের কাছে এ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। তাতে আরও বলা হয়েছে স্বামীর সাথে থাকা না থাকার ব্যপারে তাকে এখতিয়ার দেয়া হয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৬ | 4906 | ٤۹۰٦

পরিচ্ছদঃ ২০৫৭. মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা মুশরিক মহিলাদেরকে বিয়ে করো না যে পর্যন্ত তারা ঈমান না আনে। নিঃসন্দেহে একজন ঈমানদার দাসী একজন মুশরিক মহিলা অপেক্ষা উত্তম। যদি সে তোমাদের কাছে ভালও মনে হয়।
৪৯০৬। কুতায়বা (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমরকে কোন খৃস্টান বা ইয়াহুদী নারীর বিবাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা আলা মুমিনদের উপর মুশরিক নারীদের বিবাহ হারাম করে দিয়েছেন। আর এর চেয়ে মারাত্তক শিরক কি হতে পারে যে মহিলা বলে, আমার প্রভু ঈসা (আলাইহিস সালাম)। অথচ তিনিও আল্লাহর একজন বান্দাহ।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৭ | 4907 | ٤۹۰۷

পরিচ্ছদঃ ২০৫৮. মুশরিক নারী মুসলমান হলে তার বিবাহ ও ইদ্দত
৪৯০৭। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও মুমিনদের বিষয়ে মুশরিকরা দুটি দলে বিভক্ত ছিল। একদল ছিল হরবী মুশরিক, তিনি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন এবং তারাও তার বিরাদ্ধে যুদ্ধ করত। অন্যদল ছিল চুক্তিবদ্ধ মুশরিক। তিনি তাদের সঙ্গে লড়তেন না এবং তারাও তার সাথে লড়ত না। হরবীদের কোন মহিলা যদি হিজরত করে (মুসলমানদের) কাছে চলে আসত! তাহলে সে ঋতুমতী হয়ে পূনরায় পবিত্র না-হওয়া পর্যন্ত তার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হতো না। পবিত্র হলে পরেই তার সাথে বিবাহ বৈধ হত। তবে যদি বিয়ের পূর্বেই তার স্বামী হিজরত করত তাহলে মহিলাকে তার কাছেই ফিরিয়ে দিতে হত। আর যদি তাদের কোন দাস বা দাসী হিজরত করত তবে তারা মুক্ত হয়ে যেত এবং মুহাজিরদের সমান অধিকার লাভ করত।

এরপর বর্ননাকারী (আতা) চুক্তিবদ্ধ মুশরিকদের প্রসঙ্গে মুজাহিদের অনুরুপ হাদীস বর্ণনা করেছেন। যদি চুক্তিবদ্ধ মুশরিকদের কোন দাস বা দাসী হিজরত করে আসত, তাহলে তাদেরকে পূনরায় পাঠিয়ে দেওয়া হতো না। তবে তাদের মুল্য ফিরিয়ে দেওয়া হতো। আতা (রহঃ) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, আবূ উমাইয়্যার কন্যা কুরায়বা উমর ইবনু খাত্তাবের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ ছিল। তিনি তাকে তালাক দিলে মুআবিয়া ইবনু আবূ সুফিয়ান তাকে বিবাহ করেন। আর আবূ সুফিয়ানের কন্যা উম্মুল হাকাম ইয়ায ইবনু গানম ফিহরীর বিবাহে আবদ্ধ ছিল। তিনি তাকে তালাক দিলে আবদুল্লাহ ইবনু উসমান সাকাফী (রাঃ) তাকে বিয়ে করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৮ | 4908 | ٤۹۰۸

পরিচ্ছদঃ ২০৫৯. যিম্মি বা হরবীর কোন মুশরিক বা খৃস্টান স্ত্রী যদি ইসলাম গ্রহণ করে। ‘আবদুল ওয়ারি (র)…. ইব্ন ‘আববাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন যে, যদি কোন খৃস্টান নারী তার স্বামীর পূর্বে ইসলাম গ্রহণ করে, তবে উক্ত মহিলা তার জন্য হারাম হয়ে যায়। দাউদ (র) ইব্রাহীম সায়েগ (র) থেকে বর্ণনা করেন, আতা (র) কে জিজ্ঞাসা করা হল, চুক্তিবদ্ধ কোন হরবীর স্ত্রী যদি ইসলাম গ্রহণ করে এবং ইদ্দতের মধ্যেই তার স্বামী ইসলাম গ্রহণ করে, তবে কি মহিলা তার স্ত্রী থাকবে ? তিনি উত্তর দিলেন, না তবে সে মহিলা যদি নতুনভাবে বিবাহ ও মোহ্রে সম্মত হয়। মুজাহিদ (র) বলেন, মহিলার ইদ্দতের মধ্যে স্বামী মুসলমান হলে সে তাকে বিবাহ করে নিবে। আল্লাহ্ তা’আলা বলেছেনঃ না তারা কাফিরদের জন্য হালাল, আর না কাফিরেরা তাদের জন্য হালাল। অগ্নি উপাসক স্বামী-স্ত্রী মুসলমান হলে কাতাদা ও হাসান তাদের সমবন্ধে বলেন, তাদের পূর্ব বিবাহ বলবৎ থাকবে। আর যদি তাদের কেউ আগে ইসলাম কবূল করে, আর অন্যজন অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করে, তবে মহিলা তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। স্বামীর জন্য তাকে গ্রহণ করার কোন পথই থাকবে না। ইব্ন জুরায়জ (র) বলেন, আমি ‘আতা’ (র) কে জিজ্ঞসা করলামঃ মুশরিকদের কোন মহিলা যদি ইসলাম গ্রহণ করে মুসলমানদের নিকট চলে আসে, তাহলে তার স্বামী কি তার নিকট থেকে বিনিময় গ্রহণ করতে পারবে ? আল্লাহ্ তা’আলা তো বলেছেনঃ ‘‘তারা যা ব্যয় করেছে তোমরা তাদেরকে তা দিয়ে দাও।’’ তিনি উত্তর দিলেনঃ না। এ আদেশ কেবল নবী (সাঃ) ও জিম্মীদের মধ্যে ছিল। (মুশরিকদের বেলায় এটা প্রযোজ্য নয়)। মুজাহিদ (র) বলেনঃ এ সব ছিল সে সন্ধির ক্ষেত্রে যা নবী (সাঃ) ও কুরায়শদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল।
৪৯০৮। ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ‘উরওয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) বলেন, ঈমানদার মহিলারা যখন হিজরত করে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসত, তখন তিনি আল্লাহর নির্দেশ “হে ঈমানদারগণ! কোন ঈমানদার মহিলা হিজরত করে তোমাদের কাছে আসলে তোমরা তাদেরকে যাচাই কর” অনুসারে তাদেরকে যাচাই করতেন। ‘আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ ঈমানদার মহিলাদের মধ্যে যারা (আয়াতে উল্লেখিত) শর্তাবলী মেনে নিত, তারা পরীক্ষায় কৃতকার্য হত। তাই যখনই তারা এ ব্যাপারে মৌখিক স্বীকারোক্তি প্রকাশ করত তখনই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদেরকে বলতেন যাও, আমি তোমাদের বায়’আর গ্রহণ করেছি। আল্লাহর কসম! কথার মাধ্যমে বায়’আত গ্রহণ ছাড়া রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাত কখনো কোন নারীর হাত স্পর্শ করেনি। আল্লাহর শপথ। তিনি শুধুমাত্র সেইসব বিষয়েই বায়’আত গ্রহণ করতেন, যে সব বিষয়ে বায়’আত গ্রহণ করার জন্য আল্লাহ্ তাঁকে নির্দেশ দিয়েছেন। বায়’আত গ্রহণ শেষে তিনি বলতেনঃ আমি কথায় তোমাদের বায়’আত গ্রহণ করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯০৯ | 4909 | ٤۹۰۹

পরিচ্ছদঃ ২০৬০. মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা স্বীয় স্ত্রীদের সাথে ‘সংগত না হওয়ার শপথ’ করে, তারা চার মাস অপেক্ষা করবে। এরপর যদি তারা প্রত্যাগত হয় তবে আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যদি তারা তালাক দেওয়ার সংকল্প করে, তবেও আল্লাহ্ সব কিছু শুনেন ও জানেন। فَاءُوا শব্দের অর্থ رَجَعُوا প্রত্যাবর্তন করে (২ঃ২৬৬ ও ২৭৭)
৪৯০৯। ইসমাঈল ইবনু আবূ উওয়ায়স (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার তাঁর সহধর্মিনাদের থেকে ঈলা (কাছে না যাওয়ার প্রতিজ্ঞা) করলেন। সে সময় তার পা মচকে গিয়েছিল। তিনি তার কামরার মাচানে উনত্রিশ দিন অবস্থান করেন। এরপর সেখান থেকে নেমে আসেন। লোকেরা বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আপনি তো এক মাসের প্রতিজ্ঞা করেছিলেন। তিনি বললেনঃ মাস উনত্রিশ দিনেরও হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১০ | 4910 | ٤۹۱۰

পরিচ্ছদঃ ২০৬০. মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা স্বীয় স্ত্রীদের সাথে ‘সংগত না হওয়ার শপথ’ করে, তারা চার মাস অপেক্ষা করবে। এরপর যদি তারা প্রত্যাগত হয় তবে আল্লাহ্ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যদি তারা তালাক দেওয়ার সংকল্প করে, তবেও আল্লাহ্ সব কিছু শুনেন ও জানেন। فَاءُوا শব্দের অর্থ رَجَعُوا প্রত্যাবর্তন করে (২ঃ২৬৬ ও ২৭৭)
৪৯১০। কুতায়বা (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) যে ঈলার কথা আল্লাহ উল্লেখ করেছেন সে সস্বন্ধে বলতেন, সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পরে প্রত্যেকেরই উচিৎ হয় স্ত্রীর সৌজন্যর সাথে গ্রহণ করবে, না হয় তালাক দেওয়ার সিধান্ত নিবে, যেমনভাবে আল্লাহ তাআলা আদেশ করেছেন।

ইসমাঈল আমাকে আরও বলেছেন, মালিক (রহঃ) নাফি এর সুত্রে ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ননা করেছেন যে, চার মাস অতীত হয়ে গেলে তালাক দেওয়া পর্যন্ত তাকে আটকিয়ে রাখ হবে। আর তালাক না দেওয়া পর্যন্ত তালাক প্রযোজ্য হবে না। উসমান, আলী, আবূ জারদা আয়িশা (রাঃ) এবং আরও বার জন সাহাবী থেকেও উক্ত মতামত উল্লেখ করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১১ | 4911 | ٤۹۱۱

পরিচ্ছদঃ ২০৬১. নিরুদ্দিষ্ট ব্যক্তির পরিবার ও তার সম্পদের বিধান। ইব্ন মুসাইয়্যাব (র) বলেন, যুদ্ধের ব্যূহ থেকে কোন ব্যক্তি নিখোঁজ হলে এক বছর অপেক্ষা করবে। ইব্ন মাসউদ (রা) একটি দাসী ক্রয় করে এক পর্যন্ত তার মালিককে খুঁজলেন (মূল পরিশোধ করার জন্য)। তিনি তাকে পেলেন না, সে নিখোঁজ হয়ে যায়। অবশেষে তিনি এক দিরহাম, দুই দিরহাম করে দান করতেন এবং বলতেনঃ হে আল্লাহ্ ! এটা অমুকের পক্ষ থেকে দিচ্ছি। যদি মালিক এসে যায়, তবে এর সাওয়াব আমি পাব, আর তার টাকা পরিশোধ করার দায়িত্ব হবে আমার। তিনি বলেনঃ হারনো প্রাপ্তির ব্যাপারেও তোমরা এরূপ কাজ করবে। ইব্ন মাসউদ (রা)-ও এরূপ মত ব্যক্ত করেছেন। ঠিকানা জানা আছে এরূপ কয়েদী সমবন্ধে যুহ্রী (র) বলেনঃ তার স্ত্রী অন্যত্র বিয়ে বসতে পারবে না এবং তার সম্পদও বন্টন করা হবে না। তবে তার খবরাখবর সম্পূর্ণরূপে বন্ধ হয়ে গেলে, তাঁর ব্যাপারে নিখোঁজ ব্যক্তির বিধান কার্যকর হবে।
৪৯১১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … মুনবাইস এর আযাদ কৃত গোলাম ইয়াযীদ থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হারানো বকরী সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ ওটাকে ধরে নাও। কেননা, ওটা হল তোমার জন্য, না হয় তোমার (অন্য) ভাইয়ের জন্য অথবা নেকড়ের জন্য। তাঁকে আবার হারানো উট সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি রেগে গেলেন এবং তার উভয় গণ্ডদেশ রক্তিম বর্ন ধারন করল। এরপর তিনি বললেনঃ ওকে নিয়ে তোমার ভাবনা কিসের? তার সাথে (চলার জন্য) পায়ের তলায় ক্ষুর ও (পানাহারের জন্য) পেটে মশক আছে। সে পানি পান করতে থাকবে এবং বৃক্ষ-লতা খেতে থাকবে আর এর মধ্যে মালিক তার সন্ধান লাভ করবে। তাকে লুকতা (হারানো প্রাপ্তি) সমন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ প্রাপ্ত বস্তুর থলে ও মাথার বন্ধনটা চিনে নাও এবং এক বছর পর্যন্ত এর ঘোষণা দিতে থাক। যদি এ শনাক্তকারী (মালিক) আসে, তবে ভালো কথা, অন্যথায় এটাকে তোমার মালের সাথে মিলিয়ে নাও।

সুফিয়ান বলেনঃ আমি রাবীআ ইবনু আবূ আবদুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করে উল্লিখিত কথাগুলো ছাড়া কিছুই পাইনি। আমি বললামঃ হারান প্রানী সম্পর্কে মুনবাইস এর আযাদকৃত গোলাম ইয়াযীদের হাদীসটি কি যায়েদ ইবনু খালিদ থেকে বর্ণিত? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। ইয়াহইয়া বলেন, রাবীআ বলতেনঃ হাদীসটি মুনবাইস-এর আযাদকৃত গোলাম ইয়াযীদ-এর সূত্রে যায়েদ ইবনু খালিদ থেকে বর্ণিত। সুফিয়ান বললেনঃ আমি রাবীআর সাথে সাক্ষাৎ করে এ ব্যাপারে আলোচনা করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১২ | 4912 | ٤۹۱۲

পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
২০৬২. পরিচ্ছেদঃ যিহার। (আল্লাহ্ বলেছেনঃ) “আল্লাহ্ শুনতে পেয়েছেন সেই মহিলাটির কথা যে, তার স্বামীর ব্যাপারে তোমার সাথে বিতর্ক করে থাকে আর যে ব্যক্তি এতে সক্ষম হবে না, সে যেন “ষাটজন মিসকীনকে খাবার দেয়া” পর্যন্ত। (বুখারী (রহঃ) বলেনঃ) ইসমাঈল আমাকে বলেছেন, মালিক (রহঃ) তাঁর কাছে হাদীস বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ইবন শিহাবকে গোলামের যিহার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। উত্তরে তিনি বললেনঃ আযাদ ব্যক্তির অনুরূপ। মালিক (রহঃ) বলেনঃ গোলাম ব্যক্তি দু’মাস রোযা রাখবে। হাসান বলেনঃ আযাদ মহিলা বা বাঁদীর সাথে আযাদ পুরুষ বা গোলামের যিহার একই রকম। ইকরামা বলেনঃ বাঁদীর সাথে যিহার করলে কিছু হবে না। যিহার তো কেবল আযাদ রমনীর সাথেই হতে পারে।

৪৯১২। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উটে চড়ে তাওয়াফ করলেন। তিনি যখনই রুকনের কাছে আসতেন তখনই এর প্রতি ইশারা করতেন এবং আল্লাহু আকরার, বলতেন। যায়নাব (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “ইয়াজুজ ও মাজুজ” এদের দরজা এভাবে খুলে গেছে; এই বলে তিনি (তার আঙ্গুলকে) নব্বই এর মত করলেন। (অর্থাৎ শাহাদাত আঙ্গুলীর মাথা বৃদ্ধাঙ্গুলীর গোড়ায় লাগালেন।)

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৩ | 4913 | ٤۹۱۳

পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
৪৯১৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূল কাসিম ঠিক বলেছেনঃ জুমআর দিনে এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে, যে মুহূর্তে কোন মুসলমান দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে আল্লাহর কাছে যে কোন কল্যান চায় আল্লাহ অবশ্যই তা মঞ্জুর করে থাকেন। তিনি স্বীয় হাত দ্বারা ইশারা করেন এবং তার আঙ্গুলগুলো মধ্যমা ও কনিষ্ঠ আঙ্গুলের পেটে রাখেন। আমরা বললামঃ তিনি স্বল্পতা বুঝাতে চাচ্ছেন।

উওয়ায়সী (রহঃ) বলেনঃ ইবরাহীম ইবনু স্বাদ শুবা ইবনু হাজ্জাজ থেকে, তিনি হিশাম ইবনু যায়েদ থেকে তিনি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে জনৈক ইয়াহুদী একটি বালিকার উপর নির্যাতন করে তার অলংকারাদি ছিনিয়ে নেয়। আর (পাথর দ্বারা) তার মস্তক চুর্ণ করে। সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করার পূর্ব মূহুর্তে তার পরিবারের লোকেরা তাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে আসে। তখন সে নিশ্চুপ ছিল। রাসুসুলাহ (একজন নির্দোষ ব্যাক্তির নাম উল্লেখ পূর্বক) তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমাকে কে হত্যা করেছে? অমুক? সে মাথার ইশারায় বললঃ না। তিনি অন্য এক নিরপরাধ ব্যাক্তির নাম ধরে বললেন, তবে কি অমুক? সে ইশারায় জানাল, না। এবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হত্য্যকারীর নাম উল্লেখ করে বললেনঃ তবে অমুক ব্যাক্তি মেরেছে কি? সে মাথা নেড়ে বললঃ জি-হ্যাঁ। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আদেশ উক্ত ব্যাক্তির মাথা দু-পাথরের মাঝখানে রেখে চুর্ন করা হল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৪ | 4914 | ٤۹۱٤

পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
৪৯১৪। কাবীসা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, ফিতনা (বিপর্যয়) এদিক থেকে আসবে। তিনি পুর্ব দিকে ইশারা করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৫ | 4915 | ٤۹۱۵

পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
৪৯১৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমরা কোন এক সফরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম। সূর্য অস্ত গেলে তিনি এক বাক্তি (বিলাল) কে বললেনঃ নেমে যাও আমার জন্য ছাতু গোল। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ যদি আপনি সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করতেন। (তাহলে রোযাটি পূর্ন হত)। তিনি পূনরায় বললেনঃ নেমে গিয়ে ছাতু গোল। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি সন্ধ্যা হতে দিতেন! এখনো তো দিন রয়ে গেছে। তিনি আবার বললেনঃ যাও, গিয়ে ছাতু গুলে আন। তৃতীয়বার আদেশ দেওয়ার পর সে নামল এবং তার জন্য ছাতু প্রস্তুত করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পান করলেন। এরপর তিনি পূর্বদিকে হাত দিয়ে ইশারা করে বললেনঃ যখন তোমরা এদিক থেকে রাত নেমে আসতে দেখবে তখন রোযাদার ইফতার করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৬ | 4916 | ٤۹۱٦

পরিচ্ছদঃ ২০৬৩. ইশারার মাধ্যমে তালাক ও অন্যান্য কাজ। ইব্ন ‘উমর (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ আল্লাহ্ চোখের পানির জন্য শাস্তি দিবেন না; তবে শাস্তি দিবেন এটার জন্য এই বলে তিনি মুখের প্রতি ইংগিত করলেন। কা’ব ইব্ন মালিক (রা) বলেন, নাবী (সাঃ) আমার প্রতি ইশারা করে বললেনঃ অর্ধেক লও। আস্মা (রা) বলেন, নবী (সাঃ) সূর্যগ্রহণের সালাত আদায় করেন। ‘আয়েশা (রা) সালাত আদায় করছিলেন। এমতাবস্থায় আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ব্যাপার কি ? তিনি তাঁর মাথা দ্বারা সূর্যের প্রতি ইশারা করলেন। আমি বললামঃ কোন নিদর্শন নাকি ? তিনি মাথা নেড়ে বললেনঃ জি হাঁ। আনাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ) তাঁর হাত দ্বারা আবূ বক্র (রা)-এর প্রতি ইশারা করে সামনে যেতে বললেন। ইবন ‘আব্বাস (রা) বলেন, নবী (সাঃ)হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ কোন দোষ নেই। আবূ কাতাদা (রা) নবী (সাঃ) মুহরিহম-এর (এহরামকার) শিকার সমবন্ধে বললেন, তোমদেরকে কেউ কি তাকে (মুহরিমকে) এ কাজে লিপ্ত হবার আদেশ করেছিল বা শিকারের প্রতি ইশারা করেছিলে ? লোকেরা বললঃ না। তিনি বললেন, তবে খাও।
৪৯১৬। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিলালের আযান যেন তোমাদের কাউকে-সাহরী থেকে বিরত না রাখে। কেননা, সে আযান দেয়, যাতে তোমাদের রাত্রি জাগরণকারীরা (রাতের ইবাদতকারীরা) কিছু আরাম করতে পারে। সকাল বা ফজর হয়েছে এমন কিছু বুঝানো তার উদ্দেশ্য নয়। ইয়াযীদ তার হাত দুটি সম্মূখে প্রসারিত করে দু-দিকে ছড়িয়ে দিলেন। (সুবহে সা’দিক কিভাবে উদ্ভাসিত হয় তা দেখানোর জন্য)।

লায়স (রহঃ) বলেনঃ জাফর ইবনু রাবীআ, আবদূর রহমান ইবনু হরমুয থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর কাছে শুনেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কৃপন ও দাতা ব্যাক্তির দৃষ্টান্ত হচ্ছে এমন দু-ব্যাক্তির ন্যায়, যাদের পরিধানে বক্ষস্থল থেকে গলার হাড় পর্যন্ত লৌহ-নির্মিত পোশাক রয়েছে। দানকারী যখনই কিছু দান করে, তখনই তার শরীরে পোশাকটি বড় ও প্রশস্ত হতে থাকে, এমনকি এটা তার আঙ্গুল ও অন্যান্য অঙ্গগুলিকে ঢেকে ফেলে।

পক্ষন্তরে, কৃপণ যখনই দান করার ইচ্ছা করে, তখনই তার পোশাকের প্রতিটি হলকা চেপে যায়। সে প্রশস্ত করার চেষ্টা করলেও সেটা প্রশস্ত হয় না। এ কথা বলে তিনি নিজের আঙ্গুল দ্বারা কণ্ঠনালীর প্রতি ইশারা করলেন (অর্থাৎ দাতা ব্যাক্তি দান করার ইচ্ছা করলে তার অন্তর প্রশান্তি হয়, সে উদার হতে দান করতে পারে; কিন্তু কৃপণ দান করতে ইচ্ছা করলেই তার অন্তর সঙ্কুচিত হয়, তার হাত গুটিয়ে আসে, সে দান করতে পারে না।)

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৭ | 4917 | ٤۹۱۷

পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯১৭। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি তোমাদের বলব কি, আনসারদের মধ্যে সর্বোত্তম গোত্র কোনটি? তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ বলুন। তিনি বললেনঃ তারা বনূ নাজ্জার। এরপর যারা তাদের নিকটবর্তী, বনূ আবদুল আশহাল, এরপর তাদের নিকটবর্তী যারা বনূ হারিস ইবনু খাযরাজ। এরপর তাদের সন্নিকটে যারা বনূ সাঈদা। এরপর তিনি হাত দ্বারা ইঙ্গিত করলেন। হাতের আঙ্গুলগুলোকে সংকুচিত করে পূনরায় তা সাম্প্রসারিত করলেন। যেমন কেউ কিছু নিক্ষেপকালে করে থাকে। এরপর বলেনঃ আনসারদের প্রত্যেকটি গোত্রেই কল্যাণ নিহিত আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৮ | 4918 | ٤۹۱۸

পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯১৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবী সাহল ইবনু সা’দ-সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার আবির্ভাব এবং কিয়ামতের মাঝে দুরত্ব এ আঙ্গুল থেকে এ আঙ্গূলের দূরত্বের ন্যায়। কিংবা তিনি বলেনঃ এ দুটির দূরত্বের ন্যায়। এই বলে তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল দুটি মিলিত করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯১৯ | 4919 | ٤۹۱۹

পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯১৯। আদম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মাস এত, এত এবং এত দিনে হয়, অর্থাৎ ত্রিশ দিনে। তিনি আবার বললেন মাস এত, এত ও এত দিনেও হয়। অর্থাৎ উনত্রিশ দিনে। তিনি বলতেনঃ কখনও ত্রিশ দিনে আবার কখনও উনত্রিশ দিনে মাস হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২০ | 4920 | ٤۹۲۰

পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯২০। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বীয় হাত দ্বারা ইয়ামানের দিকে ইশারা করে দু-বার বললেনঃ ঈমান ওখানে। জেনে রেখ! হৃদয়ের কঠোরতা ও কাঠিন্য উট পালনকারীদের মধ্যে (কৃষকদের মধ্যে)। যে দিকে শয়তানের দুটি শিং উদিত হবে তাহলো (কঠোর হদয়) রাবী’আ ও মুযার গোত্রদ্বয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২১ | 4921 | ٤۹۲۱

পরিচ্ছদঃ ২০৬৪. লি’আন (অভিশাপযুক্ত শপথ)। মহান আল্লাহর বাণীঃ ‘‘যারা তাদের স্ত্রীদের উপর অপবাদ আরোপ করবে, আবারো নিজেরা ছাড়া অন্য কোন সাক্ষীও থাকবে না …. থেকে যদি সে সত্যবাদী’’ পর্যন্ত। যদি কোন বোবা (মূক) লোক লিখিতভাবে বা ইশারায় কিংবা কোন পরিচিত ইঙ্গিতের মাধ্যমে নিজ স্ত্রীকে অপবাদ দেয়, তাহলে তার হুকুম বাকশক্তি সম্পন্ন মানুষের মতই। কেননা নবী (সাঃ) ফরয বিষয়গুলিতে ইশারা করার অনুমতি দিয়েছেন। হিজাজ ও অন্যান্য স্থানের কিছু সংখ্যক আলিমেরও এ মত। আল্লাহ্ বলেছেনঃ ‘‘সে (মরিয়ম) সন্তানের প্রতি ইশারা করলো, লোকেরা বলল, দোলনার শিশুর সাথে আমরা কিভাবে কথোপকথন করবো? যাহ্হাক বলেনঃ ইঙ্গিত এবং ইশারার মাধ্যমে। কিছু লোকের মন্তব্য হলোঃ ইশারার মাধ্যমে কোন হদ্ (শরয়ী’ দন্ড) বা লি’আন নেই, আবার তাদেরই মত হলো লিখিতভাবে কিংবা ইশারা ইঙ্গিতে তালাক দেয়া জায়েয আছে। অথচ তালাক এবং অপবাদের মধ্যে কোন ব্যবধান নেই। যদি তারা বলেঃ কথা বলা ছাড়া তো অপবাদ দেওয়া সম্ভব নয়। তাহলে তো তালাক দেওয়া, অপবাদ দেওয়া এমনিভাবে গোলাম আযাদ করা, কোনটাই ইশারার মাধ্যমে জায়েয হতে পারে না। অথচ আমরা দেখি বধির ব্যক্তিরও লি’আন করতে পারে। শা’বীও কাতাদা (র) বলেনঃ যদি কেউ আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে তার স্ত্রীকে বলে, তুমি তালাকপ্রাপ্তা, তাহলে ইশারার দ্বারা স্ত্রী স্বামী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। ইব্রাহীম বলেনঃ বোবা ব্যক্তি স্বহস্তে তালাকপ্রাপ্ত লিপিবদ্ধ করলে অবশ্যই তালাক হবে। হাম্মাদ বলেনঃ বোবা এবং বধির মাথার ইংগিতে বললেও জায়েয হবে।
৪৯২১। আমর ইবনু যুবারা (রহঃ) … সাহল (রাঃ) থেকে বর্নিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ও ইয়াতীমের প্রতিপালনকারী জান্নাতে এরুপ নিকটে থাকব। এই বলে তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল দুটি দ্বারা ইশারা করলেন এবং এ দু টির মাঝে সামান্য ফাঁক রাখলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২২ | 4922 | ٤۹۲۲

পরিচ্ছদঃ ২০৬৫. ইঙ্গিতে সন্তান অস্বীকার করা।
৪৯২২। ইয়াহইয়া ইবনু কাযা’আ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, জনৈক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার একটি কালো সন্তান জন্মেছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমার কিছু উট আছে কি? সে উত্তর করলঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ সেগুলোর রং কেমন? সে বললঃ লাল। তিনি বললেনঃ সেগুলোর মধ্যে কোনটি ছাই বর্নের আছে কি? সে বললঃ হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ আর সেটিতে এমন বর্ণ কোথেকে এলো? লোকটি বললঃ সম্ভবতঃ পূর্ববর্তী বংশের কারণে এরুপ হয়েছে। তিনি বললেনঃ তাহলে হতে পারে, তোমার এ সন্তানও বংশগত কারণে এরুপ হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৩ | 4923 | ٤۹۲۳

পরিচ্ছদঃ ২০৬৬. লি’আনকারীকে শপথ করানো
৪৯২৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এ জনৈক ব্যাক্তি তার স্ত্রীকে অপবাদ দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়কে শপথ করালেন এবং তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৪ | 4924 | ٤۹۲٤

পরিচ্ছদঃ ২০৬৭. পুরুষকে প্রথমে লি’আন করানো হবে।
৪৯২৪। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, হিলাল ইবনু উমাইয়্যা তার স্ত্রীকে (যিনার) অপবাদ দেয়। তিনি এসে সাক্ষ্য দিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলনঃ আল্লাহ তাআলা অবশ্যই জানেন তোমাদের দু’জনের একজন নিঃসন্দেহে মিথ্যাবাদী। অতএব কে তাওবা করতে প্রস্তুত আছ? এরপর স্ত্রী দাঁড়াল এবং সাক্ষ্য দিল (সে দোষমুক্ত)।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৫ | 4925 | ٤۹۲۵

পরিচ্ছদঃ ২০৬৮. লি’আন এবং লি’আনের পর তালাক দেওয়া
৪৯২৫। ইসমাঈল (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, উওয়াইমার আজলানী (রাঃ) আসিম ইবনু আদী আনসারী (রাঃ) এর কাছে এসে বললেনঃ হে আসিম! কি বল, যদি কোন ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে অপর ব্যাক্তিকে (ব্যাভিচার-রত অবস্থায়) পায় তবে সে কি তাকে হত্যা করবে? আর এতে তোমরাও কি তাকে হত্যা করবে? (যদি সে হত্যা না করে) তাহলে কি করবে? হে আসিম! তুমি আমার এ বিষয়টি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা কর। এরপর আসিম (রাঃ) এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের জিজ্ঞাসাকে অপছন্দ করলেন এবং অশোভনীয় মনে করলেন। এমন কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আসিম (রাঃ) যা শুনলেন তাতে তার খুব খারাপ লাগল।

আসিম (রাঃ) গৃহে প্রত্যাবর্তন করলে উওয়াইমির এসে জিজ্ঞাসা করলঃ হে আসিম? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাকে কি উত্তর দিলেন। আসিম (রাঃ) উওয়াইমিরকে বললেনঃ তুমি আমার কাছে কোন ভাল কাজ নিয়ে আসনি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ধরনের জিজ্ঞাসাকে অপছন্দ করেছেন, সে সম্বন্ধে আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছি। উওয়াইমির (রাঃ) বললেন আল্লাহর শপথ তাঁকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা না করে ক্ষ্যান্ত হব না।

এরপর উওয়াইমির (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাঁকে লোকদের মাঝে পেলেন এবং তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! কী বলেন, কোন ব্যাক্তি যদি তার স্ত্রীর সাথে অপর ব্যাক্তিকে (ব্যাভিচার-রত) দেখতে পায় সে কি তাকে হত্যা করবে? আর আপনারাও কি তাকে হত্যার বদলে হত্যা করবেন? অন্যথায় সে কি করবে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার ও তোমার স্ত্রীর ব্যাপারে আয়াত অবর্তীর্ণ হয়েছে যাও তাকে নিয়ে এসো।

সাহল (রাঃ) বলেন, তারা উভইয়ে লিআন করল। সে সময় আমি লোকদের সাথে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে ছিলাম। উভয়ে লিআন করা সমাপ্ত করলে উওয়াইমির বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি আমি তাকে (স্ত্রী হিসাবে) রাখি, তবে আমি তার উপর মিথ্যা আরোপ করেছি বলে প্রমাণিত হবে। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে নির্দেশ দেওয়ার পূর্বেই তিনি স্ত্রীকে তিন তালাক দিলেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেনঃ উভয়কে পৃথক করে দেওয়াই পরবর্তীতে লি’আন কারীদ্বয়ের হুকুম হিসাবে পরিগনিত হল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৬ | 4926 | ٤۹۲٦

পরিচ্ছদঃ ২০৬৯. মসজিদে লি’আন করা
৪৯২৬। ইয়াহইয়া (রহঃ) … ইবনু জুরাইজ (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমাকে ইবনু শিহাব (রহঃ) লিআন ও তার হুকুম সম্বন্ধে সা’দ গোত্রের সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে হাদীস বর্ননা করেন যে, আনসারদের জনৈক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি বলেন, যদি কোন ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে অন্য কাউকে দেখতে পায়, তবে কি সে তাকে হত্যা করবে? অথবা কি করবে? এর পর আল্লাহ তাআলা তার ব্যাপারে কুরআনে উল্লেখিত লি’আনের বিধান অবর্তীর্ণ করেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তোমার ও তোমার স্ত্রীর ব্যাপারে ফয়সালা দিয়েছেন।

রাবী বলেনঃ আমি উপস্থিত থাকতেই তারা উভয়ে মসজিদে লিআন করল। উভয়ের লিআন কাজ সমাধা হলে সে ব্যাক্তি বললঃ ইয়া রাসুলাল্লা! যদি আমি তাকে স্ত্রী হিসাবে রেখে দেই তবে তার উপর মিথ্যারোপ করেছি বলে সাব্যস্ত হবে। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আদেশ দেয়ার পূর্বেই সে তার স্ত্রীকে তিন তালাক দিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনেই তারা পৃথক হয়ে গেল। তিনি বললেনঃ এই সম্পর্কোচ্ছেদই লিআন এর বিধান।

ইবনু জুরাইজ বলেনঃ ইবনু শিহাব (রহঃ) বলেছেনঃ তাদের পর লিআনকারীদ্বয়ের মধো পৃথক করার হুকুম প্রবর্তিত হয়। উপরোক্ত মহিলা ছিল সন্তান সম্ভবা। তার বাচ্চাকে মায়ের পরিচয়ে ডাকা হত। বর্ণনাকারী বলেনঃ এরপর উত্তোধিকারের ব্যাপারেও হুকুম প্রবর্তিত হল যে, মহিলা সন্তানের উত্তরাধিকারী হবে এবং সন্তানও তার উত্তারাধিকারী হবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা নির্ধারণ করেছেন।

হাদীসে ইবনু জুরাইজ, ইবনু শিহাবের সুত্রে সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী থেকে বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি ঐ মহিলা ওহ্‌রার (এক প্রকার ছোট প্রানী) এর মতো লাল ও বেটে সন্তান প্রসব করে, তবে বুঝবো মহিলাই সত্য বলেছে, আর সেই তার উপর মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। আর যদি সে কালো চক্ষু বিশিষ্ট বড় নিতম্বযুক্ত সন্তান প্রসব করে, তবে বুঝবো, সে ব্যাক্তি সত্যই বলেছে। পরে মহিলাটি কালো সন্তানই প্রসব করেছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৭ | 4927 | ٤۹۲۷

পরিচ্ছদঃ ২০৭০. নবী (সাঃ) এর উক্তিঃ আমি যদি প্রমাণ ছাড়া রজম করতাম।
৪৯২৭। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে লিআন করার প্রসঙ্গ আলোচিত হল। আসিম ইবনু আদী (রাঃ) এ ব্যাপারে একটি কথা জিজ্ঞাসা করে চলে গেলেন। এরপর তার গোত্রের জনৈক ব্যাক্তি তার কাছে এসে অভিযোগ করল যে সে তার স্ত্রীর সাথে অপর এক ব্যাক্তিকে পেয়েছে। আসিম (রাঃ) বললেন অযথা জিজ্ঞাসার কারণেই আমি এধরনের বিপদে পড়লাম। এরপর তিনি লোকটিকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলেন এবং অভিযোগকারীর বিষয়টি তাকে অবহিত করলেন। লোকটি ছিল হলদে-হালকা দেহ সোজা চুল বিশিষ্ট। আর ঐ লোকটি যাকে তার স্ত্রীর কাছে পেয়েছে বলে সে অভিযূক্ত করে সে ছিল প্রায় কালো, মোটা ধরনের, স্থুল দেহের অধিকারী।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ! সমস্যাটি সমাধান করে দিন। এরপর মহিলা ঐ লোকটির আকৃতি বিশিষ্ট সন্তান প্রসব করল যাকে তার স্বামী তার কাছে পেয়েছে বলে উল্লেখ করেছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের (স্বামী-স্ত্রী) উভয়কে লিআন করালেন। এক ব্যাক্তি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে সে বৈঠকেই জিজ্ঞাসা করল, এ মহিলা সমন্ধেই কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন “আমি যদি কাউকে বিনা প্রমানে রজম করতাম তবে একেই রজম করতাম”। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেনঃ না। সে ছিল (অন্য এক) মহিলা, যে মুসলিম সমাজে প্রকাশ্যে ব্যভিচারে লিপ্ত থাকত।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৮ | 4928 | ٤۹۲۸

পরিচ্ছদঃ ২০৭১. লি’আনকারিণীর মোহর
৪৯২৮। আমর ইবনু যুরারা (রহঃ) … সাঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু উমরকে জিজ্ঞাসা করলাম, এক ব্যাক্তি তার স্ত্রীকে অপবাদ দিল- (তার বিধান কি?) তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ আজলানের স্বামী স্ত্রীর দু-জনকে পৃথক করে দিয়েছিলেন এবং তিনি বলেছিলেনঃ আল্লাহ তাআলা অবহিত আছেন তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। সুতরাং তোমাদের কেউ তাওবা করতে রাযী আছ কি? তারা দু-জনেই অস্বীকার করল। পুনরায় তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা অবহিত আছেন তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী সুতরাং কেউ তাওবা করতে প্রস্তুত আছ কি? তারা আবারও অস্বীকার করল। এরপর তিনি তাদেরকে পৃথক করে দেন।

আইয়্যুব বলেনঃ আমাকে আমর ইবনু দীনার (রহঃ) বললেন এ হাদীসে আরও কিছু কথা আছে তোমাকে তা বর্ণনা করতে দেখছি না কেন? তিনি বলেন লোকটি বললঃ আমার (দেওয়া) মালের (মোহর) কি হবে? তাকে বলা হল, তোমার মাথা ফিরে পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও (তবুও পাবে না) (কেননা) তুমি তার সাথে সহবাস করেছ। আর যদি তুমি মিথ্যাবাদী হও, তবে তা পাওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯২৯ | 4929 | ٤۹۲۹

পরিচ্ছদঃ ২০৭২. লি‘আনকারীদ্বয়কে ইমামের একথা বলা যে, নিশ্চয় তোমাদের কোন একজন মিথ্যাবাদী, তাই তোমদের কেউ তাওলা করতে প্রস্তুত আছ কি ?
৪৯২৯। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সাঈদ ইবনু যুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি লিআনকারীদ্বয় সম্পর্কে ইবনু উমরকে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লিআনকায়ীদ্বয়কে লক্ষ্য করে বলেছিলেনঃ তোমাদের হিসাব গ্রহনের দায়িত্ব আল্লাহরই। তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। তার (স্ত্রীর) উপর তোমার কোন অধিকার নেই। লোকটি বললঃ তবে আমার মাল (মোহর হিসেবে প্রদত্ত)? তিনি বললেনঃ তুমি কোন মাল পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও তাহলে এর বিনিময়ে তুমি তার লজ্জাস্থানকে হালাল করে নিয়েছিলে। আর যদি তার উপর মিথ্যারোপ করে থাক তবে তো মাল চাওয়ার কোন প্রশ্নই আসে না।

সুফিয়ান বলেনঃ আমি এ হাদীস আমর (রাঃ) এর কাছ থেকে মুখস্থ করেছি। আইয়্যুব বলেনঃ আমি সাঈদ ইবনু জুবায়র-এর কাছে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি ইবনু উমর (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ এক ব্যাক্তি তার স্ত্রীর সাথে লিআন করল (এখন তাদের বিধান কি?) তিনি তার দু’আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ সুফিয়ান তার তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল ফাঁক করলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ আজলানের এক দম্পত্তির বৈবাহিক সম্পর্ক এভাবে ছিন্ন করে দেন এবং বলেনঃ আল্লাহ তাআলা অবহিত আছেন যে, তোমাদের একজন অবশাই মিথ্যাবাদী। সুতরাং কেউ তাওবা করতে সম্মত আছ কি? এভাবে তিনি তিনবার বললেন। সুফিয়ান বলেনঃ আমি তোমাকে যেভাবে হাদীসটি শোনাচ্ছি এভাবেই আমি আমর ও আইয়্যুব (রাঃ) থেকে মুখস্থ করেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩০ | 4930 | ٤۹۳۰

পরিচ্ছদঃ ২০৭৩. লি‘আনকারীদ্বয়কে পৃথক করে দেওয়া।
৪৯৩০। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক পুরুষ তার স্ত্রীকে অপবাদ দিলে, তিনি উভয়কে শপথ করান এরপর পৃথক করে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩১ | 4931 | ٤۹۳۱

পরিচ্ছদঃ ২০৭৩. লি‘আনকারীদ্বয়কে পৃথক করে দেওয়া।
৪৯৩১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক আনসার ব্যাক্তি ও তার স্ত্রীকে লি‘আন করান এবং তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩২ | 4932 | ٤۹۳۲

পরিচ্ছদঃ ২০৭৪. লি‘আনকারিণীকে সন্তান অর্পন করা হবে।
৪৯৩২। ইয়াহ্ইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তি ও তার স্ত্রীকে লি‘আন করালেন এবং সন্তানের পৈতৃক সম্পর্ক ছিন্ন করে উভয়কে পৃথক করে দিলেন। আর সন্তান মহিলাকে দিয়ে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৩ | 4933 | ٤۹۳۳

পরিচ্ছদঃ ২০৭৫. ইমামের উক্তিঃ হে আল্লাহ্! সত্য প্রকাশ করে দিন।
৪৯৩৩। ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লি‘আনকারী দম্পত্তি সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সম্মুখে আলোচনা হচ্ছিল। ইতিমধ্যে ‘আসিম ইবনু ‘আদী (রাঃ) এ ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করে চলে গেলেন। এরপর স্বগোত্রীয় এক ব্যাক্তি তার কাছে এসে জানাল যে, সে তার স্ত্রীর সাথে এক ব্যাক্তিকে পেয়েছে। ‘আসিম (রাঃ) বললেন, অযথা জিজ্ঞাসাবাদের দরুনই আমি এ বিপদে পতিত হলাম। এরপর তিনি তাকে নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলেন এবং যে লোকটিকে সে তার স্ত্রীর সাথে পেয়েছে, তার সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অবহিত করলেন। অভিযোগকারী ছিলেন হলদে, হালকা দেহ্ ও সোজা চুলের অধিকারী। আর তার স্ত্রীর কাছে পাওয়া লোকটি ছিল মোটা ধারনের স্থুলকায় ও খুব কোঁকড়ানো চুলের অধিকারী।

তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আল্লাহ্ আপনি সত্য প্রকাশ করে দিন। এরপর মহিলা ঐ লোকটির আকৃতি বিশিষ্ট একটি সন্তান প্রসব করে, যাকে তার স্বামী তার সাথে পেয়েছে বলে উল্লেখ করেছিলেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয়কেই লি‘আন করালেন। এক ব্যাক্তি ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) কে সেই বৈঠকে জিজ্ঞাসা করল, ঐ মহিলা সম্বন্ধেই কি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেনঃ আমি যদি বিনা প্রমাণে কাউকে রজম করতাম তাহলে একে রজম করতাম? ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ না, সে ছিল অন্য এক মহিলা যে ইসলামে কুখ্যাত ব্যভিচারিণী ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৪ | 4934 | ٤۹۳٤

পরিচ্ছদঃ ২০৭৬. যদি মহিলাকে তিন তালাক দেয় এবং ইদ্দত শেষে সে অন্য স্বামীর কাছে বিয়ে বসে, কিন্তু সে তাকে স্পর্শ (সংগম) না করে থাকে।
৪৯৩৪। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। (হাদীসটি নিম্নোক্ত হাদীসের অনুরুপ)। [দেখুন পরের হাদিস]

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৫ | 4935 | ٤۹۳۵

পরিচ্ছদঃ ২০৭৬. যদি মহিলাকে তিন তালাক দেয় এবং ইদ্দত শেষে সে অন্য স্বামীর কাছে বিয়ে বসে, কিন্তু সে তাকে স্পর্শ (সংগম) না করে থাকে।
৪৯৩৫। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রিফাআ কুরাযী এক মহিলাকে বিয়ে করে পরে তালাক দেয়। এরপর মহিলা অন্য স্বামী গ্রহন করে। পরে সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাকে অবহিত করলো যে সে (স্বামী) তার কাছে আসে না আর তার কাছে কাপড়ের কিনারা সদৃশ বৈ কিছুই নেই। তিনি বললেনঃ তা হবে না, যতক্ষন পর্যন্ত তুমি তার কিছু স্বাদ আস্বাদন না করবে, আর সেও তোমার কিঞ্চিত স্বাদ আস্বাদন না করবে (ততক্ষন প্রথম স্বামীর কাছে যাওয়া যাবে না)।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৬ | 4936 | ٤۹۳٦

পরিচ্ছদঃ ২০৭৮. গর্ভবতী মহিলাদের ইদ্দতের সময়সীমা সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।
بَابُ: {وَاللاَّئِي يَئِسْنَ مِنَ الْمَحِيضِ مِنْ نِسَائِكُمْ إِنِ ارْتَبْتُمْ}
قَالَ مُجَاهِدٌ إِنْ لَمْ تَعْلَمُوا يَحِضْنَ أَوْ لاَ يَحِضْنَ وَاللاَّئِي قَعَدْنَ عَنِ الْحَيْضِ، وَاللاَّئِي لَمْ يَحِضْنَ، فَعِدَّتُهُنَّ ثَلاَثَةُ أَشْهُرٍ

২০৭৭. পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের হায়েয বন্ধ হয়ে গেছে …. যদি তোমাদের সন্দেহ দেখা দেয় তাদের ইদ্দত তিন মাস এবং তাদেরও, যাদের এখনও হায়েয আসা আরম্ভ হয়নি। মুজাহিদ বলেনঃ যদিও তোমরা না জান যে, তাদের হায়েয- হবে কি না। যাদের ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে গেছে এবং যাদের এখনো আরম্ভ হয়নি, তাদের ‘ইদ্দত তিন মাস।

৪৯৩৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনা সালামা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, আসলাম গোত্রের সুবায়-আ নাম্বী এক মহিলাকে তার স্বামী গর্ভাবস্থায় রেখে মারা যায়। এরপর আবূ সানাবিল ইবনু বাকাক (রাঃ) তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু মহিলা তার সাথে বিয়ে বসতে অস্বীকার করে। সে (আবূ সানাবিল) বললঃ আল্লাহর শপথ দুটি মেয়াদের মধ্যে দীর্ঘতর মেয়াদ অনুসারে ইদ্দত পালন না করা পর্যন্ত তোমার জন্য অন্যান্য বিয়ে বসা দুরস্ত হবে না। এর প্রায় দশ দিনের মধ্যেই সে সন্তান প্রসব করে। এরপর সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলে তিনি বললেনঃ এখন তুমি বিয়ে করতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৭ | 4937 | ٤۹۳۷

পরিচ্ছদঃ ২০৭৮. গর্ভবতী মহিলাদের ইদ্দতের সময়সীমা সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।
৪৯৩৭। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে তিনি ইবনু আরকামের নিকট (এই মর্মে) একটি পত্র লিখলেন যে তুমি সুবায়-আ আসলামীয়াকে জিজ্ঞাস কর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে কি প্রকারের ফতোয়া দিয়েছিলেন? সে উত্তরে বললঃ তিনি আমাকে সন্তান প্রসব করার পর বিয়ে করার ফতোয়া দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৮ | 4938 | ٤۹۳۸

পরিচ্ছদঃ ২০৭৮. গর্ভবতী মহিলাদের ইদ্দতের সময়সীমা সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত।
৪৯৩৮। ইয়াহইয়া ইবনু কাযাআ (রহঃ) … মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, সুবায়’আ আসলামীয়া তার স্বামীর মৃত্যুর কয়েকদিন পর সন্তান প্রসব করে। এরপর সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বিয়ে করার অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি তাকে অনুমতি দেন। তখন সে অন্যত্র বিয়ে করে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৩৯ | 4939 | ٤۹۳۹

পরিচ্ছদঃ ২০৮০. ফাতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা এবং মহান আল্লাহর বাণীঃ আর তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় কর, তোমরা তাদের বাসগৃহ থেকে বহিষ্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয়, যদি না তারা স্পষ্ট অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়ে। এসব আল্লাহর বিধান; যে আল্লাহর বিধান লংঘন করে, সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। তুমি জাননা, হয়ত আল্লাহ্ এরপর উপায় করে দেবেন …… আর তোমরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী যে স্থানে বাস কর, তাদেরকে সে স্থানে বাস করতে দাও ….. আল্লাহ্ কষ্টের পর শান্তি দিবেন। (সুরা তালাকঃ ১-৭)
২০৭৯. পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ তালাকপ্রাপ্তা মহিলারা তিন কুরু (হায়েয) পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। ইব্রাহীম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি ‘ইদ্দতের মধ্যে বিয়ে করে, এরপর মহিলা তার কাছে তিন হায়েয পর্যন্ত অবস্থান করার পর দ্বিতীয় স্বামীও যদি তাকে তালাক দেয়, তবে সে প্রথম স্বামী থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। উক্ত তিন হায়েয তৃতীয় স্বামীর গ্রহণের জন্য যথেষ্ট হবেনা। (বরং তার জন্য নতুনভাবে ‘ইদ্দত পালন করতে হবে।) কিন্তু যুহরী বলেছেনঃ যথেষ্ট হবে। সুফিয়ানও যুহরীর মত গ্রহণ করেছেন। মা’মার বলেন, মহিলা কুরু যুক্ত হয়েছে তখনি বলা হয়, যখন তার হায়েয বা তুহুর আসে। مَا قَرَأَتْ بِسَلًى قَطُّ তখন বলা হয়, যখন মহিলা গর্ভে কোন সন্তান ধারণ না করে। (অর্থাৎ ‘কুরু’ অর্থ ধারণ করা বা একত্রিত করাও হয়)

৪৯৩৯। ইসমাঈল (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মদ ও সুলায়মান ইবনু ইয়াসার (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে ইয়াহইয়া ইবনু সা-ঈদ ইবনু আস (রহঃ) আবদুর রহমান ইবনু হাকাম এর কন্যাকে তালাক দিলে আবদবু রহমান তাকে উম্মুল মূমিনীন আয়িশা (রাঃ) এর কাছে নিয়ে গেলে, তিনি মদিনার শাসনকর্তা মারওয়ানের কাছে বলে পঠোলেনঃ আল্লাহকে ভয় কর, আর তাকে তার ঘরে ফিরিয়ে দাও। মারওয়ান বলেন, সুলায়মানের বর্ণনায় আবদুর রহমান আমাকে যুক্তিতে পরাজিত করেছে। কাসিম ইবনু মুহাম্মদের বর্ণনায় তিনি বলেন, ফাতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা কি আপনয়ি কাছে পৌছেনি? তিনি বললেনঃ ফতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা স্মরণ না রাখলে তোমার কোন ক্ষতি হবেনা। মারওয়ান বললেনঃ যদি মনে করেন ফাতিমাকে বের করার পিছনে তার দুর্ব্যবহার কাজ করেছে, তবে বলব, এখানে সে দুর্ব্যবহার বিদ্যমান আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪০ | 4940 | ٤۹٤۰

পরিচ্ছদঃ ২০৮০. ফাতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা এবং মহান আল্লাহর বাণীঃ আর তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় কর, তোমরা তাদের বাসগৃহ থেকে বহিষ্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয়, যদি না তারা স্পষ্ট অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়ে। এসব আল্লাহর বিধান; যে আল্লাহর বিধান লংঘন করে, সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। তুমি জাননা, হয়ত আল্লাহ্ এরপর উপায় করে দেবেন …… আর তোমরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী যে স্থানে বাস কর, তাদেরকে সে স্থানে বাস করতে দাও ….. আল্লাহ্ কষ্টের পর শান্তি দিবেন। (সুরা তালাকঃ ১-৭)
৪৯৪০। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ফাতিমার কি হল? সে কেন আল্লাহকে ভয় করছেনা অর্থাৎ তার এ কথায় যে, তালাকপ্রাপ্তা নারী (তার স্বামীর থেকে) খাদ্য ও বাসস্থান কিছুই পাবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪১ | 4941 | ٤۹٤۱

পরিচ্ছদঃ ২০৮০. ফাতিমা বিনত কায়েসের ঘটনা এবং মহান আল্লাহর বাণীঃ আর তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ্কে ভয় কর, তোমরা তাদের বাসগৃহ থেকে বহিষ্কার করো না এবং তারাও যেন বের না হয়, যদি না তারা স্পষ্ট অশ্লীলতায় জড়িয়ে পড়ে। এসব আল্লাহর বিধান; যে আল্লাহর বিধান লংঘন করে, সে নিজেরই উপর অত্যাচার করে। তুমি জাননা, হয়ত আল্লাহ্ এরপর উপায় করে দেবেন …… আর তোমরা নিজেদের সামর্থ অনুযায়ী যে স্থানে বাস কর, তাদেরকে সে স্থানে বাস করতে দাও ….. আল্লাহ্ কষ্টের পর শান্তি দিবেন। (সুরা তালাকঃ ১-৭)
৪৯৪১। আমর ইবনু আব্বাস (রহঃ) … কাসিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। উরওয়া ইবনু যুবায়র (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাস করলঃ আপনি কি জানেন না, হাকামের কন্যা অমুককে তার স্বামী তিন তালাক দিলে, সে (তার পিতার ঘরে) চলে গিয়েছিল। তিনি বললেনঃ সে মন্দ কাজ করেছে। উরওয়া বললঃ আপনি কি তার কথা শুনেন নি? তিনি বললেনঃ এ হাদীস বর্ণনায় তার কোন কল্যান নেই।

ইবনু আবূ যিনাদ হিশাম সুত্রে তার (হিশামের) পিতা থেকে আরও বর্ণনা করেন যে, আয়িশা (রাঃ) এ কথাকে অত্যন্ত দোষনীয় মনে করেন। তিনি আরও বলেন, ফাতিমা একটি ভীতিকর স্থানে থাকত, তার উপর আশংকা থাকায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (স্থান পরিবর্তনের) অনুমতি প্রদান করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪২ | 4942 | ٤۹٤۲

পরিচ্ছদঃ ২০৮১. স্বামীর গৃহে অবস্থান করায় যদি তালাকপ্রাপ্তা নারী তার স্বামীর পরিবারের লোকজনদের গালমন্দ দেয়ার বা তার ঘরে চোর প্রবেশ করা ইত্যাদির আশংকা করে।
৪৯৪২। হিব্বান (রহঃ) … উরওয়া থেকে বর্ণিত যে আয়িশা (রাঃ) ফাতিমার কথাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৩ | 4943 | ٤۹٤۳

পরিচ্ছদঃ ২০৮২. মহান আল্লাহর বাণীঃ তাদের জন্য গোপন করা বৈধ হবে না যা আল্লাহ্ তাদের জরায়ুতে সৃষ্টি করেছেন, হায়েয হোক বা গর্ভ সঞ্চার হোক।
৪৯৪৩। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ (হজ শেষে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রওয়ানা হওয়ার ইচ্ছা করলেন, তখন সাফিয়্যা (রাঃ) বিষন্ন অবস্থায় স্বীয় তাবুর দরজায় দাঁড়িয়ে গেলেন। তিনি তাকে বললেনঃ মহা সমস্যা তো, তুমি তো আমাদের আটকিয়ে রাখবে। আচ্ছা তুমি কি তাওয়াফে যিয়ারত করেছ? তিনি বললেনঃহ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তা হলে এখন চলো।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৪ | 4944 | ٤۹٤٤

পরিচ্ছদঃ ২০৮৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ তালাকপ্রাপ্তাদের স্বামীরা (ইদ্দতের মধ্যে) তাদের ফিরিয়ে আনার অগ্রাধিকার রাখে এবং এক বা দু’তালাকের পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার পদ্ধতি সম্পর্কে।
৪৯৪৪। মুহাম্মদ (রহঃ) … হাসান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মা’কাল তার বোনকে বিয়ে দিলে, তার স্বামী তাকে এক তালাক প্রদান করে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৫ | 4945 | ٤۹٤۵

পরিচ্ছদঃ ২০৮৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ তালাকপ্রাপ্তাদের স্বামীরা (ইদ্দতের মধ্যে) তাদের ফিরিয়ে আনার অগ্রাধিকার রাখে এবং এক বা দু’তালাকের পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার পদ্ধতি সম্পর্কে।
৪৯৪৫। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … হাসান (রহঃ) থেকে বর্নিত যে, মাকাল ইবনু ইয়াসারেব বোন এক ব্যাক্তির বিবাহাধীন ছিল। সে তাকে তালাক দিল। পুনরায় ফিরিয়ে আনলোনা, এভাবে তার ইদ্দত শেষ হয়ে গেলে সে আবার তার কাছে বিবাহের প্রস্তাব দেয়। মাকাল (রাঃ) ক্রোধান্বিত হলেন, তিনি বললেনঃ সময় সুযোগ থাকতে ফিরিয়ে নিল না, এখন আবার প্রস্তাব দিচ্ছে। তিনি তাদের মাঝে (পুনর্বিবাহে) প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ালেন। এরপর আল্লাহ তাআলা এ আয়াতটি অবর্তীর্ন করেনঃ তোমরা যখন স্ত্রীকে তোমরা তালাক দাও এবং তারা তাদের ইদ্দত-কাল পূর্ন করে, তখন তারা নিজেদের স্বামীদেরকে বিবাহ করতে চাইলে তোমরা বাধা দিও না। (বাকারাঃ ২৩২)। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ডাকলেন এবং তার সামনে আয়াতটি পাঠ করলেন। তিনি তার জিদ পরিত্যাগ করে আল্লাহর আদেশের অনুসরণ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৬ | 4946 | ٤۹٤٦

পরিচ্ছদঃ ২০৮৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ তালাকপ্রাপ্তাদের স্বামীরা (ইদ্দতের মধ্যে) তাদের ফিরিয়ে আনার অগ্রাধিকার রাখে এবং এক বা দু’তালাকের পর স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার পদ্ধতি সম্পর্কে।
৪৯৪৬। কুতায়বা (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, ইবনু উমর (রাঃ) তার স্ত্রীকে ঋতুমতী অবস্থায় এক তালাক দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আদেশ দিলেন, তিনি যেন তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনেন এবং মহিলা পবিত্র হয়ে পূনরায় ঋতুমতী হয়ে পরবর্তী পবিত্রাবস্থা আসা পর্যন্ত তাকে নিজের কাছে রাখেন। পবিত্রাবস্থায় যদি তাকে তালাক দিতে চায় তবে দিতে পারেবে কিন্তু তা সংগমের পূর্বে হতে হবে। এটাই ইদ্দত, যে সময় তালাক দেয়ার জন্য আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন। আবদুল্লাহকে ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি তাদের বলেনঃ তুমি যদি তাকে তিন তালাক দিয়ে দাও। তবে মহিলা অন্য স্বামী গ্রহণ না করা পর্যন্ত তোমার জন্য হালাল হবে না। অন্য বর্ননায় ইবনু উমর (রাঃ) বলতেন, তুনি যদি এক বা দু’ তালাক দিতে কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এরুপই আদেশ দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৭ | 4947 | ٤۹٤۷

পরিচ্ছদঃ ২০৮৪. ঋতুমতীকে ফিরিয়ে আনা
৪৯৪৭। হাজ্জাজ (রহঃ) … ইউনুস ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু উমরকে (হায়েয অবস্থায় তালাক দেওয়া সম্পর্কে) জিজ্ঞাস করলাম। তিনি বললেনঃ ইবনু উমব (রাঃ) তার স্ত্রীকে হায়েয অবস্থায় তালাক দিলে উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেন। তিনি স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার জন্য তাকে আদেশ দেন। এরপর বলেনঃ ইদ্দতের সময় আসলে সে তালাক দিতে পারে। রাবী বলেন, আমি বললাম এ তালাক কি হিসাবে ধরা হবে? ইবনু উমর বললেনঃ তবে কি মনে করছ, যদি সে অক্ষম হন বা বোকামী করে। (তাহলে দায়ী কে?)।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৮ | 4948 | ٤۹٤۸

পরিচ্ছদঃ ২০৮৫. বিধবা নারী চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে। যুহরী (র) বলেন, বিধবা কিশোরীর জন্য খোশবু ব্যবহার করা উচিত হবে না। কেননা, তাকেও ইদ্দত পালন করতে হবে।
৪৯৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … যায়নাব বিনত আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মীনী উম্মে হাবীবার পিতা আবূ সুফিয়ান ইবনু হারব (রাঃ) মূত্যুবরণ করলে আমি তাঁর কাছে উপস্থিত হই। উম্মে হাবীবা (রাঃ) যাফরান ইত্যাদি মিশ্রিত হলদে রং এর খোশবু নিয়ে আসতে বললেন। তিনি এক বালিকাকে এ থেকে কিছু মাখলেন! এরপর তার নিজের চেহারার উভয় পাশে কিছু মাখলেন। এরপর বললেনঃ আল্লাহর কসম! খোশবু ব্যবহার করার কোন প্রয়োজন আমার নেই। তবে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করা বৈধ হবে না। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন শোক পালন করতে পারবে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’ তিন বার বললেন, না।

তিনি আরও বললেনঃ এতো মাত্র চার মাস দশ দিনের ব্যাপার। অথচ বর্বরতার যুগে এক এক মহিলা এক বছরের মাথায় বিষ্ঠা নিক্ষেপ করত। হুমায়দ বলেন, আমি যায়নাবকে জিজ্ঞাসা করলাম। এক বছরের মাথায় বিষ্ঠা নিক্ষেপ করার অর্থ কি? তিনি বলেন, সে যুগে কোন মহিলার স্বামী মারা গেলে সে অতিক্ষুদ্র একটি কোঠায় প্রবেশ করতো এবং নিকৃষ্ট কাপড় পরিধান করত, কোন খোশবু ব্যবহার করতে পারত না। এভাবে এক বছর অতিক্রান্ত হলে তার কাছে চতুষ্পদ জন্তু যথা গাধা, বকরী অথবা গাভী আনা হতো। আর সে তার গায়ে হাত বুলাতো। হাত বুলাতে বুলাতে অনেক সময় সেটা মারাও যেত। এরপর সে (মহিলা বেরিয়ে আসতো। তাকে বিষ্ঠা দেয়া হতো এবং তা তাকে নিক্ষেপ করতে হতো। এরপর ইচ্ছা করলে সে খোশবু ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারতো। মালিক (রহঃ) কে تَفْتَض শব্দের অর্থ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ মহিলারা ঐ প্রানীর চামড়ায় হাত বুলাতো।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৪৯ | 4949 | ٤۹٤۹

পরিচ্ছদঃ ২০৮৬. শোক পালনকারিণীর জন্য সুরমা ব্যবহার করা।
৪৯৪৯। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্নিত আছে যে, জনৈক মহিলার স্বামী মৃত্যু বরণ করলে তার পরিবারের লোকেরা তার চক্ষুযুগল নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা করল। তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তার সুরমা ব্যবহারের অনুমতি প্রার্থনা করল। তিনি বললেনঃ সুরমা ব্যবহার করতে পারবে না। তোমাদের অনেকেই (জাহেলী যুগে) তার নিকৃষ্ট কাপড় বা নিকৃষ্ট ঘরে অবস্থান করত। যখন এক বছর অতিক্রান্ত হত আর কোন কুকুর সে দিকে যেত তখন সে বিষ্ঠা নিক্ষেপ করত। কাজেই চারমাস দশ দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যস্ত সুরমা বাবহার করতে পারবে না (বর্ণনাকারী বলেন) আমি যায়নাবকে উম্মে হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করা বৈধ নয়। তবে স্বামীর মৃত্যু হলে চারমাস দশদিন শোক পালন করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫০ | 4950 | ٤۹۵۰

পরিচ্ছদঃ ২০৮৬. শোক পালনকারিণীর জন্য সুরমা ব্যবহার করা।
৪৯৫০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … মুহাম্মদ ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) বলেছেন, স্বামী ছাড়া অন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের বেশী শোক পালন করতে আমাদেরকে নিষেধ করা হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫১ | 4951 | ٤۹۵۱

পরিচ্ছদঃ ২০৮৭. তুহুর (পবিত্রতা) এর সময় শোক পালনকারিণীর জন্য কুস্ত (চন্দন কাঠ) খোশবু ব্যবহার করা।
৪৯৫১। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওহাব (রহঃ) … উম্মে আতিয়্যা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাদেরকে নিষেধ করা হত, আমরা যেন কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক শোক পালননা করি। তবে স্বামীর মৃত্যুতে চার মাস দশ দিন শোক পালন করতে হবে এবং আমরা যেন সুরমা খোশবু ব্যবহার না করি আর রঙীন কাপড় যেন পরিধান না করি তবে হালকা রঙের হলে দোষ নেই। আমাদেরকে অনুমতি দেওয়া হয়েছে, আমাদের কেউ যখন হায়েয শেষে গোসল করে পবিত্র হয় তখন সে (দুর্গন্ধ দুরকরনার্থে) আযফার নামক স্থানের কুস্ত (সুগন্ধি) ব্যবহার করতে পারে। তাছাড়া আমাদেরকে জানাযার পিছে পিছে যেতে নিষেধ করা হতো।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫২ | 4952 | ٤۹۵۲

পরিচ্ছদঃ ২০৮৮. শোক পালনকারিণী রং করা সুতার কাপড় ব্যবহার করতে পারে।
৪৯৫২। ফাযল ইবনু দুকায়ন (রহঃ) … উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক শোক পালন করা বৈধ হবে না। তবে স্বামীর ব্যাপার ভিন্ন। আবার সুরমা ও রঙিন কাপড়ও ব্যবহার করতে পারবে না। তবে সুতাগুলো একত্রে বেঁধে হালকা রং লাগিয়ে পরে তা দিয়ে কাপড় বুনলে তা ব্যবহার করা যাবে।

আনসারী (রহঃ) … উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন শোক পালন কারিনা যেন সুগন্ধি ব্যবহার না করে। তবে হায়েয থেকে পবিত্র হওয়া কালে (দুর্গন্ধ দূরকরণার্থে) “কুস্ত” ও “আযফার” সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৩ | 4953 | ٤۹۵۳

পরিচ্ছদঃ ২০৮৯. (মহান আল্লাহর বাণী) তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাদের স্ত্রীরা চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় থাকবে। যখন তারা তাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ করবে, তখন যথাবিধি নিজেদের জন্য যা করবে তাতে তোমাদের কোন অপরাধ নাই। তোমরা যা কর সে সমবন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত।
৪৯৫৩। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। মহান আল্লাহর বানীঃ “তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মারা যায়” তিনি এ আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, স্বামীর বাড়ীতে অবস্থান করে এ ইদ্দত পালন করা মহিলার জন্য ওয়াজিব ছিল। পরে মহান আল্লাহ নাযিল করেনঃ তোমাদের মধ্য স্বপত্নীক অবস্থায় যাদের মূত্যু আসন্ন তারা যেন তাদের স্ত্রীদেরকে গৃহ থেকে বহিষ্কার না করে তাদের এক বছরের ভরন-পোষনের ওসিয়্যত করে। কিন্তু যদি তারা বের হয়ে যায় তবে বিধিমত নিজেদের জন্য তারা যা করবে তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই। (আল্লাহ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়)। মুজাহিদ বলেনঃ আল্লাহ তাআলা সাত মাস বিশ দিনকে তার জন্য পূর্ণ বছর সাব্যস্ত করেছেন। মহিলা ইচ্ছা করলে ওসিয়্যত অনুসারে থাকতে পারে, আবার চাইলে চলেও যেতে পারে। একথাই আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ “বহিষ্কার না করে, তবে যদি সেচ্ছায় বের হয়ে যায় তবে তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই তাই মহিলার উপরইদ্দত পালন করা যথারীতি ওয়াজিবই আছে।

আবূ নাজীহ এ কথাগুলো মুজাহিদ থেকে বর্ণনা করেছেন। আতা বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ আর আয়াতটি স্বামীর বাড়ীতে ইদ্দত পালন করার হুকুমকে রহিত করে দিয়েছে। অতএব সে যেখানে ইচ্ছা ইদ্দত পালন করতে পারে। আতা বলেনঃ ইচ্ছা হলে ওসিয়্যত অনুযায়ী সে স্বামীর পরিবারে অবস্থান করতে পারে। আবার ইচ্ছা হলে অন্যত্রও ইদ্দত পালন করতে পাবে। কেননা, মহান আল্লাহ বলেছেনঃ তারা নিজেদের জন্য বিধিমত যা করবে, তাতে তোমাদের কোন পাপ নেই। আতা বলেন- এরপর মিরাসের আয়াত নায়িল হলে বাসস্থান দেওয়ার হুকুমও রহিত হয়ে যায়। এখন সে যেখানে মনে চায় ইদ্দত পালন করতে পারে, তাকে বাসস্থান দেওয়া জরুরী নয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৪ | 4954 | ٤۹۵٤

পরিচ্ছদঃ ২০৮৯. (মহান আল্লাহর বাণী) তোমাদের মধ্যে যারা স্ত্রী রেখে মৃত্যুমুখে পতিত হয়, তাদের স্ত্রীরা চার মাস দশ দিন প্রতীক্ষায় থাকবে। যখন তারা তাদের ইদ্দতকাল পূর্ণ করবে, তখন যথাবিধি নিজেদের জন্য যা করবে তাতে তোমাদের কোন অপরাধ নাই। তোমরা যা কর সে সমবন্ধে আল্লাহ্ সবিশেষ অবহিত।
৪৯৫৪। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … উম্মে হাবীবা বিনত আবূ সুফিয়ান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। যখন তার কাছে পিতার মৃত্যু সংবাদ পৌছালো, তখন তিনি সুগন্ধি আনিয়ে তার উভয় হাতে লাগালেন এবং বললেনঃ সুগন্ধি লাগানোর কোন প্রয়োজন আমার নেই। কিন্তু সেহেতু আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী কোন মহিলার জন্য কারো মৃত্যুতে তিন দিনের অধিক শোক পালন করা বৈধ হবে না। তবে স্বামীর মৃত্যুতে চারমাস দশদিন শোক পালন করতে হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৫ | 4955 | ٤۹۵۵

পরিচ্ছদঃ ২০৯০. বেশ্যার উপার্জন ও অবৈধ বিবাহ। হাসান (র) বলেছেন, যদি কেউ অজান্তে কোন মুহাররাম মহিলাকে বিয়ে করে ফেলে, তবে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। মহিলা নির্দিষ্ট মোহর ছাড়া অন্য কিছু পাবে না। তিনি পরবর্তীতে বলেছেন, সে মোহরে মিসাল পাবে।
৪৯৫৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুরের মূল্য, গনকের পারিশ্রমিক এবং বেশ্যার উপার্জন গ্রহন করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৬ | 4956 | ٤۹۵٦

পরিচ্ছদঃ ২০৯০. বেশ্যার উপার্জন ও অবৈধ বিবাহ। হাসান (র) বলেছেন, যদি কেউ অজান্তে কোন মুহাররাম মহিলাকে বিয়ে করে ফেলে, তবে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। মহিলা নির্দিষ্ট মোহর ছাড়া অন্য কিছু পাবে না। তিনি পরবর্তীতে বলেছেন, সে মোহরে মিসাল পাবে।
৪৯৫৬। আদম (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রাঃ) এর পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন উল্কি অংকনকারিনা উল্কি গ্রহণকারিনা, সুদ গ্রহিতা ও সুদ দাতাকে। তিনি কুকুরের মূল্য ও বেশ্যার উপার্জন ভোগ করতে নিষেধ করেছেন। চিত্রকরদেরকেও তিনি অভিসম্পাত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৭ | 4957 | ٤۹۵۷

পরিচ্ছদঃ ২০৯০. বেশ্যার উপার্জন ও অবৈধ বিবাহ। হাসান (র) বলেছেন, যদি কেউ অজান্তে কোন মুহাররাম মহিলাকে বিয়ে করে ফেলে, তবে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। মহিলা নির্দিষ্ট মোহর ছাড়া অন্য কিছু পাবে না। তিনি পরবর্তীতে বলেছেন, সে মোহরে মিসাল পাবে।
৪৯৫৭। আলী ইবনু জাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। অবৈধ পন্থার মাধ্যমে দাসীর উপার্জিত অর্থ ভোগ করতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৮ | 4958 | ٤۹۵۸

পরিচ্ছদঃ ২০৯১. নির্জনবাসের পরে মোহরের পরিমাণ, অথবা নির্জনবাস ও স্পর্শ করার পূর্বে তালাক দিলে স্ত্রীর মোহর এবং কিভাবে নির্জনবাস প্রমাণিত হবে সে প্রসঙ্গে।
৪৯৫৮। আমর ইবনু যুরারা (রহঃ) … সাঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু উমরকে জিজ্ঞাসা করলামঃ যদি কেউ তার স্ত্রীকে অপবাদ দেয়? তিনি বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আজলান গোত্রের এক দম্পতির বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করে দেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ জানে তোমাদের দু’ জনের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। সুতরাং তোমাদের মধ্যে কেউ কি তাওবা করতে রাযী আছ? তারা উভয়ে অস্বীকার করল। তিনি পুনরায় বললেনঃ আল্লাহ অবহিত আছেন তোমাদের একজন অবশ্যই মিথ্যাবাদী। কাজেই তোমাদের মধ্যে কে তাওবা করতে রাযী আছ? তারা কেউ রাযী হল না। এরপর তিনি তাদেরকে পৃথক করে দেন। আইয়্যুব বলেনঃ আমর ইবনু দীনার আমাকে বললেন, এই হাদীসে আরো কিছু কথা আছে, আমি তা তোমাকে বর্ণনা করতে দেখছি না। রাবী বলেন, লোকটি তখন বললঃ আমার মাল (স্ত্রীকে প্রদত্ত মোহর) ফিরে পাব না? তিনি বললেনঃ তুমি কোন মাল পাবে না। যদি তুমি সত্যবাদী হও, তবুওতো তুমি তার সাথে সংগম করেছ। আর যদি মিথ্যাবাদী হও, তাহলে তো কোন প্রশ্নই আসে না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৫৯ | 4959 | ٤۹۵۹

পরিচ্ছদঃ ২০৯২. তালাকপ্রাপ্তা নারীর যদি মোহর নির্ণিত না হয় তাহলে সে মুত‘আ পাবে। কারণ মহান আল্লাহ্ বলেছেনঃ তোমরা নিজেদের স্ত্রীদেরকে স্পর্শ করা কিংবা তাদের জন্য মোহর ধার্য করার পূর্বে তালাক দিলে তোমাদের কোন পাপ নেই। তোমরা তাদের সংস্থানের ব্যবস্থা করো। বিত্তবান তার সাধ্যমত এবং বিত্তহীন তার সামর্থ্যানুযায়ী ….. তোমরা যা কর আল্লাহ্ সে সব দেখেন। আল্লাহ্ আরও বলেছেনঃ তালাকপ্রাপ্তা নারীদেরকে প্রথমত কিছু দেওয়া মুত্তাকীদের কর্তব্য। আর লি’আনকারিণীকে তার স্বামী তালাক দেওয়ার সময় নবী (সাঃ) তার জন্য মুত‘আর কিছু দিয়ে দেওয়ার কথা উল্লেখ করেননি।
৪৯৫৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লিআনকারী স্বামী-স্ত্রীকে বলেছিলেন, আল্লাহ তোমাদের হিসাব গ্রহণ করবেন। তোমাদের একজন মিথ্যুক। তার (মহিলার) ওপর তোমার কোন অধিকার নেই। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার মাল? তিনি বললেনঃ তোমার কোন মাল নাই। তুমি যদি সত্যই বলে থাক, তাহলে এ মাল তার লজাস্থানকে হালাল করার বিনিময়ে হবে। আর যদি মিথ্যা বলে থাক, তবে এটা চাওয়া তোমার জন্য একান্ত অনুচিত।

 

ভরণ-পোষন অধ্যায় (৪৯৬০-৪৯৮১)

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬০ | 4960 | ٤۹٦۰

পরিচ্ছদঃ পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করার ফযীলত। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে তারা কি খরচ করবে? বলঃ প্রয়োজনের অতিরিক্ত….. পৃথিবী ও পরকালে। হাসান (র) বলেন, العفو অর্থ অতিরিক্ত।
৪৯৬০। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাবী বলেনঃ আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ এ কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে? তিনি বললেন, (হাঁ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ সাওয়াবের আশায় কোন মুসলমান যখন তার পরিববার-পরিজনের জন্য খরচ করে, তা তার সাদাকায় পরিগণিত হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬১ | 4961 | ٤۹٦۱

পরিচ্ছদঃ পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করার ফযীলত। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে তারা কি খরচ করবে? বলঃ প্রয়োজনের অতিরিক্ত….. পৃথিবী ও পরকালে। হাসান (র) বলেন, العفو অর্থ অতিরিক্ত।
৪৯৬১। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মহান আল্লাহ বলেন, খরচ কর, হে, আদম সন্তান আমিও খরচ করবো তোমার প্রতি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬২ | 4962 | ٤۹٦۲

পরিচ্ছদঃ পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করার ফযীলত। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে তারা কি খরচ করবে? বলঃ প্রয়োজনের অতিরিক্ত….. পৃথিবী ও পরকালে। হাসান (র) বলেন, العفو অর্থ অতিরিক্ত।
৪৯৬২। ইয়াহইয়া ইবনু কাযাআ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিধবা ও মিসকীন এর জন্য (খাদ্য যোগাতে) সচেষ্ট ব্যাক্তি আল্লাহর রাস্তায় মুজাহিদের ন্যায় অথবা রাত জেগে ইবাদতকারী ও দিনভর সিয়াম পালনকারীর মত।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৩ | 4963 | ٤۹٦۳

পরিচ্ছদঃ পরিবার-পরিজনের জন্য খরচ করার ফযীলত। (মহান আল্লাহর বাণীঃ) লোকেরা তোমাকে জিজ্ঞাসা করে তারা কি খরচ করবে? বলঃ প্রয়োজনের অতিরিক্ত….. পৃথিবী ও পরকালে। হাসান (র) বলেন, العفو অর্থ অতিরিক্ত।
৪৯৬৩। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি মক্কায় রোগগ্রস্ত হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার পরিচর্যার জন্য আসতেন। আমি বললাম, আমার তো মাল আছে। সেগুলো সব আমি ওসিয়্যাত করে যাই? তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ তবে এক-তৃতীয়াংশ? তিনি বললেনঃ এক-তূতীয়াংশ করতে পার। এক-তৃতীয়াংশই বেশী। মানুষের কাছে হাত পেতে ফিরবে ও এরূপ ফকীর অবস্থায় ছেড়ে যাওয়ার তুলনায় তাদেরকে ধনী অবস্থায় রেখে যাওয়া উত্তম। আর যাই তুমি খরচ করবে, তা-ই তোমার জন্য স্বাদকা হবে। এমনকি যে লোকমাটি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে তুলে দিবে তাও। আল্লাহ তোমাকে দীর্ঘজীবী করবেন এই আশা। তোমার দ্বারা অনেক লোক উপকৃত হবে, আবার অন্যেরা (কাফির সম্প্রদায়) ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৪ | 4964 | ٤۹٦٤

পরিচ্ছদঃ ২০৯৩. পরিবার-পরিজনের উপর ব্যয় করা ওয়াজিব
৪৯৬৪। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম সাদাকা হল যা দান করার পরেও মানুষ অমুখাপেক্ষী থাকে। উপরের হাত নীচের হাতের চাইতে শ্রেষ্ঠ। যাদের ভরন-পোষণ তোমার যিম্মায় তাদের আগে দাও। (কেননা) স্ত্রী বলবে, হয় আমাকে খাবার দাও, নতুবা তালাক দাও। গোলাম বলবে, খাবার দাও এবং কাজ করাও। ছেলে বলবে, আমাকে খাবার দাও, আমাকে তুমি কার কাছে রেখে যাচ্ছ? লোকেরা জিজ্ঞাসা করলঃ হে আবূ হুরায়রা আপনি কি এ হাদীস রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছেন? তিনি উত্তরে বললেনঃ এটি আবূ হুরায়রা জামবিলের নয় (বরং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে)।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৫ | 4965 | ٤۹٦۵

পরিচ্ছদঃ ২০৯৩. পরিবার-পরিজনের উপর ব্যয় করা ওয়াজিব
৪৯৬৫। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম দান তা-ই, যা দিয়ে মানুষ অভাবমুক্ত থাকে। যাদের ভরণ-পোষণ তোমার দায়িত্ব তাদের থেকে আরম্ভ কর।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৬ | 4966 | ٤۹٦٦

পরিচ্ছদঃ ২০৯৪. পরিবারের জন্য এক বছরের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখা এবং তাদের জন্য খরচ করার পদ্ধতি
৪৯৬৬। মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ) … মা’মার (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ সাওরী (রহঃ) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ কোন ব্যাক্তি তার পরিবারের জন্য বছরের বা বছরের কিছু অংশের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখা সম্পর্কে আপনি কোন হাদীস শুনেছেন কি? মা’মার বলেনঃ তখন আমার কোন হাদীস স্মরণ হলো না। পরে একটি হাদীসের কথা আমার মনে পড়ল, বা ইবনু শিহাব যুহরী (রহঃ) মালিক ইবনু আওসের সূত্রে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনূ নাযীরের খেজুর বিক্রি করে ফেলতেন এবং পরিবারের জন্য এক বছরের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৭ | 4967 | ٤۹٦۷

পরিচ্ছদঃ ২০৯৪. পরিবারের জন্য এক বছরের খাদ্য সঞ্চয় করে রাখা এবং তাদের জন্য খরচ করার পদ্ধতি
৪৯৬৭। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … মালিক ইবনু আওস ইবনু হাদাসান থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি উমর (রাঃ)-এর কাছে উপস্থিত হলাম; এমন সময় তার দারোয়ান ইয়ারফা এসে বলল, উসমান আবদুর রহমান, যুবায়র ও সা’দ ভেতরে প্রবেশ করার অমুমতি চাইছেন। আপনার অনুমতি আছে কি? তিনি তাদের অনুমতি দিলেন। মালিক (রহঃ) বলেনঃ তারা প্রবেশ করলেন এবং সালাম করে বসলেন। এর কিছুক্ষন পর ইয়ারফা এসে বললঃ আলী ও আব্বাস (রাঃ) অনুমতি চাইলেন আপনার অনুমতি আছে কি? তিনি হ্যাঁ বলে এদের উভয়কেও অনুমতি দিলেন। তারা প্রবেশ করে সালাম দিয়ে বসলেন। তারপর আব্বাস বললেনঃ হে আমীরুল মুমিনীন! আমার ও আলীর মধ্যে ফয়সালা করে দিন। উপস্থিত উসমান ও তার সঙ্গীরাও বললেনঃ হে আমীরুল মুমিনীন! এদের উভয়ের মধ্যে ফয়সালা করে দিন এবং একজন থেকে অপর জনকে শাস্তি দিন।

উমর (রাঃ) বললেনঃ থাম! আমি তোমাদেরকে সেই আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, যার আদেশে আসমান ও যমীন টিকে আছে। তোমারা কি জানো যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদের কেউ ওয়ারিস হয় না। আমরা যা রেখে যাই তা সদকা। এ কথা দ্বারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেকে (এবং অন্যানা নাবীগণকে) বুঝাতে চেয়েছেন। সে দলের লোকেরা বললেনঃ নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা বলেছেন। তারপর উমর (রাঃ) আলী ও আনাস (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা দু-জন কি জানো যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ কথা বলেছেন। তারা বললেনঃ অবশ্যই তা বলেছেন।

উমর (রাঃ) বললেন, এ ব্যপারে আমার বক্তব্য হলোঃ এ মালে আল্লাহ তার রাসুলকে একটি বিশেষ অধিকার দিয়েছেন, যা তিনি ছাড়া আর কাউকে দেননি। আল্লাহ বলেছেনঃ আল্লাহ ইয়াহুদীদের নিকট থেকে তাঁর রাসুলকে যে ‘ফায়’ (বিনা যুদ্ধে প্রাপ্ত সম্পদ) দিয়েছেন …… সর্বশক্তিমান পর্যন্ত। (হাশরঃ ৬) একমাত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য নির্ধারিত ছিল। আল্লাহর কসম! তিনি তোমাদের বাদ দিয়ে একাকী ভোগ করেননি এবং কাউকে তোমাদের উপর প্রাধান্য দেননি। এ থেকে তিনি তোমাদের দিয়েছেন এবং কিছু তোমাদের মধ্যে বিতরণ করেছেন। শেষ পর্যন্ত এ মালটুই অবশিষ্ট থেকে যায়। এ মাল থেকেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর পরিবারের সারা বছরের খরচ দিতেন। আর যা উদ্বৃত্ত থাকত তা আল্লাহর ব্যবহার্য মালের সাথে ব্যায় করতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনভর এরুপই করেছেন।

আল্লাহর কসম দিয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি তোমরা কি এ বিষয় জানো? তারা বললেনঃ হাঁ। এরপর তিনি আলী ও আব্বাস (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আমি আল্লাহর কসম দিয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি, তোমরা কি এ বিষয় জানো? তারা উভয়ে বললেনঃ হ্যাঁ। এরপর আল্লাহ তার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ওফাত দিলেন। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্থলাভিষিক্ত। আবূ বকর এ মাল নিজ কবজায় রাখলেন এবং এ মাল খরচের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অনুসৃত পদ্বতি অবলম্বন করলেন। আলী ও আব্বাসের দিকে ফিরে উমর (রাঃ) বললেনঃ তোমরা তখন মনে করতে আবূ বকর এমন, এমন। অথচ আল্লাহ জানেন এ ব্যাপারে তিনি সত্য কল্যাণকামী, সঠিক নীতির অনুসারী।

আল্লাহ আবূ বকরকে ওফাত দিলেন। আমি বললামঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ)-এর স্থলাভিষিক্ত এর পর আমি দুবছর এ মাল নিজ কবজায় রাখি। আমি এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকরের অনুসৃত নীতির-ই অনুসরণ করতে থাকি। তারপর তোমরা দুজন আসলে; তখন তোমরা উভয়ে, ঐক্যমত ছিলে এবং তোমাদের বিষয়ে সমন্বয় ছিল। তুমি আসলে ভ্রাতুষ্পুত্রের সম্পত্তিতে তোমার অংশ চাইতে। আর এ আসলো শশুরের সম্পত্তিতে স্ত্রীর অংশ চাইতে। আমি বলেছিলামঃ তোমরা যদি চাও, তবে আমি এ শর্তে তোমাদেরকে তা দিয়ে দিতে পারি, তোমরা আল্লাহর সহিত ওয়াদা ও অঙ্গীকারবদ্ধ থাকবে যে, এ ব্যাপরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর এবং এর কর্তৃত্ব হাতে পাওয়ার পর আমিও যে নীতির অনুসরণ করে এসেছি, সে তোমরা অনুসরন করবে। অন্যথায় এ ব্যাপারে আমার সাথে কোন কথা বলবে না। তখন তোমরা বলেছিলে এ শর্ত সাপেক্ষেই আমাদের কাছে দিয়ে দিন। তাই আমি এ শর্তেই তোমাদের তা দিয়েছিলাম।

তিনি বললেনঃ আমি তোমাদের সকলকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি, আমি কি এ শর্তে এটি তাদের কাছে দেইনি? তারা বললেনঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি আলী ও আব্বাস (রাঃ) কে লক্ষ্য করে বললেনঃ আল্লাহর কসম দিয়ে তোমাদের জিজ্ঞাসা করছি, আমি কি এ শর্তেই এটি তোমাদের কাছে দেইনি? তারা বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তবে এখন কি তোমরা আমার কাছে এ ছাড়া অন্য কোন ফয়সালা চাইছ? সেই সত্তার কসম! যার আদেশে আসমান-যযীন টিকে আছে আমি কিয়ামত পর্যন্ত এ ছাড়া অন্য কোন ফয়সালা দিতে প্রস্তুত নই। তোমরা যদি উল্লেখিত শর্ত পালন করতে অক্ষম হও, তাহলে তা আমার জিম্মায় ফিরিয়ে দাও তোমাদের পক্ষ থেকে আমিই এর পরিচালনা করব।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৮ | 4968 | ٤۹٦۸

পরিচ্ছদঃ ২০৯৬. স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রী ও সন্তানের খরচ
২০৯৫. পরিচ্ছেদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ মায়েরা যেন তাদের সন্তানদের পূর্ণ দু‘বছর দুধ পান করায়, সেই পিতার জন্য যে পূর্ণ সময়কাল পর্যন্ত দুধ পান করাতে চায়; …….. তোমরা যা কর আল্লাহ্ তা দেখেন। তিনি আরো ইরশাদ করেনঃ তাকে গর্ভে ধারণ ও দুধ ছাড়ানোর সময় তিরিশ মাস। তিনি আরও বলেনঃ যদি তোমরা অসুবিধা রোধ কর, তাহলে অপর কোন মহিলা তাকে দুধ পান করাতে পারে। সচ্ছল ব্যক্তি স্বীয় সাধ্য অনুসারে খরচ করবে…. প্রাচুর্য দান করবেন। ইউনুস, যুহরী থেকে বর্ণনা করেন যে আল্লাহ্ নিষেধ করেছেন কোন মাকে তার সন্তানের জন্য ক্ষতিগ্রস্থ করা হবে না। আর তা হলো এরূপ যে, মাতা একথা বলে বসলো, আমি একে দুধ পান করাব না। অথচ মায়ের দুধ শিশুর জন্য উৎকৃষ্ট খাদ্য এবং অন্যান্য মহিলার তুলনায় মাতা সন্তানের জন্য অধিক স্নেহশীলা ও কোমল। কাজেই পিতা যথাসাধ্য নিজের পক্ষে থেকে কিছু দেওয়ার পরও মাতার জন্য দুধ পান করাতে অস্বীকার করা উচিত হবে না। এমনিভাবে সন্তানের পিতার জন্য উচিত নয় সে সন্তানের কারণে তার মাতাকে কষ্ট দেওয়া অর্থাৎ কষ্টে ফেলার উদ্দেশ্যে শিশু মাকে দুধ পান করাতে না দিয়ে অন্য মহিলাকে দুধ পান করাতে দেওয়া। হাঁ, মাতা পিতা খুশী হয়ে যদি কাউকে ধাত্রী নিযুক্ত করে, তবে তাতে কোন দোষ নেই। তেমনি যদি তারা উভয়ে দুধ ছাড়াতে চায়, তবে তাতেও তাদের কোন দোষ নেই, যদি তা পারস্পরিক সম্মতি ও পরামর্শের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। فِصَالُهُ দুধ ছাড়ানো।

৪৯৬৮। ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হিনদা বিনত উতবা এসে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আবূ সুফিয়ান কঠিন লোক। আমি যদি তার মাল থেকে পরিবারের কাউকে কিছু দেই তাহলে আমার গুনাহ হবে কি? তিনি বললেন, না; তবে সঙ্গতভাবে ব্যয় করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৬৯ | 4969 | ٤۹٦۹

পরিচ্ছদঃ ২০৯৬. স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রী ও সন্তানের খরচ
৪৯৬৯। ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোন মহিলা স্বামীর উপার্জন থেকে বিনা হুকুমে দান করে, তবে সে তার অর্ধেক সাওয়াব পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭০ | 4970 | ٤۹۷۰

পরিচ্ছদঃ ২০৯৭. স্বামীর গৃহে স্ত্রীর কাজ কর্ম করা
৪৯৭০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, একদা ফাতিমা (রাঃ) যাতা ব্যবহারে তার হাতে যে কষ্ট পেতেন তার অভিযোগ নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলেন। তার কাছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট দাস আসার খবর পৌছেছিল। কিন্তু তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পেলেন না। তখন তিনি তার অভিযোগ আয়িশার কাছে বললেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে আসলে আয়িশা (রাঃ) তাকে জানালেন। আলী (রাঃ) বলেনঃ রাতে আমরা যখন শুয়ে পড়েছিলাম, তখন তিনি আমাদের কাছে আসলেন। আমরা উঠতে চাইলাম, কিন্তু তিনি বললেনঃ তোমরা উভয়ে নিজ স্থানে থাক। তিনি এসে আমার ও ফাতিমার মাঝখানে বসলেন। এমনকি আমি আমার পেটে তার পায়ের শীতলতা অনুভব করেছিলাম। তারপর তিনি বললেনঃ তোমরা যা চেয়েছ তার চেয়ে কল্যাণকর বিষয় সম্বন্ধে তোমাদের অবহিত করব না? তোমরা যখন তোমাদের শয্যাস্থানে যাবে, অথবা বললেনঃ তোমরা যখন তোমাদের বিছানায় যাবে, তখন তেত্রিশবার সূবহানাল্লাহ, তেত্রিশবার আলহামদুলিল্লাহ এবং চৌত্রিশবার আল্লাহু আকবর পাঠ করবে। খাদেম অপেক্ষা ইহা তোমাদের জন্য অধিক কল্যাণকর।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭১ | 4971 | ٤۹۷۱

পরিচ্ছদঃ ২০৯৮. স্ত্রীর জন্য খাদিম
৪৯৭১। হুমায়দী (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, ফাতিমা (রাঃ) একটি খাদেম চাইতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলেন। তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাকে এর চাইতে অধিক কল্যাণকর বিষয়ে খবর দিব না? তুমি শয়নকালে তেত্রিশবার সুবহানাল্লাহ, তেত্রিশবার আলহামদুলিল্লাহ এবং তেত্রিশবার আল্লাহ আল্লাহ পাঠ করবে। পরে সুফিয়ান বলেনঃ এর মধ্যে যে কোন একটি তেত্রিশবার। আলী (রাঃ) বলেনঃ এরপর থেকে কখনোও আমি এগুলো ছাড়িনি। জিজ্ঞাসা করা হলো সিফফীনের রাতেও না? তিনি বললেনঃ সিফফীনের রাতেও না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭২ | 4972 | ٤۹۷۲

পরিচ্ছদঃ ২০৯৯. নিজ পরিবার গৃহকর্তার কাজকর্ম
৪৯৭২। মুহাম্মদ ইবনু আরআরা (রহঃ) … আসওয়াদ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহে কি কাজ করতেন? তিনি বললেনঃ তিনি ঘরের কাজ-কর্মে ব্যস্ত থাকতেন, আর যখন আযান শুনতেন, তখন বেরিয়ে যেতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৩ | 4973 | ٤۹۷۳

পরিচ্ছদঃ ২১০০. স্বামী যদি (ঠিকভাবে) খরচ না করে, তাহলে তার অজান্তে স্ত্রী তার ও সন্তানের প্রয়োজনানুপাতে যথাবিহিত খরচ করতে পারে।
৪৯৭৩। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, হিনদা বিনত উতবা বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আবূ সুফিয়ান একজন কৃপন লোক। আমাকে এ পরিমাণ খরচ দেন না, যা আমার ও আমার সন্তানদের জন্য যথেষ্ট; তবে তার অজানাতে যা আমি (চাই) নিতে পারি। তখন তিনি বললেনঃ তোমার ও তোমার সন্তানের জন্য নিয়মানুসারে যা যথেষ্ট হয় তা তুমি নিতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৪ | 4974 | ٤۹۷٤

পরিচ্ছদঃ ২১০১. স্বামীর সম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ ও তার জন্য খরচ করা
৪৯৭৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উষ্ট্রারোহীনা নারীদের মধ্যে কুরায়াশ গোত্রের নারীরা সর্বশ্রেষ্ঠা। অপরজন বলেনঃ কুরায়শ গোত্রের সৎ নারীগণ, তারা সন্তানের প্রতি শৈশবে খুব স্নেহশীল এবং স্বামীর প্রতি বড়ই দরদী তার সম্পদের ক্ষেত্রে। মুআবিয়া ও ইবনু আব্বাসের সূত্রেও উভয় হাদীসটি বর্ণিত আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৫ | 4975 | ٤۹۷۵

পরিচ্ছদঃ ২১০২. মহিলাদের যথাযোগ্য পরিচ্ছদ দান
৪৯৭৫। হাজ্জাজ ইবনু মিহাল (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে রেশমী পোশাক আসল। আমি তা পরিধান করলে তার চেহারা মোবারকে অসন্তষ্টির চিহ্ন লক্ষ্য করলাম। তাই আমি এটাকে খণ্ড খণ্ড করে আপন মহিলাদের মধ্যে বিতরণ করে দিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৬ | 4976 | ٤۹۷٦

পরিচ্ছদঃ ২১০৩. সন্তান লালন-পালনে স্বামীকে সাহায্য করা
৪৯৭৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সাতটি বা (বর্ণনাকারীর সন্দেহ) নয়টি মেয়ে রেখে আমার পিতা ইন্তেকাল করেন। তারপর আমি এক বিধবা মহিলাকে বিয়ে করি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ জাবির! তুমি বিয়ে করেছ? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি তারপর জিজ্ঞাসা করলেনঃ কুমারী বিয়ে করেছ না বিধবা? আমি বললামঃ বিধবা। তিনি বললেনঃ কুমারী করলে না কেন? তুমি তার সাথে প্রমোদ করতে, সেও তোমার সাথে প্রমোদ করতো। তুমিও তাকে হাসাতে, সেও তোমাকে হাসাতো। জাবির (রাঃ) বলেনঃ আমি তাকে বললামঃ অনেকগুলো কন্যা সন্তান রেখে আবদুল্লাহ (তার পিতা) মারা গেছেন তাই আমি ওদের-ই মত কুমারী মেয়ে বিয়ে করা পছন্দ করিনি। আমি এমন মেয়েকে বিয়ে করলাম যে তাদের দেখাশোনা করতে পারে। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তোমাকে বরকত দিন অথবা বললেনঃ কল্যাণ দান করুন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৭ | 4977 | ٤۹۷۷

পরিচ্ছদঃ ২১০৪. নিজ পরিবারের জন্য অসচ্ছল ব্যক্তির খরচ
৪৯৭৭। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এক ব্যাক্তি এলো এবং বললো আমি ধংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ কেন? সে বললোঃ রামাযান মাসে আমি (দিবসে) স্ত্রী সহবাস করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ একটি দাস মুক্ত করে দাও। সে বললোঃ আমার কাছে কিছুই নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে একাধারে দু-মাস রোযা রাখ। সে বললঃ সে ক্ষমতাও আমার নেই। তিনি বলেনঃ তবে ষাটজন মিসকীনকে আহার করাও। সে বললোঃ সে সামর্থ্যও আমার নেই।

এ সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক বস্তা খেজুর এল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ প্রশ্নকারী কোথায়? লোকটি বললোঃ আমি এখানে। তিনি বললেনঃ এগুলো দিয়ে সদকা কর। সে বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের চেয়ে অভাবগ্রস্তকে দিব? সেই সত্তার শপথ। যিনি আপনাকে সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন, মদিনার প্রস্তরময় দু-পার্শ্বের মধ্যে আমাদের চেয়ে অভাবগ্রস্ত কোন পরিবার লেই। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন এমন কি তার চোয়ালের দাত মোবারক পর্যন্ত দেখা গিয়েছিল এবং বললেনঃ তবে তোমাদেরই অনুমতি দেওয়া হল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৮ | 4978 | ٤۹۷۸

পরিচ্ছদঃ ২১০৫. ওয়ারিসের উপরেও অনুরূপ দায়িত্ব আছে। মহিলার উপরেও কি এমন কোন দায়িত্ব আছে ? আর আল্লাহ্ তা’আলা এমন দু’ব্যক্তির দৃষ্টান্ত দিয়েছেন, যাদের একজন বোবা, কিছুই করতে সমর্থ নয়। সে তার অভিভাবকের ওপর বোঝা স্বরূপ।
৪৯৭৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আবূ সালামার সন্তানদের জন্য ব্যয় করলে তাতে আমার কোন সাওয়াব হবে কি? আমি তাদের এ (অভাবী) অবস্থায় ত্যাগ করতে পারি না। তারা তো আমারই সন্তান। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তাদের জন্য খরচ করলে তুমি সাওয়াব পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৭৯ | 4979 | ٤۹۷۹

পরিচ্ছদঃ ২১০৫. ওয়ারিসের উপরেও অনুরূপ দায়িত্ব আছে। মহিলার উপরেও কি এমন কোন দায়িত্ব আছে ? আর আল্লাহ্ তা’আলা এমন দু’ব্যক্তির দৃষ্টান্ত দিয়েছেন, যাদের একজন বোবা, কিছুই করতে সমর্থ নয়। সে তার অভিভাবকের ওপর বোঝা স্বরূপ।
৪৯৭৯। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হিনদা এসে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ। আবূ সুফিয়ান কৃপন লোক। আমার ও সন্তানের প্রয়োজন মতো আমি যদি তার মাল থেকে কিছু গ্রহণ করি, তবে কি আমার গুনাহ হবে? তিনি বললেনঃ নিতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮০ | 4980 | ٤۹۸۰

পরিচ্ছদঃ ২১০৫. ওয়ারিসের উপরেও অনুরূপ দায়িত্ব আছে। মহিলার উপরেও কি এমন কোন দায়িত্ব আছে ? আর আল্লাহ্ তা’আলা এমন দু’ব্যক্তির দৃষ্টান্ত দিয়েছেন, যাদের একজন বোবা, কিছুই করতে সমর্থ নয়। সে তার অভিভাবকের ওপর বোঝা স্বরূপ।
৪৯৮০। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ঋণগ্রস্ত কোন মৃত ব্যাক্তিকে (জানাযার জন্য) আনা হলে, তিনি জিজ্ঞাসা করতেনঃ সে কি ঋণ পরিশোধ করার মত অতিরিক্ত কিছু রেখে গেছে? যদি বলা হত যে, সে ঝণ পরিশোধ করার মত সম্পদ রেখে গেছে, তাহলে তিনি তার জানাযা পড়তেন। অন্যথায় তিনি মুসলমানদের বলতেনঃ তোমরা তোমাদের সাথীর জানাযা পড়। তারপর আল্লাহ যখন তার জন্য অসংখ্য বিজয়ের দার খুলে দিলেন, তখন তিনি বললেনঃ আমি মুমিনদের নিজেদের চেয়েও বেশী ঘনিঠতর। সুতরাং মুমিনদের মধ্যে সে কেউ ঋণ রেখে মারা গেলে, তা পরিশোধ করার দায়িত্ব আমারই। আর যে ব্যাক্তি সম্পদ রেখে যাবে তা তার উত্তরাধিকারীবা পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮১ | 4981 | ٤۹۸۱

পরিচ্ছদঃ ২১০৬. দাসী ও অন্যান্য মহিলা কর্তৃক দুধ পান করানো
৪৯৮১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী উম্মে হাবীবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার বোন আবূ সুফইয়ানের মেয়েকে আপনি বিবাহ করুন। তিনি বললেনঃ তুমি কি তা পছন্দ কর? আমি বললাম, হ্যাঁ। আমি তো আর আপনার সংসারে একা নই। আমার সঙ্গে এই সৌভাগ্যের অংশীদার, আমার বোনও তাদের অভভুক্ত হোক তাই আমি বেশী পছন্দ করি। তিনি বললেনঃ কিন্তু সে যে আমার জন্য হালাল হবে না? আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আল্লাহর কসম! আমাদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে আপনি নাকি উম্মে সালামার মেয়ে দুররাকে বিয়ে করার ইচ্ছা করেছেন? তিনি বললেনঃ উম্মে সালামার মেয়েকে? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! সে যদি আমার কোলে পালিত, পূর্ব স্বামীর ঔরসে উম্মে সালামার গর্ভজাত সন্তান নাও-হতো, তবু সে আমার জন্য হালাল ছিল না। সে তো আমার দুধ-ভাইয়ের কন্যা। সুওয়াহাবা আমাকে ও আবূ সালামাকে দুধ পান করিয়েছেন। সুতরাং তোমাদের কন্যা ও বোনদের আমার সামণে পেশ করো না। শুয়াইব যুহরী থেকে বর্ননা করেছেন যে, উরওয়া বলেছেনঃ সুওয়ায়বাকে আবূ লাহাব মুক্ত করে দিয়েছিল।

আহার সংক্রান্ত অধ্যায় (৪৯৮২-৫০৭০)

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮২ | 4982 | ٤۹۸۲

পরিচ্ছদঃ আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ আমি যে রিযিক তোমাদের দিয়েছি তা থেকে পবিত্রগুলো আহার কর। তিনি আরও বলেনঃ তোমাদের উপার্জিত পবিত্র বস্তু থেকে আহার কর। তিনি আরও বলেনঃ পবিত্র বস্তু থেকে আহার কর এবং সৎ কর্মশীল হও। তোমরা যা করছ আমি তা জানি।
৪৯৮২। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ক্ষুধার্থকে আহার করাও, রোগীর পরিচর্যা করো এবং বন্দীকে মুক্ত করো। সুফিয়ান বলেছেনঃ الْعَانِي অর্থঃ বন্দী।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৩ | 4983 | ٤۹۸۳

পরিচ্ছদঃ আল্লাহ্ তা‘আলার বাণীঃ আমি যে রিযিক তোমাদের দিয়েছি তা থেকে পবিত্রগুলো আহার কর। তিনি আরও বলেনঃ তোমাদের উপার্জিত পবিত্র বস্তু থেকে আহার কর। তিনি আরও বলেনঃ পবিত্র বস্তু থেকে আহার কর এবং সৎ কর্মশীল হও। তোমরা যা করছ আমি তা জানি।
৪৯৮৩। ইউসুফ ইবনু ঈসা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার তার ইন্তেকাল অবধি একাধারে তিন দিন আহার করে পরিতৃপ্ত হন নি।

আরেকটি বর্ণনায় আবূ হাযিম আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেন, একদা আমি প্রচণ্ড ক্ষুধার যন্ত্রনায় আক্রান্ত হই। তখন উমর ইবনু খাত্তারের সাথে সাক্ষাৎ করলাম এবং মহান আল্লাহ (কুরআনের) একটি আয়াতের পাঠ তার থেকে শুনতে চাইলাম। তিনি আয়াতটি পাঠ করে নিজ গৃহে প্রবেশ করলেন। এদিকে আমি কিছু দূর চলার পর ক্ষুধার যন্ত্রনায় উপুড় হয়ে পড়ে গেলাম। একটু পরে দেখি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার মাথার কাছে দাঁড়ানো। তিনি বললেনঃ হে আবূ হুরায়রা। আমি লাব্বাইকা ইয়া রাসুলাল্লাহ ওয়া সাদায়কা (আমি হাযীর! ইয়া রাসুলাল্লাহ, আপনার সমীপে) বলে সাড়া দিলাম। তিনি আমার হাত ধরে তুললেন এবং আমার অবস্থা বুঝতে পারলেন।

তিনি আমাকে খেতে নিয়ে গেলেন এবং আমাকে এক পেয়ালা দুধ দেওয়ার জন্য আদেশ করলেন। আমি কিছু পান করলাম। তিনি বললেনঃ আবূ হুরায়রা! আরো পান কর। আবার পান করলাম। তিনি পুনবায় বললেনঃ আরো। আমি পূনর্বার পান করলাম। এমনি কি আমার পেট তীরের মত সমান হয়ে গেল। এরপর আমি উমরের সাথে সাক্ষাৎ করে আমার অবস্থার কথা তাকে জানালাম এবং বললামঃ হে উমর! আল্লাহ তাআলা এমন একজন লোকের মাধ্যমে এর বন্দোবস্ত করেছেন যিনি এ ব্যাপারে তোমার চেয়ে বেশী উপযুক্ত। আল্লাহর কসম! আমি তোমার কাছে আয়াতটির, পাঠ শুনতে চেয়েছি অথচ আমি তোমার চেয়ে তা ভাল পাঠ করতে পারি। উমর (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! তোমাকে আপ্যায়ন করা আমার নিকট লাল বর্ণের উটের চেয়েও অধিক প্রিয়।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৪ | 4984 | ٤۹۸٤

পরিচ্ছদঃ ২১০৭. আহারের পূর্বে বিসমিল্লাহ্ বলা এবং ডান হাত দিয়ে আহার করা
৪৯৮৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উমর ইবনু আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ছোট ছেলে হিসাবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তত্বাবধানে ছিলাম। খাবার বাসনে আমার হাত ছুটাছুটি করতো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ হে বৎস! বিসমিল্লাহ বলে ডান হাতে আহার কর এবং তোমার কাছে থেকে খাও। এরপর থেকে আমি সব সময় এ পদ্ধতিতেই আহার করতাম। যার যার কাছ থেকে আহার করা। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা বিসমিল্লাহ বলবে এবং প্রত্যেকে তার কাছ থেকে আহার করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৫ | 4985 | ٤۹۸۵

পরিচ্ছদঃ ২১০৭. আহারের পূর্বে বিসমিল্লাহ্ বলা এবং ডান হাত দিয়ে আহার করা
৪৯৮৫। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উমর ইবনু আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনা উম্মে সালামার পুত্র ছিলেন। তিনি বলেনঃ একদিন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে আহার্য খেলাম। আমি পত্রের সব দিক থেকে খেতে লাগলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ নিজের কাছ থেকে খাও।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৬ | 4986 | ٤۹۸٦

পরিচ্ছদঃ ২১০৭. আহারের পূর্বে বিসমিল্লাহ্ বলা এবং ডান হাত দিয়ে আহার করা
৪৯৮৬। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ নুআয়ম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একদা কিছু খাবার আনা হলো, তার সঙ্গে ছিলেন তার পোষ্য উমর ইবনু আবূ সালামা। তিনি বললেনঃ বিসমিল্লাহ বল এবং নিজের কাছ থেকে খাও।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৭ | 4987 | ٤۹۸۷

পরিচ্ছদঃ ২১০৮. সাথীর কাছ থেকে কোন অসন্তুষ্টির আলামত না দেখতে সঙ্গের পাত্রের সবদিক থেকে খুঁজে খুঁজে খাওয়া।
৪৯৮৭। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার এক দর্জি কিছু খানা পাকিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওআত করলো। আনাস (রাঃ) বলেনঃ আমিও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে গেলাম। আহারে বসে দেখলাম, তিনি পাত্রের সবদিক থেকে কদূর টুকরা খুঁজে খুঁজে বের করে নিচ্ছেন, সেদিন থেকে আমি কদু পছন্দ করতে থাকি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৮ | 4988 | ٤۹۸۸

পরিচ্ছদঃ ২১০৯. আহার ও অন্যান্য কাজ ডান দিক থেকে শুরু করা।
৪৯৮৮। আবদান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্রতা অর্জনে, জুতা পরিধানে এবং চুল আঁচড়ানে যথাসাধ্য ডান দিক থেকে শুরু করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৮৯ | 4989 | ٤۹۸۹

পরিচ্ছদঃ ২১১০. পরিতৃপ্ত হওয়া পর্যন্ত আহার করা।
৪৯৮৯। ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ তালহা (রাঃ) উম্মে সুলায়মকে বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দূর্বল কণ্ঠসুর শুনে বুঝতে পারলাম তিনি ক্ষুধার্ত। তোমার নিকট (খাবার) কিছু আছে কি? তখন উম্মে সুলায়ম কয়েকটি যবের রুটি বের করলেন। তারপর তার ওড়না বের করে এর একাংশ দ্বারা রুটিগুলো পেঁচিয়ে আমার কাপড়ের মধ্যে গুজে দিলেন এবং অন্য অংশ আমার গায়ে জড়িয়ে দিয়ে আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পাঠালেন। আনাস (রাঃ) বলেনঃ আমি এগুলো নিয়ে গেলাম এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে পেলাম। তার সঙ্গে অনেক লোক। আমি তাদের কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আবূ তালহা তোমাকে পাঠিয়েছে? আমি বললামঃ হাঁ। তখন তিনি বললেনঃ খাবার জন্য? আমি বললাম হ্যাঁ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সঙ্গীদের বললেনঃ ওঠ। তারপর তিনি চললেন। আমিও তাদের আগে আগে চলতে লাগলাম। অবশেষে আবূ তালহার কাছে এসে পৌহুলাম।

আবূ তালহা বললেনঃ হে উম্মে সুলায়ম! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো অনেক লোক নিয়ে এসেছে অথচ আমাদের কাছে এ পরিমাণ খাবার নাই যা তাদের খাওয়াব। উম্মে সুলায়ম বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই ভাল জানেন। আনাস (রাঃ) বলেনঃ তারপর আবূ তালহা গিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। তারপর আবূ তালহা ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে ঘরে প্রবেশ করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মে সুলায়মাকে ডেকে বললেনঃ তোমার কাছে যা আছে তা নিয়ে আস। উম্মে সুলায়ম ঐ রুটি নিয়ে আসলেন। তিনি নির্দেশ দিলে তা টুকুরা টুকরা করা হলো।

উম্মে সুলায়ম (ঘি বা মধুর) পাত্র নিংড়িয়ে তাকেই ব্যঞ্জন বানালেন। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাশাআল্লাহ, এতে যা পড়ার পড়লেন। এরপর বললেনঃ দশজনকে আসতে অনুমতি দাও। তাদের আসতে বলা হলে তারা পরিতৃপ্ত হয়ে আহার করল এবং তারা বেরিয়ে গেলা আবার বললেনঃ দশজনকে অনুমতি দাও। তাদের অনুমতি দেওয়া হলো। তারা আহার করে পরিতৃপ্ত হল এবং চলে গেল। আবার বললেনঃ দশজনকে অনুমতি দাও। তাদের অনুমতি দেওয়া হল। তারা আহার করে পরিতৃপ্ত হলো এবং চলে গেল। এরপর আরো দশজনকে অনুমতি দেওয়া হল। এভাবে সকলেই আহার করল এবং পরিতৃপ্ত হল। তারা মোট আশি জন লোক ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯০ | 4990 | ٤۹۹۰

পরিচ্ছদঃ ২১১০. পরিতৃপ্ত হওয়া পর্যন্ত আহার করা।
৪৯৯০। মুসা (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার আমরা একশ-তিরিশ জন লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাদের কারো কাছে কিছু খাবার আছে কি? দেখা গেল এক ব্যাক্তির কাছে প্রায় এক সা’ পরিমাণ খাবার আছে। এগুলো গুলিয়ে খামীর করা হলো। তারপর দীর্ঘ দেহী দীর্ঘ কেশী এক মুশরিক ব্যাক্তি একটা বকরী হাকিয়ে নিয়ে আসলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটাকি বিক্রির জন্য, না উপঢৌকন অথবা তিনি বললেনঃ দানের জন্য? লোকটি বললোঃ না, আমি বরং বিক্রি করবো। তিনি তার কাছ থেকে সেটি কিনে নিলেন। পরে সেটি যবেহ করে বানান হলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কলিজা ইত্যাদি রান্না করতে নির্দেশ দিলেন। আল্লাহর কসম! (আহারের সময়) তিনি একশ ত্রিশজনের প্রত্যেককেই এক টুকরা করে কলিজা ইত্যাদি দিলেন। যারা উপস্থিত ছিল তাদের তো দিলেনই। আর যারা অনুপস্থিত ছিল তাদের জন্যও তিনি টুকরাগুলো তুলে রাখলেন। তারপর খাবারগুলো দুটি পাত্রে রাখলেন। আমরা সকলে তৃপ্তিসহ আহার করলাম। এরপরও উভয় পাত্রে খাবার অবশিষ্ট থাকল। আমি তা উটের পিঠে তুললাম। কিংবা রাবী যা বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯১ | 4991 | ٤۹۹۱

পরিচ্ছদঃ ২১১০. পরিতৃপ্ত হওয়া পর্যন্ত আহার করা।
৪৯৯১। মুসলিম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকাল হল। সে সময় আমরা পরিতৃপ্ত হয়ে খেজুর ও পানি খেলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯২ | 4992 | ٤۹۹۲

পরিচ্ছদঃ ২১১১. মহান আল্লাহর বাণীঃ অন্ধের জন্য দোষ নেই, খোঁড়ার জন্য দোষ নেই …… যাতে তোমরা বুঝতে পার।
৪৯৯২। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সুওয়ায়দ ইবনু নূ’মান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে খায়বারের দিকে বের হলাম। আমরা নাহবা (খায়বারের এক মঞ্জিল দুরে অবস্থিত) নামক স্থানে পৌছলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাবার আনতে বললেন। কিন্তু ছাতু ছাড়া আর কিছুই আনা হল না। আমরা তা-ই মুখে দিয়ে জিহবায় গুলে গিলে ফেললাম। তারপর তিনি পানি আনতে বললেন তখন (পানি আনা হলে) তিনি কুলি করলেন- আমরাও কুলি করলাম। তারপর তিনি আমাদের নিয়ে মাগরিবের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আর তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন না। সুফিয়ান বলেনঃ আমি ইয়াহইয়াহ ইবনু সাঈদের কাছে হাদীসটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৩ | 4993 | ٤۹۹۳

পরিচ্ছদঃ ২১১২. নরম রুটি আহার করা এবং টেবিল ও দস্তরখানে আহার করা।
৪৯৯৩। মুহাম্মদ ইবনু সিনান (রহঃ) … কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা আনাস (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। তার সঙ্গে তার বাবুর্চিও ছিল। তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকালের পূর্ব পর্যন্ত পাতলা নরম রুটি এবং ভুনা বকরীর গোশত খান নি এমনকি তিনি এ অবস্থায়ই আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৪ | 4994 | ٤۹۹٤

পরিচ্ছদঃ ২১১২. নরম রুটি আহার করা এবং টেবিল ও দস্তরখানে আহার করা।
৪৯৯৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও ‘সুকুরজা’ অর্থাৎ ছোট ছোট পাত্রে আহার করেছেন, তার জন্য কোন নরম রুটি তৈরি করা হয়েছে কিংবা তিনি কখনো টেবিলের উপর খাবার খেয়েছেন বলে আমি জানি না। কাতাদাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, তাহলে তাঁরা কিসের উপর আহার করতেন। তিনি বললেনঃ দস্তরখানের উপর।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৫ | 4995 | ٤۹۹۵

পরিচ্ছদঃ ২১১২. নরম রুটি আহার করা এবং টেবিল ও দস্তরখানে আহার করা।
৪৯৯৫। ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাফিয়্যার সাথে বাসর করার উদ্দেশ্যে অবস্থান করলেন। আমি তাঁর ওলীমার জন্য মুসলমানদের দাওয়াত করলাম। তার আদেশে দস্তরখান বিছানো হল। তারপর তার উপর খেজুর পনির ও ঘি ঢালা হল। আমর আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে বাসর করলেন এবং চামড়ার দস্তরখানে ‘হায়স’ (ঘি, খেজুর ইত্যাদি সমন্ময়ে তৈরী খাবার) প্রস্তুত করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৬ | 4996 | ٤۹۹٦

পরিচ্ছদঃ ২১১২. নরম রুটি আহার করা এবং টেবিল ও দস্তরখানে আহার করা।
৪৯৯৬। মুহাম্মদ (রহঃ) … ওহাব ইবনু কায়সান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন সিরিয়াবাসীরা ইবনু যুবায়রকে ইবনু যাতান নিতাকায়ন বলে লজ্জা দিত। আসমা (রাঃ) তাকে বললেনঃ বৎস! তারা তোমাকে ‘নিতাকায়ন’ দ্বারা লজ্জিত করছে? তুমি কি ‘নিতাকায়’ (দু’কোমরবন্দ) সম্বন্ধে কিছু জানো? আসলে তা ছিল আমারই কোমরবন্দ যা দু-ভাগ করে আমি একভাগ দিয়ে (হিজরতের সময়) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খাবারের থলি মুখ বেধে দিয়েছিলাম। আর অপর ভাগকে দস্তরখান বানিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর থেকে সিয়িয়া বাসীরা (অর্থাৎ হাজ্জাজের সৈন্যরা) যখনই তাকে ‘নিতাকায়ান’ বলে লজ্জা দিতে চাইত, তিনি বলতেনঃ তোমরা সত্যই বলছো। আল্লাহর শপখ! এটি এমন এক অভিযোগ যা তোমাদের লজ্জা আরো দূরিভূত করে।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৭ | 4997 | ٤۹۹۷

পরিচ্ছদঃ ২১১২. নরম রুটি আহার করা এবং টেবিল ও দস্তরখানে আহার করা।
৪৯৯৭। আবূ নূমান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার খালা উম্মে হাফীদ বিনত হারিস ইবনু হাযন (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পনির এবং দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) হাদিয়া দিলেন। তিনি এগুলো তার কাছে আনতে বললেন। তারপর এগুলো তার দস্তরখানে খাওয়া হল। তিনি অপছন্দনীয় মনে করে দব্বগুলো খেলেন না। যদি এগুলো হারাম হতো তাহলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দস্তরখানে তা খাওয়া হতো না। আর তিনি এগুলো খাওয়ার অনুমতিও দিতেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৮ | 4998 | ٤۹۹۸

পরিচ্ছদঃ ২১১৩. ছাতু
৪৯৯৮। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … সুওয়ায়দ ইবনু নুমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তারা একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ‘সাহবা’ নামক স্থানে উপস্থিত ছিলেন। সাহল ছিল খায়বার থেকে এক মনযিলের দূরত্ব। সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময় উপস্থিত হলে তিনি খাবার আনতে বললেন। কিন্তু ছাতু ছাড়া আর কিছুই পেলেন না। তিনি তাই মুখে দিয়ে নাড়াচাড়া করলেন, আমরাও তার সঙ্গে সঙ্গে এরূপ করলাম। তারপর তিনি পানি আনালেন এবং কুলি করে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আমরাও তার সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলাম। আর তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৪৯৯৯ | 4999 | ٤۹۹۹

পরিচ্ছদঃ ২১১৪. যতক্ষণ পর্যন্ত কোন খাবারের নাম বলা না হতো এবং সে খাদ্য কি তা জান্তে না পারতেন, ততক্ষণ পর্যন্ত নবী (সাঃ) আহার করতেন না।
৪৯৯৯। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) যাকে সায়ফুল্লাহ (আল্লাহর তরবারী) বলা হতো তার কাছে বর্ণনা করেছেন, যে তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মায়মুনা (রাঃ) এর গৃহে প্রবেশ করলেন। মায়মুনা (রাঃ) তাঁর ও ইবনু আব্বাসের খালা ছিলেন। তিনি তার কাছে একটি ভুনা দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) দেখতে পেলেন, যা নজ্বদ থেকে তাঁর (মায়মূনার) বোন হুফায়দা বিনত হারিস নিয়ে এসেছিলেন। মায়মুনা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে উপস্থিত করলেন। তাঁর অভ্যাস ছিল কোন খাদ্যের নাম ও তার বিবরন বলে না দেয়া পর্যন্ত তিনি খুব কমই তার প্রতি হাত বাড়াতেন। তিনি দব্ব এর দিকে হাত বাড়ালে উপস্থিত মহিলাদের মধ্য থেকে একজন বললোঃ তোমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে যা পেশ করছো সে সম্বন্ধে তাকে অবহিত করো। তারপর সে মহিলাই বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! ওটা দব্ব। একথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত তুলে ফেললেন। খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! দব্ব খাওয়া কি হারাম? তিনি বললেনঃ না। কিন্তু যেহেতু এটি আমাদের এলাকায় নেই। তাই এটি খাওয়া আমি পছন্দ করি না। খালিদ (রাঃ) বলেনঃ আমি সেটি টেনে নিয়ে খেতে থাকলাম। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০০ | 5000 | ۵۰۰۰

পরিচ্ছদঃ ২১১৫. একজনের খাবার দু‘জনের জন্য যথেষ্ট
৫০০০। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দু’জনের খাবার তিন জনের জন্য যথেষ্ঠ এবং তিন জনের খাবার চারজনের জন্য যথেষ্ট।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০১ | 5001 | ۵۰۰۱

পরিচ্ছদঃ ২১১৬. মু’মিন ব্যক্তি এক পেটে খায়
৫০০১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ইবনু উমর (রাঃ) ততক্ষন পর্যন্ত আহার করতেন না যতক্ষন পর্যন্ত তার সাথে খাওয়ার জন্য একজন মিসকীনকে ডেকে না আনা হতো। একদা আমি তার সঙ্গে বসে আহার করার জন্য জনৈক ব্যাক্তিকে নিয়ে আসলাম। লোকটি খুব বেশী আহার করলো। তিনি বললেনঃ নাফি! এ ধরনের লোককে আমার কাছে নিসে আসবে না। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, মুমিন ব্যাক্তি এক পেটে খায়। আর কাফির ব্যাক্তি সাত পেটে খায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০২ | 5002 | ۵۰۰۲

পরিচ্ছদঃ ২১১৬. মু’মিন ব্যক্তি এক পেটে খায়
৫০০২। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন মুমিন এক পেটে খায় আর কাফিব অথবা বলেছেন মুনাফিক। রাবী বলেন, এ দুটি কাজের মধ্যে আমার সন্দেহ আছে যে বর্ণনাকারী কোনটি বলেছেন। উবায়দুল্লাহ বলেনঃ সাত পেটে খায়। ইবনু বুকায়র বলেনঃ মালিক (রহঃ) নাফি (রহঃ) এর সূত্রে ইবনু উমর (রাঃ) থেকে এবং তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৩ | 5003 | ۵۰۰۳

পরিচ্ছদঃ ২১১৬. মু’মিন ব্যক্তি এক পেটে খায়
৫০০৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আমর (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ নাহীক অত্যধিক আহারকারী ব্যাক্তি ছিলেন। ইবনু উমর (রাঃ) তাঁকে বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কাফির ব্যাক্তি সাত পেটে খায়। আবূ নাহীক বললেনঃ আমি তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান রাখি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৪ | 5004 | ۵۰۰٤

পরিচ্ছদঃ ২১১৬. মু’মিন ব্যক্তি এক পেটে খায়
৫০০৪। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিন ব্যাক্তি এক পেটে আহার করে আর কাফির সাত পেটে আহার করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৫ | 5005 | ۵۰۰۵

পরিচ্ছদঃ ২১১৬. মু’মিন ব্যক্তি এক পেটে খায়
৫০০৫। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি প্রচুর পরিমাণে আহার করতো। লোকটি মুসলমান হলে স্বল্পাহার করতে লাগলো। ব্যাপারটি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উল্লেখ করা হলে তিনি বলেনঃ মুমিন এক পেটে আহার করে, আর কাফির আহার করে সাত পেটে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৬ | 5006 | ۵۰۰٦

পরিচ্ছদঃ ২১১৭. হেলান দিয়ে আহার করা
৫০০৬। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি হেলান দিয়ে আহার করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৭ | 5007 | ۵۰۰۷

পরিচ্ছদঃ ২১১৭. হেলান দিয়ে আহার করা
৫০০৭। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে ছিলাম। তিনি তাঁর কাছে উপবিষ্ট এক ব্যাক্তিকে বলেনঃ হেলান দেওয়া অবস্থায় আমি আহার করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৮ | 5008 | ۵۰۰۸

পরিচ্ছদঃ ২১১৮. ভুনা গোশত সম্বন্ধে। আল্লাহ তা’আলার ইরশাদ: সে এক কাবার করা গো- বৎস নিয়ে আসলো
৫০০৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … খলিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ভুনা দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) আনা হলে তিনি তা খাওয়ার উদেশ্যে হাত বাড়ালেন। তখন তাকে বলা হলঃ এটাতো দব্ব এতে তিনি হাত গুটিয়ে নিলেন। খালিদ (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ এটা কি হারাম? তিনি বললেনঃ না। যেহেতু এটা আমাদের এলাকায় নেই তাই আমি এটা খাওয়া পছন্দ করি না। তারপর খালিদ (রাঃ) তা খেতে থাকেন, আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখছিলেন।

মালিক ইবনু শিহাব সুত্রে ضَبٍّ مَشْوِيٍّ এর স্থলে ضَبٍّ مَحْنُوذٍ বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০০৯ | 5009 | ۵۰۰۹

পরিচ্ছদঃ ২১১৯. খাযীরা সম্পর্কে। নযর বলেছেন: খাযীরা ময়দা দিয়ে এবং হারীরা দুধ দিয়ে তৈরী করা হয়
৫০০৯। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ইতবান ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ছিলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বদর যুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী আনসার সাহাবীদের একজন। একবার তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছে। আমি আমার গোত্রের লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করি। কিন্তু বৃষ্টি হলে আমার ও তাদের মধ্যকার উপত্যকায় পানি প্রবাহিত হয়। তখন আমি তাদের মসজিদে আসতে পারি না যে তাদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করব। তাই, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার আকাঙ্ক্ষা আপনি এসে যদি আমার ঘরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। তাহলে আমি সে স্থানে সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য নির্ধারন করে নিতাম। তিনি বললেনঃ ইনশাআল্লাহ আমি অচিরেই তা করবো।

ইতবান (রাঃ) বলেন পুরোভাবে সূর্য কিছু উপরে উঠলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) আসলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুমতি চাইলেন। আমি তাকে অনুমতি দিলাম। তিনি না বসেই তৎক্ষনাৎ ঘরে প্রবেশ করে আমাকে বললেনঃ তোমার ঘরের কোন স্থানে আমার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা তোমার পছন্দ? আমি ঘরের এক দিকে ইঙ্গিত করলাম। তিনি সেখানে দাঁড়িয়ে তাকবীর বললেন। আমরা কাতার ধরলাম। তিনি দু’রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে সালাম ফিরালেন।

আমরা যে খাযীরা তৈরী করেছিলাম তা খাওয়ার জন্য তাকে বললাম। তার মহল্লার বহু সংখ্যক লোক ঘরে প্রবেশ করতে লাগল। তারপর তারা সমবতে হলে তাদের একজন বললোঃ মালিক ইবনু দুখশান কোখায়? অন্য একজন বললোঃ সে মুনাফিক? অন্য একজন বললোঃ সে মুনাফিক সে আল্লাহ ও তার রাসুলকে ভালবাসে না।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এমন কথা বলোনা। তুমি কি জানো না, সে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য লা-ইলাহা ইলাল্লাহ পড়েছে? লোকটি বললোঃ আল্লাহ ও তার রাসুল-ই ভাল জানেন। সে পূনরায় বললোঃ কিন্তু আমরা যে মুনাফিকদের সাথে তার সম্পর্ক ও তাদের প্রতি শুভ কামনা দেখতে পাই? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তো জাহান্নামকে ঐ ব্যাক্তির জন্য হারাম করে দিয়েছেন যে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করলো। ইবনু শিহাব বলেনঃ এরপর আমি হুসায়ন ইবনু মুহাম্মদ আনসারী যিনি ছিলেন বানূ সালিমের একজন নেতৃস্থানীয় লোক তাকে মাহমুদের এ হাদীসের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি এর সত্যতা স্বীকার করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১০ | 5010 | ۵۰۱۰

পরিচ্ছদঃ ২১২০. পনির প্রসঙ্গে। হুমায়ন (র) বলেন, আমি আনাস (রা) কে বলতে শুনেছি, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) সাফিয়্যার সাথে বাসর যাপন করলেন। তারপর তিনি (দস্তরখানে) খেজুর, পনির এবং ঘি রাখলেন। আমর ইবন আবূ আমর আনাস (রা) থেকে বর্ণনা করেন: রাসূলুল্লাহ (সাঃ) (উক্ত তিনি বস্তুর সংযোগে) “হায়স” তৈরী করেন।
৫০১০। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার খালা একটি দব্ব (অনেকটা গুইসাপের মত দেখতে) কিছু পনির এবং দুধ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হাদিয়া দিলেন এবং দস্তরখানে দব্ব রাখা হয়। যদি তা হারাম হতো তাঁর দস্তরখানে রাখা হতো না। তিনি (শুধু) দুধ পান করলেন এবং পনির খেলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১১ | 5011 | ۵۰۱۱

পরিচ্ছদঃ ২১২১. সিলক ও যব প্রসঙ্গে
৫০১১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জুমআর দিন আসলে আমরা অত্যাধিক খুশী হতাম। এক বৃদ্ধা আমাদের জন্য সিলক (মূলা জাতীয় এক প্রকার সুস্বাদু সবজি) এর মূল তুলে তা তার ডেগে চড়িয়ে দিতেন। তারপর এতে সামান্য কিছু যব ছেড়ে দিতেন। সালাত (নামায/নামাজ) এর পর আমরা তাঁর সাথে দেখা করতে গেলে তিনি এ খাবার আমাদের পরিবেশন করতেন। এ কারণেই জুমুআর দিন আসলে আমরা খুব খুশী হতাম। আমরা সকালের আহার এবং বিশ্রাম গ্রহণ করতাম না জুমুআর পর ছাড়া। আল্লাহর কসম! সে খাদ্যে কোন চর্বি বা চিকনাই থাকতো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১২ | 5012 | ۵۰۱۲

পরিচ্ছদঃ ২১২২. গোশত দাঁত দিয়ে ছিড়ে এবং তুলে নিয়ে খাওয়া
৫০১২। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওহহাব (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি স্কন্ধের গোশত দাঁত দিয়ে ছিড়ে খেলেন। তারপর তিনি উঠে গিয়ে (নতুনভাবে) উযূ (ওজু/অজু/অযু) না করেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।

অন্য সনদে আইমার ও আসিম (রহঃ) ই-করামার সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন। তিনি বলেছেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডেগ থেকে একটি গোশত যুক্ত হাড় বের করে তা খেলেন। তারপর (নতুন) উযূ (ওজু/অজু/অযু) না করেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৩ | 5013 | ۵۰۱۳

পরিচ্ছদঃ ২১২৩. বাহুর গোশত খাওয়া
৫০১৩। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মক্কা অভিমুখে রওয়ানা হলাম। অন্য সনদে আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি মক্কার পথে কোন এক মনযিলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কিছু সংখ্যক সাহাবীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সামন্যই অবস্থান করছিলেন। আমি ছাড়া দলের সকলেই ছিলেন ইহরাম অবস্থায়। আমি আমার জুতা সেলাই এ করছিলাম। এমতাবস্থায় তারা একটি বন্য গাধা দেখতে পেল। কিন্তু আমাকে জানালো না। তবে তারা আশা করছিল, যদি আমি ওটা দেখতাম! তারপর আমি চোখ ফেরাতেই ওটা দেখে ফেরালাম। এরপর আমি ঘোড়ার কাছে গিয়ে তার জ্বীন লাগিয়ে তার উপর আরোহন করলাম। কিন্তু চাকু ও বর্শার কথা ভুলে গেলাম। কাজেই আমি তাদের বললাম, চাকু ও বর্শাটি আমাকে তুলে দাও। তারা বললোঃ না, আল্লাহর কসম! এ ব্যাপারে তোমাকে আমরা কিছুই সাহায্য করবো না।

এতে আমি ক্রুদ্ধ হলাম এবং নীচে পৌছে ওদুটি নিয়ে পুনরায় সাওয়ার হলাম। তারপর আমি গাধাটির পেছনে দ্রুত ধাওয়া করে তাকে ঘায়েল করে ফেললাম। তখন সেটি মরে গেল এবং আমি তা নিয়ে এলাম। (পাকানোর পর) তারা সকলে এটা খাওয়া শুরু করলো। তারপর ইহরাম অবস্থায় এটা খাওয়া নিয়ে তারা সন্দেহে পড়লো। আমি সমস্যার দিকে রওনা দিলাম এবং এর একটি বাহু লুকিয়ে রাখলাম। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম এবং তাকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ তোমাদের কাছে এর কিছু আছে? একথা শুনে আমি বাহুটি তাঁর সামনে পেশ করলাম। তিনি মুহরিম অবস্থায় তা খেলেন, এমন কি এর হাঁড়ের সাথে জড়িত গোশতোও দাঁত দিয়ে ছিড়ে ছিড়ে খেলেন। ইবনু জাফর বলেছেনঃ যায়দ ইবনু আসলাম (রহঃ) আতা ইবনু ইয়াসার এর সূত্রে আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৪ | 5014 | ۵۰۱٤

পরিচ্ছদঃ ২১২৪. চাকু দিয়ে গোশত কাটা
৫০১৪। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আমর ইবনু উমাইয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে (পাকানো) বকরীর কাঁধের গোশত নিজ হাতে খেতে দেথেকে। সালাত (নামায/নামাজ) এর জন্য তাকে আহবান করা হলে তিনি তা এবং যে চাকু দিয়ে কাটছিলেন সেটিও রেখে দেন। এর পর উঠে গিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। অথচ তিনি (নতুন করে) উযূ (ওজু/অজু/অযু) করেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৫ | 5015 | ۵۰۱۵

পরিচ্ছদঃ ২১২৫. নবী (সাঃ) কখনো কোন খাবারের দোষ-ত্রুটি ধরতেন না
৫০১৫। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো কোন খাবারের দোষ-ক্রটি প্রকাশ করেন নি। ভাল লাগলে তিনি খেয়েছেন এবং খারাপ লাগলে তা রেখে দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৬ | 5016 | ۵۰۱٦

পরিচ্ছদঃ ২১২৬. যবের আটায় ফুঁক দেওয়া
৫০১৬। সাঈদ ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … আবূ হামিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি সাহল (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আপনারা কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে ময়দা দেথেছেন? তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ আপনারা কি যবের আটা চালনিতে চালতেন? তিনি বললেনঃ না। বরং আমরা তাতে ফুঁক দিতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৭ | 5017 | ۵۰۱۷

পরিচ্ছদঃ ২১২৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ যা খেতেন
৫০১৭। আবূ নুমান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন তাঁর সাহাবীদের মধ্যে কিছু খেজুর ভাগ করে দিলেন। তিনি প্রত্যেককে সাতটি করে খেজুর দিলেন। আমাকেও সাতটি খেজুর দিলেন। তার মধ্যে একটি খেজুর ছিল খারাপ। তবে সাতটি খেজুরের মধ্যে এটই আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয় ছিল। কারণ এটি চিরতে আমার কাছে খুব শক্ত ঠেকছিল। (তাই এটি দীর্ঘ সময় আমার মুখে ছিল।)

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৮ | 5018 | ۵۰۱۸

পরিচ্ছদঃ ২১২৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ যা খেতেন
৫০১৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি ছিলাম নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের মধ্যে (যারা ইসলাম গ্রহণ করেছিল) সপ্তম। হুবলা (কাটা যুক্ত গাছ) বা হাবলা (এক জাতীয় গাছ) ছাড়া আমাদের খাওয়ার অ্যর কিছু ছিল না। এমনকি আমাদের কেউ কেউ বকরীর ন্যায় মলত্যাগ করতো।। এরপরও বনূ আসাদ আমাকে ইসলামের ব্যাপারে তিরস্কার করছে? তাহলে তো আমি একদম ক্ষতিগ্রস্থ এবং আমার সমস্ত পরিশ্রমই বৃথা।

হাদিস নম্বরঃ ৫০১৯ | 5019 | ۵۰۱۹

পরিচ্ছদঃ ২১২৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ যা খেতেন
৫০১৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হাযিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সাহল (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি ময়দা খেয়েছেন? সাহল (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহ তাআলা যখন খেতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পাঠিয়েছেন তখন থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত তিনি ময়দা দেখেন নি। আমি পুনরায় তাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে কি আপনাদের চালুনি ছিল? তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পাঠানোর পর থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত তিনি চালুনিও দেখেন নি। আবূ হাযিম বলেন আমি বললামঃ তাহলে আপনারা চালা ব্যতীত যবের আটা কিভাবে খেতেন? তিনি বললেনঃ আমরা যব পিশে তাতে ঘাক দিতাম। এতে যা উড়ে যাওয়ার তা উড়ে যেত, আর যা অবশিষ্ট থাকতো তা মুখে নিতাম এরপর তা খেতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২০ | 5020 | ۵۰۲۰

পরিচ্ছদঃ ২১২৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ যা খেতেন
৫০২০। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এক দল লোকের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন যাদের সামনে ছিল একটি ভুনা বকরী। তারা তাকে (খেতে) ডাকল। তিনি খেতে অস্বীকার করলেন এবং বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন অথচ তিনি কোন দিন যবের রুটিও পেট পুরে খান নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২১ | 5021 | ۵۰۲۱

পরিচ্ছদঃ ২১২৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ যা খেতেন
৫০২১। আবদুল্লাহ ইবনু আবূল আসওয়াদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো “খিওয়ান” (টেবিল জাতীয় উচু স্থানে) এর উপর খাবার রেখে আহার করেননি এবং ছোট ছোট বাটীতেও আহার করেননি। আর তার জন্য কখনো পাতলা রুটি তৈরি করা হয়নি। ইউনুস বলেন, আমি কাতাদাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ তা হলে তারা কিসের উপর আহার করতেন? তিনি বললেনঃ দন্তরখানের উপর।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২২ | 5022 | ۵۰۲۲

পরিচ্ছদঃ ২১২৭. রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণ যা খেতেন
৫০২২। কুতায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আসার পর থেকে ইন্তেকাল পর্যন্ত তার পরিবারের লোকেরা একাধারে তিন রাত গমের রুটি পেটভরে খাননি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৩ | 5023 | ۵۰۲۳

পরিচ্ছদঃ ২১২৮. “তালবীনা” প্রসঙ্গে
৫০২৩। ইয়াইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে তার পরিবারের কোন ব্যাক্তি মারা গেলে মহিলারা এসে সমবেত হলো। তারপর তার আত্মীয়রা ও বিশেষ ঘনিষ্ঠ মহিলারা ছাড়া বাকী সবাই চলে গেলে, তিনি ডেগে তালবীনা (আটা, মধু ইত্যাদি সংযোগে তৈরি খাবার) পাকাতে-নির্দেশ দিলেন। তা পাকানো হল। এরপর সারীদ (গোশতের মধ্যে রুটি টুকরো করে দিয়ে তৈরী খাবার) প্রন্তুত করা হলো এবং তাতে তালবীনা ঢালা হলো। তিনি বললেনঃ তোমরা এ থেকে খাও। কেননা, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, তালবীনা রুগ্ন ব্যাক্তির চিত্তে প্রশান্তি এনে দেয় এবং শোক দুঃখ কিছুটা লাঘব করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৪ | 5024 | ۵۰۲٤

পরিচ্ছদঃ ২১২৯. সারীদ প্রসঙ্গে
৫০২৪। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পুরুষদের মধ্যে অনেকেই কামালিয়াত অর্জন করেছে। কিন্তু স্ত্রীলোকদের মধ্যে ইমরান তনয়া মারইয়াম এবং ফিরাউন পত্নী আসিয়া ব্যতীত অন্য কেউ কামালিয়াত অর্জন করতে পারেনি। স্ত্রী লোকদের মধ্যে আয়িশার মর্যাদাও তেমন, খাদ্যের মধ্যে সারীদের মর্যাদা যেমন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৫ | 5025 | ۵۰۲۵

পরিচ্ছদঃ ২১২৯. সারীদ প্রসঙ্গে
৫০২৫। আমর ইবনু আওন (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সমস্ত স্ত্রীলোকদের মধ্যে আয়িশার মর্যাদা তেমন, খাদ্যের মধ্যে সারীদের মর্যাদা যেমন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৬ | 5026 | ۵۰۲٦

পরিচ্ছদঃ ২১২৯. সারীদ প্রসঙ্গে
৫০২৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুনীর (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে তার এক দর্জি গোলামের বাড়ীতে গেলাম। সে তার সামনে সারীদের পেয়ালা উপস্থিত করলো এবং নিজের কাজে লিপ্ত হল। আনাস (রাঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কদু বেড়ে নিতে শুরু করলে আমি কদুর টুকরাগুলো বেছে বেছে তার সামনে দিতে লাগলাম এবং এরপর থেকে আমি কদু পছন্দ করতে শুরু করি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৭ | 5027 | ۵۰۲۷

পরিচ্ছদঃ ২১৩০. ভূনা বক্‌রী এবং স্কন্ধ ও পার্শ্বদেশ
৫০২৭। হুদবা ইবনু খালিদ (রহঃ) … কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আনাস ইবনু মালিকের কাছে গেলাম। তার বাবুর্চি সেখানে দাঁড়ানো ছিল। তিনি বললেনঃ আহার কর! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত পাতলা রুটি দেখেছেন বলে আমি জানি না এবং তিনি পশম দুরীকৃত ভুনা বকরী কখনও চোখে দেখেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৮ | 5028 | ۵۰۲۸

পরিচ্ছদঃ ২১৩০. ভূনা বক্‌রী এবং স্কন্ধ ও পার্শ্বদেশ
৫০২৮। মুহাম্মাদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আমর ইবনু উমাইয়্যা যামরী তাঁর পিতা থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বকরীর স্কন্ধ থেকে গোশত কাটতে দেখেছি। তিনি তা থেকে আহার করলেন। তারপর যখন সালাত (নামায/নামাজ)-এর দিকে আহবান করা হলো তখন তিনি উঠলেন এবং রুটি রেখে দিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। অথচ তিনি (নতুন করে) উযূ (ওজু/অজু/অযু) করেন নি।)

হাদিস নম্বরঃ ৫০২৯ | 5029 | ۵۰۲۹

পরিচ্ছদঃ ২১৩১. পূর্ববর্তী মনীষীগণ তাঁদের বাড়ীতে ও সফরে গোশত এবং অন্যান্য যেসব খাদ্য সঞ্চিত রাখতেন। আবূ বকর তনয়া “আয়েশা ও আসমা (রা) বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) ও আবূ বকরের জন্য (মদীনায় হিজরতের সময়) পথের খাবার প্রস্তুত করে দিয়েছিলাম।
৫০২৯। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবিস (রহঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন আমি আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলামঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি কুরবানীর পোশত তিন দিনের বেশী সময় খেতে নিষেধ করেছেন? তিনি বললেনঃ সেই বছরেই কেবল নিষেধ করেছিলেন যেই বছর মানুষ অনাহারে আক্রান্ত হয়েছিল। তখন তিনি চেয়েছিলেন যেন ধনীরা গরীবদের খাওয়ায়। আমরা তো বকরীর পায়াশুলো তুলে রাখতাম এবং পনের দিন পর তা খেতাম। তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলঃ কি সে আপনাদের এগুলো খেতে বাধ্য করত? তিনি হেসে বললেনঃ মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সঙ্গে মিলিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাঁর পবিবার পরিজন একাধারে তিন দিন তরকারীসহ গমের রুটি পেট ভরে খান নি। অন্য সনদে ইবনু কাসীর বলেছেনঃ সুফিয়ান (রহঃ) আবদুর রহমান ইবনু আবিস সুত্রে উক্ত হাদীসটি আমার কাছে বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩০ | 5030 | ۵۰۳۰

পরিচ্ছদঃ ২১৩১. পূর্ববর্তী মনীষীগণ তাঁদের বাড়ীতে ও সফরে গোশত এবং অন্যান্য যেসব খাদ্য সঞ্চিত রাখতেন। আবূ বকর তনয়া “আয়েশা ও আসমা (রা) বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) ও আবূ বকরের জন্য (মদীনায় হিজরতের সময়) পথের খাবার প্রস্তুত করে দিয়েছিলাম।
৫০৩০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমরা কুরবানীর গোশত মদিনা পর্যন্ত সফরের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতাম। মুহাম্মদ (রহঃ) ইবনু উয়ায়না থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ইবনু জুরায়য বলেন, আমি আতাকে জিজ্ঞাসা করলামঃ জাবির (রাঃ) কি এ কথা শুনেছেন যে, এমন কি আমরা মদিনা পর্যন্ত এলাম। তিনি বললেনঃ না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩১ | 5031 | ۵۰۳۱

পরিচ্ছদঃ ২১৩২. হায়স প্রসঙ্গে
৫০৩১। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ তালহাকে বললেনঃ তোমাদের লোকদের মধ্য থেকে একটি ছেলে খুজে আন, যে আমার খিদমত করবে। আবূ তালহা আমাকেই তাঁর সাওয়ারীর পেছনে বসিয়ে নিয়ে আসলেন। তাই আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমত করতে থাকলাম। যখনই তিনি কোন মনযিলে অবতরণ করতেন আমি তাকে প্রায়ই বলতে শুনতাম, আয় আল্লাহ! আমি তোমার কাছে, অস্বস্থি দুশ্চিন্তা, অক্ষমতা, অলসতা, কৃপণতা, ভীরুতা, ঋনের ভার এবং মানুষের আধিপত্য থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর আমি সর্বদা তার খিদমতে নিয়োজিত ছিলাম। এমতাবস্থায় আমরা খায়বার থেকে প্রত্যাবর্তন করলাম। তিনি (রাসুল) গনীমত হিসাবে প্রাপ্ত সফিয়্যা বিনত হুয়ায়কে সঙ্গে নিয়ে ফিরলেন।

আমি লক্ষ্য করলাম, তিনি তার সাওয়ারীর পেছনের দিকে তার আবা বা চাদর দিয়ে ঘিরে সেখানে তার পিছনে তাকে সাওয়ার করলেন। এভাবে যখন আমরা সাহবা নামক স্থানে উপস্থিত হই, তখন তিনি চামড়ার দস্তরখানে হায়স তৈরী করলেন। তারপর তিনি আমাকে পাঠালেন। আমি লোকজনকে দাওয়াত করলাম। (তারা এসে) আহার করলো। এই ছিল তার সঙ্গে তার বাসর যাপন। তারপর তিনি এগিয়ে চললেন। ওহোদ পাহাড় দৃষ্টিগোচর হলে তিনি বললেনঃ এ পাহাড়টি আমাদের ভালবাসে এবং আমরাও তাকে ভালবাসি। তারপর যখন মদিনা তার দৃষ্টিগোচর হল, তখন তিনি বললেনঃ আয় আল্লাহ! আমি এর দু পাহাড়ের মধ্যবর্তী এলাকাকে হরম (সম্মানিত) বলে ঘোষণা করছি, যেভাবে ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) মক্কাকে হরম (সম্মানিত) বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। ইয়া আল্লাহ! এর অধিবাসীদের মুদ ও সা (দুটি মাপ যন্ত্র) এর মধ্যে তুমি বরকত দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩২ | 5032 | ۵۰۳۲

পরিচ্ছদঃ ২১৩৩. রৌপ্য খচিত পাত্রে আহার করা
৫০৩২। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার তারা হুযায়ফা (রাঃ) এর কাছে উপস্থিত ছিলেন। তিনি পানি পান করতে চাইলে এক অগ্নি উপাসক তাকে পানি এনে দিল। সে যখনই পাত্রটি তার হাতে রাখলো, তিনি সেটা ছুড়ে মারলেন এবং বললেন, আমি যদি একবার বা দু’বারের অধিক তাকে নিষেধ না করতাম, তাহলেও হতো। অর্থাৎ তিনি যেন বলতে চান, তা হলেও আমি এরুপ করতাম না। কিন্তু আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা রেশম বা রেশম জাত কাপড় পরিধান করো না এবং সোনা ও রুপার পাত্রে পান করো না এবং এগুলোর বাসনে আহার করো না। কেননা তিনি এগুলো কাফিরদের জন্য আর পরকালে তোমাদের জন্য।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৩ | 5033 | ۵۰۳۳

পরিচ্ছদঃ ২১৩৪. খাদ্যদ্রব্যের আলোচনা
৫০৩৩। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুরআন পাঠকারী মুমিনের দৃষ্টান্ত নারাঙ্গির ন্যায়, যার ঘ্রানও উত্তম স্বাদও উত্তম। যে মুমিন কুরআন পাঠ করে না, তার দৃষ্টান্ত খেজুরের ন্যায়, যার কোন ঘ্রাণ নেই তবে এর স্বাদ আছে। আর যে মুনাফিক কুরআন পাঠ করে তার দৃটান্ত রায়হানার ন্যায় যার ঘ্রাণ আছে তবে স্বাদ ভিজা আর যে মুনাফিক কুরআন পাঠ করে না তার দৃষ্টান্ত হানযালা ফলের ন্যায়, যার সুঘ্রানও নাই, স্বাদও তিতা।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৪ | 5034 | ۵۰۳٤

পরিচ্ছদঃ ২১৩৪. খাদ্যদ্রব্যের আলোচনা
৫০৩৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সমস্ত খাদ্যের মধ্যে সারীদের, যেমন মর্যাদা রয়েছে, তেমনি নারীদের মধ্যে আয়িশার (রাঃ) মর্যাদা রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৫ | 5035 | ۵۰۳۵

পরিচ্ছদঃ ২১৩৪. খাদ্যদ্রব্যের আলোচনা
৫০৩৫। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সফর হলো আযাবের একটা টুকরা, যা তোমাদের সফরকারীকে নিদ্রা ও আহার থেকে বিরত রাখে। তাই তোমাদের কেউ যখন তার প্রয়োজন পূরণ করে তখন সে যেন অবিলম্বে তার পরিবারের কাছে ফিরে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৬ | 5036 | ۵۰۳٦

পরিচ্ছদঃ ২১৩৫. সালন প্রসঙ্গে
৫০৩৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ বারীরার ঘটনায় শরীয়তের তিনটি বিধান প্রতিষ্ঠিত হয়। আয়িশা (রাঃ) তাকে ক্রয় করে মুক্ত করতে চাইলে তার মালিকেরা ওলা, (বিক্রয় এ শর্তে করবে যে,) ওায়ালা (উররাধিকার) আমাদের থাকবে। আয়িশা (রাঃ) বিষয়টি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সন্মুক্ষে উল্লেখ করলে বললেনঃ তুমি চাইলে তাদের জন্য ওলীর শর্ত মেনে নাও। কারন, প্রকৃকতপক্ষে ওলীর অধিকার লাভ করবে মুক্তিদাতা। তাকে আযাদ করে এখতিয়ার দেওয়া হলো চাইলে পুর্ব স্বামীর সংসারে থাকতে কিংবা চাইলে তার থেকে হতে পারে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আয়িশার গৃহে প্রবেশ করলেন। যে সময় চুলার উপর (গোশতের) ডেগচি বলকাচ্ছিল। তিনি সকালের খাবার আনতে বললে তার কাছে রুটি ও ঘরের কিছু তরকারী পেশ করা হলো। তিনি বললেনঃ আমি কি গোশত দেখছি না? তারা বললেনঃ হ্যাঁ (গোশত রয়েছে) ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিন্তু তা ঐ গোশত যা বারীরাকে সদকা করা হয়েছিল। এরপর সে তা আমাদের হাদিয়া দিয়েছে। তিনি বললেনঃ এটা তার জন্য সদকা, কিন্তু আমাদের জন্য হাদিয়া।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৭ | 5037 | ۵۰۳۷

পরিচ্ছদঃ ২১৩৬. হালুয়া ও মধু
৫০৩৭। ইসহাক ইবন ইবরাহীম (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হালুয়া ও মধু পছন্দ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৮ | 5038 | ۵۰۳۸

পরিচ্ছদঃ ২১৩৬. হালুয়া ও মধু
৫০৩৮। আবদুর রহমান ইবনু শায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি উদর পূর্তির জন্যই যা পেতাম তাতে সন্তুষ্ট হয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সর্বদা লেগে থাকতাম। সে সময় রুটি খেতে পেতাম না। রেশমী কাপড় পরিধান করতাম না কোন চাকর-চাকরানাও আমার খিদমতে নিয়োজিত থাকত না। আমি পাথরের সাথে পেট লাগিয়ে রাখতাম। আয়াত জানাসত্তেও কোন ব্যাক্তিকে তা পাঠ করার জনা বলতাম যাতে সে আমাকে ঘরে নিয়ে যায় এবং আহার করায়। মিসকীনদের প্রতি অত্যন্ত দরদী ব্যাক্তি ছিলেন জাফর ইবনু আবূ তালিব (রাঃ)। তিনি আমাদের নিয়ে খেতেন এবং ঘরে যা থাকতো তাই আমাদের খাওয়াতেন। এমনকি তিনি আমাদের কাচের পাত্রটিও বের কসে আনতেন, যাতে ঘি থাকতো না। আমরা সেটাই ফেড়ে ফেলতাম এবং এর গায়ে যা লেগে থাকতো তাই চেটে খেতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৩৯ | 5039 | ۵۰۳۹

পরিচ্ছদঃ ২১৩৭. কদূ প্রসঙ্গে
৫০৩৯। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এক দর্জি গোলামের বাড়ীতে আসলেন। (আহার কালে) তাঁর সামনে কদু উপস্থিত করা হলে তিনি (বেছে বেছে) কদু খেতে লাগলেন। সে দিন থেকে আমিও কদু খেতে ভালবাসি, যেদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কদু খেতে দেখলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪০ | 5040 | ۵۰٤۰

পরিচ্ছদঃ ২১৩৮. ভাইদের জন্য আহারের ব্যবস্থা করা
৫০৪০। মুহাম্মদ ইবনু ইউসূফ (রহঃ) … আবূ মাসউদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ শুআয়ব নামক আনসার গোত্রের এক ব্যাক্তির এক কসাই গোলাম ছিল। সে তাকে বললো আমার জন্য কিছু খাবার প্রস্তুত কর, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত করতে চাই। পাঁচজনের মধ্যে তিনি হবেন একজন। তারপর সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত করল। তিনি ছিলেন পাঁচ জনের অন্যতম। তখন এক ব্যাক্তি তাদের পিছে পিছে আসতে লাগল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তো আমাকে আমাদের পাঁচ জনের পঞ্চম ব্যাক্তি হিসাবে দাওয়াত দিয়েছ। এ লোকটা আমাদের পিছে পিছে এসেছে। তুমি ইচ্ছা করলে তাকে অনুমতি দিতে পার আর ইচ্ছা করলে বাদও দিতে পার। সে বললো আমি বরং তাকে অনুমতি দিচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪১ | 5041 | ۵۰٤۱

পরিচ্ছদঃ ২১৩৯. কাউকে খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে নিজে অন্য কাজে ব্যস্ত হওয়া
৫০৪১। আবদুল্লাহ ইবনু মুনীর (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি (তখন) ছোট ছিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে চলাফেরা করতাম। একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক গোলামের কাছে গেলেন সে ছিল দর্জি। সে তার সামনে একটি পাত্র হাযির করল যাতে খাবার ছিল। আর তাতে কদুও ছিল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেছে বেছে কদু খেতে লাগলেন। এ দেখে আমি কদূর টুকরাগুলো তার সামনে জমা করতে লাগলাম। তিনি বললেনঃ গোলাম তার কাজে ব্যস্ত হল। আনাস (রাঃ) বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যেদিন এরূপ করতে দেখলাম তারপর থেকে আমিও কদু খাওয়া পছন্দ করতে লাগলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪২ | 5042 | ۵۰٤۲

পরিচ্ছদঃ ২১৪০. শুরুয়া প্রসঙ্গে
৫০৪২। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈক দর্জি কিছু খাবার প্রস্তুত করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত করলো। আমিও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সংগে গেলাম। সে যবের রুটি আর কিছু শুরুয়া, যাতে কদু ও শুকনা গোশত ছিল, পরিবেশন করল। আমি দেখলাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেয়ালার চারদিক থেকে কদু বেচে বেছে খাচ্ছেন। সে দিনের পর থেকে আমিও কদু পছন্দ করতে লাগলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৩ | 5043 | ۵۰٤۳

পরিচ্ছদঃ ২১৪১. শুকনা গোশত প্রসঙ্গে
৫০৪৩। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি দেখলাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কিছু শুরুয়া উপস্থিত করা হল, যাতে কদু ও শুকনা গোশত ছিল। আমি তাকে কদূ বেছে বেছে খেতে দেখলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৪ | 5044 | ۵۰٤٤

পরিচ্ছদঃ ২১৪১. শুকনা গোশত প্রসঙ্গে
৫০৪৪। কাবীসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর (তিন দিনের বেশী কুরবানীর গোশত রাখার) নিষেধাজ্ঞা কেবল সে বছরেরই জন্যই ছিল যে বছর লোক দুর্ভিক্ষে পড়েছিল। তিনি চেয়েছিলেন ধনীরা যেন গরীবদের খাওয়ায়। নইলে আমরা তো পরবর্তী সময় পায়াগুলো পনের দিন রেখে দিতাম। মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরিবার উপর্যপরি তিন দিন পর্যন্ত সালন-সহ যবের রুটি পেট ভরে খাননি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৫ | 5045 | ۵۰٤۵

পরিচ্ছদঃ ২১৪২. একই দস্তরখানে সাথীকে কিছু এগিয়ে দেওয়া বা তার কাছ থেকে কিছু নেওয়া। ইব্‌ন মুবারক বলেনঃ একজন অপরজনকে কিছু দেওয়ায় কোন দোষ নেই। তবে এক দস্তরখান থেকে অন্য দস্তরখানে দিবে না
৫০৪৫। ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একজন দর্জি কিছু খাবার রান্না করে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দাওয়াত করল। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি সে দাওয়াতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে গেলাম। লোকটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে যবের রুটি এবং কিছু শুরুয়া, যাতে কদু ও শুকনা গোশত ছিল, পেশ করল। আনাস (রাঃ) বলেন আমি দেখলাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পেয়ালার চারপাশ থেকে কদু খুঁজে খাচ্ছেন। সেদিন থেকে আমি কদু ভালবাসতে লাগলাম। সুলামা (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেনঃ আমি কদুর টুকরাগুলো তাঁর সামনে একত্রিত করে দিতে লাগলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৬ | 5046 | ۵۰٤٦

পরিচ্ছদঃ ২১৪৩. তাজা খেজুর ও কাঁকুড় প্রসঙ্গে
৫০৪৬। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু জা’ফর ইবন আবূ তালিব থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাজা খেজুর কাঁকুড়ের সাথে মিশিয়ে খেতে দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৭ | 5047 | ۵۰٤۷

পরিচ্ছদঃ ২১৪৪. রদ্দি খেজুর প্রসঙ্গে
৫০৪৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ উসমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একবার আমি সাত দিন পর্যন্ত আবূ হুরায়রার মেহমান ছিলাম। (আমি লক্ষ্য করলাম) তিনি, তার স্ত্রী ও খাদেম পালাক্রমে রাতকে তিনভাগে বিভক্ত করে নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে একজন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে আরেক জনকে জাগিয়ে দিলেন। আর আমি তাকে এ কথাও বলতে শুনেছি যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গীদের মাঝে কিছু খেজুর বন্টন করলেন। আমি ভাগে সাতটি পেলাম, তার মধ্যে একটি ছিল রদ্দি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৮ | 5048 | ۵۰٤۸

পরিচ্ছদঃ ২১৪৪. রদ্দি খেজুর প্রসঙ্গে
৫০৪৮। মুহাম্মদ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে কিছু খেজুর বণ্টন করলেন। আমি ভাগে পেলাম পাঁচটি। চারটি খেজুর (উৎকৃষ্ট) আর একটি রদ্দি। এই রদ্দি খেজুরটই আমার দাতে খুব শক্তবোধ হল।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৪৯ | 5049 | ۵۰٤۹

পরিচ্ছদঃ ২১৪৫. তাজা ও শুকনা খেজুর প্রসঙ্গে। আর মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ তুমি তোমার দিকে খেজুন বৃক্ষের কান্ডে নাড়া দাও, তা তোমার জন্য সুপক্ক তাজা খেজুর ঝরাবে। মুহাম্মদ ইবন ইউসুফ (র)… আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) ইন্তিকাল করেন, তখন আমরা দুই কালো বস্তু দ্বারা পরিতৃপ্ত হতাম- খেজুর এবং পানি দ্বারা।
৫০৪৯। সাঈদ ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদিনায় এক ইয়াহুদী ছিল। সে আমাকে কর্জ দিত, আমার খেজুর পাড়ার মিয়াদ পর্যন্ত। রামা নামক স্থানের পথের ধারে জাবির (রাঃ) এর এক খন্ড জমি ছিল। আমি কর্জ পরিশোধে এক বছর বিলম্ব করলাম। এরপর খেজুর পাড়ার মৌসুমে ইয়াহুদী আমার কাছে আসলো, আমি তখনো খেজুর পাড়তে পারিনি। আমি তার কাছে আগামী বছর পর্যন্ত অবকাশ চাইলাম। সে অস্বীকার করছেন। এ খবর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানোান হলো। তিনি সাহাবীদের বললেনঃ চলো জাবিরের জন্য ইয়াহুদী থেকে অবকাশ নেই। তারপর তারা আমার বাগানে আসলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইয়াহুদীর সাথে এ নিয়ে কথাবার্তা বললেন। সে বললোঃ হে আবূল কাসিম। আমি তাকে আর অবকাশ দেব না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এ কথা শুনে উঠলেন এবং বাগানটি প্রদক্ষিন করে তার কাছে এসে আবার আলাপ করলেন। সে এবারও অস্বীকার করল।

এরপর আমি উঠে পিঠে সামান্য কিছু তাজা খেজুর নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে রাখলাম। তিনি কিছু খেলেন। তারপর বললেনঃ হে জাবির! তোমার ছাপড়াটা কোথায়? আমি তাকে জানিয়ে দিলাম। তিনি বললেনঃ সেখানে আমার জন্য বিছানা দাও। আমি বিছানা বিছিয়ে দিলে তিনি এতে ঢুকে ঘুমিয়ে পড়লেন। ঘুম থেকে জাগ্রত হলে আমি তার কাছে আরেক মুষ্টি খেজুর নিয়ে আসলাম। তিনি তা থেকে খেলেন। তারপর উঠে আবার ইয়াহুদীর সাথে কথা বললেন। সে অস্বীকার করলো। তখন তিনি দ্বিতীয়বার খেজুর বাগানে গেলেন এবং বললেনঃ হে জাবির তুমি খেজুর কাটতে থাক এবং কর্জ পরিশেধি কর। এই বলে, তিনি খেজুর পাড়ার স্থানে বললেনঃ আমি খেজুর পেড়ে ইয়াহুদীর পাওনা শোধ করলাম। এরপর আরও সে পরিমাণ খেজুর উদ্বৃত্ত রইল। আমি বেরিয়ে এসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ সুসংবাদ দিলাম। তিনি বললেনঃ তুমি সাক্ষ্য থাক যে, আমি আল্লাহর রাসুল।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫০ | 5050 | ۵۰۵۰

পরিচ্ছদঃ ২১৪৬. খেজুর গাছের মাথী খাওয়া প্রসঙ্গে
৫০৫০। উমর ইবনু হাফস ইবনু গিয়াস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একদা আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। এমন সময় তাঁর কাছে কিছু খেজুর বৃক্ষের মাথী আনা হল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এমন একটি বৃক্ষ আছে যার বরকত মুসলমানের বরকতের ন্যায়। আমি ভাবলাম তিনি খেজুর বৃক্ষ উদ্দেশ্য করেছেন। আমি বলতে চাইলাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! সেটি কি খেজুর বৃক্ষ? কিন্তু এদিক ওদিক তাকিয়ে দেখলাম আমি উপস্থিত দশ জনের দশম ব্যাক্তি এবং সকলের ছোট, তাই আমি চুপ রইলাম। পরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সেটা খেজুর গাছ।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫১ | 5051 | ۵۰۵۱

পরিচ্ছদঃ ২১৪৭. আজওয়া খেজুর প্রসঙ্গে
৫০৫১। জুম্‌আ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) তার পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি প্রত্যহ সকালে সাতটি আজওয়া (উৎকৃষ্ট) খেজুর খাবে, সেদিন তাকে কোন বিষ ও যাদু ক্ষতি করবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫২ | 5052 | ۵۰۵۲

পরিচ্ছদঃ ২১৪৮. একসঙ্গে মিলিয়ে একাধিক খেজুর খাওয়া
৫০৫২। আদম (রহঃ) … জাবাল ইবনু সুহায়ম (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, ইবনু যুবায়র এর আমলে আমাদের উপর দুর্ভিক্ষ পতিত হল। তখন তিনি খাদ্য হিসাবে আমাদের কিছু খেজুর দিলেন। আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) আমাদের নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। সে সময় আমরা খাচ্ছিলাম। তিনি বললেনঃ একত্রে একাধিক খেজুর খেয়ো না। কেননা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একত্রে একাধিক খেজুর খেতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, তবে কেউ যদি তার ভাইকে অনুমতি দেয় তাহলে এতে কোন দোষ নেই। শুবা বলেন, অনুমতির বিষয়টি ইবনু উমরের নিজের কথা।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৩ | 5053 | ۵۰۵۳

পরিচ্ছদঃ ২১৪৯. কাঁকুড় প্রসঙ্গে
৫০৫৩। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু জাফর (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কাকুড় (ক্ষীরা বা শসা জাতীয় ফল) এর সাথে খেজুর খেতে দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৪ | 5054 | ۵۰۵٤

পরিচ্ছদঃ ২১৫০. খেজুর বৃক্ষের বরকত
৫০৫৪। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, বৃক্ষসমূহের মধ্যে একটি বৃক্ষ আছে, যা (বরকত ও উপকারিতায়) মুসলমানের সদৃশ আর তা হলো- খেজুর গাছ।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৫ | 5055 | ۵۰۵۵

পরিচ্ছদঃ ২১৫১. একই সঙ্গে দু’রকম খাদ্য বা সু-স্বাদের খাদ্য খাওয়া
৫০৫৫। ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু জাফর (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কাঁকুড়ের সাথে খেজুর খেতে দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৬ | 5056 | ۵۰۵٦

পরিচ্ছদঃ ২১৫২. দশজন দশজন করে মেহমান ভিতরে ডাকা এবং দশজন দশজন করে আহারে বসা
৫০৫৬। সালত ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার মা উম্মে সুলায়ম (রাঃ) এক মুদ যব নিয়ে তা পিষলেন এবং এ দিয়ে ‘খতীফা’ (দুধ ও আটা মিশ্রিত) তৈরী করলেন এবং ঘি এর পাত্র নিংড়িয়ে দিলেন। তারপর তিনি আমাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পাঠালেন। তিনি সাহাবাদের মাঝে ছিলেন। এ সময় আমি তার কাছে এসে তাকে দাওয়াত করলাম। তিনি বললেনঃ আমার সঙ্গে যারা আছে? আমি বাড়ীতে এসে বললাম। সে জিজ্ঞেস করছেন আমার সঙ্গে যারা আছে? তারপর আবূ তালহা (রাঃ) তার কাছে গিয়ে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এতো অতি সামান্য খাবার যা উম্মে সুলায়ম তৈরী করেছে। এরপর তিনি আসলেন। তার কাছে সেগুলো আনা হল। তিনি বললেনঃ দশ জনকে আমার কাছে প্রবেশ করতে দাও। তারা এসে তৃপ্তি সহকারে খেলেন। তিনি পুনরায় বললেনঃ আরো দশজনকে আমার কাছে প্রবেশ করতে দাও। তারা এসে পরিতৃপ্ত হয়ে খেলেন। তিনি আবার বলেনঃ আরো দশজনকে আমার কাছে আসতে দাও। এভাবে তিনি শেষ সংখ্যা পর্যন্ত উল্লেখ করলেন। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেলেন এবং চলে গেলেন। আমি দেখতে লাগলাম, তা থেকে কিছু কমেছে কিনা? অর্থাৎ কিছুমাত্র কমেনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৭ | 5057 | ۵۰۵۷

পরিচ্ছদঃ ২১৫৩. রসূন ও (দুর্গন্ধ যুক্ত) তরকারী মাকরূহ হওয়া প্রসঙ্গে। এ ব্যাপারে ইব্‌ন উমার (রা) থেকে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) এর হাদীস বর্ণিত হয়েছে
৫০৫৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদূল আযীয (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করা হল আপনি রসুনের ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছ থেকে কী শুনেছেন? তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি তা খাবে সে যেন আমাদের মসজিদের কাছেও না আসে (এ উক্তি)।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৮ | 5058 | ۵۰۵۸

পরিচ্ছদঃ ২১৫৩. রসূন ও (দুর্গন্ধ যুক্ত) তরকারী মাকরূহ হওয়া প্রসঙ্গে। এ ব্যাপারে ইব্‌ন উমার (রা) থেকে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) এর হাদীস বর্ণিত হয়েছে
৫০৫৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) মনে করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি রসূন বা পেঁয়াজ খাবে সে যেন আমাদের থেকে দুরে থাকে। অথবা তিনি বলেছেনঃ সে যেন আমাদের মসজিদ থেকে দুরে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৫৯ | 5059 | ۵۰۵۹

পরিচ্ছদঃ ২১৫৪. কাবাছ-পিলু গাছের পাতা প্রসঙ্গে
৫০৫৯। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা মক্কার যাহরান নামক স্থানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম এবং পিলু ফল পাড়ছিলাম। তিনি বললেনঃ কালোটা নিও। কেননা, সেটা সুস্বাদু। তাকে জিজ্ঞাসা করা হলোঃ আপনি কি বকরী চরিয়েছেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। এমন নাবী নেই যিনি বকরী চরান নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬০ | 5060 | ۵۰٦۰

পরিচ্ছদঃ ২১৫৫. আহারের পর কুলি করা
৫০৬০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সুওয়ায়দ ইবনু নূমান (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে খায়বার অভিযানে রওয়ানা হলাম। সাহবা নামক স্থানে পৌছলে তিনি খাবার আনতে বললেন। কিন্তু ছাতু ছাড়া আর কিছু আনা হল না। আমরা তা-ই খেলাম। তারপর সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য উঠে কুলি করলেন। আমরাও কুলি করলাম। ইয়াহইয়া বলেনঃ আমি বুশায়রকে সুওয়ায়েদ সুত্রে বর্ণনা করতে শুনেছি যে, আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে খায়বরের দিকে রওয়ানা হলাম। আমরা যখন সাহবা নামক স্থানে পৌহুলাম, ইয়াহইয়া বলেন, এ স্থানটি খায়বর থেকে এক মনযিলের পথে, তিনি খাবার নিয়ে আসতে বললেন। কিন্তু ছাতু ছাড়া অন্য কিছু আনা হলো না। আমরা তাই মুখে দিয়ে নাড়াচাড়া করে খেয়ে ফেললাম। তিনি পানি আনতে বললেন এবং কুলি করলেন, আমরাও কুলি করলাম। এরপর তিনি আমাদের নিয়ে মাগরিবের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। কিন্তু উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬১ | 5061 | ۵۰٦۱

পরিচ্ছদঃ ২১৫৬. রুমাল দিয়ে মুছে ফেলার আগে আঙ্গুল চেটে ও চুষে খাওয়া
৫০৬১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন আহার করে সে যেন তার হাত না মোছে, যতক্ষন না সে তা নিজে চেটে খায় কিংবা অন্যকে দিয়ে চাটিয়ে নেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬২ | 5062 | ۵۰٦۲

পরিচ্ছদঃ ২১৫৭. রুমাল প্রসঙ্গে
৫০৬২। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আগুনে স্পর্শ বস্তু খাওয়ার পর উযূ (ওজু/অজু/অযু) করা সম্বন্ধে তাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেনঃ না, উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে হবে না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে তো আমরা এরুপ খাদ্য কমই পেতাম। যখন আমরা তা পেতাম তখন আমাদের তো হাতের তার, হাত ও পা ছাড়া কোন রুমাল ছিল না (আমরা এগুলোতে মুছে ফেলতাম)। তারপর (নতুন) উযূ (ওজু/অজু/অযু) না করেই আমরা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৩ | 5063 | ۵۰٦۳

পরিচ্ছদঃ ২১৫৮. আহারের পর কি পড়বে?
৫০৬৩। আবূ নূআয়ম (রহঃ) … আবূ উসামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দস্তর খান তুলে নেয়া হল। তিনি বলতেনঃ পবিত্র বরকতময় অনেক অনেক প্রশংসা আল্লাহর জন্য। হে আমাদের রব, এ থেকে কখনো বিমুখ হতে পারবো না, বিদায় নিতে পারবো না এবং এ থেকে অমুখাপেক্ষী হতেও পারবো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৪ | 5064 | ۵۰٦٤

পরিচ্ছদঃ ২১৫৮. আহারের পর কি পড়বে?
৫০৬৪। আবূ আসিম (রহঃ) … আবূ উমামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আহার শেষ করতেন, রাবী আরো বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দস্তরখান যখন তুলে নেয়া হতো তখন তিনি বলতেনঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি যথেষ্ট খাইয়েছেন এবং পরিতৃপ্ত করেছেন। তার থেকে বিমুখ হওয়া যায় না এবং তার প্রতি অকৃজ্ঞতা প্রকাশ করা যায় না। রাবী কখনো বলেনঃ হে আমাদের রব, তোমার জন্যই সকল প্রশংসা, এর থেকে বিমুখ হওয়া যাবে না, একে পরিত্যাগ করাও যাবে না এবং এর থেকে অমুখাপেক্ষীও হওয়া যাবে না; হে, আমাদের রব।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৫ | 5065 | ۵۰٦۵

পরিচ্ছদঃ ২১৫৯. খাদেমের সাথে আহার করা
৫০৬৫। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কারো খাদেম যখন তার খাবার নিয়ে আসে তখন তাকে সাথে বসিয়ে না খাওয়ালেও সে যেন তাকে এক লুকমা বা দু’ লুকমা খাবার দেয়, কেননা সে তার গরম ও ক্লেশ সহ্য করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৬ | 5066 | ۵۰٦٦

পরিচ্ছদঃ ২১৬১. কাউকে আহারের দাওয়াত দিলে একথা বলা যে, এ ব্যক্তি আমার সঙ্গের। আনাস (রাঃ) বলেন, তুমি কোন মুসলমানের কাছে গেলে তার আহার থেকে খাও এবং তার পানীয় থেকে পান কর।
بَابُ الطَّاعِمُ الشَّاكِرُ مِثْلُ الصَّائِمِ الصَّابِرِ
فِيهِ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ

২১৬০. পরিচ্ছেদঃ কৃতজ্ঞ আহারকারী ধৈর্যশীল সিয়াম পালনকারীর মতো। এ ব্যাপারে আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি হাদীস বর্ণিত আছে।

৫০৬৬। আবদুল্লাহ ইবনু আবুল আসওয়াদ (রহঃ) … আবূ মাসউদ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনসার গোত্রের এক ব্যাক্তি যার কুনিয়াত (ডাক নাম) ছিল আবূ শুআয়ব তার একটি কসাই গোলাম ছিল। সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলো, তখন তিনি সাহাবীদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন। তখন সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারায় ধরন লক্ষ্য করলো, লোকটি তার কসাই গোলামের কাছে গিয়ে বললঃ আমার জন্য কিছু খাবার প্রস্তুত কর যা পাঁচজনের জন্য যথেষ্ট হয়। আমি রাতে পাঁচ জনকে দাওয়াত করব, যার পঞ্চম ব্যাক্তি হবেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। গোলামটি তার জন্য কিছু খাবার প্রস্তুত করলো। লোকটি তার কাছে এসে তাকে দাওয়াত করলো। এক ব্যাক্তি তাদের সঙ্গে গেল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে শুআয়ব! এক ব্যাক্তি আমাদের সঙ্গে এসেছে। তুমি চাইলে তাকে অনুমতি দিতে পার, আর চাইলে তাকে বিদায়ও করতে পার। সে বললঃ না। আমি তাকে অনুমতি দিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৭ | 5067 | ۵۰٦۷

পরিচ্ছদঃ ২১৬২. রাতের খাবার পরিবেশন করা হলে তা রেখে অন্য কাজে ত্বরা করবে না
৫০৬৭। আবূল ইয়ামান ও লায়স (রহঃ) … আমর ইবনু উমাইয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিজ হাতে বকরীর স্কন্ধ থেকে কেটে খেতে দেথেছেন। তারপর সালাত (নামায/নামাজ)-এর প্রতি আহবান করা হলে তিনি তা রেখে দিলেন এবং সে ছুরিটিও যা দিয়ে কেটে খাচ্ছিলেন। তারপর উঠে গিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তিনি (নতুন) উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৮ | 5068 | ۵۰٦۸

পরিচ্ছদঃ ২১৬২. রাতের খাবার পরিবেশন করা হলে তা রেখে অন্য কাজে ত্বরা করবে না
৫০৬৮। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি রাতের খাবার পরিবেশিত হয় এবং সালাত (নামায/নামাজ) এর আযান দেয়া হয়, তাহলে তোমরা আগে আহার করে নিবে। অন্য সনদে আইয়্যুব, নাফি (রহঃ) এর সুত্রে ইবনু উমর (রাঃ) থেকেও অনুরুপ হাদীস নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হয়েছে। আইয়্যুব নাফি (রহঃ) এর সুত্রে ইবনু উমর (রাঃ) থেকে আরো বর্ণনা করেছেন যে, তিনি একবার রাতের খাবার খাচ্ছিলেন, এ অবস্থায় ইমামের কিরআতও শুনছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৬৯ | 5069 | ۵۰٦۹

পরিচ্ছদঃ ২১৬২. রাতের খাবার পরিবেশন করা হলে তা রেখে অন্য কাজে ত্বরা করবে না
৫০৬৯। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন সালাত (নামায/নামাজ) এর ইকামাত দেয়া হয় এবং রাতের খাবারও উপস্থিত হয়ে যায়, তাহলে তোমরা আগে আহার করে নেবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭০ | 5070 | ۵۰۷۰

পরিচ্ছদঃ ২১৬৩. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ খাওয়া শেষ হলে তোমরা চলে যাবে
৫০৭০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি পর্দা (আয়াত নাযিল হওয়া) সম্পর্কে সর্বাধিক অবহিত। এ ব্যাপারে উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করতেন। যায়নাব বিনত জাহশের সঙ্গে নববিবাহিত হিসেবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভোর হল। তিনি মদিনায় তাকে বিবাহ করেছিলেন। ওঠার পর তিনি লোকজনকে খাওয়ার জন্য দাওয়াত করলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসে ছিলেন। (আহারের পর) অনেক লোক চলে যাওয়ার পরও কিছু লোক তাঁর সাথে বসে থাকলো। অবশেষে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে গেলেন আমিও তার সাথে সাথে গেলাম। তিনি আয়িশা (রাঃ) এর হুজরার দরজায় পৌছলেন। তারপর ভাবলেন লোকেরা হয়তো চলে গেছে। আমিও তার সাথে ফিরে আসলাম। (এসে দেখলাম) তারা স্বস্থানে বসেই রয়েছে। তিনি পুনরায় ফিরে গেলেন। আমিও তার সঙ্গে পুনয়রায় ফিরে গেলাম। এমন কি তিনি আয়িশা (রাঃ) এর গৃহের দরজা পর্যন্ত পৌছে আবার ফিরে আসলেন। আমিও তার সঙ্গে ফিরে আসলাম। এবার (দেখলাম) তারা উঠে গেছে। তারপর তিনি আমার ও তার মাঝে পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন। তখন পর্দার আয়াত নাযিল হলো।

 আকীকা অধ্যায় (৫০৭১-৫০৭৯)

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭১ | 5071 | ۵۰۷۱

পরিচ্ছদঃ ২১৬৪. যে সন্তানের আকীকা দেওয়া হবে না, জন্মগ্রহণের দিনেই তার নাম রাখা ও তাহ্‌নীক করা (কিছু চিবিয়ে তার মুখে দেয়া)
৫০৭১। ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করলে আমি তাকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম। তিনি তার নাম রাখলেন ইবরাহীম। তারপর খেজুর চিবিয়ে তার মুখে দিলেন এবং তার জন্য বরকতের দু আ করে আমার কাছে ফিরিয়ে দিলেন। সে ছিল আবূ মূসার বড় সন্তান।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭২ | 5072 | ۵۰۷۲

পরিচ্ছদঃ ২১৬৪. যে সন্তানের আকীকা দেওয়া হবে না, জন্মগ্রহণের দিনেই তার নাম রাখা ও তাহ্‌নীক করা (কিছু চিবিয়ে তার মুখে দেয়া)
৫০৭২। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাহনীক করার জন্য এক শিশুকে আনা হলো, শিশুটি তার কোলে পেশাব করে দিল তিনি এতে পানি ঢেলে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৩ | 5073 | ۵۰۷۳

পরিচ্ছদঃ ২১৬৪. যে সন্তানের আকীকা দেওয়া হবে না, জন্মগ্রহণের দিনেই তার নাম রাখা ও তাহ্‌নীক করা (কিছু চিবিয়ে তার মুখে দেয়া)
৫০৭৩। ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) … আসমা বিনত আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়রকে মক্কায় গর্ভে ধারণ করেন। তিনি বলেনঃ গর্ভকাল পূর্ণ হওয়া অবস্থায় আমি বেরিয়ে মদিনায় আসলাম এবং কুবায় অবতরণ করলাম। কুবাতেই আমি তাকে প্রসব করি। তারপর তাকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাকে তার কোলে রাখলাম। তিনি একটি খেজুর আনতে বললেন। তা চিবিয়ে তিনি তার মুখে দিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এই লালাই সর্ব প্রথম তার পেটে প্রবেশ করল। তারপর তিনি খেজুর চিবিয়ে তাহনীক করলেন এবং তার জন্য বরকতের দু’আ করলেন। (হিজরতের পরে) ইসলামে সেই ছিল প্রথম জন্মগ্রহনকারী। তাই তার জন্য মুসলিমরা অতন্তে খুশী হয়েছিলেন কারন, তাদের বলা হতো ইয়াহুদীরা তোমাদের যাদু করেছে তাই তোমাদের সন্তান হয় না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৪ | 5074 | ۵۰۷٤

পরিচ্ছদঃ ২১৬৪. যে সন্তানের আকীকা দেওয়া হবে না, জন্মগ্রহণের দিনেই তার নাম রাখা ও তাহ্‌নীক করা (কিছু চিবিয়ে তার মুখে দেয়া)
৫০৭৪। মাতার ইবনু ফাযল (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ তালহার এক ছেলে অসুস্থ হয়ে পড়লো। আবূ তালহা (রাঃ) বাইরে গেলেন তখন ছেলেটি মারা গেল। আবূ তালহা (রাঃ) ফিরে এসে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ছেলেটি কি করছে? উম্মে সুলায়ম বললেনঃ সে আগের চাইতে শান্ত। তারপর তাকে রাতের খাবার দিলেন। তিনি আহার করলেন। তারপর উম্মে সুলায়মের সাথে সহবাস করলেন। সহবাস শেষে উম্মে সুলায়ম বললেনঃ ছেলেটিকে দাফন করে আস। সকাল হলে আবূ তালহা (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাকে এ ঘটনা বললেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ গত রাতে তুমি কি স্ত্রীর সঙ্গে রয়েছ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইয়া আল্লাহ! তাদের জন্য তুমি বরকত দান কর।

কিছু দিন পর উম্মে সুলায়ম একটি সন্তান প্রসব করলো (রাবী বলেনঃ) আবূ তালহা (রাঃ) আমাকে বললেন, তাকে তুমি দেখাশোনা কর যতক্ষণ না আমি তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে যাই। তারপর তিনি তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে গেলেন। উম্মে সুলায়ম সাথে কিছু খেজুর দিয়ে দিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে (কোলে) নিলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন তার সাথে কিছু আছে? তারা বললেন হ্যাঁ, আছে। তিনি তা নিয়ে চর্বণ করলেন তারপর মুখ থেকে বের করে বাচ্চাটির মুখে দিলেন। তিনি এর দ্বারাই তার তাহনীক করলেন এবং তার নাম রাখলেন আবদুল্লাহ।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৫ | 5075 | ۵۰۷۵

পরিচ্ছদঃ ২১৬৪. যে সন্তানের আকীকা দেওয়া হবে না, জন্মগ্রহণের দিনেই তার নাম রাখা ও তাহ্‌নীক করা (কিছু চিবিয়ে তার মুখে দেয়া)
৫০৭৫। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি উক্ত হাদীসটই বর্ণনা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৬ | 5076 | ۵۰۷٦

পরিচ্ছদঃ ২১৬৫. আকীকার মাধ্যমে শিশুর অশুচি দূর করা
৫০৭৬। আবূ নুমান (রহঃ) … সালমান ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সন্তানের সাথে আকীকা সম্পর্কিত। সালমান ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, সন্তানের সাথে আকীকা সম্পর্কিত। তার পক্ষ থেকে রক্ত প্রবাহিত (অর্থাৎ আকীকার জন্তু যবাহ) কর এবং তার অশুচি (চুল, নখ ইত্যাদি) দূর করে দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৭ | 5077 | ۵۰۷۷

পরিচ্ছদঃ ২১৬৫. আকীকার মাধ্যমে শিশুর অশুচি দূর করা
৫০৭৭। আবদুল্লাহ ইবনু আবূল আসওয়াদ (রহঃ) … হাবীব ইবনু শহীদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু সিরীন আমাকে আদেশ দিলেন, আমি যেন হাসানকে জিজ্ঞাসা করি তিনি আকীকার হাদীসটি কার থেকে শুনেছেন? আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৮ | 5078 | ۵۰۷۸

পরিচ্ছদঃ ২১৬৬. ফারা’ প্রসঙ্গে
৫০৭৮। আবদান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (ইসলামে) ফারা বা আতীরা নেই। ফারা হল উটের সে প্রথম বাচ্চা, যা তারা তাদের দেব-দেবীর নামে যবাহ করত। আর আতীরা হলো রজবে যে জন্তু যবাহ দিত।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৭৯ | 5079 | ۵۰۷۹

পরিচ্ছদঃ ২১৬৭. আতীরা
৫০৭৯। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (ইসলামে) ফারা ও আতীরা নেই। ফারা হল উটের প্রথম বাচ্চা যা তারা তাদের দেব-দেবীর নামে যবাহ দিত। আর আতীরা যা রজবে যবাহ করতো।

 

যবাহ, শিকার ও বিসমিল্লাহ বলা অধ্যায় (৫০৮০-৫১৪৬)

বুখারি হাদিস নং ৫০৮০-৫০৭৯

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত…. সুতরাং তোমরা তাদের ভয় করো না; বরং শুধু আমাকেই ভয় করো (মায়িদাহঃ ৩) পর্যন্ত এবং আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই তোমাদিগেকে পরীক্ষা করবেন কিছু শিকার সম্বন্ধে…… আয়াতের শেষ পর্যন্ত (মায়িদাহঃ ৯৪) ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেন, الْعُقُودُ অঙ্গীকারসমূহ যা কিছু হালাল করা হয় বা হারা করা হয়। إِلاَّ مَا يُتْلَى عَلَيْكُمْ শুকুর। يَجْرِمَنَّكُمْ তোমাদেরকে যেন প্ররোচিত করে। شَنَآنُ শত্রুতা। الْمُنْخَنِقَةُ যে প্রাণীটি শ্বাসরুদ্ধ করার কারণে মারা গিয়েছে। الْمَوْقُوذَةُ যে প্রাণীকে লাঠির দ্বারা আঘাত করার দরুন তার দেহ থেতলিয়ে গিয়ে মারা যায়। الْمُتَرَدِّيَةُ যে প্রাণী পাহাড়ের উপর থেকে পড়ে মারা গিয়েছে। النَّطِيحَةُ যে বকরী শিং এর গুতায় মারা গিয়েছে। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেন, এর মধ্যে জন্তুটির তুমি লেজ বা চোখ নড়াচড়া করা অবস্থায় পাবে। সেটাকে যবাহ করবে এবং আহার করবে।
৫০৮০। আবূ নুআইম (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তীরের ফলকের আঘাতের দ্বারা লদ্ধ শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। উত্তরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তীরের ধারাল অংশের দ্বারা যেটি নিহত হয়েছে সেটি খাও। আর ফলকের বাঁটের আঘাতে যেটি নিহত হয়েছে সেটি অকীয- (অর্থাৎ থেতলিয়ে যাওয়া মৃতের অন্তর্ভুক্ত)। আমি তাকে কুকুরের দ্বারা লদ্ধ শিকার সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করলাম। উত্তরে তিনি বললেনঃ যে শিকারকে কুকুর তোমার জন্য ধরে রাখে সেটি খাও। কেননা, কুকুরের ঘায়েল করা যবাহর হুকুম রাখে। তবে তুমি যদি তোমার কুকুর বা কুকুরগুলোর সঙ্গে অন্য কুকুর পাও, এবং তুমি আশংকা কর যে, অন্য কুকুরটিও তোমার কুকুরের শিকার পাকড়াও করেছে এবং হত্যা করেছে, তা হলে তা খেও না। কেননা, তুমি তো কেবল নিজের কুকুর ছাড়াকালে বিসমিল্লাহ বলেছ। অন্যের কুকুরের ক্ষেত্রে তা বলনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮১ | 5081 | ۵۰۸۱

পরিচ্ছদঃ ২১৬৮. তীর লব্ধ শিকার। বন্দুকের গুলিতে শিকার সম্বন্ধে ইব্‌ন উমর (রা) বলেছেনঃ এটি মাওকুযাহ বা থেতলিয়ে যাওয়া শিকারের অন্তর্ভূক্ত। সালিম, কাসিম, মুজাহিদ, ইব্‌রাহীম, আতা ও হাসান বসীর (র) একে মাকরূহ মনে করেন। হাসানের মতে গ্রাম এলাকা ও শহর এলাকায় বন্দুক দিয়ে শিকার করা মাকরূহ। থবে অন্যত্র শিকার করতে কোন দোষ নেই।
৫০৮১। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তীরের শিকার সম্পর্কে জিজাসা করলাম। তিনি বললেনঃ যদি তীরের ধারাল অংশ দ্বারা আঘাত করে থাক তাহলে খাও আর যদি ফলকের আঘাত লেগে থাকে এবং শিকারটি মারা যায়, তাহলে খেওনা। কেননা, সেটি, ওয়াকীয বা থেতলিয়ে মরার অন্তর্ভুক্ত। আমি বললামঃ আমি তো শিকারের জন্য কুকুর ছেড়ে দেই। তিনি উত্তর দিলেনঃ যদি তোমার কুকুরকে তুমি বিসমিল্লাহ পড়ে ছেড়ে থাক, তা হলে খাও। আমি আবার বললামঃ যদি কুকুর কিছুটা খেয়ে ফেলে? তিনি বললেনঃ তা হলে খেও না। কেননা, সে তা তোমার জন্য ধরে রাখেনি বরং সে ধরেছে নিজের জন্যই। আমি বললামঃ আমি আমার কুকুরকে পাঠাবার পর যদি তার সঙ্গে অন্য কুকুরকেও দেখতে পাই, তখন? তিনি বললেনঃ তাহলে খেওনা। কেননা, তুমি তো কেবল তোমার কুকুর ছাড়ার সময় বিসমিল্লাহ বলেছ, অন্য কুকুরের ক্ষেত্রে বিসমিল্লাহ বলনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮২ | 5082 | ۵۰۸۲

পরিচ্ছদঃ ২১৬৯. তীরের ফলকে আঘাত প্রাপ্ত শিকার
৫০৮২। কাবীসা (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কুকুরগুলোকে শিকারে পাঠিয়ে থাকি। তিনি বললেনঃ কুকুরগুলো তোমার জন্য যেটি ধরে রাখে সেটি খাও। আমি বললামঃ যদি ওরা হত্যা করে ফেলে? তিনি বললেনঃ যদি ওরা হত্যাও করে ফেলে। আমি বললাম আমরা তো ফলকের সাহায্যেও শিকার করে থাকি। তিনি বললেনঃ সেটি খাও যেটি তীরে যখম করেছে। আর যেটি তীরের পার্শ্বের আঘাতে মারা গেছে সেটি খেওনা।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৩ | 5083 | ۵۰۸۳

পরিচ্ছদঃ ২১৭০. ধনুকের সাহায্যে শিকার করা। হাসান ও ইব্‌রাহীম (র) বলেছেনঃ কোন ব্যক্তি যদি শিকারকে আঘাত করে, ফলে তার হাত কিম্বা পা পৃথক হয়ে যায়, তাহলে পৃথক অংশটি খাওয়া যাবে না, অবশিষ্ট অংশটি খাওয়া যাবে। ইব্‌রাহীম (র) বলেছেনঃ তুমি যদি শিকারের ঘাড়ে কিম্বা মধ্যভাগে আঘাত কর, তা হলে তা খাও। যায়েদের সূত্রে আ’মাশ (র) বলেছেন যে, আবদুল্লাহ ইব্‌ন মাস’উদের গোত্রে একটি গাধা নাগালের বাইরে চলে গিয়েছিল। তখন তিনি আদেশ দিয়েছিলেনঃ তার দেহের যে অংশই সম্ভব হয় সেখানেই আঘাত কর। তারপর যে অংশটি ছিঁড়ে যাবে তা ফেলে দাও, আর অবশিষ্ট অংশ খাও।
৫০৮৩। আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রহঃ) … আবূ সা’লাবা আল খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ হে আল্লাহর নাবী! আমরা আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের এলাকায় বসবাস করি। আমরা কি তাদের থালায় খেতে পারি? তাছাড়া আমরা শিকারের অঞ্চলে থাকি। তীর ধনুকের সাহায্যে শিকার করি এবং প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ও প্রশিক্ষণবিহীন কুকুর দিয়ে শিকার করে থাকি ও এমতাবস্থায় আমার জন্য কোনটি দুরস্ত হবে? উত্তরে তিনি বললেনঃ তুমি যে সকল আহলে কিতাবের কথা উল্লেখ করলে তাতে বিধান হল যদি ভিন্ন পাও তাহলে তাদের পাত্রে খাবে না। আর যদি না পাও তাহলে তাদের পাত্রগুলো ধৌত করে নাও। তারপর তাতে আহার কর। আর যে প্রানীকে তুমি তোমার তীর ধনূকের সাহায্যে শিকার করেছ এবং বিসমিল্লাহ পড়েছ সেটি খাও। আর যে প্রানীকে তুমি তোমার প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কুকুরের সাহায্যে শিকার করেছ এবং বিসমিল্লাহ পড়েছ। সেটি খাও আর যে প্রানীকে তুমি তোমার প্রশিক্ষণবিহীন কুকুর দ্বারা শিকার করেছ সেটি যদি যবাহ করার সুযোগ পাও, তা হলে খেতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৪ | 5084 | ۵۰۸٤

পরিচ্ছদঃ ২১৭১. ছোট ছোট পাথর নিক্ষেপ করা ও বন্দুক মারা
৫০৮৪। ইউসুফ ইবনু রাশেদ (রহঃ) … আবদুলাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি এক ব্যাক্তিকে দেখলেন সে ছোট ছোট পাথর নিক্ষেপ করছে। তখন তিনি তাকে বললেনঃ পাথর নিক্ষেপ করোনা। কেননা, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পাথর করতে নিষেধ করেছেন অথবা রাবী বলেছেনঃ পাথর ছোড়াকে তিনি অপছন্দ করতেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেতেনঃ এর দ্বারা কোন প্রানী শিকার করা হয় না এবং কোন শত্রুকেও ঘায়েল করা হয় না। তবে এটি কারো দাত ভেংগে ফেলতে পারে এবং চোখ উপড়ে দিতে পারে। তারপর তিনি আবার তাকে পাথর ছুড়তে দেখলেন। তখন তিনি বললেনঃ আমি তোমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাদীস বর্ণনা করেছিলাম যে, তিনি পাথর নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন অথবা তিনি তা অপছন্দ করেছেন। অথচ তুমি পাথর নিক্ষেপ করছ? আমি তোমার সঙ্গে কথাই বলব না এতকাল এতকাল পর্যন্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৫ | 5085 | ۵۰۸۵

পরিচ্ছদঃ ২১৭২. যে ব্যক্তি শিকার বা পশু-রক্ষার কুকুর ছাড়া অন্য কুকুর পালন করে
৫০৮৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন তিনি বলতেনঃ যে ব্যাক্তি এমন কুকুর পালন করে যেটি পশু রক্ষার জন্যও নয় কিংবা শিকারের জন্যও নয়। তার আমল থেকে প্রত্যহ দুই কীরাত পরিমাণ হ্রাস পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৬ | 5086 | ۵۰۸٦

পরিচ্ছদঃ ২১৭২. যে ব্যক্তি শিকার বা পশু-রক্ষার কুকুর ছাড়া অন্য কুকুর পালন করে
৫০৮৬। মাককী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যাক্তি শিকারী কুকুর কিংবা পশু রক্ষাকারী কুকুর ব্যতীত অন্য কোন কুকুর পোষে, সেই ব্যাক্তির আমলের সাওয়াব থেকে প্রত্যহ দুই কীরাত পরিমাণ কমে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৭ | 5087 | ۵۰۸۷

পরিচ্ছদঃ ২১৭২. যে ব্যক্তি শিকার বা পশু-রক্ষার কুকুর ছাড়া অন্য কুকুর পালন করে
৫৩৮৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি পশু রক্ষাকারী কিংবা শিকারী কুকুর ব্যতীত অন্য কুকুর পালন করে, তার আমল থেকে প্রতিদিন দুই কীরাত পরিমান সওয়াব কমে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৮ | 5088 | ۵۰۸۸

পরিচ্ছদঃ ২১৭৩. শিকারী কুকুর যদি শিকারের কিছুটা খেয়ে ফেলে এবং মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ লোকেরা আপনাকে প্রশ্ন করে থাকে যে, তাদের জন্য কী হালাল করা হয়েছে? …. নিশ্চয় আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত তৎপর- পর্যন্ত (মায়িদাহঃ ৫:৪)। اجْتَرَحُوا তারা যা উপার্জন করেছে। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ যদি কুকুর শিকারের কিছুটা খেয়ে ফেলে, তবে সে শিকার নস্ট করে ফেলল। কেননা, সে তো তখন নিজের জন্য ধরেছে বলে গণ্য হবে। অথচ আল্লাহ্‌ তা’আলা বলেছেনঃ যেগুলোকে তোমরা শিকার শিক্ষা দিয়েছ যে ভাবে আল্লাহ্‌ তোমাদিগকে শিক্ষা দান করেছেন। কাজেই কুকুরকে প্রহার করতে হবে এবং শিক্ষা দিতে হবে, যাতে সে শিকার খাওয়া বর্জন করে। ইবন উমর (রা) এটিকে মাকরূহ বলতেন। আতা (রহঃ) বলেছেন, কুকুর যদি রক্ত পান করে আর গোশত না খায় তাহলে (সেই শিকার) খেতে পারে।
৫০৮৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) খেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলামঃ আমরা এমন সম্প্রদায়, যারা এ সকল কুকুরের দ্বারা শিকার করে থাকি। তিনি বললেনঃ তুমি যদি তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরকে বিসমিল্লাহ পড়ে পাঠিয়ে থাক তাহলে ওরা যেগুলো তোমাদের জন্য ধরে রাখে, তা খাও যদিও শিকারকে কুকুর হত্যা করে ফেলে। তবে যদি কুকুর শিকারের কিছুটা খেয়ে ফেলে (তাহলে খাবে না)। কেননা, তখন আমার আশংকা হয় যে সে শিকার নিজেরই উদ্দেশ্যে ধরেছে। আর যদি তার সঙ্গে অন্য কুকুর মিলে যায় তাহলে খাবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৮৯ | 5089 | ۵۰۸۹

পরিচ্ছদঃ ২১৭৪. শিকার যদি দুই বা তিনদিন শিকারী থেকে অদৃশ্য থাকে
৫০৮৯। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্নিত। তিনি বলেছেনঃ যদি তোমার কুকুরকে বিসমিল্লাহ পড়ে পাঠাও, এরপর কুকুর শিকার পাকড়াও করে এবং মেরে ফেলে, তবে তা খেতে পার। আর যদি কুকুর কিছুটা খেয়ে ফেলে, তাহলে খাবে না। কেননা, সে তো নিজের জন্যই ধরেছে। আর যদি এমন কুকুরদের সঙ্গে মিশে যায়, যাদের উপর বিসমিল্লাহ পড়া হয়নি এবং সেজন্য শিকার ধরে মেরে ফেলে, তা হলে তা খাবে না। কেননা, তুমি তো জানো না যে কোন কুকুরটি হত্যা করেছে? আর যদি তুমি শিকারের প্রতি তীর নিক্ষেপ করে থাক; এরপর তা একদিন বা দুইদিন পর এমতাবস্থায় হাতে পাও যে, তার গায়ে তোমার তীরের আঘাত ছাড়া অন্য কিছু নেই, তাহলে খাও। আর যদি তা পানির মধ্যে পড়ে থাকে, তা হলে তা খাবে না।

আবদুল আলা দাউদ সুত্রে আদী থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করেছিলেনঃ যদি কোন বাক্তি শিকারের প্রতি তীর নিক্ষেপ করে এবং দুই তিন দিন পর্যন্ত সেই শিকারের অনুসন্ধানের পর মৃত অবস্থায় পায় এবং দেখে যে, তার গায়ে তার তীর লেগে রয়েছে (তখন সে কি করবে)? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইচ্ছা করলে সে তা খেতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯০ | 5090 | ۵۰۹۰

পরিচ্ছদঃ ২১৭৫. শিকারের সাথে যদি অন্য কুকুর পাওয়া যায়
৫০৯০। আদম (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি বিসমিল্লাহ পড়ে আমার কুকুরকে পাঠিয়ে থাকি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি যদি বিসমিল্লাহ পড়ে তোমার কুকুরটিকে পাঠিয়ে থাক, এরপর সে শিকার ধরে মেরে ফেলে এবং কিছুটা খেয়ে ফেলে, তা হলে তুমি খেয়ো না। কেননা, সে তো নিজের জন্যই তা ধরেছে। আমি বললামঃ আমি আমার কুকুরটিরে পাঠালাম পরে তার সঙ্গে অন্য কুকুরও দেখতে পেলাম। আমি ঠিক জানিনা উভয়ের কে শিকার ধরেছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তা খেয়ো না। কেননা, তুমি তো তোমার কুকুরের উপরই বিসমিল্লাহ পড়েছ, অন্যটির উপর পড়নি। আমি তাকে তীরের শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ যদি তুমি তীরের ধার দিয়ে আঘাত করে থাক, তাহলে খাও। আর যদি পার্শ্বের দ্বারা আঘাত কর আর তাতে তা মারা যায় তাহলে সেটি থেতলিয়ে মারার অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং তা খেয়ো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯১ | 5091 | ۵۰۹۱

পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯১। মুহাম্মদ (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করে বলছিলামঃ আমরা এমন সম্প্রদায়, যারা এ সকল কুকুরের দ্বারা শিকার করতে অভ্যস্ত। তিনি বললেনঃ তুমি যদি আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে (বিসমিল্লাহ বলে) তোমার প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কুকুরগুলোকে পাঠাও, তাহলে কুকুরগুলো তোমার জন্য যা ধরে রাখবে, তুমি তা খেতে পার। তবে কুকুর যদি কিছুটা খেয়ে ফেলে, তাহলে তুমি খেয়ো না। কেননা, আমার আশংকা হয় যে, সে তখন নিজের জন্যই ধরেছে। আর যদি তার সঙ্গে অন্যান্য কুকুর মিলিত হয়, তাহলেও খেয়ো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯২ | 5092 | ۵۰۹۲

পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯২। আবূ আসিম ও আহমাদ ইবনু আবূ রাজা (রহঃ) … আবূ সা’লাবা খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আমরা আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের এলাকায় বসবাস করি, তাদের পাত্রে আহার করি। আর আমরা শিকারের অঞ্চলে থাকি, শিকার করি তীর ধনুক দিয়ে, প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত কুকুর দিয়ে এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয় এমন কুকুর দিয়েও। অতএব আমাকে বলে দিন, এর মধ্যে আমাদের জন্য কোনটি হালাল? তিনি বললেনঃ তুমি যা উল্লেখ করেছো তুমি আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের এলাকায় বসবাস কর, তাদের পাত্রে খানা খাও। তরে যদি তাদের পাত্র ছাড়া অন্য পাত্র পাও, তাহলে তাদের পাত্রে আহার করো না। আর যদি না পাও তাহলে ঐগুলো ধৌত করে তারপর তাতে আহার করবে। আর তুমি উল্লেখ করেছ যে তুমি শিকারের অঞ্চলে থাক। তুমি যা তীর ধনুক দ্বারা শিকার কর, তাতে তুমি বিসমিল্লাহ পড়বে এবং তা খাবে। তোমার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর নিয়ে যা শিকার কর, তাতে বিসমিল্লাহ পড়বে এবং তা খাবে। আর তুমি যা শিকার কর তোমার এমন কুকুরের দ্বারা যেটি প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত নয় সেখানে যদি যবাহ করার সুযোগ পাও তাহলে খেতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৩ | 5093 | ۵۰۹۳

পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা মক্কার যাহরান নামক স্থানে একটি খরগোশ ধাওয়া করলাম। লোকজন তার পেছনে ছুটতে থাকে এবং তারা ব্যর্থ হয়। এরপর আমি তার পেছনে ছুটলাম। অবশেষে সেটি ধরে ফেললাম। তারপর আমি এটিকে আবূ তালহার নিকট নিয়ে এলাম। তিনি এটির উভয় রান ও নিতম্ব নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পাঠান। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটি গ্রহণ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৪ | 5094 | ۵۰۹٤

পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯৪। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন। অবশেষে তিনি মক্কার কোন এক রাস্তা পর্যন্ত পৌছলে তিনি তার কয়েকজন সঙ্গীসহ পেছনে পড়ে গেলেন। তারা ছিলেন ইহরাম বাধা অবস্থায়। আর তিনি ছিলেন ইহরাম ছাড়া অবস্থায়। তিনি একটি বন্য গাধা দেখতে পেয়ে তার ঘোড়ার উপর আরোহণ করলেন। তারপর সাথীদের তার হাতে তাঁর চাকু তুলে দিতে অনুরোধ করলেন। তারা অস্বীকার করলেন। অবশেষে তিনি নিজেই সেটি তুলে নিলেন এবং গাধাটির পিছনে দ্রুতবেগে ছুটলেন এবং সেটিকে হত্যা করলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের কেউ কেউ তা খেলেন আবাব কেউ কেউ তা খেতে অস্বীকার করলেন। পরিশেষে তারা যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছলেন তখন তারা বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেনঃ এটি তো এমন খাদ্য যা আল্লাহ তাআলা তোমাদের খাওয়ার জন্য দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৫ | 5095 | ۵۰۹۵

পরিচ্ছদঃ ২১৭৬. শিকারে অভ্যস্ত হওয়া সম্পর্কে
৫০৯৫। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) এর সুত্রে অনুরূপ বর্ণিত আছে। তবে এতে রয়েছে যে, তিনি বললেনঃ তোমাদের সাথে কি তার কিছু গোশত আছে?

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৬ | 5096 | ۵۰۹٦

পরিচ্ছদঃ ২১৭৭. পাহাড়ে শিকার করা
৫০৯৬। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি মক্কা ও মদিনার মধ্যবর্তী সফরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সংগে ছিলাম। অন্যরা ছিলেন ইহরাম বাধা অবস্থায়। আর আমি ছিলাম ইহরাম বিহীন এবং ঘোড়ার উপর সাওয়ার। পর্বত আরোহনে আমি ছিলাম দৃঢ়। এমন সময়ে আমি লোকজনকে দেখছিলাম যে, তারা আগ্রহ সহকারে কি যেন দেখছে। কাজেই আমিও দেখতে লাগলাম। হঠাৎ দেখি একটি বন্য গাধা। আমি লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলামঃ এটি কি? তারা উত্তর দিলঃ আমরা জানি না। আমি বললামঃ এটি বন্য গাধা? তারা বললঃ এটি তাই তুমি যা দেখছ। আমি আমার চাবুকের কথা ভুলে গিয়েছিলাম তাই তাদের বললামঃ আমাকে আমার চাবুকটি তুলে দাও। তারা বললঃ আমরা তোমাকে এ কাজে সাহয্য করব না। অগত্যা আমি নেমে চাবুকটি তুলে নিলাম। তারপর সেটির পেছনে ছুটলাম।

অবশেষে আমি সেটিকে ঘায়েল করলাম এবং তাদের কাছে এসে বললামঃ যাও, এটাকে তুলে নিয়ে আসো।। তারা বললঃ আমরা ওটিকে স্পর্শ করবো না। তখন আমি নিজেই সেটিকে তুলে তাদের কাছে নিয়ে এলাম। তাদের মধ্যে কয়েকজন তা খেতে অসম্মতি প্রকাশ করল। আর কয়েকজন তা খেল। আমি বললামঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থেকে তোমাদের জন্য বিষয়টি জেনে নেব। এরপর আমি তাকে পেলাম এবং এ ঘটনা শুনলাম। তিনি আমাকে বললেনঃ তোমাদের সঙ্গে সেটির অবশিষ্ট কিছু আছে কি? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ খাও। কেননা, এটি তো এমন খাবারের জিনিস যা আল্লাহ তোমাদের খাওয়ার জন্য দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৭ | 5097 | ۵۰۹۷

পরিচ্ছদঃ ২১৭৮. মহান আল্লাহ্‌র এরশাদঃ তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার হালাল করা হয়েছে….. (৫:৯৬)। উমর (রা) বছেলেনঃ صَيْدُهُ যা শিকার করা হয়, আর طَعَامُهُ সমুদ্র যাকে নিক্ষেপ করে। আবূ বক্‌র (রা) বলেছেনঃ মরে যা ভেসে উঠে তা হালাল। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ طَعَامُهُ সমুদ্রে প্রাপ্ত মৃত জানোয়ার খাদ্য, তবে তন্মধ্যে যেটি ঘৃণিত সেটি ছাড়া। বাইন জাতীয় মাছ ইয়াহুদীরা খায় না, আমরা খাই। রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) এর সাহাবী আবূ শুরায়হ (রা) বলেছেনঃ সমুদ্রের সব জিনিসই যবাহকৃত বলে গণ্য। আতা (র) বলেছেনঃ (সমুদ্রের) পাখি সম্পর্কে আমার মত সেটিকে যবাহ করতে হবে। ইব্‌ন জুরায়জ (র) বলেনঃ আমি আতা (র) কে খাল, বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ের শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলামঃ এগুলো কি সমুদ্রের শিকার অন্তর্ভূক্ত? তিনি উত্তর দিলেনঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি এই আয়াতটি তিলাওয়াত করেনঃ هَذَا عَذْبٌ فُرَاتٌ سَائِغٌ شَرَابُهُ وَهَذَا مِلْحٌ أُجَاجٌ وَمِنْ كُلٍّ تَأْكُلُونَ لَحْمًا طَرِيًّا এর পানি সুস্বাদু ও তৃপ্তিদায়ক (যা পান করার উপযোগী) আর অপরটির পানি লোনা ও বিস্বাদ। আর এর প্রত্যেকটি থেকেই তোমরা খাও তাজা গোশ্‌ত। হাসান সমুদ্রের কুকুরের চামগায় নির্মিত ঘোড়ার গদির উপর আরোহণ করেছেন। শা’বি (র) বলেছেনঃ আমার পরিবারের লোকেরা যদি ব্যঙ খেত, তা হলে আমি তাদের তা খাওয়াতাম। হাসান (র) কচ্ছপ খাওয়াকে দোষের মনে করতেন না। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেনঃ সমুদ্রের সব ধরনের শিকার খেতে পার, যদিও তা কোন ইয়াহুদী কিংবা খৃষ্টান কিংবা অগ্নিপূজক শিকার করে থাকে। আবুদ্‌ দারদা (রা) বলেনঃ মাছ ও সূর্যের তাপ শরাবকে পাক করে।
৫০৯৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা ‘জায়শুল খাবত’ অভিযানে ছিলাম। আমাদের সেনাপতি নিয়োগ করা হয়েছিল আবূ উবায়দা (রাঃ) কে। এক সময় আমরা ভীষনভাবে ক্ষুধার্ত হয়ে পড়লে, সমুদ্র এমন একটি মৃত মাছ তীরে নিক্ষেপ করল যে এত বড় মাছ কখনো দেখা যায়নি। এটিকে ‘আম্বর’ বলা হয়। আমরা অর্ধমাস যাবত এটি খেলাম। আবূ উবায়দা (রাঃ) এর একটি হাড় তুলে ধরলেন এবং এর নীচে দিয়ে একজন অশ্বারোহী অনায়াসে বেরিয়ে গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৮ | 5098 | ۵۰۹۸

পরিচ্ছদঃ ২১৭৮. মহান আল্লাহ্‌র এরশাদঃ তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার হালাল করা হয়েছে….. (৫:৯৬)। উমর (রা) বছেলেনঃ صَيْدُهُ যা শিকার করা হয়, আর طَعَامُهُ সমুদ্র যাকে নিক্ষেপ করে। আবূ বক্‌র (রা) বলেছেনঃ মরে যা ভেসে উঠে তা হালাল। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ طَعَامُهُ সমুদ্রে প্রাপ্ত মৃত জানোয়ার খাদ্য, তবে তন্মধ্যে যেটি ঘৃণিত সেটি ছাড়া। বাইন জাতীয় মাছ ইয়াহুদীরা খায় না, আমরা খাই। রাসূলুল্লাহ্‌ (সা) এর সাহাবী আবূ শুরায়হ (রা) বলেছেনঃ সমুদ্রের সব জিনিসই যবাহকৃত বলে গণ্য। আতা (র) বলেছেনঃ (সমুদ্রের) পাখি সম্পর্কে আমার মত সেটিকে যবাহ করতে হবে। ইব্‌ন জুরায়জ (র) বলেনঃ আমি আতা (র) কে খাল, বিল, নদী-নালা ও জলাশয়ের শিকার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলামঃ এগুলো কি সমুদ্রের শিকার অন্তর্ভূক্ত? তিনি উত্তর দিলেনঃ হ্যাঁ। তারপর তিনি এই আয়াতটি তিলাওয়াত করেনঃ هَذَا عَذْبٌ فُرَاتٌ سَائِغٌ شَرَابُهُ وَهَذَا مِلْحٌ أُجَاجٌ وَمِنْ كُلٍّ تَأْكُلُونَ لَحْمًا طَرِيًّا এর পানি সুস্বাদু ও তৃপ্তিদায়ক (যা পান করার উপযোগী) আর অপরটির পানি লোনা ও বিস্বাদ। আর এর প্রত্যেকটি থেকেই তোমরা খাও তাজা গোশ্‌ত। হাসান সমুদ্রের কুকুরের চামগায় নির্মিত ঘোড়ার গদির উপর আরোহণ করেছেন। শা’বি (র) বলেছেনঃ আমার পরিবারের লোকেরা যদি ব্যঙ খেত, তা হলে আমি তাদের তা খাওয়াতাম। হাসান (র) কচ্ছপ খাওয়াকে দোষের মনে করতেন না। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেনঃ সমুদ্রের সব ধরনের শিকার খেতে পার, যদিও তা কোন ইয়াহুদী কিংবা খৃষ্টান কিংবা অগ্নিপূজক শিকার করে থাকে। আবুদ্‌ দারদা (রা) বলেনঃ মাছ ও সূর্যের তাপ শরাবকে পাক করে।
৫০৯৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের তিনশ’ সাওয়ার পাঠালেন আমাদের সেনাপতি ছিলেন আবূ উবায়দা (রাঃ)। উদ্দেশ্য ছিল আমরা যেন কুরাইশদের একটি কাফেলার অপেক্ষা করি। তখন আমাদের ভীষণ ক্ষিধে পেল। এমন কি আমরা خبط (গাছের পাতা) খেতে আরম্ভ করলাম। ফলে এ বাহিনীর নামকরণ করা হয় “জায়শুল খাবত”। তখন সমুদ্র আম্বর নামক একটি মাছ পাড়ে তুলে দেয়। আমরা এটি থেকে অর্ধমাস যাবত আহার করলাম। আমরা এর চর্বি তেল রুপে গায়ে মাখতাম। ফলে আমাদের শরীর সতেজ হয়ে উঠে। আবূ উবায়দা (রাঃ) মাছটির পাজরের কাটাগুলোর একটি খাড়া করে ধরলেন, তখন একজন অশ্বারোহী তার নীচ দিবে অতিক্রিম করে গেল। আমাদের মধ্যে (কোয়স ইবনু না’দ) এক ব্যাক্তি ছিলেন, খাদ্যাভাব তখন ভীষণ আকার ধারণ করেছিল। তখন তিনি তিনটি উট যবাহ করেন। তারপর আরো তিনটি যবাহ করেন। এরপর আবূ উবায়দা (রাঃ) তাকে বারণ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫০৯৯ | 5099 | ۵۰۹۹

পরিচ্ছদঃ ২১৭৯. ফড়িং খাওয়া
৫০৯৯। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাতটি কিংবা ছয়টি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। আমরা তার সঙ্গে ফড়িংও খাই। সুফিয়ান, আবূ আওয়ালা ও ইসরাইল এরা আবূ ইয়াফুর ইবনু আওফার সুত্রে বর্ননা করেছেন সাতটি যুদ্ধে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০০ | 5100 | ۵۱۰۰

পরিচ্ছদঃ ২১৮০. অগ্নি পুজকদের বাসনপত্র ও মৃত জানোয়ার
৫১০০। আবূ আসিম (রহঃ) … আবূ সা’লাবা খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আমরা আহলে কিতাবের এলাকায় বাস করি। তাদের পাত্রে খাই এবং আমরা শিকারের এলাকায় বাস করি, তীর-ধনুকের সাহায্যে শিকার করি এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুর ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কুকুরের সাহায্যে শিকার করি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি যে বললে তোমরা আহলে কিতাবের ভুখণ্ডে থাক, অপারগ না হলে তুমি তাদের বাসন পত্রে খেও না যদি কোন উপায় না পাও তাহলে সেগুলো ধুয়ে তাতে খেয়ো। আর তুমি যে বললে তোমরা শিকারের অঞ্চলে বাস কর যদি তুমি তোমার তীরের দ্বারা যা শিকার করতে চাও সেখানে আল্লাহর নাম নাও এবং খাও। আর তুমি যা তোমার প্রশিক্ষন প্রাপ্ত কুকুরের সাহায্যে শিকার কর, সেখানে আল্লাহর নাম নাও এবং খাও। আর তুমি যা শিকার কর তোমার প্রশিক্ষণবিহীন কুকুরের সাহায্যে এবং তা যবাহ করার সুযোগ (অর্থাৎ জীবিত) পাও তবে তা (যবাহ করে) খাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০১ | 5101 | ۵۱۰۱

পরিচ্ছদঃ ২১৮০. অগ্নি পুজকদের বাসনপত্র ও মৃত জানোয়ার
৫১০১। মাক্কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খায়বার বিজয়ের দিন সন্ধায় মুসলমানগন আগুন জ্বালালেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা কি জন্য এ সব আগুন জালিয়েছ? তারা বললঃ গৃহ পালিত গাধার গোশত। তিনি বললেনঃ পাতিলের সব কিছু ফেলে দাও এবং পাতিলগুলো ভেঙ্গে ফেল। দলের একজন দাঁড়িয়ে বললঃ পাতিলের সব কিছু ফেলে দেই এবং পাতিলগুলো ধুয়ে নেই? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাও করতে পার।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০২ | 5102 | ۵۱۰۲

পরিচ্ছদঃ ২১৮১. যবাহের বস্তুর উপর বিস্‌মিল্লাহ্‌ বলা এবং ইচ্ছাকৃতভাবে যে বিসমিল্লাহ তরক করে। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ কেউ বিসমিল্লাহ্‌ বলতে ভুলে গেলে তাতে কোন দোষ নেই। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ যে সব প্রাণীর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারন করা হয়নি, তা থেকে আহার করো না। তা অবশ্যই গুনাহের কাজ। আর যে ব্যক্তি বিসমিল্লাহ বলেতে ভুলে যায়, তাতে গুনাহগার বলা যায় না। আল্লাহ আরো ইরশাদ করেনঃ শয়তানরা তাদের বন্ধুদের প্ররোচনা দেয় …… (শেষ পর্যন্ত
৫১০২। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে যুল হুলায়ফা নামক স্থানে ছিলাম। লোকজন ক্ষুধার্ত হয়ে পড়ে। তখন আমরা কিছু সংখ্যাক উট ও বকরী (গনীমত স্বরূপ) লাভ করি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সকলের পেছনে। সবাই তাড়াতাড়ি করল এবং পাতিল চড়িয়ে দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে এসে পৌছলেন। তখন তিনি পাতিলগুলো ঢেলে দিতে নির্দেশ দিলেন। পাতিলগুলো ঢেলে দেওয়া হল। তারপর তিনি (প্রাপ্ত গনীমত) বণ্টন করলেন। দশটি বকরী একটি উটের সমান গণ্য করলেন। এ সময়ে একটি উট পালিয়ে গেল। দলে অশ্বারোহীর সংখ্যা ছিল খুব কম। তারা উটটির পেছনে ছুটল কিন্তু তারা সেটি কাবু করতে ব্যর্থ হল। অবশেষে একজন উটটির প্রতি তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ উটটিকে থামিয়ে দিলেন।

তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল চতুষ্পদ প্রানীর মধ্যে বন্য জানোয়ারের ন্যায় পালিয়ে যাওয়ার স্বভাব আছে। কাজেই যখন কোন প্রানী তোমাদের থেকে পালিয়ে যায়, তখন তার সাথে তোমরা অনুরুপ ব্যবহার করবে। বর্ণনাকারী বলেন আমার দাদা বলেছেন, আমরা আশা করছিলাম কিংবা তিনি বলেছেন, আমরা আশংকা করছিলাম যে আগামীকাল আমরা তাদের সম্মুখীন হতে পারি। অথচ আমাদের নিকট কোন ছুরি নেই। তাহলে আমরা কি বাঁশের (বাখায়ী) দিয়ে যবাহ কববো? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে দেয় এবং তাতে বিসমিল্লাহ বলা হয় তা খাও। তবে দাঁত ও নখ দিয়ে নয়। এ সম্পর্কে আমি তোমাদের অবহিত করছি যে, দাঁত হল হাড় বিশেষ, আর নখ হল হাবশী সম্প্রদায়ের ছুরি।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৩ | 5103 | ۵۱۰۳

পরিচ্ছদঃ ২১৮২. যে জন্তুকে দেব-দেবী ও মূর্তির নামে যবাহ করা হয়
৫১০৩। মুআলা ইবনু আসাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘বালদাহ’ নামক স্থানে নিম্ন অঞ্চলে সায়েদ ইবনু আমর ইবনু নুফায়লের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। ঘটনাটি ছিল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর অহী নাযিল হওয়ার আগের। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দস্তরখান বিছানো হল। তাতে ছিল গোশত। তখন যায়েদ ইবনু আমর তা থেকে খেতে অস্বীকার করলেন। তারপর তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের দেব-দেবীর নামে যা যবাহ কর, তা থেকে আমি খাই না। আমি কেবল তাই খাই যা আল্লাহর নামে যবাহ করা হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৪ | 5104 | ۵۱۰٤

পরিচ্ছদঃ ২১৮৩. নবী (সাঃ) এর ইরশাদঃ আল্লাহর নামে যবাহ্‌ করবে
৫১০৪। কুতায়বা (রহঃ) … জুনদুব ইবনু সুফিয়ান বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কুরবানী উদযাপন করলাম। তখন কতক লোক সালাত (নামায/নামাজ)-এর আগেই তাদের কুরবানীর পশুগুলো যবাহ করে নিয়েছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) থেকে ফিরে যখন দেখলেন, তারা সালাত (নামায/নামাজ) এর আগেই যবাহ করে ফেলেছে। তখন বললেনঃ যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) এর আগে যবাহ করেছে সে সেন তার বদলে আরেকটি যবাহ করে নেয়। আর যে ব্যাক্তি আমাদের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা পর্যন্ত যবাহ করেনি। সে যেন এখন আল্লাহর নাম নিয়ে যবাহ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৫ | 5105 | ۵۱۰۵

পরিচ্ছদঃ ২১৮৪. যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে অর্থাৎ বাঁশ, পাথর ও লোহা
৫১০৫। মুহাম্মদ ইবনু আবূ বকর (রহঃ) … ইবনু কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ইবনু উমর (রাঃ) কে জানিয়েছেন যে তার পিতা (কা’ব) তাকে বলেছেনঃ তাদের একটি দাসী ‘সালা’ নামক স্থানে বকরী চরাত। এক সময় সে দেখতে পেল পালের একটি বকরী মারা যাচ্ছে। সে একটি পাথর ভেঙ্গে তা দিয়ে সেটি যবাহ করল। তখন তিনি (কা’ব) পরিবারের লোকজনকে বললেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করে আসার আগে তোমরা তা খেয়ো না। অথবা তিনি বললেনঃ আমি তাকে জিজ্ঞাসা করার এমন কাউকে পাঠিয়ে জেনে নেওয়ার আগে তোমরা তা খেয়ো না। এরপর তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন অথবা তিনি কাউকে তার নিকট পাঠালেন তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেটি খেতে আদেশ দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৬ | 5106 | ۵۱۰٦

পরিচ্ছদঃ ২১৮৪. যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে অর্থাৎ বাঁশ, পাথর ও লোহা
৫১০৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, কা’ব ইবনু মালিকের একটি দাসী বাজারের কাছে অবস্থিত ‘সালা’ নামক ছোট পাহাড়ের উপর তার বকরী চরাতো। তন্মধ্যে একটি বকরি মরণাপন্ন হয়ে পড়ে। সে এটিকে ধরল এবং পাথর ভেংগে তা দিয়ে সেটিকে যবাহ করে। তখন লোকজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ঘটনাটি উল্লেখ করলে তিনি তাদের তা খাওয়ার অনুমতি দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৭ | 5107 | ۵۱۰۷

পরিচ্ছদঃ ২১৮৪. যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে অর্থাৎ বাঁশ, পাথর ও লোহা
৫১০৭। আবদান (রহঃ) … রাফি (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাদের কাছে কোন ছুরি নেই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন যে জিনিস রক্ত প্রবাহিত করে এবং যার উপর আল্লাহর নাম নেওয়া হয়, তা খাও। তবে দাঁত ও নখ দিয়ে নয়। নখ হল হাবশীদের ছুরি, আর দাঁত হল হাড়। তখন একটি উট পালিয়ে গেল। তীর নিক্ষেপ করে সেটিকে আটকানো হল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল উটৈর মধ্যে বন্য জন্তুর মত পালিযে যাওয়ার অভ্যাস আছে। কাজেই তন্মধ্যে কোনটি যদি তোমাদের আয়ত্বের বাইরে চলে যায়, তাহলে তার সাথে এরুপ ব্যবহার কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৮ | 5108 | ۵۱۰۸

পরিচ্ছদঃ ২১৮৫. দাসী ও মহিলার যবাহকৃত জন্তু
৫১০৮। সাদকা (রহঃ) … কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে জনৈক মহিলা পাথরের সাহায্যে একটি বকরী যবাহ করেছিল। এ ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সেটি খাওয়ার নির্দেশ দেন। লায়স (রহঃ) নাফি (রহঃ) সুত্রে বলেনঃ তিনি জনৈক আনসারকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আবদুল্লাহ সম্পর্কে বলতে শুনেছেন যে, কা’ব (রাঃ) এর একটি দাসী……। পরবর্তী অংশ উক্ত হাদীসের অনুরূপ।

হাদিস নম্বরঃ ৫১০৯ | 5109 | ۵۱۰۹

পরিচ্ছদঃ ২১৮৫. দাসী ও মহিলার যবাহকৃত জন্তু
৫১০৯। ইসমাঈল (রহঃ) … জনৈক আনসারী থেকে তিনি মু’আয ইবনু সা’দ কিংবা সা’দ ইবনু মু’আয (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, কাব ইবনু মালিক (রাঃ) এর একটি দাসী ‘সালা’ পাহাড়ে বকরী চরাতো। বকরীগুলোর মধ্যে একটিকে মরে যাচ্ছে দেখে সে একটি পাথর দিয়ে সেটিকে যবাহ কবল। এই ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হল তিনি বললেনঃ সেটি খাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১০ | 5110 | ۵۱۱۰

পরিচ্ছদঃ ২১৮৬. দাঁত, হাড় ও নখের সাহায্যে যবাহ্‌ করা যাবে না
৫১১০। কাবীসা (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ খাও অর্থাৎ যা রক্ত প্রবাহিত করে তবে দাঁত ও নখের দ্বারা নয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১১ | 5111 | ۵۱۱۱

পরিচ্ছদঃ ২১৮৭. বেদুঈন ও তাদের মত লোকের যবাহকৃত জন্তু
৫১১১। মুহাম্মদ ইবনু উবায়দুল্লাহ (রহঃ) আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদল লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললঃ কিছু সংখ্যক মানুষ আমাদের নিকট গোশত নিয়ে আসে। আমরা জানিনা যে, পশুটির যবাহের সময় বিসমিল্লাহ বলা হয়েছিল কিনা। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরাই এতে বিসমিল্লাহ পড় এবং তা খাও। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ প্রশ্নকারী দলটি ছিল কুফর থেকে নতুন ইসলাম গ্রহনকারী।

ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ দ্বারাওয়ারদী (রহঃ) আলী (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আবূ খালিদ ও তুফাবী (রহঃ) অনুরুপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১২ | 5112 | ۵۱۱۲

পরিচ্ছদঃ ২১৮৮. আহলে কিতাবের যবাহকৃত জন্তু ও এর চর্বি। তারা দারুল হারবের হোক কিংবা না হোক। মহান আল্লাহর ইরশাদঃ আজ তোমাদের জন্য পবিত্র জিনিসসমূহ হালাল করে দেওয়া হল। আহলে কিতাবের খাবার তোমাদের জন্য হালাল, তোমাদের খাবারও তাদের জন্য হালাল (মায়িদাহ: ৫) যুহরী (র) বলেছেনঃ আরব এলাকার খৃস্টানদের যবাহকৃত পশুতে কোন দোষ নেই। তবে তুমি যদি তাকে গায়রুল্লাহর নাম পড়তে শোন, তাহলে খেয়ো না। আর যদি না শুনে থাক, তাহলে মনে রেখ যে, আল্লাহ তাদের কুফরীকে জেনে নেওয়া সত্ত্বেও অনুরূপ বর্ণিত হয়েছে। হাসান ও হবরাহীম বলেছেনঃ খাতনা বিহীন লোকের যবাহকৃত পশুতে কোন দোষ নেই।
৫১১২। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা খায়বরের একটি কিল্লা অবরোধ করে রেখেছিলাম। এমন সময়ে এক ব্যাক্তি চর্বি ভর্তি একটি থলে ছুড়ে মারল। আমি সেটি তুলে নেয়ার জন্য ছুটে গেলাম। ফিরে তাকিয়ে দেখি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাকে দেখে আমি লজ্জিত হয়ে গেলাম। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, তাদের খাবার দ্বারা তাদের যবাহকৃত জন্তু বুঝান হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৩ | 5113 | ۵۱۱۳

পরিচ্ছদঃ ২১৮৯. যে জন্তু পালিয়ে যায় তার হুকুম বন্য জন্তুর মত। ইবন মাসঊদ (রা) ও এ ফতোয়া দিয়েছেন। ইবন আব্বাস (রা) বলেছেনঃ তোমার অধীনস্থ যে জন্তু তোমাকে অক্ষম করে দেয়, সে শিকারের ন্যায়। যে উট কুয়ায় পড়ে যায়। তার যে স্থানে তোমার পক্ষে সম্ভব হয়, আঘাত (যবাহ) কর। আলী ইবন উমর এবং আয়েশা (রাঃ)ও এইমত পোষন করেন।
৫১১৩। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আগামী দিন শত্রুর সন্মিখীন হব, অথচ আমাদের কাছে কোন ছুরি নেই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি ত্বরান্বিত করবে কিংবা তিনি বলেছেনঃ তাড়াতাড়ি (যবাহ) করবে। যা রক্ত প্রবাহিত করে এবং এতে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়, তা খাও। তবে দাঁত ও নখ দ্বারা নয়। তোমাকে বলছিঃ দাঁত হল হাড় আর নখ হল হাবশীদের ছুরি। আমরা কিছু উট ও কস্তুরী গনীমত হিসাবে পেলাম। সেগুলো থেকে একটি উট পালিয়ে যায়। একজন সেটির উপর তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ উটটি আটকিয়ে দেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল গৃহপালিত উটের মধ্যে বন্যপশুর স্বভাব রয়েছে। কাজেই তন্মধ্যে কোনটি যদি তোমাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়, তা হলে তার সাথে অনুরুপ ব্যবহার করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৪ | 5114 | ۵۱۱٤

পরিচ্ছদঃ ২১৯০. নহর ও যবাহ করা। আতা (র) এর উদ্ধৃতি দিয়ে উবন জুবায়জ বলেছেন, গলা বা সিনা ব্যতীত যবাহ কিংবা নহর করা যায় না। (আতা (র) বলেন) আমি বললামঃ যে জন্তুকে যবাহ করা হয় সেটিকে আমি যদি নহর করি, তাহলে যথেষ্ট হবে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। কেননা, আল্লাহ তা’আলা গরুকে যবাহ করার কথা উল্লেখ করেছেন। কাজেই যে জন্তুকে নহর করা হয়, তা যদি তুমি যবাহ কর, তবে তা জায়িয। অবশ্য আমার নিকট নহর করাই অধিক পছন্দনীয়। যবাহ অর্থ হচ্ছে রগগুলোকে কেটে দেওয়া। তিনি বললেনঃ আমি তা মনে করি না। তিনি বললেনঃ নাফি (র) আমাকে অবহিত করেছেন যে, ইবন উমর (রা) ‘নাখ’ থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেনঃ ‘নাখ’ হল হাড়ের ভিতরের সাদা রগ কেটে দেওয়া এবং তারপর ছেড়ে দেওয়া, যাতে জন্তুটি মারা যায়। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ স্মরণ কর, মূসা যখন তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ আল্লাহ তোমাদের গরু যবাহ করতে আদেশ দিচ্ছেন …… যদিও তারা যবাহ করতে উদ্যত ছিল না তবুএ তারা সেটিকে যবাহ করল”। (বাকারঃ ৬৭-৭১) পর্যন্ত। সাঈদ (র) ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেনঃ গলা ও সিনার মধ্যে জবাহ করাকে জবাহ বলে। ইবন উমর, ইবন ‌আব্বাস ও আনাস (রা) বলেনঃ যদি মাথা কেটে ফেলে তাতে দোষ নেই।
৫১১৪। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আসমা বিনত আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমরা একটি ঘোড়া নহর করে তা খেয়েছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৫ | 5115 | ۵۱۱۵

পরিচ্ছদঃ ২১৯০. নহর ও যবাহ করা। আতা (র) এর উদ্ধৃতি দিয়ে উবন জুবায়জ বলেছেন, গলা বা সিনা ব্যতীত যবাহ কিংবা নহর করা যায় না। (আতা (র) বলেন) আমি বললামঃ যে জন্তুকে যবাহ করা হয় সেটিকে আমি যদি নহর করি, তাহলে যথেষ্ট হবে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। কেননা, আল্লাহ তা’আলা গরুকে যবাহ করার কথা উল্লেখ করেছেন। কাজেই যে জন্তুকে নহর করা হয়, তা যদি তুমি যবাহ কর, তবে তা জায়িয। অবশ্য আমার নিকট নহর করাই অধিক পছন্দনীয়। যবাহ অর্থ হচ্ছে রগগুলোকে কেটে দেওয়া। তিনি বললেনঃ আমি তা মনে করি না। তিনি বললেনঃ নাফি (র) আমাকে অবহিত করেছেন যে, ইবন উমর (রা) ‘নাখ’ থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেনঃ ‘নাখ’ হল হাড়ের ভিতরের সাদা রগ কেটে দেওয়া এবং তারপর ছেড়ে দেওয়া, যাতে জন্তুটি মারা যায়। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ স্মরণ কর, মূসা যখন তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ আল্লাহ তোমাদের গরু যবাহ করতে আদেশ দিচ্ছেন …… যদিও তারা যবাহ করতে উদ্যত ছিল না তবুএ তারা সেটিকে যবাহ করল”। (বাকারঃ ৬৭-৭১) পর্যন্ত। সাঈদ (র) ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেনঃ গলা ও সিনার মধ্যে জবাহ করাকে জবাহ বলে। ইবন উমর, ইবন ‌আব্বাস ও আনাস (রা) বলেনঃ যদি মাথা কেটে ফেলে তাতে দোষ নেই।
৫১১৫। ইসহাক (রহঃ) … আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে আমরা একটি ঘোড়া যবাহ করেছি। তখন আমরা মদিনায় থাকতাম। পরে আমরা সেটি খেয়েছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৬ | 5116 | ۵۱۱٦

পরিচ্ছদঃ ২১৯০. নহর ও যবাহ করা। আতা (র) এর উদ্ধৃতি দিয়ে উবন জুবায়জ বলেছেন, গলা বা সিনা ব্যতীত যবাহ কিংবা নহর করা যায় না। (আতা (র) বলেন) আমি বললামঃ যে জন্তুকে যবাহ করা হয় সেটিকে আমি যদি নহর করি, তাহলে যথেষ্ট হবে কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। কেননা, আল্লাহ তা’আলা গরুকে যবাহ করার কথা উল্লেখ করেছেন। কাজেই যে জন্তুকে নহর করা হয়, তা যদি তুমি যবাহ কর, তবে তা জায়িয। অবশ্য আমার নিকট নহর করাই অধিক পছন্দনীয়। যবাহ অর্থ হচ্ছে রগগুলোকে কেটে দেওয়া। তিনি বললেনঃ আমি তা মনে করি না। তিনি বললেনঃ নাফি (র) আমাকে অবহিত করেছেন যে, ইবন উমর (রা) ‘নাখ’ থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেনঃ ‘নাখ’ হল হাড়ের ভিতরের সাদা রগ কেটে দেওয়া এবং তারপর ছেড়ে দেওয়া, যাতে জন্তুটি মারা যায়। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেনঃ স্মরণ কর, মূসা যখন তার সম্প্রদায়কে বলেছিলঃ আল্লাহ তোমাদের গরু যবাহ করতে আদেশ দিচ্ছেন …… যদিও তারা যবাহ করতে উদ্যত ছিল না তবুএ তারা সেটিকে যবাহ করল”। (বাকারঃ ৬৭-৭১) পর্যন্ত। সাঈদ (র) ইবন আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেনঃ গলা ও সিনার মধ্যে জবাহ করাকে জবাহ বলে। ইবন উমর, ইবন ‌আব্বাস ও আনাস (রা) বলেনঃ যদি মাথা কেটে ফেলে তাতে দোষ নেই।
৫১১৬। কুতায়বা (রহঃ) … আসমা বিনত আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে আমরা একটি ঘোড়া নহর করেছি। এরপর তা খেয়েছি। নহর কথাটির বর্ণনা এ সঙ্গে হিশামের সূত্র দিয়ে ওয়াকী ও ইবনু উয়ায়না অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৭ | 5117 | ۵۱۱۷

পরিচ্ছদঃ ২১৯১. পশুর অংগহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারী করা মাকরূহ
৫১১৭। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … হিশাম ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি আনাস (রাঃ) এর সঙ্গে হাকাম ইবনু আইয়্যুবের কাছে গেলাম। তখন আনাস (রাঃ) দেখলেন, কয়েকটি বালক, কিংবা বর্ণনাকারী বলেছেন কয়েকজন তরুণ একটি মুরগি বেঁধে তার প্রতি তীর নিক্ষেপ করছে। আনাস (রাঃ) বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবন্তকে বেধে এভাবে তীর নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৮ | 5118 | ۵۱۱۸

পরিচ্ছদঃ ২১৯১. পশুর অংগহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারী করা মাকরূহ
৫১১৮। আহমাদ ইবনু ইয়াকুব (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদের কাছে গিয়েছিলেন। এ সময় ইয়াহইয়া পরিবারের একটি বালক একটি মুরগীকে বেঁধে তার প্রতি তীর নিক্ষেপ করছিল। ইবনু উমর (রাঃ) মুরগীটির দিকে এগিয়ে গিয়ে সেটি মুক্ত করে দিলেন। তারপর মুরগী ও বালকটিকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে গিয়ে বললেনঃ তোমরা তোমাদের বালকদের হত্যার উদ্দেশ্যে এভাবে বেঁধে পাখি মারতে বাধা দিও। কেননা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছিঃ তিনি হত্যার উদেশ্যে জন্তু জানোয়ার বেধে তীর নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১১৯ | 5119 | ۵۱۱۹

পরিচ্ছদঃ ২১৯১. পশুর অংগহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারী করা মাকরূহ
৫১১৯। আবূ নুমান (রহঃ) … সাঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বললেনঃ আমি ইবনু উমর (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। এরপর আমরা একদল তরুণ, কিংবা তিনি বলেছেন, একদল মানুষের কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় দেখলাম, তারা একটি মুরগি বেধে তার প্রতি তীর ছুড়ছে। তারা যখন ইবনু উমর (রাঃ) কে দেখতে পেল, তখন তারা তা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল। ইবনু উমর (রাঃ) বললেনঃ এ কাজ কে করেছে? এ কাজ যে করে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার উপর অভিশাপ দিয়েছেন।

শুবা (রহঃ) থেকে সুলায়মান অনুরূপ বর্ননা করেছেন। মিনহাল ইবনু উমার (রাঃ) এর সুত্রে বলেন, যে ব্যাক্তি পশুর অঙ্গহানি ঘটায় তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিসম্পাত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২০ | 5120 | ۵۱۲۰

পরিচ্ছদঃ ২১৯১. পশুর অংগহানি করা, বেঁধে তীর দ্বারা হত্যা করা ও চাঁদমারী করা মাকরূহ
৫১২০। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে যে তিনি লুটতরাজ ও অঙ্গহানি ঘটাতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২১ | 5121 | ۵۱۲۱

পরিচ্ছদঃ ২১৯২. মুরগীর গোশত
৫১২১। ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ মূসা আশ-আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মুরগীর গোশত খেতে দেখেছি।

আবূ মা’মার (রহঃ) … যাহদাম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) এর কাছে ছিলাম। জারমের এ গোত্র ও আমাদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ছিল। আমাদের কাছে খাবার আনা ছিল। তাতে ছিল মোরগের গোশত। দলের মধ্যে লালচে রংয়ের এক ব্যাক্তি বসা ছিল। সে খাবারের দিকে অগ্রসর হল। আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) তখন বলেনঃ এগিয়ে এসো, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মোরগের গোশত খেতে দেখেছি। সে বললঃ আমি এটিকে এমন কিছু খেতে দেখেছি, যে কারণে তা খেতে আমি অপছন্দ করি। তখন আমি কসম করেছি যে, আমি তা খাব না। তিনি বললেনঃ এগিয়ে এসো, আমি তোমাকে জানাবো। কিংবা তিনি বলেছেন, আমি তোমাদের কাছে হাদীস বর্ননা করবো।

আমি আশআরীদের এক দল সহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। এরপর আমি তার সামনে এসে উপস্থিত হই যখন তিনি ছিলেন রাগান্বিত। তখন তিনি বণ্টন করছিলেন সাদাকার কিছু জানোয়ার। আমরা তার কাছে সাওয়ারী চাইলাম। তখন তিনি কসম করে বললেনঃ আমাদের কোন সাওসারী দিবেন না এবং বললেনঃ তোমাদের সাওয়ারীর জন্য দিতে পারি এমন কোন জন্তু আমার কাছে নেই। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গনীমতের কিছু উট আনা হল। তিনি বললেনঃ আশআরীগণ কোথায়? আশআরীগণ কোথায়?

আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) বলেনঃ এরপর তিনি আমাদের সাদাচুল বিশিষ্ট বলিষ্ট পাঁচটি উট দিলেন। আমরা কিছু দুরে গিয়ে অবস্থান করলাম। তখন আমি আমার সঙ্গীদের বললাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কসমের কথা ভুলে গিয়েছিলেন। আল্লাহর কসম যদি আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার কসমের ব্যাপারে গাফিল রাখি, তাহলে আমরা কোনদিন সফলকাম হবো না। কাজেই আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ফিরে গিয়ে তাকে বলা হলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আপনার নিকট সাওয়ায়ী চেয়েছিলাম তখন আপনি আমাদের সাওসারী দেবেন না বলে কসম করেছিলেন। আমাদের মনে হয় আপনি আপনার কসমের কথা ভুলে গিয়েছেন।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ নিজেই তো আমাদের সাওয়ারীর জানোয়ার দিয়েছেন। আল্লাহর কসম, আমি যখন কোন ব্যাপারে কসম করি এরপর কসমের বিপরীত কাজ তার চাইতে মঙ্গলজনক মনে করি, তখন আমি মঙ্গলজনক কাজটিই করি এবং কাফফারা দিয়ে হালাল হয়ে যাই।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২২ | 5122 | ۵۱۲۲

পরিচ্ছদঃ ২১৯৩. ঘোড়ার গোশত
৫১২২। হুমায়দী (রহঃ) … আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমরা একটি ঘোড়া নহর করলাম এবং সেটি খেলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৩ | 5123 | ۵۱۲۳

পরিচ্ছদঃ ২১৯৩. ঘোড়ার গোশত
৫১২৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খায়বারের দিনে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। আর ঘোড়ার গোশতের ব্যাপারে তিনি অনুমতি দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৪ | 5124 | ۵۱۲٤

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৪ সাদাকা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, খায়বরের দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৫ | 5125 | ۵۱۲۵

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। ইবনু মুবারক, উবায়দুল্লাহ (রহঃ) সুত্রে থেকে অনুরূপ বর্ননা করেছেন। উবায়দুল্লাহ সালিম সুত্রে আবূ উসামা (রহঃ) অনুরূপ বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৬ | 5126 | ۵۱۲٦

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৬। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খায়বারের বছর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুতআ (স্বল্পকালের জন্য বিয়ে করা) থেকে এবং গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৭ | 5127 | ۵۱۲۷

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৭। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ খায়বারের দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। তবে ঘোড়ার গোশত খেতে অনুমতি দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৮ | 5128 | ۵۱۲۸

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … বারাআ ও ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১২৯ | 5129 | ۵۱۲۹

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১২৯। ইসহাক (রহঃ) … আবূ সা’লাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহপালিত গাধার গোশত খাওয়া হারাম করেছেন। ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে যুবায়দী ও উকায়ল অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। যুহরী (রহঃ) এর বরাত দিয়ে মালিক, মা’মার, মাজিশুন, ইউনুস ও ইবনু ইসহাক বলেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁত বিশিষ্ট সকল হিংস্র জন্তু খেতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩০ | 5130 | ۵۱۳۰

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১৩০। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে জনৈক আগন্তুক এসে বললঃ গাধাগুলো খেয়ে ফেলা হচ্ছে। তারপর আরেকজন আগন্তক এসে বললঃ গাধাগুলো খেয়ে ফেলা হচ্ছে। তারপর আরেকজন আগন্তক এসে বললঃ গাধাগুলোকে নিঃশেষ করে দেওয়া হচ্ছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণাকারীকে ঘোষণার আদেশ দিলেন। সে লোকদের মধ্যে ঘোষণা দিলঃ আল্লাহ ও তার রাসুল তোমাদের গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। কেননা, এগুলো ঘৃন্য। তখন ডেকচিগুলোকে উলটিয়ে দেয়া হল, অথচ তাতে গোশত টগবগ করছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩১ | 5131 | ۵۱۳۱

পরিচ্ছদঃ ২১৯৪. গৃহপালিত গাধার গোশত। এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে সালামা (রা) বর্ণিত হাদীস আছে
৫১৩১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আমি জাবির ইবনু যায়দকে জিজ্ঞাসা করলামঃ মনে করে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গৃহপালিত গাধার গোশত খেতে নিষেধ করেছেন। তিনি বললেনঃ হাকাম ইবনু আমর গিফারীও বসরায় আমাদের কাছে এ কথা বলতেন। কিন্তু ইবনু আব্বাস (রাঃ) তা অস্বীকার করেছেন। তারপর তিনি এ আয়াতটি তিলাওয়াত করেছেনঃ “বলুন আমার প্রতি প্রত্যাদেশ করা হয়েছে তাতে, লোকজন যা আহার করে তার মধ্যে আমি কিছুই নিষিদ্ধ পাই না … শেষ পর্যন্ত। (সুরা আন-আমঃ ১৪৫)।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩২ | 5132 | ۵۱۳۲

পরিচ্ছদঃ ২১৯৫. মাংসভোজী সর্বপ্রকার হিংস্র জন্তু খাওয়া
৫১৩২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সা’লাবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দাঁত বিশিষ্ট সর্বপ্রকার হিংস্র জন্তু খেতে নিষেধ করেছেন। যুহরী (রহঃ) থেকে ইউনুস, মা’মার ইবনু উয়ায়না ও মাজিশুন অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৩ | 5133 | ۵۱۳۳

পরিচ্ছদঃ ২১৯৬. মৃত জন্তুর চামড়া
৫১৩৩। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি মৃত বকরীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা এটির চামড়াটি কেন কাজে লাগালে না? লোকজন উক্তি করলঃ এটি মৃত জানোয়ার। তিনি বললেনঃ শুধু তার খাওয়া হারাম করা হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৪ | 5134 | ۵۱۳٤

পরিচ্ছদঃ ২১৯৬. মৃত জন্তুর চামড়া
৫১৩৪। খাত্তাব ইবনু উসমান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি মৃত বকরীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ এটির মালিকের কি হল? যদি এটির চামড়া থেকে তারা উপকার গ্রহণ করত।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৫ | 5135 | ۵۱۳۵

পরিচ্ছদঃ ২১৯৭. কস্তুরী
৫১৩৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন আঘাত প্রাপ্ত লোক যে আল্লাহর পথে আঘাত পায়, সে কিয়ামতেয় দিন এমতাবস্থায় আসবে যে তার ক্ষত স্থান থেকে টকটকে লাল রক্ত ঝরছে এবং তার সুগন্ধি হবে কস্তুরীর সুগন্ধির ন্যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৬ | 5136 | ۵۱۳٦

পরিচ্ছদঃ ২১৯৭. কস্তুরী
৫১৩৬। মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সৎ সঙ্গী ও অসৎ সঙ্গীর উপমা হল কস্তুরী বহনকারী (আতর বিক্রেতা) ও কামারের হাপরের ন্যায়। মৃগ-কস্তুরী বহনকারী হযত তোমাকে কিছু দান করবে কিংবা তার কাছ থেকে তুমি কিছু খরিদ করবে কিংবা তার কাছ থেকে তুমি লাভ করবে সুবাস। আর কামারের হাপর হয়ত তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে কিংবা তুমি তার কাছ থেকে পাবে দুর্গন্ধ।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৭ | 5137 | ۵۱۳۷

পরিচ্ছদঃ ২১৯৮. খরগোশ
৫১৩৭। আল ওয়ালীদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা ‘মাররুয যাহরান’ নামক স্থানে একটি খরগোশ ধাওয়া করলাম। তখন লোকজনও এর পেছনে ছুটল এবং তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ল। এরপর আমি সেটিকে ধরতে সক্ষম হালাম এবং আবূ তালহার নিকই নিয়ে এলাম। তিনি এটিকে যবাহ করলেন এবং তার পিছনের অংশ কিংবা তিনি বলেছেন দুই রান নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পাঠিয়ে দিলেন এবং তিনি তা গ্রহণ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৮ | 5138 | ۵۱۳۸

পরিচ্ছদঃ ২১৯৯. গুঁই সাপ
৫১৩৮। ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ গুই সাপ আমি খাই না, আর হারামও বলিনা।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৩৯ | 5139 | ۵۱۳۹

পরিচ্ছদঃ ২১৯৯. গুঁই সাপ
৫১৩৯। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … খালিদ ইবনু ওয়ালীদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মায়মুনা (রাঃ) এর গৃহে গেলেন। সেখানে ভুনা করা গুই পেশ করা হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে দিকে হাত বাড়ালেন। এ সময় জনৈকা মহিলা বললঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানিয়ে দাও, তিনি কি জিনিস খেতে যাচ্ছেন। তখন তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটি গুই সাপ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনে হাত সরিয়ে নিলেন। খালিদ (রাঃ) বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটি কি হারাম? তিনি বললেনঃ না, হারাম নয়। তবে আমাদের অঞ্চলে এটি নেই। তাই আমি একে ঘৃণা করি। খালিদ (রাঃ) বলেনঃ এরপর আমি তা আমার দিকে এনে খেতে লাগলাম। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকিয়ে দেখছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪০ | 5140 | ۵۱٤۰

পরিচ্ছদঃ ২২০০. যদি জমাট কিংবা তরল ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর পড়ে
৫১৪০। হুমায়দী (রহঃ) … মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একটি ইঁদুর ঘিয়ের মধ্যে পড়ে মরে গিয়েছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ ইঁদুরটি এবং তার আশ-পাশের অংশ ফেলে দাও। এরপর তা খাও। সুফিয়ান (রহঃ) এর কাছে জিজ্ঞাসা করা হয় যে, মা’মার এ হাদীসটি যুহরী সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব, আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সনদে বর্ননা করেন। তিনি বললেনঃ আমি যুহরী (রহঃ) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি উবায়দুল্লাহ ইবনু আব্বাস, মায়মুনা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করছেন। তিনি আরো বলেন যে, আমি যুহরী থেকে উক্ত সনদে এ হাদীসটি একাধিকবার শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪১ | 5141 | ۵۱٤۱

পরিচ্ছদঃ ২২০০. যদি জমাট কিংবা তরল ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর পড়ে
৫১৪১। আবদান (রহঃ) … যুহরী (রহঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হয় জমাট কিংবা তরল তৈল বা ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর ইত্যাদি জানোয়ার পড়ে মারা গেলে তার কি হুকুম? তিনি বললেনঃ আমাদের কাছে উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ সূত্রে হাদীস পৌছেছে যে, ঘিয়ের মধ্যে পড়ে একটি ইদুর মারা গিয়েছিল, সেটির ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ দিয়েছিলেন, ইদুর ও এর সংলগ্ন অংশ ফেলে দিতে, এরপর তা ফেলে দেওয়া হয় এবং খাওয়া হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪২ | 5142 | ۵۱٤۲

পরিচ্ছদঃ ২২০০. যদি জমাট কিংবা তরল ঘিয়ের মধ্যে ইঁদুর পড়ে
৫১৪২। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … মায়মুনা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল এমন একটি ইঁদুর সম্পর্কে যা ঘিয়ের মধ্যে পড়েছিল। তখন তিনি বলেছিলেন ইঁদুরটি এবং তার আশপাশের অংশ ফেলে দাও এবং অবশিষ্ট অংশ খাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৩ | 5143 | ۵۱٤۳

পরিচ্ছদঃ ২২০১. পশুর মুখে চিহ্ন লাগানো ও দাগানো
৫১৪৩। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি জানোয়ারের মুখে চিহ্ন লাগানোকে মাকরূহ মনে করতেন। ইবনু উমর (রাঃ) আরো বলেছেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানোয়ারের মুখে প্রহার করতে নিষেধ করেছেন। আনকাযী (রহঃ) হানযালা সূত্রে কুতায়বা (রহঃ) অনুরূপ বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ تُضْرَبُ الصُّورَةُ অর্থাৎ মুখে প্রহার করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৪ | 5144 | ۵۱٤٤

পরিচ্ছদঃ ২২০১. পশুর মুখে চিহ্ন লাগানো ও দাগানো
৫১৪৪। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ আমি আমার এক ভাইকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম, যেন তিনি তাকে তাহনীক করেন অর্থাৎ খেজুর বা অন্য কিছু একবার চিবিয়ে তার মুখে দিয়ে দেন। এ সময়ে তিনি তার উট বাধার স্থানে ছিলেন। তখন আমি তাকে দেখলাম তিনি একটি বকরীর গায়ে চিহ্ন লাগাচ্ছেন। বর্ননাকারী বলেন আমার মনে হয় তিনি (হিশাম) বলেছেন বকরীর কানে চিহ্ন লাগাচ্ছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৫ | 5145 | ۵۱٤۵

পরিচ্ছদঃ ২২০২. কোন দল মালে গণীমত লাভ করার পর যদি তাদের কেউ সাথীদের অনুমতি ছাড়া কোন বকরী কিংবা উট যবাহ করে ফেলে তাহলে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) থেকে বর্ণিত রাফি (রা) এর হাদীস অনুসারে সেই গোশত খাওয়া যাবে না। চোরের যবাহকৃত পশুর ব্যাপারে তাউস ও ইকরিমা (র) বলেছেন, তা ফেলে দাও।
৫১৪৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললাম। আগামী দিন আমরা শক্রর মুকাবিলা করবো; অথচ আমাদের সঙ্গে কোন ছুরি নেই। তিনি বললেনঃ সতর্ক দৃষ্টি রাখো কিংবা তিনি বলেছেনঃ জলদি করো। যে জিনিস রক্ত বহায় এবং যাতে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়, সেটি খাও। যতক্ষন না সেটি দাত কিংবা নখ হয়। এ ব্যাপারে তোমাদের জানোাচ্ছি, দাঁত হলো হাড়, আর নখ হল হাবশীদের ছুরি। দলের দ্রুতগামী লোকেরা আগে বেড়ে গেল এবং গনীমতের মালামাল লাভ করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন লোকজনের পেছনে। তারা ডেকচি চড়িয়ে দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে তা উল্টিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিলেন, তারপর সেগুলো উল্টিয়ে দেয়া হল। এরপর তিনি তাদের মধ্যে মালে গনীমত বণ্টন করলেন এবং দশটি বকরীকে একটি উটের সমান গন্য করলেন। দলে অগ্রবর্তীদের কাছ থেকে একটি উট ছুটে গিয়েছিল। অথচ তাদের সঙ্গে কোন অশ্বারোহী ছিল না। এ অবস্থায় এক ব্যাক্তি উটটির প্রতি তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ উটটিকে থামিয়ে দিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল চতুষ্পদ জন্তুর মধ্যে বন্য পশুর স্বভাব রয়েছে। কাজেই, তন্মধ্যে কোনটি যদি এরুপ করে, তাহলে তার সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৬ | 5146 | ۵۱٤٦

পরিচ্ছদঃ ২২০৩. কোন দলের উট ছুটে গেলে তাদের কেউ যদি সেটিকে তাদের উপকারের উদ্দেশ্যে তীর নিক্ষেপ করে এবং হত্যা করে, তাহলে রাফি (রা) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হাদীস অনুযায়ী তা জায়েয
৫১৪৬। মুহাম্মাদ ইবনু সালাম (রহঃ) … রাফী ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন এক সফরে আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তখন উটগুলোর মধ্য থেকে একটি উট পালিয়ে যায়। তিনি বলেন তখন এক ব্যাক্তি সেটির প্রতি তীর নিক্ষেপ করলে আল্লাহ সেটিকে থামিয়ে দেন। তিনি বলেন এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ সকল পশুর মধ্যে বন্যপশুর চাঞ্চল্য আছে। সুতরাং তার মধ্যে যেটি তোমাদের উপর প্রবল হয়ে উঠলে সেটির সঙ্গে অনুরূপ ব্যবহার করো। তিনি বলেন আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা অনেক সময় যুদ্ধ অভিযানে বা সফরে থাকি, যবাহ করতে ইচ্ছা করি কিন্তু ছুরি থাকে না। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আঘাত করো এমন জিনিস দ্বারা যা রক্ত প্রবাহিত করে অথবা তিনি বলেছেনঃ এমন জিনিস দ্বারা যা রক্ত ঝরায় এবং যার উপরে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে সেটি খাও, তবে দাঁত ও নখ ব্যতীত। কেননা দাঁত হল হাড়, আর নখ হল হাবশীদের ছুরি।

২২০৪. পরিচ্ছেদঃ অনন্যোপায় ব্যক্তির খাওয়া। আল্লাহ তা’আলার বাণী: “হে মু’মিনগণ, তোমাদের আমি সেসব পবিত্র বস্তু দিয়েছি তা থেকে তোমরা আহার কর, এবং আল্লাহর নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। যদি তোমরা শুধু তাঁরই ইবাদত কর। নিশ্চয় আল্লাহ্‌ মৃত জন্তু, রক্ত, শূকর- মাংস এবং যার উপর আল্লাহর নাম ব্যতীত অন্যের নাম উচ্চারিত হয়েছে, তা তোমাদের হারাম করেছেন। কিন্তু যে অনন্যোপায় অথচ নাফরমান কিংবা সীমালংঘনকারী নয়, তার কোন পাপ হবে না ( ২: ১৭২-১৭৩)। আল্লাহ্‌ আরো বলেন: তোমরা আল্লাহর নিদর্শনে বিশ্বাসী হলে, যে জন্তুর উপর তাঁর নাম নেওয়া হয়েছে, তা আহার কর। তোমাদের কী হয়েছে যে, যাতে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে, তোমরা তা আহার করবে না? যা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ তা তিনি বিশেষভাবে-ই তোমাদের নিকট বিবৃত করেছেন তবে তোমরা নিরুপায় হলে তা আলাদা। অনেক অজ্ঞানতাবশত: নিজেদের খেয়াল-খুশী দ্বারা অবশ্যই অন্যকে বিপদগামী করে, আপনার প্রতিপালক সীমালংঘনকারীদের সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত (৬: ১১৮-১১৯)। আল্লাহ আরো বলেন: “বলুন, আমার প্রতি যে প্রত্যাদেশ হয়েছে তাতে লোকে যা আহার করে তার মধ্যে আমি কিছুই নিষিদ্ধ পাই না, মরা, বহমান রক্ত ও শূকরের মাংস ব্যতীত- কেননা, এটা অবশ্যই অপবিত্র”- অথবা যা অবৈধ, আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গের কারণে, “তবে কেউ অবাধ্য না হয়ে এবং সীমালংঘন না করে তা গ্রহণে নিরুপায় হলে, আপনার প্রতিপালক ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (৬: ১৪৫)।

আল্লাহ আরো বলেনঃ আল্লাহ তোমাদের যা দিয়েছেন তার মধ্যে যা বৈধ ও পবিত্র তা তোমরা আহার কর এবং তোমরা যদি কেবল আল্লাহরই ইবাদত কর, তবে তাঁর অনুগ্রহের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। আল্লাহ তো কেবল মরা, রক্ত, শূকর-মাংস এবং যা যবাহকালে আল্লাহর পরিবর্তে অন্যের নাম নেওয়া হয়েছে, তা-ই তোমাদের জন্য হারাম করেছেন। কিন্তু কেউ অন্যায়কারী কিংবা সীমালংঘনকারী না হয়ে অনন্যোপায় হলে, আল্লাহ তো ক্ষমাশীল, পরম দয়াল (১৬:১১৪-১১৫)।

কুরবানী অধ্যায় (৫১৪৭-৫১৭৪)

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৭ | 5147 | ۵۱٤۷

পরিচ্ছদঃ ২২০৫. কুরবানীর বিধান। ইবন উমর (রাঃ) বলেছেনঃ কুরবানী সুন্নাত এবং স্বীকৃত প্রথা
৫১৪৭। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাদের এ দিনে আমরা সর্ব প্রথম যে কাজটি করবো তা হল সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবো। এরপর ফিরে এসে আমরা কুরবানী করবো। যে ব্যাক্তি এভাবে তা আদায় করল সে আমাদের নীতি অনুসরণ করল। আর যে ব্যাক্তি আগেই যবাহ করল, তা এমন গোশতরুপে গন্য যা সে তার পরিবার পরিজনের জন্য আগাম ব্যবস্থা করল। এটা কিছুতেই কুরবানী বলে গন্য নয়। তখন আবূ বুরদা ইবনু নিয়ার (রাঃ) দাঁড়ালেন, আর তিনি (সালাত (নামায/নামাজ) এর) আগেই যবাহ করেছিলেন। তিনি বললেনঃ আমার নিকট একটি বকরীর বাচ্চা আছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাই যবাহ কর। তবে তোমার পরে আর কারোর পক্ষে তা যথেষ্ঠ হবে না।

মুতাররাফ বারা (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) এর পর যবাহ করল তার কুরবানি পূর্ন হলো এবং সে মুসলমানদের নীতি পালন করলো।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৮ | 5148 | ۵۱٤۸

পরিচ্ছদঃ ২২০৫. কুরবানীর বিধান। ইবন উমর (রাঃ) বলেছেনঃ কুরবানী সুন্নাত এবং স্বীকৃত প্রথা
৫১৪৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের আগে যবাহ করল সে নিজের জন্যই যবাহ করল। আর যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পর যবাহ করল। তার কুরবানী পূর্ন হল এবং সে মুসলমানদের নীতি অনুসরণ করল।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৪৯ | 5149 | ۵۱٤۹

পরিচ্ছদঃ ২২০৬. ইমাম কর্তৃক জনগণের মধ্যে কুরবাণীর পশু বন্টন
৫১৪৯। মু’আয ইবনু ফাযালা (রহঃ) … উকবা ইবনু আমির জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীগনের মধ্যে কতগুলো কুরবানীর পশু বণ্টন করলেন। তখন উকবা (রাঃ) এর ভাগে পড়ল একটি বকরীর বাচ্চা। উকবা (রাঃ) বলেন, তখন আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার ভাগে এসেছে একটি বকরীর বাচ্চা। তিনি বললেনঃ সেটিই কুরবানী করে নাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫০ | 5150 | ۵۱۵۰

পরিচ্ছদঃ ২২০৭. মুসাফির ও মহিলাদের কুরবানী করা
৫১৫০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে প্রবেশ করলেন। অথচ মক্কা প্রবেশ করার পূর্বেই সারিফ নামক স্থানে তার মাসিক শুরু হল। তখন তিনি কাঁদতে লাগলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার কি হয়েছে? মাসিক শুরু হয়েছে না কি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এটা তো এমন এক বিষয় যা আল্লাহ আদম (আলাইহিস সালাম) এর কন্যা সন্তানের উপর নির্ধারণ করে দিয়েছেন। সুতরাং তুমি আদায় করে যাও, হাজীগণ যা করে থাকে, তুমিও অনুরুপ করে যাও। তবে তুমি বায়তুল্লাহ তাওয়াফ করবে না। এরপর আমরা যখন মিনায় ছিলাম, তখন আমার কাছে গরুর গোশত নিয়ে আসা হল। আমি জিজ্ঞাসা করলাম এটা কি? লোকজন উত্তর করলো রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্ত্রীদের পক্ষ থেকে গরু কুরবানী করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫১ | 5151 | ۵۱۵۱

পরিচ্ছদঃ ২২০৮. কুরবানীর দিন গোশত খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা
৫১৫১। সাদাকা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কুরবানীর দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পূর্বে যবাহ করেছে, সে যেন পুনরায় যবাহ করে। তখন এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটাতো এমন দিন যাতে গোশত খাওয়ার প্রতি আকাঙ্ক্ষা হয়। তখন সে তার প্রতিবেশীদের কথাও উল্লেখ করল এবং বলল আমার কাছে এমন একটি বকরীর বাচ্চা আছে যেটি গোশতের দিক থেকে দুটি বকরী অপেক্ষাও উত্তম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে সেটিই কুরবানী করতে অনুমতি দিলেন। আনাস (রাঃ) বলেন আমি জানিনা, এ অনুমতি এই ব্যাক্তি ব্যতীত অন্যের বেলায় প্রযোজ্য কিনা? এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি ভেড়ার দিকে এগিয়ে গেলেন এবং সে দুটিকে যবাহ করলেন। লোকজন ক্ষুদ্র একটি বকরীর পালের দিকে উঠে গেল। এরপর ঐ গুলোকে বণ্টন করলো কিংবা তিনি বলেছেন সেগুলোকে তারা যবাহ করে টুকরা টুকরা করে কাটলো।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫২ | 5152 | ۵۱۵۲

পরিচ্ছদঃ ২২০৯. যারা বলে যে, ইয়াওমুননাহারই কুরবানীর দিন
৫১৫২। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কাল আবর্তিত হয়েছে তার সেই অবস্থানের উপর যেভাবে আল্লাহ আকাশসমূহ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন। বছর বার মাসের। তন্মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। তিনটি পরপর যুল কাদা, যূল-হাজ্জাহ ও মুহাররম। আরেকটি মুদার গোত্রের রজব মাস, সেটি জুমাদা ও শাবানের মাঝখানে। (এরপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেন) এটি কোন মাস? আমরা বললাম আল্লাহ ও তাঁর রাসুল অধিক জ্ঞাত। তখন তিনি নীরব রইলেন। এমন কি আমরা ধারণা করলাম যে, তিনি হয়ত এটিকে অন্য নামে আখ্যায়িত করবেন। তিনি বললেন এটি কি যুল-হাজ্জ মাস নয়? আমরা বললাম হ্যাঁ। তিনি আবার বললেনঃ এটি কোন শহর? আমরা বললাম আল্লাহ ও তার রাসুল অধিক জ্ঞাত। তিনি নীরব রইলেন এমন কি আমরা ভাবতে লাগলাম, হয়ত তিনি এটির জন্য কোন নাম রাখবেন। তিনি বললেনঃ এটি কি মক্কা নগর নয়? আমরা বললাম হ্যাঁ। তিনি বললেন এটি কোন দিন? আমরা বললাম আল্লাহ ও তাঁর রাসুল অধিক জ্ঞাত। তিনি নীরব রইলেন। এমনকি আমরা ধারনা করলাম যে হয়ত তিনি এর নামের পরিবর্তে অন্য নাম রাখবেন। তিনি বললেনঃ এটা কি কুরবানীর দিন নয়? আমরা উত্তর করলামঃ হ্যাঁ।

এরপর তিনি বললেনঃ তোমাদের রক্ত, তোমাদের ধন-সম্পদ, বর্ণনাকারী মুহাম্মাদ বলেনঃ সম্ভবত আবূ বাকরা (রাঃ) বলেছেন এবং তোমাদের ইজ্জত তোমাদের পরস্পরের উপর এমন সম্মানিত যেমন সম্মানিত তোমাদের এই দিন, তোমাদের এই শহর, তোমাদের এই মাস। অচিরেই তোমরা তোমাদের রবের সাক্ষাত লাভ করবে। তখন তিনি তোমাদের সম্পর্কে তোমাদের জিজ্ঞাসা করবেন। সাবধান! আমার পরে তোমরা পথভ্রষ্ট হয়ে ফিরে যেয়ো না। তোমাদের কেউ যেন কাউকে হত্যা না করে। মনে রেখ, উপস্থিত ব্যাক্তি যেন অনুপস্থিত ব্যাক্তির কাছে (আমার বানী) পৌছে দেয়। হয়ত যাদের কাছে পৌছানো হবে তাদের কেউ কেউ বর্তমানে যারা শুনেছে তাদের কারো চাইতে অধিক সংরক্ষণকারী হবে। রাবী মুহাম্মদ যখন এ হাদীস উল্লেখ করতেন তখন বলতেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্যই বলেছেন। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সাবধান, আমি কি পৌছে দিয়েছি? সাবধান, আমি কি পৌছে দিয়েছি?

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৩ | 5153 | ۵۱۵۳

পরিচ্ছদঃ ২২১০. ঈদগাহে নহর ও কুরবানী করা
৫১৫৩। মুহাম্মদ ইবনু আবূ বকর মুকাদ্দামী (রহঃ) … নাফি (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ (রাঃ) কুরবানী করার স্থানে কুরবানী করতেন। উবায়দুল্লাহ বলেনঃ অর্থাৎ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কুরবানী করার স্থানে (কুরবানী করতেন)।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৪ | 5154 | ۵۱۵٤

পরিচ্ছদঃ ২২১০. ঈদগাহে নহর ও কুরবানী করা
৫১৫৪। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদগাহে যবাহ করতেন এবং নহর করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৫ | 5155 | ۵۱۵۵

পরিচ্ছদঃ ২২১১. নবী (সাঃ) এর দুটি শিংবিশিষ্ট মেষ কুরবানী করা। সে দুটি মোটাতাজা ছিল বলেও উল্লেখিত হয়েছে। ইয়াহ্‌ইয়া ইবন সাঈদ (র) বলেছেন: আমি আবূ উমামা ইবন সাহল থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, মাদীনায় আমরা কুরবানীর পশুগুলোকে মোটাতাজা করতাজ এবং অন্য মুসলমানরাও (তাদের কুরবানীর পশু) মোটাতাজা করতেন।
৫১৫৫। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি মেষ দ্বারা কুরবানী আদায় করতেন। আমিও কুরবানী আদায় করতাম দুটি মেষ দিয়ে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৬ | 5156 | ۵۱۵٦

পরিচ্ছদঃ ২২১১. নবী (সাঃ) এর দুটি শিংবিশিষ্ট মেষ কুরবানী করা। সে দুটি মোটাতাজা ছিল বলেও উল্লেখিত হয়েছে। ইয়াহ্‌ইয়া ইবন সাঈদ (র) বলেছেন: আমি আবূ উমামা ইবন সাহল থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, মাদীনায় আমরা কুরবানীর পশুগুলোকে মোটাতাজা করতাজ এবং অন্য মুসলমানরাও (তাদের কুরবানীর পশু) মোটাতাজা করতেন।
৫১৫৬। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’টি সাদা কলো রংবিশিষ্ট শিংওয়ালা ভেড়ার দিকে এগিয়ে গেলেন এবং নিজ হাতে সে দুটিকে যবাহ করলেন। ইসমাঈল ও হাতিম ইবনু ওয়ারদান এ হাদীসটি আইউব, ইবনু সীরীন, আনাস (রাঃ) সুত্রে বর্ণনা করেছেন। আইউব থেকেও অনুরূপ বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৭ | 5157 | ۵۱۵۷

পরিচ্ছদঃ ২২১১. নবী (সাঃ) এর দুটি শিংবিশিষ্ট মেষ কুরবানী করা। সে দুটি মোটাতাজা ছিল বলেও উল্লেখিত হয়েছে। ইয়াহ্‌ইয়া ইবন সাঈদ (র) বলেছেন: আমি আবূ উমামা ইবন সাহল থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেন, মাদীনায় আমরা কুরবানীর পশুগুলোকে মোটাতাজা করতাজ এবং অন্য মুসলমানরাও (তাদের কুরবানীর পশু) মোটাতাজা করতেন।
৫১৫৭। আমর ইবনু খালিদ (রহঃ) … উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর পশু হিসাবে সাহাবীদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়ার জন্য তাকে এক পাল বকরী দান করেন। সেখান থেকে একটি বকরীর বাচ্চা অবশিষ্ট রয়ে গেলে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তা উল্লেখ করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি নিজে তা কুরবানী করে নাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৮ | 5158 | ۵۱۵۸

পরিচ্ছদঃ ২২১২. আবু বুরদাহকে সম্বোধন করে নবী (সাঃ) এর উক্তিঃ তুমি বকরীর বাচ্চাটি কুরবানী করে নাও। তোমার পরে অন্য কারোর জন্য এ অনুমতি থাকবে না
৫১৫৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ বুরদাহ (রাঃ) নামক আমার এক মামা সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পূর্বেই কুরবানী করেছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন তোমার বকরী কেবল গোশতের বকরী হল। তিনি বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার নিকট একটি ঘরে পোষা বকরীর বাচ্চা রয়েছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সেটাকে কুরবানী করে নাও। তবে তা তুমি ব্যতীত অন্য কারোর জন্য ঠিক হবে না। এরপর তিনি বললেন যে ব্যাক্তি; সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পুর্বে যবাহ করেছে, সে নিজের জন্যই যবাহ করেছে (কুরবানীর জন্য নয়) আর যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পর যবাহ করেছে তার কুরবানী পূর্ণ হয়েছে। আর সে মুসলমানদের নীতি-পদ্ধতি অনুসরনই করেছে।

শাবী ও ইবরাহীম থেকে উবায়দা (রহঃ) অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। হুরায়স সুত্রে শাবী থেকে ওয়াকী অনুরূপ বর্ণনা করেন। শাবী থেকে আসিম ও দাউদ আমার নিকট পাঁচ মাসের দুধের বকরীর বাচ্চা আছে বলে বর্ণনা করেছেনঃ আবূল আহওয়াস বলেনঃ মানসুর আমাদের কাছে দুই মাসের দুধের বাচ্চা আছে বলে বর্ণনা করেছেন ইবনু আউন বলেছেনঃ দুধের বাচ্চা।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৫৯ | 5159 | ۵۱۵۹

পরিচ্ছদঃ ২২১২. আবু বুরদাহকে সম্বোধন করে নবী (সাঃ) এর উক্তিঃ তুমি বকরীর বাচ্চাটি কুরবানী করে নাও। তোমার পরে অন্য কারোর জন্য এ অনুমতি থাকবে না
৫১৫৯। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবূ বুরদা (রাঃ) সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পুর্বে যবাহ করেছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন এটার বদলে আরেকটি যবাহ কর। তিনি বললেনঃ আমার কাছে একটি ছয়-সাত মাসের বকরীর বাচ্চা ব্যতীত কিছুই নেই। শু’বা বলেন, আমার ধারনা তিনি আরো বলেছেন যে, বকরীর বাচ্চাটি পূর্ন এক বছরের বকরীর চাইতে উত্তম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা হলে এটিকেই যবাহ কর। কিন্তু তোমার পরে অন্য কারোর জন্য কখনো এই অনুমতি থাকবে না। হাতিম ইবনু ওয়ারদান এ হাদীসটি আইউব, মুহাম্মাদ, আনাস (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে (দুধের বাচ্চা) শব্দে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬০ | 5160 | ۵۱٦۰

পরিচ্ছদঃ ২২১৩. কুরবানীর পশু নিজ হাতে যবাহ করা
৫১৬০। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি সাদা-কালো বর্ণের ভেড়া দ্বারা কুরবানী করেছেন। তখন আমি তাকে দেখতে পাই তিনি ভেড়া দু-টোর পার্শ্বদেশে পা রেখে বিসমিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার পড়ে নিজের হাতে সে দুটোকে যবাহ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬১ | 5161 | ۵۱٦۱

পরিচ্ছদঃ ২২১৪. অন্যের কুরবানীর পশু যবাহ করা। জনৈক ব্যক্তি ইবন উমর (রাঃ) কে কুরবানীর পশুর (উটের) ব্যাপারে সহযোগীতা করেছিল। আবূ মূসা (রহঃ) তার কন্যাদের আদেশ করেছিলেন, তারা যেন নিজেদের হাতে কুরবানী করে।
৫১৬১। কুতায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন সারিফ নামক স্থানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে এলেন। সে সময় আমি কাঁদছিলাম। তিনি বললেনঃ তোমার কি হল? তুমি কি ঋতুমতী হয়ে পড়েছ? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এটাতো এমন এক বিষয় যা আল্লাহ আদম-কন্যাদের উপর নির্ধারণ করে রেখেছেন। কাজেই হাজীগণ যে সকল কাজ আদায় করে তুমিও তা আদায় কর। তবে তুমি বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করবে না। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সহধর্মীণীগণের পক্ষ থেকে গরু কুরবানী করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬২ | 5162 | ۵۱٦۲

পরিচ্ছদঃ ২২১৫. সালাত (ঈদের) আদায়ের পরে যবাহ করা
৫১৬২। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে খুতবা দেওয়ার সময় বলতে শুনেছি আমাদের আজকের এই দিনে সর্ব প্রথম আমরা যে কাজটি করবো তা হল সালাত (নামায/নামাজ) আদায়। এরপর আমরা ফিরে গিয়ে কুরবানী করবো। যে ব্যাক্তি এভাবে করবে সে আমাদের সুন্নাতকে অনুসরণ করবে। আর যে ব্যাক্তি পূর্বেই যবাহ করে তা তার পরিবার পরিজনের জন্য অগ্রিম গোশত (হিসেবে গন্য), তা কিছুতেই কুরবানী বলে গণ্য নয়। তখন আবূ বুরদা (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পূর্বেই যবাহ করে ফেলেছি এবং আমার কাছে একটি বকরীর বাচ্চা আছে। যেটি পূর্ণ এক বছরের বকরীর চাইতে উত্তম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি সেটিকে কুরবানী কর। তোমার পরে এ নিয়ম আর কারো জন্য প্রযোজ্য হবে না কিংবা তিনি বলেছেনঃ আদায় যোগ্য হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৩ | 5163 | ۵۱٦۳

পরিচ্ছদঃ ২২১৬. যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের পূর্বে যবাহ করে সে যেন পুনরায় যবাহ করে
৫১৬৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পূর্বে যবাহ করেছে সে যেন পূনরায় যবাহ করে। তখন এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বললঃ এটা তো এমন দিন যে দিন গোশত খাওয়ার আগ্রহ হয়। সে তার প্রতিবেশীদের অভাবের কথাও উল্লেখ করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেন তার ওজর অনুধাবন করলেন। লোকটি বলল আমার কাছে এমন একটি বকরীর বাচ্চা রয়েছে সেটি দুটি গোশতবহুল বকরী অপেক্ষা উত্তম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন তাকে সেটি কুরবানী করার অনুমতি দিলেন। (বর্ননাকারী বলেনঃ) আমি জানিনা, এ অনুমতি অন্যদের পর্যন্ত পৌছেছে কি না। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভেড়া দু টির দিকে ঝুকলেন অর্থাৎ তিনি সে দুটিকে যবাহ করলেন। এরপর লোকজন বকরীয় একটি ক্ষুদ্র পালের দিকে গেল এবং সেগুলোকে যবাহ করল।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৪ | 5164 | ۵۱٦٤

পরিচ্ছদঃ ২২১৬. যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের পূর্বে যবাহ করে সে যেন পুনরায় যবাহ করে
৫১৬৪। আদম (রহঃ) … জুনদুব ইবনু সুফিয়ান বাজালী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি কুরবানীর দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তিনি বললেনঃ যে ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের পুর্বে যবাহ করেছে সে যেন এর স্থলে আবার যবাহ করে। আর যে যবাহ করেনি, সে যেন যবাহ করে নেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৫ | 5165 | ۵۱٦۵

পরিচ্ছদঃ ২২১৬. যে ব্যক্তি সালাত আদায়ের পূর্বে যবাহ করে সে যেন পুনরায় যবাহ করে
৫১৬৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে বললেনঃ যে ব্যাক্তি আমাদের ন্যায় সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে আমাদের কিবলাকে কিবলা বলে গ্রহন করে সে যেন (ঈদের সালাত (নামায/নামাজ) শেষ না করা পর্যন্ত যবাহ না করে। তখন আবূ বুরদা ইবনু নিয়ার (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আমিতো যবাহ করে ফেলেছি। তিনি উত্তর দিলেনঃ এটি এমন জিনিস না যা তুমি জলদী করে ফেলেছ। আবূ বুরদা (রাঃ) বললেনঃ আমার কাছে একটি কম বয়সী বকরী আছে। সেটি পূর্ণ বয়স্ক দুটি বকরীর চাইতে উত্তম। আমি কি সেটি যবাহ করতে পারি? তিনি উত্তর দিলেন হ্যাঁ। তবে তোমার পরে অন্য কারো পক্ষে তা যবাহ করা যথেষ্ট হবে না। আমের (রহঃ) বলেনঃ এটি হল তার উত্তম কুরবানী।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৬ | 5166 | ۵۱٦٦

পরিচ্ছদঃ ২২১৭. যবাহের পশুর পার্শ্বদেশ পা দিয়ে চেপে ধরা
৫১৬৬। হাজাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি শিং বিশিষ্ট সাদা-কালো রং এর ভেড়া কুরবানী করতেন। তিনি পশুগুলোর পার্শ্বদেশ তার পা দিয়ে চেপে ধরে সেগুলোকে নিজ হাতে যবাহ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৭ | 5167 | ۵۱٦۷

পরিচ্ছদঃ ২২১৮. যবাহ করার সময় “আল্লাহু আকবার” বলা
৫১৬৭। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি সাদা-কালো বর্ণের শিংবিশিষ্ট ভেড়া কুরবানী করেন। তিনি ভেড়া দুটির পার্শ্বদেশে তার কদম মুবারক স্থাপন করে বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে নিজ হাতেই সেই দুটিকে যবাহ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৮ | 5168 | ۵۱٦۸

পরিচ্ছদঃ ২২১৯. যবাহ করার জন্য কেউ যদি হারামে কুরবানীর পশু পঠিয়ে দেয়, তাহলে তার উপর ইহরামের বিধান থাকে না
৫১৬৮। আহমাদ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … মাসরুক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আয়িশা (রাঃ) এর কাছে এসে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন হে উম্মুল মুমিনীন! কোন ব্যাক্তি যদি কাবার উদ্দেশ্যে হাদী (কুরুবানীর পশু) পাঠিয়ে দেয় এবং নিজে আপন শহরে অবস্থান করে নির্দেশ দেয় যে, তার হাদীকে যেন মালা পরিয়ে নেওয়া হয়, তাহলে সে দিন থেকে লোকদের হালাল হওয়া পর্যন্ত কি সেই ব্যাক্তির ইহরাম অবস্থায় থাকতে হবে? মাসরুক বলেনঃ তখন আমি পর্দার আড়াল থেকে তার [আয়িশা (রাঃ)] হাতের উপর হাত মারার আওয়াজ শুনলাম। তিনি বললেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীর (কুরবানীর পশু) গলায় রশি পাকিয়ে পরিয়ে দিতাম। এরপর তিনি হাদীকে কাবার উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দিতেন। তখন স্বামী-স্ত্রীর বৈধ কাজ লোকেরা ফিরে আসা পর্যন্ত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর ইহা হারাম হতো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৬৯ | 5169 | ۵۱٦۹

পরিচ্ছদঃ ২২২০. কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু পরিমাণ আহার করা যাবে, আর কতটুকু পরিমান সঞ্চিত রাখা যাবে
৫১৬৯। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে আমরা মদিনায় ফিরে আসা পর্যন্ত কুরবানীর গোশত জমা করে রাখতাম। রাবী সুফিয়ান ইবনু উয়ায়না একাধিকবার لُحُومَ الأَضَاحِيِّ এর স্থলে لُحُومَ الْهَدْىِ বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭০ | 5170 | ۵۱۷۰

পরিচ্ছদঃ ২২২০. কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু পরিমাণ আহার করা যাবে, আর কতটুকু পরিমান সঞ্চিত রাখা যাবে
৫১৭০। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বর্ণনা করেন যে, তিনি (দীর্ঘ দিন) বাইরে ছিলেন, পরে ফিরে আসলে তার সামনে গোশত পরিবেশন করা হল। তিনি বললেনঃ এটি কি আমাদের কুরবানীর গোশত? এরপর তিনি বললেনঃ এটি সরিয়ে নাও, আমি তা খাব না। তিনি বলেন এরপর আমি উঠে গেলাম এবং ঘর থেকে বেরিয়ে আমার ভাই আবূ কাতাদা ইবনু নুমান এর নিকট এলাম। আবূ কাতাদা (রাঃ) ছিলেন তার বৈপিত্রেয় ভাই এবং তিনি ছিলেন বদরী সাহাবী। তিনি বলেন, এরপর আমি তার কাছে ব্যাপারটি উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ তোমার অনুপহিস্থিতে এরুপ বিধান জারী হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭১ | 5171 | ۵۱۷۱

পরিচ্ছদঃ ২২২০. কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু পরিমাণ আহার করা যাবে, আর কতটুকু পরিমান সঞ্চিত রাখা যাবে
৫১৭১। আবূ আসিম (রহঃ) … সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যাক্তি কুরবানী করেছে, সে যেন তৃতীয় দিবসে এমতাবস্থায় সকাল অতিবাহিত না করে যে, তার ঘরে কুরবানীর গোশত কিছু পরিমান অবশ্যই থাকে। এরপর যখন পরবর্তী বছর আসল, তখন সাহাবীগন বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা কি সে রূপ করবো যে রূপ গত বছর করেছিলাম? তখন তিনি বললেনঃ তোমরা নিজেরা খাও অন্যকে খাওয়াও এবং সঞ্চয় করে রাখ কেননা, গত বছর তো মানুষের মধ্যে ছিল অভাব অনটন। তাই আমি চেয়েছিলাম যে, তোমরা তাতে সাহায্য কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭২ | 5172 | ۵۱۷۲

পরিচ্ছদঃ ২২২০. কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু পরিমাণ আহার করা যাবে, আর কতটুকু পরিমান সঞ্চিত রাখা যাবে
৫১৭২। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, মদিনায় অবস্থানের সময় আমরা কুররানীর গোশতের মধ্যে লবন মিশ্রিত করে রেখে দিতাম। এরপর তা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে পেশ করতাম। তিনি বলতেনঃ তোমরা তিন দিনের পর খাবে না। তবে এটি জরুরী নয়। বরং তিনি চেয়েছেন যে, তা থেকে যেন অন্যদের খাওয়ান হয়। আল্লাহ অধিক অবগত।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৩ | 5173 | ۵۱۷۳

পরিচ্ছদঃ ২২২০. কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু পরিমাণ আহার করা যাবে, আর কতটুকু পরিমান সঞ্চিত রাখা যাবে
৫১৭৩। হিব্বান ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু আযহাবের আযাদকৃত দাস আবূ উবায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর সঙ্গে কুরবানীর ঈদের দিন ঈদগাহে হাযির ছিলেন। উমর (রাঃ) খুৎবার পুর্বে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। এরপর সমবেত জনতার সামনে খুৎবা দেন। তখন তিনি বলেন হে লোক সকল! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এই দুই ঈদের দিনে সিয়াম পালন করতে নিষেধ করেছেন। তন্মধ্যে একটি তো হল তোমাদের জন্য তোমাদের সিয়াম ভংগ করার দিন (অর্থাৎ ঈদুল ফিতর)। আর অপরটি হল এমন দিন যে দিন তোমরা তোমাদের কুরবানীর পশুর গোশত আহার করবে।

আবূ উবায়দ বলেনঃ এরপর আমি উসমান ইবনু আফফান (রাঃ) এর সময়ও হাযির হয়েছি। সেদিন ছিল জুমুআর দিন। তিনি খুতবা দানের আগে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এরপর তিনি খুতবা দিতে গিয়ে দাঁড়িয়ে বললেনঃ হে লোক সকল! এটি এমন দিন যে দিন তোমাদের জন্য দুটি ঈদ একত্রিত হয়ে গেছে। কাজেই তোমাদের মধ্যে আওয়ালী (মদিনার চার মাইল পূর্বে অবস্থিত একটি স্থানের নাম) এলাকার যে ব্যাক্তি জুমু আর সালাত (নামায/নামাজ) এর অপেক্ষা করতে ইচ্ছা করে সে যেন অপেক্ষা করে। আর যে ফিরে যেতে চায়, তার জন্য আমি অনুমতি দিলাম। আর উবায়দ বলেনঃ এরপর আমি ঈদগাহে হাযির হয়েছি আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) এর সময়ে তিনি খুতবার পূর্বে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। এরপর লোকজনের উদ্দেশ্যে খুৎবা দেন। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তোমাদের কুরবানীর পশুর গোশত তিন দিনের অধিক কাল খেতে নিষেধ করেছেন।

মা’মার যুহরী আবূ উবায়দ (রহঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণিত।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৪ | 5174 | ۵۱۷٤

পরিচ্ছদঃ ২২২০. কুরবানীর গোশত থেকে কতটুকু পরিমাণ আহার করা যাবে, আর কতটুকু পরিমান সঞ্চিত রাখা যাবে
৫১৭৪। মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রহীম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কুরবানীর গোশত থেকে তোমরা তিন দিন পর্যন্ত আহার কর। আবদুল্লাহ (রাঃ) মিনা থেকে ফিরার পর কুরবানীর গোশত খাওয়া থেকে বিরত থাকার কারণে যায়তুন দিয়ে আহার করতেন।

পানীয় দ্রব্যসমূহ অধ্যায় (৫১৭৫-৫২৩৭)

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৫ | 5175 | ۵۱۷۵

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ নিশ্চয় মদ, জুয়া, মূর্তিপুজার বেদী ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত জিনিস, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যেন তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা মায়িদাঃ ৯০)
৫১৭৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন যে ব্যাক্তি দুনিয়াতে মদ পান করেছে এরপর সে তা থেকে তওবা করেনি, সে ব্যাক্তি আখিরাতে তা থেকে বঞ্চিত থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৬ | 5176 | ۵۱۷٦

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ নিশ্চয় মদ, জুয়া, মূর্তিপুজার বেদী ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত জিনিস, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যেন তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা মায়িদাঃ ৯০)
৫১৭৬। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ইসরা মিরাজের রাতে ঈলিয়া নামক স্থানে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে শরাব ও দুধের দু’ টি পেয়ালা পেশ করা হয়েছিল। তিনি উভয়টির দিকে নযর করলেন। এরপর দুধের পেয়ালাটি গ্রহন করেন। তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ সকল প্রসংসা সেই আল্লাহর জন্য যিনি আপনাকে স্বভাবজাত জিনিসের দিকে পথ দেখিয়েছেন। অথচ যদি আপনি শরাব গ্রহণ করতেন তাহলে আপনার উম্মত গুমরাহ হয়ে যেত। যুহরী (রহঃ) থেকে মা’মার, ইবনু হাদী, উসমান, ইবনু উমর যুবায়দী অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৭ | 5177 | ۵۱۷۷

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ নিশ্চয় মদ, জুয়া, মূর্তিপুজার বেদী ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত জিনিস, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যেন তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা মায়িদাঃ ৯০)
৫১৭৭। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছ থেকে এমন একটি হাদীস শুনেছি যা আমি ব্যতীত অন্য কেউ তোমাদের বর্ণনা করবে না। তিনি বলেন, কিয়ামতের লক্ষন সমূহের কতক হলঃ অজ্ঞতা প্রকাশ পাবে, ইল্‌ম (দ্বীনী) কমে যাবে, ব্যাভিচার প্রকাশ্য হতে থাকবে, মদ্যপানের ছাড়াছড়ি চলবে, পুরুযের সংখ্যা কমে যাবে আর নারীদের সংখ্যা বেড়ে যাবে, শেষ অবধি অবস্থা এমন দাঁড়াবে যে, পঞ্চাশ জন নারীর জন্য তাদের পরিচালক হবে একজন পুরুষ।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৮ | 5178 | ۵۱۷۸

পরিচ্ছদঃ মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ নিশ্চয় মদ, জুয়া, মূর্তিপুজার বেদী ও ভাগ্য নির্ধারক তীর ঘৃণিত জিনিস, শয়তানের কাজ। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যেন তোমরা সফলকাম হতে পার। (সুরা মায়িদাঃ ৯০)
৫১৭৮। আহমাদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ব্যাভিচারী ব্যাভিচার করার সময়ে মুমিন থাকে না, মদ পানকারী মদ পান করার সময়ে মুমিন থাকে না। চোর চুরি করার সময়ে মুমিন থাকে না। ইবনু শিহাব বলেনঃ আবদুল মালিক ইবনু আবূ বকর ইবনু আবদুর রহমান ইবনু হারিস ইবনু হিশাম আমাকে জানিয়েছে যে, আবূ বকর (রাঃ) এ হাদীসটি আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন। এরপর তিনি বলেন, আবূ বকর উপরোক্ত হাদীসের সঙ্গে এটিও সংযুক্ত করতেন যে, ছিনতাইকারী এমন মুল্যবান জিনিস, যার দিকে লোকজন চোখ উঠিয়ে তাকিয়ে থাকে, তা ছিনতাই করার সময়ে মুমিন থাকে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৭৯ | 5179 | ۵۱۷۹

পরিচ্ছদঃ ২২২১. আঙ্গুর থেকে তৈরী মদ
৫১৭৯। হাসান ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদ হারাম ঘোষিত হয়েছে এমতাবস্থায় যে মদিনার আঙ্গুরের মদের তেমন কিছু অবশিষ্ট ছিল না।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮০ | 5180 | ۵۱۸۰

পরিচ্ছদঃ ২২২১. আঙ্গুর থেকে তৈরী মদ
৫১৮০। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন আমাদের উপর মদ হারাম ঘোষিত হল। তখন আমরা মদিনায় আঙ্গুর থেকে প্রস্তুতকৃত মদ অনেক কম পেতাম। সাধারণত আমাদের মদ ছিল কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে তৈরী।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮১ | 5181 | ۵۱۸۱

পরিচ্ছদঃ ২২২১. আঙ্গুর থেকে তৈরী মদ
৫১৮১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন উমর (রাঃ) মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে বলেন (হামদ ও সালাতের পর জেনে রাখ) মদ হারাম হওয়ার আয়াত নাযিল হয়েছে। আর তা তৈরী হয় পাঁচ প্রকারের জিনিস থেকে আঙ্গুর, খেজুর মধু, গম, ও যব। আর মদ হল তাই, যা বিবেক-বুদ্ধিকে বিলোপ করে দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮২ | 5182 | ۵۱۸۲

পরিচ্ছদঃ ২২২২. মদ হারাম হওয়ার আয়াত নাযিল হয়েছে এবং তা তৈরী হত কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে
৫১৮২। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আবূ উবায়দা, আবূ তালহা ও উবাই ইবনু কাব (রাঃ) কে কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে তিনি মদ পান করতে দিয়েছিলাম। এমন সময়ে তাদের নিকট জনৈক আগন্তক এসে বলল, মদ হারাম ঘোষিত হয়ে গেছে। তখন আবূ তালহা (রাঃ) বললেন হে আনাস দাঁড়াও এবং এগুলো ঢেলে দাও। আমি সেগুলো তখন ঢেলে দিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৩ | 5183 | ۵۱۸۳

পরিচ্ছদঃ ২২২২. মদ হারাম হওয়ার আয়াত নাযিল হয়েছে এবং তা তৈরী হত কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে
৫১৮৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … মু’তামির তার পিতার সুত্রে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি আনাস (রাঃ) কে বলতে শুনেছেনঃ একটি আসনে দাঁড়িয়ে আমি তাদের অর্থাৎ চাচাদের ফাযীখ অর্থাৎ কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে মদ পান করাচ্ছিলাম। তখন আমি ছিলাম সকলের ছোট। এমন সময় বলা হলঃ মদ হারাম হয়ে গেছে। তখন তারা বললেনঃ ঢেলে দাও। সুতরাং আমি তা ঢেলে দিলাম। রাবী বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে বললাম তাদের শরাব কি ধরনের ছিল? তিনি উত্তর দিলেনঃ কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে তৈরী। তখন আনাস (রাঃ) এর পুত্র আবূ বকর (যিনি তখন উপস্থিত ছিলেন) বললেনঃ সেটিই কি ছিলল তাদের মদ? জবাবে আনাস (রাঃ) কোন অসম্মতি প্রকাশ করলেন না। রাবী সুলায়মান আরো বলেন, আমার কতিপয় সঙ্গী আমাকে বর্ণনা করেছেন যে তাঁরা আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছেন তিনি বলেছেন, সেকালে এটিই ছিল তাদের মদ।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৪ | 5184 | ۵۱۸٤

পরিচ্ছদঃ ২২২২. মদ হারাম হওয়ার আয়াত নাযিল হয়েছে এবং তা তৈরী হত কাঁচা ও পাকা খেজুর থেকে
৫১৮৪। মুহাম্মদ ইবনু আবূ বকর মুকাদ্দমী (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি তাদের কাছে বর্ণনা করেছেন, মদ হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। আর সেকালে মদ তৈরী হত কাঁচা ও পাকা খেজুরে থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৫ | 5185 | ۵۱۸۵

পরিচ্ছদঃ ২২২৩. মধু তৈরী মদ। এটিকে পরিভাষায় ‘বিতা’ বলে। মা’ন (র) বলেন, আমি মারিক ইব্‌ন আনাসকে ‘ফুককা’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি বলেছেনঃ যদি তা নেশাগ্রস্ত না করে তাহলে কোন ক্ষতি নেই। ইবন দারাওয়ারদী বলেন, আমরা এ ব্যাপারে অনেককে জিজ্ঞাসা করেছি, তখন তারা বলেছেন, নেশাগ্রস্ত না করলে তাতে আপত্তি নেই।
৫১৮৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ‘বিতা’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। তিনি বললেনঃ সব নেশা জাতীয় পানীয় হারাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৬ | 5186 | ۵۱۸٦

পরিচ্ছদঃ ২২২৩. মধু তৈরী মদ। এটিকে পরিভাষায় ‘বিতা’ বলে। মা’ন (র) বলেন, আমি মারিক ইব্‌ন আনাসকে ‘ফুককা’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি বলেছেনঃ যদি তা নেশাগ্রস্ত না করে তাহলে কোন ক্ষতি নেই। ইবন দারাওয়ারদী বলেন, আমরা এ ব্যাপারে অনেককে জিজ্ঞাসা করেছি, তখন তারা বলেছেন, নেশাগ্রস্ত না করলে তাতে আপত্তি নেই।
৫১৮৬। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ‘বিতা’ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল। ‘বিতা’ হল মধু থেকে তৈরী নাবীয। ইয়ামানের অধিবাসীরা তা পান করত। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে সব পানীয় দ্রব্য নেশার সৃষ্টি করে তাই হারাম।

যুহরী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) আমাকে খবর দিয়েছেন যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা দুব্বা (কদুর খোল) এর মধ্যে নাবীয তৈরী করবে না মুযাফফাতের (আলকাতরা যুক্ত পাত্র) মধ্যেও নয়। যুহরী বলেন, আবূ হুরায়রা (রাঃ) এগুলোর সঙ্গে হানতাম (মাটির সবুজ পাত্র) ও নাফীরের (খেজুর বুক্ষের মূলের খোল) কথাও সংযুক্ত করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৭ | 5187 | ۵۱۸۷

পরিচ্ছদঃ ২২২৪. মদ এমন পানীয় দ্রব্য যা বিবেক বিলোপ করে দেয়
৫১৮৭। আহমাদ ইবনু আবূ রাজা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উমর (রাঃ) মিম্বরের উপর দাঁড়িয়ে খুতুবা দিতে গিয়ে বললেনঃ নিশ্চয়ই মদ হারাম সম্পর্কীয় আয়াত নাযিল হয়েছে। আর তা তৈরি হয় পাঁচটি বস্তু থেকে আঙ্গুর, খেজুর, গম, যব ও মধু। আর খামর (মদ) হল তা যা বিবেক বিলোপ করে দেয়। আর তিনটি এমন বিষয় আছে যে, আমি চাইছিলাম যেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে সেগুলো স্পষ্টভাবে বর্ননা করা পর্যন্ত তিনি যেন আমাদের নিকট হতে বিচ্ছিন্ন না হয়ে যান। বিষয়গুলো হলঃ দাদা এর মীরাস, কালালা এর ব্যখ্যা এবং সুদের প্রকার সমুহ।

রাবী আবূ হাইয়্যান বলেনঃ আমি বললামঃ হে আবূ আমর! এক প্রকারের পানীয় জিনিস যা সিঞ্চন অঞ্চলে চাউল দিয়ে তৈরি করা হয় তার হুকুম কি? তিনি বললেনঃ সেটি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আমলে ছিল না। কিংবা তিনি বলেছেনঃ সেটি উমর (রাঃ) এর আমলে ছিল না। হাম্মাদ সুত্রে আবূ হাইয়্যান থেকে হাজ্জাজ الْعِنَبِ এর স্থলে الزَّبِيبَ কিসমিস বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৮ | 5188 | ۵۱۸۸

পরিচ্ছদঃ ২২২৪. মদ এমন পানীয় দ্রব্য যা বিবেক বিলোপ করে দেয়
৫১৮৮। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, মদ তৈরী করা হয় পাঁচটি জিনিস থেকে। সেগুলো হল কিসমিস, খেজুর, গম, যব ও মধু।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৮৯ | 5189 | ۵۱۸۹

পরিচ্ছদঃ ২২২৫. যে ব্যক্তি মদকে ভিন্ন নামে নামকরণ করে হালাল মনে করে
৫১৮৯। হিশাম ইবনু আম্মার (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু গানাম আশআরী (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার নিকট আবূ আমের কিংবা আবূ মালেক আশ-আরী বর্ণনা করেছেন। আল্লাহর কসম! তিনি আমার কাছে মিথ্যে কথা বলেননি। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন আমার উম্মতের মাঝে অবশ্যই এমন কতগুলো দলের সৃষ্টি হবে যারা ব্যাভিচার, রেশমী কাপড় মদ ও বাদ্যযন্ত্রকে হালাল জ্ঞান করবে। অনুরূপভাবে এমন অনেক দল হবে যারা পর্বতের কিনারায় বসবাস করবে, বিকাল বেলায় যখন তারা পশুর পাল নিয়ে ফিরবে তখন তাদের কাছ কোন অভাব নিয়ে ফকীর আসলে তারা উত্তর দেবে আগামী দিন সকালে তুমি আমাদের নিকট এসো। এদিকে রাতের অন্ধকারেই আল্লাহ তাদের ধংশ করে দিবেন। পর্বতটি ধসিয়ে দিবেন, আর অবশিষ্ট লোকদের তিনি কিয়ামত দিবস পর্যন্ত বানর ও শুকর বানিয়ে রাখবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯০ | 5190 | ۵۱۹۰

পরিচ্ছদঃ ২২২৬. বড় ও ছোট পাত্রে “নাবীয” তৈরী করা
৫১৯০। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … সাহল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ উসায়দ সাঈদী (রাঃ) এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর বিয়ের অনুঠানে দাওয়াত দিলেন। তখন তাঁর স্ত্রী নববধু ছিলেন। তাদের মধ্যে পরিবেশনকারিণী সে নববধু বলেনঃ তোমরা কি জানো আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কি জিনিস পান করতে দিয়েছিলাম? (তিনি বলেন) আমি রাতেই কয়েকটি খেজুর একটি পাত্রের মধ্যে ভিজিয়ে রেখেছিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯১ | 5191 | ۵۱۹۱

পরিচ্ছদঃ ২২২৭. বিভিন্ন ধরনের বরতন ও পাত্র ব্যবহার নিষেধ করার পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পক্ষ থেকে পুনঃঅনুমতি প্রদান।
৫১৯১। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কতগুলো পাত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেন। তখন আনসারগণ বললেনঃ সেগুলো ব্যতীত আমাদের কোন উপায় নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে ব্যবহার করতে পার। খলীফা বলেন, ইয়াহইয়া ইবনু সাঈদ আমাদের কাছে সুফিয়ান, মানসূর, সালিম ইবনু আবূল জাদ-জাবির (রাঃ) থেকে এরূপ বর্ণনা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯২ | 5192 | ۵۱۹۲

পরিচ্ছদঃ ২২৩৭. পান করার ক্ষেত্রে প্রথমে ডানের ব্যক্তি, তারপর ক্রমান্বয়ে ডানের ব্যক্তির অগ্রাধিকার
৫১৯২। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ধরনের পাত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করলেন, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলা হল, সব মানুষের নিকট তো মাশক মউজুদ নেই। ফলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কলসীর জন্য অনুমতি দেন। তবে আলকাতরার প্রলেপ দেওয়া পাত্রের জন্য অনুমতি দেননি।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৩ | 5193 | ۵۱۹۳

পরিচ্ছদঃ ২২২৭. বিভিন্ন ধরনের বরতন ও পাত্র ব্যবহার নিষেধ করার পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পক্ষ থেকে পুনঃঅনুমতি প্রদান।
৫১৯৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুব্বা ও মুযাফফাত ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। উসমান (রহঃ) বলেন, জারীর (রহঃ) আমাশ (রহঃ) সুত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৪ | 5194 | ۵۱۹٤

পরিচ্ছদঃ ২২২৭. বিভিন্ন ধরনের বরতন ও পাত্র ব্যবহার নিষেধ করার পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পক্ষ থেকে পুনঃঅনুমতি প্রদান।
৫১৯৪। উসমান (রহঃ) … ইবরাহীম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আসওয়াদকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, আপনি কি উম্মুল মুমিনীন আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে, কোন কোন পাত্রের মধ্যে ‘নাবীয’ তৈরী করা মাকরূহ। তিনি উত্তর করলেনঃ হ্যাঁ। আমি বলেছিলাম, হে উম্মুল মুমিনীন! কোন কোন পাত্রের মধ্যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাবীয তৈরী করতে নিষেধ করেছেন? তখন তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের অর্থাৎ আহলে বাইতকে দুব্বা ও মুযাফফাত নামক পাত্রে নাবীয তৈরি করতে নিষেধ করেছেন। ইবরাহীম বলেন) আমি বললাম আয়িশা (রাঃ) কি জার (মাটির কলসী) হানতাম (মাটির সবুজ পাত্র) নামক পাত্রের কথা উল্লেখ করেননি? তিনি বললেনঃ আমি যা শুনেছি কেবল তাই তোমাকে বর্ননা করেছি। আমি যা শুনি নাই তাও কি আমি তোমাদের কাছে বর্ণনা করবো?

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৫ | 5195 | ۵۱۹۵

পরিচ্ছদঃ ২২২৭. বিভিন্ন ধরনের বরতন ও পাত্র ব্যবহার নিষেধ করার পর রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর পক্ষ থেকে পুনঃঅনুমতি প্রদান।
৫১৯৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবুজ বর্ণের কলসী ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। আমি বললামঃ তাহলে সাদা বর্ণের পাত্রে (নাবীয) পান করা যাবে কি? তিনি বললেনঃ না।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৬ | 5196 | ۵۱۹٦

পরিচ্ছদঃ ২২২৮. শুকনো খেজুরের রস যতক্ষণ না তা নেশার সৃষ্টি করে
৫১৯৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে আবূ উসায়দ সাঈদী (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর ওলীমা অনুষ্ঠানে দাওয়াত করেছিলেন। সে দিন তার স্ত্রী নববধূ অবস্থায় সবার খেদমতে নিয়োজিত ছিলেন। তিনি বললেনঃ আপনারা কি জানেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কিসের রস পান করতে দিয়েছিলাম? আমি তার জন্য রাতেই কয়েকটি খেজুর একটি পাত্রে ভিজিয়ে রেখেছিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৭ | 5197 | ۵۱۹۷

পরিচ্ছদঃ ২২২৯. ‘বাযাক’ (অর্থাৎ আঙ্গুরের সামান্য পাকানো রস)-এর বর্ণনা এবং যারা উদ্রেককারী যাবতীয় পানীয় নিষিদ্ধ বলেন তা বর্ণন। উমর, আবূ উবায়দা ও মুৱআয (রাঃ) ’তিলা’ অর্থাৎ আঙ্গুরের যে রসকে পাকিয়ে এক-তৃতীয়াংশ করা হয়েছে, তা পান করার জায়েয মনে করেন। বার ও আবূ জুহায়ফা (রাঃ) পাকিয়ে অর্ধেক থাকাবস্থায় রস পান করছেন। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেন : আমি তাজা অবস্থায় থাকা পর্যন্ত আঙ্গুরের রস পান করেছি। উমর (রা) বলেছেনঃ আমি উবায়দুল্লাহ্‌র মূখ থেকে শরাবের ঘ্রাণ পেয়েছি এবং তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাও করেছি। যদি তা নেশার সৃষ্টি করত, তাহেল আমি বেত্রাঘাত করতাম।
৫১৯৭। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আবূল জুওয়ায়রিয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে ‘বাযাক’ সম্পর্কে প্রশ্ন করেছিলাম। তিনি উত্তর দিলেনঃ মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘বাযাক’ উৎপাদনের পূর্বে চলে গেছেন। কাজেই যে জিনিস নেশা সৃষ্টি করে থাকে তাই হারাম। তিনি বলেনঃ হালাল পানীয় পবিত্র। তিনি বলেন হালাল ও পবিত্র পানীয় ব্যতীত অন্যান্য পানীয় ঘৃণ্য হারাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৮ | 5198 | ۵۱۹۸

পরিচ্ছদঃ ২২২৯. ‘বাযাক’ (অর্থাৎ আঙ্গুরের সামান্য পাকানো রস)-এর বর্ণনা এবং যারা উদ্রেককারী যাবতীয় পানীয় নিষিদ্ধ বলেন তা বর্ণন। উমর, আবূ উবায়দা ও মুৱআয (রাঃ) ’তিলা’ অর্থাৎ আঙ্গুরের যে রসকে পাকিয়ে এক-তৃতীয়াংশ করা হয়েছে, তা পান করার জায়েয মনে করেন। বার ও আবূ জুহায়ফা (রাঃ) পাকিয়ে অর্ধেক থাকাবস্থায় রস পান করছেন। ইব্‌ন আব্বাস (রা) বলেছেন : আমি তাজা অবস্থায় থাকা পর্যন্ত আঙ্গুরের রস পান করেছি। উমর (রা) বলেছেনঃ আমি উবায়দুল্লাহ্‌র মূখ থেকে শরাবের ঘ্রাণ পেয়েছি এবং তাকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসাও করেছি। যদি তা নেশার সৃষ্টি করত, তাহেল আমি বেত্রাঘাত করতাম।
৫১৯৮। আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিাষ্ট ও মধু পছন্দ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫১৯৯ | 5199 | ۵۱۹۹

পরিচ্ছদঃ ২২৩০. যারা মনে করে নেশাদারা হওয়ার পর কাঁচা ও পাকা খেজুর একত্রে মিলানো উচিতৎ নয় এবং উভয়ের রসকে একত্রিত করা উচিত নয়
৫১৯৯। মুসলিম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন আমি আবূ তালহা আবূ দুজানা এবং সুহায়ল ইবনু বায়দা (রাঃ) কে কাঁচা ও শুকনো খেজুরের মিশ্রিত রস পান করাচ্ছিলাম। এ সময়ে মদ হারাম ঘোষিত হল, তখন আমি তা ফেলে দিলাম। আমি ছিলাম তাঁদের পরিবেশকারী এবং তাঁদের সবার ছোট। আর সেকালে আমরা এটিকে মদ বলে গণ্য করতাম। আমর ইবনু হারিস বলেনঃ কাতাদা (রহঃ) আমাদের নিকট عَنْ أَنَسٍ এর স্থলে سَمِعَ أَنَسًا‏ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০০ | 5200 | ۵۲۰۰

পরিচ্ছদঃ ২২৩০. যারা মনে করে নেশাদারা হওয়ার পর কাঁচা ও পাকা খেজুর একত্রে মিলানো উচিতৎ নয় এবং উভয়ের রসকে একত্রিত করা উচিত নয়
৫২০০। আবূ আসিম (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিসমিস, শুকনো খেজুর, কাঁচা ও পাকা খেজুর মিশ্রন করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০১ | 5201 | ۵۲۰۱

পরিচ্ছদঃ ২২৩০. যারা মনে করে নেশাদারা হওয়ার পর কাঁচা ও পাকা খেজুর একত্রে মিলানো উচিতৎ নয় এবং উভয়ের রসকে একত্রিত করা উচিত নয়
৫২০১। মুসলিম (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুরমা ও আধাপাকা খেজুর এবং খুরমা ও কিসমিস একত্রিত করতে নিষেধ করেছেন। আর এগুলো প্রত্যেকটিকে পৃথক পৃথকেভাবে ভিজিয়ে ‘নাবীয’ তৈরি করা যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০২ | 5202 | ۵۲۰۲

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০২। আবদান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভ্রমণ করানো হয় (মিরাজের রাতে), সে রাতে তাঁর সামনে পেশ করা হয়েছিল দুধের একটি পেয়ালা এবং শরারের একটি পেয়ালা।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৩ | 5203 | ۵۲۰۳

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০৩। হুমায়দী (রহঃ) … উম্মুল ফাযল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আরাফার দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিয়াম আদায় করার ব্যাপারে লোকেরা সন্দেহ পোষণ কবেন। তখন আমি তার নিকট দুধ ভর্তি একটি পেয়ালা পাঠালাম। তিনি তা পান করলেন। বর্ণনাকারী সুফিয়ান অনেক সময় এভাবে বলতেন, আরাফার দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিয়াম আদায়ের ব্যাপারে লোকেরা সন্দেহ পোষণ করছিল। তখন উম্মুল ফাযল (রাঃ) তাঁর কাছে দুধ পাঠিয়ে দিলেন। হাদীসটি মাউসূল না মুরসাল, এ বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেছেন এটি উম্মুল ফাযল (রাঃ) থেকে বর্ণিত।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৪ | 5204 | ۵۲۰٤

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০৪। কুতায়বা (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ হুমায়দ (রাঃ) এক পাত্র দুধ নিয়ে আসলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ এটিকে ঢেকে রাখলে না কেন? এর উপর একটি কাঠি দিয়ে হলেও ঢেকে রাখা উচিত ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৫ | 5205 | ۵۲۰۵

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০৫। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ হুমায়দ (রাঃ) নামক এক আনসারী নাকি’ নামক স্থান থেকে এক পেয়ালা দুধ নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ এটিকে ঢেকে আননি কেন? এর উপর একটি কাঠি স্থাপন করে হলেও ঢেকে রাখা উচিত ছিল। আবূ সুফিয়ান (রহঃ) এ হাদীসটি জাবির (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৬ | 5206 | ۵۲۰٦

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০৬। মাহমুদ (রহঃ) বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা থেকে রওয়ানা হলেন। তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ)। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ আমরা এক রাখালের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলাম। সে সময়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন খুব পিপাসার্ত। আবূ বকর (রাঃ) বলেনঃ আমি তখন একটি পাত্রে ভেড়ার দুধ দোহন করলাম। তিনি তা পান করলেন, আমি খুব আনন্দিত হলাম। এমন সময় সুরাকা ইবনু জুশুম একটি ঘোড়ার উপর আরোহণ করে আমাদের কাছে আসলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বদ দুআর মনস্থ করলে সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আবেদন জানোান যেন তিনি তার প্রতি বদ দুআ না করেন এবং সে যেন নিরাপদে ফিরে যেতে পারে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাই করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৭ | 5207 | ۵۲۰۷

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০৭। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরাররা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উত্তম সাদাকা হল উপহার হিসেবে প্রদত্ত দুধেল উঠনী কিংবা দুধেল বকরী। যা সকালে একটি পাত্র ভরে দেবে আর বিকালে আরেকটি পাত্র।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৮ | 5208 | ۵۲۰۸

পরিচ্ছদঃ ২২৩১. দুধ পান করা। মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ ওদের উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য থেকে পান করাই বিশুদ্ধ দুধ, যা পানকারীদের জন্য অত্যান্ত সুস্বাদু (সুরা নাহলঃ ৬৬)
৫২০৮। আবূ আসিম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুধপান করেছেন এরপর তিনি কুলি করেছেন এবং বলেছেন এর মধ্যে তৈলাক্ততা আছে।

ইবরাহীম ইবনু তাহমান (রহঃ) আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার কাছে ‘সিদরাতুল মুনতাহা’ তুলে ধরা হল। তখন দেখলাম চারটি নহর। দু’টি নহর হল যাহেরী আর দুটি নহর হল বাতেনী। যাহেরী দুটি হল নীল ও ফোরাত। আর বাতেনী দুটি হল, জান্নাতের দুটি নহর। আমার সামনে তিনটি পেয়ালা পেশ করা হল একটি পেয়ালার মধ্যে আছে দুধ, একটি পেয়ালার মধ্যে আছে মধু আর একটি পেয়ালার মধ্যে আছে শরাব। আমি দুধের পেয়ালাটি গ্রহন করলাম এবং পান করলাম। তখন আমাকে বলা হল, আপনি এবং আপনার উম্মত স্বভাবজাত জিনিস লাভ করেছেন। তবে তারা তিনটি পেয়ালার কথা উল্লেখ করেননি।

হাদিস নম্বরঃ ৫২০৯ | 5209 | ۵۲۰۹

পরিচ্ছদঃ ২২৩২. সুপেয় পানি তালাশ করা
৫২০৯। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূ তালহা (রাঃ) ছিলেন মদিনার আনসারীদের মধ্যে সবার চাইতে বেশী খেজুর গাছের মালিক। আর তার নিকট তার প্রিয় সম্পদ ছিল ‘বায়রুহা’ নামক বাগানটি। সেটি ছিল মসজিদে নববীর ঠিক সামনে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বাগানে যেতেন এবং সেখানে অবস্থিত সুপেয় পানি পান করতেন।

আনাস (রাঃ) বলেন, যখন আয়াত অবর্তীর্ণ হলঃ তোমরা ততক্ষন পর্যন্ত কল্যাণ অর্জন করতে সক্ষম হবে না যতক্ষন তোমরা তোমাদের প্রিয় জিনিস থেকে ব্যয় করবে”। তখন আবূ তালহা (রাঃ) দাড়িয়ে গেলেন এবং বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ ইরশাদ করেছেন যা ভালবাস তা থেকে ব্যয় না করা পর্যন্ত তোমরা কখনো পূণ্য লাভ করবে না। (আলে ইমরানঃ ৯২)। আর আমার নিকট সবচাইতে প্রিয় সম্পপদ হল ‘বায়রুহা’ নামক বাগান। এটিকে আমি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সাদকা করে দিলাম এবং আমি আল্লাহর কাছে এটির সাওয়াব এবং এটির সঞ্চয় আশা করি। ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি এটিকে গ্রহন করুন আল্লাহর ইচ্ছায় যেখানে ব্যয় করতে আপনি ভাল মনে করেন! সেখানে ব্যয় করুন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন খুব ভাল, এটিতো লাভজনক সম্পপদ কিংবা তিনি বলেছেন এটিতো মুনাফা দানকারী সম্পদ। কথাটির মধ্যে রাবী আবদুল্লাহ দ্বিধা পোষণ করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তুমি যা বলেছ, আমি তা শুনেছি। তবে আমি ভাল মনে করি যে, তুমি এটিকে আপন আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে বণ্টন করে দেবে। আবূ তালহা (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি এমনটই করবো। এরপর আবূ তালহা (রাঃ) বাগানটি তার আত্মীয়দের মধ্যে এবং তার চাচাত ভাইদেয় মধ্যে বণ্টন করে দিলেন। ইসমাঈল ও ইয়াহইয়া رَابِحٌ এর স্থলে رائح বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১০ | 5210 | ۵۲۱۰

পরিচ্ছদঃ ২২৩৩. পানি মিশ্রিত দুধ পান করা
৫২১০। আবদান (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর বাড়ীতে এসে দুধ পান করতে দেখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, আমি একটি বকরী দোহন করলাম। এবং কূপ থেকে পানি তুলে তা মিশিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পেশ করলাম। তিনি পেয়ালাটি নিয়ে পান করেন। তার বাঁদিকে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ) ও ডান দিকে ছিল জনৈক বেদুঈন। তিনি বেদুঈনকে তার অবশিষ্ট দুধ দিলেন। এরপর বললেনঃ ডান দিকের রয়েছে অগ্রাধিকার।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১১ | 5211 | ۵۲۱۱

পরিচ্ছদঃ ২২৩৩. পানি মিশ্রিত দুধ পান করা
৫২১১। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে,, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের এক ব্যাক্তির নিকট গেলেন। তার সঙ্গে ছিলেন তাঁর এক সাহাবী। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারীকে বললেনঃ তোমার নিকট যদি মশকে রক্ষিত গত রাতের পানি থাকে তাহলে আমাদের পান করাও আর না থাকলে আমরা সামনে গিয়ে পান করব। রাবী বলেন লোকটি তখন তার বাগানে পানি দিচ্ছিল। বর্ণনাকারী বলেন, লোকটি উত্তর করল ইয়া রাসুলাল্লাহ আমার কাছে গত রাতের পানি আছে। আপনি ঝুপড়ীতে চলুন। বর্ণনাকারী বলেনঃ এরপর লোকটি তাদের দুজনকে নিয়ে গেল এবং একটি পেয়ালায় পানি নিয়ে তাতে তার একট বকরীর দুধ দোহন করল। বর্ণনাকারী বলেন, এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পান করলেন, তারপর তাঁর সঙ্গে আগন্তক লোকটিও পান করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১২ | 5212 | ۵۲۱۲

পরিচ্ছদঃ ২২৩৪. মিষ্টি দ্রব্য ও মধু পান করা। যুহরী (র) বলেছেন, ভীষণ মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি হলেও মানুষের পেশাব নাপাক। কেননা পেশাব অপবিত্র। আল্লাহ তা’আলা ইরশাদঃ “তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে সকল পবিত্র জিনিস।” ইবন মাসউদ (রাঃ) নেশাদ্রব্য সম্পর্কে বলেছেনঃ আল্লাহ্‌ তোমাদের উপর যে সকল জিনিস হারাম করেছেন তাতে তোমাদের জন্য কোন নিরাময় রাখেন নি।
৫২১২। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় জিনিস ছিল মিষ্টি দ্রব্য ও মধু।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৩ | 5213 | ۵۲۱۳

পরিচ্ছদঃ ২২৩৫. দাঁড়ানো অবস্থায় পান করা
৫২১৩। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … নাযযাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কুফা মসজিদের ফটকে আলী (রাঃ) এর নিকট পানি আনা হলে তিনি দন্ডায়মান অবস্থায় তা পান করলেন। এরপর বললেনঃ লোকজনের মধ্যে কেউ কেউ দণ্ডায়মান অবস্থায় পান করাকে মাকরূহ মনে করে, অথচ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখেছি তোমরা আমাকে যেরূপভাবে পান করতে দেখলে তিনিও সে রূপ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৪ | 5214 | ۵۲۱٤

পরিচ্ছদঃ ২২৩৫. দাঁড়ানো অবস্থায় পান করা
৫২১৪। আদম (রহঃ) … নাযযাল ইবনু সাবরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) এর সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি যোহরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। এরপর তিনি মানুষের নানাবিধ প্রয়োজনীয় কাজে কুফা মসজিদের চত্বরে বসে পড়লেন। অবশেষে আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ের সময় হয়ে গেল। তখন পানি আনা হল। তিনি পানি পান করলেন এবং নিজের মুখমণ্ডল ও উভয় হাত ধৌত করলেন। বর্ণনাকারী আদম এখানে তাঁর মাথার কথাও উল্লেখ করেন এবং ধৌত করার কথাও উল্লেখ করেন। এরপর আলী (রাঃ) দাঁড়ালেন এবং তিনি দাঁড়ান অবস্থায় উযূ (ওজু/অজু/অযু)র উদ্বৃত্ত পানি পান করে নিলেন। এরপর তিনি বললেনঃ লোকজন দণ্ডায়মান অবস্থায় পান করাকে মাকরূহ মনে করে, অথচ আমি যেমন করেছি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তেমন করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৫ | 5215 | ۵۲۱۵

পরিচ্ছদঃ ২২৩৫. দাঁড়ানো অবস্থায় পান করা
৫২১৫। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দণ্ডায়মান অবস্থায় যমযমের পানি পান করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৬ | 5216 | ۵۲۱٦

পরিচ্ছদঃ ২২৩৬. উটের পিঠে আরোহী অবস্থায় পান করা
৫২১৬। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … উম্মুল ফাযল বিনত হারিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এক পেয়ালা দুধ পাঠিয়ে ছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরাফাতে বিকালে অবস্থান করছিলেন। তিনি নিজ হাতে পেয়ালাটি গ্রহন করেন এবং তা পান করেন। আবূন নাযর থেকে মালিক عَلَى بَعِيرِهِ (তাঁর উটের উপর আরোহী অবস্থায় ছিলেন) কথাটি বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৭ | 5217 | ۵۲۱۷

পরিচ্ছদঃ ২২৩৭. পান করার ক্ষেত্রে প্রথমে ডানের ব্যক্তি, তারপর ক্রমান্বয়ে ডানের ব্যক্তির অগ্রাধিকার
৫২১৭। ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে পানি মেশানো দুধ পবিরেশন করা হল। তার ডান পার্শ্বে ছিল জনৈক বেদুঈন ও বাম পার্শ্বে ছিলেন আবূ বকর (রাঃ)। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুধ পান করলেন। তারপর বেদুঈন লোকটিকে তা দিয়ে বললেনঃ ডানের লোকের অগ্রাধিকার। এরপর তার ডানের লোকের।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৮ | 5218 | ۵۲۱۸

পরিচ্ছদঃ ২২৩৮. পান করতে দেয়ার ক্ষেত্রে বয়স্ক (বয়োজ্যেষ্ঠ) লোকদের অগ্রাধিকার দেয়ার জন্য তার ডানে অবস্থিত লোক থেকে অনুমতি গ্রহণ করতে হবে কি?
৫২১৮। ইসমাঈল (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে শরবত পবিবেশন করা হলে তিনি তা থেকে পান করলেন। তার ডানে ছিল একটি বালক, আর বামে ছিলেন কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যাক্তি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বালকটিকে বললেনঃ তুমি কি আমাকে অনুমতি দেবে যে, আমি ঐ বয়স্ক লোকদের আগে পান করতে দেই? বালকটি বললঃ আল্লাহর কসম! ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার কাছ থেকে আমার ভাগে আসা জিনিসের ক্ষেত্রে আমি কাউকে আমার উপর অগ্রাধিকার দেব না। রাবী বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন পেয়ালাটি তার হাতে তুলে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২১৯ | 5219 | ۵۲۱۹

পরিচ্ছদঃ ২২৩৯. অঞ্জলি দ্বারা হাউজের পানি পান করা
৫২১৯। ইয়াহইয়া ইবনু সালিহ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের এক ব্যাক্তির কাছে গেলেন। তার সঙ্গে ছিল তাঁর এক সাহাবী। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবী সালাম দিলে লোকটি সালামের জবাব দিল। এরপর সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার জন্য আমার পিতা ও মাতা কুরবান, এটি ছিল প্রচণ্ড গরমের সময়। এ সময় লোকটি তার বাগানে পানি দিতে ছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি তোমার কাছে গতরাতে মাশকে রাখা পানি থাকে তাহলে আমাদের পান করাতে পার। অন্যথায় আমরা আমাদের সন্মুখস্থ পানি থেকে পান করে নেব। তখন লোকটি বাগানে পানি দিতে ছিল। এরপর লোকটি বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ। আমার কাছে গতরাতে মাশকে রাখা পানি আছে। এরপর সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ঝুপড়ীতে নিযে গেল। একটি পাত্রে কিছু পানি ঢেলে তাতে ঘরে পোষা বকরীর দুধ দোহন করল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা পান করলেন। এরপর সে আবার দোহন করল। তখন তার সঙ্গে যিনি ছিলেন তিনি তা পান করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২০ | 5220 | ۵۲۲۰

পরিচ্ছদঃ ২২৪০. ছোটরা বড়দের খিদমত করবে
৫২২০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার গোত্রীয় লোকদের মধ্যে দাঁড়িয়ে তাদেরকে অর্থাৎ আমার চাচাদেরকে ‘ফাযীখা’ নামক শরাব পান করাতে ছিলাম। আমি ছিলাম তাদের মধ্যে সকলের চাইতে ছোট। এমন সময় ঘোষণা করা হলঃ শরাব হারাম হয়ে গেছে। তারা বললেনঃ এ শরাবগুলো ঢেলে দাও। আমি তা ঢেলে দিলাম। বর্ণনাকারী (সুলায়মান তায়মী) বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ তাদের শরাব কিসের তৈরী ছিল? তিনি বললেনঃ কাঁচা ও পাকা খেজুরের তৈরী। আনাস (রাঃ) এর পৃত্র আবূ বকর বললেন, (সম্ভবত তিনি তখন উপস্থিত ছিলেন)। এটিই ছিল তাদের আমলের শরাব। তাতে আনাস (রাঃ) কোন অস্বীকৃতি প্রকাশ করেননি। সুলায়মান বলেনঃ আমার কতিপয় বন্ধু আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে তিনি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছেনঃ সেকালে এটিই ছিল তাঁদের শরাব।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২১ | 5221 | ۵۲۲۱

পরিচ্ছদঃ ২২৪১. পাত্রগুলো ঢেকে রাখা
৫২২১। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন সন্ধ্যা হয় তখন তোমাদের সন্তানদের ঘরে আটকিয়ে রাখবে। কেননা এ সময় শয়তানরা ছড়িয়ে পড়ে। তবে রাতের কিছু সময় অতিক্রান্ত হলে তখন তাদের ছেড়ে দিতে পার। আর ঘরের দরজা বন্ধ করবে। কেননা শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। আর তোমরা আল্লাহর নাম নিয়ে (বিসমিল্লাহ বলে) তোমাদের মশকের মুখ বন্ধ করে দেবে এবং আল্লাহর নাম নিয়ে তোমাদের পাত্রগুলোকে ঢেকে রাখবে কমপক্ষে পাত্রগুলোর উপর কোন জিনিস আড়াআড়িভাবে রেখে হলেও। আর (শয়নকালে) তোমরা তোমাদের চেরাগগুলো নিভিয়ে দেবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২২ | 5222 | ۵۲۲۲

পরিচ্ছদঃ ২২৪১. পাত্রগুলো ঢেকে রাখা
৫২২২। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা যখন ঘুমাবে তখন চেরাগ নিভিয়ে দেবে দরজা বন্ধ করে ফেলবে, মাশকের মুখ বন্ধ করে দেবে, খাবার ও পানীয় দ্রব্যাদি ঢেকে রাখবে। বর্ণনাকারী বলেনঃ আমার মনে হয় তিনি আরো বলেছেন অন্তত একটি কাঠ আড়াআড়িভাবে পাত্রের উপর স্থাপন করে হলেও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৩ | 5223 | ۵۲۲۳

পরিচ্ছদঃ ২২৪২. মশ্‌কের মুখ খুলে তাতে মুখ লাগিয়ে পান করা
৫২২৩। আদম (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মশকের মুখ খুলে, তাতে মুখ লাগিয়ে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৪ | 5224 | ۵۲۲٤

পরিচ্ছদঃ ২২৪২. মশ্‌কের মুখ খুলে তাতে মুখ লাগিয়ে পান করা
৫২২৪। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ‘ইখতিনাছিল আসকিয়া’ থেকে নিষেধ করতে শুনেছি আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, মামার কিংবা অন্য একজন বলেছেন, ‘ইখতিনাছ’ হল মাশকের মুখ থেকে পানি পান করা।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৫ | 5225 | ۵۲۲۵

পরিচ্ছদঃ ২২৪৩. মশ্‌কের মুখ থেকে পানি পান করা
৫২২৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আইউব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইকরামা আমাদের বললেন, আমি তোমাদের সংক্ষিপ্ত এমন কতগুলো কথা জানাবো কি যেগুলো আমাদের কাছে আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন? (কথাগুলো হল) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বড় কিংবা ছোট মশকের মুখে পানি পান করতে এবং প্রতিবেশীকে এর দেয়ালের উপর খুটি গাঁড়তে বাধা দিতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৬ | 5226 | ۵۲۲٦

পরিচ্ছদঃ ২২৪৩. মশ্‌কের মুখ থেকে পানি পান করা
৫২২৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মাশকের মুখ থেকে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৭ | 5227 | ۵۲۲۷

পরিচ্ছদঃ ২২৪৩. মশ্‌কের মুখ থেকে পানি পান করা
৫২২৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মশকের মুখ থেকে পানি পান করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৮ | 5228 | ۵۲۲۸

পরিচ্ছদঃ ২২৪৪. পান পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলা
৫২২৮। আবূ নুআইম (রহঃ) … আবদুল্লাহর পিতা আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যখন পানি পান করবে সে যেন তখন পান-পাত্রে নিঃশ্বাস না ফেলে। আর তোমাদের কেউ যখন পেশাব করবে, সে যেন ডান হাতে তার লজ্জাস্থান স্পর্শ না করে এবং তোমাদের কেউ যখন শৌচ কাজ করবে তখন সে যেন ডান হাতে তা না করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২২৯ | 5229 | ۵۲۲۹

পরিচ্ছদঃ ২২৪৫. দুই কিংবা তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করা
৫২২৯। আবূ আসিম ও আবূ নুআয়ম (রহঃ) … সুমামা ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আনাস (রাঃ) এর নিয়ম ছিল, তিনি দুই কিংবা তিন নিশ্বাসে পানি পান করতেন। তিনি ধারনা করতেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিন নিঃশ্বাসে পানি পান করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩০ | 5230 | ۵۲۳۰

পরিচ্ছদঃ ২২৪৬. সোনার পাত্রে পানি পান করা
৫২৩০। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন হুযায়ফা (রাঃ) মাদায়েন অঞ্চলে অবস্থান করছিলেন। এ সময় তিনি পানি পান করতে চাইলেন। তখন জনৈক গ্রামবাসী একটি রুপার পেয়ালায় পানি এনে তাঁকে দিল। তিনি পানি সহ পেয়ালাটি ছুঁড়ে মারলেন। এরপর তিনি বললেনঃ আমি এটি ছুড়ে ফেলতাম না কিন্তু আমি তাকে নিষেধ করা সত্তেও সে তা থেকে বিরত হয়নি। অথচ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিষেধ করেছেন মোটা ও পাতলা রেশমের কাপড় পরিধান করতে, সোনা ও রুপার পান-পাত্র ব্যবহার করতে। তিনি আরো বলেছেনঃ উল্লেখিত জিনিসগুলো হল দুনিয়াতে কাকির সম্প্রদায়ের জন্য আর আখিরাতে তোমাদের জন্য।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩১ | 5231 | ۵۲۳۱

পরিচ্ছদঃ ২২৪৭. সোনা-রূপার পাত্রে পানি পান করা
৫২৩১। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … ইবনু আবূ লায়লা থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমরা হুযায়ফা (রাঃ) এর সঙ্গে বাইরে বেরুলাম। এ সময় তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা আলোচনা করেন যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা সোনা ও রুপার পাত্রে পান করবে না। আর মোটা বা পাতলা রেশমের কাপড় পরিধান করবে না। কেননা, এগুলো দুনিয়াতে তাদের (অমুসলিম সম্প্রদায়ের) জন্য ভোগ্যবস্তু। আর তোমাদের (মুসলিম সম্প্রদায়ের) জন্য হল আখিরাতের ভোগ্য সামগ্রী।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩২ | 5232 | ۵۲۳۲

পরিচ্ছদঃ ২২৪৭. সোনা-রূপার পাত্রে পানি পান করা
৫২৩২। ইসমাঈল (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি রুপার পাত্রে পান করে সে তো তার উদরে জাহান্নামের আগুন প্রবেশ করায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৩ | 5233 | ۵۲۳۳

পরিচ্ছদঃ ২২৪৭. সোনা-রূপার পাত্রে পানি পান করা
৫২৩৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাতটি জিনিসের হুকুম দিয়েছেন এবং সাতটি জিনিস থেকে নিষেধ করেছেন। তিনি আমাদের হুকুম দিয়েছেনঃ রোগীর সেবা করতে, জানাযার পেছনে যেতে, তিনি দানকারীর জবাব দিতে দাওয়াতকারীর দাওয়াত গ্রহন করতে বেশী বেশী সালাম দিতে, মাযলুমের সাহায্য করতে এবং কসম ঠিক রাখার সুযোগ কবে দিতে। আর আমাদের তিনি নিষেধ করেছেনঃ স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতে, কিংবা তিনি বলেছেন রুপার পাত্রে পানি পান করতে মায়াসির অর্থাৎ এক জাতীয় নরম ও মসৃণ রেশমী কাপড় কাসসী অর্থাৎ রেশম মিশ্রিত কাপড় ব্যবহার করতে এবং পাতলা কিংবা মোটা এবং অলংকার খচিত রেশমী কাপড় ব্যবহার করতে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৪ | 5234 | ۵۲۳٤

পরিচ্ছদঃ ২২৪৮. পেয়ালায় পান করা
৫২৩৪। আমর ইবনু আব্বাস (রহঃ) … উম্মুল ফাযল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, লোকজন আরাফার দিনে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সিয়াম পালনের ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করলো। তখন আমি তাঁর নিকট একটি পেয়ালায় করে কিছু দুধ পাঠালাম তিনি তা পান করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৫ | 5235 | ۵۲۳۵

পরিচ্ছদঃ ২২৪৯. নাবী (সাঃ) এর ব্যবহৃত পেয়ালায় পান করা এবং তাঁর পাত্রসমূহের বর্ণনা। আবূ বুরদাহ (র) বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম আমাকে বলেছেনঃ আমি কি তোমাকে সেই পাত্রে পান করতে দেব না যে পাত্রে নাবী (সাঃ) পান করেছেন?
৫২৩৫। সাঈদ ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আরবের জনৈকা মহিলার কথা আলোচনা করা হলে, তিনি আবূ উসায়দ সাঈদী (রাঃ) কে আদেশ দিলেন, সেই মহিলার নিকট কাউকে পাঠাতে। তখন তিনি তার নিকট একজনকে পাঠালে সে আসলো এবং সায়িদা গোত্রের দুর্গে অবতরন করলো। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেরিয়ে এসে তার কাছে গেলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুর্গে তার কাছে প্রবেশ করে দেখলেন, একজন মহিলা মাথা ঝুঁকিয়ে বসে আছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন তার সঙ্গে কথোপকথন করলেন, তখন সে বলে উঠল, আমি আপনার থেকে আল্লাহর নিকট পানাহ চাই। তখন তিনি বলেনঃ আমি তোমাকে পানাহ দিলাম।

তখন লোকজন তাকে বললো তুমি কি জানো ইনি কে? সে উত্তর করল না। তারা বললঃ ইনি তো আল্লাহর রাসুল। তোমাকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে এসেছিলেন। সে বলল, এ মর্যাদা থেকে আমি চির বঞ্চিতা! এরপর সেই দিনই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অগ্রসর হলেন এবং তিনি ও তাঁর সাহাবীগগ অবশেষে বনী সায়িদাহ চত্বরে এসে বসে পড়লেন। এরপর বললেনঃ হে সাহল! আমাদের পানি পান করাও। সাহল (রাঃ) বলেন, তখন আমি তাদের জন্য এই পেইয়ালাটিই বের করে আনি এবং তা দিয়ে তাদের পান করাই। বর্ননাকারী বলেন, সাহল (রাঃ) তখন আমাদের কাছে সেই পেইয়ালা বের করে আনলে আমরা তাতে করে পানি পান করি। তিনি বলেছেন পরবর্তীকালে উমর ইবনু আবদুল আযীয (রহঃ) তার কাছ থেকে সেটি দান হিসাবে পেতে চাইলে তিনি তাকে তা হেবা করে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৬ | 5236 | ۵۲۳٦

পরিচ্ছদঃ ২২৪৯. নাবী (সাঃ) এর ব্যবহৃত পেয়ালায় পান করা এবং তাঁর পাত্রসমূহের বর্ণনা। আবূ বুরদাহ (র) বলেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনু সালাম আমাকে বলেছেনঃ আমি কি তোমাকে সেই পাত্রে পান করতে দেব না যে পাত্রে নাবী (সাঃ) পান করেছেন?
৫২৩৬। হাসান ইবনু মুদরিক (রহঃ) … আসিম আহওয়াল (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর কাছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ব্যবহৃত একটি পেয়ালা দেখেছি। সেটি ফেটে গিয়েছিল। এরপর তিনি তা রূপা মিশিয়ে জোড়া দেন। বর্ণনাকারী আসিম বলেন, সেটি ছিল উত্তম, চওড়া ও নযর কাঠের তৈরী। আসিম বলেন আনাস (রাঃ) বলেন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ পেয়ালায় কবার পানি পান করিয়েছি। আসিম বলেনঃ ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেছেনঃ পেয়ালাটিতে বৃত্তাকারে লোহা লাগানো ছিল। তাই আনাস (রাঃ) ইচ্চা করে ছিলেন লোহার বৃত্তের স্থল্র সোনা বা রুপা একটি বৃত্ত স্থাপন করতে। তখন আবূ তালহা (রাঃ) তাকে বললেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেরূপ তৈরী করেছেন তাতে কোন পরিবর্তন করো না। ফলে তিনি সে ইচ্ছা ত্যাগ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৭ | 5237 | ۵۲۳۷

পরিচ্ছদঃ ২২৫০. বরকত পান করা ও বরকতযুক্ত পানির বর্ণনা
৫২৩৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম এ সময় আসরের সময় হয়ে গেল। অথচ আমাদের সঙ্গে বেঁচে যাওয়া সামান্য পানি ব্যতীত কিছুই ছিল না। তখন সেটুকু একটি পাত্রে রেখে পাত্রটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে পেশ করা হল। তিনি পাত্রটির মধ্যে নিজের হাত ঢ়ুকিয়ে দিলেন এবং আঙ্গুল ছড়িয়ে দিলেন। এরপর বললেনঃ এস যাদের উযূ (ওজু/অজু/অযু)-র প্রয়োজন আছে। বরকত তো আসে আল্লাহর কাছ থেকে। জাবির (রাঃ) বলেন, তখন আমি দেখলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আঙ্গুলগুলোর ফাঁক থেকে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। লোকজন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করল এবং পানি পান করল। আমিও আমার উদরে যতটুকু সম্ভব ছিল ততটুকু পান করতে ক্রটি করলাম না। কেননা আমরা জানতাম এটি বরকতের পানি। রাবী বলেন, আমি জাবির (রাঃ) কে বললাম সে দিন আপনারা কত লোক ছিলেন? তিনি বললেনঃ এক হাজার চারশ- জন।

জাবির (রাঃ)-এর সুত্রে আমর অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। সালিম, জাবির (রাঃ) সুত্রের মাধ্যমে হুসাইন ও আমর ইবনু মুররা চৌদ্দশ’র স্থানে পনেরশ’র কথা বলেছেন। সাঈদ ইবনু মূসায়্যাব জাবির (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ননা করেছেন।

 

রোগীদের বর্ণনা অধ্যায় (৫২৩৮-৫২৭৫)

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৮ | 5238 | ۵۲۳۸

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৩৮। আবূল ইয়ামান হাকাম ইবনু নাফি (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমান ব্যাক্তির উপর যে সকল বিপদ আপদ আপতিত হয় এর দ্বারা আল্লাহ তার পাপ মোচন করে দেন। এমনকি যে কাটা তার শরীরে বিদ্ধ হয় এর দ্বারাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৩৯ | 5239 | ۵۲۳۹

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৩৯। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলিম ব্যাক্তির উপর যে সকল যাতনা, রোগ ব্যাধি, উদ্দেগ-উৎকণ্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানী আপতিত হয়, এমন কি যে কাটা তার দেহে বিদ্ধ হয়, এ সবের দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহ সমুহ ক্ষমা করে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪০ | 5240 | ۵۲٤۰

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৪০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন মুমিন ব্যাক্তির উদাহরণ হল সে শস্যক্ষত্রের নরম চারা গাছের ন্যায়, যাকে বাতাস একবার কাত করে ফেলে, আরেক বার সোজা করে দেয়। আর মুনাফিকের উদাহরন, সে যেন ভূমির উপর কঠিনভাবে স্থাপিত বৃক্ষ, যাকে কোন ক্রমেই নোয়ানো যায় না। অবশেষে এক ঝটকায় মূলসহ তা উৎপাটিত হয়ে যায়। যাকারিয়্যা তার পিতা কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমাদের কাছে এরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪১ | 5241 | ۵۲٤۱

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৪১। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিন ব্যাক্তির উপমা হল সে যেন শস্যক্ষেত্রের কোমল চারাগাছ। যে কোন দিক থেকেই তার দিকে বাতাস আসলে বাতাস তাকে নুইয়ে দেয়। আবার (যখন বাতাসের প্রবাহ বন্ধ হয়ে যায় তখন তা সোজা হয়ে দাঁড়ায়। (তদ্রূপ অবস্থা হল মু’মিনের) বালা মুসিবত তাকে নোয়াতে থাকে। আর ফাসিক হল ভূমির উপর কঠিনভাবে সোজা হয়ে দাঁড়ানো বৃক্ষের ন্যায়, যাকে আল্লাহ যখন ইচ্ছা করেন ভেংগে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪২ | 5242 | ۵۲٤۲

পরিচ্ছদঃ রোগের কাফ্‌ফারা ও ক্ষতিপূরণ এবং মহান আল্লাহ‌র বাণীঃ যে ব্যক্তি মন্দ কাজ করবে তাকে সেই কাজের প্রতিফল দেয়া হবে।
৫২৪২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহ যে ব্যাক্তির কল্যাণ কামনা করেন তাকে তিনি মুসীবতে লিপ্ত করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৩ | 5243 | ۵۲٤۳

পরিচ্ছদঃ ২২৫১. রোগের তীব্রতা
৫২৪৩। কাবীসা (রহঃ) ও বিশর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চাইতে অধিক রোগ যাতনা ভোগকারী অন্য কাউকে দেখিনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৪ | 5244 | ۵۲٤٤

পরিচ্ছদঃ ২২৫১. রোগের তীব্রতা
৫২৪৪। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পিড়িত অবস্থায় তাঁর কাছে গেলাম। এ সময় তিনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আমি বললাম নিশ্চয়ই আপনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত। আমি এও বললাম যে, এটা এ জন্য যে, আপনার জন্য দ্বিগুন সওয়াব রয়েছে। তিনি বলেনঃ হ্যাঁ। যে কোন মুসলিম মুসীবতে আক্রান্ত হয়, তার উপর থেকে গুনাহ সমুহ এভাবে ঝরে যায়, যে ভাবে বৃক্ষ থেকে ঝরে যায় তার পাতাগুলো।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৫ | 5245 | ۵۲٤۵

পরিচ্ছদঃ ২২৫২. মানুষের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হন নবীগণ। এর পরে ক্রমান্বয়ে প্রথম ব্যক্তি এবং পরবর্তী প্রথম ব্যক্তি
৫২৪৫। আবদান (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম। তখন তিনি জ্বরে ভুগছিলেন। আমি বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি তো কঠিন জ্বরে আক্রান্ত। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তোমাদের দু’ব্যাক্তি যতটুকু জ্বরে আক্রান্ত হয়, আমি একাই ততটুকু জুরে আক্রান্ত হই। আমি বললাম এটি এজন্য সে, আপনার জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সাওয়াব। তিনি বললেন হ্যাঁ ব্যাপারটি এমনই। কেননা যে কোন মুসলিম মুসীবতে আক্রান্ত হয়, চাই একটি কাটা কিংবা আরো ক্ষুদ্র কিছু হোক না কেন, এর দ্বারা আল্লাহ তার গুনাহগুলোকে মুছে দেন, যেভাবে গাছ থেকে পাতাগুলো ঝরে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৬ | 5246 | ۵۲٤٦

পরিচ্ছদঃ ২২৫৩. রোগীর সেবা করা ওয়াজিব
৫২৪৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ মূসা আশাআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ক্ষুধার্তকে খাবার দাও, রোগীর সেবা কর এবং কয়েদীকে মুক্ত কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৭ | 5247 | ۵۲٤۷

পরিচ্ছদঃ ২২৫৩. রোগীর সেবা করা ওয়াজিব
৫২৪৭। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাতটি জিনিসের আদেশ দিয়েছেন এবং সাতটি বিষয়ে নিষেধ করেছেন। তিনি আামাদের নিষেধ করেছেনঃ সোনার আংটি, মোটা ও পাতলা এবং কারুকার্য খচিত রেশমী কাপড় ব্যাবহার করতে এবং কাসসী ও মিয়সারা কাপড় ব্যবহার করতে। আর তিনি আমাদের আদেশ করেছেনঃ আমরা যেন জানাযার অনুসরন করি, রোগীর সেবা করি এবং বেশী বেশী করে সালাম করি।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৮ | 5248 | ۵۲٤۸

পরিচ্ছদঃ ২২৫৪. সংজ্ঞাহীন ব্যক্তির সেবা করা
৫২৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি ভীষণভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) পায়ে হেঁটে আমার খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য আমার নিকট আসলেন। তাঁরা আমাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পেলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর তিনি তার অবশিষ্ট পানি আমার গায়ের উপর ছিটিয়ে দিলেন। ফলে আমি সংজ্ঞা ফিরে পেয়ে দেখলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার সম্পদের ব্যাপারে আমি কি করবো? আমার সম্পদের ব্যাপারে কি পদ্ধতিতে আমি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবো? তিনি তখন আমাকে কোন উত্তর দিলেন না। অবশেষে মীরাসের আয়াত নাযিল হল।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৪৯ | 5249 | ۵۲٤۹

পরিচ্ছদঃ ২২৫৫. মৃগী রোগে আক্রান্ত রোগীর ফযীলাত
৫২৪৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আতা ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) আমাকে বললেন আমি কি তোমাকে একজন জান্নাতী মহিলা দেখাবো না? আমি বললাম অবশ্যই। তখন তিনি বললেনঃ এই কৃষ্ণ বর্ণের মহিলাটি, সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসেছিল। অরপর সে বললঃ আমি মৃগী রোগে আক্রান্ত হই এবং এ অবস্থায় আমার ছতর খুলে যায়। সুতরাং আপনি আমার জন্য আল্লাহর কাছে দোআ করুন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি যদি চাও, ধৈর্য ধারণ করতে পার। তোমার জন্য থাকবে জান্নাত। আর তুমি যদি চাও, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে দুআ করি, যেন তোমাকে নিরাময় করেন। মহিলা বলল আমি ধৈর্য ধারণ করবো। সে বলল তবে যে সে অবস্থায় ছতর খুলে যায়। কাজেই আল্লাহর নিকট দুআ করুন যেন আমার ছতর খুলে না যায়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য দু’আ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫০ | 5250 | ۵۲۵۰

পরিচ্ছদঃ ২২৫৫. মৃগী রোগে আক্রান্ত রোগীর ফযীলাত
৫২৫০। মুহাম্মদ (রহঃ) … আতা (রহঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি সেই উম্মে যুফার (রাঃ) কে দেখেছেন কাবার গিলাফ ধরা অবস্থায়। সে ছিল দীর্ঘ দেহী কৃঞ্চ বর্ণের এক মহিলা।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫১ | 5251 | ۵۲۵۱

পরিচ্ছদঃ ২২৫৬. যে ব্যক্তির দৃষ্টিশক্তিচলে গেছে তার ফযীলাত
৫২৫১। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, আল্লাহ বলেছেনঃ আমি যদি আমার কোন বান্দাকে তার অতি প্রিয় দুটি জিনিসের ব্যাপারে পরীক্ষায় ফেলি, আর সে তাতে ধৈর্য ধারণ করে, তাহলে আমি তাকে সে দুটির বিনিময়ে দান করবো জান্নাত। আনাস (রাঃ) বলেন, দুটি প্রিয় জিনিস বলে তার উদ্দেশ্য হল সে ব্যাক্তির চক্ষুদ্বয়। অনুরূপ বর্ণনা করেছেন আশআস ইবনু জাবির ও আবূ যিলাল (রহঃ) আনাস (রাঃ) এর সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫২ | 5252 | ۵۲۵۲

পরিচ্ছদঃ ২২৫৭. মহিলাদের পুরুষ রোগীর সেবা করা। উম্মু দারাদা (রাঃ) মসজিদে অবস্থানকারী জনৈক আনসার ব্যক্তির সেবা করেছিলেন
৫২৫২। কুতায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনায় আসলেন, তখন আবূ বকর ও বিলাল (রাঃ) জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। তিনি বলেনঃ আমি তাদের কাছে গেলাম এবং বললাম হে আব্বাজান! আপনি কেমন অনুভব করছেন? হে বিলাল, আপনি কেমন অনুভব করছেন? আবূ বকর (রাঃ) এর অবস্থা ছিল, তিনি যখন জ্বরে আক্রান্ত হতেন তখন তিনি আবৃতি করতেনঃ

সব মানুষ সুপ্রভাত ভোগ করে আপন পরিবার পরিজনের মধ্যে, আর মৃত্যু অপেক্ষমান থাকে তার জুতার ফিতার চেয়ে সন্নিকটে। বিলাল (রাঃ) এর জ্বর যখন থামত তখন তিনি বলতেন হায়! আমি যদি লাভ করতাম একটি রাত কাটানোর সুযোগ এমন উপত্যকায় যে আমার পাশে আছে ইযখির ও জালীল ঘাস। যদি আমার অবতরণ হতো কোন দিন মাজিন্নার কূপের কাছে। হায়! আমি কি কখনো দেখা পাব শামা ও তাফীলের।

আয়িশা (রাঃ) বলেন, এরপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে তাকে এদের অবস্থা জানালাম। তখন তিনি দুআ করে বললেনঃ হে আল্লাহ! মদিনাকে আমাদের কাছে প্রিয় করে দাও, যে রূপে তুমি আমাদের কাছে মক্কা প্রিয় করে দিয়েছ কিংবা সে অপেক্ষা আরো অধিক প্রিয় করে দাও। হে আল্লাহ! আর মদিনাকে উপযোগী করে দাও এবং মদিনার মুদ্দ ও সা’ এর ওযনে বরকত দাও। আর এখানকার জ্বরকে স্থানান্তরিত করে জুহফা এলাকায় স্থাপন করে দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৩ | 5253 | ۵۲۵۳

পরিচ্ছদঃ ২২৫৮. অসুস্থ শিশুদের সেবা করা
৫২৫৩। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এক কন্যা (যায়নাব) তাঁর কাছে সংবাদ পাঠিয়েছেন, এ সময় উসমা, সা’দ ও সম্ভবত উবায় (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন। সংবাদ ছিল এ মর্মে যে, (যায়নাব বলেছেন) আমার এক শিশুকন্যা মৃত্যুশয্যায় শায়িত। কাজেই আপনি আমাদের এখানে আসুন। উত্তরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে সালাম পাঠিয়ে বলে দিলেনঃ সব আল্লাহর ইখতিয়ার। তিনি যা চান নিয়ে নেন, আবার যা চান দিয়ে যান। তার কাছে সব কিছু একটি নির্ধারিত সমতা আছে। কাজেই তুমি ধৈর্যধারণ কর এবং উত্তম প্রতিদানের আশায় থাকো।

তারপর আবারো তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কসম ও তাগিদ দিয়ে সংবাদ পাঠালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে দাঁড়ালেন। আমরাও দাঁড়িয়ে গেলাম। এরপর শিশুটিকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোলে তুলে দেওয়া হল। এ সময় তার নিঃশ্বাস দ্রুত উঠানামা করছিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু-চোখ বেয়ে অশ্রু ঝরতে লাগলো। সা’দ (রাঃ) বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটা কি? তিনি উত্তর দিলেনঃ এটা রহমত। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা করেন তার অন্তরে এটিকে স্থাপন করেন। আর আল্লাহ তার মেহেরবান বান্দাদের প্রতই মেহেরবানী করে থাকেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৪ | 5254 | ۵۲۵٤

পরিচ্ছদঃ ২২৫৯. অসুস্থ বেদুঈনদের সেবা করা
৫২৫৪। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক বেদুঈনের কাছে গিয়েছিলেন! তার রোগের খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য। বর্ণনাকারী বলেনঃ আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিয়ম ছিল তিনি যখন কোন রোগীকে দেখতে যেতেন তখন তাকে বলতেন কোন ক্ষতি নেই ইনশাআল্লাহ তুমি তোমার গুনাহ থেকে পবিত্রতা লাভ করবে। তখন বেদুঈন বললঃ আপনি কি বলেছেন যে, এটা গুনাহ থেকে পবিত্র করে দেবে? কখনো নয়, বরং এটা এমন এক জ্বর যা এক অতি বৃদ্ধকে গরম করছে কিংবা সে বলেছিল উত্তপ্ত করছে, যা তাকে কবরস্থান দেখিয়ে ছাড়বে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ তবে তেমনই।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৫ | 5255 | ۵۲۵۵

পরিচ্ছদঃ ২২৬০. মুশরিক রোগীর দেখাশুনা করা
৫২৫৫। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ইয়াহুদীর ছেলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমত করত। ছেলেটির অসুখ হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখতে এলেন। এরপর তিনি বললেন তুমি ইসলাম গ্রহন করো। সে ইসলাম গ্রহন করলো। সাঈদ ইবনু মূসায়্যাব (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, আবূ তালিব মৃত্যুমুখে পতিত হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে এসেছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৬ | 5256 | ۵۲۵٦

পরিচ্ছদঃ ২২৬১. কোন রোগীকে দেখতে গিয়ে সালাতের সময় হলে সেখানেই উপস্থিত লোকদের নিয়ে জামা’আতবদ্ধভাবে সালাত আদায় ক
৫২৫৬। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অসুস্থতার সময় লোকজন তাকে দেখার জন্য তাঁর কাছে আসলে তিনি তাদের নিয়ে বসা অবস্থায় সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। লোকজন তার পেছনে দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) শুরু করেছিল। ফলে তিনি তাদের বসার জন্য ইশারা করেন। এরপর সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করে তিনি বলেনঃ ইমাম হল এমন ব্যাক্তি যাকে অনুসরন করতে হয়। কাজেই সে যখন রুকু করবে তখন তোমরাও রুকু করবে। সে যখন মাথা উঠাবে, তোমরা মাথা উঠাবে। আর সে যখন বসে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে তখন তোমরাও বসে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৭ | 5257 | ۵۲۵۷

পরিচ্ছদঃ ২২৬২. রোগীর দেহে হাত রাখা
৫২৫৭। মাক্কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) …. আয়েশা বিনত সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার পিতা বলেছেন, আমি যখন মক্কায় কঠিনভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ি তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে দেখার জন্য আসেন। আমি বললামঃ হে আল্লার নবী! আমি সম্পদ রেখে যাচ্ছি। আর আমার একটি মাত্র কন্যা ছাড়া আর কেউ নেই। এ অবস্থায় আমি কি আমার দু’তৃতীয়াংশ সম্পদের ব্যাপারে অসীয়ত করে এক-তৃতীয়াংশ রেখে যাব? তিনি উত্তর দিলেনঃ না। আমি বললামঃ তা হলে অর্ধেক রেখে দিয়ে আর অর্ধেকের ব্যাপারে অসীয়ত করে যেতে পারি। তিনি বললেনঃ না। আমি বললামঃ তাহলে দু’তৃতীয়াংশ রেখে দিয়ে এক-তৃতীয়াংশ এর ব্যাপারে অসীয়ত করে যেতে পারি? তিনি উত্তর দিলেনঃ এক-তৃতীয়াংশের পার, তবে এক-তৃতীয়াংশও অনেক। তারপর তিনি আমার কপালের উপর তাঁর হাত রাখলেন এবং আমার চেহারা ও পেটের উপর হাত বুলিয়ে বললেনঃ হে আল্লাহ, সা’দকে তুমি নিরাময় কর। তার হিজরত পুর্ন করতে দিন। আমি তার হাতের হিমেল পরশ এখনও পাচ্ছি এবং মনে করি আমি তা কিয়ামত পর্যন্ত পাব।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৮ | 5258 | ۵۲۵۸

পরিচ্ছদঃ ২২৬২. রোগীর দেহে হাত রাখা
৫২৫৮। কুতায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে প্রবেশ করলাম। তখন তিনি ভীষণ জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। আমি তাঁর গায়ে আমার হাত বুলালাম এবং বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হ্যাঁ! আমি এমন কঠিন জ্বরে আক্রান্ত হই, যা তোমাদের দু’জনের হয়ে থাকে। আমি বললাম এটা এ জন্য যে, আপনার জন্য প্রতিদানও হল দ্বিগুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হ্যাঁ! এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে কোন মুসলিম ব্যাক্তির উপর কোন যন্ত্রণা, রোগ ব্যাধি বা এ ধরনের অন্য কিছু আপতিত হলে তাতে আল্লাহ তার গুনাহগুলো ঝরিয়ে দেন, যে ভাবে গাছ তার পাতাগুলো ঝরিয়ে ফেলে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৫৯ | 5259 | ۵۲۵۹

পরিচ্ছদঃ ২২৬৩. রোগীর সামনে কী বলতে হবে এবং তাকে কী জবাব দিতে হবে
৫২৫৯। কাবীসা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুস্থতার সময় তার কাছে এলাম। এরপর তাঁর শরীরে হাত বুলালাম। এ সময় তিনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। আমি বললাম আপনি কঠিন জ্বরে আক্রান্ত এবং এটা এ জন্য যে আপনার জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সাওয়াব। তিনি বললেন হ্যাঁ! কোন মুসলিম ব্যাক্তির উপর কোন কষ্ট আপতিত হলে তার উপর থেকে গুনাহগুলো এভাবে ঝরে যায়, যেভাবে বৃক্ষ থেকে পাতা ঝরে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬০ | 5260 | ۵۲٦۰

পরিচ্ছদঃ ২২৬৩. রোগীর সামনে কী বলতে হবে এবং তাকে কী জবাব দিতে হবে
৫২৬০। ইসহাক (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রোগীকে দেখার জন্য তার কাছে প্রবেশ করলেন। তখন তিনি বলেনঃ কোন ক্ষতি নেই ইনশাআল্লাহ গুনাহ থেকে তোমার পবিত্রতা লাভ হবে। রোগী বলে উঠলঃ কখনো না বরং এটি এমন জ্বর, যা এক অতি বৃদ্ধের গায়ে টগবগ করছে আশংকা হয় যেন তাকে কবরে পৌঁছাবে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ, হবে তাই।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬১ | 5261 | ۵۲٦۱

পরিচ্ছদঃ ২২৬৪. রোগীর দেখাশুনা করা, আরোহী অবস্থায়, পায়ে চলা অবস্থায়, এবং গাধার পিঠে সাওয়ারী অবস্থায়
৫২৬১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি গাধার পিঠে আরোহন করলেন। গাধাটির পিঠে ছিল ‘ফাদক’ এলাকায় তৈরী চাদর মোড়ানো একটি গদি। তিনি নিজের পেছনে উসামা (রাঃ) কে বসিয়ে অসুস্থ সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) কে দেখতে গিয়েছিলেন। এটা বদর যুদ্ধের পূর্বেকার ঘটনা। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলতে চলতে এক পর্যায়ে এক মজসিসের পাশ অতিক্রম করতে লাগলেন। সেখানে ছিল আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালুল। এ ঘটনা ছিল আবদুল্লাহর ইসলাম গ্রহনের আগের। মজলিসটির মধ্যে মুসসিম, মুশরিক, মূর্তিপূজক ও ইয়াহুদী সম্প্রদায়ের লোকও ছিল। আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ)-ও সে মজলিসে উপস্থিত ছিলেন। সাওয়ারী জানোয়ারটির পায়ের ধূলা-বালি যখন মজলিসের লোকদের মাঝে উড়াতে লাগল, তখন আবদুল্লাহ ইবনু উবায় তার চাঁদর দিয়ে নিজের নাক চেপে ধরল এবং বলল আমাদের উপর ধূলা-বালু উড়াবেন না।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম দিলেন এবং নীচে অবতরণ করে তাদের আল্লাহর প্রতি আহবান জানালেন। এরপর তিনি তাদের সামনে কুরআন পাঠ করলেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনু উবায় তাঁকে বললঃ জনাব, আপনি যা বলেছেন আমার কাছে তা পছন্দনীয় নয়। যদি এ সব কথা সত্য হয়, তাহলে আপনি এ মজলিসে আমাদের কষ্ট দিবেন না। বরং আপনি নিজ বাড়ীতে চলে যান এবং সেখানে যে আপনার কাছে যাবে, তার কাছে এসব বৃত্তান্ত প্রকাশ করবেন। ইবনু রাওয়াহা বলে উঠলেনঃ অবশ্যই, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এসব বক্তব্য নিয়ে আমাদের মজলিসে আসবেন। আমরা এগুলো পছন্দ করি। এরপর মুসলিম, মুশরিক, ও ইয়াহুদীদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা আরম্ভ হয়ে গেল, এমন কি তারা পরস্পর মারামারি করতে উদ্যত হলো।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের শান্ত ও নীরব করতে চেষ্টা করতে থাকেন। অবশেষে সবাই শান্ত হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওয়ারীর উপর আরোহন করেন এবং সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) এর বাড়ীতে প্রবেশ করেন। এরপর তিনি তাঁকে অর্থাৎ সা’দ (রাঃ) কে বললেন তুমি কি শুনতে পাওনি আবদুল্লাহ ইবনু উবায় কি উক্তি করেছে? সা’দ (রাঃ) উত্তর দিলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাকে ক্ষমা করুন এবং উপেক্ষা করুন। আল্লাহ আপনাকে যে মর্যাদা দান করার ইচ্ছা করেছেন তা দান করেছেন। আমাদের এ উপদ্বীপ এলাকার লোকজন একমত হয়েছিল তাকে রাজমুকট পরিয়ে দেওয়ার জন্য এবং তাকে নেতৃত্ব দান করার জন্য। এরপর যখন আপনাকে আল্লাহ যে হক ও সত্য দান করেছেন তখন এর দ্বারা তার ইচ্ছা পণ্ড হয়ে গেল। এতে সে গভীর মনোক্ষুন্ন হল। আর আপনি তার যে আচরণ দেখলেন, তার কারণ এটই।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬২ | 5262 | ۵۲٦۲

পরিচ্ছদঃ ২২৬৪. রোগীর দেখাশুনা করা, আরোহী অবস্থায়, পায়ে চলা অবস্থায়, এবং গাধার পিঠে সাওয়ারী অবস্থায়
৫২৬২। আমর ইবনু আব্বাস (রহঃ) … জাবের (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার অসুস্থতা দেখার জন্য আমার কাছে এসেছিলেন। এ সময় তিনি না কোন গাধার পিঠে আরোহী ছিলেন, আর না কোন ঘোড়ার পিঠে ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৩ | 5263 | ۵۲٦۳

পরিচ্ছদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৩। কাবীসা (রহঃ) … কাব ইবনু উকবা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পথ অতিক্রম করে যাচ্ছিলেন, এ সময় আমি পাতিলের নীচে লাকড়ী জ্বালাচ্ছিলাম। তিনি বললেনঃ তোমার মাথার উকুন কি তোমাকে খুব যন্ত্রণা দিচ্ছে। আমি বললাম জ্বি-হ্যাঁ। তখন তিনি নাপিত ডাকলেন। সে মাথা মুড়িয়ে দিল। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ফিদইয়া আদায় করে দিতে আদেশ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৪ | 5264 | ۵۲٦٤

পরিচ্ছদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৪। ইয়াহইয়া ইবনু ইয়াহইয়া আবূ যাকারিয়্যা (রহঃ) … কাসিম ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) বলেছিলেন হায় যন্ত্রনায় আমার মাথা গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি এমনটি হয় আর আমি জীবিত থাকি তাহলে আমি তোমার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবো, তোমার জন্য দু’আ করবো। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ হায় আফসুস, আল্লাহর কসম। আমার মনে হয় আপনি আমার মৃত্যুকে পছন্দ করেন। আর এমনটি হচ্ছে আপনি পরের দিনই আপনার অন্যান্য সহধর্মিনাদের সঙ্গে রাত যাপন করতে পারবেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং আমি আমার মাথা গেল বলার বেশি যোগ্য। আমি তো ইচ্ছা করেছিলাম কিংবা বলেছেন, আমি ঠিক করেছিলাম আবূ বকর (রাঃ) ও তার ছেলের নিকট সংবাদ পাঠাবো এবং অসীয়ত করে যাবো, যেন লোকদের কিছু বলার অবকাশ না থাকে কিংবা আকাঙ্ক্ষাকারীদের কোন আকাঙ্ক্ষা করার অবকাশ না থাকে। তারপর শুনলাম আল্লাহ (আবূ বকর ব্যতীত অন্য কেউ খিলাফতের আকাঙ্ক্ষা করুক) তা অপছন্দ করবেন, মুমিনগণ তা পরিহার করবেন। কিংবা তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা পরিহার করবেন এবং মুমিনগণ তা অপছন্দ করবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৫ | 5265 | ۵۲٦۵

পরিচ্ছদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৫। মূসা (রহঃ) … ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম। তখন তিনি জ্বরে আক্রান্ত ছিলেন। আমি তাঁর গায়ে আমার হাত রাখলাম এবং বললামঃ আপনি কঠিন জ্বরে ভুগছেন। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ যেমনটি তোমাদের দু’জনকে ভুগতে হয়। ইবনু মাসউদ (রাঃ) বললেন আপনার জন্য রয়েছে দ্বিগুন সাওয়াব। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ কোন মুসলিম ব্যাক্তি, কোন কষ্ট বা রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয় কিংবা অন্য কোন যন্ত্রনায় নিপতিত হয়, আল্লাহ তার গুনাহসমূহ মোচন করে দেন, যেমনভাবে বৃক্ষ তার পাতাসমূহ ঝেড়ে ফেলে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৬ | 5266 | ۵۲٦٦

পরিচ্ছদঃ ২২৬৫. রোগীর উক্তি “আমি যাতনা গ্রস্থ” কিংবা আমার মাথা গেল, কিংবা আমার যন্ত্রণা প্রচন্ড আকার ধারণ করেছে এর বর্ণনা। আর আইয়ুব (আঃ) এর উক্তিঃ হে আমার রব। আমাকে কষ্ট-যাতনা স্পর্শ করেছে অথচ তুমি তো পরম দয়ালু
৫২৬৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আমির ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, বিদায় হাজ্জের (হজ্জ) সময় আমার রোগ কঠিন আকার ধারন করলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দেখতে আসলেন। আমি বললামঃ (মৃত্যু) আমার সন্নিকটে এসে গেছে যা আপনি দেখতে পাচ্ছেন অথচ আমি একজন বিত্তবান ব্যাক্তি। একটি মাত্র কন্যা ছাড়া আমার কোন ওয়ারিস নেই। এখন আমি আমার সম্পদের দু’তৃতীয়াংশ সাদকা করতে পারি কি? তিনি উত্তর দিলেনঃ না। আমি বললামঃ তাহলে অর্ধেক? তিনি বললেনঃ না। আমি বললাম এক তৃতীয়াংশ। তিনি বললেনঃ এও অনেক বেশী। নিশ্চয়ই তোমার ওয়ারিসদের সাবলম্বী রেখে যাওয়াই উত্তম তাদের নিঃস্ব ও মানুষের দারগ্রস্ত বানিয়ে যাওয়ার চাইতে। আর তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করে যে ব্যয়ই কর না কেন, তার বিনিময়ে তোমাকে সাওয়াব দেওয়া হবে। এমন কি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যে আহার তুলে দাও, তাতেও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৭ | 5267 | ۵۲٦۷

পরিচ্ছদঃ ২২৬৬. তোমারা উঠে যাও, রোগীর এ কথা বলা
৫২৬৭। ইবরাহীম ইবনু মূসা ও আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের সময় ঘনিয়ে এলো, তখন ঘরের মধ্যে অনেক মানুষের সমাবেশ ছিল। যাদের মধ্যে উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ)-ও ছিলেন। তখন তিনি (রোগ যন্ত্রনায় কাতর অবস্থায়) বললেনঃ লও, আমি তোমাদের জন্য কিছু লিখে দেব, যাতে পরবর্তীতে তোমরা বিভ্রান্ত না হও। তখন উমর (রাঃ) বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর বেশি যাতনা তীব্রতর হয়ে উঠেছে। আর তোমাদের নিকট কুরআন বিদ্যমান। আর আল্লাহর কিতাবই আমাদের জন্য যথেষ্ট। এ সময়ে আহলে বাইতর মধ্যে মতানৈক্যের সৃষ্টি হল। তারা বাদানুবাদে প্রবৃত্ত হলেন। তারপরে কেউ কেউ বলতে লাগলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে কাগজ পৌছিয়ে দাও এবং তিনি আমাদের জন্য কিছু লিখে দেবেন, যাতে পরবর্তীতে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট না হও। আবার তাদের মধ্যে অন্যরা উমর (রাঃ) যা বললেন তা বলে যেতে লাগলেন। এভাবে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে তাঁদের বাকবিতণ্ডা ও মতানৈক্য বেড়ে চলল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তোমরা উঠে যাও। উবায়দুল্লাহ (রহঃ) বলেনঃ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলতেন, বড় মুসীবত হল লোকজনের সেই মতানৈক্য ও তর্ক-বিতর্ক, যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সেই লিখে দেওয়ার মধ্যে অন্তরায় সৃষ্টি করেছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৮ | 5268 | ۵۲٦۸

পরিচ্ছদঃ ২২৬৭. দু’আর উদ্দেশ্যে অসুস্থ শিশুকে নিয়ে যাওয়া
৫২৬৮। ইবরাহীম ইবনু হামযা (রহঃ) … সায়েব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার খালা আমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে গেলেন। এরপর তিনি বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমর বোনের ছেলেটি অসুস্থ। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার মাথায় হাত বুলালেন এবং আমার জন্য বরকতের দু’আ করলেন। এরপর তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। আমি তার উযূ (ওজু/অজু/অযু)র অবশিষ্ট পানি পান করলাম এবং তার পিঠের পেছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন আমি মোহরে নবুওয়াতের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সেটি তার দুকাঁধের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত এবং খাটিয়ার গোল ঘুন্টির মত।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৬৯ | 5269 | ۵۲٦۹

পরিচ্ছদঃ ২২৬৮. রোগীর মৃত্যু কামনা করা
৫২৬৯। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মলিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ দুঃখ দৈন্যে নিপতিত হওয়ার কারণে যেন মৃত্যু কামনা না করে। যদি এমন একটা কিছু করতেই হয়, তা হলে সে যেন বলে হে আল্লাহ! আমাকে জীবিত রাখ, যতদিন পর্যন্ত আমার জন্য জীবিত থাকা কল্যাণকর হয় এবং আমাকে মৃত্যু দাও, যখন আমার জন্য মৃত্যু কল্যাণকর হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭০ | 5270 | ۵۲۷۰

পরিচ্ছদঃ ২২৬৮. রোগীর মৃত্যু কামনা করা
৫২৭০। আদম (রহঃ) … কায়স ইবনু আবূ হাযিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা অসুস্থ খাব্বাব (রাঃ) কে দেখতে গেলাম। এ সময় (তার পেটে চিকিৎসার জন্য) সাতবার দাগ লাগানো হয়েছিল। তখন তিনি বললেনঃ আমাদের সংগীরা যারা (পূর্বেই) ইন্তেকাল করেছেন তাঁরা এমতাবস্থায় চলে গেছেন যে, দুনিয়া তাঁদের আমলের সাওয়াবে কোন রকম কমতি করতে পারেনি। আর আমরা এমন জিনিস লাভ করেছি, যা মাটি ছাড়া অন্য কোথাও রাখার জায়গা পাই না। যদি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মৃত্যুর জন্য দুআ কামনা করতে নিষেধ না করতেন, তবে আমি মৃত্যুর জন্য দু’আ করতাম। এরপর আমরা অন্য এক সময় তার কাছে এসেছিলাম। তখন তিনি তার বাগানের দেয়াল তৈরী করছিলেন। তিনি বললেনঃ মুসলমান ব্যাক্তিকে তার সকল প্রকার ব্যয়ের উপর সওয়াব দান করা হয় তবে এ মাটিতে স্থাপিত জিনিসের কথা ভিন্ন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭১ | 5271 | ۵۲۷۱

পরিচ্ছদঃ ২২৬৮. রোগীর মৃত্যু কামনা করা
৫২৭১। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি তোমাদের কাউকে তার নেক আমল জান্নাতে প্রবেশ করাতে সক্ষম হবে না। লোকজন প্রশ্ন করলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনাকেও নয়? তিনি বললেনঃ আমাকেও নয়, ততক্ষন পর্যন্ত আল্লাহ আমাকে তার করুণা ও মেহেরবানীর দ্বারা ঢেকে না দেন। কাজেই মধ্যপন্থা অবলম্বন কর এবং নৈকট্য লাভের চেষ্টা করে যাও। আর তোমাদের মধ্যে কেউ যেন মৃত্যু কামনা না করে। কেননা, সে ভাল লোক হলে (বেশী বয়স পাওয়ার দরুন) তার নেক আমল বৃদ্ধি পাওয়ার সুযোগ পাবে। পক্ষান্তরে মন্দ লোক হলে সে লজ্জিত হয়ে তওবা করার সুযোগ লাভ করতে পারবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭২ | 5272 | ۵۲۷۲

পরিচ্ছদঃ ২২৬৮. রোগীর মৃত্যু কামনা করা
৫২৭২। আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমার পায়ের উপর হেলান দেওয়া অবস্থায় বলতে শুনেছি, হে আল্লাহ! আমাকে ক্ষমা করে দাও, আমার প্রতি অনুগ্রহ কর, আর আমাকে মহান বন্ধুর সঙ্গে মিলিয়ে দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৩ | 5273 | ۵۲۷۳

পরিচ্ছদঃ ২২৬৯. রোগীর জন্য পরিচর্যাকারীর দু’আ করা। আয়শা বিনত সা’দ তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ হে আল্লাহ্‌! সা’দকে নিরাময় কর
৫২৭৩। মূসা ইবনু ইসমাইল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিয়ম ছিল, তিনি যখন কোন রোগীর কাছে আসতেন কিংবা তার নিকট যখন কোন রোগীকে আনা হত তখন তিনি বলতেন কষ্ট দূর করে দাও হে মানুষের রব, শেফা দান কর, তুমিই একমাত্র শেফাদানকারী। তোমার শেফা ব্যতীত অন্য কোন শেফা নেই। এমন শেফা দান কর যা সামান্য রোগকেও অবশিষ্ট না রাখে। আমর ইবনু আবূ কায়স ও ইবরাহীম ইবনু তুহমান হাদীসটি মানসুর ইবরাহীম ও আবূযযোহা থেকে إِذَا أُتِيَ بِالْمَرِيضِ “যখন কোন রোগীকে আনা হতো”, এভাবে বর্ননা করেছেন। জারীর হাদীসটি মানসুর আবূযযোহা সূত্রে বর্ণনা করেছেন। তিনি “যখন রোগীর কাছে আসতেন” এ শব্দসহ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৪ | 5274 | ۵۲۷٤

পরিচ্ছদঃ ২২৭০. রোগীর পরিচর্যাকারীর অযু করা
৫২৭৪। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে প্রবেশ করলেন তখন আমি ছিলাম অসুস্থ। তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। এরপর আমর শরীরের উপর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি ছিটিয়ে দিলেন। কিংবা বর্ণনাকারী বলেছেন এরপর তিনি উপস্থিত লোকদের বলেছেনঃ তার শরীরে পানি ছিটিয়ে দাও। ফলে আমি চেতনা ফিরে পেলাম। আমি বললাম কালালাহ (পিতাও নেই, সন্তানও নেই) ব্যতীত আমার কোন ওয়ারিস নেই। সুতরাং আমার পরিত্যক্ত সম্পদ কিভাবে বণ্টন করা হবে? তখন ফারায়েয সম্পর্কিত আয়াত নাযিল হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৫ | 5275 | ۵۲۷۵

পরিচ্ছদঃ ২২৭১. জ্বর, প্লেগ ও মহামারী দূর হবার জন্য কোন ব্যক্তির দু’আ করা
৫২৭৫। ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মদিনা) আসলেন, তখন আবূ বকর (রাঃ) ও বিলাল (রাঃ) জ্বরাক্রান্ত হলেন। তিনি বলেনঃ আমি তাদের কাছে গেলাম এবং বললাম আব্বাজান, আপনার কাছে কেমন লাগছে? হে বিলাল! আপনি কিরূপ অনুভব করছেন? তিনি বললেনঃ আবূ বকর (রাঃ) যখন জ্বরাক্রান্ত হতেন তখন তিনি আবৃত্তি করতেনঃ সব মানুষ সুপ্রভাত ভোগ করে আপন পরিবার পরিজন নিয়ে। আর মৃত্যু অপেক্ষমান থাকে তার জুতার ফিতার চাইতেও সন্নিকটে।

আর বিলাল (রাঃ) এর নিয়ম ছিল যখন তার জ্বর ছেড়ে যেত, তিনি তখন স্বর উচ্চস্বরে বলতেনঃ হায়! আমি যদি লাভ করতাম একটি রাত কাটানোর সুযোগ এমন উপত্যকায় যেখানে আমার পাশে আছে ইযখির ও জালীল ঘাস। যদি আমার অবতরন হতো কোন দিন মাযিন্না অঞ্চলের কুপের কাছে, যদি আমার চোখে ভেসে আসতো শামা ও তাফীল। আয়িশা (রাঃ) বলেন এরপর আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলাম এবং তাঁকে সংবাদ দিলাম। তখন তিনি বললেনঃ হে আল্লাহ! আমাদের কাছে মদিনাকে প্রিয় বানিয়ে দাও যেভাবে আমাদের কাছে প্রিয় ছিল মক্কা এবং মদিনাকে স্বাস্থ্যকর বানিয়ে দাও। আর মদিনার মুদ্দ ও সা’ কে বরকতময় করে দাও এবং মদিনার জ্বরকে স্থানান্তরিত করে “জুহফা” অঞ্চলে স্থাপন করে দাও।

চিকিৎসা অধ্যায় (৫২৭৬-৫৩৬৬)

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৬ | 5276 | ۵۲۷٦

পরিচ্ছদঃ ২২৭২. আল্লাহ এমন কোন ব্যাধি অবতীর্ণ করেন নি যার নিরাময়ের কোন উপকরণ সৃষ্টি করেন নি
৫২৭৬। মুহাম্মাদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহ এমন কোন রোগ সৃষ্টি করেন নি যার নিরাময়ের উপকরন তিনি সৃষ্টি করেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৭ | 5277 | ۵۲۷۷

পরিচ্ছদঃ ২২৭৩. পুরুষ নারীর এবং নারী পুরুষের চিকিৎসা করতে পারে কি?
৫২৭৭। কুতায়বা (রহঃ) … রুবায়ঈ বিনত মুআওয়ায ইবনু আফরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সংগে যুদ্ধে শরীক হতাম। তখন আমরা লোকজনকে পানি পান করাতাম, তাদের সেবা-যত্ন করতাম। নিহত ও আহতদের মদিনায় পৌছে দিতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৮ | 5278 | ۵۲۷۸

পরিচ্ছদঃ ২২৭৪. তিনটি জিনিসের মধ্যে রোগের নিরাময় আছে
৫২৭৮। হুসায়ন (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, তিনটি জিনিসের মধ্যে রোগমুক্তির ব্যবস্থা নিহিত আছে। মধু পান করা ও ব্যবহার করা, শিঙ্গা লাগান এবং আগুন (তপ্ত লৌহ) দিয়ে দাগ লাগানো। তবে আমি আমার উম্মতকে আগুন দিয়ে দাগ লাগাতে নিষেধ করছি। হাদীসটি “মারফূ”। কুম্মী হাদীসটি লায়স, মুজাহিদ, ইবনু আব্বাস (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে فِي الْعَسَلِ وَالْحَجْمِ‏ শব্দে বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৭৯ | 5279 | ۵۲۷۹

পরিচ্ছদঃ ২২৭৪. তিনটি জিনিসের মধ্যে রোগের নিরাময় আছে
৫২৭৯। মুহাম্মদ ইবনু আবদুর রাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রোগমুক্তি তিনটি জিনিসের মধ্যে নিহিত। শিঙ্গা লাগানোতে, মধু পানে এবং আগুন দিয়ে গরম দাগ দেওয়ার মধ্যে। তবে আমি আমার উম্মতকে আগুন দিয়ে গরম দাগ দিতে নিষেধ করি।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮০ | 5280 | ۵۲۸۰

পরিচ্ছদঃ ২২৭৫. মধুর সাহায্যে চিকিৎসা। মহান আল্লাহর বানীঃ এর মধ্যে রয়েছে মানুষের জন্য নিরাময়
৫২৮০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিষ্টি জাত দ্রব্য ও মধু বেশী পছন্দ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮১ | 5281 | ۵۲۸۱

পরিচ্ছদঃ ২২৭৫. মধুর সাহায্যে চিকিৎসা। মহান আল্লাহর বানীঃ এর মধ্যে রয়েছে মানুষের জন্য নিরাময়
৫২৮১। আবূ নু’আইম (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্রাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ তোমাদের ঔষধসমূহের কোনটির মধ্যে যদি কল্যান বিদ্যমান থেকে থাকে তাহলে তা রয়েছে শিঙ্গাদানের মধ্যে কিংবা মধু পানের মধ্যে কিংবা আগুনের দ্বারা ঝলসিয়ে দেয়ার মধ্যে। তবে তা রোগ অনুযায়ী হতে হবে। আর আমি আগুন দ্বারা দাগ দেওয়াকে পছন্দ করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮২ | 5282 | ۵۲۸۲

পরিচ্ছদঃ ২২৭৫. মধুর সাহায্যে চিকিৎসা। মহান আল্লাহর বানীঃ এর মধ্যে রয়েছে মানুষের জন্য নিরাময়
৫২৮২। আয়্যাশ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … আবূ সা’ঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললঃ আমার ভাইয়ের পেটে অসুখ হয়েছে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। এরপর লোকটি দ্বিতীয়বার আসলে তিনি বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। সে তৃতীয়বার আসলে তিনি বললেনঃ তাকে মধু পান করাও। এরপর লোকটি পুনরায় এসে বললঃ আমি অনুরূপই করেছি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ সত্য বলেছেন, কিন্তু তোমার ভাইয়ের পেট অসত্য বলছে। তাকে মধু পান করাও। সে তাকে মধু পান করাল। এবার সে আরোগ্য লাভ করল।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৩ | 5283 | ۵۲۸۳

পরিচ্ছদঃ ২২৭৬. উটের দুধের সাহায্যে চিকিৎসা
৫৩৮৩। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। কতিপয় লোক রোগাক্রান্ত হয়ে পড়েছিল, তারা বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের আশ্রয়দান করুন এবং আমাদের আহারের ব্যবস্থা করে দিন। এরপর যখন তারা সুস্থ হল, তখন তারা বললঃ মদিনার বায়ু ও আবহাওয়া অনুকূল নয়। তখন তিনি তাদের তার কতগুলো উট নিয়ে “হাররা” নামক স্থানে থাকতে দিলেন। এরপর বললেন তোমরা এগুলোর দুধ পান কর। যখন তারা আরোগ্য লাভ করল তখন তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রাখালকে হত্যা করে ফেলল এবং তাঁর উটগুলোকে হাঁকিয়ে নিয়ে চলল। তিনি তাদের পেছনে ধাওয়াকারীদের পাঠালেন। এরপর তিনি তাদের হাত পা কেটে দেন এবং তাদের চক্ষুগুলোকে ফুঁড়ে দেন।

বর্ননাকারী বলেনঃ আমি তাদের মধ্যকার এক ব্যাক্তিকে দেখেছি। সে নিজের জিহবা দিয়ে মাটি কামড়াতে থাকে এবং অবশেষে মারা যায়। বর্ননাকারী সাল্লাম বলেনঃ আমার নিকট সংবাদ পৌছেছে যে হাজ্জাজ ইবনু ইউসুফ আনাস (রাঃ) কে বলেছিলেন, আপনি আমাকে কঠোরতম শাস্তি সম্পর্কে বর্ণনা করুন, যেটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রয়োগ করেছিলেন। তখন তিনি এ হাদীসটি বর্ননা করেন। এ সংবাদ হাসান বসরীর নিকট পৌছলে তিনি বলেছিলেনঃ যদি তিনি এ হাদীস বর্ননা না করতেন তবে সেটাই আমার মতে ভাল ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৪ | 5284 | ۵۲۸٤

পরিচ্ছদঃ ২২৭৭. উটের পেশাব ব্যবহার করে চিকিৎসা
৫২৮৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। কতিপয় ব্যাক্তি মদিনায় তাদের প্রতিকুল আবহাওয়া অনুভব করল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের হুকুম দিলেনঃ তারা যেন তার রাখাল অর্থাৎ তার উটগুলোর কাছে গিয়ে থাকে এবং উটের দুধ ও পেশাব পান করে। সুতরাং তারা রাখালের সংগে গিয়ে মিলিত হল এবং উটের দুধ ও পেশাব পান করতে লাগল। অবশেষে তাদের শরীর সুস্থ হলে তারা রাখালটিকে হত্যা করে ফেলল এবং উটগুলো হাকিয়ে নিয়ে যায়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এ সংবাদ পৌছলে তিনি তাদের তালাশে লোক পাঠান। এরপর তাদের ধরে আনা হল। এরপর তিনি তাদের হাত পা কেটে দেন। এবং তাদের চক্ষুগুলো ফূড়ে দেন। কাতাদা (রহঃ) বলেছেনঃ মুহাম্মদ ইবনু সীরীন আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, এটি হুদুদ (শাস্তির আইন) নাযিল হওয়ার পুর্বকার ঘটনা।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৫ | 5285 | ۵۲۸۵

পরিচ্ছদঃ ২২৭৮. কালোজিরা
৫২৮৫। আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … খালিদ ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা (যুদ্ধের উদ্দেশ্যে) বের হলাম। আমাদের সংগে ছিলেন গালিব ইবনু আবযার। তিনি পথে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এরপর আমরা মদিনায় আসলাম তখনও তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাকে দেখাশোনা করতে আসেন ইবনু আবূ আতীক। তিনি আমাদের বললেনঃ তোমরা এই কালো জিরা সংগে রেখো। এ থেকে পাঁচটি কিংবা সাতটি দানা নিয়ে পিষে খাবে, তারপর তন্মধ্যে যায়তুনের কয়েক ফোটা তৈল ঢেলে দিয়ে তার নাকের এ দিক-ওদিকের ছিদ্র পথে ফোটা ফোটা করে ঢ়ুকিয়ে দেবে। কেননা আয়িশা (রাঃ) আমাদের নিকট বর্বনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেনঃ এই কালো জিরা ‘সাম’ ব্যতিত সকল রোগের ঔষধ। আমি বললামঃ সাম- কি? তিনি বললেনঃ সাম- অর্থ মৃত্যু।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৬ | 5286 | ۵۲۸٦

পরিচ্ছদঃ ২২৭৮. কালোজিরা
৫২৮৬। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেনঃ কালো জিরা ‘সাম’ ব্যতীত সকল রোগের ঔষধ। ইবনু শিহাব বলেছেনঃ আর ‘সাম’ অর্থ হল মৃত্যু। আর কালো জিরা ‘শূনীয’ কে বলা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৭ | 5287 | ۵۲۸۷

পরিচ্ছদঃ ২২৭৯. রোগীর জন্য তালবীনা বা তরল লঘুপাক খাদ্য
৫২৮৭। হিব্বান ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রোগীকে এবং কারো মৃত্যুর কারণে শোকাতুর ব্যাক্তিকে তরল জাতীয় খাদ্য গ্রহনের আদেশ দিতেন। তিনি বলতেন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, ‘তালবীনা’ রোগাক্রান্ত ব্যাক্তির কলিজা দৃঢ় করে এবং অনেক দুশ্চিন্তা দূর করে দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৮ | 5288 | ۵۲۸۸

পরিচ্ছদঃ ২২৭৯. রোগীর জন্য তালবীনা বা তরল লঘুপাক খাদ্য
৫২৮৮। ফারওয়া ইবনু আবূল মাগরা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি তালবীনা খেতে আদেশ দিতেন এবং বলতেনঃ এটি হল অপছন্দনীয় তবে উপকারী।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৮৯ | 5289 | ۵۲۸۹

পরিচ্ছদঃ ২২৮০. নাসিকায় ঔষধ ব্যবহার
৫২৮৯। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে-বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিঙ্গা লাগিয়েছেন এবং শিঙ্গা প্রয়োগকারী বক্তিকে পারিশ্রমিক দিয়েছেন আর তিনি (শ্বাস দ্বারা) নাকে ঔষধ টেনে নিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯০ | 5290 | ۵۲۹۰

পরিচ্ছদঃ ২২৮১. ভারতীয় ও সামুদ্রিক এলাকার চন্দন কাঠের (ধোঁয়ার) সাহায্যে নাকে ঔষধ টেনে নেওয়া। قُسْطِ কে كُسْتُ ও বলা হয়। যেমন كَافُورِ কে قَافُورِ ও বলা যায়। অনুরূপভাবে كُشِطَتْ কে قُشِطَتْ পড়া যায়। كُشِطَتْ এর অর্থ হল نُزِعَتْ আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ قُشِطَتْ পড়েছেন।
৫২৯০। সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … উম্মে কায়স বিনত মিহসান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি তোমরা ভারতীয় এই চন্দন কাঠ ব্যবহার করবে। কেননা তার মধ্যে সাত ধরনের চিকিৎসা (নিরাময়) রয়েছে। শ্বাসনালীর ব্যথার জন্য এর (ধোয়া) নাক দিয়ে টেনে নেয়া যায়। নিউমোনিয়া দূর করার জন্যও তা সেবন করা যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আমার এক শিশু পুত্রকে নিয়ে এলাম, সে খাবার খেতে চাইত না। এ সময় সে তাঁর কাপড়ে পেশাব করে দিল। তিনি পানি আনার জন্য ডেকে পাঠালেন। এরপর তিনি কাপড়ে পানি ঢেলে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯১ | 5291 | ۵۲۹۱

পরিচ্ছদঃ ২২৮২. কোন সময় শিঙ্গা লাগাতে হয়। আবু মুসা (রাঃ) রাতে শিঙ্গা লাগাতেন
৫২৯১। আবূ মামার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম)রত অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯২ | 5292 | ۵۲۹۲

পরিচ্ছদঃ ২২৮৩. সফর ও ইহরাম অবস্থায় শিঙ্গা লাগানো। ইবন বুজায়না (রাঃ) এ ব্যাপারে নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।
৫২৯২। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম বাঁধা অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৩ | 5293 | ۵۲۹۳

পরিচ্ছদঃ ২২৮৪. রোগ নিরাময়ের জন্য শিংগা লাগানো
৫২৯৩। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তাকে শিঙ্গা প্রয়োগের পারিশ্রমিক প্রদানের ব্যপারে প্রশ্ন করা হয়েছিল। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিঙ্গা লাগিয়েছেন। আবূ তায়বা তাকে শিঙ্গা লাগায়। এরপর তিনি তাকে দুই সা’ খাদ্যবস্তু প্রদান করেন। সে তার মালিকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করলে তারা তার থেকে পারিশ্রমিকের পরিমান লাঘব করে দেয়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেনঃ তোমরা যে সকল জিনিসের দ্বারা চিকিৎসা কর সেগুলোর মখ্যে সবচেয়ে উত্তম হল শিঙ্গা লাগানো এবং সামুদ্রিক চন্দন কাঠ ব্যাবহার করা। তিনি আরো বলেছেনঃ তোমরা তোমাদের শিশুদের জিহবা তালু টিপে কষ্ট দিও না। বরং তোমরা চন্দন কাঠ (ধোয়া) ব্যবহার কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৪ | 5294 | ۵۲۹٤

পরিচ্ছদঃ ২২৮৪. রোগ নিরাময়ের জন্য শিংগা লাগানো
৫২৯৪। সাঈদ ইবনু তালীদ (রহঃ) … আসিম ইবনু উমর ইবনু কাতাদা থেকে বর্ণিত যে, জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) অসুস্থ মুকান্নাকে দেখতে যান। এরপর তিনি বললেনঃ আমি সরবো না, যতক্ষ না তাকে শিঙ্গা লাগানো হয়। কেননা, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি নিশ্চয় এর (শিঙ্গার) মধ্যে রয়েছে নিরাময়।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৫ | 5295 | ۵۲۹۵

পরিচ্ছদঃ ২২৮৫. মাথায় শিংগা লাগানো
৫২৯৫। ঈসমাইল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু বুজায়না (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম বাধা অবস্থায় মক্কার “লাহয়ী জামাল” নামক স্থানে তার মাথার মধ্যখানে শিঙ্গা লাগান। আনসারী (রহঃ) হিশাম ইবনু হাসসান (রহঃ) ইকরামার সুত্রে ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মাথায় শিঙ্গা লাগান।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৬ | 5296 | ۵۲۹٦

পরিচ্ছদঃ ২২৮৬. অর্ধেক মাথা কিংবা পুরো মাথা ব্যথার কারণে শিংগা লাগানো
৫২৯৬। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, মাথায় বেদনার কারণে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম অবস্থায় ‘লাহয়ি জামাল’ নামক একটি কুপের নিকটে মাথার শিঙ্গা লাগান। মুহাম্মাদ ইবনু সাওয়া (রহঃ) হিশাম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম বাধা অবস্থায় অর্ধ মাথা বেদনার কারনে তার মাথায় শিঙ্গা লাগান।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৭ | 5297 | ۵۲۹۷

পরিচ্ছদঃ ২২৮৬. অর্ধেক মাথা কিংবা পুরো মাথা ব্যথার কারণে শিংগা লাগানো
৫২৯৭। ইসমাঈল ইবনু আবান (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যদি তোমাদের ঔষধ সমুহের কোনটির মধ্যে কল্যাণ বিদ্যমান থাকে তাহলে তা আছে মধুপান করার মধ্যে কিংবা শিঙ্গা লাগানোর মধ্যে কিংবা আগুন দ্বারা দাগ লাগানোর মধ্যে। তবে আমি আগুনের দাগ দেওয়াকে পছন্দ করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৮ | 5298 | ۵۲۹۸

পরিচ্ছদঃ ২২৮৭. কষ্টের কারনে মাথা মুড়িয়ে ফেলা
৫২৯৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … কাব ইবনু উজরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন হুদায়বিয়ার সফরকালে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে আসলেন। আমি তখন পাতিলের নীচে আগুন দিতে ছিলাম, আর আমার মাথা থেকে তখন উকুন ঝরছিল। তিনি বললেন তোমার উকুনগুলো তোমাকে কি খুব যন্ত্রণা দিচ্ছে? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তাহলে তুমি মাথা মুণ্ডন করে নাও এবং তিন দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর অথবা ছয়জন (মিসকীন) কে আহার দাও কিংবা একটি কুরবানীর পশু যবাহ করে নাও। আইউব (রহঃ) বলেনঃ আমি সঠিক বলতে পারি না, এগুলোর মধ্যে প্রথমে তিনি কোনটির কথা বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫২৯৯ | 5299 | ۵۲۹۹

পরিচ্ছদঃ ২২৮৮. যে ব্যক্তি আগুনের দ্বারা দাগ দেয় কিংবা অন্যকে দাগ লাগিয়ে দেয় এবং যে ব্যক্তি এভাবে দাগ দেয়নি তার ফাযীলাত
৫২৯৯। আবূল ওয়ালীদ হিশাম ইবনু আবদুল মালিক (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ যদি তোমাদের চিকিৎসাগুলোর কোনটির মধ্যে নিরাময় থাকে, তাহলে তা রয়েছে শিঙ্গা লাগানোর মধ্যে কিংবা আগুনের দ্বারা দাগ লাগানোর মধ্যে, তবে আমি আশুনের দ্বারা দাগ দেয়াকে পছন্দ করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০০ | 5300 | ۵۳۰۰

পরিচ্ছদঃ ২২৮৮. যে ব্যক্তি আগুনের দ্বারা দাগ দেয় কিংবা অন্যকে দাগ লাগিয়ে দেয় এবং যে ব্যক্তি এভাবে দাগ দেয়নি তার ফাযীলাত
৫৩০০। ইমরান ইবনু মায়সারা (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ বদ-নযর কিংবা বিষাক্ত দংশন ব্যতিরেকে অন্য কোন ব্যাপারে ঝাড়ফুঁক নেই। বর্ননাকারী বলেন, এরপর এ হাদীস আমি সা’ঈদ ইবনু জুবায়র (রহঃ) এর কাছে উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ আমাদের নিকট ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমার সামনে সকল উম্মাতকে পেশ করা হয়েছিল। (তখন আমি দেখেছি) দু’একজন নবী পথ অতিক্রম করতে লাগলেন এমতাবস্থায় যে, তাদের সংগে রয়েছে লোকজনের ছোট ছোট দল। কোন কোন নবী এমনও রয়েছেন যার সঙ্গে একজনও নেই। অবশেষে আমার সামনে তুলে ধরা হল বিশাল সমাবেশ। আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ এটা কি? এ কি-আমার উম্মত? উত্তর দেয়া হলঃ না, ইনি মূসা (আলাইহিস সালাম) এর সঙ্গে তার কাওম। আমাকে বলা হলঃ আপনি ঊর্ধাকাশের দিকে তাকান। তখন দেখলামঃ বিশাল একটি দল যা দিগন্তকে ঢেকে রখেছে। তারপর আমাকে বলা হলঃ আকাশের দিগন্তের এদিক ওদিক দৃষ্টিপাত করুন। তখন দেখলাম বিশাল একটি দল, যা আকাশের দিগন্তসমূহ ঢেকে দিয়েছে। তখন বলা হল এরা হলঃ আপনার উম্মত। আর তাদের মধ্য থেকে সত্তর হাজার ব্যাক্তি বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে চলে গেলেন। উপস্থিতদের কাছে কথাটির কোন ব্যাখ্যা প্রদান করলেন না। (যে বিনা হিসাবের লোক কারা হবে?) ফলে উপস্থিত লোকদের মধ্যে তারা বিতর্ক শুরু হল। তারা বললঃ আমরা আল্লাহর প্রতি ইমান এনেছি এবং তার রাসুলের অনুসরণ করে থাকি, সুতরাং আমরাই তাদের অন্তর্ভুক্ত। কিংবা তারা হল আমাদের সে সকল সন্তান-সন্ততি যারা ইসলামের যুগে জন্মগ্রহন করেছে। আর আমাদের জন্ম হয়েছে জাহেলী যুগে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ সংবাদ পৌছলে তিনি বেরিয়ে আসলেন এবং বললেনঃ তারা হল সে সব লোক যারা মন্ত্র পাঠ করে না, বদফালী (শুভ অশুভ) গ্রহন করে না এবং আগুনের সাহায্যে দাগ লাগায় না। বরং তারা তো তাদের রবের উপরই ভরসা করে থাকে। তখন উক্‌কাসা ইবনু মিহসান (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাদের মধ্যে কি আমি আছি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন আরেকজন দাঁড়িয়ে বললঃ তাদের মধ্যে কি আমিও আছি? তিনি বললেনঃ উক্‌কাসা এ সুযোগ তোমার আগেই নিয়ে গেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০১ | 5301 | ۵۳۰۱

পরিচ্ছদঃ ২২৮৯. চোখের রোগের কারনে সুরমা ব্যবহার করা। উম্মে আতিয়্যা (রাঃ) থেকেও বর্ণনা রয়েছে
৫৩০১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, জনৈকা মহিলার স্বামী মারা গেলে তার চোখে অসুখ দেখা দেয়। লোকজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে মহিলার কথা উল্লেখ করে সুরমা ব্যবহারের কথা আলোচনা করল এবং তার চোখ আশংকাগ্রস্ত বলে জানাল। তখন তিনি বললেনঃ তোমাদের এক একটি মহিলার অবস্থাতো এরুপ ছিল যে, তার ঘরে তার সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাপড়ে আচ্ছাদিত হয়ে থাকত কিংবা তিনি বলেছেনঃ সে তার কাপড়ের দ্বারা আচ্ছাদিত হয়ে তার সবচেয়ে নিকৃষ্ট ঘরে (বছরের পর বছর ধরে) অবস্থান করতে থাকতো। এরপর যখন কোন কুকুর হেঁটে যেত, তখন সে কুকুরটির দিকে উটের বিষ্টা নিক্ষেপ করে (বেরিয়ে আসার অনুমতি লাভ করতো)। কাজেই, সে চোখে সুরমা লাগাবে না বরং চার মাস দশ দিন পর্যন্ত সে অপেক্ষা করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০২ | 5302 | ۵۳۰۲

পরিচ্ছদঃ ২২৯১. জমাট শিশির চোখের জন্য শেফা
باب الْجُذَامِ

وَقَالَ عَفَّانُ حَدَّثَنَا سَلِيمُ بْنُ حَيَّانَ، حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مِينَاءَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ لاَ عَدْوَى وَلاَ طِيَرَةَ وَلاَ هَامَةَ وَلاَ صَفَرَ، وَفِرَّ مِنَ الْمَجْذُومِ كَمَا تَفِرُّ مِنَ الأَسَدِ

২২৯০. পরিচ্ছেদঃ কুষ্ঠ রোগ। ‘আফফান (রহঃ) বলেন, সালিম ইবনু হায়য়ান, আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রোগের কোন সংক্রমণই নেই, কুলক্ষণ বলতে কিছু নেই, পেঁচা অশুভের প্রতিক নয়, সফর মাসের কোন অশুভ নেই। কুষ্ঠ রোগী থেকে দূরে থাক, যেভাবে তুমি দূরে থাক তুমি বাঘ থেকে।

৫৩০২। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … সাঈদ ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি ছত্রাক এক জাতীয় শিশির থেকে হয়ে থাকে। আর এর রস চোখের জন্য শেফা। শুবা (রহঃ) বলেনঃ হাকাম ইবনু উতায়বা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমার কাছে এরূপ বর্ণনা করেছেন। শুবা (রহঃ) বলেনঃ হাকাম যখন আমাকে হাদীসটি বর্ণনা করেন তখন আবদুল মালিক বর্ণিত হাদীসকে তিনি প্রত্যাখ্যান করেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৩ | 5303 | ۵۳۰۳

পরিচ্ছদঃ ২২৯২. রোগীর মুখের ভিতর ঔষধ ঢেলে দেয়া
৫৩০৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) ও আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, আবূ বকর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মৃতদেহ মুবারকে চুমু নিয়েছেন। বর্ননাকারী বলেন আয়িশা (রাঃ) আরো বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অসুখের সময় আমরা তার মুখে ঔষধ ঢেলে দিলাম। তখন তিনি আমাদের ইশারা দিতে থাকলেন যে, তোমরা আমার মুখে ঔষধ ঢেল না। আমরা মনে করলাম এটা ঔষধের প্রতি একজন রোগীর অরুচির প্রকাশ মাত্র এরপর তিনি যখন সুস্থবোধ করলেন তখন বললেনঃ আমি কি তোমাদের আমার মুখে ঔষধ ঢেলে দিতে নিষেধ করিনি? আমরা বললামঃ আমরাতো ঔষধের প্রতি রোগীর সাধারণ অনীহা মনে করেছিলাম। তখন তিনি বললেন আমি এখন যাদের এ ঘরে দেখতে পাচ্ছি তাদের সকলের মুখেই ঔষুধ ঢালা হবে। আব্বাস (রাঃ) ছাড়া কেউ বাদ যাবে না। কেননা, তিনি তোমাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৪ | 5304 | ۵۳۰٤

পরিচ্ছদঃ ২২৯২. রোগীর মুখের ভিতর ঔষধ ঢেলে দেয়া
৫৩০৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … উম্মে কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার এক পুত্র সন্তানকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলাম। ছেলেটির আলাজিহ্বা ফোলার কারণে আমি তা দাবিয়ে দিয়েছিলাম। তখন তিনি বললেনঃ এ ধরনের রোগ-ব্যাধি দমনে তোমরা নিজেদের সন্তানদের কেন কষ্ট দিয়ে থাক? তোমরা ভারতীয় চন্দন কাঠ ব্যবহার কর। কেননা তাতে সাত রকমের নিরাময় বিদ্যমান। তন্মধ্যে আছে পাজরের ব্যাথা। আলাজিহ্বা ফোলার কারণে এটির ধোয়া নাক দিয়ে টেনে নেয়া যায়। পাজরের ব্যখার রোগীকে তা সেবন করান যায়।

সুফিয়ান বলেনঃ আমি যুহরীকে বলতে শুনেছি যে, তিনি আমাদের কাছে দুটির কথা বর্ণনা করেছেন। আর পাঁচটির কথা বর্ণনা করেননি। বর্ননাকারী আলী বলেনঃ আমি সুফিয়ানকে বললাম মা’মার স্মরণ রাখতে পারেন নি। তিনি বলেছেন علقت عَلَيْهِ আর যুহরী তো বলেছেন أَعْلَقْتُ عَنْهُ শব্দ দ্বারা। আমি তার মুখ থেকে শুনে মুখস্থ করেছি। আর সুফিয়ানের রেওয়াতে তিনি ছেলেটির অবস্থার বর্ণনা দিয়েছেন যে, আঙ্গুলের সাহায্যে যার তালু দাবিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ সময় সুফিয়ান নিজের তালুতে আঙ্গুল প্রবেশ করিয়ে দেখিয়েছেন অর্থাৎ তিনি তাঁর আঙ্গুলের দ্বারা তালুকে তুলে ধরেছিলেন। কিন্তু أَعْلِقُوا عَنْهُ شَيْئًا‏ এভাবে কেউ বর্ণনা করেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৫ | 5305 | ۵۳۰۵

পরিচ্ছদঃ ২২৯৩. পরিচ্ছেদ নাই
৫৩০৫। বিশর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রোগযন্ত্রণা বেড়ে গেল এবং তীব্র আকার ধারণ করল, তখন তিনি তার সহধর্মিণীগনের কাছে অনুমতি চাইলেন যে, তিনি যেন আমার গৃহে অসুস্থকালীন সময় অবস্থান করতে পারেন। এরপর তাঁরা অনুমতি দিলে তিনি দু’ব্যাক্তি অর্থাৎ আব্বাস (রাঃ) ও আরেকজনের সাহায্যে এভাবে বেরিয়ে আসলেন যে, যমীনের উপর তাঁর দু’পা হেঁচড়াতে ছিলেন। আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে হাদীসটি অবহিত করলে তিনি বলেনঃ আপনি কি জানেন আরেক ব্যাক্তি যার নাম আয়িশা (রাঃ) উল্লেখ করেননি, তিনি কে ছিলেন? আমি উত্তর দিলামঃ না। তিনি বললেনঃ আলী (রাঃ)।

আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ যখন তাঁর রোগ-যন্ত্রণা আরো তীব্র হল তখন তিনি বললেন, যে সব মশকের মুখ এখনো খোলা হয়নি এমন সাত মাশক পানি আমার গায়ের উপর ঢেলে দাও। আমি লোকজনের কাছে কিছু অসীয়ত করে আসার ইচ্ছা পোষণ করছি। তিনি বলেন, তখন আমরা তাকে তার সহধর্মিণী হাফসা (রাঃ) এর একটি কাপড় কাচার জায়গায় নিয়ে গিয়ে বসালাম। এরপর তার গায়ের উপর সেই মাশরুক থেকে পানি চাইতে লাগলাম। অবশেষে তিনি আমাদের দিকে ইশারা দিলেন যে, তোমরা কাজ সমাধা করেছ। তিনি বলেনঃ এরপর লোকজনের দিকে বেরিয়ে গেলেন। আর তাদের নিরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন এবং তাদের সামনে খুতবা দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৬ | 5306 | ۵۳۰٦

পরিচ্ছদঃ ২২৯৪. উযরা-আলা-জিহবা যন্ত্রণা রোগের বর্ণনা
৫৩০৬। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আসাদ গোত্রের অর্থাৎ আসা’দ খুযায়মা গোত্রের উম্মে কায়স বিনত মিহসান আসা’দিয়া (রাঃ) ছিলেন প্রথম যুগের হিজরতকারিনাদের অন্তর্ভুক্ত। যারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বায়আত গ্রহণ করেছিলেন। আর তিনি ছিলেন উককাশা (রাঃ) এর বোন। তিনি বলেছেন যে, তিনি তার এক ছেলেকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসেছিলেন। ছেলেটির আলাজিহ্বা ফোলার কারণে তিনি তা দাবিয়ে দিয়েছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা এ সকল ব্যাধি দমনে তোমাদের সন্তানদের কেন কষ্ট দিয়ে থাক? তোমরা এই ভারতীয় চন্দন কাঠ সংগ্রহ করে রেখে দিও। কেননা এতে সাত রকমের চিকিৎসা আছে, তন্মধ্যে একটি হল পাঁজর ব্যথা। কথাটির দ্বারা তাঁর উদ্দেশ্য হল কোস্ত। আর কোস্ত হল হিন্দী চন্দন কাঠ। ইউনুস ও ইসহাক ইবনু রাশিদ-যুহরী থেকে عَلَّقَتْ عَلَيْهِ শব্দে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৭ | 5307 | ۵۳۰۷

পরিচ্ছদঃ ২২৯৫. পেটের পীড়ার চিকিৎসা
৫৩০৭। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলল যে, আমার ভাইয়ের পেট খারাপ হয়েছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে মধু পান করাও। সে তাকে মধু সেবন করাল। এরপর বলল, আমি তাকে মধু পান করিয়েছি কিন্তু পীড়া আরো বেড়ে চলছে। তিনি বললেনঃ আল্লাহ সত্য বলেছেন কিন্তু তোমার ভাইয়ের পেট অসত্য প্রতিপন্ন করেছে। নযর (রহঃ) শু’বা থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৮ | 5308 | ۵۳۰۸

পরিচ্ছদঃ ২২৯৬. ‘সফর’ পেটের পীড়া ছাড়া কিছুই নয়
৫৩০৮। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রোগের কোন সংক্রমন নেই, সফরের কোন কুলক্ষণ নেই, পেঁচার মধ্যেও কোন কুলক্ষণ নেই। তখন জনৈক বেদুঈন বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাহলে আমার উটের এ অবস্থা হয় কেন? সে যখন চারণ ভূমিতে থাকে তখন সেগুলো যেন মুক্ত হরিণের পাল। এমন অবস্থায় চর্মরোগা উট এসে সেগুলোর মধ্যে ঢ়ুকে পড়ে এবং এগুলোকেও চর্ম রোগাক্রান্ত করে ফেলে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাহলে প্রথমটিকে চর্ম রোগাক্রান্ত কে করেছে?

যুহরী হাদীসটি আবূ সালামা ও সিনান ইবনু আবূ সিনান (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩০৯ | 5309 | ۵۳۰۹

পরিচ্ছদঃ ২২৯৭. পাঁজরের ব্যথা
৫৩০৯। মুহাম্মদ (রহঃ) … উবায়দুল্লাহ ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উম্মে কায়স বিনত মিহসান তিনি ছিলেন প্রথম কালের হিজরতকারিণী উক্‌কাশা ইবনু মিহসান (রাঃ) এর বোন এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বায়আত গ্রহণকারিণী মহিলা সাহাবী। তিনি বলেছেনঃ তিনি তাঁর এক ছেলেকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসেন। ছেলেটির আলাজিহ্বা ফুলে গিয়েছিল। তিনি তা দাবিয়ে দিয়েছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহকে ভয় কর, কেন তোমরা তোমাদের সন্তানদের তালু দাবিয়ে কষ্ট দাও। তোমরা এই ভারতীয় চন্দন কাঠ ব্যবহার কর। কেননা, এতে রয়েছে সাত প্রকারের চিকিৎসা। তন্মধ্যে একটি হল পাঁজরের ব্যথা। কাঠ বলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উদ্দেশ্য হল কোস্ত। قسط শব্দেও তার আভিধানিক ব্যবহার আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১০ | 5310 | ۵۳۱۰

পরিচ্ছদঃ ২২৯৭. পাঁজরের ব্যথা
৫৩১০। আরিম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবূ তালহা ও আনাস ইবনু নাযর (রাঃ) তাকে আগুন দিয়ে দাগ দিয়েছেন। আর আবূ তালহা তাকে নিজ হাতে দাগ দিয়েছেন। আব্বাদ ইবনু মানসূর বলেন, আইউব আবূ কিলাবা … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) সুত্রে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের জনৈক পরিবারের লোকদের বিষাক্ত দংশন ও কান ব্যথা জনিত কারণে ঝাঁড়ফুক গ্রহণ করার জন্য অনূমতি দেন। আনাস (রাঃ) বলেন আমাকে পাঁজর ব্যথা রোগের কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবিত থাকাকালে আগুন দিয়ে দাগ দেয়া হয়েছিল। তখন আমার নিকট উপস্থিত ছিলেন আবূ তালহা আনাস ইবনু নাযর এবং যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ)। আর আবূ তালহা (রাঃ) আমাকে দাগ দিয়েছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১১ | 5311 | ۵۳۱۱

পরিচ্ছদঃ ২২৯৮. রক্ত বন্ধ করার জন্য চাটাই পুড়িয়ে ছাই লাগানো
৫৩১১। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ সাঈদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাথায় লৌহ শিরস্রান (হেলমেট) চুর্ন করে দেয়া হল আর তার মুখমন্ডল রক্তে রঞ্জিত হয়ে গেল এবং তাঁর রুবাঈ দাঁত ভেংগে গেল, তখন আলী (রাঃ) ঢাল ভর্তি করে পানি দিতে থাকলেন এবং ফাতিমা (রাঃ) এসে তার চেহারা মুবারক থেকে রক্ত ধুয়ে দিতে লাগলেন। ফাতিমা (রাঃ) যখন দেখলেন যে, পানি ঢালার পরেও অধিক পরিমাণ রক্ত ঝরে চলছে, তখন তিনি একটি চাটাই নিয়ে এসে তা পুড়ালেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যখমের উপর ছাই লাগিয়ে দিলেন। ফলে রক্ত বন্ধ হয়ে গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১২ | 5312 | ۵۳۱۲

পরিচ্ছদঃ ২২৯৯. জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে হয়
৫৩১২। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) এর সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে সৃষ্টি হয়। কাজেই তা পানির সাহায্যে নিভিয়ে দাও। নাফি (রহঃ) বলেন, আবদুল্লাহ (রাঃ) তখন বলতেন আমাদের উপর থেকে শাস্তিকে হালকা কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৩ | 5313 | ۵۳۱۳

পরিচ্ছদঃ ২২৯৯. জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে হয়
৫৩১৩। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … ফাতিমা বিনত মুনযির (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে আসমা বিনত আবূ বকর (রাঃ) এর নিকট যখন কোন জ্বরাক্রান্ত মহিলাকে দু’আর জন্য আনা হত, তখন তিনি পানি হাতে নিয়ে সেই মহিলার জামার ফাঁক দিয়ে তার গায়ে ছিটিয়ে দিতেন এবং বলতেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের আদেশ দিতেন, আমরা যেন পানি দিয়ে জ্বর ঠাণ্ডা করে দেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৪ | 5314 | ۵۳۱٤

পরিচ্ছদঃ ২২৯৯. জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে হয়
৫৩১৪। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে হয়। কাজেই তোমরা পানির দ্বারা তা ঠান্ডা করো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৫ | 5315 | ۵۳۱۵

পরিচ্ছদঃ ২২৯৯. জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে হয়
৫৩১৫। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … রাফি ইবনু খাদীজ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ জ্বর জাহান্নামের উত্তাপ থেকে সৃষ্টি হয়। কাজেই তোমরা তা পানির দ্বারা ঠাণ্ডা করে নিও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৬ | 5316 | ۵۳۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৩০০. অনুকূল নয় এমন এলাকা থেকে বেরিয়ে যাওয়া
৫৩১৬। আবদুল আ’লা ইবনু হাম্মাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উক্‌কাল ও উরায়না গোত্রের কতিপয় মানুষ কিংবা তিনি বলেছেন কতিপয় পুরুষ লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে ইসলাম সম্পর্কে আলাপ আলোচনা করল। এরপর তারা বলল হে আল্লাহর নাবী! আমরা ছিলাম পশু পালন অঞ্চলের অধিবাসী। আমরা কখনো চাষাবাদকারী ছিলাম না। অতএব মদিনায় বসবাস করা তাদের জন্য অনুপযোগী হল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের জন্য কিছু উট ও একজন রাখাল দেওয়ার আদেশ দিলেন এবং তাদের হুকুম দিলেন যেন এগুলো নিয়ে যায় এবং এগুলোর দুধ ও পেশাব পান করে। এরপর তারা রওয়ানা হয়ে যখন হারবা এলাকার কাছাকাছি গিয়ে পৌছল তখন তারা ইসলাম ত্যাগ করে কুফরী অবলম্বন করল এবং তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রাখালটিকে হত্যা করে উটগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে গেল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ খবর পৌছল। তিনি তাদের পেছনে অনুসন্ধানকারী দল পাঠালেন। (ধরে আনার পর) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের ব্যাপারে চুড়ান্ত আদেশ দিলেন। সে মতে সাহাবায়ে কেরাম তাদের চক্ষুগুলো ফুঁড়ে দিলেন। তাদের হাতগুলো কেটে দিলেন এবং তাদের হাররা এলাকায় ফেলে রাখা হল। অবশেষে তারা সেই অবস্থায় মারা গেল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৭ | 5317 | ۵۳۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৩০১. প্লেগ রোগের বর্ণনা
৫৩১৭। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে সা’দ (রাঃ) এর কাছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেছেনঃ যখন তোমরা কোন এলাকায় প্লেগের প্রাদুর্ভাবের সংবাদ পাও তখন সেই এলাকায় প্রবেশ করো না। আর তোমরা যেখানে অবস্থান কর, তথায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে সেখান থেকে বেরিয়ে যেয়ো না। (বর্ণনাকারী হাবীব ইবনু আবূ সাবিত বলেন) আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ আপনি কি উসামা (রাঃ) কে এ হাদীস সা’দ (রাঃ) এর কাছে বর্ণনা করতে শুনেছেন যে, (সা’দ) তাতে কোন অসম্মতি প্রকাশ করেননি? ইবরাহীম ইবনু সা’দ বলেনঃ হ্যাঁ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৮ | 5318 | ۵۳۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৩০১. প্লেগ রোগের বর্ণনা
৫৩১৮। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) সিরিয়ার দিকে যাত্রা করেছিলেন। অবশেষে তিনি যখন সারগ এলাকায় গেলেন, তখন তার সঙ্গে সৈন্য বাহিনীর প্রধানগণ তথা আবূ উবায়দা ইবনু জাররাহ ও তার সংগীগণ সাক্ষাত করেন। তারা তাকে অবহিত করেন যে, সিরিয়া এলাকায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, তখন উমর (রাঃ) বলেনঃ আমার নিকট প্রবীণ মুহাজীরদের ডেকে আনো। তখন তিনি তাদের ডেকে আনলেন। উমর (রাঃ) তাঁদের সিরিয়ায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব ঘটার কথা অবহিত করে তাদের কাছে পরামর্শ চহিলেন। তখন তাদের মধ্যে মতভেদের সৃষ্টি হল। কেউ বললেনঃ আপনি একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে বের হয়েছেন; কাজেই তা থেকে ফিরে যাওয়াকে আমরা পছন্দ করি না। আবার কেউ কেউ বললেনঃ আপনার সঙ্গে রয়েছেন শেষ অবশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণ, কাজেই আমাদের কাছে ভাল মনে হয় না যে, আপনি তাদের এই প্লেগের মধ্যে ঠেলে দিবেন।

উমর (রাঃ) বললেনঃ তোমরা আমার নিকট থেকে চলে যাও। এরপর তিনি বললেনঃ আমার নিকট আনসারদের ডেকে আনো। আমি তাদের ডেকে আনলাম। তিনি তাদের কাছে পরামর্শ চাইলে তারাও মুহাজিরদের পথ অবলম্বন করলেন এবং তাঁদের ন্যায় মতভেদ করলেন। উমর (রাঃ) বললেনঃ তোমরা উঠে যাও। এরপর আমাকে বললেনঃ এখানে যে সকল বয়োজ্যেষ্ঠ কুরায়শী আছেন, যারা মক্কা বিজয়ের বছর হিজরত করেছিলেন, তাদের ডেকে আনো। আমি তাদের ডেকে আনলাম, তখন তারা পরস্পরে কোন মতপার্থক্য করেননি। তাঁরা বললেনঃ আপনার লোকজনকে নিয়ে ফিরে যাওয়া এবং তাদের প্লেগের কবলে আপনার ঠেলো না দেওয়াই আমাদের কাছে ভাল মনে হয়। তখন উমর (রাঃ) লোকজনের মধ্যে ঘোষণা দিলেন যে, আমি ভোরে সাওয়াবীর পিঠে আরোহন করবো (ফিরে যাওযার জন্য)। এরপর ভোরে সকলে এভাবে প্রস্তুতি নিল।

আবূ উবায়দা (রাঃ) বললেনঃ আপনি কি আল্লাহর নির্ধারণকৃত তাকদীর থেকে পলায়ন করার জন্য ফিরে যাচ্ছেন? উমর (রাঃ) বললেন হে আবূ উবায়দা! যদি তুমি ছাড়া অন্য কেউ কথাটি বলতো! হাঁ আমরা আল্লাহর এক তাকদীর থেকে আল্লাহর অন্য একটি তাকদীরের দিকে ফিরে যাচ্ছি। তুমি বলত তোমার কিছু উটকে যদি তুমি এমন কোন উপত্যকায় নিয়ে যাও আর সেখানে আছে দুটি মাঠ। তন্মধ্যে একটি হল সবুজ শ্যমল, আর অন্যটি হল শুষ্ক ও ধূসর। এবার বল ব্যাপারটি কি এমন নয় যে, যদি তুমি সবুজ মাঠে চরাও তাহলে তা আল্লাহর তাকদীর অনুযায়ীই চরিয়েছ। আর যদি শুষ্ক মাঠে চরাও, তাহলে তাও আল্লাহর তাকদীর অনুযায়ীই চরিয়েছ।

বর্ণনাকারী বলেন, এমন সময় আবদুর রহমান ইবনু আউফ (রাঃ) আসলেন। তিনি এতক্ষণ যাবত তাঁর কোন প্রয়োজনের কারণে অনুপস্থিত ছিলেন। তিনি বললেনঃ এ ব্যাপারে আমার নিকট একটি তখ্য আছে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ তোমরা যখন কোন এলাকায় (প্লেগের) প্রাদুর্ভাবের কথা শোন, তখন সেখানে প্রবেশ করো না। আর যদি কোন এলাকায় এর প্রাদুর্ভাব নেমে আসে, আর তোমরা সেখানে থাকে তাহলে পলায়ন করে সেখান থেকে বেরিয়ে যেয়ো না। বর্ণনাকারী বলেনঃ এরপর উমর (রাঃ) আল্লাহর প্রশংসা করলেন, তারপর প্রত্যাবর্তন করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩১৯ | 5319 | ۵۳۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৩০১. প্লেগ রোগের বর্ণনা
৫৩১৯। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, উমর (রাঃ) সিরিয়া যাওযার উদ্দেশ্যে বের হন। এরপর তিনি ‘সারগ’ নমক স্থানে পৌছলে তার কাছে সংবাদ আসলো যে সিরিয়া এলাকায় মহামারী দেখা দিয়েছে। তখন আবদুর রহমান ইবনু আউফ (রাঃ) তাকে অবহিত করলেন যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমরা কোন স্থানে এর প্রাদূর্ভাবের কথা শোন, তখন সে এলাকায় প্রবেশ করো না; আর যখন এর পাদূর্ভাব দেখা দেয়, আর তোমরা সেখানে বিদ্যমান থাকো তাহলে তা থেকে পলায়ন করার উদ্দেশ্যে সেখান থেকে বেরিয়ে যেয়ো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২০ | 5320 | ۵۳۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৩০১. প্লেগ রোগের বর্ণনা
৫৩২০। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসূফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মদিনা নগরীতে প্রবেশ করতে পারবে না মাসীহ দাজ্জাল, আর না মহামারী।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২১ | 5321 | ۵۳۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৩০১. প্লেগ রোগের বর্ণনা
৫৩২১। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … হাফসা বিনত সীরীন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাকে আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়াহইয়া কি রোগে মারা গেছে? আমি বললামঃ প্লেগ রোগে। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্লেগ রোগের কারনে মৃত্যুবরণ প্রত্যেক মুসলিমের জন্য শাহাদাত হিসাবে গণ্য।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২২ | 5322 | ۵۳۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৩০১. প্লেগ রোগের বর্ণনা
৫৩২২। আবূ আসিম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ উদরাময় রোগে মৃত ব্যাক্তি শহীদ, আর প্লেগ রোগে মৃত ব্যাক্তি শহীদ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৩ | 5323 | ۵۳۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৩০২. প্লেগ রোগে ধৈর্যধারণকারীর সাওয়াব
৫৩২৩। ইসহাক (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে প্লেগ রোগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। তখন আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অবহিত করেন যে এটি হচ্ছে এক প্রকারের আযাব। আল্লাহ যার উপর তা পাঠাতে ইচ্ছা করেন পাঠান। কিন্তু আল্লাহ এটিকে মুমিনদের জন্য রহমত স্বরূপ বানিয়ে দিয়েছেন। অতএব গ্নেগ রোগে কোন বান্দা যদি ধৈর্য ধারণ করে এই বিশ্বাস নিয়ে আপন শহরে অবস্থান করতে থাকে যে, আল্লাহ তার জন্য যা নির্ধারণ করে রেখছে তা ব্যতীত আর কোন বিপদ তার উপর আসবে না তাহলে সেই বান্দার জন্য থাকবে শহীদ ব্যাক্তির সাওয়াবের সমান সাওয়াব। দাউদ থেকে নাযরও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৪ | 5324 | ۵۳۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৩০৩. কুরআন পড়ে এবং সূরা নাস ও ফালাক (মু’আব্বিযাত) পড়ে ফুঁক দেওয়ার বর্ণনা
৫৩২৪। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রোগে ওফাত পান সেই রোগের সময়ে তিনি নিজ দেহে মুআব্বিযাত (সূরা নাস ও ফালাক) পড়ে ফুঁক দিতেন। এরপর যখন রোগ তীব্রে হয়ে গেল, তখন আমি সেগুলো পড়ে ফুঁক দিতাম। আর আমি তার নিজের হাত তার দেহের উপর বুলিয়ে দিতাম। কেননা তাঁর হাতে বরকত ছিল। রাবী বলেনঃ আমি যুহরীকে জিজ্ঞাসা করলাম, তিনি কিভাবে ফুঁক দিতেন? তিনি বললেনঃ তিনি তার দুই হাতের উপর ফুঁক দিতেন, এরপর সেই হস্তদ্বয় দ্বারা আপন মুখমণ্ডল বুলিয়ে নিতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৫ | 5325 | ۵۳۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৩০৪. সূরাহ ফাতিহার দ্বারা ফুঁক দেয়া। ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে নবী (সাঃ) সুত্রে এ ব্যাপারে উল্লেখ আছে
৫৩২৫। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীদের মধ্যে কতিপয় সাহাবী আরবের এক গোত্রের নিকট আসলেন। গোত্রের লোকেরা তাদের কোন মেহমানাদারী করল না। তারা সেখানে থাকা কালেই হঠাৎ সেই গোত্রের নেতাকে সর্প দংশন করছেন। তখন তারা এসে বলল আপনাদের কাছে কি কোন ঔষধ আছে কিংবা আপনাদের মখ্যে ঝাড়-ফুঁককারী কোন লোক আছে কি? তারা উত্তর দিলেনঃ হ্যাঁ। তবে তোমরা আমাদের কোন মেহমানদারী করনি। কাজেই আমাদের জন্য কোন বিনিময় নির্ধারণ না করা পর্যন্ত আমরা তা করবো না। ফলে তারা তাদের জন্য এক পাল বকরী বিনিময় স্বরুপ দিতে রাযী হল। তখন একজন সাহাবী উম্মুল কুরআন (সূরা-‘ফাতিহা) পড়তে লাগলেন এবং মুখে থুথু জমা করে তা সে ব্যাক্তির গায়ে ছিঁটিয়ে দিলেন। ফলে সে আরোগ্য লাভ করল। এরপর তারা বকরীগুলো নিয়ে এসে বললো, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞেস করার পুর্বে এটি স্পর্শ করবো না। এরপর তাঁরা এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শুনে হেসে দিলেন এবং বললেন তোমরা কিভাবে জানলে যে এটি রোগ নিরাময়কারী? ঠিক আছে বকরীগুলো নিয়ে যাও এবং তাতে আমার জন্যও এক অংশ রেখে দিও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৬ | 5326 | ۵۳۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৩০৫. ঝাড়-ফুঁক দেওয়ার বিনিময়ে একপাল বকরীর শর্ত
৫৩২৬। সীদান ইবনু মুদারিব আবূ মুহাম্মদ বাহিলী (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণের একটি দল একটি কুপের পাশে নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। কুপের পাশে মধ্যে ছিল সাপে কাটা এক ব্যাক্তি কিংবা তিনি বলেছেন দংশিত এক ব্যাক্তি। তখন কুপের কাছে একজন এসে তাদের বলল আপনাদের মধ্যে কি কোন ঝাড়-ফুঁককারী আছেন? কুপ এলাকায় একজন সাপ বা বিচ্ছু দংশিত লোক আছে। তখন সাহাবীগণের মধ্যে একজন সেখানে গেলেন। এরপর কিছু বকরী দানের বিনিময়ে তিনি সূরা ফাতিহা পড়লেন (এবং ফুঁক দিলেন)। ফলে লোকটি আরোগ্য লাভ করল। এরপর তিনি বকরীগুলো নিয়ে তাঁর সাথীদের নিকট আসলেন কিন্তু তাঁরা কাজটি পছন্দ করলেন না। তারা বললেনঃ আপনি আল্লাহর কিতাবের উপর বিনিময় গ্রহণ করেছেন। অবশেষে তারা মদিনায় পৌছে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে যেয়ে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি আল্লাহর কিতাবের উপর বিনিময় গ্রহণ করেছেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যে সকল জিনিসের উপর তোমরা বিনিময়ে গ্রহণ করে থাকো তম্মধ্যে সবচেয়ে বড় হল আল্লাহর কিতাব।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৭ | 5327 | ۵۳۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৩০৬. বদ নযরের জন্য ঝাড়ফুঁক করা
৫৩২৭। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আদেশ করেছেন কিংবা তিনি বলেছেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদেশ করেছেন বদ নযরের কারণে ঝাড়ফঁক গ্রহনের।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৮ | 5328 | ۵۳۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৩০৬. বদ নযরের জন্য ঝাড়ফুঁক করা
৫৩২৮। মুহাম্মদ ইবনু খালিদ (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ঘরে একটি মেয়েকে দেখলেন যে, তার চেহারায় কালিমা রয়েছে। তখন তিনি বললেনঃ তাকে ঝাড়ফুক করাও, কেননা তার উপর (বদ) নযর লেগেছে। আবদুল্লাহ ইবনু সালিম (রহঃ) এ হাদীস যুবায়দী থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। উকায়ল (রহঃ) বলেছেন, এটি যুহরী (রহঃ) উরওয়া (রহঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩২৯ | 5329 | ۵۳۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৩০৭. বদ নযর লাগা সত্য
৫৩২৯। ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বদ নযর লাগা সত্য। আর তিনি উল্কি আঁকতে (খোদাই করতে) নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩০ | 5330 | ۵۳۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৩০৮. সাপ কিংবা বিচ্ছুর দংশনে ঝাড়-ফুঁক দেয়া
৫৩৩০। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনুল আসওয়াদের পিতা আসওয়াদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি আয়িশা (রাঃ) কে বিষাক্ত প্রানীর দংশনের কারণে ঝাড়-ফুঁক গ্রহনের ব্যাপার জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব রকমের বিষাক্ত প্রানীর দংশনে ঝাড়-ফুঁক গ্রহনের জন্য অনুমতি দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩১ | 5331 | ۵۳۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৩০৯. নাবী (সাঃ) এর ঝাড়-ফুঁক
৫৩৩১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল আযীয (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ও সাবিত একবার আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) এর নিকট যাই। সাবিত বললেন, হে আবূ হামযা, আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। তখন আনাস (রাঃ) বললেনঃ আমি কি তোমাকে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করেছিলেন তা দিয়ে ঝাড়ফুঁক করে দেব? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন আনাস (রাঃ) পড়লেন হে আল্লাহ! তুমি মানুষের রব, ব্যথ্যা নিবারণকায়ী, শিফা দান করো তুমিই শিফা দানকারী। তুমি ব্যাতীত আর কেউ শিফা দানকারী নেই। এমন শিফা দাও যা কোন রোগ অবশিষ্ট রাখে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩২ | 5332 | ۵۳۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৩০৯. নাবী (সাঃ) এর ঝাড়-ফুঁক
৫৩৩২। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোন কোন স্ত্রীকে সূরা নাস এবং সূরা ফালাক পড়ে ডান হাত দ্বারা বুলিয়ে দিতেন এবং পড়তেন হে আল্লাহ! মানুষের প্রতিপালক, কষ্ট দূর করো এবং শিফা দান করো, তুমিই শিফা দানকারী, তোমার শিফা ছাড়া অন্য কোন শিফা নেই। এমন শিফা দাও, যা কোন রোগ অবশিষ্ট থাকে না। সুফিয়ান (রহঃ) বলেছেন, আমি এ সম্বন্ধে মানসূরকে বলেছি। তারপর ইবরাহীম সুত্রে মাসরুকের বরাতে আয়িশা (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণিত আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৩ | 5333 | ۵۳۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৩০৯. নাবী (সাঃ) এর ঝাড়-ফুঁক
৫৩৩৩। আহমাদ ইবনু আবূ রাজা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঝাড়ফুঁক করতেন। আর এ দুআ পাঠ কবতেনঃ ব্যথা সূর করে দাও, হে মানুষের পালনকর্তা। শিফাদানের ইখতিয়ার কেবল তোমারই হাতে। এ ব্যথা তুমি ব্যতীত আর কেউ দূর করতে পারে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৪ | 5334 | ۵۳۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৩০৯. নাবী (সাঃ) এর ঝাড়-ফুঁক
৫৩৩৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) খেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোগীর জন্য (মাটিতে) এ দুআ পড়তেনঃ আল্লাহর নামে আমাদের দেশের মাটি এবং আমাদের কারও থুথু, আমাদের খুরমা আমাদের রোগীকে আরোগ্য দান করে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৫ | 5335 | ۵۳۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৩০৯. নাবী (সাঃ) এর ঝাড়-ফুঁক
৫৩৩৫। সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঝাড়ফুঁক পড়তেনঃ আমাদের দেশের মাটি এবং আমাদের কারও থুথুতে আমাদের রবের হুকুমে আমাদের রোগী আরোগ্য লাভ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৬ | 5336 | ۵۳۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৩১০. ঝাড়-ফুঁকে থুথু দেয়া
৫৩৩৬। খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়, আর মন্দ স্বপ্ন হয় শয়তানের পক্ষ থেকে। সুতরাং তোমাদের কেউ যদি এমন কিছু দেখে যা তার কাছে খারাপ মনে হয় তা হলে সে যখন ঘুম থেকে জেগে উঠে যেন তিনবার থুথু ফেলে এবং এর অনিষ্ট থেকে পানাহ চায়। কেননা, তা হলে এ তার কোন ক্ষতি করবে না। আবূ সালামা (রাঃ) বললেনঃ আমি যখন এমন স্বপ্ন দেখি যা আমার কাছে পাহাড়ের চেয়ে ভারি মনে হয়। তখন এ হাদীস শোনার কারনে আমি তার তখন পরোয়াই করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৭ | 5337 | ۵۳۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৩১০. ঝাড়-ফুঁকে থুথু দেয়া
৫৩৩৭। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ উয়ায়সী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন আপন বিছানায় আসতেন, তখন তিনি তার উভয় হাতের তালুতে সূরা ইখলাস এবং মুআওব্বিযাতায়ন অর্থ্যৎ সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়ে ফুঁক দিতেন। তারপর উভয় তালু দ্বারা আপন চেহারা ও দু’ হাত শরীরের যতদূর পৌছায় ততদুর পর্যন্ত মাসাহ করতেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন অসুস্থ হন তখন তিনি আমাকে অনুরূপ করার নির্দেশ দিতেন। ইউনুস (রহঃ) বলেন, আমি ইবনু শিহাব (রহঃ) কে, যখন তিনি তার বিছানায় শুতে যেতেন, তখন অনুরূপ করতে দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৮ | 5338 | ۵۳۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৩১০. ঝাড়-ফুঁকে থুথু দেয়া
৫৩৩৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একদল সাহাবী একবার এক সফরে গমন করেন। অবশেষে তারা আরবের গোত্রসমূহের মধ্যে এক গোত্রের নিকট এসে গোত্রের কাছে মেহমান হতে চান। কিন্তু সে গোত্র তাঁদের মেহমানদারী করতে অস্বীকার করে। ঘটনাক্রমে সে গোত্রের সর্দারকে সাপে দংশন করে। তারা তাকে সুস্থ করার জন্য সবরকম চেষ্টা করে, কিন্তু কোন ফল হয় না। তখন তাদের কেউ বললোঃ তোমরা যদি ঐ দলের কাছে যেতে যারা তোমাদের মাঝে এসেছিল। হয়তো তাদের কারও কাছে কোন তদবীর থাকতে পারে। তখন তারা সে দলের কাছে এসে বলল হে দলের লোকেরা! আমাদের সর্দারকে সাপে দংশন করেছে। আমরা তার জন্য সবরকমের চেষ্টা করেছি কিন্তু কোন ফল হয়নি। তোমাদের কারও নিকট কি কোন তদবীর আছে? একজন বললেন হ্যাঁ। আল্লাহর কসম আমি ঝাড়ফুঁক জানি। তবে আল্লাহর কসম! আমরা তোমাদের নিকট মেহমান হতে চেয়েছিলাম কিন্তু তোমরা আমাদের মেহমানদারী করনি। তাই আমি ততক্ষন পর্যন্ত ঝাড়-ফুঁক করবো না যতক্ষন না তোমরা আমাদের জন্য মজুরী নির্ধারণ করবে।

তখন তারা তাদের একপাল বকরী দিতে সম্মত হল। তারপর সে সাহাবী সেখানে গেলেন এবং আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন (সূরা ফাতিহা) পড়ে ফুঁক দিতে থাকলেন। অবশেষে সে ব্যাক্তি এমন সুস্থ হল যেন বন্ধন থেকে মুক্তি পেল। সে চলাফেরা করতে লাগলো, যেন তার কোন রোগই নেই। রাবী বলেনঃ তখন তারা যে মজুরী ঠিক করেছিল, তা পরিশোধ করলাম। এরপর সাহাবীদের মধ্যে একজন বললেনঃ এগুলো বন্টন করে দাও। এতে যিনি ঝাড়ফুঁক করেছিলেন তিনি বললেনঃ আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যেয়ে যতক্ষন না এসব ঘটনা ব্যক্ত করবো এবং তিনি আমাদের কি নির্দেশ দেন তা প্রত্যক্ষ করব, ততক্ষন তোমরা তা বণ্টন করো না। তারপর তাঁরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে ঘটনা ব্যক্ত করলেন। তিনি বললেন তুমি কি করে জানলে যে এর দ্বারা ঝাড়ফুঁক করা যায়? তোমরা সঠিকই করেছ। তোমরা এগুলো বণ্টন করে নাও এবং সে সঙ্গে আমার জন্য এক ভাগ নির্ধারণ কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৩৯ | 5339 | ۵۳۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৩১১. ঝাড়-ফুঁককারীর ডান হাত দিয়ে ব্যথিত স্থান মাসাহ করা
৫৩৩৯। আবদুল্লাহ ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাউকে ঝাড়ার সময় ডান হাত দিয়ে মাসহ করতেন (এবং বলতেন) হে মানুষের রব! তুমি রোগ দূর করে দাও এবং শিফা দান কর। তুমিই তো শিফাদানকারী, তোমার শিফা ভিন্ন আর কোন শিফা নেই এমন শিফা দাও, যার পর কোন রোগ থাকে না। এ হাদীস আমি মানসূরের কাছে উল্লেখ করায় তিনি ইবরাহীম, মাসরুক, আয়িশা (রাঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪০ | 5340 | ۵۳٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৩১২. মেয়েলোকের দ্বারা পুরুষকে ঝাড়-ফুঁক করা
৫৩৪০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে রোগে ইন্তেকাল করেন, সে রোগে তিনি সুরা নাস ও সূরা ফালাক পড়ে নিজের উপর ফুঁক দিতেন। যখন রোগ বেড়ে যায়, তখন আমি সেগুলো পড়ে ফুঁক দিতাম এবং তার হাত বুলিয়ে দিতাম বরকতের উদ্দেশ্যে। [বর্ণনাকারী মা’মার (রহঃ)] বলেন, আমি ইবনু শিহাবকে জিজ্ঞাস করলামঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিভাবে ফুঁক দিতেন? তিনি বললেনঃ প্রথমে নিজের উভয় হাতে ফুঁক দিতেন, তারপর তা দিয়ে চেহারা মুছে নিতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪১ | 5341 | ۵۳٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৩১৩. যে ব্যক্তি ঝাড়-ফুঁক করে না
৫৩৪১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক দিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট আগমন করেন এবং বলেনঃ আমার সামনে (পূর্ববর্তী নাবীগণের) উম্মাতদের পেশ করা হল। (আমি দেখলাম) একজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাচ্ছেন তার সাথে রয়েছে মাত্র একজন লোক এবং আর একদল নাবী যার সঙ্গে রয়েছে দু’ জন লোক। অন্য এক নাবীকে দেখলাম, তার সঙ্গে আছে একটি দল, আর একজন নাবী তার সাথে কেউ নেই। আবার দেখলাম, একটি বিরাট দল যা দিগন্ত জুড়ে আছে। আমি আকাঙ্খা করলাম যে এ বিরাট দলটি যদি আমার উম্মাত হতো। বলা হল এটা মূসা (আলাইহিস সালাম) ও তার কাওম। এরপর আমাকে বলা হলঃ এইদিকে দেখুন। দেখলাম, একটি বিরাট দল দিগন্ত জুড়ে ছেয়ে আছে। আবার বলা হলোঃ এ দিকে দেখুন। ওদিকে দেখুন। দেখলাম বিরাট বিরাট দল দিগন্ত জুড়ে ছেয়ে আছে। বলা হলঃ ঐ সবই আপনার উম্মত এবং ওদের সাথে সত্তর হাজার লোক এমন আছে যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে।

এরপর লোকজন এদিক ওদিক চলে গেল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আর তাদের (সত্তর হাজারের) ব্যাখ্যা করেন নি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগগ এ নিয়ে জল্পনাকল্পনা শুরু করে দিলেন। তারা বলাবলি করলেন আমরা তো শিরকের মধ্যে জন্মলাভ করেছি, পরে আল্লাহ ও তার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর ঈমান এনেছি। বরং এরা আমাদের সন্তানরাই হবে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ কথা পৌছলে তিনি বলেনঃ তারা (হবে) ঐ সব লোক যারা অবৈধভাবে মঙ্গল অমঙ্গল নির্ণয় করে না, ঝাড় ফুঁক করে না এবং আগুনে পোড়ানো লোহার দাগ লাগায় না, আর তারা তাদের রবের উপর একমাত্র ভরসা রাখে। তখন উক্কাশা ইবনু মিহসান (রাঃ) দাঁড়িয়ে বললো ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি কি তাদের মধ্যে আছি? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন আর একজন দাঁড়িয়ে বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি কি তাদের মধো আছি? তিনি বললেনঃ এ ব্যাপারে উক্কাশা তোমাকে অতিক্রম করে গেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪২ | 5342 | ۵۳٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৩১৪. পশু-পাখি তাড়িয়ে শুভ-অশুভ নির্ণয়
৫৩৪২। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ছোঁয়াচে ও শুভ-অশুভ বলতে কিছু নেই। অমঙ্গল তিন বস্তুর মধ্যে – নারী ঘর ও জানোয়ার।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৩ | 5343 | ۵۳٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৩১৪. পশু-পাখি তাড়িয়ে শুভ-অশুভ নির্ণয়
৫৩৪৩। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়য়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, শুভ-অশুভ নির্ণয়ে কোন লাভ নেই, বরং শুভ লক্ষণ গ্রহণ করা ভাল। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা কবলেন শুভ লক্ষণ কি? তিনি বললেন ভাল বাক্য যা তোমাদের কেউ শুনে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৪ | 5344 | ۵۳٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৩১৫. শুভ-অশুভ লক্ষন
৫৩৪৪। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন শুভ-অশুভ লক্ষণ বলে কিছু নেই এবং এর কল্যাণই হল শুভ লক্ষণ। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! শুভ লক্ষণ কি? তিনি বললেনঃ ভাল কথা, যা তোমাদের কেউ (বিপদের সময়) শুনে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৫ | 5345 | ۵۳٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৩১৫. শুভ-অশুভ লক্ষন
৫৩৪৫। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রোগের সংক্রমণ ও শুভ-অশুভ বলতে কিছু নেই। শুভ লক্ষনই আমার নিকট পছন্দনীয়, আর তা হল উত্তম বাক্য।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৬ | 5346 | ۵۳٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৩১৬. পেচাঁয় কুলক্ষন নেই
৫৩৪৬। মুহাম্মদ ইবনু হাকাম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন রোগের মধ্যে সংক্রমণ নেই; শুভ-অশুভ লক্ষণ বলে কিছু নেই। পেঁচায় কুলক্ষণ নেই এবং সফর মাসে অকল্যাণ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৭ | 5347 | ۵۳٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৩১৭. গণনা বিদ্যা
৫৩৪৭। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়য়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার হুযায়ল গোত্রের দুই মহিলার মধ্যে বিচার করেন। তারা উভয়ে মারামারি করেছিল। তাদের একজন অন্য জনের উপর পাথর নিক্ষেপ করে। পাথর গিয়ে তার পেটে লাগে। সে ছিল গর্ভবতী। ফলে তার পেটের ঝচ্চাকে সে হত্যা করে। তারপর তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট অভিযোগ পেশ করে। তিনি বিচার করেন যে, এর পেটের সন্তানের পরিবর্তে একটি পূর্ণ দাস অথবা দাসী দিতে হবে। জরিমানা আরোপকৃত মহিলার অভিভাবক বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এমন সন্তানের জন্য আমার উপর জরিমানা কেন আরোপিত হবে, যে পান করেনি, আহার করেনি, কথা বলেনি এবং কান্নাকাটিও করেনি। এ অবস্থায় জরিমানা মওকুফ হওয়ার যোগ্য। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ লোকটি তো (দেখা যায়) গণকদের ভাই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৮ | 5348 | ۵۳٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৩১৭. গণনা বিদ্যা
৫৩৪৮। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। দুইজন মহিলার একজন অন্যজনের প্রতি পাথর নিক্ষেপ করে। এতে সে তার গর্ভপাত ঘটায়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ঘটনায় বিচারে গর্ভস্থ শিশুর বিনিময়ে একটি দাস বা দাসী দেওয়ার ফয়সালা দেন। অপর এক সুত্রে … সাঈদ ইবনু মূসায়্যিব এর সুত্রে বর্ণিত যে, যে গর্ভস্থ শিশুকে মায়ের গর্ভে থাকা অবস্থায় হত্যা করা হয়, তার ক্ষতিপূরণ স্বরুপ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি দাস বা দাসী প্রদানের ফয়সালা দেন। যার বিরুদ্ধে এ ফয়সালা দেওয়া হয়, সে বলে আমি কিরুপে এমন শিশুর জরিমানা আদায় করি যে পানাহার করেনি, কথা বলেনি এবং চীৎকারও দেয়নি। এ জাতীয় হত্যার জরিমানা রহিত হওয়ার যোগ্য। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এ তো গণকদের ভাই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৪৯ | 5349 | ۵۳٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৩১৭. গণনা বিদ্যা
৫৩৪৯। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুকুরের মূল্য যিনাকারিণীর মজুরী ও গণকের পারিশ্রমিক দিতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫০ | 5350 | ۵۳۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৩১৭. গণনা বিদ্যা
৫৩৫০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ কতিপয় লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গণকদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেনঃ এ কিছুই নয়। তারা বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ! ওরা কখনও কখনও আমাদের এমন কথা শোনায়, যা সত্য হয়ে থাকে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ঐ কথা সত্য। জ্বীনেরা তা ছোঁ মেরে নেয়। পরে তাদের বন্ধু (গণক) এর কানে ঢেলে দেয়। তারা এর সাথে শত মিথ্যা মিশ্রিত করে। আলী (রহঃ) বলেন, আবদুর রাযযাক (রহঃ) বলেছেনঃ এ বানী সত্য মুরসাল। এরপর আমার কাছে সংবাদ পৌছেযে পরে এটি তিনি মুসনাদ রূপে বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫১ | 5351 | ۵۳۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৩১৮. যাদু সম্পর্কে। মহান আল্লাহর বাণীঃ শায়তানরাই কুফুরী করেছিল, তারা মানুষকে যাদু শিক্ষা দিত এবং যা বাবিল শহরে হারুত ও মারুত ফেরেশতাদ্বয়ের উপর অবতীর্ণ হয়েছিল ………… পরকালে তার কোন অংশ নেই পর্যন্ত(বাকারাঃ ১০২) মহান আল্লাহর বাণীঃ যাদুকর যে যেথায়ই আসুক, সফল হবে না- (ত্বহাঃ৬-৯)। মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা কি দেখে শুনে যাদুর কবলে পড়বে? (আম্বিয়াঃ ৩)। মহান আল্লাহর বাণীঃ তখন তাদের যাদুর কারনে মূসার মনে হল যে, তাদের রশি আর লাঠিগুলো ছুটাছুটি করছে (ত্বহাঃ ৬৬)। মহান আল্লাহর বাণীঃ এবং সে সব নারীর অনিষ্ট থেকে যারা গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দেয় (ফালাকঃ ৪) النَّفَّاثَاتُ অর্থ যাদুকর নারী, যারা যাদু করে চোখে ধাঁধা লাগিয়ে দেয়।
৫৩৫১। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যুরায়ক গোত্রের লাবীদ ইবনু আ’সাম নামক এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যাদু করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেয়াল হতো যেন তিনি একটি কাজ করছেন, অথচ তা তিনি করেননি। এক দিন বা এক রাত্রি তিনি আমার কাছে ছিলেন। তিনি বার বার দু’আ করতে থাকেন। তারপর তিনি বলেনঃ হে আয়িশা! তুমি কি উপলব্ধি করতে পেরেছ যে, আমি আল্লাহর কাছে যা জানতে চেয়েছিলাম, তিনি আমাকে তা জানিয়ে দিয়েছেন। (স্বপ্নে দেখি) আমার নিকট দু’জন লোক আসেন। তাদের একজন আমার মাথার কাছে এবং অপরজন দু’পায়ের কাছে বসেন। একজন তাঁর সঙ্গীকে বলেনঃ এ লোকটির কি ব্যথা? তিনি বলেনঃ যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন বলেনঃ কে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বলেন লাবীদ ইবনু আসাম। প্রথম জন জিজ্ঞাসা করেনঃ কিসের মধ্যে? দ্বিতীয় জন উত্তর দেন চিরুনী, মাথা আচড়ানোর সময় উঠা চুল এবং এক পুং খেজুর গাছের ‘জুব’ এর মধ্যে। প্রথম জন বলেনঃ তা কোথায়? দ্বিতীয় জন বলেনঃ ‘যারওয়ান’ নামক কুপের মধ্যে।

তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকজন সাহাবী সঙ্গে নিয়ে তথায় যান। পরে ফিরে এসে বলেনঃ হে আয়িশা! সে কুপের পানি মেহদীর পানির মত (লাল) এবং তার পাড়ের খেজুর গাছের মাথাগুলো শয়তানের মাথার মত। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি এ কথা প্রকাশ করে দিবেন না? তিনি বললেনঃ আল্লাহ আমাকে আরোগ্য দান করেছেন, আমি মানুষকে এমন ব্যাপারে প্ররোচিত করতে পছন্দ কবি না, যাতে অকল্যাণ রয়েছে। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নির্দেশ দিলে সেগুলো মাটিতে পুতে ফেলা হয়।

আবূ উসামা আবূ দামরা ও ইবনু আবূ যিনাদ (রহঃ) হিশাম থেকে অনুরুপ বর্ণনা করেছেন। লাইস ও ইবনু উয়ায়না (রহঃ) হিশাম থেকে বর্ননা করেছেন, চিরুনি ও কাতানের টুকরায়। আবূ আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেনঃ مُشَاطَةُ হল চিরুনি করার পর যে চুল বের হয়। মুশাকা হল কাত্তান।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫২ | 5352 | ۵۳۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৩১৯. শিরক ও যাদু ধংসাত্মক
৫৩৫২। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বেঁচে থাক। আর তা হল আল্লাহর সঙ্গে শরীক স্থির করা ও যাদু করা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৩ | 5353 | ۵۳۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৩২০. যাদুর চিকিৎসা করা যাবে কি না? ক্বাতাদাহ (রহঃ) বলেন, আমি সাঈদ ইবনু মুসায়্যিব (রহঃ) কে জিজ্ঞেস করলামঃ জনৈক ব্যক্তিকে যাদু করা হয়েছে অথবা (যাদু করে) তার ও তার স্ত্রীর মধ্যে বাধা সৃষ্টি করা হয়েছে, এমন ব্যক্তিকে যাদু মুক্ত করা যায় কি না অথবা তার থেকে যাদুর বন্ধন খুলে দেয়া বৈধ কি না? সাঈদ(রহঃ) বলেনঃ এতে কোন ক্ষতি নেই। কেননা, তারা এর দ্বারা তাকে ভাল করতে চাইছে। আর যা কল্যানকর তা নিষিদ্ধ নয়।
৫৩৫৩। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর একবার যাদু করা হয়। এমন অবস্থা হয় যে তার মনে হতো তিনি বিবিগণের কাছে এসেছেন, অথচ তিনি আদৌ তাঁদের কাছে আসেন নি। সুফিয়ান বলেনঃ এ অবস্থা হল যাদুর চরম প্রতিক্রিয়া। বর্ণনাকারী বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে জেগে উঠেন এবং বলেনঃ হে আয়িশা! তুমি অবগত হও যে আমি আল্লাহর কাছে যে বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম। তিনি আমাকে তা বাতলিয়ে দিয়েছেন। (স্বপ্নে দেখি) আমার নিকট দু’জন লোক এলেন। তাদের একজন আমার মাথার নিকট এবং অন্যজন আমার পায়ের নিকট বসলেন। আমার কাছের লোকটি অন্যজনকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ এ লোকটির কি অবস্থা? দ্বিতিয় লোকটি বলেনঃ একে যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন বললেনঃ কে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বললেনঃ লাবীদ ইবনু আসাম।

এ ইয়াহুদীদের মিত্র যুরায়ক গোত্রের একজন সে ছিল মুনাফিক। প্রথম ব্যাক্তি জিজ্ঞাসা করলেনঃ কিসের মধ্যে যাদু করা হয়েছে? দ্বিতীয় ব্যাক্তি উত্তর দিলেনঃ চিরুনী ও চিরুনি করার সময় উঠে যাওয়া চুলের মধ্যে। প্রথম ব্যাক্তি জিজ্ঞাসা করলেনঃ সেগুলো কোথায়? উত্তরে দ্বিতীয়জন বললেনঃ পুং খেজুর গাছের জবের মধ্যে রেখে যারওয়ান নামক কুপের ভিতর পাথরের নীচে রাখা আছে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উক্ত কূপের নিকট এসে সেগুলো বের করেন এবং বলেনঃ এইটিই সে কুপ, যা আমাকে স্বপ্নে দেখান হয়েছে। এর পানি মেহদী মিশ্রিত পানির তলানীর ন্যায়, আর এ কুপের (পার্শ্ববর্তী) খেজুর গাছের মাথাগুলো (দেখতে) শয়তানের মাথার ন্যায়। বর্ণনাকারী বলেনঃ সেগুলো তিনি সেখান থেকে বের করেন। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ আপনি কি এ কথা প্রচার করে দিবেন না? তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম, তিনি আমাকে শিফা দান করেছেন আর আমি মানুষকে এমন ব্যাপারে প্ররোচিত করতে পছন্দ করি না, যাতে অকল্যাণ রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৪ | 5354 | ۵۳۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৩২১. যাদু
৫৩৫৪। উবায়দ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর যাদু করা হয়। এমনকি তার মনে হতো তিনি কাজটি করেছেন অথচ তা তিনি করেননি। অবশেষে এক দিন তিনি যথন আমার কাছে ছিলেন, তখন তিনি আল্লাহর নিকট বার বার দু’আ করলেন। তারপর ঘুম থেকে জেগে বলেন, হে আয়িশা। তুমি কি বুঝতে পেরেছ? আমি যে বিষয়ে তার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তিনি তা আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তা কী? তিনি বললেনঃ আমার নিকট দু’জন লোক এলেন। তাদের একজন আমার মাথার নিকট এবং আরেকজন আমার পায়ের নিকট বসলেন। তারপর একজন অন্যজনকে জিজ্ঞাসা করলেন এ লোকটির কী ব্যাথা? তিনি উত্তর দিলেনঃ তাঁকে যাদু করা হয়েছে। প্রথম জন বললেনঃ কে তাকে যাদু করেছে? দ্বিতীয় জন বললেনঃ যুরায়ক গোত্রের লাবীদ ইবনু আসম নামক ইয়াহুদী।

প্রথম জন জিজ্ঞাসা করলেনঃ যাদু কিসের দ্বারা করা হয়েছে? দ্বিতীয়জন বললেনঃ চিরুনি, চিরুনি আঁচড়াবার সময়ে উঠে আসা চুল ও নর খেজুর গাছের জুব এর মধ্যে। প্রথমজন জিজ্ঞাসা করলেনঃ তা কোথায়? দ্বীতিয় জন বললেনঃ যারওয়ান নামক কুপে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাহাবীদের কয়েকজনকে নিয়ে ঐ কুপের নিকট গেলেন এবং তা খনন করে দেখলেন। কুপের পাড়ে ছিল খেজুর গাছ। তারপর তিনি আয়িশা (রাঃ) এর নিকট ফিরে এসে বললেনঃ আল্লাহর কসম। কুপটির পানি (রং) মেহদী মিশ্রিত পানির তলানীর ন্যায়। আবূ পার্শ্ববর্তী খেজুর গাছের মাথাও শয়তানের মাথার ন্যয়। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কি সেগুলো বের করবেন না? তিনি বললেনঃ না আল্লাহ আমাকে আরোগ্য ও শিফাদান করেছেন, মানুষের উপর এঘটনা থেকে মন্দ ছড়িয়ে দিতে আমি সঙ্কোচবোধ করি। এরপর তিনি যাদুর জিনিসপত্রগুলোর ব্যাপারে নির্দেশ দিলে, সেগুলো মাটিতে পুঁতে রাখা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৫ | 5355 | ۵۳۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৩২২. কোন কোন ভাষণ যাদু
৫৩৫৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার পূর্ব অঞ্চল (নজদ এলাকা) থেকে দু’জন লোক এল এবং দু’জনই ভাষন দিল। লোকজন তাদের ভাষনে তাজ্জব হয়ে গেল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ কোন কোন ভাষণ অবশ্যই যাদুর ন্যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৬ | 5356 | ۵۳۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৩২৩. আজওয়া খেজুর দিয়ে যাদুর চিকিৎসা
৫৩৫৬। আলী (রহঃ) … আমির ইবনু সা’দ তার পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি প্রতিদিন সকালে কয়েকটি আজওয়া খুরমা খাবে ঐ দিন রাত পর্যন্ত কোন বিষ ও যাদু তার কোন ক্ষতি করবে না। অন্যান্য বর্ননাকারীগণ বলেছেনঃ সাতটি খুরমা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৭ | 5357 | ۵۳۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৩২৩. আজওয়া খেজুর দিয়ে যাদুর চিকিৎসা
৫৩৫৭। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যাক্তি ভোর বেলা সাতটি আজওয়া (মদিনায় উৎপন্ন উন্নত মানের খুরমার নাম) খেজুর খাবে, সে দিন কোন বিষ বা যাদু তার কোন ক্ষতি করবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৮ | 5358 | ۵۳۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৩২৪. পেঁচার মধ্যে কোন অশুভ লক্ষন নেই
৫৩৫৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রোগের মধ্যে কোন সংক্রামক শক্তি নেই। সফর মাসের মধ্যে অমঙ্গলের কিছু নেই এবং পেঁচায় কোন অশুভ লক্ষণ নেই। তখন এক বেদুঈন বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ! তা হলে যে উট পাল মরুভূমিতে থাকে, হরিণের ন্যায় তা সুস্থ ও সবল হয়। এ উট পালের মধ্যে একটি চর্মরোগ বিশিষ্ট উট মিশে মিশে সবগুলোকে চর্ম রোগগ্রস্থ করে ফেলে (এরূপ কেন হয়)? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তবে প্রথম উটটির মধ্যে কে এ রোগ সংক্রমণ করেছিল?

আবূ সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে বলতে শুনেছেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কেউ যেন কখনও রোগাক্রান্ত উট সুস্থ উটের সাথে না রাখে। আর আবূ হুরায়রা (রাঃ) প্রথম হাদীস অস্বীকার করেন। আমরা বললাম আপনি কি لاَ عَدْوَى হাদীস বর্ননা করেননি? এ সময় তিনি হাবশী ভাষায় কি যেন বললেন। আবূ সালামা (রহঃ) বলেনঃ আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে এ হাদীসটি ভিন্ন অন্য কোন হাদীস ভুলে যেতে দেখিনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৫৯ | 5359 | ۵۳۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৩২৫. কোন সংক্রামক নেই
৫৩৫৯। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন রোগে কোন সংক্রমণ নেই, শুভ-অশুভ বলতে কিছু নেই, অশুভ কেবল নারী, ঘোড়া ও ঘর এ তিন জিনিসের মধ্যেই হতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬০ | 5360 | ۵۳٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৩২৫. কোন সংক্রামক নেই
৫৩৬০। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ (রোগে) কোন সংক্রমণ নেই। আবূ সালামা ইবনু আবদুর রহমান বলেন আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে শুনেছি, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রোগাক্রান্ত উট সুস্থ উটের মধ্যে মিশাবে না। যুহরী সুত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (রোগে) সংক্রমণ নেই। তখন এক বেদুঈন দাঁড়িয়ে বলল এ ব্যাপারে অপনার কি মত যে, হরিণের ন্যায় সুস্থ উট প্রান্তরে থাকে। পরে কোন চর্মরোগগ্রস্ত উট এদের সাথে মিশে সবগুলোকে চর্মরোগে আক্রান্ত করে। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা যদি হয় তবে প্রথমটিকে কে রোগাক্রান্ত করেছিল?

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬১ | 5361 | ۵۳٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৩২৫. কোন সংক্রামক নেই
৫৩৬১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (রোগের মধ্যে) কোন সংক্রমণ নেই এবং শুভ-অশুভ নেই আর আমার নিকট ‘ফাল’ পছন্দনীয়। সাহাবীগণ জিজ্ঞাসা করলেনঃ ‘ফাল’ কী? তিনি বললেনঃ উত্তম কথা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬২ | 5362 | ۵۳٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৩২৬. নাবী (সাঃ) কে বিষ পান করানো প্রসঙ্গে উরওয়া (রহঃ) বর্ণনা করেছেন আয়শা (রাঃ) থেকে, তিনি নবী (সাঃ) থেকে
৫৩৬২। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, খায়বার যখন বিজয় হয়, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট হাদীয়া স্বরুপ একটি (ভুনা) বকরী প্রেরিত হয়। এর মধ্যে ছিল বিষ। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ এখানে যত ইয়াহুদী আছে আমার কাছে তাদের জমায়েত কর। তার কাছে সবাইকে জমায়েত করা হলো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সন্মোধন করে বললেনঃ আমি তোমাদের নিকট একটি বিষয়ে জানতে চাই, তোমরা কি সে বিষয়ে আমাকে সত্য কথা বলবে? তারা বললোঃ হ্যাঁ, হে আবূল কাসিম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাদের পিতা কে? তারা বললো আমাদের পিতা অমুক। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা মিথ্যে বলেছ বরং তোমাদের পিতা অমুক। তারা বললোঃ আপনি সত্য বলেছেন ও সঠিক বলেছেন।

এরপর তিনি বললেনঃ আমি যদি তোমাদের নিকট আর একটি প্রশ্ন করি, তা হলে কি তোমরা সে ব্যাপারে আমাকে সত্য কথা বলবে? তারা বললো হ্যাঁ, হে আবূল কাসিম যদি আমরা মিথ্যে বলি তবে তো আপনি আমাদের মিথ্যা জেনে ফেলবেন, যেমনিভাবে জেনেছেন আমাদের পিতার ব্যাপারে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেনঃ জাহান্নামী কারা? তারা বললো আমরা সেখানে অল্প দিনের জন্য থাকবে। তারপর আপনারা আমাদের স্থনাভিষিক্ত হবেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরাই সেখানে লাঞ্চিত হয়ে থাকো। আল্লাহর কসম! আমরা কখনও সেখানে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত হবো না।

এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বলেন আমি যদি তোমাদের কাছে আর একটি বিষয়ে প্রশ্ন করি, তবে কি তোমরা সে ব্যাপারে আমার কাছে সত্য কথা বলবে? তারা বললো হ্যাঁ। তখন তিনি বললেন তোমরা কি এ বকরীর মধ্যে বিষ মিশ্রিত করেছ? তারা বললঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ কিসে তোমাদের এ কাজে উদ্ভুদ্ধ করেছে? তারা বললো। আমরা চেয়েছি, যদি আপনি (নবুওয়াতের দাবীতে) মিথ্যাবাদী হন, তবে আমরা আপনার থেকে মুক্তি পেয়ে যাব। আর যদি আপনি (সত্য) নাবী হন, তবে এ বিষ আপনার কোন ক্ষতি করতে পারবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬৩ | 5363 | ۵۳٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৩২৭. বিষ পান করা, বিষের সাহায্যে চিকিৎসা করা, মারাত্মক কিছু দ্বারা চিকিৎসা করা যাতে মারা যাবার আশংকা আছে এবং হারাম বস্তু দ্বারা চিকিৎসা করা
৫৩৬৩। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওহাব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি পাহাড়ের উপর থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্নহত্যা করে, সে জাহান্নামের আগুনে পুড়বে, চিরদিন সে জাহান্নামের মধ্যে অনুরূপভাবে লাফিয়ে পড়তে থাকবে। যে ব্যাক্তি বিষপান করে আত্নহত্যা করবে তার বিষ জাহান্নামের আগুনের মধ্যে তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে জাহান্নামের মধ্যে তা পান করতে থাকবে। যে ব্যাক্তি লোহার আঘাতে আত্নহত্যা করবে, জাহান্নামের আগুনের মধ্যে সে লোহা তার হাতে থাকবে, চিরকাল সে তা দ্বারা নিজের পেটে আঘাত করতে থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬৪ | 5364 | ۵۳٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৩২৭. বিষ পান করা, বিষের সাহায্যে চিকিৎসা করা, মারাত্মক কিছু দ্বারা চিকিৎসা করা যাতে মারা যাবার আশংকা আছে এবং হারাম বস্তু দ্বারা চিকিৎসা করা
৫৩৬৪। মুহাম্মদ (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে ব্যাক্তি সকাল বেলা সাতটি আজওয়া খুরমা খেয়ে নিবে, তাকে সে দিন কোন বিষ অথবা যাদু ক্ষতি করতে পারবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬৫ | 5365 | ۵۳٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৩২৮. গাধীর দুধ
৫৩৬৫। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ ছালাবা খুশানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রকার নখ বিশিষ্ট হিংস্র জন্তু খেতে নিষেধ করেছেন। যুহরী (রহঃ) বলেন, আমি সিরিয়ায় চলে আসা পর্যন্ত এ হাদীস শুনি নাই। লায়স বাড়িয়ে বলেছেন যে, ইউনুস (রহঃ) ইবনু শিহাব (রহঃ) থেকে আমার নিকট বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেন যে, আমি এ হাদীসের বর্ণনাকায়ী (আবূ ইদরীস) কে জিজ্ঞাসা করেছি যে, গাধীর দুধ, হিংস্র প্রানীর পিত্তরস এবং উটের পেশাব পান করা বা তা দিয়ে ওযু করা জায়েয কি না? তিনি বলেছেনঃ পূর্বেকার মুসলিমগণ উটের পেশাব দ্বারা চিকিৎসার কাজ করতেন এবং একে তারা কোন পাপ মনে করতেন না। আর গাধীর দুধ সম্পর্কে কথা হল গাধার গোস্ত খাওয়ার নিষেধ বাণী আমাদের কাছে পৌছেছে, কিন্তু তার দুধ সম্পর্কে আদেশ বা নিষেধ কোনটিই আমাদের কাছে পৌছেনি। আর হিংস্র প্রানীর পিত্তরস সম্পর্কে ইবনু শিহাব (রহঃ) আবূ ইদরীস খাওলানী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রকার নখর বিশিষ্ট হিংস্র প্রানী খেতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬৬ | 5366 | ۵۳٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৩২৯. কোন পাত্রে যখন মাছি পড়ে
৫৩৬৬। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কারও কোন খাবার পাত্রে মাছি পড়ে, তখন তাকে সম্পূর্নভাবে ডুবিয়ে দিবে, তারপরে ফেলে দিবে। কারন, তার এক ডানায় থাকে শিফা, আর অন্য ডানায় থাকে রোগ জীবানু।

 

 পোষাক-পরিচ্ছদ অধ্যায় (৫৩৬৭-৫৫৪৪)

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬৭ | 5367 | ۵۳٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৩০. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ বল, আল্লাহ্‌ স্বীয় বান্দাদিগের জন্য যে সব শোভার বস্তু সৃষ্টি করেছেন তা নিষেধ করেছেন কে? নবী (সাঃ) বলেছেনঃ তোমরা খাও, পান কর, পরিধান কর এবং দান কর, তবে অপচয় ও অহংকার পরিহার করো। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, যা ইচ্ছা খাও, যা ইচ্ছা পরিধান কর, যতক্ষন না দু’টো জিনিস তোমাকে বিভ্রান্ত করে- অপব্যয় ও অহংকার।
৫৩৬৭। ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ সে ব্যাক্তির দিকে (রহমতের দৃষ্টিতে) তাকাবেন না, যে অহংকারের সাথে তার (পরিধেয়) পোশাক টেনে চলে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬৮ | 5368 | ۵۳٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৩১. যে ব্যক্তি বিনা অহংকারে তার লুঙ্গি ঝুলিয়ে চলে
৫৩৬৮। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … সালিম তাঁর পিতা (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি অহংকারের সাথে নিজের পোশাক ঝুলিয়ে চলবে, আল্লাহ তার প্রতি (রহমতের) দৃষ্টি দিবেন না কিয়ামতের দিন। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার লুঙ্গির এক পাশ ঝুলে থাকে যদি আমি তাতে গিরা না দেই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নও যারা অহংকার করে এরূপ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৬৯ | 5369 | ۵۳٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৩১. যে ব্যক্তি বিনা অহংকারে তার লুঙ্গি ঝুলিয়ে চলে
৫৩৬৯। মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ বাকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট ছিলাম, এমন সময় সূর্যগ্রহন আরম্ভ হয়। তখন তিনি ব্যস্ত হয়ে দাঁড়ালেন এবং কাপড় টেনে টেনে মসজিদে নিয়ে পৌছলেন। লোকজন জমায়েত হল। তিনি দু’ রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তখন সূর্য উজ্জল হয়ে গেল। এরপর আমাদের দিকে ফিরে বললেনঃ চন্দ্র ও সূর্য আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে দুটি নিদর্শন, যখন তোমরা এতে কোন কিছু হতে দেখ, তখন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে এবং আল্লাহর কাছে দু’আ করতে থাকবে, যতক্ষন না তা উজ্জল হয়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৭০ | 5370 | ۵۳۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৩৩২. কাপড়ের মধ্যে জড়িয়ে থাকা
৫৩৭০। ইসহাক (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বিলাল (রাঃ) কে দেখলাম, তিনি একটি বর্শা নিয়ে এসেছেন এবং তা মাটিতে পুঁতে দিলেন। তারপর সালাত (নামায/নামাজ)-এর ইকামত দিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখলাম, একটি জুব্বার দুটি চাদরের মধ্যে নিজেকে জড়িয়ে বের হয়ে আসলেন এবং বর্শার দিকে ফিরে দু’ রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আর মানুষ ও পশুকে দেখলাম, তারা তার সামনে দিয়ে এবং বর্শার পিছন দিয়ে গমন করছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৭১ | 5371 | ۵۳۷۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৩৩. টাখনুর নীচে যা থাকবে তা যাবে জাহান্নামে যাবে
৫৩৭১। আদম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইযারের যে পরিমান টাখনুর নীচে যাবে, সে পরিমান জাহান্নামে যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৭২ | 5372 | ۵۳۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৩৪. যে ব্যক্তি অহংকারের সাথে কাপড় ঝুলিয়ে পরে
৫৩৭২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ কিয়ামতের দিন সে ব্যাক্তির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দিবেন না, যে ব্যাক্তি অহংকারবশে ইযার ঝুলিয়ে পরে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৭৩ | 5373 | ۵۳۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৩৪. যে ব্যক্তি অহংকারের সাথে কাপড় ঝুলিয়ে পরে
৫৩৭৩। আদম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অথবা আবূল কাসিম বলেছেনঃ এক ব্যাক্তি চিত্তাকর্ষক জোড়া কাপড় পরে চুল আঁচড়াতে আঁচড়াতে পথ চলছিল; হঠাৎ আল্লাহ তাকে মাটির নীচে ধ্বসিয়ে দেন। কিয়ামত পর্যন্ত সে এভাবে ধ্বসে যেতে থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৭৪ | 5374 | ۵۳۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৩৩৪. যে ব্যক্তি অহংকারের সাথে কাপড় ঝুলিয়ে পরে
৫৩৭৪। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এক ব্যাক্তি তার লুঙ্গি পায়ের গৌড়ালীর নীচে ঝুলিয়ে পথ চলছিল। এমন সময় তাকে মাটির নীচে ধ্বসিয়ে দেওয়া হয়। কিয়ামত পর্যন্ত সে মাটির নীচে ধ্বসে যেতে থাকবে। ইউনুস, যুহরী থেকে এ হাদীস অনুরূপ বর্ণনা করেছেন কিন্তু শুআয়ব একে মারফূ হিসাবে যুহরী থেকে বর্ণনা করেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৭৫ | 5375 | ۵۳۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৩৩৪. যে ব্যক্তি অহংকারের সাথে কাপড় ঝুলিয়ে পরে
৫৩৭৫। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবীর ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি সালিম ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উমরের সাথে তার ঘরের দরজায় ছিলাম, তখন তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অনুরূপ বলতে শুনেছেন।
(পূর্বের হাদিসের অনুরূপ)

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৭৬ | 5376 | ۵۳۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৩৩৪. যে ব্যক্তি অহংকারের সাথে কাপড় ঝুলিয়ে পরে
৫৩৭৬। মাতার ইবনু ফাযল (রহঃ) … শুবা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি মাহারিব ইবনু দিসারের সাথে অশ্ব পৃষ্ঠে থাকা অবস্থায় সাক্ষাত করলাম। তখন তিনি বিচারালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন, আমি তাকে এ হাদীসটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি আমাকে বললেন, আমি আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) কে বলতে শুনেছি, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি অহংকার বশে কাপড় ঝুলিয়ে পরবে, তার দিকে আল্লাহ কিয়ামতের দিনে তাকাবেন না। আমি বললামঃ আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) কি ইযাবের উল্লেখ করেছেন? তিনি বললেনঃ তিনি ইযার বা কামিস কোনটই নির্দিষ্ট করে বলেন নি।

জাবালা ইবনু সুহায়ম, যায়েদ ইবনু আসলাম ও যায়েদ ইবনু আবদুল্লাহ ইবনু উমরের সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন আর লায়স, মূসা ইবনু উকবাও ‘উমর ইবনু মুহাম্মদ নাফি (রহঃ) এর সুত্রে বর্ণনা করেছেন এবং কুদামা ইবনু মূসা সালিম (রহঃ) এর সুত্রে ইবনু উমর (রাঃ) থেকে এবং তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে جَرَّ ثَوْبَهُ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৭৭ | 5377 | ۵۳۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৩৫. ঝালরযুক্ত ইযার। যুহরী, আবু বকর ইবন মুহাম্মাদ, হামযা ইবন আবু উসায়দ ও মুয়াবিয়া ইবন আবদুল্লাহ ইবন জা’ফর (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তারা ঝালরযুক্ত পোশাক পরিধান করেছেন
৫৩৭৭। আবূল ইয়ামন (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি ববেন, একদা রিফাআ কুরাযির স্ত্রী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলো। এ সময় আমি উপবিষ্ট ছিলাম এবং আবূ বকর (রাঃ) তার কাছে ছিলেন। স্ত্রীলোকটি বললঃ হে আল্লার রাসূল! আমি রিফাআর অধীনে (বিবাহ বন্ধনে) ছিলাম। তিনি আমাকে তালাক দেন এবং তালাক চুড়ান্তভাবে (তিন তালাক) দেন এরপর আমি আব্দুর রহমান ইবনু যুবায়েরকে বিবাহ করি কিন্তু আল্লাহর কসম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তার সাথে কাপড়ের ঝালরের ন্যায় ছাড়া কিছুই নেই। এ কথা বলার সময় স্ত্রীলোকটি তার চাদরের আচল ধরে দেখায়।

খালিদ ইবনু সাইদ যাকে (ভিতরে যাওয়ার) অনুমতি দেওয়া হয় নাই, দরজার কাছে থেকে স্ত্রীলোকটির কথা শুনেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন খালিদ বললঃ হে আবূ বকুর! এ মহিলাটি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে জোরে জোরে সে কথা বলছে, তা শুনে কেন আপনি তাকে বাঁধা দিচ্ছেন না? আল্লাহর কসম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুচকি হাসলেন এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্ত্রীলোকটিকে বললেনঃ মনে হয় তুমি রিফাআর কাছে ফিরে যেতে যাও। তা হয় না, সে তোমার মধু আস্বাদন করবে এবং তুমি তার মধু আস্বাদন করবে। পরবর্তী সময় থেকে এটা বিধানে পরিনত হয়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৭৮ | 5378 | ۵۳۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৩৬. চাদর পরিধান করা। আনাস (রাঃ) বলেনঃ এক বেদুঈন নবী (সাঃ) এর চাদর টেনে ধরেছেন
৫৩৭৮। আবদান (রহঃ) … হুসায়ন ইবনু আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আলী (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চাঁদর আনতে বললেন। তিনি তা পরিধান করেন, এরপর হেঁটে চললেন। আমি ও যায়েদ ইবনু হারিসা তার পিছনে চললাম। শেষে তিনি একটি ঘরের কাছে আসেন, যে ঘরে হামযা (রাঃ) ছিলেন। তিনি অনুমতি চাইলেন তারা তাদের অনুমতি দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৭৯ | 5379 | ۵۳۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৩৭. জামা পরিধান করা। মহান আল্লাহর বানীঃ ইউসুফ (আঃ) এর ঘটনাঃ তোমরা আমার এ জামাটি নিয়ে যাও আর তা আমার পিতার মুখমন্ডলে রাখ, তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন
৫৩৭৯। কুতায়বা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি জিজ্ঞাসা করলোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! মুহরিম ব্যাক্তি কি কাপড় পরিধান করবে? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মুহরিম জামা, পায়জামা, টুপি এবং মোজা পরবে না। তবে যদি সে জুতা সংগ্রহ করতে না পারে তা হবে টাখনুর নীচে পর্যন্ত (মোজা) পরতে পারবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৮০ | 5380 | ۵۳۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৩৩৭. জামা পরিধান করা। মহান আল্লাহর বানীঃ ইউসুফ (আঃ) এর ঘটনাঃ তোমরা আমার এ জামাটি নিয়ে যাও আর তা আমার পিতার মুখমন্ডলে রাখ, তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন
৫৩৮০। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু উবাইকে কবরে রাখার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে এলেন। তার লাশ কবর থেকে উঠাবার নির্দেশ দিলেন। তখন লাশ কবর থেকে উঠান হল এবং তার দু’ হাটুর উপর রাখা হলো। তিনি তার উপর থুথু দিলেন এবং তাকে নিজের জামা পরিয়ে দিলেন। আল্লাহই ভাল জানেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৮১ | 5381 | ۵۳۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৩৭. জামা পরিধান করা। মহান আল্লাহর বানীঃ ইউসুফ (আঃ) এর ঘটনাঃ তোমরা আমার এ জামাটি নিয়ে যাও আর তা আমার পিতার মুখমন্ডলে রাখ, তিনি দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাবেন
৫৩৮১। সাদাকা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যখন আবদুল্লাহ ইবনু উবাই মারা যায়, তখন তার ছেলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসে। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনার জামাটি আমাকে দিন। আমি এ দিয়ে তাকে করর দিব। আর তার জানালার সালাত (নামায/নামাজ) আপনি আদায় করবেন এবং তার জন্য ইস্তিগফার করবেন। তিনি নিজের জামাটি তাকে দিয়ে দেন এবং বলেন যে, তুমি (কাফন পরানোর কাজ) সেরে ফেলে আমাকে সংবাদ দিবে। তারপর তিনি (কাফন পরানোর কাজ সেরে তাকে সংবাদ দিলেন) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে এলেন।

উমর (রাঃ) তাকে টেনে ধরে বললেনঃ আল্লাহ কি আপনাকে মুনাফিকদের (জানাযার) সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে নিষেধ করেননি? তিনি এ আয়াতটি পড়লেনঃ তুমি ওদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর অথবা তাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না কর একই কথা। তুমি সত্তরবার ওদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করলেও আল্লাহ ওদের কখনই ক্ষমা করবেন না তখন নাযিল হয়ঃ ওদের মধ্যে কারও মৃত্যু হলে তুমি কখনও ওদের জন্য জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে না। এরপর থেকে তাদের জানাযার সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা বর্জন করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৮২ | 5382 | ۵۳۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৩৮. মাথা বের করার জন্য জামা ও অন্য পোশাকের বুকের অংশ ফাক রাখা
৫৩৮২। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার কৃপণ ও দানশীল ব্যাক্তিকে এমন দু’ ব্যাক্তির সাথে তুলনা করেন যাদের পরিধানে লোহার দুটি বর্ম আছে। তাদের দুটি হাতই বুক ও ঘাড় পর্যন্ত পৌছে আছে। দানশীল ব্যাক্তি যখন দান করে তখন তার বর্মটি এমন ভাবে প্রশস্ত হয় যে তার পায়ের আঙ্গুলের মাথা পর্যন্ত ঢেকে ফেলে এবং (শরীরের চেয়ে লম্বা হওয়ার জন্য চলার সময়) পদ চিহৃ মুছে ফেলে। আর কৃপণ লোকটি যখন দান করতে ইচ্ছে করে তখন তার বর্মটি শক্ত হয়ে যায় ও এক অংশ অন্য অংশের সাথে মিলে থাকে এবং প্রতিটি অংশ স্ব-স্ব স্থানে থেকে যায়।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেনঃ আমি দেখলাম, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার আঙ্গুল এভাবে বুকের দিক দিয়ে খোলা অংশের মধ্যে রেখে বলতে দেখেছি। তুমি যদি তা দেখতে তাহলে দেখতে) যে তিনি তা প্রশস্ত করতে চাইলেন কিন্ত তা প্রশস্ত হল না। ইবনু তাউস তার পিতা থেকে এবং আবূ যিনাদ, আরাজ থেকে অনুরূপ ভাবে جُبَّتَيْنِ বর্ণনা করেন। আর জাফর আরাজ এর সূত্রে جُبَّتَانِ বর্ণনা করেছেন। হানযালা (রহঃ) বলেনঃ আমি তাউসকে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে جُبَّتَانِ বলতে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৮৩ | 5383 | ۵۳۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৩৯. যিনি সফরে সংকীর্ণ আস্তিন বিশিষ্ট জোব্বা পরিধান করেন
৫৩৮৩। কায়স ইবনু হাফস (রহঃ) … মুগীরা ইবনু শু’বা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন (তাবুক যুদ্ধের সময়) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রাকৃতিক প্রয়োজনে বাইরে যান এবং তারপর ফিরে আসেন। আমি তার নিকট পানি নিয়ে পৌছি। তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করেন। তখন তার পরিধানে শাম দেশীয় (সিরিয়ার) জোব্বা ছিল। তিনি কুলী করেন, নাক পরিষ্কার করেন এবং তার মুখমন্ডল ধৌত করেন। এরপর তিনি আস্তিন থেকে দু’ হাত বের করতে থাকেন, কিন্তু আস্তিন দুটি ছিল সংকীর্ণ, তাই তিনি হাত দু’খানি জামার নীচ দিয়ে বের করে উভয় হাত ধৌত করেন। এরপর মাথা মাসেহ করেন এবং মোজার উপর মাসেহ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৮৪ | 5384 | ۵۳۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৩৪০. যুদ্ধের সময় পশমী জামা পরিধান করা
৫৩৮৪। আবূ নুআইম (রহঃ) … মুগীরা ইবনু শু’বা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি (তাবুক) সফরে এক রাত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি বললেনঃ তোমার সাথে পানি আছে কি? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তখন তিনি বাহন থেকে নামলেন এবং হেঁটে যেতে লাগলেন। তিনি এতদূর গেলেন যে, রাতের আধারে আমার থেকে অদৃশ্য হবে পড়লেন। তারপর তিনি ফিরে এলেন। আমি পাত্র থেকে তার (উযূ (ওজু/অজু/অযু)র) পানি ঢালতে লাগলাম। তিনি মুখমণ্ডল ও দু’হাত ধৌত করলেন। তার পরিধানে ছিল পশমের জামা। তিনি তা থেকে হাত বের করতে পারলেন না, তাই জামার নীচ দিয়ে বের করলেন এবং দু’হাত ধৌত করলেন। তারপর মাথা মাসেহ করলেন। তারপর আমি তাঁর মোজা দুটি খুলতে ইচ্ছা করলাম। তিনি বললেনঃ ছেড়ে দাও। কেননা, আমি পবিত্র অবস্থায় তা পরিধান করেছি। তারপর তিনি মোজাদ্বয়ের উপর মাসেহ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৮৫ | 5385 | ۵۳۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৩৪১. কাবা ও রেশমী ফাররূজ, আর তাকেও এক প্রকার কাবাই বলা হয়, যে জামার পিচনের দিকে ফাঁক থাকে
৫৩৮৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকটি কাবা বণ্টন করেন, কিন্তু মাখরামাকে কিছুই দিলেন না। মাখরামা বললোঃ হে আমার প্রিয় পুত্র চল আমার সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে। আমি তার সঙ্গে গেলাম। তিনি বললেনঃ ভিতরে যাও এবং আমার জন্য নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আবেদন জানাও। মিসওয়ার বলেনঃ আমি তার (পিতার) জন্য আবেদন করলে তিনি মাখরামার উদ্দেশ্যে বের হয়ে আসেন। তখন তার পরিধানে রেশমী কাবা ছিল। তিনি বললেনঃ তোমার জন্য এটি আমি গোপন করে রেখেছিলাম। মিসওয়ার বলেন এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকালেন এবং বললেন মাখরামা এবার রাযী (খুশী) আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৮৬ | 5386 | ۵۳۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৩৪১. কাবা ও রেশমী ফাররূজ, আর তাকেও এক প্রকার কাবাই বলা হয়, যে জামার পিচনের দিকে ফাঁক থাকে
৫৩৮৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একটি রেশমী কাবা হাদিয়া দেওয়া হয়। তিনি তা পরিধান করেন এবং তা পরে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। সালাত (নামায/নামাজ) শেষে তিনি তা খুব জোরে টেনে খুলে ফেললেন, যেন এটি তিনি অপছন্দ করছেন। এরপর বললেন মুত্তাকীদের জন্য এটা শোভনীয় নয়। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ, লায়স থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। অন্যেরা বলেছেন ‘ফাররুজ হারীর’ হলো রেশমী কাপড়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৮৭ | 5387 | ۵۳۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৪২. টুপি। মুসাদ্দাদ (র) আমাকে বলেছেন যে, মু‘তামার বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি যে, তিনি আনাস (রাঃ) এর (মাথার) উপর হলুদ রেশমী টুপি দেখেছেন।
৫৩৮৭। ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! মুহরিম লোক কি কি পোশাক পরবে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা (ইহরাম অবস্থায়) জামা, পাগড়ী, পা-জামা। টুপি ও মোজা পরবে না। তবে যে ব্যাক্তির জুতা নেই, সে কেবল মোজা পরতে পারবে কিন্তু উভয় মোজা টাখনুর নীচ থেকে কেটে ফেলবে। আর যা’ফরান ও ওয়ারস রং যাতে লেগেছে, এমন কাপড় পরবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৮৮ | 5388 | ۵۳۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৩. পায়জামা
৫৩৮৮। আবূ নুআয়ম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোকের ইযার (লুঙ্গি) নেই, সে যেন পায়জামা; আর যার জুতা নেই। সে যেন মোজা পরে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৮৯ | 5389 | ۵۳۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৩. পায়জামা
৫৩৮৯। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা যখন ইহরাম অবস্থায় থাকি, তখন কি পোশাক পরার জন্য আমাদের নির্দেশ দেন? তিনি বললেনঃ (তখন তোমরা জামা, পায়জামা, পাগড়ী টুপি ও মোজা পরবে না। তবে যার জুতা নেই সে টাখনুর নীচ পর্যন্ত মোজা পরবে। আর তোমরা সে ধরনের কোন কাপড়ই পরবে না যাতে যাফরান বা ওয়ারস রং লাগান হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৯০ | 5390 | ۵۳۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৪. পাগড়ী
৫৩৯০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সালিমের পিতা (আবদুল্লাহ ইবনু উমর) (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুহরিম ব্যাক্তি জামা পাগড়ী, পায়জামা ও টুপি পরতে পরবে না। যাফরান ও ওয়ারস দ্বারা রং করা কাপড়ও নয় এবং মোজাও নয়। তবে সে ব্যাক্তির জন্য (এ নিষেধ) নয়, যার জুতা নেই। যদি সে জুতা না পায় তাহলে উভয় মোজার টাখনুর নীচে থেকে কেটে নেবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৯১ | 5391 | ۵۳۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৫. চাদর বা অন্য কিছু দ্বারা মাথা ও মুখের অধিকাংশ অঙ্গ ঢেকে রাখা। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) একদা বাইরে আসলেন, তখন তাঁর (মাথার) উপর রুমাল ছিল । আনাস (রাঃ) নাবী (সাঃ) নিজ মাথা চাদরের এক পাশ দ্বারা বেঁধে রেখেছিলেন ।
৫৩৯১। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, কিছু সংখ্যক মুসলিম হাবশায় হিজরত করেন। এ সময় আবূ বকর (রাঃ) হিজরত করার উদ্দেশ্যে প্রস্তুতি গ্রহন করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি একটু অপেক্ষা কর; কেননা, মনে হয় আমাকেও (হিজরতের) আদেশ দেওয়া হবে। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আমার পিতা আপনার উপর কুরবান হোক আপনিও কি এ আশা পোষন করেন? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আবূ বকর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গ লাভের আশায় নিজেকে সংবরন করে রাখেন এবং তার মালিকানাধীন দুটি সাওয়ারীকে চার মাস যাবত সামূর বৃক্ষের পাতা ভাক্ষন করান।

উরওয়া (রহঃ) বর্ণনা করেন, আয়িশা বলেছেন যে, একদিন ঠিক দুপরের সময় আমরা আমাদের ঘরে আসে। এ সময় এক ব্যাক্তি আবূ বকর (রাঃ) কে বলল, এই যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুখমণ্ডল ঢেকে এগিয়ে আসছেন। এমন সময় তিনি এসেছেন, যে সময় তিনি সাধারণত আমাদের কাছে আসেন না। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ আমার মা-বাপ তার উপর কুরবান হোক, আল্লাহর কসম! এমন সময় তিনি একটি বড় কাজ নিয়েই এসে থাকবেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে পড়লেন। তিনি অনুমতি চাইলেন তাকে অনুমতি দেওয়া হলো। তিনি প্রবেশ করলেন। প্রবেশের সময় আবূ বকর (রাঃ) কে বললেনঃ তোমার কাছে যারা আছে তাদের সরিয়ে দাও। তিনি বললেনঃ আমার পিতা আপনার উপর কুরবান হোক ইয়া রাসুলাল্লাহ! এরা তো আপনারই পরিবারের লোক।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমাকে হিজরতের অনূমিত দেওয়া হয়েছে। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ তাহলে আমি কি আপনার সঙ্গী হবো ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার উপর কুরবান হোক। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমার এদুটি সাওয়ারীর একটি গ্রহণ করুন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ মুল্যের বিনিময়ে (নিতে রাযী আছি) আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ তাঁদের উভয়ের জন্য সফরের আসবাবপত্র প্রস্তুত করলাম এবং সফরকালের নাস্তা তৈরী করে একটি চামড়ার থলের মধ্যে রাখলাম।

আবূ বকর (রাঃ)-এর কন্যা আসমা তার উড়নার এক অংশ ছিড়ে থলের মুখ বেঁধে দিল। এ কারণে তাকে যাতুন নিতাক (উড়না ওয়ালী) নামে ডাকা হাতা। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আবূ বকর (রাঃ) সাওর নামক পর্বত গুহায় পৌছেন। তথায় তিন রাত অতিবাহিত করেন। আবূ বকর (রাঃ) এর পুত্র আবদুল্লাহ তাদের সঙ্গে রাত্রি যাপন করতেন। তিনি ছিলেন সুচতুর বুদ্ধিমান যুবক। তিনি তাদের কাছ থেকে রাতের শেষ ভাগে চলে আসতেন এবং ভোর বেলা কুরাইশদের সাথে মিশে যেতেন, যেন তাদের মধ্যেই তিনি রাত্রি যাপন করেছেন। তিনি কারও থেকে ষড়যস্ত্র মূলক কোন কিছু শুনলে তা মনে রাখতেন এবং রাতের আধার ছড়িয়ে পড়লে দিনের সব খবর নিয়ে তিনি তাদের দু’জনের কাছে পৌছে দিতেন।

আবূ বকর (রাঃ) এর দাস আমির ইবনু ফুহায়রা তাদের আশপাশে দুধওয়ালা বকরী চরিয়ে বেড়াতেন! রাতের এক ঘণ্টা অতিবাহিত হলে সে তাদের নিকট ছাগল নিয়ে যেত (দুধ পান করাবার জনো)। তারা দুজনে (আমি ও আবদুল্লাহ) সে গুহায়ই রাত কাটাতেন। ভোরে অন্ধকার থাকতেই আমির ইবনু ফুহায়রা ছাগল নিয়ে চলে আসতেন। ঐ তিন রাতের প্রতি রাতেই তিনি এরূপ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৯২ | 5392 | ۵۳۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৬. লৌহ শিরস্ত্রাণ
৫৩৯২। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা বিজয়ের বছর যখন মক্কায় প্রবেশ করেন, তখন তার মাথার সেই লৌহ শিরস্রাণ ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৯৩ | 5393 | ۵۳۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৭. ডোরাওয়ালা চাদর, কারুকার্যময় ইয়ামনী চাদর ও চাদরের আঁচলের বিবরণ। খাব্বাব (রাঃ) বলেন, আমরা নাবী (সাঃ) এর নিকট অভিযোগ করেছিলাম, তখন তিনি ডোরাওয়ালা চাদরে হেলান দিয়ে বসেছিলেন
৫৩৯৩। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে চলছিলাম। এ সময় তার পরিধানে চওড়া পাড় বিশিষ্ট একটি নাজরানী ডোরাদার চাঁদর ছিল। একজন বেদুইন তার কাছে এলো। সে তার চাদর ধরে খুব জোরে টান দিল। এমন কি আমি দেখতে পেলাম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাঁধে চাদরের পাড়ের দাগ পড়ে গেছে। তারপর সে বললঃ হে মুহাম্মাদ! আপনার নিকট আল্লাহ্‌র যে সম্পদ আছে তা থেকে আমাকে কিছু দিতে বলুন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে ফিরে তাকিয়ে হাসলেন এবং তাকে কিছু দান করার নির্দেশ দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৯৪ | 5394 | ۵۳۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৭. ডোরাওয়ালা চাদর, কারুকার্যময় ইয়ামনী চাদর ও চাদরের আঁচলের বিবরণ। খাব্বাব (রাঃ) বলেন, আমরা নাবী (সাঃ) এর নিকট অভিযোগ করেছিলাম, তখন তিনি ডোরাওয়ালা চাদরে হেলান দিয়ে বসেছিলেন
৫৩৯৪। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একজন স্ত্রী লোক একটি বুরদা নিয়ে এলো। সাহল (রাঃ) বললেনঃ তোমরা জানো বুরদা কী? একজন উত্তর দিল হ্যাঁ, বুরদা হলো এমন চাঁদর যার পাড় কারুকার্যময়। স্ত্রী লোকটি বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আমি এটি আমার নিজের হাতে বুনেছি আপনাকে পরিধান করাবার জন্য। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তা গ্রহন করলেন। তখন তার এর প্রয়োজনও ছিল। এরপর তিনি আমাদের কাছে বেরিয়ে আসলেন। তখন সে চাদরটি ইযার হিসেবে তাঁর পরিধানে ছিল। দলের এক ব্যাক্তি হাত দিয়ে চাঁদরটি স্পর্শ করল এবং বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে এটি পরতে দিন। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মজলিসে বসলেন, যতক্ষণ আল্লাহর ইচ্ছে ছিলো, তারপরে উঠে গেলেন এবং চাঁদরটি ভাজ করে এ ব্যাক্তির কাছে পাঠিয়ে দিলেন। উপস্থিত লোকেরা বললোঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এটি চেয়ে তুমি ভাল করনি। তুমি তো জানো যে, কোন প্রার্থীকে তিনি ব্যথিত করেন না। লোকটি বললোঃ আল্লাহর কসম! আমি কেবল এজন্যই চেয়েছি যে, যেদিন আমার মৃত্যু হবে, সে দিন যেন এ চাদরটি আমার কাফন হয়। সাহল (রাঃ) বলেনঃ এটি তার কাফনই হয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৯৫ | 5395 | ۵۳۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৭. ডোরাওয়ালা চাদর, কারুকার্যময় ইয়ামনী চাদর ও চাদরের আঁচলের বিবরণ। খাব্বাব (রাঃ) বলেন, আমরা নাবী (সাঃ) এর নিকট অভিযোগ করেছিলাম, তখন তিনি ডোরাওয়ালা চাদরে হেলান দিয়ে বসেছিলেন
৫৩৯৫। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ আমার উম্মতের মধ্য থেকে সত্তর হাযারের একটি দল (বিনা হিসাবে) জান্নাতে প্রবেশ করবে। তখন তাদের মুখমণ্ডল চাঁদের ন্যায় হবে। উককাশা ইবনু মিহসান তার পরিহিত রঙ্গিন ডোরাযুক্ত চাদর উপরে তুলে ধরে বলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আল্লাহর নিকট আমার জন্য দু আ করুন, যেন তিনি আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। তিনি দু আ করলেনঃ ইয়া আল্লাহ! একে তাদের অন্তর্ভুক্ত করুন। তারপর আনসারদের মধ্য থেকে এক ব্যাক্তি দাড়িয়ে বললঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ আপনি আল্লাহর নিকট দু’আ করুন, যেন তিনি আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ উককাশা তোমার অগ্রবর্তী হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৯৬ | 5396 | ۵۳۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৭. ডোরাওয়ালা চাদর, কারুকার্যময় ইয়ামনী চাদর ও চাদরের আঁচলের বিবরণ। খাব্বাব (রাঃ) বলেন, আমরা নাবী (সাঃ) এর নিকট অভিযোগ করেছিলাম, তখন তিনি ডোরাওয়ালা চাদরে হেলান দিয়ে বসেছিলেন
৫৩৯৬। আমর ইবনু আসিম (রহঃ) … কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ কোন জাতীয় কাপড় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বেশী প্রিয় ছিল? তিনি বললেনঃ হিবারা-ইয়ামনী চাদর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৯৭ | 5397 | ۵۳۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৭. ডোরাওয়ালা চাদর, কারুকার্যময় ইয়ামনী চাদর ও চাদরের আঁচলের বিবরণ। খাব্বাব (রাঃ) বলেন, আমরা নাবী (সাঃ) এর নিকট অভিযোগ করেছিলাম, তখন তিনি ডোরাওয়ালা চাদরে হেলান দিয়ে বসেছিলেন
৫৩৯৭। আবদুল্লাহ ইবনু আবূল আসওয়াদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিবারা ইয়ামনী চাঁদর পরিধান করতে বেশী পছন্দ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৯৮ | 5398 | ۵۳۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৭. ডোরাওয়ালা চাদর, কারুকার্যময় ইয়ামনী চাদর ও চাদরের আঁচলের বিবরণ। খাব্বাব (রাঃ) বলেন, আমরা নাবী (সাঃ) এর নিকট অভিযোগ করেছিলাম, তখন তিনি ডোরাওয়ালা চাদরে হেলান দিয়ে বসেছিলেন
৫৩৯৮। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পত্নী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইন্তেকাল করেন তখন ইয়ামনী চাঁদর দ্বারা তাঁকে ঢেকে রাখা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৩৯৯ | 5399 | ۵۳۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৮. কম্বল ও কারুকার্যপূর্ণ চাদর পরিধান করা
৫৩৯৯। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আয়িশা ও আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তারা উভয়ে বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মৃত্যু শয্যায় শায়িত তখন তিনি তার কারুকার্যময় চাঁদর দ্বারা মুখমণ্ডল ঢেকে রাখেন। যখন তার শ্বাস রুদ্ধ হয়ে আসতো তখন তার মুখ থেকে সরিয়ে নিতেন। এমতাবস্থায় তিনি বলতেনঃ ইয়াহুদী ও নাসারাদের উপর আল্লাহর অভিশাপ, তারা তাদের নাবীদের কবরসমূহকে মসজিদ বানিয়েছে। তাদের কর্মের কথা উল্লেখ করে তিনি সতর্ক করছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪০০ | 5400 | ۵٤۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৮. কম্বল ও কারুকার্যপূর্ণ চাদর পরিধান করা
৫৪০০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ বুরদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আয়িশা (রাঃ) একবার একথানি কম্বল ও মোটা ইযার নিয়ে আমাদের কাছে আসেন এবং তিনি বললেনঃ এ দুটি পরিহিত অবস্থায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রুহ করয করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪০১ | 5401 | ۵٤۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৮. কম্বল ও কারুকার্যপূর্ণ চাদর পরিধান করা
৫৪০১। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চাদর গায়ে দিয়ে সাদাত আদায় করলেন। চাঁদরটি ছিল কারুকার্য খচিত। তিনি কারুকার্যের দিকে এক দিকে তাকালেন, তারপর সালাম ফিরিয়ে বললেনঃ এ চাদরটি আবূ জাহমের কাছে নিয়ে যাও। কারণ এখনই তা আমার সালাত (নামায/নামাজ) থেকে অন্যমনস্ক করে দিয়েছে। আর আবূ জাহম ইবনু হুযায়ফার আনবিজানিয়্যা (কারুকার্য বিহীন চাদর)-টি আমার জন্য নিয়ে এসো। সে হচ্ছে আদি ইবনু কাব গোত্রের লোক।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪০২ | 5402 | ۵٤۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৯. কাপড় মুড়ি দিয়ে বসা
৫৪০২। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুলামাসা’ ও ‘মুনাবাযা’ থেকে নিষেধ করেছেন এবং দু’ সময়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা থেকেও অর্থাৎ ফজরের (সালাত (নামায/নামাজ) এর) পর সূর্য উপরে উঠা পর্যন্ত এবং আসরের (সালাত (নামায/নামাজ) এর) পর সূর্যান্ত পর্যন্ত। আরও নিষেধ করেছেন একটি মাত্র কাপড় এমনভাবে পড়তে, যাতে লজ্জাস্থানের উপরে তার ও আকাশের মাঝখানে আর কিছুই থাকে না। আর তিনি কাপড় মুড়ি দিয় বসতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪০৩ | 5403 | ۵٤۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৪৯. কাপড় মুড়ি দিয়ে বসা
৫৪০৩। ইয়াহ্ইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’ প্রকার কাপড় পরিধান করতে ও দু প্রকার ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। ক্রয়-বিক্রয়ে তিনি ‘মূলামাসা’ ও ‘মুনাবাযা’ থেকে নিষেধ করেছেন। মুলামাসা হল রাতে বা দিনে একজন অপর জনের কাপড় হাত দিয়ে স্পর্শ করা। এইটুকু ছাড়া তা আর উলট-পালট করে দেখে না। আর মুনাবাযা হল- এক লোক অন্য লোকের প্রতি তার কাপড় নিক্ষেপ করা। আর দ্বিতীয় ব্যাক্তিও তার কাপড় নিক্ষেপ করা, এবং এর দ্বারাই তাদের ক্রয়-বিক্রয় সম্পন্ন হওয়া, দেখা ও পারস্পরিক সম্মতি ব্যতিরেকেই। আর দু’প্রকার পোশাক পরিধানের (এর এক প্রকার) হচ্ছে ইশতিমালুস-সাম্মা। সাম্মা হল এক কাঁধের উপর কাপড় এমনভাবে রাখা যাতে অন্য কাঁধ খালি থাকে, কোন কাপড় থাকে না। পোশাক পরার অন্য প্রকার হচ্ছে বসা অবস্থায় নিজের কাপড় দ্বারা নিজেকে এমনভাবে ঘিরে রাখা। যাতে লজ্জাস্থানের উপর কাপড়ের কোন অংশ না থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪০৪ | 5404 | ۵٤۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৩৫০. এক কাপড়ে পেঁচিয়ে বসা
৫৪০৪। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’ধরনের কাপড় পরতে নিষেধ করেছেন। একটি কাপড়ে পুরুষের এমনভাবে পেঁচিয়ে থাকা যে, তার লজ্জাস্থানের উপর সে কাপড়ের কোন অংশই থাকে না। আর একটি কাপড় এমনভাবে পেঁচিয়ে পরা যে, শরীরের এক অংশ খোলা থাকে। আর ‘মুলামাসা’ ও ‘মুনাবাসা’ থেকেও (তিনি নিষেধ করেছেন)।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪০৫ | 5405 | ۵٤۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৩৫০. এক কাপড়ে পেঁচিয়ে বসা
৫৪০৫। মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন শরীরের এক পাশ খোলা রেখে অন্য পাশ ঢেকে পরতে। আর এক কাপড়ে পুরুষকে এমনভাবে ঢেকে বসতে, যাতে তার লজ্জাস্থানের উপর ঐ কাপড়ের কোন অংশ না থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪০৬ | 5406 | ۵٤۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৩৫১. নকশীদার কালো চাদর
৫৪০৬। আবূ নুআইম (রহঃ) … উম্মে খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কিছু কাপড় নিয়ে আসা হয়। তার মধ্যে কিছু কালো নকশীদার ছোট চাদর ছিল। তিনি বললেনঃ আমরা এগুলো পরবো, তোমাদের মত কি? উপস্থিত সবাই নীরব থাকলো। তারপর তিনি বললেনঃ উম্মে খালিদকে আমার কাছে নিয়ে এসো। তাকে বহন করে আনা হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের হাতে একটি চাদর নিলেন এবং তাকে পরিয়ে দিলেন। এরপর বললেনঃ (এটি) তুমি পুরান কর ও ছিড়ে ফেল (অথাৎ তুমি দীর্ঘজীবী হও)। ঐ চাদরে সবুজ অথবা হলুদ রঙের নকশী ছিল। তিনি বললেনঃ হে খালেদের মা! এ খানি কত সুন্দর! তিনি হাবশী ভাষায় বললেনঃ সানাহ অর্থাৎ সুন্দর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪০৭ | 5407 | ۵٤۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৫১. নকশীদার কালো চাদর
৫৪০৭। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ উম্মে সুলায়ম (রাঃ) যখন একটি সন্তান প্রসব করলেন তখন আমাকে জানালেন, হে আনাস! শিশুটিকে দেখ, যেন সে কিছু না খায়, যতক্ষণ না তুমি একে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট নিয়ে যাও, তিনি এর তাহনীক করবেন। আমি তাকে নিয়ে গেলাম। দেখলাম, তিনি একটা বাগানের মধ্যে আছেন, আর তার পরিধানে হুবায়সিয়া নামক চাদর রয়েছে। তিনি যে উটে করে মক্কা বিজয়ের দিনে অভিযানে গিয়েছিলেন তার পিঠে ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪০৮ | 5408 | ۵٤۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৫২. সবুজ পোশাক
৫৪০৮। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইকরামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রিফাআ তার স্ত্রীকে তালাক দেয়। পরে আবদুর রহমান কুরাযী তাকে বিবাহ করে। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ তার গায়ে একটি সবুজ রঙের উড়না ছিল। সে আয়িশা (রাঃ) এর নিকট অভিযোগ করলেন এবং (স্বামীর প্রহারের দরুন) নিজের গায়ের চামড়ার সবুজ বর্ণ দেখালো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন এলেন, আর লোকেরা একে অন্যের সহযোগিতা করে থাকে, তখন আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ কোন মুমিন মহিলাকে এমনভাবে প্রহার করতে আমি কখনও দেখিনি। মহিলাটির চামড়া তার কাপড়ের চেয়ে অধিক সবুজ হয়ে গেছে। বর্ণনকারী বলেনঃ আবদুর রহমান শুনতে পেল যে, তার স্ত্রী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসেছে। সুতরাং সেও তার অন্য স্ত্রীর দুটি ছেলের সাথে করে এলো। স্ত্রীলোকটি বললঃ আল্লাহর কসম! তার উপর আমার এ ছাড়া আর কোন অভিযোগ নেই সে, তার কাছে যা আছে, তা আমাকে এ জিনিসের চেয়ে বেশী তৃপ্তি দেয় না। এ বলে তার কাপড়ের আচল ধরে দেখান।

আবদূর রহমান বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! সে মিথ্যা কাছে, আমি তাকে ধোলাই করি চামড়া ধোলাই করার ন্যায়। (অর্থাৎ পূর্ণ শক্তির সাথে দীর্ঘস্থায়ী সঙ্গম করি)। কিন্তু সে অবাধ্য স্ত্রী, রিফাআর কাছে ফিরে যেতে চায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ব্যাপার যদি তাই হল তাহলে রিফাআ তোমার জন্য হারাম হবে না, অথবা তুমি তার যোগ্য হতে পার না, যতক্ষন না আবদুর রহমান তোমার সুধা আস্বাদন করবে। বর্ণনাকারী বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুর রহমানের সাথে তার পুত্রদ্বয়কে দেখে বললেনঃ এরা কি তোমার পুত্র? সে বললঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ এই আসল ব্যপার, যে জন্য স্ত্রী লোকটি এরূপ করছে। আল্লাহর কসম কাকের সাথে কাকের যেমন সা’দৃশ থাকে, তার চেয়েও অধিক মিল রয়েছে ওদের সাথে এর (অর্থাৎ আবদুর রহমানের সাথে তার পুত্রদের)।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪০৯ | 5409 | ۵٤۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৩. সাদা পোশাক
৫৪০৯। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হানযালী (রহঃ) … সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উহুদের দিন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ডানে ও বামে দুজন পুরুষ লোককে দেখতে পেলাম। তাদের পরিধানে সাদা পোশাক ছিল। তাদের এর আগেও দেখিনি আর পরেও দেখিনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪১০ | 5410 | ۵٤۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৩. সাদা পোশাক
৫৪১০। আবূ মা’মার (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলাম। তার পরিধানে তখন সাদা পোশাক ছিল। তখন তিনি নিদ্রিত ছিলেন। কিছুক্ষণ পর আবার এলাম, তখন তিনি জেগে গেছেন। তিনি বললেনঃ যে কোন বান্দা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে এবং এ অবস্থার উপরে মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আমি বললামঃ সে যদি যিনা করে, সে যদি চুরি করে? তিনি বললেনঃ যদি সে যিনা করে, যদি সে চুরি করে তবুও। আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ সে যদি যিনা করে, সে যদি চুরি করে তবুও? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ সে যদি যিনা করে, সে যদি চুরি করে তবুও। আমি বললামঃ যদি সে যিনা করে, যদি সে চুরি করে তবুও? তিনি বললেনঃ যদি সে যিনা করে, যদি সে চুরি করে তবুও। আবূ যারের নাসিকা ধুলাচ্ছন্ন হলেও। আবূ যার (রাঃ) যখনই এ হাদীস বর্ণনা করতেন তখনি আবূ যারের নাসিকা ধূলাচ্ছন্ন হলেও বাক্যটি বলতেন।

আবূ আবদুল্লাহ ইমাম বুখারী) বলেন এ কথা প্রযোজ্য হয় মৃত্যুর সময় বা তার পূর্বে যখন সে তাওবা করে ও লজ্জিত হয় এবং বলে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ, তখন তার পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪১১ | 5411 | ۵٤۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৪. পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক পরা, রেশমী চাদর বিছানো এবং কী পরিমাণ রেশমী কাপড় ব্যবহার বৈধ
৫৪১১। আদম (রহঃ) … কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ উসমান নাহদী এর থেকে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ আমাদের কাছে উমর (রাঃ) এর থেকে এক পত্র আসে, এ সময় আমরা উতবা ইবনু ফারকাদের সঙ্গে অবস্থান করছিলাম। (তাতে লেখা ছিল) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রেশম ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন, তবে এতটুকু এবং ইশারা করলেন, বৃদ্ধা আঙ্গুলের সাথে মিলিত দু’আঙ্গুল দ্বারা (বর্ননাকারী বলেনঃ) আমরা বুঝলাম যে (বৈধতার পরিমাণ) জানিয়ে তিনি পাড় ইত্যাদি উদ্দেশ্য করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪১২ | 5412 | ۵٤۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৪. পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক পরা, রেশমী চাদর বিছানো এবং কী পরিমাণ রেশমী কাপড় ব্যবহার বৈধ
৫৪১২। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবূ উসমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আজারবাইজানে ছিলাম। এ সময় উমর (রাঃ) আমাদের কাছে লিখে পাঠান যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রেশমী কাপড় পরিধান করতে নিষেধ করেছেন; কিন্তু এতটুকু এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর দুআঙ্গুল দ্বারা এর পরিমাণ আমাদের বলে দিয়েছেন। যুহায়র মধ্যমা ও শাহাদাত আঙ্গুল তুলে ধরে দেখিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪১৩ | 5413 | ۵٤۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৪. পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক পরা, রেশমী চাদর বিছানো এবং কী পরিমাণ রেশমী কাপড় ব্যবহার বৈধ
৫৪১৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ উসমান (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে আমরা উকবার সাথে ছিলাম। উমর (রাঃ) তার কাছে লিখে পাঠান যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যাকে আখিরাতে রেশম পরিধান করানো হবে না সে ব্যতীত অন্য কেউ দুনিয়ার রেশম পরিধান করবে না। হাসান ইবনু উমর (রহঃ) … আবূ উসমান (রহঃ) তার দু’আঙ্গুল অর্থাৎ শাহাদাত ও মধ্যমা দ্বারা ইঙ্গিত করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪১৪ | 5414 | ۵٤۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৪. পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক পরা, রেশমী চাদর বিছানো এবং কী পরিমাণ রেশমী কাপড় ব্যবহার বৈধ
৫৪১৪। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন হুযায়ফা (রাঃ) মাদাইনে অবস্থানরত ছিলেন। তিনি পানি পান করতে চাইলেন। এক গ্রাম্য লোক একটি রূপার পাত্রে কিছু পানি নিয়ে আসলো। হুযায়ফা (রাঃ) তা ছুঁড়ে মারলেন এবং বললেনঃ আমি ছুঁড়ে মারতাম না; কিন্তু আমি তাকে নিষেধ করেছি, সে নিবৃত হয়নি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সোনা, রুপা, পাতলা ও মোটা রেশম তাদের জন্য (কাফিরদের জন্য) দুনিয়ায় এবং তোমাদের (মুসলিমদের) জন্য পরকালে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪১৫ | 5415 | ۵٤۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৪. পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক পরা, রেশমী চাদর বিছানো এবং কী পরিমাণ রেশমী কাপড় ব্যবহার বৈধ
৫৪১৫। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। শুবা (রহঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ এ কথা কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত? তিনি জোর দিয়ে বললেনঃ হ্যাঁ! নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। যে ব্যাক্তি দুনিয়ায় রেশমী কাপড় পরিধান করবে, সে আখিরাতে তা কখনও পরিধান করতে পারবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪১৬ | 5416 | ۵٤۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৪. পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক পরা, রেশমী চাদর বিছানো এবং কী পরিমাণ রেশমী কাপড় ব্যবহার বৈধ
৫৪১৬। আলী ইবনু জা’দ (রহঃ) … উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে লোক দুনিয়ায় রেশমী কাপড় পরবে, পরকালে সে তা পরবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪১৭ | 5417 | ۵٤۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৪. পুরুষের জন্য রেশমী পোশাক পরা, রেশমী চাদর বিছানো এবং কী পরিমাণ রেশমী কাপড় ব্যবহার বৈধ
৫৪১৭। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইমরান ইবনু হিত্তান (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ) এর নিকট রেশম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর নিকটে যাও এবং তাকে জিজ্ঞাস কর। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তিনি বললেন। ইবনু উমরের নিকট জিজ্ঞেস কর। ইবনু উমরকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ আবূ হাফস অর্থাৎ উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুনীয়ায় রেশমী কাপড় সে ব্যাক্তই পরবে, যার আখিরাতে কোন অংশ নেই। আমি বললামঃ তিনি সত্য বলেছেন। আবূ হাফস রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর মিথ্যা আরোপ করেননি।

আবদুল্লাহ ইবনু রাজা (রহঃ) … ইমরানের সুত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪১৮ | 5418 | ۵٤۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৫. পরিধান না করে রেশমী কাপড় স্পর্শ করা। এ সম্পর্কে যুবায়দীর সুত্রে আনাস (রাঃ) থেকে নবী (সাঃ) এর হাদিস বর্ণিত আছে
৫৪১৮। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … বারা’ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য একখানা রেশমী কাপড় হাদিয়া পাঠানো হয়। আমরা তা স্পর্শ করলাম এবং বিস্ময় প্রকাশ করলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা এতে বিস্ময় প্রকাশ করছো? আমরা বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ জান্নাতে সা’দ ইবনু মুআযের রুমাল এর চাইতে উত্তম হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪১৯ | 5419 | ۵٤۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৬. রেশমী কাপড় বিছানো। আবীদা বলেন, এটা পরিধানের তুল্য
৫৪১৯। আলী (রহঃ) … হুয়ায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সোনা ও রুপার পাত্রে পানাহার করতে নিষেধ করেছেন এবং তিনি মোটা ও মিহিন রেশমী কাপড় পরিধান করতে ও তাতে বসতে বারণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪২০ | 5420 | ۵٤۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৭. কাসসী পরিধান করা। আসিম আবূ বুরদাহ হতে বর্ণিত । তিনি বলেন, আমি ‘আলী (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলাম, ‘কাসসী’ কী? তিনি বললেন, এক প্রকার কাপড় –যা শাম (সিরিয়া) অথবা মিশর থেকে আমাদের দেশে আমদানী হয়ে থাকে। চওড়া দিক থেকে নকশা করা হয়, তাতে রেশম থাকে এবং উৎরুনজের মত তা কারুকার্যখচিত হয়। আর মীসারা এমন বস্র, যা স্ত্রী লোকেরা তাদের স্বামীদের জন্য প্রস্তুত করে, মখমলের চাদরের মত তা হলুদ বর্ণের হয়ে থাকে। জারীর ইয়াযীদ থেকে বর্ণনা করেন, তাঁর বর্ণনায় আছে- কাসসী হল নকশীওয়ালা কাপড় যা মিশর থেকে আমদানী হয়, তাতে রেশম থাকে। আর মীছারা হলো হিংস্র জন্তুর চামড়া
৫৪২০। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … বারা ইবনু অযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের লাল রঙের মীছারা ও কাসসী পরতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪২১ | 5421 | ۵٤۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৮. চর্মরোগের কারণে পুরুষের জন্য রেশমী কাপড়ের অনুমতি
৫৪২১। মুহাম্মদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুবায়ের ও আবদুর রহমান (রাঃ) কে তাদের চর্মরোগের কারণে রেশমী কাপড় পরার অনুমতি দিয়েছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪২২ | 5422 | ۵٤۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৯. মহিলাদের রেশমী কাপড় পরিধান করা
৫৪২২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে একটি রেশমী হুল্লা পরতে দেন। আমি তা পরে বের হই। কিন্তু তাঁর (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর) চেহারায় অসন্তোষের ভাব লক্ষ্য করি। সুতরাং আমি তা ফেঁড়ে আমার পরিবারের মহিলাদের মধ্যে বণ্টন করে দেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪২৩ | 5423 | ۵٤۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৯. মহিলাদের রেশমী কাপড় পরিধান করা
৫৪২৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। উমর (রাঃ) একটি রেশমী হুল্লা বিক্রী হতে দেখে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি যদি এটি খরীদ করে নিতেন, তা হলে যখন কোন প্রতিনিধি দল আপনার কাছে আসে তখন এবং জুমুআর দিনে পরিধান করতে পারতেন। তিনি বললেনঃ এটা সে ব্যক্তিই পরতে পারে যার আখিরাতে কোন অংশ নেই। পরবর্তী সময়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর (রাঃ) এর নিকট ডোরাকাটা রেশমী হুল্লা পাঠান। তিনি কেবল তাকেই পরতে দেন। উমর (রাঃ) বললেন আপনি এখনি আমাকে পরতে দিয়েছেন, অথচ এ সম্পর্কে যা বলার তা আমি আপনাকে বলতে শুনেছি। তিনি বললেন আমি তোমার কাছে এজন্য পাঠিয়েছি যে তুমি এটি বিক্রি করে দিবে অথবা কাউকে পরতে দিবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪২৪ | 5424 | ۵٤۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৩৫৯. মহিলাদের রেশমী কাপড় পরিধান করা
৫৪২৪। আবূল ইয়ামন (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কন্যা উম্মে কুলসুমের পরিধানে হালকা নকশা করা রেশমী চাদর দেখেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪২৫ | 5425 | ۵٤۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৩৬০. নাবী (সাঃ) কী ধরনের পোশাক ও বিছানা গ্রহণ করতেন
৫৪২৫। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি এক বছর যাবত অপেক্ষায় ছিলাম যে, উমর (রাঃ) এর কাছে সে দু’টি মহিলা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবো যারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বিরুদ্ধে জোট বেঁধে ছিলো। কিন্তু আমি তাকে খুব ভয় করে চলতাম। একদিন তিনি কোন এক স্থানে নামলেন এবং (প্রাকৃতিক প্রয়োজনে) আরাক গাছের কাছে গেলেন। যখন তিনি বেরিয়ে এলেন, আমি তাকে (সে সম্পর্কে) জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেনঃ (তারা হলেন) আয়িশা (রাঃ) ও হাফস (রাঃ)। এরপর তিনি বললেনঃ জাহিলী যুগে আমরা নারীদের কোন কিছু বলে গন্যই করতাম না। যখন ইসলাম আবির্ভূত হলো এবং (কুরআনে) আল্লাহ তাদের (মর্যাদার কথা) উল্লেখ করলেন। তাতে আমরা দেখলাম যে, আমাদের উপর তাদের হক আছে এবং এতে আমাদের হস্তক্ষেপ করা চলবে না।

একদা আমার স্ত্রী ও আমার মধ্যে কিছু কথাবার্তা হাচ্ছিল। সে আমার উপর রুঢ় ভাষা ব্যবহার করলো। আমি তাকে বললামঃ তুমি তো সে স্থানেই। স্ত্রী বললেনঃ তুমি আমাকে এরূপ বলছ, অথচ তোমার কন্যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কষ্ট দিচ্ছে। এরপর আমি হাফসার কাছে এলাম এবং বললাম আল্লাহ ও আল্লাহর রাসুলের নাফরমানী করা থেকে আমি তোমাকে সতর্ক করে দিচ্ছি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কষ্ট দেওয়ায় আমি হাফসার কাছেই প্রথমে আসি। এরপর আমি উম্মে সালামা (রাঃ) এর কাছে এলাম এবং তাকেও অনুরূপ বললাম। তিনি বললেনঃ তোমার প্রতি আমার বিস্ময় হে উমর! তুমি আমার সকস ব্যাপারেই দখল দিছে, কিছুই বাকী রাখনি, এমন কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সহধর্মিণীগণের ব্যাপারেও হস্তক্ষেপ করছ। এ কথা বলে তিনি (আমাকে) প্রত্যাখ্যান করলেন।

এক লোক ছিলেন আনসারী। তিনি যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মজলিস থেকে দুরে থাকতেন এবং আমি উপস্থিত থাকতাম, যা কিছু হতো সে সব আমি তাকে গিয়ে জানাতাম। আর আমি যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মজসিস থেকে অনুপস্থিত থাকতাম, আর তখন তিনি উপস্থিত থাকতেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এখানে যা কিছু ঘটতো তা এসে আমাকে জানাতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চারপাশে যারা (রাজা-বাদশা) ছিল তাদের উপর রাসুলের কর্তৃত্ব প্রতিষ্টিত হয়েছিল। কেবল বাকী ছিল শামের (সিরিয়ার) গাসসান শাসক। তার আক্রমণের আমরা আশংকা করতাম।

হঠাৎ আনসারী ব্যাক্তিটি যখন বললোঃ এক বিরাট ঘটনা ঘটে গেছে। আমি তাকে বললামঃ কি সে ঘটনা! গাসসানী কি এসে পড়েছে? তিনি বললেনঃ এর চাইতেও ভয়াবহ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সকল সহধর্মিণীকে তালাক দিয়েছেন। আমি সেখানে গেলাম। দেখলাম সকল কক্ষ থেকে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কক্ষের চিলে কুঠুরিতে অবস্থান করছিলেন। প্রবেশ পথে অল্প বয়স্ক একজন খাদিম বসে আছে। আমি তার কাছে গেলাম এবং বললামঃ আমার জন্য অনুমতি চাও।

অনুমতি পেয়ে আমি ভিতরে প্রবেশ করলাম। দেখলাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি চাটাইয়ের উপর শুয়ে আছেন। যা তার পার্শ্বদেশে দাগ বসিয়ে দিয়েছে। তার মাথার নীচে চামড়ার একটি বালিশ। তার ভেতরে রয়েছে খেজুর গাছের ছাল। কয়েকটি চামড়া ঝুলানো রয়েছে এবং বিশেষ গাছের পাতা। এরপর হাফসা ও উম্মে সালামাকে আমি যা বলেছিলাম এবং উম্মে সালামা আমাকে যা বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, সে সব আমি তাঁর কাছে ব্যক্ত করলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসলেন। তিনি উনত্রিশ রাত তথায় অবস্থান করার পর অবতরণ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪২৬ | 5426 | ۵٤۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৩৬০. নাবী (সাঃ) কী ধরনের পোশাক ও বিছানা গ্রহণ করতেন
৫৪২৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে জাগলেন। তখন তিনি বলছিলেনঃ আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, কত যে ফিতনা এ রাতে নাযিল হয়েছে। আরও কত যে ফিতনা নাযিল হয়েছে, কে আছে এমন, যে এ হুজরাবাসীগণকে ঘুম থেকে জাগিয়ে দেবে। পৃথিবীতে এমন অনেক পোশাক পরিহিতা মহিলাও আছে যারা কিয়ামতের দিন বিবিস্ত্র থাকবে। যুহরী (রহঃ) বলেন, হিন্দ বিনত হারিস এর জামার আস্তিনদ্বয়ে বুতাম লাগানো ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪২৭ | 5427 | ۵٤۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৬১. যে ব্যক্তি নতুন কাপড় পরবে তার জন্য কী দু’আ করা হবে?
৫৪২৭। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … খালিদের কন্যা উম্মে খালিদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কিছু কাপড় আনা হয়। তার মধ্যে একটি নকশাযুক্ত কাল চাঁদর ছিল। তিনি বললেনঃ আমি এ চাদরটি কাকে পরিধান করাব এ ব্যাপারে তোমাদের অভিমত কি? সবাই নিরব থাকল। তিনি বললেনঃ উম্মে খালিদকে আমার কাছে নিয়ে এসো। সুতরাং তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে নিয়ে আসা হল। তিনি স্বহস্তে তাকে ঐ চাদর পরিয়ে দিয়ে বললেনঃ পুরাতন কর ও দীর্ঘদিন ব্যবহার কর। তারপর তিনি চাদরের নকশার দিকে তাকাতে লাগলেন এবং হাতের দ্বারা আমাকে ইঙ্গিত করে বলতে থাকলেনঃ হে উম্মে খালিদ! এ সানা, হে উম্মে খালিদ! এ সানা। হাবশী ভাষায় (سَنَا) “সানা” অর্থ সুন্দর। ইসহাক (রহঃ) বলেনঃ আমার পরিবারের জনৈক মহিলা আমাকে বলেছে, সে উক্ত চাদর উম্মে খালিদের পরিধানে দেখেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪২৮ | 5428 | ۵٤۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৬২. পুরুষের জন্যে জাফরানী রং এর কাপড় পরিধান করা
৫৪২৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুরুষদের যাফরানী রং এর কাপড় পরিধান করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪২৯ | 5429 | ۵٤۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৬৩. জাফরানী রং এর রঙ্গিন কাপড়
৫৪২৯। আবূ মুআইম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন, মুহরিম ব্যাক্তি যেন ওয়ারস ঘাসের কিংবা যাফরানের রং দ্বারা রঞ্জিত কাপড় না পরে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৩০ | 5430 | ۵٤۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৩৬৪. লাল কাপড়
৫৪৩০। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মধ্যম আকৃতির। আমি তাকে লাল হুল্লা পরিহিত অবস্থায় দেখেছি। তাঁর চেয়ে অধিক সুন্দর আর কিছু আমি দেখিনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৩১ | 5431 | ۵٤۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৬৫. লাল ‘মীছারা’
৫৪৩১। কাবীসা (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাতটি বিষয়ের নির্দেশ দিয়েছেনঃ রোগীর সেবা, জানাযার অংশ গ্রহণ এবং হাঁচিদাতার জবাব দান। আর তিনি আমাদের নিষেধ করেছেনঃ রেশমী কাপড়, মিহিন রেশমী কাপড়, রেশম মিশ্রিত কাতান কাপড়, মোটা রেশমী কাপড় এবং লাল মীসারা কাপড় পরিধান করতে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৩২ | 5432 | ۵٤۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৬৬. পশমহীন চামড়ার জুতা ও অন্যান্য জুতা
৫৪৩২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ মাসলামা সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করেছি, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘না’লাইন’ (চপ্পল বা জুতা) পায়ে রেখে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেছেন কি? তিনি বলেছেনঃ হ্যাঁ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৩৩ | 5433 | ۵٤۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৬৬. পশমহীন চামড়ার জুতা ও অন্যান্য জুতা
৫৪৩৩। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … উবায়দ ইবনু জুরায়জ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) কে বলেনঃ আমি আপনাকে এমন চারটি কাজ করতে দেখেছি, যা আপনার সঙ্গীদের মধ্যে কাউকে করতে দেখিনি। তিনি বললেনঃ সেগুলো কি, হে ইবনু জুরায়জ? তিনি বললেনঃ আমি দেখেছি আপনি তাওয়াফ করার সময় (কাবার) রুকনগুলোর মধ্য হতে ইয়ামানী দুটি রুকন ছাড়া অন্য কোনটিকে স্পর্শ করেন না। আমি দেখেছি। আপনি পশম বিহীন চামড়ার জুতা পরিধান কলেন। আমি দেখেছি আপনি হলুদ বর্ণের কাপড় পরেন এবং যখন আপনি মক্কায় ছিলেন তখন দেখেছি, অন্য লোকেরা (যিলহজের) চাঁদ দেখেই ইহরাম বাধতো, আর আপনি তালবিয়ার দিন (অর্থাৎ আট তারিখ) না আসা পর্যন্ত ইহরাম বাধতেন না।

আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) তাকে বললেনঃ আরকান সম্পর্কে কথা এই যে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ইয়ামানী দুটি রুকন ব্যতীত অন্য কোনটিকে স্পর্শ করতে দেখনি। আর পশম বিহীন চামড়ার জুতার ব্যাপার হলো, আমি দেখেছি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনুরূপ জুতা পরতেন, যাতে কোন পশম থাকতো না এবং তিনি জুতা পরিহিত অবস্থায়ই উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতেন (অর্থাৎ পা ধুতেন)। তাই আমি অনুরূপ জুতা পরতেই পছন্দ করি। আর হলুদ রঙের কথা হলো, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ রং দিয়ে রঙ্গিন করতে দেখেছি। সুতরাং আমিও এর দ্বারাই রং করতে ভালবাসি। আর ইহরাম বাধার ব্যাপারে কথা এই যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার বাহনে হাজ্জের (হজ্জ) কাজ আরম্ভ করার জন্য উঠার আগে ইহরাম বাধতে দেখিনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৩৪ | 5434 | ۵٤۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৩৬৬. পশমহীন চামড়ার জুতা ও অন্যান্য জুতা
৫৪৩৪। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন যে ইহরাম বাধা ব্যাক্তি যেন যাফরান কিংবা ওয়ারস ঘাস দ্বারা রং করা কাপড় পরিধান না করে। তিনি বলেছেনঃ যে (মুহরিম) ব্যাক্তির জুতা নেই, সে যেন মোজা পরে এবং টাখনুর নীচ থেকে (মোজার উপরের অংশ) কেটে ফেলে (যাতে তা জুতার ন্যয় হয়ে যায়)।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৩৫ | 5435 | ۵٤۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৩৬৬. পশমহীন চামড়ার জুতা ও অন্যান্য জুতা
৫৪৩৫। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে (মুহরিম) লোকের ইযার নেই। সে যেন পায়জামা পরে, আর যার জুতা নেই সে যেন মোজা পরিধান করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৩৬ | 5436 | ۵٤۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৩৬৭. ডান দিক থেকে জুতা পরা আরম্ভ করা
৫৪৩৬। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্রতা অর্জন করতে, মাথা আঁচড়াতে ও জুতা পায়ে দিতে ডান দিক থেকে আরম্ভ করা পছন্দ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৩৭ | 5437 | ۵٤۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৬৮. বাঁ পায়ের জুতা খোলা হবে
৫৪৩৭। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ জুতা পরিধান করে তখন সে যেন ডান দিক থেকে আরম্ভ করে, আর যখন খোলে, তখন সে যেন বাম দিক থেকে আরম্ভ করে, যাতে পরার বেলায় উভয় পায়ের মধ্যে ডান পা প্রথমে হয় এবং খোলার সময় শেষে হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৩৮ | 5438 | ۵٤۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৬৯. এক পায়ে জুতা পরে হাঁটবে না
৫৪৩৮। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ এক পায়ে জুতা পরে যেন না হাঁটে। হয় উভয় পা সম্পূর্ণ খোলা রাখবে অথবা উভয় পায়ে পরিধান করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৩৯ | 5439 | ۵٤۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৭০. এক চপ্পলে দু’ ফিতা লাগান, কারও মতে এক ফিতা লাগানও বৈধ
৫৪৩৯। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চপ্পলে দুটি করে ফিতা ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৪০ | 5440 | ۵٤٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৩৭০. এক চপ্পলে দু’ ফিতা লাগান, কারও মতে এক ফিতা লাগানও বৈধ
৫৪৪০। মুহাম্মাদ (রহঃ) … ঈসা ইবনু তাহমান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার আনাস ইবনু মলিক (রাঃ) এমন দুটি চপ্পল আমাদের কাছে আনলেন যার দুটি করে ফিতা ছিল। তখন সাবিত বুনানী বললেনঃ এটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চপ্পল ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৪১ | 5441 | ۵٤٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৭১. লাল চামড়ার তাঁবু
৫৪৪১। মুহাম্মদ ইবনু আর’আরা (রহঃ) … আওনের পিতা (ওহর ইবনু আবদুল্লাহ) (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলাম। তখন তিনি একটি লাল চামড়ার তাঁবুতে ছিলেন। আর বিলালকে দেখলাম তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি উঠিয়ে দিচ্ছেন এবং লোকজন উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি নেয়ার জন্য ছুটাছুটি করছে। যে ওখান থেকে কিছু পায়, সে তা মুখে মেখে নেয়। আর যে সেখান থেকে কিছু পায় না, সে তার সাথীর ভিজা হাত থেকে কিছু নিয়ে নেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৪২ | 5442 | ۵٤٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৭১. লাল চামড়ার তাঁবু
৫৪৪২। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আনসারদের কাছে সংবাদ পাঠান এবং তাদের (লাল) চামড়ার একটি তাবুতে সমবেত করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৪৩ | 5443 | ۵٤٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৭২. চাটাই বা অনুরূপ কোন জিনিসের উপর বসা
৫৪৪৩। মুহাম্মদ ইবনু আবূ বকর (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাত্রিবেলা চাটাই দ্বারা ঘেরাও দিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। আর দিনের বেলা তা বিছিয়ে তার উপর বসতেন। লোকজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে সমবেত হবে তার সঙ্গে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগল। এমন কি বহু লোক সমবেত হল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ হে লোক সকল! তোমরা আমল করতে থাক তোমাদের সামর্থ অনুযায়ী। কারন, আল্লাহ তাআলা ক্লান্ত হন না, অবশেষে তোমরাই ক্লান্ত হয়ে পড়বে। আর আল্লাহর নিকট ঐ আমল সবচেয়ে প্রিয়, যা সর্বদা করা হয় যদিও তা কম হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৪৪ | 5444 | ۵٤٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৩৭৪. স্বর্ণের আংটি
২৩৭৩. পরিচ্ছেদঃ স্বর্ণখচিত গুটি। লায়স (রহঃ) বলেনঃ ইবনু আবূ মূলায়কা ….. মিসওয়ার ইবনু মাখরামা (রাঃ) থেকে আমাকে বর্ণনা করেছেন যে, তার পিতা মাখরামা (একদা) তাকে বললেনঃ হে প্রিয় বৎস! আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামএর নিকট কিছু কাবা এসেছে। তিনি সেগুলোবণ্টন করছেন। চলো আমরা তাঁর কাছে যাই। আমরা গেলাম এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তাঁর বাসগৃহে পেলাম। আমাকে (আমার পিতা) বললেনঃ বৎস! নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমার কাছে ডাক। আমার নিকট কাচজট অতি কঠিন বলে মনে হল। আমি বললামঃ আপনার কাছে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ডাকবো? তিনি বললেনঃ বৎস, তিনি তো কঠোর প্রকৃতির লোক নন। যা হোক আমি তাঁকে ডাকলাম। তিনি বেরিয়ে এলেন। তাঁর গায়ে তখন স্বর্ণের বোতাম লাগান মিহিন রেশমী কাপড়ের কাবা ছিল। তিনি বললেনঃ হে মাখরামা! এটা আমি তোমার জন্য সংরক্ষিত রেখেছিলাম। এরপর তিনি এটা তাকে দিয়ে দিলেন।

৫৪৪৪। আদম (রহঃ) … বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাতটি জিনিস থেকে নিষেধ করেছেনঃ স্বর্ণের আংটি বা তিনি বলেছেন, স্বর্নের বলয়, মিহি রেশম, মোটা রেশম ও রেশম মিশ্রিত কাপড়, রেশম এর তৈরী লাল রঙের পালান বা হাওদা, রেশম মিশ্রিত কিসসী কাপড় ও রূপার পাত্র। আর তিনি আমাদের সাতটি কাজের আদেশ করেছেনঃ রোগীর শুশ্রুষা, জানাযার পেছনে চলা, হাঁচির উত্তর দেওয়া, সালামের জবাব দেওয়া, দাওয়াত গ্রহন করা, কসমকারীর কসম পূরনে সাহায্য করা এবং মাযলূম ব্যাক্তির সাহায্য করা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৪৫ | 5445 | ۵٤٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৩৭৪. স্বর্ণের আংটি
৫৪৪৫। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি স্বর্নের আংটি ব্যবহার করতে নিনেধ করেছেন। আমর (রহঃ) বাশীর (রহঃ) কে অনুরূপ বর্ণনা করতে শুনেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৪৬ | 5446 | ۵٤٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৩৭৪. স্বর্ণের আংটি
৫৪৪৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বর্ণের একটি আংটি ব্যবহার করেন। আংটির মোহর হাতের তাবুর দিকে ফিরিয়ে রাখেন। লোকেরা অনুরূপ (আংটি) ব্যবহার করা আরম্ভ করলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বর্ণের আংটিটি ফেলে দিয়ে চাঁদি বা রৌপ্যের আংটি বানিয়ে নিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৪৭ | 5447 | ۵٤٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৭৫. রূপার আংটি
৫৪৪৭। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বর্ণের একটি আংটি পরিধান করেন। আংটির মোহর হাতের তালুর ভিতরের দিকে ফিরিয়ে রাখেন। তাতে তিনি مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ খোদাই করেছিলেন। লোকেরাও অনুরুপ আংটি ব্যবহার করতে আরম্ভ করেন। যখন তিনি দেখলেন যে, তারাও অনুরূপ আংটি ব্যবহার করছে, তখন তিনি তা ছুড়ে ফেলেন এবং কখনও এ ব্যবহার করব না। এরপর একটি রূপার আংটি ব্যবহার করেন। লোকেরাও রূপার আংটি ব্যবহার আরম্ভ করে। ইবনু উমর (রাঃ) বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরে আবূ বকর (রাঃ), তারপর উমর (রাঃ) ও তারপর উসমান (রাঃ) তা ব্যবহার করেছেন। শেষে উসমান (রাঃ) এর (হাত) থেকে আংটিটি ‘আরীস’ নামক কূপের মধ্যে পড়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৪৮ | 5448 | ۵٤٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৭৬. পরিচ্ছেদ নাই
৫৪৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বর্ণের একটি আংটি ব্যবহার করতেন। এরপর তা ছেড়ে দেন এবং বলেনঃ আমি আর কখনও তা ব্যবহার করবো না। লোকেরাও তাদের আংটি খুলে ফেলে দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৪৯ | 5449 | ۵٤٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৭৬. পরিচ্ছেদ নাই
৫৪৪৯। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে রূপার একটি আংটি দেখেলেন। তারপর লোকেরাও রূপার আংটি তৈরি করে এবং ব্যবাহার করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরে তার আংটি পরিহার করেন। লোকেরাও তাদের আংটি পরিহার করে। যুহরীর সূত্রে ইবরাহীম ইবনু সা’দ, বিয়াদ ও শুয়াইব (রহঃ)ও অনুরূপ বর্ননা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৫০ | 5450 | ۵٤۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৩৭৭. আংটির মোহর
৫৪৫০। আবদান (রহঃ) … হুমায়দ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস (রাঃ) এর নিকট জিজ্ঞাসা করা হয় যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আংটি পরেছেন কি না? তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক রাতে এশার সালাত (নামায/নামাজ) আদায়ে অর্ধরাত পর্যন্ত দেরী করেন। এরপর তিনি আমাদের মাঝে আসেন। আমি যেন তার আংটির চমক দেখতে পেলাম। তিনি বললেন লোকজন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে শুয়ে পড়েছে। আর যতক্ষন থেকে তোমরা সালাত (নামায/নামাজ) এর অপেক্ষায় রয়েছ, ততক্ষন তোমরা সালাত (নামায/নামাজ) এর মধ্যেই রয়েছ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৫১ | 5451 | ۵٤۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৭৭. আংটির মোহর
৫৪৫১। ইসহাক (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আংটি ছিল রূপার। আর তার নাগিনাটিও ছিল রুপার। ইয়াহইয়া ইবনু আইউব, হুমায়দ, আনাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেও বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৫২ | 5452 | ۵٤۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৭৮. লোহার আংটি
৫৪৫২। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … সাহল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনৈক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললঃ আমি নিজেকে হিবা (দান-বিবাহ) করে দেওয়ার জন্য এসেছি। এ কথা বলে সে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকল। তিনি তাকালেন ও মাথা নীচু করে রাখলেন। মহিলাটির দাঁড়িয়ে থাকা যখন দীর্ঘায়িত হল, তখন এক ব্যাক্তি বললঃ আপনার যদি প্রয়োজন না থাকে, তবে একে আমার সাথে বিবাহ দিয়ে দিন। তিনি বললেনঃ তোমার কাছে মোহর দেওয়ার মত কিছু আছে কি? সে বললঃ না। তিনি বললেনঃ খুজে দেখ। সে চলে গেল। কিছু সময় পর ফিরে এসে বললঃ আল্লাহর কসম! আমি কিছুই পেলাম না। তিনি বললেনঃ আবার যাও এবং তালাশ করো, একটি লোহার আংটিও যদি হয় (নিয়ে এসো) সে চলে গেল। কিছুক্ষণ পর ফিরে এসে বললঃ কসম আল্লাহর! কিছুই পেলাম না, একটি লোহার আংটিও না।

তার পরিধানে ছিল একটি মাত্র লুঙ্গি, তার উপর চাঁদর ছিল না। সে আরয করলঃ আমি এ লুঙ্গিটি তাকে দান করে দেব। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার লুঙ্গি যদি সে পরে তবে তোমার পরনে কিছুই থাকে না। আর যদি তুমি পর, তবে তার গায়ে এর কিছু থাকে না। এরপর লোকটি একটু দূরে সরে গিয়ে বসে পড়ল। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেখলেন যে, সে পিঠ ফিরিয়ে চলে যাচ্ছে। তখন তিনি তাকে থাকার জন্য হুকুম দিলেন। তাকে ডেকে আনা হল। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমার কি কুরআনের কিছু মুখস্ত আছে? সে বললঃ অমুক অমুক সূরা। সে সূরাগুলোকে গননা করে শোনাল। তিনি বলেনঃ তোমার কাছে কুরআনের যা কিছু মুখস্ত আছে, তার বিনিময়ে মেয়ে লোকটিকে তোমার মালিকানায় দিয়ে দিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৫৩ | 5453 | ۵٤۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৭৯. আংটিতে নকশা করা
৫৪৫৩। আবদুল আলা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনারব একটি দলের কাছে বা কিছু লোকের কাছে পত্র লিখতে ইচ্ছা করেন। তখন তাকে জানোান হল যে, তারা এমন পত্র গ্রহণ করে না যার উপর মোহরাঙ্কিত না থাকে। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুপার একটি আংটি তৈরী করেন। তাতে অংকিত ছিল مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ (বর্ণনাকারী আনাস (রাঃ) বলেন) আমি যেন (এখনও) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আঙ্গুলে বা তার হাতে সে আংটির উজ্জ্বলতা দেখতে পাচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৫৪ | 5454 | ۵٤۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৩৭৯. আংটিতে নকশা করা
৫৪৫৪। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুপার একটি আংটি তৈরী করেন। সেটি তার হাতে ছিল। এরপর তা আবূ বকর (রাঃ) এর হাতে আসে। পরে তা উমর (রাঃ) এর হাতে আসে। এরপর তা উসমান (রাঃ) এর হাতে আসে। শেষকালে তা আরীস নামক এক কূপের মধ্যে পড়ে যায়। তাতে অংকিত ছিল ‘مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ‏ ’।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৫৫ | 5455 | ۵٤۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৩৮০. কনিষ্ট আঙ্গুলে আংটি পরা
৫৪৫৫। আবূ মা’মার (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি আংটি তৈরী করেন। তারপর তিনি বলেনঃ আমি একটি আংটি তৈরী করেছি এবং তাতে একটি নকশা করেছি। সুতরাং কেউ যেন নিজের আংটিতে নকশা না করে। তিনি (আনাস) বলেনঃ আমি যেন তাঁর কনিষ্ঠ আংগুলে আংটিটির দ্যূতি (এখনও) দেখতে পাচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৫৬ | 5456 | ۵٤۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৩৮১. কোন কিছুর উপর সীলমোহর দেওয়ার জন্য অথবা আহলে কিতাব বা অন্য কারো নিকট পত্র লেখার জন্যে আংটি তৈরি করা
৫৪৫৬। আদম ইবনু আবূ ইয়াস (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রোম সম্রাটেরর নিকট পত্র লিখতে মনস্থ করেন, তখন তাঁকে বলা হল, আপনার পত্র যদি মোহরাংকিত না হয়, তবে তারা তা পড়বে না। এরপর তিনি রুপার একটি আংটি বানান এবং তাতে مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ খোদাই করা ছিল। (আনাস (রাঃ) বলেন) আমি যেন (এখনও) তার হাতে সে আংটির শুভ্রতা প্রত্যক্ষ করছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৫৭ | 5457 | ۵٤۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৮২. যে লোক আংটির নাগিনা হাতের তালুর দিকে রাখে
৫৪৫৭। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বর্ণের একটি আংটি তৈরি করেন। যখন তিনি তা পরতেন তখন তার নাগিনা হাতের তালুর দিকে রাখতেন। (তার দেখাদেখি) লোকেরাও স্বর্নের আংটি তৈরি আরম্ভ করে। এরপর তিনি মিম্বরে আরোহণ করেন। আল্লাহর প্রশংসা ও গুণাবলী প্রকাশ করার পর বলেনঃ আমি এ আংটি তৈরি করেছিলাম। কিন্তু তা আর পরব না। এরপর তিনি তা ছুড়ে ফেলেন। লোকেরাও (তাদের আংটি) ছুড়ে ফেলল। জুওয়ায়রিয়া (রহঃ) বলেনঃ আমার ধারনা যে, বর্ণনাকারী (নাফি) এ কথাও বলেছেন যে আংটিটি তার ডান হাতে ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৫৮ | 5458 | ۵٤۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৮৩. নবী (সাঃ) এর বাণীঃ তার আংটির নকশার ন্যায় কেউ নকশা বানাতে পারবে না
৫৪৫৮। মউসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রুপার একটি আংটি তৈরী করেন। তাতে مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ‏ এর নকশা খোদাই করেন। এরপর তিনি বলেনঃ আমি একটি রুপার আংটি বানিয়েছি এবং তাতে مُحَمَّدٌ رَسُولُ اللَّهِ‏ এর নকশা খোদাই করেছি। সুতরাং কেউ সেন তার আংটিতে এ নকশা খোদাই না করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৫৯ | 5459 | ۵٤۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৮৪. আংটির নক্‌শা কি তিন লাইনে করা যায়?
৫৪৫৯। মুহাম্মদ ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবূ বকর (রাঃ) যখন খলীফা নির্বাচিত হন, তখন তিনি তার (আনাস) (রাঃ) কাছে (যাকাতের পরিমাণ সম্পর্কে) একটি পত্র লেখেন। আংটিটির নকশা তিন লাইনে ছিল। এক লাইনে ছিল مُحَمَّدٌ এক লাইনে ছিল, رَسُول আর এক লাইনে ছিল اللَّه

আবূ আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) বলেনঃ আহমাদের সূত্রে আনাস (রাঃ) থেকে এ কথা অতিরিক্ত বর্ণিত আছে। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আংটি (তার জীবদ্দশায়) তার হাতেই ছিল। তার (ইন্তেকালের) পরে তা আবূ বকর (রাঃ) এর হাতে থাকে। আবূ বকর (রাঃ) এর (ইন্তেকালের) পরে তা উমার (রাঃ) এর হাতে থাকে। যখন উসমান (রাঃ) এর আমল এল, তখন (একদিন) তিনি ঐ আংটি হাতে নিয়ে আরীস নামক কুপের উপর বসেন। আংটিটি বের করে নাড়চাড়া করছিলেন। হঠাৎ তা (কুপের মধ্যে) পড়ে যায়। আনাস (রাঃ) বলেন, আমরা তিন দিন যাবত উসমানের (রাঃ) সাথে অনুসন্ধান চালালাম কূপের পানি ফেলে দেয়া হল কিন্তু আংটি আর আমরা পেলাম না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৬০ | 5460 | ۵٤٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৩৮৫. মহিলাদের আংটি পরিধান করা। ‘আয়িশাহ্‌ (রাঃ) এর স্বর্ণের কয়েকটি আংটি ছিল ।
৫৪৬০। আবূ আসিম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে এক ঈদে উপস্থিত ছিলাম। তিনি খুতবার আগেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। আবূ আবদুল্লাহ (ইমাম বুখারী) বলেনঃ ইবনু ওহাব, ইবনু জুরায়জ থেকে এতটুকু বেশী বর্ণনা করেছেন যে, এরপর তিনি মহিলাদের কাছে আসেন। তারা (সাদকা হিসেবে) বিলাল (রাঃ) এর কাপড়ে মালা ও আংটি ফেলতে লাগল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৬১ | 5461 | ۵٤٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৮৬. মহিলাদের হার পরিধান করা, সুগন্ধি ও ফুলের মালা পরা
৫৪৬১। মুহাম্মদ ইবন আর’আর (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ঈদের দিনে বের হন এবং (ঈদের) দু’ রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। তার আগে এবং পরে আর কোন নফজ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেননি। তারপর তিনি মহিলাদের কাছে আসেন এবং তাদের সাদকা করার জন্য আদেশ দেন। মহিলারা তাদের হার ও মালা সাদকা করতে থাকল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৬২ | 5462 | ۵٤٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৮৭. হার ধার নেওয়া
৫৪৬২। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একবার কোন এক সফরে) আসমার একটি হার (আমার নিকট থেকে) হারিয়ে যায়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কয়েকজন পুরুষ লোককে তার সন্ধানে পাঠান। এমন সময় সালাত (নামায/নামাজ) এর সময় উপস্থিত হল। তাদের কারও উযূ (ওজু/অজু/অযু) ছিল না এবং তারা পানিও পেল না। সুতরাং বিনা উযূ (ওজু/অজু/অযু)তেই তাঁরা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নিলেন। (ফিরে এসে) তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এ বিষয়টির উল্লেখ করলেন। তখন আল্লাহ তা’আলা তাইয়াম্মুমের আয়াত নাযিল করেন। ইবনু নুমায়র হিশামের সূত্রে এ কথা অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, ঐ হার আয়িশা (রাঃ) আসমা (রাঃ) থেকে হাওলাত (ধার) নিয়েছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৬৩ | 5463 | ۵٤٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৮৮. মহিলাদের কানের দুল। ইব্‌ন ‘আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) (একবার) মহিলাদের সদাকাহ করার নির্দেশ দেন। তখন আমি দেখলাম, তারা তাদের নিজ নিজ কান ও গলার দিকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
৫৪৬৩। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একবার) ঈদের দিনে দু’ রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। না এর আগে তিনি কোন সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন না এর পরে। তারপরে তিনি মহিলাদের কাছে আসেন, তখন তাঁর সাথে ছিলেন বিলাল (রাঃ) তিনি মহিলাদের সাদকা করার নির্দেশ দেন। তারা নিজেদের কানের দুল ছুড়ে ফেলতে লাগল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৬৪ | 5464 | ۵٤٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৩৮৯. শিশুদের মালা পরানো
৫৪৬৪। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম হানযালী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে মদিনার কোন এক বাজারে ছিলাম। তিনি (বাজার থেকে) ফিরে আসলেন। আমিও ফিরে আসলাম। তিনি বললেনঃ ছোট শিশুটি কেথায়? এ কথা তিনবার বললেন। হাসান ইবনু আলীকে ডাক। দেখা গেল হাসান ইবনু আলী হেঁটে চলছে। তার গলায় ছিল মালা। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ ভাবে তার হাত উত্তোলন করলেন। হাসানও এভারে নিজের হাত উত্তোলন করলেন। তারপর তিনি তাকে জড়িয়ে ধরলেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহ আমি একে ভালবাসি, আপনিও তাকে ভালবাসুন এবং যে ব্যাক্তি তাকে ভালবাসে, তাকেও আপনি ভালসাসুন। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একথা বলার পর থেকে হাসান ইবনু আলীর চেয়ে কেউ আমার কাছে অধিক প্রিয় হয়নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৬৫ | 5465 | ۵٤٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৩৯০. পুরুষের নারীর বেশ ধারণ করা এবং নারীর পুরুষের বেশ ধারণ করা
৫৪৬৫। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঐ সব পুরুষকে লা’নত করেছেন। যারা নারীর বেশ ধারণ করে এবং ঐসব নারীকে যারা পুরুষের বেশ ধারণ করে।

পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৬৬ | 5466 | ۵٤٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৩৯১. নারীর বেশধারী পুরুষদের ঘর থেকে বের করে দেওয়া
৫৪৬৬। মু’আয ইবনু ফাযালা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুরুষ হিজড়াদের উপর এবং পুরুষের বেশ ধারণকারী মহিলাদের উপর লা’নত করেছেন। তিনি বলেছেনঃ ওদেরকে ঘর থেকে বের করে দাও। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অমুককে বের করেছেন এবং উমর (রাঃ) অমুককে বের করে দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৬৭ | 5467 | ۵٤٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৯১. নারীর বেশধারী পুরুষদের ঘর থেকে বের করে দেওয়া
৫৪৬৭। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা তার ঘরে ছিলেন। তখন ঐ ঘরে একজন হিজড়া ছিল। সে উম্মে সালামার ভাই আবদুল্লাহকে বলল হে আবদুল্লাহ! আগামী কাল তায়েফের উপর যদি তোমাদের জন্মলাভ হয় তবে আমি তোমাকে বিনত গায়লানকে দেখাবো। সে যখন সামনের দিকে আসো তখন (তার পেটে) চার ভাজ দৃষ্ট হয়। আর যখন সে পিছনের দিকে যায়, তখন (তার পিঠে) আট ভাজ দৃষ্ট হয়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ওরা যেন তোমাদের নিকট কখনও না আসে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৬৮ | 5468 | ۵٤٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৯২. গোঁফ ছাটা। ইব্‌নু ‘উমার (র) গোঁফ এতো ছোট করতেন যে, চামড়ার শুভ্রতা দেখা যেত এবং তিনি গোঁফ ও দাঁড়ির মাঝের পশম কেটে ফেলতেন।
৫৪৬৮। মাক্‌কী ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেছেনঃ গোঁফ কেটে ফেলা ফিতরাত (স্বভাবের) অন্তর্ভুক্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৬৯ | 5469 | ۵٤٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৯২. গোঁফ ছাটা। ইব্‌নু ‘উমার (র) গোঁফ এতো ছোট করতেন যে, চামড়ার শুভ্রতা দেখা যেত এবং তিনি গোঁফ ও দাঁড়ির মাঝের পশম কেটে ফেলতেন।
৫৪৬৯। আলী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন ফিতরাত (অর্থাৎ মানূষের সৃষ্টিগত স্বভাব) পাঁচটিঃ খাতনা করা, ক্ষুর ব্যবহার করা (নাভির নীচে), বোগলের পশম উপড়ে ফেলা, নখ কাটা ও গোঁফ ছোট করা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৭০ | 5470 | ۵٤۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৩. নখ কাটা
৫৪৭০। আহমাদ ইবনু আবূ রাজা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নাভির নীচের পশম কামানো, নখ কাটা ও গোঁফ ছোট করা মানুষের ফিতরাত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৭১ | 5471 | ۵٤۷۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৩. নখ কাটা
৫৪৭১। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি ফিতরাত পাঁচটিঃ খাতনা করা, (নাভির নীচে) ক্ষুর ব্যবহার করা, গোঁফ ছোট করা, নখ কাটা ও বোগলের পশম উপড়ে ফেলা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৭২ | 5472 | ۵٤۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৩. নখ কাটা
৫৪৭২। মুহাম্মদ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, তোমরা মুশরিকদের বিপরীত করবেঃ দাঁড়ি লম্বা রাখবে, গোঁফ ছোট করবে। ইবনু উমর (রাঃ) যখন হাজ্জে (হজ্জ) বা উমরা করতেন, তখন তিনি তার দাঁড়ি খাট করে ধরতেন এবং মুটের বাইরে যতটুকু অতিরিক্ত থাকত তা কেটে ফেলতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৭৩ | 5473 | ۵٤۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৪. দাঁড়ি বড় রাখা
৫৪৭৩। মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা গোঁফ বেশী ছোট করবে এবং দাঁড়ি বড় রাখবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৭৪ | 5474 | ۵٤۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৫. বার্ধক্যকালে (খিযাব লাগান সম্পর্কে) বর্ণনা
৫৪৭৪। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … মুহাম্মদ ইবনু সীরীন (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি খিযাব লাগিয়েছেন? তিনি বললেনঃ বার্ধক্য তাকে অতি সামান্যই পেয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৭৫ | 5475 | ۵٤۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৫. বার্ধক্যকালে (খিযাব লাগান সম্পর্কে) বর্ণনা
৫৪৭৫। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আনাস (রাঃ) কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিযাব লাগান সম্পর্কে জিজাসা করা হল। তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খিযাব লাগাবার অবস্থা পর্যন্ত পৌছেননি। আমি যদি তার সাদা দাঁড়িগুলো গুণতে চাইতাম, তবে সহজেই গুণতে পারতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৭৬ | 5476 | ۵٤۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৫. বার্ধক্যকালে (খিযাব লাগান সম্পর্কে) বর্ণনা
৫৪৭৬। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাওহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমাকে আমার পরিবারের লোকেরা এক পেয়ালা পানি সহ উম্মে সালামার কাছে পাঠাল। (উম্মে সালামার কাছে রক্ষিত) একটি রূপার (পানি ভর্তি) পাত্র থেকে (আনাসের পুত্র) ইসরাঈল তিনটি আঙ্গুল দিয়ে কিছু পানি তুলে নিল। ঐ পাত্রের মধ্যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কয়েকটি মুবারক চুল ছিল। কোন লোকের যদি চোখ লাগতো কিংবা অন্য কোন রোগ দেখা দিত তবে উম্মে সালামার কাছ থেকে পানি আনার জন্য একটি পাত্র পাঠিয়ে দিত। আমি সে পাত্রের মধ্যে একবার লক্ষ্য করলাম, দেখলাম লাল রং এর কয়েকটি চুল আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৭৭ | 5477 | ۵٤۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৫. বার্ধক্যকালে (খিযাব লাগান সম্পর্কে) বর্ণনা
৫৪৭৭। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাওহাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, (একবার) আমি উম্মে সালামার (রাঃ) নিকট গেলাম। তখন তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কয়েকটি চুল বের করলেন, যাতে খিযাব লাগান ছিল।

আবূ নু’আইম … ইবনু মাওহাবের সুত্রে বর্ননা করেছেন যে, উম্মে সালামা (রাঃ) তাকে (ইবনু মাওহাব) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর লাল রং এর চুল দেখিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৭৮ | 5478 | ۵٤۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৬. খিযাব
৫৪৭৮। হুমায়দী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইয়াহুদ ও নাসারারা (চুল ও দাঁড়িতে) রং লাগায় না। সুতরাং তোমরা তাদের বিপরীত করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৭৯ | 5479 | ۵٤۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৭. কোঁকড়ানো চুল
৫৪৭৯। ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অতিরিক্ত লম্বা ছিলেন না খাটও ছিলেন না। ধবধবে সাদা ছিলেন না, আর না ফ্যাকাশে সাদা ছিলেন। চুল অতিশয় কোঁকড়ানও ছিল না, আর সম্পূর্ণ সোজাও ছিল না। চল্লিশ বছর বয়সে আল্লাহ তাকে নবুয়াত দান করেন। এরপর মক্কায় দশ বছর এবং মদিনায় দশ বছর অবস্থান করেন। ষাট বছর বয়সে আল্লাহ তাকে মৃত্যু দান করেন। এ সময় তার মাথায় ও দাঁড়িতে বিশটি চুলও সাদা হয়নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৮০ | 5480 | ۵٤۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৭. কোঁকড়ানো চুল
৫৪৮০। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লাল জোড়া কাপড় পরিহিত অবস্থায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অন্য কাউকে আমি অধিক সুন্দর দেখিনি। (ইমাম বুখারী বলেন) আমার জনৈক সংগী মালিক থেকে বর্ণনা করেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাথার চুল তার কাঁধ পর্যন্ত পৌছতো। আবূ ইসহাক (রহঃ) বলেনঃ আমি বারা (রাঃ) কে একাধিকরার এ হাদীস বর্ননা করতে শুনেছি। যখনই তিনি এ হাদীস বর্ণনা করতেন, তখনই হেসে দিতেন। শুবা বলেছেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চুল তার উভয় কানের লতি পর্যন্ত পৌছতো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৮১ | 5481 | ۵٤۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৭. কোঁকড়ানো চুল
৫৪৮১। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমি এক রাতে স্বপ্নে কাবা ঘরের নিকট একজন গেরুয়া বর্নের পুরুষ লোক দেখতে পেলাম। এমন সুন্দর গেরুয়া লোক তুমি কখনও দেখনি। তার মাথার চুল ছিল কাঁধ পর্যন্ত। কাঁধ পর্যন্ত লম্বা এমন সুন্দর চুল তুমি কখনও দেখনি। লোকটি চুল আচড়িয়েছে, আর তা থেকে ফোটা ফোটা পানি পড়ছে। সে দু’জন লোকের উপর ভর করে কিম্বা দু’জন লোকের কাঁধের উপর ভর করে কাবা ঘর তাওয়াফ করছেন। আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ এ লোকটি কে? জবাব দেওয়া হলো তিনি মরিয়মের পুত্র (ঈসা) মাসীহ! আর দেখলাম অন্য একজন লোক, যার চুল ছিল অতিশয় কোকড়ান, ডান চোখ টেরা, যেন তা একটি ফুলে উঠা আঙ্গুর। আমি জিজ্ঞাসা করলাম এ লোকটি কে? বলা হলোঃ ইনি মাসীহ দাজ্জাল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৮২ | 5482 | ۵٤۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৭. কোঁকড়ানো চুল
৫৪৮২। ইসহাক (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাথার চুল (কখনও কখনও) কাঁধ পর্যন্ত লম্বা হত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৮৩ | 5483 | ۵٤۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৭. কোঁকড়ানো চুল
৫৪৮৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চুল (কোন কোন সময়) কাঁধ পর্যন্ত দীর্ঘ হতো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৮৪ | 5484 | ۵٤۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৭. কোঁকড়ানো চুল
৫৪৮৪। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চুল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চুল মধ্যম ধরনের ছিল না একেবারে সোজা লম্বা, না অতি কোঁকড়ান। আর তা ছিল দু’কান ও দু-কাঁধের মধ্যবর্তী স্থান পর্যন্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৮৫ | 5485 | ۵٤۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৭. কোঁকড়ানো চুল
৫৪৮৫। মুসলিম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুবারক হাত গোশতে পরিপূর্ণ ছিল। তার পরে আর কাউকে অমন এমন দেখিনি। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চুল ছিল মধ্যম ধরনের বেশী কৌকড়ানোও না আর বেশী সোজাও না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৮৬ | 5486 | ۵٤۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৭. কোঁকড়ানো চুল
৫৪৮৬। আবূ নু’মান (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু’ হাত ও দু’ পা ছিল গোশতবহুল। চেহারা ছিল সুন্দর। তাঁর আগে ও তার পরে আমি তার মত অপর (কাউকে এত অধিক সুন্দর) দেখিনি। তার হাতের তালু ছিল চওড়া।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৮৭ | 5487 | ۵٤۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৭. কোঁকড়ানো চুল
৫৪৮৭। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) ও আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু’ পা ছিল গোশতবহুল। চেহারা ছিল সুন্দর। আমি তার পরে তার ন্যায় (কাউকে এমন সুন্দর) দেখিনি।

হিশাম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দু’ পা ও হাতের দু’ কবজা গোশতে পরিপূর্ণ ছিল।

আবূ হিলাল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) অথবা জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর, দু টি কব্জা ও দুটি পা গোশতপূর্ণ ছিল। আমি তার পরে তার ন্যায় (কাউকে এত অধিক সুন্দর) দেখিনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৮৮ | 5488 | ۵٤۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৭. কোঁকড়ানো চুল
৫৪৮৮। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … মুজাহিদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা একদা ইবনু আব্বাসের নিকট ছিলাম। তখন লোকজন দাজ্জালের কথা আলোচনা করন। একজন বললঃ তার দু’চোখের মাঝখানে লেখা থাকবে ‘কাফির’ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বললেনঃ আমি এমন কথা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনিনি। তবে তিনি বলেছেনঃ তোমরা যদি ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) কে দেখতে চাও, তা হলে তোমাদের সঙ্গী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিকে তাকাও। আর মূসা (আলাইহিস সালাম) হচ্ছেন শ্যাম বর্ণের লোক, কোঁকড়ান চুল বিশিষ্ট, নাকে লাগাম পরান লাল উটে আরোহণকারী। আমি যেন তাঁকে দেখতে পাচ্ছি যে, তিনি তালবিয়া (লাব্বায়কা) পাঠরত অবস্থায় (মক্কা) উপত্যকায় অবতরণ করছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৮৯ | 5489 | ۵٤۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৮. মাথার চুল জট করা
৫৪৮৯। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি উমার (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে ব্যাক্তি চুল জট করে, সে যেন তা মুড়ে ফেলে। আর তোমরা মাথার চুল জটকারীদের ন্যায় জট করো না। ইবনু উমর (রাঃ) বলতেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে চুল জট করা অবস্থায় দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৯০ | 5490 | ۵٤۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৮. মাথার চুল জট করা
৫৪৯০। হিব্বান ইবনু মূসা ও আহমাদ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে চুল জট করা অবস্থায় ইহরামকালে উচ্চরন তালবিয়া পাঠ করতে শুনেছি। তিনি বলেছেনঃ লাব্বাইকা আমি হাযির, হে আল্লাহ! আমি হাজির, আমি হাজির, আপনার কোন শরীক নেই। আমি হাযির, নিশ্চয়ই প্রশংসা এবং অনুগ্রহ কেবল আপনারই, আর রাজত্বও। এতে আপনার কোন শরীক নেই। এ শব্দগুলো থেকে বাড়িয়ে তিনি অতিরিক্ত কিছু বলেন নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৯১ | 5491 | ۵٤۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৮. মাথার চুল জট করা
৫৪৯১। ইসমাঈল (রহঃ) … হাফসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ হে আল্লাহর রাসূল! লোকজনের কি হল, তারা তাদের উমরার ইহরাম খুলে ফেলেছে অথচ আপনি এখনও আপনার ইহরাম খুলেন নি। তিনি বললেনঃ আমি আমার মাথার চুল জড়ো করে রেখেছি এবং আমার হাদী (কুরবানীর পশু) কে কিলাদা পরিয়েছি। তাই তা যবেহ করার পূর্বে আমি ইহরাম খুলবো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৯২ | 5492 | ۵٤۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৯. মাথার চুল মাথার মাঝখানে দুইভাগে বিভক্ত করা
৫৪৯২। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সব ব্যাপারে আহলে কিতারের সামঞ্জস্য রক্ষা করে চলা পছন্দ করতেন, যে সব ব্যাপারে তাকে (কুরআনে) কোন সুস্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়নি। আর আহলে কিতাবরা তাদের চুল ঝুলিয়ে রাখতো এবং মুশরিকরা তাদের মাথার চুল সিথি কেটে রাখতো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চুল ঝুলিয়েও রাখতেন এবং সিথিও কাটতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৯৩ | 5493 | ۵٤۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৩৯৯. মাথার চুল মাথার মাঝখানে দুইভাগে বিভক্ত করা
৫৪৯৩। আবূল ওয়ালীদ ও ঊবায়দুল্লাহ ইবনু রাজা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইহরাম অবস্থায় সিথিতে যে খুশবু লাগাতেন, আমি যেন তার চমক এখনও দেখতে পাচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৯৪ | 5494 | ۵٤۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৪০০. চুলের ঝুটি
৫৪৯৪। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার আমি আমার খালা মায়মুনা বিনত হারিসের নিকট রাত যাপন করছিলাম। ঐ রাতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কাছে ছিলেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে রাতের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগলেন। আমি তার বাম পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন তিনি আমার চুলের ঝুটি ধরে আমাকে তার ডান পাশে নিয়ে দাঁড় করালেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৯৫ | 5495 | ۵٤۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৪০০. চুলের ঝুটি
৫৪৯৫। আমর ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ বিশর (রহঃ) থেকে بِذُؤَابَتِي অথবা بِرَأْسِي বলে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৯৬ | 5496 | ۵٤۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৪০১. ‘কাযা’ অর্থাৎ মাথার কিছু চুল মুড়ে ফেলা ও কিছু অংশে চুল রেখে দেয়া
৫৪৯৬। মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কাযা থেকে নিষেধ করতে শুনেছি। রাবী উবায়দুল্লাহ বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ ‘কাযা’ কি? তখন আবদুল্লাহ (রাঃ) আমাদের ইশারা দিয়ে দেখিয়ে বললেনঃ শিশুদের যখন চুল কামান হয় তখন এই, এই জায়গায় চুল রেখে দেওয়া। এ কথা বলার সময় উবায়দুল্লাহ তার কপাল ও মাথার দু’পাশ দেখালেন। পুনরায় জিজ্ঞাসা করা হলঃ বালক ও বালিকার কি একই হুকুম? তিনি বললেনঃ আমি জানি না। এভাবে তিনি বালকের কথা বলেছেন। উবায়দুল্লাহ বলেনঃ আমি এ কথা পুনরায় জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেনঃ পুরুষ শিশুর মাথার সামনের ও পিছনের দিকের চুল কামান দোষনীয় নয়। আর (অন্য এক ব্যাখ্যা মতে) ‘কাযা’ বলা হয়, কপালের উপরে কিছু চুল রেখে বাকী মাথার কোথাও চুল না রাখা। অনুরুপভাবে মাথার চুল একপাশ থেকে অথবা অপর পাশ থেকে কাটা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৯৭ | 5497 | ۵٤۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৪০১. ‘কাযা’ অর্থাৎ মাথার কিছু চুল মুড়ে ফেলা ও কিছু অংশে চুল রেখে দেয়া
৫৪৯৭। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘কাযা’ করতে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৯৮ | 5498 | ۵٤۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৪০২. স্ত্রী কর্তৃক নিজ হাতে স্বামীকে খুশবু লাগিয়ে দেওয়া
৫৪৯৮। আহমাদ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার মুহরিম অবস্থায় নিজ হাতে খোশবু লাগিয়ে দিয়েছি এবং মিনাতেও সেখান থেকে রওনা হওয়ার পূর্বে তাকে আমি খোশবু লাগিয়েছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৪৯৯ | 5499 | ۵٤۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৪০৩. মাথায় ও দাঁড়িতে খুশবু লাগানো
৫৪৯৯। ইসহাক ইবনু নাস্‌র (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যত উত্তম খোশবু পেতাম, তা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে লাগিয়ে দিতাম। এমনি কি সে খোশবুর চমক তার মাথায় ও দাঁড়িতে দেখতে পেতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫০০ | 5500 | ۵۵۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৪০৪. চিরুনি করা
৫৫০০। আদম ইবনু আবূ আয়াস (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একজন লোক একটি ছিদ্র পথ দিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঘরে উকি মারে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন চিরুনি দিয়ে মাথা আঁচড়াচ্ছিলেন। তিনি বললেনঃ আমি যদি বুঝতাম যে, তুমি ছিদ্র দিয়ে তাকিয়ে দেখছ, তা হলে এ (চিরুনি) দিয়ে আমি তোমার চোখ ঘায়েল করে দিতাম। দৃষ্টি থেকে বাঁচাবার জন্যই তো অনুমতি গ্রহনের বিধান রাখা হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫০১ | 5501 | ۵۵۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৪০৫. হায়েয অবস্থায় স্বামীর মাথা আঁচড়ে দেওয়া
৫৫০১। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি হায়েয অবস্থায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মাথা আঁচড়িয়ে দিয়েছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫০২ | 5502 | ۵۵۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৪০৬. চিরুনী দ্বারা মাথা আঁচড়ানো
৫৫০২। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চিরুনি দ্বারা মাথা আঁচড়াতে ও উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে যতদূর সম্ভব ডান দিক থেকে আরম্ভ করতে পছন্দ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫০৩ | 5503 | ۵۵۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৪০৭. মিস্‌কের বর্ণনা
৫৫০৩। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়বা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ বনী আদমের প্রতিটি কাজ তার নিজের জন্যই সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ব্যতীত তা আমার জন্য এবং আমি নিজেই তার পুরস্কার দেব। আর রোযাদারের মুখের ঘ্রাণ আল্লাহর নিকট মিশকের ঘ্রাণের চেয়ে অধিক সুগন্ধীযুক্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫০৪ | 5504 | ۵۵۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৪০৮. খুশবু লাগান মুস্তাহাব
৫৫০৪। মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি যে সব সুগন্ধি পেতাম, তার মধ্যে সবচাইতে উত্তম সুগন্ধিটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে তার ইহরাম অবস্থায় লাগিয়ে দিতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫০৫ | 5505 | ۵۵۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৪০৯. খুশবু প্রত্যাখান না করা
৫৫০৫। আবূ নু’আইম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে (কেউ তাকে খোশবু হাদিয়া দিলে) তিনি (সে) খোশবু ফিরিয়ে দিতেন না এবং বলতেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খোশবু প্রত্যাখ্যান করতেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫০৬ | 5506 | ۵۵۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৪১০. যারীরা নামক সুগন্ধি
৫৫০৬। উসমান ইবনু হায়সাম অথবা মুহাম্মদ ইবনু জুরায়জ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি বিদায় হাজ্জে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নিজ হাতে যারীরা নামক সুগন্ধি লাগিয়ে দিয়েছি, হালাল অবস্থায় এবং ইহরাম অবস্থায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫০৭ | 5507 | ۵۵۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৪১১. সৌন্দর্যের জন্য সামনের দাঁত কেটে সরু করা ও দাঁতের মধ্যে ফাঁক সৃষ্টি করা
৫৫০৭। উসমান (রহঃ) … আবদুল্লাহ (ইবনু মাসউদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর লানত বর্ষিত হোক সে সব নারীদের উপর যারা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে উল্কি উৎকীর্ন করে এবং যারা উৎকীর্ণ করায়, আর সে সব নারীদের উপর যারা চুল, ভ্রু উঠিয়ে ফেলে এবং সে সব নারীদের উপর যারা সৌন্দর্যের জন্য সামনের দাঁত কেটে সরু করে দাঁতের মাঝে ফাক সৃষ্টি করে, যা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন এনে দেয়। রাবী বলেনঃ আমি কেন তার উপর লানত করবো না, যাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন? আর আল্লাহর কিতাবে আছেঃ “এই রাসূল তোমাদের কাছে যে বিধান এনেছেন তা গ্রহণ করো।”

হাদিস নম্বরঃ ৫৫০৮ | 5508 | ۵۵۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৪১২. পরচুলা লাগানো
৫৫০৮। ইসমাঈল (রহঃ) … হুমায়দ ইবনু আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি হাজ্জ (হজ্জ) করার সময় মুআবিয়া ইবনু আবূ সুফিয়ান (রাঃ) কে মিম্বরে দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছেন। ঐ সময় তিনি জনৈক দেহরক্ষীর হস্তস্থিত এক গুচ্ছ চুল নিজ হাতে নিয়ে বলেনঃ তোমাদের আলিমগণ কোথায়? আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এরুপ করা থেকে নিষেধ করতে শুনেছি। তিনি বলতেনঃ বনী ইসরাঈল তখনই ধ্বংস হয়েছে। যখন তাদের নারীরা এরুপ করা শুরু করে।

ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) আবূ হুরায়রা (রাঃ) সূত্রে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। আল্লাহ তা’আলা লানত করেন সে সব নারীদেরকে যারা নিজেরা পরচুলা ব্যবহার করে এবং যারা অপরকে তা লাগিয়ে দেয়, যারা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে উল্কি উৎকীর্ণ করে এবং অন্যকে করিয়ে দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫০৯ | 5509 | ۵۵۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৪১২. পরচুলা লাগানো
৫৫০৯। আদম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক আনসারী মহিলা বিবাহ করে। এরপর সে রোগে আক্রান্ত হল। ফলে তার সব চুল ঝরে যায়। লোকজন তাকে পরচুলা লাগিয়ে দিতে ইচ্ছা করে। আর তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলো। তিনি বলেনঃ আল্লাহ লানত করেন ঐসব নারীকে যারা নিজেরা পরচুলা লাগায় এবং যারা অপরকে তা লাগিয়ে দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫১০ | 5510 | ۵۵۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৪১২. পরচুলা লাগানো
৫৫১০। আহমাদ ইবনু মিকদাম (রহঃ) … আসমা বিনত আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললঃ আমি আমার একটি মেয়েকে বিবাহ দিয়েছি। এরপর সে রোগাক্রান্ত হয়, এতে তার মাথার চুল ঝরে যায়। তার স্বামী এর কারণে আমাকে তিরস্কার করে। আমি কি তার মাথায় পরচুলা লাগিয়ে দিব? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে পরচুলা লাগায় এবং যে তা অন্যকে লাগিয়ে দেয়, তাদের নিন্দা করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫১১ | 5511 | ۵۵۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৪১২. পরচুলা লাগানো
৫৫১১। আদম (রহঃ) … আসমা বিনত আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যে মহিলা পরচুলা লাগায়, আর যে অপরকে পরচুলা লাগিয়ে দেয়, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের উপর লানত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫১২ | 5512 | ۵۵۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৪১২. পরচুলা লাগানো
৫৫১২। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ ঐ নারীর উপর অভিশাপ বর্ষণ করেন, যে পরচুলা লাগায়, আর অপরকে পরচুলা লাগিয়ে দেয়। আর যে নারী উল্কি উৎকীর্ণ করে এবং যে তা করায়। নাফি’ বলেনঃ উল্কি উৎকীর্ণ করা হয় (সাধারণত) উঁচু গোশতের উপরে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫১৩ | 5513 | ۵۵۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৪১২. পরচুলা লাগানো
৫৫১৩। আদম (রহঃ) … সা’ঈদ ইবনু মূসায়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ মুআবিয়া (রাঃ) শেষ বারের মত যখন মদিনায় আসেন তখন তিনি আমাদের সামনে ভাষণ প্রদান করেন। তিনি এক গোছা চুল বের করে বললেন, আমি ইয়াহুদী ব্যতীত অন্য কাউকে এ জিনিস ব্যবহার করতে দেখিনি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একে অর্থাৎ পরচুলা ব্যবহারকারী নারীকে প্রতারক বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫১৪ | 5514 | ۵۵۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৪১৩. ভ্রু উপড়ে ফেলা
৫৫১৪। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আলকামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে যে সব নারী অংগ-প্রতংগে উল্কি উৎকীর্ণ করে যে সব নারী ভ্রু উপড়ে ফেলে এবং যেসব নারী দাঁত সরু করে দাঁতের মাঝে ফাক সৃষ্টি করে যা আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন করে দেয়, তাদের উপর আবদুল্লাহ (ইবনু মাসউদ) লানত করেছেন। উম্মে ইয়াকুব বললঃ এ কেমন কথা? আবদুল্লাহ বললেনঃ আমি কেন তাকে লানত করবো না, যাকে আল্লাহর রাসূল লানত করেছেন এবং আল্লাহর কিতাবেও। উম্মে ইয়াকুব বললঃ আল্লাহর কসম! আমি সম্পূর্ণ কুরআন পড়েছি, কিন্তু এ কথা তো কোথাও পাইনি। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! তুমি যদি তা পড়তো তবে অবশ্যই পেতেঃ وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانْتَهُوا “রাসূল তোমাদের কাছে যা এনেছেন তা গ্রহণ কর এবং যা থেকে নিষেধ করেছেন তা বর্জন কর।”

হাদিস নম্বরঃ ৫৫১৫ | 5515 | ۵۵۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৪১৪. পরচুলা লাগানো
৫৫১৫। মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ পরচুলা লাগাবার পেশা অবলম্বনকারী নারী, যে নিজের মাথায় পরচুলা লাগায় উল্কি উৎকীর্ণকারী নারী এবং যে উৎকীর্ণ করে আল্লাহর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের অভিশাপ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫১৬ | 5516 | ۵۵۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৪১৪. পরচুলা লাগানো
৫৫১৬। হুমায়দী (রহঃ) … আসমা (বিনত আবূ বকর) (রাঃ) থেকে বর্ণিত। জনৈক মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলঃ হে আল্লাহর রাসুল! আমার এক মেয়ের বসন্ত রোগ হয়ে মাথার চুল ঝরে পড়ে গেছে। আমি তাকে বিবাহ দিয়েছি। তার মাথায় কি পরচুলা লাগিয়া দিব? তিনি বললেনঃ পরচুলাজীবী ও পরচুলাধারী নারীকে আল্লাহ অভিশাপ দিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫১৭ | 5517 | ۵۵۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৪১৪. পরচুলা লাগানো
৫৫১৭। ইউসুফ ইবনু মূসা (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে শুনেছি অথবা বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ উল্কি উৎকীর্নকারী এবং পেশা অবলম্বনকারী নারী আর পরচুলা ব্যবহারকারী পরচুলা লাগাবার পেশা অবলম্বনকারী নারীকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫১৮ | 5518 | ۵۵۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৪১৪. পরচুলা লাগানো
৫৫১৮। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাউসদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সৌন্দর্যের জন্য উল্কি উৎকীর্ণকারী ও উল্কি গ্রহণকারী, ভ্রু উত্তোলনকারী নারী এবং দাঁত চিকন করে মাঝে ফাঁক সৃষ্টিকারী নারী, যা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন সাধন করে, তাদের উপর আল্লাহর লানত বর্ষিত হোক। (রাবী বলেন) আমি কেন তাকে লানত করবো না, যাকে আল্লাহর রাসুল লানত করেছেন এবং তা আল্লাহর কিতাবে বিদ্যমান রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫১৯ | 5519 | ۵۵۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৪১৫. উলকি উৎকীর্ণকারী নারী
৫৫১৯। ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ চোখলাগা বাস্তব সত্য এবং তিনি উল্কি উংকীর্ন করা থেকে নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫২০ | 5520 | ۵۵۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৪১৫. উলকি উৎকীর্ণকারী নারী
৫৫২০। ইবনু বাশশার (রহঃ) … সুফিয়ান (সাওরী) (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবদুর রহমান ইবনু আব্বাসের নিকট মানসুর কর্তৃক বর্ণিত আবদুল্লাহ (ইবনু মাসউদ) এর হাদীস উল্লেখ করি। তখন আবদুর রহমান ইবনু আব্বাস বলেন, আমি উম্মে ইয়াকুবের মাধ্যমে আবদুল্লাহ থেকে মানসুর কর্তৃক বর্ণিত হাদীসের অনুরুপ হাদীস শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫২১ | 5521 | ۵۵۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৪১৫. উলকি উৎকীর্ণকারী নারী
৫৫২১। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আওন ইবনু আবূ জুহায়ফা (রহঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রক্তের মূল্য ও কুকুরের মুল্য নিতে নিষেধ করেছেন। আর তিনি সুদ গ্রহণকারী, সুদ দাতা, উল্কি উৎকীর্ণকারী উল্কি গ্রহণকারী নারীদের উপর লানত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫২২ | 5522 | ۵۵۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৪১৬. যে নারী অঙ্গ প্রতঙ্গে উলকি উৎকীর্ণ করায়
৫৫২২। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর (রাঃ) এর নিকট এক মহিলাকে আনা হল। সে অঙ্গ প্রত্যঙ্গে উল্কি উৎকীর্ণ করতো। তিনি দাঁড়ালেন এবং বললেন, আমি তোমাদের আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি (তোমাদের মধ্যে) এমন কে আছে যে উল্কি উৎকীর্ন করা সম্পর্কে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কিছু শুনেছে? আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, আমি দাঁড়িয়ে বললাম, হে আমীরুল মুমিনীন। আমি শুনেছি। তিনি বললেন, কি শুনেছ? আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, মহিলারা যেন উল্কি উৎকীর্ন না করে এবং উল্কি উৎকীর্ণ না করায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫২৩ | 5523 | ۵۵۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৪১৬. যে নারী অঙ্গ প্রতঙ্গে উলকি উৎকীর্ণ করায়
৫৫২৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পরচুলা ব্যবহারকারী এবং এ পেশা অবলম্বনকারী এবং উল্কি উৎকীর্ণকারী এবং তা গ্রহণকারী নারীদের লানত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫২৪ | 5524 | ۵۵۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৪১৬. যে নারী অঙ্গ প্রতঙ্গে উলকি উৎকীর্ণ করায়
৫৫২৪। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে যে নারী উল্কি উৎকীর্ণ করে ও করায়, যে নারী ভ্রু উপড়ে ফেলে এবং যে নারী দাঁত কেটে সরু করে দাঁতের মাঝখানে ফাঁক বানায়- যে কাজগুলি দ্বারা আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে পরিবর্তন সাধিত হয়, এদের উপর আল্লাহ অভিশাপ বর্ষণ করেন। আমি কেন তার উপর অভিশাপ বর্ষণ করবো না, যাদের উপর আল্লাহর রাসুল অভিশাপ বর্ষণ করেছেন। এবং মহান আল্লাহর কিতাবেই তা বিদ্যমান আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫২৫ | 5525 | ۵۵۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৪১৭. ছবি
৫৫২৫। আদম (রহঃ) … আবূ তালহা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ফিরিশতা ঐ ঘরে প্রবেশ করে না, যে ঘরে কুকুর থাকে এবং ঐ ঘরেও না, যে ঘরে ছবি থাকে।

লায়স (রহঃ) আবূ তালহা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে (এ বিষয়ে) শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫২৬ | 5526 | ۵۵۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৪১৮. ক্বিয়ামতের দিন ছবি নির্মাতাদের শাস্তি প্রসঙ্গে
৫৫২৬। হুমায়দী (রহঃ) … মুসলিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা (একবার) মাসরুকের সাথে ইয়াসার ইবনু নুমায়রের ঘরে ছিলাম। মাসরুক ইয়াসারের ঘরের আঙ্গিনায় কতগুলো মুর্তি দেখতে পেয়ে বললেনঃ আমি আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে শুনেছি এবং তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন যে, (কিয়ামতের দিন) মানুষের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে তাদের, যারা ছবি বানায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫২৭ | 5527 | ۵۵۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৪১৮. ক্বিয়ামতের দিন ছবি নির্মাতাদের শাস্তি প্রসঙ্গে
৫৫২৭। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যারা এ জাতীয় (প্রানীর) ছবি তৈরি করে, কিয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দেয়া হবে। তাদের বলা হবে তোমরা যা বানিয়েছিলে তা জীবিত কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫২৮ | 5528 | ۵۵۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৪১৯. ছবি ভেঙ্গে ফেলা
৫৫২৮। মু’আয ইবনু ফাযালা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের ঘরের এমন কিছুই না ভেঙ্গে ছাড়তেন না, যাতে কোন (প্রানীর) ছবি থাকত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫২৯ | 5529 | ۵۵۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৪১৯. ছবি ভেঙ্গে ফেলা
৫৫২৯। মূসা (রহঃ) … আবূ যুর’আ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আবূ হুরায়রা (রাঃ) এর সাথে মদিনার এক ঘরে প্রবেশ করি। ঘরের উপরে এক ছবি নির্মাতাকে তিনি ছবি তৈরী করতে দেখলেন। তিনি বললেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি। (আল্লাহ বলেছেন) ঐ ব্যাক্তির চেয়ে অধিক যালিম আর কে, যে আমার সৃষ্টির অনুরূপ কোন কিছু সৃষ্টি করতে যায়? তা হলে তারা একটি দানা সৃষ্টি করুক অথবা একটি অণুপরিমাণ কণা সৃষ্টি করুক? তারপর তিনি একটি পানির পাত্র চেয়ে আনালেন এবং (উযূ (ওজু/অজু/অযু) করতে গিয়ে) বোগল পর্যন্ত দু’হাত ধুইলেন। আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ হে আবূ হুরায়রা! (এ ব্যাপারে) আপনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে কিছু শুনেছেন কি? তিনি বললেনঃ (হ্যাঁ, শুনেছি) অলংকার পরার শেষ প্রান্ত পর্যন্ত (ধোয়া উত্তম)।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৩০ | 5530 | ۵۵۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৪২০. ছবিযুক্ত কাপড় দিয়ে বসার আসন তৈরী করা
৫৫৩০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (তাবুক যুদ্ধের) সফর থেকে প্রত্যাগমন করলেন। আমি আমার কক্ষে পাতলা কাপড়ের পর্দা টাঙ্গিয়েছিলাম। তাতে ছিল (প্রানীর) অনেকগুলো ছবি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন এটা দেখলেন, তখন তা ছিড়ে ফেললেন এবং বললেনঃ কিয়ামতের দিন সে সব মানুষের সবচেয়ে কঠিন আযাব হবে, যারা আল্লাহর সৃষ্টির (প্রানীর) অনুরূপ তৈরি করবে। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ এরপর আমরা তা দিয়ে একটি বা দু’টি বসার আসন তৈরি করি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৩১ | 5531 | ۵۵۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৪২০. ছবিযুক্ত কাপড় দিয়ে বসার আসন তৈরী করা
৫৫৩১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সফর থেকে প্রত্যাগমন করেন। সে সময় আমি নকশাদার (প্রানীর) ছবিযুক্ত কাপড় দিয়ে (ঘরের) পর্দা লটকিয়ে ছিলাম। আমাকে তিনি তা খুলে ফেলার হুকুম করেন। তখন আমি খুলে ফেললাম। আর আমি ও নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র থেকে (পানি নিয়ে) গোসল করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৩২ | 5532 | ۵۵۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৫২১. ছবির উপর বসা অপছন্দনীয়
৫৫৩২। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একবার ছবিযুক্ত গদি খরীদ করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (বাহির থেকে এসে এ অবস্থা দেখে) দরজার কাছে দাঁড়িয়ে থাকলেন, প্রবেশ করলেন না। আমি বললামঃ যে পাপ আমি করেছি তা থেকে আল্লাহর কাছে তাওবা করছি। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ এ গদি কিসের জন্য? আমি বললামঃ আপনি এতে বসবেন ও হেলান দিবেন। তিনি বললেনঃ এসব ছবির নির্মাতাদের কিয়ামতের দিন আযাব দেওয়া হবে। তাদের বলা হবে, যা তোমরা তৈরি করেছিলে সেগুলো জীবিত কর। আর যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে ফিরিশতা প্রবেশ করে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৩৩ | 5533 | ۵۵۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৫২১. ছবির উপর বসা অপছন্দনীয়
৫৫৩৩। কুতায়বা (রহঃ) … রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথী আবূ তালহা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে ফিরিশতা প্রবেশ করে না। এ হাদীসের (এক রাবী) বুসর বলেনঃ যায়েদ একবার অসুস্থ হয়ে পড়ল। আমরা তার সেবা শুশ্রুষার জন্য গেলাম। তখন তার ঘরের দরজায় ছবিযুক্ত পর্দা দেখতে পেলাম। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহধর্মিনা মায়মূনা (রাঃ) এর প্রতিপালিত উবায়দুল্লাহর কাছে জিজ্ঞাস করলাম, ছবি সম্পর্কে প্রথম দিনই যায়দ আমাদের কি জানায় নি? তখন উবায়দুল্লাহ বললেন, তিনি যখন বলেছিলেন তখন কি তুমি শুননি যে, কারুকার্য করা কাপড় ব্যাতিরেকে? ইবনু ওহাব অন্য সূত্রে আবূ তালহা (রাঃ) থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে এ হাদীস বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৩৪ | 5534 | ۵۵۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৪২২. ছবিযুক্ত কাপড়ে নামায পড়া মাকরূহ
৫৫৩৪। ইমরান ইবনু মায়সারা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আয়িশা (রাঃ) এর নিকট কিছু পর্দার কাপড় ছিল, তা দিয়ে তিনি ঘরের এক দিকে পর্দা করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ আমার থেকে এটা সরিরে নাও, কেননা এর ছবিগুলো সালাত (নামায/নামাজ) এর মধ্যে আমাকে বাধার সৃষ্টি করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৩৫ | 5535 | ۵۵۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৪২৩. যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে (রহমতের) ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
৫৫৩৫। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … সালিমের পিতা (আবদুল্লাহ ইবনু উমর) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ জিবরীল (আলাইহিস সালাম) (একবার) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট (আগমনের) ওয়াদা করেন। কিন্তু তিনি আসতে দেরী করেন। এতে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খুবই কষ্ট হচ্ছিল। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বের হয়ে পড়লেন। তখন জিবরীলের সাথে তার সাক্ষাত হল। তিনি যে মানসিক কষ্ট পেয়েছিলেন সে বিষয়ে তার কাছে বর্ণনা করলেন। তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) বললেনঃ যে ঘরে ছবি বা কুকুর থাকে সে ঘরে আমরা কখনও প্রবেশ করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৩৬ | 5536 | ۵۵۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৪২৪. যে ঘরে ছবি রয়েছে তাতে যিনি প্রবেশ করেন না
৫৫৩৬। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন যে, (একবার) তিনি ছবিযুক্ত গদি খরিদ করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (বাহির থেকে এসে) যখন তা দেখতে পেলেন, তখন দরজার উপর দাঁড়িয়ে গেলেন। (ভিতবে) প্রবেশ করলেন না। [আয়িশা (রাঃ)] নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারায় অসন্তুষ্টির ভাব বুঝতে পারলেন। তখন তিনি বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ ও তার রাসুলের নিকট এ গুনাহ থেকে তাওবা করছি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ গদি কোত্থেকে? আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ আপনার বসার ও স্থান দেওয়ার জন্য আমি এটি খরীদ করেছি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেনঃ এসব ছবির নির্মাতাদের কিয়ামতের দিন আযাব দেওয়া হবে এবং তাদের বলা হবে তোমরা যা বানিয়েছিলে তা জীবিত কর। তিনি আরো বললেনঃ যে ঘরে (প্রানীর) ছবি থাকে, সে ঘরে (রহমতের) ফিরিশতা প্রবেশ করে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৩৭ | 5537 | ۵۵۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৪২৫. ছবি নির্মানকারীকে যিনি লা’নত করেছেন
৫৫৩৭। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রক্তের মূল্য কুকুরের মূল্য ও যিনাকারীর উপার্জন গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন। আর তিনি সুদ গ্রহিতা, সুদদাতা, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে (সূচের মাথা দিয়া ছিদ্র করে) উল্কি উৎকীর্নকারী ও তা করানোওয়ালা এবং ছবি নির্মাণকারীকে লানত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৩৮ | 5538 | ۵۵۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৪২৬. যে ব্যক্তি ছবি নির্মাণ করে তাকে কিয়ামতের দিন তাতে রূহ দানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হবে কিন্তু সে সক্ষম হবে না
৫৫৩৮। আয়াশ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … কাতাদা (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ) এর নিকট ছিলাম। আর (উপস্থিত) লোকজন তার কাছে বিভিন্ন কথা জিজ্ঞাসা করছিল। কিন্তু (কোন কথার উত্তরেই) তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর (হাদীস) উল্লেখ করছিলেন না। অবশেষে তাকে ছবি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলো তিনি বললেনঃ আমি মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি, যে ব্যাক্তি দুনিয়ায় কোন প্রানীর ছবি নির্মাণ করে, কিয়ামতের দিন তাকে কঠোরভাবে নির্দেশ দেওয়া হবে ঐ ছবির মধ্যে রূহ দান করার জন্য। কিন্তু সে রূহ দান করতে পারবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৩৯ | 5539 | ۵۵۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৪২৭. সাওয়ারীর উপর কারও পশ্চাতে বসা
৫৫৩৯। কুতায়বা (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (একবার) গাধার পিঠে আরোহণ করেন। পিঠের উপরে ফাদাকের তৈরী মোটা গদি ছিল। উসামাকে তিনি তাঁর পেছনে বসান।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৪০ | 5540 | ۵۵٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৪২৮. এক সাওয়ারীর উপর তিনজন বসা
৫৫৪০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবন আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কায় আগমন করেন তখন আবদুল মুত্তালিব গোত্রের তরুণ বালকরা তাকে অভ্যর্থনা জানায়। তাদের একজনকে তিনি তার সামনে এবং অন্য একজনকে তার পেছনে উঠিয়ে নেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৪১ | 5541 | ۵۵٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৪২৯. সাওয়ারী জানোয়ারের মালিক অন্যকে সামনে বসাতে পারে কি না? কেউ কেউ বলেছেন, জানোয়ারের মালিক সামনে বসার বেশী হকদার, তবে যদি কাউকে সে অনুমতি দেয়, তবে তা ভিন্ন কথা।
৫৫৪১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আইউব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, খারাপ তিন ব্যাক্তির কথা আমার কাছে উল্লেখ করা হয়। তিনি বলেনঃ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কায় আসেন তখন তিনি কুসামকে (তার সাওয়ারীর) সামনে ও ফাযলকে পাশ্চাতে বসান। অথবা কুসামকে পশ্চাতে ও ফাযলকে সামনে বসান। তা হচ্ছে কে তাদের মধ্যে মন্দ অথবা কে তাদের মধ্যে ভাল?

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৪২ | 5542 | ۵۵٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৩০. পরিচ্ছেদ নাই
৫৫৪২। হাফযা ইবনু খালিদ (রহঃ) … মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পেছনে বসা ছিলাম। আমার ও তার মাঝে লাগামের রশির প্রান্তদেশ ভিন্ন অন্য কিছুই ছিল না। তিনি বললেনঃ মুআয! আমি বললামঃ হাযির আছি, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তারপর কিছুক্ষন চললেন। পুনরায় বললেনঃ হে মু’আয! আমি বললাম হাযির আছি, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তারপর আরও কিছুক্ষণ চললেন। আবার বললেনঃ হে মু’আয ইবনু জাবাল! আমি বললাম হাযির আছি, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ তুমি জানো, বান্দার উপর আল্লাহর কী হক? আমি বললাম আল্লাহ ও তার রাসুলই ভাল জানেন। তিনি বললেন বান্দার উপর আল্লাহর হক এই যে, তারা কেবল তারই ইবাদত করবে, অন্য কিছুকে তাঁর শরীক করবে না। এরপর কিছু সময় চললেন। তারপব বললেনঃ হে মু’আয ইবনু জাবাল! আমি বললামঃ হাযির আছি, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ বান্দারা যখন তাদের দায়িত্বপালন করে, তখন আল্লাহর প্রতি বান্দাদের অধিকার কি তা জানো কি? আমি বললাম আল্লাহ ও তার রাসুলই ভাল জানেন। তিনি বললেনঃ আল্লাহর উপর বান্দার অধিকার এই যে তিনি তাদের আযাব দিবেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৪৩ | 5543 | ۵۵٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৩১. সওয়ারীর উপর পুরুষের পিছনে মহিলার বসা
৫৫৪৩। হাসান ইবনু মুহাম্মদ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সংগে খায়বার থেকে (মদিনায়) ফিরে আসলাম। আমি আবূ তালহার সাওয়ারীর উপর পেছনে বসাছিলাম, আর তিনি সাওয়ারী চালাচ্ছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জনৈক সহধর্মিণী তার সাওয়ারীর পশ্চাতে বসেছিলেন। হঠাৎ উটনীটি হোঁচট খেয়ে পড়ে গেল। আমি বললাম মহিলা, এরপর আমি নেমে পড়লাম। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইনি তোমাদের মা। আমি হাওদাটি শক্ত করে বেঁধে দিলাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাওয়ারীতে উঠলেন। যখন তিনি মদিনার নিকটবর্তী হলেন, কিংবা রাবী বলেছেন, তিনি যখন (মদিনা) দেখতে পেলেন। তখন বললেনঃ আমরা প্রত্যাগমনকারী, তাওবাকারী, আমাদের রবের ইবাদতকারী , (তার) প্রশংসাকারী।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৪৪ | 5544 | ۵۵٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৩২. চিৎ হয়ে শয়ন করা এবং এক পা অন্য পায়ের উপর রাখা
৫৫৪৪। আহমাদ ইবনু ইউনূস (রহঃ) … আব্বাদ ইবনু তামীম এর চাচা (আবদুল্লাহ ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মসজিদের মধ্যে এক পায়ের উপরে অন্য পা উঠিয়ে চিৎ হয়ে শয়ন করতে দেখেছেন।

আচার-ব্যবহার অধ্যায় (৫৫৪৫-৫৭৯৩)

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৪৫ | 5545 | ۵۵٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৩৩. মহান আল্লাহ্‌র বাণীঃ আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার সাথে উত্তম ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছি
৫৫৪৫। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (ইবনু মাসউদ) (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম আল্লাহর নিকট কোন আমল সবচেয়ে বেশী পছন্দনীয়? তিনি বললেনঃ সময় মত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করা। (আবদুল্লাহ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ পিতা মাতার সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করা। আবদুল্লাহ জিজ্ঞাসা করলেনঃ তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। আবদুল্লাহ বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এগুলো সম্পর্কে আমাকে বলেছেন। আমি যদি তাকে আরও বেশী প্রশ্ন করতাম, তিনি আমাকে অধিক জানাতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৪৬ | 5546 | ۵۵٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৩৪. উত্তম ব্যবহার পাওয়ার কে বেশী হকদার?
৫৫৪৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করলামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার কাছে কে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার বেশী হকদার? তিনি বললেনঃ তোমার মা। লোকটি বললঃ তারপর কে? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার মা। সে বললঃ তারপর কে? তিনি বললেনঃ তোমার মা। সে বললঃ তারপর কে? তিনি বললেনঃ তারপর তোমার বাপ। ইবনু শুবরুমা বলেন, ইয়াহইয়া ইবনু আইউব আবূ যুরআ থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৪৭ | 5547 | ۵۵٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৩৫. পিতা-মাতার অনুমতি ছাড়া জিহাদে যাবে না
৫৫৪৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলোঃ আমি কি জিহাদে যাব? তিনি বলেনঃ তোমার কি পিতা-মাতা আছে? সে বলল হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তা হলে তাদের (সেবার) মাঝে জিহাদ করো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৪৮ | 5548 | ۵۵٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৩৬. কোন লোক পিতা-মাতাকে গালি দেবে না
৫৫৪৮। আহমাদ ইবনু ইউনূস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কবীরা গুনাহসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বড় গুনাহ নিজের পিতা-মাতাকে লানত করা। জিজ্ঞাসা করা হলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপন পিতা-মাতাকে কোন লোক কিভাবে লা’নত করতে পারে? তিনি বললেনঃ সে অন্য কোন লোকের পিতাকে গালি দেয়, তখন সে তার পিতাকে গালি দেয় এবং সে অন্যের মাকে গালি দেয়, তারপরে সে তার মাকে গালি দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৪৯ | 5549 | ۵۵٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৩৭. পিতা-মাতার প্রতি উত্তম ব্যবহারকারীর দু’আ কবুল হওয়া
৫৫৪৯। সাঈদ ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনজন লোক হেঁটে চলছিল। তাদের উপর বৃষ্টি শুরু হলে তারা এক পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নেয়। এমন সময় পাহাড় থেকে একটি পাথর তাদের গুহার মুখের উপর গড়িয়ে পড়ে এবং মুখ বন্ধ করে ফেলে। তাদের একজন অপরজনকে বললঃ তোমরা তোমাদের কৃত আমলের প্রতি লক্ষ্য করো, যে নেক আমল তোমরা আল্লাহর জন্য করেছ; তার ওসিলায় আল্লাহর নিকট দু’আ করো। হয়তো তিনি এটি সরিয়ে দিবেন।

তখন তাদের একজন বলল ইয়া আল্লাহ! আমার বায়োবৃদ্ধ মাতাপিতা ছিল এবং ছেটি ছোট শিশু ছিল। আমি তাদের (জীবিকার) জন্য মাঠে পশু চরাতাম। যখন সন্ধায় ফিরতাম, তখন দুধ দোহন করতাম এবং আমার সন্তানদের আগেই পিতামাতাকে পান করতে দিতাম। একদিন সেগুলো দূরে বনের মধ্যে চলে যায়। ফলে আমার ফিরতে রাত হয়। ফিরে দেখলাম তারা উভয়ে ঘুমিয়ে পড়েছেন। আমি যেমন দুধ দোহন করতাম, তেমনি দোহন করলাম। তারপর দুধ নিয়ে এলাম এবং উভয়ের মাথার কাছে দাড়িয়ে রইলাম। ঘূম থেকে তাদের উভয়কে জাগানো ভাল মনে করলাম না। আর তাদের আগে শিশুদের পান করানোও অপছন্দ করলাম। আর শিশুরা আমার দু’পায়ের কাছে কান্নাকাটি করছিল। তাদের ও আমার মাঝে এ অবস্থা চলতে থাকে। অবশেষে ভোর হয়ে গেল। (ইয়া আল্লাহ) আপনি জানেন যে, আমি কেবল আপনার সন্তানটির জন্যই একাজ করেছি। তাই আপনি আমাদের জন্য একটু ফাঁক করে দিন, যাতে আমরা আকাশ দেখতে পাই। তখন আল্লাহ তাদের জন্য একটু ফাঁক করে দিলেন, যাতে তারা আকাশ দেখতে পায়।

দ্বিতীয় ব্যাক্তি বললঃ ইয়া আল্লাহ! আমার একটি চাচাতো বোন ছিল। আমি তাকে এতখানি ভালবাসতাম, যতখানি একজন পুরুষ কোন নারীকে ভালবাসতে পারে। আমি তাতে একান্তভাবে পেতে চাইলাম। সে অসম্মতি জানাল, যতক্ষণ আমি তার কাছে একশ দ্বীনার উপস্থিত না করি। আমি চেষ্টা করলাম এবং একশ স্বর্ণমুদ্রা জোগাড় করলাম। এগুলো নিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করলাম। যখন আমি তার দু’পায়ের মধ্যে বসলাম, তখন সে বলল, হে আবদুল্লাহ! আল্লাহকে ভয় করো; আমার কুমারিত্ত নষ্ট করো না। তখন আমি উঠে গেলাম। ইয়া আল্লাহ! আপনি জানেন যে, কেবল আপনার সন্তুষ্টির জন্যই আমি তা করেছি। তাই আমাদের জন্য এটি ফাঁক করে দিন। তখন তাদের জন্য আল্লাহ আরও কিছু ফাঁক করে দিলেন।

শেষের লোকটি বললঃ ইয়া আল্লাহ! আমি একজন মজদুরকে এক “ফারক” চাউলের বিনিময়ে কাজে নিয়োগ করেছিলাম। সে তার কাজ শেষ করে এসে বলল, আমার প্রাপ্য দিয়ে দিন। আমি তার প্রাপ্য তার সামনে উপস্থিত করলাম কিন্তু সে তা ছেড়ে দিল ও প্রত্যাখ্যান করলো। তারপর তার প্রাপ্য আমি ক্রমাগত কৃষিকাজে খাটাতে লাগলাম। তার দ্বারা অনেকগুলো গরু ও গাধা জমা করলাম। এরপর সে একদিন আমার কাছে এসে বললঃ আল্লাহকে ভয় কর, আমার উপর যুলম করো না এবং আমার প্রাপ্য দিয়ে দাও। আমি বললামঃ গরু ও রাখালের কাছে চলে যাও। সে বললঃ আল্লাহকে ভয় করো, আমরে সাথে উপহাস করো না। আমি বললাম তোমার সঙ্গে আমি উপহাস করছি না। তুমি ঐ গরুগুলো ও তার গাধা নিয়ে যাও। তারপর সে ওগুলো নিয়ে চলে গেল। (ইয়া আল্লাহ) আপনি জানেন যে, তা আমি আপনার সন্তুষ্টি লাভের জন্যই করেছি, তাই আপনি অবশিষ্ট অংশ উন্মুক্ত করে দিন। তারপর আল্লাহ তাদের জন্য তা উন্মুক্ত করে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৫০ | 5550 | ۵۵۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৩৮. পিতা-মাতার নাফরমানী করা কবিরা গুনাহ
৫৫৫০। সা’দ ইবনু হাফস … মুগীরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর হারাম করেছেন, মা-বাপের নাফরমানী করা, প্রাপকের প্রাপ্য আটক রাখা, যে জিনিস গ্রহন করা তোমাদের জন্য ঠিক নয় তা তলব করা এবং কন্যা সন্তানকে জীবিত কবর দেওয়া। আর তিনি তোমাদের জন্য অপছন্দ করেছেন গল্প-গুজব করা, অপ্রয়োজনীয় প্রশ্ন করা ও সম্পদ নষ্ট করা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৫১ | 5551 | ۵۵۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৩৮. পিতা-মাতার নাফরমানী করা কবিরা গুনাহ
৫৫৫১। ইসহাক (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বড় গুনাহ সম্পর্কে সতর্ক করব না? আমরা বললামঃ অবশ্যই সতর্ক করবেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা, পিতা-মাতার নাফরমানী করা। এ কথা বলার সময় তিনি হেলান দিয়ে বসাছিলেন। এরপর (সোজা হয়ে) বসলেন এবং বললেনঃ মিথ্যা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া, দু’বার করে বললেন এবং ক্রমাগত এ কথাই বলে চললেন। এমনকি আমি বললাম, তিনি মনে হয় থামবেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৫২ | 5552 | ۵۵۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৩৮. পিতা-মাতার নাফরমানী করা কবিরা গুনাহ
৫৫৫২। মুহাম্মদ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবীরা গুনার কথা উল্লেখ করলেন অথবা তাকে কবীরা গুনাহ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হল। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা। মানুষ হত্যা করা ও মা-বাপের নাফরমানী করা। তারপর তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাদের কবীরা গুনাহর অন্যতম গুনাহ সম্পর্কে সতর্ক করবো না? পরে বললেনঃ মিথ্যা কথা বলা। অথবা বলেছেনঃ মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া। শুবা (রহঃ) বলেনঃ আমার প্রবল ধারণা হয় যে, তিনি বলেছেনঃ মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৫৩ | 5553 | ۵۵۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৩৯. মুশরিক পিতার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা
৫৫৫৩। হুমায়দী (রহঃ) … আবূ বকর (রাঃ) এর কন্যা আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যুগে আমার অমুসলিম মা আমার কাছে এলেন। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জিজ্ঞাসা করলামঃ তার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করবো কি না? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। ইবনু উয়ায়না (রহঃ) বলেন, এ ঘটনা প্রসঙ্গেই আল্লাহ তাআলা নাযিল করেনঃ যারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে না তাদের সাথে ভাল ব্যবহার করতে আল্লাহ তোমাদেরকে নিষেধ করছেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৫৪ | 5554 | ۵۵۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৪০. যে স্ত্রীর স্বামী আছে, ঐ স্ত্রীর পক্ষে তার নিজের মায়ের সঙ্গে ভাল ব্যবহার অক্ষুণ্ন রাখা। লায়স (র) …… ‘আসমা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেনঃ কুরাইশরা যে সময়ে নবী (সাঃ) এর সঙ্গে সন্ধি চুক্তি করেছিল, ঐ চুক্তি কালীন সময়ে আমার মা তাঁর পিতার সঙ্গে এলেন। আমি নবী (সাঃ) এর কাছে জিজ্ঞাসা করলামঃ আমার মা এসেছেন, তবে সে অমুসলিম। আমি কি তার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করব? তিনি বললেনঃ হাঁ। তোমার মায়ের সঙ্গে উত্তম ব্যবহার করো।
৫৫৫৪। ইয়াহইয়া (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবূ সুফিয়ান (রাঃ) তাকে জানিয়েছেন যে, (রোম সম্রাট) হিরাক্লিয়াস তাকে ডেকে পাঠায়। আবূ সুফিয়ান (রহঃ) বললো যে, তিনি অর্থাৎ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে যাকাত দিতে, পবিত্র থাকতে এবং রক্তের সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ রাখতে আদেশ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৫৫ | 5555 | ۵۵۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৪১. মুশরিক ভাইয়ের সঙ্গে সৌজন্যমূলক ব্যবহার করা
৫৫৫৫। মূসা ইবনু ঈসমাঈল (রহঃ) … ইবনু ‘উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা উমর (রাঃ) এক জোড়া রেশমী ডোরাদার কাপড় বিক্রি হতে দেখেন। এরপর তিনি (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি এটি খরিদ করুন, জুমুআর দিনে, আর আপনার কাছে যখন প্রতিনিধি দল আসে তখন আপনি তা পরবেন। তিনি বললেনঃ এ সে-ই পরতে পারে, যার জন্য কল্যানের কোন অংশ নেই। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এ জাতীয় কিছু কারুকার্যময় কাপড় আসে। তিনি তা থেকে এক জোড়া কাপড় (হুল্লা) উমর (রাঃ) এর নিকট পাঠিয়ে দেন। তিনি (এসে) বললেনঃ আমি কিভাবে এটি পরবো? অথচ এ বিষয়ে আপনি যা বলার তা বলেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি তোমাকে এটি পরার জন্য দেইনি, বরং এ জন্যই দিয়েছি যে তুমি ওটা বিক্রি করে দেবে অথবা অন্যকে পরতে দেবে। তখন উমর (রাঃ) তা মক্কায় তার এক ভাইয়ের কাছে পাঠিয়ে দেন, যে তখনও ইসলাম গ্রহন করে নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৫৬ | 5556 | ۵۵۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৪২. রক্ত সম্পর্ক রক্ষা করার ফযীলত
৫৫৫৬। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবূ আইউব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে এমন একটি আমল শিখিয়ে দিন, যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৫৭ | 5557 | ۵۵۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৪২. রক্ত সম্পর্ক রক্ষা করার ফযীলত
৫৫৫৭। আবদুর রহমান (রহঃ) … আবূ আইউব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমাকে এমন একটি আমল শিক্ষা দিন, যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। উপস্থিত লোকজন বলল তার কি হয়েছে? তার কি হয়েছে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তার একটি বিশেষ প্রয়োজন আছে। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি আল্লাহর ইবাদত করবে, তার সঙ্গে কাউকে শরীক করবে না, সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করবে, যাকাত আদায় করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করবে। একে ছেড়ে দাও বর্ণনাকারী বলেনঃ তিনি ঐ সময় তার সাওয়ারীর উপর ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৫৮ | 5558 | ۵۵۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৪৩. আত্মীয়তার সম্পর্কে ছিন্নকারীর পাপ
৫৫৫৮। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … জুবায়র ইবনু মুতইম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেনঃ আত্নীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৫৯ | 5559 | ۵۵۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৪৪. রক্ত সম্পর্ক রক্ষা করলে রিযক বৃদ্ধি হয়
৫৫৫৯। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ যে লোক তার রিযক প্রশস্ত করতে এবং আয়ু বৃদ্ধি করতে চায়, সে যেন তার আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৬০ | 5560 | ۵۵٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৪৪. রক্ত সম্পর্ক রক্ষা করলে রিযক বৃদ্ধি হয়
৫৫৬০। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি চায় যে, তার রিযক প্রশস্ত হোক এবং আয়ু বৃদ্ধি হোক; সে যেন তার আত্নীয়তার সাম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৬১ | 5561 | ۵۵٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৪৫. যে ব্যক্তি আত্মীয়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে, আল্লাহ তার সাথে সুসম্পর্ক রাখবেন
৫৫৬১। বিশর ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ সকল সৃষ্টিকে পয়দা করলেন। যখন তিনি সৃষ্টি কাজ শেষ করেন, তখন আত্মীয়তার সম্পর্ক বলে উঠলোঃ সম্পর্ক ছিন্ন করা থেকে আপনার আশ্রয় গ্রহনকারীদের এই (উপযুক্ত) স্থান। তিনি (আল্লাহ) বললেনঃ হ্যাঁ তুমি কি এতে সন্তুষ্ট নও যে, তোমার সাথে যে সুসম্পর্ক রাখবে, আমিও তার সাথে সুসম্পর্ক রাখবো। আর যে তোমার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, আমিও তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করবো। সে (রক্ত সম্পর্ক) বললোঃ হ্যাঁ আমি সন্তুষ্ট হে আমার রব! আল্লাহ বললেনঃ তা হলে এ মর্যাদা তোমাকে দেওয়া হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ইচ্ছে করলে (এ আয়াতটি) পড়োঃ যদি তোমরা কর্তৃত্ব লাভ (নেতৃত্ব লাভ) কর, তা হলে কি তোমরা পৃথিবীতে ফিতনা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করবে এবং সম্পর্ক ছিন্ন করে ফেলবে?

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৬২ | 5562 | ۵۵٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৪৫. যে ব্যক্তি আত্মীয়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে, আল্লাহ তার সাথে সুসম্পর্ক রাখবেন
৫৫৬২। খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ রক্ত সম্পর্কের মূল রহমান। আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ যে তোমার সাথে সুসম্পর্ক রাখবে, আমি তার সাথে সুসম্পর্ক রাখবো। আর যে তোমার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করবে, আমিও তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করবো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৬৩ | 5563 | ۵۵٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৪৫. যে ব্যক্তি আত্মীয়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখবে, আল্লাহ তার সাথে সুসম্পর্ক রাখবেন
৫৫৬৩। সাঈদ ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আত্মীয়তার হক রাহমানের মূল। যে তা সঞ্জীবিত রাখবে, আমি তাকে সঞ্জীবিত রাখেবো। আর যে তা ছিন্ন করবে! আমি তাকে (আমার থেকে) ছিন্ন করবো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৬৪ | 5564 | ۵۵٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৪৬. রক্ত সম্পর্ক সঞ্জীবিত হয়, যদি সুসম্পর্কের মাধ্যমে তাতে পানি সিঞ্চন করা হয়
৫৫৬৪। আমর ইবনু আব্বাস (রহঃ) … আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে উচ্চস্বরে বলতে শুনেছি, আস্তে নয়। তিনি বলেছেনঃ অমুকের বংশ আমার বন্ধু নয়। আমর বলেনঃ মুহাম্মাদ ইবনু জাফরের কিতাবে বন্ধুর পরে জায়গা খালি রয়েছে। (কোন বংশের নাম উল্লেখ নাই)। আমার বন্ধু, বরং আমার বন্ধু আল্লাহ ও নেককার মুমিনগন। আনবাসা ভিন্ন সূত্রে আমর ইবনু আস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আমি শুনেছিঃ বরং তাদের সাথে (আমার) আত্মীয়তার হক রয়েছে, আমি সুসম্পর্কের রস দিয়ে তা সঞ্জীবিত রাখি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৬৫ | 5565 | ۵۵٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৪৭. প্রতিদানকারী আত্মীয়তার হক আদায়কারী নয়
৫৫৬৫। মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাবী সুফিয়ান বলেন, আমরা এ হাদীস মারফুরুপে বর্ণনা করেননি। অবশ্য হাসান (ইবনু আমর) ও ফিতর (রহঃ) একে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মারফূ হিসেবে বর্ননা করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রতিদানকারী আত্মীয়তার হক আদায়কারী নয়। বরং আত্মীয়তার হক আদায়কারী সে ব্যাক্তি, যে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পরও তা বজায় রাখে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৬৬ | 5566 | ۵۵٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৪৮. যে লোক মুশরিক অবস্থায় আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে, তারপর ইসলাম গ্রহণ করে
৫৫৬৬। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … হাকীম ইবনু হিযাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি একবার আরয করলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি জাহিলী অবস্থায় অনেক সাওয়ারের কাজ করেছি। যেমন আত্মীয়তার হক আদায়, গোলাম আযাদ এবং দান-খয়রাত, এসব কাজে কি আমি কোন সাওসাব পাব? হাকীম (রাঃ) বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ পুর্বের এসব নেকীর কাজের দরুনইতো তুমি ইসলাম গ্রহণ করতে পেরেছ।

ইমাম বুখারী (রহঃ) অন্যত্র আবূল ইয়ামান সূত্রে (আতাহান্নাছুর স্থলে) আতাহান্নাতু বর্ণনা করেছেন। (উভয় শব্দের অর্থ একই)। মা’মার, সালিহ ও ইবনু মুসাফিরও আতাহান্নাছু রিওয়ায়াত করেছেন। ইবনু ইসহাক (রহঃ) বলেন, তাহান্নুছ অর্থ নেক কাজ করা। ইবনু শিহাব তার পিতা সুত্রে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৬৭ | 5567 | ۵۵٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৪৯. অন্যের শিশু কন্যাকে নিজের সাথে খেলাধুলা করতে বাধা না দেওয়া অথবা তাকে চুম্বন দেয়া, তার সাথে হাসি-ঠাট্রা করা
৫৫৬৭। হিব্বান (রহঃ) … উম্মে খালিদ বিনত খালিদ ইবনু সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আমার পিতার সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলাম। আমার গায়ে তখন হলুদ রং এর জামা ছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন সানাহ সানাহ। আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেন, হাবশী ভাষায় এর অর্থ সুন্দর, সুন্দর। উম্মে খালিদ বলেন আমি তখন মোহরে নবুওয়াত নিয়ে খেলতে লাগলাম। আমার পিতা আমাকে ধমক দিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ওকে (নিজ অবস্থায়) ছেড়ে দাও। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তোমার বস্ত্র পুরোনো কর ও জীর্ন কর, আবার পুরোনো কর, জীর্ন কর আবার পুরোনো কর জীর্ন কর। তিনবার বললেন। আবদুল্লাহ (রহঃ) বলেনঃ তিনি দীর্ঘ আয়ু প্রাপ্ত হিসেবে (লোকের মধ্যে) আলোচিত হয়েছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৬৮ | 5568 | ۵۵٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৫০. সন্তানকে আদর-স্নেহ করা, চুমু দেয়া ও আলিঙ্গন করা। সাবিত (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) (তাঁর পুত্র) ইবরাহীমকে চুমু দিয়েছেন ও তার ঘ্রান নিয়েছেন
৫৫৬৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … ইবনু আবূ নুয়াইম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি ইবনু উমর (রাঃ) এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। তখন তাঁর কাছে একটি লোক মশার রক্ত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলো। তিনি বললেনঃ কোন দেশের লোক তুমি? সে বললোঃ আমি ইরাকের অধিবাসী। ইবনু উমর (রাঃ) বললেনঃ তোমরা এর দিকে লক্ষ্য কর, সে আমাকে মশার রক্ত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করছে অথচ তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সন্তান (হুসাইন) কে হত্যা করেছে। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ ওরা দু’জন (হাসান ও হুসাইন) পৃথিবীতে আমার নিকট দু’টি সুগন্ধি ফুল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৬৯ | 5569 | ۵۵٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৫০. সন্তানকে আদর-স্নেহ করা, চুমু দেয়া ও আলিঙ্গন করা। সাবিত (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) (তাঁর পুত্র) ইবরাহীমকে চুমু দিয়েছেন ও তার ঘ্রান নিয়েছেন
৫৫৬৯। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক মহিলা তার দু’টি মেয়ে সাথে নিয়ে আমার কাছে এসে কিছু চাইলো। আমার কাছে একটি খুরমা ছাড়া আর কিছুই সে পেলো না। আমি তাকে সেটি দিয়ে দিলাম। মহিলা তার দু’মেয়েকে খুরমাটি ভাগ করে দিল। তারপর সে উঠে বের হয়ে গেল। ইতিমধ্যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এলেন। আমি তাকে ঘটনাটি জানালাম। তখন তিনি বললেনঃ যাকে এ সকল কন্যা সন্তান দিয়ে কোন পরীক্ষায় ফেলা হয়, এরপর সে তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করে, এ কন্যারা তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে আড় স্বরূপ হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৭০ | 5570 | ۵۵۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৫০. সন্তানকে আদর-স্নেহ করা, চুমু দেয়া ও আলিঙ্গন করা। সাবিত (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) (তাঁর পুত্র) ইবরাহীমকে চুমু দিয়েছেন ও তার ঘ্রান নিয়েছেন
৫৫৭০। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবূ কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সামনে এলেন। তখন উমামা বিনত আবূল আস তার কাঁধের উপর ছিলেন। এমতাবস্থায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাতে দাঁড়ালেনা যখন তিনি রুকুতে যেতেন, তাকে নামিয়ে রাখতেন, আবার যখন উঠে দাঁড়াতেন, তখন তাকেও উঠিয়ে নিতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৭১ | 5571 | ۵۵۷۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৫০. সন্তানকে আদর-স্নেহ করা, চুমু দেয়া ও আলিঙ্গন করা। সাবিত (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) (তাঁর পুত্র) ইবরাহীমকে চুমু দিয়েছেন ও তার ঘ্রান নিয়েছেন
৫৫৭১। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার হাসান ইবনু আলীকে চুম্বন করেন। ঐ সময় তার নিকট আকরা ইবনু হাবিস তামীমী (রাঃ) বসা ছিলেন। আকরা ইবনু হাবিস (রাঃ) বললেনঃ আমার দশ টি পুত্র আছে আমি তাদের কাউকেই কোন দিন চুম্বন করিনি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে তাকালেন, তারপর বললেনঃ যে দয়া করে না তাকে দয়া করা হয় না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৭২ | 5572 | ۵۵۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৫০. সন্তানকে আদর-স্নেহ করা, চুমু দেয়া ও আলিঙ্গন করা। সাবিত (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) (তাঁর পুত্র) ইবরাহীমকে চুমু দিয়েছেন ও তার ঘ্রান নিয়েছেন
৫৫৭২। মুহম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক বেদুঈন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললো। আপনারা শিশুদের চুম্বন করে থাকেন, কিন্তু আমরা ওদের চুম্বন করি না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ যদি তোমার অন্তর থেকে রহমত উঠিয়ে নেন, তবে আমি কি তোমার উপর (তা ফিরিয়ে দেওয়ার) অধিকার রাখি?

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৭৩ | 5573 | ۵۵۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৫০. সন্তানকে আদর-স্নেহ করা, চুমু দেয়া ও আলিঙ্গন করা। সাবিত (রহঃ) আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) (তাঁর পুত্র) ইবরাহীমকে চুমু দিয়েছেন ও তার ঘ্রান নিয়েছেন
৫৫৭৩। ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কিছু সংখ্যক বন্দী আসে। বন্দীদের মধ্যে একজন মহিলা ছিল। তার স্তন দুধে পূর্ন ছিল। সে বন্দীদের মধ্যে কোন শিশু পেলে তাকে ধরে কোলে নিত এবং দুধ পান করাত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলেনঃ তোমরা কি মনে করো এ মহিলা তার সন্তানকে আগুনে ফেলে দিতে পারে? আমরা বললামঃ না। ফেলার ক্ষমতা রাখলে সে কখনো করবে না। তারপর তিনি বলেনঃ এ মহিলাটি তার সন্তানের উপর যতটুকু দয়ালু, আল্লাহ তার বান্দার উপর তদাপেক্ষা অধিক দয়ালু।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৭৪ | 5574 | ۵۵۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৫১. আল্লাহ দয়া-মায়াকে একশ ভাগে ভাগ করেছেন
৫৫৭৪। হাকাম ইবনু নাফি’ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহ রহমত একশ ভাগে ভাগ করেছেন। তার মধ্যে নিরানব্বই ভাগ তিনি নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। আর একভাগ নাযিল করেছেন। ঐ একভাগের কারনেই সৃষ্ট জগত একে অন্যের উপর দয়া করে। এমনকি ঘোড়া তার বাচ্চার উপর থেকে পা তুলে নেয় এ ভয়ে যে, সে ব্যথা পাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৭৫ | 5575 | ۵۵۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৫২. সন্তান খাবে, এ ভয়ে তাকে হত্যা করা
৫৫৭৫। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ হে আল্লাহর রাসুল! কোন গুনাহ সবচেয়ে বড়? তিনি বললেনঃ কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ স্থির করা, অথচ তিনই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। তিনি বললেনঃ তারপরে কোনটি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার সাথে খাবে, এ ভয়ে তোমার সন্তানকে হত্যা করা। তিনি বললেনঃ তারপরে কোনটি? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমার প্রতিবেশীর স্ত্রীর সাথে যিনা করা। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথার সত্যতা ঘোষণা করে নাযিল হলঃ আর যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোন ইলাহকে ডাকে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৭৬ | 5576 | ۵۵۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৫৩. শিশুকে কোলে নেওয়া
৫৫৭৬। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি শিশুকে নিজের কোলে নিলেন। তারপর তাকে তাহনীক করালেন। শিশুটি তার কোলে পেশাব করে দিল। তখন তিনি পানি আনতে বললেন এবং তা (পেশাবের স্থানে) ঢেলে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৭৭ | 5577 | ۵۵۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৫৪. শিশুকে রানের উপর রাখা
৫৫৭৭। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়েদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে হাতে ধরে তার এক রানের উপর বসাতেন এবং হাসানকে বসাতেন অন্য রানে। তারপর উভয়কে একত্রে মিসিয়ে দিতেন। পরে বলতেনঃ হে আল্লাহ! আপনি এদের উভয়কে রহম করুন, কেননা আমিও এদের ভালবাসি।

অপর এক সূত্রে তামীমী বলেন, এ হাদীসটির ব্যাপারে আমার অন্তরে সন্দেহের উদ্রেক হল। মনে মনে ভাবলাম, আবূ উসমান থেকে আমি এতো এতো হাদীছ বর্ণনা করেছি; এ হাদীসটি মনে হয় তার থেকে শুনিনি। পরে অনুসন্ধান করে দেখলাম যে, আবূ উসমানের কাছ থেকে শ্রুত যে সব হাদীস আমার কাছে লিখিত ছিল, তার মধ্যে এটি পেয়ে গেলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৭৮ | 5578 | ۵۵۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৫৫. সম্মানিত ব্যক্তির সাথে সৌজন্যমূলক আচরন করা ঈমানের অংশ
৫৫৭৮। উবায়দ ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি অন্য কোন নারীর উপর ততটা ঈর্ষান্বিত ছিলাম না, যতটা ঈর্ষাম্বিত ছিলাম খাদীজার উপর। অথচ আমার বিবাহের তিন বছর পূর্বেই তিনি ইন্তেকাল করেন। কারণ, আমি শুনতে পেতাম, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার নাম উল্লেখ করতেন। আর জান্নাতের মধ্যে মনি মুক্তার একটি ঘরের সুসংবাদ খাদীজাকে শোনাবার জন্য তার রব তাকে আদেশ দেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনও বকরী যবেহ করলে তার একটি অংশ খাদীজার বান্ধবীদের কাছে অবশ্যই পাঠিয়ে দিতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৭৯ | 5579 | ۵۵۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৫৬. ইয়াতীমের তত্ত্বাবধানকারীর ফাযীলাত
৫৫৭৯। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওহাব (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি ও ইয়াতীমের তত্বাবধানকারী জান্নাতে এভাবে (পাশাপাশি) থাকবো। এ কথা বলার সময় তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুল মিলিয়ে ইশারা করে দেখান।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৮০ | 5580 | ۵۵۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৫৭. বিধবার ভরণ-পোষণের চেষ্টাকারী
৫৫৮০। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সাফওয়ান ইবনু সুলায়ম (রাঃ) থেকে বর্ণিত , তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে মারফু রূপে বর্ণনা করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি বিধবা ও মিসকীনদের ভরণপোষণের চেষ্টা করে, সে আল্লাহর পথের জিহাদকারীর ন্যায়। অথবা সে ঐ ব্যাক্তির ন্যায় যে দিনে সিয়াম পালন করে ও রাতে (নফল ইবাদতে) দাঁড়িয়ে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৮১ | 5581 | ۵۵۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৫৭. বিধবার ভরণ-পোষণের চেষ্টাকারী
৫৫৮১। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৮২ | 5582 | ۵۵۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৫৮. মিসকীনদের অভাব দূরীকরণের চেষ্টারত ব্যক্তি সম্পর্কে
৫৫৮২। আবদুল্লাহ ইবনু মাসালামা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিধবা ও মিসকীনদের অভাব দুর করার চেষ্টারত ব্যাক্তি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর তুল্য।

ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ) আমার ধারণা যে কা’নাবী (বুখারীর উস্তাদ আবদুল্লাহ) সন্দেহ প্রকাশ করেছেনঃ সে সারারাত দণ্ডায়মান ব্যাক্তির ন্যায় যে (ইবাদতে) ক্লান্ত হয় না এবং এমন সিয়াম পালনকারীর ন্যায় যে সিয়াম ভাঙ্গে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৮৩ | 5583 | ۵۵۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৫৯. মানুষ ও পশুর প্রতি দয়া
৫৫৮৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ সুলায়মান মালিক ইবনু হুওয়ায়রিস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা কয়েকজন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকটে এলাম। তখন আমরা ছিলাম প্রায় সমবয়সী যুবক। বিশ দিন তার কাছে অমরা অবস্থান করলাম। তিনি বুঝতে পারলেন, আমরা আমাদের পরিবারবর্গের কাছে ফিরে যেতে উদগ্রীব হয়ে পড়েছি। যাদের আমরা বাড়িতে রেখে এসেছি। তাদের সম্পর্কে তিনি আমাদের কাছে জিজ্ঞাসা করলেন। আমরা তা তাকে অবহিত করলাম। তিনি ছিলেন কোমল হৃদয় ও দয়ালু তাই তিনি বললেনঃ তোমরা তোমাদের পবিবারবর্গের কাছে ফিরে যাও। তাদের (কুরআন) শিক্ষা দাও, (সৎ কাজের) আদেশ কর এবং যে ভাবে আমাকে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে দেখেছ ঠিক সেভাবে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর। যখন সালাত (নামায/নামাজ) এর সময় হবে তখন তোমাদের একজন আযান দেবে এবং যে তোমাদের মধ্যে বড় সে ইমামতি করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৮৪ | 5584 | ۵۵۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৫৯. মানুষ ও পশুর প্রতি দয়া
৫৫৮৪। ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একদা একব্যাক্তি পথে হেঁটে যাচ্ছিল। তার তীব্র পিপাসা লাগে। সে একটি কুপ পেয়ে যায়। সে তাতে অবতরণ করলো এবং পানি পান করলো, তারপরে উঠে এলো। হঠাৎ দেখলো একটি কুকুর হাপাচ্ছে। পিপাসায় কাতর হয়ে কাদা চাটছে। লোকটি ভাবলো এ কুকুরটি পিপাসায় সেরূপ কষ্ট পাচ্ছে যেরূপ কষ্ট আমার হয়েছিল। তখন সে কুপে অবতরণ করলো এবং তার মোজার মধ্যে পানি ভরলো, তারপর মুখ দিয়ে তা (কামড়িয়ে) ধরে উপরে উঠে এলো। তাহাপর সে কুকুরটিকে পানি পান করালো। আল্লাহ তাকে এর প্রতিদান দিলেন এবং তাকে মাফ করে দিলেন। সাহাবীগন জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! জন্তুর জন্যও কি আমাদের পুরষ্কার আছে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। প্রত্যেক দয়াদ্র হৃদয়ের অধিকারীদের জন্য পুরস্কার আছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৮৫ | 5585 | ۵۵۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৫৯. মানুষ ও পশুর প্রতি দয়া
৫৫৮৫। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার সালাতে দাঁড়ান। আমরাও তার সঙ্গে দাঁড়িয়ে গেলাম। এ সময় এক বেদুঈন সালাত (নামায/নামাজ) এর মধ্যে থেকেই বলে উঠলোঃ ইয়া আল্লাহ! আমার ও মুহাম্মদের উপর রহম করো এবং আমাদের সাথে আর কারো প্রতি রহম করো না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাম ফিরানোর পর বেদুঈন লোকটিকে বললেনঃ তুমি একটি প্রশস্ত জিনিসকে অর্থাৎ আল্লাহর রহমতকে সংকুচিত করেছো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৮৬ | 5586 | ۵۵۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৫৯. মানুষ ও পশুর প্রতি দয়া
৫৫৮৬। আবূ নু’আয়ম (রহঃ) … নুমান ইবনু বশীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তুমি মু’মিনদের পারস্পরিক দয়া ভালবাসা ও সহানুভূতি প্রদর্শনে একটি দেহের ন্যায় দেখতে পাবে। যখন দেহের একটি অঙ্গ রোগে আক্রান্ত হয় তখন শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রাত জাগে এবং জ্বরে অংশ গ্রহণ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৮৭ | 5587 | ۵۵۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৫৯. মানুষ ও পশুর প্রতি দয়া
৫৫৮৭। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলমান যদি কোন গাছ লাগায়, তা থেকে কোন মানুষ বা জানোয়ার যদি কিছু খায় তবে তা তার জন্য সাদাকা হিসেবে গণ্য হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৮৮ | 5588 | ۵۵۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৫৯. মানুষ ও পশুর প্রতি দয়া
৫৫৮৮। উমর ইবন হাফস (রহঃ) … জারীর ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি (সৃষ্টির প্রতি) দয়া করে না, (স্রষ্টার পক্ষ থেকে) তার প্রতি দয়া করা হবে না

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৮৯ | 5589 | ۵۵۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৬০. প্রতিবেশীর জন্য অসীয়ত। মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা আল্লাহর ‘ইবাদাত কর, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না, মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার কর, এবং আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী, দূর প্রতিবেশী, সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের আয়ত্তাধীন দাস-দাসীদের সথেও, আল্লাহ গর্বিত অহংকারী লোককে কখনো ভালবাসেন না।
৫৫৮৯। ইসমাঈল ইবনু আবূ উয়াইস (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে জিবরীল (আলাইহিস সালাম) সব সময় প্রতিবেশী সম্পর্কে অসীয়ত করে থাকেন। এমনকি, আমার মনে হয়, তিনি প্রতিবেশীকে ওয়ারিস বানিয়ে দিবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৯০ | 5590 | ۵۵۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৬০. প্রতিবেশীর জন্য অসীয়ত। মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা আল্লাহর ‘ইবাদাত কর, তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না, মাতা-পিতার সাথে সদ্ব্যবহার কর, এবং আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত, নিকট প্রতিবেশী, দূর প্রতিবেশী, সাথী, মুসাফির এবং তোমাদের আয়ত্তাধীন দাস-দাসীদের সথেও, আল্লাহ গর্বিত অহংকারী লোককে কখনো ভালবাসেন না।
৫৫৯০। মুহাম্মদ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জিবরীল (আলাইহিস সালাম) বরাবরই আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে অসীয়ত করে থাকেন। এমনকি আমার মনে হয় যে অচিরেই তিনি প্রতিবেশীকে ওয়ারিস বানিয়ে দিবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৯১ | 5591 | ۵۵۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৬১. যে ব্যক্তির অনিষ্ট থেকে তার প্রতিবেশী নিরাপদ থাকে না, তার গুনাহ্
৫৫৯১। আসিম ইবনু আলী (রহঃ) … আবূ শুরাইয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা বলছিলেনঃ আল্লাহর কসম! সে ব্যাক্তি মুমিন নয়। আল্লাহর কসম! সে লোক মুমিন নয়! আল্লাহর কসম। সে ব্যাক্তি মু’মিন নয়। জিজ্ঞাসা করা হলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ কে সে লোক? তিনি বললেনঃ যে লোকের প্রতিবেশী তার অনিষ্ট থেকে নিরাপদ থাকে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৯২ | 5592 | ۵۵۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৬২. কোন প্রতিবেশী নারী তার প্রতিবেশী নারীকে তুচ্ছ মনে করবে না
৫৫৯২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ হে মুসলিম মহিলাগণ। কোন প্রতিবেশী নারী যেন তার অপর প্রতিবেশী নারীকে (তার পাঠানো হাদিয়া ফেরত দিয়ে) হেয় প্রতিপন্ন না করে। যদিও তা বকরীর পায়ের ক্ষুর হোক না কেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৯৩ | 5593 | ۵۵۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৬৩. যে ব্যক্তি আল্লাহও আখিরাতের দিনে বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়
৫৫৯৩। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহতে ও আখিরাতের দিনে ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে। যে আল্লাহ ও শেষ দিনে বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। যে লোক আল্লাহ ও শেষ দিনে বিশ্বাস করে, সে যেন ভাল কথা বলে, অথবা চুপ করে থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৯৪ | 5594 | ۵۵۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৬৩. যে ব্যক্তি আল্লাহও আখিরাতের দিনে বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়
৫৫৯৪। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ শুরায়হ আদাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কথা বলেছিলেন, তখন আমার দু’কান (সে কথা) শুনছিলো ও আমার দু’চোখ (তাকে) দেখছিলো। তিনি বলছিলেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের উপর বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে সম্মান করে। যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের উপর বিশ্বাস করে সে যেন তার মেহমানকে সম্মান করে তার প্রাপ্যের ব্যাপারে। জিজ্ঞেস করা হল মেহমানের প্রাপ্য কি, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বলেনঃ একদিন একরাত ভালরূপে মেহমানদারী করা। আর তিন দিন হল (সাধারণ) মেহমানদারী, আর তার চেয়েও বেশী হলে তা হচ্ছে তার প্রতি অনুগ্রহ। যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও আখিরাতের দিনের বিশ্বাস রাখে, সে যেন ভাল কথা বলে অথবা নীরব থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৯৫ | 5595 | ۵۵۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৬৪. প্রতিবেশীদের অধিকার নির্ধারিত হবে দরজার নিকটবর্তীতার দ্বারা
৫৫৯৫। হাজ্জাজ ইবনু মিনহাল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার দু’জন প্রতিবেশী আছে। আমি তাদের কার নিকট হাদিয়া পাঠাব? তিনি বললেনঃ যার দরজা (ঘর) তোমার নিকটবর্তী, তার কাছে (পাঠাবে)।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৯৬ | 5596 | ۵۵۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৬৫. প্রত্যেক সৎ কাজই সদাকা
৫৫৯৬। আলী ইবনু আয়্যাশ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক সৎ কাজই সাদাকা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৯৭ | 5597 | ۵۵۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৬৫. প্রত্যেক সৎ কাজই সদাকা
৫৫৯৭। আদম (রহঃ) … আবূ মূসা আশ আরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রত্যেক মুসলমানেরই সাদাকা করা আবশ্যক। উপস্থিত লোকজন বললোঃ যদি সে সাদাকা করার মত কিছু না পায়। তিনি বললেনঃ তাহলে সে নিজের হাতে কাজ করবে। এতে সে নিজেও উপকৃত হবে এবং সাদাকা করবে। তারা বললঃ যদি সে সক্ষম না হয় অথবা বলেছেনঃ যদি সে না করে? তিনি বললেনঃ তা হলে সে যেন বিপদগ্রস্থ মাযলুমের সাহায্য করে। লোকেরা বললঃ সে যদি তা না করে? তিনি বললেনঃ তা হলে সে সৎ কাজের নির্দেশ দিবে, অথবা বলেছেন, সাওয়াবের কাজের আদেশ দিবে। তারা বললঃ তাও যদি সে না করে? তিনি বললেনঃ তা হলে সে যেন মন্দ কাজ থেকে বেঁচে থাকে। কারণ, এই তার জন্য সাদাকা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৯৮ | 5598 | ۵۵۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৬৬. মধুর ভাষা সাদাকা। আবু হুরায়রা (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, মধুর ভাষা হল সাদাকা।
৫৫৯৮। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … আদী ইবনু হাতিম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাহান্নামের আগুনের কথা উল্লেখ করলেন। তারপর তা থেকে পানাহ চাইলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন। পরে আবার জাহান্নামের আগুনের কথা উল্লেখ করলেন, তারপর তা থেকে পানাহ চাইলেন এবং তার মুখ ফিরিয়ে নিলেন। শু’বা (রহঃ) বলেনঃ দু’বার যে বলেছেন, এতে আমার কোন সন্দেহ নেই। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বেঁচে থাক এক টুকরা খেজুর দিয়ে হলেও। যদি তা না পাও তা হলে মধুর ভাষা বিনিময়ে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৫৯৯ | 5599 | ۵۵۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৬৭. সকল কাজে নম্রতা
৫৫৯৯। আবদুল আযীয (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়াহুদীদের একটি দল নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললঃ السَّامُ عَلَيْكُمْ তোমাদের উপর মৃত্যু আসুক। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি এ কথার অর্থ বুঝলাম এবং বললামঃ وَعَلَيْكُمُ السَّامُ وَاللَّعْنَةُ‏ তোমাদের উপরও মৃত্যু ও লানত আসুক। আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ থাম হে আয়িশা! আল্লাহ সকল কাজে নম্রতা ভালবাসেন। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! অপনি কি শোনেন নি তারা কি বলেছে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি বলেছি وَعَلَيْكُمْ এবং তোমাদের উপরও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০০ | 5600 | ۵٦۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৬৭. সকল কাজে নম্রতা
৫৬০০। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওহহাব (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা এক বেদুঈন মসজিদে পেশাব করলো। লোকেরা উঠে (তাকে মারার জন্য) তার দিকে গেল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তার পেশাব করা বন্ধ করো না। তারপর তিনি এক বালতি পানি আনালেন এবং পানি পেশাবের উপর ঢেলে দেয়া হলো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০১ | 5601 | ۵٦۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৬৮. মু’মিনদের পারস্পরিক সহযোগিতা
৫৬০১। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ মূসা (আশআরী) (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিন মুমিনের জন্য ইমরাতের ন্যায়, যার এক অংশ অন্য অংশকে মজবুত করে রাখে। এরপর তিনি (হাতের) আঙ্গুলগুলো (আরেক হাতের) আঙ্গুল (এর ফাকে) ঢুকালেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপবিষ্ট ছিলেন। এমন সময় এক ব্যাক্তি কিছু প্রশ্ন করার জন্য কিংবা কোন প্রয়োজন পূরণের জন্য এল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের দিকে ফিরে তাকালেন এবং বললেনঃ তোমরা তার জন্য (কিছু দেওয়ার) সুপারিশ করো। এতে তোমাদের সাওয়াব দেওয়া হবে। আল্লাহ তার নাবীর আবেদন অনুযায়ী যা ইচ্ছা তা করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০২ | 5602 | ۵٦۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৬৯. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ যে ব্যক্তি ভাল কাজের সুপারিশ করবে, সে ঐ কাজের সাওয়াবের একটা অংশ পাবে …… ক্ষমতাবান পর্যন্ত। كِفْلٌ অর্থ অংশ। আবু মুসা (রাঃ) বলেন, কিফলাইন শব্দের অর্থ হলো, দিগুন সাওয়াব।
৫৬০২। মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট কোন ভিখারী অথবা অভাবগ্রস্ত লোক আসলে তিনি বলতেনঃ তোমরা সুপারিশ করো, তাহলে তোমরা সাওয়াব পাবে। অবশ্য আল্লাহ তাআলা তার রাসূলের দু’আ অনুযায়ী যা ইচ্ছা তা দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৩ | 5603 | ۵٦۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৭০. নাবী (সাঃ) অশালীন ছিলেন না, আর ইচ্ছে করে অশালীন উক্তি করতেন না
৫৬০৩। হাফস ইবনু উমর ও কুতায়বা (রহঃ) … মাসরুক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমরা আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) এর নিকট এমন সময় গেলাম, যখন তিনি মুআবিয়া (রাঃ) এর সন্মুখে কুফায় আগমন করেন। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা উল্লেখ করে বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বভাবগত অশালীন ছিলেন না আর ইচ্ছাকৃতভাবেও অশালীন উক্তি করতেন না। তিনি আরও বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক উত্তম ঐ ব্যাক্তি, যে স্বভাবে সর্বোত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৪ | 5604 | ۵٦۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৭০. নাবী (সাঃ) অশালীন ছিলেন না, আর ইচ্ছে করে অশালীন উক্তি করতেন না
৫৬০৪। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার একদল ইয়াহুদী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললোঃ আস-সামু আলাইকুম। (আপনার উপর মরণ আসুক)। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ তোমাদের উপরই এবং তোমাদের উপর আল্লাহর লানত ও গযব পতিত হোক। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আয়িশা! তুমি একটু থামো। নম্রতা অবলম্বন করা তোমার কর্তব্য। দৃঢ় ব্যবহার ও অশালীন আচরণ পরিহার করো। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ তারা যা বলেছে, তা কি আপনি শোনেন নি? তিনি বললেনঃ আমি যা উত্তর দিলাম, তুমি তা শোননি? আমি তাদের এ কথাটি তাদের উপর ফিরিয়ে দিয়েছি। সুতরাং আমার কথাই তাদের ব্যাপারে কবুল হবে আর আমার ব্যাপারে তাদের কথা কবুল করে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৫ | 5605 | ۵٦۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৭০. নাবী (সাঃ) অশালীন ছিলেন না, আর ইচ্ছে করে অশালীন উক্তি করতেন না
৫৬০৫। আসবাগ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গালি-গালাজকারী, অশালীন ও অভিশাপদাতা ছিলেন না। তিনি আমাদের কারো উপর নারায হলে, কেবল এতটুকু বলতেন তার কি হলো। তার কপাল ধুলাময় হোক।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৬ | 5606 | ۵٦۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৭০. নাবী (সাঃ) অশালীন ছিলেন না, আর ইচ্ছে করে অশালীন উক্তি করতেন না
৫৬০৬। আমর ইবনু ঈসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট প্রবেশের অনুমতি চাইল। তিনি লোকটিকে দেখে বললেনঃ সে সমাজের নিকৃষ্ট লোক এবং সমাজের দুষ্ট সন্তান। এরপর সে যখন এসে বসলো, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সামনে আনন্দ প্রকাশ করেন এবং উদারতার সাথে মেলামেশা করেন। লোকটি চলে গেলে আয়িশা (রাঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! যখন আপনি লোকটিকে দেখলেন তখন তার সম্পর্কে এরূপ বললেন, পরে তার সাথে আপনি সহাস্যে ও উদার প্রাণে সাক্ষাৎ করলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আয়িশা। তুমি কখন আমাকে অশালীন রূপে পেয়েছ? কিয়ামতের দিন আল্লাহর নিকট মর্যাদার দিক দিয়ে মানুষের মধ্যে সবচেয়ে নিকৃষ্ট সেই ব্যাক্তি, যার বদ স্বভাবের কারনে মানুষ তাকে পরিত্যাগ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৭ | 5607 | ۵٦۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৭১. সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপনতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নাবী (সাঃ) মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। আর রমযান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন। আবু যার (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন তাঁর নিকট নাবী (সাঃ) এর আবির্ভাবের খবর আসল তখন তিনি তাঁর ভাইকে বললেনঃ তুমি এই মাক্কা উপত্যকার দিকে সফর কর এবং তাঁর কথা শুনে এসো। তাঁর ভাই ফিরে এসে বললেনঃ আমি তাঁকে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশ দিতে দেখেছি।
৫৬০৭। আমর ইবনু আওন (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর, সবার চাইতে অধিক দানশীল এবং লোকদের মধ্যে সর্বাধিক সাহসী ছিলেন। একদা রাতের বেলায় (একটি বিরাট আওয়াজ শুনে) মদিনাবাসীরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। তাই লোকেরা সেই শব্দের দিকে রওনা হয়। তখন তারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সামনা সামনি পেলেন তিনি সে আওয়াজের দিকে লোকদের আগেই বের হবে গিয়েছিলেন। তিনি বলতে লাগলেনঃ তোমরা ঘাবড়িওনা তোমরা ঘাবড়িওনা, (আমি দেখে এসেছি, কিছুই নেই)। এ সময় তিনি আবূ তালহা (রাঃ) এর জ্বীন বিহীন ঘোড়ার উপর সওয়ার ছিলেন। আর তার কাঁধে একখানা তলোয়ার ঝুলাছিল। এরপর তিনি বললেনঃ অবশ্য এ ঘোড়াটিকে আমি সমুদ্রের মত (দ্রুতগামী) পেয়েছি। অথবা বললেনঃ এ ঘোড়াটিতো একটি সমুদ্র।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৮ | 5608 | ۵٦۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৭১. সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপনতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নাবী (সাঃ) মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। আর রমযান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন। আবু যার (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন তাঁর নিকট নাবী (সাঃ) এর আবির্ভাবের খবর আসল তখন তিনি তাঁর ভাইকে বললেনঃ তুমি এই মাক্কা উপত্যকার দিকে সফর কর এবং তাঁর কথা শুনে এসো। তাঁর ভাই ফিরে এসে বললেনঃ আমি তাঁকে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশ দিতে দেখেছি।
৫৬০৮। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এমন কোন জিনিসই চাওয়া হয় নি, যার উত্তরে তিনি ‘না’ বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬০৯ | 5609 | ۵٦۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৭১. সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপনতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নাবী (সাঃ) মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। আর রমযান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন। আবু যার (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন তাঁর নিকট নাবী (সাঃ) এর আবির্ভাবের খবর আসল তখন তিনি তাঁর ভাইকে বললেনঃ তুমি এই মাক্কা উপত্যকার দিকে সফর কর এবং তাঁর কথা শুনে এসো। তাঁর ভাই ফিরে এসে বললেনঃ আমি তাঁকে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশ দিতে দেখেছি।
৫৬০৯। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … মাসরুক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার আমরা আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) এর নিকট বসাছিলাম। তিনি আমাদের কাছে হাদীস বর্ণনা করছিলেন। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্বভাবত অশালীন ছিলেন না এবং তিনি ইচ্ছা করেও কাউকে অশালীন কথা বলতেন না। তিনি বলতেনঃ তোমাদের মধ্যে যার স্বভাব-চরিত্র ভাল সেই তোমাদের মধ্যে সব চাইতে উত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১০ | 5610 | ۵٦۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৭১. সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপনতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নাবী (সাঃ) মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। আর রমযান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন। আবু যার (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন তাঁর নিকট নাবী (সাঃ) এর আবির্ভাবের খবর আসল তখন তিনি তাঁর ভাইকে বললেনঃ তুমি এই মাক্কা উপত্যকার দিকে সফর কর এবং তাঁর কথা শুনে এসো। তাঁর ভাই ফিরে এসে বললেনঃ আমি তাঁকে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশ দিতে দেখেছি।
৫৬১০। সাঈদ ইবনু আবূ মারয়াম (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক মহিলা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে একখানা বুরদাহ নিয়ে আসলেন। সাহল (রাঃ) লোকজনকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আপনারা কি জানেন বুরদাহ কী? তারা বললেনঃ তা চাদর। সাহল (রাঃ) বললেনঃ এটি এমন চাদর যা ঝালরসহ বোনা হয়েছে। এরপর সেই মহিলা আরজ করলেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি আপনাকে এটি পরিধানের জন্য দিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চাদরখানি এমনভাবে গ্রহন করলেন, যেন তার এটির দরকার ছিল। এরপর তিনি এটি পরিধান করলেন। এরপর সাহাবীদের মধ্যে থেকে এক ব্যাক্তি সেটি তার দেহে দেখে ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটা কতই না সুন্দর! আপনি এটি আমাকে দিয়ে দিন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হ্যাঁ (দিয়ে দেব)।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে চলে গেলেন, অন্যান্য সাহাবীরা তাকে দোষারোপ করে বললেনঃ তুমি ভাল কাজ করোনি। যখন তুমি দেখলে যে, তিনি চাদরখানা এমনভাবে গ্রহণ করেছেন যেন এটি তার প্রয়োজন ছিল। এরপরও তুমি সেটা চেয়ে বসলে। অথচ তুমি অবশ্যই জানো যে, তার কাছে যখনই কোন জিনিস চাওয়া হয়, তখন তিনি কাউকে কখনো বিমুখ করেন না। তখন সেই ব্যাক্তি বললোঃ যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এটি পরিধান করেছেন, তখন তার বরকত হাসিল করার আশায়ই আমি একাজ করেছি, যেন আমি এ চাদরটাকে আমার কাফন বানাতে পারি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১১ | 5611 | ۵٦۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৭১. সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপনতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নাবী (সাঃ) মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। আর রমযান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন। আবু যার (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন তাঁর নিকট নাবী (সাঃ) এর আবির্ভাবের খবর আসল তখন তিনি তাঁর ভাইকে বললেনঃ তুমি এই মাক্কা উপত্যকার দিকে সফর কর এবং তাঁর কথা শুনে এসো। তাঁর ভাই ফিরে এসে বললেনঃ আমি তাঁকে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশ দিতে দেখেছি।
৫৬১১। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কিয়ামতের সময় ঘনিয়ে আসলে, ইল্‌ম কমে যাবে, অন্তরে কৃপণতা ঢেলে দেয়া হবে এবং হারজের আধিক্য হবে। সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেনঃ হারজ কি, ইয়া রাসুলাল্লাহ? তিনি বললেনঃ হত্যা, হত্যা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১২ | 5612 | ۵٦۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৭১. সচ্চরিত্রতা, দানশীলতা সম্পর্কে ও কৃপনতা ঘৃণ্য হওয়া সম্পর্কে। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেছেন, নাবী (সাঃ) মানবজাতির মধ্যে সবচেয়ে দানশীল ছিলেন। আর রমযান মাসে তিনি আরও অধিক দানশীল হতেন। আবু যার (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন তাঁর নিকট নাবী (সাঃ) এর আবির্ভাবের খবর আসল তখন তিনি তাঁর ভাইকে বললেনঃ তুমি এই মাক্কা উপত্যকার দিকে সফর কর এবং তাঁর কথা শুনে এসো। তাঁর ভাই ফিরে এসে বললেনঃ আমি তাঁকে উত্তম চরিত্রে ভূষিত হওয়ার নির্দেশ দিতে দেখেছি।
৫৬১২। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আমি দশ বছর পর্যন্ত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমত করেছি। কিন্তু তিনি কখনো আমার প্রতি উঃ শব্দ বলেন নি। একথা জিজ্ঞাসা করেন নি তুমি এ কাজ কেন করলে এবং কেন করলে না?

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৩ | 5613 | ۵٦۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৭২. মানুষ নিজ পরিবারে কী ভাবে চলবে
৫৬১৩। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আসওয়াদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আয়িশা (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলামঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ গৃহে কী কাজে রত থাকতেন? তিনি বললেনঃ সাধারন গৃহ-কর্মে ব্যস্ত থাকতেন। আর যখন সালাত (নামায/নামাজ) এর সময় হয়ে যেতো, তখন উঠে সালাতে চলে যেতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৪ | 5614 | ۵٦۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৩. ভালবাসা আল্লাহ তা‘আলার তরফ থেকে আসে
৫৬১৪। আমর ইবনু আলী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন আল্লাহ তা’আলা কোন বান্দাকে ভালাবাসেন, তখন তিনি জিবরীল (আলাইহিস সালাম) কে ডেকে বলেন, আল্লাহ তা’আলা অমুক বান্দাকে ভালবাসেন তুমিও তাকে ভালবাসবে। তখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাকে ভালবাসেন এবং তিনি আসমানবাসীদের নিকট ঘোষণা করে দেন যে, আল্লাহ তা’আলা অমুককে ভালবাসেন, অতএব তোমরাও তাকে ভালবাসবে। তখন আসমানবাসীরাও তাকে ভালবাসতে শুরু করে। তারপর আল্লাহ তা’আলার তরফ থেকে যমীন বাসীদের মধ্যে তার জনপ্রিয়তা সৃষ্টি করা হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৫ | 5615 | ۵٦۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৪. আল্লাহ তা‘আলার উদ্দেশ্যে ভালবাসা
৫৬১৫। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি ঈমানের স্বাদ পাবে না, যতক্ষন না সে কোন মামুষকে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যে ভালবাসবে, আর যতক্ষণ না সে যে কুফরী থেকে আল্লাহ তাকে উদ্ধার করেছেন, তার দিকে ফিরে যাওয়ার চাইতে আগুন নিক্ষিপ্ত হওয়াকে সর্বাধিক প্রিয় মনে করবে এবং যতক্ষণ না আল্লাহ ও তাঁর রাসুল তার কাছে অন্য সব কিছুর চেয়ে অধিক প্রিয় হবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৬ | 5616 | ۵٦۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৫. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ হে ঈমানদারগণ! তোমরা একদল অপর দলের প্রতি উপহাস করবে না। সম্ভবতঃ উপহাস্য দল, উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে …… আর তারাই যালিম।
৫৬১৬। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু যামআ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের বায়ু নির্গমনে কাউকে হাসতে নিষেধ করেছেন। তিনি আরও বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কেন তার স্ত্রীকে ষাড়কে পিটানোর মত প্রহার করবে? পরে হয়ত, সে আবার তার সাথে গলাগালিও করবে। সাওরী ওহায়ব আবূ মুআবিয়া (রহঃ) হিশাম (রহঃ) থেকে বর্ণনা করেন, ‘ষাড় পিটানোর স্থলে’ ‘দাসকে বেত্রাঘাত করার মত’।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৭ | 5617 | ۵٦۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৫. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ হে ঈমানদারগণ! তোমরা একদল অপর দলের প্রতি উপহাস করবে না। সম্ভবতঃ উপহাস্য দল, উপহাসকারীদের চেয়ে উত্তম হতে পারে …… আর তারাই যালিম।
৫৬১৭। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিনায় (খুতবা দান কালে) জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা কি জানো আজ কোন দিন? সকলেই বললেনঃ আল্লাহ ও তার রাসুলই অধিক জ্ঞাত আছেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আজ এটি হারাম (সম্মানিত) দিন। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা জানো, এটি কোন শহর? সবাই জবাব দিলেনঃ আল্লাহ ও তার রাসুলই বেশী জানেন। তখন তিনি বললেনঃ এটি একটি হারাম (সম্মানিত) শহর। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা কি জানো, এটা কোন মাস? তারা বললেনঃ আল্লাহ ও তার রাসূলই বেশী অবগত। তখন তিনি বললেনঃ এটা একটা হারাম (সম্মানিত) মাস। তারপর তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা তোমাদের (একে অন্যের) জান মাল ও ইজ্জত-আবরুকে হারাম করেছেন, যেমন হারাম তোমাদের এ দিনটি তোমাদের এ মাস ও তোমাদের এ শহর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৮ | 5618 | ۵٦۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬১৮। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুসলমানের গালি দেয়া ফাসিকী (কবীরা গুনাহ) এবং একে অন্যের সাথে মারামারি করা কুফরী। শুবা (রহঃ) সূত্রে গুনদারও অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬১৯ | 5619 | ۵٦۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬১৯। আবূ মা’মার (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একজন অপর জনকে ফাসিক বলে যেন গালি না দেয় এবং একজন আর একজনকে যেন কাফির বলে অপবাদ না দেয়। কেননা যদি সে তা না হয়ে থাকে তবে তা তার উপরই পতিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২০ | 5620 | ۵٦۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬২০। মুহাম্মদ ইবনু সিনান (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অশালীন অভিশাপদাতা ও গালিদাতা ছিলেন না। তিনি কাউকে তিরস্কার করার সময় শুধু বলতেনঃ তার কি হল? তার কপাল ধূলাময় হোক।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২১ | 5621 | ۵٦۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬২১। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … সাবিত ইবনু যাহহাক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি গাছের নীচে বাইআত গ্রহণকারীদের অন্যতম সাহাবী ছিলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি ইসলাম ধর্ম ছাড়া অন্য কোন ধর্মের উপর কসম খাবে সে ঐ ধর্মেরই শামিল হয়ে যাবে, আর মানুষ যে জিনিসের মালিক নয়, এমন জিনিসের নযর আদায় করা তার উপর ওয়াজিব নয়। আর কোন ব্যাক্তি দুনিয়াতে যে জিনিস দ্বারা আত্নহত্যা করবে, কিয়ামতের দিন সে জিনিস দিয়েই তাকে আযাব দেওয়া হবে। কোন ব্যাক্তি কোন মুমিনের উপর অভিশাপ দিলে, তা তাকে হত্যা করারই শামিল হবে। আর কোন মুমিনকে কাফির বলে অপবাদ দিলে, তাও তাকে হত্যা করারই মত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২২ | 5622 | ۵٦۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬২২। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … সুলায়মান ইবনু সুরাদ (রাঃ) নামক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জনৈক সাহাবী থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ দু’জন লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে একে অন্যকে গালি দিচ্ছিল। তাদের একজন এত ক্রুদ্ধ হয়েছিল যে, তার চেহারা ফুলে বিগড়ে গিয়েছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি অবশ্যই একটই কালেমা জানি। যদি সে ঐ কালেমাটি পড়তো, তা হলে তার ক্রোধ চড়ে যেত। তখন এক ব্যাক্তি তার নিকট গিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ঐ কথাটি তাকে জানালো। আর বললো যে তুমি শয়তান থেকে পানাহ চাও। তখন সে বললোঃ আমার মধ্যে কি কোন রোগ দেখা যাচ্ছে? আমি কি পাগল? তুমি চলে যাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৩ | 5623 | ۵٦۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬২৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের “লায়লাতুল কদর” সম্বন্ধে জানানোর জন্য বেরিয়ে আসলেন। তখন দু’জন মুসলমান ঝগড়া করছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি ‘লায়লাতুল কদর’ সম্পর্কে তোমাদের খবর দিতে বেরিয়ে এসেছিলাম। এ সময় অমুক অমুক পরস্পর ঝগড়া করছিল। এজন্য ঐ খবরের ‘ইল্‌ম’ আমার থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে। এটা হয়ত তোমাদের জন্য কল্যাণকরই হবে। অতএব তোমরা তা রমযানের শেষ দশকের নবম, সপ্তম ও পঞ্চম রাতে তালাশ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৪ | 5624 | ۵٦۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৬. গালি ও অভিশাপ দেয়া নিষিদ্ধ
৫৬২৪। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ তার উপর একখানা চাদর ও তার গোলামের গায়ে একখানা চাদর দেখে বললামঃ যদি আমি ঐ চাদরটি নিতেন ও পরিধান করতেন, তাহলে আপনার এক জোড়া হইয়ে যেত আর গোলামকে অন্য কাপড় দিয়ে দিতেন। তখন আবূ যার (রাঃ) বলেনঃ একদিন আমার ও আরেক ব্যাক্তির মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছিল। তার মা ছিল জনৈক অনারব মহিলা। আমি তার মা তুলে গালি দিলাম। তখন লোকটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তা বলল। তিনি আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি অমুককে গালি দিয়েছ? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তুমি কি তার মা তুলে গালি দিয়েছ? আমি বললামঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই তুমিতো এমন ব্যাক্তি যার মধ্যে জাহেলী যুগের আচরন বিদ্যমান। আমি বললামঃ এখনো? এই বৃদ্ধ বয়সেও? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ! তারা তো তোমাদেরই ভাই। আল্লাহ তাআলা ওদের তোমাদের অধীন করেছেন। সুতরাং আল্লাহ তায়ালা যার ভাইকে তার অধীন করে দেন, সে নিজে যা খায়, তাকেও যেন তা খাওয়ায়। সে নিজে যা পরে, তাকেও যেন তা পরায়। আর তার উপর যেন এমন কোন কাজের চাপ না দেয়, যা তার শক্তির বাইরে। আর যদি তার উপর এমন কঠিন কোনো চাপ দিতেই হয় তাহলে সে নিজেও যেন তাকে সাহায্য করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৫ | 5625 | ۵٦۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৭. মানুষের গুনাগুন উল্লেখ করা জায়িয। যেমন লোকে কাউকে বলে ‘লম্বা’ অথবা ‘খাটো’। আর নাবী (সাঃ) কাউকে ‘যুল্ইয়াদাইন’ (লম্বা হাত বিশিষ্ট) বলেছেন। তবে কারো বদনাম অথবা অপমান করার উদ্দেশ্যে (জায়িয) নয়
৫৬২৫। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিয়ে যোহরের সালাত (নামায/নামাজ) দু’রাকআত আদায় করে সালাম ফিরালেন। তারপর সিজাদার জায়গার সামনে রাখা একটি কাঠের দিকে আগ্রসর হয়ে তার উপর তার এক হাত রাখলেন। সেদিন লোকদের মাঝে আবূ বকর, উমর (রাঃ)-ও হাযির ছিলেন। তারা তার সঙ্গে কথা বলতে ভয় পেলেন। কিন্তু তাড়াহুড়া করে (কিছু) লোক বেয়িয়ে গিয়ে বলতে লাগলঃ সালাত (নামায/নামাজ) খাট করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন ছিল, যাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘যুলইয়াদাইন’ (দুই হাতাওয়ালা অর্থাৎ লম্বা হাতা ওয়ালা) বলে ডাকতেন, সে বললঃ ইয়া নাবী আল্লাহ! আপনি কি ভুল করেছেন, না সালাত (নামায/নামাজ) ছোট করা হয়েছে? তিনি বললেনঃ আমি ভুলে যাইনি এবং (সালাত (নামায/নামাজ) ছোটও করা হয়নি। তারা বললেনঃ বরং আপনই ভুলে গেছেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তখন তিনি বললেনঃ ‘যুলইয়াদাইন’ ঠিকই বলেছে। তারপর তিনি উঠে দাঁড়িয়ে দু’রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন ও সালাম ফিরালেন। এরপর ‘তাকবীর’ বলে আগের সিজদার মত অথবা তার চেয়ে দীর্ঘ সিজদা করলেন। তারপর আবার মাথা তুললেন এবং তাকবীর বললেন এবং আগের সিজদার ন্যায় অথবা তার থেকে দীর্ঘ সিজদা করলেন। এরপর মাথা উঠালেন এবং তাকবীর বললেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৬ | 5626 | ۵٦۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৮. গীবত করা। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর বাণীঃ তমাদের কেউ যেন অন্যের গীবত না করে …… অতি দয়ালু পর্যন্ত।
৫৬২৬। ইয়াহইয়া (রহঃ) … ইবনু আব্বাস থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুটি কবরের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই এ দু’জন কবরবাসীকে আযাব দেওয়া হচ্ছে। তবে বড় কোন গুনাহের কারণে কবরে তাদের আযাব দেয়া হচ্ছে না। এই কবরবাসী পেশাব করার সময় সতর ঢাকতোনা। আর ঐ কবরবাসী গীবত (পরনিন্দা) করে বেড়াত। এরপর তিনি খেজুরের একটি কাঁচা ডাল আনিয়ে সেটি দু’টুকরো করে এক টুকরো এ কবরটির উপর এবং এক টুকরো ঐ কবরটির উপর গেড়ে দিলেন। তারপর বললেনঃ এ ডালের টুকরো দুটি না শুকানো পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাদের আযাব কমিয়ে দিবেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৭ | 5627 | ۵٦۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৭৯. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আনসারদের ঘরগুলো উত্তম
৫৬২৭। কাবীসা (রহঃ) … উসাইদ সায়েদী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আনসারদের ঘরগুলোর মধ্যে নাজ্জার গোত্রের ঘরগুলোই উত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৮ | 5628 | ۵٦۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৮০. ফাসাদ ও সন্দেহ সৃষ্টিকারীদের গীবত করা জায়েয
৫৬২৮। সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসার অনুমতি চাইলে তিনি বললেনঃ তাকে অনুমতি দাও। সে বংশের নিকৃষ্ট ভাই অথবা বললেনঃ সে গোত্রের নিকৃষ্ট সন্তান। লোকটি ভিতরে আসলে তিনি তার সাথে নম্রভাবে কথাবার্তা বললেন। তখন আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ? আপনি এ ব্যাক্তি সম্পর্কে যা বলার তা বলেছেন। পরে আপনি আবার তার সাথে নম্রতার সাথে কথাবার্তা বললেন। তখন তিনি বললেনঃ হে আয়িশা! নিশ্চয়ই সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যাক্তি সে-ই যার অশালীনতা থেকে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ তার সংশ্রব ত্যাগ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬২৯ | 5629 | ۵٦۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৮১. চোগলখোরী কবীরা গুনাহ্
৫৬২৯। ইবনু সালাম … ইবনু আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মদিনার কোন বাগানের বাইরে গেলেন। তখন তিনি এমন দু’জন লোকেরা আওয়াজ শুনলেন, যাদের কবরে আযাব দেওয়া হচ্ছিল। তিনি বললেনঃ তাদের দু’জনকে আযাব দেয়া হচ্ছে। তবে বেশী গুনাহের দরুন আযাব দেওয়া হচ্ছে না। আর তা হল কবীরা গুনাহ। এদের একজন পেশাবের সময় সতর ঢাকতো না। আর অপর জন চোগলখোরী করে বেড়াতো। তারপর তিনি একটা কাঁচা ডাল আনিয়ে তা ভেঙ্গে দু’ টুকরো করে, এ কবরে এক টুকরো আর ঐ কবরে এক টুকরো গেড়ে দিলেন এবং বললেনঃ দু’টি যতক্ষণ পর্যন্ত না শুকাবে ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের আযাব হালকা করে দেওয়া হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩০ | 5630 | ۵٦۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৮২. চোগলখোরী নিন্দনীয় গুনাহ্। আল্লাহর বাণীঃ অধিক কসমকারী, লাঞ্চিত ব্যক্তি পশ্চাতে নিন্দাকারী এবং চোগলখোরী করে বেড়ায় এমন ব্যক্তি। প্রত্যেক চোগলখোর ও প্রত্যেক পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ নিন্দাকারীদের ধংস অনিবার্য
৫৬৩০। আবূ নুয়াঈম (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে, চোগলখোর কখনো জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩১ | 5631 | ۵٦۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৩. মহান আল্লাহর বাণীঃ তোমরা মিথ্যা কথা পরিহার কর।
৫৬৩১। আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি মিথ্যা কথা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা আর মুর্খতা পরিত্যাগ করলো না আল্লাহর নিকট (সিয়ামের নামে) তার পানাহার ত্যাগের কোন প্রয়োজন নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩২ | 5632 | ۵٦۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৪. দু’মুখো ব্যক্তি সম্পর্কে
৫৬৩২। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামতের দিন তুমি আল্লাহর নিকট ঐ ব্যাক্তিকে সবচেয়ে নিকৃষ্ট পাবে যে দুমুখো। সে এদের সামনে একরূপ নিয়ে আসতো আর ওদের কাছে অন্য রূপে ধরা দিত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৩ | 5633 | ۵٦۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৫. আপন সঙ্গীকে তার সম্পর্কে অপরের উক্তি অবহিত করা
৫৬৩৩। মুহাম্মাদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (গনীমতের মাল) ভাগ করলেন। তখন আনসারদের মধ্য থেকে এক (মুনাফিক) ব্যাক্তি বললঃ আল্লাহর কসম! এ কাজে মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর সন্তুষ্টি চাননি। তখন আমি এসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ কথার খবর দিলাম। এতে তার চেহারার রং বদলে গেল। তিনি বললেনঃ আল্লাহ মূসা (আলাইহিস সালাম) এর উপর রহম করুন। তাকে এর চাইতে অনেক বেশী কষ্ট দেওয়া হয়েছে তবুও তিনি সবর করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৪ | 5634 | ۵٦۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৬. অপছন্দনীয় প্রশংসা
৫৬৩৪। মুহাম্মদ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজনকে আরেক জনের প্রাশংসা করতে শুনলেন এবং সে তার প্রসংসায় অতিরঞ্জন করছিল। তখন তিনি বললেনঃ তোমরা তো লোকটিকে মেরে ফেললে অথবা বললেনঃ লোকটির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিলে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৫ | 5635 | ۵٦۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৬. অপছন্দনীয় প্রশংসা
৫৬৩৫। আদম (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে এক ব্যাক্তির আলোচনা আসল। তখন একজন তার খুব প্রশাংসা করলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আফসোস তোমার প্রতি! তুমিতো তোমার সাথীর গলা কেটে ফেললে। এ কথাটি তিনি কয়েক বার বললেন। (তারপর তিনি বললেনঃ) যদি তোমাদের কারো প্রশংসা করতেই হয়, তবে সে যেন বলে, আমি তার সম্পর্কে এমন, এমন ধারণা করি, যদি তার এরূপ হওয়ার কাথা মনে করা হয়। তার প্রকৃত হিসাব গ্রহনকারীতো হলেন আল্লাহ আর আল্লাহর মুকাবিলায় কেউ কারো পবিত্রতা বর্ণনা করবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৬ | 5636 | ۵٦۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৭. নিজের অভিজ্ঞতা অনুযায়ী কারো প্রশংসা করা। সা’দ (রাঃ) বলেন, আমি নাবী (সাঃ) কে যমিনের উপর বিচরণকারী কোন লোকের ব্যাপারে এ কথা বলতে শুনিনি যে, সে জান্নাতী এক ‘আবদুল্লাহ্ ইবনু সালাম (রাঃ) ব্যতীত
৫৬৩৬। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইযার সম্পর্কে কঠোর শাস্তির কথা উল্লেখ করলেন, তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ আমার লুঙ্গিরও একদিক দিয়ে ঝুলে পড়ে। তিনি বললেনঃ তুমি তাদের অন্তর্ভুক্ত নও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৭ | 5637 | ۵٦۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৮. মহান আল্লাহর বানীঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়বিচার ও সদ্ব্যবহারের নির্দেশ দান করেন … গ্রহন পর্যন্ত। এবং আল্লাহর বানীঃ তোমাদের সীমা অতিক্রম করার পরিনতি তোমাদেরই উপর বার্তাবে “যার উপর যুলম করা হয় নিশ্চয়ই আল্লাহ তাকে সাহায্য করেন” আর মুসলিম অথবা কাফিরের কু-কর্ম প্রচার থেকে বিরত থাকা
৫৬৩৭। হুমায়দী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এত এত দিন এমন অবস্থায় অতিবাহিত করছিলেন যে তার খেয়াল হতো যেন তিনি তার স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হয়েছেন, অথচ তিনি মিলিত হননি। আয়িশা (রাঃ) বলেন, এরপর তিনি আমাকে বললেনঃ হে আয়িশা! আমি যে ব্যাপারে জানতে চেয়েছিলাম, সে বিষয়ে আল্লাহ আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। (আমি স্বপে দেখলাম) আমার নিকট দুই ব্যাক্তি এলো। একজন বসলো আমার পায়ের কাছে এবং আরেক জন শিয়রে। পায়ের কাছে বসা বাক্তি শিয়রে বসা ব্যাক্তিকে জিজ্ঞাসা করলঃ এ ব্যাক্তির অবস্থা কি? সে বললঃ তাকে যাদু করা হয়েছে। সে আবার জিজ্ঞাসা করললঃ তাকে কে যাদু করেছে? সে বললঃ লাবীদ ইবনু আসাম। সে আবার জিজ্ঞাসা করলঃ কিসের মধ্যে? সে বললো নর খেজুর গাছের খোলার ভিতবে তাঁর চিরুনীর এক টুকরা ও আচড়ানো চুল পুরে দিয়ে ‘যারওয়ান’ কুপের মধ্যে একটি পাথরের নীচে রেখেছে।

এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সেখানে) গিয়ে দেখে বললেনঃ এ সেই কূপ যা আমাকে স্বপ্নে দেখানো হয়েছে। সেখানের খেজুর গাছের মাথাগুলো যেন শয়তানের মাথা এবং সে কুপের পানি যেন মেহদী নিংড়ানো পানি। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নির্দেশে তা কুপ থেকে বের করা হলো। আয়িশা (রাঃ) বলেন, তখন আমি আরয করলামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি কেন অর্থাৎ এটি প্রকাশ করলেন না? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আল্লাহ তো আমাকে শিফা দান করেছেন, আর আমি মানুষের নিকট কারো কুকর্ম ছাড়ানো পছন্দ করি না। আয়িশা (রাঃ) বলেনঃ লাবীদ ইবনু আসাম ছিল ইয়াহুদীদের মিত্র বনূ যুরায়কের একব্যাক্তি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৮ | 5638 | ۵٦۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৯. একে অন্যকে হিংসা করা এবং পরস্পর বিরোধিতা করা নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহর বাণীঃ আমি হিংসুকের হিংসার অনিষ্ট থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি
৫৬৩৮। বিশর ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ধারণা করা থেকে বিরত থাকো। কারো প্রতি ধারণা পোষন করা সবচেয়ে বড় মিথ্যা ব্যাপার। তোমরা দোষ অন্বেষন করো না, গোয়েন্দাগিরী করো না, গরস্পর হিংসা করো না একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষন করো না এবং পরস্পর বিরোধে লিপ্ত হয়ো না। বরং তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকেো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৩৯ | 5639 | ۵٦۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৮৯. একে অন্যকে হিংসা করা এবং পরস্পর বিরোধিতা করা নিষিদ্ধ। মহান আল্লাহর বাণীঃ আমি হিংসুকের হিংসার অনিষ্ট থেকে তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি
৫৬৩৯। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষন করো না, পরস্পর হিংসা করো না পরস্পর বিরুদ্ধাচরন করো না। তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকেো। কোন মুসলমানের জন্য তিন দিনের বেশী তার ভাইকে পরিত্যাগ করে থাকা জায়িয নয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪০ | 5640 | ۵٦٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৯০. মহান আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! তোমরা বেশী অনুমান করা থেকে বিরত থাক।। আয়াতের শেষ পর্যন্ত
৫৬৪০। আবদুল্লাহ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা অনুমান থেকে বেঁচে থেকেো। কারণ অনুমান বড় মিথ্যা ব্যাপার। আর কারো দোষ অনুসন্ধান করো না, গোয়েন্দাগিরী করো না, একে অন্যকে ধোঁকা দিও না, আর পরস্পর হিংসা করো না, একে অন্যের প্রতি বিদ্বেষভাব পোষণ করো না এবং পরস্পর বিরুদ্ধাচরন করো না। বরং সবাই আল্লাহর বান্দা ভাই ভাই হয়ে থেকো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪১ | 5641 | ۵٦٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৯১. কি ধরনের ধারণা করা যেতে পারে
৫৬৪১। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ অমুক অমুক ব্যাক্তি আমাদের দ্বীন সম্পর্কে কিছু জানে বলে আমি ধারণা করি না। রাবী লায়স বর্ণনা করেন যে, এ দু’ব্যাক্তি মুনাফিক ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪২ | 5642 | ۵٦٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৯১. কি ধরনের ধারণা করা যেতে পারে
৫৬৪২। ইয়াহইয়া ইবনু যুকায়র (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, লায়স আমাদের কাছে উক্ত হাদীস বর্ননা করেন। (এতে রয়েছে) আয়িশা (রাঃ) বলেন একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এসে বললেনঃ হে আয়িশা! অমুক অমুক ব্যাক্তি আমাদের দ্বীন, যার উপর আমরা রয়েছি, সে সম্পর্কে কিছু জানে বলে আমি ধারণা করি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৩ | 5643 | ۵٦٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৯২. মু’মিনের নিজের দোষ গোপন রাখা
৫৬৪৩। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছি যে আমার সকল উম্মত মাফ পাবে, তবে প্রকাশকারী ব্যতীত। আর নিশ্চয় এ বড়ই ধৃষ্টতা যে, কোন ব্যাক্তি রাতে অপরাধ করল যা আল্লাহ গোপন রাখলেন। কিন্তু সে ভোর হলে বলে বেড়াতে লাগল, হে অমুক! আমি আজ রাতে এমন এমন কর্ম করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত অতিবাহিত করল যে, আল্লাহ তার কর্ম গোপন রেখেছিলেন, আর সে ভোরে উঠে তার উপর আল্লাহর পর্দা খুলে ফেলল।

পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৪ | 5644 | ۵٦٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৯২. মু’মিনের নিজের দোষ গোপন রাখা
৫৬৪৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … সাফওয়ান ইবনু মুহরিয (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি ইবনু উমর (রাঃ) কে জিজ্ঞেস করলঃ আপনি ‘নাজওয়া’ (কিয়ামতের দিন আল্লাহ ও তাঁর মুমিন বান্দার মধ্যে গোপন আলোচনা) সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কি বলতে শুনেছেন? তিনি বললেন, তিনি বলেছেনঃ তোমাদের এক ব্যাক্তি তার রবের এমন নিকটবর্তী হবে যে তিনি তার উপর তাঁর নিজস্ব পর্দা ঢেলে দিয়ে দু’বার জিজ্ঞাসা করবেনঃ তুমি অমুক অমুক কাজ করেছিলে? সে বলবেঃ হ্যাঁ। আবার তিনি জিজ্ঞাসা করবেনঃ তুমি এমন এমন কাজ করেছিলে? সে বলবে হ্যাঁ। এভাবে তিনি তার স্বীকরোক্তি নিবেন। এরপর বলবেন আমি দুনিয়াতে তোমর এগুলো ঢেকে রেখেছিলাম। আজ আমি তোমার এসব গুনাহ মাফ করে দিচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৫ | 5645 | ۵٦٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৩. অহংকার। মুজাহিদ (রহঃ) বলেন, (আল্লাহর বানী) عطفه অর্থাৎ তার ঘাড়। ثَانِيَ عطفه অর্থাৎ নিজে নিজে মনে অহমিকা পোষণকারী
৫৬৪৫। মুহাম্মাদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … হারিসা ইবনু ওহাব খুযায়ী (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি কি তোমাদের জান্নাতীদের সম্পর্কে অবহিত করবো না? (তারা হলেন) ঐ সকল লোক যারা অসহায় এবং যাদের হীন মনে করা হয়। তারা যদি আল্লাহর নামে কসম খেয়ে বসে, তাহলে তা তিনি নিশ্চয়ই পুরা করে দেন। আমি কি তোমাদের জাহান্নামীদের সম্পর্কে অবহিত করবো না? তারা হলোঃ রুঢ় স্বভাব, কঠিন হৃদয় ও দাম্ভিক।

মুহাম্মদ ইবনু ঈসা (রহঃ) সুত্রে আনাস ইবনু ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদিনাবাসীদের কোন এক দাসীও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাত ধরে যেখানে ইচ্ছা নিয়ে যেত। আর তিনিও তার সাথে ঢলে যেতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৬ | 5646 | ۵٦٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৪. সম্পর্ক ত্যাগ এবং এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) এর বাণীঃ কোন লোকের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিনদিনের বেশি কথাবার্তা পরিত্যাগ করা জায়িয নহে
৫৬৪৬। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আওফ ইবনু মালিক ইবনু তুফায়ল (রাঃ) আয়িশা (রাঃ) এর বৈপিত্রেয় ভ্রাতুষ্পূত্র থেকে বর্ণিত। আয়িশা (রাঃ) কে অবহিত করা হল যে, তাঁর কোন বিক্রির কিংবা দান করার ব্যাপারে আবদুল্লাহ ইবনু যুবায়র বলেছেনঃ আল্লাহর কসম! আয়িশা (রাঃ) অবশ্যই বিরত থাকবেন, নতুবা আমি নিশ্চয়ই তার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করবো। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ সত্যই কি তিনি এ কথা বলেছেন? তারা বললেন হ্যাঁ। তখন আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! আমি আমার উপর মানত (শপথ) করে নিলাম যে আমি ইবনু যুবায়রের সাথে আর কখনও কথা বলবো না। যখন এ বর্জনকাল দীর্ঘ হল, তখন ইবনু যুবায়র (রাঃ) আয়িশা (রাঃ) এর নিকট সুপারিশ পাঠালেন। তখন তিনি বললেন না! আল্লাহর কসম! এ ব্যাপারে আমি কখনো কোন সুপারিশ গ্রহণ করব না। আর আমার মানতও ভঙ্গ করব না। এভাবে যখন ব্যপারটা ইবনু যুবায়র (রাঃ) এর জন্য দীর্ঘ হতে লাগলো, তখন তিনি যহুরা গোত্রের দু’ব্যাক্তি মিসওয়ার ইবনু মাখরামা ও আবদুর রহমান ইবনু আসওয়াদ ইবনু আবদ ইয়াগুসের সাথে আলোচনা করলেন।

তিনি তাদের দু’জনকে বললেনঃ আমি তোমাদের আল্লাহর কসম দিয়ে বলছি যে, তোমরা দু’জন (যে প্রকারে হোক) আমাকে আয়িশা (রাঃ) এর কাছে নিয়ে যাও। কারন আমার সাথে তার বিচ্ছিন্ন থাকার মানত জায়িয নয়। তখন মিসওয়ার (রাঃ) ও আবদুর (রাঃ) উভয়ে চাদর দিয়ে ইবনু যুবায়রকে জড়িয়ে নিয়ে এলেন এবং উভয়ে আয়িশা (রাঃ) এর কাছে অনুমতি চেয়ে বললেনঃ আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওবাবারাকাতুহু আমরা কি ভেতরে আসতে পারি? আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ আপনারা ভেতরে আসুন। তারা বললেনঃ আমরা সবাই? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তোমরা সবাই প্রবেশ কর। তিনি জানতেন না যে তাদের সঙ্গে ইবনু যুবায়র রয়েছেন। তাই যখন তাঁরা ভেতরে প্রবেশ করলেন তখন ইবনু যুবায়র পর্দার ভেতর ডুকে গেলেন এবং আয়িশা (রাঃ) কে জড়িয়ে ধরে, তাকে আল্লাহর কসম দিতে লাগলেন এবং কাঁদতে আরম্ভ করলেন।

তখন মিসওয়ার (রাঃ) ও আবদুর রহমান (রাঃ)-ও তাকে আল্লাহর কসম দিতে আরম্ভ করলেন। তখন আয়োশা (রাঃ) ইবনু যুবায়ের (রাঃ) এর সাথে কথা বলেন এবং তার ওযর কবুল করে নেন। আর তাঁরা বলতে লাগলেনঃ আপনি তো নিশ্চয়ই জানেন যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্ক বর্জন করতে নিষেধ করেছেন এবং বলেছেনঃ কোন মুসলমানের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিন দিনের অধিক সম্পর্ক ছিন্ন রাখা হারাম।

যখন তারা আয়িশা (রাঃ) কে বেশী বেশী বুঝাতে চাপ দিতে লাগলেন, তখন তিনিও তাদের বুঝাতে ও কাঁদতে লাগলেন এবং বললেনঃ আমি ‘মানত’ করে ফেলেছি। আর মানত তো শক্ত ব্যাপার। কিন্তু তারা একাধারে চাপ দিতেই থাকলেন অবশেষে তিনি ইবনু যুবায়র (রাঃ) এর সাথে কথা বলে ফেললেন এবং তার নযরের জন্য (কাফফারা স্বরুপ) চল্লিশ জন গোলাম আযাদ করে দিলেন। এর পরে, যখনই তিনি তার মানতের স্মরণ করতেন তখন তিনি এত বেশী কাঁদতেন যে, তার চোখের পানিতে তার ওড়না ভিজে যেত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৭ | 5647 | ۵٦٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৪. সম্পর্ক ত্যাগ এবং এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) এর বাণীঃ কোন লোকের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিনদিনের বেশি কথাবার্তা পরিত্যাগ করা জায়িয নহে
৫৬৪৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা পরস্পর বিদ্বেষ ভাবাপন্ন হয়ো না, হিংসা করো না এবং একে অপর থেকে বিচ্ছিন্ন থেকেো না। আর তোমরা সবাই আল্লাহর বান্দা ও পরস্পর ভাই-ভাই হয়ে থেকো। কোন মুসলমানের জন্য জায়েয নয় যে, সে তার ভাই থেকে তিন দিনের বেশী সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৮ | 5648 | ۵٦٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৪. সম্পর্ক ত্যাগ এবং এ সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ্ (সাঃ) এর বাণীঃ কোন লোকের জন্য তার ভাইয়ের সাথে তিনদিনের বেশি কথাবার্তা পরিত্যাগ করা জায়িয নহে
৫৬৪৮। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ আইউব আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তির জন্য হালাল নয় যে সে তার ভাই এর সাথে তিন দিনের বেশী এমনভাবে সম্পর্ক ছিন্ন রাখবে যে, দু’জনে সাক্ষাৎ হলেও একজন এদিকে আর অপর জন সে দিকে মুখ ফিরিয়ে নেবে। তাদের মধ্যে যে সর্ব প্রথম সালামের সূচনা করবে, সেই উত্তম ব্যাক্তি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৪৯ | 5649 | ۵٦٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৫. যে আল্লাহর নাফরমানী করে তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েয। কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) যখন (তাবুক যুদ্ধের সময়) নাবী (সাঃ) এর পেছনে থেকে গিয়েছিলেন, তখনকার কথা উল্লেখ করে বলেন যে, নাবী (সাঃ) মুসলিমদেরকে আমাদের সাথে কথাবার্তা বলা নিষেধ করে দিয়েছিলেন। তিনি পঞ্চাশ দিনের কথাও উল্লেখ করেন।
৫৬৪৯। মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন (একদিন) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি তোমার রাগ ও খুশী উভয়ই বুঝতে পারি। আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলামঃ আপনি তা কি ভাবে বুঝে নেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ? তিনি বললেনঃ যখন তুমি খুশী থাক, তখন তুমি বলোঃ হ্যাঁ, মুহাম্মদের রবের কসম! আর যখন তুমি রাগান্বিত হও, তখন তুমি বলে থাকোঃ না, ইবরাহীমের রবের কসম! আয়িশা (রাঃ) বললেন, আমি বললাম হ্যাঁ। আমিতো শুধু আপনার নামটি বর্জন করি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫০ | 5650 | ۵٦۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৬. আপন লোকের সাথে প্রতিদিন সাক্ষাৎ করবে অথবা সকালে-বিকালে
৫৬৫০। ইবরাহীম ইবনু মূসা ও লায়স (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার বুঝ হওয়ার পর থেকেই আমি আমার বাবা-মাকে ইসলামের অন্তর্ভুক্তই পেয়েছি। আমাদের উপর এমন কোন দিন অতিবাহিত হতো না, যে দিনের উভয় প্রান্তে সকালে ও বিকেলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট আসতেন না। একদা ঠিক দুপুর বেলায় আমরা আবূ বকর (রাঃ) এর কক্ষে বসা ছিলাম। একজন বলে উঠলেনঃ এই যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! তিনি এমন সময় এসেছেন, যে সময় তিনি আমাদের এখানে আসেন না। আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ তাকে কোন গুরত্বপূর্ণ বিষয়ই এ মুহূর্তে নিয়ে এসেছে। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আমাকে মক্কা থেকে বের হয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫১ | 5651 | ۵٦۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৯. ভ্রাতৃত্বের ও প্রতিশ্রুতির বন্ধন স্থাপন। আবু জুহাই.ফা.হ্ (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) সালমান ও আবু দারদার মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেন। ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) বলেনঃ আমরা মাদীনায় আসলে নাবী (সাঃ) আমার ও সা’দ ইবনু রাবী-এর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে দেন
৫৬৫১। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আনসার পরিবারের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলেন এরপর তিনি তাদের সেখানে খাবার খেলেন। এরপর যখন তিনি বেরিয়ে আসার ইচ্ছা করলেন, তখন ঘরের মধ্যে এক জায়গায় (সালাত (নামায/নামাজ) এর জন্য) বিছানা করতে নির্দেশ দিলেন। তখন তার জন্য পানি ছিটিয়ে একখানা চাটাই বিছিয়ে দেয়া হলো। তারপর তিনি এর উপর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন এবং তাদের জন্য দু’আ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫২ | 5652 | ۵٦۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৮. প্রতিনিধিদের সাথে সাক্ষাৎ উপলক্ষে সুন্দর পোশাক পরিধান করা
৫৬৫২। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মাদ (রহঃ) … ইয়াহইয়া ইবনু আবূ ইসহাক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, সালিম ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইস্তাবরাক কী? আমি বললামঃ তা মোটা ও সুন্দর রেশমী বস্ত্র। তিনি বললেনঃ আমি আবদুল্লাহ ইবনু উমরকে বলতে শুনেছি যে, উমর (রাঃ) এক ব্যাক্তির গায়ে একজোড়া মোটা রেশমী বস্ত্র দেখলেন। তখন তিনি সেটা নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে এসে বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি এটি কিনে নিন। যখন আপনার নিকট কোন প্রতিনিধি দল আসবে, (তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য) তখন আপনি এটি পরবেন। তিনি বললেনঃ রেশমী বস্ত্র একমাত্র ঐ ব্যাক্তই পরবে, যার (আখিরাতে) কোন হিসসা নেই। এরপর বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উমর (রাঃ) এর নিকট এরূপ একজোড়া কাপড় পাঠালেন। তখন তিনি সেটি নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে এসে বললেনঃ আপনি এটা আমার নিকট পাঠালেন, অথচ নিজেই এ জাতীয় বস্ত্র সম্পর্কে যা বলার তা বলেছিলেন। তিনি বললেনঃ আমি তো এটা একমাত্র এ জন্য তোমার নিকট পাঠিয়েছি, যেন তুমি এর বিনিময়ে কোন মাল গ্রহন করতে পার। এ হাদীসের প্রেক্ষিতে ইবনু উমর (রাঃ) কারুকার্য খচিত কাপড় পড়তে অপছন্দ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৩ | 5653 | ۵٦۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৯. ভ্রাতৃত্বের ও প্রতিশ্রুতির বন্ধন স্থাপন। আবু জুহাই.ফা.হ্ (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) সালমান ও আবু দারদার মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেন। ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) বলেনঃ আমরা মাদীনায় আসলে নাবী (সাঃ) আমার ও সা’দ ইবনু রাবী-এর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে দেন
৫৬৫৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আবদুর রহমান ইবনু আওফ (রাঃ) আমাদের নিকট এলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর ও সা’দ ইবনু রাবী এর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে দেন। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার বিয়ের পর তাকে বললেনঃ তুমি ওয়ালিমা করো অন্তত একটি বকরী দিয়ে হলেও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৪ | 5654 | ۵٦۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৪৯৯. ভ্রাতৃত্বের ও প্রতিশ্রুতির বন্ধন স্থাপন। আবু জুহাই.ফা.হ্ (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) সালমান ও আবু দারদার মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করেন। ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) বলেনঃ আমরা মাদীনায় আসলে নাবী (সাঃ) আমার ও সা’দ ইবনু রাবী-এর মধ্যে ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক স্থাপন করে দেন
৫৬৫৪। মুহাম্মদ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … আসিম (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, আমি আনাস ইবনু মাসিক (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলাম। আপনি জানেন কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইসলামে প্রতিশ্রুতির সম্পর্ক নেই? তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো আমার ঘরে বসে কুরায়শ আর আনসারদের মধ্যে পরস্পর প্রতিশ্রুতির বন্ধন স্থাপন করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৫ | 5655 | ۵٦۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৫৫। হিব্বান ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রিফাআ কুরাবী (রাঃ) তাঁর স্ত্রীকে তালাক দেন এবং অকাট্য তালাক দেন। এরপর আবদুর রহমান ইবনু যুবায়র তাকে বিয়ে করেন। পরে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি রিফাআর কাছে ছিলেন এবং রিফাআ তাকে শেষ তিন তালাক দিয়ে দেন এবং তাঁকে আবুদর রহমান ইবনু যুবায়র বিয়ে করেন। আল্লাহর কসমা ইয়া রাসুলাল্লাহ! এর কাছে তো শুধু এ কাপড়ের মত রয়েছে। (একথা বলে) তিনি তাঁর ওড়নার আচল ধরে উঠালেন। রাবী বলেনঃ তখন আবূ বকর (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বসা ছিলেন এবং সাঈদ ইবনু আসও ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি লাভের অপেক্ষায় হুজরার দরজার কাছে বসা ছিলেন। তখন সা’দ (রাঃ) আবূ বকর (রাঃ) কে উচ্চস্বরে ডেকে বললেনঃ হে আবূ বকর আপনি এই মহিলাকে কেন ধমক দিচ্ছেন না, যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে (প্রকাশ্যে) এসব কথাবার্তা বলছে তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কেবল মুচকি হাসছিলেন। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সম্ভবত তুমি আবার রিফাআ (রাঃ) এর নিকট ফিরে যেতে চাও। তা হবে না। যতক্ষন না তুমি তার এবং সে তোমার মিলন স্বাদ গ্রহন করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৬ | 5656 | ۵٦۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৫৬। ইসমাঈল (রহঃ) সা’দ ইবনু আবূ ওক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট (প্রবেশের) অনুমতি চাইলেন। তখন তার নিকট কুরাইশের কয়েকজন মহিলা প্রশ্নাদি করছিলেন এবং তাঁদের আওয়াজ তার আওয়াজের উপর চড়া ছিল। যখন উমর (রাঃ) অনুমতি চাইলেন। তখন তাঁরা তাড়াতাড়ি পর্দার আড়ালে চলে গেলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে অনুমতি দেওয়ার পর যখন তিনি ভিতরে প্রবেশ করলেন, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসছিলেন। উমর (রাঃ) বললেন আল্লাহ আপনাকে হাসি মুখে রাখুন; ইয়া রাসুলাল্লাহ! তখনই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমার নিকট যে সব মহিলা ছিলেন, তাদের প্রতি আমি আশ্চার্যান্বিত যে তারা তোমার আওয়াজ শোনা মাত্রই তাড়াতাড়ি পর্দার আড়ালে চলে গেলেন।

উমর (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এদের ভয় করার জন্য আপনিই অধিক যোগ্য ছিলেন। এরপর তিনি মহিলাদেরকে লক্ষ্য করে বললেন হে নিজের জানের দুশমনরা! তোমরা কি আমাকে ভয় কর, আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভয় কর না? তারা জবাব দিলেন আপনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনেক বেশী কঠিন ও কঠোর ব্যাক্তি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হে ইবনু খাত্তাব! শোনো! সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার জীবন; যখন শয়তান পথ চলতে তোমার সম্মুখীন হয়, তখনই শয়তান তোমার পথ ছেড়ে অন্য পথ ধরে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৭ | 5657 | ۵٦۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৫৭। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তায়েফে (অবরোধ করে) ছিলেন, তখন একদিন তিনি বললেনঃ ইনশাআল্লাহ আগামী কাল আমরা ফিরে যাব। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কয়েকজন সাহাবী বললেনঃ আমরা তায়েফ জয় না করা পর্যন্ত স্থান ত্যাগ করব না। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তবে ভোর হলেই তোমরা যুদ্ধে নেমে পড়বে। রাবী বলেনঃ তারা ভোর থেকেই তাদের সাথে ভীষণ লড়াই আরম্ভ করলেন। এতে তাদের মধ্যে বহুলোক জখম হয়ে পড়লেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ইয়া আল্লাহ আমরা আগামীকাল ফিরে চলে যাবো এবং তারা সবাই নীরব রইলেন। আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেসে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৮ | 5658 | ۵٦۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৫৮। মূসা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেন, এক বাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বলল আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। আমি রামাযানে (দিনে) আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। তিনি বললেনঃ তুমি একটি গোলাম আযাদ করে দাও। সে বলল আমার গোলাম নেই। তিনি বললেনঃ তাহলে একধারে দু’মাস সিয়াম পালন কর। সে বললঃ এতেও আমি সক্ষম নই। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তবে ষাটজন মিসকীনকে খাবার দাও। সে বললঃ তারও আমার সামর্থ নেই। তখন এক ঝুড়ি খেজুর এল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ প্রশ্নকারী ব্যাক্তিটি কোথায়? এইটি নিয়ে সাদাকা করে দাও। লোকটি বললঃ আমার চেয়ে বেশী অভাবগ্রস্ত আর কে? আল্লাহর কসম! মদিনার উভয় প্রান্তের মধ্যবর্তী স্থলে এমন কোন পরিবার নেই, যে আমাদের চেয়ে বেশী অভাবগ্রস্ত। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনভাবে হেসে দিলেন যে, তার চোয়ালের দাঁতগুলো প্রকাশ পেল এবং তিনি বললেনঃ তাহলে এখন এটা তোমরাই খেয়ে নাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৫৯ | 5659 | ۵٦۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৫৯। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ একবার আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে হেঁটে চলছিলাম। তখন তার গায়ে একখানা গাঢ় পাড়যুক্ত নাজরানী চাদর ছিল। এক বেদুঈন তাঁকে পেয়ে চাদরখানা ধরে ভীষণ জোরে টান দিল। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাঁধের উপর তাকিয়ে দেখলাম যে, জোরে চাদরখানা টানার কারনে তার কাঁধে চাদরের পাড়ের দাগ বসে গেছে। তারপর বেদুঈনটি বললোঃ হে মুহাম্মাদ! তোমার কাছে আল্লাহর দেওয়া সে সম্পদ আছে, তা থেকে আমাকে দেওয়ার নির্দেশ দাও। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার দিকে ফিরে হেসে দিলেন এবং তাকে কিছু দান করার নির্দেশ দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬০ | 5660 | ۵٦٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৬০। ইবনু নুমায়র (রহঃ) … জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি ইসলাম গ্রহন করার পর থেকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তার কাছে যেতে বাধা দেননি। তিনি আমাকে দেখামাত্রই আমার সামনে মুচকি হাসি হাসতেন। একদিন আমি অভিযোগ করে বললামঃ আমি ঘোড়ার পিঠে চেপে বসে আকড়ে থাকতে পারি না। তখন তিনি আমার বুকে হাত রেখে দু’আ করলেন। হে আল্লাহ! তাকে দৃঢ়মনা করে দিন এবং তাকে হেদায়েতকারী ও হেদায়েত প্রাপ্ত বানিয়ে দিন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬১ | 5661 | ۵٦٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৬১। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … যায়নাব বিনত উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ তো সত্য কথা বলতে লজ্জা করেন না। মেয়েলোকের স্বপ্নদোষ হলে তাদেরও কি গোসল করতে হবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। যদি সে পানি (বীর্য) দেখতে পায়। তখন উম্মে সুলায়মা (রাঃ) হেসে দিলেন এবং জিজ্ঞাসা করলেন মেয়ে লোকেরও কি স্বপ্নদোষ হতে পারে? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা না হলে, সন্তানের মধ্যে সাদৃশ্য হয় কেমন করে?

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬২ | 5662 | ۵٦٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৬২। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এমনভাবে মুখভরে হাসতে দেখিনি যে, তার আলা জিহ্বা দেখা যেত। তিনি তো শুধু মুচকি হাসতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৩ | 5663 | ۵٦٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৫০০. মুচকি হাসি ও হাসি প্রসঙ্গে। ফাতিমা (রাঃ) বলেন, একবার নাবী (সাঃ) আমাকে গোপনে একটি কথা বললেন, আমি হাসলাম। ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) বলেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ হাসানো ও কাঁদানোর একমাত্র মালিক
৫৬৬৩। মুহাম্মাদ ইবনু মাহবুব ও খালীফা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জুমুআর দিন মদিনায় এল, যখন তিনি খুতবা দিচ্ছিলেন। সে বললোঃ বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেছে আপনি বৃষ্টিপাতের জন্য আপনার রবের নিকট দুআ করুন। তখন আকাশের দিকে তাকালেন তখন আমরা আকাশে কোন মেঘ দেখছিলাম না। তখন তিনি বৃষ্টিপাতের জন্য দু আ করলেন। এ সময় মেঘ এসে মিলিত হতে লাগলো। তারপর এমন বৃষ্টিপাত হল যে, মদিনার খাল-নালাগুলো প্রবাহিত হতে লাগল এবং ক্রমাগত পরবর্তী জুমুআ পর্যন্ত বৃষ্টিপাত হতে থাকল, মাঝে আর বিরতি হয়নি।

পরবর্তী জুমুআয় যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দিচ্ছিলেন, তখন ঐ ব্যাক্তি অথবা অন্য এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বলল, আমরা তো ডুবে গেছি। আপনি আপনার রবের কাছে দু’আ করুন, যেন তিনি আমাদের উপর থেকে বৃষ্টিপাত বন্ধ করে দেন। তখন তিনি হেসে দিলেন এবং দু’বার অথবা তিন বার দুআ করলেন। ইয়া আল্লাহ! (বৃষ্টি) আশে পাশে নিয়ে যান, আমাদের উপর নয়। তখন মেঘপুঞ্জ দূর হয়ে গিয়ে মদিনার আশে-পাশে বর্ষণ করতে লাগল। আমাদের উপর আর বর্ষিত হলো না। এতে আল্লাহ তাঁর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মুজিযা ও তার দুআ কবুল হওয়ার নিদর্শন দেখান।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৪ | 5664 | ۵٦٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৫০১. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ “হে ইমানদারগন তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সাথে থাকো” মিথ্যা কথা বলা নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে
৫৬৬৪। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সত্য নেকীর দিকে পরিচালিত করে আর নেকী জান্নাতের দিকে পৌছায়। আর মানুষ সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত থেকে অবশেষে সিদ্দীক এর দরজা লাভ করে। আর মিথ্যা মানুষকে পাপের দিকে নিয়ে যায়। পাপ তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। আর মানুষ মিথ্যা কথা বলতে বলতে অবশেষে আল্লাহর কাছে মহামিথ্যাবাদী রূপে সাব্যস্ত হয়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৫ | 5665 | ۵٦٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৫০১. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ “হে ইমানদারগন তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সাথে থাকো” মিথ্যা কথা বলা নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে
৫৬৬৫। ইবনু সালাম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুনাফিকের চিহ্ন তিনটিঃ যখন সে কথা বলে, তখন মিথ্যা বলে, আর যখন সে ওয়াদা করে, তখন তা ভঙ্গ করে আর যখন তার কাছে আমানত রাখা হয় তখন সে তাতে খিয়ানত করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৬ | 5666 | ۵٦٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৫০১. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ “হে ইমানদারগন তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সাথে থাকো” মিথ্যা কথা বলা নিষিদ্ধ প্রসঙ্গে
৫৬৬৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … সামুরা ইবনু জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আমি আজ রাতে (স্বপ্নে)! দু’জন লোককে দেখলাম। তারা বললোঃ আপনি যে লোকটির গাল চিরে ফেলতে দেখলেন, সে বড় মিথ্যাবাদী। সে এমন মিথ্যা বলত যে দুনিয়ার (লোক) আনাচে কানাচে তা ছড়িয়ে দিত। ফলে, কিয়ামত পর্যন্ত তার সাথে এরূপ ব্যবহার হতে থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৭ | 5667 | ۵٦٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৫০২. উত্তম চরিত্র
৫৬৬৭। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, মানুষের মধ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে চাল-চলনে, রীতি-নীতিতে ও স্বভাব-চরিত্রে, যার সবচেয়ে বেশী সামঞ্জস্য বিদ্যমান, তিনি হলেন ইবনু উম্মে আবদ। যখন তিনি নিজ ঘর থেকে বের হন, তখন থেকে ঘরে ফিরে আসা পর্যন্ত এ সামঞ্জস্য দেখা যায়। তবে তিনি একাকী নিজ গৃহে কিরূপ ব্যবহার করেন, তা আমরা জানি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৮ | 5668 | ۵٦٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৫০২. উত্তম চরিত্র
৫৬৬৮। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ উত্তম বানী হলো আল্লাহর কিতাব। আর সবচে উত্তম চরিত্র হল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চরিত্র।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৬৯ | 5669 | ۵٦٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৫০৩. ধৈর্যধারণ ও কষ্ট দেয়া। আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদের অগণিত পুরস্কার দেওয়া হবে
৫৬৬৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কষ্টের কথা শোনার পর আল্লাহ তা’আলার চেয়ে অধিক ধৈর্যধারনকারী কেউ বা কোন কিছুই নেই। লোকেরা তার জন্য সন্তান সাব্যস্ত করে; এরপরও তিনি তাদের বিপদ মুক্ত রাখেন এবং রিযিক দান করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭০ | 5670 | ۵٦۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৫০৩. ধৈর্যধারণ ও কষ্ট দেয়া। আল্লাহর বাণীঃ নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদের অগণিত পুরস্কার দেওয়া হবে
৫৬৭০। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গনীমতের মাল বণ্টন করলেন। তখন এক আনসারী ব্যাক্তি বললঃ আল্লাহর কসম এ বণ্টনে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করা হয়নি। তখন আমি বললামঃ জেনে রেখো, আমি নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এ কথা বলব। সুতরাং আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলাম। তখন তিনি তার সাহাবীগণের মধ্যে ছিলেন। এজন্য তার কাছে কথাটা চুপেচুপে বললাম। একথাটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে বড়ই কষ্টদায়ক হল, তার চেহারার রং বদলে গেল এবং তিনি এত রাগাম্বিত হলেন যে, আমি ভাবলাম, হায়! যদি আমি তার কাছে এ খবর না দিতাম, তবে কত ভাল হত। এরপর বললেনঃ মূসা (আলাইহিস সালাম) কে নিশ্চই এর চেয়েও বেশী কষ্ট দেয়া হয়েছে। তাতেও তিনি ধৈর্যধারণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭১ | 5671 | ۵٦۷۱

পরিচ্ছদঃ ২৫০৪. কারো মুখোমুখী তিরস্কার না করা
৫৬৭১। উমর ইবনু হাফয (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে কোন কাজ করলেন এবং অন্যদের তা করার অনুমতি দিলেন। তথাপি একদল লোক তা থেকে বিরত রইল। এ খবর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পৌছলে তিনি ভাষণ দিলেন এবং আল্লাহর প্রশংসার পর বললেন কিছু লোকের কি হয়েছে। তারা এমন কাজ থেকে বিরত থাকতে চায়, যা আমি নিজে করছি। আল্লাহর কসম! আমি আল্লাহর সম্পর্কে তাদের চেয়ে অধিক জ্ঞাত এবং আমি তাকে তাদের চাইতে অনেক বেশী ভয় করি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭২ | 5672 | ۵٦۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৫০৪. কারো মুখোমুখী তিরস্কার না করা
৫৬৭২। আবদান (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ পর্দার ভেতরে কুমারীদের চেয়েও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশী লাজুক ছিলেন। যখন তিনি তার কাছে অপছন্দনীয় কিছু দেখতেন, তখন আমরা তার চেহারাতেই এর আভাস পেয়ে যেতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৩ | 5673 | ۵٦۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৫০৫. কোন ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইকে বিনা কারণে কাফির বললে তা তার নিজের উপরই বার্তাবে
৫৬৭৩। মুহাম্মাদ ও আহমাদ ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোন ব্যাক্তি তার মুসলমান ভাইকে ‘হে কাফির’ বলে ডাকে, তখন তা তাদের দু’জনের কোন একজনের উপর বর্তায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৪ | 5674 | ۵٦۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৫০৫. কোন ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইকে বিনা কারণে কাফির বললে তা তার নিজের উপরই বার্তাবে
৫৬৭৪। ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কেউ তার ভাইকে কাফির বলবে, তাদের দু’জনের একজনের উপর তা বর্তাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৫ | 5675 | ۵٦۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৫০৫. কোন ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইকে বিনা কারণে কাফির বললে তা তার নিজের উপরই বার্তাবে
৫৬৭৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … সাবিত ইবনু যাহহাক (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে কেউ ইসলাম ধর্ম ছাড়া অন্য কোন ধর্মের মিথ্যা কসম খায়, সে যা বলে তাই হবে। আর যে বস্তু দিয়ে কেউ আত্নহত্যা করবে, জাহান্নামের আগুনে তাকে সে বস্তু দিয়েই আযাব দেওয়া হবে। ঈমানদারকে লানত করা, তাকে হত্যা করার সমান। আর যে কেউ কোন ঈমানদারকে কুফরীর অপবাদ দিবে, তাও তাকে হত্যা করার সমান হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৬ | 5676 | ۵٦۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৫০৬. কেউ যদি কাউকে না জেনে কিংবা নিজ ধারণ অনুযায়ী (কাফির বা মুনাফিক) সম্বোধন করে, তাকে কাফির বলা যাবে না। উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) হাতিব ইবনু বাল্তা’আ (রাঃ) কে বলেছিলেন, ইনি মুনাফিক। তখন নাবী (সাঃ) বললেনঃ তা তুমি কী করে জানলে? অথচ আল্লাহ বদর যুদ্ধে যোগদানকারীদের প্রতি লক্ষ্য করে বলেছেনঃ আমি তোমাদের গুনাহ মাফ করে দিলাম।
৫৬৭৬। মুহাম্মাদ ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। পুনরায় তিনি নিজ কাওমের নিকট এসে তাদের তিনি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। একবার তিনি তাদের নিয়ে সালাতে সুরা বাকারা পড়লেন। তখন এক ব্যাক্তি; সালাত (নামায/নামাজ) সংক্ষেপ করতে চাইল। সুতরাং সে (আলাদা হয়ে) সংক্ষেপে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। এ খবর মু’আয (রাঃ) এর কাছ পৌছলে তিনি বললেনঃ সে মুনাফিক! লোকটির কাছে এ খবর পৌছলে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে এসে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা এমন এক কাওমের লোক, যারা নিজের হাতে কাজ করি, আর নিজের উট দিয়ে সেঁচের কাজ করি। মুআয (রাঃ) গত রাত্রে সূরা বাকারা দিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে আরম্ভ করলেন, তখন আমি সংক্ষেপে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে নিলাম। এতে মু’আয (রাঃ) বললেন যে, আমি মুনাফিক। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে মু’আয। তুমি কি (লোকদের) দ্বীনের প্রতি বিতৃঞ্চ করতে চাও? একথাটি তিনি তিন বার বললেন। পরে তিনি তাকে বললেনঃ তুমি ওয়াশ শামসি ওয়াদ দু-হা আর সাব্বিহিসমা রাব্বিকাল আলা এবং এর অনুরূপ ছোট সূরা পড়বে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৭ | 5677 | ۵٦۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৫০৬. কেউ যদি কাউকে না জেনে কিংবা নিজ ধারণ অনুযায়ী (কাফির বা মুনাফিক) সম্বোধন করে, তাকে কাফির বলা যাবে না। উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) হাতিব ইবনু বাল্তা’আ (রাঃ) কে বলেছিলেন, ইনি মুনাফিক। তখন নাবী (সাঃ) বললেনঃ তা তুমি কী করে জানলে? অথচ আল্লাহ বদর যুদ্ধে যোগদানকারীদের প্রতি লক্ষ্য করে বলেছেনঃ আমি তোমাদের গুনাহ মাফ করে দিলাম।
৫৬৭৭। ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি কসম খায় এবং লাত ও উযযার কসম করে, তবে সে যেন (সাথে সাথেই) লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলে। আর যদি কেউ তার সাথীকে বলে, এসো আমরা জুয়া খেলি; তবে সে যেন (কোন কিছু) সাদাকা করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৮ | 5678 | ۵٦۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৫০৬. কেউ যদি কাউকে না জেনে কিংবা নিজ ধারণ অনুযায়ী (কাফির বা মুনাফিক) সম্বোধন করে, তাকে কাফির বলা যাবে না। উমার ইবনু খাত্তাব (রাঃ) হাতিব ইবনু বাল্তা’আ (রাঃ) কে বলেছিলেন, ইনি মুনাফিক। তখন নাবী (সাঃ) বললেনঃ তা তুমি কী করে জানলে? অথচ আল্লাহ বদর যুদ্ধে যোগদানকারীদের প্রতি লক্ষ্য করে বলেছেনঃ আমি তোমাদের গুনাহ মাফ করে দিলাম।
৫৬৭৮। কুতায়বা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) কে একদিন আরোহীর মাঝে এমন সময় পেলেন, যখন তিনি তার পিতার নামে কসম খাচ্ছিলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উচ্চস্বরে তাদের বললেনঃ জেনে রাখ! আল্লাহ তোমাদের নিজের পিতার নামে কসম খেতে নিষেধ করেছেন। যদি কাউকে কসম খেতেই হয়, তবে সে যেন আল্লাহর নামেই কসম খায়, অন্যথায় সে যেন চুপ থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৭৯ | 5679 | ۵٦۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৫০৭. আল্লাহর বিধি-নিষেধের ব্যাপারে রাগ করা ও কঠোরতা অবলম্বন করা জায়িয। আল্লাহ বলেছেনঃ কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর, তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন কর।
৫৬৭৯। ইয়াসারাহ ইবনু সাফওয়ান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট আসলেন। তখন ঘরে একখানি পর্দা ঝুলানো ছিল। যাতে ছবি ছিল। তা দেখে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চেহারার রং বদলিয়ে গেল। এরপর তিনি পর্দাখানা হাতে নিয়ে ছিড়ে ফেললেন। আয়িশা (রাঃ) বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের মধ্যে বললেন কিয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন আযাব হবে ঐসব লোকদের যারা এ সকল ছবি আঁকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮০ | 5680 | ۵٦۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৫০৭. আল্লাহর বিধি-নিষেধের ব্যাপারে রাগ করা ও কঠোরতা অবলম্বন করা জায়িয। আল্লাহ বলেছেনঃ কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর, তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন কর।
৫৬৮০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন অমুক ব্যাক্তি সালাত (নামায/নামাজ) দীর্ঘ করার কারণে আমি ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) থেকে পিছনে থাকি। বর্ণনাকারী বলেন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কোন ওয়াযের মধ্যে সেদিন থেকে বেশী রাগান্বিত হতে আর দেখি নি। রাবী বলেন, এরপর তিনি বললেন তোমাদের মধ্যে কেউ কেউ বিতৃষ্ণা সৃষ্টিকারী আছে। সুতরাং তোমাদের যে কেউ লোকদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে সে যেন সংক্ষেপ করে। কারণ তাদের মধ্যে রোগী, বৃদ্ধ এবং কর্মব্যাস্ত লোক থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮১ | 5681 | ۵٦۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৫০৭. আল্লাহর বিধি-নিষেধের ব্যাপারে রাগ করা ও কঠোরতা অবলম্বন করা জায়িয। আল্লাহ বলেছেনঃ কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর, তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন কর।
৫৬৮১। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তখন তিনি মসজিদের কিবলার দিকে নাকের শ্লেষ্মা দেখতে পান। এরপর তিনি তা নিজ হাতে খুটিয়ে পরিস্কার করলেন এবং রাগান্বিত হয়ে বললেনঃ তোমাদের কেউ যতক্ষন সালাতে থাকে, ততক্ষন আল্লাহ তার চেহারার সামনে থাকেন। সুতরাং সালাত (নামায/নামাজ) এর অবস্থায় কখনো সামনের দিকে নাকের শ্লেষ্মা ফেলবেনা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮২ | 5682 | ۵٦۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৫০৭. আল্লাহর বিধি-নিষেধের ব্যাপারে রাগ করা ও কঠোরতা অবলম্বন করা জায়িয। আল্লাহ বলেছেনঃ কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর, তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন কর।
৫৬৮২। মুহাম্মদ (রহঃ) … যায়দ ইবনু খালিদ জুহানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে পথে পড়ে থাকা জিনিস সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন তুমি তা এক বছর পর্যন্ত প্রচার করতে থাকো, তারপর তার বাঁধন চিনে রাখ। তারপর তা তুমি ব্যয় কর। এরপর যদি এর মালিক এসে যায়, তবে তুমি তাকে ফিরিয়ে দাও। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! হরিয়ে যাওয়া ছাগলের কি হুকুম? তিনি বললেন সেটা তুমি নিয়ে যাও। কারণ এটা হয়ত তোমার জন্য অথবা তোমার কোন ভাইয়ের অথবা চিতাবাঘের। লোকটি আবার জিজ্ঞাসা করল। ইয়া রাসুলাল্লাহ! আর হারানো উটের কি হুকুম? তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রেগে গেলেন। এমন কি তার গন্ডদ্বয় রক্তিমাভ হয়ে গেল। তিনি বললেনঃ তাতে তোমার কি? তাঁর সাথেই তার চলমান পা ও পানি রয়েছে এবং এ পর্যন্ত সেটি তার মালিকের নাগাল পেয়ে যাবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৩ | 5683 | ۵٦۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৫০৭. আল্লাহর বিধি-নিষেধের ব্যাপারে রাগ করা ও কঠোরতা অবলম্বন করা জায়িয। আল্লাহ বলেছেনঃ কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ কর, তাদের প্রতি কঠোরতা অবলম্বন কর।
৫৬৮৩। মাক্কী ও মুহম্মদ ইবনু যিয়াদ (রহঃ) … যায়দ ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেজুরের পাতা দিয়ে, অথবা চাটাই দিয়ে একটি ছোট হুজরা তৈরী করলেন এবং ঘর থেকে বেবিয়ে এসে ঐ হুজরায় (রাতে নফল) সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগলেন। তখন একদল লোক তাঁর খোঁজে এসে তার সঙ্গে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে লাগল। পরবর্তী রাতও লোকজন সেখানে এসে হাযির হল। কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেরী করলেন এবং তাদের দিকে বেরিয়ে আসলেন না। তারা উচ্চস্বরে আওয়াজ দিতে লাগলেন এবং ঘরের দরজায় কংকর নিক্ষেপ করতে লাগলেন। তখন তিনি রাগাম্বিত হয়ে তাদের কাছে বেরিয়ে এসে বললেন তোমরা যা করছ তাতে আমি আশংকা করছি যে সম্ভবত এটি না তোমাদের উপর ফরয করে দেয়া হয়। সুতরাং তোমাদের উচিত তোমরা ঘরেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করবে। কারন ফরয ব্যতীত অন্য সালাত (নামায/নামাজ) নিজ নিজ ঘরে পড়াই উত্তম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৪ | 5684 | ۵٦۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৫০৯. ক্রোধ থেকে বেঁচে থাকা। মহান আল্লাহর বানীঃ যারা গুরতর পাপ ও অশালীন কাজ থেকে বেঁচে থাকে এবং যখন ক্রধান্নিত হয় তখন তারা (তাদের) মাফ করে দেয়। (এবং আল্লাহর বানীঃ) যারা সচ্চল ও অসচ্চল অবস্থায় ব্য্য করে, আর যারা ক্রোধ সংবরণকারী ও মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল, আল্লাহ সতকর্ম পরায়ণদের ভালবাসেন।
৫৬৮৪। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন প্রকৃত বীর সে নয়, সে কাউকে কুস্তিতে হারিয়ে দেয়। বরং সেই প্রকৃত বাহাদুর, সে ক্রোধের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রন করতে সক্ষম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৫ | 5685 | ۵٦۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৫০৯. ক্রোধ থেকে বেঁচে থাকা। মহান আল্লাহর বানীঃ যারা গুরতর পাপ ও অশালীন কাজ থেকে বেঁচে থাকে এবং যখন ক্রধান্নিত হয় তখন তারা (তাদের) মাফ করে দেয়। (এবং আল্লাহর বানীঃ) যারা সচ্চল ও অসচ্চল অবস্থায় ব্য্য করে, আর যারা ক্রোধ সংবরণকারী ও মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল, আল্লাহ সতকর্ম পরায়ণদের ভালবাসেন।
৫৬৮৫। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … সুলায়মান ইবনু সুরদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দু’ব্যাক্তি পাগলামী করছিল। আমরাও তার কাছেই বসাছিলাম, তাদের একজন অপর জনকে এত রাগান্বিত হয়ে গালী দিচ্ছিল যে তার চেহারা লাল হয়ে গিয়েছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি একটি কালেমা জানি, যদি এ লোকটি তা পড়তো, তা হলে তার ক্রোধ চলে যেত। অর্থাৎ যদি লোকটি “আউযুবিল্লাহি মিনাশশাইতানির রাজীম” পড়তো। তখন লোকেরা সে ব্যাক্তিকে বলল, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি বলেছেন, তা কি তুমি শুনছো না? সে বললোঃ আমি নিশ্চয়ই পাগল নই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৬ | 5686 | ۵٦۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৫০৯. ক্রোধ থেকে বেঁচে থাকা। মহান আল্লাহর বানীঃ যারা গুরতর পাপ ও অশালীন কাজ থেকে বেঁচে থাকে এবং যখন ক্রধান্নিত হয় তখন তারা (তাদের) মাফ করে দেয়। (এবং আল্লাহর বানীঃ) যারা সচ্চল ও অসচ্চল অবস্থায় ব্য্য করে, আর যারা ক্রোধ সংবরণকারী ও মানুষের প্রতি ক্ষমাশীল, আল্লাহ সতকর্ম পরায়ণদের ভালবাসেন।
৫৬৮৬। ইয়াহইয়া ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বললোঃ আপনি আমাকে অসিয়ত করুন। তিনি বললেনঃ তুমি রাগ করো না। লোকটা কয়েকবার তা বললেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক বারই বললেনঃ রাগ করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৭ | 5687 | ۵٦۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৫১০. লজ্জাশীলতা
৫৬৮৭। আদম (রহঃ) … ইমরান ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ লজ্জাশীলতা কল্যাণ ব্যতীত কোন কিছুই বয়ে আনে না। তখন বুশায়র ইবনু কাব (রাঃ) বললেন হিকমতের পুস্তকে লিখা আছে যে, কোন কোন লজ্জাশীলতা ধৈর্যশীলতা বয়ে আনে। আর কোনকোন লজ্জাশীলতা এনে দেয় শান্তি ও সুখ। তখন ইমরান (রাঃ) বললেন, আমি তোমার কাছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করছি। আর তুমি (এর মোকাবিলায়) আমাকে তোমার পুস্তিকা থেকে বর্ণনা করছ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৮ | 5688 | ۵٦۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৫১০. লজ্জাশীলতা
৫৬৮৮। আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি লোকের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় লোকটি (তার ভাইকে) লজ্জা সম্পর্কে তিরস্কার করছিল এবং বলছিল যে, তুমি বেশী লজ্জা করছ, এমনকি সে যেন এ কথাও বলছিল যে, এ তোমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি তাকে তার অবস্থার উপর ছেড়ে দাও। কারণ নিশ্চই লজ্জাশীলতা ঈমানের অঙ্গ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৮৯ | 5689 | ۵٦۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৫১০. লজ্জাশীলতা
৫৬৮৯। আলী ইবনু জায়দ (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ গৃহে অবস্থানরত কুমারী মেয়েদের চেয়েও বেশী লাজুক ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯০ | 5690 | ۵٦۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৫১১. যখন তুমি লজ্জা ত্যাগ করবে, তখন তুমি যা ইচ্ছা তাই করতে পারবে
৫৬৯০। আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবূ মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ পুর্বেকার নাবীদের কর্তব্য থেকে মানুষ যা বর্জন করেছে তার একটি হল, যদি তুমি লজ্জাই ছেড়ে দাও তবে তুমি যা চাও তা কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯১ | 5691 | ۵٦۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৫১২. দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করার উদ্দেশ্যে সত্য বলতে লজ্জাবোধ করতে নেই
৫৬৯১। ইসমাঈল (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদিন উম্মে সুলায়ম (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহ তো সত্য কথা বলার ব্যাপারে লজ্জা করতে নির্দেশ দেন না। সুতরাং মেয়ে লোকের স্বপ্নদোষ হলে কি তার উপরও গোসল করা ফরয? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, যদি সে পানি, বীর্য দেখতে পায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯২ | 5692 | ۵٦۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৫১২. দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করার উদ্দেশ্যে সত্য বলতে লজ্জাবোধ করতে নেই
৫৬৯২। আাদম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মুমিনের দৃষ্টান্ত হল এমন একটি সবুজ গাছ, যার পাতা ঝরে পড়ে না এবং একটির সঙ্গে আর একটির ঘর্ষণ লাগে না। তখন কেউ কেউ বললঃ এটি অমুক গাছ, আবার কেউ বললঃ এটি অমুক গাছ। তখন আমি বলতে চেয়েছিলাম যে, এটি খেজুর গাছ। তবে, যেহেতু আমি অল্প বয়স্ক ছিলাম, তাই বলতে সংকোচবোধ করলাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলে দিলেন যে, সেটি খেজুর গাছ।

আর শুবা (রহঃ) থেকে ইবনু উমর (রাঃ) সুত্রে অতিরিক্ত বর্ণিত আছে যে, তারপর আমি উমর (রাঃ) এর নিকট এ সম্বন্ধে বললাম। তখন তিনি বললেনঃ যদি তুমি সে সময় একথা বলে দিতে তবে তা আমার নিকট এত এত (ধন সম্পদ থেকেও) বেশী খুশীর বিষয় হতো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৩ | 5693 | ۵٦۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৫১২. দ্বীনের জ্ঞান অর্জন করার উদ্দেশ্যে সত্য বলতে লজ্জাবোধ করতে নেই
৫৬৯৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলো এবং তার সামনে নিজেকে পেশ করে বললঃ আপনার কি আমার প্রয়োজন আছে? তখন আনাস (রাঃ) এর মেয়ে বললঃ এ মহিলার লজ্জা কত কম। আনাস (রাঃ) বললেনঃ সে তোমার চেয়ে ভাল। সে তো (নাবীর সহধর্মিণী হওয়ার সৌভাগ্য) লাভের জন্য রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে নিজেকে (বিবাহের জন্য) পেশ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৪ | 5694 | ۵٦۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৫১৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ তোমরা নম্র হও, কঠোর ব্যবহার করো না। নাবী (সাঃ) মানুষের সাথে নম্র ব্যবহার পছন্দ করতেন
৫৬৯৪। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা নম্র ব্যবহার করো এবং কঠোর ব্যবহার করো না। আর মানুষকে শান্তি দাও এবং মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ সৃষ্টি করো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৫ | 5695 | ۵٦۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৫১৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ তোমরা নম্র হও, কঠোর ব্যবহার করো না। নাবী (সাঃ) মানুষের সাথে নম্র ব্যবহার পছন্দ করতেন
৫৬৯৫। ইসহাক (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে আর মু’আয ইবনু জাবাল (রাঃ) কে ইয়ামানে পাঠান, তাদের অসিয়ত করেন। তোমরা (লোকের সাথে) নম্র ব্যবহার করবে, কঠোর ব্যবহার করবে না। শুভ সংবাদ দেবে এবং তাদের মনে বিদ্বেষ সৃষ্টি করবে না। আর তোমরা দু’জনের মধ্যে সদ্ভাব বজায় রাখবে। তখন আবূ মূসা (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা এমন এক দেশে যাচ্ছি, যেখানে মধু থেকে শরাব তৈরী হয়। একে ‘বিতউ’ বলা হল। আর ‘যব’ থেকেও শরাব তৈরী, করা হয় তাকে বলা হয় ‘মিযর’। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ প্রত্যেক নেশাসৃষ্টিকারী বস্তু হারাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৬ | 5696 | ۵٦۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৫১৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ তোমরা নম্র হও, কঠোর ব্যবহার করো না। নাবী (সাঃ) মানুষের সাথে নম্র ব্যবহার পছন্দ করতেন
৫৬৯৬। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যখন কোন দু’টি কাজের মধ্যে এখতিয়ার দেয়া হয়। তখন তিনি দুটির মধ্যে অপেক্ষাকৃত সহজটি গ্রহণ করতেন যদি তা গুনাহর কাজ না হতো। আর যদি তা গুনাহের কাজ হতো, তা হলে তিনি তা থেকে সবার চাইতে দূরে সরে থাকতেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন বিষয়ে নিজের ব্যাপারে কখনো প্রতিশোধ নিতেন না। অবশ্য কেউ আল্লাহর নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করলে, তিনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তার প্রতিশোধ নিতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৭ | 5697 | ۵٦۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৫১৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ তোমরা নম্র হও, কঠোর ব্যবহার করো না। নাবী (সাঃ) মানুষের সাথে নম্র ব্যবহার পছন্দ করতেন
৫৬৯৭। আবূ নু’মান (রহঃ) … আযরাক ইবনু কায়স (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা আহওয়ায নামক স্থানে একটা খালের কিনারায় অবস্থান করছিলাম। খালটির পানি শুকিয়ে গিয়েছিল। এমন সময় আবূ বারযা আসলামী (রাঃ) একটি ঘোড়ায় সাওয়ার হয়ে সেখানে এলেন। তিনি ঘোড়াটিকে ছেড়ে দিয়ে সালাতে দাঁড়ালেন। তখন ঘোড়াটা (দুরে) চলে গেল দেখে তিনি সালাত (নামায/নামাজ) ছেড়ে দিয়ে ঘোড়ার অনুসরণ করলেন এবং ঘোড়াটি পেয়ে ধরে আনলেন। তারপর সালাত (নামায/নামাজ) পূর্ন করলেন। এ সময় আমাদের মধ্যে একজন বিরূপ সমালোচক ছিলেন। তিনি তা দেখে বললেনঃ এই বৃদ্ধের দিকে তাকাও, সে ঘোড়ার খাতিরে সালাত (নামায/নামাজ) ছেড়ে দিল।

তখন আবূ বারযাহ (রাঃ) এগিয়ে এসে বললেনঃ যখন থেকে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে হারিয়েছি, তখন থেকে আজ পর্যন্ত কেউ আমাকে এরূপ তিরস্কার করেন নি। তিনি আরও বললেনঃ আমার বাড়ী বহুদূরে। সুতরাং যদি আমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতাম এবং ঘোড়াটিকে এভাবেই ছেড়ে দিতাম তাহলে আমি রাতে নিজ পরিবারের নিকট পৌছতে পারতাম না। তিনি আরও উল্লেখ করলেন যে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহচর্য লাভ করেছেন এবং তার নম্র ব্যবহার প্রত্যক্ষ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৮ | 5698 | ۵٦۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৫১৩. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ তোমরা নম্র হও, কঠোর ব্যবহার করো না। নাবী (সাঃ) মানুষের সাথে নম্র ব্যবহার পছন্দ করতেন
৫৬৯৮। আবুল ইয়ামান ও লায়স (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার এক বেদুঈন মসজিদে পেশাব করে দিলো। তখন লোকজন তাকে শাসন করার জন্য উত্তেজিত হয়ে পড়ল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেনঃ তোমরা তাকে ছেড়ে দাও এবং তার পেশাবের উপর এক বালতি পানি অথবা একপাত্র পানি ঢেলে দাও। কারণ, তোমাদের নম্র ব্যবহারকারী বানিয়ে পাঠানো হয়েছে কঠোর ব্যবহারকারী হিসেবে পাঠানো হয় নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৬৯৯ | 5699 | ۵٦۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৫১৪. মানুষের সাথে হাসিমুখে মেলামেশা করা। ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, মানুষের সাথে এমনভাবে মেলামেশা করবে, যেন তাতে তোমার দ্বীনে আঘাত না লাগে। আর পরিবারের সঙ্গে হাসি তামাশা করা।
৫৬৯৯। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাথে মেলামেশা করতেন এমনকি একদিন তিনি আমার এক ছোট ভাইকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ওহে আবূ উমায়র। নুগায়র পাখিটি কেমন আছে?

হাদিস নম্বরঃ ৫৭০০ | 5700 | ۵۷۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৫১৪. মানুষের সাথে হাসিমুখে মেলামেশা করা। ইবনু মাস’ঊদ (রাঃ) বলেন, মানুষের সাথে এমনভাবে মেলামেশা করবে, যেন তাতে তোমার দ্বীনে আঘাত না লাগে। আর পরিবারের সঙ্গে হাসি তামাশা করা।
৫৭০০। মুহাম্মাদ (রহঃ) … আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনেই আমি পুতুল বানিয়ে খেলতাম। আমার বান্ধবীরাও আমার সঙ্গে খেলতো। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করলে তারা দৌড়ে পালাত। তখন তিনি তাদের ডেকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিতেন এবং তারা আমার সঙ্গে খেলা করত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭০১ | 5701 | ۵۷۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৫১৫. মানুষের সঙ্গে শিষ্টাচার করা। আবূ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, আমরা কোন কোন কাওমের সঙ্গে বাহ্যত হাসি-খুশি মেলামেশা করি। কিন্তু আমাদের অন্তরগুলো তাদের উপর লা’নাত বর্ষণ করে।
৫৭০১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট প্রবেশ করে অনুমতি চাইলে তখন তিনি বললেনঃ তাকে অনুমতি দাও। সে তার বংশের নিকৃষ্ট সন্তান। অথবা বললেনঃ সে তার গোত্রের ঘৃন্যতম ভাই। যথন সে প্রবেশ করল তখন তিনি তার সাথে নম্রভাবে কথা বার্তা বললেন। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি এর সম্পর্কে যা বলার তা বলেছেন। এখন আপনি তার সাথে নম্রভাবে কথা বললেন। তিনি বললেনঃ হে আয়েশা! আল্লাহর কাছে মর্যাদায় নিকৃষ্ট সে ব্যাক্তি, যার অশালীন আচরন থেকে বেঁচে থাকার জন্য মানুষ তার সংশ্রব ত্যগ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭০২ | 5702 | ۵۷۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৫১৫. মানুষের সঙ্গে শিষ্টাচার করা। আবূ দারদা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, আমরা কোন কোন কাওমের সঙ্গে বাহ্যত হাসি-খুশি মেলামেশা করি। কিন্তু আমাদের অন্তরগুলো তাদের উপর লা’নাত বর্ষণ করে।
৫৭০২। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওহহাব (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আবূ মুলায়কাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে। তিনি একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কয়েকটি রেশমের তৈরী (সোনার বোতাম লাগান) ‘কাবা’ হাদিয়া দেওয়া হলো। তিনি এগুলো সাহাবীদের মধ্যে বণ্টন করে দিলেন এবং তা থেকে একটি মাখরামা (রাঃ) এর জন্য আলাদা রেখে দিলেন। পরে যখন তিনি এলেন, তখন তিনি (সেটি তাকে দিয়ে) বললেনঃ আমি এটি তোমার জন্য লুকিয়ে রেখেছিলাম। আইউব নিজের কাপড়ের দিকে ইশারা করলেন, তিনি যেন তার কাপড় মাখরামাকে দেখাচ্ছিলেন। মাখরামা (রাঃ) এর মেজাজের মধ্যে কিছু (অসন্তষের ভাব) ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৩ | 5703 | ۵۷۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৫১৬. মু’মিন এক গর্ত থেকে দু’বার দংশিত হয় না। মু’আবিয়া (রাঃ) বলেছেনঃ অভিজ্ঞতা ব্যতীত সহনশীলতা সম্ভব নয়
৫৭০৩। কুতায়বা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রকৃত মুমিন একই গর্ত থেকে দু’বার দংশিত হয় না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৪ | 5704 | ۵۷۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৫১৭. মেহমানের হক
৫৭০৪। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এসে বললেনঃ আমাকে কি এ খবর জানানো হয় নি যে, তুমি সারা রাত সালাতে কাটাও। আর সারা দিন সিয়াম পালন কর। তিনি বললেনঃ তুমি (এরকম) করো না। রাতের কিছু অংশ সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর, আর ঘুমাও। কয়েকদিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর, আর কয়েকদিন ইফতার কর (সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ভঙ্গ কর)। তোমার উপর তোমার শরীরের হক আছে। তোমার উপর তোমার চোখের হক আছে, তোমার উপর তোমার মেহমানের হক আছে, আর তোমার উপর তোমার স্ত্রীরও হক আছে। নিশ্চয়ই তুমি তোমার আয়ু লম্বা হওয়ার আশা কর। সুতরাং প্রত্যেক মাসে তিন দিন সিয়াম পালনই তোমার পক্ষে যথেষ্ঠ।

কেননা, নিশ্চয়ই প্রতিটি নেক কাজের বদলে তার দশ গুন পরিমাণ সাওয়াব দেওয়া হয়। সুতরাং এভাবে সারা বছরেই সিয়ামের সাওয়াব পাওয়া যায়। তখন আমি কঠোর ব্যবস্থা চাইলে, আমাকে কঠোর ব্যবস্থা দেয়া হলো। আমি বললাম এর চেয়েও বেশী পালনের সামর্থ আমার আছে। তিনি বললেনঃ তা হলে তুমি প্রতি সপ্তাহে তিন দিন সিয়াম পালন কর। তখন আমি আরও কঠোর ব্যবস্থা চাইলে, আমাকে কঠোর ব্যবস্থা দেওয়া হল। আমি বললাম আমি এর চেয়ে বেশী সিয়ামের সামর্থ রাখি। তিনি বললেনঃ তবে তুমি আল্লাহর নাবী দাউদ (আলাইহিস সালাম) এর সিয়াম পালন কর। আমি বললাম ইয়া নাবী আল্লাহ! দাউদ (আলাইহিস সালাম) এর সিয়াম কি রকম? তিনি বললেন? আধা বছর সিয়াম পালন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৫ | 5705 | ۵۷۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৫১৮. মেহমানের সম্মান করা ও নিজেই মেহমানের খিদমত করা। আল্লাহর বানীঃ তোমার নিকট ইবরাহীম এর সম্মানিত মেহমানদের ……
৫৭০৫। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ সুরায়হ কাবী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহতে ও শেষ দিনে ঈমান রাখে সে যেন মেহমানের সম্মান করে। মেহমানের সম্মান একদিন ও একরাত। আর সাধারণ মেহমানদারী তিন দিন ও তিনরাত। এরপরে (তা হলে) ‘সাদাকা’। মেহমানকে কষ্ট দিয়ে, তার কাছে মেহমানের অবস্থান হালাল নয়।

(অন্য সূত্রে) মালিক (রহঃ) অনুরূপ বর্ণনা করার পর অতিরিক্ত বলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনের উপর ঈমান রাখে সে যেন উত্তম কথা বলে, অথবা সে যেন চুপ থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৬ | 5706 | ۵۷۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৫১৮. মেহমানের সম্মান করা ও নিজেই মেহমানের খিদমত করা। আল্লাহর বানীঃ তোমার নিকট ইবরাহীম এর সম্মানিত মেহমানদের ……
৫৭০৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেয দিনে ঈমান রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে ঈমান রাখে সে যেন মেহমানের সাম্মান করে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে ঈমান রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে, অথবা যেন চুপ থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৭ | 5707 | ۵۷۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৫১৮. মেহমানের সম্মান করা ও নিজেই মেহমানের খিদমত করা। আল্লাহর বানীঃ তোমার নিকট ইবরাহীম এর সম্মানিত মেহমানদের ……
৫৭০৭। কুতায়বা (রহঃ) … উকবা ইবনু আমির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমাদের কোথাও পাঠালে আমরা এমন কোন কাওমের কাছে উপস্থিত হই, যারা আমাদের মেহমানদারী করে না। এ ব্যাপারে আপনার মত কি? তখন তিনি আমাদের বললেনঃ যদি তোমরা কোন কাওমের নিকট গিয়ে পৌছ আর তারা তোমাদের মেহমানের উপযোগী যত্ন নেয়, তবে তোমরা তা সাদরে গ্রহণ করবে। আর যদি তারা না করে, তা হলে, তাদের অবস্থানুযায়ী তাদের থেকে মেহমানের উপযোগী দাবী আদায় করে নেবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৮ | 5708 | ۵۷۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৫১৮. মেহমানের সম্মান করা ও নিজেই মেহমানের খিদমত করা। আল্লাহর বানীঃ তোমার নিকট ইবরাহীম এর সম্মানিত মেহমানদের ……
৫৭০৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে ঈমান রাখে, সে যেন তার মেহমানের সম্মান করে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে ঈমান রাখে, সে যেন তার রক্তের সম্পর্ক যুক্ত রাখে। আর যে ব্যাক্তি আল্লাহ ও শেষ দিনে ঈমান রাখে, সে যেন উত্তম কথা বলে, অথবা নীরব থাকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭০৯ | 5709 | ۵۷۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৫১৯. খাবার তৈরি করা ও মেহমানের জন্য কষ্ট স্বীকার করা
৫৭০৯। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ জুহায়ফা (রহঃ) এর পিতা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালমান (রাঃ) ও আবূ দারদা (রাঃ) এর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টি করে দেন। এরপর একদিন সালমান (রাঃ) আবূ দারদা (রাঃ) এর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন, তখন তিনি উম্মে দারাদা (রাঃ) কে অতি সাধারন পোশাকে দেখতে পেলেন। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন তোমার কি হয়েছে? তিনি বললেনঃ তোমার ভাই আবূ দারদা (রাঃ) এর দুনিয়াতে কিছুর প্রয়োজন নেই। ইতিমধ্যে আবূ দারদা (রাঃ) এলেন। তারপর তার জন্য খাবার প্রস্তুত করে তাঁকে বললেনঃ আপনি খেয়ে নিন। আমি তো সিয়াম পালন করছি। তিনি বললেনঃ আপনি যতক্ষণ না খাবেন ততক্ষণ আমিও খাব না।

তখন তিনিও খেলেন তারপর যখন রাত হল, তখন আবূ দারদা (রাঃ) সালাতে দাঁড়ালেন। তখন সালমান (রাঃ) তাকে বললেনঃ আপনি ঘুমিয়ে নিন। তিনি শুয়ে পড়লেন। কিছুক্ষন পরে আবার উঠে দাঁড়ালে, তিনি বললেনঃ (আরও) ঘুমান। অবশেষে যখন রাত শেষ হয়ে এল, তখন সালমান (রাঃ) বললেনঃ এখন উঠুন এবং তারা উভয়েই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তারপর সালমান (রাঃ) বললেনঃ তোমার উপর তোমার রবের দাবী আছে, (তেমনি) তোমার উপর তোমার দাবী আছে এবং তোমার স্ত্রীরও তোমার উপর দাবী আছে। সুতরাং তুমি প্রত্যেক দাবীদারের দাবী আদায় করবে। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে, তার কাছে তার কথা উল্লেখ করলেন তিনি বললেনঃ সালমান সত্যই বলেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭১০ | 5710 | ۵۷۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৫২০. মেহমানের সামনে কারো উপর রাগ করা, আর অসহনশীল হওয়া অনুচিত
৫৭১০। আয়্যাশ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার আবূ বকর সিদ্দীক (রাঃ) কিছু লোককে মেহমান হিসাবে গ্রহন করলেন। তিনি (তার পুত্র) আবদুর রহমান কে নির্দেশ দিলেন, তোমার এ মেহমানদের নিয়ে যাও। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যাচ্ছি। আমি ফিরে আসার পূর্বে তুমি তাদের খাইয়ে দাইয়ে অবসর হয়ে যেয়ো। আবদুর রহমান (রাঃ) তাদের নিয়ে চলে গেলেন এবং তার ঘরে যা ছিল তা সামনে পেশ করে দিয়ে তাদের বললেনঃ আপনারা খেয়ে নিন। তাঁরা বললেন আমাদের এ বাড়ীর মালিক কোথায়? তিনি বললেনঃ আপনারা খেয়ে নিন। তারা বললেন বাড়ীর মালিক না আসা পর্যন্ত আমরা খাবো না। তিনি বললেনঃ আমাদের পাত্র থেকে আপনারা আপনাদের খাবার খেয়ে নিন। কারন আপনারা না খেলে তিনি এসে আমার উপর রাগ করবেন। কিন্তু তাঁরা অস্বীকার করলেন।

আমি ভাবলাম যে তিনি অবশ্যই আমার উপর ক্ষুব্ধ হবেন। তারপর তিনি ফিরে আসলে আমি তার থেকে এক পাশে সরে পড়লাম। তিনি তাদের জিজাসা করলেন, আপনারা কী করেছেন। তখন তারা তাঁকে সব বর্ণনা করলেন। তখন তিনি বললেনঃ হে আবদুর রহমান! তখন আমি চুপ করে রইলাম। তিনি আবার ডাকলেন, হে আবদুর রহমান। এবারেও আমি চুপ করে রইলাম। তিনি আবার ডেকে বললেনঃ ওহে মূর্খ! আমি তোকে কসম দিচ্ছি। যদি আমার ডাক শুনে থাকিস, তবে কেন আসছিস না? তখন আমি বেরিয়ে এসে বললামঃ আপনি আপনার মেহমানদের জিজ্ঞাসা করুন। তখন তারা বললেন সে ঠিকই আমাদের খাবার এনে দিয়েছিল। তিনি বললেন তবুও কি আপনারা আমার অপেক্ষা করছেন? আল্লাহর কসম! আমি আজ রাতে তো খাবো না।

মেহমানরাও বললেনঃ আল্লাহর কসম আপনি যতক্ষন না খাবেন ততক্ষন আমরাও খাব না। তখন তিনি বললেনঃ আমি আজ রাতের মত খারাপ রাত আর দেখিনি। আপনাদের প্রতি আক্ষেপ। আপনারা কি আমাদের খাবার গ্রহণ করবেন না? তখন তিনি (আবদুর রহমানকে ডেকে) বললেনঃ তোমার খাবার নিয়ে এসো। তিনি তা নিয়ে আসলে তিনিই খাবারের উপর নিজ হাত রেখে বললেন, বিসমিল্লাহ এ প্রথম ঘটনাটা শয়তানের কারনেই ঘটেছে। তারপর তিনি খেলেন এবাং তারাও খেলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭১১ | 5711 | ۵۷۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৫২১. মেহমানকে মেজবানের (এ কথা) বলা যে, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি না খান ততক্ষণ আমিও খাব না। এ সম্পর্কে নবী (সাঃ) থেকে আবু জুহায়ফার হাদীস রয়েছে
৫৭১১। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আবদুর রহমান ইবনু আবূ বকর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার আবূ বকর (রাঃ) তার একজন কিংবা কয়েকজন মেহমান নিয়ে এলেন এবং সন্ধ্যার সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলেন। তিনি ফিরে এলে আমার আম্মা তাকে বললেনঃ আপনি মেহমানকে, কিংবা বললেন, মেহমানদের (ঘরে) রেখে (এতো) রাত কোথায় আটকা পড়েছিলেন? তিনি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেঃ তুমি কি তাদের খাবার দাওনি? তিনি বললেনঃ আমি তাদের সামনে খাবার দিয়েছিলাম কিন্তু তারা, বা সে তা খেতে অস্বীকার করলেন। তখন আবূ বকর (রাঃ) রেগে গাল মন্দ বললেন ও বদ দু’আ করলেন। আর শপথ করলেন যে, তিনি খাবার খাবেন না। আমি লুকিয়ে ছিলাম। তিনি আমাকে ডেকে বললেন ওরে মূর্খ! তখন মহিলা (আমার আম্মা) ও কসম করলেন যে, যতক্ষণ পর্যন্ত তিনি না খাবেন ততক্ষন আম্মাও খাবেন না।

এদিকে মেহমানটি বা মেহমানরাও কসম খেয়ে বসলেন যে, যতক্ষন তিনি না খান, ততক্ষন পর্যন্ত তারাও খাবেন না। তখন আবূ বকর (রাঃ) বললেনঃ এ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে শয়তান থেকে। তারপর তিনি খাবার আনতে বললেন। আর তিনি খেলেন এবং মেহমানরাও খেলেন। কিন্তু তারা খাওয়া আরম্ভ করে যতবারই লুকমা উঠাতে লাগলেন, তার নীচে থেকে তার চেয়েও বেশী খাবার বৃদ্ধি পেতে লাগলো। তখন তিনি তার স্ত্রীকে ডেকে বললেন হে বনী ফেরাসের বোন এ কি? তিনি বললেন আমার চোখের প্রশান্তির কসম! এতো আমাদের পূর্বের খাবার থেকে এখন অনেক বেশী দেখছি। তখন সবাই খেলেন এবং তা থেকে তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে কিছু পাঠিয়ে দিলেন। তারপর তিনি বর্ণনা করেন যে, তা থেকে তিনিও খেয়েছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭১২ | 5712 | ۵۷۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৫২২. বড়কে সম্মান করা। বয়সে যিনি বড় তিনিই কথাবার্তা ও প্রশ্নাদি আরম্ভ করবেন
৫৭১২। সুলায়মাল ইবনুু হারব (রহঃ) … রাফে ইবনু খাদীজ (রাঃ) ও সাহল ইবনু আবূ হাসমাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার আবদুল্লাহ ইবনু সাহল ও মুহাইয়ইসা ইবনু মাসউদ (রাঃ) খায়বারে পৌছে উভয়েই খেজুরের বাগানের ভিন্ন ভিন্ন পথে চলে গেলেন। সেখানে আবদুল্লাহ ইবনু সাহল (রাঃ) কে হত্যা করা হল। এ ঘটনার পর আবদুর রহমান ইবনু সাহল ও ইবনু মাসউদ (রাঃ) এর দুই ছেলে হুওয়াইসা (রাঃ) ও মুহায়ইসা (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন এবং তাঁর কাছে নিহত ব্যাক্তির কথা বলতে লাগলেন। আবদুর রহমান (রাঃ) কথা শুরু করলেন। তিনি ছোট ছিলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেনঃ তুমি বড়দের সম্মান করবে।

বর্ণনাকারী ইয়াহইয়া বলেনঃ কথা বলার দায়িত্ব যেন বড়রা পালন করে। তখন তারা তাদের লোক সম্পর্কে কথা বললেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেনঃ তোমাদের পঞ্চাশ জন লোক কসমের মাধ্যমে তোমাদের নিহত ভাইয়ের হত্যার হক প্রমাণ কর। তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! ঘটনা তো আমরা দেখিনি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা হলে ইয়াহুদীরা তাদের থেকে পঞ্চাশ জনের কসমের মাধ্যমে তোমাদের কসম থেকে মুক্তি দিবে। তখন তারা বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! ওরা তো কাফির সম্প্রদায়। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজের তরফ থেকে তাদের নিহত ব্যাক্তির ফিদইয়া দিয়ে দিলেন।

সাহল (রাঃ) বললেনঃ আমি সেই উটগুলো থেকে একটি উট পেলাম। সেটি নিয়ে আমি যখন আস্তাবলে গেলাম তখন উটনীটি তার পা দিয়ে আমাকে লাথী মারলো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৩ | 5713 | ۵۷۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৫২২. বড়কে সম্মান করা। বয়সে যিনি বড় তিনিই কথাবার্তা ও প্রশ্নাদি আরম্ভ করবেন
৫৭১৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা আমাকে এমন একটা বৃক্ষের খবর দাও, মুসলমানের সাথে যার দৃষ্টান্ত রয়েছে। তা সর্বদা তার প্রতিপালকের নির্দেশে খাদ্য দান করে, আর তার পাতাও ঝরে না। তাখন আমার মনে আসলো যে, এটি খেজুর গাছ। কিন্তু যেহেতু সে স্থানে আবূ বকর ও উমর (রাঃ) উপস্থিত থেকেও কথা বলছিলেন না, তাই আমিও কথা বলা পছন্দ করি নি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেই বললেনঃ সেটি হলো, খেজুর গাছ। তারপর যখন আমি আমার আব্বার সঙ্গে বেরিয়ে এলাম, তখন আমি বললাম আব্বা! আমার মনেও খেয়াল এসেছিল যে, এটা নিশ্চয়ই খেজুর গাছ। তিনি বললেনঃ তোমাকে তা বলতে কিসে বাধা দিয়েছিল? যদি তুমি তা বলতে তাহলে একথা আামার কাছে এত এত ধন-সম্পদ পাওয়ার চেয়েও বেশী প্রিয় হতো। তিনি বললেনঃ আমাকে শুধু একথাই বাধা দিয়েছিল যে, আমি দেখলাম আপনি ও আবূ বকর (রাঃ) কেউই কথা বলছেন না। তাই আমিও কথা বলা পছন্দ করলাম না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৪ | 5714 | ۵۷۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৫২০. কবিতা পাঠ, সঙ্গীত ও উট চালানোর সঙ্গীতের মধ্যে যা জায়িয ও যা না-জায়িয। আল্লাহ তা’আলার বানীঃ এবং বিপথগামী লোকেরাই কবিদের অনুসরন করে থাকে …… তারা কোন পথে ফিরে বেড়াচ্ছে
৫৭১৪। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চই কোন কোন কবিতার মধ্যে জ্ঞানের কথাও রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৫ | 5715 | ۵۷۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৫২০. কবিতা পাঠ, সঙ্গীত ও উট চালানোর সঙ্গীতের মধ্যে যা জায়িয ও যা না-জায়িয। আল্লাহ তা’আলার বানীঃ এবং বিপথগামী লোকেরাই কবিদের অনুসরন করে থাকে …… তারা কোন পথে ফিরে বেড়াচ্ছে
৫৭১৫। আবূ নুয়াইম (রহঃ) … জুনদুব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক জিহাদে হেটে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ তিনি একটা পাথরে হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলেন এবং তার একটা আঙ্গুল রক্তাক্ত হয়ে গেল। তখন তিনি কবিতার ছন্দে বলেন তুমি একটি রক্তাক্ত আংগুল বৈ কিছুই নও, আর যে কষ্ট ভোগ করছ তা তো একমাত্র আল্লাহর পথেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৬ | 5716 | ۵۷۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৫২০. কবিতা পাঠ, সঙ্গীত ও উট চালানোর সঙ্গীতের মধ্যে যা জায়িয ও যা না-জায়িয। আল্লাহ তা’আলার বানীঃ এবং বিপথগামী লোকেরাই কবিদের অনুসরন করে থাকে …… তারা কোন পথে ফিরে বেড়াচ্ছে
৫৭১৬। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কবিরা যে সব কথা বলেছেন তার মধ্যে কবি লবীদের কথাটাই সবচেয়ে বেশী সত্য কথা। (তিনি বলেছেন) শোন! আল্লাহ ব্যতীত সব কিছুই বাতিল। তিনি আরও বলেছেনঃ কবি উমাইয়া ইবনু আবূ সালত ইসলাম গ্রহনের কাছাকাছি হয়ে গিয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৭ | 5717 | ۵۷۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৫২০. কবিতা পাঠ, সঙ্গীত ও উট চালানোর সঙ্গীতের মধ্যে যা জায়িয ও যা না-জায়িয। আল্লাহ তা’আলার বানীঃ এবং বিপথগামী লোকেরাই কবিদের অনুসরন করে থাকে …… তারা কোন পথে ফিরে বেড়াচ্ছে
৫৭১৭। কুতায়বা (রহঃ) … সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে খায়বার অভিযানে বের হলাম। আমরা রাতের বেলায় চলছিলাম। দলের মধ্যে থেকে একজন আমির ইবনু আকওয়া (রাঃ) কে বলল যে, আপনি কি আপনার (ছোট) কবিতাগুলো থেকে কিছু পড়ে আমাদের শোনাবেন না? আমির (রাঃ) ছিলেন একজন কবি। সুতরাং তিনি দলের লোকদের হুদী গেয়ে শোনাতে লাগলেন। হে আল্লাহ! তুমি না হলে, আমরা হেদায়েত পেতাম না। আমরা সাদাকা দিতাম না, সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতাম না। আমাদের আগেকার-গুনাহু ক্ষমা করুন; যা আমরা করেছি। আমরা আপনার জন্য উৎসর্গিত। যদি আমরা শত্রুর সম্মুখীন হই, তখন আমাদের পদদ্বইয় সুদৃঢ় রাখুন। আমাদের উপর শান্তি বর্ষন করুন। শত্রুর ডাকের সময় আমরা যেন বীরের মত ধাবিত হই, যখন তারা হৈ-হুল্লোড় করে, আমাদের উপর আক্রমণ চালায়।

তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেনঃ এ উট চালক লোকটি কে? সে যে এ রকম উট চালিয়ে যাচ্ছে। লোকেরা বললেনঃ তিনি আমির ইবনু আকওয়া। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তার উপর রহম করুন। দলের একজন বললেন ইয়া নাবী আল্লাহ! তার জন্য তো শাহাদাত নির্দিষ্ট হয়ে গেলো। হায়! যদি আমাদের এ সুযোগ দান করতেন। তারপর আমরা খায়বারে পৌছে শত্রুদের অবরোধ করে ফেললাম। এ সময় আমরা অতিশয় ক্ষুধার্ত হয়ে পড়লাম। অবশেষে আল্লাহ (খায়বার যুদ্ধে) তাদের উপর আমাদের বিজয় দান করলেন। তারপর যেদিন খায়বার বিজিত হলো, সেদিন লোকেরা অনেক আগুন জ্বালাল।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমরা এত সব আগুন কি জন্য জ্বালাচ্ছ? লোকেবা বললোঃ গোশত রান্নার জন্য। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ কিসের গোশত? তারা বললঃ গৃহপালিত গাধার গোশত। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এসব গোশত ফেলে দাও এবং হাড়িগুলো ভেঙ্গে ফেল। এক ব্যাক্তি বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! বরং গোশতগুলো ফেলে আমরা হাড়িগুলো ধুয়ে নেই? তিনি বললেনঃ তবে তাই কর।

রাবী বলেন যখন লোকের যুদ্ধে সারিবদ্ধ হল, আমির (রাঃ) এর তলোয়ার খানা খাঁটো ছিল। তিনি এক ইয়াহুদীকে মারার উদ্দেশ্য এটি দিয়ে তার উপর আক্রমণ করলেন। কিন্তু তার তলোয়ারের ধারাল অংশ আমির (রাঃ) এর হাটুতে এসে আঘাত করল। এতে তিনি মারা গেলেন। তারপর ফিরার সময় সবাই ফিরলেন।

সালামা (রাঃ) বলেনঃ আমার চেহারার রং পরিবর্তন দেখে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমার কি হয়েছে? আমি বললাম আমার বাপ-মা আপনার উপর কুরবানী হউন! লোকেরা বলছে যে, আমিরের আমল সব বরবাদ হয়ে গেছে। তিনি বললেনঃ এ কথাটা কে বলেছে? আমি বললাম অমুক, অমুক অমুক এবং উসায়দ ইবনু হুয়াইর আনসারী (রাঃ)। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যারা এ কথা বলেছে, তারা মিথ্যা বলেছে। তিনি বললেনঃ তার দুটি পুরস্কার রয়েছে, সে জাহিদ এবং মুজাহিদ। আরব ভূ-খণ্ডে তার মত লোক অল্পই জন্ম নিয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৮ | 5718 | ۵۷۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৫২০. কবিতা পাঠ, সঙ্গীত ও উট চালানোর সঙ্গীতের মধ্যে যা জায়িয ও যা না-জায়িয। আল্লাহ তা’আলার বানীঃ এবং বিপথগামী লোকেরাই কবিদের অনুসরন করে থাকে …… তারা কোন পথে ফিরে বেড়াচ্ছে
৫৭১৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার কতক সহধর্মিণীর কাছে আসলেন। তখন তাদের সঙ্গে উম্মে সুলায়মও ছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন সর্বনাশ, হে আনজাশাহ! তুমি (উট) চালাও। কেননা, তুমি কাঁচপাত্র (মহিলা নিয়ে চলেছ। রাবী আবূ কিলাবা বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘সাওকাকা বিল কাওয়ারীর’ বাক্য দ্বারা এমন বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করলেন, যা অন্য কেউ বললে, তোমরা তাকে ঠাট্টা করতে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭১৯ | 5719 | ۵۷۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৫২৩. কবিতার মাধ্যমে মুশরিকদের নিন্দা করা
৫৭১৯। মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার হাসসান ইবনু সাবিত (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট মুশরিকদের নিন্দা করার অনুমতি চাইলেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তা হলে এ নিন্দা থেকে আমার বংশ মর্যাদা কিভাবে বাঁচাবে? তখন হাসসান (রাঃ) বললেনঃ আমি তাদের থেকে আপনাকে এমনভাবে বের করে দেব, যেভাবে মাখানো আটা থেকে চুল বের করে আনা হয়।

রাবী উরওয়া বর্ননা করেন একদিন আমি আয়িশা (রাঃ) এর কাছে হাসসান (রাঃ) কে গালি দিতে শুরু করলাম তখন তিনি বললেনঃ তুমি তাকে গালমন্দ করো না। কারণ, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর তরফ থেকে মুশরিকদের প্রতিরোধ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭২০ | 5720 | ۵۷۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৫২৩. কবিতার মাধ্যমে মুশরিকদের নিন্দা করা
৫৭২০। আসবাগ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) তার বর্ণনায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কথা উল্লেখ করে বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের ভাই অর্থাৎ কবি ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) অশ্লীল কথা বলেনি। তিনি বলতেনঃ আমাদের মধ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তিনি কুরআন তিলাওয়াত করেন; যখন ভোরের মনোরম আলো ফুটে উঠে। পথভ্রষ্ট হওয়ার পর তিনি আমাদের সুপথ দেখিয়েছেন। আর আমরা অন্তরের সাথে একীন করলাম যে, তিনি যা বলছেন তা ঘটবেই। তিনি নিজ পিঠ বিছানা থেকে সরিয়ে রেখেই রাত কাটান। যখন কাফিরদের শয্যা-সুখ ত্যাগ করা তাদের পক্ষে ভারী কষ্টকর হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭২১ | 5721 | ۵۷۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৫২৩. কবিতার মাধ্যমে মুশরিকদের নিন্দা করা
৫৭২১। আবুল ইয়ামান ও ইসরাঈল (রহঃ) … হাসসান ইবনু সাবিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আবূ হুরায়রা! আমি আপনাকে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞাসা করছি। আপনি কি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে একথা বলতে শুনেছেন যে ওহে হাসসান! তুমি আল্লাহর রাসুলের তরফ থেকে পাল্টা জবাব দাও। হে আল্লাহ! তুমি জিবরীল (আলাইহিস সালাম) এর মাধ্যমে তাকে সাহায্য কর। আবূ হুরায়রা (রাঃ) বললেনঃ হ্যাঁ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭২২ | 5722 | ۵۷۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৫২৩. কবিতার মাধ্যমে মুশরিকদের নিন্দা করা
৫৭২২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … বারাআ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাসসান (রাঃ) কে বললেনঃ তুমি কাফিরদের নিন্দা করো। জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তোমার সহায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৩ | 5723 | ۵۷۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৫২৪. যে কবিতা মানুষকে এতটা প্রভাবিত করে, যা তাকে আল্লাহর স্মরণ, জ্ঞান অর্জন ও কুরআন থেকে বাধা দেয়, তা নিষিদ্ধ
৫৭২৩। উবায়দুল্লাহ ইবনু মূসা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কারো উদর কবিতা দিয়ে ভর্তি হওয়ার চেয়ে পূজ দিয়ে ভর্তি হওয়া অনেক ভাল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৪ | 5724 | ۵۷۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৫২৪. যে কবিতা মানুষকে এতটা প্রভাবিত করে, যা তাকে আল্লাহর স্মরণ, জ্ঞান অর্জন ও কুরআন থেকে বাধা দেয়, তা নিষিদ্ধ
৫৭২৪। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তির পেট কবিতা দিয়ে ভর্তি হওয়ার চাইতে এমন পূজে তর্তি হওয়া উত্তম যা তোমাদের পেটকে ধবংস করে ফেলে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৫ | 5725 | ۵۷۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৫২৫. নাবী (ﷺ)এর উক্তিঃ তোমার ডান হাত ধূলি ধূসরিত হোক। তোমার হাত-পা ধ্বংস হোক এবং তোমার কন্ঠদেশ ঘায়েল হোক
৫৭২৫। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, পর্দার হুকুম নাযিল হওয়ার পর আবূ কুয়ায়সের ভাই আফলাহ আমার গৃহে প্রবেশের অনুমতি চাইলেন। আমি বললামঃ আল্লাহর কসম! আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে অনুমতি না নিয়ে, তাকে অনুমতি দেব না। কারন, আবূ কুয়ায়সের স্ত্রী আমাকে দুধ পান করিয়েছেন। ইতিমধ্যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার ঘরে প্রবেশ করলেন। আমি বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! এ ব্যাক্তি তো আমাকে দুধ পান করান নি। বরং তার স্ত্রী আমাকে দুধ পান করিয়েছেন। তিনি বললেন অনুমতি দাও। কারণ এ লোকটি তোমার (দুধ) চাচা। তোমার ডান হাত ধূলায় ধূসরিত হোক। রাবী উরওয়া বলেন, এ কারণেই আয়িশা (রাঃ) বলতেন যে, বংশগত সম্পর্কে বিবাহে যারা হারাম হয় দুধ পান সম্পর্কেও তোমরা তাদের হারাম গন্য করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৬ | 5726 | ۵۷۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৫২৫. নাবী (ﷺ)এর উক্তিঃ তোমার ডান হাত ধূলি ধূসরিত হোক। তোমার হাত-পা ধ্বংস হোক এবং তোমার কন্ঠদেশ ঘায়েল হোক
৫৭২৬। আদম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে আসার ইচ্ছা করলেন। তখন সাফিয়্যা (রাঃ) ঋতুস্রাব আরম্ভ হওয়ায় তার দরজার সামনে চিন্তিত ও বিষণ্ণ বদনে দাঁড়িয়ে আছেন দেখতে পেলেন। তখন তিনি কুরাইশদের বাগধারায় বলেনঃ ‘আকরা হালকী’। তুমি তো দেখছি, আমাদের আটকিয়ে দিবে। এরপর জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কি কুরবানীর দিনে ফরয তাওয়াফ আদায় করেছিলে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তখন তিনি বললেনঃ: তাহলে এখন তুমি চলো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৭ | 5727 | ۵۷۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৫২৬. ‘যা‘আমু’ (তারা ধারণা করেন) সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে
৫৭২৭। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … উম্মে হানী বিনত আবূ তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন মক্কা বিজয়ের বছর আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে গিয়ে তাকে গোসল করতে পেলাম। তখন তাঁর কন্যা ফাতিমা (রাঃ) তাঁকে পর্দা দিয়ে আড়াল করছিলেন। আমি তাঁকে সালাম দিলাম, তিনি জিজ্ঞাসা করলেন এ কে? আমি বললাম আমি আবূ তালিবের মেয়ে উম্মে হানী। তিনি বললেনঃ উম্মে হানীর জন্য মারহাবা। তারপর তিনি যখন গোসল শেষ করলেন। তখন তিনি দাঁড়ালেন এবং এক কাপড় গায়ে জড়িয়ে আট রাকাআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তিনি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলে আমি বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি হুবায়রার পূত্র অমুককে নিরাপত্তা দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার ভাই বলছে, সে তাকে হত্যা করবে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উম্মে হানী। তুমি যাকে নিরাপত্তা দিয়েছ, আমিও তাকে নিরাপত্তা দিলাম। উলে হানী (রাঃ) বলেন এই সময়টি ছিল চাশতের সময়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৮ | 5728 | ۵۷۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭২৮। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে একটি কুরবানীর উট হাকিয়ে নিতে দেখে, তাকে বললেনঃ এতে সাওয়ার হয়ে যাও। সে বললঃ এটি তো কুরবানীর উট। তিনি আবার বললেন সাওয়ার হয়ে যাও। সে বললঃ এটি তো কুরবানীর উট। তিনি বললেন এতে সাওয়ার হয়ে যাও। সে বলল, এটি তো কুরবানীর উট। তিনি বললেনঃ ওয়াইলাকা (তোমার অকল্যাণ হোক) তুমি এটির উপর সাওয়ার হয়ে যাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭২৯ | 5729 | ۵۷۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭২৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে একটা কুরবানীর উট হাকিয়ে নিয়ে যেতে দেখে বললেনঃ তুমি এর উপর সাওয়ার হয়ে যাও। সে বলল ইয়া রাসুলাল্লাহ! এটি তো কুরবানীর উট। তখন তিনি দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়বার বললেনঃ ওয়াইলাকা (তোমার অনিষ্ট হোক) তুমি এতে সাওয়ার হয়ে যাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩০ | 5730 | ۵۷۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩০। মুসাদ্দাদ ও আইউব (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সফরে ছিলেন। তার সঙ্গে তখন আনজাশা নামক একজন কালো গোলাম ছিল। সে পুথি গাইতেছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ ওহে আনজালা তোমার সর্বনাশ। তুমি উটটিকে কাচপাত্র সদৃশ সাওয়ারীদের নিয়ে ধীরে চালিয়ে যাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩১ | 5731 | ۵۷۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩১। মূসা ইবনু ইসমাঈস (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে অনেক জনের প্রশংসা করলো। তিনি বললেনঃ ‘ওয়াইলাকা’ (তোমার অমঙ্গল হোক) তুমি তো তোমার ভাই এর গর্দান কেটে দিয়েছ। তিনি এ কথাটি তিনবার বললেনঃ তিনি আরও বললেনঃ যদি তোমাদের কাউকে কারেই প্রশংসা করতেই হয়, আর সে তার অবস্থা সম্পর্কে অবহিত থাকে, তবে শুধু এতটুকু বলবে যে, আমি এ ব্যাক্তি সম্পর্কেই এরূপ ধারনা পোষণ করি। প্রকৃত হিসাব নিকাশের মালিক একমাত্র আল্লাহ। আর আমি নিশ্চিতভাবে আল্লাহর সামনে কারো পবিত্রতা বর্ণনা করছি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩২ | 5732 | ۵۷۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩২। আবদুর রহমান ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা নিজ অধিকারভুক্ত কিছু মাল নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভাগ করে দিলেন। এমন সমর তামীম গোত্রের যুল খোয়াইসীরা নামক এক ব্যাক্তি বলে উঠল ইয়া রাসুলাল্লাহ! ইনসাফ করুন। তখন তিনি বললেনঃ ওয়ায়লাকা (তোমার অমঙ্গল হোক) আমি ইনসাফ না করলে আর কে ইনসাফ করবে? তখন উমর (রাঃ) বললেনঃ আপনি আমাকে অনুমতি দিন, আমি এর গর্দান উড়িয়ে দেই। তিনি বললেনঃ না। কারন, তার এমন কতক সাথী রয়েছে; যাদের সালাত (নামায/নামাজ) এর সামনে নিজেদের সালাত (নামায/নামাজ)কে তুচ্ছ মনে করবে এবং তাদের সিয়ামের সামনে তোমাদের নিজেদের সিয়ামকে তুচ্ছ মনে করবে। তারা দ্বীন থেকে এমনভাবে বেরিয়ে যাবে! যেমনিভাবে তীর শিকার ভেদ করে বেরিয়ে যায় — গোবর ও রক্তকে এমনভাবে অতিক্রম করে যায় যে তীরের অগ্রভাগ লক্ষ্য করলে তাতে কোন চিহ্ন পাওয়া যায় না, তার উপরিভাগে লক্ষ্য করলেও কোন চিহ্ন পাওয়া যায়না। তার কাঠামোতে ও কোন চিহ্ন নেই। তার পাতির মধ্যে ও, কোন চিহ্ন নেই।

এমন সময় তাদের আবির্ভাব হবে যখন মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ দেখা দিবে। তাদের পরিচয় হল, তাদের নেতা এমন এক ব্যাক্তি হবে, যার একহাত স্ত্রীলোকের রক্তের মত অথবা শিড়ের মত তা কাপতে থাকবে। রাবী আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেন, আমি সাক্ষ্য দিয়ে বলছি যে, আমি নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একথা শুনেছি এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি নিজে আলী (রাঃ) এর সাথে ছিলাম যখন তিনি এ দলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন। তখন সে লোকটিকে যুদ্ধের নিহত ব্যাক্তিদের মধ্য থেকে খুজে বের করে আনার পর তাকে ঠিক সেই অবস্থায়ই পাওয়া গেল, যে অবস্থার বর্ণনা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দিয়েছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৩ | 5733 | ۵۷۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩৩। আবুল হাসান মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে এসে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি তো ধবংস হয়ে গেছি। তিনি বললেনঃ ওয়ায়লাকা (আফসোস তোমার জন্য) এরপর সে বলল আমি রামযানের মধ্যেই দিনের বেলায় আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। তিনি বললেন একটা গোলাম আযাদ করে দাও সে বললঃ আমার কাছে তা নেই। তিনি বললেনঃ তা হলে তুমি লাগাতার দু’মাস সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন কর। সে বলল আমি এতেও সক্ষম নই। তিনি বললেনঃ তবে তুমি ষাটজন মিসকীনকে খাওয়াও। লোকটি বললঃ আমি এর সামর্থ রাখি না। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে এক ঝুড়ি খেজুর এলো। তখন তিনি বললেনঃ এটা নিয়ে যাও এবং সাদাকা করে দাও। সে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তা কি আমার পরিবার ব্যতীত অন্যকে দেব? সেই সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রান। মদিনার উভয় প্রান্তের মধ্যে আমার চেয়ে অভাবী আর কেউ নেই। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনভাবে হেসে দিলেন যে, তার পার্শ্বের দাঁত পর্যন্ত প্রকাশ পেল। তিনি বললেনঃ তবে তুমিই নিয়ে যাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৪ | 5734 | ۵۷۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩৪। সুলায়মান ইবনু আবদুর রহমান (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একজন গ্রাম্য লোক এসে বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমাকে হিজরত সম্পর্কে কিছু বর্ণনা করুন। তিনি বললেনঃ আফসোস তোমার প্রতি হিজরত তো খুব কঠিন ব্যাপার। তোমার উট কি আছে? সে বললঃ হ্যাঁ। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি এর যাকাত দিয়ে থাক? লোকটি বললঃ হ্যাঁ। তিনি বললেনঃ তবে তুমি সমুদ্রের ঐ পাশ থেকেই আমল করে যাও। নিশ্চয়ই আল্লাহ সাওয়াব একটুও কমাবেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৫ | 5735 | ۵۷۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩৫। আবদুল্লাহ ইবনু আবদুল ওয়াহহাব (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘ওয়ায়লাকুম’ অথবা ‘ওয়ায়হাকুম’ (তোমাদের জন্য আফসোস) আমার পরে তোমরা আবার কাফির হয়ে যেয়ো না। যাতে তোমরা একে অন্যের গর্দান মারবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৬ | 5736 | ۵۷۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৫২৭. কাউকে ‘ওয়ালাইকা’ বলা
৫৭৩৬। আমর ইবনু আসিম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, এক গ্রাম্য লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে এসে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ কিয়ামত কবে সংঘটিত হবে? তিনি বললেনঃ তোমার জন্য আক্ষেপ তুমি এর জন্য কি প্রস্তুতি নিয়েছ? সে জবাব দিলঃ আমি তো তার জন্য কিছু প্রস্তুতি নেই নি, তবে আমি আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ভালবাসি। তিনি বললেনঃ তুমি যাকে ভালবাস, কিয়ামতের দিন তুমি তার সঙ্গেই থাকবে। তখন আমরা বললামঃ আমাদের জন্যও কি এরূপ? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। এতে আমরা সে দিন যারপরনাই আনন্দিত হলাম। আনাস (রাঃ) বলেন এ সময় মুগীরা (রাঃ) এর একটি যুবক ছেলে পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। সে ছিল আমার সমবয়সী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি এ যুবকটি বেশী দিন বেঁচে থাকে, তবে সে বৃদ্ধ হওয়ার আগেই কিয়ামত সংঘটিত হতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৭ | 5737 | ۵۷۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৫২৮. মহামহিম আল্লাহর প্রতি ভালবাসার নিদর্শন। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (আপনি বলে দিন) যদি তোমরা আল্লাহকে সত্যই ভালবেসে থাকো, তা’হলে তোমরা আমার অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন
৫৭৩৭। বিশর ইবনু খালিদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষ (দুনিয়াতে) যাকে ভালবাসবে (কিয়ামতে) সে তারই সঙ্গী হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৮ | 5738 | ۵۷۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৫২৮. মহামহিম আল্লাহর প্রতি ভালবাসার নিদর্শন। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (আপনি বলে দিন) যদি তোমরা আল্লাহকে সত্যই ভালবেসে থাকো, তা’হলে তোমরা আমার অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন
৫৭৩৮। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) বলেছেনঃ এক ব্যাক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে জিজ্ঞাসা করলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এমন ব্যাক্তি সম্পর্কে আপনি কি বলেন, যে ব্যাক্তি কোন দলকে ভালবাসে, কিন্তু (আমলের দিক দিয়ে) তাদের সমান হতে পারে নি। তিনি বললেনঃ মানুষ যাকে ভালবাসে সে তারই সঙ্গী হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৩৯ | 5739 | ۵۷۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৫২৮. মহামহিম আল্লাহর প্রতি ভালবাসার নিদর্শন। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (আপনি বলে দিন) যদি তোমরা আল্লাহকে সত্যই ভালবেসে থাকো, তা’হলে তোমরা আমার অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন
৫৭৩৯। আবূ নুয়াইম (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হলোঃ কোন ব্যাক্তি একদলকে ভালবাসে কিন্তু (আমলে) তাদের সমকক্ষ হতে পারেনি। তিনি বললেনঃ মানুষ যাকে ভালবাসে, সে তারই সঙ্গী হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪০ | 5740 | ۵۷٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৫২৮. মহামহিম আল্লাহর প্রতি ভালবাসার নিদর্শন। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ (আপনি বলে দিন) যদি তোমরা আল্লাহকে সত্যই ভালবেসে থাকো, তা’হলে তোমরা আমার অনুসরণ কর। তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন
৫৭৪০। আবদান (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! কিয়ামত কবে হবে? তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি এর জন্য কি যোগাড় করেছ? সে বললঃ আমি এর জন্য তো বেশী কিছু সালাত (নামায/নামাজ), সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) ও সাদাকা আদায় করতে পারি নি। কিন্তু আমি আল্লাহ ও তার রাসুলকে ভালবাসি। তিনি বললেনঃ তুমি যাকে ভালবাস তারই সঙ্গী হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪১ | 5741 | ۵۷٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৫২৯. কেউ কাউকে ‘দূর হও’ বলা
৫৭৪১। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইবনু সাঈদকে বললেনঃ আমি তোমার জন্য একটি কথা গোপন রেখেছি, তুমি বলতো সেটা কি? সে বললঃ ‘দুখ’ তখন তিনি বললেনঃ দূর হও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪২ | 5742 | ۵۷٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৫২৯. কেউ কাউকে ‘দূর হও’ বলা
৫৭৪২। আবুল ইয়ামান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন উমব ইবনু খাত্তাব (রাঃ) একদল সাহাবীসহ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ইবনু সহিয়্যাদের নিকট গমন করেন। তারা সেখানে গিয়ে তাকে বনূ মাগালাহের দূর্গের পাশে ছেলেদের সাথে খেলায় রত গেলেন। তখন সে বালেগ হওয়ার কাছাকাছি বয়সে পৌছেছেন। সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আগমন টের পেল না যতক্ষন না রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার হাত দিয়ে তার পিঠে মারলেন। তারপর তিনি বললেনঃ তুমি কি সাক্ষ্য দাও যে আমিই আল্লাহর রাসুল? তখন সে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দিকে তাকিয়ে বললোঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি উম্মি সম্প্রদায়ের রাসূল। এরপর ইবনু সাইয়্যাদ বললোঃ আপনি কি সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, আমিই আল্লাহর রাসূল? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ধাক্কা মেরে বললেন, আমি আল্লাহ ও তার রাসুলদের উপর ঈমান রাখি।

তারপর আবার তিনি ইরনে সাইয়্যেদকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কী দেখতে পাও? সে বললো আমার নিকট সত্যবাদী ও মিথ্যাবাদী উভয়ই আসেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বিষয়টি তোমার উপর এলোমেলো করে দেয়া হয়েছে। এরপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন আমি তোমার (পরীক্ষার) জন্য কিছু গোপন রাখছি। সে বলছেনঃ তা ‘দুখ’। তখন তিনি বললেনঃ দূর হও। তুমি কখনো তোমার ভাগ্যকে অতিক্রম করতে পারবে না। উমর (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আপনি কি তার ব্যাপারে আমাকে অনুমতি দেন যে, আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ যদি সেই (দাজ্জালই) হয়ে থাকে, তবে তার উপর তোমাকে ক্ষমতা দেওয়া হবে না। আর এ যদি সে না হয়ে থাকে, তবে তাকে হত্যা করা তোমার জন্যই ভাল হবে না।

সালিম (রাঃ) বলেনঃ এরপর আমি আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, এ ঘটনার পর একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং উবাই ইবনু কাব (রাঃ) সেই খেজুর বাগানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন, যেখানে ইবনু সাইয়্যাদ ছিল। অবশেষে যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাগানে প্রবেশ করলেন, তখন তিনি খেজুরের কাণ্ডের আড়ালে আড়ালে চলতে লাগলেন। তার লক্ষ্য ছিল যে, ইবনু সাইয়্যাদ তাকে দেখার আগেই যেন তিনি তার কিছু কথাবার্তা শুনে নিতে পারেন। এ সময় ইবনু সাইয়্যাদ তার বিছানায় একখানা চাঁদর মুড়ি দিয়ে শুয়েছিল। আর তার চাদরের ভেতর থেকে বিড়বিড় শব্দ শোনা যাচ্ছিল।

ইতিমধ্যে ইবনু সাইয়্যাদের মা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দেখল যে, তিনি খেজুরের কাণ্ডের আড়ালে লুকিয়ে লুকিয়ে আসছেন। তখন তার মা তাকে ডেকে বললোঃ ওহে সাফ! এটা তার ডাক নাম ছিলো। এই যে, মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তখন ইবনু সাইয়্যাদ (যে বিষয়ে মগ্ন ছিল তা থেকে) বিরত হন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ যদি তার মা তাকে সতর্ক না করতো তবে তার (রহস্য) প্রকাশ পেয়ে যেতো।

রাবী সালিম আরও বলেনঃ আবদুল্লাহ (রাঃ) বর্ননা করেছেন যে, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে আল্লাহ তা’আলার যথোপযুক্ত প্রশংসার পর দাজ্জালের উল্লেখ করে বললেনঃ আমি তোমাদের তার সম্পর্কে সতর্ক করে দিচ্ছি। প্রত্যেক নাবীই এর সম্পর্কে তার কওমকে সতর্ক করে গিয়েছেন। আমি এর সম্পর্কে এমন কথা বলছি যা অন্য কোন নাবী তার কাওমকে বলেন নি। তবে তোমরা জেনে রাখ সে কানা; কিন্তু আল্লাহ কানা নন।

পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৩ | 5743 | ۵۷٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৫৩০. কাউকে মারহাবা বলা। আয়িশাহ্ (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ফাতেমা (রাঃ) কে বলেছেনঃ আমার মেয়ের জন্য ‘মারহাবা’। উম্মু হানী (রাঃ) বলেন, আমি একবার নাবী (সাঃ) এর নিকট এলাম। তিনি বললেনঃ উম্মু হানী ‘মারহাবা’।
৫৭৪৩। ইমরান ইবনু মায়সারা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আবদুল কায়সের প্রতিনিধি দল নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলে তিনি বললেনঃ এই প্রতিনিধি দলের প্রতি ‘মারহাবা’ যারা লাঞ্চিত ও লজ্জিত অবস্থায় আসে নি। তারা বললঃ ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমরা রাবিয়া কাওমের লোক। আমরা ও আপনার মধ্যখানে অবস্থান করছে ‘মুযার’ কাওম। এজন্য আমরা হারাম মাস ছাড়া আপনার খেদমতে পৌছতে পারি না। সুতরাং আপনি আমাদের এমন কিছু চুড়ান্ত বিধি নিষেধ বাতলিয়ে দেন যা অনুসরন করে আমরা জান্নাতে যেতে পারি এবং আমাদের পাচাতে যারা রয়েছে তাদের হেদায়েত দিতে পারি। তিনি বললেনঃ আমি চারটি (মেনে চলা) ও চারটি (হতে বিরত থাকার) নির্দেশ দিচ্ছি। তোমরা সালাত (নামায/নামাজ) কায়েম করবে, যাকাত দেবে। রামযান মাসের সিয়াম পালন করবে এবং গনীমতের মালের পঞ্চমাংশ দান করবে। আর কদুর খোলে, সবুজ রং করা কলসে, খেজুর মূলের পাত্রে এবং আলকাতরা মাখানো পাত্রে পান করবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৪ | 5744 | ۵۷٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৫৩১. ক্বিয়ামাতের দিন মানুষকে তাদের পিতার নামে ডাকা হবে
৫৭৪৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (কিয়ামতের দিন) প্রতিজ্ঞা ভঙ্গকারীর জন্য একটি পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং বলা হবে যে, এ হল অমুকের পুত্র অমুকের নিদর্শন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৫ | 5745 | ۵۷٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৫৩১. ক্বিয়ামাতের দিন মানুষকে তাদের পিতার নামে ডাকা হবে
৫৭৪৫। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গকারীর জন্য কিয়ামত দিবসে একটা পতাকা স্থাপন করা হবে। আর বলা হবে যে, এটা অমুকের পুত্র অমুকের নিদর্শন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৬ | 5746 | ۵۷٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৫৩২. কেউ যেন না বলে, আমার আত্মা ‘খবীস’ হয়ে গেছে
৫৭৪৬। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! তোমাদের কেউ যেন একথা না বলে যে, আমার আত্না খবীস হয়ে গেছে। তবে একথা বলতে পার যে আমার আত্মা কলুষিত হয়ে গেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৭ | 5747 | ۵۷٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৫৩২. কেউ যেন না বলে, আমার আত্মা ‘খবীস’ হয়ে গেছে
৫৭৪৭। আবদান (রহঃ) … আবূ ইমামা ইবনু সাহল তার পিতা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাবধান! তোমাদের কেউ যেন একথা না বলে, আমার আত্মা খবীস হয়ে গেছে। বরং সে বলবেঃ আমার আত্মা কলুষিত হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৮ | 5748 | ۵۷٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৫৩৩. যামানাকে গালি দেবে না
৫৭৪৮। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ বলেনঃ মানুষ যামানাকে গালি দেয়, অথচ আমিই যামানা, (এর নিয়ন্ত্রণের মালিক)। একমাত্র আমারই হাতে রাত ও দিনের পরিবর্তন হয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৪৯ | 5749 | ۵۷٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৫৩৩. যামানাকে গালি দেবে না
৫৭৪৯। আইয়্যাশ ইবনু ওয়ালীদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আংগুরকে ‘কারম’ বলো না। আর বলবে না বঞ্চিত যুগ। কারন আল্লাহ হলেন যুগ এর নিয়ন্তা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫০ | 5750 | ۵۷۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৫৩৪. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ প্রকৃত ‘কারম’ হলো মু’মিনের কলব। তিনি বলেছেনঃ প্রকৃত সম্বলহীন হলো সে, যে লোক ক্বিয়ামাতের দিন সম্বলহীন। যেমন (অন্যত্র) তাঁরই বাণীঃ প্রকৃত বাহাদুর হলো সে লোক, যে রাগের সময় নিজেকে সামলিয়ে রাখতে পারে। আরও যেমন তাঁরই বাণীঃ আল্লাহ একমাত্র বাদশাহ্। আবার তিনিই এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে, একমাত্র আল্লাহ তা’আলাই সার্বভৌমত্বের মালিক। এরপর বাদশাহদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আল্লাহর বাণীঃ “বাদশাহরা যখন কোন জনপদে প্রবেশ করে, তখন তারা তা ধ্বংস করে দেয়”
৫৭৫০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ লোকেরা (আঙ্গুরকে) ‘করম’ বলে, কিন্তু আসলে করম হলো মুমিনের অন্তর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫১ | 5751 | ۵۷۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৫৩৫. কোন ব্যক্তির এ রকম কথা বলা আমার বাপ-মা আপনার প্রতি কুরবান। এ সম্পর্কে নবী (সাঃ) থেকে যুবায়র (রাঃ) এর একটি হাদিস আছে
৫৭৫১। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আলী (রাঃ) বলেন, আমি সা’দ (রাঃ) ব্যতীত আর কারো সম্পর্কে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে একথা বলতে শুনি নাই যে, আমার মা-বাপ তোমার প্রতি কুরবান। আমি তাকে বলতে শুনেছিঃ হে সা’দ! তুমি তীর চালাও। আমার মা ও বাপ তোমার প্রতি কুরবান। আমার ধারনা হচ্ছে যে, একথা তিনি ওহুদের যুদ্ধে বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫২ | 5752 | ۵۷۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৫৩৬. কোন ব্যক্তির এ কথা বলা যে, আল্লাহ আমাকে তোমার প্রতি কুরবান করুন। আবু বকর (রাঃ) নবী (সাঃ) কে বললেনঃ আমরা আমাদের পিতা ও মাতাদের আপনার প্রতি কুরবান করলাম
৫৭৫২। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে তিনি ও আবূ তালহা (রাঃ) (মদিনায়) আসছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাফিয়্যা (রাঃ) তার উটের পেছনে বসাছিলেন। পথে এক জায়গায় উটের পা পিছলে যায় এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার স্ত্রী পড়ে যান। তখন আবূ তালহা (রাঃ) ও তার উট থেকে লাফ দিয়ে নামলেন এবং নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন ইয়া নাবী আল্লাহ! আপনার কি কোন আঘাত লেগেছে? আল্লাহ আমাকে আপনার প্রতি কুরবান করুন। তিনি বললেনঃ না। তবে স্ত্রী লোকটির খবর নাও। তখন আবূ তালহা (রাঃ) তার কাপড় দিয়ে চেহারা ঢেকে তার দিকে অগ্রসর হলেন এবং তার উপরও একখানা কাপড় ফেলে দিলেন। তখন স্ত্রীলোকটি উঠে দাঁড়ালেন। এরপর আবূ তালহা (রাঃ) তাদের সাওদাটি উটের উপর কসে বেধে দিলেন। তারা উভয়ে সাওয়ার হলেন এবং সবাই আবার রওয়ানা হলেন। অবশেষে যখন তারা মদিনার নিকটে পৌছলেন, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতে লাগলেনঃ আমরা তাওবাকারী, ইবদিতকারী এবং একমাত্র স্বীয় প্রতিপালকের প্রশংসাকারী। তিনি মদিনায় প্রবেশ করা পর্যন্ত একথাগুলো বলছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৩ | 5753 | ۵۷۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৫৩৭. আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় নাম
৫৭৫৩। সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমাদের একজনের একটি ছেলে জন্মগ্রহণ করল। সে তার নাম রাখল কাসেম। আমরা বললামঃ আমরা তোমাকে আবূল কাসেম ডাকবো না এবং সেরূপ মর্যদাও করবো না। তিনি একথা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানালেন। তিনি বললেন তোমার ছেলের নাম আবদুর রাহমান রেখে দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৪ | 5754 | ۵۷۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৫৩৮. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার নামে নাম রাখতে পার, তবে আমার কুনিয়াত দিয়ে কারো কুনিয়াত (ডাক নাম) রেখো না। আনাস (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে এ হাদিসটি বর্ণনা করেছেন
৫৭৫৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাদের এক ব্যাক্তির একটি ছেলে জন্মগ্রহণ করল। সে তার নাম রাখলো ‘কাসেম’। তখন সে বললঃ আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা না করে তাকে এ কুনিয়াতে ডাকবো না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা আমার নামে নাম রেখো, কিন্তু আমার কুনিয়াতে কেউ কুনিয়াত রেখো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৫ | 5755 | ۵۷۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৫৩৮. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার নামে নাম রাখতে পার, তবে আমার কুনিয়াত দিয়ে কারো কুনিয়াত (ডাক নাম) রেখো না। আনাস (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে এ হাদিসটি বর্ণনা করেছেন
৫৭৫৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আবূল কাসিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আমার নামে নাম রেখো, কিন্তু আমার কুনিয়াতে কুনিয়াত রেখো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৬ | 5756 | ۵۷۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৫৩৮. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ আমার নামে নাম রাখতে পার, তবে আমার কুনিয়াত দিয়ে কারো কুনিয়াত (ডাক নাম) রেখো না। আনাস (রাঃ) নবী (সাঃ) থেকে এ হাদিসটি বর্ণনা করেছেন
৫৭৫৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমাদের একজনের একটি ছেলে হলে সে তার নাম রাখলো ‘কাসেম’। তখন আমরা বললাম আমরা তোমাকে ‘আবূল কাসেম’ কুনিয়াতে ডাকবো না। আর এ দ্বারা তোমার চোখও শীতল করবো না। তখন সে ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে ঐ কথা উল্লেখ করলে তিনি বললেনঃ তোমার ছেলের নাম রাখ আবদুর রহমান।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৭ | 5757 | ۵۷۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৫৩৯. ‘হাযন’ নাম
৫৭৫৭। ইসহাক ইবনু নাসর (রহঃ) … ইবনু মুসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তার পিতা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমার নাম কি? তিনি বললেনঃ হাযন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং তোমার নাম ‘সাহল’। তিনি বলেনঃ আমার পিতা আমার যে নাম রেখেছেন, তা অন্য কোন নাম দিয়ে আমি বদলাবো না। ইবনু মুসায়্যাব (রহঃ) বলেনঃ এরপর থেকে আমাদের বংশের মধ্যে কঠিনতাই চলে এসেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৮ | 5758 | ۵۷۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৫৪০. নাম বদলিয়ে পূর্বের নামের চাইতে উত্তম নাম রাখা
৫৭৫৮। সাঈদ ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … সাহল (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, যখন মুনযির ইবনু আবূ উসায়দ জন্মগ্রহণ করলেন, তখন তাকে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খেদমতে নিয়ে আসা হল। তিনি তাকে নিজের উরুর উপর রাখলেন। আবূ উসায়দ (রাঃ) পাশেই বসা ছিলেন। এ সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সামনেই কোন জরুরী কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ইত্যবসরে আবূ উসায়দ (রাঃ) কারো দ্বারা তার উরুর থেকে তাকে উঠায়ে নিয়ে গেলেন। পরে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে কাজ থেকে অবসর হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন শিশুটি কোথায়? আবূ উসায়দ বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি তাকে ফেরৎ পাঠিয়ে দিয়েছি। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তার নাম কি? তিনি বললেনঃ অমুক। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ বরং তার নাম মুনযির। সে দিন থেকে তার নাম রাখলেন মুনযির।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৫৯ | 5759 | ۵۷۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৫৪০. নাম বদলিয়ে পূর্বের নামের চাইতে উত্তম নাম রাখা
৫৭৫৯। সাদাকা ইবনু ফাযল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে যায়নাব (রাঃ) এর নাম ছিলো ‘বাররাহ’ (নেককার)। তখন কেউ বললেন এতে তিনি নিজের পবিত্রতা প্রকাশ করছেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর নাম রাখলেন ‘যায়নাব’।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬০ | 5760 | ۵۷٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৫৪০. নাম বদলিয়ে পূর্বের নামের চাইতে উত্তম নাম রাখা
৫৭৬০। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … সাঈদ ইবনু মূসাইয়্যাব (রহঃ) থেকে বর্ণিত। একবার তার দাদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে আসলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তোমার নাম কি? তিনি উত্তর দিলেন আমার নাম হাযন। তিনি বললেনঃ না বরং তোমার নাম “সাহল”। তিনি বললেনঃ আমার পিতা আমার যে নাম রেখে গিয়েছেন তা আমি বদলাতে চাই না। ইবনু মূসাইয়্যাব বলেন, ফলে এরপর থেকে আমাদের বংশে কঠিনতাই চসে আসছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬১ | 5761 | ۵۷٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৫৪১. নাবীদের (আঃ) নামে যারা নাম রাখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ইব্রাহীম (রাঃ) কে চুমু দিয়েছেন অর্থাৎ তাঁর পুত্রকে।
৫৭৬১। ইবনু নুমায়র (রহঃ) … ইসমাঈল (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ আপনি কি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পুত্র ইবরাহীম (রাঃ) কে দেখেছেন? তিনি বললেনঃ তিনি তো ছোট বেলায়ই মারা গিয়েছেন। যদি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পরে কোন নাবী হওয়ার বিধান থাকত তবে তার পুত্র বেঁচে থাকতেন। কিন্ত তার পরে কোন নাবী হবেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬২ | 5762 | ۵۷٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৫৪১. নাবীদের (আঃ) নামে যারা নাম রাখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ইব্রাহীম (রাঃ) কে চুমু দিয়েছেন অর্থাৎ তাঁর পুত্রকে।
৫৭৬২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আদী ইবনু সাবিত (রাঃ) বলেন, আমি বারাআ (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, যখন ইবরাহীম (রাঃ) মারা যান তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ জান্নাতে তার জন্য ধাত্রী থাকবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৩ | 5763 | ۵۷٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৫৪১. নাবীদের (আঃ) নামে যারা নাম রাখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ইব্রাহীম (রাঃ) কে চুমু দিয়েছেন অর্থাৎ তাঁর পুত্রকে।
৫৭৬৩। আদম (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আমার নামে নাম রাখ। কিন্তু আমার কুনিয়াতে কারো কুনিয়াত রেখ না। কারণ আমিই কাসেম। আমি তোমাদের মধ্যে (আল্লাহর দেওয়া নিয়ামত) বণ্টন করি। আনাস (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৪ | 5764 | ۵۷٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৫৪১. নাবীদের (আঃ) নামে যারা নাম রাখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ইব্রাহীম (রাঃ) কে চুমু দিয়েছেন অর্থাৎ তাঁর পুত্রকে।
৫৭৬৪। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা আমার নামে নাম রাখ। কিন্তু আমার কুনিয়াতে কারো কুনিয়াত রেখো না। আর যে ব্যাক্তি স্বপ্নে আমাকে দেখেছে, সে অবশ্যই আমাকে দেখেছে। শয়তান আমার আাকৃতি ধারন করতে পারে না। আর যে ব্যাক্তি ইচ্ছা করে আমার প্রতি মিথ্যা আরোপ করে, সে যেন জাহান্নামেই তার বাসস্থান করে নেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৫ | 5765 | ۵۷٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৫৪১. নাবীদের (আঃ) নামে যারা নাম রাখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ইব্রাহীম (রাঃ) কে চুমু দিয়েছেন অর্থাৎ তাঁর পুত্রকে।
৫৭৬৫। মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমার একটি ছেলে জন্মগ্রহন করলে আমি তাকে নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসলাম। তার নাম রেখে দিলেন ইবরাহীম। তারপর তিনি একটি খেজুর চিবিয়ে তার মুখে দিয়ে তার জন্য বরকতের দু’আ করলেন এবং তাকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিলেন। রাবী বলেনঃ সে ছিল আবূ মূসা (রাঃ) এর বড় সন্তান।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৬ | 5766 | ۵۷٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৫৪১. নাবীদের (আঃ) নামে যারা নাম রাখেন। আনাস (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) ইব্রাহীম (রাঃ) কে চুমু দিয়েছেন অর্থাৎ তাঁর পুত্রকে।
৫৭৬৬। আবুল ওয়ালীদ (রহঃ) … যিয়াদ ইবনু ইলাকাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি মুগীরা ইবনু শু‘বা (রাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ যে দিন ইবরাহীম (রাঃ) মারা যান, সে দিন সূর্যগ্রহণ হয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৭ | 5767 | ۵۷٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৫৪২. ওয়ালীদ নাম রাখা
৫৭৬৭। আবূ নু‘আয়ম ফাযল ইবনু দুকায়ন (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সালাত (নামায/নামাজ) এর রুকু থেকে মাথা তুলে দু’আ করলেনঃ ইয়া আল্লাহ! তুমি ওয়ালীদ, সালাম ইবনু হিশাম, আইয়্যাশ ইবনুু আবূ রাবিয়া এবং মক্কার দুর্বল মুসলমানদের শত্রুর নির্যাতন থেকে নাজাত দাও। আর হে আল্লাহ! মুযার গোত্রকে শক্তভাবে পাকড়াও করো। হে আল্লাহ! তুমি তাদের উপর এমন দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দাও, যেমন দুর্ভিক্ষ ইউসুফ আলাইহিস সালাম এর যুগে এসেছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৮ | 5768 | ۵۷٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৫৪৩. কারো সঙ্গীকে তার নামের কিছু অক্ষর কমিয়ে ডাকা। আবু হাযিম (রহঃ) বলেন, আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, নবী (সাঃ) আমাকে “ইয়া আবা হিরিরিন” বলে ডাক দেন
৫৭৬৮। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আয়িশা! এই যে জিবরীল আলাইহিস সালাম তোমাকে সালাম বলেছেন। তিনি বললেনঃ তাঁর উপরও আল্লাহর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক। এরপর তিনি বললেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো দেখতে পান, যা আমি দেখি না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৬৯ | 5769 | ۵۷٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৫৪৩. কারো সঙ্গীকে তার নামের কিছু অক্ষর কমিয়ে ডাকা। আবু হাযিম (রহঃ) বলেন, আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেছেন যে, নবী (সাঃ) আমাকে “ইয়া আবা হিরিরিন” বলে ডাক দেন
৫৭৬৯। ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার উম্মে সুলায়ম (রাঃ) সফরের সামগ্রীবাহী উটে সাওয়ার ছিলেন। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর গোলাম আরজাশা উটগুলোকে দ্রুত হাকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ ওহে আবূ আনজাশা। তুমি কাঁচপাত্রবাহী উটগুলো ধীরে ধীরে হাকিয়ে নিয়ে যাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭০ | 5770 | ۵۷۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৫৪৪. কোন ব্যক্তির সন্তান জন্মানোর পূর্বেই সে শিশুর নাম দিয়ে তার ডাকনাম রাখা
৫৭৭০। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সবার চেয়ে বেশী সদাচারী ছিলেন। আমার একজন ভাই ছিল; তাকে ‘আবূ উমায়র’ বলে ডাকা হতো। আমার অনুমান যে, সে তখন মায়ের দুধ খেতো না। যখনই সে তার নিকট আসতো, তিনি বলতেনঃ হে আবূ উমায়র! তোমার নুগায়র কি করছে? সে নুগায়র পাখিটা নিয়ে খেলতো। আর প্রায়ই যখন সালাত (নামায/নামাজ)-এর সময় হতো, আর তিনি আমাদের ঘরে থাকতেন, তখন তার নীচে যে বিছানা থাকতো, সামান্য পানি ছিটিয়ে ঝেড়ে দেয়ার জন্য আমাদের নির্দেশ দিতেন। তারপর উনি সালাত (নামায/নামাজ)-এর জন্য দাঁড়াতেন এবং আমরাও তার পেছনে দাঁড়াতাম। আর তিনি আমাদের নিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭১ | 5771 | ۵۷۷۱

পরিচ্ছদঃ ২৫৪৫. কারো অন্য কুনিয়াত থাকা সত্ত্বেও তার কুনিয়াত “আবু তুরাব” রাখা
৫৭৭১। খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আলী (রাঃ) এর নিকট তার নামগুলোর মধ্যে ‘আবূ তুরাব’ কুনিয়াত ছিলো সবচেয়ে বেশী প্রিয় এবং এ নামে ডাকলে তিনি খুব খুশী হতেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই তাকে ‘আবূ তুরাব’ কুনিয়াতে ডেকেছিলেন। একদিন তিনি ফাতিমা (রাঃ) এর সঙ্গে রাগ করে বেরিয়ে এসে মসজিদের দেয়াল ঘেসে ঘুমিয়ে পড়লেন। এসময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তালাশ করছিলেন। এক ব্যাক্তি বললঃ তিনি তো ওখানে দেয়াল ঘেসে শুয়ে আছেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে গিয়ে তাকে এমন অবস্থায় পেলেন যে তার পিঠে ধূলাবালি লেগে আছে। তিনি তার পিঠ থেকে ধূলা ঝাড়তে লাগলেন এবং বলতে শুরু করলেনঃ হে আবূ তুরাব! উঠে বসো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭২ | 5772 | ۵۷۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৫৪৬. আল্লাহ তা’আলার নিকট সবচেয়ে ঘৃণিত নাম
৫৭৭২। আবূল ইয়ামন (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলার নিকট কিয়ামত দিবসে এ ব্যাক্তির নাম সব চাইতে ঘৃণিত, যে তার নাম ধারণ করেছে রাজাধিরাজ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৩ | 5773 | ۵۷۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৫৪৬. আল্লাহ তা’আলার নিকট সবচেয়ে ঘৃণিত নাম
৫৭৭৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলার নিকট সর্বাধিক নিকৃষ্ট নামধারী অথবা বলেছেন, সব নামের মধ্যে ঘৃণিত নাম হল সে ব্যাক্তি, যে রাজাধিরাজ নাম ধারণ করেছে। সুফিয়ান বলেন যে, অন্যেরা এর ব্যখ্যা করেছেন, শাহান শাহ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৪ | 5774 | ۵۷۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৫৪৭. মুশরিকের কুনিয়াত। মিসওয়ার (রাঃ) বলেন যে, আমি নাবী (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, কিন্তু যদি ইবনু আবূ ত্বালিব চায়
৫৭৭৪। আবূল ইয়ামান ও ইসমাঈল (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি গাধার উপর সাওয়ার ছিলেন। তখন তার গায়ে একখানা ফাদাকী চাদর ছিল এবং তার পেছনে উসামা বসাছিলেন। তিনি বদরের যুদ্ধের পূর্বে সা’দ ইবনু উবাদাহ (রাঃ) এর শুশ্রুষা করার উদ্দেশ্যে হারিস ইবনু খাযরাজ গোত্র অভিমুখে রওয়ানা হচ্ছিলেন। তারা চলতে চলতে এক মজলিসের পাশ দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। সেখানে আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালুল ছিল। এটা আবদুল্লাহ ইবনু উবাই এর (প্রকাশ্যে) ইসলাম গ্রহনের আগের ঘটনা। মজলিসটি ছিল মিশ্রিত। এতে ছিলেন মুসলমান মুশরিক, মূর্তিপূজক ও ইয়াহুদী। মুসলমানদের মধ্যে আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) ও ছিলেন।

সাওয়ারীর চলার কারনে যখন উড়ন্ত ধুলাবালি মজলিসকে ঢেকে ফেলেছিল, তখন ইবনু উবাই তার চাদর দিয়ে তার নাক ঢেকে নিয়ে বললঃ তোমরা আমাদের উপর ধূলি উড়িওনা। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সালাম করলেন এবং সাওয়ারী থামিয়ে নামলেন। তারপর তিনি তাদের আল্লাহর দিকে দাওয়াত দিয়ে কুরআন পড়ে শোনালেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালুল তাকে বললঃ হে ব্যাক্তি! আপনি যা বলছেন যদি তা ঠিক হয়ে থাকে তবে তার চেয়ে উত্তম কথা আর কিছুই নেই। তবে আপনি আমাদের মজলিসসমূহে এসে আমাদের কষ্ট দিয়েন না। যে আপনার কাছে যায়, তাকেই আপনি উপদেশ দিবেন।

তখন আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) বললেন না। ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমাদের মজলিস সমূহে আসবেন। আমরা আপনার এ বক্তব্য পছন্দ করি। তখন মজলিসের মুসলমান, মুশরিক ও ইয়াহুদীরা পরস্পর গালমন্দ করতে লাগল।
এমনকি তাদের মধ্যে হাঙ্গামা হওয়ার উপক্রম হল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের থামাতে লাগলেন অবশেষে তারা নীরব হল। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ সাওয়ারীর উপর সাওয়ার হয়ে রওয়ানা হয়ে গেলেন এবং সাদ ইবনু উবাদা (রাঃ) এর নিকট পৌছলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে সা’দ! আবূ হুবার অর্থাৎআবদুল্লাহ ইবনু উবাই আমাকে যা বলেছেনঃ তা কি তুমি শোননি? সে এমন এমন কথা বলেছে।

তখন সা’দ ইবনু উবাদা (রাঃ) বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার পিতা আপনার প্রতি কুরবান আপনি তাকে ক্ষমা করে দিন এবং তার কথা ছেড়ে দিন। সেই সত্তার কসম! যিনি আপনার উপর কুরআন নাযিল করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলার তরফ থেকে আপনার প্রতি হক এমন সময় নাযিল করেছেন, যখন এই শহরের অধিবাসীরা পরস্পর পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, তারা তাকে রাজ মুকুট পরাবে এবং (রাজকীয়) পাগড়ী তার মাথায় বাঁধবে। কিন্তু যখন আল্লাহ আপনাকে যে সত্য দিয়েছেন তা দিয়ে সেই সিদ্ধান্তকে নস্যাৎ করে দিলেন, তখন সে এতে রাগান্বিত হয়ে পড়েছে। এজন্যই সে আপনার সাথে এ ধরনের আচরণ করেছে যা আপনি প্রত্যক্ষ করলেন। তারপর তিনি তাকে ক্ষমা করে দিলেন, আর আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগণ তো এমনই মুশরিক ও কিতাবীদের ক্ষমা করে দিতেন এবং তাদের নির্যাতনে ধৈর্য ধারণ করতেন।

এ প্রসঙ্গে আল্লাহর বানীঃ তোমাদের আগে যাদের কিতাব দেয়া হয়েছিল তোমরা তাদের থেকে নিশ্চয়ই আগের কথা শুনতে পাবে …… শেষ পর্যন্ত। আল্লাহ আরো বলেছেন কিতাবীরা অনেকেই কামনা করে……। তাই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী তাদের ক্ষমা করতে থাকেন। অবশেষে তাকে তাদের সহিত জিহাদ করার অনুমতি দেওয়া হয়।

তারপর যখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বদর অভিযান চালালেন তখন এর মাধ্যমে আল্লাহ কাফির বীর পুরুষদের এবং কুরাইশদের সরদারদের মধ্যে যারা নিহত হওয়ার তাদের হত্যা করেন। তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাহাবীগন বিজয় বেশে গনীমত নিয়ে ফিরলেন। তাদের সাথে কাফিরদের অলেক বাহাদুর ও কুরাইশদের অনেক নেতাও বন্দী হয়ে আসে। সে সময় ইবনু উবাই ইবনু সালুল ও তার সঙ্গী মূর্তিপূজক মুশরিকরা বললঃ এ ব্যাপারে অর্থাৎ দ্বীন ইসলাম তো প্রবল হয়ে পড়ছে। সুতরাং এখন তোমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে ইসলামের বায়আত কর। তারপর তারা সবাই ইসলাম গ্রহণ করল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৫ | 5775 | ۵۷۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৫৪৭. মুশরিকের কুনিয়াত। মিসওয়ার (রাঃ) বলেন যে, আমি নাবী (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, কিন্তু যদি ইবনু আবূ ত্বালিব চায়
৫৭৭৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আব্বাস ইবনু আদল মুত্তালিব (রাঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কি আবূ তালিবের কোন উপকার করতে পেরেছেন? তিনি তো সর্বদা আপনার হিফাযত করতেন এবং আপনার জন্য অন্যের উপর রাগ করতেন। তিনি বললেনঃ হ্যাঁ। তিনি তো বর্তমানে জাহান্নামের হালকা স্তরে আছেন। যদি আমি না হতাম তাহলে তিনি জাহান্নামের সর্বনিম্ন স্তরে থাকতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৬ | 5776 | ۵۷۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৫৪৮. পরোক্ষ কথা বলে মিথ্যা এড়ানোর উপায়। ইসহাক বর্ণনা করেছেন, আমি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছি। আবু তালহার একটি শিশুপুত্র মারা যায়। তিনি এসে (তার স্ত্রী কে) জিজ্ঞাসা করলেনঃ ছেলেটি কেমন আছে? উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বললেনঃ সে শান্ত। আমি আশা করছি, সে আরামেই আছে। তিনি ধারনা করলেন যে, অবশ্য তিনি সত্য বলেছেন।
৫৭৭৬। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (মহিলাদের সহ) এক সফরে ছিলেন। হুদী গায়ক হুদীগান গেয়ে যাচ্ছিল। তিনি তাকে নির্দেশ দিলেন, আফসোস তোমার প্রতি ওহে আনজাশা! তুমি কাচপাত্র তুল্য সাওয়ারীদের সাথে মৃদুকর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৭ | 5777 | ۵۷۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৫৪৮. পরোক্ষ কথা বলে মিথ্যা এড়ানোর উপায়। ইসহাক বর্ণনা করেছেন, আমি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছি। আবু তালহার একটি শিশুপুত্র মারা যায়। তিনি এসে (তার স্ত্রী কে) জিজ্ঞাসা করলেনঃ ছেলেটি কেমন আছে? উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বললেনঃ সে শান্ত। আমি আশা করছি, সে আরামেই আছে। তিনি ধারনা করলেন যে, অবশ্য তিনি সত্য বলেছেন।
৫৭৭৭। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক সফলে ছিলেন। তার আনজাশা নামে এক গোলাম ছিল। সে হুদী গান গেয়ে উটগুলো হাকিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো। তিনি তাকে বললেনঃ হে আনজাশাা! তুমি ধীরে উট হাঁকাও, যেহেতু তুমি কাচপাত্র তুল্যদের (আরোহী) উট চালিয়ে যাচ্ছ। আবূ কিলাবা বর্ণনা করেন, কাঁচপাত্র সদৃশ শব্দ দ্বারা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহিলাদের বুঝিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৮ | 5778 | ۵۷۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৫৪৮. পরোক্ষ কথা বলে মিথ্যা এড়ানোর উপায়। ইসহাক বর্ণনা করেছেন, আমি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছি। আবু তালহার একটি শিশুপুত্র মারা যায়। তিনি এসে (তার স্ত্রী কে) জিজ্ঞাসা করলেনঃ ছেলেটি কেমন আছে? উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বললেনঃ সে শান্ত। আমি আশা করছি, সে আরামেই আছে। তিনি ধারনা করলেন যে, অবশ্য তিনি সত্য বলেছেন।
৫৭৭৮। ইসহাক (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর একটি হুদীগায়ক গোলাম ছিল। তাকে আনজাশা বলে ডাকা হতো। তার সুর ছিল মধুর। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ হে আনজাশা! তুমি নম্রভাবে হাঁকাও, যেন কাচপাত্রগুলো ভেঙ্গে না ফেল। কাতাদা (রহঃ) বলেনঃ তিনি কাঁচপাত্রগুলো শব্দ দ্বারা মহিলাদের বুঝিয়েছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৭৯ | 5779 | ۵۷۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৫৪৮. পরোক্ষ কথা বলে মিথ্যা এড়ানোর উপায়। ইসহাক বর্ণনা করেছেন, আমি আনাস (রাঃ) থেকে শুনেছি। আবু তালহার একটি শিশুপুত্র মারা যায়। তিনি এসে (তার স্ত্রী কে) জিজ্ঞাসা করলেনঃ ছেলেটি কেমন আছে? উম্মে সুলায়ম (রাঃ) বললেনঃ সে শান্ত। আমি আশা করছি, সে আরামেই আছে। তিনি ধারনা করলেন যে, অবশ্য তিনি সত্য বলেছেন।
৫৭৭৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার মদিনাতে (ভয়ংকর আওয়াজ হলে) আতঙ্ক দেখা দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ তালহা (রাঃ) এর একটি ঘোড়ায় সাওয়ার হয়ে এগিয়ে গেলেন এবং (ফিরে এসে) বললেন আমি তো কিছুই দেখতে পেলাম না। আমি এ ঘোড়াটিকে সমুদ্রের মত পেয়েছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮০ | 5780 | ۵۷۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৫৪৯. কোন কিছু সম্পর্কে, তা অবাস্তব মনে করে বলা যে, এটা কোন কিছুই নয়
৫৭৮০। মুহাম্মদ ইবনু সালাম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) বলেন, কয়েকজন লোক নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গণকদের সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ওটা কিছুই নয়। তারা আবার আরয করলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেন ওটা কিছু নয়। তারা আবার আরয করলো ইয়া রাসুলাল্লাহ! তারাতো কোন সময় এমন কথা বলে ফেলে, যা কাজে পরিনত হয়ে যায়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন কথাটি জ্বীন থেকে প্রাপ্ত। জ্বীনেরা তা (আসমানের ফিরিশতাদের থেকে) ছৌঁ মেরে নিয়ে এসে তাদের বন্ধু গণকদের কানে তুলে দেয়, যেভাবে তিনি তার বাচ্চাদের মুখে দানা তুলে দেয়। তারপর এ গণকরা এর সাথে আরও শতাধিক মিথ্যা কথা মিশিয়ে দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮১ | 5781 | ۵۷۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৫৫০. আসমানের দিকে চোখ তোলা। মহান আল্লাহর বানীঃ “লোকেরা কি উষ্ট্রের প্রতি লক্ষ্য করে না যে, তা কিভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর তারা কি আসমানের দিকে তাকায় না যে, তা কিভাবে এত উচু করে রাখা হয়েছে” আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদিন নবী (সাঃ) আসমানের দিকে মাথা তোলেন
৫৭৮১। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেনঃ এরপর আমার প্রতি ওহী আসা বন্ধ হয়ে গেল। এ সময় আমি হেঁটে যাচ্ছিলাম। তখন আমি আসমানের দিক থেকে একটি শব্দ শুনে আকাশের দিকে চোখ তুললাম। তখন আকস্মিকভাবে ঐ ফিরিশতাকে আসমান ও যযীনের মাঝখানে একটি কুরসীর উপর উপবিষ্ট দেখতে পেলাম, যিনি হেরায় আমার নিকট এসেছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮২ | 5782 | ۵۷۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৫৫০. আসমানের দিকে চোখ তোলা। মহান আল্লাহর বানীঃ “লোকেরা কি উষ্ট্রের প্রতি লক্ষ্য করে না যে, তা কিভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে। আর তারা কি আসমানের দিকে তাকায় না যে, তা কিভাবে এত উচু করে রাখা হয়েছে” আয়শা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, একদিন নবী (সাঃ) আসমানের দিকে মাথা তোলেন
৫৭৮২। ইবনু আবূ মারইয়াম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এক রাতে মায়মুনা (রাঃ) এর ঘরে অবস্থান করছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তার গৃহে ছিলেন। যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অথবা কিয়দংশ বাকী ছিল তখন তিনি উঠে বসলেন এবং আসমানের দিকে তাকিয়ে পাঠ করলেনঃ নিশ্চয়ই আসমানসমুহের ও যমীনের সৃষ্টি করার মধ্যে এবং দিন রাতের পরিবরর্তনে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৩ | 5783 | ۵۷۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৫৫১. (কোন কিছু তালাশ করার উদ্দেশ্যে) পানি ও কাদার মধ্যে লাঠি দিয়ে ঠোকা দেওয়া
৫৭৮৩। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার তিনি মদিনার কোন এক বাগানে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাতে একটা লাঠি ছিল। তিনি তা দিয়ে পানি ও কাদার মাঝে ঠোকা দিচ্ছিলেন। এমন সময় এক ব্যাক্তি এসে দরজা খোলার অনুমতি চাইলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন তার জন্য খুলে দাও এবং তাকে জান্নাতের সংবাদ দাও। তখন আমি গিয়ে দেখলাম যে, তিনি আবূ বকর (রাঃ)। আমি তার জন্য দরজা খুলে দিলাম এবং জান্নাতের সংবাদ দিলাম। তারপর আরেক ব্যাক্তি দরজা খোলার অনুমতি চাইলেন। তিনি বললেনঃ খুলে দাও এবং তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও। তখন দেখলামঃ তিনি উমর (রাঃ)। আমি তাকে দরজা খুলে দিলাম এবং জান্নাতের সুসংবাদ জানালাম। আবার আরেক ব্যাক্তি দরজা খোলার অনুমতি চাইলেন। তখন তিনি হেলান দিয়েছিলেন। তিনি সোজা হয়ে বসে বললেনঃ খুলে দাও এবং তাকে (দুনিয়াতে) একটি কঠিন বিপদের সম্মুখীন হওয়ার মাধ্যমে জান্নাতবাসী হওয়ার সুসংবাদ দাও। আমি গিয়ে দেখি, তিনি উসমান (রাঃ) আমি তাকেও দরজা খুলে দিলাম এবং জান্নাতের শুভ সংবাদ দিলাম। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যা ভবিষ্যৎ বানী করেন, আমি তাও বর্ণনা করলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তাআলা আমার সহায়ক।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৪ | 5784 | ۵۷۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৫৫২. কারো হাতের কোন কিছু দিয়ে যমীনে ঠোকা মারা
৫৭৮৪। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আমরা এক জানাযায় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সথে ছিলাম। তিনি একটা লাকড়ী দিয়ে যমীনে ঠোকা দিয়ে বললেনঃ তোমাদের কোন ব্যাক্তি এমন নয় যার ঠিকানা জান্নাতে অথবা জাহান্নামে ফয়সালা হয়ে যায়নি। লোকেরা জিজ্ঞাসা করলঃ তা হলে কি আমরা তার উপর নির্ভর করব না। তিনি বললেনঃ আমল করে যাও। কারন যাকে যে জন্য পয়দা করা হয়েছে, তা তার জন্য সহজ করে দেয়া হবে। (এরপর তিলাওয়াত করলেন) “যে ব্যাক্তি দান খয়রাত করবে, তাকওয়া অর্জন করবে …… শেষ পর্যন্ত”।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৫ | 5785 | ۵۷۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৫৫৩. বিস্ময়বোধে “আল্লাহু আকবার” অথবা “সুবহানাল্লাহ” বলা
৫৭৮৫। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … উম্মে সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘুম থেকে উঠে বললেনঃ সুবহানাল্লাহ! অদ্যকার রাতে কত যে ধন-ভাণ্ডার এবং কত যে বিপদ-আপদ নাযিল করা হয়েছে। কে আছ যে এ হুজরা বাসিনীদের অর্থাৎ তার বিবিদের জাগিয়ে দেবে? যাতে তারা সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে। দুনিয়ার কত কাপড় পরিহিতা, আখিরাতে উলঙ্গ হবে! উমর (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমি একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনি কি আপনার বিবিগণকে তালাক দিয়েছেন? তিনি বললেনঃ না। তখন আমি বললামঃ আল্লাহু আকবার।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৬ | 5786 | ۵۷۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৫৫৩. বিস্ময়বোধে “আল্লাহু আকবার” অথবা “সুবহানাল্লাহ” বলা
৫৭৮৬। আবূল ইয়ামান ও ইসমাঈল (রহঃ) … আদী ইবনু হুসায়ন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী সাফিয়্যা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রামাযানের শেষ দশ দিনে মসজিদে ইতিকাফ থাকা অবস্থায় তিনি তার সাথে দেখা করতে গেলেন। তিনি রাতের প্রথম ভাগে কিছু সময় তার সঙ্গে কথেবার্তার পর ফিরে যাওয়ার জন্য দাঁড়ালেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে এগিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালেন। অবশেষে যখন তিনি মসজিদেরই দরজার নিকট পৌছলেন, যা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর স্ত্রী উম্মে সালামার ঘরের নিকটে অবস্থিত। তখন তাদের পাশ দিয়ে আনসারের দু’জন লোক চলে গেলে, তারা উভয়েই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাম দিল এবং নিজ পথে রওয়ানা হল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেনঃ ধীরে চল। তিনি সাফিয়্যা বিনত হুইয়াহ। তারা বললোঃ সুবহানাল্লাহ! ইয়া রাসুলাল্লাহ! তাদের উভয়ের মনে তা গুরুত্বপূর্ন মনে হল। তিনি বললেনঃ নিশ্চয়ই শয়তান মানুষের রক্তে চলাচল করে থাকে। তাই আমার আশংকা হলো যে, সম্ভবত সে তোমাদের অন্তরে সন্দেহের উদ্রেক করতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৭ | 5787 | ۵۷۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৫৫৪. ঢিল ছোঁড়া
৫৭৮৭। আদম (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল মুযানী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঢিল ছুড়তে নিষেধ করেছেন। আর বলেনঃ এ কোন শিকার মারতে পারবে না এবং শক্রকেও আহত করতে পারবে না বরং কারো চোখ ফুঁড়ে দিতে পারে আবার কারো দাত ভেংগে দিতে পারে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৮ | 5788 | ۵۷۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৫৫৫. হাঁচিদাতার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বলা
৫৭৮৮। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দু’ব্যাক্তি হাঁচি দিল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজনের জবাব দিলেন। অপরজনের জবাব দিলেন না। তাকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেনঃ এই বাক্তি আলহামদুলিল্লাহ বলেছে। আর ঐ ব্যাক্তি আলহামদুলিল্লাহ বলে নি। (তাই হাঁচির জবাব দেয়া হয় নি)।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৮৯ | 5789 | ۵۷۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৫৫৬. হাঁচিদাতা ‘আলহামদুলিল্লাহরর জবাব দেয়া
৫৭৮৯। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের সাতটি কাজের আদেশ দিয়েছেন এবং সাতটি কাজ থেকে নিষেধ করেছেন। রোগীর দেখাশোনা করতে, জানাযার সঙ্গে যেতে, হাঁচিদাতার জবাব দিতে, দাওয়াত গ্রহণ করতে, সালামের জবাব দিতে, মানুষের সাহায্য করতে এবং কসম পুরা করতে আমাদের আদেশ দিয়েছেন। আর সোনার আংটি অথবা বালা ব্যবহার করতে, সাধারণ রেশমী কাপড় পরতে, মিহিন রেশমী কাপড়, রেশমী যিন ব্যবহার করতে, কাসীই ব্যবহার করতে এবং রৌপ্য পাত্র ব্যবহার করতে আমাদের নিষেধ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯০ | 5790 | ۵۷۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৫৫৭. কিভাবে হাঁচির দু’আ মুস্তাহাব, আর কিভাবে হাই তোলা মাকরূহ
৫৭৯০। আদম ইবনু আবূ আয়াস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তা’আলা হাঁচি দেওয়া পছন্দ করেন, আর হাই তোলা অপছন্দ করেন। সুতরাং কেউ হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললে, যারা তা শুনবে তাদের প্রত্যেকের তার জবাব দেওয়া ওয়াজিব হবে। আর হাঁই তোলা, তাতো শয়তানের তরফ থেকে হয়ে থাকে, তাই যথাসাধ্য তা রোধ করা উচিত। কারণ যখন কেউ মুখ তুলে হা করে তখন শয়তান তার প্রতি হাসে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯১ | 5791 | ۵۷۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৫৫৮. কেউ হাঁচি দিলে, কীভাবে জওয়াব দিতে হবে?
৫৭৯১। মালিক ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন তোমাদের কেউ হাঁচি দেয়, তখন সে যেন “আলহামুদুলিল্লাহ” বলে। আর তার শ্রোতা যেন এর জবাবে “ইয়ার হামুকাল্লাহ” বলে। আর যখন সে “ইয়ার হামুকাল্লাহ” বলবে তখন হাঁচিদাতা তাকে বলবেঃ “ইয়াহদিকুমুল্লাহ ওয়া ইয়ুসলিহু বালাকুম”।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯২ | 5792 | ۵۷۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৫৫৯. হাঁচি দাতা ‘আলহামদুলিল্লাহ’ না বললে তার জবাব দেওয়া যাবে না
৫৭৯২। আদম (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে দুই ব্যাক্তি হাঁচি দিলেন। তিনি একজনের হাচির জবাব দিলেন এবং অপর ব্যাক্তির জবাব দিলেন না। অপর ব্যাক্তিটি বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি তার হাঁচির জবাব দিলেন, কিন্তু আমার হাঁচির জবাব দিলেন না। তিনি বললেনঃ সে আলহামদুলিল্লাহ বলেছে, কিন্তু তুমি আলহামদুলিল্লাহ বলনি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯৩ | 5793 | ۵۷۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৫৬০. যদি কেউ হাই তুলে, সে যেন নিজের হাত মুখে রাখে
৫৭৯৩। আসিম ইবনু আলী (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা হাঁচি দেওয়া পছন্দ করেন আর হাই তোলা অপছন্দ করেন। যদি তোমাদের কেউ হাঁচি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বলে তবে প্রত্যেক মুসলমান শ্রোতার তার জবাবে ‘ইয়ারহামুকাল্লাহ’ বলা ওয়াজিব। আর হাই তোলা শয়তানের তরফ থেকে হয়ে থাকে। সুতরাং তোমাদের কারো হাই উঠলে সে যেন তা যথাসাধ্য রোধ করে। কারণ কেউ হাই তোললে শয়তান তার প্রতি হাসে।

অনুমতি চাওয়া অধ্যায় (৫৭৯৪-৫৮৬৫)

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯৪ | 5794 | ۵۷۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৫৬১. সালামের সূচনা
৫৭৯৪। ইয়াহইয়া ইবনু জাফর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা আদম (আলাইহিস সালাম) কে তার যথাযথ আকৃতিতে সৃষ্টি করেছেন, তার উচ্চতা ছিল ষাট হাত। তিনি তাঁকে সৃষ্টি করে বললেনঃ তুমি যাও। উপবিষ্ট ফিরিশতাদের এই দলকে সালাম করো এবং তুমি মনোযোগ সহকারে শুনবে তারা তোমার সালামের কি জবাব দেয়? কারন এটাই হবে তোমার ও তোমার বংশধরের সম্ভাষন (তাহিয়্যা) তাই তিনি গিয়ে বললেন ‘আস সালামু আলাইকুম’। তারা জবাবে বললেনঃ “আসসালামুআলাইকা ওয়া রাহমাতুল্লাহ। তারা বাড়িয়ে বললেনঃ ওয়া রাহমাতুল্লাহ বাক্যটি। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বললেন যারা জান্নাতে প্রবেশ করবে তারা আদম (আলাইহিস সালাম) এর আকৃতি বিশিষ্ট হবে। তারপর থেকে এ পর্যন্ত মানুষের আকৃতি ক্রমাগত হ্রাস পেয়ে আসছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯৫ | 5795 | ۵۷۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৫৬২. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ হে ঈমানদারগন! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারো ঘরে, যে পর্যন্ত সে ঘরের লোকেরা অনুমতি না দেবে এবং তোমরা গৃহবাসীকে সালাম না করবে, প্রবেশ করো না। এ ব্যবস্থা তোমাদের জন্য অতি কল্যাণকর, যাতে তোমরা নসীহত গ্রহন কর। যদি তোমরা সে ঘরে কাউকে জবাবদাতা না পাও, তবে তোমাদের অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত তাতে প্রবেশ করবে না। যদি তোমাদের বলা হয় ফিরে যাও তবে তোমরা ফিরে যাবে, এই তোমাদের জন্য পবিত্রতম কাজ। আর তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ বিশেষ অবহিত। অবশ্য যে সব ঘরে কেউ বসবাস করে না, আর তাতে যদি তোমাদের মাল আসবাব থাকে, সে সব ঘরে প্রবেশ করলে তোমাদের কোন গুনাহ হবে না। তোমরা প্রকাশ্যে অথবা গোপনে যা কিছুই কর না কেন, তা সবই আল্লাহ জানেন। সাঈদ ইবন আবুল হাসান হাসান (রাঃ) কে বললেনঃ অনারব মহিলারা তাদের মাথা ও বক্ষ খোলা রাখে। তিনি বললেনঃ তোমার চোখ ফিরিয়ে রেখো। আল্লাহ তা’আলার বানীঃ হে নবী! আপনি ঈমানদার পুরুষদের বলে দিন, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি অবনত করে চলে এবং নিজেদের লজ্জাস্থান সংরক্ষন করে। কাতাদা (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ যারা তাদের জন্য হালাল নয়, তাদের থেকে। হে নবী! আপনি ঈমানদার মহিলাদেরকেও বলে দিন, তারাও যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থান হিফাযত করে। আর আল্লাহ তা’আলার বানীঃ خَائِنَةَ الأَعْيُنِ (অর্থাৎ খেয়ানতকারী চোখ) অর্থাৎ নিষিদ্ধ স্থানের দিকে তাকানো সম্পর্কে। আর ঋতুমতী হয়নি, এমন মেয়েদের দিকে তাকানো সম্পর্কে। ইমাম যুহরী (রহঃ) বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্কা হলেও এসব মেয়েদের এমন কিছু অঙ্গ প্রত্যঙ্গের দিকে তাকানো নাজায়েয, যা দেখলে লোভ সৃষ্টি হতে পারে আতা ইবন রাবাহ ঐসব কুমারীদের দিকে তাকানোও মাকরূহ বলতেন, যাদের মক্কার বাজারে বিক্রির জন্য আনা হতো। তবে কেনার উদ্দেশ্যে তা হল সতন্ত্র করা।
৫৭৯৫। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন কুরবানীর দিনে ফাযল ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে আপন সাওয়ারীর পিঠে নিচের পেছনে বসালেন। ফাযল (রাঃ) একজন সুন্দর ব্যাক্তি ছিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লোকদের মাসায়েল বাতলিয়ে দেওয়ার জন্য আসলেন। এ সময় খাশ‘আম গোত্রের একজন সুন্দরী মহিলা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট একটা মাসায়েল জিজ্ঞাসা করার জন্য আসল। তখন ফাযল (রাঃ) তার দিকে তাকাতে লাগলেন। মহিলাটির সৌন্দর্য তাকে আকৃষ্ট করে দিল। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাযল (রাঃ) এর দিকে ফিরে দেখলেন যে, ফাযল তার দিকে তাকাচ্ছেন। তিনি নিজের হাত পেছনের দিকে নিয়ে ফাযল (রাঃ) এর চিবুক ধরে ঐ মহিলার দিকে না তাকানোর জন্য তার চেহারা অন্য দিকে ফিরিয়ে দিলেন। এরপর মহিলাটি জিজ্ঞাসা করলঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে তার বান্দাদের উপর যে হাজ্জ (হজ্জ) ফরয হওয়ার বিধান দেওয়া হয়েছে, আমার পিতার উপর তা এমন অবস্থায় এসেছে যে, বয়োবৃদ্ধ হওয়ার কারণে সাওয়ারীর উপর বসতে তিনি সক্ষম নন। যদি আমি তার তরফ থেকে হাজ্জ (হজ্জ) আদায় করে নেই, তবে কি তার পক্ষ থেকে আদায় হয় যাবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯৬ | 5796 | ۵۷۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৫৬২. আল্লাহ তা’আলার বানীঃ হে ঈমানদারগন! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারো ঘরে, যে পর্যন্ত সে ঘরের লোকেরা অনুমতি না দেবে এবং তোমরা গৃহবাসীকে সালাম না করবে, প্রবেশ করো না। এ ব্যবস্থা তোমাদের জন্য অতি কল্যাণকর, যাতে তোমরা নসীহত গ্রহন কর। যদি তোমরা সে ঘরে কাউকে জবাবদাতা না পাও, তবে তোমাদের অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত তাতে প্রবেশ করবে না। যদি তোমাদের বলা হয় ফিরে যাও তবে তোমরা ফিরে যাবে, এই তোমাদের জন্য পবিত্রতম কাজ। আর তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আল্লাহ বিশেষ অবহিত। অবশ্য যে সব ঘরে কেউ বসবাস করে না, আর তাতে যদি তোমাদের মাল আসবাব থাকে, সে সব ঘরে প্রবেশ করলে তোমাদের কোন গুনাহ হবে না। তোমরা প্রকাশ্যে অথবা গোপনে যা কিছুই কর না কেন, তা সবই আল্লাহ জানেন। সাঈদ ইবন আবুল হাসান হাসান (রাঃ) কে বললেনঃ অনারব মহিলারা তাদের মাথা ও বক্ষ খোলা রাখে। তিনি বললেনঃ তোমার চোখ ফিরিয়ে রেখো। আল্লাহ তা’আলার বানীঃ হে নবী! আপনি ঈমানদার পুরুষদের বলে দিন, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি অবনত করে চলে এবং নিজেদের লজ্জাস্থান সংরক্ষন করে। কাতাদা (রহঃ) বলেন, অর্থাৎ যারা তাদের জন্য হালাল নয়, তাদের থেকে। হে নবী! আপনি ঈমানদার মহিলাদেরকেও বলে দিন, তারাও যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থান হিফাযত করে। আর আল্লাহ তা’আলার বানীঃ خَائِنَةَ الأَعْيُنِ (অর্থাৎ খেয়ানতকারী চোখ) অর্থাৎ নিষিদ্ধ স্থানের দিকে তাকানো সম্পর্কে। আর ঋতুমতী হয়নি, এমন মেয়েদের দিকে তাকানো সম্পর্কে। ইমাম যুহরী (রহঃ) বলেন, অপ্রাপ্ত বয়স্কা হলেও এসব মেয়েদের এমন কিছু অঙ্গ প্রত্যঙ্গের দিকে তাকানো নাজায়েয, যা দেখলে লোভ সৃষ্টি হতে পারে আতা ইবন রাবাহ ঐসব কুমারীদের দিকে তাকানোও মাকরূহ বলতেন, যাদের মক্কার বাজারে বিক্রির জন্য আনা হতো। তবে কেনার উদ্দেশ্যে তা হল সতন্ত্র করা।
৫৭৯৬। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা রাস্তায় বসা থেকে বিরত থাকো। তারা বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের রাস্তায় বসা ছাড়া গত্যন্তর নেই, আমরা সেখানে কথাবার্তা বলি। তিনি বললেনঃ যদি তোমাদের রাস্তায় মজলিস করা ছাড়া উপায় না থাকে, তবে তোমরা রাস্তার হক আদায় করবে। তারা বলল ইয়া রাসূলাল্লাহ! রাস্তার দাবী কি? তিনি বললেন, তা হল চোখ অবনত রাখা, কাউকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা। সালামের জবাব দেওয়া এবং সৎকাজের নির্দেশ দেওয়া আর অসৎকাজ থেকে নিষেধ করা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯৭ | 5797 | ۵۷۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৫৬৩. আল্লাহ তা’আলার নামের মধ্যে ‘সালাম একটি নাম। আল্লাহ তা’আলার বানীঃ আর যখন তোমাদের সালাম দেওয়া হয়, তখন তোমরা এর চেয়ে উত্তমভাবে জবাব দিবে, না হয় তার অনুরূপ উত্তর দিবে
৫৭৯৭। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যখন আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলাম, তখন (বসা অবস্থায়) আমরা আল্লাহর প্রতি তার বান্দাদের পক্ষ থেকে সালাম, জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) এর প্রতি সালাম, মীকাঈল (আলাইহিস সালাম) এর প্রতি সালাম এবং অমুকের প্রতি সালাম দিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাত (নামায/নামাজ) শেষ করলেন, তখন আমাদের দিকে চেহারা মুবারক ফিরিয়ে বললেন আল্লাহ তা’আলা সালাম। অতএব যখন তোমাদের কেউ সালাত (নামায/নামাজ) এর মধ্যে বসবে, তখন বলবেঃ التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ، وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ‏ যখন এ কথাটি বলবে, তখনই আসমান যমীনে সব নেক বান্দাদের নিকট এ সালাম পৌছে যাবে। তারপর বলবে أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ তারপর বসে তার পছন্দমত দুআ নির্বাচন করে নেবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯৮ | 5798 | ۵۷۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৫৬৪. অল্প সংখ্যক লোক অধিক সংখ্যক লোকদের সালাম করবে
৫৭৯৮। আবূল হাসান মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ছোট বড়কে, পথচারী উপবিষ্ট লোককে এবং আর সংখ্যক লোক বেশী সংখ্যক লোকদের সালাম দিবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯৯ | 5799 | ۵۷۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৫৬৫. আরাহী ব্যক্তি পদচারীকে সালাম করবে
৫৭৯৯। মুহাম্মদ ইবনু সালাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আরোহী ব্যাক্তি পদচারীকে, পদচারী ব্যাক্তি উপবিষ্টকে এবং অল্প সংখক লোক অধিক সংখককে সালাম দিবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮০০ | 5800 | ۵۸۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৫৬৬. পদচারী উপবিষ্ট লোককে সালাম করবে
৫৮০০। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আরোহী পদচারীকে, পদচারী উপবিষ্টকে এবং অল্প সংখ্যক লোক অধিক সংখক লোককে সালাম দিবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮০১ | 5801 | ۵۸۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৫৬৮. সালাম প্রসারিত করা
২৫৬৭. পরিচ্ছেদঃ ছোট বড়কে সালাম করবে। ইব্রাহিম (রহঃ) … আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ছোট বড়কে, পথচারী উপবিষ্টকে এবং কম সংখ্যক বেশী সংখ্যককে সালাম করবে।

৫৮০১। কুতায়বা (রহঃ) … বারা’আ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন সাতটি কাজেরঃ রোগীর খোঁজ-খবর নেওয়া, জানাযার সঙ্গে যাওয়া, ঋন দাতার জনা দুআ করা। দুর্বলকে সাহায্য করা, মাযলুমের সহায়তা করা, সালাম প্রসারিত করা এবং কসমকারীর কসম পূর্ন করা। আর নিষেধ করেছেন (সাতটি কাজ থেকে) রুপার পাত্রে পানাহার, সোনার আংটি পরিধান রেশমী জ্বীনের উপর সাওয়ার হওয়া, মিহিন রেশমী কাপড় পরিধান, পাতলা রেশম কাপড় ব্যবহার, রেশম মিশ্রিত কাতান পাকড় পরিধান, এবং গাঢ় রেশমী কাপড় পরিধান করা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮০২ | 5802 | ۵۸۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৫৬৯. পরিচিত ও অপরিচিত সকলকে সালাম করা
৫৮০২। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলঃ ইসলামের কোন কাজ উত্তম? তিনি বললেনঃ তুমি ক্ষুধার্তকে খাবার দেবে, আর সালাম দিবে যাকে তুমি চেন এবং যাকে তুমি চিন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮০৩ | 5803 | ۵۸۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৫৬৯. পরিচিত ও অপরিচিত সকলকে সালাম করা
৫৮০৩। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ আইউব (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন মুসলমানের পক্ষে তার কোন ভাইরের সাথে তিন দিনের বেশী এমনভাবে সম্পর্কচ্ছেদ করে থাকা বৈধ নয় যে, তারা দুজনের দেখা সাক্ষাত হলেও একজন এদিকে অপরজন অন্যদিকে চেহারা ফিরিয়ে রাখে। তাদের মধ্যে উত্তম ঐ ব্যাক্তি যে প্রথম সালাম দিবে। আবূ সুফিয়ান (রহঃ) বলেন যে, এ হাদীসটি আমি যুহরী (রহঃ) থেকে তিনবার শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮০৪ | 5804 | ۵۸۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৫৭০. পর্দার আয়াত
৫৮০৪। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মদিনায় আগমন করেন, তখন তার বয়স ছিল দশ বছর। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনের দশ বছর আমি তার খিদমত করি। আর পর্দার বিধান সম্পর্কে আমি সব চেয়ে বেশী অবগত ছিলাম, যখন তা নাযিল হয়। উবাই ইবনু কা’ব (রাঃ) প্রায়ই আমাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতেন। যায়নাব বিনত জাহস (রাঃ) এর সঙ্গে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বাসরের দিন প্রথম পর্দার আয়াত নাযিল হয়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নতুন দুলহা হিসেবে সে দিন লোকদের দাওয়াত করেন এবং এরপর অনেকেই দাওয়াত খেয়ে বেরিয়ে যান। কিন্তু কয়েকজন তার কাছে রয়ে যান এবং তাদের অবস্থান দীর্ঘায়িত করেন। তধন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে দাঁড়িয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে যান এবং আমিও তার সঙ্গে যাই, যাতে তারা বের হয়ে যায়।

তারপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চলেন এবং আমিও তার সঙ্গে চলি। এমন কি তিনি আয়িশা (রাঃ) এর হুজরার দরজায় এসে পৌছেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধারণা করেন যে, নিশ্চয়ই তারা বেরিয়ে গেছে। তখন তিনিও তার সঙ্গে আমি ফিরে আসি। তিনি যায়নাব (রাঃ) এর গৃহে প্রবেশ করে দেখেন যে, তারা তখনও বসেই আছে, চলে যায়নি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে গেলেন এবং আমিও তার সঙ্গে ফিরে যাচ্ছি। এমন কি তিনি আয়িশা (রাঃ) এর দরজার চৌকাট পর্যন্ত এসে পৌছেন। এরপর তিনি ধারণা করেন যে, এখন তারা অবশ্যই বেরিয়ে গেছে। তাই তিনি ফিরে এসে দেখেন যে, তারা বেরিয়ে গেছেন। এই সময় পর্দার আয়াত নাযিল হয় এবং তিনি তার ও আমার মধ্যে পর্দা টেনে দেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮০৫ | 5805 | ۵۸۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৫৭০. পর্দার আয়াত
৫৮০৫। আবূ নু’মান (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়নাব (রাঃ) কে বিয়ে করলেন, তখন (দাওয়াত প্রাপ্ত) একদল লোক তার ঘরে এসে খাওয়া দাওয়া করলেন। এরপর তারা ঘরে বসেই আলাপ-আলোচনা করতে লাগলেন। তিনি দাঁড়ানোর পর কিছু লোক উঠে বেরিয়ে গেলেন কিন্তু অবশিষ্ট কিছু লোক বসেই থাকলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে প্রবেশ করার জন্য ফিরে এসে দেখলেন যে, তারা বসেই আছে কিছুক্ষণ পরে তারা উঠে চলে গেলেন। তারপর আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ওদের চলে যাওয়ার সংবাদ দিলে তিনি এসে প্রবেশ করলেন। তখন আমি ভেতরে যেতে চাইলে তিনি আমার ও তার মাঝখানে পর্দা ঝুলিয়ে দিলেন। এই সময় আল্লাহ তাআলা এই আয়াত নাযিল করেনঃ হে ঈমানদারগণ! তোমরা নাবীর ঘরগুলোতে প্রবেশ করো না … শেয পর্যন্ত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮০৬ | 5806 | ۵۸۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৫৭০. পর্দার আয়াত
৫৮০৬। ইসহাক (রহঃ) … নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিনী আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট প্রয়ই বলতেন যে, আপনি আপনার সহধর্মিণীদের পর্দা করান। কিন্তু তিনি তা করেননি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণীগণ প্রাকৃতিক প্রয়োজনে রাতে মাঠের দিকে বেরিয়ে যেতেন। একবার সাওদা বিনত যামআ (রাঃ) বেরিয়ে গেলেন। তিনি ছিলেন লম্বাকৃতির মহিলা। উমর (রাঃ) মজলিসে উপস্থিত ছিলেন। তাই তিনি তাকে দেখে ফেললেন এবং পর্দার নির্দেশ নাযিল হওয়ার আগ্রহে বললেনঃ ওহে সাওদা! আমি আপনাকে চিনে ফেলেছি। অতঃপর আল্লাহ তায়াআলা পর্দার আয়াত নাযিল করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮০৭ | 5807 | ۵۸۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৫৭১. তাকানোর অনুমতি
৫৮০৭। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কোন এক হুজরায় উঁকি মেরে তাকালো। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে একটা ‘মিদরা’ ছিলো, যা দিয়ে তিনি তার মাথা চুলকাচ্ছিলেন। তখন তিনি বললেনঃ যদি আমি জানতাম যে তুমি উঁকি মারবে, তবে এ দিয়ে তোমার চোখ ফুঁড়ে দিতাম। তাকানোর জন্য অনুমতি গ্রহনের বিধান দেওয়া হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮০৮ | 5808 | ۵۸۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৫৭১. তাকানোর অনুমতি
৫৮০৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার এক ব্যাক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর এক কামরায় উঁকি দিল। তখন তিনি একটা তীর ধনুক কিংবা তীর ফলকসমূহ নিয়ে তার দিকে দৌড়ালেন। আনাস (রাঃ) বলেনঃ তা যেন এখনও আমি প্রত্যক্ষ করছি। তিনি ঐ লোকটির চোখ ফুঁড়ে দেওয়ার জন্য তাকে খুঁজে ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮০৯ | 5809 | ۵۸۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৫৭২. যৌনাঙ্গ ব্যতীত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ব্যভিচার
৫৮০৯। হুমায়দী ও মাহমূদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা বনী আদমের জন্য যিনার একটা অংশ নির্ধারিত রেখেছেন। সে তাতে অবশ্যই জড়িত হবে। চোখের যিনা হল তাকানো, জিহবার যিনা হল কথা বলা, কুপ্রবৃত্তি কামনা ও খায়েশ সৃষ্টি করে এবং যৌনাংগ তা সত্য মিথ্যা প্রমাণ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮১০ | 5810 | ۵۸۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৫৭৩. তিনবার সালাম দেওয়া ও অনুমতি চাওয়া
৫৮১০। ইসহাক (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন সালাম বলতেন, তখন তিনবার সালাম দিতেন এবং যখন কথা বলতেন তখন তা তিনবার উল্লেখ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮১১ | 5811 | ۵۸۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৫৭৩. তিনবার সালাম দেওয়া ও অনুমতি চাওয়া
৫৮১১। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ একবার আমি আনসারদের এক মজলিসে উপস্থিত ছিলাম। এমন সময় হঠাৎ আবূ মূসা (রাঃ) ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে এসে বললেনঃ আমি তিনবার উমর (রাঃ) এর নিকট অনুমতি চাইলাম কিন্তু আমাকে অনুমতি দেওয়া হল না। তাই আমি ফিরে এলাম। উমর (রাঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমাকে ভেতরে প্রবেশ করতে কিসে বাধা দিল? আমি বললামঃ আমি প্রবেশের জন্য তিনবার অমুমতি চাইলাম কিন্তু আমাকে অনুমতি দেয়া হলো না। তাই আমি ফিরে এলাম। (কারণ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি তোমাদের কেউ তিনবার প্রবেশের অনুমতি চায়। কিন্তু তাকে অনুমতি দেওয়া না হয় তবে সে যেন ফিরে যায়।

তখন উমর বলেনঃ কারন আল্লাহ কসম! তোমারে এ কথার উপর অবশ্যই প্রমান পেশ করতে হবে। তিনি সবাইকে জিজ্ঞেস করলেন তোমাদের মধ্যে কেউ আছে কি? যিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ হাদীস শুনেছে? তখন উবাই ইবনু কাব (রাঃ) বললেন আল্লাহর কসম! আপনার কাছে প্রমাণ দিতে দলের সর্ব কনিষ্ঠ বাক্তই উঠে দাঁড়াবে। আর আমিই দলের সর্ব কনিষ্ঠ ছিলাম। সুতরাং আমি তার সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে বললামঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অবশ্যই এ কথা বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮১২ | 5812 | ۵۸۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৫৭৪. যখন কোন ব্যক্তিকে ডাকা হয় আর সে আসে, সেও কি প্রবেশের অনুমতি নিবে? আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত । নাবী (সাঃ) বলেছেনঃ এ ডাকাই তার জন্য অনুমতি।
৫৮১২। আবূ নুয়াঈম ও মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একদিন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে তার ঘরে প্রবেশ করলাম। তিনি ঘরে গিয়ে একটি পেয়ালা দুধ পেলেন। তিনি আমাকে বললেনঃ হে আবূ হির! তুমি আহলে সুফফার নিকট গিয়ে তাদের আমার নিকট ডেকে আন। তখন আমি তাদের কাছে গিয়ে দাওয়াত দিয়ে এলাম। তারপর তারা এল এবং প্রবেশের অনুমতি চাইলে তাদের অনুমতি দেয়া হলো। তারপর তারা প্রবেশ করলো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮১৩ | 5813 | ۵۸۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৫৭৫. শিশুদের সালাম দেয়া
৫৮১৩। আলী ইবনু জাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার তিনি একদল শিশুর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তিনি তাদের সালাম করে বললেনঃ যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও তা করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮১৪ | 5814 | ۵۸۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৫৭৬. মহিলাকে পুরুষেদের এবং পুরুষকে মহিলাদের সালাম দেয়া
৫৮১৪। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা জুমুআর দিনে আনন্দিত হতাম। রাবী বলেন, আমি তাকে বললামঃ কেন? তিনি বললেনঃ আমাদের একজন বৃদ্ধা মহিলা ছিল। সে কোন একজনকে ‘বুদাআ’ নামক খেজুর বাগানে পাঠাত সে বীট চিনির শিকড় আনতো। তা একটি ডেগচিতে ফেলে সে তাতে কিছুটা যবের দানা দিয়ে ঘুটত ফলে তাতে এক প্রকার খাবার তৈরী করত। এরপর আমরা যখন জুমু’আর সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে ফিরতাম, তখন আমরা ঐ মহিলাকে সালাম দিতাম। তখন সে আমাদের ঐ খাবার পরিবেশন করত আমরা এজন্য খুশী হতাম। আমাদের অভ্যাস ছিল যে, আমরা জুমু’আর পরেই মধ্যাহ্ন ভোজন ও মধ্যাহ্ন বিশ্রাম করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮১৫ | 5815 | ۵۸۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৫৭৬. মহিলাকে পুরুষেদের এবং পুরুষকে মহিলাদের সালাম দেয়া
৫৮১৫। ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে আয়শা! ইনি জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তোমাকে সালাম দিয়েছেন। তখন আমিও বললাম ওয়া আলাইকুমুসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। তিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে উদ্দেশ্য করে বললেনঃ আমরা যা দেখছিনা, তা আপনি দেখছেন। ইউনুস যুহরি সুত্রে বলেন এবং ‘বারাকাতুহু’ও বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮১৬ | 5816 | ۵۸۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৫৭৭. যদি কেউ কারো সম্পরকে জিজ্ঞেস করেন যে, ইনি কে? আর তিনি বলেন, আমি
৫৮১৬। আবূল ওয়ালীদ হিশাম ইবনু আব্দুল মালিক (রহঃ) … জাবির (রাঃ) বলেন, আমার পিতার কিছু ঋণ ছিল। এ বিষয়ে আলোচনা করার জন্য আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলাম এবং দরজায় করাঘাত করলাম। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ কে? আমি বললামঃ আমি। তখন তিনি বললেনঃ আমি আমি যেন তিনি তা অপছন্দ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮১৭ | 5817 | ۵۸۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৫৭৮. যে সালামের জবাব দিল এবং বললঃ ‘ওয়ালাইকাস সালাম’। [জিবরীল (আঃ) এর সালামের জবাবে আয়শা (রাঃ)] ‘ওয়া আলাইহিস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু’ বলেছেন। আর নবী (সাঃ) বলেনঃ আদম (আঃ) এর সালামের জবাবে ফিরিশতাগণ বলেনঃ আসসালামু আলাইকা ওয়া রাহমাতুল্লাহ
৫৮১৭। ইসহাক ইবনু মানসুর (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। এক ব্যাক্তি মসজিদে প্রবেশ করল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের একপার্শ্বে উপবিষ্ট ছিলেন। সে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে এসে তাকে সালাম করন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ওয়া আলাইকাস সালাম; তুমি ফিরে যাও এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর। কেননা তুমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর নি। সে ফিরে গিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে এসে আবার সালাম করল। তিনি বলেনঃ ওয়া আলাইকাস সালাম তুমি ফিরে যাও এবং সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর। কেননা তুমি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় কর নি। সে ফিরে গিয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে তাকে সালাম করল। তখন সে দ্বিতীয় বারের সময় অথবা তার পরের বারে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমাকে সালাত (নামায/নামাজ) শিখিয়ে দিন।

তিনি বললেনঃ যখন তুমি সালাতে দাঁড়াবার ইচ্ছা করবে, তখন প্রথমে তুমি যথাবিধি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে। তারপর কিবলামুখী দাঁড়িয়ে তাকবীর বলবে। তারপর কুরআন থেকে যে অংশ তোমার পক্ষে সহজ হবে তা তিলাওয়াত করবে। তারপর তুমি রুকু করবে প্রশান্তভাবে। তারপর মাথা তুলে ঠিক সোজা হয়ে দাঁড়াবে। তারপর তুমি সিজদা করবে প্রশান্তভাবে। তারপর মাথা তুলে বসবে প্রশান্তভাবে। তারপর সিজদা করবে প্রশান্তভাবে। তারপর আবার মাথা তুলে বসবে প্রশান্তভাবে। তারপর ঠিক এভাবেই তোমার সালাত (নামায/নামাজ) এর সকল কাজ সম্পন্ন করবে। আবূ উসামা বলেন, এমনকি শেষে তুমি সোজা হয়ে দাঁড়াবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮১৮ | 5818 | ۵۸۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৫৭৮. যে সালামের জবাব দিল এবং বললঃ ‘ওয়ালাইকাস সালাম’। [জিবরীল (আঃ) এর সালামের জবাবে আয়শা (রাঃ)] ‘ওয়া আলাইহিস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাতুহু’ বলেছেন। আর নবী (সাঃ) বলেনঃ আদম (আঃ) এর সালামের জবাবে ফিরিশতাগণ বলেনঃ আসসালামু আলাইকা ওয়া রাহমাতুল্লাহ
৫৮১৮। ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তারপর উঠে বস প্রশান্তির সাথে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮১৯ | 5819 | ۵۸۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৫৭৯. যদি কেউ বলে যে, অমুক তোমাকে সালাম করেছে
৫৮১৯। আবূ নুয়াইম (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তোমাকে সালাম করেছেন। তখন তিনি বললেনঃ ওয়ালাইহিসসালাম সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮২০ | 5820 | ۵۸۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৫৮০. মুসলিম ও মুশরিকদের মিশ্রিত মাজলিসে সালাম দেয়া
৫৮২০। ইবরাহীম ইবনু মূসা (রহঃ) … উসামা ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন একটি গাধার উপর সাওয়ার হলেন, যার জ্বীনের নীচে ফাদাকের তৈরী একখানি চাঁদর ছিল। তিনি উসামা ইবনু যায়দকে নিজের পেছনে বসিয়ে ছিলেন। তখন তিনি হারিস ইবনু খাযরাজ গোত্রের সা’দ ইবনু উবাদা এর দেখাশোনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলেন। এটি ছিল বদর যুদ্ধের আগের ঘটনা। তিনি এমন এক মজলিসের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন, সেখানে মুসলমান, প্রতিমাপূজক মুশরিক ও ইয়াহুদী ছিল। তাদের মধ্যে আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালুলও ছিল। আর এ মজলিসে আবদুল্লাহ ইবনু রাওয়াহা (রাঃ)ও উপস্থিত ছিলেন। যখন সাওয়ারীর পদাঘাতে উড়ন্ত ধূলাবালী মজলিসকে ঢেকে ফেলছিল। তখন আবদুল্লাহ ইবনু উবাই তার চাঁদর দিয়ে তার নাক ঢাকল।

তারপর বললঃ তোমরা আমাদের উপর ধুলাবালু উড়িয়োনা। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের সালাম করলেন। তারপর এখানে থামলেন ও সাওয়ারী থেকে নেমে তাদের আল্লাহর প্রতি আহবান করলেন এবং তাদের কাছে কুরআন পাঠ করলেন। তখন আবদুল্লাহ ইবনু উবাই ইবনু সালুল বললোঃ হে আগত ব্যাক্তি! আপনার এ কথার চেয়ে সুন্দর আর কিছু নেই। তবে আপনি যা বলছেন, যদিও তা সত্য, তবুও আপনি আমাদের মজলিসে এসব বসে আামাদের বিরক্ত করবেন না। আপনি আপনার নিজ ঠিকানায় ফিরে যান।

এরপর আমাদের মধ্য থেকে কেউ আপনার নিকট গেলে তাকে এসব কথা বলবেন। তখন ইবনু রাওয়াহা (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমাদের মজলিসে আসবেন, আমরা এসব কথা পছন্দ করি। তখন মুসলিম, মুশরিক ও ইয়াহুদীদের মধ্যে পরস্পর গালাগালি শুরু হয়ে গেল। এমন কি তারা একে অন্যের উপর আক্রমণ করতে উদ্যত হল। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের থামাতে লাগলেন। অবশেষে তিনি তার সাওয়ারীতে আরোহন করে রওয়ানা হলেন এবং সা’দ ইবনু উবাদার কাছে পৌছলেন।

তারপর তিনি বললেন হে সা’দ! আবূ তুরাব অর্থাৎ আবদুল্লাহ ইবনু উবাই কি বলেছে, তা কি তুমি শুনোনি? সা’দ (রাঃ) বললেনঃ সে এমন কথাবার্তা বলেছে। তিনি আরো বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি তাকে মাফ করে দিন। আর তার কথা ছেড়ে দিন। আল্লাহর কসম! আল্লাহ তা আলা আপনাকে যে সব নিয়ামত দান করার ছিল তা সবই দান করেছেন। পক্ষান্তরে এ শহরের অধিবাসীরা তো পরামর্শ করে সিধান্ত নিয়েছিল যে, তারা তাকে রাজ মুকুট পরবে। আর তার মাথায় রাজকীয় পাগড়ী বেধে দিবে। কিন্তু আল্লাহ তাআলা আপনাকে যে দ্বীনে হক দান করেছেন, তা দিয়ে তিনি তাদের সিদ্ধান্তকে বাতিল করে দিয়েছেন। ফলে সে (ক্ষোভানলে) জ্বলছে এজন্যই সে আপনার সঙ্গে যে আচরন করেছে, তা আপনি নিজেই প্রত্যাক্ষ করেছেন। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে মাফ করে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮২১ | 5821 | ۵۸۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৫৮১. গুনাহগার ব্যক্তির তাওবাহ করার আলামাত প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত যিনি তাকে সালাম করেননি এবং তার সালামের জবাবও দেননি। আবদুল্লাহ ইবন উমর (রাঃ) বলেনঃ শারাবখোরদের সালাম দিবে না।
৫৮২১। ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু কা’ব (রাঃ) বলেনঃ যখন কাব ইবনু মালিক (রাঃ) তাবুকের যূদ্ধে অংশ গ্রহন না করে পশ্চাতে রয়ে যান, আর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে সালাম কালাম করতে সবাইকে নিষেধ করে দেন। (তখনকার ঘটনা) আমি কাব ইবনু মালিক (রাঃ) কে বলতে শুনেছি যে, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আসতাম এবং তাকে সালাম করতাম আর মনে মনে বলতাম যে, আমার সালামের জবাবে তার ঠোট দুখানা নড়ছে কিনা। পঞ্চাশ দিন পূর্ণ হলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজরের সালাত (নামায/নামাজ) এর সময় ঘোষনা দিলেন যে, আল্লাহ তা’আলা আমাদের তাওবা কবুল করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮২২ | 5822 | ۵۸۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৫৮২. অমুসলিমদের সালামের জবাব কিভাবে দিতে হয়
৫৮২২। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার একদল ইয়াহুদী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললোঃ আসসামু আলায়কা। (তোমার মূত্যু হোক! (নাউযুবিল্লাহ) আমি একথার মর্ম বুঝে বললাম, আলাইকুমুস সামু ওয়ালা লানাতু। (তোমাদের উপর মৃত্যু ও লানত)। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে “আয়িশা! তুমি থামো। আল্লাহ সর্বাবস্থায়ই বিনয় পছন্দ করেন। আমি বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! তারা যা বললো তা কি আপনি শুনেন নি? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এ জন্যই আমিও বলেছি, ওয়া আলাইকুম (তোমাদের উপরও)।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮২৩ | 5823 | ۵۸۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৫৮২. অমুসলিমদের সালামের জবাব কিভাবে দিতে হয়
৫৮২৩। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইয়াহুদী তোমাদের সালাম করলে তাদের কেউ অবশ্যই বলবেঃ আসসামু আলায়কা। তখন তোমরা জবাবে ওয়াআলায়কা বলবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮২৪ | 5824 | ۵۸۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৫৮২. অমুসলিমদের সালামের জবাব কিভাবে দিতে হয়
৫৮২৪। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোন আহলে কিতাব তোমাদের সালাম দেয়, তখন তোমরা বলবে ওয়া আলায়কুম। (তোমাদের উপরও)।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮২৫ | 5825 | ۵۸۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৫৮৩. কারো এমন পত্রের বিষয়ে স্পষ্টরূপে জানার জন্য তদন্ত করে দেখা, যা মুসলমানদের জন্য আশংকাজনক
৫৮২৫। ইউসুফ ইবনু বাহলুল (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে ও জুবায়র ইবনু আওয়াম (রাঃ) এবং আবূ মারসাদ গানাভী (রাঃ) কে অশ্ব বের করে নির্দেশ দিলেন যে, তোমরা রওয়ানা হয়ে যাও এবং ‘রওযায়ে খাখে’ গিয়ে পৌছ। সেখানে একজন মুশরিক স্ত্রীলোক পাবে। তার কাছে হাতিব ইবনু আবূ বালতার দেওয়া মুশরিকদের নিকট একখানা পত্র আছে। আমরা ঠিক সেই জায়গাতেই তাকে পেয়ে গেলাম যেখানকার কথা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছিলেন। ঐ স্ত্রীলোকটি তার এক উটের উপর সাওয়ার ছিল। আমরা তাকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, তোমার কাছে যে পত্রখানি আছে তা কোথায়? সে বললোঃ আমার সাথে কোন পত্র নেই। তখন আমরা তার উটসহ তাকে বসালাম এবং তার সাওয়ারীর আসবাব পত্রের তল্লাসি করলাম। কিন্তু আমরা কিছুই (পত্রখানা) খুজে পেলাম না।

আমার দুজন সাথী বললেনঃ পত্রখানা তো পাওয়া গেল না। আমি বললামঃ আমার জানা আছে যে, রাসুলুলাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অযথা কথা বলেন নি। তখন তিনি স্ত্রী লোকটিকে ধমকিয়ে বললেনঃ তোমাকে অবশ্যই পত্রখানা বের করে দিতে হবে, নতুবা আমি তোমাকে উপুড় করে তল্লাসি নেব। এরপর সে যখন আমার দৃঢ়তা দেখলো। তখন সে বাধ্য হবে তার কোমরে পেচানো চাঁদরে হাত দিয়ে ঐ পত্রখানা বের করে দিল। তারপর আমরা তা নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে পৌছলাম। তখন তিনি হাতিব (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলেনঃ হে হাতিব! তুমি কেন এমন কাজ করলে? তিনি বললেনঃ আমার মনে এমন কোন দুসংকল্প নেই যে, আমি আল্লাহ ও তার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি ঈমান ও বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি। আমি আমার দৃঢ় মনোভাব পরিবর্তন করিনি এবং আমি ধর্মও বদল করিনি।

এই পত্রখানা দ্বারা আমার নিছক উদ্দেশ্য ছিল যে, এতে মক্কাবাসীদের উপর আমার দ্বারা এমন এহসান হোক, যার ফলে আল্লাহ তা’আলা আমার পরিবার ও সম্পদ নিরাপদে রাখবেন। আর সেখানে আপনার অন্যান্য সাহাবীদের এমন লোক আছেন যাদের দ্বারা আল্লাহ তা’আলা তাদের পরিবার ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করে দিবেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হাতিব ঠিক কথাই বলেছে। সুতরাং তোমরা তাকে ভাল ছাড়া অন্য কিছুই বলো না।

রাবী বলেনঃ উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) বললেনঃ তিনি নিশ্চয়ই আল্লাহ ও তাঁর রাসূল এবং মুমিনদের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন। অতএব আমাকে ছেড়ে দিন আমি তার গর্দান উড়িয়ে দেই। রাবী বলেন, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে উমর! তোমার কি জানানেই যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা বদর যুদ্ধে অংশগ্রহণকারীদের সম্পর্কে অবগত আছেন এবং ঘোষণা দিয়েছেন যে, তোমরা যা ইচ্ছা করতে পার। নিশ্চয়ই তোমাদের জন্য জান্নাত নির্ধারিত হয়ে আছে। রাবী বলেনঃ তখন উমর (রাঃ) এর দু’চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতে লাগলো। তিনি বললেনঃ আল্লাহ ও তার রাসুলই সবচেয়ে ভাল জানেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮২৬ | 5826 | ۵۸۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৫৮৪. কিতাবী সম্প্রদায়ের নিকট কিভাবে পত্র লিখতে হয়?
৫৮২৬। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, আবূ সুফিয়ান ইবনু হারব তাকে বলেছেনঃ হিরাক্লিয়াস আবূ সুফিয়ানকে ডেকে পাঠালেন, কুরায়শদের ঐ দলসহ যারা ব্যবসার জন্য সিবিয়া গিয়েছিলেন। তারা সবাই তার নিকট উপস্থিত হলেন। এরপর তিনি ঘটনার বর্ননা করেন। শেষভাগে বললেন যে, তারপর হিরাক্লিয়াস রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পত্রখানি আনালেন এবং তা পাঠ করা হল। এতে ছিল বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম আল্লাহর বান্দা ও তার রাসুল মুহাম্মদ এর পক্ষ থেকে রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের প্রতি السَّلاَمُ عَلَى مَنِ اتَّبَعَ الْهُدَى শান্তি বর্ষিত হোক তাদের উপর যারা সৎপথের অনুসরণ করেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮২৭ | 5827 | ۵۸۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৫৮৫. চিঠিপত্র কার নাম দিয়ে আরম্ভ করা হবে
৫৮২৭। লায়স (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বনী ইসরাঈলের এক ব্যাক্তির কথা উল্লেখ করে বললেনঃ যে সে একখণ্ড কাঠ নিয়ে খোদাই করে এর ভেতর এক হাজার দ্বীনার ভর্তি করে রাখল এবং এর মালিকের প্রতি লেখা একখানা চিঠিও রেখে দিল। আর উমর ইবনু আবূ সালামা সূত্রে আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ একব্যাক্তি একখণ্ড কাঠ খোদাই করে তার ভেতরে কিছু মাল রেখে দিল এবং এর সাথে তার প্রাপকের প্রতি একখানা পত্রও ভরে দিল, যার মধ্যে লিখা ছিল, অমুকের পক্ষ থেকে অমুকের প্রতি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮২৮ | 5828 | ۵۸۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৫৮৬. নাবী (সাঃ) এর বানীঃ তোমরা তোমাদের সরদারের জন্য দাঁড়াও
৫৮২৮। আবূল ওয়ালীদ (রহঃ) … আবূ সাঈদ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, কুরাইযা গোত্রের লোকেরা সা’দ (রাঃ) এর ফায়সালার উপর আত্মসমর্পন করলো। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে আসার জন্য লোক পাঠালেন। তারপর তিনি এলে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবাদের বললেনঃ তোমরা আপন সরদারের প্রতি অথবা বললেনঃ তোমাদের শ্রেষ্ঠ ব্যাক্তির প্রতি উঠে দাঁড়াও। তারপর সা’দ (রাঃ) এসে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশেই বসলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেনঃ এরা তোমার ফায়সালার উপর আত্মসমর্পণ করেছে। তিনি বললেনঃ তা হলে আমি ফায়সালা দিচ্ছি যে এদের মধ্যে যারা যূদ্ধযোগ্য তাদের হত্যা করা হোক। আর তাদের বাচ্চাদের বন্দী করা হোক। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এদের ব্যাপারে তুমি আল্লাহ তাআলার ফায়সালা অনুযায়ীই ফায়সালা দিয়েছ।

ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেন, আমার কোন কোন সঙ্গী আবূল ওয়ালীদ থেকে আবূ সাঈদের এ হাদীছে عَلَى حُكْمِكَ এর স্থলে إِلَى حُكْمِكَ শব্দ আমার কাছে বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮২৯ | 5829 | ۵۸۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৫৮৭. মুসাফাহা করা। ইবনু মাস’উদ (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) যখন আমাকে তাশাহহুদ শিক্ষা দেন তখন আমার হাত তাঁর দু’ হাতের মাঝে ছিল। কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, একবার আমি মাসজিদে ডুকেই রসূলুল্লাহ (সাঃ) কে পেয়ে গেলাম। তখন ত্বলহা ইবনু উবাইদুল্লাহ (রাঃ) আমার দিকে দৌড়ে এসে আমার সঙ্গে মুসাফাহা করলেন এবং আমাকে মুবারকবাদ জানালেন।
৫৮২৯। আমর ইবনু আসিম (রহঃ) … কাতাদা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আমি আনাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করলামঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাহাবীগণের মধ্যে কি মূসাফাহা করার রেওয়ায ছিল? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৩০ | 5830 | ۵۸۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৫৮৭. মুসাফাহা করা। ইবনু মাস’উদ (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) যখন আমাকে তাশাহহুদ শিক্ষা দেন তখন আমার হাত তাঁর দু’ হাতের মাঝে ছিল। কা’ব ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, একবার আমি মাসজিদে ডুকেই রসূলুল্লাহ (সাঃ) কে পেয়ে গেলাম। তখন ত্বলহা ইবনু উবাইদুল্লাহ (রাঃ) আমার দিকে দৌড়ে এসে আমার সঙ্গে মুসাফাহা করলেন এবং আমাকে মুবারকবাদ জানালেন।
৫৮৩০। ইয়াহইয়া ইবনু সুলায়মান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাঃ) খেকে বর্নিত যে, আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তখন তিনি উমর ইবনু খাত্তাব (রাঃ) এর হাত ধরা অবস্থায় ছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৩১ | 5831 | ۵۸۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৫৮৮. দুই হাত ধরে মুসাফাহা করা। হাম্মাদ ইবন যায়দ (রহঃ) ইবন মুবারকের সঙ্গে দু’হাতে মুসাফাহা করেছেন
৫৮৩১। আবূ নুয়ায়ম (রহঃ) … ইবনু মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার হাত তার উভয় হাতের মধ্যে রেখে আমাকে এমনভাবে তাশাহুদ শিখিয়েছেন, যে ভাবে তিনি আমাকে কুরআনের সুরা শিখাতেন التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ وَالصَّلَوَاتُ وَالطَّيِّبَاتُ، السَّلاَمُ عَلَيْكَ أَيُّهَا النَّبِيُّ وَرَحْمَةُ اللَّهِ وَبَرَكَاتُهُ، السَّلاَمُ عَلَيْنَا وَعَلَى عِبَادِ اللَّهِ الصَّالِحِينَ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ এসময় তিনি আমাদের মাঝেই বিদ্যমান ছিলেন। তারপর যখন তার ওফাত হয়ে গেল, তখন থেকে আমরা السَّلاَمُ عَلَيْكَ এর স্থলে السَّلاَمُ‏.‏ عَلَى النَّبِيِّ পড়তে লাগলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৩২ | 5832 | ۵۸۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৫৮৯. আলিঙ্গন করা এবং কাউকে বলা কিভাবে তোমার ভোর হয়েছে?
৫৮৩২। ইসহাক এবং আহমদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত যে আলী ইবনু আবূ তালিব যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অতিক্রম কালের সময় তাঁর কাছে থেকে বেরিয়ে এলেন লোকেরা তাকে জিজ্ঞাসা করলো হে আবূল হাসান! কিভাবে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভোর হয়েছে? তিনি বললেনঃ সুস্থ অবস্থায় তার ভোর হয়েছে। তখন আব্বাস (রাঃ) তার হাত ধরে বললেনঃ তুমি কি তার অবস্থা বুঝতে পারছ না? তুমি তিনদিন পরই লাঠির গোলাম হয়ে যাবে। আল্লাহর কসম! আমি নিঃসন্দেহে ধারণা করছি যে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রোগেই সত্তর ইন্তেকাল করবেন। আমি বনূ আবদুল মুত্তালিবের চেহারা থেকে তাঁদের ওফাতের লক্ষণ চিনতে পারি। অতএব তুমি আমাদের রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট নিয়ে যাও।

আমরা তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে, তার অবর্তমানে খিলাফতের দায়িত্ব কাদের হাতে থাকবে? যদি আমাদের খান্দানেই থাকে তবে তা আমরা জেনে রাখলাম। আর যদি অন্য কোন গোত্রের হাতে থাকবে বলে জানি, তবে আমরা তার সাথে পরামর্শ করবো এবং তিনি আমাদের জন্য অসিয়ত করে যাবেন। আলী (রাঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম! যদি আমরা এ ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করি আর তিনি এ সম্পর্কে আমাদের বিরত থাকার নির্দেশ দেন, তাহলে লোকজন কখনও আমালের এর সুযোগ দেবেন না। সুতরাং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কখনো জিজ্ঞেস করবো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৩৩ | 5833 | ۵۸۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৫৯০. যে ব্যক্তি কারো ডাকে লাব্বাইকা এবং ‘সা’দাইকা’ বলে জবাব দিল
৫৮৩৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … মুআয ইবনু জাবাল (রাঃ) বলেন, আমি একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পেছনে তার সওয়ারীর উপর বসা ছিলাম। তখন তিনি আমাকে ডাকলেনঃ ওহে মুআয! আমি বললাম, লাব্বায়কা ওয়া সাদায়কা। তারপর তিনি অনুরূপ তিনবার ডাকলেন। এর পর তিনি বললেনঃ তুমি কি জানো যে, বান্দাদের উপর আল্লাহর হক কি? তিনি বললেনঃ তা হল বান্দারা তার ইবাদত করবে আর এতে তার সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না। আবার কিছুক্ষণ চলার পর তিনি বললেনঃ ওহে মুআয! আমি জবাবে বাললামঃ লাব্বায়কা ওয়া সাদায়কা। তখন তিনি বললেনঃ তুমি কি জানো যে, বান্দা যখন তার ইবাদত করবে, তখন আল্লাহর উপর বান্দাদের হক কি হবে? তিনি বললেনঃ তা হল এই যে, তিনি তাদের আযাব দিবেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৩৪ | 5834 | ۵۸۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৫৯০. যে ব্যক্তি কারো ডাকে লাব্বাইকা এবং ‘সা’দাইকা’ বলে জবাব দিল
৫৮৩৪। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … যায়দ ইবনু ওয়াহব (রহঃ) বলেনঃ, আল্লাহর কসম! আবূ যার (রাঃ) রাবাযাহ নামক স্থানে আমাদের কাছে বর্ণনা করেন যে, একবার আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে এশার সময় মদিনায় হাররা নামক স্থান দিয়ে পায়ে হেটে যাচ্ছিলাম। তখন আমরা ওহুদ পাহাড়ের সম্মুখীন হলে তিনি আমাকে বললেনঃ হে আবূ যার! আমি এটা পছন্দ করি না যে, আমার নিকট ওহুদ পাহাড় পরিমাণ সোনা আসুক। আর ঋন পরিশোধ পরিমাণ ব্যতীত এক দ্বীনার পরিমাণ সোনাও এক রাত অথবা তিন তাত পর্যন্ত আমার হাতে তা থেকে যাক।

বরং আনি পছন্দ করি যে, আমি এগুলো আল্লাহর বান্দাদের এভাবে বিলিয়ে দেই। (কিভাবে দিবেন) তা তার হাত দিয়ে তিনি দেখালেন। তারপর বললেনঃ হে আবূ যার! আমি বললামঃ লাব্বায়কা ওয়া সাদায়কা, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তখন তিনি বললেনঃ দুনিয়াতে যারা অধিক সম্পদাশালী, আখিরাতে তারা হবেন অনেক কম সাওয়াবের অধিকারী। তবে যারা তাদের সম্পদকে এভাবে, এভাবে বিলিয়ে দেবে। তারা হবেন এর ব্যতিক্রম।

তারপর তিনি আমাকে বললেনঃ আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত হে আবূ যার! তুমি এ স্থানেই থাকো। এখান থেকে কোখাও যেয়োনা। এরপর তিনি রওয়ানা হয়ে গেলেন, এমন কি আমার চোখের আড়ালে চলে গেলেন। এমন সময় একটা শব্দ শুনলাম। এতে আমি শংকিত হয়ে পড়লাম যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন বিপদের সন্মুখীন হয়ে পড়লেন কিনা? তাই আমি সে দিকে অগ্রসর হতে চাইলাম। কিন্তু সাথে সাথেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিষেধাজ্ঞা, যে কোথায়ও যেয়োনা মনে পড়লো এবং আমি থেমে গেলাম। এরপর তিনি ফিরে আসলে আমি বললাম: ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি একটা আওয়াজ শুনে শংকিত হয়ে পড়লাম যে, আপনি সেখানে গিয়ে কোন বিপদে পড়লেন কিনা। আপনার কথা স্মরণ করে থেমে গেলাম।

তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তিনি ছিলেন জিবরীল। তিনি আমার নিকট এসে সংবাদ দিলেন যে, আমার উম্মাতের মধ্যে যে ব্যাক্তি আল্লাহর সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক না করে মারা যাবে, সে বেহেশতে প্রবেশ করবে। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদিও সে ব্যাক্তি ব্যভিচার করে? যদিও সে ব্যাক্তি চুরি করে? তিনি বললেনঃ সে যদিও ব্যভিচার করে, যদিও চুরি করে থাকে তবুও।

আমাশ (রহঃ) বললেনঃ আমি যাবদকে বললাম, আমার কাছে খবর পৌছেছে যে, এ হাদীসের রাবী হল আবূ দারদা। তিনি বললেনঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, এ হাদীসটি আবূ যারই রাবাযা নামক স্থানে আমার কাছে বর্ননা করেছেন। আমাশ (রহঃ) বলেন, আবূ সালিহ ও আবূদ দারদা (রাঃ) সুত্রে আমার কাছে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। আর আবূ শিহাব আমাশ থেকে বর্ণনা করেন যে তিনি বলেছেনঃ ‘তিন দিনের অতিরিক্ত’।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৩৫ | 5835 | ۵۸۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৫৯১. কোন ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে তার বসার স্থান থেকে উঠাবে না
৫৮৩৫। ইসমাঈল ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোন ব্যাক্তি অপর কাউকে তার বসার জায়গা থেকে তুলে দিয়ে সে সেখানে বসবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৩৬ | 5836 | ۵۸۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৫৯২. (আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ) যদি তোমাদের বলা হয় যে, তোমরা মজলিসে বসার জায়গা করে দাও। তখন তোমরা বসার জায়গা করে দিবে, তা হলে আল্লাহ তোমাদের জন্য স্থান প্রশস্ত করে দিবেন …… (৫৮ঃ ১১)
৫৮৩৬। খাল্লাদ ইবনু ইয়াহইয়া (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন ব্যাক্তিকে তার বসার জায়গা থেকে তুলে দিয়ে সেখানে অপর ব্যাক্তিকে বসতে নিষেধ করেছেন। তবে তোমরা বসার জায়গা প্রশস্ত করে দাও এবং ব্যবস্থা করে দাও। ইবনু উমর (রাঃ) কেউ তার জায়গা থেকে উঠে যাক এবং তার জায়গায় অন্যজন বসুক তা পছন্দ করতেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৩৭ | 5837 | ۵۸۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৫৯৩. কারো তার সাথীদের থেকে অনুমতি না নিয়ে মজলিস কিংবা ঘর থেকে উঠে যাওয়া, কিংবা নিজে উঠে যাবার প্রস্তুতি গ্রহণ করা যাতে অন্যরা উঠে যায়
৫৮৩৭। হাসান ইবনু উমর (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যায়নাব বিনত জাহশ (রাঃ) কে বিয়ে করলেন, তখন তিনি কয়েকজন লোককে দাওয়াত করলেন। তারা আহার করার পর বসে বসে অনেক সময় আলাপ আলোচনায় মশগুল থাকলেন। তখন তিনি নিজে উঠে চলে যাওয়ার ভাব প্রকাশ করতে শুরু করলেন। কিন্তু এতেও তারা উঠলেন না। তিনি এ অবস্থা দেখে নিজেই উঠে দাঁড়ালেন। যখন তিনি চলে গেলেন, তখন লোকজনের মধ্যে যারা দাঁড়াবার ইচ্ছা করলেন, তারা তার সাথেই উঠে চলে গেলেন। কিন্তু তাদের তিনজন থেকে গেলেন। এরপর যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে এসে ঘরে প্রবেশ করতে চাইলেন, তখন দেখলেন যে ঐ তিনজন তখনো বসে রয়েছে। কিছুক্ষণ পর তারাও উঠে চলে গেলে, আমি গিয়ে তাকে তাদের চলে যাওয়ার সংবাদ দিলাম। এরপর তিনি এসে ঘরে ঢুকলেন। তখন আমিও ঢ়ুকতে চাইলে তিনি আমার ও তার মধ্যে পর্দা টেনে দিলেন। এই সময় আল্লাহ তাআলা ওহী নাযিল করলেনঃ হে মুনিনগণ! তোমাদের অনুমতি দেওয়া না হলে তোমরা নাবী গৃহে প্রবেশ করবে না …… আল্লাহর দৃষ্টিতে তা ঘোরতর অপরাধ (৩৩ঃ ৫৩)।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৩৮ | 5838 | ۵۸۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৫৯৪. দু’ হাটুকে খাড়া করে দু’ হাতে বেড় দিয়ে পাছার উপর বসা
৫৮৩৮। মুহাম্মদ ইবনু আবূ গালিব (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কাবা শরীফের আঙ্গিনায় দু’হাঁটু খাড়া করে দু’হাত দিয়ে তা বেড় দিয়ে এভাবে বসা অবস্থায় পেয়েছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৩৯ | 5839 | ۵۸۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৫৯৫. যিনি তার সাথীদের সামনে হেলান দিয়ে বসেন। খাব্বাব (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমি একবার নবী (সাঃ) এর কাছে আসলাম। তখন তিনি একখানা চাদর দিয়ে বালিশ বানিয়ে তাতে হেলান দিচ্ছিলেন। আমি বললামঃ আপনি কি (আমার মুক্তির জন্য) আল্লাহর কাছে দু’আ করছেন না? তখন তিনি সোজা হয়ে বসলেন।
৫৮৩৯। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ বাকরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি কি তোমাদের নিকৃষ্ট কবীরা গুনাহের বর্ণনা দিব না? সকলে বললেনঃ হ্যাঁ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তখন তিনি বললেনঃ তা হচ্ছে, আল্লাহব সঙ্গে অন্য কোন কিছুকে শরীক করা এবং মা বাপের অবাধ্যতা। মুসাদ্দাদ বিশরের এক সুত্রে অনুরূপ হাদীস বর্ননা করেছেন। তাতে অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হেলান দেওয়া অবস্থায় ছিলেন। এরপর তিনি সোজা হয়ে বসলেন এবং বললেনঃ হুশিয়ার হয়ে যাও! আর (সবচেয়ে বড় গুনাহ হল) মিথ্যা কথা বলা। এ কথাটা তিনি বারবার বলতে থাকলেন অবশেষে আমরা বললামঃ হায়! তিনি যদি থেমে যেতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৪০ | 5840 | ۵۸٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৫৯৬. যিনি কোন বিশেষ প্রয়োজনে অথবা যে কোন উদ্দেশ্যে তাড়াতাড়ি চলেন
৫৮৪০। আবূ আসিম (রহঃ) … উকবা ইবনু হারিস (রাঃ) বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আসরের সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে তাড়াতাড়ি গিয়ে নিজ ঘরে প্রবেশ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৪১ | 5841 | ۵۸٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৫৯৭. পালঙ্ক ব্যবহার করা
৫৮৪১। কুতাইবা (রহঃ) … আয়িশা। (রাঃ) বর্ণনা করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (আমার) পালঙ্গের মধাখানে দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। তখন আমি তাঁর কিবলার মাঝখানে শুয়ে থাকতাম। যখন আমার কোন প্রয়োজন হতো, তখন আমি তাঁর দিকে মুখ করে উঠে দাঁড়ানো পছন্দ করতাম না বরং আমি শুয়ে শুয়েই পেছনের দিক দিয়ে কেটে পড়তাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৪২ | 5842 | ۵۸٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৫৯৮. যার হেলান দেয়ার উদ্দেশ্যে একটা বালিশ পেশ করা হয়
৫৮৪২। ইসহাক এবং আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আমার বেশী সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন সম্পর্কে উল্লেখ করা হল। তখন তিনি আমার ঘরে আসলেন এবং আমি তার উদ্দেশ্যে খেজুরের ছাল ভর্তি করা চামড়ার একটা বালিশ পেশ করলাম। তিনি মাটিতেই বসে পড়লেন। আর বাশিশটা আমার ও তার মাঝখানে থেকে গেল। তিনি আমাকে বললেনঃ প্রত্যেক মাসে তিনদিন রোযা থাকা কি তোমার জন্য যথেষ্ট নয়? আমি বললাম। ইয়া রাসূলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ তা হলে পাঁচ দিন? আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ তবে সাতদিন? আমি আবার বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ তবে নয়দিন? আমি পূনরায় বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেনঃ তা হলে এগার দিন? আমি আবার বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! তখন তিনি বললেনঃ দাউদ (আলাইহিস সালাম) এর সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) এর চেয়ে বেশী কোন (নফল) সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) নেই। তিনি প্রত্যেক মাসের (অথবা বছরের) অর্ধেক দিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন অর্থাৎ একদিন সাওম (রোযা/রোজা/সিয়াম/ছিয়াম) পালন করতেন আর একদিন পালন করতেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৪৩ | 5843 | ۵۸٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৫৯৮. যার হেলান দেয়ার উদ্দেশ্যে একটা বালিশ পেশ করা হয়
৫৮৪৩। ইয়াহইয়া ইবনু জাফর ও আবূ ওয়ালীদ (রহঃ) … ইবরাহীম (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আলকামা (রহঃ) সিরিয়া গমন করলেন। তখন তিনি মসজিদে গিয়ে দু’রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে দু’আ করলেন ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাকে একজন নেক সঙ্গী দান করুন। এরপর তিনি আবূদ দারদা (রাঃ) এর পাশে গিয়ে বসে পড়লেন। তারপর তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ আপনি কোন শহবের লোক? তিনি জবাব দিলেনঃ আমি কুফার বাসিন্দা। তিনি জিজ্ঞাসা করললেনঃ আপনাদের মধ্যে কি সেই ব্যাক্তি নেই? যিনি ঐ ভেদ সম্পর্কে অবগত ছিলেন, যা অপর কেউ জানতেন না। (রাবী বলেন) অর্থাৎ হুযায়ফা (রাঃ) আবার জিজ্ঞাসা করলেনঃ আপনাদের মধ্যে কি এমন ব্যাক্তি নেই, অথবা আছে যাকে আল্লাহ তা’আলা তার রাসুলের দু’আর কারনে শয়তান থেকে পানাহ দিয়েছেন?

(রাবী বলেন) অর্থাৎ আম্মার (রাঃ) তিনি আবার জিজ্ঞাস করলেনঃ আর আপনাদের মধ্যে কি সে ব্যাক্তি নেই যিনি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মিসওয়াক ও বালিশের জিম্মাদার ছিলেন? (রাবী বলেন) অর্থাৎ আাদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ)। আবূ দারদা (রাঃ) তাকে জিজ্ঞাসা করেনঃ আদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) সূরায়ে ‘ওয়াল্লাইলি ইযা ইয়াগশা’ কি রকম পড়তেন? তিনি বললেনঃ তিনি ‘ওমা খালাকায যাকারা ওইয়াল উনসা’ এর স্থলে ‘ওয়ামা খালাকা’ অংশটুকু ছেড়ে দিয়ে পড়তেন “ওয়ায যাকারা ওইয়াল উনসা”। তখন তিনি বললেনঃ এখানকার লোকেরা আমাকে এ সূরা সম্পর্কেই সন্দেহের মধ্যে ফেলে দিচ্ছিলেন। অথচ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এ রকমই শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৪৪ | 5844 | ۵۸٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৫৯৯. জুমু’আর সালাত শেষে কায়লুলা (দুপুরের বিশ্রাম গ্রহন)
৫৮৪৪। মুহাম্মদ ইবনু কাসীর (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেন, আমরা জুমুআর সালাত (নামায/নামাজ) এর পরেই কায়লুলা করতাম এবং দুপূরের খাবার খেতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৪৫ | 5845 | ۵۸٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৬০০. মসজিদে কাইলুলা করা
৫৮৪৫। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … সাহল ইবনু সা’দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আলী (রাঃ) এর কাছে আবূ তুরাব এর চাইতে প্রিয়তর কোন নাম ছিল না। এ নামে ডাকা হলে তিনি অতান্ত খুশী হতেন। কারণ একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফাতিমা (রাঃ) এর ঘরে আসলেন। তখন আলী (রাঃ) কে ঘরে পেলেন না। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তোমার চাচাতো ভাই কোথায়? তিনি বললেনঃ আমার ও তার মধ্যে কিছু ঘটায় তিনি আমার সঙ্গে রাগারাগি করে বেরিয়ে গেছেন। আমার কাছে কায়লুলা করেননি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে বললেনঃ দেখতো সে কোথায়? সে লোকটি এসে বললঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি তো মসজিদে ঘুমিয়ে আছেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এসে দেখতে পেলেন যে, তিনি কাত হয়ে শুয়ে আছেন, আর তার চাঁদরখানা পাশ থেকে পড়ে গেছে। ফলে তার সাথে মাটি লেগে গেছে। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার গায়ের মাটি ঝাড়তে লাগলেন এবং বলতে লাগলেনঃ ওঠো, আবূ তুরাব (মাটির বাবা) ওঠো, আবূ তুরাব! একথাটা তিনি দু’বার বললেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৪৬ | 5846 | ۵۸٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৬০১. যিনি কোন কাওমের সাথে দেখা করতে যান এবং সেখানে ‘কাইলুলা’ করেন
৫৮৪৬। কুতায়বা (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মে সুলায়ম (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জন্য চামড়ার বিছানা বিছিয়ে দিতেন এবং তিনি সেখানেই ঐ চামড়ার বিছানার উপর কায়লুলা করতেন। এরপর তিনি যখন ঘুম থেকে উঠতেন তখন তিনি তার শরীরের কিছুটা ঘাম ও চুল সংগ্রহ করতেন এবং তা একটা শিশির মধ্যে জমাতেন এবং তাকে ‘সুক্ক’ নামক সুগন্ধির মধ্যে মিশাতেন। রাবী বর্ণনা করেন যে, আনাস ইবনু মালিক এর ওফাতের সময় ঘনিয়ে আসলে, তিনি আমাকে অসিয়ত করলেনঃ যেন ঐ ‘সুক্ক’ থেকে কিছুটা তার সুগন্ধির মধ্যে মিশিয়ে দেওয়া হয়। সুতরাং তা তার সুগন্ধির মধ্যে মিশিয়ে দেয়া হয়েছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৪৭ | 5847 | ۵۸٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৬০১. যিনি কোন কাওমের সাথে দেখা করতে যান এবং সেখানে ‘কাইলুলা’ করেন
৫৮৪৭। ইসমাঈল (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘কুবা’ এর দিকে যখন যেতেন তখন প্রায়ই উম্মে হারাম বিনতে মিলহান (রাঃ) এর ঘরে প্রবেশ করতেন এবং তিনি তাঁকে খানা খাওয়াতেন। তিনি উবাদা ইবনু সামিত (রাঃ) এর স্ত্রী ছিলেন। একদিন তিনি তার ঘরে গেলে তাকে খাবার খাওয়ালেন। এরপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানেই ঘুমালেন। কিছুক্ষণ পরে তিনি সজাগ হয়ে হাসতে লাগলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনাকে কিসে হাসাচ্ছে? তিনি বললেনঃ স্বপ্নের মধ্যে আমাকে আমার উম্মাতের মধ্য হতে আল্লাহর পথে জিহাদকারী কিছু সংখ্যক মুজাহিদ দেখানো হয়েছে, যারা এই বিশাল সমুদ্রের মাঝখানে বাদশাহদের মত সিংহাসনের উপর সমাসীন। তখন তিনি বললেনঃ আপনি দু’আ করুন সেন আল্লাহ তা’আলা আমাকেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করে দেন। তিনি সে দু’আ করলেন এবং বিছানায় মাথা রেখে আবার শুয়ে পড়লেন।

কিছুক্ষণ পর তিনি আবার হাসতে হাসতে সজাগ হলেন। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনাকে কিসে হাসাচ্ছে? তিনি বললেন (স্বপ্নের মধ্যে) আমাকে আমার উম্মতের মধ্য থেকে আল্লাহর পথে জিহাদকারী কিছু সংখ্যক লোক দেখানো হয়েছে, যারা এই বিশাল সমুদ্রের মাঝখানে বাদশাহদের মত সিংহাসলের উপর সমাসীন। তখন আবার আমি বললামঃ আপনি আল্লাহর কাছে দুআ করুন যেন তিনি আমাকে তাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। তিনি বললেনঃ তুমি প্রথম বাহিনীদেরই অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সুতরাং তিনি মুআবিয়া (রাঃ) এর আমলে সামুদ্রিক অভিযানে রওয়ানা হন এবং সমুদ্রাভিযান থেকে ফিরে এসে তার নিজেরই সাওয়ারী থেকে পড়ে গিয়ে (আল্লাহর পথেই) শাহাদাত বরণ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৪৮ | 5848 | ۵۸٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৬০২. যার জন্য যেভাবে সহজ হয়, সেভাবেই বসা
৫৮৪৮। আলা ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’রকমের লেবাস এবং দু’ধরনের বিক্রয় নিষেধ করেছেন। পেচিয়ে কাপড় পরিধান করা থেকে এবং এক কাপড় পরে এহতেবা করা থেকে, যাতে মানুষের লজ্জাস্থানের উপর কোন কাপড় না থাকে এবং “মুলামাসা ও মুনাবাযা” বেচা-কেনা থেকেও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৪৯ | 5849 | ۵۸٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৬০৩. যিনি মানুষের সামনে কারো সঙ্গে কানে কানে কথা বলেন। আর যিনি আপন বন্ধুর গোপনীয় কথা কারো কাছে প্রকাশ করেন নি। অবশ্য তার মৃত্যুর পর তা প্রকাশ করেন
৫৮৪৯। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … উম্মুল মু’মিনীন আয়িশা (রাঃ) বর্ণণা করেন, একবার আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সব সহধর্মিণী তাঁর নিকট জমায়েত হয়েছিলাম। আমাদের একজনও অনুপস্থিত ছিলাম না। এমন সময় ফাতিমা (রাঃ) পায়ে হেঁটে আসছিলেন। আল্লাহর কসম! তাঁর হাঁটা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর হাঁটার অনুরূপই ছিল। তিনি যখন তাঁকে দেখলেন, তখন তিনি আমার মেয়ের আগমন শুভ হোক বলে তাঁকে সম্বর্ধনা জানালেন। এরপর যখন তিনি তাঁকে নিজের ডান পাশে অথবা (রাবী বলেন) বাম পাশে বসালেন। তারপর তিনি তাঁর সঙ্গে কানে কানে কিছুক্ষণ কথা বললেন, তিনি (ফাতেমা) খুব বেশী কাঁদতে লাগলেন। এরপর তাঁর বিষন্ন অবস্থা দেখে দ্বিতীয়বার তাঁর সঙ্গে তিনি কানে কানে আরো কিছু কথা বললেন, তখন ফাতিমা (রাঃ) হাসতে লাগলেন।

তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণীগণের মধ্য থেকে আমি বললামঃ আমাদের উপস্থিত থাকা অবস্থায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিশেষ করে আপনার সঙ্গে বিশেষ কি গোপনীয় কথা কানে কানে বললেন, যার কারণে আপনি খুব কাঁদছিলেন? এরপর যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে চলে গেলেন, তখন আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, তিনি আপনাকে কানে কানে কি বলেছিলেন? তিনি বললেনঃ আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ভেদ (গোপনীয় কথা) ফাঁস করবো না। এরপর রাসূুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাত হয়ে গেল। তখন আমি তাঁকে বললামঃ আপনার উপর আমার যে দাবী আছে, আপনি আমি তার কসম দিয়ে বলছি যে, আপনি কি গোপনীয় কথাটি আমাকে জানাবেন না?

তখন ফাতিমা (রাঃ) বললেনঃ হ্যাঁ, এখন আপনাকে জানাবো। সুতরাং তিনি আমাকে জানাতে গিয়ে বললেনঃ প্রথম বার তিনি আমার নিকট যে গোপনীয় কথা বললেন, তাহল এই যে, তিনি আমার নিকট বর্ণনা করেন যে, জিবরীল আলাইহিস সালাম প্রত্যেক বছর এসে পূর্ণ কুরআন একবার আমার নিকট পেশ করতেন। কিন্তু এ বছর তিনি এসে তা আমার কাছে দু’বার পেশ করেছেন। এতে আমি অনুমান করছি যে, আমার চির বিদায়ের সময় ঘনিয়ে আসছে। সুতরাং তুমি আল্লাহকে ভয় করে চলবে এবং বিপদে ধৈর্যধারণ করবে। নিশ্চয়ই আমি তোমার জন্য উত্তম অগ্রগমনকারী। তখন আমি কাঁদলাম যা নিজেই দেখলেন। তারপর যখন তিনি আমার বিষন্ন ভাব দেখলেন, তখন দ্বিতীয়বার আমাকে কানে কানে বললেনঃ তুমি কি জান্নাতের মুসলিম মহিলাদের অথবা এ উম্মতের মহিলাদের নেত্রী হয়ে যাওয়াতে সন্তুষ্ট হবে না? (তখন আমি হেসে দিলাম)।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৫০ | 5850 | ۵۸۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৬০৪. চিত হয়ে শোয়া
৫৮৫০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ আনসারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে মসজিদে চিত হয়ে শুয়ে থাকতে দেখেছি, তখন তার এক পা আরেক পায়ের উপর রাখা ছিল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৫১ | 5851 | ۵۸۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৬০৫. তৃতীয় ব্যক্তিকে বাদ দিয়ে দু’জনে কানে-কানে বলবে না। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহর বানীঃ হে মুমিনগন! যখন গোপন পরামর্শ কর, সে পরামর্শ যেন পাপাচার, সীমালঙ্গন … মুমিনদের কর্তব্য আল্লাহর উপর নির্ভর করবে” (৫৮ঃ ৯-১০)। আরও আল্লাহর বানীঃ হে মুমিনগন! তোমরা রসূলের সঙ্গে চুপিচুপি কথা বলতে চাইলে তাঁর পূর্বে সদাকা প্রদান করবে … তোমরা যা কর আল্লাহ তা সম্যক অবগত(৫৮ঃ ১২-১৩)।
৫৮৫১। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ ও ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোথাও তিনজন লোক থাকে তবে তৃতীয় জনকে বাদ দিয়ে দু’জনে মিলে চুপি চুপি কথা বলবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৫২ | 5852 | ۵۸۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৬০৬. গোপনীয়তা রক্ষা করা
৫৮৫২। আবদুল্লাহ ইবনু সাব্বাহ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার কাছে একটি বিষয় গোপনে বলেছিলেন। আমি তার পরেও কাউকে তা জানাইনি। এটা সম্পর্কে উম্মে সুলায়ম (রাঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন। কিন্তু আমি তাঁকেও বলি নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৫৩ | 5853 | ۵۸۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৬০৭. কোথাও তিনজনের বেশী লোক হলে গোপনে কথা বলা, আর কানে-কানে কথা বলা দূষনীয় নয়
৫৮৫৩। উসমান (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কোথাও তোমরা তিনজন থাকো, তখন একজনকে বাদ দিয়ে দু’জনে কানে-কানে কথা বলবে না। এতে তার মনে দুঃখ হবে। তোমরা পরস্পর মিশে গেলে তবে তা করাতে দোষ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৫৪ | 5854 | ۵۸۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৬০৭. কোথাও তিনজনের বেশী লোক হলে গোপনে কথা বলা, আর কানে-কানে কথা বলা দূষনীয় নয়
৫৮৫৪। আবদান (রহঃ) … আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন কিছু মাল লোকজনকে বণ্টন করে দিলেন। তখন একজন আনসারী মন্তব্য করলেন যে এ বণ্টনটি এমন যার মধ্যে আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রাখা হয়নি। তখন আমি বললাম সাবধান! আল্লাহর কসম! আমি নিশ্চয়ই নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গিয়ে এ কথাটা বলে দিব। এরপর আমি তার নিকট গেলাম। কিন্তু তখন তিনি একদল সাহাবীর মধ্যে ছিলেন। তাই আমি কথাটা তাকে কানে-কানেই বললাম তখন তিনি রেগে গেলেন। এমন কি তার চেহারার রং লাল হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পরে তিনি বললেনঃ মূসা (আলাইহিস সালাম) এর উপর রহমত নাযিল হোক। তাকে এর চাইতে অধিক কষ্ট দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি ধৈর্য ধারণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৫৫ | 5855 | ۵۸۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৬০৮. দীর্ঘ সময় কারো সাথে কানে-কানে কথা বলা
৫৮৫৫। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেন। একবার সালাত (নামায/নামাজ) এর একামত হয়ে গেলো, তখনও একজন লোক রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে কানে-কানে কথা বলছিলেন এবং দীর্ঘক্ষন ধরে তিনি এভাবে আলাপ করতে থাকলেন। এমন কি তার সঙ্গীগণ ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। তারপর তিনি দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৫৬ | 5856 | ۵۸۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৬০৯. ঘুমানোর সময় ঘরে আগুন রাখবে না
৫৮৫৬। আবূ নুয়ায়ম (রহঃ) … সালিম (রাঃ) তার পিতা থেকে, তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেছেনঃ যখন তোমরা ঘুমাবে তখন তোমাদের ঘরগুলোতে আগুন রেখে ঘুমাবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৫৭ | 5857 | ۵۸۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৬০৯. ঘুমানোর সময় ঘরে আগুন রাখবে না
৫৮৫৭। মুহাম্মদ ইবনু আ’লা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রাত্রি কালে মদিনার এক ঘরে আগুন লেগে ঘরের লোকজনসহ পুড়ে গেল। এদের অবস্থা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট জানানো হলে, তিনি বললেনঃ এ আগুন নিঃসন্দেহে তোমাদের জন্য চরম শত্রু। সুতরাং তোমরা যখন ঘুমাতে যাবে, তখন তোমাদেরই হিফাযতের জন্য তা নিভিয়ে ফেলবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৫৮ | 5858 | ۵۸۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৬০৯. ঘুমানোর সময় ঘরে আগুন রাখবে না
৫৮৫৮। কুতায়বা (রহঃ) … জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের পানাহারের পাত্রগুলো ঢেকে রাখবে। আর ঘুমাবার সময় (ঘরের) দরজাগুলো বন্ধ করবে এবং বাতিগুলো নিভিয়ে ফেলবে। কারণ প্রায়ই দুষ্ট ইদুরেরা জালানো বাতির ফিতাগুলো টেনে নিয়ে যায় এবং ঘরে আগুন লাগিয়ে গৃহবাসীকে জ্বালিয়ে দেয়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৫৯ | 5859 | ۵۸۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৬১০. রাত্রিকালে (ঘরের) দরজাগুলো বন্ধ করা
৫৮৫৯। হাসসান ইবনু আবূ আব্বাদ (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ রাতে যখন তোমরা ঘুমাতে যাবে, তখন বাতি নিভিয়ে দেবে, দরজা বন্ধ করবে, খাদ্য ও পানীয় দ্রব্যাদি ঢেকে রাখবে এবং মশকের মুখ বেঁধে বাখবে। হাম্মাম বলেনঃ এক টুকরা কাঠ দিয়ে হলেও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৬০ | 5860 | ۵۸٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৬১১. বয়োঃপ্রাপ্তির পর খাতনা করা এবং বগলের পশম উপড়ানো
৫৮৬০। ইয়াহইয়া ইবনু কুযাআ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মানুষের স্বভাবগত বিষয় হলো পাচটিঃ খাতনা করা, নাভির নীচের পশম কামানো, বগলের পশম উপড়ানো, গোঁফ কাটা এবং (অতিরিক্ত) নখ কাটা।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৬১ | 5861 | ۵۸٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৬১১. বয়োঃপ্রাপ্তির পর খাতনা করা এবং বগলের পশম উপড়ানো
৫৮৬১। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) আশি বছর বয়সের পর কাদূম ‘নামক’ স্থানে নিজেই নিজের খাতনা করেন। কুতায়বা (রহঃ) আবূয যিনাদ (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ ‘কাদ্দুম’ একটি স্থানের নাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৬২ | 5862 | ۵۸٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৬১১. বয়োঃপ্রাপ্তির পর খাতনা করা এবং বগলের পশম উপড়ানো
৫৮৬২। মুহাম্মদ ইবনু আব্দুর রহীম (রহঃ) … সাঈদ ইবনু জুবায়র (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইবনু আব্বাস (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হলো যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওফাতের সময় আপনি বয়সে কার মত ছিলেন? তিনি বললেনঃ আমি তখন মাখতুন (খাতনাকৃত) ছিলাম। তিনি আরও বলেনঃ তাদের নিয়ম ছিল যে সাবালক না হওয়া পর্যন্ত তারা খাতনা করতেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৬৩ | 5863 | ۵۸٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৬১২. যেসব খেলাধুলা আল্লাহর আনুগত্য হতে বিরত রাখে সেগুলো বাতিল (হারাম)। আর ঐ ব্যক্তির ব্যপারে, যে তার বন্ধুকে বলল, চলো, আমি তোমার সাথে জুয়া খেলবো। এ প্রসঙ্গে আল্লাহর বাণীঃ “মানুষের মধ্যে কেউ কেউ অজ্ঞতাবশতঃ অসার বাক্য ক্রয় করে নেয়”। (৩১ঃ ৬)
৫৮৬৩। ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ যদি কসম করে এবং তার কসমে বলে লাত ও উযযার কসম, তা হলে সে যেন লা ইলাহা ইলাল্লাহ বলে, আর যে কেউ তার বন্ধুকে বলেঃ এসো আমি তোমার সাথে জুয়া খেলবো। সে যেন সাদাকা করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৬৪ | 5864 | ۵۸٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৬১৩. পাকা ঘর-বাড়ি নির্মাণ করা। আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ কিয়ামতের অন্যতম আলামত হলো, তখন পশুর রাখালেরা পাকা বাড়ি-ঘর নির্মাণে পরস্পর প্রতিযোগিতা করবে
৫৮৬৪। আবূ নুয়ায়ম (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) বর্ননা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় আমার খেয়াল হলো যে, আমি নিজ হাতে আল্লাহর কোন সৃষ্টির সাহায্য ছাড়া এমন একটা ঘর বানিয়ে নেই, যা আমাকে বৃষ্টির পানি থেকে ঢেকে রাখে এবং আমাকে রোদ থেকে ছায়া দান করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৬৫ | 5865 | ۵۸٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৬১৩. পাকা ঘর-বাড়ি নির্মাণ করা। আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ কিয়ামতের অন্যতম আলামত হলো, তখন পশুর রাখালেরা পাকা বাড়ি-ঘর নির্মাণে পরস্পর প্রতিযোগিতা করবে
৫৮৬৫। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু উমর (রাঃ) বর্ননা করেন। আল্লাহর কসম! আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পর থেকে এ পর্যন্ত কোন ইটের উপর ইট রাখি নি। (অর্থাৎ কোন পাকা ঘর নির্মাণ করিনি) আর কোন খেজুরের চারা লাগাই নি। সুফিয়ান (রাবী) বর্ণনা করেন, আমি এ হাদীসটি তার পরিবারের এক ব্যাক্তির নিকট উল্লেখ করলাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম! তিনি তো নিশ্চয়ই পাকা ঘর নির্মাণ করেছেন। তখন আমি বললাম, তা হলে সম্ভবতঃ এ হাদীসটি তাঁর পাকা ঘর নিমাণের আগেকার হবে।

 দুআ অধ্যায় (৫৮৬৬-৫৯৬৯)

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৬৬ | 5866 | ۵۸٦٦

মুল গ্রন্থে এই নম্বরের (৫৮৬৬) কোন হাদিস নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৬৭ | 5867 | ۵۸٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৬১৫. শ্রেষ্টতম ইস্তেগফার। আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তোমরা তোমাদের নিজ প্রতিপালকের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। তিনি তো মহা ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করবেন, তিনি তোমাদের সমৃদ্ধ করবেন ধন সম্পদ ও সন্তান সন্ততিতে এবং তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন উদ্যান ও প্রবাহিতি করবেন নদী-নালা। (৭১ঃ ১০-১২) আর আল্লাহর বাণীঃ আর যারা অশালীন কাজ করে ফেলে অথবা নিজেদের প্রতি যুলুম করলে আল্লাহ্‌কে স্মরণ করে এবং নিজেদের পাপের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে …… (৩ঃ ১৩৫)
৫৮৬৭। আবূ মা’মার (রহঃ) … শাদ্দাদ ইবনু উস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার হলো বান্দার এ দু’আ পড়া– “হে আল্লাহ তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তুমিই আমাকে সৃষ্টি করেছ। আমি তোমারই গোলাম। আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে পানাহ চাচ্ছি। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নিয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গুনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে মাফ করে দাও। কারন তুমি ছাড়া কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারবে না।

যে ব্যাক্তি দিনের (সকাল) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এ ইস্তিগফার পড়বে আর সন্ধা হওয়ার আগেই সে মারা যাবে, সে জান্নাতী হবে। আর যে ব্যাক্তি রাতের (প্রথম) বেলায় দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে এ দু’আ পড়ে নেবে আর সে ভোর হওয়ার আগেই মারা যাবে সে জান্নাতী হবে।

সাইয়্যেদুল ইস্তিগফার বাংলা উচ্চারন সহঃ

(اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ )

উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা আনতা রব্বী লা-ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্কতানী ওয়া আনা আ’বদুকা ওয়া আনা আ’লা আহ্‌দিকা ওয়া ও’য়াদিকা মাসতাত’তু আ’উযুবিকা মিন শার্‌রি মা ছা’নাতু আবূউলাকা বিনি’মাতিকা আ’লাইয়্যা ওয়া আবূউলাকা বিযানবী ফাগ্‌ফির্‌লী ফাইন্নাহু লা-ইয়াগফিরুয্‌যুনূবা ইল্লা আনতা”।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৬৮ | 5868 | ۵۸٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৬১৬. দিনে ও রাতে নাবী (সাঃ) এর ইস্তিগফার
৫৮৬৮। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছিঃ আল্লাহর কসম! আমি প্রত্যহ আল্লাহর কাছে সত্তরবারেরও বেশী ইস্তিগফার ও তাওবা করে থাকি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৬৯ | 5869 | ۵۸٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৬১৭. তাওবা করা। কাতাদা (রহঃ) বলেন। মহান আল্লাহর বাণীঃ “তোমরা সবাই আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর কাছে তাওবা কর”।
৫৮৬৯। আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) দুটি হাদীস বর্ননা করেছেন। একটি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আর অন্যটি তার নিজ থেকে। তিনি বলেন, ঈমানদার ব্যাক্তি তার গুনাহ গুলোকে এত বিরাট মনে করে, যেন সে একটা পাহাড়ের নীচে বসা আছে, আর সে আশংকা করছে যে, সম্ভবত পাহাড়টা তার উপর ধসে পড়বে। আর পাপিষ্ঠ ব্যাক্তি তার গুনাহুগুলোকে মাছির মত মনে করে, যা তার নাকে বসে চলে যায়। এ কথাটি আবূ শিহাব নিজ নাকে হাত দিয়ে দেখিয়ে বলেন।

তারপর (নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত হাদীসটি বর্ণনা করে বলেন) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মনে কর কোন এক ব্যাক্তি (সফরের অবস্থায় বিশ্রামের জন্য) কোন এক স্থানে অবতরণ করলো, সেখানে প্রানেরও ভয় ছিল। তার সাথে তার সফরের বাহন ছিল। যার উপর তার খাদ্য ও পানীয় ছিল, সে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লো এবং জেগে দেখলো তার বাহন চলে গেছে। তখন সে গরমে ও পিপাসায় কাতর হয়ে পড়লো।

রাবী বলেনঃ আল্লাহ যা চাইলেন তা হল। তখন সে বললো যে, আমি যে জায়গায় ছিলাম সেখানেই ফিরে যাই। এরপর সে নিজ স্থানে ফিরে এসে আবার ঘুমিয়ে পড়লো। তারপর জেগে দেখলো যে তার বাহনটি তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে। তখন সে ব্যাক্তি যে পরিমাণ খুশী হলো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তায়ালা তার বান্দার তাওবা করার কারণে এর চাইতেও অনেক বেশী খুশী হন। আবূ আওয়ানা ও জারীর আমাশ (রহঃ) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৭০ | 5870 | ۵۸۷۰

পরিচ্ছদঃ ২৬১৭. তাওবা করা। কাতাদা (রহঃ) বলেন। মহান আল্লাহর বাণীঃ “তোমরা সবাই আন্তরিকতার সাথে আল্লাহর কাছে তাওবা কর”।
৫৮৭০। ইসহাক ও হুদবাহ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ তা’আলা বান্দার তাওবার কারণে সেই লোকটির চাইতেও বেশী খুশী হন, যে লোকটি মরুভূমিতে তার উট হারিয়ে পরে তা পেয়ে যায়।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৭১ | 5871 | ۵۸۷۱

পরিচ্ছদঃ ২৬১৮. ডান পাশে শয়ন করা
৫৮৭১। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতের শেষ দিকে এগার রাকাত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। তারপর যখন সুবহে সা’দিক হতো, তখন তিনি দু’রাকাত সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতেন। এরপর তিনি নিজের ডান পাশে কাত হয়ে বিশ্রাম নিতেন। যতক্ষন না মুয়াযযিন এসে তাঁকে সালাত (নামায/নামাজ) এর খবর দিতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৭২ | 5872 | ۵۸۷۲

পরিচ্ছদঃ ২৬১৯. পবিত্র অবস্থায় রাত কাটানো এবং তার ফযীলত
৫৮৭২। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … বারা’আ ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ যখন তুমি শোয়ার বিছানায় যেতে চাও, তখন তুমি সালাত (নামায/নামাজ) এর উযূ (ওজু/অজু/অযু)র ন্যায় উযূ (ওজু/অজু/অযু) করবে। এরপর ডান পাশের উপর কাত হয়ে শুয়ে পড়বে। আর এ দুআ পড়বে, হে আল্লাহ! আমি আমার চেহারাকে (অর্থাৎ যাবতীয় অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে) তোমার হাতে সঁপে দিলাম। আর আমার সকল বিষয় তোমারই নিকট সমর্পন করলাম এবং আমার পিঠখানা তোমার আশ্রয়ে সোপর্দ করলাম। আমি তোমার গযবের ভয়ে ভীত ও তোমার রহমতের আশায় আশান্নিত। তোমার নিকট ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল নেই এবং নেই মুক্তি পাওয়ার স্থান। তুমি যে কিতাব নাযিল করেছ, আমি তার উপর ঈমান এনেছি এবং তুমি যে নাবী পাঠিয়েছ আমি তার উপর ঈমান এনেছি। যদি তুমি এ রাতেই মরে যাও, তোমার সে মওত স্বভাবধর্ম ইসলামের উপরই হবে। অতএব তোমার এ দুআ যেন তোমার এ রাতের সর্বশেষ কথা হয়। রাবী বারা’আ বলেন, আমি বললামঃ আমি এ কথা মনে রাখবো। তবে وَبِرَسُولِكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ সহ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না ওভাবে নয়, তুমি বলবে, وَبِنَبِيِّكَ الَّذِي أَرْسَلْتَ

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৭৩ | 5873 | ۵۸۷۳

পরিচ্ছদঃ ২৬২০. ঘুমাবার সময় কি দু’আ পড়বে
৫৮৭৩। কাবীসা (রহঃ) … হুযায়ফা ইবনু ইয়ামান (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন বিছানায় আশ্রয় গ্রহণ করতে যেতেন, তখন তিনি এ দু’আ পড়তেনঃ হে আল্লাহ! আপনারই নাম নিয়ে মরি আর আপনার নাম নিয়েই জীবিত হই। আর তিনি যখন জেগে উঠতেন তখন পড়তেনঃ যাবতীয় প্রশংসা সে আল্লাহর জন্য যিনি আমাদের (নিদ্রা জাতীয়) মৃত্যুদানের পর আবার আমাদের পুনজীবিত করেছেন। (অবশেষে) আমাদের তারই নিকটে মিলিত হতে হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৭৪ | 5874 | ۵۸۷٤

পরিচ্ছদঃ ২৬২০. ঘুমাবার সময় কি দু’আ পড়বে
৫৮৭৪। সাঈদ ইবনু রাবী ও মুহাম্মাদ ইবনু আর’আরা (রহঃ) … বারা’আ ইবনু আযিব (রাঃ) বর্ণনা করেন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন এক ব্যাক্তিকে নির্দেশ দিলেন, অন্য সূত্রে বর্ণনা করেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে অসিয়ত করলেন যে, যখন তুমি বিছানায় ঘুমাতে যাবে, তখন তুমি এ দু’আ পড়বে, ইয়া আল্লাহ! আমি আমার প্রাণকে আপনার কাছে সোপর্দ করলাম-আর আমার বিষয় ন্যাস্ত করলাম আপনার দিকে এবং আমার চেহারা আপনার দিকে ফিরিয়ে দিলাম, আপনার রহমতের আশায় এবং আপনার গযবের ভয়ে। আপনার নিকট ছাড়া আপনার গযব থেকে পালিয়ে যাওয়ার এবং আপনার আযাব থেকে বেঁচে যাওয়ার আর কোন জায়গা নেই। আপনি যে কিতাব নাযিল করেছেন আমি তার উপর দৃঢ় বিশ্বাস করছি এবং আপনি যে নাবী পাঠিয়েছেন, আমি তার উপর পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করেছি। যদি তুমি এ অবস্থায়ই মরে যাও, তবে তুমি স্বভাবধর্ম ইসলামের উপর মৃত্যুবরণ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৭৫ | 5875 | ۵۸۷۵

পরিচ্ছদঃ ২৬২১. ডান গালের নীচে ডান হাত রেখে ঘুমানো
৫৮৭৫। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে নিজ বিছানায় শোয়ার সময় নিজ হাতখানা গালের নীচে রাখতেন, তারপর বলতেন ইয়া আল্লাহ! আপনার নামেই মরি। আপনার নামেই জীবিত হই। আর যখণি জাগতেন তখন বলতেনঃ সে আল্লাহর জন্য প্রশংসা, তিনি মৃত্যুর পর আমাদের জীবন দান করলেন এবং তারই দিকে আমাদের পুনরুত্থান।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৭৬ | 5876 | ۵۸۷٦

পরিচ্ছদঃ ২৬২২. ডান পাশের উপর ঘুমানো
৫৮৭৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … বারা ইবনু আযিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন নিজ বিছানায় বিশ্রাম নিতে যেতেন, তখন তিনি ডান পাশের উপর ঘুমাতেন এবং বলতেনঃ ইয়া আল্লাহ! আমি আমার সত্তাকে আপনার কাছে সোপর্দ করলাম এবং আমার চেহারা আপনারই দিকে ফিরিয়ে দিন। আর আমার বিষয় ন্যাস্ত করলাম আপনার দিকে আপনার রহমতের আশায়। আপনি ছাড়া কারো আশ্রয় নেই আর নেই কোন গন্তব্য। আপনার নাযিলকৃত কিতাবে ঈমান আনলাম এবং আপনার প্রেরিত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতিও। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ যে ব্যাক্তি শোয়ার সময় এ দু’আগুলো পড়বে, আর সে রাতেই তার মৃত্যু হবে সে স্বভাব ধর্ম ইসলামের উপরই মরবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৭৭ | 5877 | ۵۸۷۷

পরিচ্ছদঃ ২৬২৩. রাতে ঘুম থেকে জাগার পর দু’আ
৫৮৭৭। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার আমি মায়মুনা (রাঃ) এর ঘরে রাত কাটালাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উঠে তার প্রয়োজনাদি সেরে মুখ-হাত ধুয়ে শুইয়ে পড়লেন। কিছুক্ষণ পরে আবার জেগে উঠে পানির মাশকের নিকট গিয়ে এর মুখ খুললেন। এরপর মাঝারি রকমের এমন উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন যে; তাতে বেশী পানি লাগালেন না। অথচ পুরা উযূ (ওজু/অজু/অযু)ই করলেন। তারপর তিনি সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করতে গাগলেন। তখন আমিও জেগে উঠলাম। তবে আমি কিছু দেরী করে উঠলাম। এজন্য যে, আমি এটা পছন্দ করলাম না যে, তিনি আমার অনুসরণকে দেখে ফেলেন। যা হোক আমি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলাম। তখনও তিনি দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করছিলেন। সুতরাং আমি গিয়ে তাঁর বাম দিকে দাঁড়িয়ে গেলাম। তখন তিনি আমার কান ধরে তার ডান দিকে আমাকে ঘুরিয়ে নিলেন।

এরপর তার তেরো রাকা আত সালাত (নামায/নামাজ) পূর্ন হলো। তারপর তিনি আবার কাত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। এমন কি নাক ডাকাতেও লাগলেন। তার অভ্যাস ছিল যে, তিনি ঘুমে নাক ডাকাতেন। এরপর বিলাল (রাঃ) এসে তাকে জাগালেন। তখন তিনি নতুন উযূ (ওজু/অজু/অযু) না করেই সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করলেন। তার দু’আর মধ্যে এ দু’আও ছিলঃ “ইয়া আল্লাহ! আপনি আমার অন্তরে আমার চোখে, আমার কানে, আমার ডানে বামে, আমার উপর-নীচে, আমার সামনে-পেছনে, আমার জন্য নূর দান করুন।

কুরায়ব (রহঃ) বলেন, এ সাতটি আমার তাবুতের মত। এরপর আমি আব্বাসের পুত্রদের একজনের সঙ্গে সাক্ষাত করলাম, তিনি আমাকে এ সাতটি অঙ্গের কথা বর্ণনা করলেন এবং রগ, গোশত, রক্ত, চুল ও চামড়ার উল্লেখ করলেন এবং আরো দুটির কথা উল্লেখ করেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৭৮ | 5878 | ۵۸۷۸

পরিচ্ছদঃ ২৬২৩. রাতে ঘুম থেকে জাগার পর দু’আ
৫৮৭৮। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাহাজ্জুদের সালাতে দাঁড়াতেন, তখন বলতেনঃ ইয়া আল্লাহ! সন্মুখে প্রশংসা আপনারই জন্য, আপনি রক্ষক আসমান ও যমীনের এবং যা কিছু এগুলোর মধ্যে আছে, আপনিই তাদের নূর। আর যাবতীয় প্রশংসা শুধু আপনারই। আসমান যমীন এবং এ দু’এর মধ্যে যা আছে, এসব কিছুকে সুদৃঢ় ও কায়েম রাখার একমাত্র মালিক আপনই। আর সমস্ত প্রশংসা একমাত্র আপনারই। আপনিই সত্য, আপনার ওয়াদা সত্য, আপনার কথা সত্য, আখিরাতে আপনার সাক্ষাত লাভ করা সত্য, বেহেশত সত্য, দোযখ সত্য, কিয়ামত সত্য, পয়গাম্বরগন সত্য, এবং মুহাম্মদ সত্য। ইয়া আল্লাহ! আপনারই কাছে আত্মসমর্পন করেছি। আমি একমাত্র আপনারই উপর ভরসা রাখি। একমাত্র আপনারই উপর ঈমান এনেছি। আপনারই দিকে ফিরে চলছি। শত্রুদের সাথে আপনারই খাতিরে শত্রুতা করি। আপনারই নিকট বিচার চাই। অতএব আমার আগের পরের এবং লুকায়িত প্রকাশ্য গুনাহ আপনি মাফ করে দিন। আপনিই কাউকে এগিয়ে দাতা, আর কাউকে পিছিয়ে দাতা আপনি ছাড়া আর কোন মাবূদ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৭৯ | 5879 | ۵۸۷۹

পরিচ্ছদঃ ২৬২৪. ঘুমানোর সময়ের তাসবীহ ও তাকবীর বলা
৫৮৭৯। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার গম পেষার চাক্কি ঘুরানোর কারনে ফাতিমা (রাঃ) এর হাতে ফোস্কা পড়ে গেল। তখন তিনি একটি খাদেম চেয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এলেন তিনি তাকে পেলেন না। তখন তিনি আসার উদ্দেশ্যটি আয়িশা (রাঃ) এর নিকট ব্যক্ত করে গেলেন। এরপর তিনি যখন ঘরে এলেন তখন আয়িশা (রাঃ) এ বিষয়টি তাকে জানালেন। তারপর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাছে এমন সময় আসলেন যখন আমরা বিছানায় বিশ্রাম গ্রহণ করেছি। তখন আমি উঠতে চাইলে তিনি বললেন নিজ জায়গায়ই থাকো। তারপর আমাদের মাঝখানেই তিনি এমনিভাবে বসে গেলেন যে, আমি তার দু’পায়ের শীতল স্পর্শ আমার বুকে অনুভব করলাম। তিনি বললেন আমি কি তোমাদের এমন একটি আমল বাতলে দেবনা যা তোমাদের জন্য একটি খাদেমের চাইতেও অনেক বেশী উত্তম। যখন তোমরা শয্যা গ্রহন করতে যাবে, তখন তোমরা আল্লাহ আল্লাহ ৩৩ বার, সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার। আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার পড়বে। এটা তোমাদের জন্য একটি খাদেমের চাইতেও অনেক বেশী মঙ্গলজনক। ইবনু সীরীন (রহঃ) বলেনঃ তাসবীহ হল ৩৪ বার।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৮০ | 5880 | ۵۸۸۰

পরিচ্ছদঃ ২৬২৫. ঘুমাবার সময় আল্লাহর পানাহ চাওয়া এবং কুরআন পাঠ করা
৫৮৮০। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন (ঘুমাবার জন্য) বিছানায় যেতেন, তখন মুয়াওবিযাত (ফালাক ও নাস) পড়ে তাঁর দুহাতে ফুঁক দিয়ে তা শরীরে মাসেহ করতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৮১ | 5881 | ۵۸۸۱

পরিচ্ছদঃ ২৬২৬. পরিচ্ছেদ নাই
৫৮৮১। আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি তোমাদের কেউ শয্যা গ্রহন করতে যায় তখন সে যেন তার লুঙ্গীর ভেতর দিক দিয়ে নিজ বিছানটি ঝেড়ে নেয়। কারণ, সে জানেনা যে, বিছানার উপর তার অবর্তমানে কষ্টদায়ক কোন কিছু রয়েছে কিনা। তারপর পড়বেঃ بِاسْمِكَ رَبِّ وَضَعْتُ جَنْبِي، وَبِكَ أَرْفَعُهُ، إِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَارْحَمْهَا، وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ الصَّالِحِينَ হে আমার প্রতিপালক! আপনারই নামে আমার দেহখানা বিছানায় রাখলাম এবং অপনারই নামে আবার উঠাবো। যদি আপনি ইতিমধ্যে আমার জানো কবয করে নেন; তা হলে, তার উপর দয়া করবেন। আর যদি তা আমাকে ফিরিয়ে দেন, তবে তাকে এমনভাবে হিফাযত করবেন! সেভাবে আপনি আপনার নেক বান্দাদের হিফাযত করে থাকেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৮২ | 5882 | ۵۸۸۲

পরিচ্ছদঃ ২৬২৭. মধ্যরাতের দু’আ
৫৮৮২। আবদুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ প্রত্যকে রাতের শেষ তৃতীয়াংশ বাকী থাকতে আমাদের প্রতিপালক আমাদের নিকটতম আসমানে অবতরন করে বলতে থাকেনঃ আমার নিকট দুআ করবে কে? আমি তার দুআ কবুল করবো। আমার নিকট কে চাবে? আমি তাকে দান করবো। আমার কাছে কে তার গুনাহ মাফ চাইবে? আমি তারে মাফ করে দেবো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৮৩ | 5883 | ۵۸۸۳

পরিচ্ছদঃ ২৬২৮. পায়খানায় প্রবেশ করার সময় দু’আ
৫৮৮৩। মুহাম্মদ ইবনু আরআরা (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ননা করেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন পায়খানায় প্রবেশ করতেন, তখন তিনি বলতেনঃ ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার কাছে যাবতীয় পূরুষ ও স্ত্রী জাতীয় শয়তানদের থেকে পানা চাচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৮৪ | 5884 | ۵۸۸٤

পরিচ্ছদঃ ২৬২৯. ভোর হলে কি দু’আ পড়বে
৫৮৮৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … সাদ্দাদ ইবনু আওস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ সাইয়্যিদুল ইন্তিগফার হলঃ ‘ইয়া-আল্লাহ! আপনিই আমার পালনকর্তা। আপনি ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই। আপনিই আমাকে সৃষ্টি করেছেন, আর আমি আপনারই গোলাম। আর আমি আমার সাধ্যানুযায়ী আপনার সঙ্গে কৃত প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর সুদৃঢ়ভারে কায়েম আছি। আমি আমার প্রতি আপনার নিয়ামাত স্বীকার করছি এবং কৃতগুনাহসমূহ স্বীকার করছি। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন। কারণ আপনি ছাড়া ক্ষমা করার আর কেউ নেই। আমি আমার কৃতগুনাহের মন্দ পরিণাম থেকে আপনারা কাছে পানাহ চাচ্ছি। যে ব্যাক্তি সন্ধ্যা বেলায় এ দুআ পড়বে আর এ রাতেই মারা যায় সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। রাবী বলেন, অথবা তিনি বলেছেনঃ সে হবে জান্নাতী। আর যে ব্যাক্তি সকালে এ দুআ পড়বে, আর এ দিনই মারা যায় সেও অনুরুপ জান্নাতী হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৮৫ | 5885 | ۵۸۸۵

পরিচ্ছদঃ ২৬২৭. মধ্যরাতের দু’আ
৫৮৮৫। আবূ নুয়ায়ম (রহঃ) … হুযায়ফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুমাতে চাইতেন, তখন বলতেনঃ ইয়া আল্লাহ! আমি আপনায় নামেই মরি এবং জীবিত হই। আর তিনি যখন ঘূম থেকে সজাগ হতেন তখন বলতেনঃ আল্লাহ তা’আলারই যাবতীয় প্রসংসা যিনি আমাদের (নিদ্রা জাতীয়) ওফাত দেওয়ার পর আবার নতুন জীবন দান করেছেন। আর অবশেষে তারই কাছে আমাদের পুনরুত্থান হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৮৬ | 5886 | ۵۸۸٦

পরিচ্ছদঃ ২৬২৯. ভোর হলে কি দু’আ পড়বে
৫৮৮৬। আবদান (রহঃ) … আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন রাতে বিছানায় যেতেন তখন দুআ পড়তেনঃ ইয়া আল্লাহ! আমি আপনারই নামে মরি এবং জীবিত হই। আর যখন তিনি জেগে উঠতেন তখন বলতেনঃ সকল প্রশংসা আল্লাহরই যিনি আমাদের জীবিত করেছেন, (নিদ্রা জাতীয়) মৃত্যর পর এবং তারই কাছে পুনরুত্থান সুনিশ্চিত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৮৭ | 5887 | ۵۸۸۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৩০. সালাতের মধ্যে দু’আ পড়া
৫৮৮৭। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ বকর সিদ্দিকী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট বললেনঃ আপনি আমাকে এমন একটি দুআ শিখিয়ে দিন, যা দিয়ে আমি সালাতে দু’আ করব। তিনি বললেনঃ তুমি সালাতে পড়বেঃ ইয়া আল্লাহ! আমি আমার নিজের উপর অনেক বেশী যুলম করে ফেলেছি। আপনি ছাড়া আমার গুনাহ মাফ করার আর কেউ নেই। অতএব আপনি আপনার পক্ষ থেকে আমাকে মাফ করে দিন। আর আমার প্রতি দয়া করূন। নিশ্চইয় আপনি ক্ষমাশীল ও অতি দয়ালু।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৮৮ | 5888 | ۵۸۸۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৩০. সালাতের মধ্যে দু’আ পড়া
৫৮৮৮। আলী (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে (আল্লাহর বানী) … সালাতে স্বর উচ্চ করবে না এবং অতিশয় ক্ষীণও করবে না …।” এ আয়াতটি দুআ সম্পর্কেই নাযিল করা হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৮৯ | 5889 | ۵۸۸۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৩০. সালাতের মধ্যে দু’আ পড়া
৫৮৮৯। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আবদুল্লাহ বলেন, আমরা সালাতে বলতামঃ “আসসালামু আলাল্লাহ, আসসালামু আলা ফুলানিন” তখন একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বললেনঃ আল্লাহ তাআলা তিনি নিজেই সালাম। সুতরাং তোমাদের কেউ যখন সালাতে বসবে, তখন সে যেন التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ … الصَّالِحِينَ পড়ে। সে যখন এতটুকু পড়বে তখন আসমান যমীনের আল্লাহর সব নেক বান্দাদের নিকট তা পৌছে যাবে। তারপর বলবেঃ أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَأَشْهَدُ أَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُولُهُ তারপর হামদ সানা যা ইচ্ছা পড়তে পারবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৯০ | 5890 | ۵۸۹۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৩১. সালাতের পরের দু’আ
৫৮৯০। ইসহাক (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। গরীব সাহাবীগণ বলেনঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! ধনশীল লোকেরা তো উচ্চমর্যাদা ও চিরস্থায়ী নিয়ামত নিয়ে আমাদের থেকে এগিয়ে গেলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ তা কেমন করে? তারা বললেনঃ আমরা যে রকম সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করি, তারাও সে রকম সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করেন। আমরা সে রূপ জিহাদ করি, তারাও সেরূপ জিহাদ করেন এবং তারা তাদের অতিরিক্ত মাল দিয়ে সাদাকা-খায়রাত করেন; কিন্তু আমাদের কাছে সম্পদ নেই। তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাদের একটি আমল বাতলে দেবনা, যে আমল দ্বারা তোমরা তোমাদের পূর্ববর্তীদের মর্যাদা অর্জন করতে পারবে, আর তোমাদের পরবর্তীদের চাইতে এগিয়ে যেতে পারবে, আর তোমাদের অনুরূপ আমল কেউ করতে পরেবে না, কেবলমাত্র যারা তোমাদের ন্যায় আমল করবে তারা ব্যতীত। সে আমল হলো তোমরা প্রত্যেক সালাত (নামায/নামাজ) এর পর ১০ বার সুবহানাল্লাহ, ১০ বার আলহামদুলিল্লাহ্‌ এবং ১০ বার আল্লাহ আকবর পাঠ করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৯১ | 5891 | ۵۸۹۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৩১. সালাতের পরের দু’আ
৫৮৯১। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … মুগীরা (রাঃ) আবূ সুফিয়ানের পূত্র মুআবিয়া (রাঃ) এর নিকট এক পত্র লিখেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রত্যেক সালাতে সালাম ফিরানর পর বলতেনঃ আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই। তিনি একাই মাবুদ। তার কোন শরীক নেই। মুলক তারই, যাবতীয় প্রশংসা তারই প্রাপ্য। তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান। ইয়া আল্লাহ! আপনি কাউকে যা দান করেন তাকে বাধা দেওয়ার কেউ নেই। আর আপনি যাকে কোন কিছু দিতে বিরত থাকেন তাকে তা দেওয়ার মতো কেউ নেই। আপনার রহমত না হলে কারো চেষ্টা ফলপ্রসূ হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৯২ | 5892 | ۵۸۹۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৩২. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তুমি দু’আ করবে …. (৯ঃ ১০৩) আর যিনি নিজেকে বাদ দিয়ে কেবল নিজের ভাই এর জন্য দু’আ করেন। আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) দু‘আ করেন, ইয়া আল্লাহ! আপনি ‘উবায়দ আবূ আমিরকে মাফ করুন। হে আল্লাহ! আপনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়সের গুনাহ মাফ করে দিন।
৫৮৯২। মুহাম্মাদ (রহঃ) … সালামা ইবনু আকওয়া (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একবার আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে খায়বার অভিযানে বের হলাম। সেনাবাহিনীর এক ব্যাক্তি বললেনঃ ওহে আমির! যদি আপনি আপনার ছোট ছোট কবিতা থেকে কিছুটা আমাদের শোনাতেন? তখন তিনি সাওয়ারী থেকে নেমে হুদী গাইতে গাইতে বাহন হাঁকিয়ে নিতে শুরু করলেন। তাতে উল্লেখ করলেনঃ আল্লাহ তাআলা না হলে আমরা হেদায়েত পেতাম না। (রাবী বলেন) এ ছাড়া আরও কিছু কবিতা তিনি আবৃতি করলেন, যা আমি স্মরণ রাখতে পরিনি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেনঃ এ উট চালক লোকটি কে? সাথীরা বললেনঃ উনি আমির ইবনু আকওয়া। তিনি বললেনঃ আল্লাহ তার উপর রহম করুন। তখন দলের একজন বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি তার দু’আর সাথে আমাদেরকেও শামিল করলে ভাল হতো না?

এরপর যখন মুজাহিদগন কাতার বন্ধী হয়ে শত্রুর সাথে যুদ্ধ করলেন। এ সময় আমির (রাঃ) তাঁর নিজের তরবারীর অগ্রভাগের আঘাতে আহত হলেন এবং এ আঘাতের দরুন তিনি মারা গেলেন। এদিন লোকেরা সন্ধ্যার পর (পাকের জন্য) বিচ্ছিন্নভাবে অনেক আগুন জানালেন। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেনঃ এ সব আগুন কিসের? এসব আগুন দিয়ে তোমরা কি জাল দিচ্ছ। তারা বললেন আমরা গৃহপালিত গাধার গোশত জাল দিচ্ছি। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ডেগগুলোর মধ্যে যা আছে, তা সব-ফেলে দাও এবং ডেগগুলোও ভেংগে ফেল। এক ব্যাক্তি বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! ডেগগুলোর মধ্যে যা আছে তা ফেলে দিলে এবং পাত্রগুলো ধুয়ে নিলে চলবে না? তিনি বললেনঃ তবে তাই কর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৯৩ | 5893 | ۵۸۹۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৩২. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তুমি দু’আ করবে …. (৯ঃ ১০৩) আর যিনি নিজেকে বাদ দিয়ে কেবল নিজের ভাই এর জন্য দু’আ করেন। আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) দু‘আ করেন, ইয়া আল্লাহ! আপনি ‘উবায়দ আবূ আমিরকে মাফ করুন। হে আল্লাহ! আপনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়সের গুনাহ মাফ করে দিন।
৫৮৯৩। মুসলিম (রহঃ) … ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) বর্ণনা করতেন, যখন কেউ কোন সাদাকা নিয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট আসতো তখন তিনি দুআ করতেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি অমুকের পরিজনের উপর রহম নাযিল করেন। একবার আমার আব্বা তার কাছে কিছু সাদাকা নিয়ে এলে তিনি বললেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি আবূ আওফার বংশধরের উপর রহমত করুন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৯৪ | 5894 | ۵۸۹٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৩২. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তুমি দু’আ করবে …. (৯ঃ ১০৩) আর যিনি নিজেকে বাদ দিয়ে কেবল নিজের ভাই এর জন্য দু’আ করেন। আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) দু‘আ করেন, ইয়া আল্লাহ! আপনি ‘উবায়দ আবূ আমিরকে মাফ করুন। হে আল্লাহ! আপনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়সের গুনাহ মাফ করে দিন।
৫৮৯৪। আলী ইবনু অবদুলাহ (রহঃ) … জারীর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি কি যুল-খালাসাহকে নিশ্চিহ্ন করে আমাকে চিন্তামুক্ত করবে? সেটা ছিল এক মূর্তি। লোকেরা এর পূজা করতো। সেটাকে বলা হতো ইয়ামানী কাবা। আমি বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি ঘোড়ার উপর স্থির থাকতে পরি না। তখন তিনি আমার বুকে জোরে একটা থাবা মারলেন এবং বললেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি তাকে স্থির রাখূন এবং তাকে হিদায়েতকারী ও হিদায়েতপ্রাপ্ত বানিয়ে দিন। তখন আমি আমারই গোত্র আহমাসের পঞ্চাশ জন যোদ্ধাসহ বের হলাম। সুফিয়ান (রহঃ) বলেছেনঃ কোন কোন সময় বলেছেনঃ আমি আমার গোত্রের একদল যোদ্ধার মধ্যে গেলাম। তারপর আমি সেই মুর্তিটির নিকট গিয়ে তাকে জ্বালিয়ে ফেললাম। এরপর আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আল্লাহর কসম! আমি যুল-খালাসাকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে পাঁচড়াযুক্ত উটের ন্যায় করে ছেড়েই আপনার কাছে এসেছি। তখন তিনি আহমাস গোত্র ও তার যোদ্ধাদের জন্য দুআ করলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৯৫ | 5895 | ۵۸۹۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৩২. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তুমি দু’আ করবে …. (৯ঃ ১০৩) আর যিনি নিজেকে বাদ দিয়ে কেবল নিজের ভাই এর জন্য দু’আ করেন। আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) দু‘আ করেন, ইয়া আল্লাহ! আপনি ‘উবায়দ আবূ আমিরকে মাফ করুন। হে আল্লাহ! আপনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়সের গুনাহ মাফ করে দিন।
৫৮৯৫। সাঈদ ইবনু রাবী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন উম্মে সুলায়ম (রাঃ) নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বললেনঃ আনাস তো আপনারই খাদেম। তখন তিনি বললেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি তার সম্পদ সন্তান সন্ততি বাড়িয়ে দিন এবং আপনি তাকে যা কিছু দান করেছেন তাতে বরকত দান করুন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৯৬ | 5896 | ۵۸۹٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৩২. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তুমি দু’আ করবে …. (৯ঃ ১০৩) আর যিনি নিজেকে বাদ দিয়ে কেবল নিজের ভাই এর জন্য দু’আ করেন। আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) দু‘আ করেন, ইয়া আল্লাহ! আপনি ‘উবায়দ আবূ আমিরকে মাফ করুন। হে আল্লাহ! আপনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়সের গুনাহ মাফ করে দিন।
৫৮৯৬। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যাক্তিকে মসজিদে কুরআন তিলাওয়াত করতে বললেন। তখন তিনি বললেনঃ আল্লাহ তার উপর রহমত করুন। সে আমাকে অমুক অমুক আয়াত স্মরণ করিয়ে দিয়েছে, যা আমি অমুক অমুক সূরা থেকে ভুলে গিয়েছিলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৯৭ | 5897 | ۵۸۹۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৩২. আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ তুমি দু’আ করবে …. (৯ঃ ১০৩) আর যিনি নিজেকে বাদ দিয়ে কেবল নিজের ভাই এর জন্য দু’আ করেন। আবূ মূসা (রাঃ) বলেন, নাবী (সাঃ) দু‘আ করেন, ইয়া আল্লাহ! আপনি ‘উবায়দ আবূ আমিরকে মাফ করুন। হে আল্লাহ! আপনি ‘আবদুল্লাহ ইবনু কায়সের গুনাহ মাফ করে দিন।
৫৮৯৭। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আবদুরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একদা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গনীমতের মাল বন্টন করে দিলেন তখন এক ব্যাক্তি মন্তব্য করলেনঃ এটা এমন বাটোয়ারা হল যার মধ্যে আল্লাহর সন্তুষ্টির খেয়াল রাখা হয়নি। আমি তা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জানালে তিনি রাগান্বিত হলেন। এমনকি আমি তার চেহারার মধ্যে রাগের আলামত দেখতে পেলাম। তিনি বললেনঃ মূসা (আলাইহিস সালাম) এর প্রতি আল্লাহ রহম করুন তাকে এর চাইতে অধিকতর কষ্ট দেয়া হয়েছে কিন্তু তিনি ধৈর্যধারণ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৯৮ | 5898 | ۵۸۹۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৩৩. দু’আর মধ্যে ছন্দ যুক্ত শব্দ ব্যবহার করা মাকরূহ
৫৮৯৮। ইয়াহইয়া ইবনু মুহাম্মদ ইবনু সাকান (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, তুমি প্রতি জুমুআয় লোকদের হাদীস শোনাবে। যদি এতে তুমি ক্লান্ত না হও তবে সপ্তাহে দুবার। আরও অধিক করতে চাও তবে তিনবার। আরও অধিক ওয়ায করে এ কুরআনের প্রতি মানূষের মনে বিরক্তির সৃষ্টি করো না। লোকেরা তাদের কথাবার্তায় মশগুল থাকা অবস্থায় তুমি তাদের কাছে এসে তাদের উপদেশ দেবে আমি যেন এমন অবস্থায় তোমাকে না পাই। কারন এতে তাদের কথায় বিঘ্ন সৃষ্টি হবে এবং তারা বিরক্তি বোধ করবে। বরং তুমি এ সময় নীরব থাকবে। যদি তারা আগ্রহকরে তোমাকে উপদেশ দিতে বলে তাহলে তুমি তাদের উপদেশ দেবে। আর তুমি দু’আর মধ্যে ছন্দবাক্য কবিতা পরিহার করবে। কারন আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার সাহাবীগণকে তা পরিহার করতেই দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৮৯৯ | 5899 | ۵۸۹۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৩৪. কবূল হবার দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে দু’আ করবে। কারণ কবূল করতে আল্লাহকে বাধাদানকারী কেউ নেই
৫৮৯৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ দু আ করলে দু’আর সময় ইয়াকীনের সাথে দু’আ করবে এবং একথা বলবেনা ইয়া আল্লাহ! আপনার ইচ্ছা হলে আমাকে কিছু দান করুন। কারণ আল্লাহকে বাধ্য করার মত কেউ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯০০ | 5900 | ۵۹۰۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৩৪. কবূল হবার দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে দু’আ করবে। কারণ কবূল করতে আল্লাহকে বাধাদানকারী কেউ নেই
৫৯০০। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কখনো একথা বলবেনা যে, ইয়া আল্লাহ! আপনার ইচ্ছা হলে আমাকে মাফ করে দিন। ইয়া আল্লাহ আপনার ইচ্ছে হলে আমাকে দয়া করুন। বরং দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে দু’আ করবে। কারণ আল্লাহকে বাধ্য করার মত কেউ নেই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯০১ | 5901 | ۵۹۰۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৩৫. (কবুলের জন্য) তাড়াহুড়া না করলে (দেরীতে হলেও) বান্দার দু’আ কবূল হয়ে থাকে
৫৯০১। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন তোমাদের প্রত্যেকের দূআ কবুল হয়ে থাকে। যদি সে তাড়াহুড়া না করে। আর বলে যে, আমি দুআ করলাম কিন্তু আমার দু’আ তো কবুল হলো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯০২ | 5902 | ۵۹۰۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৩৭. কিবলামুখী না হয়ে দু’আ করা
باب رَفْعِ الأَيْدِي فِي الدُّعَاءِ

وَقَالَ أَبُو مُوسَى الأَشْعَرِيُّ دَعَا النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ رَفَعَ يَدَيْهِ، وَرَأَيْتُ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ
وَقَالَ ابْنُ عُمَرَ رَفَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَدَيْهِ: اللَّهُمَّ إِنِّي أَبْرَأُ إِلَيْكَ مِمَّا صَنَعَ خَالِدٌ

قَالَ أَبُو عَبْدِ اللَّهِ وَقَالَ الأُوَيْسِيُّ حَدَّثَنِي مُحَمَّدُ بْنُ جَعْفَرٍ، عَنْ يَحْيَى بْنِ سَعِيدٍ، وَشَرِيكٍ، سَمِعَا أَنَسًا، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم رَفَعَ يَدَيْهِ حَتَّى رَأَيْتُ بَيَاضَ إِبْطَيْهِ

২৬৩৬. পরিচ্ছেদঃ দু’আর সময় দু’ খানা হাত উঠানো। আবূ মূসা (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’খানা হাত এতটুকু তুলে দু‘আ করতেন যে, আমি তাঁর বগলের ফর্সা রং দেখতে পেয়েছি। ইবনু উমর (রাঃ) বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’খানা হাত তুলে দু‘আ করেছেনঃ ইয়া আল্লাহ!খালিদ যা করেছে আমি তা থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করছি। অন্য এক সূত্রে আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উভয় হাত এতটুকু তুলে দু‘আ করেছেন যে, আমি তাঁর বগলের শুভ্রতা দেখতে পেয়েছি।

৫৯০২। মুহাম্মদ ইবনু মাহবুব (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জুমুআর দিনে খুতবা দিচ্ছিলেন। এক ব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি আমাদের উপর বৃষ্টির জন্য দু’আ করুন। (তিনি দুআ করলেন) তখনই আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে গেল এবং এমন বৃষ্টি হল যে, মানুষ আপন ঘরে পৌছতে পারলো না এবং পরবর্তী জুমুআ পর্যন্ত একাধারে বৃষ্টি হতে থাকলো। পরবর্তী জুমুআর দিনে সেই ব্যাক্তি অথবা অন্য একব্যাক্তি দাঁড়িয়ে বললোঃ আপনি আল্লাহর কাছে দু’আ করুন; তিনি যেন আমাদের উপর মেঘ সরিয়ে নেন। আমরা তো ড়ুবে গেলাম। তখন তিনি দু’আ করলেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাদের আশে-পাশে বর্ষণ করুন। আমাদের উপর (আর) বর্ষণ করবেন না। তখন মেঘ বিক্ষিপ্ত হয়ে আশে-পাশে ছড়িয়ে পড়লো। মদিনাবাসীর উপর আর বৃষ্টি হলো না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯০৩ | 5903 | ۵۹۰۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৩৮. কিবলামুখী হয়ে দু’আ করা
৫৯০৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু যায়দ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইসতিসকার (বৃষ্টির) সালাত (নামায/নামাজ) এর উদ্দেশ্যে এ ঈদগাহে গমন করলেন এবং বৃষ্টির জন্য দু’আ করলেন। তারপর কিবলামুখী হয়ে নিজের চাদরখানা উল্টিয়ে গায়ে দিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯০৪ | 5904 | ۵۹۰٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৩৯. আপন খাদিমের দীর্ঘজীবী হওয়া এবং অধিক মালদার হবার জন্য নাবী (সাঃ) এর দু’আ
৫৯০৪। আবদুল্লাহ ইবনু আবূল আসওয়াদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমার মা বললেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! আনাস আপনারই খাদেম। আপনি তার জন্য দু’আ করুন। তিনি দূআ করলেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি তার সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি বাড়িয়ে দিন। আর তাকে আপনি যা কিছু দান করেছেন তাতে বরকত দান করুন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯০৫ | 5905 | ۵۹۰۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৪০. বিপদের সময় দু’আ করা
৫৯০৫। মুসলিম ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিপদের সময় এ দু’আ পড়তেনঃ আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই। যিনি মহান ও ধৈর্ঘশীল। আল্লাহ ভিন্ন আর কোন ইলাহ নেই। তিনই আসমান যমীনের রব ও মহান আরশের প্রভু।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯০৬ | 5906 | ۵۹۰٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৪০. বিপদের সময় দু’আ করা
৫৯০৬। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। সংকটের সময় নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দু আ পড়তেনঃ আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি অতি উচ্চ মর্যাদাসপন্ন ও অশেষ ধৈর্যশীল আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই। আরশে আযীমের প্রভূ। আল্লাহ ছাড়া আর কোন মাবুদ নেই। আসমান যমীনের প্রতিপালক ও সম্মানিত আরশের মালিক।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯০৭ | 5907 | ۵۹۰۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৪১. কঠিন বিপদের কষ্ট থেকে পানাহ চাওয়া
৫৯০৭। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বালামুসীবতের কঠোরতা, দুর্ভাগ্যে নিঃপতিত হওয়া, নিয়তির অশুভ পরিণাম এবং দুশমনের খুশী হওয়া থেকে পানাহ চাইলেন। সুফিয়ান (রহঃ) এর হাদীসে তিনটির কথা বর্ণিত হয়েছে। একটি আমি বৃদ্ধি করেছি। জানিনা তা এগুলোর কোনটি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯০৮ | 5908 | ۵۹۰۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৪২. নাবী (সাঃ) এর দু’আ আল্লাহুম্মা রাফীকাল ‘আলা
৫৯০৮। সাঈদ ইবনু উফায়র (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুস্থাবস্থায় বলতেনঃ জান্নাতের স্থান না দেখিয়ে কোন নাবীর জান কবয করা হয় না, যতক্ষণ না তাকে তার ঠিকানা দেখানো হয় এবং তাকে ইখতিয়ার দেওয়া হয় (দুনিয়াতে থাকবেন না আখিরাতকে গ্রহন করবেন)। এরপর যখন তার মৃত্যুকাল উপস্থিত হলো, তখন তার মাথাটা আমার উরুর উপর ছিল। কিছুক্ষন অজ্ঞান থাকার পর তার জ্ঞান ফিরে এলো। তখন তিনি ছাদের দিকে তাকিয়ে বললেনঃ “আল্লাহুম্মা রাফীকাল আলা” ইয়া আল্লাহ! আমি রফীকে আলা (শ্রেষ্ট বন্ধু) কে গ্রহন করলাম। আমি বললামঃ এখন থেকে তিনি আর আমাদের পছন্দ করবেন না। আর এটাও বুঝতে পারলাম যে, তিনি সুস্থ অবস্থায় আমাদের কাছে যা বলতেন এটি তাই। আর তা সঠিক। আয়িশা (রাঃ) বলেন, এটি ছিল তার সর্বশেষ বাক্য যা তিনি বললেনঃ ইয়া-আল্লাহ! আমি শ্রেষ্ঠ বন্ধুকে গ্রহণ করলাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯০৯ | 5909 | ۵۹۰۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৩. মুত্যু এবং জীবনের জন্য দু’আ করা
৫৯০৯। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … কায়স (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি খব্বাব (রাঃ) এর কাছে এলাম। তিনি লোহা গরম করে শয়ীরে সাতবার দাগ দিয়েছিলেন। তিনি বললেনঃ যদি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মৃত্যুর জন্য দু’আ করতে নিষেধ না করতেন, তাহলে আমি এর জন্য দু’আ করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯১০ | 5910 | ۵۹۱۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৩. মুত্যু এবং জীবনের জন্য দু’আ করা
৫৯১০। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … কায়স (রহঃ) বলেন, আমি খাব্বাব (রাঃ) এর নিকট গেলাম তিনি তার পেটে সাতবার দাগ দিয়েছিলেন। তখন আমি তাকে বলতে শুনলাম যদি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মৃত্যুর জন্য দুআ করতে নিষেধ না করতেন, তবে আমি এর জন্য দু’আ করতাম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯১১ | 5911 | ۵۹۱۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৩. মুত্যু এবং জীবনের জন্য দু’আ করা
৫৯১১। ইবনু সালাম (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের কেউ কোন বিপদের কারণে মৃত্যু কামনা করবে না। আর যদি কেউ এমন অবস্থাতে পতিত হয় যে, তাকে মৃত্যু কামনা করতেই হয় তবে সে (মৃত্যু কামনা না করে) দু’আ করবেঃ ইয়া আল্লাহ! যতদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকা আমার জন্য মঙ্গলজনক হয় ততদিন আমাকে জীবিত রাখো, আর যখন আমার জন্য মৃত্যু মঙ্গলজনক হয় তখন আমার মৃত্যু দাও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯১২ | 5912 | ۵۹۱۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৪. শিশুদের জন্য বরকতের দু’আ করা এবং তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া। আবু মুসা (রাঃ) বলেন, আমার এক ছেলে হলে নবী (সাঃ) তার জন্য বরকতের দু’আ করলেন
৫৯১২। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … সায়িব ইবনু ইয়াযীদ (রাঃ) বর্ণনা করেন। আমার খালা আমাকে নিয়ে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট গেলেন এবং বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার এ ভাগ্নেটি অসুস্থ। তিনি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন এবং আমার জন্য বরকতের দু’আ করলেন। এরপর তিনি উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলে, আমি তার উযূ (ওজু/অজু/অযু)র পানি থেকে কিছুটা পান করলাম। তারপর আমি তার পিঠের দিকে গিয়ে দাঁড়ালাম। তখন আমি তার উভয় কাঁধের মাঝে মোহরে নবুওয়াত দেখতে পেলাম। সেটা ছিল খাটের চাঁদোয়ার ঝালরের মত।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯১৩ | 5913 | ۵۹۱۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৪. শিশুদের জন্য বরকতের দু’আ করা এবং তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া। আবু মুসা (রাঃ) বলেন, আমার এক ছেলে হলে নবী (সাঃ) তার জন্য বরকতের দু’আ করলেন
৫৯১৩। আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আবূ আকীল বর্ণনা করেন। তার দাদা আবদুল্লাহ ইবনু হিশাম (রাঃ) তাকে নিয়ে তিনি বাজারের দিকে বের হতেন। সেখান থেকে খাদ্রদ্রব্য কিনে নিতেন। তখন পথে ইবনু যুবায়র (রাঃ) ও ইবনু উমর (রাঃ) এর দেখা হলে, তারা তাকে বলতেন যে, এর মধ্যে আপনি আমাদেরও শরীক করে নিন। কারণ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আপনার জন্য বরকতের দুআ করেছেন। তখন তিনি তাঁদের শরীক করে নিতেন। তিনি বাহনের পিঠে লাভের শস্যাদি পুরোপুরি পেতেন, আর তা ঘরে পাঠিয়ে দিতেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯১৪ | 5914 | ۵۹۱٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৪. শিশুদের জন্য বরকতের দু’আ করা এবং তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া। আবু মুসা (রাঃ) বলেন, আমার এক ছেলে হলে নবী (সাঃ) তার জন্য বরকতের দু’আ করলেন
৫৯১৪। আব্দুল আযীয ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … ইবনু শিহাব (রহঃ) বর্ণনা করেন। মাহমুদ ইবনু রাবী বর্ণনা করেছেন যে, তিনই ছিলেন সে ব্যাক্তি, শিশুকালে তাদেরই কুপ থেকে পানি মুখে নিয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যার চেহারার উপর ছিটে দিয়েছিলেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯১৫ | 5915 | ۵۹۱۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৪. শিশুদের জন্য বরকতের দু’আ করা এবং তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া। আবু মুসা (রাঃ) বলেন, আমার এক ছেলে হলে নবী (সাঃ) তার জন্য বরকতের দু’আ করলেন
৫৯১৫। আবদান (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমতে শিশুদের নিয়ে আসা হতো। তিনি তাদের জন্য দুআ করতেন। একবার একটি শিশুকে আনা হালা। শিশুটি তার কাপড়ের উপর পেশাব করে দিল। তিনি কিছু পানি আনালেন এবং তা তিনি কাপড়ের উপর ছিটিয়ে দিলেন আর তিনি কাপড় ধুলেন না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯১৬ | 5916 | ۵۹۱٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৪. শিশুদের জন্য বরকতের দু’আ করা এবং তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়া। আবু মুসা (রাঃ) বলেন, আমার এক ছেলে হলে নবী (সাঃ) তার জন্য বরকতের দু’আ করলেন
৫৯১৬। আবূল ইয়ামান (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু সা’আলাবা ইবনু সুয়ায়র (রাঃ), যার মাথায় (শৈশবে) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাত বুলিয়েছিলেন, তিনি বর্ননা করেন যে, তিনি সা’দ ইবনু আবূ ওক্কাসকে বিতরের সালাত (নামায/নামাজ) এক রাকা’আত আদায় করতে দেখেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯১৭ | 5917 | ۵۹۱۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৫. নাবী (সাঃ) এর উপর দুরুদ পড়া
৫৯১৭। আদম (রহঃ) … আবদুর রাহমান ইবনু আবূ লায়লা (রহঃ) বর্ণনা করেন, একবার আমার সঙ্গে কাব ইবনু উজরাহ (রাঃ) এর সাক্ষাত হলো। তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাকে একটি হাদিয়া দেবো না। তা হল এইঃ একদিন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট বেরিয়ে আসলেন, তখন আমরা বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আপনাকে কেমন করে সালাম দেব, আমরা আপনার উপর দরুদ কিভাবে পড়বো? তিনি বললেনঃ তোমরা বলবে, ইয়া আল্লাহ আপনি মুহাম্মাদের উপর ও তার পরিবারবর্গের উপর খাস রহমত বর্ষণ করুন, যেমন আপনি ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর পরিবারের উপর খাস রহমাত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত, উচ্চ মর্যাদাশীল। ইয়া আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদের উপর ও তার পরিবারবর্গের উপর বরকত নাযিল করুন, যেমন আপনি ইববাহীম (আলাইহিস সালাম) এর পরিবারবর্গের উপর বরকত নাযীল করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি প্রশংসিত উচ্চ মর্যাদাশীল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯১৮ | 5918 | ۵۹۱۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৫. নাবী (সাঃ) এর উপর দুরুদ পড়া
৫৯১৮। ইবরাহীম ইবনু হামযা (রহঃ) … আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন। একবার আমরা বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! এই যে ‘আসসালামু আলাইকা’ তা তো আমরা জেনে নিয়েছি। তবে আপনার উপর দরুদ কিভাবে পড়বো? তিনি বললেনঃ তোমরা পড়বে ইয়া আল্লাহ! আপনি আপনার বান্দা ও আপনার রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর খাছ রহমত বর্ষণ করুন। যেমন করে আপনি ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর উপর রহমত নাযিল করেছেন। আর আপনি মুহাম্মদ ও তার পরিবারবর্গের উপর বরকত বর্ষণ করুন, যে রকম আপনি ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর উপর এবং ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর পরিবারবর্গের উপর বরকত নাযিল করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯১৯ | 5919 | ۵۹۱۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৬. নাবী (সাঃ) ছাড়া অন্য কারো উপর দরূদ পড়া যায় কিনা? আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ আপনি তাদের জন্য দু’আ করুন। নিশ্চয়ই আপনার দু’আ তাদের জন্য চিত্তস্বস্তিকর (৯ঃ ১০৩)
৫৯১৯। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ আওফা (রাঃ) বর্ণনা করেন, যখন কেউ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট তার সাদাকা নিয়ে আসতেন, তখন তিনি দুআ করতেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি তার উপর রহমত বর্ষণ করুন। এভাবে আমার পিতা একদিন সাদাকা নিয়ে তার কাছে এলে তিনি দু আ করলেন ইয়া আল্লাহ! আপনি আবূ আওফার পরিবারবর্গের উপর রহমত করুন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯২০ | 5920 | ۵۹۲۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৬. নাবী (সাঃ) ছাড়া অন্য কারো উপর দরূদ পড়া যায় কিনা? আল্লাহ তা’আলার বাণীঃ আপনি তাদের জন্য দু’আ করুন। নিশ্চয়ই আপনার দু’আ তাদের জন্য চিত্তস্বস্তিকর (৯ঃ ১০৩)
৫৯২০। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবূ হুমায়দ সাঈদী (রহঃ) বর্ণনা করেন। একবার লোকেরা বললোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা আপনার উপর কিভাবে দরুদ পড়বো? তিনি বললেনঃ তোমরা পড়বে, ইয়া আল্লাহ! আপনি মুহাম্মদের ও তার সহধর্মিণীগণ এবং তার সন্তান-সন্ততিগণের উপর রহমত নাযিল করুন। যেমন করে আপনি ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর উপর রহমত নাযিল করেছেন। আর আপনি মুহাম্মদ, তার সহধর্মিণীগণ এবং তার আওলাদের উপর বরকত নাযিল করুন, যেমনভাবে আপনি ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) এর পরিবারবর্গের উপর বরকত নাযিল করেছেন। আপনি অতি প্রশংসিত এবং উচ্চ মর্যাদাশীল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯২১ | 5921 | ۵۹۲۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৭. নাবী (সাঃ) এর বাণীঃ ইয়া আল্লাহ! আমি যাকে কষ্ট দিয়েছি, সে কষ্ট তার পরিশুদ্ধির উপায় এবং তার জন্য রহমাত করে দিন
৫৯২১। আহমাদ ইবনু সালিহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এ দু’আ করতে শুনেছেনঃ ইয়া আল্লাহ! যদি আমি কোন মুমিন ব্যাক্তিকে মন্দ বলে থাকি, তবে আপনি সেটাকে কিয়ামতের দিন তার জন্য আপনার নৈকট্য লাভের উপায় বানিয়ে দিন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯২২ | 5922 | ۵۹۲۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৮. ফিতনা থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাওয়া
৫৯২২। হাফস ইবনু উমর (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার লোকজন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নানা প্রশ্ন করতে লাগল, এমনকি প্রশ্ন করতে করতে তাকে বিরক্ত করে ফেললো। এতে তিনি রাগ করলেন এবং মিম্বরে আরোহন করে বললেনঃ আজ তোমরা যত প্রশ্ন করবে আমি তোমাদের সব প্রশ্নেরই বর্ণনা সহকারে জবাব দিব। এ সময় আমি ডানে ও বামে তাকাতে লাগলাম এবং দেখলাম যে, প্রতিটি লোকই নিজের কাপড় দিয়ে মাথা পেচিয়ে কাঁদছে। এমন সময় একজন লোক, যাকে লোকের সাথে বিবাদের সময় তার বাপের নাম নিয়ে ডাকা হতো না, সে প্রশ্ন করলোঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার পিতা কে? তিনি বললেনঃ হুযায়ফা। তখন উমর (রাঃ) বলতে লাগলেন আমরা আল্লাহকে রব হিসেবে, ইসলামকে দ্বীন হিসেবে এবং মুহাম্মাদ কে রাসুল হিসেবে গ্রহণ করেই সন্তুষ্ট। আমরা ফিতনা থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাচ্ছি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আমি ভাল মন্দের যে দৃশ্য আজ দেখলাম, তা আর কখনো দেখিনি। জান্নাত ও জাহান্নামের দৃশ্য আমাকে এমন স্পষ্টভাবে দেখানো হয়েছে যে, যেন এ দুটি এ দেয়ালের পেছনেই অবস্থিত। রাবী কাতাদাহ (রহঃ) হাদীস উল্লেখ করার সময় এ আয়াতটি পড়তেন। (অর্থ) হে মুমিনগণ! তোমরা সে সব বিষয়ে প্রশ্ন করো না যা প্রকাশিত হলে তোমরা দুঃখিত হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯২৩ | 5923 | ۵۹۲۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৪৯. মানুষের আধিপত্য থেকে পানাহ (আল্লাহর আশ্রয়) চাওয়া
৫৯২৩। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ তালহা (রাঃ) কে বললেনঃ তুমি তোমাদের ছেলেদের মধ্য থেকে আমার খিদমত করার জন্য একটি ছেলে নিয়ে এস। আবূ তালহা (রাঃ) গিয়ে আমাকে তার সাওয়ারীর পিছনে বসিয়ে নিয়ে এলেন। তখন থেকে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর খিদমত করে আসছি। যখনই কোন বিপদ দেখা দিত, তখন আমি তাঁকে বেশী করে এ দুআ পড়তে শুনতামঃ ইয়া আল্লাহ! আমি দুশ্চিতা, পেরেশানী, অপারগতা, অলসতা, কৃপণতা, ভীরুতা, ঋন এর বোঝা এবং মানুষের আধিপত্য থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি।

আমি সর্বদা তার খিদমত করে আসছি , এমন কি যখন আমরা খায়বার অভিযান থেকে ফিরে আসছিলাম, তখন তিনি সাফিয়্যা বিনত হুয়াইকে সঙ্গে নিয়ে আসলেন, তিনি তাকে গনীমতের মাল থেকে নিজের জন্য বেছে নিয়েছিলেন। তখন আমি তাকে দেখছিলাম যে, তিনি তাকে একখানা চাঁদর অথবা একখানা কম্বল দিয়ে ঢেকে নিজের পেছনে বসিয়েছিলেন।

যখন আমরা সবাই সাহবা নামক স্থানে পৌছলাম, তখন আমরা (সেখানে থেমে) ‘হাইস’ নামক খাবার তৈরী করে এবং চামড়ার দস্তরখানে রাখলাম। তিনি আমাকে পাঠালেন, আমি গিয়ে কয়েকজন লোককে দাওয়াত করলাম। তারা এসে খেয়ে গেলেন। এটি ছিল সাফিয়্যার সঙ্গে তার বাসর যাপন।

তারপর তিনি রওয়ানা হলে ওহোদ পর্বত তাঁর সামনে দেখা গেল তখন তিনি বললেনঃ এ এমন একটি পাহাড় যা আমাদের ভালবাসে এবং আমরাও তাকে ভালবাসী। তারপর যখন মদিনার কাছে পৌছলেন, তখন তিনি বললেন ইয়া আল্লাহ! আমি মদিনার দুটি পাহাড়ের মধ্যবর্তী স্থানকে হারাম (সম্মানিত) করছি, যে রকম ইবরাহীম (আলাইহিস সালাম) মক্কাকে হারাম (সম্মানিত) করেছিলেন। ইয়া আল্লাহ! আপনি তাদের মুদ্দ ও সা’ এর মধ্যে বরকত দিন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯২৪ | 5924 | ۵۹۲٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৫০. কবরের আযাব হতে আল্লাহর আশ্রয় চাওয়া
৫৯২৪। হুমায়দী (রহঃ) … মূসা ইবনু উকবা (রহঃ) বর্ণনা করেছেন। উম্মে খালিদ বিনত খালিদ (রাঃ) বলেন, আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে কবরের আযাব থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাইতে শুনেছি। রাবী বলেন যে, এ হাদীস আমি উম্মে খালিদ ব্যতীত নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে আর কাউকে বলতে শুনি নি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯২৫ | 5925 | ۵۹۲۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৫০. কবরের আযাব হতে আল্লাহর আশ্রয় চাওয়া
৫৯২৫। আদম (রহঃ) … মুসআব (রহঃ) বর্ণনা করেন, সা’দ (রাঃ) পাঁচটি জিনিস থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাইতে নির্দেশ দিতেন এবং তিনি এগুলো নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে উল্লেখ করতেন। তিনি এগুলো থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাইতে এ দুআ পড়তে নির্দেশ দিতেনঃ ইয়া আল্লাহ! আমি কৃপণতা থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি। আমি কাপুরষতা থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি, আমি অবহেলিত বার্ধক্যে উপনীত হওয়া থেকে আপনার আশ্রয় চাচ্ছি, আর আমি দুনিয়ার ফিতনা অর্থাৎ দাজ্জালের ফিতনা থেকেও আপনার আশ্রয় চাচ্ছি এবং আমি কবরের আযাব থেকেও আপনার আশ্রয় চাচ্ছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯২৬ | 5926 | ۵۹۲٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৫০. কবরের আযাব হতে আল্লাহর আশ্রয় চাওয়া
৫৯২৬। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন একবার আমার নিকট মদিনার দু’জন ইয়াহুদী বৃদ্ধা মহিলা এলেন। তারা আমাকে বললেন যে, কবরবাসীদের তাদের কবরে আযাব দেওয়া হয়ে থাকে। তখন আমি তাদের একথা মিথ্যা বলে অভিহিত করলাম। আমার বিবেক তাদের কথাটিকে সত্য বলে মানতে চাইল না। তারা দু’জন বেরিয়ে গেলেন। আর নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন। আমি তাকে বললামঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার নিকট দু’জন বৃদ্ধা এসেছিলেন। তারপর আমি তাকে তাদের কথা বর্ণনা করলাম। তখন তিনি বললেনঃ তারা দু’জন সত্যই বলেছে। নিশ্চয়ই কবরবাসীদের এমন আযাব দেওয়া হয়ে থাকে যা সকল চতুষ্পদ জীবজন্তু শুনে থাকে। এরপর থেকে আমি তাকে সর্বদা প্রত্যেক সালাতে কবরের আযাব থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাইতে দেখেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯২৭ | 5927 | ۵۹۲۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৫১. জীবন মৃত্যুর ফিতনা হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাওয়া
৫৯২৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রায়ই বলতেন ইয়া আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার আশ্রয় চাচ্ছি অক্ষমতা, অলসতা, কাপুরুষতা এবং বার্ধক্য থেকে। আরও আশ্রয় চাচ্ছি, কবরের আযাব থেকে। আরও আশ্রয় চাচ্ছি জীবন ও মুত্যুর ফিতনা থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯২৮ | 5928 | ۵۹۲۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৫২. গুনাহ ও ঋণ হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চাওয়া
৫৯২৮। মুআল্লা ইবনু আসাদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ ইয়া আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার আশ্রয় চাই অলসতা, অতিরিক্ত বার্ধক্য, গুনাহ আর ঝণ থেকে, আর কবরের ফিতনা এবং কবরের আযাব থেকে। আর জাহান্নামের ফিতনা এবং এর আযাব থেকে, আর ধনবান হওয়ার পরীক্ষার মন্দ পরিনাম থেকে। আমি আরও আশ্রয় চাই দারিদ্রের অভিশাপ থেকে। আমি আরও আশ্রয় চাই মসীহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে। ইয়া আল্লাহ! আমার গুনাহ এর দাগগুলো থেকে আমার অন্তরকে বরফ ও শীতল পানি দ্বারা ধুয়ে পরিস্কার করে দিন এবং আমার অন্তরকে সমস্ত গুনাহ এর ময়লা থেকে এমনভাবে পরিস্কার করে দিন, যেভাবে আপনি সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে সাফ করার ব্যবস্থা করে থাকেন। আর আমার ও আমার গুনাহগুলোর মধ্যে এতটা দূরত্ব করে দিন, যত দূরত্ব আপনি দুনিয়ার পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯২৯ | 5929 | ۵۹۲۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৫৩. কাপুরুষতা ও অলসতা হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা
৫৯২৯। খালিদ ইবনু মাখলাদ (রহঃ) … আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ ইয়া আল্লাহ নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই-দুশ্চিতা, পেরেশানী, অক্ষমতা, অলসতা, কাপুরুষতা, কৃপণতা, ঋণের বোঝা ও লোকজনের আধিপত্য থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৩০ | 5930 | ۵۹۳۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৫৪. কৃপনতা হতে আল্লাহর আশ্রয় চাওয়া
৫৯৩০। মুহাম্মাদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি পাঁচটি কাজ থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাওয়ার নির্দেশ দিতেন এবং তিনি তা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকেই বর্ণনা করতেন। তিনি দু’আ-করতেনঃ ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই কৃপণতা থেকে, আমি আশ্রয় চাই কাপুরুষতা থেকে, আমি আশ্রয় চাই অবহেলিত বার্ধক্যে উপনীত হওয়া থেকে, আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাই দুনিয়ার বড় ফিতনা (দাজ্জালের ফিতনা) থেকে এবং আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই কবরের আযাব থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৩১ | 5931 | ۵۹۳۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৫৫. দুঃসহ দীর্ঘায়ু আল্লাহর আশ্রয় চাওয়া
৫৯৩১। আবূ মা’মার (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেনঃ ইয়া আল্লাহ! আমি অলসতা থেকে আপনার আশ্রয় চাই এবং আমি আপনার কাছে কাপুরুষতা থেকে আশ্রয় চাই। আমি আপনার কাছে আরও আশ্রয় চাই দুঃসহ দীর্ঘায়ু থেকে এবং আমি কৃপণতা থেকে আপনার আশ্রয় চাই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৩২ | 5932 | ۵۹۳۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৫৬. মহামারি ও রোগ যন্ত্রনা দূর হওয়ার দু’আ করা
৫৯৩২। মুহাম্মদ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’আ করতেন ইয়া আল্লাহ! আপনি যেভাবে মক্কাকে আমাদের জন্য প্রিয় করে দিয়েছেন, মদিনাকেও সেভাবে অথবা এর চাইতে বেশী আমাদের কাছে প্রিয় করে দিন। আর মদিনার জ্বর “জুহফা” নামক স্থানের দিকে সরিয়ে দিন। ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাদের মাপের ও ওযনের পাত্রে বরকত দিন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৩৩ | 5933 | ۵۹۳۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৫৬. মহামারি ও রোগ যন্ত্রনা দূর হওয়ার দু’আ করা
৫৯৩৩। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, বিদায় হাজ্জের (হজ্জ) সময় আমি রোগে আক্রান্ত হয়ে মরণাপন্ন হয়ে পড়েছিলাম। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে সময় আমাকে দেখতে এলেন। তখন আমি বললাম আমি যে রোগ-ষন্ত্রনায় আক্রান্ত তাতো আপনি দেখছেন। আমি একজন ধনবান লোক। আমার একাটি মেয়ে ছাড়া আর কেউ ওয়ারিস নেই। তাই আমি কি আমার দু’তৃতীয়াংশ মাল সাদাকা করে দিতে পারি? তিনি বললেনঃ না। আমি বললাম তবে অর্ধেক মাল? তিনি বললেনঃ না। এক তৃতীয়াংশ অনেক। তোমার ওয়ারিসদের লোকের কাছে ভিক্ষার হাত প্রসারিত করার মত অভাবী রেখে যাওয়ার চাইতে তাদের ধনবান রেখে যাওয়া তোমার জন্য অনেক উত্তম। আর তুমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টিটি লাভের জন্য যা কিছুই ব্যয় করবে নিশ্চয়ই তার প্রতিদান দেওয়া হবে। এমন কি (সে উদ্দেশ্যে) তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে লুকমাটি তুলে দিয়ে থাকো তোমাকে এর প্রতিদান দেওয়া হবে।

আমি বললাম তা হলে আমার সঙ্গীগণের পরেও কি আমি বেঁচে থাকবো? তিনি বললেন নিশ্চয়ই তুমি তাদের পরে বেঁচে থাকলে তুমি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য যা কিছু নেক আমল করনা কেন, এর বিনিময়ে তোমার মর্যাদা ও সম্মান আরও বেড়ে যাবে। আশা করা যায় যে, তুমি আরও কিছু দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকবে। এমন কি তোমার দ্বারা অনেক কাওম উপকৃত হবে। আর অনেক কাওম ক্ষতিগ্রস্থ হবে। তারপর তিনি দুআ করলেন ইয়া আল্লাহ! আপনি আমার (মুহাজির) সাহাবীগণের হিজরতকে বহাল রাখুন। আর তাদের পেছনে ফিরে যেতে দিবেন না। সা’দ ইবনু খাওলাহ (রাঃ) এর দূর্ভাগ্য (কারণ তিনি ইচ্ছা না থাকা সত্তেও বিদায় হাজ্জের সময় মক্কায় মারা যান) সা’দ (রাঃ) বলেন মক্কাতে ওফাতের কারণে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জন্য শোক প্রকাশ করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৩৪ | 5934 | ۵۹۳٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৫৭. বার্ধক্যের অসহায়ত্ব এবং দুনিয়ার ফিতনা আর জাহান্নামের আগুন থেকে আশ্রয় চাওয়া
৫৯৩৪। ইসহাক ইবনু ইবরাহীম (রহঃ) … সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে সব বাক্য দিয়ে আল্লাহর আশ্রয় চাইতেন, সে সব বাক্যদ্বারা তোমরাও আশ্রয় চাও। তিনি বলতেন “ইয়া আল্লাহ! আমি কাপুরুষতা থেকে, আমি কৃপণতা থেকে আপনার আশ্রয় চাই। আমি বয়সের অসহায়ত্ব থেকে আপনার আশ্রয় চাই। আর আমি দুনিয়ার ফিতনা ও কবরের আযাব থেকে আপনার আশ্রয় চাই।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৩৫ | 5935 | ۵۹۳۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৫৭. বার্ধক্যের অসহায়ত্ব এবং দুনিয়ার ফিতনা আর জাহান্নামের আগুন থেকে আশ্রয় চাওয়া
৫৯৩৫। ইয়াহইয়া ইবনু মূসা (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’আ করতেনঃ হে আল্লাহ! আমি অলসতা, অতি বার্ধক্য, ঋণ আর পাপ থেকে আপনার আশ্রয় চাই। ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় চাই জাহান্নামের আযাব, জাহান্নামের ফিতনা, কবরের আযাব, প্রাচুর্যের ফিতনার কুফল, দারিদ্রের ফিতনার কুফল এবং মাসীহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে। ইয়া আল্লাহ! আপনি আমার সমুদয় গুনাহ বরফ ও শীতল পানি দিয়ে ধুয়ে দিন। আমার অন্তর যাবতীয় পাপ থেকে পরিচ্ছন্ন করুন, যেভাবে সাদা কাপড় ময়লা থেকে পরিচ্ছন্ন করা হয়। আমার ও আমার গুনাহ সমূহের মধ্যে এতটা ব্যবধান করে দিন যতটা ব্যবধান আপনি পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্তের মধ্যে করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৩৬ | 5936 | ۵۹۳٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৫৮. প্রাচুর্যের ফিতনা থেকে আশ্রয় চাওয়া
৫৯৩৬। মূসা ইবনু ইসমাঈল (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর আশ্রয় চেয়ে বলতেন ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার আশ্রয় চাই জাহান্নামের ফিতনা, জাহান্নামের আযাব থেকে। আমি আরও আশ্রয় চাই কবরের ফিতনা থেকে এবং আপনার আশ্রয় চাই কবরের আযাব থেকে। আমি আরও আশ্রয় চাই প্রাচুর্যের ফিতনা থেকে, আর আমি আশ্রয় চাই অভাবের ফিতনা থেকে। আমি আরও আশ্রয় চাই মাসীহ দাজ্জালের ফিতনা থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৩৭ | 5937 | ۵۹۳۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৫৯. দারিদ্রের সংকট হতে পানাহ চাওয়া
৫৯৩৭। মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দু’আ পাঠ করতেনঃ ইয়া আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার কাছে দোযখের সংকট, দোযখের আযাব, কবরের সংকট, কবরে আযাব, প্রাচুর্যের ফিতনা, ও অভাবের ফিতনা থেকে পানাহ চাই। আয় আল্লাহ! আমি আপনার নিকট মসীহ দাজ্জালের ফিতনার অনিষ্ট থেকে পানাহ চাই। আয় আল্লাহ! আমার অন্তরকে বরফ ও শীতল পানি দিয়ে ধুয়ে দিন। আর আমার অন্তর গুনাহ থেকে এমনভাবে সাফ করে দিন, যেভাবে আপনি সাদা কাপড়ের ময়লা পরিস্কার করে থাকেন এবং আমাকে আমার গুনাহ থেকে এতটা দূরে সরিয়ে রাখুন, পৃথিবীর পূর্ব প্রান্তকে পশ্চিম প্রান্ত থেকে যত দুরে রেখেছেন। আয় আল্লাহ! আমি আপনার নিকট পানাহ চাই অলসতা, গুনাহ এবং ঋণ থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৩৮ | 5938 | ۵۹۳۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৬০. বরকতসহ মালের প্রাচুর্যের জন্য দু’আ করা
৫৯৩৮। মুহাম্মদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … উম্মে সুলায়ম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ! আনাস আপনার খাদিম আপনি আল্লাহর নিকট তার জন্য দুআ করুন। তিনি দুআ করলেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি তার মাল ও সন্তান বাড়িয়ে দিন, আর আপনি তাকে যা কিছু দিয়েছেন তাতে বরকত দান করুন। হিশাম ইবনু যায়দ (রহঃ) বলেন, আমি আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) কে অনুরূপ বর্ণনা করতে শুনেছি।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৩৯ | 5939 | ۵۹۳۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৬০. বরকতসহ মালের প্রাচুর্যের জন্য দু’আ করা
৫৯৩৯। আবূ যায়েদ সাঈদ ইবনু রাবী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, উম্মে সুলায়ম বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আনাস আপনার খাদিম। তখন তিনি দু’আ করলেন ইয়া আল্লাহ! আপনি তার মাল ও সন্তান বাড়িয়ে দিন এবং আপনি তাকে যা দিয়েছেন তাতে বরকত দিন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৪০ | 5940 | ۵۹٤۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৬১. ইস্তিখারার সময়ের দু’আ
৫৯৪০। মুতাররিফ ইবনু আবদুল্লাহ আবূ মুসআব (রহঃ) … জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন; নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের যাবতীয় কাজের জন্য ইস্তিখারা শিক্ষা দিতেন, যেমনভাবে তিনি কুরআনের সূরা শিক্ষা দিতেন। (আর বলতেন) যখন তোমাদের কারো কোন বিশেষ কাজ করার ইচ্ছা হয়, তখন সে যেন দু’রাকআত সালাত (নামায/নামাজ) পড়ে এরূপ দু’আ করে।

(অর্থঃ) ইয়া আল্লাহ! আমি আপনার জ্ঞানের দ্বারা আমার উদ্দিষ্ট কাজের মঙ্গলামঙ্গল জানতে চাই এবং আপনার ক্ষমতা বলে আমি কাজে সক্ষম হতে চাই। আর আমি আপনার মহান অনুগ্রহ প্রার্থনা করি। কারণ, আপনি ক্ষমতাবান আর আমার কোন ক্ষমতা নেই এবং আপনি জানেন আর আমি জানিনা। আপনই গায়িব সম্পর্কে জ্ঞান রাখেন। ইয়া আল্লাহ! যদি আপনার জ্ঞানে এ কাজটিকে আমার দ্বীনের ব্যাপারে, আমার জীবন ধারণে ও শেষ পরিণতিতে; রাবী বলেন, কিংবা তিনি বলেছেনঃ আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিক দিয়ে মঙ্গলজনক বলে জানেন তাহলে তা আমার জন্য নির্ধারিত করে দিন। আর যদি আমার এ কাজটি আমার দ্বীনের ব্যাপারে, জীবন ধারণে ও শেষ পরিণতিতে রাবী বলেন কিংবা তিনি বলেছেন দুনিয়ায় আমার বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিক দিয়ে, আপনি আমার জন্য অমঙ্গলজনক মনে করেন, তবে আপনি তা আমার থেকে ফিরিয়ে নিন। আমাকেও তা থেকে ফিরিয়ে রাখুন। আর যেখানেই হোক, আমার জন্য মঙ্গলজনক কাজ নির্ধারিত করে দিন। তারপর আমাকে আমার নির্ধারিত কাজের প্রতি তৃপ্ত রাখুন। রাবী বলেন, সে যেন এসময় তার প্রয়োজনের বিষয়ই উল্লেখ করে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৪১ | 5941 | ۵۹٤۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৬২. ‘উযু করার সময় দু’আ করা
৫৯৪১। মুহাম্মদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার পানি আনিয়ে উযূ (ওজু/অজু/অযু) করলেন। তারপর উভয় হাত তুলে দু’আ করলেন ইয়া আল্লাহ! আপনি উবায়দ আবূ আমরকে ক্ষমা করে দিন। আমি তখন তার বগলের শুভ্রতা দেখতে পেলাম। আরও দু’আ করলেন ইয়া আল্লাহ! আপনি তাকে কিয়ামতের দিন অনেক লোকের উপর মর্যাদাবান করুন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৪২ | 5942 | ۵۹٤۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৬৩. উঁচু জায়গায় চড়ার সময়ের দু’আ
৫৯৪২। সুলায়মান ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার এক সফরে আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। যখন আমরা উঁচু জায়গায় উঠতাম তখন উচ্চস্বরে আল্লাহ আল্লাহ বলতাম। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ হে লোকেরা! তোমরা নিজেদের জানের উপর দয়া করো। কারণ তোমরা কোন বধির অথবা অনুপস্থিতকে আহবান করছ না বরং তোমরা আহবান করছ সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা সত্তাকে। কিছুক্ষণ পর তিনি আমার কাছে এলেন, তখন আমি মনে মনে পড়ছিলামঃ “লা হাওলা ওলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” তখন তিনি বলেন, হে আবদুল্লাহ ইবনু কায়স! তুমি পড়বে লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহ। কারণ এ দু’আ হল বেহেশ্তের রত্ন ভাণ্ডার সমূহের অন্যতম। অথবা তিনি বললেন আমি কি তোমাকে এমন একটি বস্তুর সন্ধান দেব না যে বাক্যটি জান্নাতের রত্ন ভান্ডার? সেটি থেকে একটি রত্নভাণ্ডার হল লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৪৩ | 5943 | ۵۹٤۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৬৫. সফরের ইচ্ছা করলে কিংবা সফর থেকে প্রত্যাবর্তন করার পর দু’আ
بَابُ الدُّعَاءِ إِذَا هَبَطَ وَادِيًا

فِيهِ حَدِيثُ جَابِرٍ

২৬৬৪. পরিচ্ছেদঃ উপত্যকায় অবতরণ করার সময় দু’আ। এ প্রসঙ্গে জাবির (রাঃ) এর হাদীসে বর্ণিত হয়েছে।

৫৯৪৩। ইসমাঈল (রহঃ) … আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন মক্কায় হাজ্জ (হজ্জ) কিংবা উমরা থেকে ফিরতেন, তখন প্রতিটি উঁচু জায়গার উপর তিনবার “আল্লাহু আকবার” বলতেন। তারপর বলতেনঃ আল্লাহ ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই। তিনি এক, তার কোন শরীক নেই। রাজত্ব, হামদও তারই জন্য, তিনি সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান। আমরা প্রত্যবর্তনকারী, তাওবাকারী, ইবাদতকারী, আপন প্রতিপালকের প্রশংসাকারী, আল্লাহ তা’আলা নিজ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছেন। তিনি তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেছেন, আর দুশমনের দলকে তিনি একাই প্রতিহত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৪৪ | 5944 | ۵۹٤٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৬৬. বরের জন্য দু’আ করা
৫৯৪৪। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) বর্ণনা করেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবদুর রহমান ইবনু আওফের গায়ে হলুদ রং দেখে জিজ্ঞাসা করলেনঃ ব্যাপার কি? তিনি বললেনঃ আমি একজন মহিলাকে বিয়ে করেছি এক খণ্ড সোনার বিনিময়ে। তিনি দুআ করলেনঃ আল্লাহ তোমাকে বরকত দিন। একটা বকরী দিয়ে হলেও তুমি ওলীমা করো।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৪৫ | 5945 | ۵۹٤۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৬৬. বরের জন্য দু’আ করা
৫৯৪৫। আবূ নূমান (রহঃ) … জাবির (রাঃ) বলেন, আমার আব্বা সাত অথবা নয়জন মেয়ে রেখে ইন্তেকাল করেন। তারপর আমি একজন মহিলাকে বিয়ে করি। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তুমি কি বিয়ে করেছ? আমি বললামঃ হ্যাঁ। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা করলেন, সে মহিলাটি কুমারী না অকুমারী? আমি বললামঃ অকুমারী। তিনি বললেন, তুমি একজন কুমারী বিয়ে করলে না কেন? তা হলে তুমি তার সঙ্গে ক্রীড়া-কৌতুক করতে এবং সেও তোমার সঙ্গে ক্রীড়া কৌতুক করত। আর তুমি তার সাথে এবং সেও তোমার সাথে হাসীখুশী করতো। আমি বললামঃ আমার আব্বা সাত অথবা নয়জন মেয়ে রেখে ইন্তেকাল করেছেন। সূতরাং আমি এটা পছন্দ করলাম না যে, তাদের মত কুমারী বিয়ে করে আনি। এজন্য আমি এমন একজন মহিলাকে বিয়ে করেছি যে তাদের দেখাশোনা করতে পারবে। তখন তিনি দুআ করলেন আল্লাহ! তোমাকে বরকত দিন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৪৬ | 5946 | ۵۹٤٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৬৭. নিজ স্ত্রীর নিকট আসলে যে দু’আ পড়তে হয়
৫৯৪৬। উসমান ইবনু আবূ শায়বা (রহঃ) … ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তোমাদের কেউ স্ত্রীর সঙ্গে সংত হওয়ার ইচ্ছা করলে সে বলবেঃ আল্লাহর নামে, হে আল্লাহ আপনি আমাদের শয়তান থেকে দূরে রাখুন এবং আপনি আমাদেরকে যা দান করেন তা থেকে শয়তানকে দূরে রাখুন তারপর তাদের এ মিলনের মধ্যে যদি কোন সন্তান নির্ধারিত থাকে তা হলে শয়তান এ সন্তানকে কখনো ক্ষতি করতে পরবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৪৭ | 5947 | ۵۹٤۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৬৮. নাবী (সাঃ) এর দু’আঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের ইহকালে কল্যাণ দাও
৫৯৪৭। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অধিকাংশ সময়ই এ দুআ পড়তেনঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের দুনিয়াতে কল্যাণ দাও এবং আখিরাতেও কল্যাণ দাও এবং আমাদের অগ্নিযন্ত্রণা থেকে রক্ষা কর। (২ঃ ২০১)

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৪৮ | 5948 | ۵۹٤۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৬৯. দুনিয়ার ফিতনা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চাওয়া
৫৯৪৮। ফারওয়া ইবনু আবূল মাগরা (রহঃ) … সা’দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যেভাবে লেখা শিখানো হতো ঠিক এভাবেই আমাদের নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দু’আ শিখাতেন। ইয়া আল্লাহ! আমি কৃপণতা থেকে আপনার আশ্রয় চাই। আর আমি ভীরুতা থেকে আপনার আশ্রয় চাই। আর আপনার আশ্রয় চাই আমাদের বার্ধক্যের অসহায়ত্বের দিকে ফিরিয়ে দেওয়া থেকে। আর আমি আপনার আশ্রয় চাই দুনিয়ার ফিতনা এবং কবরের আযাব থেকে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৪৯ | 5949 | ۵۹٤۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৭০. বারবার দু’আ করা
৫৯৪৯। ইবরাহীম ইবনু মুনযির (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উপর যাদু করা হলো। এমন কি তার খেয়াল হতো যে, তিনি একটা কাজ করেছেন। অথচ তিনি তা করেন নি। সে জন্য তিনি আল্লাহর কাছে দুআ করলেন। এরপর তিনি (আয়িশা (রাঃ) কে বললেনঃ তুমি জানতে পেরেছ কি? আমি যে বিষয়টা আল্লাহর কাছ থেকে জানতে চেয়েছিলাম, তা তিনি আমাকে জানিয়ে দিয়েছেন। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ ইয়া রাসুলাল্লাহ তা কি?

তিনি বললেনঃ (স্বপ্নের মধ্যে) আমার নিকট দু’জন লোক আসলেন এবং একজন আমার মাথার কাছে, আরেক জন আমার উভয় পায়ের কাছে বসলেন। তারপর একজন তার সাথীকে জিজ্ঞাসা করলেন এ ব্যাক্তির রোগটা কি? তখন অপরজন বললেনঃ তিনি যাদুতে আক্রান্ত। আবার তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তাকে কে যাদু করেছে? অপর জন বললেনঃ লাবীদ ইবনু আসাম। তিনি আবার জিজ্ঞাসা করলেন, তা কিসের মধ্যে করেছে? তিনি বললেন, চিরুনী, ছেড়া চুল ও কাঁচা খেজুর গাছের খোশার মধ্যে। পূনরায় তিনি জিজ্ঞাসা করলেনঃ এটা কোথায়? তিনি বললেনঃ যুরাইক গোত্রের ‘মুআরওয়ান’ নামক কুপের মধ্যে।

আয়িশা। (রাঃ) বর্ণনা করেন, অতঃপর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেখানে গেলেন এবং (তা কূপ থেকে বের করিয়ে নিয়ে) আয়িশার কাছে ফিরে এসে বললেনঃ আল্লাহর কসম! সেই কুপের পানি যেন মেহেন্দি তলানী পানি এবং এর (নিকটস্থ) খেজুর গাছগুলো ঠিক যেন শয়তানের মাথা। আয়িশা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফিরে এসে তার কাছে কুপের বিস্তারিত অবস্থা জানালেন।

তখন আমি বললাম ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনি এ ব্যাপারটা লোক সমাজে প্রকাশ করে দিলেন না কেন? তিনি বললেন আল্লাহ তা’আলা তো আমাকে রোগমুক্ত করেছেন। সুতরাং আমি লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিস্তার করা পছন্দ করি না।

ঈসা ইবনু ইউনূস ও লায়স (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে যাদু করা হলে তিনি বারবার দুআ করলেন, এভাবে পূর্ন হাদীস বর্ণিত হয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৫০ | 5950 | ۵۹۵۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৭১. মুশরিকদের উপর বদ দু’আ করা। ইবন মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাকে তাদের মুকাবিলায় সাহায্য করুন। যেমন দুর্ভিক্ষগ্রস্থ সাত বছর দিয়ে ইউসুফ (আঃ) কে সাহায্য করেছেন। ইয়া আল্লাহ! আপনি আবু জেহেলকে শাস্তি দিন। ইবন উমর (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) সালাতে বদ দু’আ করলেন। ইয়া আল্লাহ! অমুককে লা’নত করুন ও অমুককে লা’নত করুন। তখন ওহী নাযিল হলঃ তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদের শাস্তি দিবেন এ বিষয়ে আপনার করনীয় কিছুই নেই। (৩ঃ ১২৮)
৫৯৫০। ইবনু সালাম (রহঃ) … ইবনু আবূ আওফা (রাঃ) বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (খন্দকের যুদ্ধে) শত্রু বাহিনীর উপর বদ দু’আ করেছেনঃ ইয়া আল্লাহ! হে কিতাব অবর্তীর্ণকারী! হে ত্বরিৎ হিসাব গ্রহণকারী! আপনি শত্রু বাহিনীকে পরাজিত করুন। তাদের পরাস্ত করুন। এবং তাদের প্রকিম্পিত করুন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৫১ | 5951 | ۵۹۵۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৭১. মুশরিকদের উপর বদ দু’আ করা। ইবন মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাকে তাদের মুকাবিলায় সাহায্য করুন। যেমন দুর্ভিক্ষগ্রস্থ সাত বছর দিয়ে ইউসুফ (আঃ) কে সাহায্য করেছেন। ইয়া আল্লাহ! আপনি আবু জেহেলকে শাস্তি দিন। ইবন উমর (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) সালাতে বদ দু’আ করলেন। ইয়া আল্লাহ! অমুককে লা’নত করুন ও অমুককে লা’নত করুন। তখন ওহী নাযিল হলঃ তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদের শাস্তি দিবেন এ বিষয়ে আপনার করনীয় কিছুই নেই। (৩ঃ ১২৮)
৫৯৫১। মুয়ায ইবনু ফাযালা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশার সালাত (নামায/নামাজ) এর শেষ রাক’আতে যখন ‘সামিয়াল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলতেন তখন কুনূতে (নাযিলা) পড়তেনঃ ইয়া আল্লাহ! আইয়্যাশ ইবনু আবূ রাবীয়াকে নাযাত দিন। ইয়া আল্লাহ! ওয়ালীদ ইবনু ওয়ালীদকে মুক্তি দিন। ইয়া আল্লাহ! সালামা ইবনু হিশামকে মুক্তি দিন। ইয়া আল্লাহ! আপনি দুর্বল মুমিনদের নাযাত দিন। ইয়া আল্লাহ! আপনি মুযার গোত্রকে কঠোর শাস্তি দিন। ইয়া আল্লাহ! আপনি তাদের উপর ইউসুফ (আলাইহিস সালাম) এর সময়ের দুর্ভিক্ষের বছরের ন্যায় দুর্ভিক্ষ দিন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৫২ | 5952 | ۵۹۵۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৭১. মুশরিকদের উপর বদ দু’আ করা। ইবন মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাকে তাদের মুকাবিলায় সাহায্য করুন। যেমন দুর্ভিক্ষগ্রস্থ সাত বছর দিয়ে ইউসুফ (আঃ) কে সাহায্য করেছেন। ইয়া আল্লাহ! আপনি আবু জেহেলকে শাস্তি দিন। ইবন উমর (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) সালাতে বদ দু’আ করলেন। ইয়া আল্লাহ! অমুককে লা’নত করুন ও অমুককে লা’নত করুন। তখন ওহী নাযিল হলঃ তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদের শাস্তি দিবেন এ বিষয়ে আপনার করনীয় কিছুই নেই। (৩ঃ ১২৮)
৫৯৫২। হাসান ইবনু রাবী (রহঃ) … আনাস (রাঃ) থেকে বর্নিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটা সারিয়্যা (ক্ষুদ্র বাহিনী) পাঠালেন। তাদের কুররা বলা হতো। তাদের হত্যা করা হলো। আমি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে এদের ব্যাপারে যেরূপ রাগাম্বিত দেখেছি অন্য কারণে সেরূপ রাগান্বিত দেখিনি। এজন্য তিনি ফজরের সালাত (নামায/নামাজ)-এ মাসব্যাপি কুনুত পড়লেন। তিনি বলতেনঃ উসায়্যা গোত্র আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফফরমানী করেছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৫৩ | 5953 | ۵۹۵۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৭১. মুশরিকদের উপর বদ দু’আ করা। ইবন মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাকে তাদের মুকাবিলায় সাহায্য করুন। যেমন দুর্ভিক্ষগ্রস্থ সাত বছর দিয়ে ইউসুফ (আঃ) কে সাহায্য করেছেন। ইয়া আল্লাহ! আপনি আবু জেহেলকে শাস্তি দিন। ইবন উমর (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) সালাতে বদ দু’আ করলেন। ইয়া আল্লাহ! অমুককে লা’নত করুন ও অমুককে লা’নত করুন। তখন ওহী নাযিল হলঃ তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদের শাস্তি দিবেন এ বিষয়ে আপনার করনীয় কিছুই নেই। (৩ঃ ১২৮)
৫৯৫৩। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইয়াহুদী সম্প্রদায়ের লোকেরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে সালাম করার সময় বলতো “আসসামু আলাইকা” (ধংস তোমার প্রতি)। আয়িশা (রাঃ) তাদের এ বাক্যের কুমতলব বুঝতে পেরে বললেন “আলাইকুমুসসাম ওয়াললানত” (ধংস তোমাদের প্রতিও লা’নত)। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন আয়িশা থামো! আল্লাহ তা’আলা সমুদয় বিষয়েই নম্রতা পছন্দ করেন। আয়িশা (রাঃ) বললেন তারা কি বলেছে আপনি কি তা শুনেনি? তিনি বললেন, আমি তাদের প্রতি উত্তরে ‘ওয়াআলাকুম’ বলেছি তা তুমি শুননি? আমি বলেছি তোমাদের উপর।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৫৪ | 5954 | ۵۹۵٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৭১. মুশরিকদের উপর বদ দু’আ করা। ইবন মাসউদ (রাঃ) বর্ণনা করেন, নবী (সাঃ) বলেছেনঃ ইয়া আল্লাহ! আপনি আমাকে তাদের মুকাবিলায় সাহায্য করুন। যেমন দুর্ভিক্ষগ্রস্থ সাত বছর দিয়ে ইউসুফ (আঃ) কে সাহায্য করেছেন। ইয়া আল্লাহ! আপনি আবু জেহেলকে শাস্তি দিন। ইবন উমর (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) সালাতে বদ দু’আ করলেন। ইয়া আল্লাহ! অমুককে লা’নত করুন ও অমুককে লা’নত করুন। তখন ওহী নাযিল হলঃ তিনি তাদের প্রতি ক্ষমাশীল হবেন অথবা তাদের শাস্তি দিবেন এ বিষয়ে আপনার করনীয় কিছুই নেই। (৩ঃ ১২৮)
৫৯৫৪। মুহাম্মদ ইবনু মুসান্না (রহঃ) … আলী ইবনু আবূ তালিব (রাঃ) বলেন, খন্দকের যুদ্ধের দিন আমরা নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। তিনি বললেন, হে আল্লাহ! তাদের গৃহ এবং কবরকে আগুন ভর্তি করে দিন। কেননা তারা আমাদের সালাতুল উস্তা থেকে বিরত রেখেছে। এমনকি সূর্য অস্তমিত হয়ে গেল। আর , ‘সালাতুল উস্তা’ হল আসর সালাত (নামায/নামাজ)।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৫৫ | 5955 | ۵۹۵۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৭২. মুশরিকদের জন্য দু’আ
৫৯৫৫। আলী ইবন আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তুফাইল ইবনু আমর (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে এসে বললেন দাওস গোত্র নাফরমানী করেছে ও অবাধ্য হয়েছে এবং ইসলাম গ্রহন করতে অস্বীকার করেছে। সুতরাং আপনি তাদের উপর বদ দুআ করুন। সাহাবীগণ ধারণা করলেন যে, তিনি তাদের উপর বদ দু’আই করবেন। কিন্তু তিনি (তাদের জন্য) দু’আ করলেন ইয়া আল্লাহ! আপনি দাওস গোত্রকে হিদায়াত করুন। আর তাদের মুসলমান বানিয়ে নিয়ে আসুন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৫৬ | 5956 | ۵۹۵٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৭৩. নাবী (সাঃ) এর দু’আঃ হে আল্লাহ! আমার পূর্বের ও পরের গুনাহসমূহ মাফ করে দিন
৫৯৫৬। মুহাম্মাদ ইবনু বাশশার (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) তার পিতা থেকে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরূপ দু’আ করতেন হে আল্লাহ! আপনি মাফ করে দিন আমার অনিচ্ছাকৃত গুনাহ, আমার অজ্ঞতা, আমার কাজের সকল বাড়াবাড়ি এবং আমার যেসব গুনাহ আপনি আমার চাইতে বেশী জানেন। ইয়া আল্লাহ আপনি ক্ষমা করে দিন আমার ভুল-ত্রুটি আমার ইচ্ছাকৃত গুনাহ ও আমার অজ্ঞতা এবং আমার উপহাসমূলক গুনাহ আর এ রকম গুনাহ যা আমার মধ্যে আছে। ইয়া আল্লাহ আপনি আমাকে মাফ করে দিন; যেসব গুনাহ আমি আগে করেছি। আপনিই আগে বাড়ান আপনই পশ্চাতে ফেলেন এবং আপনই সব কিছুব উপর সর্বশক্তিমান।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৫৭ | 5957 | ۵۹۵۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৭৩. নাবী (সাঃ) এর দু’আঃ হে আল্লাহ! আমার পূর্বের ও পরের গুনাহসমূহ মাফ করে দিন
৫৯৫৭। মুহাম্মদ ইবনু মূসান্না (রহঃ) … আবূ মূসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দু’আ করতেন ইয়া আল্লাহ! আপনি মাফ করে দিন আমার ভূল-ক্রটি জনিত গুনাহ, আমার অজ্ঞতা আমার কাজের সকল বাড়াবাড়ি এবং আর যা আপনি আমার চাইতে অধিক জানেন। ইয়া আল্লাহ! আপনি ক্ষমা করে দিন আমার হাসি-তামাশামুলক গুনাহ, আমার অবাধ্যতামূলক গুনাহ, আমার অনিচ্ছাকৃত গুনাহ এবং ইচ্ছাকৃত গুনাহ, আর এসব গুনাহ যে আমার মধ্যে রয়েছে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৫৮ | 5958 | ۵۹۵۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৭৪. জুমুআর দিনে কবুলিয়াতের সময় দু’আ করা
৫৯৫৮। মুসাদ্দাদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, আবূল কাসিম বলেন, জুমু আর দিনে এমন একটি মুহর্ত আছে যদি সে মুহর্তটিতে কোন মুসলমান দাঁড়িয়ে সালাত (নামায/নামাজ) আদায় করে আল্লাহর নিকট কোন কল্যাণের জন্য দুআ করে, তবে তা আল্লাহ তাকে দান করবেন। তিনি এ হাদীস বর্ণনার সময় আপন হাত দিয়ে ইশারা করেন (ইশারাতে) আমরা বুঝলাম যে, তিনি মুহর্তটির সংক্ষিপ্ততার দিকে ইংগিত করেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৫৯ | 5959 | ۵۹۵۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৭৫. নাবী (সাঃ) এর বানী : ইয়াহুদীদের ব্যাপারে আমাদের বদ দু’আ কবূল হবে। কিন্তু আমাদের প্রতি তাদের বদ দু’আ কবূল হবে না
৫৯৫৯। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আয়িশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। একবার একদল ইয়াহুদী নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে সালাম দিতে গিয়ে বললোঃ আসসামু আলাইকা। তিনি বললেনঃ ওয়াআলাইকুম। কিন্তু আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ “আলসামু আলাইকুম ওয়া লালানাকুমূল্লাহ ওয়া গাযিবা আলাইকুম” (তোমাদের উপর ধংস নাযিল হোক, আল্লাহ তোমাদের উপর লানত করুন আর তোমারদের উপর গযব নাযিল করুন)। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন হে আয়িশা তুমি থামো! তুমি নম্র ব্যবহার করো, আর তুমি কঠোরতা পরিহার করো। আয়িশা (রাঃ) বললেনঃ তারা কি বলেছে আপনি কি শুনেন নি? তিনি বললেনঃ আমি যা বললাম, তা কি তুমি শুননি? আমি তো তাদের কথাটা তাদের উপরই ফিরিয়ে দিলাম। সুতরাং তাদের উপর আমার বদ দুআ কবুল হয়ে যাবে। কিন্তু আমার সম্বন্ধে তাদের বদ দুআ কবুল হবে না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৬০ | 5960 | ۵۹٦۰

পরিচ্ছদঃ ২৬৭৬. আমীন বলা
৫৯৬০। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যখন কারী (ইমাম) আমীন বলবে তখন তোমরাও আমীন বলবে। কারন এ সময় ফিরিশতাগণ আমীন বলে থাকেন। সুতরাং যার আমীন বলা ফিরিশতাদের আমীন বলার সাথে মিলে যাবে, তার পূর্বের সবগুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৬১ | 5961 | ۵۹٦۱

পরিচ্ছদঃ ২৬৭৭. ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর (যিকির করার) ফযীলত
৫৯৬১। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ، وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ، وَهْوَ عَلَى كُلِّ شَىْءٍ قَدِيرٌ যে ব্যাক্তি দিনের মধ্যে একশ বার পড়বে আল্লাহ ব্যতীত আর কোন ইলাহ নেই, তিনি এক, তার কোন অংশীদার নেই, রাজত্ব একমাত্র তারই, হামদ তারই, সব কিছুর উপর সর্বশক্তিমান” সে একশ গোলাম আযাদ করার সাওয়াব অর্জন করবে এবং তার জন্য একশটি নেকী লেখা হবে, আর তার একশটি গুনাহ মিটিয়ে দেওয়া হবে। আর সে দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত এটা তার জন্য রক্ষা কবচে পরিণত হবে এবং তার চাইতে বেশী ফযীলত ওয়ালা আমল আর কারো হবে না। তবে যে ব্যাক্তি এ আমল তার চাইতেও বেশী করবে।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৬২ | 5962 | ۵۹٦۲

পরিচ্ছদঃ ২৬৭৭. ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এর (যিকির করার) ফযীলত
৫৯৬২। আবদুল্লাহ ইবনু মুহাম্মদ (রহঃ) … আমর ইবনু মায়মুন (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি (এ কালেমাগুলি) দশবার পড়বে সে ঐ ব্যাক্তির সমান হয়ে যাবে, যে ব্যাক্তি ইসমাঈল (আলাইহিস সালাম) এর বংশ থেকে একটা গোলাম আযাদ করে দিয়েছে। আবূ আইউব আনসারী (রাঃ) থেকেও বর্ণিত আছে যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ হাদিসটা তার কাছেও বলেছেন।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৬৩ | 5963 | ۵۹٦۳

পরিচ্ছদঃ ২৬৭৮. সুবহানাল্লাহ পড়ার ফযীলত
৫৯৬৩। আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি প্রত্যহ একশত বার সুবাহানআল্লাহি ওয়া বিহামদিহি বলবে তার গুনাহগুলি মাফ করে দেওয়া হবে তা সমুদ্রের ফেনা পরিমান হলেও।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৬৪ | 5964 | ۵۹٦٤

পরিচ্ছদঃ ২৬৭৮. সুবহানাল্লাহ পড়ার ফযীলত
৫৯৬৪। যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ দুটি বাক্য এমন যে, মুখে তার উচ্চারন অতি সহজ কিন্তু পাল্লায় অনেক ভারী, আর আল্লাহর কাছে অতি প্রিয়। তা হলঃ সুবাহানআল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবাহানআল্লাহিল আযীম।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৬৫ | 5965 | ۵۹٦۵

পরিচ্ছদঃ ২৬৭৯. আল্লাহ তা’আলার যিকর এর ফযীলত
৫৯৬৫। মুহাম্মাদ ইবনু আলা (রহঃ) … আবূ মূসা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যাক্তি তার রবের যিকর করে, আর যে ব্যাক্তি যিকর করে না, তাদের দু’জনের দৃষ্টান্ত হলো জীবিত ও মৃতের।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৬৬ | 5966 | ۵۹٦٦

পরিচ্ছদঃ ২৬৭৯. আল্লাহ তা’আলার যিকর এর ফযীলত
৫৯৬৬। কুতায়বা ইবনু সাঈদ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ আল্লাহর একদল ফেরেশতা আছেন, যারা আল্লাহর যিকরে রত লোকদের তালাশে রাস্তায় রাস্তায় ঘোরাফেরা করেন। যখন তারা কোথাও আল্লাহর যিকরে রত লোকদের দেখতে পান, তখন তাঁদের একজন অন্যজনকে ডাকাডাকি করে বলেনঃ তোমরা নিজ নিজ কর্তব্য সম্পাদনের জন্য এদিকে চলে এসো। তখন তাঁরা সবাই এসে তাদের ডানাগুলো দিয়ে সেই লোকদের ঢেকে ফেলেন নিকটস্থ আসমান পর্যন্ত। তখন তাদের রব তাদের জিজ্ঞাসা করেন (অথচ এ সম্পর্কে ফেরেশতাদের চাইতে তিনই বেশি জানেন) আমার বান্দারা কি বলছে? তখন তারা জবাব দেন, তারা আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছে, তারা আপনার শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করছে, তারা আপনার প্রশংসা করছে এবং তারা আপনার মাহাত্ব বর্ণনা করছে। তখন তিনি জিজ্ঞাসা করবেন, তারা কি আমাকে দেখেছে? তখন তারা বলবেনঃ হে আমাদের রব, আপনার কসম! তারা আপনাকে দেখেনি। তিনি বলবেন, আচ্ছা, তবে যদি তারা আমাকে দেখত? তারা বলবেন, যদি তারা আপনাকে দেখত, তবে তারা আরও বেশি আপনার ইবাদত করত, আরো অধিক আপনার মাহাত্ব বর্ননা করত, আর বেশি বেশি আপনার পবিত্রতা বর্ননা করত।

বর্ণনাকারী বলেনঃ তিনি বলবেন, তারা আমার কাছে কি চায়? তারা বলবেন, তারা আপনার কাছে জান্নাত চায়। তিনি জিজ্ঞাসা করবেন, তারা কি জান্নাত দেখেছে? ফেরেশতারা বলবেন, না। আপনার সত্তার কসম হে রব! তারা তা দেখেনি। তিনি জিজ্ঞাসা করবেন যদি তারা তা দেখত তবে তারা কি করত? তাঁরা বলবেন, যদি তারা তা দেখত তাহলে তারা জান্নাতের আরো বেশি লোভ করত, আরো অধিক চাইত এবং এর জন্য আরো অতিশয় উৎসাহী হয়ে উঠত। আল্লাহ তাআলা জিজ্ঞাসা করবেন, তারা কিসের থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়? ফেরেশতাগণ বলবেন, জাহান্নাম থেকে। তিনি জিজ্ঞাসা করবেন, তারা কি জাহান্নাম দেখেছে? তাঁরা জবাব দিবেন, আল্লাহর কসম! হে রব! তারা জাহান্নাম দেখেনি। তিনি জিজ্ঞাসা করবেন, যদি তারা তা দেখত তখন তাদের কি হত? তারা বলবেন, যদি তারা তা দেখত, তবে তারা এ থেকে দ্রুত পালিয়ে যেত এবং একে সাংঘাতিক ভয় করত। তখন আল্লাহ তায়ালা বলবেন, আমি তোমাদের সাক্ষী রাখছি, আমি তাদের মাফ করে দিলাম। তখন ফেরেশতাদের একজন বলবেন, তাদের মধ্যে অমুক ব্যাক্তি আছে, যে তাদের অন্তর্ভুক্ত নয় বরং সে কোন প্রয়োজনে এসেছে। আল্লাহ তা’আলা বলবেন, তারা এমন উপবিষ্টকারীবৃন্দ যাদের বৈঠকে অংশগ্রহনকারী বিমুখ হয় না।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৬৭ | 5967 | ۵۹٦۷

পরিচ্ছদঃ ২৬৮০. “লা হাওলা ওয়ালা কুওওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ” বলা
৫৯৬৭। মুহাম্মদ ইবনু মুকাতিল আবূল হাসান (রহঃ) … আবূ মূসা আল আশআরী (রাঃ) থেকে বর্নিত। তিনি বলেনঃ একবার নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একটি গিরিপথ দিয়ে অথবা বর্ণনাকারী বলেনঃ একটি চুড়া হয়ে যাচ্ছিলেন, তখন এক ব্যাক্তি এর উগরে উঠে জোরে বললঃ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ওয়াল্লাহু আকবার। আবূ মূসা বলেনঃ তখন রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার খচ্চরে আরোহী ছিলেন। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমরা তো কোন বধির কিংবা কোন অনুপস্থিত কাউকে ডাকছো না। অতঃপর তিনি বললেনঃ হে আবূ মূসা অথবা বললেনঃ হে আবদুল্লাহ আমি কি তোমাকে জান্নাতের ধনাগারের একটি বাক্য বাতলে দেব না? আমি বললাম, হ্যাঁ, বাতলে দিন। তিনি বললেনঃ তা হল “লা হাওলা ওয়ালা কুওয়্যাতা ইল্লাবিল্লাহ”।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৬৮ | 5968 | ۵۹٦۸

পরিচ্ছদঃ ২৬৮১. আল্লাহ ত’লাআর এক কম একশ’ নাম রয়েছে
৫৯৬৮। আলী ইবনু আবদুল্লাহ (রহঃ) … আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আল্লাহ তা’আলার নিরানব্বই নাম আছে (এক কম একশ নাম)। যে ব্যাক্তি এগুলোর হিফাযত করবে সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আল্লাহ তা’আলা বেজোড়। তাই তিনি রেজোড়ই পছন্দ করেন।

ইমাম বুখারী (রহঃ) বলেনঃ “মান আহসাহা” অর্থ যে হিফাযত করল।

হাদিস নম্বরঃ ৫৯৬৯ | 5969 | ۵۹٦۹

পরিচ্ছদঃ ২৬৮২. সময়ের বিরিতি দিয়ে দিয়ে নসীহত করা
৫৯৬৯। উমর ইবনু হাফস (রহঃ) … শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) এর (ওয়ায শোনার) জন্য অপেক্ষা করছিলাম। এমন সময় হঠাৎ ইয়াযিদ ইবনু মুয়াবিয়া (রাঃ) এসে পড়লেন। তখন আমরা তাঁকে বললাম, আপনি কি বসবেন না? তিনি বললেনঃ না, বরং আমি ভেতরে প্রবেশ করব এবং আপনাদের কাছে আপনাদের সঙ্গীকে নিয়ে আসব। নতূবা আমি ফিরে এসে বসব। সুতরাং আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাঃ) তাঁর হাত ধরে বেরিয়ে এলেন। তিনি আমাদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেনঃ আমি তো আপনাদের এখানে উপস্থিতির কথা অবহিত ছিলাম। কিন্তু আপনাদের নিকট বেরিয়ে আসতে আমাকে বাধা দিচ্ছি এ কথাটা যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়ায নসীহত করতে আমাদের অবকাশ দিতেন, যাতে আমাদের বিরক্তির কারণ না হয়।

 

Exit mobile version